Search

Tuesday, January 23, 2018

জনপ্রিয় হলে ক্ষমতা ছেড়ে ন্যায্য নির্বাচন করুক - মইনুল হোসেন




তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মনে করেন তিনি অত্যন্ত জনপ্রিয়। জনপ্রিয় হলে কি করলে ন্যায্য নির্বাচন হয় সেটা করুক। তিনি আবার যদি আসেন আমাদের কোনো ক্ষতি নেই। নির্বাচন এক দাবির ভিত্তিতে হতে হবে সংসদ থাকা যাবে না, ক্ষমতায় থেকে নির্বাচন করা যাবে না।

চ্যানেল আই এর একটি সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন।

ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন বলেন, নির্বাচনের ব্যাপার সত্যিই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ ৫ জানুয়ারি যে নির্বাচনটা হয়েছে এটা জাতির জন্য কলঙ্ক, সরকারের জন্য নিশ্চই লজ্জাকর ব্যাপার। ১৫৪টি আসন তারা নিয়ে নেয়। এটা দ্বারা জাতি ও সরকার ছোট হয়েছে। তখন কিন্তু প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আর একটি নির্বাচন করবো। কিন্তু পরে আর নির্বাচনে গেলেন না।

তিনি বলেন, যে দেশে নির্বাচন সৎ উপায়ে হয় না, জনগণের ভোটে হয় না, সেদেশে দুটি জিনিস আশা করা ঠিক না। একটি হলো জনগণের নিকট সরকারের দায়বদ্ধতা থাকবে। অপরটি হলো যে নির্বাচনে সততা দেখাতে পারে না, জনগণের সঙ্গে ভোটের সততা দেখাতে পারে না সে কখনো সহায়ক সরকার হতে পারে না এবং তার ফল আমরা আজ দেখছি। বিভিন্ন ক্ষেত্রে দুর্নীতির জোয়ার বয়ে যাচ্ছে। ব্যাংক লুটপাট, চাদা বাজ ও সব জায়গায় নীতিহীন চরিত্রহীন দাপট বেড়ে গেছে। সাধারণভাবে জাতি অসহায় হয়ে গেছে। জনগণের শক্তি হলো ভোট।

মইনুল হোসেন আরো বলেন, আমাদের দেশে রাজনৈতিক নেতৃত্ব নেই। অভিজ্ঞ রাজনীতি দেশে নেই। রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা ছাড়াই প্রধানমন্ত্রী হয়ে যান। আমলাতন্ত্ররা কিন্তু সামরিক শাসন চায়। ফলে তারা বিচারবিভাগের সাথে সংঘাতে যাবে।

তিনি বলেন, নির্বাচন সম্পর্কে একটাই কথা বলা দরকার এটা বেগম খালেদা জিয়ার জন্য না,সুশাসনের জন্য। শুরু হতে হবে সৎ নির্বাচন দিয়ে। আমলাদের কথা মতো বড় বড় কথা বলবেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মনে করেন তিনি অত্যন্ত জনপ্রিয়। জনপ্রিয় হলে কি করলে ন্যায্য নির্বাচন হয় সেটা করুক। তিনি আবার যদি আসেন আমাদের কোনো ক্ষতি নেই। নির্বাচন এক দাবির ভিত্তিতে হতে হবে। সংসদ থাকা যাবে না, ক্ষমতায় থেকে নির্বাচন করা যাবে না। কারণ যেখানে নির্বাচন চুরি করারই রাজনীতির একটি প্রধান কার্যক্রম।

মইনুল হোসেন বলেন, রাজনীতিবিদরা নির্বাচনকে সৎ করতে পারে না তাদেরকে দেখানোর জন্য পুলিশ, আর্মি পর্যন্ত আনতে হয় এ কোন দেশ। নির্বাচন না হওয়ার পরে জনগণ থেকে সরকার বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। চারদিকে দুর্নীতি বেড়েছে, অবিচার বেড়েছে, ক্ষমতার অপব্যবহার বেড়েছে, পুলিশের ভেতরে বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছে এর মূল হলো জনগণবিচ্ছিন্ন সরকার। এদেরকে পুলিশের ওপর নির্ভর করতে হবে। সে ক্ষমতার অপব্যবহার করবে।

তিনি বলেন, আপনি কোথায় শুনেছেন পুলিশ সরাসরি টাকা নেয়। হোম মিনিস্টারকে বলেছিলাম, আমাকে ফোন দিয়ে পুলিশ বলেছে যদি মামলা না উঠিয়ে নেই তাহলে ক্রসফায়ার দিতে পারে। এটা কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর কারণে হচ্ছে না এটা পদ্ধতির কারণে হচ্ছে। গণতান্ত্রিক পদ্ধন্তি শেষ করার ফলে স্বৈরতান্ত্রিক পদ্ধতি আসছে। দেশে শান্তি নিশ্চিত করতে হলে সুষ্ঠু অবাধ নির্বাচন দেন। তা না হলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হবে।
  • Courtesy: Amadershomoy.com/Jan 23, 2018

শহীদ জিয়া বাঁচিয়ে তুলেছেন আলীগকেও!



ডা. মাজহারুল আলম


৭১ এর যুদ্ধের মাঠে মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান

শহীদ জিয়ার ‘ছেঁড়াগেঞ্জি ও ভাঙা সুটকেস’ নিয়ে অনেকে নাক সিঁটকান, কেউ ঠাট্টামস্করা করেন - ভাবখানা এই যে তাঁরা সোনার চামচ মুখে জন্ম অধিকারের আজন্ম  সনদ নিয়ে রাজনীতি করতে এসেছেন। কিন্তু তাদের অপপ্রয়াসেরর্ ফানুস টেঁসে গেছে। জিয়াকে হেয় করতে গিয়ে, তাদের মুখে ছেঁড়াগেঞ্জি ভাঙা সুটকেস যতোবার  তুচ্ছ তাচ্ছিল্যে উচ্চারিত হয়েছে, ততবারই এই ভূখণ্ডের কোটি জনতার মন ক্ষণজন্মা জাতীয় বীরের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানিয়েছে আর তাদের দিয়েছে ধিক্কার।। কারণ, শুকনো খোরমা মু‌খে দিয়ে জঠরজ্বালা নিবারণ করেছেন  মুহম্মদ(সঃ) এর মর্যাদা খাটো  হয়নি কিংবা খেজুর পাতার চাটাইয়ে  ঘুমিয়েছেন বলে কোন লেখক হযরত ওমর (রাঃ)কে নিয়ে বিদ্রুপ করেননি।প্রেসিডেন্ট জিয়া আন্তর্জাতিক পর্যায়েক‌তোটুকু প্রশংসিত হয়েছিলেন, তা লিখলে এসব হীন্যমন্য অন্ধ আঁখি খুলবে না --- তাই সে প্রসংগ থাক।

শেখ মুজিবের স্থান স্বাধীনতার  ইতিহাসে মজবুত করতে তাদেরই বেশি প্রয়োজন। জিয়াই মুজিবকে ইতিহাসে বাঁচিয়ে দিয়েছেন---।

'৭১এর ২৬মার্চে কালুরঘাট বেতারে মেজর জিয়া বজ্রকণ্ঠ ঘোষণায় বলেন " আমি মেজর জিয়াউর রহমান শেখ মজিবর রহমানের পক্ষে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করছি...।" --যার ব্যাকরনে সামান্যতম জ্ঞান আছে, তিনি স্বীকার করবেন এই "ঘোষণা করছি" ক্রিয়াপদ কর্তা মেজর জিয়া। একেবারে প্রযোজক কর্তা, প্রযোজ্য কর্তা নন।  জিয়াই স্বাধীনতার ঘোষক। বাংলাদেশের কোটি জনতাসহ বিশ্ববাসী শুনেছেন এবং শ্বাস্বত ইতিহাস তা-ই ধারন করেছে। শেখ মুজিব যা পারেন নি,জিয়া তা করেছেন।পূর্বাপর ঘটনা যা-ই হোক না কেন,সেদিনের কর্তা হলেন- মহানায়ক "জিয়া"। কর্ম হলো -"স্বাধীনতা"। আর ক্রিয়া- "ঘোষণা করছি"।--তাহলে শেখ মুজিব এই পদরাজিতে কোথায় আছেন?

বিষয়টা হলো, সে দিন জিয়াউর রহমান দ্বিধাগ্রস্ত দেশবাসীর অনুপ্রেরণা ও জাতির ঐক্যের স্বার্থে  দৃশ্যপটে অনুপস্থিত তখনও ‘পাকিস্তানী’ নেতার নামটি ব্যবহার করেছিলেন। জাতিকে সুস্পষ্টভাবে দিকনির্দেশনা দেয়ার জন্য সেটা ছিল ‘বাস্তবতা’।

মুজিব নগর সরকার গঠিত হয়--তারও ২৩দিন পরে।এই তেইশটি দিন শেখ মুজিবকে ইতিহাসে  ধরে রাখলো মেজর জিয়ার ঘোষণা।  এই ঐতিহাসিক সময় ও ‌সত্যের‌ অপরিহার্য অনিবার্যতায় জিয়ার উপস্থিতি।

কিন্তু  স্বাধীনতার ঘোষণায় যদি সেদিন অনুপস্থিত নেতা মুজিবের নামটি মেজর জিয়ার মুখে উচ্চারিত না হতো, তাহলে ইতিহাসের মহাসন্ধিক্ষণ থেকে 'মুজিব' নামটি উধাও হয়ে যেতো। আজকের এই বিলম্বিত আবেগের সেদিনের বিড়ম্বিত  ভক্তরা কোথায় ছিলেন যেদিন তাদের মহানায়ক তাদের চাটুকারিতার ‘মহামূল্য’ পরিশোধ করেছিলেন?

