Search

Tuesday, April 10, 2018

বেগম জিয়া মধ্যযুগীয় কায়দায় বন্দি

বেগম খালেদা জিয়াকে মধ্যযুগীয় কায়দায় বন্দি করে রাখা হয়েছে। ডিভিশন দেওয়া হলেও বিছানা-বালিশ ও আসবাবপত্র অত্যন্ত নিম্নমানের। একজন অসুস্থ মানুষ হিসেবে তার খাবারের মান নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। কেউ তার এই বন্দি অবস্থাকে বীভৎস নির্যাতনের প্রতীক কনসানট্রেশন ক্যাম্পের সঙ্গে তুলনীয় বলে মনে করছেন। খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসে এ প্রশ্ন তোলেন বিশিষ্ট চিকিৎসক সমাজ।

নিন্মে প্রেসকনফারেন্সের পূর্ণ বক্তব্য দেওয়া হলোঃ

প্রিয় ও সন্মাানিত সাংবাদিক ভাই ও বোনেরা, 
আপনারা অবগত আছেন যে বিগত কয়েক বছরে দেশে বিরাজমান রাজনৈতিক সংকট গেল দু’ মাসে ক্রমশ ঘনীভূত হতে শুরু করেছে। একটি মহাদুর্যোগ সমাগত বলে অনেকেই আশংকা করছেন। বাংলাদেশের তিন বারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী, গণতন্ত্রের ইতিহাস ও ভোটের রাজনীতিতে জনপ্রিয়তায় বিশ্ব ইতিহাসে ক্রমাগত পরাজয়হীন সর্বোচ্চ ২৩ টি আসনে বিজয়ের অনন্যদৃষ্টান্ত সৃষ্টিকারী, গণমানুষের অবিসম্বাদিত নেত্রীও দেশনেত্রী উপাধিপ্রাপ্ত বি এন পি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে জিয়া অরফানেজ  ট্রাষ্ট মামলায় সাজা দিয়ে কারাগারে নিক্ষেপ করা হয়েছে। বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষ জোর দাবী করছেন এই মামলা মিথ্যা, বানোয়াট,  প্রহসনমূলক ও প্রকৃত বাস্তবতায় সাজাপ্রাপ্তের সংশ্লিষ্টতার প্রমাণহীন। 

বিগত দশকে দেশে লক্ষ লক্ষ কোটি টাকার সীমাহীন দুর্ণীতি, ব্যাংক কেলেঙ্কারী ও অর্থ লোপাটে সব কর্তৃপক্ষের কার্যত নীরব থাকার প্রেক্ষিতে দেশের জনগণও বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষের এই দাবীকে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র ভাবতে সাচ্ছ্বন্দ বোধ করছে। আপনারা জানেন যে এই বর্ষিয়ান ও অসুস্থরাজনীতিবিদের রাজনীতিতে অভিষেক ঘটে রাজনৈতিক দুবৃত্তায়ন ও স্বৈরাচারের কষাঘাতে বিক্ষত বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতেস্বৈরতন্ত্রকে রুখে দাড়াবার গণ-আন্দোলনে সফল নেতৃত্ব দিয়েগণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠাকরার মাধ্যমে। ’৯১ সালে রাজনীতিতে ও সংসদে নবাগত হিসাবে প্রধানমন্ত্রী হয়েস্বৈরতন্ত্রের ছত্রছায়ায় মহীরূহ হয়ে বেড়ে ওঠা  সামাজিক ও আইনশৃঙ্খার চরমবিশৃঙ্খলা কঠোর হাতে দমন করে রাষ্ট্রজীবনের সকল ক্ষেত্রে শৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠায় তার অবদান জাতিকে অস্থিরতা ও নিরাপত্তা হীনতার এক সঙ্কুল অবস্থা থেকে উদ্ধার করে। 

অর্থনৈতিক উন্নতির সূচনাকরে জাতীয় আয়ের প্রবৃদ্ধিতে বহু দশকের অচলায়তন ভেঙ্গে যুগান্তকারী নতুন অর্থনৈতিক যুগের সূচনা তিনিই করেন। তাঁর তিন দশকের ভূমিকা বাংলাদেশকেআজ এক্ঈর্ষাজনক উন্নতির অভিযাত্রায় শামিল করেছে।  আজকের সমৃদ্ধ বাংলাদেশের অন্যতম প্রধাণ রূপকার ও চালক তিনিই। 

