Search

Wednesday, April 11, 2018

Job Quota Reform: Long call falls on deaf ears

Inam Ahmed and Shakhawat Liton


The call for reforming the quota system for government jobs was voiced just a year after it was introduced in 1972 and since then, several public service reform committees and the Public Service Commission itself, the body that oversees government recruitment, have objected to the policy.

However, documents show subsequent governments paid no heed to the suggestions for making room for more efficient people in bureaucracy by reforming the quota structure, leading to today's anger among the youths in the midst of a slowing job market.

All these recommendations had strong arguments evidenced by statistics that while some positive discrimination is required for the disadvantaged groups, other provisions simply discourage meritocracy.

When Bangabandhu Sheikh Mujibur Rahman introduced quota in September 1972, the reality was quite different with a country ravaged by war and suffering from long deprivation and extreme poverty. The Pakistani rule had discriminated against the Bangalees, and the districts other than Dhaka even more suffered from a lack of education and opportunities.

So, Bangabandhu had introduced a quota system that allocated 40 percent of the jobs to districts, 30 percent to freedom fighters who had lost nine months of their educational life fighting for the country, and 10 percent for the war-affected women. The rest 20 percent were to be appointed on merit.

In 1972, two high-powered reform bodies were assigned to make suggestions for the civil bureaucracy. It recommended next year several measures for selection process based on merit and long-term career planning.

In 1976, the Pay and Service Commission was formed and that also recommended merit-based recruitment. Meanwhile, the government increased merit quota to 40 percent from 20 percent and district quota was halved to 20 percent.

Talking to this newspaper recently, former caretaker govt adviser Akbar Ali Khan said that in 1977, almost all members of the then Pay and Service Commission expressed their opposition to enforcing any type of quota for recruiting government officers.

From 1982 to 1984, two major reform bodies were appointed -- one a martial law committee and the other a civilian one.

Later in 1985, during the martial law rule of HM Ershad, the quota for the war-affected women was discontinued as no job seekers were found and this quota was given for women candidates as a major step to promote women empowerment. Ershad, for the first time, also introduced a 5 percent quota for the ethnic minorities.  

In December 1996, after the Awami League government came to power, the Public Administration Reform Commission was set up as the first major attempt to modernise the bureaucracy.

The commission observed that the quota system on the face of it is unconstitutional and proposed a constitutionally supportive recruitment policy is followed.

The commission had recommended an increase in the merit quota to 55 percent from 45 percent.

The quota for freedom fighters was a problem area from the beginning because the required number of candidates was not found as an analysis of this category from 1982 to 1990 shows.

In 1982, seven percent of the quota was fulfilled against 30 percent allocation. This dipped continuously except in 1984 and in 1990 only one percent was fulfilled.

The posts against the unfulfilled quota remain vacant and the commission fulfils the empty posts with candidates from the next examination. In the context of such unfulfilled posts, the PSC recommended an increase in merit and women quotas.

“This request continued since 1987, but for ten years the government remains silent on the issue,” AMM Shawkat Ali, a former bureaucrat and adviser to a caretaker government, wrote in his book “Bangladesh Civil Service: a political-administrative perspective”. 

“During this period of ten years, committees constituted by the government and other studies sponsored by the government also recommended reduction of quota for freedom fighters.”

However, instead of reforming this quota, the government in 1997 extended the freedom fighters' quota to include their descendants, making things even more complicated.

Another big drawback of the current quota system is that it leads to misuse of the system, defeating the purpose of helping those from backward communities.

Experts say those who already enjoyed quota privileges should not be eligible for that again. Their descendants also should not have it either, because a person who benefitted from this system should already have established his or her family and children.

Former PSC chairman Sadat Hossain says, “The quota is a special provision for under-privileged populations, and it's an exception. It can't be more than the merit provision.”

As the PSC chair, Sadat had initiated a reform move, and also former cabinet secretary Akbar Ali Khan and former chief election commissioner Kazi Rakibuddin Ahmed carried out a study in March 2008.

They found out existence of 257 types of quotas for all government jobs and recommended a reduction in the quota to 20 percent.

But nothing has been done to do away with the anomalies and to modernise the quota system.

  • Courtesy: The Daily Star /Apr 11, 2018

Tuesday, April 10, 2018

রাতটা বিভীষিকার ছিল, কিন্তু গর্বেরও ছিল! -— তাসনিম হালিম মিম

তাসনিম হালিম মিম


প্রথমেই জানিয়ে দেই, সরকারি চাকরি নিয়ে আমি বিন্দুমাত্র কনসার্নড না। হবো আইনজীবী। তাই কোটা সংস্কার নিয়ে আমার ব্যক্তিগত প্যারা ছিল না। তবুও গতকাল রাত ১১:৩০-১২ টার মধ্যে যখন আমাদের হলের গেট ভেঙে বের হওয়ার জন্য নিচে আহ্বান জানালো, তখন দ্বিতীয়বার ভাবিনি। কারণ ছিল একটাই। কিছু প্রশ্নের উত্তর দাবি করা। ক্যাম্পাসে পুলিশ কেন ঢুকেছে? সেন্ট্রাল লাইব্রেরির সামনে গুলি চালানোর সাহস কোত্থেকে আসে? আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাই-বোনেরা যখন শান্তিপূর্ণ ছিল, তখন তাদের উপর টিয়ারশেল মারা হলো কেন?

চাকরিতে কোটা নিয়ে প্যারা থাক বা না থাক, উপরের প্রশ্নগুলোর উত্তর পাওয়ার জন্য প্যারা নেওয়া ছাড়া উপায় নাই।

পরের ঘটনায় আসি।

নিচে যখন কলাপসিবল গেটের তালা ভাঙা হচ্ছিল, আমাদের হলের ছাত্রলীগ প্রেসিডেন্ট আপু ছাত্রীদের সামনে গিয়ে তাকে কিছু কথা বলতে দেওয়ার অনুরোধ করলো। কিন্তু কেউ তাকে সেই সুযোগ দিল না। কারণ পলিটিক্যাল মেয়েদের কাছ থেকে আমরা আগেই জানতে পেরেছি, ছাত্রলীগ প্রেসিডেন্ট হল থেকে মেয়েদের বের হয়ে আন্দোলনে যাওয়ার পক্ষপাতী নয়। তাই ধরেই নিয়ে ছিলাম, প্রেসিডেন্ট এর কথা মেনে কোনো পলিটিক্যালভাবে সিট পাওয়া মেয়ে আজ রাতে হল থেকে বের হচ্ছে না। হতভম্ব হয়ে গেলাম তালা ভাঙার পর। সবার আগে বের হয়েছে পলিটিক্যাল মেয়েরাই, নেতার কথার ধার ধারে কে, যদি মনের ভেতর থেকে উলটো দিকের ডাক আসে?

পাশাপাশি দুটো হলের মেয়েরা যখন বিশাল মিছিল নিয়ে ক্যাম্পাসে ঢুকলো, তখন গার্ড অফ অনার দেওয়ার মতো করে রাস্তার দুই পাশে সারিবদ্ধভাবে আমাদের ভাই, সহপাঠীরা দাঁড়িয়ে ছিল। তারা তালি দিয়ে আমাদের অভিনন্দন জানাচ্ছিল। ক্যাম্পাসে ঢুকে আন্দোলনকারীদের চেহারা দেখে আমার আরো অবাক হওয়ার পালা। আমার ডিপার্টমেন্ট এর ছাত্রলীগ করা অধিকাংশ সহপাঠী ও বড় ভাই, আরো অনেক ছাত্রলীগের চেনা বড় ভাই, তারা সবাই দেখি আন্দোলনে। খুব আনন্দ লাগলো এই ভেবে যে, যাক, এবার ছাত্রলীগ বিরোধিতা করবে না, হামলা তো না বটেই।

হাহ! আফসোস…। রাত আনুমানিক ২ টার দিকে আমরা সব মেয়ে স্বোপার্জিত স্বাধীনতা চত্ত্বরে বসে স্লোগান দিচ্ছিলাম। ছেলেরা আমাদের ঘিরে দাঁড়িয়ে ছিল, বোঝা যাচ্ছিল, তারা খারাপ কিছুর জন্য প্রিপেয়ার্ড। সেই খারাপ কিছুটা কী, সেটা একটু পরেই বুঝতে পারলাম। রোকেয়া হলের সামনে গণ্ডগোলের বাতাস পাওয়া যাচ্ছিল। দেখলাম সেখানে ছাত্রলীগ কর্মী জড়ো করছে আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে। দারুণ অবাক হলাম! আজ তো আর তাদের পক্ষে কর্মী পাওয়া যাওয়ার কথা না। মোটামুটি সবাই আন্দোলনে।

তবে?