শেখ মুজিবকে ইতিহাস চিহ্নিত করেছে বাকশালী  স্বেচ্ছাচার হিসেবে। শেখ মুজিবের ভাবমূর্তি  চরম কলুষিত ও ইতিহাসে মুছে যাবার উপক্রম, তখনই শহীদ জিয়া ঐতিহাসিক ৫ম সংশোধনীর মাধ্যমে দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র চালু করেন। সেই সুবাদে শেখ মুজিব কর্তৃক বিলুপ্ত তঁার নিজদল আওয়ামী লীগ পুনর্বাসিত হয়।  শহীদ জিয়ার কারনেই আওয়ামী লীগের সাথে আওয়ামী লীগাররাও বাংলাদেশে পুনর্বাসিত হয়। সেদিন যদি তারা পুনর্বাসিত হবার সুযোগ না পেতো, তাহলে এ দেশের ইতিহাসে শেখ মুজিবও পুনর্বাসিত  হতেন না।

যিনি শেখ মুজিবকে ইতিহাসে বাঁচিয়ে দিয়েছেন-- তিনি আর কেউ নন, তিনি হলেন ছেঁড়া গেঞ্জি, ভাঙা সুটকেসওয়ালা অসম সাহসী বীর, মুক্তিযুদ্ধের দীপ্রমান সিপাহসালার, মহান স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান

Monday, January 22, 2018

SAVAR TANNERY ESTATE - 70pc machinery for central effluent treatment plant found substandard




Entire area is filled with stink as tanneries have been transferred to ill-equipped estate hastily, stakeholders say

The government made tanners in Hazaribagh shift to Savar Tannery Estate hastily, being misguided by a group of people about preparedness of the leather hub, said the BSCIC chief.

As industry stakeholders aired fear of local people's outrage against pollution by untreated tannery waste from the ill-equipped estate, the Bangladesh Small and Cottage Industries Corporation (BSCIC) Chairman, Mushtaq Hasan Muhuamad Iftikhar, came up with the accusation at a function Sunday.


The chief of the executing agency for the tannery hub on the western outskirts of the capital, Dhaka, also demanded punishment of those who are responsible for the situation.

The Savar Tannery Estate was not ready for operation when the tanners were made to relocate their factories over there last year, he said.

The BSCIC chairman wouldn't clarify who are the people responsible for relocation of the tanneries from the city to the suburb allegedly prematurely.

He was speaking at a seminar entitled 'Shifted tannery industry management and sustainable development'. Bangladesh Tanners Association (BTA) organised the seminar in the city.

Mr Mushtaq said they are working on the formation of a company for running the CETP (central effluent-treatment plant) and the estate after exit of Chinese construction company JLEPCL-DCL.

"We sent a proposal on a company to the ministry, we will begin official activities after getting approval," he told his audience from the leather industry.

The BSCIC chairman noted that tannery estate cannot recruit manpower as there is no option for new recruitment. The formation of a company is only solution for running the estate.

He disclosed that the government will build two new tannery estates in Rajshahi and Chittagong in view of potential growth in the sector in the regions.

He also said BSCIC sent detailed project proposal to the ministry for another 200-acre estate beside the existing one to accommodate backward- linkage sectors, smaller tanneries and other associated industries.

He said around 70 per cent machinery brought by JLEPCL-DCL for use in CETP has been found substandard and those will be returned.

He also said solid waste-based SPGS (Sludge Power Generation System) is not a sustainable option. There must be other ways for solid-waste management.

"We should think about other options for solid waste. Discussion for dumping solid waste into Amin Bazar landfill has not progressed much," he told the meet.

Speaking at the programme, BTA Chairman Shaheen Ahmed said many organisations are showing interest to use solid waste. There are many uses of tannery waste. If government allows them, the worry about solid waste will be gone.

He said the tanners ought to obtain certification and trust of foreign buyers for reaching $5 billion worth of leather-and leather-goods export by 2021.

He also said the tannery estate is still not fully functional for production. The CETP still releases polluted waters into the Dhaleswari River.

"The bad smell of solid waste is everywhere in the locality. River is getting polluted. If local people get angry, the things will really get out of hand," the industry leader said on a note of caution.

He said there is no school, hospital, accommodation for thousands of tannery workers. The government should ensure those basic needs for workers.

The Tannery Estate Project Director, Ziaul Haque, told the business meet that solid-waste management is a "great concern for us at this moment".

"Dhaka North City Corporation does not want to take tannery solid waste in their landfill; what we could do with solid waste now, we really don't know," he said.

He also said they had made many mistakes during development of estate for not having experience.

Professor of Civil Engineering at BUET Dr Delwar Hossain said tannery owners need training on proper management of liquid and solid waste.

He also asked estate authority to provide people to the Chinese company to get experience so that they can run the system after the contract is over.

Chairman of the Department at Development Studies at Dhaka University Dr Mohammad Abu Yusuf and leather expert Shikder Abu Naser, among others, also spoke at the programme.
  •  Courtesy: The Financial Express/Jan 22, 2018

‘পেশাদার চোর’ জাতীয় শ্রমিক লীগের থানা সহ-সভাপতি








জাতীয় শ্রমিক লীগের ঢাকা মহানগর উত্তরের বিমানবন্দর থানা কমিটির গুরু দায়িত্বে একজন পেশাদার চোরকে রাখার অভিযোগ পাওয়া পাওয়া গেছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিমানবন্দর থানা জাতীয় শ্রমিক লীগের সহ-সভাপতি আক্তার হোসেন একজন ‘পেশাদার চোর’। তার বিরুদ্ধে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় একাধিক চুরি মামলা রয়েছে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, ওই শ্রমিকলীগ নেতা একজন পেশাদার চোর। তার এই চুরির তকমা থেকে গা ঢাকা দেওয়ার জন্য মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে বনে গেছেন জাতীয় শ্রমিক লীগ নেতায়। আর এর অন্তরালেই তিনি চালিয়ে যাচ্ছেন চুরির অপকর্ম। এছাড়াও তার রয়েছে একটি শক্তিশালী চোর সিন্ডিকেট। যার মাধ্যমে তিনি একাই পুরো রাজধানীর সিএনজি ও প্রাইভেটকার চুরি নিয়ন্ত্রণ করছেন। এতে তার রয়েছে ১০/১৫ জন পেশাদার চোর। এছাড়াও তিনি সহ-সভাপতি পদকে পুঁজি করে নিয়ন্ত্রণ করছেন বিমানবন্দরে ফুটপাত। আর এর অন্যতম সহযোগী হল বিমানবন্দর জাতীয় শ্রমিক লীগের সভাপতি ফারুক খান ও সাধারণ সম্পাদক খাইরুল ইসলাম।

অনুসন্ধানে আরো জানা যায়, জাতীয় শ্রমিক লীগের বিমানবন্দর থানা কমিটির নিয়ন্ত্রণেই বিমানবন্দর থানা এলাকার সম্পূর্ণ ফুটপাতই নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। তাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে ফলপট্টি, ভ্যানের ফুটপাতসহ রাস্তার উপর থাকা ভ্রাম্যমাণ কাঁচাবাজার। প্রতিটি ভ্যান থেকে তোলা হচ্ছে দৈনিক চারশত টাকা। যা শ্রমিক লীগের নামে তুলছেন সবুজ। একইভাবে ফল পট্টি ও ভ্রাম্যমাণ কাঁচাবাজার থেকে চাঁদা তোলার জন্য রয়েছে পৃথক পৃথক লোক।

