Search

Monday, April 9, 2018

জাতীয় নির্বাচনে সেনা মোতায়েন করা উচিত: সিইসি



আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সেনা মোতায়েন করা উচিত, বলেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নুরুল হুদা। গতকাল রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ইলেকশন ওয়ার্কিং গ্রুপের(ইডব্লিউজি) গোলটেবিল আলোচনায় এ কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, অতীতে সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। আগামী নির্বাচনেও সেনা মোতায়েন হতে পারে। আমার ব্যক্তিগত মত হচ্ছে, জাতীয় নির্বাচনে সেনা মোতায়েন করা উচিত। তবে স্থানীয় নির্বাচনে সেনামোতায়েন আমরা একেবারেই চাই না।

ইডব্লিউজির নির্বাহী কমিটির সদস্য আব্দুল আওয়ালের সভাপতিত্বে গোলটেবিল আলোচনায় প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিয়ে একটি প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক আবদুল আলিম। প্রবাসীদেরভোটাধিকারের বিষয়ে সিইসি বলেন, সবার ভোটাধিকারনিশ্চিত করতে কমিশন সচেষ্ট রয়েছে।

ইডব্লিউজির গোলটেবিল আলোচনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোহাম্মদ ফারুক খান ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। আলোচনায় অংশ নেন সাবেকনির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম. সাখাওয়াত হোসেন, সাবেক রাষ্ট্রদূত আব্দুল মোমেন চৌধুরী ও নাসিম ফেরদৌস।

নির্বাচনে সেনাবাহিনীর ভূমিকা নিয়ে নজরুল ইসলাম খান বলেন, আমাদের সেনাবাহিনী সারা বিশ্বে শান্তি রক্ষায় কাজ করছে। আমাদের দেশেও নির্বাচনে তাদের কাজে লাগানো যেতে পারে।

সরকার নির্বাচনে সেনা মোতায়েনের বিপক্ষে উল্লেখ করে এ বিএনপি নেতা বলেন, সেনাবাহিনী নির্বাচনের সময় মাঠে থাকলে ক্ষমতাসীনদের অসুবিধা হবে। তাই তারা নির্বাচনে সেনা মোতায়েনের বিপক্ষে। নির্বাচন কমিশন যদি ভোটারদের পক্ষ না নেয়, তাদের পক্ষ (সরকারের) নেয়, তাহলে আমাদের কিছু বলার নেই।

সেনাবাহিনী মোতায়েন প্রসঙ্গে মোহাম্মদ ফারুক খান বলেন, আগামী নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েনের ব্যাপারে নির্বাচন কমিশন আশ্বস্ত করেছে। এ ব্যাপারে বিতর্ক সৃষ্টির কোনো সুযোগ নেই। নির্বাচনে সেনাবাহিনীমোতায়েন হবে কি হবে না, সেটা নির্বাচন কমিশন ঠিক করবে। কীভাবে মোতায়েন হবে, সেটাও নির্বাচন কমিশনের ব্যাপার। এটা নিয়ে কেউ বিতর্ক সৃষ্টির চেষ্টা করবেন না।

  • Courtesy: Banikbarta Apr 09, 2018

আমদানি দায় পরিশোধ করতে পারছে না ব্যাংকগুলো

ডলার বিক্রি হচ্ছে ৮৭ টাকা পর্যন্ত


হাছান আদনান



দেশে ভোগ্যপণ্য আমদানির বড় প্রতিষ্ঠান টিকে গ্রুপ। শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে প্রায় ৬০ লাখ ডলারের এলসি (লেটার অব ক্রেডিট) খুলেছিল প্রতিষ্ঠানটি। কিন্তু ডলার সংকটের কারণে এলসির দায় পরিশোধ করতে পারছিল না ব্যাংকটি। বাংলাদেশ ব্যাংকসহ বেশ কয়েকটি বড় ব্যাংকের দ্বারস্থ হয়েও প্রত্যাশিত ডলার না পেয়ে গত সপ্তাহে বিকল্প উপায় হিসেবে ওডির মাধ্যমে এলসির দায় পরিশোধ করতে হয়েছে শাহজালাল ইসলামী ব্যাংককে।

ফান্ড সংকটের কারণে কোনো ব্যাংক আমদানি দায় পরিশোধ করতে না পারলে, সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের নস্ট্রা অ্যাকাউন্ট ওডি করে দেয়া হয়। যেকোনো ব্যাংকের জন্যই এটি বিপজ্জনক ধাপ। এর মাধ্যমে ব্যাংক আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের মতোই অবস্থা দেশের অধিকাংশ বেসরকারি ব্যাংকের। আমদানি দায় পরিশোধে হিমশিম খাচ্ছে ব্যাংকগুলো। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রমতে, নতুন প্রজন্মের নয়টি ব্যাংক ছাড়াও এ তালিকায় আছে ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক (ইউসিবি), বাংলাদেশ কমার্স, প্রিমিয়ার, ঢাকা, এক্সিম, আইএফআইসির মতো ব্যাংকও।

সংশ্লিষ্ট ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, চলতি অর্থবছরের শুরু থেকেই খাদ্যশস্যসহ মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানির বিপুলসংখ্যক এলসি খুলতে হয়েছে। সে তুলনায় রেমিট্যান্স ও রফতানি আয় না বাড়ায় বাজারে ডলারের সংকট দেখা দিয়েছে। ফলে এলসির দায় পরিশোধে অন্য ব্যাংকের দ্বারস্থ হতে হচ্ছে অনেক ব্যাংককে।

সাউথইস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এম কামাল হোসেন বণিক বার্তাকে বলেন, কিছু ব্যাংক সক্ষমতার বেশি এলসি খুলেছে। ফলে এখন এলসির দায় পরিশোধ করতে পারছে না। আমরা বেশি মূল্য দিয়ে হলেও রেমিট্যান্স কিনে ডলারের ভিত মজবুত করেছি। এ কারণে অনেক ব্যাংকই আমাদের কাছে ডলার কিনতে আসছে।

সূত্রমতে, চাহিদা মেটাতে প্রতিদিনই ব্যাংকগুলোর কাছে ডলার বিক্রি করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। চলতি অর্থবছরের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাজারে ছেড়েছে ১৮০ কোটি ডলারের বেশি। এর পরও থামছে না টাকার বিপরীতে ডলারের মূল্যবৃদ্ধি। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৭ সালের ৪ এপ্রিল আন্তঃব্যাংক লেনদেনে প্রতি ডলারের দাম ছিল ৭৯ টাকা ৭০ পয়সা। চলতি বছরের একই দিন ৪ শতাংশ বেড়ে প্রতি ডলার বিক্রি হয়েছে ৮২ টাকা ৯৬ পয়সায়।

যদিও বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর তথ্যমতে, ডলার বিক্রি হচ্ছে আরো বেশি দামে। বেসরকারি এনসিসি ব্যাংকের ঘোষিত মূল্য অনুযায়ী, ব্যাংকিং চ্যানেলে গতকাল ডলারপ্রতি ক্রয়মূল্য ছিল ৮২ টাকা ৫০ পয়সা ও বিক্রয়মূল্য ৮৩ টাকা ৫০ পয়সা। এনসিসি ব্যাংকের মতোই গতকাল ডলারের মূল্য ঘোষণা করে দেশের বেশির ভাগ ব্যাংক। যদিও অধিকাংশ ব্যাংকই ঘোষিত মূল্যের বেশি দামে ডলার বিক্রি করছে। গত সপ্তাহের শেষ দুই কর্মদিবসে প্রায় সব ব্যাংকই ৮৪ থেকে ৮৬ টাকায় ডলার বিক্রি করেছে। আর খোলাবাজারে (কার্ব মার্কেট) ৮৭ টাকার বেশি দামেও ডলার বিক্রি হয়েছে।

এ অবস্থা চলতে থাকলে আগামীতে ভালো ব্যাংকগুলোকেও আমদানি দায় পরিশোধে সমস্যায় পড়তে হবে বলে জানান ব্যাংক নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) চেয়ারম্যান ও ঢাকা ব্যাংকের এমডি সৈয়দ মাহবুবুর রহমান। বণিক বার্তাকে তিনি বলেন, রেমিট্যান্স কম থাকলেও ঢাকা ব্যাংকের রফতানি আয় ভালো। ফলে এ মুহূর্তে আমদানি ব্যয় মেটাতে আমাদের সমস্যা হচ্ছে না। তবে বিদ্যমান পরিস্থিতি দীর্ঘায়িত হলে আগামীতে ভালো ব্যাংকগুলোকেও আমদানি দায় পরিশোধে বিপত্তিতে পড়তে হতে পারে।

