Search

Sunday, March 4, 2018

পরামর্শকের পকেটেই ৬৭ কোটি!


সম্পাদকীয়: দাতাদের বেঁধে দেয়া শর্তের কারণে ঋণ ও অনুদানের একটি বড় অংশ যে তাদের নিজেদের পকেটেই চলে যায়, তার একটি উদাহরণ গতকাল যুগান্তরে প্রকাশিত ‘পরামর্শকের পকেটে ৬৭ কোটি টাকা’ শীর্ষক প্রতিবেদনটি।

এতে জানা যায়, গ্রামীণ ও নগরাঞ্চলের, বিশেষত উপকূলীয় অঞ্চলের জনগণের জীবনের মানোন্নয়ন, দারিদ্র্যবিমোচন এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব থেকে সুরক্ষার জন্য সরকার, গ্রিন ক্লাইমেট ফান্ড (জিসিএফ) ও আন্তর্জাতিক সংস্থা কেএফডব্লিউর যৌথ অর্থায়নে ‘জলবায়ু সহিষ্ণু অবকাঠামো প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ’ নামের প্রকল্পের প্রস্তাব করা হয়েছে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের (এলজিইডি) মাধ্যমে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৬৮৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ২৪৮ কোটি টাকা এবং জিসিএফ ও কেএফডব্লিউর অনুদান থেকে ৪৪০ কোটি টাকা ব্যয় করার কথা।

অর্থের ৬৭ কোটি ৪ লাখ টাকা ব্যয় হবে পরামর্শকের পেছনে। এ প্রেক্ষাপটে প্রকল্পটির বাস্তবায়নে দেশি ও আন্তর্জাতিক পরামর্শকের যৌক্তিকতা এবং এ খাতে ব্যয় নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে পরিকল্পনা কমিশন। আমরাও মনে করি, প্রকল্পটি বাস্তবায়নে আদৌ পরামর্শক নিয়োগের প্রয়োজন আছে কিনা, তা খতিয়ে দেখা উচিত। প্রকল্পের অর্থের একটি বড় অংশ যদি অপ্রয়োজনীয় খাতে চলে যায়, তাহলে স্বভাবতই প্রকল্পটির যথাযথ বাস্তবায়নে এর প্রভাব পড়বে। এতে প্রকল্পের উদ্দেশ্য হবে ব্যাহত।

জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে দেশের উপকূলীয় অঞ্চলগুলো রয়েছে ঝুঁকিতে। এসব এলাকায় জলবায়ু সহিষ্ণু অবকাঠামো নির্মাণ শুধু প্রয়োজন নয়, জরুরি। জলবায়ু সহনশীল গ্রামীণ অবকাঠামো বাস্তবায়িত হলে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের উপকূলবেষ্টিত গ্রামীণ জনপদের মানুষ জলবায়ু সহিষ্ণু মানের টেকসই যোগাযোগ ব্যবস্থার আওতায় আসবে।

এতে ব্যাপক জনগোষ্ঠী উপকৃত হবে এবং এসব এলাকার আর্থসামাজিক উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড গতিশীল হবে। কাজেই এ প্রকল্পের সুষ্ঠু বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে। সে ক্ষেত্রে প্রকল্পের অর্থের অপচয় ও নয়ছয় রোধ করতে হবে কঠোরভাবে। এ ব্যাপারে সরকারের বিশেষ দৃষ্টি দেয়া প্রয়োজন।

  • Courtesy: Jugantor/03-03-18

রায়ের কপি পৌঁছুতে বিলম্ব ‘ইচ্ছাকৃত’ - জাফরুল্লাহ


বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার পাঁচ বছরের সাজার রায়ের কপি এখনও হাইকোর্টে না পৌঁছানোর কঠোর সমালোচনা করেছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ড. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।

তিনি বলেছেন, ‘সদরঘাট থেকে ঢাকা হাইকোর্ট যাতায়াতে ডিজিটাল যুগে কয় ঘণ্টা সময় লাগে তা আমাদের জানা। বিচারিক আদালত থেকে বেগম জিয়ার রায়ের কপি হাইকোর্টে পৌঁছুতে কোনোভাবেই এত সময় লাগার কথা নয়! এটা অনেকটা ইচ্ছাকৃত বিলম্ব।’

শনিবার (৩ মার্চ) জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে ঐতিহাসিক ৩ মার্চ স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠ দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানটি আয়োজন করে ঐতিহাসিক ৩ মার্চ ’৭১ উদযাপন কমিটি।

দেশে যখন গণতন্ত্র থাকে না তখন চতুর্দিকে নৈরাজ্য চলে ব‌লে মন্তব্য ক‌রে‌ন ড. জাফরুল্লাহ।

তিনি বলেন, ‘চার কিলোমিটার রাস্তা যেতে ১৫ দিন সময় লাগে! খালেদা জিয়া আড়াই কোটি টাকা চুরি করেছেন বলা হয়, কিন্তু তিনি এত কম টাকা কেন চুরি করেছেন তা আমি জানি না। আরও বেশি করে করতে পারতেন।’

রাজনৈতিক এই বিশ্লেষক আরও বলেন, ‘কোনও জাতি এক ব্যক্তির দ্বারা গঠিত হয় না। একজনের একদিনের বক্তৃতা ও ঘোষণা দ্বারাও নয়। বহুজনের শ্রমের দ্বারা জাতি গঠিত হয়।’

২ ও ৩ মার্চ রাষ্ট্রীয়ভাবে উদযাপন না করার সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘যে জাতি বীরদের সম্মান করতে পারে না সেই জাতির কপালে দুর্ভোগ আছে। আজকে রাষ্ট্রীয়ভাবে ২ ও ৩ মার্চ উদযাপিত হয় না কেন? মানুষতো জানে যারা বর্তমানে রাষ্ট্র পরিচালনা করছে তারা বেঈমানি করছেন।’

ড. জাফরুল্লাহ আরও বলেন, ‘আজ যেটা বলা সহজ সেই কথাটা ১৯৭১ সালের মার্চ মাসে বলা সহজ ছিল না। তখন জীবনকে বাজি রাখতে হতো। জাতি যখন দিকভ্রান্ত হতাশ তখন ২৩-২৪ বছরের যুবক এক ঐতিহাসিক ঘটনা ঘটিয়ে দেন। হঠাৎ সাহসের সঙ্গে পতাকাটা তুলে ধরলেন। পরদিন একটা দিক নির্দেশনা দিলেন শাহজাহান সিরাজ। রব শুরু করলেন, এটাই আমাদের পতাকা। আমরা চিন্তা করতে বাধ্য হলাম আমাদেরকে এই পথে এগুতে হবে। তার পরদিন বিস্তারিত তুলে ধরলেন শাহজাহান সিরাজ। একটা পড়া দরকার। আমি স্কুলের বই খুলে দেখি কোথাও রবের নাম নেই, শাহজাহান সিরাজের নাম নেই। কেন? ইশতেহার শব্দটাও তো নেই।’