সেই মানুষটির সাথে কারাগারেনিদারুণ অমানবিক ও মানবেতর আচরন করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠছে নানা মহল থেকে।জানা যায় তাঁকে একটি সূর্যালোকহীন, নির্জন, স্যাঁতসে্যঁতে পুরোনো ও বসবাস অযোগ্য ভবন-বহুদিন ধরে যেটি রক্ষণাবেক্ষণহীন ও সাধারণ কয়েদিদের জন্যেও কয়েক বছর আগে পরিত্যক্ত ঘোষনা করে সকল বন্দিকে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে তেমনি একটি স্থানে মধ্যযুগীয় কায়দায় বন্দি করে রাখা হয়েছে। ডিভিশন দেওয়া হলেও বলা হচ্ছে যে তাঁর বিছানা বালিশ ও আসবাবও অত্যন্ত নিন্মমানের ও ব্যবহার অযোগ্য। একজন অসুস্থ মানুষ হিসাবে তাঁর খাদ্য-খাবারের মান নিয়েও নানা প্রশ্ন উঠছে। কেউ কেউ তাঁর এই বন্দি অবস্থাকে বিভৎস নির্যাতনের প্রতীক কনসানট্রেশন ক্যাম্পের সাথে তুলনীয় বলে মনে করছেন। তাঁর পরিবারের অন্যান্যদের মত তাঁকেও শারিরীক ও মানসিক ভাবে নির্যাতন করে এক শোচনীয় পরিনতির দিকে ঠেলে দেওয়াই প্রকৃত উদ্দেশ্য সে বিষয়ে জনমনের সন্দেহ প্রকট হচ্ছে বলে অভিযোগ আসছে। 

ধারণা করা যেতে পারে যে এই পরিবেশে একজন সুস্থ মানুষেরও নানা মারাত্মক ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে পড়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়্। সেক্ষেত্রে তাঁরমত আগে থেকেই বয়সজনিত নানা রোগব্যাধিতে আক্রান্ত একজন বর্ষিয়ান নারীর এই নির্জন মানবেতর করাবাস স্বাস্থ্য ও স্বাভাবিক জীবনযাপনের জন্য কতটা ক্ষতিকারক হতে পারে তা’ সাধারণ মানুষকেও গভীরভাবে ভাবিয়ে তুলেছে। এই পিচ্ছিল স্যাঁতসে্যঁতে পরিবেশে যে কোন সময়ে পড়ে গিয়ে তাঁর হাটু, উরুসন্ধি, হাত ও মেরুদন্ডের হাড় ভাঙ্গা সহ মস্তিষ্ক ও স্পাইনাল কর্ডে আঘাত জনিত পক্ষাঘাত রোগ ঘটতে পারে। নির্জন, নিঃসঙ্গ, নিরাপত্তাহীন পরিবেশের কারনে নিদ্রাহীনতা, উদ্বেগ, বিষন্নতা সহ নানা মানসিক রোগাক্রান্ত হয়ে পড়ার সম্ভবনা বহুগুন বেড়ে গেছে।  বিরূপ, নিপীড়নমূলক পরিবেশ ও অস্বাভাবিক মানসিক চাপের ফলে তাঁর আকস্মিক হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ারও ঝুঁকিও বৃদ্ধি পেয়েছে। পুরোনো, পরিত্যক্ত দূষণযুক্ত ভবনের বিষাক্ত পরিবেশে তাঁর মারাত্মক ঔষধ-প্রতিরোধী জীবানুদ্বারা ফুসফুসের সংক্রমন বা নিউমোনিয়ার সম্ভবনা বেশ প্রবল হয়ে উঠতে পারে।এ ছাড়াও এই সূর্যালোকহীন স্যাঁতসে্যঁতে পরিবেশে তাঁর ভয়ংকর মাত্রার ভিটামিন-ডি ও ক্যালশিয়ামের শুন্যতা দেখা দিতে পারে যা’ তার হাড়ের জন্যে মারাত্মক পরিণতি ডেকে আনতে পারে। 