তবে কিছু ব্যাংক ঘোষিত মূল্য লঙ্ঘন করে ডলার কিনে বাজারে অসুস্থ প্রতিযোগিতা সৃষ্টি করছে বলে মন্তব্য করেন এক্সিম ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মোহাম্মদ হায়দার আলী মিয়া। তিনি বলেন, প্রয়োজন হলে মাঝে মাঝে আমরা বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ডলার কিনছি। তবে এ মুহূর্তে আমাদের হাতে চাহিদার অতিরিক্ত ডলার সংরক্ষিত আছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, দুই বছর ধরেই দেশের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের প্রধান মাধ্যম রফতানি আয় ও রেমিট্যান্সপ্রবাহে ভাটা পড়েছে। অন্যদিকে রেকর্ড পরিমাণ চালসহ খাদ্যশস্য ও মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানি হওয়ায় বেড়েছে আমদানি ব্যয় পরিশোধ। ফলে ২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে (জুলাই-জানুয়ারি) দেশের চলতি হিসাবে ৫৩৪ কোটি ৭০ লাখ ডলারের ঘাটতি তৈরি হয়েছে। যদিও ২০১৬-১৭ অর্থবছরের এ সাত মাসে ঘাটতির পরিমাণ ছিল ৮৯ কোটি ডলার। এর আগে ২০১৫-১৬ অর্থবছরের চলতি হিসাবে ৪২৬ কোটি ২০ লাখ ডলার উদ্বৃত্ত ছিল।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম আট মাসে (জুলাই-ফেব্রুয়ারি) আমদানির জন্য এলসি খোলা হয়েছে ৫ হাজার ২০ কোটি ৩৯ লাখ ডলার। আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় তা ৬০ দশমিক ৭১ শতাংশ বেশি। একই সময়ে ১৩ দশমিক ৩৯ শতাংশ এলসি নিষ্পত্তি বেড়েছে। 

অথচ এ সময়ে রফতানি আয় বেড়েছে মাত্র ৭ দশমিক শূন্য ৩৪ শতাংশ। অন্যদিকে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে আড়াই শতাংশ কমার পর গত অর্থবছর রেমিট্যান্স সাড়ে ১৪ শতাংশ কমেছে। সেই সঙ্গে গত অর্থবছর আমদানিতে ৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধির বিপরীতে রফতানি আয় বাড়ে মাত্র ১ দশমিক ৭২ শতাংশ। এমন অবস্থায় ডলার সংকটে পড়ে অনেকেই পূবালী ব্যাংকের কাছে আসছে বলে জানান ব্যাংকটির এমডি মো. আব্দুল হালিম চৌধুরী। তিনি বলেন, রফতানি আয় কম থাকা ব্যাংকগুলো এলসির দায় পরিশোধ করতে পারছে না। ফলে ওইসব ব্যাংকের বড় গ্রাহকরা আমাদের কাছে আসছে। এ কারণে আমরা যাচাই-বাছাই করে এলসি খোলার সুযোগ পাচ্ছি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালা অনুযায়ী, ব্যাংকগুলো ইচ্ছামতো নিজেদের কাছে বৈদেশিক মুদ্রা ধরে রাখতে পারে না। এজন্য নির্ধারিত সীমা বেঁধে দেয়া হয়। নীতিমালা অনুযায়ী, একটি ব্যাংক দিন শেষে তার মোট মূলধনের ১৫ শতাংশ সমমূল্যের বৈদেশিক মুদ্রা নিজেদের কাছে সংরক্ষণ করতে পারে। নির্ধারিত সীমার অতিরিক্ত ডলার থাকলে দিন শেষে বাজারে বিক্রি করতে হয়। বিক্রি করতে না পারলে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে বিক্রি করতে হয়। এর ব্যত্যয় হলে সংশ্লিষ্ট ব্যাংককে জরিমানা গুনতে হয়।

ডলারের বাজারের বিদ্যমান সংকট কাটাতে ব্যাংকগুলোর বৈদেশিক মুদ্রা সংরক্ষণের এ হার কমিয়ে দেয়া যেতে পারে বলে মন্তব্য করেন রাষ্ট্রায়ত্ত রূপালী ব্যাংকের এমডি মো. আতাউর রহমান প্রধান। তিনি বলেন, বড় ব্যাংকগুলো বেশি বৈদেশিক মুদ্রা সংরক্ষণের সুযোগ নিচ্ছে। এ কারণে বাজারে ডলার সংকট কাটছে না। সংরক্ষণের হার কিছুটা কমিয়ে দিলে ব্যাংকগুলো অতিরিক্ত ডলার বাজারে বিক্রি করতে বাধ্য হবে।

ডলারের বাজারের বিদ্যমান পরিস্থিতির ওপর কেন্দ্রীয় ব্যাংক নজর রাখছে বলে জানান বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র দেবাশিস চক্রবর্ত্তী। তিনি বলেন, পরিস্থিতি সহনশীল রাখতে আমরা প্রতিনিয়ত ব্যাংকগুলোর কাছে ডলার বিক্রি করছি। রেমিট্যান্স ও রফতানি আয়ের তুলনায় আমদানি ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় ডলারের বাজারে সংকট তৈরি হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে রেমিট্যান্স ও রফতানি আয় বাড়তে শুরু করেছে। ফলে পরিস্থিতি শিগগিরই স্বাভাবিক হয়ে আসবে বলে আমরা আশাবাদী।

  • Courtesy: Banikbarta Apr 09, 2018

কোটা সংস্কারের দাবিতে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ



কোটা সংস্কারসহ পাঁচ দফা দাবিতে ফের ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীরা।

সোমবার সকাল ১০টায় তারা সড়ক অবরোধ করে সেখানে অবস্থান নেন। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত তারা সেখানে অবস্থান করছেন। এছাড়া কোনো বিভাগে ক্লাস অনুষ্ঠিত হয়নি বলে জানা গেছে।

শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো- কোটা সংস্কার করে ১০ শতাংশে নামিয়ে আনা, কোটার শূন্য পদগুলোতে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ, চাকরি পরীক্ষায় কোটা সুবিদা একবারের বেশি নয়, কোটায় বিশেষ নিয়োগ বন্ধ এবং চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা অভিন্ন করা।

ক্যাম্পাস সূত্রে জানা যায়, সকাল ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে শিক্ষার্থীরা জড়ো হতে থাকেন। পরে সেখান থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সামনে আসে। পরে সেখান থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ করে অবস্থান নেয়। এতে রাস্তার দু’পাশে হঠাৎ যানযট সৃষ্টি হয়। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসগুলো ক্যাম্পাস ছেড়ে যায়নি বলেও জানা গেছে।

কোটা সংস্কার আন্দোলনের রাবি শাখার সমন্বয়ক মাসুদ মোন্নাফ বলেন, দাবি অাদায় না হওয়া পর্যন্ত অামরা অান্দোলন চালিয়ে যাব। যদি সারাদিন মহাসড়ক অবরোধ করা লাগে অামরা তাই করব।

উল্লেখ্য, গত ১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে কোটা সংস্কারসহ পাঁচ দফা দাবিতে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছেন শিক্ষার্থীরা। সর্বশেষ রোববার বিকেল ৪টা থেকে সাড়ে ৮টা এবং রাত দেড় টায় দুই দফায় মহসড়ক অবরোধ করেন রাবির বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা।

  • Courtesy: আমাদের সময়.কম Apr 09, 2018

কোটার বিরুদ্ধে সংগ্রাম তরুণদের জয় অনিবার্য - আসিফ নজরুল

রবিন আকরাম

কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন নিয়ে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আসিফ নজরুল। 

তিনি লিখেছেন - 
কোটা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী, প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য অবমাননাকর এবং দূর্নীতি লালনকারী একটি বিষয়। এর বিরুদ্ধে বহুবার লিখেছি আমি। কোটার বিরুদ্ধে দাঁড়ানো মানে ন্যায় এবং জীবিকার অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম। এই সংগ্রামে এদেশের তরুন সমাজের জয় অনিবার্য বলে আমি বিশ্বাস করি।


সহিংসতা থেকে দুরে থাকুন, ঐক্য ধরে রাখুন, প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে রাখুন। এই আন্দোলন নিয়ে যেন কেউ বিভ্রান্তি ছড়াতে না পারে সেজন্য কৌশলী এবং সজাগ থাকুন।