যখন এক ব্যক্তির হাতে ক্ষমতা থাকে তখন ঢাকাকেন্দ্রিক শাসন ও ইসলামাবাদের শাসনের মধ্যে তেমন তফাত থাকে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

শাজাহান সিরাজ ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টের সচিব ব্যারিস্টার শুল্কা সারওয়াত সিরাজের সঞ্চালনায় সভায় আরও বক্তব্য দেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আব্দুর রব, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েল ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, কবি আল মুজাহিদী, বেগম রাবেয়া সিরাজ ও বাংলাদেশ ছিন্নমূল হকার্স সমিতির আহ্বায়ক কামাল সিদ্দিকী প্রমুখ।

উল্লেখ্য, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় গত ৮ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর বকশীবাজারের আলিয়া মাদরাসা মাঠে স্থাপিত ঢাকার ৫ নং বিশেষ জজ ড. আখতারুজ্জামান এ মামলায় খালেদা জিয়াকে ৫ বছরের কারাদণ্ড দিয়ে রায় ঘোষণা করেন। রায়ে তারেক রহমানসহ বাকিদের ১০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। রায় ঘোষণার পর ওই দিনই কড়া নিরাপত্তায় খালেদা জিয়াকে ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে নেয়া হয়। বর্তমানে তিনি সেখানেই বন্দি আছেন। 

এ মামলায় গত ২২ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় দিনের শুনানি শেষে বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এক আদেশে জানান, বিচারিক আদালতের নথি পেলেই খালেদা জিয়ার মামলার আদেশ দেয়া হবে। 

  • ব্রে‌কিং‌নিউজ/০৩ মার্চ ২০১৮

LNG supply and capacity payment


That some government agencies here are more prone to putting the cart before the horse is, more or less, a proven fact.  Taxpayers' money is often wasted just because of neglect, inefficiency and lack of coordination in putting all the necessary factors in place to make projects and programmes a success. The Petrobangla's programme to supply imported liquefied natural gas (LNG) from next month using the facilities of the country's first floating, storage and re-gasification unit (FSRU)-based terminal at Moheskhali could soon be such an example.

The state-owned agency has already struck deals on the import of LNG from a number of sources and the construction of the terminal by a US firm is now reported to be at the final phase. The stage is also set for putting into effect yet another hike in gas prices for the domestic consumers to compensate for high cost of imported LNG. However, what is not yet fully ready is the pipeline to carry the entire volume of gas to be made available by the LNG terminal to the consumers.

A report, published in this paper quoting a senior official of Petrobangla, said the lack of preparedness, in terms of gas transmission pipeline, is likely to cost the government an additional amount, in the form of capacity payment, from the first day of the commercial launch of the terminal. It would not be able to evacuate the entire volume of re-gasified LNG from the terminal; a large part of the gas transmission pipeline between Anwara-Fouzderhat is yet to be laid. But as per contract with the builder of the terminal, the government would have to make full payment to the former even if it fails to evacuate lower than actual volume of LNG.

What is more frustrating is that the government is at risk of making capacity payment when a large number of industrial units in Chittagong region have remained gas-starved for years together. It is almost certain that the capacity payment would be substantial since the Gas Transmission Company Limited (GTCL) is yet to acquire land for laying the Anwara-Fouzderhat pipeline. The development, thus, speaks of usual sloth and inefficiency ingrained in the state entities.

However, some state entities have developed a habit of making capacity payments to private parties in recent years. The Power Development Board (PDB) is one such organisation that has been paying billions of taka to private rental power plants for its failure to utilise the generating capacity of the latter.

Allegations are aplenty about irregularities in such payments. It is not unlikely that the scopes for indulging in irregularities are deliberately created in deals struck between the private parties and the state agencies to share funds beyond regular ones. The relevant ministry should look into the issue of probable capacity payment to the LNG terminal and the delay in laying a major part of the pipeline. 

  • Courtesy: The Financial Express/ editorial/ march 04, 2018


আবারো ৩টি নতুন ব্যাংক অনুমোদন পেতে যাচ্ছে


আবারো তিনটি নতুন ব্যাংক অনুমোদন পেতে যাচ্ছে। এই তিন ব্যাংক হচ্ছে বাংলা ব্যাংক, পিপলস ব্যাংক ও সিটিজেন ব্যাংক লিমিটেড। 

বাংলা ব্যাংকের প্রধান উদ্যোক্তা হলেন বেঙ্গল গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান মো: জসিম উদ্দিন। তিনি দেশের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইর সহসভাপতি ছিলেন। 

পিপলস ব্যাংকের প্রধান উদ্যোক্তা হলেন চট্টগ্রামের সন্দ্বীপের বাসিন্দা যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী এম এ কাশেম, যিনি যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সহসভাপতি। 

অন্যদিকে সিটিজেন ব্যাংকের উদ্যোক্তা হচ্ছেন ব্যবসায়ী মোহাম্মদ ইকবাল। 

গত বছরের শেষ দিকে বাংলা ও পিপলস ব্যাংককে লাইসেন্স দেয়ার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে সুপারিশ করেছিল অর্থমন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ। এখন সিটিজেন ব্যাংকের বিষয়ে অনুমোদন চেয়ে গত সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রীর দফতরে একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে।

দেশে বর্তমানে ৫৭টি বাণিজ্যিক ব্যাংক থাকা সত্ত্বেও নতুন তিন ব্যাংক প্রতিষ্ঠার অনুমোদনপ্রক্রিয়া নিয়ে ইতোমধ্যে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। বর্তমান সরকারের আমলে ৯টি ব্যাংক প্রতিষ্ঠার অনুমতি দেয়া হয়েছে। এই ব্যাংকগুলোর মধ্যে অন্ততপক্ষে তিনটির আর্থিক অবস্থা খুবই নাজুক। বাদবাকিগুলো অধিকাংশই কোনো রকমে তাদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখছে।

