Search

Wednesday, February 7, 2018

ক্ষমতার কোনো জবাবদিহিতা করতে হয় না - জোনায়েদ সাকি


এখন বর্তমান রাষ্ট্র ক্ষমতা এবং সরকারি ক্ষমতায় যারা আছেন, তারা একটি লুটপাটের একটি মহোৎসব চালাচ্ছে। তার প্রভাব তো সর্বত্র। ফলে ক্ষমতার অন্যান্য যে কেন্দ্র গুলো আছে, তার সব গুলোতে প্রভাব পড়বে। তারা যেভাবে পারছে, সেভাবে ধনসম্পদ আহরণ করছে। তারা মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত এবং সরাসরি পুলিশও এর সাথে জড়িত আছে। কারণ, তাদের ক্ষমতার অপব্যবহার নিয়ে কোন জবাবদিহিতা করতে হয় না।

এর ফলে ধন-সম্পদ আহরণ করাটা সবার কাছে মুখ্য বিষয় হয়ে পড়েছে। কিন্তু এর নুন্যতম বিচার করছে না সরকার। এই মাদক ব্যবসায়িরা বলছেন, যেভাবে পারো মাদক ব্যবসা করে অর্থ উপার্জন কর। এই সরকার ক্ষমতায় থাকার কারণে এদের মত এই সব ব্যবসায়িদের কোন জবাবদিহি করতে হচ্ছে না। এবং তারা দেশে মাদক ব্যবসা করে এদেশের জনগনকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিচ্ছে।

  • Courtesy: AmaderShomoy Feb 7, 2018

ইয়াবা ছড়াচ্ছে আওয়ামী লীগের মাদক ব্যবসায়ীরা - নিলোফার চৌধুরী মনি


আজকে দেখা গেছে শিক্ষামন্ত্রী শিক্ষার বারোটা বাজিয়ে দিয়েছে। শিক্ষার কোন মান নাই। এই ছাত্রলীগের নেতারা মানুষকে পিটাচ্ছে। এই ছাত্রলীগের ছেলে মেয়েরা নিজেরা নিজেরা মারামারি করছে। ছাত্রলীগ এর কর্মীরা মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত থাকে। এর পর আওয়ামীগের অনেক এমপিরা এই মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত আছেন। এই সব নেতা কর্মীরা মাদকের চোরা চালানের সাথে জড়িত আছেন। আমাদের সারাদেশে ইয়াবা ছড়িয়ে দিয়েছে আওয়ামী লীগের এসব মাদক ব্যবসায়ীরা। বাংলাদেশের যতগুলো বর্ডার লাইন আছে, এর প্রতেকটি লাইনে লাইনে ফেন্সিডিল এর কারখানা গড়ে উঠেছে।

এগুলো বন্ধ করতে আমাদের সরকারের কোন তৎপরতা নেই। এই মাদক ব্যবসায়িরা বাংলাদেশের ইয়াং জেনারেশন কে ধ্বংস করে দিচ্ছে। দিন দিন মাদক বৃদ্ধি করছে, শিক্ষার ১২ টা বেজে গেছে, পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস হচ্ছে। এর পর বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বলছেন, আমাদের বাংলাদেশ উন্নতি করেছে। উন্নয়নের তালিকা করলে ১১৮ দেশে বাংলাদেশের স্থান ১১২ নম্বরে ।

কিন্তু আমাদের বর্তমান সরকার বলেন, বাংলাদেশ উন্নয়ন করেছে, এটির নাম কি উন্নয়ন? আমাদের স্বরাষ্ট মন্ত্রণালয়ের তালিকায় ছাত্রলীগের ২০ নেতা কর্মীদের নাম এসেছে, কেন্দ্রীয় নেতা ১০ জন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ জন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫ জন ধানমন্ডি শাখার ২ জন। কিন্তু এদের বিরুদ্ধে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করে না। আমাদের পুলিশ প্রশাসনের এতে কোন তাৎপরতা নাই।

  • Courtesy: AmaderShomoy Feb 7, 2018

আলাদা লেনের প্রস্তাব অসাংবিধানিক - টিআইবি

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, জরুরি সেবার যানবাহন এবং ভিআইপিদের চলাচলে রাজধানীতে আলাদা লেন করার জন্য সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের কাছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের প্রস্তাবকে অসাংবিধানিক ও বৈষম্যমূলক আখ্যায়িত করে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। সংস্থাটি এ প্রস্তাব প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছে। আজ মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে এ আহ্বান জানায় টিআইবি।

এক বিবৃতিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘গণমাধ্যম ও অন্যান্য নির্ভরযোগ্য সূত্রে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, জরুরি সেবার যানবাহন এবং ভিআইপিদের চলাচলে রাজধানীতে আলাদা লেন করার জন্য সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের কাছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ প্রস্তাব পাঠিয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এই প্রস্তাবে টিআইবি উদ্বিগ্ন। কারণ, এ ধরনের প্রস্তাব সংবিধানের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন, বৈষম্যমূলক ও ক্ষমতার চূড়ান্ত অপব্যবহারের শামিল। এ প্রস্তাব সংবিধানে বর্ণিত সুযোগের সমতা, আইনের দৃষ্টিতে সমতা এবং ধর্ম, গোষ্ঠী প্রভৃতি কারণে কোনো নাগরিকের প্রতি রাষ্ট্রের বৈষম্য প্রদর্শন না করার মহান নীতিগুলোর লঙ্ঘন।

ইফতেখারুজ্জামান বলেন, টিআইবি মনে করে, ‘আলাদা লেন করে ভিআইপি ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ কোনো বিশেষ মহলকে অসাংবিধানিক ও অনৈতিক সুবিধা প্রদানের উদ্যোগ গণতান্ত্রিক চর্চার জন্য আত্মঘাতীমূলক। সরকার এ ধরনের অনিয়মকে কোনোভাবেই উৎসাহিত করবে না, আমরা এই প্রত্যাশা করি।’

ইফতেখারুজ্জামান বলেন, প্রস্তাবটি উত্থাপন ও সমর্থনে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের যুক্তি ‘ভিআইপিরা ডান দিক দিয়ে যান, উল্টো দিক দিয়ে যান, নানা রকম ঝামেলা হয়’—এটি সম্পূর্ণ অসমর্থনযোগ্য। কারণ পরিচয় কিংবা অবস্থান-নির্বিশেষে সবাই আইন মেনে চলতে বাধ্য। যেকোনো প্রকার অন্যায্য ও আইনবহির্ভূত আচরণের কারণে অসাংবিধানিক ও বৈষম্যমূলক নিয়ম চালু করা অবিমৃশ্যকারিতা মাত্র।’ এ ধরনের প্রস্তাব ক্ষমতাশালীদের অনৈতিক আচরণে উৎসাহিত করার পাশাপাশি ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় চ্যালেঞ্জ ও জনদুর্ভোগ বৃদ্ধি করবে উল্লেখ করে তিনি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এ ধরনের প্রস্তাব অবিলম্বে প্রত্যাহার করে এ-সংক্রান্ত কোনো বিধি প্রণয়ন থেকে বিরত থাকতে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে আহ্বান জানান।