এই বয়স ও স্বাস্থ্যগত অবস্থায় ব্যাক্তিগত পরিচর্যার বিষয়টি সুচিকিৎসার স্বার্থেই গুরুত্ববহ হয়ে ওঠে এবং তা’ কেবল পারিবারিক ও ব্যাক্তিগত উদ্যোগেই পূর্ণভাবে নিশ্চিত করা সম্ভব। কারাগার বিশেষ করে পুরোনো, পরিত্যক্ত দূষণযুক্ত ভবনে স্বাস্থ্য ও জীবন উভয়ই অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়তে পারে।

বাস্তবে ঘটেছেও তাই। বেগম খালেদা জিয়া কারাগারে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। এই কারাগারের বসবাস অযোগ্যতা ছাড়াও নিয়মিত চিকিৎসার কোনই সুযোগ সুবিধা নেই। হেফাজতে সাম্প্রতিক বছর কালে সাড়ে ছয় শতাধিক মৃত্যুর খবর ইতোমধ্যে নানবিধ শংকা বাড়িয়েছে। 

আজকে বি এন পি, তার অঙ্গ-সংগঠনের অগণিত নেতাকর্মীর সাথে সাথে লক্ষকোটি দেশবাসী বেগম খালেদা জিয়ার অসুস্থতার সংবাদে দুঃখভারাক্রান্ত ও দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। ইতোমধ্যে অসুস্থতার কারণে কারা কর্তৃপক্ষ তাঁকে একটি মামলার হাজিরায় নিতে না পারায় বেগম খালেদা জিয়ার গুরুতর অসুস্থতার  বিষয়টি সকল সন্দেহ ঘুচিয়ে পরিষ্কার হয়ে পড়েছে। সরকারও বিষয়টি স্বীকার করে নিয়ে তার নিজস্ব পছন্দের৪-সদস্যের একটি মেডিকেল বোর্ড দিয়ে তাঁর স্বাস্থ্য পরীক্ষার ব্যবস্থা নেয়। গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হলো বেগম খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে জটিল নানা রোগে ভুগছেন। ইতোপূর্বে তাঁর দুই হাঁটু প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। সম্প্রতি তিনি লন্ডনে চোখের অপারেশনও সম্পন্ন করেছেন। তিনি কোন সাধারণ রোগী নন। চিকিৎসকদের পরিভাষায়  তিনি একজন বিশেষ পরিচর্যা সাপেক্ষ রোগী। সে হিসাবে সুচিকিৎসার স্বার্থে তাঁর একান্ত ব্যাক্তিগত পরিচর্যার সকল সুবিধা নিশ্চিত করা সকল সভ্য, গণতান্ত্রিক ও মানবিকতাবোধসম্পন্ন জাতির কর্তব্য। এর অভাবে, সম্প্রতি তিনি ঘাঁড়, মেরুদন্ড সমস্যা আক্রান্ত হয়ে পড়েছেন। 

তাঁর এই দীর্ঘকালীন রোগ অবস্থা কেবলমাত্র দীর্ঘকাল তাঁর চিকিৎসায় অভিজ্ঞ ব্যাক্তিগত চিকিৎসকদেরই ভালোভাবে জানা আছে। নতুন কোন চিকিৎসক দলের পক্ষে তাঁর সম্পূর্ণ অবস্থা এক নজরে ও এক নিমেষে অনুধাবন ও নির্ণয় করা একেবারেই অবাস্তব কল্পনা। ফলে, সরকার বেগম খালেদা জিয়ার প্রতি সহানুভূতিশীল  ও  তাঁর চিকিৎসার ব্যাপারে যতœবান প্রমাণ করতে হলে  তাঁর ব্যাক্তিগত চিকিৎসক দলের ভূমিকা উপেক্ষা করা সমীচিন নয়। বিষয়টিউপেক্ষা করলে সকল পরিণতিতে সরকারের দায়ী হবার প্রমাণ মিলবে এবং তা’ না করলে দায় লাঘব হবে।

