Search

Tuesday, April 4, 2017

এটা গণতন্ত্রের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে

উবায়দুল্লাহ বাদল /   যুগান্তর

সরকার একের পর এক স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের বরখাস্ত করছে। গত সাড়ে তিন বছরে এ ধরনের পৌনে চারশ’ প্রতিনিধিকে বরখাস্ত করা হয়। গত এক সপ্তাহেই রাজশাহী ও সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়রসহ বিভিন্ন স্থানে এক ডজন জনপ্রতিনিধি বরখাস্ত হয়েছেন। আরও শতাধিক প্রতিনিধি বরখাস্ত হওয়ার আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। তারা শত শত মামলা মাথায় নিয়ে ঘুরছেন। এদের প্রায় সবাই সরকারবিরোধী রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি। রাজনৈতিকভাবে এদের ঘায়েল করার জন্যই এসব করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা দুর্বল হয়ে যাচ্ছে। এটা গণতন্ত্রের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট আইনের অপব্যবহার হচ্ছে। বিশেষ করে রাজশাহী, সিলেট ও সুনামগঞ্জের মেয়রকে দ্বিতীয় দফায় বরখাস্তের পর সরকারের মনোভাব নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হচ্ছে। সমালোচকদের মতে, সরকার বড় ধরনের ভুল করছে। এটা এখন বন্ধ করা উচিত বলে তারা মনে করছেন।

রাজনৈতিক ও আইন বিশ্লেষকরা বলছেন, সরকার সংশ্লিষ্ট আইনটি নিজেদের স্বার্থে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার জন্য ব্যবহার করছে। তারা এটিকে কালো আইন হিসেবে আখ্যায়িত করছেন। তাদের মতে, চূড়ান্ত সাজার আগেই জনগণের ভোটে নির্বাচিত প্রতিনিধিকে এ আইনের সুযোগ নিয়ে বরখাস্ত করা হচ্ছে। আইনের অজুহাত দেয়া হলেও সরকারের অগোচরে কিছু হচ্ছে না বলে তারা মনে করেন। তাদের মতে, নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিকে সাময়িক বা স্থায়ীভাবে পদচ্যুত করার মতো কাজ করে সরকার ভুল করছে। আগামী জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ওপর এ ভুলের বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে বলে তারা শঙ্কা প্রকাশ করেন।

রাজশাহী ও সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়রসহ নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের রাজনৈতিক বিবেচনায় নয়, আইন অনুযায়ীই বরখাস্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী (এলজিআরডি) ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন। রোববার বিদেশ যাওয়ার আগে তিনি বলেন, বেআইনিভাবে কাউকে বরখাস্ত করা হয়নি। আইন মেনেই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে রাজনৈতিক বিষয় বিবেচনায় নেয়া হয়নি। সরকার আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আইন অনুযায়ী আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

এ আইনের সংশ্লিষ্ট ধারাগুলোর তীব্র সমালোচনা করেছেন সংবিধান বিশেষজ্ঞ ড. শাহদীন মালিক। তিনি বলেন, আইনের ধারাগুলো সরকার খড়গ হিসেবে ব্যবহার করছে। এটি হাতে থাকলে যে কোনো জনপ্রতিনিধি সব সময় ভীতসন্ত্রস্ত থাকেন। তারা সরকারের নিয়ন্ত্রণে থাকতে বাধ্য। এ ধরনের আইনের সুযোগে রাজনৈতিক সরকারগুলোও সামরিক শাসকদের মতো নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের নিয়ন্ত্রণ করছে। এভাবে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলো শক্তিশালী করা সম্ভব নয় বলে তিনি উল্লেখ করেন। রাজনৈতিক ও আইন বিশ্লেষকদের মতে, প্রতিপক্ষকে দুর্বল করতে পরিকল্পিতভাবে স্থানীয় সরকার আইনের সংশ্লিষ্ট ধারা ব্যবহার করা হচ্ছে। নির্বাচিত প্রতিনিধির প্রতিপক্ষ এ কাজটি করছে। অনেক ক্ষেত্রে মিথ্যা বা কাল্পনিক অভিযোগ আনা হচ্ছে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে। সরকারি দলের প্রভাব খাটিয়ে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের অসাধু কর্মকর্তাদের দিয়ে তড়িঘড়ি চার্জশিট দেয়া হচ্ছে। এভাবে আইনের ফাঁকগুলো কাজে লাগিয়ে সুবিধা নিচ্ছে নির্বাচিত মেয়র বা চেয়ারম্যানের প্রতিপক্ষ। আদালত চার্জশিট আমলে নিয়ে অভিযোগ গঠন করলেই স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধিকে সাময়িকভাব বরখাস্ত করছে। এতে দুর্বল হয়ে পড়ছে স্থানীয় সরকার পর্যায়ের প্রতিষ্ঠানগুলো। অথচ সরকার এ ধরনের প্রতিষ্ঠানগুলো শক্তিশালী করার কথা বলে আসছে। কিন্তু বাস্তবে এর প্রয়োগ দেখা যাচ্ছে না। তাদের মতে, এভাবে নির্বাচিত প্রতিনিধিকে ক্ষমতাচ্যুত করা গণতন্ত্রের জন্য অশুভ, গণতন্ত্রের জন্য হুমকিস্বরূপ। তারা বলেন, একজন যে কোনো দলের পক্ষ থেকে নির্বাচনে অংশ নিতে পারে। জনগণ তাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করলে সেই ব্যক্তি আর দলের থাকে না। সে জনগণের হয়ে যায়। কিন্তু আইন নিজেদের মতো ব্যবহার করে সেই প্রতিনিধিকে বরখাস্ত করা হচ্ছে। তারা বলেন ভোটাররা ৫ বছরের জন্য প্রতিনিধি নির্বাচন করছেন। কিন্তু সেই প্রতিনিধির কোনো অপরাধ চূড়ান্তভাবে প্রমাণের আগেই তাকে বহিষ্কার করা হয়। অনেক সময় দেখা গেছে চূড়ান্ত বিচারে তাকে নির্দোষ হিসেবে খালাস দেয়া হয়। বিচার প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পর দেখা যায় ৫ বছরের মেয়াদ শেষ। সে ক্ষেত্রে তাকে ওই ৫ বছরের মেয়াদ ফিরিয়ে দেয়া হয় না। নির্বাচনে হেরে যাওয়ার পরও পদ দখল করার জন্য পরিকল্পিতভাবে এসব করা হচ্ছে বলে তারা মন্তব্য করেন।

এ বিষয়ে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার যুগান্তরকে বলেন, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে আইনের অপপ্রয়োগ হচ্ছে। প্রতিপক্ষকে দুর্বল করতে আইনের অজুহাতে এসব করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে জনগণের ম্যান্ডেটকে ভণ্ডুল করা হচ্ছে। এ ব্যবস্থা স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। এটা গণতান্ত্রিক চেতনার সঙ্গে সম্পূর্ণ সাংঘর্ষিক। সরকার এগুলো থেকে বিরত না হলে মানুষের মধ্যে অসন্তোষ বাড়বে এবং এর পরিণতি ভালো হবে না। বিষয়গুলো বুমেরাং হয়ে এক সময় সরকারের দিকেই ফিরে আসতে পারে। তিনি বলেন স্থানীয় সরকার ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করতে হলে এগুলো বন্ধ করতে হবে।

স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, চারজন সিটি কর্পোরেশনের মেয়র, ৩৫ পৌর মেয়র, ৫৬ কাউন্সিলর, উপজেলা চেয়ারম্যান ৪৯, ভাইস চেয়ারম্যান ৬৬, ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ৯১ ও মেম্বার ৭৪ সহ ৩৭৫ জন বরখাস্ত হয়েছেন গত সাড়ে ৩ বছরে। এদের অধিকাংশই বিএনপি-জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। ভোট কেন্দ্রে আগুন, গাড়িতে পেট্রুল দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে হত্যা, পুলিশের ওপর হামলাসহ রাজনৈতিক সহিংসতার মামলার আসামি তারা। এরা পদে বসতে না পারায় সেবা বঞ্চিত হচ্ছেন ওই এলাকার জনগণ। ব্যাহত হচ্ছে স্থানীয় সরকারের উদ্দেশ্য।

বিদ্যমান স্থানীয় সরকার (সিটি কর্পোরেশন), স্থানীয় সরকার (পৌরসভা), স্থানীয় সরকার (উপজেলা পরিষদ) এবং স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন অনুযায়ী কোনো জনপ্রতিনিধি যে কোনো ধরনের ফৌজদারি অপরাধে অভিযুক্ত হলে (আদালত কর্তৃক চার্জশিট গৃহীত হলে) কিংবা ওই প্রতিনিধি শারীরিকভাবে সক্ষমতা হারালে কিংবা পরিষদের সভায় পরপর তিনবার অনুপস্থিত থাকলে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় তাকে সাময়িক বরখাস্ত করতে পারে।

বিএনপির কেন্দ্রীয় আইনবিষয়ক সম্পাদক সানাউল্লাহ মিয়া যুগান্তরকে বলেন, ‘সারা দেশেই আমাদের সমর্থিত সিটি মেয়র, উপজেলা চেয়ারম্যান, পৌর মেয়র, ইউপি চেয়ারম্যানসহ জনপ্রতিনিধিরা বরখাস্ত হচ্ছেন। পরিকল্পিতভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মিথ্যা মামলায় অভিযোগপত্র দিয়ে এরই মধ্যে সাড়ে তিন শতাধিক জনপ্রতিনিধিকে বরখাস্ত করেছে ক্ষমতাসীন সরকার। আরও কয়েকশ’ জনপ্রতিনিধি বরখাস্ত হওয়ার আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।’ তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এর মাধ্যমে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোকে দুর্বল করা হচ্ছে। আগামী নির্বাচনে ভোটের মাধ্যমে এর দাঁতভাঙা জবাব দেবে জনগণ।

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান যুগান্তরকে বলেন, কোনো অপরাধে মামলা হলে তার শাস্তি হতেই পারে। কিন্তু বিরোধী পক্ষকে ঘায়েল করতে ও রাজনৈতিক ময়দান থেকে দূরে রাখতে মিথ্যা মামলা দেয়া ঠিক নয়। রাজনীতির এ চর্চা দীর্ঘদিন ধরে চলছে। এটি গণতন্ত্রচর্চার জন্য সুখকর নয়। স্থানীয় সরকার ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করতে চাইলে বিদ্যমান আইনের সংশ্লিষ্ট ধারার সুবিধা-অসুবিধাগুলো পুনর্মূল্যায়ন করতে হবে।

রোববার রাজশাহী ও সিলেট সিটি কর্পোরেশনের দুই মেয়রকে দ্বিতীয় দফায় বরখাস্ত করে স্থানীয় সরকার বিভাগ। উচ্চ আদালতের আদেশে রোববার মেয়রের দায়িত্ব নেয়ামাত্র আবারও বরখাস্ত হন রাজশাহীর মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন ও সিলেটের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। তবে সোমবার সিলেটের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর বরখাস্তের আদেশ স্থগিত করা হয়েছে। এছাড়া শনিবার দ্বিতীয় দফায় বরখাস্ত হন হবিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র জিকে গউছ।

এছাড়া একই দিনে বরখাস্ত হন মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলা চেয়ারম্যান মো. আমিরুল ইসলাম ও ভাইস চেয়ারম্যান জার্জিস হোসেন। সোমবারও বরখাস্ত হয়েছেন দিনাজপুরের ফুলবাড়ির মেয়র মুরতুজা সরকার মনিক ও ৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোতাহার আলী। ৩০ মার্চ বরখাস্ত হন চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন ও ফরিদপুরের সালথা উপজেলা চেয়ারম্যান ওয়াহিদুজ্জামান। এর আগে ২৩ মার্চ গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলা চেয়ারম্যান আবু কাউছার মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম, ভাইস চেয়ারম্যান আবু তালেব সরকার ও কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের অবশ্য দাবি করেছেন, বিএনপির দুই সিটি মেয়র ও এক পৌর মেয়রকে বরখাস্ত করা হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর অজ্ঞাতসারে। সোমবার ঢাকার ডেমরায় একটি সড়ক উদ্বোধনে গেলে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘মেয়র বরখাস্তের বিষয়টি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের। এ সিদ্ধান্ত নিশ্চয়ই স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় নিয়েছে। এর পেছনে যুক্তি কী, কারণ কী- এটা স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ভালো বলতে পারবে। তবে আমি যতটুকু জানি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বিষয়টি জানেন না।’

Thursday, March 23, 2017

Why India Should Play No Part In Rampal Power Plant

By Govind Kelkar, Regional Council Member, Asia-Pacific Forum on Women, Law and Development, and Neha Gupta, Information and Communications Officer, Asia Pacific Forum on Women, Law and Development

HuffPost India



The Sundarbans, one of the largest mangrove forests in the world and a UNESCO World Heritage site, currently faces irreversible threats posed by the construction of the proposed Rampal coal-fired thermal power plant in Bangladesh. This project will not only destroy an extraordinary rich and valuable ecosystem but also negatively affect the lives of millions local people, in particular, women. In deeply patriarchal Bangladesh, environmental degradation and climate change impacts are disproportionately felt by women.

