Bangladeshi Voices
—
ভোটের অধিকার ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য বরাবরই বিএনপি আন্দোলন করে আসছে। ভবিষ্যতেও খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে এই ধারা অব্যাহত থাকবে। আমাদের চেয়ারপারসন চিকিৎসা শেষে দেশে এসেছেন। জানিয়েছেন আইনের প্রতি শ্রদ্ধা। এখন আমাদের বিশ্বাস খুব দ্রুত নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের রূপরেখা ঘোষণা করবেন তিনি।
Bangladeshi Voices
—
ভোটের অধিকার ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য বরাবরই বিএনপি আন্দোলন করে আসছে। ভবিষ্যতেও খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে এই ধারা অব্যাহত থাকবে। আমাদের চেয়ারপারসন চিকিৎসা শেষে দেশে এসেছেন। জানিয়েছেন আইনের প্রতি শ্রদ্ধা। এখন আমাদের বিশ্বাস খুব দ্রুত নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের রূপরেখা ঘোষণা করবেন তিনি।
সম্প্রতি নিজ বাসায় আমাদেরসময়ডটকমকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে চলমান রাজনৈতিক সংকট, বিএনপির আন্দোলনের গতিপথ, মানবতা ও রোহিঙ্গা সংকট এবং ডাকসু নিবাচন নিয়েও কথা বলেন বিএনপির প্রচার সম্পাদক ও সাবেক ছাত্রনেতা শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি।
সাক্ষাতকারটি নিয়েছেন প্রতিবেদক মাঈন উদ্দিন আরিফ।
প্রশ্ন: আগামী নির্বাচন নিয়ে কী ভাবছেন?
উত্তর: ভোটের অধিকারের জন্য দেশব্যাপী তো আমাদের দীর্ঘদিনের আন্দোলন। এই অধিকার প্রতিষ্ঠা করার জন্য বরাবরই বিএনপি আন্দোলন করে আসছে। আর আন্দোলন তো যে একবার হয়েছে, আর হবে না সেটা তো নয়। এটা একটা ধারবাহিক বা চলমান প্রক্রিয়া। আন্দোলন বলতে রাজপথে শুধু সারাদিন মিছিল মিটিং করা বা হরতাল আবরোধ করে সব শেষ করে ফেলা, এটা তো আন্দোলন না। আমাদের একদম তৃণমূল পর্যায় থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয়ভাবে বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে একটা জাগরণ সৃষ্টি করা। সংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধি করা। এটা আন্দোলনের একটা পার্ট।
তাই আমরা সেই দিকে দলকে বেশি সময় দিচ্ছি। পাশাপাশি আমাদের কর্মসূচি দলীয় ভাবে অব্যাহত আছে। অঙ্গসংগঠনের কর্মসূচিও অব্যাহত আছে। ইস্যুভিত্তিক এই কর্মসূচিগুলোকে বিভিন্ন সময়ে প্রাধান্য দিচ্ছি আমরা। আমাদের পার্টির স্ট্যান্ড অত্যন্ত ক্লিয়ার। ইতিমধ্যে চেয়ারপারসন ঘোষিত ভিশন ২০৩০ যে বক্তব্য সেটা আমরা প্রত্যেকটা জেলায় তৃণমূল পর্যায়ে এই কপিগুলো পৌঁছিয়ে দিয়েছি। আমাদের দলের পক্ষ থেকে চেয়ারপারসনের কিছু বক্তব্য ছিল সেগুলো আমরা লিফলেট এবং পোস্টার আকারে তৃণমূল পর্যায়ে পৌঁছিয়ে দিয়েছি। আমাদের দলের বক্তব্য হলো আমার নিরপেক্ষ একটা নির্বাচন চাই। আর এই নিরপেক্ষ নির্বাচন যদি করতে হয় তাহলে সেখানে কিছু ব্যবস্থা নিয়ে আসতে হবে এবং শান্তিপূর্ভাবে এই ভোট অনুষ্ঠিত হবে। সেটার জন্য ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটা আমরা বক্তব্য বিবৃতির মাধ্যমে বললেই যে এই সরকার দিযে দেবে তা কিন্তু না। এটা আমাদেরকে আদায় করে নিতে হবে। তাহলে আমরা যদি মুভমেন্টটাকে ধারবাহিকভাবে পর্যালোচনা করি স্টেপ বাই স্টেপ আমরা এগিয়ে যাই তাহলেই সম্ভব একটা পর্যায়ে আমাদের এই অধিকার আদায় করা।
প্রশ্ন: আপনারা যে সহায়ক সরকারের দাবি করছেন, তার বিস্তারিত এখনো প্রকাশ হয়নি, আপনারা কি সে দাবি থেকে সরে যাচ্ছেন?