নতুন ব্যাংক অনুমোদনের বিষয়ে জানতে চাইলে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেছেন, সরকারের শীর্ষ মহলের সম্মতি পাওয়ার পর গত বছর মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বাংলা ও পিপলস ব্যাংকের অনুমোদনের বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে সুপারিশ করা হয়েছিল। এখন আমরা সিটিজেন ব্যাংক লিমিটেড নামে অপর একটি ব্যাংকের সম্মতির বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর দফতরে গত সপ্তাহে একটি চিঠি পাঠিয়েছি। সেখান থেকে সম্মতি পাওয়া গেলে ওই ব্যাংককেও অনুমোদন দেয়ার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে সুপারিশ করা হবে। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের এক শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তা এ বিষয়ে মন্তব্য করেছেন, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ নতুন ব্যাংক খোলার বিষয়ে আমাদের কাছে সুপারিশ করতে পারে এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের আগামী পরিচালনা পর্ষদে এ বিষয়ে আলোচনা হতে পারে।

এর আগে নতুন ব্যাংক অনুমোদন দেয়ার বিষয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছিলেন, বর্তমানে বাংলাদেশে অনেক ব্যাংক রয়েছে। তারপরও দেশের প্রচুর অঞ্চল ব্যাংক সেবার বাইরে রয়েছে। এ কারণেই নতুন ব্যাংকের অনুমোদন দেয়া হচ্ছে। আমরা আরো তিন বা চারটি ব্যাংক প্রতিষ্ঠান অনুমোদন দেবো। তিনি বলেন, অনেকগুলো ব্যাংক একীভূত (মার্জার) করার চেষ্টা চলছে।

তবে বাংলাদেশ ব্যাংক বরাবরের মতো দেশে নতুন করে ব্যাংক প্রতিষ্ঠার বিরোধিতা করে আসছে। এর আগে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ থেকে নতুন ব্যাংক হিসেবে সিটিজেন ব্যাংকের অনুমোদন দেয়া যায় কি না সে বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের মতামত চেয়েছিল। সে সময় বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘সুষ্ঠু প্রতিযোগিতা নিশ্চিত করার মাধ্যমে ব্যাংকিং খাতকে আরো সুশৃঙ্খল করার উদ্দেশ্যে ২০১৩ সালে ৯টি ব্যাংকের অনুুমোদন প্রদান করা হয়।

কিন্তু এই ব্যাংকগুলোর মূলধন পর্যাপ্ততার হার, সম্পদের ওপর মুনাফার হার ক্রমান্বয়ে হ্রাস পাচ্ছে। শুধু তাই নয়, এসব ব্যাংকের ইক্যুইটি মূলধনের ওপর মুনাফার হারও সন্তোষজনক পর্যায়ে উন্নীত হয়নি। প্রথম কয়েক বছরের মধ্যেই কয়েকটি নতুন ব্যাংকের বিরূপ শ্রেণীকরণ ঋণের হার বেশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এগুলোর মধ্যে নতুন দুটি ব্যাংকের পরিস্থিতি নাজুক হয়ে পড়ায় তাদের ব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রয়োজনীয় নিয়ন্ত্রণমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করছে।’

নতুন ব্যাংকগুলো লাইসেন্সের শর্ত পরিপালন করছে না বলে বাংলাদেশ ব্যাংকের মতামতে তুলে ধরা হয়। এতে বলা হয়, ‘নতুন ব্যাংকগুলো তিন বছরের মধ্যে প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও) ইস্যু, মোট ঋণ ও অগ্রিমের অন্তত ৫ শতাংশ কৃষি ও পল্লীঋণ খাতে বিনিয়োগ করার ইত্যাদি শর্তে প্রদান করা হলেও ব্যাংকগুলো তা পরিপালন করতে সক্ষম হয়নি। এখন এই প্রেক্ষাপটে ও বিরাজমান আর্থসামাজিক পরিস্থিতিতে আরো নতুন বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকের লাইসেন্স প্রদান আর্থিক খাতের স্থিতিশীলতা ও শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য সহায়ক হবে না বলে ইতঃপূর্বে বাংলাদেশ ব্যাংক মতামত ব্যক্ত করেছিল। বাংলাদেশ ব্যাংকের মতামতে সর্বশেষ বলা হয়, ‘ইতোমধ্যে অর্থমন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ‘বাংলা ব্যাংক লিমিটেড’ ও ‘পিপলস ব্যাংক লিমিটেড’ নামে দুটি বাণিজ্যিক ব্যাংকের লাইসেন্স প্রদানের সুপারিশ করা হয়েছে।

এই দুটি ব্যাংকের বিষয়ে ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১-এর লাইসেন্স প্রদানসংক্রান্ত বিধিবিধান এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুুসৃত নিয়ম অনুযায়ী পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। তবে সার্বিক বিবেচনায় এ পর্যায়ে আরো একটি নতুন ব্যাংক অনুমতি দেয়ার বিষয়ে উপরের প্রেক্ষাপট বিবেচনায় নেয়ার যৌক্তিকতা রয়েছে।’

  • নয়া দিগন্ত/৩-৩-১৮ 

দশ বছরে বাংলাদেশ থেকে পাচার হয়েছে ৬ লাখ ৭ হাজার কোটি টাকা

গ্লোবাল ফিন্যানশিয়াল ইন্টেগ্রিটির হিসাব অনুযায়ী ২০১৪ সালেই পাচার হয়েছে ৭২ হাজার ৮৭২ কোটি টাকা



যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণা সংস্থা ‘গ্লোবাল ফিন্যানশিয়াল ইন্টেগ্রিটি’- জিএফআই’র সর্বশেষ প্রতিবেদনের তথ্যমতে, গত ১০ বছরে বাংলাদেশ থেকে পাচার হয়েছে প্রায় ৬ লাখ ৭ হাজার কোটি টাকা। 

বিশ্লেষকরা বলছেন, অবৈধ উপায়ে উপার্জিত টাকা এদেশে খরচ করতে না পারা এবং বিনিয়োগ পরিবেশ না থাকায় পাচারের প্রবণতা বাড়ছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, আলোচিত ‘হলমার্ক গ্রুপ’ ২০১১ সালে সোনালী ব্যাংকে ভুয়া এলসি খুলে একদিনেই বিদেশে পাচার করে ১৫শ কোটি টাকা। একই বছর বিসমিল্লাহ গ্রুপও একই পদ্ধতিতে দেশের ৫টি ব্যাংক থেকে টাকা তুলে মালয়েশিয়ায় পাঠায় প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা।

ওয়াশিংটনভিত্তিক সংস্থা জিএফআই’র সাম্প্রতিক এক গবেষণা বলছে, বাংলাদেশ থেকে বিশ্বের নানা দেশে ২০১৪ সালেই পাচার হয়েছে ৭২ হাজার ৮৭২ কোটি টাকা। আর ১০ বছরে গড়ে পাচারের পরিমাণ ৪৩ হাজার ৫৮৬ কোটি টাকা। 