Though the agreement for Rampal coal plant was first drawn up in August 2010 between the Indian government-owned National Thermal Power Corporation (NTPC) and Bangladesh Power Development Board, UNESCO's monitoring mission evaluated the impacts only in 2015. The mission reported that the plant would lead to increased pollution from wastewater, waste ash and coal ash. It also noted adverse impacts due to shipping, dredging, and industrial and infrastructure development, adding that the site lacked prior comprehensive evaluations on the effects of coastal development.

The Environmental Impact Assessment of the Rampal power plant proposal conducted by the government of Bangladesh stated that toxic gas levels will rise significantly, and the high presence of coal ash produced will increase the risk of hazardous and radioactive metals and chemicals within the project area. The Sundarbans mangrove, spread over 10,000 sq km of which 40% is located in India, is home to a complex ecosystem teeming with unique wildlife and provides livelihoods to over four million people in India and Bangladesh. In addition, losing the natural barriers provided by the Sundarbans would be detrimental. For years, residents of the coastal areas of West Bengal have attempted to combat the rising sea levels by creating dams and building mud- and stick-based embankments. However studies estimate it to be much more effective in the long run to restore and renew the Sundarbans mangroves to reinforce their roles as natural barriers.

In the past, Indian courts have successfully challenged energy projects that fail to fully assess environmental impacts. In December 2016, the National Green Tribunal withdrew environmental clearance of Welspun Energy's proposal for a 1320 MW thermal power plant project in Mirzapur, Uttar Pradesh. This decision was based on further evaluation of the project's implementation, which found that public hearings were held in hostile settings and that the final report had failed to disclose the existence of surrounding reserve forests and to assess the potential damage on the region's water flow. The NGT's decision to pull Welspun Energy's environmental clearance was also preceded by opposition from displaced farmers who outlined the various offenses of the project, including fraudulent land seizure and threats posed by increased pollution to protected animals, local landmarks, and on the health of students of a nearby university.

The Rampal power plant will be located only 14km away from the Sundarbans. While the law in Bangladesh does not specify limitations in geographical distance for power plants, Indian regulations prohibit the implementation of thermal power plants within a 25km radius of forests like the Sundarbans. Indian companies such as NTPC, BHEL and India Exim Bank have taken advantage of the lack of regulation by Bangladesh to move ahead in this project. This should serve as a moral and environmental dilemma for India. While on one hand, India disallows construction of such projects on its own territory, it aids the building of the environmentally damaging Rampal coal power plant in neighbouring Bangladesh.

Protests against the Rampal power plant proposal are already spreading throughout Bangladesh and are gaining national and international support from many feminist and civil society groups. A global day of protest was held early this year with demonstrators across major cities in Asia and Europe demanding to halt the project. In Dhaka, the protest march held by activists was shut down by police brutality and tear gas. The public opinion in Bangladesh is veering towards scrapping of the project.

Activists say that the construction of the plant will lead to widespread displacement, affecting marginalised communities living in the area, particularly women. In Bangladesh, women are responsible for providing food and water to the household, the availability of which will be severely diminished due to the pollution caused by the power plant. As a result, many people would be compelled to migrate and give up their homes, making displaced women particularly vulnerable to increased threat of gender-based violence and becoming victims of trafficking. India is no stranger to such issues and it would do well to listen to these voices and concerns.

Climate change is an alarming reality and should compel us to adopt tough decisions—the first of which being to stop investing in fossil fuel projects. While there is no denying that Bangladesh needs energy, it needs sustainable and clean energy that would benefit all segments of the population and challenge the status quo of corporate power that destroys our environment and violates women's human rights.

The Indian government has already decided to engage in the path of renewable energy domestically. Other governments in the region, including China, have adopted similar programs in response to the multiple co-benefits a fossil fuel free future can bring. Bangladesh also has embraced the path of clean energy, to such an extent that the World Bank has lauded its efforts and called it "a role model for solar power". By supporting community-owned renewable energy

initiatives, governments could add an environmentally sound feminist objective to their energy policies. Women are more likely to benefit from small-scale, renewable and sustainable energy initiatives. Those same initiatives can bring electricity to off-the-grid rural areas, enable energy democracy and increase gender equalities where local people, especially women and other marginalised groups, can make decisions over the use of their resources and energy needs.

To continue moving forward with the proposed plant in the Sundarbans would unnecessarily damage a shared, valuable and protected ecological site and neighbourly relations between both countries, when other viable options exist.


Tuesday, March 21, 2017

More from the bizarro world

By Habibul Islam

This commentary, obviously, follows from the one on the wacky desires of law enforcement that was posted on this site a few days back. It’s also a consequence of the seeming compulsion this blogger believes the junior minister for telecommunication—along with her powerful law enforcement officials—feels, namely, the Bangladesh administration must have some control on the social media platforms especially Facebook, for whatever reasons which, though, must be seductive enough for them to unrelentingly pursue just as a Scottish king is said to have learnt about perseverance from a spider.

The ostensible cause, it appears, is the “dreadful influence” that is being wielded via Facebook (FB) which in turn is heinously impacting on many people who in their turn are resorting to even more heinous actions. The professed obsession with Facebook—which doubtlessly will warm the cockles of M. Zuckerberg’s heart, and little wonder given that he and wife P. Chan feel they can afford to raise another child—of the junior minister and others in the Bangladesh administration would indicate that once the government can successfully bring Facebook under some degree of restraint this country would be free of all the various types of crimes, militancy, terrorism, et al.

But in this pursuit of exerting pressure on Internet outlets it clearly looks like we’ve been ignoring and overlooking more relevant realities. For instance to stem the tide of crimes the crime fighting machinery must function with some essential degree of efficiency, dedication, sophistication and fairness, among other factors, and just as importantly scrutinize the causes that are leading to those criminal incidents. In this context let us also look at another fact: In this nation’s avowed pledge to transform this country into a “digital” one we’ve evidently taken our eyes off the road.

As a consequence, according to a report of the Alliance for Affordable Internet, Bangladesh has gone down thirteen rungs in the Internet affordability drivers’ index among fifty-eight developing and least developed countries. This was caused, per the Alliance, due to the country’s slow progress in this sphere compared to the other nations. In the previous year Bangladesh occupied the 33rd place with a score of 39.13 while in the following year it slid to 46 with a score of 39.41 out of one hundred.

Against this backdrop lately there’s been much more talk of how the country’s authorities can oversee, control, and for all practical purposes administer Facebook for Bangladesh with the acquiescence of Facebook officials. Hence this fascinating report from a few days back: “Facebook has turned down a proposal to sign a memorandum of understanding on requiring national identity card or passport numbers/copies for Bangladeshis to open accounts on the social media website, Inspector General of Police AKM Shahidul Hoque said.” He also asserted that he told an FB manager, “[T]here must be some restrictions for opening a Facebook account.” Simply extraordinary, even if incredible.

A portion of the backdrop is also the fact that FB usually removes offensive materials if and when any government makes such a request (which, naturally, has to be grounded in reason). It also complies with other kinds of requests including deleting an account altogether if conditions so warrant. Bangladesh’s wish also elicited this reaction from Bangladeshi IT expert Sumon A. Sabir, as per a report, “I doubt if any other country had ever done this [made a similar request]….We were negatively portrayed when we blocked Facebook and some other social media sites in 2015.” Sabir also underscored that Facebook has a privacy agreement with its users and therefore it cannot breach at will. The last part evidently will ask for sophisticated thinking to comprehend.

Earlier news stories and administration pronouncements point to a remarkable reality, i.e. myriad government officials have been obsessing on FB for some time now and, as has been noted above, have exhibited extreme determination in their devoted efforts to get through to the FB management with different arguments. If FB wanted to accept all the expressed desires of the Bangladesh authorities, in all likelihood, they’d have to float a separate Facebook exclusively for the People’s Republic of Bangladesh. Wow. Wouldn’t that be something to crow about! Sophisticated thinking not required here.

What, apparently, government leaders have been missing are the proverbial woods for the metaphorical trees. While various categories of crimes have moved northward, while intelligence on “militants” and/or “terrorists” have been moseying way behind their seeming activities, while the streets of Bangladesh have become deadly beyond belief as hundreds of lives are being lost merely because truck and bus operators are neither qualified to be behind the steering wheel and nor do they have to fear the wrath of the law—the roster could get pretty boring if this commenter wanted to go on—administration luminaries have all too evidently been zeroing in on the superficial instead of investigating the causes.

We’re talking of actions and what pass for thoughts in a milieu in which rationally managing vehicular traffic is incontrovertibly beyond available capability, in which murders remain unsolved mainly due to muddled circumstances, in which abductions by personnel associated with the law enforcement apparatus are often denied with the blandest of countenances, in which persons normally prone to fumbling with the TV remote control have automatic arms at their disposal—plainly this roster too could be monotonously long. The truth however is, it’ll be immensely more constructive and productive to unbolt paths to inform, educate, elucidate and provide modern training to people needing them rather than shielding them from authenticity as if they’re retards.

Monday, March 20, 2017

বাংলাদেশের স্বাধীনতার অবস্থা কী দাঁড়াবে?

বদরুদ্দীন উমর 


বদরুদ্দীন উমর
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আসন্ন ভারত সফরের সময় দুই দেশের মধ্যে যে সামরিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার কথা, সেই চুক্তির (এমওইউ বা সমঝোতা স্মারক) খসড়ার পূর্ণ বিবরণ ইংরেজি দৈনিক The Independent-এ প্রকাশিত হয়েছে ১৩ মার্চ, ২০১৭ তারিখে প্রথম পৃষ্ঠার প্রথম খবর হিসেবে।

ধরে নেয়া যেতে পারে, চুক্তির এই খসড়া তারা সরকার থেকে পেয়েছে। অর্থাৎ এটি সরকারের তরফ থেকে তাদের কাছে দেয়া হয়েছে। লক্ষ করার বিষয়, অন্য কোনো পত্রিকায় এই চুক্তির পূর্ণ বিবরণ প্রকাশিত হয়নি অর্থাৎ তাদের এটা দেয়া হয়নি। The Independent শিল্পপতি সালমান রহমানের মালিকানাধীন পত্রিকা এবং সালমান রহমান হলেন শেখ হাসিনার অন্যতম প্রধান উপদেষ্টা। কাজেই বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে শুধু এই পত্রিকাটিতে কেন এ চুক্তির বিস্তারিত বিবরণ প্রকাশ করার জন্য দেয়া হল, এটা ভেবে দেখার বিষয়। একে তাৎপর্যহীন মনে করার কারণ নেই। হতে পারে এটা এক কৌশলগত সিদ্ধান্ত।

বাংলাদেশ দীর্ঘদিন চীনের থেকে সামরিক অস্ত্রশস্ত্র কিনে থাকে। বাংলাদেশের সেনাবাহিনী চীনের তৈরি অস্ত্রশস্ত্র ব্যবহারেই অভ্যস্ত। তাছাড়া চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক গাঁটবন্ধন বেশ শক্তিশালীই বলতে হবে। চীন যে পরিমাণ অর্থ বাংলাদেশকে ঋণ হিসেবে দিয়েছে এবং দিয়ে যাচ্ছে, তার ওপরই বাংলাদেশের অধিকাংশ উন্নয়নমূলক ও সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ প্রজেক্টগুলো নির্ভরশীল। কিছুদিন আগে চীনের প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশে সফরে আসার সময় যে বিশাল অঙ্কের ঋণ ও সাহায্য বাংলাদেশকে দেয়ার জন্য চুক্তি করেছে, ভারতের থেকে পাওয়া ঋণের পরিমাণ তার কাছে তুচ্ছ। এদিক থেকে বিবেচনা করলে ভারতের চাপে বাংলাদেশের পক্ষে তাদের সঙ্গে সামরিক চুক্তি সম্পাদন কোনো সুখের ব্যাপার নয়। এর দ্বারা চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের সম্ভাব্য অবনতির বিষয়টি অগুরুত্বপূর্ণ মনে করার কারণ নেই। এ কারণে সরকারের মধ্যেই ভারতের প্রস্তাবিত সামরিক চুক্তিতে বাংলাদেশের আবদ্ধ হওয়ার বিরোধিতা আছে। এই বিরোধিতার চাপ নিশ্চয়ই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর আছে। কাজেই তার আসন্ন সফরে জনগণের মধ্যে ভারতের সঙ্গে সামরিক চুক্তির বিরোধিতাও যে আছে, এ বিষয়টি সামনে আনার জন্যই সরকারের নিজস্ব লোকের মালিকানাধীন পত্রিকাটিতে এই চুক্তির বিবরণ প্রকাশ বা ফাঁস করা হয়ে থাকতে পারে।