কী জানলাম ও দেখলাম, জানেন? নিজের বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মীর অভাবে ছাত্রলীগ ঢাকা কলেজের কর্মী নিয়ে এসেছে, সাথে আরো ভাড়া করা বাইরের পোলাপাইন।

আমাদের ক্যাম্পাসের ছাত্র-ছাত্রীদের, বহিরাগত ছাত্রলীগ দিয়ে ধাওয়া করিয়ে টিএসসিতে ঢোকানো হলো। যারা ধাওয়া করেছিল, তাদের হাতে রামদা, রড, ইট ছিল। বৃষ্টির মতো ইট পড়ছিল আমাদের গায়ে। হুড়োহুড়ি করে টিএসসিতে ঢোকার সময় ৭-৮ জন মেয়ে পড়ে যায়। পদপিষ্ট হয়ে তাদের যে কী অবস্থা হয়, তা না বললেও বুঝতে পারার কথা। এরা যে বেঁচে ফিরলো কী করে, সেটা ভেবেই আমি আশ্চর্য হয়ে যাই। তবে সবাই এতোটা লাকি না। আমার হলের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ বড় আপু, যার সাথে সম্পর্ক আপন বড় বোনের চেয়ে কম নিবিড় না, তার হাত ভেঙে যায় ইট লেগে। বান্ধবীর রুমের আরেক বড় আপুর মাথা ফেটে যায়। কীভাবে জানেন? তার জুনিয়র ভাইদের রড দিয়ে ওরা মারতে এসেছিল, ভাইদের আড়াল করতে গিয়ে। একটা মেয়েকে দেখে ওরা রড না মেরে ইট মারলো। আপুর মাথায় ষোলটা সেলাই পড়েছে।

এরপর আরেক সার্কাস শুরু হলো। বাইরে থেকে টিয়ারশেলের গন্ধ আসছিল টিএসসিতে। সবাই নাকে কাপড় চেপে আগুন ঘিরে বসে আম্বুলেন্সের জন্য ওয়েট করছিল, আহতদের হাসপাতালে নিতে হবে। সেই এম্বুলেন্স আর আসেই না, ঢামেক থেকে বলা হয়, “এই ঝামেলার মধ্যে সময় লাগছে ইত্যাদি ইত্যাদি”। এম্বুলেন্স শেষ পর্যন্ত এসেছিল আমাদের ‘মহামান্য’ প্রক্টর সাহেব টিএসসিতে আসার পর।

প্রক্টর এসেই বললেন, “দেখ, আমি লাইফ রিস্ক নিয়ে এসেছি!” জী স্যার! উদ্ধার করেছেন। যেখানে আমরা পুষ্পরাজির মধ্যে আরাম করছিলাম, সেখানে আপনি লাইফ রিস্ক নিয়ে এসেছেন, আমরা ধন্য।

ভিসির আলমারির ভাঙা ছবি দিয়ে যারা মায়াকান্না করছেন, তাদের কাছে প্রশ্ন, ভিসিকে একটা বিশাল বাসভবন দিয়ে ক্যাম্পাসে কেন রাখা হয়? উত্তর যদি হয়, ‘ছাত্রদের জন্য’– তাহলে কীভাবে তিনি শান্তিপূর্ণ ছাত্রদের উপর হামলা করার জন্য পুলিশকে ক্যাম্পাসে আসার অনুমতি দেন!!!!

ছাত্ররা পুলিশের জন্য ফুল নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিল, পুলিশ ফুলের উপর মুতে দিয়ে ছাত্রদের থেকে রক্ত নিল। যাদের ভিসির বাড়ির আলমারি বা ফ্রিজের খাবারের জন্য বুক ফেটে যাচ্ছে, তাদের কাছে প্রশ্ন, ঢাবি’র একজন শিক্ষার্থীর চোখ, শত শত শিক্ষার্থীর রক্তের চেয়েও কি ওই আলমারির মূল্য বেশি?

একজন ছাত্র মৃতপ্রায় হওয়ার পর ছাত্ররা ক্ষেপে গেলে, আপনারা তাদের জামাত-শিবির বলেন, বহিরাগত বলেন। আর মাত্র কয়েক ঘন্টা আগেই এই ছাত্ররাই যখন শান্ত ছিল, আর তাদের শান্তিকে মিডল ফিঙ্গার দেখিয়ে পেটোয়া বাহিনী যখন ঝাঁপিয়ে পড়েছিল, তখন কোথায় ছিলেন আপনারা? আর আপনাদের অসহিংসতা? আপনাদের মনুষ্যত্বহীন রাজকীয় চামচামোকে লাল-নীল-সবুজ-হলুদ-বেগুনী রঙের সালাম দিলাম।

রাতটা বিভীষিকার ছিল। কিন্তু বিশ্বাস করুন, আমাদের সবার মনের মধ্যে একটা প্রচণ্ড সাহস কাজ করছিল। কারণ আমাদের সবার জন্য আমরা সবাই ছিলাম। আমি ব্যক্তিগতভাবে ভাবতাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মরে গেছে, সবার মেরুদণ্ড প্লাস্টিকের হয়ে গেছে। সেই আমি যখন ব্লকের রান্নাঘরে মাথায় ওড়না দিয়ে চাল ধুতে আসা অসম্ভব নিরীহ মেয়েটাকে নিজের পাশে দাঁড়িয়ে শ্লোগান দিতে দেখি, ‘আমার ভাইয়ের রক্ত, বৃথা যেতে দেব না’– তখন গর্ব হয়। নিজের চিন্তা ভুল প্রমাণিত হওয়ার এতো যে আনন্দ, তা কে জানতো!!!

  • কার্টেসি - womenchapter.com 


Keep watch on banks

MCCI advises govt.


The Metropolitan Chamber of Commerce and Industry  Monday urged the government to pay special attention to banking sector management in the budgetary measures for next fiscal year.

“Almost all the banks are suffering from liquidity shortage. A big problem will arise unless this is overcome,” said MCCI Vice-President Golam Mainuddin at a discussion held at the National Board of Revenue headquarters.

The NBR organised the event to listen to the views and recommendations of the trade body as part of its exercise to consult with various stakeholders ahead of formulating the fiscal measures for the incoming year.

The MCCI suggestion comes at a time when the banking sector is encumbered by various loan scams and some banks are going through a cash shortage owing to lending above the permissible limit.

To rescue the banks, the government recently took a host of measures, undoing some of the contractionary intent of the monetary policy announced earlier in January.

The trade body also urged for cuts in import tariff on basic raw materials and intermediate goods to enhance competitiveness of domestic industries and abolition of the taxmen's discretionary authority.

It also suggested cuts in tax for high-income individuals from 30 percent to 25 percent and called for a hike in the tax-free income limit.

“We expect the government to frame an intelligent budget to face the ongoing problems faced by the economy,” Mainuddin said, adding that many consider the budgetary measures will be framed keeping in mind the upcoming election.

He went on to express hope that the government will prepare the budget taking into account the advancement of the country -- and not the election.

The trade body, citing the ballooning shortfall in revenue collection from target, said it has seen in the past that the revenue administration imposed higher tax burden on the firms and individuals under the Large Taxpayers' Unit to make up the deficit.

“This is a kind of punishment for compliant firms like us. Firms under the LTU consider it as unjust and it will discourage firms from coming under purview of the LTU,” the MCCI said. Businesses also wanted an end to the practice of double-taxing dividend income.

In response, NBR Chairman Md Mosharraf Hossain Bhuiyan said his office will focus on framing tax measures keeping the suggestion in mind.

He said he has already discussed the issue with Finance Minister AMA Muhith.

“We are trying to find out a formula. Tax should be payable only once.”

The tax administration will also work on easing the refund mechanisms for taxes paid in excess through the advance income tax, he said.

“Many have told me about the hassles in getting refunds. We try to adjust the refundable tax with the successive return. But when this cannot be adjusted, we allow refund subsequently. The process is a bit slow.” Protection for local industries will be ensured next fiscal year.

  • Courtesy: The Daily Star /Apr 09, 2018


WB doubts 7.65pc GDP growth estimate


The World Bank yesterday questioned the 7.65 percent economic growth estimate being peddled by the Bangladesh Bureau of Statistics for fiscal 2017-18, raising doubts over claims of robust expansion of the manufacturing sector and domestic demand.

It is being said that the manufacturing sector is growing faster than last year. But the Washington-based multilateral lender said production capacity has not increased from last year as private investment has remained almost stagnant.

“It is also difficult to believe that there was excess production capacity,” said Zahid Hussain, lead economist of the World Bank's Dhaka office, while presenting the 'Bangladesh Development Update' at a press conference in the capital.

The WB also raised doubts over the estimate of 7-8 percent growth of domestic demand. The possible explanations behind such spike in growth could be either growth of employment and labour income or a rise in remittance inflows.

“But we do not see any leap in any of these cases,” he said, citing the growth of employment in 2017 to be 2.2 percent and labour income 2.7 percent.

While the remittance inflows have recovered, the level of remittance still remains 2.7 percent less than in the July-March period of fiscal 2015-16.

“If consumer demand grows, where is the source of the growth?”

Last week, the BBS said the economy is on course for a 7.65 percent growth, driven by double-digit growth in manufacturing and construction sectors.

This is the third consecutive year that the economic growth was above 7 percent after years of languishing in the neighbourhood of 6 percent.

The WB said the latest growth estimate is exceeding Bangladesh's potential GDP growth of 6.5-6.6 percent.

While the economy has remained robust owing to rebound in exports and remittance and strong performance of the agriculture sector, the service sector, whose contribution to the GDP is about 52 percent, has slowed down this year.

Private investments are not taking off yet: it is projected to increase to 23.25 percent of GDP in fiscal 2017-18 from 23.1 percent a year ago, said the WB.

In addition, rising inflation, interest rates on loans, rising default loans, large external deficit resulting from soaring imports payments, revenue shortfall and pressure on expenditures for rising subsidies, the elections and spending on the Rohingyas have made macroeconomic outlook challenging.

“And the banking sector woes remain unattended,” Hussain said.

The multilateral lender went on to criticise the recent moves of the government to boost the banking sector.

“These are on balance expansionary actions that are hard to justify when growth is already above the potential, inflation is rising and the exchange rate is depreciating.”

Inequality increased

The WB also flagged the issue of slowing pace of poverty reduction although the economy is growing at a faster pace in recent years.

The annual pace of poverty reduction fell from 1.7 percentage points in 2005-10 to 1.2 percentage points in 2010-16, despite 6.1-6.5 percent GDP growth during the latter period.

At the same time, inequality increased.