রাজধানীর বিভিন্ন থানায় খোঁজখবর নিয়ে বেরিয়ে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। পুলিশের চোখে সহ-সভাপতি আক্তার হোসেন একজন চিহ্নিত চোর ও মলম পার্টির সরদার। তার কাজই রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে সিএনজি ও প্রাইভেটকার চুরি করা। তার বিরুদ্ধে রমনা থানায় ১টি, ধানমন্ডি থানায় ৫ টি, কোতোয়ালী থানায় ১টি, ডেমরা থানায় ১টি ও মতিঝিল থানায় ১টি মামলা নিয়ে ৯টি মামলা রয়েছে। যার প্রতিটি মামলায়ই চুরির। যার মামলা নম্বরগুল হল, রমনা থানার মামলা নং- ৮ (০১) ২০০৫, ধানমন্ডি থানার মামলা নং- ৬১ (১০) ২০০৫, ৭১ (১২) ২০০৪, ৬৪ (১২) ২০০৪, ৪৫ (১২) ২০০৪, ২৬ (১১) ২০০৪, কোতোয়ালি থানার মামলা নং- ৩৮ (১২) ২০০৪, ডেমরা থানার মামলা নং- ৫৯ (১১) ২০০৪ এবং মতিঝিল থানার মামলা নং- ৫২ (১১) ২০০৫। সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশের দাবি, তার বিরুদ্ধে শুধু নয়টি মামলাই নয় ঢাকা ও এর আশপাশ এলাকায় আরো একাধিক মামলা রয়েছে। থানা পুলিশ আরো জানায়, এসব মামলার কয়েকটিতে জামিনে থাকলেও কয়েকটি মামলায় সে পলাতক রয়েছে।

অভিযুক্ত সহ – সভাপতি আক্তার হোসেন আমাদের সময় ডটকমকে বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে। তবে কি মামলা রয়েছে আপনে (প্রতিবেদক) নিজেই খোঁজ করে দেখেন।’

অপরদিকে বিমানবন্দর থানা জাতীয় শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. খাইরুল আমাদের সময় ডটকমকে বলেন, ‘থানা কমিটিতে তার নাম নেই। তবে তাকে পরবর্তীতে সহ-সভাপতি পদে ঢুকানো হয়েছে। আর তিনি যে একজন চোর, তা আমরা শুনিতেছি। যদি অভিযোগ সত্য হয় তাহলে আমরা তাকে বাদ করে দিব।’

একই কমিটির মহিলা সম্পাদিকা আমাদের সময় ডটকমকে বলেন, ‘তার বিরুদ্ধে যে সব মামলা ছিল তার কিছু নিষ্পত্তি হয়েছে। আর কিছু মামলায় সে জামিনে রয়েছেন।’

জাতীয় শ্রমিক লীগের বিমানবন্দর থানা কমিটির সভাপতি ফারুক খান আমাদের সময় ডটকমকে বলেন, ‘আমি জানি সে একজন ব্যবসায়ী। তবে চুরির অভিযোগ থাকলে তা আমার জানা নেই। অপরদিকে খোঁজ নিয়ে তার সম্পর্কে জানাও হয় নি।’

তিনি আরো জানান, সহ-সভাপতি আক্তার হোসেন বর্তমানে দক্ষিণখান ধানাধীন কাওলার মধ্যপাড়া এলাকায় থাকেন। তার গ্রামের বাড়ি টাঙ্গাইলে।’ যা উপরোক্ত মামলার এজাহারভুক্ত আসামি আক্তার হোসেনের ঠিকানার সাথে মিল রয়েছে।

এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে ঢাকা মহানগর উত্তরের জাতীয় শ্রমিক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক কাশেম শেখ আমাদের সময় ডটকমকে বলেন, ‘যদি তার বিরুদ্ধে মামলা থাকে তাহলে তিনি কিভাবে প্রকাশ্যেই ঘুরে বেড়াচ্ছেন। তাহলে তো পুলিশের যোগসাজশের মাধ্যমেই পালিয়ে রয়েছেন।’

তিনি আরো বলেন, ‘চুরির অভিযোগ যদি সত্য প্রমাণিত হয়। তাহলে বর্ধিত সভা ডেকে তাকে বহিস্কার করা হবে।’

চাঁদাবাজির প্রসঙ্গে জানতে বিমানবন্দর পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোস্তাফিজুর রহমানের সাথে মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায় নি।
  • Courtesy: Amadershomoy.com/22/01/2018

Land grabbers more powerful than govt- Admits housing minister

Staff Correspondent


Housing and public works minister Mosharraf Hossain on Sunday said that sometimes it seemed to him that the land grabbers were more powerful than the government.

Replying to questions at a ‘Meet the Reporters’ programme organised by Dhaka Reporters’ Unity at its auditorium, he also said that the government agencies, especially the Rajdhani Unnayan Kartipakkha, had failed to protect the rivers surrounding the capital and other wetlands from the grabbers and pollutions.

He admitted that the officials of the government agencies engaged to enforce the laws were also involved in corruption widening scope for grabbing as well as unplanned development in and around the capital.

‘Grabbing and pollutions should be stopped immediately,’ Mosharraf said, stressing the need for the framing of a strong policy.


He urged all concerned to ensure the use of sand cement blocks instead of bricks and said that the government was going to make it mandatory in the building code to protect croplands and environment pollution from the brick kilns.

The minister blamed the failure of the urban planners for unplanned development of the capital, alleging that they failed to forecast the growth of Dhaka city. As an example, he said that the urban planners had selected Tejgaon as an industrial area at the outside of the capital but the area now became the centre of the city.

Dhaka Reporters’ Unity president Saiful Islam presided over the programme where its general secretary Syed Sukkur Ali Shuvo, among others, was present.

He blamed government agencies concerned for the failure to ensure proper management of solid and liquid wastes which caused river pollution and environmental degradation in the capital. Replying to another query, the minister said that they were planning new residential areas in the city having independent sewerage management, solid waste management and the other services. 

  • Courtesy: New Age/Jan 22, 2018

Businesses frustrated with lethargic reforms


Staff Correspondent



Businesses yesterday expressed frustration over the lack of improvement in the processes for doing business and the sluggish progress in implementation of reform measures.

The economy is buoyant, the macroeconomy, on balance, is positive; yet the private domestic and foreign investment are not showing the dynamism that is needed to accelerate growth to 8 percent, said Sadiq Ahmed, vice-chairman of the Policy Research Institute of Bangladesh.

“A big part of the answer is the continued high cost of doing business as suggested by the ease of doing business rankings.”

Ahmed's comments came at a roundtable on doing business in Bangladesh, organised by the PRI at its office in Dhaka.

Businesses and analysts also talked on the lack of willingness among civil servants to ease the process of doing business, which is badly needed to take the economy to the next level.

Some stressed on ensuring the accountability of civil servants and expressed dissatisfaction over the quality of education and the low skills of workforce.

In the World Bank's ranking of Doing Business, Bangladesh was ranked 177 out of 189 economies in 2018, down one notch from 2017.

“Bangladesh's ranking is at the lower end of the rankings in 9 out of the 10 categories,” said Ahmed. It fared the worst in enforcing contracts, registering property, getting electricity and trading across the borders.

“These suggest that the investment climate challenges are broad-based and will require fundamental reforms over a long period of time.”

Action plan prepared, not implemented

The Bangladesh Investment Development Authority has prepared an action plan for eight indicators of doing business through stakeholder consultations earlier, according to Ahmed. But the implementation of the developed action plan is yet to be initiated, he said, adding that the National Committee for Monitoring Implementation of Doing Business Reforms needs to be operationalised for stronger oversight of the reforms. As an immediate task, he suggested addressing the problems faced by the banking sector.

“If the banking sector problems that we are facing, if the pressure that we see on the balance of payments and on the credit side are not resolved quickly, there is a risk that some of the gains that we have made on the economy might be lost.”

He also suggested reducing the corporate tax rate as well as simplifying and streamlining the tax laws and administration. “Two easy things are e-filing and e-payment. That will reduce a lot of harassment,” he added.

Problems related to processes for doing business are quite well known, said Nihad Kabir, president of the Metropolitan Chamber of Commerce and Industry.

“We need practically-orientated, time-bound, measurable and implementation-capable plans. And the government and the private sector must sit together and do it. We have run out of time.”

Citing Samsung's desire to invest in Bangladesh and subsequently shifting to Vietnam, Farooq Sobhan, president of the Bangladesh Enterprise Institute, said: “Success stories are important and understanding failure is also important.”

Shortage of skilled workforce

Sobhan, also a former ambassador of Bangladesh, said foreigners are hired in industries because of a shortage of skilled workforce.

This result in the drain of foreign currencies out of the country, he said, citing that $4 billion of remittance was sent to India from Bangladesh through the official channel.

The total amount will be double if the transfers through the unofficial channels are taken into account, he added.

“Building human resources is important and yet nobody is putting attention to that,” said Anwar-Ul-Alam Chowdhury, former president of the Bangladesh Garment Manufacturers and Exporters Association.

He went on to cite the case of Japan, which was once dependent on its garment industry. But the country invested on research and education to cut the dependence on the sector and diversify its industrial base.

“We are still dependent on the garment although 30-40 years have gone by. It is unfortunate.”

In order to expand the industrial base, the mindset needs to be change, safety, energy and infrastructure ensured, and investment made on education, he added.

Need for quality education

“Nothing will be possible unless we can ensure quality education,” said Sohel Ahmed Chowdhury, a former commerce secretary.

Asif Ibrahim, former president of the Dhaka Chamber of Commerce and Industry, said 400 reform proposals were made from Business Initiative Leading Development for private sector development.

“The window of opportunity is very short,” he added.

BIDA Executive Chairman Kazi M Aminul Islam said a detailed plan of action has been prepared and this has been shared with the agencies for implementation.

