Search

Thursday, September 28, 2017

ছহি বড়ো মেয়রনামা, হোল্ডিং ট্যাক্স পর্ব


পর্যবেক্ষক

গত কয়েকদিন আগে ধামরাইতে মেয়রের বিরুদ্ধে ঝাড়ু মিছিল বাহির হইয়াছিল। মাননীয় মেয়র ধরা খাওয়ার ভয়ে তাঁহার নগর কার্যাল‌য়ে আসেন নাই। ঘটনার বিবরণে প্রকাশ, তিনি তাঁহার নির্বাচনী এলাকায় সে অত্যাচারমূলকভাবে হোল্ডিং ট্যাক্স ধার্য করেন উহার কারণেই নাগরিকরা হাতে ঝাড়ু লইতে বাধ্য হইয়াছিলেন। নগরপিতা‌কে এভাবে অসম্মানের জন্য তাহাদের কোনো জেলফাঁস হইয়াছিল কি না তাহা জানা যায় নাই। তবে ঘটনাটি সংবাপত্রের পাতায় ফাঁস  হইয়াছে। নাগরিকদের অভিযোগ, যে ট্যাক্স নতুন করিয়া ধার্য করা হইয়াছে তাহার মাত্রা একদা বাংলায় বর্গীদের অত্যাচারের সীমা ছাড়াইয়া যায়। যাহার হোল্ডিংছিল ১০টাকার উহা ১০০টাকা ধার্য করা হইয়াছে, যাহার কর ছিল ১০০ টাকা ছিল উহা ১০০০ টাকায় প্রমোশন লাভ করিয়াছে।

এই যে নব্য ভাস্কর পণ্ডিতের গোষ্ঠী ভুমিষ্ঠ হইয়াছে বাংলাদেশের মাটিতে। তা‌হাদের পদে আসিবার জন্য অধিকাংশ ক্ষেত্রেই নির্বাচন করারও দরকার হয়‌ নাই। তবে ইহা দিবালোকের মতো পরিষ্কার যে তাহাদেরকে মোটা টাকা যথাস্থানে পৌছাইতে হইয়াছে। তাঁহারাই বা কী করিবেন নে? অগত্যা, নিরাপরাধ জনগণের ঘাড়ে এভাবে সওয়ার হইতেই হইতেছে। জনগণ যাইবে কোথায়?

আমরা জানি ক্লাসিক অর্থনীতির নিয়মে বলা হইয়াছে নো ট্যাক্সেশান উইদাউট রিপ্রেজেন্টেশান। নির্বাচনী এলাকার প্রতিনিধিত্ব ছাড়া ট্যাক্স ধার্য করা যাইবে না। তবে ক্যারিশমার দেশে ইহার কোনো বালাই আছে বলিযা মনে হয় না। অতএব গত্যন্তর না দেখিয়া ঝাড়ু মিছিল। আবেদন -নিবেদনে কাজ হয় না। আমরা এ মুহূর্তে দেখিতেছি গণশুনানি চলিতেছে  বিইআরসিতে বিদ্যুতের মূল্য ১৫%বৃদ্ধির প্রশ্নে। গ্রাহক সাধারণ যতোই চিল্লাইতে থাকুক তাহাতে কিছু আসে যায়  না। যতো যুক্তিই থাক না কেন জনসাধারণের টাকা খোর আমলারা যেহেতু প্রস্তাব দিয়াছে তাহাদের চামড়া বাঁচাইবার জন্য সেহেতু সরকারের চাবকানির প্রিয় বালক (whipping boy) আর কেই বা হইতে পারে।

