Search

Tuesday, March 20, 2018

দখলের হাতিয়ার এলজিইডি!

বরিশালে সরকারি টাকায় নদী ভরাট

আজিম হোসেন, বরিশাল


আড়িয়ালখাঁ নদের ৭০ শতাংশ জমি। ১ নম্বর খাস খতিয়ানভুক্ত। সেই জমি বাজার হিসেবে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ (এলজিইডি) প্রায় অর্ধকোটি টাকা ব্যয়ে উন্নয়ন করছে। নিচু জমি ভরাট করার পর সেখানে ভবন তৈরির কাজ চলছে। এর নেপথ্যে রয়েছেন বরিশাল সদর উপজেলার চরবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মাহাতাব হোসেন সুরুজ।

বরিশাল সদর উপজেলার তালতলী বাজারে গতকাল সোমবার সরেজমিনে দেখা গেছে, নদের ওপর তালতলী সেতু। সেতুর পাশে সড়ক। সড়ক ঘেঁষে এই জমি। সামনে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের বাজার উন্নয়ন প্রকল্পের একটি সাইনবোর্ড। পেছনে বালু ভরাট করা।

স্থানীয়রা জানায়, জমি ভরাট করা হয়েছে নদী থেকে ড্রেজার মেশিন লাগিয়ে বালু কেটে। এখন স্থায়ীভাবে দোকানঘর করার জন্য আরসিসি পিলার করা হচ্ছে। ১০টি পিলার এরই মধ্যে তোলা হয়েছে। পুরো জমিতে প্রায় ৩০টি দোকান করার পরিকল্পনা রয়েছে। এর অর্থায়ন করবে ডানিডা (ড্যানিশ ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট এজেন্সি)। তবে সার্বিক তত্ত্বাবধায়ন করছে এলজিইডি। এ জন্য ভরাট জমির ওপর তারা সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দিয়েছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় তালতলী বাজার কমিটির এক জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, মাছ বাজারের নিয়ন্ত্রণ করেন ইউপি চেয়ারম্যান মাহাতাব। ওই মাছ বাজার সেতুর নিচের সড়কের ওপর চলছে। চলতি অর্থবছরে তিনি বাজার ইজারা দিয়েছেন ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে। এর আগে মাছ বাজার কখনো ইজারা দেওয়া হয়নি। এখন স্থায়ীভাবে বাজারের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার জন্য তিনি বালু ভরাট করে পাকা স্থাপনা করছেন। যেখানে তাঁর নামে পাঁচটি দোকান থাকবে।

এলজিইডি বরিশাল সদর উপজেলা প্রকৌশলী মঈনুল ইসলাম জানান, চেয়ারম্যান মাহাতাব পরিষদের পক্ষ থেকে বাজার উন্নয়নের একটি প্রকল্প জমা দিয়েছেন। ওই প্রকল্পে মাছ বাজারের জন্য স্থাপনা নির্মাণের বিষয় ছিল। সেখানে বলা হয়েছে, জমি বাজারের। তবে এর পক্ষে কোনো কাগজপত্র জমা দেওয়া হয়নি। এরপর প্রকল্প অনুমোদন হলে তাঁরা কাজ করার জন্য বরাদ্দ দেন। কিন্তু এখন তাঁরা জানতে পারছেন, জমি খাস।

সদর উপজেলা ভূমি সহকারী কর্মকর্তার কার্যালয়ের জরিপকারী মো. ফোরকান মিয়া জানান, চরবাড়িয়া ইউনিয়নের ১ নম্বর খতিয়ানের সব জমিই খাস। কিছু জমি গণপূর্ত বিভাগের। তবে যে জমি বালু দিয়ে ভরাট করা হয়েছে, তা খাস। তিনি বলেন, ‘আমরা ওই জমি মেপে সীমানাপ্রাচীর দেব। তত দিন কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’

চরবাড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান মাহাতাব হোসেন সুরুজ জানান, তালতলী বাজারের অদূরে সেতুর নিচে সড়কের পাশে পুরাতন একটি মাছের বাজার রয়েছে। এই বাজার সড়কের পাশে হওয়ার কারণে সাধারণ মানুষের যাতায়াতে সমস্যা হয়। তাই জনস্বার্থে নদীর পারে বালু ভরাট করে মাছ বাজার করার পরিকল্পনা নেন। এলজিইডির সহায়তা এবং ডানিডার অর্থায়নে বাজার উন্নয়ন কাজ শুরু করেন। এ জন্য মাছ বাজারের স্টল নির্মাণে পাকা পিলার স্থাপনের কাজ চলছে। তিনি বলেন, ‘এরই মধ্যে উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি (এসি ল্যান্ড) এসে কাজে বাধা দেন। বর্তমানে কাজ বন্ধ রয়েছে। জমির বিষয়টি ফয়সালা হওয়ার পর ফের কাজ শুরু করব।’

এসি ল্যান্ড আমিনুল ইসলাম জানান, তালতলী বাজার উন্নয়ন প্রকল্পের নামে নদীর পাশের কিছু অংশ বালু দিয়ে ভরাট করে পাকা স্থাপনা নির্মাণ হচ্ছিল। ১২ মার্চ তাঁরা ঘটনাস্থলে গিয়ে ড্রেজার মেশিন পান, যা দিয়ে বালু ভরাট করা হয়েছে। তাঁরা পাকা স্থাপনা নির্মাণকাজ করতে স্থানীয় বাজার কমিটি এবং ইউপি চেয়ারম্যানকে নিষেধ করেন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘যেহেতু সরকারি প্রতিষ্ঠান এলজিইডির মাধ্যমে উন্নয়নকাজ করা হচ্ছে, সেহেতু আমরা ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা না করে কাজ বন্ধ করে দেওয়ার জন্য বলি। তার পরও কাজ শুরুর চেষ্টা চললে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

  • কালের কণ্ঠ / ২০-৩-১৮ 

কেউ দায়ী নয়!

পাঁচ বছরে বস্তিতে ১২০০ অগ্নিকাণ্ড 

সুজিত সাহা ও নিহাল হাসনাইন


বস্তিতে নিয়মিত বিরতিতে অগ্নিকাণ্ড ঘটলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রেই মামলা হয় না। হতাহত হলেই কেবল মামলা হয়, তাও অপমৃত্যুর। এরও আবার তদন্ত হয় না। গত পাঁচ বছরে দেশের বস্তিগুলোয় ১ হাজার ২০০টির বেশি অগ্নিকাণ্ড ঘটলেও একটিরও অভিযোগপত্র দাখিল করেনি পুলিশ। স্বাভাবিকভাবেই এসব অগ্নিকাণ্ডে  কাউকে দায়ীও করা যায়নি।

যদিও নগর অর্থনীতিতে উল্লেখ করার মতো অবদান রাখছে বস্তি। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ বস্তি শুমারি অনুযায়ী, বস্তির বাসিন্দাদের ১৩ শতাংশের বেশি দেশের প্রধান রফতানি খাত পোশাক শিল্পের কর্মী।

এসব বস্তিতে একের পর এক অগ্নিকাণ্ড ঘটলেও দোষীদের চিহ্নিত করতে না পারার কারণ হিসেবে নানা সীমাবদ্ধতার কথা বলছে পুলিশ। তাদের মতে, হত্যাকাণ্ডের তদন্তে পুলিশ যেসব ক্লু পায়, বস্তিতে অগ্নিকাণ্ডের ক্ষেত্রে তা পাওয়া যায় না। এছাড়া বস্তিগুলোয় সিসি ক্যামেরাও থাকে না, যা থেকে অপরাধীদের শনাক্ত করা যায়।

পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (মিডিয়া) সহেলী ফেরদৌস এ প্রসঙ্গে বণিক বার্তাকে বলেন, আগুন লাগানোর পর অপরাধের সব আলামতই নষ্ট হয়ে যায়। এ কারণে অপরাধী শনাক্ত করা কঠিন হয়ে পড়ে। আগুনের ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলাগুলো তদন্তেও কিছুটা সময় লেগে যায়। তাছাড়া বস্তিতে কোনো সিসি ক্যামেরাও থাকে না, যাতে ফুটেজ দেখে অপরাধীদের শনাক্ত করা যায়।

দোষীদের শাস্তি না হওয়ায় নিয়মিতই ঘটছে বস্তিতে অগ্নিকাণ্ড। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের পরিসংখ্যান বলছে, গত পাঁচ বছরে শুধু রাজধানীর বস্তিগুলোতেই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে ১৭৮টি। এসব ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছে ১৭ জন।