ইফতেখারুজ্জামান আরও বলেন, ‘আলাদা লেনের যৌক্তিকতা প্রমাণে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের যুক্তিই প্রমাণ করে যে ভিআইপি তকমাধারী অনেকেই প্রতিনিয়ত প্রচলিত ট্রাফিক আইন লঙ্ঘন করে আসছেন। অবিলম্বে এই প্রবণতা বন্ধ করতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে এবং আইন লঙ্ঘনকারী যেই হোক না কেন তাকে আইনের আওতায় এনে পরিবহন চলাচল ব্যবস্থাপনায় শৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে হবে।’

গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ অনুযায়ী, ৫ ফেব্রুয়ারি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সভা শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সাংবাদিকদের জানান, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, জরুরি সেবার যানবাহন ও ভিআইপিদের চলাচলে রাজধানীতে আলাদা লেন করার জন্য সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের কাছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ প্রস্তাব করেছে। ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ-ডিটিসিএর নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ আহমেদও প্রস্তাব পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এই পরিপ্রেক্ষিতে টিআইবি ভিআইপিদের জন্য আলাদা লেন তৈরির প্রস্তাবের বিরোধিতা করে এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করে নাগরিক অধিকার রক্ষায় সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করার আহ্বান জানায়।

  • Courtesy: Prothom Alo/Feb 7, 2018

Tuesday, February 6, 2018

ভিআইপিদের জন্য লেনের প্রস্তাবে ‘ধিক্কার’ জানালেন সুলতানা কামাল


ঢাকার সড়কে অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের (ভিআইপি) জন্য পৃথক লেনের প্রস্তাবের সমালোচনা করে প্রস্তাবকারীদের ধিক্কার জানিয়েছেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও মানবাধিকারকর্মী সুলতানা কামাল।

সোমবার রাজধানীর শাহবাগে গণজাগরণ মঞ্চের পঞ্চম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে ‘মত প্রকাশে বাধা, সাম্প্রতিক কালাকানুন: কোন পথে বাংলাদেশ’ শীর্ষক আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি ধিক্কার জানান।

সুলতানা কামাল বলেন, ‘যেখান দিয়ে সাধারণ মানুষ চলাফেরা করবে সেখানেও ভিআইপিদের জন্য আলাদা জায়গা করে দিতে হবে। এই যদি মুক্তিযুদ্ধ করে স্বাধীন হওয়া বাংলাদেশের চিত্র তাঁদের মনে থেকে থাকে তাদের ধিক্কার জানাই।  এখন যারা ক্ষমতায় বসেছেন তাঁরা মুক্তিযুদ্ধকে ব্যবহার করে নিজেদের সমস্ত সুযোগ সুবিধা নিচ্ছেন।কিন্তু মুক্তিযুদ্ধ আমাদের উত্তরাধিকার। সু অধিকারী কোনোদিন তাঁর উত্তরাধিকারকে বিক্রি করে না।

তিনি অভিযোগ করেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলে সরকার জনগণের সাথে প্রতারণা করছে।  মন্ত্রীরা ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ব্যবহার করে’ নিজেদের সমস্ত সুযোগ-সুবিধা নিচ্ছেন। এখন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পাস করে ‘জনগণের কণ্ঠরোধের উদ্যোগ’ নেওয়া হচ্ছে।’

সুলতানা কামাল বলেন, ‘ দেশে ন্যায়বিচার তো নাই, ন্যায়বিচারের প্রত্যাশাও মানুষের মন থেকে চলে যাচ্ছে। আজ বাংলাদেশ এমন জায়গায় এসে দাঁড়িয়েছে, যেখানে পিতা তার পুত্র হত্যার বিচার চায় না। ধর্ষণের শিকার নারী ধর্ষণের বিচার চান না। আমরা বেঁচে থাকতে বাংলাদেশকে দুর্বৃত্তের হাতে যেতে দেব না।”

এর আগে সোমবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব জানিয়েছিলেন তারা একটি প্রস্তাব মন্ত্রিসভায় জমা দিয়েছেন, যাতে ভিআইপিদের পৃথক লেনের নির্মাণের প্রস্তাব রয়েছে। অ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার সার্ভিসের মত জরুরি সেবার যানবাহন এবং ভিআইপিদের চলাচলের জন্য রাজধানীর রাজপথে আলাদা লেইন করতে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগে প্রস্তাব পাঠিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।

সেখানে বলা হয়েছে, ‘উন্নত বিশ্বের অনেক দেশে’ জনবহুল গুরুত্বপূর্ণ শহরে সেবাকাজে নিয়োজিত যানবাহনসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের চলাচলের জন্য সড়কে পৃথক লেইন রয়েছে। ঢাকা মহানগরীর সড়কে অনুরূপ লেন তৈরি করা হলে সেবা খাতের যানবাহনসহ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের চলাচল সহজতর হবে।

  • Courtesy: AmaderShomoy.com/Feb 6, 2018

একক ব্যক্তির ঋণে বৃহত্তম কেলেঙ্কারি - এক গ্রাহককেই ৫ হাজার কোটি টাকার বেশি ঋণ।

  •  নিয়মের বাইরে মূলধনের প্রায় দ্বিগুণ।
  •  সাবেক চেয়ারম্যান আবুল বারকাতের সময়ে অনুমোদন।
  •  জনতা ব্যাংকের মোট মূলধন ২ হাজার ৯৭৯ কোটি টাকা।
  •  মূলধনের সর্বোচ্চ ২৫ শতাংশ পর্যন্ত ঋণ দেওয়ার সুযোগ আছে।  
  •  এক গ্রাহক ৭৫০ কোটি টাকার বেশি ঋণ পেতে পারেন না।


ভয়ংকর রকম উদারভাবে ঋণ বিতরণ করেছে জনতা ব্যাংক। এক গ্রাহককেই মাত্র ৬ বছরে তারা দিয়েছে ৫ হাজার ৫০৪ কোটি টাকার ঋণ ও ঋণসুবিধা। নিয়মনীতি না মেনে এভাবে ঋণ দেওয়ায় বিপদে ব্যাংক, গ্রাহকও ঋণ পরিশোধ করতে পারছেন না।