“Welfare differences between the historically poorer west and the rest of the country have re-emerged,” Hussain said.

Looking forward, Bangladesh's outlook is positive for factors such as progress in key infrastructure projects, rising shipment of higher value-added garment items and prospect of a spike in remittance.

The multilateral lender suggested regulatory reforms in the banking sectors to address the poor risk practices, corruption and collusion.

It also called for a cautious monetary policy approach and exchange rate flexibility.

“Exchange rate flexibility and monetary policy independence can mitigate external risks. Increased caution on the monetary policy stance is needed given the concerns on rising inflation, surging global crude oil prices and fiscal slippage,” Hussain said.

Despite having floods twice impacting agriculture, Bangladesh maintained robust growth in the current fiscal year, said Qimiao Fan, country director of the WB.

But, actions are needed to address some emerging challenges.

For instance, tax revenue as a share of GDP remains among the lowest in the world.

“As the economy generates the wealth of a middle-income country, it also needs to generate the revenue for public services and investment of a middle-income country.”

The medium-term revenue strategy development process launched by the National Board of Revenue last week was a positive step in this regard, Qimiao said.

He was also critical of the government's high reliance on National Savings Certificates to meet a part of the budget deficit.

“The means of financing the deficit, mainly through issuance of National Savings Certificates, has become increasingly expensive. It also brings significant distortions in the financial sector, which is facing tightening liquidity and double-digit lending rates.”

He also stressed maintaining sound, credible data and monitoring systems to underpin evidence-based policy making.

These include not only data for poverty measurement and tracking, but also data on the national income accounts, inflation and the budget.
  • Courtesy: The Daily Star/ Apr 10, 2018

বিসিএসে তারুণ্য অবহেলিত

আলী ইমাম মজুমদার


দৈনিক প্রথম আলোয় মুনির হাসান তারুণ্যের ইশতেহারে একটি চমকপ্রদ তথ্য দিয়েছেন। তাঁর মতে, ‘প্রথম আলোর “তরুণেরা কী ভাবছে” শীর্ষক জরিপ জানাচ্ছে, ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন ৮২ শতাংশ তরুণ। আর ৬৩ শতাংশ জানেই না জীবনের লক্ষ্য কী। নিরুত্তাপ, হতাশার আবর্তে মনে হয় ঘুরপাক খাচ্ছে। জানতে চাইলে বলে, আমাদের কথা কেউ ভাবে না। আমরা কোথায় যাব?’ জরিপটি অতি সত্যি কথা সহজভাবে নিয়ে এসেছে। মুনির হাসান তরুণদের পথ ঘোরাতে বলেছেন নিজের পথে। অত্যন্ত যৌক্তিক। তবে এই সমাজে তারুণ্য অনেক ক্ষেত্রেই উপেক্ষিত এবং এর প্রমাণও রয়েছে ভূরি ভূরি। এমনকি সেই তরুণদের মধ্যে বড় ধরনের প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে যাঁরা সাফল্যের শীর্ষে রয়েছেন, তাঁরাও অনেক সময় উপেক্ষিত।

৩৬তম বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের (বিসিএস) নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি জারি হয় ২০১৫ সালের ৫ আগস্ট। ২ লাখের অধিক তরুণ আবেদন করেছিলেন। টানা ২৬ মাস সময় নিয়ে সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) ২ হাজার ৩২৩ জনকে বিভিন্ন ক্যাডারে নিয়োগের সুপারিশ করে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে সেই সুপারিশ পাঠানো হয় ২০১৭ সালের ১৭ অক্টোবর। সুপারিশপ্রাপ্তদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও স্বভাবচরিত্র যাচাই করতে হবে। এগুলো সম্ভব দুই মাসে। তবে প্রক্রিয়া ধীরে ধীরে চললেও শেষ হয়নি অদ্যাবধি। ধারণা করা হয়, মাস দুয়েকের মধ্যে তাঁরা কাজে যোগ দিতে পারলেও কপাল ভালো। এমনিতে হাল ঠিকানায় নথিটির অবস্থান প্রায় ছয় মাস। আরও দুই মাস পর যদি নিয়োগও হয়, তবে বিজ্ঞপ্তি জারি থেকে চাকরি পেতে তাঁদের সময় যাবে ৩৪ মাস। অথচ চাকরিপ্রার্থীরা ইতিমধ্যেই তারুণ্যের একটি মূল্যবান সময় হারিয়ে ফেলেছেন। আর এর কোনোটার দায় তাঁদের নয়। তাহলে তাঁদের নিয়ে কেউ ভাবে না-এ অভিমানী উক্তিকে কি বাড়াবাড়ি বলা যাবে?

বিসিএসে আবেদন করার বয়সসীমা ২১ থেকে ৩০। প্রাধিকার কোটাধারীদের জন্য দুই বছর বেশি। আর সে বয়সসীমা ধার্য করা হয় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি যে মাসে প্রকাশিত হয়, তার প্রথম দিনটি ধরে। এ ক্ষেত্রে ২০১৫ সালের ১ আগস্ট। সেদিন যাঁদের বয়স ৩০ ছিল, চাকরিতে যোগ দেওয়ার সময় তা হবে ৩৩। তাহলে চাকরি করবেন ২৬ বছর। সাধারণত ৩২ থেকে ৩৫ বছর করার কথা। এমনকি ২৩ বছর বয়সেও যদি কেউ থাকেন (এখন যা বিরল), তাহলে নিয়োগ পাবেন ২৬ পাড়ি দিয়ে। চাকরি করবেন ৩৩ বছর। আর নিয়োগপ্রক্রিয়াটাও যদি ভারত ও পাকিস্তানের মতো বছরেরটি সে বছরেই শেষ হতো, তাহলে আরও দুই বছর চাকরি করতেন। তারুণ্যের সময়টা আমরা নস্যাৎ করে দিচ্ছি অনেক অনেক প্রক্রিয়ায়। সর্বত্র না থাকলেও সেশনজটের অভিযোগ আছে কিছু উচ্চশিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। তাই কারও কারও পড়ালেখার পর্ব শেষ হয় না ২৫-২৬ বছরের আগে। অথচ একসময় তা ২১ থেকে ২৩ বছরে শেষ হয়ে যেত। চাকরিতে, বিশেষত উচ্চতর সিভিল সার্ভিসে আসতেন ২৩ থেকে ২৫ বছরের মধ্যে। তারুণ্যের সেরা সময় রাষ্ট্রকে তাঁরা দিতেন। আর এখন আসেন কার্যত সে সময়ের অনেকটা পাড়ি দিয়ে।

সহজ কাজগুলো সহজে হয় না কেন, এটা অনেকে বুঝতে অক্ষম। আমরা রীতি ও পদ্ধতিকে ক্রমান্বয়ে জটিল থেকে জটিলতর করছি। ব্রিটিশ ভারতে আইসিএসে নিয়োগ হতো স্বভাবচরিত্র সম্পর্কে পুলিশের গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনে। সে ধারাই গত কয়েক বছরের আগপর্যন্ত চলছিল। এরপর যুক্ত করা হয় অন্যান্য সংস্থা। এখন পুলিশ ও জেলা প্রশাসকেরা এগুলো যাচাই করছেন। দুটোই যুগপৎ চলতে পারে। আর প্রার্থীরা বিভিন্ন জেলা বা মহানগরীর বলে সময় খুব একটা লাগার কথা নয়। তা ছাড়া এই অনুসন্ধান-প্রক্রিয়ায় প্রার্থীদের কিছু করণীয় নেই বিধায় দ্রুতই হতে পারে স্বাস্থ্য পরীক্ষা। অনুসন্ধান প্রতিবেদনগুলো যাচাই করে নিয়োগ প্রদানের জন্য নথি তৈরিতেও দীর্ঘ সময় নেওয়ার কথা নয়।

অন্যদিকে জানা যাচ্ছে, প্রার্থীদের স্বভাবচরিত্রের পাশাপাশি রাজনৈতিক পরিচয়ও বিবেচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ ধরনের বিবেচনায় পিএসসির সুপারিশ পেয়ে গত কয়েকটি বিসিএসে কিছু প্রার্থী চাকরি পাননি। অথচ সংশ্লিষ্ট প্রার্থীর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রবিরোধী কার্যক্রম বা ফৌজদারি অপরাধের সংশ্লিষ্টতা থাকলেই তাঁকে সরকারি চাকরি থেকে বঞ্চিত করা যায়। তাঁর কোনো আত্মীয়স্বজন কোন দল-মতের লোক, এ দায় প্রার্থীর ওপর বর্তায় না। সরকারবিরোধী ছাত্ররাজনীতির সঙ্গে জড়িত থেকেও প্রার্থীরা পাকিস্তান সময়কালে উচ্চতর সিভিল সার্ভিসে চাকরি পেয়েছেন। বাংলাদেশে পেয়েছেন সিকি শতাব্দী আগেও। এ বিষয়টি কর্তৃপক্ষ সহৃদয়তার সঙ্গে দেখবে, এরূপ প্রত্যাশা রইল। এখানে উল্লেখ্য, সময়ক্ষেপণ যাতে না হয়, তার জন্য ভারত পুলিশি তদন্ত অপেক্ষমাণ রেখেই উচ্চতর সিভিল সার্ভিসে নিয়োগ দিচ্ছে। বিরূপ কোনো প্রতিবেদন এলে তাঁকে বাদ দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। তবে তা আসে কালেভদ্রে।