বিশ্বের ১৯০টি দেশের মধ্যে পাচারের দিক থেকে বাংলাদেশের অবস্থান ২৬তম। 

অর্থনীতিবিদরা মনে করেন, অতিমাত্রায় দুর্নীতি, বিনিয়োগের পরিবেশের অভাব ও রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার কারণে টাকা পাচার হচ্ছে। 

বিশ্বব্যাংকের অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন বলেন, বিশাল অংকের টাকা পাচারের কারণে দেশ একদিকে হারাচ্ছে বিনিয়োগ, অন্যদিকে স্থবির হয়ে পড়ছে উন্নয়নের প্রবৃদ্ধি।

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, পাচার ঠেকাতে এখনই সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।

  • দিনকাল/3-3-2018

Another brutal attack by BCL members


Disciplinary action called for

Rajshahi Government College student Golam Mawla lies unconscious on the college ground on Wednesday after several BCL men brutalised his face with a hammer. The student lay near the college pond, beaten senseless, for a while but no one came to his aid “out of fear”. Later, a number of teachers rescued him and sent him to a hospital, where he is being treated. Photo: Star

The barbaric attack on a second year student of Rajshahi Government College by some Bangladesh Chhatra League (BCL) activists has left us shocked and outraged. The young man was mercilessly hit with a hammer leaving him severely injured. The victim was left senseless and no one dared to come to his rescue, as is evident from the picture published in this paper on March 3 that showed some young men leering away shamelessly at his still form lying on the grass.

We thank the faculty members who finally gathered around and sent Golam Mawla to the hospital; he needed multiple stitches to his battered face. His family is also worried that his injuries may incapacitate him so much that he may not be able to continue his studies. So what is holding up the immediate expulsion of these so-called students from the student body they belong to? Not a week goes by when we are left free from reporting on excesses of the BCL because they display no respect either for their fellow students or the rule of law.

No matter what the point of contention was between the victim and his attackers, such barbarism is intolerable. We expect the university authorities to be firm in their decision in identifying persons involved (as the campus is under CCTV coverage) and cancel their studentship from the university. Such a heinous attack actually warrants legal action to be taken against the attackers.

When will the BCL leadership rein in these aggressive, violence-prone elements within its organisation that only serve to tarnish the image of the student body and ultimately the ruling party? We believe that Awami League's central leadership has a major role to play in this matter because some BCL members are simply out of control and they can only be brought to heel if the party takes a tough stance on the issue.

Saturday, March 3, 2018

নারায়ণগঞ্জে যুবলীগ নেতাসহ ৭ জনকে আদালতের নোটিস


নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে জামপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক সামসুল আলমসহ সাতজনের বিরুদ্ধে রেলওয়ের লিজকৃত জমি দখল করে মাটি ভরাটের অভিযোগে আদালতে মামলা হয়েছে। শুনানি শেষে আদালত ওই জমিতে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন। পাশাপাশি যুবলীগ নেতাসহ সাতজনকে নোটিস পাওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেন।

 
বৃহস্পতিবার বিকালে দায়েরকৃত মামলার বাদী মহজমপুর উত্তর কাজীপাড়ার ব্যবসায়ী মো. আলী হোসেন। গতকাল সকালে আদালতের নোটিস পৌঁছলে সামসুল আলমের নেতৃত্বে অর্ধশতাধিক ব্যক্তি লাঠিসোঁটা, টেঁটা, বল্লম নিয়ে মহড়া দেয় বলে অভিযোগ উঠেছে।পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে টহল জোরদার করে। এ নিয়ে ওই এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা করছে এলাকাবাসী। এর আগে ওই জমি জোরপূর্বক দখল করে বেড়া দেয়ার অভিযোগে ভুক্তভোগী আলী হোসেন বাদী হয়ে ছয়জনকে আসামি করে সোনারগাঁ থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।

 
জানা যায়, আলী হোসেন রেলওয়ের কাছ থেকে ছয় শতাংশ জমি লিজ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ভোগদখল ও খাজনা পরিশোধ করছেন। সম্প্রতি ওই জমিতে তিনি দোকান নির্মাণ করতে গেলে সামসুল আলমের নেতৃত্বে তুহিনুর রহমান, নুরুল ইসলাম, মোতালেব, আনোয়ার হোসেন, হাসেম, গোলজারসহ ১৫-২০ জনের একটি দল লাঠিসোঁটা নিয়ে বাধা দেয়। এ ঘটনায় তিনি গত ১ ফেব্রুয়ারি সোনারগাঁ থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। এরপর বৃহস্পতিবার সকালে নারায়ণগঞ্জ সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। ওইদিন বিকালে শুনানি শেষে আদালত ওই জমির ওপর অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। পাশাপাশি ১৫ দিনের মধ্যে বিবাদীদের আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেন।

 

Courtesy: Bonikbarta Mar 03, 2018

হাওড়ে বাঁধ নির্মাণ: বাস্তবায়নের সময় পেরোলেও কাজ হয়েছে অর্ধেক

হাওড়ের ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণে গৃহীত প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নের জন্য ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছিল সরকার। বুধবার এসব প্রকল্প বাস্তবায়নের শেষ সময় পেরিয়ে গেলেও এর মধ্যে সার্বিকভাবে প্রকল্পগুলোর কাজ শেষ হয়েছে মাত্র অর্ধেক। এমনকি কোনো কোনো ক্ষেত্রে বাঁধে মাটি ফেলার কাজও শুরু হয়নি। বিষয়টি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে স্থানীয় কৃষকরা।

সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার মাটিয়ান হাওড়ের বোয়ালমারা বাঁধ নির্মাণের জন্য প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি (পিআইসি) গঠন করা হয়েছিল পাঁচটি। এদের অনুকূলে অর্থও বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এর পরও গত ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাঁধটির কোনো প্রকল্পেরই কাজ শুরু হয়নি।
 