PRI Executive Director Ahsan H Mansur said regulatory reforms are the key. He also suggested the BIDA to take steps to receive feedbacks from the private sector about reforms and take a proactive role in resolving the problems.

“As this is the election year, difficult reforms cannot be done. But the government can take areas where win-win reforms are possible,” Mansur added.

Reforms have helped India improve its doing business ranking, said M Masur Reaz, senior economist and programme manager of the World Bank Group in Dhaka. “Political ownership was the most important part there.”
  • Courtesy: The Daily Star/Jan 21, 2018

Sunday, January 21, 2018

মির্জা আলমগীরের অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত!




ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সিনেট রেজিস্টার্ড গ্র্যাজুয়েটদের নির্বাচনে ভোট দিতে এসেছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র শিক্ষক কেন্দ্র-টিএসসিতে অনুষ্ঠিত এই নির্বাচনে সবার সাথে লাইনে দাঁড়ান মির্জা আলমগীর। কিন্তু অনেকেই তাঁকে লাইন থেকে সরে এসে ভোট দেয়ার অনুরোধ করেন। কিন্তু মির্জা আলমগীর এতে রাজি না হয়ে বলেন, 'আমার সিরিয়াল এলেই আমি ভোট দেবো।'

দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে নিজের ভোট প্রদানের সময় এলে তিনি ভোট দেন। মির্জা আলমগীররের লাইনে দাঁড়ানোর ছবিটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায়।

অনেকেই ছবিটি শেয়ার করে লেখেন, 'একজন সাবেক মন্ত্রী, সাবেক এমপি এবং দেশের বৃহত্তম একটি দলের মহাসচিব। লাইনে দাঁড়াতে হবে কেন? কিন্তু তিনি কারো কথাই শুনেন নি। পুরো লাইনে দাঁড়িয়ে, উনার সিরিয়াল যখন এসেছে তখনই বুথে প্রবেশ করেছেন ভোট দিতে।'

আরেকজন লিখেছেন, 'আমরা শৃঙ্খলা ভঙ্গ করতে পছন্দ করি। কিন্তু শৃঙ্খলা মেনে চলার জন্য এটা একটা অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত।'

ব্যাংকঋণ ফেরত না দেয়ার অর্থনীতি চট্টগ্রামে

হাছান আদনান ও ওমর ফারুক











ব্যাংকগুলোর বড় অংকের ঋণ আছে চট্টগ্রামের বনেদি ব্যবসায়ীদের কাছে। ইচ্ছামতো ঋণ পেয়েছেন অনভিজ্ঞ ও উঠতি ব্যবসায়ীরাও। নিরাশ হতে হয়নি নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠানকেও। বাংলাদেশ ব্যাংক ও সংশ্লিষ্ট ব্যাংক সূত্রগুলো বলছে, চট্টগ্রামভিত্তিক ব্যবসায়ীদের কাছেই ব্যাংকঋণ আছে দেড় লাখ কোটি টাকার মতো। ঋণের অর্থের কতটুকু ফেরত আসবে, সে ব্যাপারে ধারণা নেই ব্যাংকগুলোর। ব্যাংকগুলো এ নিয়ে উদ্বেগে থাকলেও নিরুদ্বেগ ঋণগ্রহীতারা। ব্যাংকের অর্থ বকেয়া রেখে অনেকেই বিদেশে আয়েশি জীবনযাপন করছেন। ব্যাংক কর্মকর্তারা ধরনা দিলেও কেউ কেউ আবার তাদের পাত্তাই দিচ্ছেন না।

বিভিন্ন ব্যাংক থেকে প্রায় ২৫০ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছিলেন ক্লিউসটন গ্রুপের কর্ণধার এমএ আলীম চৌধুরী। ভোগ্যপণ্য আমদানি, শিপ ইয়ার্ড, প্লাস্টিক রিসাইক্লিং, এগ্রো, বেভারেজ ব্যবসার নামে ঋণ নিলেও এর বড় অংশই বিনিয়োগ করেছেন জমি ক্রয়ে। পরিশোধ না করায় পুরো ঋণই এখন খেলাপি। পাওনা আদায়ে ব্যাংকগুলোকে ছুটতে হচ্ছে এ ব্যবসায়ীর পেছনে। যদিও নাগাল মিলছে না তার। বাধ্য হয়ে মামলার পথে হাঁটছে এ ব্যবসায়ীকে অর্থায়নকারী ব্যাংকগুলো।

জানা গেছে, এমএ আলীম চৌধুরীর কাছে আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের আগ্রাবাদ শাখার পাওনা রয়েছে ৫৩ কোটি টাকা, ব্যাংক এশিয়ার আন্দরকিল্লা শাখার ৩৬ কোটি ও প্রাইম ব্যাংক আগ্রাবাদ শাখার ৩৫ কোটি টাকা। এছাড়া ব্র্যাক ব্যাংক আগ্রাবাদ শাখার প্রায় ৪০ কোটি, সোনালী ব্যাংক আগ্রাবাদ শাখার ২৫ কোটি, স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া আগ্রাবাদ শাখার ১৮ কোটি, হাবিব ব্যাংক আগ্রাবাদ শাখার ১৭ কোটি টাকাও পরিশোধ করছেন না তিনি।

ব্যাংক এশিয়ার অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট ও হেড অব ব্রাঞ্চ (আন্দরকিল্লা শাখা) মো. শামসুল আলম বলেন, ২০০৮-০৯ সালের দিকে ভোগ্যপণ্য আমদানির নামে এ ঋণ নেন গ্রাহক। দীর্ঘ এক যুগেও ঋণের টাকা ফেরত দেননি। দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসা গুটিয়ে গা-ঢাকা দিয়ে আছেন তিনি। বহু চেষ্টার পরও ঋণের টাকা ফেরত না পাওয়ায় ঋণগ্রহীতার বিরুদ্ধে মামলা করতে হয়েছে।

সোনালী ব্যাংক আগ্রাবাদ শাখার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা জানান, ২০০৭-০৮ সালের মধ্যে স্ক্র্যাপ আমদানির নামে ব্যাংক থেকে ঋণ সুবিধা নেয় ক্লিউসটন গ্রুপ। কিন্তু স্ক্র্যাপ ব্যবসা না করে ভিন্ন খাতে তা সরানো হয়। এক যুগেও সে টাকা আর ফেরত দেননি গ্রাহক।

সোনালী ব্যাংকের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার ও আগ্রাবাদ শাখার ব্যবস্থাপক মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ঋণের টাকা উদ্ধারে ক্লিউসটন গ্রুপের আগ্রাবাদের কার্যালয়ে বারবার যোগাযোগের পরও কোনো সাড়া পাওয়া যায় না। এমনকি ব্যাংক কর্মকর্তাদের কোনো পাত্তাই দেন না প্রতিষ্ঠানটির স্বত্বাধিকারী এমএ আলীম চৌধুরী। ব্যাংকের টাকা পরিশোধের কোনো মানসিকতাই তার মধ্যে নেই।

শিপ ব্রেকিং খাতের উড়ন্ত সময়ে শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ডের মাধ্যমে মাবিয়া গ্রুপ গড়ে তোলেন জাহাঙ্গীর আলম ও ফরিদুল আলম। গ্রুপটিকে বড় অংকের ঋণ দেয় বেসরকারি দ্য সিটি ও এবি ব্যাংক। ব্যবসা থেকে ছিটকে পড়ায় মাবিয়া গ্রুপের এ ঋণ আদায়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। গ্রুপটির কাছে ব্যাংক দুটির আটকে গেছে প্রায় ৩০০ কোটি টাকা।

দেশের এক ডজন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে হাজার কোটি টাকার বেশি ঋণ নিয়েছেন ক্রিস্টাল গ্রুপের কর্ণধার মোরশেদ মুরাদ ইব্রাহিম ও তার পরিবার। ঋণের অর্থ খেলাপি হয়ে গেছে অনেক আগেই। টাকা আদায়ে এখন মোরশেদ মুরাদ ইব্রাহিম ও তার ভাইদের পেছনে ঘুরতে হচ্ছে ব্যাংকারদের।

সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন ব্যাংকের বিপুল অংকের ঋণ বকেয়া রেখে দেশ ছেড়েছেন চট্টগ্রামের অনেক ব্যবসায়ী। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, সিঙ্গাপুর কিংবা মালয়েশিয়ায় সপরিবারে বিলাসী জীবনযাপন করছেন তারা। চট্টগ্রামভিত্তিক ম্যাক ইন্টারন্যাশনালের স্বত্বাধিকারী তিন ভাই জয়নাল আবেদিন, জামিল আবেদিন ও মোহাম্মদ আলাউদ্দিনও আছেন এদের মধ্যে। বিভিন্ন ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে ২০০৭ সালে শিপ ব্রেবিং ব্যবসা শুরু করেছিলেন তারা। এরপর ২০১২ সালে প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেলে ব্যাংকের ঋণ পরিশোধ না করেই বিদেশে পাড়ি জমান জয়নাল আবেদিন ও জামিল আবেদিন। ম্যাক ইন্টারন্যাশনালের কাছে ১২টি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পাওনা দাঁড়িয়েছে বর্তমানে ৮০০ কোটি টাকার বেশি।

