Search

Monday, April 23, 2018

তরুণ ভোটাররা শাসক দলের জন্য মাথাব্যথার কারণ হবে — ইকনমিস্ট

(বিএনপি কমিউনিকেশন) — যুক্তরাজ্যের খ্যাতিসম্পন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদ সাময়িকীর চলতি সংস্করণে বাংলাদেশে কোটা আন্দোলন সম্পর্কিত লেখার শিরনামে বলা হয়েছে — ‘প্রতিবাদেরমুখে  টেঁশে গেল দুর্নীতির কালিমালিপ্ত কোটা পদ্ধতি’ [ MAKING MERIT — PROTESTS IN BANGLADESH PUT AN END TO A CORRUPT QUOTA SYSTEM] আবার একটা ছোট সাবহেডিংও দেওয়া হয়েছে — THE GOVERNMENT PROMISES TO FILL JOBS IN THE CIVIL SERVICE ON MERIT. ছাপা হয়েছে বৈপ্লবিত আলোকচিত্র। ছবিটি ঢাকাবিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকা থেকে তোলা। একটি কিশোর উদোম শরীরে লিখেছে ইংরেজিতে শুট মি  অর রিফর্ম কোটা।


আন্দোালনকারীরা কোটা বাতিল চায়নি আদৌ। তারা পরিস্কার ভাষায় বলেছে পদ্ধতি সংস্কার চাই। তারা  মুক্তিযোদ্ধাদের ন্যায্য প্রাপ্যে হাত দিতে চায়নি। তরূণরা তাদের মর্যাদা রক্ষা করেই তাদের দাবির কথা বলেছে।

তাই ইকনমিস্ট সংবাদটির যে শিরনাম দিয়েছে বলা যায় তারা আগাম রায়ের ঘোষনা দিয়েছে। বলা হয়েছে কোটা বাতিল। কিন্তু কোটা সংস্কার বাস্তবায়নের কার্যক্রম এখনও শুরু করেনি সরকার। সরকারের ঘোষণায়  যেখানে তরুণদের আনন্দের জোয়ারে ভাসার কথা সেখানে চলছে আতঙ্ক। তারা ভাবেভঙ্গিতে জানান দিচ্ছেন, তাঁরা ভাবতেও পারেননি এইসামান্য কারণে তাদরে হাতে হাতকড়া পড়বে। চোখ বাঁধা হবে কালো কাপড় দিয়ে। মাথায়, বুকে, পিঠে গুলি করা হবে। ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা তাঁদের আক্রমণ করবে। তাদেরকে এখন দুঃস্বপ্ন তাড়া করে ফিরছে।

মা কি তাদের ছেড়ে দেবেন? তাঁকে কি দুঃস্বপ্ন ছাড়বে? মনে হয় না। এখন দেশের নানা দিকে পাল্টা শক্তি নামানো হচ্ছে। নানা প্রজন্ম শক্তি বলাবহুল্য। রেড ফ্ল্যাগ ফর রেড ফ্ল্যাগ তোলা হচ্ছে। আর এগুলি যে স্পন্সর্ড বোঝা যায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী হলে ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটেছে। সেটা লক্ষ্য করার মতোই কৌতুহলোদ্দীপক। বোঝা যায় এই আন্দোলন যে বিদ্যুত গতিতে ছড়িযে পড়ে তাতে নিঃসন্দেহে শক্তির কেন্দ্রে বড়ো রকমের ভূকম্পন ঘটেছে। ভয় পেয়েছে অবৈধ উপাযে গেড়ে বসা ক্ষমতা। কারণ যে দেশের একটি বড়ো দল সরকারী দলের দাবি মোতাবেক নয় বছরেও নয় মিনিটের মতো থির হয়ে দাঁড়াতে পারেনি সেখানে এই জেগে ওঠা এই তরুণ শক্তি তাদের পিলে চমকে দিয়েছে। হতচকিত ‘ক্ষমতা তাই চকিত চখির মতো আতঙ্কে কোটা বাতিল করার মতো  অঘটন পটিয়সী হয়েছে।