জনতা ব্যাংকের মোট মূলধন ২ হাজার ৯৭৯ কোটি টাকা। মূলধনের সর্বোচ্চ ২৫ শতাংশ পর্যন্ত ঋণ দেওয়ার সুযোগ আছে। অর্থাৎ এক গ্রাহক ৭৫০ কোটি টাকার বেশি ঋণ পেতে পারেন না। দেওয়া হয়েছে মোট মূলধনের প্রায় দ্বিগুণ।

ব্যাংক দেখভাল করার দায়িত্ব যাদের, সরকারের নিয়োগ দেওয়া সেই পরিচালনা পর্ষদই এই বিপজ্জনক কাজটি করেছে। হল-মার্ক ও বেসিক ব্যাংক কেলেঙ্কারির পর এটিকেই পারস্পরিক যোগসাজশে সাধারণ মানুষের আমানত নিয়ে ভয়ংকর কারসাজির আরেকটি বড় উদাহরণ বলে মনে করছেন ব্যাংকাররা। তারা বলছেন, এটি একক ঋণের বৃহত্তম কেলেঙ্কারি
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক আবুল বারকাতের সময় এই অর্থ দেওয়া হয়। ২০০৯ সালের ৯ সেপ্টেম্বর থেকে ৫ বছর জনতা ব্যাংকের চেয়ারম্যান ছিলেন তিনি। 

এ সময় ব্যাংকের পর্ষদ সদস্য ছিলেন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা বলরাম পোদ্দার, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপকমিটির সাবেক সহসম্পাদক নাগিবুল ইসলাম ওরফে দীপু, টাঙ্গাইলের কালিহাতী আসনের মনোনয়নপ্রত্যাশী যুবলীগ নেতা আবু নাসের প্রমুখ।

অনুসন্ধানেও জানা যাচ্ছে, ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে জনতা ব্যাংকের এই পর্ষদের উৎসাহই ছিল বেশি। পর্ষদের সিদ্ধান্তে বারবার ঋণ দেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে ২০১০ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত ঋণ দেওয়া হয় খেয়ালখুশিমতো। ব্যাংকের উদার আনুকূল্য পাওয়া এই গ্রাহক হচ্ছে এননটেক্স গ্রুপ। এর পেছনের মূল ব্যক্তি হচ্ছেন মো. ইউনুস (বাদল)। তিনি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি)। তাঁরই স্বার্থসংশ্লিষ্ট ২২ প্রতিষ্ঠানের নামে সব ঋণ নেওয়া হয়। তাঁর মূল ব্যবসা বস্ত্র উৎপাদন ও পোশাক রপ্তানি।

জনতা ব্যাংকের চেয়ারম্যান হিসেবে গত তিন বছর দায়িত্বে ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক মুখ্য সচিব শেখ মো. ওয়াহিদ-উজ-জামান। গত ৭ ডিসেম্বর তাঁর চেয়ারম্যানের মেয়াদ শেষ হয়েছে। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে তারা আরও ঋণ চেয়েছিল, আমি দিইনি। এ কারণে আমি তাদের শত্রুতে পরিণত হয়েছি। আর ঋণের প্রায় সবই আগের চেয়ারম্যানের (আবুল বারকাত) সময় দেওয়া।’

জনতা ব্যাংকের সাবেক এবং বর্তমান কয়েকজন ব্যাংকারও একই অভিযোগ করেছেন। এমনকি যাঁরা বাংলাদেশের আর্থিক খাতের খোঁজখবর রাখেন, তাঁরাও জানেন এক গ্রাহককে এত অর্থ দেওয়ার কথা। এমনকি তাঁর পৃষ্ঠপোষক হিসেবে আবুল বারকাতের নামও তাঁরা বলেছেন।

অধ্যাপক আবুল বারকাত প্রথম আলোকে বললেন, ‘তাঁর (ইউনুস বাদল) প্রতিষ্ঠানগুলো তো খুবই ভালো। পরিশোধেও ঠিক আছে। প্রতিষ্ঠানগুলোর নথিপত্র এক ব্যক্তির নামে না। এ কারণেই এত ঋণ পেয়েছে।’ তবে অনুসন্ধানে জানা গেছে, ঋণ নেওয়া কোম্পানির অনেকগুলোই এননটেক্স গ্রুপের প্রতিষ্ঠান। বাকিগুলোও মো. ইউনুসের স্বার্থসংশ্লিষ্ট। জনতা ব্যাংকের এখনকার পর্ষদের নথিতেও তাই। এ কারণেই জনতা ব্যাংক এখন এই ঋণ নিয়ে চরম উদ্বিগ্ন।

মো. ইউনুস (বাদল)-এর সঙ্গে কথা হয় গত বুধবার, প্রথম আলো কার্যালয়ে। তিনিও বলেছেন, পুরো অর্থ দিয়ে ২২টি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হয়েছে। কারখানাগুলোর সবই আন্তর্জাতিক মানের।

জনতা ব্যাংক সূত্র জানায়, ২০০৪ সাল থেকে জনতা ব্যাংকের শান্তিনগর শাখায় প্রথম ব্যাংকিং সুবিধা গ্রহণ করে এননটেক্স গ্রুপের জুভেনিল সোয়েটার। ওই শাখার বেশি ঋণ দেওয়ার ক্ষমতা না থাকায় ২০০৮ সালে জনতা ভবন করপোরেট শাখায় ঋণটি স্থানান্তর করা হয়। ২০১০ সাল থেকে নতুন নতুন প্রতিষ্ঠান খুলে ঋণসুবিধা নেওয়া শুরু হয়। এক ব্যক্তির মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানকে এত টাকা দেওয়ায় নতুন ঋণ দেওয়ার সব সামর্থ্যই এখন হারিয়ে ফেলেছে জনতা ব্যাংকের শাখাটি।

এর আগে সোনালী ব্যাংকের রূপসী বাংলা (বর্তমানে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল) শাখা থেকে ২০১১ সালের দিকে হল-মার্ক নামের গ্রুপটি বের করেছিল সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা। তাতে সোনালী ব্যাংক এখনো মাথা তুলে দাঁড়াতে পারেনি। জনতা ভবন করপোরেট শাখার ব্যবস্থাপক হিসেবে ২০১৭ সালের ২৮ মার্চ থেকে দায়িত্বে আছেন আহমেদ শাহনুর রহমান। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘শাখার ঋণ দেওয়ার সব সীমা শেষ হয়ে গেছে। এখন শুধু আদায়ের পেছনে ছুটছি।’

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহউদ্দিন আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, আইনে আছে, মূলধনের ২৫ শতাংশের বেশি এক গ্রুপকে দেওয়া যাবে না। এর বেশি ঋণ গেলে ব্যাংকের জন্য বড় ঝুঁকি হয়ে যায়। দেখতে হবে, ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করে এসব অর্থায়ন হয়েছে কি না। কেন একজন গ্রাহককে এত টাকা দেওয়া হলো, পুরো বিষয়টি কেন্দ্রীয় ব্যাংক ভালোভাবে খতিয়ে দেখতে পারে।