উত্তর: এটা দলের সিদ্ধান্ত। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল একটা নির্বাচনী রূপরেখা ঘোষণা করবেন এবং সহায়ক সরকার নামে এই রূপ রেখাটা আসবে বলে ইতিমধ্যে দলের পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয়েছে। সঠিক সময়ে এই সিদ্ধান্ত জাতির সামনে আমাদের চেয়ারপারসন তুলে ধরবেন। আর সহায়ক সরকার থেকে বিএনপি সরে আসবে বলে আমার জানা নেই।
প্রশ্ন: রোহিঙ্গা শরণার্থীরা আমাদের দেশে পাড়িজমাচ্ছে, আপনি তো সেখানে গেছেন, সেখানকার পরিস্থিতি কি দেখে আসলেন?
উত্তর: এটা একটা খুবই মানবিক দিক। আমরা আমাদের দেশনেত্রীর নির্দেশে রোহিঙ্গাদের পাশে দাড়িঁয়েছি। আমাদের দায়িত্ব থেকে দাড়িঁয়েছি। আমরা তাদের পাশে ছিলাম, এখনো আছি। রোহিঙ্গা পরিস্থিতি আমি যদি একটু বিশ্লেষণ করি তহলে আমাদের অবস্থান থেকে আমরা আমাদের সাধ্য অনুযায়ী সহযোগিতা করেছি এবং তা এখনো করে যাচ্ছি। কিন্তু সরকারের ত্রাণ কার্যক্রম যে ভাবে অব্যাহত থাকার কথা, যে ভাবে তারা আওয়াজ দিচ্ছেন এবং মিডিয়া যা বলছেন বাস্তবের মধ্যে অনেক ব্যবধান আছে। সরকার যে দায়িত্ব পালন করবে বা যে দায়িত্ব পালন করা উচিত সেই দায়িত্বগুলো তারা মুখের বুলিতেই সীমাবদ্ধ রেখেছেন। এখানে আমি যতটুক অনুধাবন করেছি কয়েকদিন যাবত সেখানে থাকা অবস্থায় তা হলো সারা বাংলাদেশের বিভিন্ন সংস্থা, সংগঠন, এসোসিয়েশন এবং আমাদের রাজনৈতিক সংগঠন আমাদের জোটের বা অঙ্গ সংগঠন ব্যাপক ভাবে তাদের উপস্থিতি এবং ত্রাণ কার্যক্রম নিয়ে রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়িয়েছে। এটা মানবতার সেবাই। আমি সরকারের কার্যক্রমে আসলে সেখানে গিয়ে হতাশাই ব্যক্ত করছি আর কিছু বলার নেই আমাদের।
প্রশ্ন: চলমান রোহিঙ্গা সংকট মোকাবেলা বিএনপি নেতারা বলছে সরকার ব্যর্থ হয়েছে, সেক্ষেত্রে আমাদের দেশের জনগণ, সরকার, প্রতিবেশী রাষ্ট্রের এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কি ভূমিকা রাখতে পারে বলে আপনি মনে করেন?