তিনি আরো লিখেছেন - ১৯৭২ সালের সংবিধানে মুক্তিযোদ্ধাদের কোটা সম্পর্কে কিছু বলা নেই। এই সংবিধান প্রণীত হয়েছিল যে গণপরিষদে, সেখানে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য চাকরিতে কোটা প্রদানের কথা উত্থাপিতই হয়নি।

গণপরিষদে কেবল সংবিধানের ১৫ অনুচ্ছেদের অধীনে নাগরিকদের সামাজিক নিরাপত্তা প্রদান প্রসঙ্গে পঙ্গু মুক্তিযোদ্ধা ও নিহত মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয় (বাংলাদেশ গণপরিষদের বিতর্ক, দ্বিতীয় খণ্ড, ১৯৭২, পৃষ্ঠা ৪৭০-১)।

সামাজিক নিরাপত্তার উদার ব্যাখ্যা করলে শুধুমাত্র পঙ্গু বা নিহত মুক্তিযোদ্ধার পরিবারের জন্য চাকরিতে কোটা সংরক্ষণ বৈধ হতে পারে, অন্যদের জন্য নয়। জনসংখ্যার অনুপাতে এই কোটা হতে পারে বড়জোর ১ শতা‌ংশ। বাকী ৯ শতাংশ হতে পারে নারী, প্রতিবন্ধী আর ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য।

কোটা কোনভাবেই মোট চাকরীর ১০ শতাংশের বেশী হোয়া উচিত না। উচিত না কোটা পুরন না হলে পদ শুন্য রেখে দেয়া। মুক্তিযোদ্ধারা এজাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। তাদের সম্মানিত করতে হবে অন্যভাবে। আমি দৃঢভাবে বিশ্বাস করি, ঢালা কোটা বরং অসম্মানিত করে তাদের।

  • কার্টেসি  — amadershomoy.com/April 09, 2018 

Shahbagh aflame with quota demo

75 injured; police use rubber bullets, teargas; DU VC's residence vandalised, 3 cars torched; clash continues for hours after midnight


At least 75 people were injured yesterday as police clashed with students demanding reforms in the quota system in public service, turning the capital's Shahbagh intersection and its adjacent areas into a battlefield.

Police fired several hundred teargas shells and rubber bullets, used water cannons and charged batons to disperse the demonstrators who blocked the intersection for over five hours since 2:30pm. 

A section of the protesters broke the main gate of the residence of the Dhaka University vice chancellor around 1:45am today. They vandalised furniture and other belongings, and also torched three cars inside the compound, according to witnesses and fire service personnel.

About half-an-hour later, BCL men swooped on the protesters and chased them away from the VC's residence. Several gunshots were heard at that time, added the witnesses.

A section of demonstrators march down a road in front of Aziz Supermarket. Photo: Palash Khan
Another group of demonstrators took position near the DU mosque and continued to chant slogans. Around a hundred yards away, law enforcers took position in front of the Public Library.

Talking to reporters in front of the national museum around 1:45am, Awami League lawmaker Jahangir Kabir Nanak said party General Secretary and Road Transport and Bridges Minister Obaidul Quader will sit with the protesters around 11:00am today.

  • The DailyStar/9 Apr 2018

Sunday, April 8, 2018

55,000 without fitness clearance

Roads authorities say fitness certificate of those vehicles not renewed in a decade


Tuhin Shubhra Adhikary


Over 55,000 vehicles, including 3,740 belonging to different ministries and government agencies, have not had their fitness certificates renewed for more than a decade in breach of rules, official data showed.

As per the law, it is mandatory for a vehicle to go through fitness check-up every year and have its fitness certificate renewed to ply the roads legally.

Bangladesh Road Transport Authority (BRTA) on March 29 published two lists of “fitness defaulters” on its website one of government vehicles and the other of non-government ones.

The authority asked the owners to renew the fitness certificates by April 30. Otherwise, they would be declared “write-offs”, meaning their registration will be cancelled, said a BRTA official.

However, two BRTA officials think many of these vehicles might not be running on roads now. The state agency doesn't have any data on the vehicles that are no longer in use.

The list of the government vehicles started with the status of the one belonging to the mayor of Dhaka City Corporation (Dhaka Metro-AU-11-0195). Its fitness certificate expired in July 2007.

As the city corporation was split into two in 2011, Dhaka South and Dhaka North, it's not clear which of the two city corporations now owns the vehicle or if it is operational at all.  

The city corporation's vehicle was followed by those belonging to government organisations including ministries, police and banks and different projects. Police own the highest number of vehicles on the list.

The BRTA data show a total of 52,686 vehicles owned by individuals, non-government educational institutions and commercial organisations have their fitness certificates expired.

Talking to The Daily Star last week, Mahbub-E-Rabbani, director (road safety) of BRTA, said as per the Motor Vehicles Ordinance 1983, it is mandatory to receive fitness certificate every year from the authority.

Operating vehicles without fitness certificate is punishable offence and one may face jail and fine for this violation, said Rabbani, also the BRTA spokesperson.

“BRTA will take action against those vehicles through conducting mobile court operations,” he said, adding that may be, many of these vehicles no longer ply the streets.

For violating section 47 of the ordinance, which deals with fitness clearance, a person may face, for the first offence, maximum three months' imprisonment, or up to Tk 2,000 fine, or both. And for any subsequent offence, the person may face up to six months in jail, or up to Tk 5,000 fine, or both.

MOVE SINCE 2016
In October 2016, BRTA in a departmental circular mentioned that fitness certificates of a significant number of vehicles were not renewed in the last 10 years in violation of the ordinance.

The authority asked all its circle offices across the country to submit the list of “permanently unfit motor vehicles” to the head office by October 30, sources said.

On August 29 last year, BRTA issued a notice, which was published in different newspapers, saying that under section 47 of the ordinance, it is mandatory to receive fitness certificate every year from BRTA.

As per the BRTA database, a significant number of vehicles did not have their fitness certificates renewed in the past 10 years, meaning those vehicles were operating without fitness certificate or became unusable, the notice said.

Against this backdrop, BRTA urged the owners to renew fitness certificates of their vehicles and inform it about their permanently damaged or already unusable vehicles, it said.

Otherwise, BRTA will cancel the registration of those motor vehicles after December 31, 2017, considering the vehicles either permanently damaged or already unusable, the notice read.

BTRA Director (Engineering) Nurul Islam said after the notice, many owners got the fitness certificates renewed.

“Now, we have issued notice giving one-month time to those who did not renew their fitness certificate in last 10 years. Then we will declare those write-offs,” he said on Tuesday.

A “public interest notice” will be circulated through TV scrolls for five days, according to a BRTA document.

Kazi Md Shifun Newaz, assistant professor at Accident Research Institute (ARI) of Buet, told this correspondent that BRTA should have taken this move (declaring vehicles write-offs) much earlier.

“Operation of a vehicle without fitness clearance is very risky because it may cause fatal road accidents besides traffic jam,” he said.

The expert said an updated database of vehicles is also very important for better planning. 

LIMITATION IN ORDINANCE
BTRA Director Nurul said nothing is mentioned in the Motor Vehicles Ordinance about the higher limit of the lifespan of a motor vehicle, creating problem for BRTA to declare a vehicle “write-off”.

“We have nothing to do if someone can maintain his or her vehicles even after 20 years and those remain eligible to be operated in the street.”

BRTA had more than 32 lakh motor vehicles registered since 1971, he mentioned. 

Some 114,271 vehicles were registered in the first 10 months of last year, while the number was 110,520 in 2016, according to BRTA.

“It is a fact that some vehicles do not exist at all. But BRTA has no statistics about the number of such vehicles, because there is no rule for reporting [by the vehicle owner] about such [unusable] vehicles,” Nurul said.

BRTA can cancel registration of a vehicle if found unusable, he added.