ভারত কর্তৃক প্রস্তাবিত যে সামরিক চুক্তিটি বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক স্বাক্ষরিত হতে পারে, The Independent পত্রিকায় প্রকাশিত তার বিবরণের দিকে তাকালেই বাংলাদেশের জন্য এর ভয়ঙ্কর ক্ষতিকর দিকটি খুব সহজেই চোখে পড়বে। বর্তমান বাংলাদেশ সরকার ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকে একতরফাভাবে ভারতকে অনেক রকম সুযোগ-সুবিধা দিয়ে এসেছে। কিন্তু তার বিনিময়ে বাংলাদেশ ভারত সরকারের থেকে কিছুই পায়নি। মনমোহন সিংয়ের কংগ্রেস সরকার এবং এখন নরেন্দ্র মোদির বিজেপি সরকার তিস্তার পানির হিস্যা বাংলাদেশকে দেয়ার কোনো ব্যবস্থা করেনি। এক্ষেত্রে শুধু আশ্বাস ছাড়া তারা বাংলাদেশকে কিছুই দেয়নি। কাজেই বাংলাদেশ পানির অভাবে কৃষিসহ পরিবেশ ইত্যাদির দিক থেকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। কিন্তু বাংলাদেশ সরকারের এমনই অবস্থা যে, ভারতের এই অবন্ধুসুলভ আচরণ সত্ত্বেও তাদের সুযোগ-সুবিধা দেয়ার ক্ষেত্রে সবকিছুই করেছে। ভারতকে বাংলাদেশ সমুদ্র ও নৌবন্দর ব্যবহার করার অনুমতি দিয়েছে। জনগণের প্রবল বিরোধিতা সত্ত্বেও তাদের পরিবহনের সুবিধা দিয়েছে। ভারত নিজের সুন্দরবন অঞ্চল রক্ষার জন্য নানা ব্যবস্থা গ্রহণ করলেও তাদের সঙ্গে বাংলাদেশের সুন্দরবন অংশে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের চুক্তি করেছে। ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে বাংলাদেশের নাগরিকদের বিএসএফ বেপরোয়াভাবে হত্যা করে চলা সত্ত্বেও বাংলাদেশ সরকার ভারত সরকারকে এ কাজ থেকে বিরত করার জন্য প্রকৃতপক্ষে কোনো পদক্ষেপই গ্রহণ করেনি। বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়েও ভারত নানাভাবে হস্তক্ষেপ করছে। এসব সত্ত্বেও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী এখন দিল্লি যাচ্ছেন ভারতের সঙ্গে এমন এক সামরিক চুক্তি করতে, যার ফলে বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা বিষয়ে ভারত কর্তৃক সবকিছু জানার ব্যাপারে আর কোনো বাধা থাকবে না! ‘বন্ধু দেশ’ হিসেবে ভারত এর পর থেকে বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে প্রায় নিয়ন্ত্রকের ভূমিকায় চলে যাবে। ভারত সরকারের কোনো কোনো মুখপাত্র বলছেন, বাংলাদেশের সঙ্গে ভারত ছাড়া আর কোনো দেশেরই সীমান্ত নেই, যে কারণে বাংলাদেশের বড় ধরনের কোনো সামরিক বাহিনীর প্রয়োজন নেই! অন্যদিকে আসন্ন ভারত-বাংলাদেশ সামরিক চুক্তির সঙ্গে ভারত বাংলাদেশকে ৫০ কোটি ডলার ঋণ দেয়ার প্রস্তাব করেছে তাদের কাছ থেকে সামরিক অস্ত্রশস্ত্রসহ বিভিন্ন সামরিক সরঞ্জাম কেনার জন্য! একে এক ভেল্কিবাজি ছাড়া আর কী বলা যায়?

সরকারি সূত্র অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রীর আসন্ন সফরের সময় তিস্তার পানি বণ্টন সম্পর্কিত কোনো চুক্তি দুই দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত হওয়ার সম্ভাবনা নেই (The Independent, 13.03.2017)। অথচ বাংলাদেশের জন্য তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তিই হল সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ প্রয়োজন। ভারত সরকার যে বাংলাদেশের প্রয়োজনের ব্যাপারে স্বার্থবুদ্ধিসম্পন্ন, এর থেকে তার বড় প্রমাণ আর কী আছে? এবং বাংলাদেশ যে ভারতের ওপর এ নিয়ে চাপ সৃষ্টির কোনো ক্ষমতাই রাখে না, তিস্তার পানির হিস্যা আদায়কে ভারত সরকারের সঙ্গে অন্যান্য চুক্তির পূর্বশর্ত হিসেবে দরকষাকষি করতে সম্পূর্ণ অক্ষম, এই সত্যও এর দ্বারাই প্রমাণিত হয়। এর থেকে সহজেই প্রমাণিত হয়, ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারতের স্বার্থই প্রধান বিবেচ্য বিষয়!!

তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা বাংলাদেশের পাওয়ার কোনো সম্ভাবনা না থাকলেও প্রধানমন্ত্রীর আসন্ন ভারত সফরের সময় দুই দেশের মধ্যে বেশ কিছু নানা ধরনের চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে। এই বিপজ্জনক ব্যর্থতা আড়াল করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর সফরের ‘সাফল্য’ সম্পর্কে বলা হচ্ছে যে, এ সফরে নয়াদিল্লি গিয়ে তিনি স্বয়ং ভারতের রাষ্ট্রপতির প্রাসাদে থাকবেন, যে সম্মান পূর্ববর্তী কোনো বাংলাদেশী প্রধানমন্ত্রীকে দেয়া হয়নি (The Independent, 13.03.2017)। দেশের স্বার্থ রক্ষা ও ‘সম্মানবোধের’ এটাই যদি নমুনা হয়, তাহলে তুচ্ছ ‘সম্মান’ লাভ করে দেশের স্বার্থ জলাঞ্জলি দেয়া আর কাকে বলা যাবে?

এবার আসা যেতে পারে প্রধানমন্ত্রীর সফরের সময় ভারত-বাংলাদেশ সামরিক চুক্তির একটু বিস্তারিত বিবরণে। বাংলাদেশের তিন দিকে ভারতের সীমানা। প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের দুটি নতুন সাবমেরিন কমিশন করা উপলক্ষে বলেছেন, বাংলাদেশ একটি শান্তিপ্রিয় দেশ। কিন্তু কোনো দেশ তাকে আক্রমণ করলে তার উপযুক্ত জবাব দেয়া হবে (The Independent, 13.03.2017)। এই সম্ভাব্য দেশ কোনটি। চীন নিশ্চয় নয়। তার কারণ চীন থেকে সাবমেরিন কিনে সেগুলোর কমিশন উপলক্ষেই এ কথা বলা হচ্ছে। মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক চুক্তির পর তাদের মধ্যে যুদ্ধের কোনো ব্যাপার নেই। তাছাড়া বাংলাদেশ আক্রমণ করে মিয়ানমারের কোনোই লাভ নেই। এ অবস্থায় বাকি থাকে ভারত, যার দ্বারা বাংলাদেশের তিন দিক পরিবেষ্টিত। কিন্তু বাংলাদেশ ভারতের সঙ্গে যে সামরিক চুক্তি করতে যাচ্ছে সেই পরিপ্রেক্ষিতে ভারত কর্তৃক বাংলাদেশ আক্রান্ত হওয়া এক হাস্যকর ব্যাপার ছাড়া আর কী? এ অবস্থায় প্রধানমন্ত্রীর উপরোক্ত বক্তব্যকে একটি ফাঁকা ও অর্থহীন কথা ছাড়া আর কী বলা যেতে পারে? ভারত-বাংলাদেশ সম্ভাব্য সামরিক চুক্তির দিকে তাকালে এ বিষয়ে অন্যকিছু ভাবার অবকাশই নেই।

এই চুক্তিতে যা থাকছে তা হল- ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা শিল্প, স্পেস টেকনোলজি, টেকনিক্যাল সহযোগিতা এবং সমুদ্র অবকাঠামো ক্ষেত্রে সহযোগিতা। উভয়েই একে অন্য দেশে সমরিক প্রতিনিধি দল পাঠানোর বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। উভয় দেশ ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা, সামরিক বিশেষজ্ঞ বিনিময়, ট্রেনার ও পর্যবেক্ষক, সামরিক বিষয়াদি সম্পর্কে তথ্য বিনিময় করবে। সামরিক সরঞ্জাম তদারকি, চিকিৎসা, খেলাধুলার ব্যবস্থা করবে। দুর্যোগ মোকাবেলার ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণ ও ত্রাণ ব্যবস্থায় সহযোগিতা করবে। আর্মি, নৌবাহিনী, বিমান বাহিনীতে স্টাফ পর্যায়ে উভয় দেশ আলোচনার ব্যবস্থা করবে। আলোচনার মাধ্যমে সামরিক বিষয়ে সমস্যার সমাধান করবে। উভয় দেশের সামরিক বাহিনী নিজেদের মধ্যে বার্ষিক আলোচনার ব্যবস্থা করবে। উভয়পক্ষ একই সময়ে সামরিক জাহাজ ও বিমান বাহিনীর সফরের ব্যবস্থা করবে। আন্তর্জাতিক সীমান্তে যৌথ পাহারা ও নজরদারির ব্যবস্থা করবে। উভয় দেশ যৌথ উদ্যোগে সামরিক শিল্প ক্ষেত্রে সহযোগিতার ব্যবস্থা করবে। উভয় দেশ আলাপ-আলোচনার ভিত্তিতে বিভিন্ন নীতি ও জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ে পরস্পরকে সহযোগিতা করবে। সামরিক বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, গবেষণা ইত্যাদি ক্ষেত্রে সফরের মাধ্যমে বিজ্ঞানী, প্রকৌশলীদের বিজ্ঞান-প্রযুক্তি বিষয়ে তথ্য বিনিময় ও ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করা হবে। সামরিক বাহিনীর প্রিন্সিপ্যাল স্টাফ অফিসার (চঝঙ) ও দেশরক্ষা সচিব পর্যায়ে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে আলোচনা হবে প্রস্তাবিত চুক্তি বাস্তবায়নের বিষয়ে (The Independent, 13.03.2017)।

এছাড়া আরও অনেক বিষয় আছে যার বিস্তারিত বিবরণ এখানে দেয়া সম্ভব নয়। কিন্তু এসব চুক্তি অনুযায়ী ভারত সরকার বাংলাদেশের দেশরক্ষা বিষয়ে এমন কোনো ক্ষেত্র নেই যেখানে হস্তক্ষেপ করবে না। এমন কোনো সামরিক তথ্য থাকবে না, যার খবর ভারত সরকারের অজানা থাকবে। এই চুক্তিতে ‘উভয় দেশ’, ‘উভয় দেশ’ বলে যা কিছু বলা হয়েছে তা অর্থহীন। কারণ ভারত বাংলাদেশে যা করবে বাংলাদেশের পক্ষে ভারতে সেটা করা সম্ভব হবে, এটা চিন্তা করা সম্পূর্ণ অবাস্তব ও চরম দেউলিয়াপনা ছাড়া আর কিছু নয়। দুনিয়াতে শক্তিশালী ও দুর্বল দেশের মধ্যে যেসব সামরিক চুক্তি হয় তার প্রতিটিতেই ‘উভয় দেশের’ কথা বলা হলেও সব সুবিধা সব সময় শক্তিশালী দেশই পেয়ে থাকে। ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে প্রস্তাবিত এই সামরিক চুক্তিও এদিক থেকে ব্যতিক্রম নয়। কাজেই এই চুক্তি আগামী মাসে দিল্লিতে স্বাক্ষরিত হলে বাংলাদেশের স্বাধীনতার অবস্থা কী দাঁড়াবে? যা দাঁড়াবে সেটা অতি মূর্খ ও বোকার পক্ষেও বোঝা খুব সহজ।

১৫.০৩.২০১৭
বদরুদ্দীন উমর : সভাপতি, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল


Sunday, March 19, 2017

অপপ্রচার আর কত?