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৩ সালে ঢাকার বিভিন্ন বস্তিতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে ২৯টি। এতে ক্ষয়ক্ষতি হয় ৭ কোটি ৬৫ লাখ টাকার। পরের বছর অগ্নিকাণ্ডের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৪৩-এ। ১২ জনের প্রাণহানির পাশাপাশি এতে ক্ষতি হয় ১ কোটি ৭৯ লাখ টাকার। ২০১৫ সালে রাজধানীর বস্তিগুলোয় অগ্নিকাণ্ডের সংখ্যা আরো বেড়ে যায়। ওই বছর ৪৭টি অগ্নিকাণ্ডে নিহত হয় তিনজন আর ক্ষয়ক্ষতি হয় ১ কোটি ১১ লাখ টাকার। পরের বছর অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা কিছুটা কমে দাঁড়ায় ২৭টিতে। এতে ১ কোটি ২০ লাখ টাকা ক্ষয়ক্ষতির পাশাপাশি নিহত হয় একজন। সর্বশেষ ২০১৭ সালে রাজধানীর বস্তিগুলোয় ৩২টি অগ্নিকাণ্ডে প্রাণ হারায় একজন। পাশাপাশি ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়ায় ১ কোটি ২০ লাখ টাকায়।

এসব অগ্নিকাণ্ডের বিষয়ে জানতে চাইলে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আলী আহম্মেদ খান বণিক বার্তাকে বলেন, বেশির ভাগ বস্তিতেই অবৈধভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হয়। অবৈধ এসব সংযোগের সরঞ্জামও থাকে নিম্নমানের। তাই শর্ট সার্কিট থেকেই বেশির ভাগ অগ্নিকাণ্ড ঘটে। বস্তিতে অবৈধ গ্যাস সংযোগ নিয়ে চুলা ব্যবহারের কারণেও অগ্নিকাণ্ড ঘটে। তবে দুই পক্ষের শত্রুতা ও দখল-পুনর্দখলের বিষয়টিকেও উড়িয়ে দেয়া যায় না।

বিদ্যুতের লাইন নিয়ে কুর্মিটোলা ক্যাম্প (বিহারী বস্তি) ও রাজু বস্তির মধ্যে বিতণ্ডা হতো প্রায়ই। এর মধ্যেই ২০১৪ সালে ভয়াবহ আগুনের ঘটনা ঘটে। আগুনে পুড়ে প্রাণ হারায় ক্যাম্পের ১০ জন। ওই ঘটনায় মামলা হলে তিন বছরেও অভিযোগপত্র দেয়া হয়নি।

গতকাল কালশীতে কথা হয় অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত কয়েকজনের সঙ্গে। জেনেভা ক্যাম্পের বাসিন্দা মোহাম্মাদ আলম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ঘটনার তিন বছরেও বিচার পেলাম না। আগুন কারা লাগালো তাও জানতে পারলাম না।

রাজধানীর গুলশান ও বনানী এলাকার সীমারেখায় অবস্থান কড়াইল বস্তির। ওই বস্তিতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা প্রায় নিয়মিত। সর্বশেষ গত বছরের ১৬ মার্চ গভীর রাতে বস্তিটিতে আগুন লাগে। কেরোসিনের চুলা থেকে আগুনের সূত্রপাত বলে ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে জানানো হলেও এর পেছনে কারা তা জানা যায়নি। একইভাবে অনুদ্ঘাটিত রয়ে গেছে বস্তিটিতে সংঘটিত আগের অগ্নিকাণ্ডগুলোর মূল হোতারাও।

কড়াইল বস্তির অগ্নিকাণ্ড নিয়ে কথা হয় বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিএম ফরমান আলীর সঙ্গে। বণিক বার্তাকে তিনি বলেন, কড়াইল বস্তির অগ্নিকাণ্ডগুলো দুর্ঘটনাবশত। এ কারণেই কেউ কখনো মামলা করেনি। আর মামলা না হলে দায়ী কারা তা জানা সম্ভব হয় না।

১২ মার্চ রাজধানীর মিরপুরে ইলিয়াস মোল্লা বস্তিতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে যায় চার হাজারের বেশি ঘর। বস্তির উত্তর অংশে আগুনের সূত্রপাত হলেও দ্রুত তা দক্ষিণ অংশে ছড়িয়ে পড়ে। আতঙ্কিত লোকজন প্রাণ নিয়ে বেরোতে পারলেও ভস্মীভূত হয়েছে তাদের সর্বস্ব। এর পেছনে অন্য কারণ থাকতে পারে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

বস্তির বিভিন্ন দুর্যোগ নিয়ে কাজ করে কোয়ালিশন ফর দি আরবান পুওর (সিইউপি) নামের একটি বেসরকারি সংস্থা। এর নির্বাহী পরিচালক খন্দকার রেবেকা সুন্নত বলেন, আগুনের খবর পেয়ে আমরাও ঘটনাস্থলে যাই। কিন্তু আগুনের ধরন দেখে মনে হয়নি, এটি নিছক দুর্ঘটনা। এ আগুনের পেছনে দুটি কারণ থাকতে পারে। এর একটি হলো বস্তির জমি ফাঁকা করে তা পুনর্দখল।

বস্তির সংখ্যা ঢাকায় বেশি হলেও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা চট্টগ্রামে বেশি। ২০১৩-১৭ সালে এখানকার বস্তিগুলোয় আগুন লেগেছে মোট ৮৭২ বার। এসব অগ্নিকাণ্ডে প্রাণহানি না ঘটলেও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ২৫ কোটি টাকার। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বন্দরনগরীর বিভিন্ন বস্তিতে সবচেয়ে বেশি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে ২০১৪ সালে, ৫৬৮টি। এসব অগ্নিকাণ্ডে ক্ষয়ক্ষতি হয় ২১ কোটি টাকার। নগরীর বস্তিতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ অগ্নিকাণ্ড হয় গত বছর, ১৫৩টি। এতে ক্ষতির পরিমাণ ১ কোটি ৩৬ লাখ টাকার। ২০১৬ সালে ১২৬টি অগ্নিকাণ্ডে প্রায় সোয়া ২ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়। এছাড়া ২০১৫ সালে চট্টগ্রামের বিভিন্ন বস্তিতে ২৫টি অগ্নিকাণ্ডে আর্থিক ক্ষতি হয় অর্ধকোটি টাকা। ২০১৩ সালে চট্টগ্রামের বস্তিগুলোয় ২০টি অগ্নিকাণ্ড ঘটলেও ক্ষয়ক্ষতির কোনো তথ্য নেই ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের কাছে।

চট্টগ্রামের তুলাতলী বস্তিটিতেইে আগুন লেগেছে এ পর্যন্ত চারবার। সর্বশেষ ২০১৩ সালে অগ্নিকাণ্ডে ভস্মীভূত হয় বস্তির ৬০টি ঘর। প্রতিবারই চুলার আগুন, সিগারেটের আগুন ও বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিটকে দায়ী করে তদন্ত শেষ করেছে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ।

যদিও ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশের এ ভাষ্যের সঙ্গে একমত নয় বস্তির বাসিন্দারা। ৩০ বছর ধরে তুলাতলী বস্তিতে বসবাস করে আসা হিরণ মিয়ার দাবি, আধিপত্য বিস্তার ও বসতঘরের নতুন মালিকানা পেতেই এসব আগুন। সাময়িকভাবে ক্ষতিগ্রস্তদের কিছু ক্ষতিপূরণ দেয়া হয় বটে, তবে বদলে যায় মালিকানা। ২০১৩ সালের অগ্নিকাণ্ডও নিছক দুর্ঘটনা নয়, আধিপত্য বিস্তারের কৌশল।

চট্টগ্রামের সদরঘাট থানাধীন মাইল্লার বিল বস্তিতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে ২০১৭ সালের শুরুর দিকে। ৫৫০টি বসতঘরের ওই বস্তিতে অগ্নিকাণ্ডে সাড়ে ৩০০ ঘর পুড়ে যায়। ওই ঘটনার পর ব্যক্তিমালিকানাধীন বস্তিতে একটি বৃহৎ গুদাম তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। সরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে ইজারার মাধ্যমে পাওয়া জমিটির বস্তিবাসীকে উচ্ছেদ করতেই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটতে পারে বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দা ও জনপ্রতিনিধিদের। যদিও ফায়ার সার্ভিস কর্তৃপক্ষ বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুন লেগেছে বলে প্রাথমিক প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে। অগ্নিকান্ডের পর থানায় কোনো মামলা না হওয়ায় তদন্ত হয়নি। ফলে কারো বিরুদ্ধে অভিযোগপত্রও দেয়া যায়নি।