যেভাবে ঋণ দিল ব্যাংক
জনতা ব্যাংকের একাধিক তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ ও অনুসন্ধান শেষে জানা যায়, কোম্পানিগুলোর নামে বিভিন্ন সময়ে কাঁচামাল আমদানির জন্য ঋণপত্র খোলা হলেও টাকা পরিশোধ করা হয়নি। প্রতিষ্ঠানগুলোর পক্ষে ব্যাংক নিজেই বাধ্য হয়ে বিদেশি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানকে অর্থ শোধ করে দিয়েছে। পরে গ্রাহক তা পরিশোধ করেনি। এভাবে নেওয়া ঋণসুবিধার (নন-ফান্ডেড) সব অর্থই সরাসরি ঋণে (ফান্ডেড) পরিণত হয়েছে। আবার দৈনন্দিন ব্যবসা পরিচালনার জন্য নেওয়া চলতি মূলধনও (সিসি ঋণ) ফেরত দেয়নি।
 
২০১৫ সালে এননটেক্স গ্রুপের ১ হাজার ৯৭ কোটি টাকার ঋণ পুনর্গঠনের অনুমোদন করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এই পুনর্গঠিত ঋণের কিস্তি পরিশোধ না করায় গত বছরের সেপ্টেম্বরে গ্রুপটিকে বিশেষ সুবিধা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় জনতা ব্যাংক। এ সুবিধার মানে হলো, প্রথমে শুধু কিস্তির টাকা পরিশোধ করা হবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমোদন না দেওয়ায় বিষয়টি আটকে আছে। তবে এতে চুপ না থেকে এসব ঋণ পুনঃতফসিল করে দিয়েছে ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদ।

২০০৮ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০১৪ সালের ২৭ জুলাই পর্যন্ত এমডি এস এম আমিনুর রহমান। ঋণের বড় অংশই দেওয়া হয়েছে তাঁর সময়ে। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ‘শাখা থেকে প্রস্তাব এসেছিল, পর্ষদ বিবেচনা করে ঋণ দিয়েছে। আমার তো ঋণ দেওয়ার কোনো ক্ষমতাই ছিল না।’
 
জনতা ভবন করপোরেট শাখার ব্যবস্থাপক হিসেবে ২০১১ সালের ১৬ নভেম্বর থেকে ২০১৩ সালের ২৫ আগস্ট পর্যন্ত দায়িত্বে ছিলেন আব্দুছ ছালাম আজাদ। এখন তিনি এই ব্যাংকেরই এমডি। ঋণের বড় অংশই তিনি শাখা ব্যবস্থাপক থাকাকালীন সময়ে সৃষ্ট। তিনিও প্রথম আলোর কাছে দাবি করেন, তাঁর সময়ে খুব বেশি ঋণ দেওয়া হয়নি। তবে আব্দুছ ছালাম বলেন, ঋণ কমাতে এননটেক্সকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, অন্য ব্যাংকে চলে যেতে বলা হয়েছে।

এখন উদ্বিগ্ন পর্ষদ
মূলধনের দ্বিগুণ ঋণ দেওয়ার পর ২০১৭ সালে এসে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে জনতা ব্যাংকের এখনকার পর্ষদ। পর্ষদ ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষকে দফায় দফায় গ্যালাক্সি সোয়েটারসহ এননটেক্স গ্রুপের সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সার্বিক চিত্র উপস্থাপন করতে বলে। বারবার সময় নেওয়ার পর গত বছরের ২৭ সেপ্টেম্বর পর্ষদের সভায় তা উত্থাপন করা হয়। এ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে পর্ষদ। ঋণ প্রদান ও আদায় পরিস্থিতি দেখে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে গত ১৭ জানুয়ারি এননটেক্সের কয়েকটি প্রতিষ্ঠানকে ঋণসহ অন্য ব্যাংকে চলে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।
 
মো. ইউনুস (বাদল) এ নিয়ে প্রথম আলোকে বলেন, ব্যাংক এখন অর্থায়ন বন্ধ করে দেওয়ায় কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। ব্যাংকের নির্দেশে ৮ প্রতিষ্ঠান অন্য ব্যাংকে স্থানান্তরের চেষ্টাও চলছে। আগামী জুনের মধ্যে সব ঠিক হয়ে যাবে। তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের এক ভাই বিষয়টি দেখেছেন। তিনি ঋণ নিয়ে কোনো আপত্তি তোলেননি।’

ভাগ্যবান উদ্যোক্তা
মো. ইউনুস (বাদল) একসময় বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানের সামান্য কর্মচারী ছিলেন। খুব অল্প সময়ের মধ্যে এখন ২২টি প্রতিষ্ঠানের মালিক। আওয়ামী লীগের শাসনামলে তাঁর উত্থান ঘটেছে। এ সময় ব্যাংক যেমন ছিল উদারহস্ত, তেমনি পৃষ্ঠপোষকতা পেয়েছেন একাধিক মন্ত্রীর। পর্ষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যদের অনেকে তো ছিলেনই, পিছিয়ে ছিলেন না ব্যাংকের কর্মকর্তারাও। এমনকি সিবিএ নেতারাও আছেন তাঁর সঙ্গে।
 
ব্যাংক সূত্র জানায়, ঋণ পেতে পরিচালনা পর্ষদ ও কর্মকর্তাদের সঙ্গে সম্পর্ক করে দিতে ভূমিকা রেখেছিলেন সিবিএ সভাপতি  রফিকুল ইসলাম। ১৯৭৩ সাল থেকে জনতা ব্যাংক গণতান্ত্রিক কর্মচারী ইউনিয়নের (সিবিএ, জাতীয় শ্রমিক লীগের অন্তর্ভুক্ত) সভাপতি তিনি। তাঁর নামে করা বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম কল্যাণ ট্রাস্টের উদ্যোগে টাঙ্গাইল জেলার গোপালপুর উপজেলার ঝাওয়াইল ইউনিয়নের দক্ষিণ পাথালিয়া গ্রামে নির্মিত হচ্ছে ২০১ গম্বুজ মসজিদ। এই মসজিদের পাশেই নির্মাণ করা হয়েছে ‘বাদল হেলিপ্যাড’।

রফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে জানালেন, ‘মসজিদ বানাতে সব মিলিয়ে ২৫০ কোটি টাকা লাগবে। ইউনুস (বাদল) সাহেব পুরো টাইলস দিচ্ছেন। সব মিলিয়ে তাঁর অনুদান শতকোটি টাকা ছাড়াবে।’ তবে মো. ইউনুস (বাদল) দাবি করেন, ‘সর্বোচ্চ আড়াই কোটি টাকা দিয়েছেন। সিবিএ সভাপতি সব সময় একটু বাড়িয়ে বলেন।’
 