  • Courtesy: The Daily Star Apr 08, 2018

দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মকর্তাদের বিচার দাবি জাতিসংঘের

কূটনৈতিক প্রতিবেদক


কোনো ধরনের পক্ষপাতিত্ব ছাড়াই দেশের দুর্নীতিগ্রস্ত রাজনীতিবিদ ও সরকারের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাদের বিচারের আওতায় আনতে বাংলাদেশের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ। এছাড়া বাংলাদেশের জাতীয় মানবাধিকার সংস্থাকে বৈশ্বিক অবস্থানে ‘বি’ ক্যাটাগরির বলেও মন্তব্য করেছে বিশ্ব সংস্থাটি।

অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অধিকারসংক্রান্ত আন্তর্জাতিক চুক্তি বাস্তবায়ন নিয়ে বাংলাদেশের দেয়া প্রাথমিক প্রতিবেদনের চূড়ান্ত পর্যবেক্ষণে এসব সুপারিশ ও মন্তব্য করেছে জাতিসংঘের সংশ্লিষ্ট কমিটি। গত ১৫ ও ১৬ মার্চ কমিটির সপ্তম, অষ্টম ও নবম বৈঠকে এ প্রতিবেদন উপস্থাপন করেছিল বাংলাদেশ। এরপর ২৯ মার্চ অনুষ্ঠিত ২৮তম বৈঠকে প্রতিবেদনের ওপর এ পর্যবেক্ষণ দেয় জাতিসংঘের অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অধিকার কমিটি।

কমিটির পর্যবেক্ষণে দুর্নীতি প্রসঙ্গে বলা হয়, জাতিসংঘের অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অধিকারবিষয়ক কমিটি বাংলাদেশে দুর্নীতির প্রবণতা ও তার ব্যাপ্তি এবং এর চরম প্রভাবে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। এতে অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অধিকার খর্ব হয়েছে।

পর্যবেক্ষণে বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে জাতিসংঘ। এতে দুর্নীতি দমনে বাংলাদেশকে চারটি পদক্ষেপ গ্রহণের সুপারিশ করেছে কমিটি। এগুলো হলো— সরকারি কাজে স্বচ্ছতা ও সুশাসন নিশ্চিত করা। দুর্নীতি দমনে আইনের কঠোর প্রয়োগের মাধ্যমে দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত সরকারের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক নেতাদের বিচারের আওতায় আনা। সক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি দুদককে একটি স্বাধীন প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলা। আর সবশেষে দুর্নীতির ফলে এর প্রভাব এবং ক্ষতি নিয়ে সাধারণ জনগণ ও সরকারের কর্মকর্তাদের মাঝে সচেতনতা বাড়ানো।

রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় দেয়ায় বাংলাদেশের ভূয়সী প্রশংসা করেছে জাতিসংঘ কমিটি। জাতিসংঘ কমিটি বলেছে, বিভিন্ন ধরনের প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও ১০ লাখের ওপর রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশ যে চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করছে, তা কমিটি অনুধাবন করছে। তবে রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও সম্মানের সঙ্গে মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের বিষয়ে অঙ্গীকার এখনো নিশ্চিত হয়নি। কমিটি রোহিঙ্গাদের আইনগত মর্যাদা নিয়ে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। কারণ বাংলাদেশ এখনো এসব শরণার্থীকে আইনগত মর্যাদা দেয়নি। ফলে তাদের চলাফেরা, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা ও মৌলিক সেবাগুলো নিশ্চিত হচ্ছে না। এ অবস্থায় রোহিঙ্গাদের আইনগত মর্যাদা দেয়ার সুপারিশ করেছে জাতিসংঘ। এছাড়া আসন্ন বর্ষা মৌসুমে ভূমিধসের যে ঝুঁকি রয়েছে, তা মোকাবেলায় মানবিক সাহায্য সংস্থা ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে মিলে অনতিবিলম্বে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার পরামর্শ দিয়েছে কমিটি।

জাতিসংঘ কমিটির পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে, গ্লোবাল অ্যালায়েন্স অব ন্যাশনাল হিউম্যান রাইটস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশের জাতীয় মানবাধিকার সংস্থাকে ‘বি’ ক্যাটাগরির সংস্থা হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। জাতিসংঘ কমিটিও মনে করে, বাংলাদেশের জাতীয় মানবাধিকার কমিশন সম্পূর্ণ স্বাধীন নয়। বিশেষ করে লোকবল ও অর্থায়নের জন্য সরকারের ওপর কমিশনের নির্ভরশীলতা উদ্বেগের বিষয়। কমিশনের কাজের সীমিত পরিসরের কারণে অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অধিকার স্থাপন হচ্ছে না। এ কারণে কমিশনকে স্বাধীন ও শক্তিশালী করার সুপারিশ করেছে জাতিসংঘ কমিটি। এর সঙ্গে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন আইন-২০০৯ ঢেলে সাজিয়ে কমিশনের কাজের পরিধি বাড়ানোর পরামর্শও দিয়েছে জাতিসংঘ।

বাংলাদেশে মানবাধিকার কর্মী, সাংবাদিক, শ্রম অধিকার নিয়ে আন্দোলনকারী, সুশীল সমাজ ও ভিন্নমত প্রদানকারীদের অধিকার ক্রমেই সংকুচিত হয়ে আসার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ কমিটি। বিশেষ করে সংশোধিত আইসিটি আইন-২০১৩, খসড়া ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন-২০১৮, ফরেন ডোনেশন রেগুলেশন আইন-২০১৬ ও বিশেষ ক্ষমতা আইন-১৯৭৪ নিয়ে বেশ উদ্বিগ্ন জাতিসংঘ। এক্ষেত্রে রাষ্ট্রকে মানবাধিকার কর্মীদের জন্য নিরাপদ ও অনুকূল পরিবেশ নিশ্চিতের সুপারিশ করেছে সংস্থাটি। আর আইসিটি আইনের ৫৭ ধারা, খসড়া ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন-২০১৮ ও বিশেষ ক্ষমতা আইন-১৯৭৪-এর বিতর্কিত ধারাগুলো পুনর্বিবেচনা করে তা বাদ দিতে সুপারিশ করেছে জাতিসংঘ কমিটি।

  • বনিকবার্তা / এপ্রিল ৫,২০১৮

বরিশালের জনসমুদ্রে বেগম জিয়ার মুক্তি দাবি


বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবির কাছে কোনো আপস নেই বলে জানিয়েছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, আগে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে হবে, তারপর আলোচনা তারপর অন্য কিছু। নতুন করে আমরা বরিশাল থেকে যাত্রা শুরু করি, সেই যাত্রা হবে গণতন্ত্রের সৈনিকদের মুক্তির যাত্রা। 

গতকাল শনিবার বিকেলে বরিশাল হেমায়েত উদ্দিন কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম  খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে বরিশালে বিভাগীয় সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় জনসমুদ্র থেকে অবিলম্বে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি করা হয়। এর আগে শুক্রবার রাত সাতে দশটার দিকে সমাবেশের অনুমতি দেয় বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ (বিএমপি)। এদিকে মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকে সমাবেশ ঘিরে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়। বিভিন্ন পয়েন্টে গাড়ি থামিয়ে চেক করা হয়। সমাবেশকে কেন্দ্র করে বিএনপির ১০ নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। জনতার উদ্দেশে প্রশ্ন করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, দানবটা কে? তখন জনতার পক্ষ থেকে বলা হয়, হাসিনা হাসিনা। তখন মির্জা ফখরুল বলেন, এখন দাবি একটাই। এক দফা এক দাবি হাসিনা তুই কবে যাবি। এখন থেকে এই একটাই স্লোগান।

মির্জা ফখরুল বলেন, বেগম খালেদা জিয়া গণতন্ত্রের মাতা। এই দেশের মানুষের মুক্তির জন্য যিনি আজীবন লড়াই করেছেন সেই নেত্রীর মুক্তির জন্যে আপনারা আজ এখানে এসেছেন। গতকাল কারাগারে দেশনেত্রীর সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলাম, তাকে যখন বললাম কালকে বরিশালে জনসভা করতে যাচ্ছি তিনি তখন বললেন, বরিশালের জনগণকে আমার সালাম জানাবেন। বরিশালের মানুষ সংগ্রামী লড়াকু। তারা গণতন্ত্রের লড়াইয়ে আছে, দেশনেত্রীর সঙ্গে আছে। যখন গণতন্ত্রের জন্য দেশনেত্রীর এখানে আসার কথা তখন তিনি কারাগারে আবদ্ধ আছেন। যে কারাগারে তাকে রাখা হয়েছে সেখানে আর কোনো বন্দি রাখা হয় না। স্যাঁতসেঁতে একটি কারাগারে তাকে রাখা হয়েছে। যিনি দেশের মানুষের জন্য লড়াই করেছেন তাকে আজ ভালভাবে রাখা হয়নি। তিনি চিকিৎসার জন্য নিজস্ব চিকিৎসকদের সুযোগ দেয়ার দাবি করলেও সে সুযোগ দেয়া হয়নি। 