তারুণ্যকে কাজে লাগানোর আবশ্যকতা সবারই জানা। মানুষের জীবনের প্রতিটি দিন দ্রুত সামনের দিকে এগোতে থাকে। একপর্যায়ে তারুণ্যের ছোঁয়ায় সে টগবগ করে। আর সেই তারুণ্য পেছনে যেতে খুব সময় নেয়, এমনও নয়। সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হলেও বয়স একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। প্রকৃতির এ নিয়মকে উপেক্ষা করা যায় না। বিসিএসে গোটা দুই ক্যাডারে (পুলিশ ও আনসার) দৈহিক সামর্থ্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে শুরুর দিনগুলোতে এ গুরুত্ব অধিক। তাদের প্রশিক্ষণ একাডেমিতে ২৩ আর ৩৩ বছরের তরুণের পারদর্শিতা এক রকম হওয়ার কথা নয়। এ নিয়ে আমরা কিছুটা বয়সী তরুণদের দোষ দিতে পারি না। যে ব্যবস্থা তাঁকে এর আগে চাকরি দিল না, সেই দায়ভার যাবে যাঁরা এ ব্যবস্থা পরিচালনার সঙ্গে জড়িত, তাঁদের ওপর।

এ ছাড়া মানুষের শেখারও একটা বয়স আছে। বিসিএসে যাঁরা চাকরি পান, তাঁদের মধ্যে কম বয়সীরা দ্রুত ধরে নিতে পারেন নিয়মনীতি। বয়স কিছুটা কাছাকাছি হলে নিজেদের একই পরিবারের সদস্য বলে বিবেচনায় নেন। থাকে সহমর্মিতা, প্রেরণা, উদ্দীপনা ও পেশার প্রতি সম্মানবোধ। আমরা বহু ক্ষেত্রেই পরিবর্তন এনেছি। তাহলে চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে এটা পারছি না কেন-তা দুর্বোধ্যই ঠেকছে। কেন একটি চাকরির নিয়োগ পরীক্ষা এত সময় নেবে আর কেনই-বা সেই পরীক্ষায় সফলঘোষিত ব্যক্তিরা মাসের পর মাস নিয়োগপত্রের অপেক্ষায় থাকবেন?

তারুণ্যের ইশতেহারেই মুনির হাসান লিখেছেন, ‘দেশের ৪৭ শতাংশ গ্র্যাজুয়েট চাকরি পাচ্ছে না।’ আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) তথ্যানুসারে দেশে বেকার ২৭ লাখের মতো। পত্রপত্রিকায় নিয়মিত বিভিন্ন স্থানে বহু পদ শূন্য রয়েছে বলে জানা যায়। সরকার আমাদের দেশে এখনো একক বৃহত্তম চাকরিদাতা। এই সরকারি চাকরিগুলোর শূন্যপদ পূরণ একটি দুরূহ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। নয় মাসের মুক্তিযুদ্ধে দেশ স্বাধীন হয়েছে। দেশের সর্বোচ্চ আইন সংবিধান প্রণীত হয়েছে নয় মাসে। আর আমরা বিসিএস পরীক্ষাকে একটি সময়াবদ্ধ সীমায় আনতে পারছি না স্বাধীনতার পর থেকে। কয়েকটি বিশেষ বিসিএস ব্যতীত সব কটিতেই বড় রকম সময় চলে যায়। একটি তো পাঁচটি বছর নিয়েছে। দেশের যে ৪৭ শতাংশ গ্র্যাজুয়েট চাকরি পাচ্ছেন না বলে দাবি করা হয়, ৩৬তম বিসিএসে পিএসসির সুপারিশকৃত ২ হাজার ৩২৩ জন তাঁদেরই অংশ। আইএলওর ২৭ লাখের হিসাবেও তাঁদের থাকার কথা। ২৬ মাসে হলেও তাঁরা তাঁদের উপযুক্ততা প্রমাণ করেছেন। আরও কিছু পদ্ধতিগত কার্যক্রমের অপেক্ষায় কেটে গেছে ছয় মাস। তাঁদের তারুণ্যের মূল্যবান সময় যেটা গেল, সেটা দেশ আর পাবে না। তবে আগামী দিন থেকে এমন ব্যবস্থাটি পরিবর্তনের একটি প্রত্যয়ী পরিকল্পনা নেওয়া প্রয়োজন। সময়ের প্রেক্ষাপটে এটা খুবই যৌক্তিক প্রত্যাশা।

  • আলী ইমাম মজুমদার: সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব
  • Courtesy: Prothom Alo/ Apr 09, 2018

কোটা সংস্কার আন্দোলনে শতাধিক আটক


ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগ আর পর্যবেক্ষণ কক্ষে পা ফেলারও জায়গা নেই। কাঁদানে গ্যাসের ঝাঁজালো গন্ধে নাক চেপে ধরে আছেন অনেকেই। আতঙ্ক সবার চোখে মুখেই। সোমবার ভোরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল প্রাঙ্গণে অভিযান চালিয়ে কয়েক জনকে ধরে নিয়ে যায় পুলিশ।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত দুই দিনে শতাধিক শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়েছে। তবে পুলিশের রমনা বিভাগের উপকমিশনার মারুফ হোসেন সরদার প্রথম আলোকে বলেন, তবে উপাচার্যের বাসায় হামলায় জড়িত হিসেবে যাঁদের শনাক্ত করা হবে, তাঁদের ছাড়া বাকিদের ছেড়ে দেওয়া হবে। সোমবার রাত পর্যন্ত বিক্ষোভ, সংঘর্ষের ঘটনায় কোনো মামলা হয়নি বলে তিনি জানান।

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনের গত দুদিনে ঢামেক হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন ১৮৬ জন। যার মধ্যে দুজনকে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক মো. আলাউদ্দিন। দুদিনের আন্দোলন ঠেকাতে গিয়ে আহত হয়েছেন অন্তত ১০ জন পুলিশ সদস্য ও কর্মকর্তা। তাঁদের বারডেম ও রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

রোববার বিকেল থেকে আন্দোলন শুরু হলেও রাত একটার পর থেকে ঢামেক হাসপাতালে আসতে থাকে একের পর এক শিক্ষার্থী। কারও পায়ে আঘাত, কারও মাথা ফেটে গেছে। কারও শরীরে ছররা গুলির আঘাত। উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শিক্ষার্থীর মাথায় আঘাত করা হয়েছে। কারা তাঁদের মাথায় আঘাত করেছেন, তা বলতে পারছিলেন না তাঁরা। হাসপাতালে বেশ কয়েক জন নারী শিক্ষার্থীকেও প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। রোববার রাত আড়াইটার পর থেকে শিক্ষার্থীরা ছাত্রলীগের মারধরে আহত হয়ে হাসপাতালে আসতে থাকেন। তাঁরা বলেন, বহিরাগত কিছু ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীর হামলার শিকার হয়েছেন তাঁরা। হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গেলেও শিক্ষার্থীরা তাঁদের নাম বলতে চাচ্ছিলেন না।

‘অজ্ঞাত’ বা ‘অজানা’ নাম দিয়ে তাঁদের জন্য টিকিট কাটে তাঁদের বন্ধুরা। এমনকি কোটার পক্ষের আন্দোলনকারী নেতাদের কয়েক জন ঢাকা মেডিকেলে কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে গিয়ে আহতদের তালিকা করার সময় তাঁদের কাছেও নিজেদের নাম বলতে চাননি আহত শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীরা আশঙ্কা করেন, হাসপাতালে নাম লেখালে পরে পুলিশ তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করবে।

একজন আহত শিক্ষার্থী তালিকার জন্য আসা আন্দোলনকারী নেতাকে বলেন, ‘যে সরকারি চাকরির জন্য আন্দোলনে নামলাম, এখন পুলিশের খাতায় নাম উঠলে তো সেটি আর জুটবে না। প্লিজ আমার নাম লিখবেন না।’

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগ আর পর্যবেক্ষণ কক্ষটি ভরে যায় আহত শিক্ষার্থীদের দিয়ে। গভীর রাত থেকে সোমবার ভোর পর্যন্ত হাসপাতালের বারান্দা, বাইরের প্রাঙ্গণ সব জায়গায় কেবল শিক্ষার্থীরাই জড়ো হয়ে ছিলেন। তাঁদের কয়েকজন বলেন, এখন আন্দোলন থেমে গেলেও তাঁরা ছাত্রলীগের ভয়ে হলে ফিরতে পারছেন না। হলে ফিরে কয়েক জন ছাত্রলীগের মারধরের শিকার হয়ে আবার হাসপাতালেই ভর্তি হয়েছেন। রাত তিনটার দিকে একবার পুলিশের ধাওয়ায় হুড়মুড় করে ঢাকা মেডিকেলের ভেতরে ঢুকে পড়ে বাইরে থাকা লোকজন। হাসপাতালে এ সময় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ভোর পৌনে ছয়টার দিকে ঢাকা মেডিকেলে একসঙ্গে পুলিশের ১০টি গাড়ি আসে আশপাশ থেকে সবাইকে সরিয়ে দেয়। এরপর ঢামেক হাসপাতালের ভেতরে অভিযান চালিয়ে বেশ কয়েক জনকে ধরে নিয়ে যায় পুলিশ। কার্জন হল এলাকায় আন্দোলনকারীরা অবস্থান নেওয়ায় সেখানে প্রচুর কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে পুলিশ। কাঁদানে গ্যাসের ঝাঁঝ ছড়িয়ে পড়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এলাকায়। মেডিকেলের প্রাঙ্গণে লোকজনকে আগুন জ্বালিয়ে গ্যাসের ঝাঁঝ নিবারণ করতে দেখা যায়।
  • Courtesy: Prothom Alo Apr 10, 2018