সঙ্গত কারনে, সরকারের পছন্দেরনতুন চিকিৎসক-দল নিয়োগ করায়এই নতুন দল একেবারেই প্রাথমিক পর্যায় থেকে বেগম খালেদা জিয়া রোগ অবস্থা বোঝার চেষ্টা নেন। দীর্ঘ কালের রোগ ইতিহাস ও উপাত্ত তাদের জানা নেই। বর্তমানে তাঁর বর্তমান রোগাবস্থা বেশ অগ্রসর। এই স্তরে রোগমূল্যায়নে পুরনো তথ্য-উপাত্তের গুরুত্ব অপরিসীম। ফলে এই নতুন চিকিৎসকদল প্রাথমিক অনুসন্ধানে সমর্থ কিছু মামুলী এক্স-রে ও রক্ত-পরীক্ষার পরামর্শ দেন। 

চিকিৎসক না হয়েও জনসাধারণ খুব ভালোভাবেই জানেন যে এই সকল মামুলী পরীক্ষা বেগম খালেদা জিয়ার বর্তমান অগ্রসর রোগ অবস্থা ও অতিসুক্ষ সমস্যাগুলো কোন ক্রমেই নির্ণয় করতে পারবে না। সিটি-স্ক্যান, এম-আর-আই ইত্যাদি আধুনিক পরীক্ষা-নিরিক্ষা ছাড়াও নিবিড় পর্যবেক্ষণ এ ক্ষেত্রে রোগনির্ণয় ও উপশমে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। এ ছাড়াও বার বার জনগণের ভোটে নির্বাচিত ও অতি জনপ্রিয় একজন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক গুরুত্বসম্পন্ন বর্ষিয়ান ব্যাক্তির সাধারণ স্বাস্থ্যসমস্যা নির্ণয়ে যে পরীক্ষাগুচ্ছ সম্পন্ন করার কথা এই  নতুন চিকিৎসকদল সে ব্যাপারেও কোন পরামর্শদেন নি বা উদ্যোগ গ্রহণ করেননি। ফলে বেগম খালেদা জিয়ার লিভার, কিডনী, ফুসফুস, হৃদপিন্ড, অস্থির শক্তি নির্ণয় ইত্যাদি জীবন ও সুস্থতা সম্বন্ধীয় অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের পরীক্ষা-নিরিক্ষা না হওয়াটা একজন চিকিৎসক হিসাবে রোগীকে অবহেলা না করা’ আচরণের নমুনা হিসাবে গ্রহণ করা যায় না।বিষয়টি স্বাস্থ্য সচেতন ও অভিজ্ঞ জন সকলেই এ চোখে দেখতে স্বস্থি বোধ করবেন। 

ফলে অনেকেরই  বিশ্বাস যে বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য পরীক্ষার প্রশাসনিক তৎপরতার বিষয়টি যে এক রকম লোক দেখানো, হঠকারিতামূলক ও জনবিভ্রান্তি সৃষ্টির সুপরিকল্পিত প্রচেষ্টা তা’ বুঝতে জনসাধারণের কষ্ট হওয়ার কথা নয়। বিষয়টি আরও পরিস্কার মনে হয় যখন গত ৭ এপ্রিল কোন রকম পূর্ব প্রস্তুতি ছাড়া, একরকম হুটকরে তাঁকে ইতোপূর্বে সরকারী চিকিৎসক দলের দেওয়া মামুলী এক্স-রে ও রক্ত-পরীক্ষার জন্য মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে আনা হয়। অভিযোগ  উঠেছে এ সময়ে একজন বিশেষ শারীরিক চাহিদাসম্পন্ন রোগীর গাড়ী থেকে নামা ও সাধারণ চলাচলের উপযুক্ত ন্যূনতম সুবিধেও তাঁর জন্যে প্রস্তুত রাখা হয়নি। ফলে সকল সক্ষমতা সঞ্চয় করে তাঁকে সামান্য পরীক্ষা-নিরিক্ষার জন্যে পথ পরিক্রমা দীর্ঘ করা হয় ও তা’ হেঁটে পাড়ি দিতে এক রকম বাধ্য করা হয়। এই সময় তাঁকে তাঁর ৪-জন ব্যাক্তিগত চিকিৎসকদের সাথে সাক্ষাৎ করার সরকারী অনুমতি থাকলেও কার্যত সরকার ও তাঁর সাথে থাকা প্রশাসনের লোকজন তাঁকে এই প্রত্যাশিত সুযোগ থেকে বঞ্চিত করেন। 