ভোগ্যপণ্য আমদানিতে দ্রুত প্রসার ঘটে খাতুনগঞ্জের ট্রেডিং প্রতিষ্ঠান মেসার্স ইয়াছির এন্টারপ্রাইজের। ২০০৯ সালের দিকে প্রতিষ্ঠানটি বড় পরিসরে ভোগ্যপণ্য আমদানি শুরু করে। ২০১২-১৩ সালে ভোগ্যপণ্য আমদানি করে বড় ধরনের লোকসানে পড়ে প্রতিষ্ঠানটি। পরবর্তীতে ব্যাংকের দায় না মিটিয়েই ২০১৪ সালের শুরুর দিকে সপরিবারে কানাডা পাড়ি দেন প্রতিষ্ঠানটির স্বত্বাধিকারী মোহাম্মদ মোজাহের হোসেন। ইয়াছির গ্রুপের প্রতিষ্ঠান ইয়াছির এন্টারপ্রাইজ ও শাপলা ফ্লাওয়ার মিলসে বিভিন্ন ব্যাংকের প্রায় হাজার কোটি টাকা বকেয়া রেখেই বিদেশ পাড়ি দেন এ ব্যবসায়ী।

২০০৯-১০ সালের দিকে ইস্পাত, শিপ ব্রেকিং ও আবাসন ব্যবসার নামে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন মিশম্যাক গ্রুপের কর্ণধার তিন ভাই হুমায়ুন কবির, মিজানুর রহমান শাহীন ও মুজিবুর রহমান মিলন। এসব প্রতিষ্ঠানের নামে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে প্রায় ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা ঋণ নেন তারা। ঋণ আদায়ে ব্যর্থ হয়ে ২০১২ সালের পর প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধারদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের শুরু করে ব্যাংকগুলো। ঠিক ওই সময় সপরিবারে বিদেশ চলে যান তিন ভাই।

ব্যাংকগুলোর আগ্রাসী বিনিয়োগের কারণেই এ অবস্থা তৈরি হয়েছে বলে মনে করেন চট্টগ্রাম চেম্বারের সভাপতি মাহবুবুল আলম। বণিক বার্তাকে তিনি বলেন, বাছবিচার না করে ২০১০-১৫ সাল পর্যন্ত ব্যাংকগুলো নানা খাতে বিনিয়োগ করেছে। ভালো ব্যবসায়ীর পাশাপাশি মন্দ লোকেরাও ব্যাংক থেকে রাতারাতি ঋণ পেয়েছে। এর ফলে বাজারে অসুস্থ প্রতিযোগিতা সৃষ্টি হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ভালো ব্যবসায়ীরা। আর প্রতারকরা ব্যাংকের টাকা নিয়ে পালিয়ে গেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, ২০১৭ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত চট্টগ্রাম জেলার ব্যাংক শাখাগুলোয় জমা ছিল ১ লাখ ৩২ হাজার ৫৪৪ কোটি টাকার আমানত। একই সময়ে ব্যাংকগুলো জেলাটিতে ঋণ বিতরণ করেছে ১ লাখ ১৫ হাজার ২৩১ কোটি টাকার। ব্যাংকসংশ্লিষ্টরা বলছেন, ঢাকার বিভিন্ন ব্যাংক শাখা থেকেও বিপুল পরিমাণ ঋণ নিয়েছেন চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীরা। এটা যোগ করলে চট্টগ্রামভিত্তিক ব্যবসায়ীদের ঋণের পরিমাণ দেড় লাখ কোটি টাকার কম হবে না।

চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীদের কাছে বিতরণকৃত ঋণের প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা এরই মধ্যে খেলাপি হয়ে গেছে। ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ এসব গ্রাহকের মধ্যে চট্টগ্রামের পুরনো প্রতিষ্ঠান যেমন আছে, একই সঙ্গে রয়েছে খাতুনগঞ্জের ‘চিনি বশর’, বাকলিয়ার ‘গাছ কামাল’, ময়দার ব্যাপারী আবু সৈয়দ, মাবিয়া গ্রুপ, নূর-উন-নবীর মতো অখ্যাত ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানও। অখ্যাত এসব ব্যবসায়ী ও প্রতিষ্ঠানই বেশি ভাবাচ্ছে ব্যাংকগুলোকে।

চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীদের আগ্রাসী ঋণ প্রদান ও খেলাপি হয়ে যাওয়ার বিষয়টি গবেষণার দাবি রাখে বলে মন্তব্য করেন রূপালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. আতাউর রহমান প্রধান। তিনি বলেন, চট্টগ্রামের বিপর্যয় হয়েছে জাহাজ ভাঙা শিল্পে। উন্নত বিশ্ব থেকে আমাদের দেশে শিল্পটি স্থানান্তর হওয়ার পর ব্যবসা বোঝেন, এমন অনেকে বিনিয়োগ করেছেন। আবার চাল-ডাল ও তেল ব্যবসায়ীরাও এ খাতে বিনিয়োগ করে রাতারাতি ধনী হওয়ার চেষ্টা করেছেন। ব্যাংকও বুঝে না বুঝে খাতটিতে আগ্রাসী বিনিয়োগ করেছে। ফলে ঋণ হিসেবে নেয়া অনেক টাকাই যথাযথ খাতে বিনিয়োগ না হয়ে অন্য খাতে চলে গেছে। ঋণের টাকা দেশ থেকে পাচার করা হয়েছে বলেও আমরা শুনতে পাচ্ছি।
  • বণিক বার্তা / জানুয়ারি ২১, ২০১৮

বড় প্রকল্পের বিশেষ গুণ, খরচ বাড়াতে হয় কয়েক গুণ

প্রদীপ দাস/প্রতিবেদক









পদ্মা সেতু প্রকল্পে ব্যয় ও সময়চিত্র। 

রাজধানীর সঙ্গে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের সংযোগ স্থাপন করতে পদ্মা সেতু নির্মাণের জন্য ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ১০ হাজার ১৬১ কোটি ৭৫ লাখ টাকা অনুমোদন করে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। পরে ২০১১ সালে এই ব্যয় বাড়িয়ে করা হয় ২০ হাজার ৫০৭ কোটি ২০ লাখ টাকা। ওই বছরই দাতা সংস্থা বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতুতে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে অর্থায়ন স্থগিত করে দেয়। অন্য দাতা সংস্থাগুলোও একই পথ অনুসরণ করে।

২০১৩ সালে সরকার নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু করার উদ্যোগ নেয়। ২০১৬ সালে তৃতীয় দফায় ৮ হাজার ২৮৬ কোটি টাকা একনেকে অনুমোদন করলে নির্মাণ ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ২৮ হাজার ৭৯৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। এবার চতুর্থ দফায়ও ব্যয় বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এ দফায় জমি অধিগ্রহণের জন্য বাড়তি যুক্ত হচ্ছে আরও ১ হাজার ৪০০ কোটি টাকা। এখন মোট ব্যয় দাঁড়াবে ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। ফলে শুরুতে পদ্মা সেতু নির্মাণ ব্যয় যা ধরা হয়েছিল, বর্তমানে তা প্রায় তিন গুণ বেড়েছে।

ব্যয়ের মতো পদ্মা সেতু শেষ করতে সময়ও বাড়ানো হয়েছে কয়েক দফা। ২০১৮ সালে পদ্মা সেতু নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও তা সম্পন্ন হওয়া নিয়ে রয়েছে আশঙ্কা। সেতু কর্তৃপক্ষের অগ্রগতি সংক্রান্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী, এখন পদ্মা সেতু প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ৪৯ শতাংশ। এর মধ্যে মূল সেতুর অগ্রগতি ৫২ শতাংশ। আর নদীশাসনের কাজের অগ্রগতি ৩৪ দশমিক ২০ শতাংশ।

শুধু পদ্মা সেতু নয়, গত ১১ বছরে প্রায় সব মেগা (বৃহৎ) প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে সময় ও ব্যয় বাড়ানো হয়েছে কয়েক গুণ। 

২০০৬ সালে বিএনপি ক্ষমতা ছাড়ার পর দেশে প্রথমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার, পরে ২০০৯ সালের জানুয়ারিতে ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ। এই ১১ বছরে (২০০৬-১৭) সরকার বিভিন্ন উন্নয়নমূলক পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে, যার মধ্যে রয়েছে বেশকিছু মেগা (বড়) প্রকল্পও। এর মধ্যে জনগুরুত্ব বিবেচনায় ১৪টি প্রকল্প বিশ্লেষণ করা হয়েছে। এই প্রকল্পগুলোর মধ্যে মাত্র চারটির কাজ শেষ হয়েছে, ছয়টি প্রাথমিক পর্যায়ে, চলতি বছর তিনটি শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। বাকি একটির কিছু অংশের কাজ শেষ হলেও পূর্ণাঙ্গ কাজ কবে নাগাদ শেষ হবে, তা এখনো অনিশ্চিত।