বেগম জিয়া মধ্যযুগীয় কায়দায় বন্দি

বেগম খালেদা জিয়াকে মধ্যযুগীয় কায়দায় বন্দি করে রাখা হয়েছে। ডিভিশন দেওয়া হলেও বিছানা-বালিশ ও আসবাবপত্র অত্যন্ত নিম্নমানের। একজন অসুস্থ মানুষ হিসেবে তার খাবারের মান নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। কেউ তার এই বন্দি অবস্থাকে বীভৎস নির্যাতনের প্রতীক কনসানট্রেশন ক্যাম্পের সঙ্গে তুলনীয় বলে মনে করছেন। খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসে এ প্রশ্ন তোলেন বিশিষ্ট চিকিৎসক সমাজ।

নিন্মে প্রেসকনফারেন্সের পূর্ণ বক্তব্য দেওয়া হলোঃ

প্রিয় ও সন্মাানিত সাংবাদিক ভাই ও বোনেরা, 
আপনারা অবগত আছেন যে বিগত কয়েক বছরে দেশে বিরাজমান রাজনৈতিক সংকট গেল দু’ মাসে ক্রমশ ঘনীভূত হতে শুরু করেছে। একটি মহাদুর্যোগ সমাগত বলে অনেকেই আশংকা করছেন। বাংলাদেশের তিন বারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী, গণতন্ত্রের ইতিহাস ও ভোটের রাজনীতিতে জনপ্রিয়তায় বিশ্ব ইতিহাসে ক্রমাগত পরাজয়হীন সর্বোচ্চ ২৩ টি আসনে বিজয়ের অনন্যদৃষ্টান্ত সৃষ্টিকারী, গণমানুষের অবিসম্বাদিত নেত্রীও দেশনেত্রী উপাধিপ্রাপ্ত বি এন পি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে জিয়া অরফানেজ  ট্রাষ্ট মামলায় সাজা দিয়ে কারাগারে নিক্ষেপ করা হয়েছে। বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষ জোর দাবী করছেন এই মামলা মিথ্যা, বানোয়াট,  প্রহসনমূলক ও প্রকৃত বাস্তবতায় সাজাপ্রাপ্তের সংশ্লিষ্টতার প্রমাণহীন। 

বিগত দশকে দেশে লক্ষ লক্ষ কোটি টাকার সীমাহীন দুর্ণীতি, ব্যাংক কেলেঙ্কারী ও অর্থ লোপাটে সব কর্তৃপক্ষের কার্যত নীরব থাকার প্রেক্ষিতে দেশের জনগণও বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষের এই দাবীকে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র ভাবতে সাচ্ছ্বন্দ বোধ করছে। আপনারা জানেন যে এই বর্ষিয়ান ও অসুস্থরাজনীতিবিদের রাজনীতিতে অভিষেক ঘটে রাজনৈতিক দুবৃত্তায়ন ও স্বৈরাচারের কষাঘাতে বিক্ষত বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতেস্বৈরতন্ত্রকে রুখে দাড়াবার গণ-আন্দোলনে সফল নেতৃত্ব দিয়েগণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠাকরার মাধ্যমে। ’৯১ সালে রাজনীতিতে ও সংসদে নবাগত হিসাবে প্রধানমন্ত্রী হয়েস্বৈরতন্ত্রের ছত্রছায়ায় মহীরূহ হয়ে বেড়ে ওঠা  সামাজিক ও আইনশৃঙ্খার চরমবিশৃঙ্খলা কঠোর হাতে দমন করে রাষ্ট্রজীবনের সকল ক্ষেত্রে শৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠায় তার অবদান জাতিকে অস্থিরতা ও নিরাপত্তা হীনতার এক সঙ্কুল অবস্থা থেকে উদ্ধার করে। 

অর্থনৈতিক উন্নতির সূচনাকরে জাতীয় আয়ের প্রবৃদ্ধিতে বহু দশকের অচলায়তন ভেঙ্গে যুগান্তকারী নতুন অর্থনৈতিক যুগের সূচনা তিনিই করেন। তাঁর তিন দশকের ভূমিকা বাংলাদেশকেআজ এক্ঈর্ষাজনক উন্নতির অভিযাত্রায় শামিল করেছে।  আজকের সমৃদ্ধ বাংলাদেশের অন্যতম প্রধাণ রূপকার ও চালক তিনিই। 

সেই মানুষটির সাথে কারাগারেনিদারুণ অমানবিক ও মানবেতর আচরন করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠছে নানা মহল থেকে।জানা যায় তাঁকে একটি সূর্যালোকহীন, নির্জন, স্যাঁতসে্যঁতে পুরোনো ও বসবাস অযোগ্য ভবন-বহুদিন ধরে যেটি রক্ষণাবেক্ষণহীন ও সাধারণ কয়েদিদের জন্যেও কয়েক বছর আগে পরিত্যক্ত ঘোষনা করে সকল বন্দিকে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে তেমনি একটি স্থানে মধ্যযুগীয় কায়দায় বন্দি করে রাখা হয়েছে। ডিভিশন দেওয়া হলেও বলা হচ্ছে যে তাঁর বিছানা বালিশ ও আসবাবও অত্যন্ত নিন্মমানের ও ব্যবহার অযোগ্য। একজন অসুস্থ মানুষ হিসাবে তাঁর খাদ্য-খাবারের মান নিয়েও নানা প্রশ্ন উঠছে। কেউ কেউ তাঁর এই বন্দি অবস্থাকে বিভৎস নির্যাতনের প্রতীক কনসানট্রেশন ক্যাম্পের সাথে তুলনীয় বলে মনে করছেন। তাঁর পরিবারের অন্যান্যদের মত তাঁকেও শারিরীক ও মানসিক ভাবে নির্যাতন করে এক শোচনীয় পরিনতির দিকে ঠেলে দেওয়াই প্রকৃত উদ্দেশ্য সে বিষয়ে জনমনের সন্দেহ প্রকট হচ্ছে বলে অভিযোগ আসছে। 

ধারণা করা যেতে পারে যে এই পরিবেশে একজন সুস্থ মানুষেরও নানা মারাত্মক ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে পড়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়্। সেক্ষেত্রে তাঁরমত আগে থেকেই বয়সজনিত নানা রোগব্যাধিতে আক্রান্ত একজন বর্ষিয়ান নারীর এই নির্জন মানবেতর করাবাস স্বাস্থ্য ও স্বাভাবিক জীবনযাপনের জন্য কতটা ক্ষতিকারক হতে পারে তা’ সাধারণ মানুষকেও গভীরভাবে ভাবিয়ে তুলেছে। এই পিচ্ছিল স্যাঁতসে্যঁতে পরিবেশে যে কোন সময়ে পড়ে গিয়ে তাঁর হাটু, উরুসন্ধি, হাত ও মেরুদন্ডের হাড় ভাঙ্গা সহ মস্তিষ্ক ও স্পাইনাল কর্ডে আঘাত জনিত পক্ষাঘাত রোগ ঘটতে পারে। নির্জন, নিঃসঙ্গ, নিরাপত্তাহীন পরিবেশের কারনে নিদ্রাহীনতা, উদ্বেগ, বিষন্নতা সহ নানা মানসিক রোগাক্রান্ত হয়ে পড়ার সম্ভবনা বহুগুন বেড়ে গেছে।  বিরূপ, নিপীড়নমূলক পরিবেশ ও অস্বাভাবিক মানসিক চাপের ফলে তাঁর আকস্মিক হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ারও ঝুঁকিও বৃদ্ধি পেয়েছে। পুরোনো, পরিত্যক্ত দূষণযুক্ত ভবনের বিষাক্ত পরিবেশে তাঁর মারাত্মক ঔষধ-প্রতিরোধী জীবানুদ্বারা ফুসফুসের সংক্রমন বা নিউমোনিয়ার সম্ভবনা বেশ প্রবল হয়ে উঠতে পারে।এ ছাড়াও এই সূর্যালোকহীন স্যাঁতসে্যঁতে পরিবেশে তাঁর ভয়ংকর মাত্রার ভিটামিন-ডি ও ক্যালশিয়ামের শুন্যতা দেখা দিতে পারে যা’ তার হাড়ের জন্যে মারাত্মক পরিণতি ডেকে আনতে পারে। 

এই বয়স ও স্বাস্থ্যগত অবস্থায় ব্যাক্তিগত পরিচর্যার বিষয়টি সুচিকিৎসার স্বার্থেই গুরুত্ববহ হয়ে ওঠে এবং তা’ কেবল পারিবারিক ও ব্যাক্তিগত উদ্যোগেই পূর্ণভাবে নিশ্চিত করা সম্ভব। কারাগার বিশেষ করে পুরোনো, পরিত্যক্ত দূষণযুক্ত ভবনে স্বাস্থ্য ও জীবন উভয়ই অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়তে পারে।

বাস্তবে ঘটেছেও তাই। বেগম খালেদা জিয়া কারাগারে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। এই কারাগারের বসবাস অযোগ্যতা ছাড়াও নিয়মিত চিকিৎসার কোনই সুযোগ সুবিধা নেই। হেফাজতে সাম্প্রতিক বছর কালে সাড়ে ছয় শতাধিক মৃত্যুর খবর ইতোমধ্যে নানবিধ শংকা বাড়িয়েছে। 