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ২০১৪ সালের নির্বাচনে এই দেশের জনগণ তাদের ভোট দেয়নি। সেই সরকার গায়ের জোরে বন্দুকের জোরে কামান বন্দুক দিয়ে জোর করে ক্ষমতায় বসে আছে। তারা আজ জনগণের নেত্রীকে সুচিকিৎসা পর্যন্ত দিচ্ছে না। সংগ্রামী বন্ধুগণ, একটা জাতি কখনো লক্ষ্য অর্জন করতে পারে না যদি তাদের মধ্যে শৃঙ্খলা না থাকে। আজকে শত শত  নেতাকর্মীকে খুন করা হয়েছে। বরিশালে পুলিশ নেতাকর্মীদের তারা করছে। আজকের জনসভায়ও পুলিশ তারা করেছে। জনসভা করতে দিতে চায়নি। আমরা যদি শৃঙ্খলাবদ্ধ হতে না পারি তাহলে এই যুদ্ধে জয়ী হতে পারবো না। আজকে আপনাদের পরীক্ষা দেয়ার সময় এসেছে। পরীক্ষায় আপনাদের জয়ী হতে হবে। অন্যথায় চীর জীবনের মতো আবদ্ধ হয়ে থাকতে হবে। 

মির্জা ফখরুল বলেন, দয়া করে ধৈর্য ধরেন, শান্তি শৃঙ্খলার মধ্যে থাকেন। নেত্রী যে নির্দেশ দেবেন তা পালন করতে হবে। দেশে কোনো ন্যায় বিচার নেই। আইনের শাসন নেই। দেশে একটাই শাসন, জুলুমের শাসন, বুলেটের শাসন চলছে। দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে। দেশ নাকি মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হয়েছে। উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হয়েছে। উন্নয়ন কাদের হয়েছে। আপনাদের হয়েছে। এই সংগ্রাম বিএনপিকে ক্ষমতায় বসানোর জন্য নয়, এই সংগ্রাম ভোটের অধিকার আদায়ের জন্য।

আমরা শৃঙ্খলকে হাতে নেয়ার জন্য যুদ্ধ করিনি। স্বাধীনতার পতাকাকে উড়ানোর জন্য যুদ্ধ করেছিলাম। গণতন্ত্রকে রক্ষার জন্য, মানুষকে রক্ষার জন্য। আসুন আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হই। এই যে স্বৈরাচার আমাদের বুকের ওপর চেপে বসেছে তাকে পরাজিত করে একটি জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করি। 

শত বাধা বিপত্তি উপেক্ষা করে জনসভায় উপস্থিত হওয়ায় বরিশালের জিয়ার সৈনিকদের অভিনন্দন জানিয়ে স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, এই বরিশাল বিএনপির ঘাঁটি- দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ঘাঁটি। দেশনেত্রী গণতন্ত্রের মাতা, দেশমাতা বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি জানাতে আজ আমরা এখানে এসেছি। নেত্রীকে মিথ্যা মামলায় কারাগারে রাখার কারণে আজ সারা দেশের মানুষ ফুঁসে উঠেছে। 

তিনি বলেন, যে মামলায় বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে রাখা হয়েছে, সেই মামলায় বলা হলো তিনি এতিমের টাকা মেরে খেয়েছেন। কিন্তু মামলার রায়ে দেখা গেলো ২ কোটি টাকা বেড়ে ৬ কোটি টাকা হয়েছে। যেখানে একটি টাকাও উত্তোলন করা হয়নি। সেখানে কিভাবে টাকা চুরি হলো। 

শেখ হাসিনা আবারো ভোট ছাড়া প্রধানমন্ত্রী হতে চান। কিন্তু আমরা বলতে চাই ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে শেখ হাসিনা বলেছিলেন, ২০১৪ সালের নির্বাচন হবে নিয়ম রক্ষার নির্বাচন। কিন্তু তিনি তার কথা রাখেননি। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে এদেশের মানুষ শেখ হাসিনাকে  ভোট দেয়নি। এবার যদি ভোট দেয়ার সুযোগ পায় তাহলে শেখ হাসিনাকে এদেশের মানুষ আঁস্তাকুরে নিক্ষেপ করবে। এই ভয়ে দেশনেত্রীকে কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে। 

বিএনপির এই নেতা বলেন, আমরা যে আন্দোলন করছি সেটা নাকি নিরস। আমরা নাকি গরম আন্দোলন করতে পারি না। আমি বলতে চাই, দেশনেত্রীকে কারাগারে বন্দি করে যে ফাঁদ পাততে চেয়েছিলেন সেই ফাঁদে বিএনপি পা দেয়নি। সেজন্য আপনাদের গাত্রদাহ। পুলিশ বাহিনী ও ক্যাডার বাহিনীর শত অত্যাচার উপেক্ষা করে আজকে এই সমাবেশ জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছে।

তিনি বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডন থেকে যে নির্দেশনা দিচ্ছেন সেইভাবে বিএনপি সঠিকভাবে চলছে। আমাদের যে ব্যাংকে একাউন্ট নেই সেই একাউন্টের খোঁজ নিতে চাচ্ছেন। শেখ হাসিনা আপনার একাউন্টের খবর নেন। বিডিআর বিদ্রোহে যে ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তা নিহত হয়েছে সেটা আপনার একাউন্টে জমা হয়েছে। বিদ্যুতের ইনডেমনিটি দেয়ার জন্য আপনার বিরুদ্ধে একাউন্ট খোলা হয়েছে। ’৯৬ সালে শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসে দেশকে দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন করেছিল। এবার ক্ষমতায় এসে দেশকে স্বৈরাচারী তকমা লাগিয়েছে। 

উপস্থিত জনতার উদ্দেশে স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, কষ্ট করে ঝুঁকি নিয়ে এই জনসভায় এসেছেন। যখন দেশে স্বৈরাচার নেমে আসে, যখন দেশে দুর্নীতি হয়, তখন জনগণের কাছে যেতে হয়। আমরা আজকে সেই জনগণের সামনে এসে হাজির হয়েছি। আমাদের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে বন্দি করে রাখা হয়েছে। আমরা তার মুক্তি চাই। ২০১৪ সালে এই সরকার জবরদস্তি করে ক্ষমতায় এসে সেই মসনদ টিকিয়ে রাখার জন্য খুন, গুম, হত্যা যা দরকার সব চালিয়ে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, আজকে স্বৈরাচারী এরশাদ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনসভা করার অনুমতি পায়। কিন্তু বিএনপিকে অনুমতি দেয় না। কারণ বিএনপি জনসভা করলে লাখ লাখ মানুষের ঢল নামে। তাই ভয় পায়। তিনি আরো বলেন, আমরা কি এদেশে রোহিঙ্গা হয়ে গেছি। আমরা আর রোহিঙ্গা হয়ে বাঁচতে চাই না। রক্তের পথ বেয়ে এই দেশে গণতন্ত্র আসবে কেউ ঠেকিয়ে রাখতে পারবে না। আমরা প্রায়ই শুনি এই সরকার অনেক জনপ্রিয়। এত যদি জনপ্রিয় হয় তাহলে আমরাও আপনাকে ভোট দেব। আপনি যদি জনপ্রিয় হন তাহলে নিরপেক্ষ একটা সরকারের অধীনে নির্বাচন দেন। বিএনপির দাবি অনুযায়ী নয় আওয়ামী লীগ ও জামায়াতের দাবি অনুযায়ী তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে একটা ভোট দেন। 

বেগম খালেদা জিয়াকে অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে উল্লেখ করে মির্জা আব্বাস বলেন, ’৭১ সালে একবার জেলের তালা ভাঙা হয়েছিল। ১৯৯০ সালে এরশাদের সময় জেলের তালা ভাঙা হয়েছিল। সেদিন আমি এবং মোস্তফা মহসিন মন্টুকে মুক্ত করা হয়েছিল। ঝড় উঠলে সামাল দিতে পারবেন না। আটকে রাখার চেষ্টা করবেন না। 

স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেন, আওয়ামী লীগ বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছিল। জিয়াউর রহমান তাদের পুনরায় রাজনীতি করার সুযোগ করে দিয়েছিলেন। আমার বেগম খালেদা জিয়াকে শুধু মুক্ত করেই আনবো না, আমরা খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে দেশে আবার গণতন্ত্র ও বহুদলীয় গণতন্ত্র পুনঃ প্রবর্তন করবো। ৭১ সালে যখন পাক হানাদার বাহিনী আক্রমণ করেছিল। তখন আওয়ামী লীগ পালিয়ে গিয়েছিল। আর জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন। আসুন আজ নতুন শপথ করে দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে মুক্ত না করা পর্যন্ত আমরা আর ঘরে ফিরে যাব না।