শওকত মাহমুদ

কানাডীয় সরকার বিএনপিকে সন্ত্রাসী দল মনে করে না – এই চাঞ্চল্যকর তথ্যটি জানিয়েছেন কানাডা প্রবাসী অনুসন্ধানী সাংবাদিক মোহাম্মদ আল বোখারী। শনিবার, মার্চ ১১, বাংলাদেশের দৈনিক ‘আমাদের অর্থনীতি’ পত্রিকায় প্রকাশিত এক রিপোর্টে ফ্যাসিবাদী সরকারের অপপ্রচারে দারুণ এক চোট দিলেন তিনি। 

গত ২৫ জানুয়ারি কানাডার একটি ফেডারেল কোর্ট এক রায়ে বাংলাদেশের এক নাগরিকের শরণার্থীর আবেদন প্রত্যাখ্যান করে এবং সেখানে বিএনপি ও আওয়ামীলীগকে সন্ত্রাসী দল হিসেবে উল্লেখ করে বলে খবরে প্রকাশ হয়। আবেদনকারী নিজেকে জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের কর্মী হিসেবে উল্লেখ করে এবং বিএনপি সন্ত্রাসী তৎপরতা চালায় এই কথাও তার আবেদনে ছিল। ঐ রায়টি ছিল একজন শরণার্থীর আবেদন মঞ্জুর সংক্রান্ত যেখানে বিচারক নন বরং শরণার্থী অবিশ্বাস্যজনক ও আত্মঘাতী প্রক্রিয়ায় নিজের দলকে একটি সন্ত্রাসী দল বানিয়েছে। এই আবেদনকারী কোনও ভাবেই বিএনপির সাথে যুক্ত নয় বা ছিলও না। যা হোক এরপর আওয়ামী-মিডিয়া প্রচারে নেমে পড়ে যে বিএনপি যে সন্ত্রাসী দল কানাডার আদালতের রায়ে প্রমাণিত হয়ে গেছে। নিজেদের কথাটি চেপে যায়। আসলেই বিএনপিকে কানাডীয়রা সন্ত্রাসী দল মনে করে কি না তা নিশ্চিত হতে  মোহাম্মদ আল বোখারী গত কয়েক দিন ধরে কানাডার প্রধানমন্ত্রী, এটর্নি জেনারেল, জননিরাপত্তা মন্ত্রণালয়, অভিবাসন মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশের কানাডিয়ান রাষ্ট্রদূতের কার্যালয়, কানাডার ফেডারেল কোর্টের প্রধান বিচারপতির প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও মিডিয়া বিষয়ক লিগ্যাল কাউন্সিলের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এতে জননিরাপত্তা বিষয়ক মন্ত্রীর মুখপাত্র বোখারীকে পরামর্শ দেন মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে ৫৩টি সন্ত্রাসী সংগঠনের তালিকা দেখার জন্য। তাতে বিএনপির কোনও নাম নেই। তাছাড়া ঐ কেইসে বিএনপি কোনও পক্ষই ছিল না।

আগেও দেখা গেছে, পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই বেলুচিস্থান ন্যাশনালিস্ট পার্টি ( বিএনপি)-কে নির্বাচনের সময় টাকা দিয়েছে মর্মে খবর প্রকাশ হলে দিল্লিতে কর্মরত দুই বাংলাদেশী সাংবাদিক অপপ্রচার শুরু করে যে, আইএসআই বিএনপি ( বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট পার্টি )-কে টাকা দিয়েছে। বাংলাদেশী সরকারি সংস্থা বাসসও এই মিথ্যা খবরটি বিএনপির বিরুদ্ধে প্রচার করেছিল। পরে তা থিতিয়ে যায়। বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলকে ভুয়া তথ্য দিয়ে একবার রেড এলার্ট জারি করা হয়েছিল, কিন্তু অনুসন্ধানের পর ইন্টারপোল সে রেড এলার্ট প্রত্যাহার করে নেয়।

আর কত? বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপি বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাতে চালাতে আওয়ামীলীগ নিজেই অভিশপ্ত হয়ে পড়েছে। আর অত্যাচারের অভিশাপ তো আছেই।

সুরা হুজুরাত আয়াত ৬-এ সর্বশক্তিমান আল্লাহ্ বলেছেন, “হে বিশ্বাসীগণ! যদি কোন ফাসেক তোমাদের কাছে কোনও খবর আনে তোমরা তা পরীক্ষা করে দেখবে, যাতে অজান্তে তোমরা কোনও সম্প্রদায়কে আঘাত না করে বসো এবং পরে তোমাদের কাজের জন্য তোমরা লজ্জা না পাও।” 
  • লেখক সাংবাদিক ও রাজনীতিবিদ।

‘পানির কথা বলতে ভুলে যাবার গল্প’ কোথায় পেলেন?

মারুফ কামাল খান সোহেল

দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে শেখ হাসিনার অভিযোগের অন্ত নেই। সম্প্রতি এক বক্তৃতায় শেখ হাসিনা একগাদা অভিযোগ করেছেন। তার মধ্যে একটা অভিযোগ হলো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ভারত সফরে গিয়ে বেগম জিয়া নাকি পানির কথা বলতে ভুলেই গিয়েছিলেন।
 
প্রধানমন্ত্রী হিশেবে বেগম খালেদা জিয়ার ভারত সফর শেষে দু’দেশের পক্ষ থেকে ২৮ মে, ১৯৯২ তারিখে প্রকাশিত যৌথ ইশতেহার নিচে দেয়া হলো। এতে দেখা যায় পানি বন্টন, স্থল ও নৌসীমা বিরোধ, তালপট্টি, চাকমা বিদ্রোহী শরণার্থী ও তিন বিঘা করিডোর হস্তান্তর সহ গুরুত্বপূর্ণ সকল বিষয় নিয়ে বিশদ আলোচনা হয়েছিল।

তাহলে পানির কথা বলতে ভুলে যাবার গল্প শেখ হাসিনা কোথায় পেলেন? তিনি কি সব ব্যাপারে এমন সত্য(!) তথ্যই তুলে ধরেন?

Joint communiqué issued at the end of the visit of the Bangladesh  Prime Minister Begum Khaleda Zia to India.

New Delhi, May 28, 1992.

At the invitation of His Excellency Mr. P.V. Narasimha Rao, Prime Minister of the Republic of India, Her Excellency Begum Khaleda Zia, Prime Minister of the People’s Republic of Bangladesh paid a State visit to India from May 26-28, 1992.

During her visit, the Prime Minister of Bangladesh called on His Excellency Shri R. Venkataraman, President of India, and His Excellency Dr. S.D. Sharma, Vice-President.

The Prime Ministers held comprehensive and wide-ranging discussions covering international, regional and bilateral issues in an atmosphere of friendship, harmony and cordiality.

Reviewing the recent momentous and unprecedented changes in the international situation, they expressed satisfaction at the more positive developments and expressed the hope that these would be built upon in the interest of the international community as a whole. The end of the cold war, dissolution of sharp ideological clevages and renewed emphasis on resolution of differences through peaceful means, would hopefully result in a world order based on equity, justice and cooperation. They called for a simultaneous democratisation of international relations and a greater thrust on alleviation of poverty. The decision making organs of the U.N. which were sought to be invested with greater active responsibility, must enjoy wider representation and reflect the collective opinion of its membership.

The Non-aligned Movement based on its abiding principles of independence of judgement and freedom of action, and its emphasis on equitable international economic development, has come to acquire a renewed relevance in the light of these developments.

The two Prime Ministers reiterated their belief that SAARC represents the faith and aspiration of the countries of South Asia to enhance regional cooperation in the interest of greater understanding and well-being of the peoples of the region. Towards this end, they felt that a further momentum should be given to SAARC activities in the core areas of economic cooperation. The two leaders felt that the Seventh SAARC Summit to be held in Dhaka at the end of this year assumes special significance as the beginning of the second cycle of SAARC Summits and expressed the hope that it would not only lead to the consolidation of the past achievements and would also identify new meaningful avenues to achieve its objectives.

The two leaders expressed their determination to further consolidate the friendly, harmonious and good neighbourly relations between Bangladesh and India, in the larger interest of the peoples of the two countries and of peace and stability in the region. A significant opportunity was now available for the purpose based on the mandate of the people.

Both sides noted with satisfaction the recent Exchange of Letters regarding the modalities for implementation of the terms providing for right of passage for Bangladesh citizens through Tin Bigha area which will become effective from June, 26, 1992.

Based on this understanding, it was agreed that efforts should be intensified to resolve the other outstanding issues emanating from the India-Bangladesh Land Boundary Agreement of 1974. It was also agreed that discussions on delimitation of the Maritime Boundary would be resumed at an early date. Moreover, they I noted the need for discussions in due course concerning the question of New Moore/South Talpatty Island for an in-depth examination on the basis of all relevant facts and principles.
THE TWO PRIME MINISTERS NOTED THAT DUE TO GROWING NEED FOR WATERS, THE FLOWS AVAILABLE IN THE GANGA/GANGES AND TEESTA WOULD FALL SHORT OF THE REQUIREMENTS OF THE TWO COUNTRIES PARTICULARLY DURING THE LEAN SEASON. THEY AGREED THAT AN EQUITABLE, LONG-TERM AND COMPREHENSIVE ARRANGEMENT FOR SHARING THE FLOWS OF THESE AND OTHER MAJOR RIVERS EVOLVED THROUGH MUTUAL DISCUSSIONS WOULD SERVE THE BEST INTEREST OF THE PEOPLES OF THE TWO COUNTRIES. THEY DIRECTED THEIR MINISTERS CONCERNED TO MAKE RENEWED ENDEAVOURS FOR ACHIEVING AN ACCEPTABLE SETTLEMENT INCLUDING THE INTERIM ARRANGEMENTS FOR SHARING THE DRY SEASON FLOWS ON THE GANGA/GANGES IN THE MEANWHILE. THE PRIME MINISTER OF INDIA ASSURED THAT EVERY POSSIBLE EFFORT WILL BE MADE TO AVOID UNDUE HARDSHIP TO BANGLADESH BY SHARING THE FLOWS IN GANGA/GANGES AT FARAKKA ON AN EQUITABLE BASIS. THE CONCERNED MINISTERS OF THE TWO SIDES WILL MEET FOR THIS PURPOSE ON AN URGENT BASIS.

In the meanwhile, joint monitoring of releases at Farakka and the Teesta barrage, and observations on the flows of the major rivers into Bangladesh will be revived and undertaken immediately.

Taking into account the problems being caused due to large-scale illegal immigration of people across their borders, they expressed their determination to stop illegal movement of people across the border by all possible means including the strengthening of existing arrangements and mutual co-operation in this regard.
 
Both sides resolved to take effective measures in order to maintain peace and tranquility all along the border and to refrain from unfriendly activity.

The two Prime Ministers agreed to arrange speedy repatriation of all Chakma refugees to Bangladesh in full safety and security. In this context, the Bangladesh side agreed to set up a representative political-level Committee that would encourage the refugees to return. The Indian side assured that its authorities would cooperate fully in the process of repatriation.

The two Prime Ministers directed that special focus should be placed on increasing and diversifying trade and economic cooperation between the two countries. They agreed that the authorities concerned would meet at an early date, preferably August/September 1992, to hold Trade Review Talks with a view to renewing the existing Trade Agreement. They agreed that the Joint Economic Commission between the two countries should meet in October 1992. Existing cooperation in the fields of Culture, Education, Information and Defence could also be expanded.

The Prime Minister of Bangladesh expressed her appreciation to the Prime Minister, the Government and the people of India for the warm welcome and hospitality extended to her and the members of her delegation during their stay in India.

The Prime Minister of Bangladesh extended an invitation to the Prime Minister of India to visit Bangladesh. The invitation was accepted with pleasure.

লেখক: সাংবাদিক ও বিএনপি চেয়ারপার্সন’র প্রেস সচিব। 

উৎসঃ বিএনপি বাংলাদেশ  

Wednesday, March 15, 2017

A wish list from the bizzaro world


By Habibul Islam



It definitely looks like law enforcement in Bangladesh is going through a phase that maybe described as mid-life crisis. That’s the time when people—especially men, we’re told, but lots of women too though theirs are somewhat different—say, do, think, whatever, bizarre stuff. 

According to one expert (needless to elaborate, there are innumerable of them around the world) there are 14 signs of this often-hyped crisis, and here they are:
1.Buying a Sports Car. 2. Drastic Changes in Habits, Mood Swings, and Impulsive Decision-Making. 3. Shifts in Sleeping Habits.4. Obsession with Appearances. 5. Disconnecting from Old Friends, and Replacing Them with Younger Friends. 6. Feeling Tied Down, with No Chance for Change. 7. Thoughts of Death or Dying. 8. Changing Careers. 9. Leaving a Spouse or Having an Affair. 10. Bouts of Depression. 11. Increased Consumption of Alcohol or Drugs. 12. Listless and Bored.13. Assigning Blame. 14. Recent Traumas.

While an ordinary mortal’s crisis may not coincide or even seem similar to those of the law enforcement entities, the critical point to note is the strangeness of the desires or wishes. As a footnote it can be added that at least a few of the signs appear creepily close to those experienced by those who maybe described as leading a “civilian life” of a mere citizen.

Anyhow, as it may be. Not too long back some from law enforcement expressed the plea—and that too right to the prime minister of the country—that they should be relieved from all strictures related to torturing/tormenting persons arrested by them and in their control. We shall leave the prime minister’s reaction to speak for itself since no clarification is required.

The latest demand of the law enforcing leadership relates to becoming a Facebooker. (Just a point of personal disclosure: This commenter has never been registered with the aforementioned Facebook and most certainly has no intention whatsoever to do so anytime in the future. One particular reason: With so much prying into an individual’s life, why bother?) Simply stated this is what law officials desire: Intending Bangladeshis should disclose their National Identification while signing up with Facebook.

It has been noted in various forums and publications that this country’s law enforcement mechanism and general guidelines, apart from upgraded training, need urgent reconsideration—even if the top brass could be feeling that since they’re functioning to help, assist and abet the political power, nothing else but only preserving the powers that be in a pleasant frame of mind matters; and apparently there’s ample evidence to bolster that conclusion.