চট্টগ্রামের বন্দর, ডবলমুরিং, সদরঘাট, ইপিজেড এলাকার বিভিন্ন বস্তি সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, বিভিন্ন সময় স্থানীয় প্রভাবশালীরা দখল কিংবা ইজারা নেয়া জমিতে ঘর তুলে বস্তি তৈরি করে। চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ এলাকায় একসময় ১৫-২০টি বস্তি থাকলেও বর্তমানে সে সংখ্যা ৫-এ নেমে এসেছে। আগ্রাবাদ কমার্শিয়াল এলাকায় অফিস ভাড়ার চাহিদা বেশি থাকায় বিভিন্ন সময় অগ্নিকাণ্ডের পর বহুতল ভবন নির্মাণ করা হয় এসব স্থানে।

নগরীর সিআরবি এলাকায় বস্তিবাসীর একটি সংগঠনের নেতা মো. শুক্কুর বণিক বার্তাকে বলেন, বস্তিতে আগুন লাগলে কয়েকদিন মিডিয়ায় আলোচনা হয়, পুলিশ ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা আসেন। এরপর কয়েকদিন ফ্রি খাবার প্রদান করা হলেও নিজ উদ্যোগে আবারো ঘর নির্মাণ করে বাস্তুহারা মানুষ। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ক্ষয়ক্ষতি হলেও মামলা দায়ের হয় কিনা, সে বিষয়ে কিছু জানেন না তিনি।

সাধারণত বস্তির অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মামলা হয় না বলে জানান চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী কমিশনার (কোতোয়ালি জোন) মো. জাহাঙ্গীর আলম। বণিক বার্তাকে তিনি বলেন, হতাহতের ঘটনা ঘটলে কেউ বাদী না হলেও পুলিশ অপমৃত্যুর মামলা দায়েরের পর সার্কেল অফিসের মাধ্যমে নিষ্পত্তি করে। কেউ নাশকতা বা অন্য কোনো অভিযোগে মামলা করলে পুলিশ তদন্তের ব্যবস্থা নেয়। তবে এখন পর্যন্ত বস্তিতে অগ্নিকাণ্ডের পেছনে নাশকতার কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি।

ঢাকা ও চট্টগ্রামের বাইরে রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, সিলেট ও রংপুরের বস্তিগুলোয় গত পাঁচ বছরে অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে ১৪৬টি। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আগুনের ঘটনা রংপুরের বিভিন্ন বস্তিতে, ৬৭টি। এরপর সর্বোচ্চসংখ্যক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে রাজশাহীতে ৪১টি, সিলেটে ২৩টি, খুলনায় ১৩টি ও বরিশালে তিনটি।

বিবিএসের সর্বশেষ বস্তিশুমারি ২০১৪ অনুযায়ী, সারা দেশে বস্তি রয়েছে ১৩ হাজার ৯৩৫টি। এর মধ্যে সিটি করপোরেশন এলাকায় বস্তির সংখ্যা ৯ হাজার ১১৩। সিটি করপোরেশন এলাকার বস্তিগুলোর মধ্যে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের মধ্যে রয়েছে ৩ হাজার ৩৯৪টি। চট্টগ্রামে এ সংখ্যা ২ হাজার ২১৬।

এসব বস্তিবাসীর অধিকাংশই কোনো না কোনোভাবে নগর অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখছেন। এসব বস্তির বাসিন্দাদের ১৩ দশমিক ১৮ শতাংশ পোশাক শ্রমিক হিসেবে কর্মরত। ৬ দশমিক ৯২ শতাংশ রিলগা/ভ্যান চালনা ও ৬ দশমিক ৭১ শতাংশ ছোট ব্যবসা পরিচালনা করেন। ৬ দশমিক ৪১ শতাংশ গৃহপরিচারিকা, ৫ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ দিনমজুর ও ৩ দশমিক ৪৫ শতাংশ নির্মাণ শ্রমিকের কাজ করেন।

  • বণিকবার্তা / ২০-৩-১৮ 

১৪০ কেজি গাঁজাসহ আওয়ামী লীগ ৩ নেতা গ্রেফতার


ময়মনসিংহে ১৪০ কেজি গাঁজাসহ আওয়ামী লীগের তিন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শনিবার রাতে অভিযান চালিয়ে গাঁজাগুলো উদ্ধার করা হয়। এ সময় গাঁজা সরবরাহে ব্যবহৃত একটি পিকআপ জব্দ করা হয়। 

রবিবার দুপুরে ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম জেলা পুলিশের মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিকদের এই খবর নিশ্চিত করেন। গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তিরা হলেন মো. বাবুল মিয়া, সুরুজ আলী ও কাওসার আলী। বাবুল মিয়া মুক্তাগাছা উপজেলার মানকোন ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য এবং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি। গ্রেফতার হওয়া অপর দুজন তার কর্মী। অভিযানে বাবুলের বাড়ি থেকে ৬০ কেজি ও তার দুই সহযোগীর কাছ থেকে আরো ৮০ কেজি গাঁজা উদ্ধার করে পুলিশ। উদ্ধার করা গাঁজার মূল্য ৩০ লাখ টাকা।  

বাবুল মিয়াকে ‘মাদক সম্রাট’ উল্লেখ করে এসপি সৈয়দ নুরুল ইসলাম জানান, বাবুল ও তার সহযোগীরা ভারত থেকে চোরাই পথে বাংলাদেশে গাঁজা আনে। খবর পেয়ে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশিকুর রহমান তার দল নিয়ে শনিবার রাতে মুক্তাগাছার মাঝিরা গ্রামে বাবুলের বাড়িতে অভিযান চালায়। এ সময় ৬০ কেজি গাঁজাসহ বাবুলকে গ্রেফতার করে পুলিশ। 

একই সময়ে মুক্তাগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী আহাম্মেদ মোল্লা বাবুলের সহযোগী সুরুজ ও কাউসারের বাড়িতে অভিযান চালান। এ সময় ৮০ কেজি গাঁজা উদ্ধার করা হয় । গ্রেফতার হওয়া তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান এসপি সৈয়দ নুরুল ইসলাম। সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) ও এ নেওয়াজী, বিশেষ শাখার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জয়িতা শিল্পী, গোয়েন্দা পুলিশের ওসি আশিকুর রহমান ও মুক্তাগাছা থানার ওসি আলী আহমেদ মোল্লা উপস্থিত ছিলেন।

  • দিনকাল/ ২০-৩-১৮ 

রাজনৈতিক কর্মসূচি ঠেকাতে ব্যস্ত পুলিশ , বেপরোয়া অপরাধীচক্র

সাবেক আইজিপি নুরুল আনোয়ার


জনগণের জান-মাল রক্ষার দায়িত্বে নিয়োজিত পুলিশ বাহিনীকে বিরোধী দল দমনে ব্যবহার করছে সরকার। আইনশৃংখলায় পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার সুযোগে রাজধানীসহ দেশ জুড়ে ছিনতাইকারী ও মাদক চোরাকারবারীদের দৌরাত্ম্য বেড়েছে। ছিনতাইকারীদের হাতে প্রাণও হারাচ্ছে বহু মানুষ। রাজনৈতিক কর্মীদের দমন-নিপীড়নের সুযোগে দেশ জুড়ে বেপরোয়া পুরুষ-নারী ছিনতাইকারী চক্র। 

সাবেক আইজিপি নুরুল আনোয়ার দিনকালকে বলেন, প্রায়দিন পত্রিকার পাতা খুললে ছিনতাইয়ের খবর দেখতে পাই। অনেকে মারা যাচ্ছে, কেউ গুরুতর আহত হচ্ছে, লুটে নিচ্ছে সর্বস্ব। পুলিশের মূল কাজ হলো যখনই অপরাধ সংঘটিত হবে সাথে সাথে ব্যবস্থা নেয়া। অপরাধ দমন ও আইনশৃংখলা রক্ষার দায়িত্ব এড়িয়ে পুলিশ দায় এড়াতে পারে না। ছিনতাইকারীর হাতে সাধারণ মানুষের প্রাণ যাচ্ছে।