কোটা কোনো সরকার প্রধান হট করে বাতিল করে দিতে পারেন না। তবু সেটা করা হযেছে। বিপ্লবের বেলুন চট করে ফুটো করার এটি এক আসাধারণ কৌশল কি না সেটা ভাবা দরকার। একই কায়দায় এশাকে হঠিয়ে দিযেছে ঢাবি তো বটেই, ছাতলীগও — নিমেষমাত্র ভেবে দেখেনি  এই পলকে প্রলয় আর পলকে এশাকে ফেরানোর পরিণাম কি হতে পারে।
এই আন্দালন যখন ধমকেতু হয়ে দেখা দেয়, গে্ল গেল রব উঠলো। উঠলো কোন মহলে? বলা হলো অপশক্তি, অপশক্তি দেশে ভর করেছে। ঠিক সেই কেতায় যা  অবৈধ ফখরুদ্দিন সরকারের ফেউরা রব তুলেছিল একই ভাষায়। প্রথমে আবিস্কৃত হয়েছে রাজাকারে বাচ্চারা। পরে জামায়াত-বিএনপি। কিন্ত কোথাও এদের নামগন্ধও পাওয়া যায়নি। আসলে অবৈধ ক্ষমতা ভুত দেখেছে। ক্ষমতার ভোট ব্যাংক যে যায়!
যারা বলছে, বাঘ আসছে, আসলে তারা বাঘের ছায়াই দেখেছে। কারণ তারাই জানেন এটা শার্দুলের দেশ। তারা আর যাই হোক শার্দুলের ঘাড়ে চড়তে চায় না।

এখন দেখা যাক, ইনকমিস্ট কি বলে —  


ভারতে সরকারি চাকরিতে কোটা আছে অনগ্রসর শ্রেণীর জন্য। সমাজে সমতা আসা অবধি কেবল সেটা থাকবে। তবে ইতিহাস দুদেশের জন্য ভিন্ন রকম। শাসক আওয়ামী লীগ মুক্তিযোদ্ধার নানা প্রজন্মের জন্য সরকারি চাকরির ৩০ শতাংশ রিজার্ভ রেখেছে। ২৬% অন্যদের জন্য । ছাত্রাদের দাবি সরকারি চাকরির ৯০% মেধার ভিত্তিতে হতে হবে। আন্দোলনদ্রুত ঘুর্ণির মতো পাকিয়ে উঠতে দেখে বললেন কোটা বাতিল। যারা আন্দোলন করছেন  তাদের একজন রাশেদ খান বললেন, ছাত্রদের যদি মুক্তি না দেওয়া হয় তারা আবার আন্দোলনে যাবে। যদিও তারা আশঙ্কাও প্রকাশ করলেন তাদের গুম করা হতে পারে। দেশে কযেক কোটি তরুন বেকার। বেকারত্বের হার ১০%। দেশের ২/৩ অংশ মানুষের গড়বয়স ৩৫। সরকারের ফি বছর ২০লাখ কাজর সুযোগ সৃষ্টির কথা। কাজেই ৫৬% কোটা গোদের ওপর বিষ ফোঁড়া।


দেশের এই ধিকি ধিকি অসন্তোষের তুষের আগুনের পরিস্থতির মুখে আসছে  সাধারণ নির্বাচন ডিসেম্বরে। দেশের বিরোধীরা দিশেহারা, ছত্রখানও। বেগম জিযা জেলে। জামায়াতের নির্বাচন নিষিদ্ধ। অসন্তোষের কেবল বোধগম্য উৎস হতে পারে শুধুই সেনাবিাহনী  ও ছাত্ররা। এ অবস্থাটি অনেকটা ব্যাখ্যা করার ছলে সিপিডি অর্থনীতিবিদ দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য ইকনমিস্টকে বলেছেন,‘ এতোকিছুর পরেও নির্বাচন হতে পারে, তবে এর ফল কি হবে হবে তা গণক ঠাকুরের মতো বলে দিতে পারছি না। তাই আড়াই কোটির মতো নতুন করে যেসব তরুণ ভোটার হবেন, তারা শাসক দলের  জন্য অবশ্যই মাথাব্যথার কারণ হবে। হবে কি? টুবি অর নট টুবি দ্যটস দ্য কোয়েশ্চেন।

No comments:

Post a Comment