শেষ হওয়া চারটি প্রকল্পের একটিও নির্দিষ্ট সময়ে শেষ হয়নি। প্রথম যে ব্যয় ধরা হয়েছে, তার মধ্যে শেষ করাও সম্ভব হয়নি। কয়েক দফা বাড়াতে হয়েছে সময় ও ব্যয়।

চলতি বছর যে প্রকল্প তিনটি শেষ হওয়ার কথা রয়েছে, সেগুলো নিয়েও রয়েছে যথাসময়ে শেষ হওয়ার শঙ্কা। ফলে ব্যয় বাড়ার আশঙ্কাও রয়েছে শেষ না হওয়া প্রকল্পগুলোয়।

সেই সঙ্গে শেষ হওয়া প্রকল্পের দুই-একটির ক্ষেত্রে গুণগত মান নিয়েও রয়েছে প্রশ্ন; উঠেছে দুর্নীতির অভিযোগও। সঙ্গে জনভোগান্তি তো রয়েছেই। তাই সরকারের বড় বড় প্রকল্পের উদ্দেশ্যের পেছনে ভিন্ন কোনো স্বার্থের ইঙ্গিত করছেন বিশেষজ্ঞরা। কেউ কেউ অভিযোগ করছেন, বড় প্রকল্পে বড় চুরি ও স্বার্থরক্ষার ব্যাপার থাকায় সময় ও ব্যয় বাড়ে।



ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক প্রকল্পে ব্যয় ও সময়চিত্র

মহাসড়কে ‘মহামারী’

২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে জেনেভায় ইউএনইসিইর (ইউনাইটেড ন্যাশনস ইকোনমিক কমিশন ফর ইউরোপ) এক সেমিনারে ‘এস্টিমেটিং অ্যান্ড বেঞ্চমার্কিং ট্রান্সপোর্ট ইনফ্রাস্ট্রাকচার কস্ট’ শীর্ষক এক প্রতিবেদন তুলে ধরা হয়। ওই প্রতিবেদনে অনুযায়ী, ইউরোপে চার লেনের মহাসড়ক নির্মাণে কিলোমিটার প্রতি ব্যয় হয় ২৮ কোটি টাকা। ভারতে এই ব্যয় ১০ কোটি, চীনে ১৩ কোটি। আর বাংলাদেশে ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা মহাসড়কে চার লেন করতে প্রতি কিলোমিটারে খরচ হয় ৯৫ কোটি টাকা! শুধু ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা মহাসড়কে নয়, অন্য মহাসড়কগুলোর অবস্থাও শোচনীয়।

গণমাধ্যমে প্রকাশিত বিভিন্ন প্রতিবেদন অনুযায়ী, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে কিলোমিটার প্রতি ব্যয় ১৯ কোটি ৭৩ লাখ, জয়দেবপুর-ময়মনসিংহে ২০ কোটি ৮২ লাখ, রংপুর-হাটিকুমরুলে ৫২ কোটি ৭ লাখ এবং ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে ৫৬ কোটি ৪ লাখ টাকা। বিশ্বব্যাংকের ২০১৭ সালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে কিলোমিটার প্রতি ৭০ লাখ ডলার, ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কে ১ কোটি ১৯ লাখ ডলার ব্যয় হয়েছে।

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক

সরকারের অন্যতম বড় প্রকল্প ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক। ২০১০ সালে শুরু হওয়া এই প্রকল্পের সময় বাড়ানো হয়েছে পাঁচবার। ব্যয় বাড়ানো হয়েছে চারবার। এই প্রকল্প যখন নেওয়া হয়, তখন তা ১ হাজার ৬৫০ কোটি টাকায় শেষ করার হিসাব করা হয়েছিল। ১৯২ দশমিক ৩০ কিলোমিটার দীর্ঘ এই প্রকল্পের ব্যয় পরবর্তী সময়ে বেড়ে দাঁড়ায় ৩ হাজার ১৯০ কোটি ২৯ লাখ টাকা। পাঁচ দফা সময় বাড়িয়ে কিছু অংশের কাজ শেষ হলেও পূর্ণাঙ্গভাবে তা শেষ করা সম্ভব হয়নি।



জয়দেবপুর-ময়মনসিংহ মহাসড়ক প্রকল্পে ব্যয় ও সময়চিত্র


রাজধানীর সঙ্গে ময়মনসিংহের সড়ক যোগাযোগ নির্বিঘ্ন করতে জয়দেবপুর থেকে ময়মনসিংহ পর্যন্ত চার লেনের সড়ক নির্মাণের প্রকল্প হাতে নেয় সরকার। ২০১০ সালে শুরু হওয়া এ প্রকল্পের কাজ ২০১৩ সালের জুনে শেষ হওয়ার কথা ছিল। তবে তা সম্ভব হয়নি। একাধিকবার সময় বাড়িয়ে প্রকল্পের কাজ শেষ হয় ২০১৫ সালে। ৮৭ দশমিক ১৮ কিলোমিটার দীর্ঘ প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয়েছিল ৯৯২ কোটি টাকা। এর পর একাধিকবার ব্যয় বাড়ানোর পর দাঁড়ায় ১ হাজার ৮১৫ কোটি ১২ লাখ টাকায়। চার লেন প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার পরপরই সড়কে খানাখন্দের অভিযোগ ওঠে।

মালিবাগ-মৌচাক ফ্লাইওভার

সম্প্রতি চালু হয়েছে মালিবাগ-মৌচাক ফ্লাইওভার। ২০১০ সালের জানুয়ারিতে শুরু হওয়া এই প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০১৪ সালে। যথাসময়ে কাজ শেষ না হওয়ায় সময় বাড়িয়ে ২০১৫ করা হলেও তৃতীয় দফায় বাড়ানো হয়। সময়ের মতো প্রকল্পের ব্যয়ও বাড়ানো হয় তিন দফা। প্রথমে ব্যয় ধরা হয়েছিল ৩৪৩ কোটি ৭০ লাখ, দ্বিতীয় ধাপে ৭৭২ কোটি ৭৭ লাখ এবং তৃতীয় ধাপে দাঁড়ায় ১ হাজার ২১৮ দশমিক ৮৯ কোটি টাকা।










জিল্লুর রহমান ফ্লাইওভার

মিরপুর থেকে বিমানবন্দর যাওয়ার জন্য ২০১১ সালে নির্মাণকাজ শুরু করা হয় জিল্লুর রহমান ফ্লাইওভার। নির্ধারিত সময়ের আগেই ২০১৩ সালের মার্চে শেষ হয় এর নির্মাণকাজ। সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে ১.৭৯ কিলোমিটার উড়ালসেতু নির্মাণ ব্যয় হয় প্রায় ২০০ কোটি টাকা।

বিদ্যুতে ‘অন্ধকার’

বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) সম্প্রতি প্রকাশিত ২০১৬-১৭ অর্থবছরের আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই অর্থবছরে পিডিবির লোকসান হয়েছে ৪ হাজার ৪৩৪ কোটি ৯০ লাখ টাকা। আর পুঁঞ্জিভূত লোকসান বা দেনার পরিমাণ গিয়ে দাঁড়িয়েছে, ৪৯ হাজার ১৯৪ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। গত অর্থবছরে পিডিবির ৪১ হাজার ৩২০ কোটি ১২ লাখ টাকার চেয়ে পুঞ্জীতূত লোকসানের পরিমাণ প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকা বেশি। আর এই ঘাটতি মেটাতে প্রতি বছর অর্থমন্ত্রণালয় থেকে ঋণ নিচ্ছে পিডিবি।

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র

১৯৭৪ সালে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের বিষয়ে আলোচনা হলেও পরিবেশবাদীদের বিরোধিতা উপেক্ষা করে ২০০৯ সালে এটি স্থাপনের জন্য সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন পারমাণবিক এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের ব্যয় ধরা হয়েছে ১২ দশমিক ৬৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় এই প্রকল্পটির ২০২৩ সাল নাগাদ প্রথম ইউনিট এবং ২০২৪ সালে দ্বিতীয় ইউনিটের উৎপাদনের সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে।

৬০ বছর মেয়াদী এই প্রকল্পের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন নিয়ে ইতোমধ্যেই গণমাধ্যমে প্রশ্ন উঠেছে। ৩৬৯ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতায় ব্যয় ধরা হয়েছে ৬৯৮ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। সেখানে প্রকল্প পরিচালকের মাসিক বেতন প্রায় ৭ লাখ টাকা; যা বর্তমান বাংলাদেশ সরকারের বেতনের চেয়ে প্রায় ছয় গুণ বেশি।

রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প

প্রথম থেকেই রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পের বিরোধিতা করে আসছে পরিবশেবাদীরা। কিন্তু সব বাধা উপেক্ষা করে গত বছর শুরু হওয়া এ প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১৪ হাজার ৯৯৯ কোটি টাকা। সরকার নিজস্ব তহবিল থেকে যোগান দেবে ৪ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে ২০১৯ সালে। 