More than clearly as events have shown, law enforcement units seem to be in need of being sensitized to the realities of the world—and that holds true for numerous other such organizations in numerous other countries too—including a modicum about the rights of citizens and the duties of law enforcement toward them, the state of the world since the time the Brits left these shores, and that professionalism will serve a lifetime but not pseudo-political pronouncements.

These, among other necessary measures, may ultimately succeed in instilling in the relevant persons that asking for a total and comprehensive control of people’s life would appear to make things easier for the law enforcers (au contraire, if no acquiescence comes then it’ll provide them with materials to explain away any inadequacy) but it could very well lead to a contrary impact; and it certainly would not go down well with the citizens whom, it perhaps might be added, the law is supposed to protect, serve and defend.
ENDS

Sunday, March 12, 2017

গ্যাসের দাম বৃদ্ধি, চরম বিপর্যস্ত হবে অর্থনীতি

জি কে সাদিক 

গত ২৩ ফেব্রুয়ারি হঠাৎ করেই কোন যুক্তিসঙ্গত কারণ ছাড়াই গ্যাসের দাম বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। অনেকটা স্বেচ্ছাচারিতার মতো কাজ। সুবিধাভোগী গুটি কয়েক লোক ছাড়া সুশীল সমাজ এটার সম্পূর্ণ বিরোধিতা করে আসছে শুরু থেকেই। দেশ পরিচালনা করতে হবে দেশপ্রেম ও  জনস্বার্থের উপকারের জন্য বা জনকল্যাণের উদ্দেশ্যে। গ্যাসের ব্যাপারে এমন হঠকারী সিদ্ধান্ত ঠিক কী কারণে নেয়া হয়েছে তার কোন যৌক্তিক কারণ খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। আর সরকার পক্ষ থেকে কোন যৌক্তিক কারণও দর্শানো হয়নি। যুক্তিগত কোন কারণ ছাড়া গ্যাসের দাম বৃদ্ধি দেশ বা জাতির জন্য কোন ধরণের কল্যাণ বয়ে নিয়ে আসবে? কল্যাণ হবে না অকল্যাণ হবে তার মোটামুটি এখন সবার জানা। তবে এটা বুঝি দেশ পরিচালকদের বুঝা হচ্ছে না। নাকি তারা বুঝেও কোন কারণে না বুঝার ভান করছে তা বুঝা বড় দায় হয়ে পড়েছে। গ্যাসের এমন অপরিকল্পিত ভাবে দাম বৃদ্ধি যে দেশের অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব ফেলবে তা আর ব্যাখ্যা করে বলার দরকার নেই। এখন কথা হলো কী এমন বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হবে যার জন্য সুশীল সমাজসহ সব ধরণের রাজনৈতিক সংগঠন সমূহ এর বিরুদ্ধে জোর প্রচারণা চালাচ্ছে।

গ্যাসের দাম বৃদ্ধির ফলে আমাদের অর্থনীতিতে ও দেশে এক চরম অরাজকতার সৃষ্টি হবে। গ্যাসের দাম বাড়ার ফলে শিল্প-কারখানাগুলোর উৎপাদনে নানা বিধি সমস্যার সৃষ্টি করবে এবং কর্মসংস্থান বন্ধ হওয়ার এক মহা হিড়িক পড়বে। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই বলা যায় যে, দেশে বেকারত্ব বৃদ্ধি পাবে এবং নানাবিধ অর্থনৈতিক ও সামাজিক সমস্যার সৃষ্টি হবে। পরিবহনে যে নৈরাজ্য চলছে সে নৈরাজ্য বৃদ্ধির এক নতুন ইন্ধন যোগাবে এই গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি। গ্যাস শহরে রান্নার একমাত্র উপকরণ বলা চলে। ৬০ শতাংশ দাম বাড়ার ফলে সিঙ্গেল চুলা ৬০০ টাকার পরিবর্তে ৯০০ টাকা হবে আর ডাবল হবে ৬৫০ এর স্থলে ৯৫০ যা স্বাভাবিক জীবন যাত্রার ব্যয় বাড়াবে ফলে সাধারণ মানুষের মধ্যে আয়-ব্যয়ের বৈষম্য বাড়াবে। নিত্য প্রয়োজনীয় শিল্প পণ্যগুলোর দাম বাড়বে অন্যদিকে সমান। সাধারণ মানুষকে বেশি দামে কিনতে হবে নিত্য প্রয়োজনীয় এইসব পণ্য যার ফলে ব্যয় বাড়াটা স্বাভাবিক। কিন্তু তার সাথে তাল মিলিয়ে বাড়বে না আয়। তাহলে আয়-ব্যয়ের বৈষম্যের ফলে সাধারণ মানুষের জীবনের উপর অর্থনৈতিক চাপের সৃষ্টি হবে।

গত ২২ জানুয়ারি দৈনিক নয়া দিগন্ত পত্রিকার ১ম পৃষ্ঠায় “মহা বেকারত্বের পদধ্বনি” শিরোনামে একটা প্রতিবেদন ছাপা হয়। সেখানে বলা হয় যে,  গত দু বছরে শ্রমিক মজুরি বেড়েছে ৩২ শতাংশ, বিদ্যুৎ খরচ বেড়েছে ১৫ শতাংশ, গ্যাসের দাম বেড়েছে ১০ শতাংশ এবং একই সময়ে ৩০ শতাংশ বেড়েছে পরিবহন খরচ। সব মিলিয়ে শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যয় বেড়েছে ১৭ দশমিক ১১ শতাংশ। ব্যাংকগুলো থেকে সুবিধামতো ঋণ পাচ্ছে না এবং নানা প্রতিকূলতার কারণে প্রতিযোগীতায় টিকে থাকা সম্ভব হচ্ছে না বলে ব্যবসায়ে লাভের স্থানে হচ্ছে ক্ষতি। নিজের ক্ষতি করে কেউ শিল্পপ্রতিষ্ঠান চালাবে না ফলে শিল্পপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাওয়াটাই স্বাভাবিক। সৃষ্টি হবে কর্মসংস্থান সংকট ফলে বাড়বে বেকারত্বের হার। দেশের মানুষকে বেকার রেখে অর্থনৈতিক মুক্তি কতটা হবে বা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কতটা বাড়বে তা সহজেই অনুমেয়।

১ মার্চ এবং আগামী ১ জুন থেকে দু দফায় গ্যাসের দাম বাড়বে ২৩ শতাংশ। স্বল্প সময়ে গ্যাসের আকাশচুম্বি দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত ব্যবসা-বাণিজ্যে নানামুখী নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। ব্যবসার ব্যয় বাড়বে এবং রফতানি বাধাগ্রস্ত হবে। গ্যাসের দাম বাড়ার কারণে মূল্যস্ফীতি ডাবল ডিজিটে উন্নিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ব্যবসা-বাণিজ্যে ও অর্থনীতির নানামুখী কর্মকান্ড মেটানোর জন্য শিল্প-কারখানাগুলোতে পর্যাপ্ত পরিমাণে গ্যাস সরবরাহ করা যায়নি। এর ওপর সার্বিক ভাবে এ মূল্য বৃদ্ধির ফলে ব্যবসা-বাণিজ্যে নীরব ধস নামবে। ৬০ শতাংশ বিদ্যুৎ উৎপাদনে গ্যাস ব্যবহার করা হয়। গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির ফলে বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধি করার ঘোষণা করা হয়েছে ইতোমধ্যে। শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো তাদের উৎপাদনে ক্ষেত্রে সম্পূর্ণটাই গ্যাস এবং বিদ্যুতের উপর নির্ভরশীল। তাহলে গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির ফলে বিদ্যুতের দাম বাড়বে। গ্যাস এবং বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির ফলে শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর উৎপাদন ব্যয় বাড়ছে। অন্যদিকে বিশ্ববাজারে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়ার ফলে ক্রেতারা পণ্যের দাম কমানোর চাপ দিচ্ছেন। একদিকে উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধি অন্যদিকে রফতানি মূল্য হ্রাস। উভয় সংকটের মধ্যে নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখাটাই হয়ে পড়েছে বড় দায়। ব্যবসায় ক্ষতি করে শিল্পপ্রতিষ্ঠান চালাতে চাইবে না বা পারবে না ফলে বিনিয়োগ গুটিয়ে নিবে ক্ষুদ্র ও মাঝারী ব্যবসায়ী সংগঠনগুলো ফলে কর্মসংস্থান কমে যাবে। কর্মসংস্থান কমে গেলে তার পরিণতি কী হবে তা বুঝতে আর বাকী নেই। ক্যাপটিভ গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির ফলে এরই মধ্যে প্রায় ৩ হাজার শিল্পকারখানা বন্ধ হয়ে গেছে।

উন্নয়নের বা কোন কাজের পিছনে পরিকল্পনা গ্রহন করা ও তার যথাযথ বাস্তবায়ন পূর্বশর্ত। বারবার হঠাৎ করে গ্যাসের দাম বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির ফলে দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ করা এবং সে অনুযায়ী কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না। বিনিয়োগের ক্ষেত্রে নিতে পারছে না যথাযথ পদক্ষেপ। ফলে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগ করতে চাচ্ছে না এবং বিনিয়োগ গুটিয়ে নিচ্ছে। যার ফলে শিল্পপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হচ্ছে। এভাবে ক্রমাগত চলতে থাকলে দেশের চলমান অর্থনীতির চাকা অচল হয়ে দেশের অর্থনীতি মুখ থুবড়ে পড়তে বাধ্য হবে।

অর্থনীতিবিদরা মনে করেন, বাংলাদেশের অর্থনীতির ধারাকে গতিশীল রাখতে সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগ(এফবিআই) আকর্ষন করার ক্ষেত্রে গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে এবং ভবিষ্যতে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের এ দেশে বিনেয়োগে নিরুৎসাহিত করবে। ফলে বিশ্ববাজারে আমাদের যে প্রভাব রয়েছে তা অল্পদিনে গুটিয়ে যাবে। শিল্পোদ্যোক্তাদের অভিযোগ, এমনিতেই নানা মুখী প্রতিকূল পরিবেশের কারণে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস-বিদ্যুতের সংযোগ না পাওয়ায় তাদের উৎপাদনে বাধা সৃষ্টি হচ্ছে। গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি এই বাধাকে আরো শক্তিশালী করবে।

অন্যদিকে গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি বস্ত্রখাতকে ব্যাপক ভাবে প্রভাবিত করবে। সস্তা শ্রম ও গ্যাস ছাড়া বাংলাদেশের নিজস্ব কোন সম্পদ নেই। শিল্পের কাঁচামাল ও মেশিনারিজসহ সবই আমদানি করতে হয়। অন্যদিকে প্রতিযোগী দেশ ভারতের তুলা থেকে শুরু করে মেশিনারিজ সবই আছে। গত কয়েক মাস আগে ভারত নতুন বস্ত্রনীতিতে সাড়ে ৬ হাজার কোটি রুপি প্রণোদনা অনুমোদন দিয়েছে। আগামী ৩ বছরে পোশাক শিল্পে বাংলাদেশকে টপকানোর ঘোষণা করেছে দেশেটি। তুলা, সুতাসহ সব ধরণের কাঁচামাল এবং মূলধনী যন্ত্রপাতি ভারতের নিজস্ব। একারণে এ ধরণের প্রতিযোগীতার মুখে এবার আর টিকতে পারবে না আমাদের বস্ত্রখাত। অর্থনীতির প্রবৃদ্ধির ক্ষেত্রে বস্ত্র শিল্প প্রধান হিসেবে ভূমিকা পালন করছে। ইউরোপসহ অন্যান্য দেশগুলোতে আমাদের দেশের বস্ত্রখাতে যে বিচরণ ছিলো সেটা ক্রমাগত ভাবে ভারতের দখলে চলে যাচ্ছে। গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি এই দখলে যাওয়ার কাজকে বেশ গতি যোগাবে।

গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি দেশের কৃষি খাতকেও চরম বিপর্যয়ের মুখে ঠেলে দিবে। উৎপাদন ব্যয় বেড়েছে এই অজুহাতে গ্যাসের দাম বাড়ার আগেই সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় সারের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে। চলতি বছরের প্রথম ভাগেই শিল্প মন্ত্রণালয় প্রতি টন ইউরিয়া ১৪ হাজার টাকার স্থলে ১৮ হাজার টাকা করার প্রস্তাব দিয়েছে। এতে প্রতি টনের দাম বাড়বে ৪ হাজার টাকা এবং প্রতি ৫০ কেজি বস্তাপ্রতি দাম বাড়বে ২০০ টাকা। গ্যাস সংকটে বছরের ৭ মাস সার কারখানাগুলো বন্ধ থাকে। একদিকে দাম বৃদ্ধি অন্যদিকে কারখানা বন্ধ থাকার ফলে সারের সংকট দুয়ে মিলে দেশের কৃষি ব্যবস্থাকে চরম বিপর্যয়ের মুখে ঠেলে দিচ্ছে। এখনো বাংলাদেশের প্রায় ৮০ শতাংশ লোক কৃষির উপর নির্ভরশীল কৃষি খাতে বিপর্যয় এই মানুষগুলোর জীবন মানে বড় ধরণের দূর্ভোগ ডেকে আনবে। দেশের গ্রামীন পরিবারগুলো প্রায় সম্পূর্ণটাই কৃষি নির্ভর। সারের যোগানের সমস্যা হওয়া মানে কৃষি খাতে বিরূপ প্রক্রিয়া সৃষ্টি হওয়া আর এর মানে গ্রামীন পরিবারে দারিদ্রতাকে বাড়িয়ে দেয়া।

গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি পরিবহন খাতে যে নৈরাজ্য চলছে তাতে নতুন ভাবে ইন্ধন যোগাবে। সিএনজি   (রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাস) এর দাম ১ মার্চ থেকে বাড়ানো হয়েছে ৩৫ টাকা(পূর্ব মূল্য) থেকে ৩৮ টাকা প্রতি ঘনমিটার। ২০০০ সালে পরিবেশ দূষণ থেকে নগরীকে বাঁচাতে সরকারি উৎসাহে পরিবহন খাতে রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাসের ব্যবহার শুরু হয়। বর্তমানে সিএনজিতে রূপান্তরিত গাড়ির সংখ্যা ৩ লাখেরও বেশি। প্রথমে প্রতি ঘনমিটার সিএনাজির দাম ছিলো ৭ টাকা ৪৫ পয়সা। কিন্তু গত ১৬ বছরে এর দাম বেড়েছে ৫৩৭ শতাংশ। সিএনজি (রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাস)-র  এমন দাম বাড়ার ফলে পরিবহন খাতে ভাড়া নিয়ে বেশ নৈরাজ্য পরিবেশের সৃষ্টি হচ্ছে। বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির পরিচালিত এক জরিপে দেখা যায় ঢাকা শহরের ৮৭ শতাংশ সিএনজি চালিত অটোরিকশা চালক মিটারে নির্ধারিত ভাড়ায় কোন গন্তব্যে যেতে চান না। চালকদের ৩৫ শতাংশ যাত্রীদের পছন্দের জায়গায় যেতে অস্বীকার করে। বাধ্য হয়ে বেশি বাড়ায় যেতে হয়। ৮৫ শতাংশ ক্ষেত্রে মিটারের চেয়ে ২০ থেকে ৪০ টাকা বেশি ভাড়া পরিশোধ করতে হয়। পরিবহন খাতের চলমান এই অরাজক পরিস্থিতির জন্য কোন ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টা গ্যাসের দাম বাড়ানোর ফলে অরাজকতা আরো বাড়বে।

এখন কথা হলো এতো সমস্যা সৃষ্টির স্পষ্ট ইঙ্গিত থাকার পরেও কেনো সরকার গ্যাসে দাম বৃদ্ধি করছে? গ্যাসের মওজুদ ফুরিয়ে যাওয়ার যে অজুহাত সরকার দেখাচ্ছে তা ধোপে টিকে না। কারণ সরকার গ্যাসের অনুসন্ধান না চালিয়ে গ্যাসের দাম বাড়িয়ে এর স্থায়ী কোন সমাধান দিতে পারবে না। ২০১২ সালে সমুদ্র সীমা নিষ্পত্তির পর থেকে মিয়ানমার অসংখ্য অনুসন্ধান চালিয়ে ৫টি গ্যাসক্ষেত্রে খুঁজে পেয়েছে। সেখানে বাংলাদেশ কোন অনুসন্ধান চালায়নি এবং কোন উদ্যোগও গ্রহণ করেনি। দেশে যখন বিদ্যুতের ভয়াবহ সংকট চলছিল, সে সময় সরকার হাজার হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিয়ে রেন্টাল ও কুইক রেন্টাল বিদ্যুত কেন্দ্র এনেছে যা আজ অবধি অব্যাহত রয়েছে। জনস্বার্থ বিবেচনায় অনুরূপ ভাবে গ্যাসের দাম না বাড়িয়ে এই খাতে অন্তত ৫ বছর ভর্তুকি বহাল রাখা উচিত। কারণ গ্যাসের দাম বাড়ার ফলে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি থেকে শুরু করে শিল্পপ্রতিষ্ঠানের উৎপাদন ব্যয়, সাধারণ মানুষের জীবন জীবিকার ব্যয় বাড়বে। সব মিলিয়ে দেশের চলমান উন্নয়নের গতি স্থবির হয়ে পড়বে এবং দেশে অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে।

তাই উন্নয়নের গতিধারা নিরবচ্ছিন্ন রাখতে গ্যাস উত্তোলন করে ও সরবরাহ ব্যবস্থা ত্রুটিহীন রেখে এর দাম সহনীয় পর্যায়ে রাখা প্রয়োজন।

Saturday, March 11, 2017

শিক্ষার সর্বগ্রাসী সংকট : মেধাহীন প্রজন্ম সৃষ্টির কূটকৌশল

শাহাদত হোসেন বাচ্চু


 

এক

উন্নয়নের সবচেয়ে বড় মাপকাঠি ‘মানব-সম্পদ উন্নয়ন’। প্রশ্নপত্র ফাঁস আর ‘গায়েবী’ নির্দেশে পরীক্ষা পাশের হার বাড়ানোর প্রতিযোগিতায় মানব-সম্পদ ‘ধুঁকছে’;  মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিপর্যস্ত শিক্ষকদের দলাদলিতে। স্কুল শিক্ষকদের পুলিশ দিয়ে পিটিয়ে, পিপার-স্প্রে দিয়ে শাসন করা হয়। একজন সংসদ সদস্য শিক্ষকদের উদোম করে রাস্তা প্রদক্ষিণ করিয়েছেন, প্রকাশ্যে কান ধরে ওঠ-বস করিয়েছেন আরেক সংসদ সদস্য।  এর ফলে শিক্ষকরা উদোম বা কান ধরে ওঠ-বস করেছেন, না গোটা জাতি করেছে- এ নিয়ে ভাবার সময় নেই। আর শিক্ষক নেতাদের মুখে তো কুলুপ!

প্রশ্ন ফাঁসের বিষয়টি শিক্ষামন্ত্রী প্রথমে কানেই তোলেননি। ‘গুজব’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি নীতি পাল্টেছেন। সবশেষে বলেছেন, অত্যাধুনিক প্রযুক্তির যুগে প্রশ্নপত্র ফাঁস ঠেকানো পুরোপুরি সম্ভব নয়। এর আগে বলেছিলেন, “কিছুসংখ্যক ‘কুলাঙ্গার’ শিক্ষক প্রশ্ন ফাঁস করে দিচ্ছে। কিভাবে প্রশ্ন ফাঁস সামলাবো”? তারপরে বলেছিলেন, “আমাদের ভাল শিক্ষক নেই”। এইসব কথামালা একটি বিষয়কেই ইঙ্গিত করে- হয় প্রশ্ন ফাঁসকারীরা সরকারের চেয়ে শক্তিশালী, অথবা সরকারের প্রভাবশালীরা প্রশ্ন ফাঁসে জড়িত।

ভুলে ভরা বিকৃত পাঠ্যবই পৌঁছাচ্ছে আর মৌখিক নির্দেশনা দিয়ে পাশের হার বাড়াচ্ছে। শিক্ষায় শনৈ: শনৈ: উন্নতির গল্প শুনছে মানুষ। এর মধ্য দিয়ে কি মনোজগত তৈরী হচ্ছে শিক্ষার্থীদের? সারাদেশে কিশোর অপরাধ বাড়ার কারন কি এই ভুল-বিকৃত শিক্ষার মনোজমিন। এর মধ্য দিয়ে শিক্ষাক্ষেত্রে যে মৌলিক ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে- সেই তুলনায় সময়মত বই পৌঁছানো কি সত্যিই সাফল্য? কি ফলাও করেই না এই সাফল্য প্রচার করা হয়!

সত্যটা কি উপলব্দিতে আছে? দেশ থেকে লাখ লাখ কোটি টাকা পাচার-আত্মসাত হলেও ক্ষতি পোষানো যায়! চাইলে চলমান হত্যাকান্ড থামিয়ে আইন-শৃঙ্খলার উন্নয়নও করা সম্ভব; ধ্বসে যাওয়া নির্বাচন ব্যবস্থা মেরামত সম্ভব। বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের চুরিও বন্ধ করা যায়। কিন্তু শিক্ষা ক্ষেত্রে অন্তর্গত ক্ষতি-ধ্বস কি ইচ্ছে করলেই কাটিয়ে ওঠা সম্ভব? এর জন্য কত সময় লাগবে, কত মূল্য দিতে হবে জানা নেই। অন্তত: একটি প্রজন্ম তো বটেই।

প্রশ্ন ফাঁস, নম্বর বাড়িয়ে দেয়ার নির্দেশের মত অশিক্ষা নিয়ে যারা পাশ করে বের হচ্ছে, আগামী এক-দেড় দশক পরে তারাই নেতৃত্বে থাকবে। এই শিক্ষা ও মেধা নিয়ে তারা কেমন নেতৃত্ব দেবেন? মেধাবী-যোগ্য মানুষ কি পাওয়া যাবে? ফাঁস হয়ে যাওয়া প্রশ্নের সুযোগে যারা ডাক্তার হয়ে বেরিয়ে আসবেন, তারা কি চিকিৎসা সেবা দেবে? ভয়াবহতা-ধ্বস কতটা ঘটেছে, আপাত: আমোদে মত্ত আমরা কি তা অনুমান করতে পারছি!

এটি স্বীকৃত সত্য যে, দেশে মানুষকে মেধার ভিত্তিতে শিক্ষিত করা গেলে মানব সম্পদের উন্নয়ন ঘটে। শ্রীলঙ্কা এর সবচেয়ে বড় উদাহরন। সেখানে মানবসম্পদ উন্নয়নে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়ায় উন্নয়ন তার আপন গতি পেয়েছে। রাস্তা-ফ্লাইওভার, সেতু নির্মান উন্নয়ন নয়, উন্নয়ন সহায়ক কাজ। প্রযুক্তি তখনই গুরুত্বপূর্ণ যখন শিক্ষা-মেধা দিয়ে সেগুলি তৈরী করে মানুষ ব্যবহার করে উপকৃত হয়। এখানে অমূল্য একটি প্রশ্ন হচ্ছে- এই ব্যবস্থার কি শিক্ষা-মেধা কোনটি নিশ্চিত করছে, কি নিশ্চিত করবে?

আমরা কি তাহলে পুরো ব্যবস্থাই ধ্বংস করে দিলাম? ৯৫ শতাংশ মানুষের সন্তান যে শিক্ষা ব্যবস্থার অংশ তার কথাই বলা হচ্ছে – ৫ শতাংশের সন্তানরা ইংরেজী মাধ্যমে পড়ালেখা করে। ‘ও’ লেভেল পাশ করে উন্নত দেশের নামী-দামী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে যায়, সেটির আরও উন্নতি হচ্ছে। এই যে বৈষম্য তা থাকবে না- মুক্তিযুদ্ধের চেতনা তো ছিল সেটিই। সুতরাং ৯৫ শতাংশের ব্যবস্থা ধ্বসিয়ে দিয়ে কিভাবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রতিষ্ঠিত হবে?

দুই

এক দলদাস শিক্ষকের কথা বলি। এমত শিক্ষক এখন ছড়ানো-ছিটানো সর্বত্র। শিক্ষার ধ্বস, অবনমন ও নজিরবিহীন অনাচারের বিরুদ্ধে এরা কথা বলেন না কখনও। এরকম এক দলদাস ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের প্রফেসর আব্দুল আজিজ ২০১৪ সালের ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকীতে ছাত্রলীগের আলোচনা সভায় যা বলেছিলেন তা মনে করিয়ে দেব। ঐ সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন সংস্কৃতিমন্ত্রী  আসাদুজ্জামান নুর।

“ছাত্রলীগের সব নেতা-কর্মীদের চাকরী দিতে হবে। খেয়াল রাখতে হক্ষে, কোন কর্মী যেন বেকার না থাকে। ছাত্রলীগ নেতাদের রেজাল্টের প্রয়োজন নেই। তাদের গায়ের ক্ষতচিহ্নই তাদের বড় যোগ্যতা…। বর্তমান সরকারের আমলে কেবল ছাত্রলীগ কর্মীদের চাকরী দিতে সরকারকে আহবান জানাই”। প্রফেসর আজিজের এই মৌলিক প্রস্তাবনার প্রতিধ্বনি ছিল প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচ টি ইমামের কথায়। তিনিও বলেছিলেন, ছাত্রলীগ কর্মীদের শুধু লিখিত পরীক্ষায় পাশ করলেই হবে, বাকিটুকু তারা দেখবেন।

জাতির সবচেয়ে উজ্বল সময়ে ন্যায্য রাষ্ট্র চিন্তায় শিক্ষকরা ভূমিকা রেখেছিলেন। চিন্তায়, মননে  ছিলেন নির্মোহ, নির্লোভ, পক্ষপাতহীন। তারা জাতিকে সঠিক নির্দেশনা দিয়েছিলেন। কিন্তু দলদাস শিক্ষকরা তাদের উত্তরাধিকার নন। এই শ্রেনীটি সবসময় সব ক্ষমতাসীনদের সাথেই আছেন। ক্রমাগত মূল্যবোধ-হ্রাসপ্রাপ্ত গত চার দশকে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে তাদের ভূমিকা হয়ে পড়েছে নতজানু। শিক্ষক-শিক্ষকতার এই অবনমন সবকিছুতেই গা সহা সমাজকে আর আলোড়িত করে না, আন্দোলিতও করে না।

শুরুর দিকে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরা স্কুল-কলেজ পর্যায়ে শিক্ষার ধ্বস নিয়ে প্রতিবাদী হওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। শিক্ষামন্ত্রীর গোল্ডেন জিপিএ পাওয়া শিক্ষার্থীদের ১০ শতাংশের বেশি ভর্তি পরীক্ষায় টিকছে না- গণমাধ্যমে এমত সমালোচনার পর শিক্ষামন্ত্রীর প্রতিক্রিয়া ছিল দেখার মত। খোদ প্রধানমন্ত্রী যখন বললেন, “আমাদের ছেলে-মেয়েরা বেশি সংখ্যায় পাশ করবে তাও অনেকে চায় না”। ব্যাস, শিক্ষক নেতৃবৃন্দ ভোল পাল্টে ফেললেন, গলা মেলামেল প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রীর সাথে। তারা বিবেচনা করেননি, এই দলদাস ভূমিকা শিক্ষার সর্বনাশের পাশাপাশি তাদের কোথায় নিয়ে যাচ্ছে!