স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, সমাবেশ প্রতিহত করার জন্য বিভিন্ন স্থানে বাধা দেয়া হয়েছে। গ্রেফতার করা হয়েছে। তারপরও এই জনসমুদ্র বন্ধ করতে পারেনি। : তিনি বলেন, দুর্নীতি আজ একটি দলের কাছে সীমাবদ্ধ। যে দলটি একদলীয় শাসন চালাচ্ছে। এ সরকারের সময় দুর্নীতি কমবে না। বেগম খালেদা জিয়া শুধু বাংলাদেশের নেতা নয়, এখন তিনি বিশ্ব নেতা। তার নেতৃত্বেই হারানো গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করা হবে।

বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে বরিশালের জনসভা জনসমুদ্র : বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে  বরিশাল বিভাগীয় সমাবেশ জনসমুদ্রে রূপ নেয়। গতকাল শনিবার পুলিশি বাধা, হামলা গ্রেফতার উপেক্ষা করে জনসভায় যোগ দেয় বিএনপির নেতাকর্মীরা। বরিশাল মহানগর ও জেলা, ঝালকাঠী, পটুয়াখালী, ভোলা, পিরোজপুর, বরগুনা, গৌরনদী, আগৈলঝড়া, বাকেরগঞ্জ, মুলাদী, হিজলা, মেহেন্দীগঞ্জ, উজিরপুর, বানারীপাড়া স্বরূপকাঠী, কাউখালী, ভান্ডারিয়া, মঠবাড়িয়া, বেতাগী, পাথরঘাটা, বামনা, আমতলী, মির্জাগঞ্জ, দুমকী, গলাচিপা, দশমিনা, নলছিটি, কাঠালিয়া, রাজাপুর, বাবুগঞ্জ থেকে জনগণ দুপরের আগেই মাঠ প্রাঙ্গণে আসতে থাকে। অনেকে আবার আগের দিন এসেও বরিশাল শহরে অবস্থান নেয়। দুপুর ২টার আগেই নেতাকর্মীরা মাঠে প্রবেশ করতে থাকে। এক সময় ঈদগাহ মাঠ ছাপিয়ে পুরো এলাকা পরিণত হয় জনসমুদ্রে। সমাবেশস্থলে উপস্থিত হওয়া সকলেই ‘খালেদা জিয়ার মুক্তি চাই, মুক্তি চাই’, ‘খালেদা জিয়ার কিছু হলে জ্বলবে আগুন ঘরে ঘরে’, ‘আমার নেত্রী আমার মা বন্দি থাকতে দিবো না’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকে।

 বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জামিন প্রলম্বিত করে তাকে সাংবিধানিক ও আইনি অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। সম্পূর্ণ মিথ্যা একটা মামলায় কারসাজি করে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে আটকিয়ে রাখা হয়েছে। আইনি যে অধিকার সংবিধানসম্মত, সেই আইনি অধিকার থেকে তাকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। তাকে জামিন পর্যন্ত দেয়া হচ্ছে না। সেজন্য কলা-কৌশল করে, তারা (সরকার) কারসাজি করে, ছল-চাতুরি করে, তার মুক্তিকে বিলম্বিত করা হচ্ছে।  

সকল রাজনৈতিক দলের প্রতি আহবান রেখে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমরা সমগ্র দেশের মানুষের কাছে, সব রাজনৈতিক দলের কাছে আহবান জানিয়েছি যে, আপনারা আসুন ঐক্যবদ্ধ  হোন, জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করুন। : বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও বরিশাল মহানগর বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট মজিবর রহমান সরোয়ারের সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর বীর প্রতীক,  সেলিমা রহমান, এয়ার ভাইস মার্শাল (অব) আলতাফ হোসেন চৌধুরী, বরকত উল্লাহ বুলু, অ্যাডভোকেট জয়নাল আবেদিন, সাংগঠনিক সম্পাদক বিলকিস জাহান শিরিন, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশাররফ হোসেন, সহ- সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুল হক নান্নু, নির্বাহী কমিটির সদস্য মেজবাহ উদ্দিন ফরহাদ, নাজিম উদ্দিন আলম, আবুল হোসেন খান, হাফিজ ইব্রাহিম, ভোলা জেলা বিএনপির সভাপতি গোলাম নবী আলমগীর, পিরোজপুর জেলা বিএনপির সভাপতি গাজী নুরুজ্জামান বাবুল, ঝালকাঠী জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম নুপুর, বরগুনা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আলিম উদ্দিন, স্বেচ্ছাসেবক দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান, যুবদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি মোরতাজুল করিম বাদরু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়ন, ছাত্রদলের সহ-সভাপতি এজমল হোসেন পাইলট প্রমুখ। : এছাড়াও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টু,  সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আকন কুদ্দুসুর রহমান, মাহবুবুল হক নান্নু, বিএনপি নেতা কাজী রওনাকুল ইসলাম টিপু, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম সজল, হায়দার আলী লেলিন, দুলাল হোসেন, অ্যাডভোকেট মাহমুদ হোসাইন আল মামুন,  যুবদলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মামুন হাসান, বরিশাল মহানগর বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক আনোয়ারুল হক তারিন, বরিশাল জেলা যুবদলের সভাপতি অ্যাডভোকেট পারভেজ আকন বিপ্লব, বরিশাল মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত দফতর সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাহমুদ হোসেন মামুন,  ছাত্রদলের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আফরোজা খানম নাছরিন, সমাজ সভা বিষয়ক সম্পাদক  আব্দুর রহিম, ছাত্রদল নেতা ইকবাল হোসেন আসিফসহ বিএনপি ও তার অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের লক্ষাধিক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। 

  • দিনকাল/এপ্রিল ৮,২০১৮ 

বাড়ি দখলে কাউন্সিলরের পাঁয়তারা!

মুসা আহমেদ



রাস্তা প্রশস্ত করার জন্য জমি নেওয়া হয়েছে। প্রয়োজন না থাকলেও ভেঙে দেওয়া হয়েছে পুরো বাড়ি। তারপর বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বাড়ির পয়োনিষ্কাশনের লাইন। এখন চলছে বাকি জমি দখলের পাঁয়তারা।

পশ্চিম শেওড়াপাড়ার পীরেরবাগ সড়কে এক নারীর জমি নিয়ে চলছে এই তুঘলকি কাণ্ড। কিন্তু রাস্তার অপর পাশে স্থানীয় কাউন্সিলরের জমি থাকলেও রাস্তা বাড়াতে সেখান থেকে জমি নেওয়া হয়নি। কিন্তু বাকি রাস্তায় দুপাশ থেকেই জায়গা নেওয়া হয়েছে। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, কাউন্সিলর এখন তাঁদের পুরো জায়গাটিই দখল করতে চাইছেন।

রোকেয়া সরণি থেকে ৬০ ফুট সড়ক পর্যন্ত পীরেরবাগের রাস্তা প্রশস্ত করা হয় ২০১৭ সালে জানুয়ারির দিকে। এতে সড়কের দুই পাশের বাড়িগুলোর সামনের অংশ ভাঙা পড়ে। কিন্তু ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হুমায়ুন রশীদ ও তাঁর ভাইদের জায়গার সামনে এসে রাস্তাটি বেঁকে যায়। কারণ, পুরো জমি নেওয়া হয় তাঁদের উল্টা পাশের বাড়ি থেকে। ওই বাড়ির মালিক জাহান আরা বেগম।

জাহান আরা বেগমের বাড়ির হোল্ডিং নম্বর ৩৭০/১। ২৪ শতাংশ আয়তনের এই বাড়ি রাস্তা বরাবর প্রায় ২৫০ ফুট লম্বা। বাড়ির মালিকের অভিযোগ, রাস্তা বাড়ানোর নামে তাঁর বাড়ির প্রায় ৮ শতক জায়গা নেওয়া হয়েছে। এর জন্য সামনের দোকান ও সীমানাপ্রাচীর ভাঙাই যথেষ্ট ছিল। কিন্তু কমিশনারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তাঁর একতলা বাসাই ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয় সিটি করপোরেশন। তারপর বাড়ির পয়োনিষ্কাশনের সংযোগও বন্ধ করে দেওয়া হয়। এখন জায়গাটি অবৈধভাবে দখল করার পাঁয়তারা করছেন কাউন্সিলর।

বিষয়টি স্থানীয় সাংসদ কামাল আহমেদ মজুমদার, ডিএনসিসি প্যানেল মেয়র ওসমান গনি, ঢাকা জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের জানানো হয়। কিন্তু কেউ বাড়ির মালিককে সহযোগিতা করেননি।