একই অবস্থা জগন্নাথপুরের নলুয়া হাওড়ের ভুরাখালী স্লুইস গেটসংলগ্ন বাঁধ এবং হালেয়ার বাঁধেরও। এ দুই বাঁধেও এখন পর্যন্ত কোনো মাটি ফেলা হয়নি। পুরো জেলায় এ রকম আরো কয়েকটি বাঁধ নির্মাণের কথা ছিল। প্রকল্প বাস্তবায়নের সময় শেষ হলেও এখন পর্যন্ত সেগুলোর কাজই শুরু হয়নি। সার্বিকভাবে ৯৮৭টি প্রকল্পের একটিরও কাজ সময়মতো শেষ হয়নি। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, এখন পর্যন্ত এসব বাঁধ নির্মাণের ৬৫ শতাংশের মতো কাজ শেষ হয়েছে। যদিও স্থানীয় কৃষক ও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার দাবি, সার্বিকভাবে এখন পর্যন্ত কাজ শেষ হয়েছে ৫০ শতাংশের মতো।

জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ মাসুম বিল্লাহ জানান, যথাসময়ে কাজ শেষ করতে না পারায় ১৩টি পিআইসির সদস্যদের লিখিতভাবে কারণ দর্শানোর নোটিস দেয়া হয়েছে। এছাড়া কাজের মেয়াদ আরো ১৫ দিন বাড়ানোর সুপারিশ করা হয়েছে

পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) হিসাব অনুযায়ী, ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত হাওড়ের ৬৫ শতাংশ বাঁধ নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে। এর মধ্যে সুনামগঞ্জ সদরে ৮০ শতাংশ, বিশ্বম্ভরপুরে ৫৮, জামালগঞ্জে ৭৫, তাহিরপুরে ৭০, ধর্মপাশায় ৭৫, দক্ষিণ সুনামগঞ্জে ৭০, দোয়ারাবাজারে ৭০, দিরাইয়ে ৬৫, ছাতকে ৫০, শাল্লায় ৫০ ও জগন্নাথপুরে ৬৫ শতাংশের কাজ শেষ হয়েছে। অন্যদিকে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন পরিবেশ ও হাওড় উন্নয়ন সংস্থার হিসাব অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত বাঁধের কাজ শেষ হয়েছে ৫৫ শতাংশের কাছাকাছি।

নির্ধারিত সময়ে বাঁধের কাজ শেষ না হওয়ায় এবারো হাওড়ের ফসল নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন কৃষকরা। গত বছর নির্ধারিত সময়ে বাঁধ নির্মাণ না হওয়া ও নির্মাণকাজে অনিয়মের কারণে অকালবন্যায় তলিয়ে যায় বিস্তীর্ণ হাওড়াঞ্চলের ফসল। গত বছর বৃষ্টি শুরু হয়েছিল মার্চের মাঝামাঝি সময় থেকে। আর শেষ সপ্তাহে শুরু হওয়া অকালবন্যায় তলিয়ে যায় একের পর এক হাওড়।

হাওড়ে বাঁধ নির্মাণে অনিয়ম ও ফসলহানির পর ব্যাপক সমালোচনার মুখে চলতি বছর থেকে বাঁধ নির্মাণে ঠিকাদারি প্রথা বাতিল করে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়। চলতি বছর থেকে ঠিকাদারদের বদলে হাওড়ের সব বাঁধের কাজ করছে স্থানীয় কৃষকদের নিয়ে গঠিত পিআইসি। এতে কৃষকদের সঙ্গে সম্পৃক্ত করা হয়েছে স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদেরও। জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নেতৃত্বে গঠন করা হয়েছে জেলা ও উপজেলা কমিটি। এবার সুনামগঞ্জের ১১ উপজেলার ৫৩টি হাওড়ে সাড়ে ৫০০ কিলোমিটার ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণের কথা ছিল। কিন্তু এবারো নির্ধারিত সময়ে বাঁধ নির্মাণের কাজ শেষ করা সম্ভব হয়নি।

সংশ্লিষ্টদের দাবি, হাওড়ের পানি দেরিতে নামায় এবার কাজে বিলম্ব হচ্ছে। আগামী ১৫ দিনের মধ্যেই সব কাজ শেষ হবে।

অন্যদিকে স্থানীয় কৃষকদের দাবি, পিআইসি গঠনে বিলম্ব, পাউবো ও উপজেলা প্রশাসনের মধ্যে সমন্বয়হীনতা এবং জনপ্রতিনিধিদের পছন্দের লোকদের পিআইসিতে অন্তর্ভুক্তির কারণে বাঁধের কাজে দেরি হচ্ছে। শেষ সময়ে এসে তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে নিম্নমানের কাজ করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ তুলেছেন তারা।

 

 

নির্ধারিত সময়ে বাঁধের কাজ শেষ না হওয়ায় কৃষকরা এখন ক্ষুব্ধ। তাহিরপুরের লেদারবন্দ হাওড়সংশ্লিষ্ট কৃষকরা এরই মধ্যে বিষয়টি নিয়ে বিক্ষোভও করেছেন।

তাহিরপুরের বড়দল এলাকার কৃষক জসিম উদ্দিন বলেন, সময় শেষ হওয়ার পর তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে এখন কাজ খুবই নিম্নমানের হচ্ছে। বাঁধের নিচ থেকেই মাটি কেটে বাঁধে দেয়া হচ্ছে। আর শেষ সময়ে কাজ হওয়ায় মাটি শক্তভাবে বসার সুযোগ পাবে না। ফলে বৃষ্টি হলেই বাঁধের মাটি পানিতে মিশে যাবে।

প্রসঙ্গত, দেশের নিচু এলাকাগুলোর অন্যতম হচ্ছে হাওড়াঞ্চল। দেশে মোট বোরো আবাদের বৃহদাংশের চাষ হয় এখানেই। সিলেট জেলা ও তত্সংলগ্ন এলাকায় প্রতি বছর মার্চের দিকে এসে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়। বৃষ্টি হয় সীমান্তের ওপারের ভারতের মেঘালয় পাহাড়েও। মেঘালয়ের এ পাহাড়ি ঢল হাওড়ের দিকে নেমে আসে মার্চ-এপ্রিলের দিকে। ফলে এ সময় বন্যার প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। বন্যার হাত থেকে হাওড়াঞ্চলের উৎপাদিত ফসল রক্ষার জন্য নির্মাণ করা হয় উঁচু বাঁধ। কিন্তু প্রতি বছরই এসব বাঁধ নির্মাণে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। বাঁধ নির্মাণে গাফিলতির কারণে ফি বছরই তলিয়ে যায় হাওড়ের ফসল, যা গত বছর ভয়াবহ রূপ নেয়।

সরকারি হিসাবেই গত বছর ফসল রক্ষা বাঁধ ভেঙে ১৫৪ হাওড়ের বোরো ফসল তলিয়ে যায়। ক্ষতিগ্রস্ত হয় ১ লাখ ৬১ হাজার হেক্টর জমির ফসল। অন্যদিকে কৃষকদের হিসাবে এ ক্ষতির পরিমাণ প্রায় দ্বিগুণ।