তিন

শিক্ষার সংকট কোথায়? এ আলোচনায় পরস্পর বিরোধিতা রয়েছে। বর্তমান সরকারের আমলে শিক্ষা ব্যবস্থার অধ:পতন ঘটেছে। কিছুকাল আগেও নকল ছিল বিচ্ছিন্ন ঘটনা; এখন সেখানে সব ধরনের প্রশ্নপত্র ফাঁস রেওয়াজে পরিনত হয়েছে। স্কুলকেন্দ্রিক পড়াশুনার বদলে কোচিং সেন্টার বা প্রাইভেট শিক্ষক নির্ভর হয়ে পড়েছে শিক্ষার্থীরা। পরীক্ষার আগেই প্রশ্ন মিলছে। শিক্ষার্থীদের অনুশীলন যাচাইয়ের জন্য পরীক্ষা পদ্ধতি এখন কার্যত: অকার্যকর। এরসাথে যুক্ত হয়েছে শিক্ষার হার বাড়ানোর উচ্চাভিলাষ।

শিক্ষাবিদ প্রফেসর সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেছেন, “শিক্ষার প্রধান সমস্যা তিনটি। প্রথমত: বাণিজ্যিকীকরণ। শিক্ষা পণ্যে পরিনত হয়েছে। পূঁজিবাদী সমাজে মুনাফাই যেহেতু লক্ষ্য, তাই পণ্যে ভেজাল হওয়া খুবই স্বাভাবিক। শিক্ষা নামক পণ্যটিতেও ওই ভেজালটা ঢুকে গেছে। দ্বিতীয়ত: রাষ্ট্রের গুরুত্বহীনতা; রাষ্ট্র যে শিক্ষাকে গুরুত্ব দেয় না, শিক্ষাই যে জাতির ভবিষ্যতের ভিত্তি, এটি রাষ্ট্র আমলে নেয় না। তৃতীয়ত: তিনধারার শিক্ষা; এটা রাষ্ট্র বাড়াচ্ছে। এরকম তিন ধারার শিক্ষা যত বাড়বে বৈষম্য তত বাড়বে”।

জাতিসংঘ ঘোষিত সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার অন্যতম বিষয় ছিল শিক্ষার হার বৃদ্ধি। এই লক্ষ্যপূরণে মরিয়া সরকার পাশের হার বাড়াতে, পরীক্ষার খাতা মূল্যায়নে নম্বর বাড়িয়ে, মৌখিক নির্দেশনা দিয়ে রেখেছে। জেনুইন নম্বর দিতে গিয়ে অনেক শিক্ষক হেনস্তার শিকার হয়েছেন। এই সর্বগ্রাসী সরকারী চাহিদা মেটাতে মেধা মূল্যায়নে পরীক্ষা গ্রহণ পদ্ধতি কাজে আসছে না। প্রশ্ন ফাঁস, পরীক্ষা পদ্ধতির সংকট, খাতা মূল্যায়নে সরকারী নির্দেশনা কেবল নয়, পুরো শিক্ষা ব্যবস্থা এখন সমস্যাজর্জর। সরকারী, বেসরকারী, মাদ্রাসা ও ইংরেজী  মাধ্যমে শিক্ষা কাঠামো এই বহুমুখী সংকটকে সর্বগ্রাসী করে তুলছে।

চার


শিক্ষার বিদ্যমান স্তরে প্রাথমিক শিক্ষা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। পৃথিবীর সবদেশেই প্রাথমিক শিক্ষা গুরুত্ব পায়। বাংলাদেশেও তাই ছিল। এখন পয়তাাল্লিশ বয়সী এই দেশে ভাঙাচোরা প্রাথমিক স্কুল এখন দালানে পরিনত। ভাঙা ঘরে নিবেদিত প্রাণ শিক্ষক ছিলেন, স্কুল ছিল শিশুর দ্বিতীয় বাড়ি। শিক্ষক ছিলেন মা- বাবার পরের অভিভাবক। বঞ্চনা-কষ্টকে মেনে নিয়ে তারা শিশুকে একাডেমিক ও নৈতিক শিক্ষা দিতেন। কারো মধ্যে মেধার খোঁজ পেলে পরিচর্যা করতেন বিশেষভাবে।

ইট সিমেন্টের দালানে এখন “অন্যকিছু করতে না পারা” মেধাহীনরা প্রাথমিক শিক্ষায় নিয়োজিত। যিনি এইচএসসি পাশ করেছেন টেনেটুনে। চাকরি নিয়েছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য বা কোন ক্ষমতাধরকে অনৈতিক সুবিধা দিয়ে। এলাকায় তিনি ক্ষমতাসীনদের রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হন। চাষ-বাস বা ব্যবসা করেন। মাঝে মধ্যে স্কুলে যান আড্ডার মেজাজে।

শিক্ষার এই সংকট মূলত: সমাজের দৈন্য চেহারা এবং পাশাপাশি এটি সংঘবদ্ধ অপরাধী সমাজ সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখছে। অগণতান্ত্রিক ও চরম বৈষম্যমূলক শিক্ষাব্যবস্থা নৈতিক বিপর্যয় ডেকে নিয়ে আসছে সমাজের সব স্তরে। মানুষ ব্যক্তিকেন্দ্রিক হয়ে পড়ছে এবং জড়িয়ে পড়ছে দখলদারিত্ব আর অনৈতিক প্রতিযোগিতায়। উগ্রপন্থা, সহিষ্ণুতার বিস্তার ঘটছে।

এই অবস্থা প্রমান করছে, বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থা শিক্ষার্থীদের মানবিক, প্রগতিশীল ও গণতান্ত্রিক চেতনার নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে পারছে না। সংস্কৃতি বিনির্মানেও শিক্ষাব্যবস্থা অক্ষম। সামাজিক বৈষম্য দুর করা ও নানামতের প্রয়োজনীয়তা বোঝার বদলে শিক্ষার্থীরা হয়ে উঠছে ব্যক্তিকেন্দ্রিক।

এর মূল কারন নিহিত রয়েছে রাষ্ট্রের উপরিকাঠামোয়। রাষ্ট্র যেমন গণতান্ত্রিক চেহারা বিসর্জন দিচ্ছে, কঠোর কর্তৃত্ববাদীতায় ঢেকে দিচ্ছে সবকিছু, শিক্ষাঙ্গনেও পড়েছে এর কড়ালগ্রাস। এই কঠোর, কর্তৃত্ববাদী শাসনে সরকার হয়ে উঠেছে আমলা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও অদৃশ্য শক্তি নির্ভর। শিক্ষা ব্যবস্থাকে আজকের অবস্থায় নিয়ে আসা এবং শিক্ষাঙ্গণে গণতন্ত্র চর্চা, প্রগতিশীল ছাত্র রাজনীতি নিপুন কৌশলে ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে- শুধুমাত্র ক্ষমতা দীর্ঘস্থায়ী করার বাসনায়।

এজন্যই প্রফেসর সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেছেন, “সমাধানের প্রশ্নে গেলে বলব, সংস্কারের সময় শেষ হয়ে গেছে। এই শিক্ষাব্যবস্থাকে সংস্কারের আর কোন সুযোগ নেই। এখন সমাজের আমুল রূপান্তর দরকার। শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও সংশ্লিষ্টদের এখন আমুল পরিবর্তন ছাড়া যে কিছু সঠিক হবে না এই সত্যটি মানুষের কাছে নিয়ে যেতে হবে”।
  • উৎসঃ amaderbudhbar.com

কানাডার প্রধানমন্ত্রী থেকে রাষ্ট্রদূত কেউ জানাননি বিএনপি ‘সন্ত্রাসী দল’

মোহাম্মদ আলী বোখারী, টরন্টো থেকে

কানাডার প্রধানমন্ত্রী
জাস্টিন ট্রুডোর সাথে লেখক।

এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে পরিচালিত লাগাতার অনুসন্ধানে কানাডার প্রধানমন্ত্রী, বিচারমন্ত্রী ও অ্যাটর্নি জেনারেল, পররাষ্ট্রমন্ত্রী, জননিরাপত্তাবিষয়ক মন্ত্রী, নাগরিকত্ব ও অভিবাসনমন্ত্রী এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত কানাডার রাষ্ট্রদূত, তারা কেউ জানাননি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল তথা বিএনপি একটি ‘সন্ত্রাসী দল’। একইসঙ্গে পুনর্বিবেচনার রায়ে প্রত্যাখ্যাত শরণার্থীর আবেদন ও পর্যবেক্ষণটিতেই বক্তব্য সীমাবদ্ধ রেখেছেন যথাক্রমে ফেডারেল কোর্টের প্রধান বিচারপতির প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও মিডিয়াবিষয়ক আইনি পরামর্শক। পাশাপাশি কানাডার জননিরাপত্তাবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের একমাত্র মুখপাত্র তাদের ওয়েবসাইটে উল্লেখিত তালিকা খতিয়ে দেখার পরামর্শ দিলে তাতেও ‘সন্ত্রাসী দল’ হিসেবে বিএনপিকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। অথচ একজন শরণার্থীর আশ্রয় প্রার্থনার আবেদনের ভিত্তিতে অভিবাসন কর্মকর্তার পর্যবেক্ষণভিত্তিক ফলাফল এবং পুনর্বিবেচনার শুনানিতে একই কারণে খারিজ হওয়া রায়ের আদেশে নয়, বরং পর্যবেক্ষণে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও বিরোধীদলীয় বিএনপি ‘অনুরূপ কৌশলে’ যুক্ত থাকার বিষয়টি বিশ্লেষিত হলেও বিএনপি একটি ‘সন্ত্রাসী দল’ হিসেবে চাউর হয়েছে। বলাবাহুল্য, ওই রায়টি ছিল একজন শরণার্থীর কানাডায় আশ্রয় মঞ্জুর সংক্রান্ত, যেখানে বিচারক নন বরং শরণার্থীই আবেদনে ‘অবিশ্বাস্যজনক ও আত্মঘাতী প্রক্রিয়ায়’ নিজের দল বিএনপিকে একটি ‘সন্ত্রাসী দল’ বানিয়েছে।