কেবল সিবিএ নেতাই নন, মো. ইউনুসের ঋণের বিষয়ে তদবির করে প্রথম আলোর প্রতিবেদকের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন যুবলীগ নেতা, কমিশনার, একাধিক ব্যাংকার, এমনকি সাংবাদিকও।
 
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ সামগ্রিক বিষয় নিয়ে বলেন, একটি ব্যাংক কীভাবে পারল একজনকে ৫ হাজার কোটি টাকা দিতে। নিশ্চয়ই বড় কেউ রয়েছে এর পেছনে। এটার পেছনে কারা, তা খুঁজে বের করতে হবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ ক্ষেত্রে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে, তাই ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ও দুদককে এ ক্ষেত্রে সক্রিয় হতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শন কার্যক্রম আরও জোরালো করার সময় এসেছে।
  • Courtesy: Prothom Alo/Feb 5, 2018


ঢাকার ছয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মাদক ব্যবসায় ছাত্রলীগ ও যুবলীগ নেতা

  • ঢাকার ছয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মাদক ব্যবসায় ২৪ জন
  • শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকেন্দ্রিক মাদক ব্যবসায়ীদের তালিকা করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। 
  • তালিকায় ছাত্রলীগের সাত নেতা-কর্মী ও যুবলীগের দুই নেতার নাম। 
  • এক পুলিশের কর্মকর্তার নাম আছে।



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও রাজধানীর আরও ছয়টি সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী মাদক ব্যবসায় জড়িত থাকার তথ্য এসেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকায়। প্রতিষ্ঠানগুলো হলো জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা কলেজ, ইনস্টিটিউট অব লেদার ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি, ধানমন্ডির ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি, ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি।

সম্প্রতি ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকেন্দ্রিক মাদক ব্যবসায়ীদের একটি তালিকা প্রস্তুত করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এতে এই ছয়টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকেন্দ্রিক মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ২৪ জনের নাম রয়েছে। তাঁদের মধ্যে ছাত্রলীগের দুই নেতা, পাঁচ কর্মী ও যুবলীগের দুই নেতার নাম রয়েছে। পুলিশের একজন উপপরিদর্শকের নামও আছে এই তালিকায়।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়

অবশ্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকায় ক্যাম্পাসে মাদক বিক্রেতা হিসেবে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ ছাত্র মো. পারভেজ, মো. সৌরভ, মো. তুষন, মো. জুয়েল ও মো. সম্রাট এবং ক্যাফেটেরিয়ার কর্মচারী আনোয়ার হোসেনের নাম রয়েছে। পাঁচ ছাত্রের সবাই ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী বলে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের একাধিক নেতা জানান।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর নূর মোহাম্মদ প্রথম আলোকে বলেন, তালিকায় পূর্ণাঙ্গ নাম না থাকায় পাঁচ ছাত্রকে খুঁজে পেতে সমস্যা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত একজনকে শনাক্ত করা হয়েছে। কর্মচারী আনোয়ার হোসেনের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা নিশ্চিত হতে পেরেছি, সে এই ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত নয়।’

এর বাইরে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদিন ওরফে রাসেলসহ তিনজনকে ২০১১ সালের ২৫ আগস্ট শান্তিনগরে ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার করে র‍্যাব। মামলায় বলা হয়, তাঁদের কাছে ৫২২টি ইয়াবা পাওয়া যায়, যার মধ্যে ২০০টিই ছিল জয়নালের পকেটে। তারপরও জয়নাল প্রথম আলোর কাছে দাবি করেন, তিনি গ্রেপ্তার হননি।

ঢাকা কলেজ

প্রথম আলোর অনুসন্ধানে জানা গেছে, ঢাকা কলেজের আশপাশে মাদক বিক্রির বেশ কয়েকটি স্থান রয়েছে। এর মধ্যে প্রিয়াঙ্গনের গলি, ইস্টার্ন মল্লিকার উল্টো পাশের গলি, বাকুশাহ মার্কেটের বাবুপুরা গলি, নিউমার্কেটের পেছনের রাস্তা এবং বিজিবি সদর দপ্তরের ৩ নম্বর ফটকের আশপাশের গলিতে ইয়াবা কেনাবেচা হয় বেশি।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকা অনুযায়ী, মাদক ব্যবসায় জড়িত হিসেবে মনির নামে নিউমার্কেট পুলিশ ফাঁড়ির একজন উপপরিদর্শকও রয়েছেন। নিউমার্কেট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আতিকুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, সাত থেকে আট মাস আগে মনির নিউমার্কেট এলাকায় কর্মরত ছিলেন। এখন আর এই থানায় নেই। তিনি তালিকা পাওয়ার পর জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা তাঁর বিষয়টি তদন্ত করে দেখেছেন। এ ছাড়া মামুন ও মো. পলাশ নামে আরও দুজনের নাম রয়েছে, কিন্তু সন্ধান পাওয়া যায়নি।

ইনস্টিটিউট অব লেদার ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি
তালিকা অনুযায়ী, হাজারীবাগে অবস্থিত এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ঘিরে মাদক ব্যবসা করেন রাইসুল ইসলাম ওরফে রবিন, মো. রাজীব, মো. সোহেল, মো. আলাউদ্দীন ও মোসাম্মৎ জামিলা।

হাজারীবাগ থানার একজন পুলিশ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, এঁদের মধ্যে রাইসুল ইসলাম হাজারীবাগ থানা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। থানার পরিদর্শক (অভিযান) মো. মজিবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, জামিলা একজন পেশাদার মাদক ব্যবসায়ী। একসময় হাজারীবাগ এলাকায় সে ব্যবসা করলেও এখন যাত্রাবাড়ীর দিকে অবস্থান করে। মো. সোহেলের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে।

তিন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়

ধানমন্ডির ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি, ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি এবং ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি এলাকায় মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকায় ধানমন্ডি থানা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সুজাউদ্দিন তুহিন ও সাধারণ সম্পাদক এস এস আশফাক এবং রাশেদুর রহমান, মো. পাভেল, মো. জসীম ও মশিউর আলম ওরফে সোহাগের নাম এসেছে।

সুজাউদ্দিন তুহিন ও এস এস আশফাক দাবি করেন, তাঁরা মাদক বিক্রিতে জড়িত নন। তালিকায় নাম এসেছে শুনে তাঁরা ‘আকাশ থেকে পড়েছেন’।

কলাবাগান থানার পরিদর্শক (অভিযান) আ স ম আসাদুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, তালিকায় মো. রাশেদুর রহমান, মো. পাভেল ও মো. জসীমের যে ঠিকানা দেওয়া হয়েছে, সেখানে গিয়ে এই নামে কাউকে পাওয়া যায়নি।

  • Courtesy: Prothom Alo/Feb 6, 2018

SSC EXAMINATIONS - Question leak spree continues

Muntakim Saad

Question paper leaks seem unstoppable.