কার্যত এই ব্যাক্তিগত চিকিৎসকগন যথাস্থানে উপস্থিত থাকলেও তাদেরকে মামুলী সৌজন্য বিনিময়ের বাইরে চিকিৎসা বিষয়ে কোন শারীরিক পরীক্ষা-নিরিক্ষা করার সুযোগ দেওয়া হয়নি। 

উপযুক্ত স্বাস্থ্য সেবা সংবিধান বলে একটি মৌলিক অধিকার এবং এ বিষয়ে বন্দি অবন্দি নাগরিক অবস্থা নির্বিশেষে সরকারের বিশেষ দায়িত্ব রয়েছে। বিশেষ করে বন্দি অবস্থায় সকল দায় সরকারের উপর বর্তায়। 

জানা যায় যে জেল-কোড অনুযায়ী যে কোন বন্দি তার বিশেষ স্বাস্থগত চাহিদার কারনে পছন্দে চিকিৎসকের সেবা পাওয়ার অধিকার রাখেন। তবে এ ক্ষেত্রে পুরো ব্যাপারটাই একটি প্রহসনে পরিণত হয়েছে বলেজনমনে আস্থা জন্মেছে। বেগম খালেদা জিয়ার অসুস্থতার বিষয়ে সরকার সদিচ্ছা ও আন্তরিকতা প্রকাশে চরম ব্যর্থ হয়েছে বলে নানা মহলের  বিশ্বাস।  পাশাপাশি ধারাবাহিক বিষয়াবলী জনমনে বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য বিষয়, জীবন ও রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে নানা পক্ষের ব্যাপক ও বহুমুখি ষড়যন্ত্র ও অভিসন্ধি বিষয়ে গভীর উৎকন্ঠা জন্মানোর সুযোগ করে দিয়েছে ।

অনেকের ধারণা সংশ্লিস্ট সকল মহল বিষয়টি আড়াল করা ও ভুলে থাকার সকল চেষ্টা করলেও জন সাধারণের স্মৃতিতে বিষয়টি প্রজ্জ্বল হয়ে আছে যে বেগম খালেদা জিয়া মহান স্বাধীনতারঅকূতভয় ঘোষনা প্রদাণকারী, মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর সেনানী ও সর্বোচ্চ খেতাবপ্রাপ্ত সেক্টর কমান্ডার, দেশের সামরিক বাহিনীর সাবেক প্রধান, সাবেক সফল  রাষ্ট্রপতি, বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠাতা, আধুনিক, উদীয়মান ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশের রূপকার, সার্ক নামক আঞ্চলিক সহযোগিতার স্বপ্নদ্রষ্টা ও জনপ্রিয়, জননন্দিত রাষ্ট্র নায়ক, অবিস্মরনীয় ব্যাক্তিত্ব মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমানের সহধর্মিনী। দেশের ঘটনা ও ষড়যন্ত্র বহুল রাজনীতিতে তিনিই রাষ্ট্রপতির শাসনের বদলে বহু আকাংখিত সংসদীয় গণতন্ত্রেরপুনঃপ্রবর্তন করেন। 

আপোষহীন নেত্রী হিসাবে অনঢ় আদর্শে অবস্থান নিয়ে এবং কঠোর মনোবল ও দেশপ্রেমের প্রকাশ ঘটিয়ে দেশকে স্বৈরাচার মুক্ত করার সংগ্রামে গণ বিষ্ফোরণের মাধ্যমে তিনিইগণতন্ত্রেরবিজয় ছিনিয়ে এনেছেন। এই গণতন্ত্রের অব্যহত ধারাবাহিকতা নিশ্চিত করতে একটি স্বচ্ছ্, নিরপেক্ষ, অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানে তদারককারী হিসাবে তত্বাবধায়ক সরকারের দাবী পূরণ করে তিনিই মানুষের কাছে দেওয়া গণতন্ত্রের অঙ্গিকারও সযত্নে ও সশ্রদ্ধায় পূরণ করেছেন। স্বাধীনতা থেকে আজকের বাংলাদেশ নির্মাণে দেশের প্রতি তাঁর ও তাঁর পরিবারের পরম দরদ, চরম আত্মত্যাগ ও গভীর নিষ্ঠা নানা ক্রান্তিকালের উত্তরণে প্রমাণের উর্দ্ধে স্থান করে দিয়েছে। আদালতের বিচার আজও চূড়ান্ত নিষ্পত্তির অপেক্ষায়। অনেকের মতে একজন অতি উচ্চমাত্রার দেশপ্রেমিক, একজন দ্বিধাহীন, নিঃশঙ্কোচ ত্যাগী মানুষ ও গণমানুষের একজন একনিষ্ঠ সেবক হিসাবে প্রমাণিত বেগম খালেদা জিয়ার এই তুচ্ছ দুর্ণীতিতে অংশগ্রহণ জনগণ  বিশ্বাস করতে চায় না।