গত ২৫ জানুয়ারি কানাডার ফেডারেল কোর্ট প্রদত্ত ৩৩ পৃষ্ঠার রায়ে প্রকাশ, বাংলাদেশের জনৈক নাগরিক মোহাম্মদ জুয়েল হোসেন গাজী ২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি কানাডায় এসে সেদিনই শরণার্থী হিসেবে আশ্রয়ের আবেদন করেন। তাতে ২৬ সেপ্টেম্বর তাকে আইনগতভাবে শরণার্থী করা হয়। পরবর্তীতে ২০১৪ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি স্থায়ী অভিবাসনের আবেদন করেন। পরের বছর ২৮ এপ্রিল প্রথম ধাপের অনুমোদন পান। দ্বিতীয় ধাপে নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে তার আবেদন দীর্ঘায়িত ও পর্যায়ক্রমিক আইনগতভাবে ‘অগ্রহণযোগ্য’ হয়। আবেদনকারী কয়েক দফায় বিএনপির সদস্যপদের উল্লেখ করেন। তার ‘বিওসি’ বা বেসিস অব ক্লেইম বা দাবিগত ভিত্তির বর্ণনায় রয়েছে,  ১৯৯৭ সালের মাঝামাঝি ঢাকায় একটি কলেজে পড়াকালীন বিক্ষোভ, সেমিনার ও সভা জাতীয় রাজনৈতিক কর্মকান্ডে অংশ নেন। ২০০৪ সালে পড়াশোনা করতে কোরিয়া যান এবং বাংলাদেশের উত্তপ্ত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে ফিরে আসেন। ২০০৫ সালে তিনি জাপানে যান এবং দেশের ‘পরিস্থিতি অবলোকন’ করতে থাকেন। তার ভিসার মেয়াদ ফুরিয়ে গেলে গ্রেফতারপূর্বক ২০০৮ সালে বাংলাদেশে বিতাড়িত হন। ওই বছরের শেষে মিরপুর বিএনপির অধীন স্বেচ্ছাসেবক দলে যোগ দিয়ে পরবর্তী কয়েকটি নির্বাচনি প্রচারণা চালান। তিনি রাজনৈতিক দলেরও সদস্য ছিলেন। তার ভাষায়, ‘আওয়ামী লীগ, বিএনপিসহ অপরাপর বৃহৎ রাজনৈতিক দলের স্থানীয় রাজনৈতিক নেতারা তাকে বিএনপির আত্মনিবেদিত কর্মী হিসেবে চিনতেন এবং দলের সঙ্গে তার সৎ, হৃদয়সোপিত ও নিবেদিত সংশ্লিষ্টতা ছিল’। একইসঙ্গে স্বীকার করেন বিএনপির সদস্যপদ গ্রহণের ক্ষেত্রে তা ছিল মনস্থিরপূর্ণ, সেক্ষেত্রে বিএনপিতে কোনো ইস্যুই সৃষ্টি হয়নি, বরং তা প্রদান করা হয়েছে। ফলশ্রুতিতে ২০১৫ সালের ২৭ অক্টোবর অভিবাসনের অগ্রহণযোগ্যতার ৩৪(১) ধারায় ‘কানাডা বর্ডার সিকিউরিটি এজেন্সির জাতীয় নিরাপত্তা বাছাই বিভাগ বিএনপির কার্যক্রমের উপর তার বর্ণিত মতামতের ভিত্তিতে মূল্যায়ন সম্পন্ন করে, যেখানে বর্ণিত হয়েছে, বিএনপি ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্য পরিপূরণে সশস্ত্র সংগ্রাম ও সহিংসতা করে থাকে’। এছাড়া আবেদনকারীর বক্তব্যানুযায়ী বিরোধী দল হিসেবে বিএনপি ‘অস্ত্রেশস্ত্রে যুদ্ধংদেহী হয়। তারা হাতবোমা, পিস্তল ও বড় তরবারি ব্যবহার করে। তারা হরতাল বা মিছিল চলাকালীন সরকার পক্ষের লোকদের উপর আক্রমণ করে। হরতাল চলাকালীন বাড়ি-ঘর থেকে কেউ বের হয়নি, অফিসপাড়া বন্ধ ছিল, কোনো যানবাহন চলেনি এবং রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা ছিল। এগুলোই বিরোধী দলের কর্মকা- ছিল’। এ কথাগুলোই তার অভিবাসন আবেদন ‘আইএমএম ৫৬৬৯’-এ বর্ণিত রয়েছে।

ফলশ্রুতিতে অভিবাসন কর্মকর্তা ফৌজদারি ধারা মতে, কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রের সংজ্ঞায় সন্ত্রাসী দল ব্যাখ্যায় অভিমত রাখেন, যদিও বিএনপির জন্য আবেদনকারীর ব্যক্তিগত সন্ত্রাসী ভূমিকা ছিল যৎসামান্য; তথাপি সরকারকে বাধ্য করতে বিএনপির লাগাতার হরতাল নির্ভরশীলতা অর্থনীতি ব্যাহত করার পাশাপাশি হরতালের ফলে সৃষ্ট সহিংসতা বিএনপির সন্ত্রাসী কান্ড হিসেবে বিবেচিত হয়। এক্ষেত্রে আবেদনকারীর জন্য অভিবাসন কর্মকর্তার ইস্যু হয়ে দাঁড়ায় সন্দেহাতীতভাবে বিএনপির কর্মকান্ড সন্ত্রাসমূলক কিনা। সেক্ষেত্রে মানসম্মত বিবেচনায় সুপ্রিম কোর্ট অব কানাডায় ২০০৮ সালে পরিচালিত ‘ডানসম্যুর বনাম নিউ ব্রন্সউইক’ মামলা এবং ‘গুতিয়ারেজ বনাম কানাডা’ মামলাসহ অপরাপর আইনি ব্যাখ্যায় বিচারক সদাশয় বিবেচনায় অভিবাসন কর্মকর্তার অভিমতের ভিত্তিতে রায়টিতে মতামত রাখেন, সন্ত্রাসে ‘বিএনপি যুক্ত ছিল, রয়েছে ও হবে’, যা কানাডার আইনে বিশদভাবে বিবৃত। তারপরও ওই রায়ে বিচারক হেনরি এস ব্রাউন অভিবাসন কর্মকর্তার উদঘাটিত তথ্য এবং অনলাইনে ‘বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট পার্টি টেরোরিস্ট অ্যাক্টস’ শিরোনামে আবিষ্কৃত সংবাদ ও তথ্যের ভিত্তিতে মতামত দেন যে, বিএনপি ও আওয়ামী লীগ হচ্ছে বাংলাদেশে দুটি বৃহৎ রাজনৈতিক দল। আবেদনকারীর একজন কৌঁসুলীর মতে বাংলাদেশের রাজনীতি সহিংস। আর সেই বিবেচনায় উভয় দলই অনুরূপ কৌশলে যুক্ত। অর্থাৎ ‘ইন দ্যাট রেসপেক্ট বোদ পার্টিজ হ্যাভ এঙ্গেজড ইন সিমিলার টেকটিকস’। তবে রায়ের মাত্র দুই লাইনের আদেশে বিচারক লিখেন, ‘দিস কোর্টস জাজমেন্ট ইজ দ্যাট দ্য অ্যাপ্লিকেশন ফর জুডিশিয়াল রিভিউ ইজ ডিস্মিসড্, নো কোয়েশ্চেন ইজ সার্টিফাইড অ্যান্ড দেয়ার ইজ নো অর্ডার অ্যাজ টু কস্টস’। অর্থাৎ এই কোর্টের রায়টি হচ্ছে আবেদনকারীর আইনি পুনর্বিবেচনাটি বাতিল করা হলো, কোনো প্রশ্ন সত্যায়ন করা হয়নি এবং খরচ প্রদানেরও কোনো আদেশ দেওয়া হয়নি’।

তবে ওই শরণার্থীর পক্ষে তার কৌঁসুলী বিচারকের কাছে পুনর্বিবেচনার শুনানিতে উত্থাপিত প্রশ্নের সত্যায়ন কেন করেননি, সেটি একটি দুর্বোধ্য বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। কেননা সে প্রশ্নগুলো সত্যায়ন করা হলে, শরণার্থীর জন্য আপিলের সুযোগটি থাকত। এক্ষেত্রে টরন্টোয় বসবাসরত নেতৃস্থানীয় বিএনপির দুই নেতা যথাক্রমে মাহবুব রব চৌধুরী ও আবদুল আহাদ খন্দকার পৃথকভাবে এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘ওই শরণার্থী অবিশ্বাস্যজনক ও আত্মঘাতী প্রক্রিয়ায় আবেদনটি অভিবাসন কর্তৃপক্ষের কাছে করেছে। তাকে কানাডা বিএনপির কোনো কার্যক্রমে কখনোই দেখা যায়নি কিংবা তার সম্পর্কে কেউ কিছু জানেন না। আমরা সভা আয়োজন করে পুরো ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছি। তাছাড়া বিএনপি যে সন্ত্রাসী দল নয়, সে কথা বাংলাদেশের মানুষ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় জানেন। আমাদের দল বিএনপি অগণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় একটি অনির্বাচিত সরকারের কাছে অবর্ণনীয় নিষ্পেষণের শিকার। শুধু বিএনপি নয়, দেশের জনসাধারণেরও বাক-স্বাধীনতা বর্তমান সরকার হরণ করেছে; কেউ প্রতিবাদ জানাতে পারেন না’।

তথাপি বাংলাদেশে চাউর হওয়া সংবাদে বিএনপি আদৌ ‘সন্ত্রাসী দল’ কিনা, তা সুনিশ্চিত হতে এই প্রতিবেদক প্রায় ১০ দিন ধরে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো, বিচারমন্ত্রী ও এটর্নি জেনারেল জোডি উইলসন-রেবল্ড, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ড, জননিরাপত্তা বিষয়ক মন্ত্রী রাল্ফ গোদেল, নাগরিকত্ব ও অভিবাসনমন্ত্রী আহমেদ হোসেন, বাংলাদেশে নিযুক্ত কানাডার রাষ্ট্রদূত বেনওয়া-পিয়ের লাহামিসহ তাদের মিডিয়া কর্মকর্তা এবং ফেডারেল কোর্টের প্রধান বিচারপতির প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও মিডিয়া বিষয়ক লিগ্যাল কাউন্সিলকে ওই শরণার্থীর ৩৩ পৃষ্ঠার প্রত্যাখ্যাত রায়ের কপিসহ ই-মেইল ও টেলিফোনে যোগাযোগ করেন।

এতে জননিরাপত্তাবিষয়ক মন্ত্রীর স্পোকপার্সন বা মুখপাত্র এন্ড্রু গোউইং লিখিতভাবে মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে তালিকাভুক্ত ৫৩টি ‘টেরোরিস্ট এনটিটিজ’ বা ‘সন্ত্রাসী সংগঠনসমূহ’ খতিয়ে দেখার পরামর্শ দেন, যাতে বিএনপি বা বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট পার্টির নামটি অনুপস্থিত। এছাড়া বাংলাদেশে নিযুক্ত কানাডার রাষ্ট্রদূতের পক্ষে পররাষ্ট্রনীতি ও কূটনীতি বিভাগের সিনিয়র পাবলিক অ্যাফেয়ার্স উপদেষ্টা শাহীন ইসলাম প্রতিবেদকের মূল ই-মেইলে উল্লেখিত ‘কানাডা থেকে মিডিয়া অনুসন্ধান: বিএনপি সন্ত্রাসী দল কিনা’ শিরোনামের প্রত্যুত্তরে শুধুই ‘কানাডা থেকে মিডিয়া অনুসন্ধান’ শিরোনামটি ও লিখিত অনুসন্ধানী বিষয়বস্তু অবিকৃত রেখে কানাডার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ‘গ্লোবাল অ্যাফিয়ার্সের’ গণসংযোগ বিভাগে যোগাযোগের পরামর্শ দেন, যদিও তিনি ফোনে আগেই একটি উত্তর দেওয়া হবে বলে জানান। এদিকে গ্লোবাল অ্যাফিয়ার্সের দায়িত্বশীল মিডিয়া কর্মকর্তা জোসলিন সুইট জানিয়েছেন বিষয়টি সম্পর্কে সম্যক তথ্য দিতে পারেন একমাত্র জননিরাপত্তা বিষয়ক মন্ত্রণালয়, যা আগেই উল্লেখ করা হয়েছে। অন্যদিকে প্রেরিত ই-মেইলের পরিপ্রেক্ষিতে ফোনে ফেডারেল কোর্টের প্রধান বিচারপতির প্রশাসনিক কর্মকর্তা লিজ লাফ্রিনিয়ার হেনরি জানান, ‘ওই মামলাটি ছিল গাজী বনাম কানাডা পক্ষের মাঝে এবং সে কথা রায়ের প্রথম অনুচ্ছেদেই বিবৃত। সে কারণে মামলায় রাজনৈতিক দল বিএনপি কোনো পক্ষই ছিল না, গাজী কানাডায় তার শরণার্থী আবেদন মঞ্জুরের জন্য পুনর্বিবেচনার আবেদনটি করেন’। আর লিজ হেনরির সে কথাটিই ফেডারেল কোর্টের মিডিয়া বিষয়ক আইনি পরামর্শক এন্ড্রু বৌমবার্গ ই-মেইলে ভিন্নভাবে জানান, ‘ওই মামলার সিদ্ধান্ত সংবলিত প্রথম অনুচ্ছেদেই শুনানির গুরুত্বপূর্ণ ধরনটি রয়েছে, যেখানে ষোল অনুচ্ছেদে কোর্ট ইস্যুটি বেছে নিয়েছে। একইভাবে সতের থেকে বাইশ অনুচ্ছেদে কোর্ট বিচারিক পুনর্বিবেচনার সীমাবদ্ধতাটি তুলে ধরেছে, যা একান্ন অনুচ্ছেদে সারাংশ হিসেবে দাঁড়িয়েছে’। অপরদিকে বারংবার ফোনে যোগাযোগ সত্ত্বেও কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো, বিচারমন্ত্রী ও এটর্নি জেনারেল জোডি উইলসন-রেবল্ড, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ড এবং নাগরিকত্ব ও অভিবাসনমন্ত্রী আহমেদ হোসেনের মন্ত্রণালয় থেকে কোনো প্রত্যুত্তর না আসায় কানাডার জননিরাপত্তা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে বিএনপি ‘সন্ত্রাসী তালিকাভুক্ত সংগঠন’ নয় সেটিই কারণ হিসেবে দৃশ্যমান।