আজকে বি এন পি, তার অঙ্গ-সংগঠনের অগণিত নেতাকর্মীর সাথে সাথে লক্ষকোটি দেশবাসী বেগম খালেদা জিয়ার অসুস্থতার সংবাদে দুঃখভারাক্রান্ত ও দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। ইতোমধ্যে অসুস্থতার কারণে কারা কর্তৃপক্ষ তাঁকে একটি মামলার হাজিরায় নিতে না পারায় বেগম খালেদা জিয়ার গুরুতর অসুস্থতার  বিষয়টি সকল সন্দেহ ঘুচিয়ে পরিষ্কার হয়ে পড়েছে। সরকারও বিষয়টি স্বীকার করে নিয়ে তার নিজস্ব পছন্দের৪-সদস্যের একটি মেডিকেল বোর্ড দিয়ে তাঁর স্বাস্থ্য পরীক্ষার ব্যবস্থা নেয়। গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হলো বেগম খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে জটিল নানা রোগে ভুগছেন। ইতোপূর্বে তাঁর দুই হাঁটু প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। সম্প্রতি তিনি লন্ডনে চোখের অপারেশনও সম্পন্ন করেছেন। তিনি কোন সাধারণ রোগী নন। চিকিৎসকদের পরিভাষায়  তিনি একজন বিশেষ পরিচর্যা সাপেক্ষ রোগী। সে হিসাবে সুচিকিৎসার স্বার্থে তাঁর একান্ত ব্যাক্তিগত পরিচর্যার সকল সুবিধা নিশ্চিত করা সকল সভ্য, গণতান্ত্রিক ও মানবিকতাবোধসম্পন্ন জাতির কর্তব্য। এর অভাবে, সম্প্রতি তিনি ঘাঁড়, মেরুদন্ড সমস্যা আক্রান্ত হয়ে পড়েছেন। 

তাঁর এই দীর্ঘকালীন রোগ অবস্থা কেবলমাত্র দীর্ঘকাল তাঁর চিকিৎসায় অভিজ্ঞ ব্যাক্তিগত চিকিৎসকদেরই ভালোভাবে জানা আছে। নতুন কোন চিকিৎসক দলের পক্ষে তাঁর সম্পূর্ণ অবস্থা এক নজরে ও এক নিমেষে অনুধাবন ও নির্ণয় করা একেবারেই অবাস্তব কল্পনা। ফলে, সরকার বেগম খালেদা জিয়ার প্রতি সহানুভূতিশীল  ও  তাঁর চিকিৎসার ব্যাপারে যতœবান প্রমাণ করতে হলে  তাঁর ব্যাক্তিগত চিকিৎসক দলের ভূমিকা উপেক্ষা করা সমীচিন নয়। বিষয়টিউপেক্ষা করলে সকল পরিণতিতে সরকারের দায়ী হবার প্রমাণ মিলবে এবং তা’ না করলে দায় লাঘব হবে।

সঙ্গত কারনে, সরকারের পছন্দেরনতুন চিকিৎসক-দল নিয়োগ করায়এই নতুন দল একেবারেই প্রাথমিক পর্যায় থেকে বেগম খালেদা জিয়া রোগ অবস্থা বোঝার চেষ্টা নেন। দীর্ঘ কালের রোগ ইতিহাস ও উপাত্ত তাদের জানা নেই। বর্তমানে তাঁর বর্তমান রোগাবস্থা বেশ অগ্রসর। এই স্তরে রোগমূল্যায়নে পুরনো তথ্য-উপাত্তের গুরুত্ব অপরিসীম। ফলে এই নতুন চিকিৎসকদল প্রাথমিক অনুসন্ধানে সমর্থ কিছু মামুলী এক্স-রে ও রক্ত-পরীক্ষার পরামর্শ দেন। 

চিকিৎসক না হয়েও জনসাধারণ খুব ভালোভাবেই জানেন যে এই সকল মামুলী পরীক্ষা বেগম খালেদা জিয়ার বর্তমান অগ্রসর রোগ অবস্থা ও অতিসুক্ষ সমস্যাগুলো কোন ক্রমেই নির্ণয় করতে পারবে না। সিটি-স্ক্যান, এম-আর-আই ইত্যাদি আধুনিক পরীক্ষা-নিরিক্ষা ছাড়াও নিবিড় পর্যবেক্ষণ এ ক্ষেত্রে রোগনির্ণয় ও উপশমে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। এ ছাড়াও বার বার জনগণের ভোটে নির্বাচিত ও অতি জনপ্রিয় একজন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক গুরুত্বসম্পন্ন বর্ষিয়ান ব্যাক্তির সাধারণ স্বাস্থ্যসমস্যা নির্ণয়ে যে পরীক্ষাগুচ্ছ সম্পন্ন করার কথা এই  নতুন চিকিৎসকদল সে ব্যাপারেও কোন পরামর্শদেন নি বা উদ্যোগ গ্রহণ করেননি। ফলে বেগম খালেদা জিয়ার লিভার, কিডনী, ফুসফুস, হৃদপিন্ড, অস্থির শক্তি নির্ণয় ইত্যাদি জীবন ও সুস্থতা সম্বন্ধীয় অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের পরীক্ষা-নিরিক্ষা না হওয়াটা একজন চিকিৎসক হিসাবে রোগীকে অবহেলা না করা’ আচরণের নমুনা হিসাবে গ্রহণ করা যায় না।বিষয়টি স্বাস্থ্য সচেতন ও অভিজ্ঞ জন সকলেই এ চোখে দেখতে স্বস্থি বোধ করবেন। 

ফলে অনেকেরই  বিশ্বাস যে বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য পরীক্ষার প্রশাসনিক তৎপরতার বিষয়টি যে এক রকম লোক দেখানো, হঠকারিতামূলক ও জনবিভ্রান্তি সৃষ্টির সুপরিকল্পিত প্রচেষ্টা তা’ বুঝতে জনসাধারণের কষ্ট হওয়ার কথা নয়। বিষয়টি আরও পরিস্কার মনে হয় যখন গত ৭ এপ্রিল কোন রকম পূর্ব প্রস্তুতি ছাড়া, একরকম হুটকরে তাঁকে ইতোপূর্বে সরকারী চিকিৎসক দলের দেওয়া মামুলী এক্স-রে ও রক্ত-পরীক্ষার জন্য মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে আনা হয়। অভিযোগ  উঠেছে এ সময়ে একজন বিশেষ শারীরিক চাহিদাসম্পন্ন রোগীর গাড়ী থেকে নামা ও সাধারণ চলাচলের উপযুক্ত ন্যূনতম সুবিধেও তাঁর জন্যে প্রস্তুত রাখা হয়নি। ফলে সকল সক্ষমতা সঞ্চয় করে তাঁকে সামান্য পরীক্ষা-নিরিক্ষার জন্যে পথ পরিক্রমা দীর্ঘ করা হয় ও তা’ হেঁটে পাড়ি দিতে এক রকম বাধ্য করা হয়। এই সময় তাঁকে তাঁর ৪-জন ব্যাক্তিগত চিকিৎসকদের সাথে সাক্ষাৎ করার সরকারী অনুমতি থাকলেও কার্যত সরকার ও তাঁর সাথে থাকা প্রশাসনের লোকজন তাঁকে এই প্রত্যাশিত সুযোগ থেকে বঞ্চিত করেন। 

কার্যত এই ব্যাক্তিগত চিকিৎসকগন যথাস্থানে উপস্থিত থাকলেও তাদেরকে মামুলী সৌজন্য বিনিময়ের বাইরে চিকিৎসা বিষয়ে কোন শারীরিক পরীক্ষা-নিরিক্ষা করার সুযোগ দেওয়া হয়নি। 

উপযুক্ত স্বাস্থ্য সেবা সংবিধান বলে একটি মৌলিক অধিকার এবং এ বিষয়ে বন্দি অবন্দি নাগরিক অবস্থা নির্বিশেষে সরকারের বিশেষ দায়িত্ব রয়েছে। বিশেষ করে বন্দি অবস্থায় সকল দায় সরকারের উপর বর্তায়। 

জানা যায় যে জেল-কোড অনুযায়ী যে কোন বন্দি তার বিশেষ স্বাস্থগত চাহিদার কারনে পছন্দে চিকিৎসকের সেবা পাওয়ার অধিকার রাখেন। তবে এ ক্ষেত্রে পুরো ব্যাপারটাই একটি প্রহসনে পরিণত হয়েছে বলেজনমনে আস্থা জন্মেছে। বেগম খালেদা জিয়ার অসুস্থতার বিষয়ে সরকার সদিচ্ছা ও আন্তরিকতা প্রকাশে চরম ব্যর্থ হয়েছে বলে নানা মহলের  বিশ্বাস।  পাশাপাশি ধারাবাহিক বিষয়াবলী জনমনে বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য বিষয়, জীবন ও রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে নানা পক্ষের ব্যাপক ও বহুমুখি ষড়যন্ত্র ও অভিসন্ধি বিষয়ে গভীর উৎকন্ঠা জন্মানোর সুযোগ করে দিয়েছে ।

অনেকের ধারণা সংশ্লিস্ট সকল মহল বিষয়টি আড়াল করা ও ভুলে থাকার সকল চেষ্টা করলেও জন সাধারণের স্মৃতিতে বিষয়টি প্রজ্জ্বল হয়ে আছে যে বেগম খালেদা জিয়া মহান স্বাধীনতারঅকূতভয় ঘোষনা প্রদাণকারী, মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর সেনানী ও সর্বোচ্চ খেতাবপ্রাপ্ত সেক্টর কমান্ডার, দেশের সামরিক বাহিনীর সাবেক প্রধান, সাবেক সফল  রাষ্ট্রপতি, বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠাতা, আধুনিক, উদীয়মান ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশের রূপকার, সার্ক নামক আঞ্চলিক সহযোগিতার স্বপ্নদ্রষ্টা ও জনপ্রিয়, জননন্দিত রাষ্ট্র নায়ক, অবিস্মরনীয় ব্যাক্তিত্ব মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমানের সহধর্মিনী। দেশের ঘটনা ও ষড়যন্ত্র বহুল রাজনীতিতে তিনিই রাষ্ট্রপতির শাসনের বদলে বহু আকাংখিত সংসদীয় গণতন্ত্রেরপুনঃপ্রবর্তন করেন। 