১৯৬২ সালের দিকে পশ্চিম শেওড়াপাড়ার ওই ২৪ শতক জায়গাটি কেনেন জাহান আরা বেগম ও তাঁর বোন হোসনে আরা বেগম (মৃত)। তখন এই এলাকাটি ধানি জমি ছিল। এই জমির উত্তর পাশের জমি ছিল ডিএনসিসির বর্তমান কাউন্সিলর হুমায়ুন রশীদের বাবা অলি মিয়ার। ১৯৮০ সালে এখান দিয়ে রাস্তা তৈরি করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। তখনো অলি মিয়ার জমি ছেড়ে এই দুই নারীর জমির ওপর দিয়ে প্রায় ১২ ফুট চওড়া রাস্তা তৈরি করা হয়। রাস্তা মাটিও নেওয়া হয় এই জমি থেকে। এখন রাস্তাটির প্রস্থ ২৪ ফুট। যতবারই রাস্তা বাড়ানো হয়েছে, ততবারই এই বাড়ি থেকে জায়গা নেওয়া হয়েছে। উল্টো পাশে কাউন্সিলরদের কাছ থেকে কোনো জায়গা নেওয়া হয়নি।

বাড়ির মালিক জাহান আরা বেগম বলেন, ‘আমাদের বাড়ির পূর্ব ও পশ্চিম অংশে বাড়িগুলো তিন থেকে ছয় ফিট রাস্তার ভেতর। তারপরও কাউন্সিলরের নির্দেশে গত ২০১৭ সালে বিনা নোটিশে আমার বাড়ির মূল অংশ ভেঙে ফেলে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) ও ডিএনসিসি। তাদের দাবি ছিল, আমাদের বাড়ির নকশা রাজউকে নেই। আমরা বাড়িটি তৈরি করেছিলাম ১৯৮৭ সালে। বিষয়টি রাজউক, ডিএনসিসিকে লিখিতভাবে জানানো হলেও তারা তদন্তে আসেনি। এর মধ্যে গত জানুয়ারিতে পরিকল্পিতভাবে আমার বাড়ির পয়োনিষ্কাশন লাইন বন্ধ করে দেওয়া হয়। এতে ভাড়াটেরা বাড়ি ছেড়ে চলে যান।’ তিনি বলেন, ‘গত ১৯ মার্চ পয়োনিষ্কাশনের সংযোগ চালু করতে কয়েকজন শ্রমিক নিয়ে এলাকায় গিয়েছিলাম। কিন্তু কাউন্সিলরের পক্ষের যুবলীগ কর্মী কবির আহম্মেদ কাজে বাধা দেন। শ্রমিকেরা ভয়ে চলে যান। এভাবে একের পর এক অত্যাচার করে আমাকে উৎখাত করতে চাইছে। অথচ এই এলাকায় ১ শতক জমির দাম কোটি টাকার বেশি।’

সম্প্রতি ওই এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, পীরেরবাগ রোডের ৩৫১/৪ থেকে ৩৬৫/১২ নম্বর হোল্ডিং পর্যন্ত রাস্তাটি বাঁকা। এই বাঁকের দুই-তৃতীয়াংশই জাহান আরা বেগমের জায়গার মধ্যে পড়েছে। তাঁর বাড়িটি ভাঙা অবস্থায় পড়ে আছে। পয়োবর্জ্যের দুর্গন্ধ বাতাসে চারদিকে ছড়াচ্ছে। অন্যদিকে রাস্তার উত্তর পাশে টিনশেডের দোকান ও কাঁচাবাজার দিয়ে ব্যবসা-বাণিজ্য করছেন কাউন্সিলর ও তাঁর চাচাতো ভাইয়েরা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় দুই বাড়ির মালিক বলেন, পীরেরবাগ সড়ক প্রশস্ত করার সময় কাউন্সিলর কারও বাড়ি ভাঙছেন, আবার মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে কারোরটি ভাঙেনি। এতে রোডটি একেক জায়গায় একেক রকম প্রশস্ত বা আঁকাবাঁকা হয়েছে। এসব অনিয়ম নিয়ে মহল্লার কেউ মুখ খোলার সাহস পায় না।

জানতে চাইলে ডিএনসিসির অঞ্চল-৪-এর নির্বাহী প্রকৌশলী মোল্লাহ মোহাম্মদ নূরুজ্জমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিদ্যমান রাস্তাটি আমরা প্রশস্ত করেছি। এ ক্ষেত্রে সড়কের দুপাশেই যতটুকু জায়গা দরকার, নিয়েছি। তা তদারক করেছেন স্থানীয় কাউন্সিলর। এ নিয়ে জাহান আরা বেগমের সঙ্গে তাঁর মতবিরোধ হয়েছে বা আছে। তবে কেউ জায়গা না দিতে চাইলে আমরা জোর করে নিতে পারি না। এখনো যদি ওই নারী যথাযথ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জায়গা মেপে ফেরত চান, আমরা তাঁকে তা ফিরিয়ে দিতে সহযোগিতা করব।’

কিন্তু ভুক্তভোগী জাহান আরা বেগম অভিযোগ করেন, তিনি কয়েক দিন আগে নির্বাহী প্রকৌশলী মোল্লাহ মোহাম্মদ নূরুজ্জমানের কাছে প্রতিকারের জন্য গিয়েছেন। নূরুজ্জমান তাঁকে কাউন্সিলরের কাছে যেতে পরামর্শ দিয়েছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সব অভিযোগ অস্বীকার করেন কাউন্সিলর হুমায়ুন রশীদ। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, রাস্তাটি ৩০ ফুট প্রশস্ত করতে যেখানে যতটুকু জায়গা দরকার, সে অনুযায়ীই নিয়েছি। কিন্তু ওই বাড়ির মালিক রাস্তার জন্য জায়গা ছাড়তে চাননি। তাই রাজউকের মাধ্যমে তাঁর বাড়িটি ভাঙা হয়েছে।’

রাস্তার জন্য ভবনের ভেতর থেকে কি জায়গা নিতে হয়েছে, না হলে ভবনটি কেন ভাঙা হলো—এ প্রশ্নের সদুত্তর দিতে পারেননি কাউন্সিলর। তিনি শুধু বলেন, ‘রাস্তার জন্য যতটুকু জায়গা দরকার ছিল, নিয়েছি।’

ওয়াসার কাছে তিন শতক
জাহান আরা বেগম জানান, ১৯৯৯ সালে রেজিস্ট্রিহীন একটি চুক্তিপত্রের মাধ্যমে তার ৩ শতকের বেশি জায়গায় বিনা ভাড়ায় ও বিনা মূল্যে পানির পাম্প বসায় ঢাকা ওয়াসা। এই চুক্তিতে শর্ত ছিল মালিক জায়গা ফেরত চাইলে তা ফিরিয়ে দিতে ওয়াসা বাধ্য থাকবে। কিন্তু পরবর্তী সময়ে নিজের প্রয়োজনে জায়গাটি ফেরত চাইলে তা দিতে অপারগতা প্রকাশ করে ওয়াসা। বিষয়টি ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও ঢাকা জেলা প্রশাসক এবং এলজিইডি মন্ত্রণালয়ের সচিবকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে তাঁকে কেউ সহযোগিতা করছে না। প্রতিটি কাজে কাউন্সিলর নিজে গিয়ে বাধা দিচ্ছেন।

গত বছরের ২ মার্চ জায়গাটি ফেরত চেয়ে ওয়াসার কাছে আবেদন করেছিলেন জাহান আরা বেগম। এর ২৬ দিন পর ওয়াসার ভূমি বিভাগের উপসচিব শামীম নাজিবা স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে ওই জায়গা ফেরত দেওয়া যাবে না বলে অপারগতা প্রকাশ করেন। কিন্তু এই জায়গার ভাড়া বা মূল্য দেওয়া হবে কি না, চিঠিতে কিছুই বলা হয়নি।

জাহান আরা বেগম বলেন, আগে এই এলাকায় তীব্র পানিসংকট ছিল। মানবিক কারণে জায়গাটি ওয়াসাকে দিয়ে আজ তাদের দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হচ্ছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে গতকাল সন্ধ্যায় মুঠোফোনে কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তাকসিম এ খান।

  • Courtesy: Peothom Alo /Apr 08, 2018 

কী ভয়ঙ্কর আগ্রাসী ঋণ

হারুন-অর-রশিদ


বিধি ভঙ্গ করে ১৬ বাণিজ্যিক ব্যাংক ভয়ঙ্করভাবে আগ্রাসী ঋণ বিতরণ করেছে। এর মধ্যে তিনটি হচ্ছে ইসলামি ব্যাংক ও বাকি ১৩টি প্রচলিত ধারার ব্যাংক। আরও ১৯ ব্যাংক আগ্রাসী সীমার কাছাকাছি চলে এসেছে। মাঝেমধ্যেই তারা সীমা অতিক্রম করে যাচ্ছে। ফলে ওই ব্যাংকগুলোও ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। এদিকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে তদারকি জোরদার করেও আগ্রাসী ব্যাংকিং বন্ধ করা যাচ্ছে না।