প্রধান দায়িত্ব আইনশৃংখলা রক্ষা বাদ দিয়ে বিরোধী দলীয় রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের দমনে যদি পুলিশ অন্যান্য অপরাধকে গুরুত্ব না দেয় তাহলে সেটা দায়িত্বের প্রতি অবহেলার শামিল। সূত্র থেকে জানা যায়, বিগত তিন মাসের ব্যবধানে টানাপার্টির কবলে পড়ে শুধু রাজধানীতেই প্রাণ হারিয়েছেন নারী, শিশু, শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ীসহ কয়েকজন। 

গত ২৬ জানুয়ারি রাজধানীতে টানাপার্টির প্রাইভেটকারের চাকায় মাথা থেঁতলে ঘটনাস্থলেই মারা যান একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আয়া হেলেনা বেগম। টানাপার্টির কবলে পড়ে যখন হেলেনা নিহত হলেন, প্রায় একই সময় মোহাম্মদ ইব্রাহিম (৩৬) নামে খুলনার এক ব্যবসায়ী ছিনতাইকারীদের ছুরিকাঘাতে মারা গেছেন সায়েদাবাদ এলাকায়। স্বামীবাগ রেললাইনে দুর্বৃত্তরা তাকে ছুরিকাঘাত করে। গত বছর নভেম্বরে মতিঝিলে হাতব্যাগ ছিনিয়ে নেয়ার সময় রিকশা থেকে পড়ে আহত হন এফবিসিসিআইয়ের এক নারী কর্মকর্তা। আর ডিসেম্বরে দয়াগঞ্জে এক ছিনতাইকারী টান দিয়ে রিকশা আরোহী এক নারীর ভ্যানিটি ব্যাগ ছিনিয়ে নেয়ার সময় তার কোল থেকে পড়ে পাঁচ মাসের ছেলের মৃত্যু হয়। ২৯ নভেম্বর মোহাম্মদপুরে ছিনতাইয়ের সময় রিকশা থেকে পড়ে আহত হন জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউটের চিকিৎসক ফরহাদ আলম। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৫ ডিসেম্বর তার মৃত্যু হয়। ৮ অক্টোবর টিকাটুলিতে ছিনতাইয়ের শিকার এক ব্যক্তিকে বাঁচাতে গিয়ে ছুরিকাঘাতে প্রাণ হারান বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র আবু তালহা।

সূত্রে জানা গেছে, ছিনতাইয়ের অভিনব পন্থা হিসেবেই মাঠে নেমেছে নারী ছিনতাইকারী চক্র। নানাভাবে পুরুষদের প্রলুব্ধ করে তারা লুটে নেয় সর্বস্ব। এমনকি নারীদের ক্ষেত্রেও তারা বিশেষ কায়দায় ছিনতাই করে থাকে। গত ৩ অক্টোবর গুলিস্তান থেকে নারী ছিনতাইকারী চক্রের পাঁচ সদস্যকে আটক করেছে পুলিশ। আটককৃতরা স্বীকার করেছে, শহরের বিভিন্ন স্থানেই তারা ছিনতাই করে থাকে। নারী হিসেবে বিশেষ কৌশলে ছিনতাই করা যায় বলে জানায় তারা। 

আটককৃত নারী ছিনতাইকারীরা জানিয়েছে, বিভিন্ন শপিং মল, নিরিবিলি সড়ক, বিয়ে অনুষ্ঠান, পার্টিই তাদের ছিনতাইয়ে মূল কেন্দ্রস্থল। এছাড়া ফোনে প্রেমের ফাঁদ পেতে নির্জন ফ্ল্যাটে ডেকে নিয়ে সর্বস্ব লুটে নেয় এই চক্রের সদস্যরা। ভিড়ের মধ্যে শপিং মলগুলোতে নারী ক্রেতাদের সঙ্গে তারা মিশে যায়। সুযোগ বুঝে ভ্যানিটি ব্যাগ, মালপত্র হাতিয়ে নেয়। গণপরিবহনগুলোতেও এই চক্র সক্রিয় বলে স্বীকার করে তারা। কিন্তু ছিনতাইয়ের শিকার অনেক ব্যক্তি ঝামেলা এড়াতে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ করতে চান না। শান্তিনগর মোড় থেকে ইস্টার্ন প্লাজা মার্কেট, মালিবাগের এসবি অফিসের সামনে থেকে কাকরাইল মোড়, রাজারবাগ থেকে কমলাপুর রেলস্টেশনের আগে পীরজঙ্গি মাজার, মিরপুর-১ নম্বর গোলচত্বর থেকে  টেকনিক্যাল মোড়, মহাখালী বাসস্ট্যান্ড থেকে গুলশান শ্যুটিং ক্লাব, মহাখালী কাঁচাবাজার, পান্থপথ মোড় থেকে ফার্মগেট, ফার্মগেট থেকে সোবহানবাগ, সংসদ ভবন এলাকা, আগারগাঁও, যাত্রাবাড়ী মোড় থেকে কাজলার পাড়, সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে জনপথ মোড় হয়ে ধলপুর সিটি, মেরুল বাড্ডা থেকে রামপুরা ব্রিজ, মৌচাক থেকে মগবাজার মোড়, গুলিস্তানের ফুলবাড়িয়া ও বাবুবাজার স্পটে নারী ছিনতাইকারীরা সক্রিয়। ব্যাপক হারে ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটলেও পুলিশের নথিপত্রে মাত্র ১২টি ছিনতাইয়ের ঘটনার কথা উল্লেখ আছে। 

ছিনতাইয়ের শিকার ব্যক্তি ও তাদের পরিবারের কাছ থেকে জানা গেছে, প্রতিকার না পাওয়ায় ভুক্তভোগীরা পুলিশের কাছে যাচ্ছে না। সম্প্রতি কুড়িল বিশ্বরোড এলাকায় ছিনতাইকারীর কবলে পড়েন তরুণ মডেল আরমান হোসেন। শুটিং শেষ করে উত্তরা থেকে মোটরসাইকেলে রামপুরার বাসায় ফেরার পথে তিন ছিনতাইকারী পিস্তল ঠেকিয়ে আইফোন ও পাঁচ হাজার টাকা নিয়ে চলে যায়। সম্প্রতি ওই এলাকায় ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ৪০ লাখ টাকার ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। ১০ ডিসেম্বর রাতে ওয়ারিতে শাহীদা নামের এক নারীর পায়ে গুলি করে টাকাসহ হাতব্যাগ ছিনিয়ে নেয় ছিনতাইকারীরা। 

অনুসন্ধানে জানা যায়, ছিনতাইকারী বা টানাপার্টি চক্রে স্থানীয় ছাত্রলীগ কর্মী, বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রসহ বখাটে গ্রুপ জড়িত। গত ৮ নভেম্বর এমন একটি ছিনতাইকারী গ্রুপ রায়েরবাজারের তরুণ সাব্বির হোসেনকে হত্যা করে।  ডিএমপির অপরাধ বিভাগের তথ্য অনুযায়ী গত দুই মাসে ডিএমপিতে মাত্র ১২টি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। যেসব ঘটনায় মামলা হয়েছে সেগুলোই তারা বিবেচনায় নিয়েছেন। ডিবি পুলিশের এক কর্মকর্তা দিনকালকে বলেন, এরই মধ্যে ১৪১ এলাকা বা স্পটকে শনাক্ত করা গেছে। এসব এলাকায় কারা ছিনতাই করছে তা খোঁজ নিচ্ছে ডিবি। হালনাগাদ করা হচ্ছে ছিনতাইকারীদের তালিকা। শিগগিরই বিশেষ অভিযান শুরু হবে।

  • ইসমাইল বাবু, দিনকাল /20-3-18

Another mysterious abduction case

High time govt took cognisance


Yesterday we reported that a businessman who was picked up from his residence in Dhaka by people identifying as law enforcers was freed after eight days of captivity. He was beaten up by the abductors and forced into a microbus and then, on Sunday, dropped off by them in Comilla. This is not the first case of its kind where people identifying as law enforcers have entered houses and abducted individuals, who were then bizarrely freed after a period. Within the past year, there has been a plethora of cases which follow this pattern.

The victim said that in confinement, he was pressured to lift a case he had filed against his business partner and was asked for ransom. But strangely, this demand was not communicated to the family members, and he was released without the demand being met. If these abductions are to intimidate or for some other reason remains a mystery. In most cases, after being freed, people have been wary to describe the details of their period of confinement.