জনগণ আশা করেন যে বেগম খালেদা জিয়া সকল চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র ভেদ করতে পারবেন ও সসম্মানে নির্দোষ প্রমাণিত হবেন। চূড়ান্ত বিচারে জাতি সত্যের জয় কামনা করে। তবে জনগণের বিচারে ও গণতন্ত্রের মানদন্ডে যে বেগম খালেদা জিয়া আজ অনন্য, অপ্রতিদ্বন্দ্বি, অদ্বিতীয় হয়ে উঠেছেন তার প্রমাণ তাঁর সকল জন-উপস্থিতিতে পাওয়া যায়। অনেকের বিশ^াস একটি স্বচ্ছ্, নিরপেক্ষ, অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হলে তিনিই হতে পারেন বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ প্রধানমন্ত্রী।  

অনেকেই এভাবে বিশ্বাস  করেন যে জনসাধারণের মধ্যে এই বিষয়টি প্রমাণিত হয়ে দাড়িয়েছে যে, বেগম খালেদা জিয়ার মত একজন জনপ্রিয় ও গণতন্ত্রের মাতৃসম ব্যাক্তিত্বের এইরূপ সুচিকিৎসা বঞ্চিত করার প্রচেষ্টা তাঁর বিরুদ্ধে চলমান ধারাবাহিক মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক মামলা ও সাজা দেওয়া এবং নির্জন মানবেতর কাঠাগারে নিয়ে শারিরীক ও মানসিক নির্যাতন, নিপিড়ন, অপদস্থ ও হীন সাব্যস্ত করার ব্যাপক চক্রান্তের অংশবিশেষ। দেশের ও বিদেশের সাধারণ মানুষ, জ্যেষ্ঠ নাগরিকবৃন্দ, সুশীল সমাজ, পেশাজীবিবৃন্দ- নর নারী নির্বিশেষে এই চলমান ঘটনাবলীতে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ প্রকাশের সাথে সাথে এই হীন চক্রান্তের অবসান ঘটানোর জন্যে সরকারের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানিয়ে আসছেন।
সকলেই জানেন যে ইতোমধ্যে সবকিছু বিবেচনায় নিয়ে মহামান্য হাইকোর্ট বেগম খালেদা জিয়াকে জামিনের আদেশও দিয়েছেন। আমরা আশা করতে চাই যে সরকার একটি স্থিতিশীল ও উন্নয়নমুখী বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করার জন্যে দেশে সকল মানুষের বাক ও রাজনৈতিক স্বাধীনতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে গড়ঃযবৎ ড়ভ উবসড়পৎধপু বা গণতন্ত্রের মাতৃমুর্তি বেগম খালেদা জিয়াকে অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তি দিয়ে তাঁর সু-চিকিৎসার অধিকারের বিষয়টি সুনিশ্চিত করবেন। পাশাপাশিআমরা বিশ্বাস করি যে সরকার গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের প্রতি সম্মান দেখাবে এবং সকল নাগরিকগণের উন্মুক্ত সভা-সমাবেশের অধিকার নিশ্চিত করে, রাজনৈতিক নেতা-কর্মী ও সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা, ষড়যন্ত্র ও হয়রানিমূলকমামলা প্রত্যাহার করে, সকল ধরণের ভয়ভীতি ও প্রশাসনিক নির্যাতন থেকে সকল মহলকে বিরত করার মাধ্যমে দেশে গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিত করে একটি স্বচ্ছ্, নিরপেক্ষ, অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করবেন এবং জনগণের সার্বভৌমত্ব নিশ্চিত করতে এগিয়ে আসবে।
ধন্যবাদ সবাইকে।

No comments:

Post a Comment