খবর আসিয়াছে (গুজব) কথিত স্থানীয় সরকারগুলির এ ধরণের স্ট্রিপমাইন অপারেশনে গোটা দেশবাসী তটস্থ। ঢাকা নগর কর্পোরেশন আনুষ্ঠানিক/অনানুষ্ঠানিকভাবে এত্তেলা পাঠাইয়াছে এবং বলাবাহল্য সর্প হইয়া কাটিয়া ওঝা হইয়া ব্যবস্থাপত্রও দিয়াছে। উহার মর্মবাণী এভাবে বয়ান করা যায়: মাননীয় সেবার গ্রাহক নগরবাসী, কর নতুন করিয়া ধার্য করা হইল। তবে দেশে যেহেতু আইনের (ক) শাসন রহিয়াছে সেহেতু একটি এস্কেপ রুট (নীলনকশা) আপনাদের উপকারা‌র্থ দেওয়া হইল। আপনারা নির্ধারিত ফরমে আপত্তি দিন। (যদিও এহ বাহ্য)। আর সেইসাথে গরিব কর্পোরেশন কর্তাদের জন্য কিছু সামান্য পারিতোষিক পরিশোধ করুন। এ কাজটি আগাম পরিশোধই সব দিক বিবেচনায় সুবিধাজনক । বলাবাহুল্য এই বন্দোবস্তের পৃষৗ্ঠপোষকতায় তো অনেকেই আগাইয়া অসিয়াছে তো অাপনিই বা  কেন এই নেকি হইতে বঞ্চিত থাকিবেন। ইহা করিয়া   তো আপনাদের অনেকেই উপকার পাইয়াছেন যাহার ন্যূনতম হাদিয়া মূল্য হইবে মাথা প্রতি তিন হাজার টাকা মাত্র। আর চূপে চূপে একথাও জানাইয়া রাখি আপনাদের খেদমতে পেীছাইতে করপো‌রেশন কর্তাদের বিপূল কাঠখড়ি পোড়াইতে হইয়াছে। কাজেই আপনাদের সানুগ্রহ বিবেচনা হইতে আমরা নিশ্চয়ই বঞ্চিত হইব না। অাল্লাহ মেহেরবান। আপনারাই আমাদের নগদ নারায়ণ। যাহা হউক, এ ক্ষেত্রে আমাদের এখতিয়ার মাত্র ১৫%।  বাস্তবতার কথা আপনাদের  মরমে পশিতে আমরা কোনো কসূর করি নাই। তাই নিশ্চয়ই এই ঈমানে আমাদের রহিয়াছে বলিয়া অাপনারা জানিবেন। আমরা এই অধমেরা আছি আমাদের দিকে একটু কৃপা দৃষ্টিতে তাকাইবেন। তদুপরি আমাদের উপরে আছেন ম্যাজিস্ট্রেট বাহাদুরেরা। তাঁহারা যেহেতু ধর্মাবতার। নিজের কথা কী করিয়া বলিবেন! অতএব সে মিশনের দায়িত্ব নি‌জ‌েদের মনে করিয়া নিজেদের ঘা‌ড়‌ে তুলিয়া লইয়াছি। তাঁহাদের এখতিয়ার মাত্র ২৫%। সাকুল্যে ৪০% শতাংশ। তবে হয়তো শুনিয়া সুখী হইবেন যে আপনাদের সুবিধার কথাটি সর্বাগ্রে রাখিযা আমরা আপনাদের জন্য ওয়ান স্টপ সার্ভিসের ব্যবস্থা করিতে সক্ষম হইয়াছি। এর আগে উল্লেখ করিয়াছি আমাদের জন্য মাত্র  তিন হাজার ও ম্যা‌জিস্ট্রেট আধা ধর্মাবতারদের সম্মানার্থ মাত্র পাঁচ হাজার - মোট আট হাজার মাত্র। অামরাই উদ্যোগী হইয়া ধার্য করিয়াছি। নীতিবান সরকার সবকিছুই ডিজিটাল করিয়া পেপারলেস অফিস বানাইবার কাজ হাতে লইয়াছেন। আমরা সে দৃষ্টান্তে অনুপ্রাণিত। সেজন্য যখন আপনারা হাতের ময়লা (নগদ নারায়ণ) আমাদের হাতে তুলিয়া দিবেন অামরা  আপানদের দীন খাদেম হিসাবে বলিতে পারি ইহার জন্য কোনো কাগজপত্রে ঝামেলা থাকিবেনা । গোটাবিষয়টি হইবে সিউরলি পেপারলেস ও দূষণমুক্ত। ধরুন এভাবে যদি মাল্টিস্টোরিড ভবন হইতে লাখখানেক টাকা করিয়া ঠেকা দিয়া আসিযা যায কর্তাদের হতদারিদ্র‍্য পুরা না হউক অন্তত; আংশিক মোচন হইবে বা খায়েশ তো মিটিবে।অতএব শুভস্য শীঘ্রং। বিলম্বে কী হারাইয়াছেন বুঝিয়া লাভ কি!

কড়ি দিবেন, তেল মাখিবেন! আমরা কি আপনার পর। আমরা দিরারাত্র আপনাদের মঙ্গল কামনায় মায় আমাদের আন্ডাবাচ্চাসহ কঠোর বকতপস্যায় রহিয়াছি উদ্বাহু (একঠাং-এ!)হইয়া।  আমরা জানি সবুরে মেওয়া ফলে। তবে সাবধান ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল যেন ইহার আভাসমাত্র না পায়।  নমুনা দেখুন উহারা কী করিয়াছে।  মাত্র কিছুদিন আগে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঢালাও দূর্নীতির যে রিপোর্ট সরকারের কাছে তুলিয়া ধরিয়াছেন সুলতানা কামাল, উহার কুফল কি হইয়াছে? জানেন, আসল ফেরেশতারা নিরাপদ ফিরদাউসে বাস করিতেছেন আর ওদ‌িকে নির্দোষ প্রকৌশলীরা হাতকড়া এড়াইবার জন্য এখানে ওখানে গর্তে ঢুকিতে বাধ্য হইয়াছেন। খুবই গোপন সংবাদ।আপনাদের ভালাইয়ের জন্য। গোপনীয়তা হেফাজত করিবেন। ঘুণাক্ষরেও যেন ফাঁস করিবেন না। উপর আস্থা রাখুন। জয় ---!  

No comments:

Post a Comment