Law enforcement has consistently denied any involvement. If that is the case, then the matter is more worrying since people are carrying out crimes in their name with impunity. This is eroding the faith of the public in law enforcers. The government must take cognisance and act decisively to determine who is behind these abductions. Law enforcement too, if they are to effectively carry out their responsibilities, must deal seriously with these allegations. We are yet to see any significant action from the law enforcers to pursue and curb these crimes and determine who is actually behind the abductions.

  • The Daily star/20-3-18

Justice elusive

2 years into Tonu murder, no visible progress in probe


Even two years after the murder of college student Tonu, justice seems elusive for her family.

Investigators have failed to identify any suspects, let alone arrest any.

All they say is “investigation is on”. 

“The pace of the probe keeps disappointing us. For the last two years, CID officials have been telling us that they are looking into the case. Actually, they are dilly-dallying over bringing the culprits to book,” Tonu's mother Anwara Begum told The Daily Star recently. 

 “We doubt that we would ever get justice,” she said, adding that her husband, Yaar Hossain, has become sick thinking about their daughter.


Talking to this correspondent, Yaar said, “What will I say? ... It seems the matter is deliberately being covered-up.” 

Khairul Anam Raihan, spokesperson for Comilla Gonojagoron Mancha, a platform that staged several protest programmes demanding the arrest of Tonu's killers, said, “The CID seems hazy about the investigation. But we won't stop [our movement] until Tonu's murderers are arrested. We are planning for another gathering this month.” 

Sohagi Jahan Tonu, a student of Comilla Victoria College and also a theatre activist, was found murdered inside the Comilla Cantonment on this day in 2016.

The incident led to an outrage across the country. Numerous rallies and other protest programmes were organised, demanding the punishment of the killers.

Two autopsies at the Comilla Medical College could not determine the cause of her death though Yaar, who first spotted the body in a bush, saw the back of his daughter's head smashed and injury marks on her nose.

The police inquest report too did not cite any sign of injury. The report said that most of her two-foot hair was cut. Her mouth and eyes were shut.

There was a minor cut and blood spot on the upper part of her left ear. Minor portion of skin on the left of the face and above the right knee had bruises.

Tonu's kameez was torn, the report says without specifying the area.

Victim's family members had seen a ray of hope of getting justice after officials from the CID, which is investigating the case, through DNA tests in May that year found that Tonu was raped before being murdered.

The officials on May 16 that year said the tests of the specimens collected from Tonu's clothes had found spermatozoa of three males.

They claimed to have interrogated more than 100 people, including some army men, but to no avail.

The CID officials also claimed to have collected DNA samples from some people, but those did not match with the three DNA samples found on Tonu's clothes.

Contacted, Assistant Superintendent of CID (Comilla-Noakhali Division) Jalal Uddin, also the investigation officer of the case, said, “The probe is underway. We are still working.

“We need to question some people but they are currently abroad,” he said, adding that he hoped those, on their return, might be quizzed in two months.

“The DNA samples of the spermatozoa found on Tonu's clothes haven't matched with anyone's,” Jalal told our correspondent in Comilla on Saturday. 

Abdul Kahar Akand, additional deputy inspector general of CID, claimed that they were probing the case with due diligence.

  • The Daily Star/20-3-18

5 more cops suspended over Barisal journo torture



The Barisal Metropolitan Police had suspended five more members of Detective Branch of police who allegedly tortured a private TV channel journalist in the city on March 13.

The suspended DB members were sub-inspector Abdul Bashar, assistant sub-inspectors Akteruzzaman and Swapan Chandra Dey, and constables Masudul Haq and Abdur Rahim.

The BMP assistant commissioner Nasir Uddin Mallik said the action was taken against the DB men on Sunday as a probe committee found their involvement in torturing Sumon Hasan, cameraperson of DBC News.

Eight DB personnel have so far been suspended over the incident.Bashar, Swapan, Akther, constables Hasan and Saiful were also found guilty in the departmental probe.

Earlier on March 14, the eight members of DB police were closed to the district police lines over the torture of the journalist and a probe committee was formed to look into the incident.

On March 13, a DB team, led by sub-inspector Abul Bashar, engaged in an alteration with Sumon Hasan during a police drive at a house near old ‘Beauty Hall’ at South Chawkbazar in the city.

At one stage, the DB team swooped on the journalist and beat him up heavily, until he became unconscious.

The detectives then took Sumon to their office and tortured him there again.

Sumon alleged that the DB team swooped on him as he wanted to know about the drive. ‘They became furious when I introduced myself as a journalist,’ he said, adding that they also threatened to implicate him in a drug case and kill him in a crossfire.

  • Courtesy: New Age Mar 2018

The confessional statement in criminal proceedings

LAW AND REALITY

Shahnewaz and AZM Abdullah Al Mamun


IN CRIMINAL justice system of Bangladesh, confessional statement secured under section 164 of Code of Criminal Procedure, 1898 (Cr PC) is considered a very crucial evidence in the legal proceedings. However, there are mass allegations from the accused persons that it is often taken under coercive conditions by the police. 

In most cases, these statements are retracted at the time of the trial. During the trial, many accused persons complained to the judges that they were mercilessly beaten and threatened by the police to confess before the magistrates about the crime they are accused of. They said, if they refuse to give confessional statements, police threatened them of further torture. 

It is mentionable that, as per law, confessional statement secured under section 164 is acceptable, only if it is given by the accused voluntarily. The Section 164 (3) provides that a magistrate shall, before recording any such confession, explain to the person making the confession that he is not bound to make a confession and that if he does so it may be used as evidence against him and no magistrate shall record any such confession unless, upon questioning the person making it, he has reason to believe that it was made voluntarily; and, when he records any confession, he shall make a memorandum at the foot of such record to the following effect:

I have explained to (name) that he is not bound to make a confession and that, if he does so, any confession he may make may be used as evidence against him and I believe that this confession was voluntarily made. It was taken in my presence and hearing, and was read over to the person making it and admitted by him to be correct, and it contains a full and true account of the statement made by him. 

This statement will include the signature of the magistrate. So this section in text upholds one of the basic principles of natural justice that a person should not be compelled to give witness against him/her about his/her crime. This notion of the human rights of the accused is also guaranteed in our constitution. As per Article 35 of the Bangladesh Constitution, no person accused of any offence shall be compelled to be a witness against himself. The article also includes that no person shall be subjected to torture or to cruel, inhuman, or degrading punishment or treatment. Bangladesh is also the signatory country of the Convention against Torture and Other Cruel, Inhuman or Degrading Treatment or Punishment, 1984, which prohibits torture to get confession and encourage state parties to take effective legislative, administrative, judicial or other measures to prevent acts of torture in any territory under their jurisdiction. Therefore, coercing an accused person to be a witness against himself/herself in the name of confessional statement under section 164 is the apparent violation of natural justice and human rights of the accused person.

However, it may be asked that why an accused person would consider voluntary confessional statement? It is true that at present our criminal justice system provides no incentive for the accused people who voluntarily confess about the crime they are accused of. This is why generally accused person does not want to give confessional statements voluntarily. 

If our criminal justice system stipulates provision of reducing usual punishment imposed for an offence to the persons who voluntarily give confessional statements, then accused persons may consider giving confessional statements willingly and voluntarily. Instead of third degree method to get confessional statements from the accused, prosecution side may make arrangement with the accused side to bring lesser charge against the accused in exchange of voluntary confession. Prosecution side should take initiatives to convince the accused that they will recommend to reduce punishment of the accused to the court, if they voluntarily give confessions. Voluntary confessional statement helps the prosecution to complete the investigation of a case quickly. So it is beneficial and cost effective for the prosecution side. It also helps out the prosecution to conduct thorough investigation and extract meticulous details of a criminal case and it allows them to make stronger case to stand the test of trial. 

We should keep in mind that taking confessions by undue influence and coercion has an adverse affect on the mind of the accused and it carries the risk of making the entire process questionable. If the prosecution-side professionally deal with the accused and encourage the offenders to confess voluntarily then they may repent for their crime. It ultimately fosters the rehabilitation and reform process and creates more scope for an offender to reconsider his/her own action. In what follows, chances of recurring crime from the same accused individual may decrease, and offenders will be more encouraged to return as a responsible citizen after the completion of their sentence. It helps the offender to gain confidence and trust over the justice system. This is why, it is important on part of the police and prosecution to create an enabling environment in which an accused would consider voluntary confession and repent the crime they have committed. 