After the alleged leak of Bangla first and second paper SSC questions, the same thing happened with the English first paper yesterday (Monday).

Pictures of the questions of “Ka” set were found on several Facebook pages about half an hour before the exam that began at 10:00am. The photos had been circulating in some secret WhatsApp and messenger groups since 7:17am, show screenshots. 

Some of the leak-sters were seen bragging about leaking the questions on Facebook when the exam was still underway. They claimed that they have again been successful in leaking the questions.  

Some of them even claimed that they would leak the questions of English second paper on Wednesday.    

After yesterday's exam, this correspondent compared the questions of the test with those of the screenshots and found them to be identical.  

On Sunday, some Facebook groups and individuals offered English first paper question, some asked for money from potential buyers while others offered it free. Those who asked for money gave mobile phone numbers to send in money.

A good number of people from different parts of the country allegedly communicated with the leak-sters and got the leaked questions, The Daily Star learnt from some of them on Facebook.

Seeing a post on Facebook, Akib Javed (not his real name) contacted an account holder with the name of Tusher Shuvro Sunday afternoon. Tusher gave Akib a phone number.

When Akib called that number, the person on the other end asked him to send Tk 500 to a mobile banking account. Akib tried but failed as the account had already reached its limit for receiving money.

Later, the user gave Akib another account number and asked him to send the money there. This time, Akib succeeded and another Facebook user with the name of Rishad Ahamed sent him a friend request.

As Akib accepted the request, he was instantly added to a secret messenger group called “English 1st question 1”. At that time, the group had 27 members but the number rose to 40 by night. 

In the group conversation, Rishad and another user with the name Abraham Joy said they would upload the questions between 7:00am and 8:00am yesterday.

The Daily Star obtained screenshots of the conversations.

The group was deleted after the questions were circulated in the    morning.

Talking to this newspaper, many examinees, wishing not to be named, alleged that similar secret groups were active on digital platforms, including Facebook and WhatsApp.

Questions of different public examinations have been leaked over the last few years, but the education ministry never admitted it.

For the first time, Education Minister Nurul Islam Nahid on Sunday announced Tk 5 lakh bounty for helping catch those involved in question papers leak. His ministry also formed an 11-member probe body to investigate the allegations of question leak in Bangla first paper and second paper.

Nahid made the announcement after an emergency meeting in the wake of widespread allegations that the “Kha” set question papers (multiple choice questions) of Bangla first and second parts had been leaked.

Meanwhile, Jatiya Party lawmaker Ziauddin Ahmed Bablu yesterday in parliament demanded that the minister steps down for his failure to stop question paper leak.

Speaking on point of order, he also called upon Prime Minister Sheikh Hasina to sack him and appoint another person in his place “to save the academic life of millions of students”.

  • Courtesy: The Daily Star/Feb 6, 2018

Khaleda in Sylhet: BNP activists chased off roadside


BNP leaders and activists were dispersed by law enforcers at different places as they gathered to greet party chief Khaleda Zia who was heading for Sylhet yesterday (Monday), just three days before a court is set to deliver verdict in a graft case against her.

A group of people chanted slogans in favour of the ruling Awami League and showed shoes and sandals when Khaleda's motorcade was crossing Narsingdi's Bhelanagr area around 11:20am.

However, a huge number of BNP men could stand on roadsides in some places, where they didn't face police obstructions, and chanted slogans welcoming the party chairperson. Their big gatherings were seen in Bhairab, Habiganj and Sylhet.

Law enforcers in large numbers were also deployed at important points on Dhaka-Sylhet highway.

Police allegedly chased away BNP leaders and activists in Narayanganj, Narsingdi and Nabiganj of Habiganj.

They detained a number of the party men, including four in Narayanganj, 12 in Kararchar area of Narsingdi, who tried to take to the streets to greet their party chief.

'NOT A POLITICAL TOUR'

Talking to reporters before Khaleda's tour began, BNP Standing Committee Member Amir Khasru Mahmud Chowdhury said their chairperson was going to Sylhet only to offer Fateha at the shrines of two great saints.

Replying to a query, he said Khaleda is not going to launch from Sylhet her party's campaign for the next election.

The tour came after the Special Court-5 in Dhaka fixed February 8 for delivering the verdict in the Zia Orphanage Trust graft case filed against Khaleda and five others.

Earlier on Tuesday, Prime Minister Sheikh Hasina at a rally in Sylhet sought vote for “boat”, the electoral symbol of the Awami League, beginning her polls campaign.

KHALEDA AT TWO SHRINES

Khaleda arrived at Sylhet Circuit House around 4:30pm and took   rest for a while. She then started    for the shrine of Hazrat Shahjalal (RA).

She reached the famous shrine around 6:00pm and offered Fateha and Munajat. On her way, she was greeted by hundreds of her supporters standing on roadsides.

Later, the BNP chief went to the shrine of Hazrat Shah Paran (RA) at Khadimnagar, nearly 7km away from the city, around 7:20pm. After offering Fateha and Munajat, she returned to Sylhet Circuit House.

Khaleda last visited Sylhet on October 4, 2013 and addressed a rally of BNP-led 20-party alliance there.

ARRESTS

Abdur Razzak, inspector (investigation) of Sadar Model Police in Narayanganj, said advocate Sakhawat Hossain Khan, vice     president of Narayanganj city BNP; advocate Anwar Prodan, former  entertainment affairs secretary of District Bar Association, and Moinuddin Reza, co-organising secretary of Narayanganj Lawyers Forum, were detained in Signboard area around 10:30am.

They were arrested in a case under the Explosive Substances Act, our Narayanganj correspondent reported.

Our Narsingdi correspondent added that police detained local BNP unit's international affairs secretary Sanaullah Mia and 12 others. Sanaullah was later released.

At least 123 BNP-Jamaat leaders and activists were arrested from Sunday night to early yesterday.


Of them, 69 were arrested in Jhenidah, 17 in Chandpur, 12 in Satkhira, seven in Jessore, two in Faridpur, eight in Bogra, four in Narayanganj and three in Mymensingh.