উত্তর: দেখুন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান তার জীবন দশায় ১৯৭৮সালে এই রোহিঙ্গা সমস্যা মোকাবেলা করেছেন। ১৯৯২ সালে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় তিনি প্রধানমন্ত্রী হয়ে এই পরিস্থিতি মোকাবেলা করেছেন। রোহিঙ্গা সেখান থেকে বিতাড়িত হচ্ছে। তাদের উপর অত্যাচার, নির্যাতন হচ্ছে। মানবিক কারণে তাদেরকে আমরা সহায্য সহযোগিতা করছি, আশ্রয় দিচ্ছি। ৭৮সালে কিন্তু আন্তর্জাতিক ভাবে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এবং ৯২ সালে খালেদা জিয়া আলাপ আলোচনা করে মিয়ানমারের ওপর চাপ সৃষ্টি করে এবং সেদেশের সরকারের সঙ্গে চুক্তি করে সম্মানের সঙ্গে রোহিঙ্গাদেরকে ফেরত পাঠিয়ে ছিলেন।
কিন্তু আমরা এখন আন্তর্জাতিকভাবে এই সরকারের কোন চাপ দেখছিনা। বরং রোহিঙ্গারা যখন বাংলাদেশে প্রবেশ করলো তখন এই আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকসহ অনেকে বলেছেন যে, তাদের সঙ্গে অস্ত্র গোলাবারুদ থাকতে পারে, এদের এখানে আশ্রয় দেওয়া যাবে না। বাধা দিয়েছেন এবং কি তাদেরকে তাড়িয়ে দেওয়ার ব্যবস্থাও করা হয়েছে। কিন্তু ইদানিং দেশের মানুষ বা বিএনপির পক্ষ থেকে আমরা যখন চাপ সৃষ্টি করেছি তখন তারা ঐ বক্তব্য থেকে সরে এসেছে।
প্রকৃত পক্ষে আন্তর্জাতিকভাবে এটা নিয়ে যে আলাপ আলোচনা করে যে সকল দেশ নেতিবাচক ভূমিকায় আছে তাদের সঙ্গে ব্যক্তিগত ভাবে গিয়ে সেখানে আলোচনার টেবিলে আলোচনা করা এবং চাপ সৃষ্টি করা তাদেরকে কনভিন্স করা সেই চেষ্টা খুব একটা হচ্ছে বলে আমরা দেখছি না। সুতরাং এই যে দুর্বল বা নতজানুনীতি এই নীতিই বলে ভবিষ্যতে তাদের ওপর চাপ ও সৃষ্টি হবে না এবং এদেরকে ফেরতও পাঠাতে পারবে বলে আমার মনে হয় না।
প্রশ্ন: আচার্য মহোদয় ডাকসু নিবাচন নিয়ে কথা বলেছেন, এই নিয়ে এখনো কোন কিছু দৃশ্যমান নয়, ডাকসু নিবাচন নিয়ে আপনি কি বলবেন?
উত্তর: অবশ্যই বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নেতৃত্বের প্রয়োজনে এবং ছাত্র রাজনীতির ভাবমূর্তি ফিরিয়ে আনার স্বার্থে ডাকসু নির্বাচন করা উচিত। ডাকসু নির্বাচন করার মধ্য দিয়েই সেখানে একটা নেতৃত্বের বিকাশ হবে। মেধার চর্চা হবে এবং একটা গণতান্ত্রিক প্রেক্ষাপট তৈরি হবে। এখান থেকে জাতীয় রাজনীতির শিক্ষণীয় অনেক কিছু রয়েছে এবং সেই জন্য শিক্ষাঙ্গণ অথবা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সর্বপ্রথম শিক্ষার পরিবেশকে নিশ্চিত করা এটা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বড় দায়িত্ব হয়ে দাঁড়াবে। যদি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ডাকসু নির্বাচন দেন অবশ্যই সেখানে সকল ছাত্র সংগঠন অংশ গ্রহণ করবে এবং বিশ্ববদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত করণে একটা সহাঅবস্থান তৈরি হবে। সেখানে মেধার চর্চা হবে। প্রতিযোগিতা হবে এবং সেখান থেকে সু্ষঠু স্বাভাবিক রাজনীতি হতে আবার নতুন করে অনেক ভূমিকা রাখবে। সেই জন্য ডাকসু নির্বাচন হওয়া উচিত।
প্রশ্ন: আপনার সংসদীয় আসনের পরিস্থিতি কি?
উত্তর: আমার আসনে আল্লাহর রহমতে দু’বারেই নির্বাচন করেছি। আমার এলাকার জনগণ আমাকে সমর্থন দিয়েছে। ইনশাআল্লাহ ভবিষ্যতেও যদি সুষ্ঠ নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় তাহলে তারা আমাকে ভোট দেবেন এবং বিএনপির প্রার্থীকে জয়ী করবেন বলে আমি বিশ্বাস করি।
No comments:
Post a Comment