At present, retraction of confession is very frequent as it is often taken by torture, threat and other coercive means. Confession, in practice, is not the result of penitence, regret, anguish and remorse as it should in Bangladesh. Therefore, a considerable number of accused wish to retract their confessions at the time of trial. If police apply third degree method on the accused to secure confessions then it is risking trust and confidence in the administration of criminal justice. In the long run it hampers the very purpose of the restorative justice system.

Shahnewaj is an advocate and research officer at Bangladesh Institute of Law and International Affairs and A Z M Abdullah Al Masum is an advocate with the Dhaka Judge Court.

  • Courtesy: New Age, Mar 20, 2018

Monday, March 19, 2018

মেনেই নিচ্ছি নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু?

আসিফ নজরুল


গত কয়েক দিনে বড় ধরনের কিছু ঘটনা ঘটেছে আমাদের জন্য। এর মধ্যে নেপালে মর্মান্তিক বিমান দুর্ঘটনা সবাইকে দুঃখ ভারাক্রান্ত করেছে। খালেদা জিয়ার জামিন নিয়ে বিলম্ব কিংবা জাফর ইকবালের আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা অনেকের নজর কেড়েছে। ৭ মার্চের জনসভাগামী কিছু মিছিল থেকে প্রকাশ্য রাজপথে নারী নির্যাতনের মতো চাঞ্চল্যকর ঘটনাও ঘটেছে।

এত কিছুর ভিড়ে অনেকের মনে থাকার কথা নয় গত কয়েক দিনে পুলিশি নির্যাতনের ঘটনাকে। এ সময়ে অন্তত তিনটি বড় ধরনের ঘটনা ঘটেছে। 

প্রথম ঘটনায় প্রেসক্লাবে পিস্তল হাতে ত্রাস ছড়িয়ে সাদাপোশাকে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। 

দ্বিতীয় ঘটনায় সমাবেশ থেকে ছিনিয়ে চ্যাংদোলা করে একজন তরুণকে পুলিশ ধরে নিয়ে গেছে। 

সর্বশেষ ঘটনাটি সবচেয়ে মর্মান্তিক। এতে রিমান্ডে নেওয়ার পর কারা হেফাজতে একজন যুবকের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। সারা ফেসবুক তাঁর শরীরে নির্যাতনের চিহ্নের ছবিতে ছেয়ে গেলেও ময়নাতদন্তকারী ডাক্তার নাকি এমন কোনো লক্ষণ খুঁজে পাননি!

এই তিনটি ঘটনার শিকার ব্যক্তিরা হলেন বিএনপির অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মী। তিনটি ঘটনারই সূচনা বিএনপির শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালনকালে। তিনটি ঘটনাই বাংলাদেশের সংবিধান, সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশনা এবং দেশের প্রচলিত আইনের লঙ্ঘন।

নানা ঘটনা-দুর্ঘটনার ভিড়ে এই ধারাবাহিক পুলিশি বর্বরতা অনেকের চোখ এড়িয়ে যেতে পারে। কিন্তু গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের এ বিষয়গুলো নজরে রাখা বা এর প্রতিকার করা কারও কারও আইনগত, প্রাতিষ্ঠানিক ও নৈতিক দায়িত্ব। তাঁরা যখন তা করেন না, তখন তা আতঙ্কজনক হয়ে দাঁড়ায়। আলী রীয়াজের ১৪ মার্চের লেখায় তা সঠিকভাবে ফুটে উঠেছে। আমি মনে করি এ নিয়ে সমাজে আরও আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে। প্রয়োজন রয়েছে মানবাধিকার ধারণার প্রাথমিক পাঠ আবারও স্মরণ করার।

২. মানবাধিকারের সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য হচ্ছে (ধর্ম, বংশ, জন্মস্থান, রাজনৈতিক পরিচয়-নির্বিশেষে) এই অধিকার প্রত্যেক মানুষের। যেমন বৈষম্যহীনতা একটি মানবাধিকার। গোপালগঞ্জে বা ফেনীর মানুষ বলে তাই কারও আমলভেদে বৈষম্যের শিকার হওয়ার বা বাড়তি সুযোগ পাওয়ার অধিকার নেই। আওয়ামী লীগ, বিএনপি বা জামায়াতের রাজনীতি করলে আমলভেদে কারও অধিকার কেড়ে নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। কোনো বিশেষ ছাত্রসংগঠনের কর্মী এই অভিযোগে পিটিয়ে পুলিশের কাছে সোপর্দ করার যেসব সংবাদ আমরা পত্রিকায় দেখি, তাও মানবাধিকারের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। 

আমাদের সংবিধানে মানবাধিকার সীমিত করা হয়েছে শুধু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর জন্য। যেমন পুলিশ বা সেনাবাহিনীর মিছিল করার অধিকার নেই। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক অপরাধে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিচারের ক্ষেত্রে বেশ কিছু মানবাধিকার প্রযোজ্য নয় বলা হয়েছে সংবিধানে।

তবে কিছু অধিকার, যেমন নির্যাতন, অবমাননাকর ও লাঞ্ছনাকর দণ্ড বা ব্যবহার থেকে মুক্ত থাকার অধিকার, প্রত্যেক নাগরিকের মৌলিক অধিকার হিসেবে সংবিধানে স্বীকৃত। জীবন ও ব্যক্তিস্বাধীনতার অধিকারের মতো নির্যাতন থেকে রেহাই পাওয়ার অধিকার আন্তর্জাতিক মানবাধিকার চুক্তিগুলোতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি অধিকার হিসেবে স্বীকৃত। শুধু এ বিষয়টি নিয়ে নির্যাতনবিরোধী যে কনভেনশনটি রয়েছে, তার পক্ষরাষ্ট্র বাংলাদেশও।

নির্যাতনবিরোধী আন্তর্জাতিক ও সাংবিধানিক বিধানের পাশাপাশি ২০১৩ সালে প্রণীত একটি আইন বাংলাদেশে রয়েছে। এই আইনে হেফাজতে মৃত্যু ও নির্যাতনের অভিযোগ পুলিশ না নিলে সরাসরি আদালতে মামলা করার, হেফাজতের দায়িত্বে থাকা দোষী ব্যক্তিকে সর্বোচ্চ যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদানের, অভিযোগকারী ব্যক্তির নিরাপত্তা বিধানের ও তাঁর ক্ষতিপূরণ পাওয়ার সুযোগ রয়েছে। আইনে কোনো সমস্যা নেই আমাদের। কিন্তু তারপরও দেশে অব্যাহতভাবে নির্যাতন বা হেফাজতে মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। ঘটছে মূলত এসবের বাস্তবায়ন নেই বলে।

৩. মানবাধিকার রক্ষিত হচ্ছে কি না, তা দেখার জন্য দেশে নানা ধরনের প্রতিষ্ঠান রয়েছে। যেমন সংসদ, উচ্চ আদালত ও মানবাধিকার কমিশন। এ ছাড়া বিভিন্ন বেসরকারি মানবাধিকার প্রতিষ্ঠান রয়েছে, মানবাধিকার বিষয়ে নজরদারির জন্য এরা বিদেশ থেকে উচ্চ অঙ্কের আর্থিক সহযোগিতাও পেয়ে থাকে। মানবাধিকার নজরদারির জন্য গণমাধ্যমও উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে।

এর মধ্যে বর্তমান সংসদ ও সংসদীয় কমিটিগুলো অকার্যকর থাকার রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট রয়েছে। ২০১৪ সালের প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত সংসদ নির্বাচন বর্জনকারী দলগুলোর সদস্যদের মানবাধিকার ক্ষুণ্ন হওয়ার বিষয়ে প্রশ্ন তুলবে না, এটি অভাবনীয় নয়। কিন্তু এ বিষয়ে বাদবাকি প্রতিষ্ঠানের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলার অবকাশ রয়েছে।