  •  Courtesy: The Daily Star Feb 6, 2018

Monday, February 5, 2018

হাজার কোটি টাকা লুট করে অদৃশ্য টিপু সুলতান

হাছান আদনান


এক সময় ছোট পরিসরে ভোগ্যপণ্যের ব্যবসা করতেন বগুড়ার টিপু সুলতান। ঢাকা ট্রেডিং হাউজের নামে সীমিত পরিসরে পণ্য আমদানি করতেন তিনি। ২০০৯ সাল থেকে অপ্রত্যাশিত উত্থান হয় তার। প্রায় এক ডজন ব্যাংক থেকে হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়ে পরিবহন ব্যবসায় নামেন। এ ব্যবসায়ীর মালিকানাধীন টিআর ট্রাভেলসের এসি-ননএসি বাসগুলো চলাচল করত ঢাকা থেকে বগুড়া, রংপুরসহ উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন রুটে। কিন্তু সেসবই এখন দূর অতীত।

পরিবহন ব্যবসায় গিয়ে অনেক আগেই বন্ধ হয়ে গেছে ভোগ্যপণ্যের ব্যবসা। এখন প্রায় বন্ধ টিআর ট্রাভেলসের চলাচলও। ঢাকা থেকে উত্তরবঙ্গগামী সব বাসের চলাচলই বন্ধ রয়েছে। ধুলো জমেছে টিআর ট্রাভেলসের কাউন্টারগুলোর দরজায়।

বাছবিচার না করে জামানত ছাড়াই টিপু সুলতানকে ঋণ দেয়া ব্যাংকগুলো ঘুরছে আদালতপাড়ায়। জনতা ব্যাংকের ২৫০ কোটি টাকা আত্মসাতের ঘটনায় ২০১৬ সালের মার্চে দুদকের মামলায় গ্রেফতার হয়েছিলেন টিপু সুলতান। এরপর জামিন পেয়ে লাপাত্তা। ঋণের নামে হাজার কোটি টাকা লুটকারী এ ব্যবসায়ীকে খুঁজে পাচ্ছে না অর্থায়নকারী ব্যাংকগুলো।

টিপু সুলতানের কাছে প্রায় ৩০০ কোটি টাকার ঋণ রয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত জনতা ব্যাংকের। রূপালী ব্যাংকেরও রয়েছে ১১০ কোটি টাকার ঋণ। এর বাইরে টিপু সুলতানের কাছে ৯০ কোটি টাকা পাওনা রয়েছে বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক লিমিটেডের (বিডিবিএল)। এছাড়া এ ব্যবসায়ীর কাছে এবি ব্যাংকের ঋণের পরিমাণ ৭০ কোটি, এক্সিম ব্যাংকের প্রায় ১৫০ কোটি, সাউথইস্ট ব্যাংকের প্রায় ৫০ কোটি, বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের ৩০ কোটি, ইসলামী ব্যাংকের ৩ কোটি, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের ২ কোটি, ইউসিবির ৩ কোটি ও প্রাইম ব্যাংকের ৩ কোটি টাকা। ঢাকা ট্রেডিং হাউজ লিমিটেড, টিআর স্পেশালাইজড কোল্ডস্টোরেজ এবং টিআর ট্রাভেলসের নামে ব্যাংকগুলো থেকে এ ঋণ নিয়েছিলেন টিপু সুলতান। যার প্রায় পুরোটাই এখন খেলাপি। এর মধ্যে অধিকাংশ ঋণই দেয়া হয়েছে জামানত ছাড়া। টিপু সুলতানের কাছ থেকে অর্থ আদায়ের সম্ভাবনাও তাই ক্ষীণ।

জামানত ছাড়াই টিপু সুলতানকে ঋণ দেয়া হয়েছিল বলে জানান সাউথইস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) কামাল হোসেন। তিনি বলেন, ব্যাংকের সাবেক এমডি মাহবুবুল আলমের মেয়াদে ওই ঋণ দেয়া হয়েছিল। ব্যক্তিগত সম্পর্কের কারণেই তিনি টিপু সুলতানকে ঋণ দিয়েছিলেন। ঋণের পুরো অর্থই এখন মন্দ মানের খেলাপি।

টিপু সুলতানের সঙ্গে ব্যাংকের যোগাযোগ আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, টিপু সুলতান কোথায় আছেন, কী করছেন সে ব্যাপারে আমাদের কাছে কোনো তথ্য নেই। তার নিযুক্ত আইনজীবী আদালতে মামলা পরিচালনা করছেন। টাকা আদায়ের জন্য আমরা টিআর ট্রাভেলসের তিনটি গাড়ি জব্দ করেছিলাম। কিন্তু পরিবহন শ্রমিক নামধারী সন্ত্রাসীদের ব্যবহার করে টিপু সুলতান সেগুলো ছাড়িয়ে নিয়ে গেছেন। টাকা আদায়ে অর্থঋণ আদালতে মামলা চলমান রয়েছে।

টিপু সুলতানকে ঋণ দিয়ে বিপত্তিতে আছে বিডিবিএল। ব্যাংকটির দ্বিতীয় শীর্ষ ঋণখেলাপি ঢাকা ট্রেডিং হাউজ ও পঞ্চম শীর্ষ খেলাপি টিআর স্পেশালাইজড কোল্ডস্টোরেজ। এ দুটি প্রতিষ্ঠানেরই চেয়ারম্যান টিপু সুলতান। এ দুই প্রতিষ্ঠানের কাছে বিডিবিএলের পাওনা দাঁড়িয়েছে প্রায় ৯০ কোটি টাকা। ২০১২ সালে সাবেক এমডি জিল্লুর রহমানের মেয়াদে এ ঋণ দেয়া হয়েছিল। তত্কালীন এমডির এলাকার হওয়ায় অবাধে ঋণ সুবিধা পেয়েছিলেন এ ব্যবসায়ী। 

কোনো মাধ্যমেই টিপু সুলতানের নাগাল পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানান বিডিবিএলের বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক মনজুর আহমেদ। তিনি বলেন, বিডিবিএলের শীর্ষ গ্রাহকদের অন্যতম টিপু সুলতান। অথচ তিনি কোনোদিন আমার সঙ্গে যোগাযোগের প্রয়োজন বোধ করেননি। সেলফোনে তার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও পারিনি। লোক পাঠিয়েও তার সন্ধান পাওয়া যায়নি। মনে হচ্ছে, টিপু সুলতান অদৃশ্য লোক। টাকা আদায়ের জন্য অর্থঋণ আদালতে এরই মধ্যে মামলা করা হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়ায় যতটুকু সম্ভব অর্থ আদায়ের চেষ্টা চলছে।

জনতা ব্যাংকের ২৫০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে টিপু সুলতানের বিরুদ্ধে ২০১৬ সালের মার্চে রাজধানীর মতিঝিল থানায় মামলা দায়ের করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সে মামলায় ওই মাসেই খুলনার দৌলতপুর থেকে গ্রেফতার হন তিনি। ২০১০ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে ব্যাংকটি থেকে এ অর্থ আত্মসাত্ করেন তিনি। সুদসহ তার কাছে রাষ্ট্রায়ত্ত জনতা ব্যাংকের পাওনার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৩০০ কোটি টাকা। ঋণের পুরো অর্থ মন্দ মানের খেলাপি হয়ে যাওয়ায় মামলা করেছে ব্যাংকটি। ব্যাংকটির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, টিপু সুলতানের কাছ থেকে এক টাকাও এখনো আদায় করা সম্ভব হয়নি।