ব্যাংকগুলো হচ্ছে ফারমার্স ব্যাংক, প্রিমিয়ার ব্যাংক, এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক, এবি ব্যাংক, মেঘনা ব্যাংক, এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, আইএফআইসি ব্যাংক, ট্রাস্ট ব্যাংক, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক ও বেসিক ব্যাংক। এর বাইরে যমুনা ব্যাংক, প্রিমিয়ার ব্যাংক ও অগ্রণী ব্যাংকের ইসলামি উইন্ডোর আগ্রাসী ব্যাংকিং করেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সম্পদ-দায় ব্যবস্থাপনা (এএলএম) নীতিমালা অনুসারে সাধারণত ব্যাংকগুলো সংগৃহীত আমানতের ৮০ দশমিক ৫ শতাংশ ঋণ বিতরণ করতে পারে। ইসলামি ব্যাংকগুলোর ক্ষেত্রে এই সীমা ৮৫ শতাংশ। কিন্তু অন্যান্য আর্থিক সূচক ভালো থাকলে সাধারণ ব্যাংকগুলো সংগৃহীত আমানতের ৮৫ শতাংশ এবং ইসলামি ব্যাংকগুলো ৯০ শতাংশ ঋণ বিতরণ করতে পারে। গত জানুয়ারিতে এটি কমিয়ে সাধারণ ব্যাংকগুলোর জন্য সাড়ে ৮৩ শতাংশ এবং ইসলামি ব্যাংকগুলোর জন্য ৮৯ শতাংশ করে দেওয়া হয়েছে, যা চলতি মাস থেকে কার্যকর করতে হবে। আমানতের কী পরিমাণ ঋণ বিতরণ করেছে তা সাপ্তাহিক ভিত্তিকে পর্যবেক্ষণ করে বাংলাদেশ ব্যাংক। বাংকগুলো পাঠানো তথ্যের ভিত্তিতে ঋণ আমানত অনুপাত (এডিআর) প্রতিবেদন তৈরি করা হয়।

এই সীমার বেশি ব্যাংকগুলো ঋণ বিতরণ করতে পারবে না। এর চেয়ে বেশি ঋণ বিতরণ করলে একদিকে তারল্য সংকট প্রকট হয়। অন্যদিকে ব্যাংকগুলোর মধ্যে ঝুঁকির মাত্রা বেড়ে যাবে। যে কারণে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এই সীমার বেশি ঋণ বিতরণ করলে জরিমানা আরও করে। ইতোমধ্যে আগ্রাসী ব্যাংকিংয়ের দায়ে ওয়ান ব্যাংক প্রিমিয়ার ব্যাংককে জরিমানা করেছে। আরও কয়েকটি ব্যাংককে সতর্ক করে চিঠি দেওয়া হয়েছে।

গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত তথ্যের ভিত্তিতে তৈরি বাংলাদেশ ব্যাংকের এডিআর প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ১২টি ব্যাংক সীমার চেয়ে বেশি ঋণ দিয়েছে। এর মধ্যে ফারমার্স ব্যাংক মোট আমানতের ১০৫ দশমিক ২৪ শতাংশ ঋণ বিতরণ করেছে। সরকারি মালিকানাধীন বেসিক ব্যাংক তাদের আমানতের ১০০ শতাংশ ঋণ বিতরণ করেছে। অর্থাৎ তারা সংগৃহীত আমানতের চেয়ে বেশি ঋণ বিতরণ করেছে। ফলে তারা তীব্র আর্থিক সংকটে পড়েছে।

প্রিমিয়ার ব্যাংক আমানতের ৯০.৮২ শতাংশ, এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক ৯০.১৪, ন্যাশনাল ব্যাংক আমানতের ৮৮.০৭, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক আমানতের ৮৬.৩৭, এবি ব্যাংক ৮৬.২৪, মেঘনা ব্যাংক আমানতের ৮৬.১৪, এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক আমানতের ৮৬, সিটি ব্যাংক আমানতের ৮৫.২৯, আইএফআইসি ব্যাংক আমানতের ৮৫.০৮, ট্রাস্ট ব্যাংক আমানতের ৮৫.০৩ শতাংশ এবং শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক আমানতের ৯০.১৭ শতাংশ ঋণ হিসাবে বিতরণ করেছে।

এর বাইরে যমুনা ব্যাংকের ইসলামিক উইন্ডো থেকে সংগৃহীত আমানতের ১২৫.১৬ শতাংশ, প্রিমিয়ার ব্যাংকের ইসলামিক উইন্ডো থেকে সংগৃহীত আমানতের ১২৪.৮৪ শতাংশ ও অগ্রণী ব্যাংকের ইসলামি উইন্ডো তাদের মোট আমানতের ১২১.০৫ শতাংশ ঋণ হিসাবে বিতরণ করেছে।

এসব ব্যাংক সীমার চেয়ে বেশি ঋণ বিতরণ করায় তারা ব্যাংলাদেশ ব্যাংকে বিধিবদ্ধ আমানত রাখতে পারছে না। আর রাখলেও তা কলমানি থেকে ধার করে রাখছে। ফলে ব্যাংকগুলোর ঝুঁকির মাত্রা বেড়ে গেছে।

সীমা অতিরিক্ত ঋণের বিষয়ে ব্যাংক মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকসের (বিএবি) চেয়ারম্যান ও এক্সিম ব্যাংকের চেয়ারম্যান নজরুন ইসলাম মজুমদার বলেন, বিভিন্ন কারণে বিনিয়োগের চাহিদা বেড়েছে। দেশের অর্থনীতির সুবিধার্থে ব্যাংকগুলো অর্থায়ন করেছে। এ জন্য সীমার চেয়ে বেশি ঋণ বিতরণ করেছে।

প্রতিবেদন থেকে প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যায়, আরও প্রায় ১৯ ব্যাংকের ঋণ বিতরণ আইনি সীমার কাছাকাছি রয়েছে। কোনো কোনো সপ্তাহে এই ব্যাংকগুলোর সীমা বিধির বাইরে চলে যায়। আমানত সংগ্রহ বাড়লে তা আবার নির্দেশিত সীমার মধ্যে নেমে আসে। বিপজ্জনক সীমার কাছাকাছি থাকা ব্যাংকগুলোর মধ্যে আছে ওয়ান ব্যাংক, প্রাইম ব্যাংক, মার্কেন্টাইল ব্যাংক, সাউথ-বাংলা এগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স ব্যাংক. ব্র্যাক ব্যাংক, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, ঢাকা ব্যাংক মধুমতি ব্যাংক সাউথ-ইস্ট ব্যাংক, পূবালী ব্যাংক, ইস্টার্ন ব্যাংক, এনআরবি ব্যাংক, যমুনা ব্যাংক ও মিডল্যান্ড ব্যাংক। এ ছাড়া ইসলামি ব্যাংকগুলোর মধ্যে আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক, সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ব্যাংক ও ইসলামী ব্যাংক ঝুঁকির কাছাকাছি রয়েছে।
এ বিষয়ে ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) প্রেসিডেন্ট ও ঢাকা ব্যাংকের এমডি সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, দেশে বিভিন্ন প্রয়োজনে আমদানি ব্যয় বেড়েছে। 

যে কারণে অভ্যন্তরীণভাবে ঋণের চাহিদা বেড়েছে। একদিকে ঋণপ্রবাহ বেড়েছে, সেই তুলনায় আমানত বাড়েনি। অন্যদিকে একটি বেসরকারি ব্যাংকের কারণে সরকারি সংস্থাগুলো আমানত তুলে নিয়েছে। এ জন্য কোনো কোনো ব্যাংকের ঋণ বিতরণ সীমা ছাড়িয়ে গেছে। নির্বাচনের বছরে আরও ঋণের চাহিদা বাড়বে। এ জন্য ঋণ বিতরণের সীমা আরও বাড়ানোর দাবি করেছিলাম।

বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, খেলাপি ঋণ, যাচাই-বাছাই ছাড়া বেপরোয়া ঋণ এবং বিচারহীনতা ইত্যাদি কারণে ব্যাংকিং খাতে সংকট সৃষ্টি হয়েছে। এসব জায়গায় হাত দেওয়া হচ্ছে না।

  • আমাদের সময়/এপ্রিল ৭,২০১৮