 

জগন্নাথপুরের নলুয়া হাওড় এলাকায় সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, এখানকার ভুরাখালী স্লুুইস গেটসংলগ্ন বাঁধ ও হালেয়ার পতিত বাঁধে মাটিই পড়েনি। বৈশাখী বাঁধের কিছু অংশে মাটির কাজ চলছে। গত বছর প্রথম এ বাঁধ ভেঙেই হাওড়ে পানি প্রবেশ করেছিল বলে স্থানীয় কৃষকরা জানিয়েছেন। এখানকার স্থানীয় কৃষক আব্দুর রউফ বলেন, এখনো হাওড়ের বাঁধগুলোর কাজ শেষ না হওয়ায় আমরা দুশ্চিন্তায় আছি। গতবার ফসল গেছে, এবারো যদি ফসল তুলতে না পারি, তাহলে না খেয়েই মরতে হবে।

পরিবেশ ও হাওড় উন্নয়ন সংস্থার সভাপতি কাসমির রেজা বলেন, আমাদের জরিপ অনুযায়ী এখন পর্যন্ত গড়ে ৫২ শতাংশ বাঁধের কাজ শেষ হয়েছে। এ বছর বাঁধের

কাজ অনেক আগে শেষ করা উচিত ছিল। কারণ প্রকৃতি কখন বিরূপ হবে তার যেমন ঠিক নেই, তেমনি বাঁধ শক্ত হওয়ার জন্যও কিছুটা সময় দরকার।

 

পানি উন্নয়ন বোর্ড সুনামগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবু বকর সিদ্দিক ভুইয়া বলেন, এখন পর্যন্ত ৬৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। বাকি কাজ আগামী ১০-১৫ দিনের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে।

 

তিনি বলেন, সব উপজেলায় এখন মূলত চলছে শেষ দিককার কাজ; যেমন মাটি সমান করা, দুরমুশ করা, ঘাস লাগানোর কাজ বাকি আছে। এবার সবকিছু আগাম পরিকল্পনা করলেও হাওড়ে জলাবদ্ধতা থাকায় বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু হতে দেরি হয়, এ কারণে কাজ শেষ করতেও কিছু সময় বেশি লাগছে।

 

কিছু প্রকল্পের কাজ এখনো শুরু না হওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সব প্রকল্পের কাজই শুরু হয়ে গেছে। এবার প্রকল্পগুলো অনেক বড়। ফলে একদিকে শুরু হলে আরেকদিকে দেখা যাচ্ছে না।

সুনামগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে সুনামগঞ্জের ২ লাখ ২৪ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ করা হয়েছে। গত বছর আবাদ হয়েছিল ২ লাখ ২৩ হাজার ৮৫ হেক্টরে।

নেত্রকোনায়ও শেষ হয়নি কাজ: নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলেও নেত্রকোনার হাওড়াঞ্চলের ফসল রক্ষা প্রকল্পের নির্মাণকাজ ৭৫ থেকে ৮০ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। ফলে আশঙ্কা থেকে গেছে সেখানকার স্থানীয় কৃষকদের মধ্যেও।

নির্ধারিত সময়ে বাঁধ নির্মাণ না হওয়ায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া এসেছে জেলা কাবিটা স্কিম মনিটরিং কমিটির সভায়। যদিও সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আগামী সাতদিনে শতভাগ কাজ শেষ করা হবে।

 

নেত্রকোনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আকতারুজ্জামান বলেন, নেত্রকোনা জেলার হাওড়াঞ্চলে প্রায় ৩৩০ কিলোমিটার ছোট-বড় বাঁধ রয়েছে। তার মধ্যে অতিগুরুত্বপূর্ণ ফসল রক্ষা বাঁধ হিসেবে এ বছর ৮০ থেকে ৯০ কিলোমিটার বাঁধের নির্মাণকাজ শুরু করা হয়েছিল। নির্ধারিত সময়ে ৭৫ থেকে ৮০ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। বাকি কাজ স্বল্প সময়ের মধ্যে শেষ হবে বলে আশা রাখছি।
 

 Courtesy: Bonikbarta Mar 03, 2018

গ্রামীণ ব্যাংকের পরিচালক নির্বাচন বিধিমালা আবার সংশোধন


নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

 গ্রামীণ ব্যাংকের পরিচালক নির্বাচনের জন্য আবার বিধিমালা সংশোধন করেছে সরকার। লম্বা সময় বিরতি দিয়ে এবারেরটি গ্রামীণ ব্যাংকের পরিচালক নির্বাচন করার জন্য তৃতীয় দফা উদ্যোগ। এ ব্যাপারে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব মো. ইউনুসুর রহমান স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপন জারি হয়েছে গত বৃহস্পতিবার।
 

নতুন প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, গ্রামীণ ব্যাংকের পরিচালক নির্বাচনের জন্য একটা কমিশন হবে তিন সদস্যের। একজন হবেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার, অন্য দুজন নির্বাচন কমিশনার। প্রধান নির্বাচন কমিশনার হবেন রাষ্ট্রায়ত্ত কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে কর্মরত একজন উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি)। আর দুই নির্বাচন কমিশনার হবেন গ্রামীণ ব্যাংকেরই মহাব্যবস্থাপক। গ্রামীণ ব্যাংকের চেয়ারম্যান বেছে নেবেন এই মহাব্যবস্থাপকদের।

 নতুন প্রজ্ঞাপনে ভোটারদের পরিচয়পত্র তৈরির একটি নমুনা ফরমের ছক করে দেওয়া হয়েছে। এতে তাঁদের নাম-ঠিকানা, ক্রমিক নম্বর ও নির্বাচনী স্তরের নাম উল্লেখ থাকতে হবে। তবে কত সময়ের মধ্যে পরিচালক নির্বাচন করতে হবে, তা নিয়ে প্রজ্ঞাপনে কিছু বলা হয়নি। নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য নির্বাচন কমিশন প্রয়োজনীয় সংখ্যক রিটার্নিং অফিসার নিয়োগ করবেন। রিটার্নিং অফিসারের পরামর্শে ব্যাংকের কর্মকর্তাদের মধ্যে নিয়োগ পাবেন আরও সহকারী রিটার্নিং অফিসার।