মাতারবাড়ি বিদ্যুৎকেন্দ্র

গ্যাসের ওপর চাপ কমিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনে কয়লার ব্যবহার প্রাধান্য দেওয়ার জন্য ২০১৪ সালে কক্সবাজারের মহেশখালীতে শুরু হয় মাতারবাড়ি বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প। এর ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৫ হাজার ৯৮৪ কোটি টাকা। প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হবে ২০২৩ সালের জুলাইতে। চলতি বছরের ৫ জানুয়ারি বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ জানান, এখন পর্যন্ত প্রকল্পের আর্থিক অগ্রগতি ১৩ দশমিক ৭৩ এবং ভৌত অগ্রগতি ১৮ শতাংশ। 



হাতিরঝিল প্রকল্পে ব্যয় এবং সময়চিত্র।

হাতিরঝিল প্রকল্প

রাজধানীর সৌন্দর্যবর্ধন এবং সাধারণ মানুষের বিনোদনের জন্য নেওয়া হয় হাতিরঝিল প্রকল্প। ২০০৭ সালে শুরু হয় কাজ। প্রথমে এর ব্যয় ধরা হয় ১ হাজার ৪৭৩ কোটি ৫৮ লাখ টাকা। কাজ শেষ করার সময় নির্ধারণ করা হয় ২০১০ সাল। কিন্তু কয়েক দফায় বাড়ানো হয় এর মেয়াদ। চার দফা সময় বাড়িয়ে ব্যয় বাড়ানো হয় ৩ দফায়। প্রথম দফায় ব্যয় বাড়ে ৮ কোটি টাকা, দ্বিতীয় দফায় বাড়ানো হয় ৪৯০ কোটি টাকা। তৃতীয় দফায় বাড়ানো হয় আরও ২৬৫ কোটি টাকা। এতে প্রকল্পটির মোট ব্যয় দাঁড়ায় ২ হাজার ২৩৬ কোটি টাকা। এর কাজ এখনো পূর্ণাঙ্গভাবে শেষ করা সম্ভব হয়নি।

মেট্রোরেল

২০১৬ সালে দেশের প্রথম মেট্রোরেল প্রকল্পের কাজের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২০১২ সালের ১৮ ডিসেম্বর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে এটি অনুমোদন পায়। প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন, আগামী বছর উত্তরা-আগারগাঁও অংশের কাজ শেষ হবে। এ ছাড়া উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ২০.১ কিলোমিটার এই মেট্রোরেলের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ২২ হাজার কোটি টাকা। এতে স্টেশন থাকবে মোট ১৮টি, প্রকল্পের কাজ শেষ হবে ২০২১ সালে। এটি সম্পন্ন হলে ঘণ্টায় ৮০ হাজার যাত্রী পরিবহন করা সম্ভব হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

রেললাইন নির্মাণ প্রকল্প

২০১১ সালে ভিত্তিফলক উন্মোচনের ছয় বছর পর চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে কক্সবাজার এবং রামু থেকে গুনদুম পযন্ত রেললাইনের কাজ শুরু হয়েছে ২০১৭ সালের নভেম্বরে। দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ১২৮ কিলোমিটার এবং রামু থেকে গুনদুম পযন্ত ২৮ কিলোমিটার রেললাইন নির্মাণ করা হবে। ১৮ হাজার ৩০৪ কোটি টাকা ব্যয়ের এই প্রকল্প ২০২২ সালে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।

পায়রা সমুদ্রবন্দর

২০১৩ সালে পায়রা সমুদ্র বন্দর প্রকল্পের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। ২০১৫ সালের জুলাইয়ে কাজ শুরু হওয়া এই প্রকল্পের মেয়াদ নির্ধারণ করা হয়েছে ২০১৮ সালের জুন পর্যন্ত। মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ১২৮ কোটি টাকা। এর সবটাই জোগান দিচ্ছে সরকার।

এলএনজি টার্মিনাল প্রকল্প

কক্সবাজারের মহেশখালী উপকূলের পশ্চিম দিকে গভীর সমুদ্রে জ্বালানি গ্যাসের চাহিদা মেটাতে রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) টার্মিনাল নির্মাণে ২০১৬ সালে অনুমোদন দেয় সরকার। প্রায় ৫০ কোটি মার্কিন ডলারের এ প্রকল্পের কাজ চলতি বছরের মাঝামাঝি চালু হওয়ার কথা রয়েছে। নির্মাণকাজ শেষ হলে প্রতিদিন ৫০ কোটি ঘনফুট প্রাকৃতিক গ্যাস সরবরাহ করা যাবে।

ঘূর্ণিঝড় পুনরুদ্ধার ও পুনর্বাসন প্রকল্প

২৮ হাজার ৯৫৯.২৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ২০০৮ সালে  ঘূর্ণিঝড় পুনঃরুদ্ধার ও পুনর্বাসন প্রকল্পটি ২০১৩ সালের জুলাইয়ে শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এর মধ্যে কাজ শেষ করতে না পারায় ২০১৪ সালের জুন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। ব্যয় প্রায় চার গুণ বৃদ্ধি করে নির্ধারণ করা হয় ৮৯ হাজার ৫২৯.৮২ লাখ টাকা। ব্যয় ও সময় বৃদ্ধির পরও কাজ শেষ করতে না পারায় পুনরায় ব্যয়  বাড়িয়ে ১ লাখ ৯৫ হাজার ১৭০ লাখ টাকা নির্ধারণ করা হয়। 

কে কী বলেন

সরকারের মেগা প্রকল্প নিয়ে প্রশ্ন করলে এ নিয়ে কথা বলতে রাজি হননি পরিকল্পনামন্ত্রীর একান্ত সচিব ফরিদ আজিজ।

এ বিষয়ে নগর পরিকল্পনাবিদ স্থপতি ইকবাল হাবিব প্রিয়.কমকে বলেন, ‘শহর কিংবা এর বাইরে যেকোনো প্রকল্প প্রাক সমীক্ষা না করেই গ্রহণ করা হয়। ফলে প্রকল্পব্যয় ও সময় মাঝপথে আসলে বাড়ানোর বিষয়টি সামনে আসে। এতে শুধুমাত্র অতিরিক্ত খরচই বাড়ে না, যুক্ত হয় জনদুর্ভোগ।’

ইকবাল হাবিব আরও বলেন, ‘প্রকল্প প্রণয়নের সঙ্গে যারা জড়িত তারা অনিয়ম করলে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার নজির নেই। ফলে এক রকম ধারণাই তৈরি হয়েছে, প্রকল্প প্রণয়ন করা হলে সময় ও ব্যয় বাড়ানো হবে।’

সরকারেরই নেওয়া এসব মেগা প্রকল্পকে একটু অন্যভাবে দেখছেন তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব আনু মুহাম্মদ। এসব বড় উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্দেশ্য বর্ণনা করে অর্থনীতিবিদ ও শিক্ষক আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘কয়েকটা দেশের বিভিন্ন কোম্পানিকে সন্তুষ্ট করা এবং নিজেদের কমিশন বেশি করে নেওয়ার জন্য এসব মেগা প্রকল্প নেওয়া হয়। যেখানে দুর্নীতির সুযোগ বেশি, সেইসব প্রকল্প অনুমোদনও হয় বেশি।’

আনু মুহাম্মদ আরও বলেন, ‘অর্থমন্ত্রী নিজেই বলেছেন, মেগা প্রকল্প মানে মেগা চুরি। যে কাজ এক কোটি টাকা দিয়ে করা সম্ভব, সে কাজে পয়সা পাওয়া যায় না। হাজার কোটি টাকা হলে সেটাতে পয়সা পাওয়া যায়।’

  • প্রিয়.কম/২০ জানুয়ারি ২০১৮

চতুর্মুখী সংকটে আলু রপ্তানি





নগদ অর্থের স্বল্পতা, রপ্তানিমুখী ও শিল্পনির্ভর জাত, পরিকল্পিত বাজার ব্যবস্থাপনা ও কৃষি জ্ঞানের অভাবে বিপুল সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও কাঙ্ক্ষিত পরিমাণ আলু রপ্তানি সম্ভব হচ্ছে না। রপ্তানিকারকরা বলছেন, সঠিক নজরদারি না থাকায় পরিস্থিতি ক্রমেই নেতিবাচক দিকে ধাবিত হচ্ছে।

এ ছাড়া উৎপাদন বাড়লেও পর্যাপ্ত রপ্তানির ব্যবস্থা না থাকা এবং স্বল্পমূল্যে বিদেশি আলু দেশের বাজারে ঢুকে পড়ায় প্রান্ত্মিক চাষিরা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত্ম হচ্ছেন। সংশিস্নষ্টরা মনে করছেন, সরকারিভাবে দ্রম্নত কৃষকদের স্বার্থ রক্ষায় যথাযথ ব্যবস্থা না নিলে ধস নামতে পারে দেশের আলু উৎপাদনে।