আপোষহীন নেত্রী হিসাবে অনঢ় আদর্শে অবস্থান নিয়ে এবং কঠোর মনোবল ও দেশপ্রেমের প্রকাশ ঘটিয়ে দেশকে স্বৈরাচার মুক্ত করার সংগ্রামে গণ বিষ্ফোরণের মাধ্যমে তিনিইগণতন্ত্রেরবিজয় ছিনিয়ে এনেছেন। এই গণতন্ত্রের অব্যহত ধারাবাহিকতা নিশ্চিত করতে একটি স্বচ্ছ্, নিরপেক্ষ, অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানে তদারককারী হিসাবে তত্বাবধায়ক সরকারের দাবী পূরণ করে তিনিই মানুষের কাছে দেওয়া গণতন্ত্রের অঙ্গিকারও সযত্নে ও সশ্রদ্ধায় পূরণ করেছেন। স্বাধীনতা থেকে আজকের বাংলাদেশ নির্মাণে দেশের প্রতি তাঁর ও তাঁর পরিবারের পরম দরদ, চরম আত্মত্যাগ ও গভীর নিষ্ঠা নানা ক্রান্তিকালের উত্তরণে প্রমাণের উর্দ্ধে স্থান করে দিয়েছে। আদালতের বিচার আজও চূড়ান্ত নিষ্পত্তির অপেক্ষায়। অনেকের মতে একজন অতি উচ্চমাত্রার দেশপ্রেমিক, একজন দ্বিধাহীন, নিঃশঙ্কোচ ত্যাগী মানুষ ও গণমানুষের একজন একনিষ্ঠ সেবক হিসাবে প্রমাণিত বেগম খালেদা জিয়ার এই তুচ্ছ দুর্ণীতিতে অংশগ্রহণ জনগণ  বিশ্বাস করতে চায় না।

জনগণ আশা করেন যে বেগম খালেদা জিয়া সকল চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র ভেদ করতে পারবেন ও সসম্মানে নির্দোষ প্রমাণিত হবেন। চূড়ান্ত বিচারে জাতি সত্যের জয় কামনা করে। তবে জনগণের বিচারে ও গণতন্ত্রের মানদন্ডে যে বেগম খালেদা জিয়া আজ অনন্য, অপ্রতিদ্বন্দ্বি, অদ্বিতীয় হয়ে উঠেছেন তার প্রমাণ তাঁর সকল জন-উপস্থিতিতে পাওয়া যায়। অনেকের বিশ^াস একটি স্বচ্ছ্, নিরপেক্ষ, অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হলে তিনিই হতে পারেন বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ প্রধানমন্ত্রী।  

অনেকেই এভাবে বিশ্বাস  করেন যে জনসাধারণের মধ্যে এই বিষয়টি প্রমাণিত হয়ে দাড়িয়েছে যে, বেগম খালেদা জিয়ার মত একজন জনপ্রিয় ও গণতন্ত্রের মাতৃসম ব্যাক্তিত্বের এইরূপ সুচিকিৎসা বঞ্চিত করার প্রচেষ্টা তাঁর বিরুদ্ধে চলমান ধারাবাহিক মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক মামলা ও সাজা দেওয়া এবং নির্জন মানবেতর কাঠাগারে নিয়ে শারিরীক ও মানসিক নির্যাতন, নিপিড়ন, অপদস্থ ও হীন সাব্যস্ত করার ব্যাপক চক্রান্তের অংশবিশেষ। দেশের ও বিদেশের সাধারণ মানুষ, জ্যেষ্ঠ নাগরিকবৃন্দ, সুশীল সমাজ, পেশাজীবিবৃন্দ- নর নারী নির্বিশেষে এই চলমান ঘটনাবলীতে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ প্রকাশের সাথে সাথে এই হীন চক্রান্তের অবসান ঘটানোর জন্যে সরকারের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানিয়ে আসছেন।
সকলেই জানেন যে ইতোমধ্যে সবকিছু বিবেচনায় নিয়ে মহামান্য হাইকোর্ট বেগম খালেদা জিয়াকে জামিনের আদেশও দিয়েছেন। আমরা আশা করতে চাই যে সরকার একটি স্থিতিশীল ও উন্নয়নমুখী বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করার জন্যে দেশে সকল মানুষের বাক ও রাজনৈতিক স্বাধীনতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে গড়ঃযবৎ ড়ভ উবসড়পৎধপু বা গণতন্ত্রের মাতৃমুর্তি বেগম খালেদা জিয়াকে অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তি দিয়ে তাঁর সু-চিকিৎসার অধিকারের বিষয়টি সুনিশ্চিত করবেন। পাশাপাশিআমরা বিশ্বাস করি যে সরকার গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের প্রতি সম্মান দেখাবে এবং সকল নাগরিকগণের উন্মুক্ত সভা-সমাবেশের অধিকার নিশ্চিত করে, রাজনৈতিক নেতা-কর্মী ও সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা, ষড়যন্ত্র ও হয়রানিমূলকমামলা প্রত্যাহার করে, সকল ধরণের ভয়ভীতি ও প্রশাসনিক নির্যাতন থেকে সকল মহলকে বিরত করার মাধ্যমে দেশে গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিত করে একটি স্বচ্ছ্, নিরপেক্ষ, অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করবেন এবং জনগণের সার্বভৌমত্ব নিশ্চিত করতে এগিয়ে আসবে।
ধন্যবাদ সবাইকে।

Bangladesh Bank being reduced to a toothless tiger


Abul Mohsen



A BIBM (Bangladesh Institute of Bank Management) survey formally released last month has categorically stated that political power is being used in running the country’s banking business and as a result the Bangladesh Bank, the country’s central bank, has failed to take independent decisions.

In fact, the BIBM survey has succinctly pointed out that such government actions have prevented the country’s central bank from taking required punitive measures against large scale banking scams.

The survey in a detail analysis suggested that in a few cases, the central bank could not immediately take punitive measures for the sake of national interest because of the misuse of political powers by interested quarters with close links to the ruling party stalwarts.

The BIBM survey, which has since been widely discussed in the banking circles, was formally presented at a workshop last month by BIBM Director Prof Md. Mohiuddin Siddique.

Bangladesh Bank Deputy Governor Abu Hena Md. Razee Hassan, who attended the function as the chief guest said: “A strong internal control system is a must for a sustainable banking business.”  He, however, pointed out that the Bangladesh Bank is improving its monitoring system to rein in banking sector.

Sense of responsibility   

In an oblique reference to the central bank’s sense of responsibilities, the report without mincing any word observed: “There was a common perception that the Bangladesh Bank  fails to respond to large scale scams due its lack of farsightedness.” But at the same time it forthrightly observed: “It cannot be denied that the Bangladesh Bank is not independent to take decisions at all times.”      

The survey also said that the Bangladesh Bank who had been consulted during the survey also “felt that political power should not be misused for operating banking business”

The BIBM report also discussed that most bank-owners have failed to realize that banking is a “specialized industry” and any misdeed “will affect them and the economy as a whole.”

“Unlike any other industries”, the survey pointed out, “failure of a bank is a contagious one and may lead to the crisis in the entire banking industry. …The government should not allow any misconduct from anyone for the sake of its own image. The Bangladesh Bank will have to take harsh actions against parties involving with irregularities,” the survey recommended.

It is, therefore, easy to understand, the survey pointed out, that in a bank-based economy like Bangladesh, any large scale shock in the financial sector hits the real sector hard and inflicts huge burden on the society. So, should the regulators detect any major event of fraudulent practice or financial crime at an early stage, impose severe punishment on the persons responsible.

The study revealed: Banks generally set their profit target without any underlying objective and quantitative analysis. So the attention of the management remains disproportionally focused on achieving the quantitative target rather than ensuring quality of operations and adherence to sound banking practice. As a result, asset quality of the bank deteriorates, causing non-performing loans crop up.     

Monday, April 9, 2018

'জীবন নিয়ে হলে ফিরতে পারব কিনা, তাও জানি না'



কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনের সময় ঘটে যাওয়া এক করুণ কাহিনী তুলে ধরেছেন তাসনিম আফরোজ ইমি নামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী।

রোববার রাতে ছাত্রীদের ওপর হামলার ঘটনা স্বচক্ষে দেখে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তুলে ধরেন ওই ছাত্রী।

ইমির ফেসবুকে দেয়া স্টাটাসটি যুগান্তর পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হল  — 

রাত প্রায় একটা। কোটা সংস্কার আন্দোলনের দাবিতে রোকেয়া, বঙ্গমাতা, মৈত্রী হলের আপুরা তখন বাহিরে। আমাদের হলের মেয়েরাও বাইরে আন্দোলনের জন্য যাবার চেষ্টা করছে। কিন্ত হলগেট খোলার জন্য স্লোগান দিচ্ছে। কিন্ত কিছুতেই কিছু হচ্ছে না। প্রায় ঘন্টাখানেক চেষ্টা করার পর অবশেষে হলগেট খুলে বাইরে বেরিয়ে এলাম আমরা। সেখানে প্রায় ঘন্টাখানেক রাজু ভাষ্কর্যের সামনে স্লোগান দিতে থাকি আমরা। হঠাত মহসিন হলের দিক থেকে কারা যেন ছুটে আসে আমাদের দিকে। অনবরত ইট ছুঁড়তে থাকে। জ্বি হ্যাঁ, মেয়েদের দিকেই ইট পাটকেল ছুঁড়তে থাকে সোনার ছেলেরা। পুলিশও ছিলনা তখন। 