 
সরকার গ্রামীণ ব্যাংক (পরিচালক নির্বাচন) বিধিমালাটি প্রথম প্রণয়ন করেছিল ২০১৪ সালের এপ্রিলে। তখন বাংলাদেশ ব্যাংককে ছয় মাসের মধ্যে পরিচালক নির্বাচন অনুষ্ঠানের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। ছয় মাস পার হওয়ার আগেই বাংলাদেশ ব্যাংকের তৎকালীন গভর্নর আতিউর রহমান পরিচালক নির্বাচন অনুষ্ঠানের দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না বলে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতকে জানিয়েছিলেন।

 
একই বছরের নভেম্বরে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিবর্তে একজন অবসরপ্রাপ্ত জেলা জজের নেতৃত্বাধীন কমিশন নির্বাচন করে দেবে বলে বিধিমালা সংশোধন করে নতুন প্রজ্ঞাপন জারি করে। আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ এ সময় কিছুটা কৌশল অবলম্বন করে। কৌশলটা হচ্ছে, নির্বাচন কমিশন গঠনের এক বছরের মধ্যে পরিচালক নির্বাচনের আয়োজন করা হবে।

 
মাঝখানে তিন বছর পার হলেও কমিশন আর গঠিত হয়নি, নির্বাচনও অনুষ্ঠিত হয়নি। এই ফাঁকে ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে গ্রামীণ ব্যাংকের পর্ষদ সদস্যদের মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। সেই থেকে সরকারের নিয়োগ করা চেয়ারম্যানসহ তিন পরিচালক দিয়েই চলছে গ্রামীণ ব্যাংক। গ্রামীণ ব্যাংকের ১২ সদস্যের পর্ষদের বাকি ৯ জন ঋণগ্রহীতা সদস্য।

 
গ্রামীণ ব্যাংকের চেয়ারম্যান খন্দকার মোজাম্মেল হক গত বছরের জুলাইয়ে অর্থমন্ত্রীর কাছে বিধিমালা সংশোধনের দাবি জানিয়ে একটি চিঠি দিয়েছিলেন। তারই আলোকে নতুন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ সূত্রে জানা গেছে।

 
খন্দকার মোজাম্মেল হক চিঠিতে বলেছিলেন, ‘বিধিমালা অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন গঠিত না হওয়ায় গ্রামীণ ব্যাংকের মতো সংবিধিবদ্ধ একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদের পরিচালক নির্বাচন করা সম্ভব হচ্ছে না, যা আমরা কেউই কামনা করি না। একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানে দীর্ঘ সময় পূর্ণাঙ্গ পর্ষদ না থাকলে গুরুত্বপূর্ণ অনেক কাজ আটকে থাকে এবং সার্বিক কার্যক্রম সুশৃঙ্খলভাবে পরিচালনায় ব্যাঘাত সৃষ্টি হয়।’

গ্রামীণ ব্যাংক (পরিচালক নির্বাচন) বিধিমালার ৫(১) ধারা অনুযায়ী নির্বাচিত পরিচালকদের পদ বহাল রয়েছে দাবি করে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন ঋণগ্রহীতা পরিচালকেরা, যা এখনো নিষ্পত্তি হয়নি।

২০১১ সালের ১১ মে গ্রামীণ ব্যাংকের এমডি পদ থেকে সরে দাঁড়ান নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এরপর থেকে ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) দিয়েই চলছে ব্যাংকটি। অর্থাৎ ব্যাংকটিতে পূর্ণাঙ্গ পরিচালনা পর্ষদ নেই ছয় বছরের বেশি সময় ধরে।

 গ্রামীণ ব্যাংকে বর্তমানে ৯০ লাখ সদস্য রয়েছে। আর কর্মচারীর সংখ্যা ২১ হাজার। কর্মচারীরা গ্রামীণ ব্যাংকের বেতনকাঠামো অনুযায়ী বেতন-ভাতা পেয়ে থাকেন। সরকারি বেতনকাঠামো অনুসরণ করেই তৈরি করা হয় গ্রামীণ ব্যাংকের বেতনকাঠামো।

 Courtesy: Prothom Alo Mar 02, 2018

ব্যাংক ডুবিয়ে জাহাজ ভাসালেন তিনি


একরামুল হক,  চট্টগ্রাম

 রাষ্ট্র খাতের বেসিক ব্যাংক ডুবিয়ে শেখ আবদুল হাই বাচ্চু সাগরে ভাসিয়েছেন মাছ ধরার আটটি জাহাজ। বাচ্চুর পারিবারিক প্রতিষ্ঠান ইডেন ফিশারিজের নামে ছয়টি এবং তাঁর ভাই শেখ শাহরিয়ার ওরফে পান্নার প্রতিষ্ঠান ক্রাউন ফিশারিজের নামে কেনা হয়েছে দুটি জাহাজ। এসব জাহাজের বাজারদর প্রায় ১০০ কোটি টাকা। ২০০৯ সালের সেপ্টেম্বরে বেসিক ব্যাংকের চেয়ারম্যান হন তিনি। আর জাহাজ কোম্পানি খোলেন পরের বছরের ডিসেম্বরে।
 

 সাগরে চলাচল করা মাছ ধরার নৌযান তদারকির দায়িত্ব নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের অধীন নৌবাণিজ্য বিভাগের। এই বিভাগের একজন কর্মকর্তা জানান, ইডেন ফিশারিজ লিমিটেডের মালিকাধীন ছয়টি জাহাজ হচ্ছে এফভি ক্রিস্টাল-১, এফভি ক্রিস্টাল-২, এফভি কর্ণতরী, এফভি ইডেন-১, এফভি ইডেন-২, এফভি সিলভার সি-০১। ক্রাউন ফিশারিজের মালিকানাধীন জাহাজ দুটি হচ্ছে এফভি স্পিড-১ ও এফভি স্পিড-২। সাগরে মাছ ধরার জাহাজকে ফিশিং ভ্যাসেল বা এফভি বলা হয়।