মানবাধিকার রক্ষায় সোচ্চার থাকার জন্য বাংলাদেশে জনগণের অর্থে পরিচালিত একটি মানবাধিকার কমিশন রয়েছে। এই কমিশনের মৌলিকতম দায়িত্ব হচ্ছে যে কারও মানবাধিকার ক্ষুণ্ন হলে সে বিষয়ে তদন্ত করা, অন্তত তার উদ্বেগ ও আপত্তি প্রকাশ করা। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তা করা হয় না। সংসদের বাইরে থাকা বিরোধী দল (যেমন বিএনপি, সিপিবি) ও সংগঠনগুলোর (যেমন তেল-গ্যাসসংক্রান্ত জাতীয় কমিটিসহ) সভা-সমাবেশের ওপর পুলিশি আক্রমণের বহু ঘটনা ঘটলেও আমরা মানবাধিকার কমিশনকে এ বিষয়ে কিছু বলতে দেখি না। হেফাজতে ছাত্রদল নেতা জাকিরের মৃত্যুর সাম্প্রতিক ঘটনাসহ এ ধরনের বহু ঘটনায় কমিশনকে সোচ্চার হতে দেখি না। অতীতে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের কিছু ঘটনায় কমিশনকে সরকারের ভূমিকার প্রতি সমর্থন প্রদান পর্যন্ত করতে দেখা গেছে।

মানবাধিকার রক্ষার জন্য সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকা পালনের অবকাশ রয়েছে উচ্চ আদালতের। নিকট অতীতে উচ্চ আদালত গ্রেপ্তার ও রিমান্ডসহ বিভিন্ন বিষয়ে তাঁর সিদ্ধান্তমূলক দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। এরপর এসব নির্দেশ লঙ্ঘিত হওয়ার সংবাদ ফলাও করে পত্রিকায় বহুবার প্রকাশিত হয়েছে। এ ক্ষেত্রে উচ্চ আদালত স্বতঃপ্রণোদিতভাবে আদালত অবমাননার অভিযোগ এনে সরকারের যেকোনো বাহিনীর কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারেন।

কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে সরকারি বাহিনীর নির্যাতনের ক্ষেত্রে অধিকাংশ সময়ে আমরা উচ্চ আদালতকে তা করতে দেখি না।

নিম্ন আদালতের হাত-পা আরও বাঁধা। চার বছর আগে নিম্ন আদালতের একজন বিচারক ২০১৩ সালের আইন অনুসারে র‍্যাবের কর্মকর্তার বিরুদ্ধে একটি মামলা (নির্যাতন ও হত্যাসংক্রান্ত) গ্রহণ করেছিলেন। এরপর প্রথমে তাঁর মামলা আমলে নেওয়ার ক্ষমতা কেড়ে নেওয়া হয়, পরে তাঁকে অন্য জায়গায় বদলি করে দেওয়া হয়। নিম্ন আদালতের স্বাধীনতা ও মর্যাদার ওপর এই জাজ্বল্যমান হস্তক্ষেপের ঘটনায় প্রতিবাদ পর্যন্ত করেনি গণমাধ্যম ছাড়া অন্য কেউ।

বাকি থাকে বেসরকারি মানবাধিকার সংগঠনগুলো। গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, হেফাজতে মৃত্যুর ঘটনাগুলো এরা লিপিবদ্ধ করে জানিয়ে দেওয়ার কাজটি করে। কিন্তু এর বিরুদ্ধে নিরন্তর সোচ্চার থাকার দায়িত্ব অনেক ক্ষেত্রে পালন করে না। রাজনৈতিকভাবে যারা সরকারের সবচেয়ে বড় প্রতিপক্ষ, তাদের বিরুদ্ধে পুলিশ বা ছাত্রলীগের নির্যাতন হলে বহু মানবাধিকার সংগঠন তা এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। আমল, রাজনৈতিক বিশ্বাস, ধর্মীয় পরিচয়, নৃতাত্ত্বিক পরিচয়ভেদে তাদের উৎসাহের মাত্রা দৃষ্টিকটু রকমের হেরফের হয়। জাকিরের মৃত্যুর ঘটনাও তাদের অনেকে হয়তো এ কারণে এড়িয়ে গেছে। অথচ মানবাধিকারের মূল দর্শনের প্রতি বিন্দুমাত্র শ্রদ্ধাবোধ থাকলে এটি করার কথা নয়।

৪. মানবাধিকার রক্ষার দায়িত্ব প্রতিষ্ঠানগুলো পালন না করলে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা বাড়তে থাকবে। নির্বাচনের বছরে এসে তা বাড়ার কারণও আছে। এমনিতেই গণমামলা আর যথেচ্ছ সংখ্যায় অজ্ঞাতনামা আসামি করার প্রচলন দেশে রয়েছে। এই সুযোগে বিরোধী পক্ষের যে কাউকে গ্রেপ্তার করার সুযোগ সরকারের রয়েছে। গ্রেপ্তারের পর থাকে নির্যাতিত হওয়ার এমনকি মারা যাওয়ার আশঙ্কা। এর কোনো প্রতিকার না হলে দেশের বিপুলসংখ্যক নাগরিকের রাজনৈতিক অধিকার বলে কিছু থাকবে না। গণতন্ত্র ও আইনের শাসন তখন আরও বিপর্যস্ত হবে। 

  • প্রথম আলো /১৯-৩-১৮
  • আসিফ নজরুল: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক


খেলাপি ঋণে শীর্ষে বাংলাদেশ



৯৬ লাখ ঋণখেলাপিকে কালো তালিকাভুক্ত করেছে চীন। পরিচয়পত্র ও পাসপোর্ট কালো তালিকাভুক্ত হওয়ায় এয়ার টিকিট ক্রয় থেকে বঞ্চিত হয়েছেন তারা। কিনতে দেয়া হয়নি হাই-স্পিড ট্রেনের টিকিটও। ঋণখেলাপিদের বিরুদ্ধে এ কঠোর পদক্ষেপের ফলও পেয়েছে দেশটি। ২ শতাংশেরও নিচে রয়েছে চীনের ব্যাংকিং খাতের খেলাপি ঋণ। ঋণখেলাপিদের বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়ায় গতি এনে ফল পেয়েছে শ্রীলংকা। এ ধরনের নানা কঠোর পদক্ষেপের মাধ্যমে খেলাপি ঋণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম হয়েছে উন্নয়নশীল অন্যান্য দেশও।

যদিও উল্টোটা ঘটছে বাংলাদেশে। ঋণখেলাপি হয়েও শাস্তি না পাওয়ার সংস্কৃতি তৈরি হয়েছে দেশে। এমনকি আদালতের স্থগিতাদেশ নিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণও করছেন ঋণখেলাপিদের অনেকে। এতে নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়ছে খেলাপি ঋণের হার। ২০১৭ সালের ডিসেম্বর শেষে দেশের ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণের হার দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৩১ শতাংশ। উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে খেলাপি ঋণের এটাই সর্বোচ্চ হার। খেলাপি ঋণের হারে বাংলাদেশের প্রায় সমপর্যায়ে আছে কেবল ভারত। গত বছরের ডিসেম্বর শেষে দেশটির ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণের হার দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৩০ শতাংশ।

গত বছরের ডিসেম্বর শেষে বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণের হার এক অংকে নামলেও চলতি বছরের মার্চ প্রান্তিকেই তা বেড়ে যাবে বলে মনে করছেন ব্যাংকসংশ্লিষ্টরা। কারণ হিসেবে তারা বলছেন, সাম্প্রতিক সময়ে অস্বাভাবিক বেশি রকম ঋণ বিতরণ করেছে ব্যাংকগুলো। নতুন বিতরণকৃত এসব ঋণের পাশাপাশি পুনঃতফসিলকৃত ঋণও মার্চ প্রান্তিক থেকে খেলাপি হতে শুরু করবে।

সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের খেলাপি ঋণের হার উন্নয়নশীল অন্যান্য দেশের চেয়ে বেশি হওয়ার বিষয়টি তারাও অবগত বলে জানান অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. ইউনুসুর রহমান। বণিক বার্তাকে তিনি বলেন, এটা না হলেই আমি খুশি হতাম। এর বেশি কিছু বলার নেই। তবে অর্থমন্ত্রী বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বলেন, এর আগে আমাদের দেশের ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণের হার আরো বেশি ছিল। সেজন্য খেলাপি ঋণের বিদ্যমান হার অস্বাভাবিক নয়।

উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে খেলাপি ঋণ কমিয়ে আনতে সাম্প্রতিক সময়ে সবচেয়ে কঠোর পদক্ষেপগুলো নিয়েছে চীন। ৯৫ লাখ ৬০ হাজার ঋণখেলাপির ২ হাজার ৭০০ কোটি ডলার আমানত জব্দের পাশাপাশি ৬১ লাখ ঋণখেলাপিকে উড়োজাহাজের টিকিট কিনতে দেয়া হয়নি। হাই-স্পিড ট্রেনের টিকিট কিনতে পারেননি ২২ লাখ ঋণখেলাপি। ঋণ ও ক্রেডিট কার্ডের জন্য অযোগ্য ঘোষণার পাশাপাশি ঋণখেলাপিদের সন্তানদের দামি স্কুলে ভর্তির ওপরও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। এসব কঠোর পদক্ষেপের ফলে চীনের ব্যাংকিং খাতের খেলাপি ঋণের হার দাঁড়িয়েছে মাত্র ১ দশমিক ৭ শতাংশে।