ঋণের টাকা আদায়ে টিপু সুলতানের বিরুদ্ধে মামলা করেছে এক্সিম ব্যাংকও। এ প্রসঙ্গে ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মোহাম্মদ হায়দার আলী মিয়া বলেন, খেলাপি হয়ে যাওয়া ঋণের অর্থ আদায়ে এরই মধ্যে মামলা করা হয়েছে। আদালতের কয়েকটি ডিক্রি ব্যাংকের অনুকূলে এসেছে। আইনি প্রক্রিয়ায় জামানত রাখা সম্পদ ক্রোক করে নিলামে তোলা হবে।

বগুড়া শহরের দক্ষিণ চেলোপাড়া-নারুলী এলাকার মৃত মালেক মন্ডলের সন্তান টিপু সুলতান। মালেক মন্ডল ক্ষুদ্র পরিসরে পাটের ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তবে বৈবাহিক সূত্রে অনেক দিন আগে থেকেই বসবাস করতেন খুলনার রেলিগেট এলাকায়।

ভোগ্যপণ্য ও পরিবহন খাতের ব্যবসায়ী হলেও খুলনায় টিপু সুলতানের পরিচিতি পাট ব্যবসায়ী হিসেবে। বেশি দামে পাট কিনে তা কম দামে রফতানি করে রাতারাতি খুলনার পাট ব্যবসায়ীদের মধ্যে পরিচিতি পান তিনি। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পাট রফতানিতে স্বর্ণপদক পাওয়ার জন্য বাকিতে পাট কিনে এভাবে রফতানি করেছিলেন টিপু সুলতান। সে সময় বিতর্কিত এ ব্যবসায়ীকে উদারহস্তে ঋণ দিয়েছিল রূপালী ব্যাংকের দৌলতপুর শাখা। ঋণ হিসেবে দেয়া ব্যাংকটির ১১০ কোটি টাকা আর ফেরত আসেনি।

একের পর এক ব্যাংকঋণ খেলাপি হয়ে গেলেও খুলনায় টিপু সুলতানের জীবনযাপনে ছিল রাজকীয় হাল। পরিচিত মহলে নিজের অর্থবৃত্ত নিয়ে বাগাড়ম্বর করতেন টিপু সুলতান।

এ ব্যবসায়ীর মালিকানাধীন টিআর ট্রাভেলসের বিলাসবহুল বাস চলাচল করত ঢাকা থেকে বগুড়া, রংপুরসহ উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন রুটে। এছাড়া ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম রুটেও এ বাস চলাচল শুরু করেছিল। গতকাল রাজধানীর গাবতলী বাস টার্মিনালে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কয়েক মাস আগেই গাবতলী এলাকায় থাকা টিআর ট্রাভেলসের কাউন্টারগুলো বন্ধ হয়ে গেছে। এখন ঢাকা থেকে উত্তরবঙ্গগামী টিআর ট্রাভেলসের কোনো কাউন্টার গাবতলীতে সচল নেই। একই সংবাদ নিশ্চিত হওয়া গেছে রংপুর শহর থেকেও। রংপুর বাসস্ট্যান্ডে থাকা টিআর ট্রাভেলসের কাউন্টার বন্ধ হয়ে গেছে। সেখান থেকে গাড়িটি আর চলাচল করছে না।

  • Courtesy: Banik Barta Feb 5, 2018

রিজার্ভ চুরির ২ বছরে প্রতিবেদন দাখিলের সময় পিছিয়েছে ২০ বার


বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ২ বছরেও প্রকাশ হয়নি গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন। এই পর্যন্ত ২০ বার পিছিয়েছে সিআইডির তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিলের সময়। তাই এখনও শাস্তির আওতায় আসেনি কেউ। তবে চুরি যাওয়া অর্থের পুরোটাই ফেরত পাওয়ার ব্যাপারে এখনো আশাবাদী বাংলাদেশ ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের আট’শ কোটি টাকা চুরির ঘটনার ২ বছর আজ। এর মধ্যে ফিলিপাইনের রিজাল ব্যাংকের মাধ্যমে লোপাট অর্থের ৫৩০ কোটি টাকা এখনো ফেরত পাওয়া যায়নি।

সুইফট মেসেজিং সিস্টেম জালিয়াতি করে ২০১৬ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি ভোরে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ৮’শ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয় হ্যাকাররা। পরে ৫টি ভুয়া বার্তায় ফেডারেল রিজার্ভ থেকে বাংলাদেশের ৮’শ কোটি টাকা যায় শ্রীলংকা ও ফিলিপাইনে। এর মধ্যে সাড়ে ৬’শ কোটি টাকা ফিলিপাইন রিজাল ব্যাংকের মাধ্যমে চলে যায় ম্যানিলার কয়েকটি ক্যাসিনোতে।

প্রায় একমাস পর ঘটনা জানাজানি হলে নড়েচড়ে বসে সরকার। সমালোচনার মুখে গভর্নরসহ শীর্ষ পদে আসে পরিবর্তন। ঘটনা তদন্তে সাবেক গভর্নর ফরাসউদ্দিনকে প্রধান করে গঠিত কমিটি চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিলেও এখনো তা প্রকাশ করেনি সরকার। সিআইডির তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিলের সময়ও এ পর্যন্ত ২০ বার পিছিয়েছে।

গত সপ্তাহে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বলেন, ফিলিপাইন থেকে এখন পর্যন্ত এক কোটি ৪৫ লাখ ৪০ হাজার ডলার ফেরত এসেছে। আরও ১২ লাখ ডলার ফেরত আসার প্রক্রিয়া চূড়ান্ত পর্যায়ে। এর বাইরে ৫ কোটি ডলার ফেরত আনার বিষয়টি আদালতের প্রক্রিয়ায় আছে। আরও ৬০ লাখ ডলার আনার আলোচনা করতে ফিলিপাইনে গেছে বাংলাদেশ ব্যাংক ও সিআইডির একটি দল। পুরো টাকা ফেরত আনার বিষয়ে ফিলিপাইনের বিভিন্ন সংস্থার সাথে আলোচনা চলার কথা জানিয়েছেন দেশটিতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত।

চুরি যাওয়া টাকা উদ্ধারে রিজাল ব্যাংকের বিরুদ্ধে মামলার পরিকল্পনা করছে সরকার। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, অর্থ ফেরতে রিজাল ব্যাংকের গড়িমসির কারণে ব্যাংকটিকে পৃথিবী থেকে বিদায় করতে চান তিনি।
  • Courtesy: AmaderShomoy.Com Feb 5, 2018