 
প্রথম আলোর অনুসন্ধানে জানা গেছে, জাতীয় পার্টির সাংসদ (সংরক্ষিত মহিলা আসন) মাহজাবীন মোরশেদের পারিবারিক প্রতিষ্ঠানের ছিল এফভি ক্রিস্টাল-১ ও এফভি ক্রিস্টাল-২ নামের দুটি জাহাজ। ২০১২ সালের ৫ জুন ইডেন ফিশারিজের নামে দুটি জাহাজের মালিকানা স্থানান্তর করা হয়। সাংসদ মাহজাবীন এবং তাঁর স্বামী চট্টগ্রাম চেম্বারের সাবেক সভাপতি মোরশেদ মুরাদ ইব্রাহিমের কাছে বেসিক ব্যাংকের খেলাপি ঋণের পরিমাণ প্রায় ৪৫০ কোটি টাকা। এর মধ্যে ব্যাংকের আগ্রাবাদ শাখা থেকে ২৭৬ কোটি টাকার খেলাপি ঋণের কারণে স্বামী-স্ত্রীসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে গত ১০ জানুয়ারি চট্টগ্রামে দুটি মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। অন্য তিন আসামিদের মধ্যে আছেন বেসিক ব্যাংকের সাবেক দুই ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) কাজী ফখরুল ইসলাম, এবং সাংসদ মাহজাবীনের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের আইজি নেভিগেশন লিমিটেডের পরিচালক সৈয়দ মোজাফফর হোসেন। তবে এই মামলায় বেসিক ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান বাচ্চুকে আসামি করা হয়নি। এ ছাড়া দিলকুশা শাখা থেকে ঋণ নিয়ে খেলাপি হওয়ার কারণে গত ১৭ জানুয়ারি আরও একটি মামলা হয়। এ মামলায় আগের আসামিদের সঙ্গে মোরশেদ মুরাদ ইব্রাহিমের ছোট ভাই ফয়সল মুরাদ মোরশেদকেও আসামি করা হয়। এই মামলায়ও ছাড় দেওয়া হয় বাচ্চুকে।

 
দুটি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ সিরাজুল হক। মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে স্পষ্ট করে তিনি কিছু বলতে চাননি। তাঁর মন্তব্য, তদন্ত চলছে। এর বেশি কিছু বলার নেই।

 
বাচ্চুর কাছে জাহাজ বিক্রি করার বিষয়ে মোরশেদ মুরাদ ইব্রাহিম এবং তাঁর স্ত্রী সাংসদ মাহজাবীনের বক্তব্য জানতে এক সপ্তাহ ধরে মুঠোফোনসহ বিভিন্ন মাধ্যমে যোগাযোগ করা হয়। কিন্তু তাঁদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। দুজনের মুঠোফোনও বন্ধ রয়েছে।

 
বাচ্চুর মালিকানাধীন ইডেন ফিশারিজের স্থানীয় কার্যালয় প্রথমে ছিল চট্টগ্রাম নগরের সদরঘাট এলাকার ৩৩১, স্ট্র্যান্ড রোডের মনোয়ার টাওয়ারের তৃতীয় তলায়। বছর দুয়েক আগে কার্যালয়টি আগ্রাবাদের আখতারুজ্জামান সেন্টারের অষ্টম তলায় স্থানান্তর করা হয়। গত ২৬ ফেব্রুয়ারি সেখানে গিয়ে কার্যালয়টি বন্ধ পাওয়া যায়। বাণিজ্যিক এই ভবনের ব্যবস্থাপনার সঙ্গে যুক্ত এক কর্মী প্রথম আলোকে জানান, ইডেন ফিশারিজের কার্যালয়টি বেশ কয়েক মাস ধরে বন্ধ রেখেছে এর মালিকপক্ষ। তবে কার্যালয়ের ভাড়া পরিশোধ করা হয় নিয়মিত।

 
মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে ইডেন ফিশারিজের চট্টগ্রাম কার্যালয়ের এক্সিকিউটিভ (অপারেশন) সালাহ উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, পরিচালনাসংক্রান্ত ঝামেলার কারণে ইডেন ফিশারিজের জাহাজগুলো দিয়ে সাগরে আপাতত মাছ ধরা বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে পান্না সাহেবের জাহাজ দিয়ে মাছ ধরা হচ্ছে। তিনি বলেছেন, তাঁদের কোম্পানির (ইডেন) জাহাজ ছয়টি নয়, সাতটি।

 
আবদুল হাই বাচ্চু, তাঁর স্ত্রী শেখ শিরিন আখতার, পুত্র শেখ সাবিদ হাই অনিক ও মেয়ে শেখ রাফা হাই-এর নামে ইডেন ফিশারিজ লিমিটেড খোলা হয়। এ প্রতিষ্ঠানের নামে একটি ব্যাংকে খোলা হিসাবে মাত্র ১১ মাসেই জমা হয় ১৩ কোটি টাকা। এই তথ্য ব্যাংক সূত্র থেকে পাওয়া।

 
চট্টগ্রাম সামুদ্রিক মৎস্য অধিদপ্তর সূত্র জানায়, গভীর সাগরে মাছ ধরার জাহাজ ইস্পাতের কাঠামো (স্টিল বডি) দিয়ে তৈরি হয়। বাংলাদেশে এ ধরনের জাহাজ রয়েছে ১১৬টি। গভীর সাগরে এসব জাহাজ একটানা সর্বোচ্চ ২৮ দিন অবস্থান করে মাছ নিয়ে ফিরে আসে। বাচ্চু ও তাঁর ভাই পান্নার মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের জাহাজগুলো ইস্পাতের তৈরি। প্রতিটি জাহাজের বর্তমান বাজারদর ১০-২৫ কোটি টাকা।

 
গভীর সাগর থেকে ধরে আনা মাছের পাইকারি ক্রেতাদের সংগঠন কর্ণফুলী ফিশ মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আবু ইউসুফ প্রথম আলোকে বলেন, আবদুল হাই বাচ্চু ও তাঁর ভাই পান্না পাঁচ-ছয় বছর আগে জাহাজ কিনে সমুদ্রে মাছ ধরছেন। তাঁদের সংগঠনের মাধ্যমেই ওই জাহাজগুলোর মাছ বাজারজাত করা হয়।

 
২০০৯ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০১৪ সালের ৪ জুলাই পর্যন্ত বেসিক ব্যাংকের চেয়ারম্যান ছিলেন বাচ্চু। তাঁর সময়ে কোনো নিয়মনীতি ও বিধিবিধানের তোয়াক্কা না করে প্রায় সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা লুটপাট হয় ব্যাংক থেকে। এর আগ পর্যন্ত রাষ্ট্র খাতের সবচেয়ে ভালো ব্যাংক হিসেবে পরিচিতি পাওয়া এই ব্যাংকটির এখন ডুবন্ত অবস্থা। বেসিক ব্যাংকে ঋণ কেলেঙ্কারির ঘটনায় দুদকের করা ১৮ মামলার কোনোটিতেই বাচ্চুকে আসামি করা হয়নি।

 
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতও ব্যাংকটিতে ‘হরিলুটের’ পেছনে আবদুল হাই জড়িত বলে একাধিকবার উল্লেখ করেন। উচ্চপর্যায়ে যোগাযোগের কারণে তাঁর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ রয়েছে।

 

Courtesy: Prothom Alo Mar 02, 2018