বাংলাদেশ আলু রপ্তানিকারক সমিতির (বিপিইএ) সভাপতি শেখ আবদুলস্নাহ কাদের  জানান, প্রতি বছর আলু রপ্তানির মাধ্যমে মোটা অংকের অর্থ আয়ের সুযোগ থাকলেও প্রতিবন্ধকতার কারণে সম্ভব হচ্ছে না। নিম্নমানের আলু, ভারত থেকে কম সুবিধা, পোর্টে সমস্যা, সঠিক সময়ে আলু তুলতে না পারা এর অন্যতম কারণ। ফলে প্রতি বছর অধিক পরিমাণ আলু উৎপাদিত হলেও রপ্তানি করতে না পারার কারণে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত্ম হচ্ছেন প্রান্তিক চাষিরা। বছর শেষে আলু বিক্রি করে তারা উৎপাদন খরচও তুলতে পারছেন না। সরকার এসব সমস্যা সমাধান করতে পারলে বছরে ২০ লাখ টন আলু রপ্তানি করা সম্ভব। ফলে কৃষকরাও ন্যায্যমূল্য পাবেন।

রপ্তানিকাররা বলছেন, বাংলাদেশের প্রধান প্রতিযোগী দেশ ভারত আলু রপ্তানি বৃদ্ধির জন্য ২০ শতাংশ, পাকিস্ত্মান ৪০ শতাংশ, চীন ২৫ শতাংশ হারে নগদ সহায়তা প্রদান করে। এজন্য তারা বিশ্ববাজারে কম দামে আলু সরবরাহ করতে পারে। বাংলাদেশে আগে ২০ শতাংশ হারে নগদ সহায়তা দেয়া হলেও এখন ১০ শতাংশে নেমে এসেছে। দেশের আলু যখন ক্ষেতে থাকে তখন ভারতের আলু বাজারে চলে আসে। ক্রেতারা তখন আগাম আলু কিনে নেয়। দেশে রপ্তানিযোগ্য মাত্র একটি জাতের আলু উৎপাদন হয়।

এ ছাড়া দেশে মোট যে পরিমাণে আলু উৎপাদিত হয় তার মাত্র ২০ শতাংশ সংরক্ষণ করা সম্ভব হয়। বাকিগুলো সংরক্ষণের অভাবে নষ্ট হয়ে যায়। ফলে সংরক্ষিত আলু দিয়ে দেশের চাহিদা মিটিয়ে সামান্য কিছু রপ্তানির সুযোগ থাকে। বর্তমান সময়ের থেকে ১৫ দিন আগে আলু তুলে যথাযথ সংরক্ষণ করা সম্ভব হলে রপ্তানি অনেকগুণ বাড়ত।

এ ব্যাপারে কৃষি অর্থনীতিবিদ মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান জানান, দেশে সামান্য কিছু রপ্তানিযোগ্য আলু উৎপাদন হয়ে থাকে। বাকিটা গতানুগতিক। আরেকটি বড় সমস্যা আলু সংরক্ষণ। এখনো মোট উৎপাদনের মাত্র ২২ শতাংশ আলু হিমাগারে সংরক্ষণ করা যায়। ফলে বেশির ভাগ আলুর গুণগত মান ঠিক থাকে না। ফলে এই মানহীন আলু রপ্তানি হলে বর্তমানে যতটুকু আলু রপ্তানি হয়, তা-ও বন্ধ হয়ে যাবে।

তিনি বলেন, তাই সবার আগে গুণগত মান ও উন্নত জাতের দিকে নজর দিতে হবে। সঙ্গে সঙ্গে চাষিকেও প্রশিক্ষণ দিতে হবে। এ ছাড়া শুধু আস্ত্ম আলু না, এর তৈরি বিভিন্ন পণ্যও রপ্তানি করা যেতে পারে। যেমন চিপস, ফ্রেন্স ফ্রাই ইত্যাদি এখন বিশ্বব্যাপী ব্যাপক জনপ্রিয় একটি খাবার। সরকারকে এটি নিয়ে ভাবতে হবে। নগদ সহায়তার ব্যাপারে তিনি বলেন, এটার কোনো প্রয়োজন নেই। এই দাবি পকেট ভরার জন্য। নগদ সহায়তা বাড়ালে অর্থ পাচার হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের তথ্যমতে, ২০১৭ সালে দেশে মোট ৫.২৮ লাখ হেক্টর জমিতে প্রায় ১১৩ লাখ মেট্রিকটন আলু উৎপাদিত হয়। দেশে মোট চাহিদা ৬৫ লাখ মেট্রিক টনের কিছু বেশি। অথচ ২০১৬-১৭ অর্থবছরে রপ্তানি হয়েছে মাত্র ৫৫ হাজার ৬৫২ মেট্রিক টন। এ ছাড়া কিছু আলু বিভিন্ন খাদ্যদ্রব্যে রূপান্ত্মরিত হয়ে রপ্তানি হয়েছে। ২০১৭ সালে প্রতি কেজি আলুর গড় উৎপাদন খরচ ছিল ৭ টাকা ৪০ পয়সা এবং কৃষকপর্যায়ে যৌক্তিক ধার্যমূল্য ছিল সাড়ে ৮টাকা থেকে ৯ টাকা। অথচ বছর শেষে কৃষক পর্যায়ে প্রতি কেজি আলু বিক্রি হয়েছে মাত্র ৬৫ পয়সা। এ বছরও ৫ লাখ হেক্টরের অধিক জমিতে আলু উৎপাদন হয়েছে। তবে ন্যায্য দাম নিয়ে শঙ্কায় চাষিরা।

এডিবির এক গবেষণায় বলা হয়, শুধু দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো বছরে গড়ে ৪ কোটি ১০ লাখ ডলারের আলু আমদানি হয়। সেখানে বাংলাদেশ প্রতি বছর গড়ে আলু রপ্তানি করে আয় করে ৮ লাখ ডলার। অথচ প্রতি বছর দেশটিতে এর কয়েকগুণ বেশি মূল্যের আলু ব্যবহার করতে না পারায় নষ্ট হয়ে যায়।

রপ্তানিকারকদের মতে, সমস্যাগুলো সমাধান করতে পারলে বছরে ২০ লাখ মেট্রিক টন আলু রপ্তানি করা সম্ভব হতো। এতে একদিকে যেমন বৈদেশিক মুদ্রা বাড়তো অন্যদিকে কৃষক ও ব্যবসায়ীরাও লাভবান হতো। ফলে প্রতি বছর কৃষকদের আলু নিয়ে পথে বসতে হতো না। কৃষকরা প্রতি কেজি আলুর সর্বনিম্ন মূল্য ১২ টাকা পেত। গত বছর যা ছিল ৭০ পয়সার কাছাকাছি।

তাদের আশঙ্কা, এই বছর আলু রপ্তানি আরও হ্রাস পাবে। কারণ, বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে এখনো আলু তুলতে পারেনি কৃষকরা। অন্যদিকে ভারত ইতিমধ্যেই রপ্তানি করা শুরম্ন করেছে। ফলে ক্রেতারা আগাম আলু পেতে ভারতের ব্যবসায়ীদের থেকে আলু সংগ্রহ করছে। অথচ গবেষণার মাধ্যমে যদি উন্নত ও আগাম ফলনশীল আলু উৎপাদন করা যেত, তাহলে বাংলাদেশও আগে থেকে আলু রপ্তানি করতে পারত।

রপ্তানি উন্নয়ন বু্যরোর (ইপিবি) তথ্যমতে, বিশ্ববাজারে আলু রপ্তানি শুরম্ন হয় জানুয়ারি থেকে। এই সময়ে মূলত বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্ত্মান আলু রপ্তানি করে। মার্চ মাস থেকে চীনও আলু রপ্তানি শুরম্ন করে। তবে চীন ও ভারতের আলু থেকে বাংলাদেশের আলুর স্বাদ বেশি হওয়ায় ক্রেতাদের আগ্রহ বাংলাদেশের আলুতে। বিশ্ববাজারে উন্মুক্ত কনটেইনারে প্রতি টন আলু ২২৫ থেকে ২৩৫ ডলারে, আর কুল চেইন পদ্ধতিতে ২৮০ থেকে ২৯০ ডলারে রপ্তানি হয়। অন্যদিকে ভারত আলু রপ্তানি করে ১৮৫ থেকে ২১০ ডলারে। তাই বিশ্ববাজারে ভারতের আলু বেশি রপ্তানি হয়ে থাকে। চীনও কমমূল্যে আলু রপ্তানি করে। শুধু স্বাদের কারণেই বেশি দাম দিয়ে বাংলাদেশি আলু কিনছেন ক্রেতারা। বর্তমানে বাংলাদেশি আলুর প্রধান বাজার মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুর। মোট রপ্তানির তিন ভাগের এক ভাগ রপ্তানি হয় এই দুই দেশে। এ ছাড়া রাশিয়াও বাংলাদেশি আলুর বড় বাজার।
  • Courtesy: Amadersomoy.com/Jan 21, 2018