খেলাপি ঋণ নিয়ন্ত্রণে আরেক উন্নয়নশীল দেশ ভিয়েতনামের কেন্দ্রীয় ব্যাংকও কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে। নতুন নিয়ম অনুসারে রেমিট্যান্স সেবার জন্য একটি পরিচালন কাঠামো গড়ে তোলার আগে সেখানকার ব্যাংকগুলোকে নিশ্চিত করতে হচ্ছে, তাদের খেলাপি ঋণের হার ৩ শতাংশের কম। সাম্প্রতিক বছরগুলোয় দেশটিতে রেমিট্যান্স আন্তঃপ্রবাহ যে হারে বেড়েছে, তাতে কোনো ব্যাংকই এ ব্যবসা হাতছাড়া করতে চাইবে না। স্বাভাবিকভাবেই দেশটির ব্যাংকগুলো খেলাপি ঋণ নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রাখছে। সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ভিয়েতনামের ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণের হার মাত্র ২ দশমিক ৫ শতাংশ।

উন্নয়নশীল দেশগুলোর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, খেলাপি ঋণের হার ২ শতাংশের নিচে রেখেছে এশিয়ার দেশ ও ফিলিপাইনও। ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর শেষে মালয়েশিয়ার খেলাপি ঋণের হার ১ দশমিক ৬ ও ফিলিপাইনের ১ দশমিক ৯ শতাংশ। খেলাপি ঋণের হার ৩ শতাংশের নিচে রাখতে পেরেছে থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া, কম্বোডিয়া ও শ্রীলংকা। সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, থাইল্যান্ডের খেলাপি ঋণের হার ২ দশমিক ৯, ইন্দোনেশিয়ার ২ দশমিক ৯, কম্বোডিয়ার ২ দশমিক ৫ ও শ্রীলংকার ২ দশমিক ৬ শতাংশ।

নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে সার্বভৌম ও শক্তিশালী করার মাধ্যমে বাংলাদেশেও খেলাপি ঋণের হার কমিয়ে আনা সম্ভব বলে মনে করেন অগ্রণী ব্যাংকের চেয়ারম্যান ড. জায়েদ বখত। বণিক বার্তাকে তিনি বলেন, যেকোনো ব্যাংকের অনিয়ম-দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা বাংলাদেশ ব্যাংককে নিতে হবে। কোনো ক্ষেত্রে দুর্বলতা প্রদর্শন মানেই দুর্নীতিকে উৎসাহিত করা। এছাড়া উচ্চ আদালতে খেলাপি গ্রাহকদের জন্য পৃথক বেঞ্চ গঠন করা দরকার। এটি সম্ভব হলে ইচ্ছাকৃত খেলাপিরা ব্যাংকের টাকা ফেরত দিতে বাধ্য হবেন। ফলে দেশ ঋণখেলাপির সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসতে পারবে।

উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে খেলাপি ঋণের হারে বাংলাদেশের সমপর্যায়ে আছে ভারত। গত বছরের ডিসেম্বর শেষে দেশটির ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণের হার দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৩ শতাংশ। তবে খেলাপি এ হার কমিয়ে আনতে কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে দেশটি। ‘ফিউজিটিভ ইকোনমিক অফেন্ডারস বিল’ নামে একটি আইন অনুমোদন করেছে দেশটির মন্ত্রিসভা। আইনটির আওতায় কোনো ঋণখেলাপি দেশ ত্যাগ করলে তার সম্পদ জব্দ করা যাবে। এছাড়া বিজয় মালিয়ার মতো ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপির পাসপোর্টও প্রত্যাহার করেছে দেশটি।

উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে পাকিস্তানের খেলাপি ঋণের হারও কিছুটা বেশি। ২০১৭ সাল শেষে পাকিস্তানের খেলাপি ঋণের হার দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ২ শতাংশ। যদিও ২০১১ সালে দেশটিতে খেলাপি ঋণের হার ছিল ১৬ শতাংশের বেশি।

বাংলাদেশে ঋণখেলাপি হয়েও শাস্তি না পাওয়ার সংস্কৃতির কারণে নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়েছে খেলাপি ঋণের হার। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, ২০১১ সালে দেশের ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণের হার ছিল ৬ শতাংশের মতো। কিন্তু ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর শেষে তা ১০ দশমিক ৬৭ শতাংশে দাঁড়ায়। তবে বছর শেষে তা কিছুটা কমেছে। মূলত বিপুল পরিমাণ ঋণ পুনঃতফসিলের মাধ্যমেই খেলাপি ঋণের হার এক অংকে নামিয়ে আনা হয়েছে।

খেলাপি ঋণের হার কমাতে ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপিদের আলাদা করার পক্ষে মত দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় অনুষদের ডিন ও সাধারণ বীমা করপোরেশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াতুল ইসলাম। তিনি বলেন, ইচ্ছাকৃত খেলাপিদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করে টাকা উদ্ধারে পদক্ষেপ নিতে হবে। তবে পারিপার্শ্বিক অবস্থার কারণে কোনো গ্রাহকের ঋণ খেলাপি হয়ে গেলে ব্যাংকগুলোর উচিত তাকে সহানুভূতির দৃষ্টিতে দেখা।

এক দশক ধরে ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০০৯ সালে ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ২২ হাজার ৪৮২ কোটি টাকা। এরপর ২০১০ ও ২০১১ সালে এ খাতে খেলাপি ঋণ কিছুটা নিয়ন্ত্রিত ছিল। কিন্তু ২০১২ সাল থেকে লাগামহীন হয়ে পড়ে খেলাপি ঋণ। ২০১২ সাল শেষে ৪২ হাজার ৭২৬ কোটি, ২০১৪ সাল শেষে ৫০ হাজার ১৫৫ কোটি, ২০১৫ সাল শেষে ৫১ হাজার ৩৭১ কোটি ও ২০১৬ সাল শেষে ৬২ হাজার ১৭২ কোটি টাকা দাঁড়ায় ব্যাংকিং খাতের খেলাপি ঋণ। ২০১৭ সাল শেষে খেলাপি ঋণের পরিমাণ আরো বেড়ে ৭৪ হাজার ৩০৩ কোটি টাকায় ঠেকেছে।

বিচার ব্যবস্থার দীর্ঘসূত্রতা ও আইনি কাঠামোর দুর্বলতার কারণে দেশের ব্যাংকিং খাতের খেলাপি ঋণ কমানো সম্ভব হচ্ছে না বলে মনে করেন ব্যাংক নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) চেয়ারম্যান ও ঢাকা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সৈয়দ মাহবুবুর রহমান। বণিক বার্তাকে তিনি বলেন, চাহিদার বিপরীতে দেশে অর্থঋণ আদালতের সংখ্যা খুবই কম। ফলে এ আদালতগুলোয় মামলা নিয়ে দীর্ঘসূত্রতা সৃষ্টি হচ্ছে। নিম্ন আদালত থেকে ব্যাংকের পক্ষে আদেশ এলেও উচ্চ আদালতে রিটের কারণে খেলাপিদের কাছ থেকে অর্থ উদ্ধার প্রক্রিয়া আটকে যাচ্ছে। তবে খেলাপি ঋণ বৃদ্ধির পেছনে ব্যাংকারদের দায়ও কম নয়। যাচাই-বাছাই না করে অনেক সময় ব্যাংকাররা ঋণ দিয়েছেন। ফলে সেসব ঋণ খেলাপি হয়ে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, দেশের অর্থনীতির আকারের তুলনায় ব্যাংকের সংখ্যা বেশি। ফলে কিছু ব্যাংক ব্যবসা বাড়ানোর জন্য অনৈতিক প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হচ্ছে। গুণগত মান নিশ্চিত না করে ঋণ বিতরণের কারণেও খেলাপি ঋণের পরিমাণ বাড়ছে। 

  • তথ্যসূত্রঃ bonikbarta.net/ মার্চ ১৯, ২০১৮