আমরা এলোমেলোভাবে টিএসসির দিকে ছুটতে থাকি। দিকবিদিক ছুটতে ছুটতে আমি পড়ে যাই একেবারে পেছনে। টিএসসির গেটে ঢুকতে গিয়ে আটকে যাই। তখনো পেছন দিয়ে ইট মেরেই যাচ্ছে। আমার ঠিক পেছনেই এক ভাইয়া ছিল। ইট লাগে তার মাথায়। বলা যায়, আমাদের, মানে মেয়েদের বাঁচাতে গিয়েই ইট লাগে উনার মাথায়। রক্তে ভেসে যাচ্ছে মুখ, আমি হতভম্বের মত তাকিয়ে আছি। ভিতরেও ঢোকা যাচ্ছে না। এক পর্যায়ে পড়ে যাই মাটিতে। ভাইয়া চিৎকার করছে, ভাই আমার মাথা ফাটছে, ভাই আমারে বাচান। অসহায়ের মত পড়ে থাকি। নড়ার মতনও অবস্থা ছিলনা তখন। অনেক কষ্টে যতক্ষণে টিএসসির ভেতরে ঢুকতে পারি, ততক্ষণে দুই পা রীতিমতো পিষ্ট, হাঁটার মত শক্তি নাই। অসহ্য যন্ত্রণা। 



যখন আটকা পড়েছিলাম, তখন যে বেঁচে ফিরতে পারব এই আশা ছেড়ে দিয়েছিলাম। ভাবছিলাম বোধহয় মারা যাচ্ছি। আমার পেছনে ভাইয়াটা। ইট লাগে ঠিক তার মাথার পেছনে। রক্তে ভেসে যাচ্ছে। তাড়াতাড়ি তাকে ভেতরে নেয়া হল। মাথায় কাপড় দেবার পরেও রক্ত বন্ধ হয়না। আরো একটা কাপড় বেঁধে দেয়া হল। ততক্ষণেও থামে না। তারপর আমি আমার ওড়না দিয়ে দিলাম। রক্ত তখনও থামছে না। মানুষটা কি করুণ ভাবে বলে যাচ্ছিল, আমাকে বাচান ভাই। আম্মুকে ডাকছিল। প্রায় ১৫ মিনিট এভাবেই থাকে। 

তারপর পেছনের দরজা দিয়ে কোনোমতে তাকে মেডিকেলে পাঠানো হয়। বাইরে তখন তুমুল সংঘর্ষ। আর টিএসসির ভেতর গুরুতরভাবে আহত কিছু রক্তাক্ত শরীর। তাদের চিকিৎসার জন্য বাইরে পাঠানো হবে, এমন অবস্থাও নেই। না প্রেস, আর না কোনো নেট সংযোগ। যাদের দেখলাম, তাদের প্রায় সবগুলো মুখ চেনা। ক্যাম্পাসের বড়, ছোট ভাইবোন। চেতনাবাজরা এদেরকেই কি নির্দ্বিধায় আজেবাজে ট্যাগ লাগিয়ে, নিজেরাই আক্রমণ করে এখন আবার ফেসবুকে সুশীলতা দুচাচ্ছে! 

নিজের চোখে পুরো ঘটনা না দেখলে হয়ত আমিও চেতনাবাজদের রাতকে দিন বানানোর কেচ্ছা বিশ্বাস করে বসতাম। ভাবতাম আন্দোলন না, সহিংসতা হচ্ছে। আর উনারা উদ্ধার মারাতে এসেছেন! ফ্রেন্ডলিস্টে উনাদের সংখ্যাটাই বেশি কিনা! আমার হঠাত করে মনে হলো, একাত্তরে হানাদারদের চাইতে রাজাকারেরা আমাদের ক্ষতি করেছিল বেশি। ঠিক যেমন নব্য রাজাকারেরা মেয়েদেরকে পর্যন্ত রেহাই দেয়নি। ইট পাটকেল ছুঁড়েছে, রক্তাক্ত করেছে!

যাই হোক, টিএএসসির ভেতর ঢুকে দেখলাম আমার হলের এক আপুর মাথা ফেটে গেছে। ইট লেগেছে মাথার মাঝ বরাবর। মৈত্রী হলের এক আপু গুরুতর আহত। যে ভাইয়াটা আমার পেছনে ছিল, উনার ইট লেগেছিল মাথার পেছনে। অনেকগুলো ভাইয়ার পা রক্তাক্ত। ফুঁপিয়ে রইলাম টিএএসসির ভেতর। সকাল পর্যন্ত জীবন নিয়ে হলে ফিরতে পারব কিনা, তাও জানিনা তখন। এমন সময় প্রোক্টর এলেন। বোধহয় ভুল করেই চলে এসেছিলেন। ছাত্ররা তাকে তাদের দাবিদাওয়া বলল, দোষীদের বিচার চাইল। তিনি কিছুক্ষণ অহেতুক আস্ফালন করে বিদায় হলেন। 

এমন সময় ছোটবোন মৌসুমি কান্নাকাটি শুরু করল, ওর রুমমেট হাসপাতালের ইমার্জেন্সিতে। সাথে সাথে রওনা দিলাম ঢাকা মেডিকেলের উদ্দেশ্যে। এসে দেখি আপুর মাথায় বিশটা সেলাই! কর্তব্যরত ডাক্তার বললেন, রাত থেকে প্রায় ৬০জনকে চিকিৎসা দিয়েছেন তিনি। সবাই আমার ক্যাম্পাসের। ভোর পাঁচটায় যখন এই পোস্ট লিখতে শুরু করি, তখনও মেডিকেলের ভেতর চোখ জ্বলছে। বাইরে টিয়ারগ্যাস ছোঁড়া হয়েছে। হাসপাতালের সাধারণ রোগী, ডাক্তার সবাইকে মাশুল দিতে হচ্ছে কোটা সংস্কার আন্দোলনের!

এখনো মেডিকেলে আছি। পাঁচটার দিকে এক ভাইয়াকে আনা হলো তার মাথার পেছনে ফাটা, নাক ফাটা, হাতে রক্ত পায়ে রক্ত! কাঁদতে কাঁদতে তাকে নিয়ে দৌড়াদৌড়ি দেখলাম। এখন সিটিস্ক্যান করতে দিয়েছে।

আক্ষেপ একটাই। কোনো মিডিয়াকে দেখলাম না আসল ঘটনা প্রকাশ করতে, কোনো রাজপথের সৈনিক এগিয়ে এল না মেয়েদের বাঁচাতে! অবশ্য অপরদিক দিয়ে ইট ছুঁড়ে দেশ ও জাতিকে উদ্ধার করেছিল বটে! আর ফেসবুকে তাদের একেকজনের খাড়াইয়া যাওয়া চেতনা, বিশ্লেষণ দেখে যারপরনাই মুগ্ধ হয়ে গেলাম! এরাই ভবিষ্যতে নেতৃত্ব দেবে দেশকে! যে পাঁচ শতাধিক ছাত্রছাত্রী (যার দুই তৃতীয়াংশের বেশি ছাত্রী ছিল) চরম অনিশ্চয়তার ভেতর ছিলাম, অন্তত একজনের অভিশাপ ঠিকঠাকমত লাগলেও যেন সব কিছু ধ্বংস হয়ে যায়। সবকিছু!

  • উৎসঃ যুগান্তর/এপ্রিল ৯, ২০১৮ 


এটাকে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস ছাড়া আর কিছু বলতে পারছি না — গোলাম মোর্তুজা

রবিন আকরাম


কোটা সংস্কারসহ পাঁচ দফা দাবিতে আন্দোলনকারীদের উপর যে হামলা চালানো হয়েছে তার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন সাপ্তাহিত পত্রিকার সম্পাদক গোলাম মোর্তুজা।

তিনি তার ফেসবুকে লিখেছেন - কোটা সংস্কারের মত শতভাগ যৌক্তিক দাবিতে আন্দোলনকারীদের উপর যে দানবীয় তান্ডব চালানো হলো, এটাকে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস ছাড়া আর কিছু বলতে পারছি না।

মোর্তুজার এই স্ট্যাটাসের পর অনেকেই তাদের মতামত জানিয়েছেন। তাদের মধ্যে থেকে কয়েকজনের মতামত তুলে ধরা হলো। মিরাজুল ইসলাম লিখেছেন, কোটা হটাও দেশ বাচাও।

মনির হোসাইন লিখেছেন, বাংলাদেশে যারা প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধার সন্তান তারা কোটাতে চাকরি পায় না। শুধু পায় আওয়ামী লিগের সন্তানরা। আওয়ামী লীগ তো প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাই নাই। কাইয়ূম মোহাম্মাদ বলছেন, জনগনের ভোটের অধিকার হরণ করে যারা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার সুফল ভোগ করতেছে তাদের কাছে যে কোনো যৌক্তিক আন্দোলনই অযৌক্তিক মনে হবে…।

শামীম হোসাইন লিখেছেন, আন্দোলনকারীদের কেউই সরকারি দল করে না! এ দাবিটা সম্পূর্ন অরাজনৈতিক। এটাকে রাজনৈকিতভাবে হেন্ডেলিং করার কোন যুক্তিকতা আছে কি!!

রাফিকুল ইসলাম বলছেন, রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস কায়েম হয়েছে ২০১৪ সালে ভোটার বিহীন নির্বাচনের মাধ্যমে ৷ এখন তারা শুধু তাদের অস্তিত্বের জানান দিচ্ছে।

  •  Courtesy: amadershomoy.com/April 10, 2018