Search

Monday, April 16, 2018

ইলিশের পথ আটকে বিদ্যুৎকেন্দ্র

প্রকল্পের চাপে পটুয়াখালী


ইফতেখার মাহমুদ

একসময় সুস্বাদু ইলিশ বেশি পাওয়া যেত চাঁদপুরে। পদ্মা ও মেঘনার এই মিলনস্থলে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরতেন জেলেরা। নদীর নাব্যতা কমে যাওয়ায় আর দূষণের দাপটে সেখান থেকে ইলিশের দল পালিয়েছে। আশ্রয় নিয়েছে ভোলা-নোয়াখালী হয়ে পটুয়াখালী উপকূলে। এখন ইলিশের সবচেয়ে বড় আশ্রয়স্থল পটুয়াখালী উপকূলের আন্ধারমানিক, পায়রা, বামনাবাদ ও নোয়াখালী নদী।

কিন্তু ওই অঞ্চল ঘিরে বড় বড় প্রকল্পের কাজ শুরু হওয়ায় ইলিশের বসতি আবারও ঝুঁকির মুখে পড়বে বলে মনে করছেন মৎস্য বিশেষজ্ঞরা। শুধু কলাপাড়া উপজেলাতেই সরকার ছয়টি বিদ্যুৎকেন্দ্র, একটি সমুদ্রবন্দর, বিশেষ শিল্পাঞ্চল ও চার লেনের মহাসড়ক নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এসব প্রকল্প নির্মিত হলে ওই অঞ্চলের নদীগুলো হবে বিদ্যুৎকেন্দ্রের পানির জোগানদাতা এবং গরম পানি ও বর্জ্য ফেলার স্থান। বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাঁচামাল আনতে নদীগুলো খনন করা হবে। ফলে ওই পথে জাহাজ চলাচল বাড়বে। এতে বঙ্গোপসাগর থেকে আসা ইলিশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ওই প্রবেশপথ আটকে যাবে।

বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট, জাতিসংঘ বিশ্ববিদ্যালয় ও যুক্তরাজ্যভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (আইআইইডি) গবেষণায় বলা হয়েছে, কলাপাড়া-কুয়াকাটা বাংলাদেশের ইলিশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ চলন, বিচরণ ও পালনকেন্দ্র। জাটকা থেকে পরিণত হওয়ার আগে ইলিশের দল বসত গড়ে আন্ধারমানিক নদে। সেখানে একটু পরিণত হয়ে বা বড় হয়ে তারা সমুদ্রে ফিরে যায়। দূষণ না থাকায় ওই এলাকায় ইলিশের খাবারের জোগানও বেশি।

নদী সংরক্ষণ-বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা ওয়াটার কিপারস বাংলাদেশ ও বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) চলতি মাসে পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় ছয়টি বিদ্যুৎকেন্দ্র ও অন্যান্য স্থাপনার প্রভাব নিয়ে একটি গবেষণা করেছে। গবেষণায় কলাপাড়া ও কুয়াকাটার ভূমির গঠন এতগুলো শিল্পকারখানাকে ধারণ করতে পারবে কি না, প্রশ্ন তোলা হয়েছে। প্রতিবছর ওই এলাকায় প্রায় চার হাজার কোটি টাকার ইলিশের বাণিজ্য হয় উল্লেখ করে সংস্থাটির বাংলাদেশ শাখার সমন্বয়কারী শরীফ জামিল প্রথম আলোকে বলেন, এ পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের ইলিশ উৎপাদনে গত এক যুগের সফলতায় ছেদ ফেলবে। ইলিশের দল অন্যত্র পালাতে বাধ্য হবে।

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় কলাপাড়াকে দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রধান অঞ্চল বা ‘পাওয়ার হাব’ হিসেবে ঘোষণা করেছে। সেই লক্ষ্যে সরকার বরিশাল থেকে কলাপাড়া পর্যন্ত চারটি সেতু নির্মাণ করেছে। বরিশাল-কুয়াকাটা সড়ক চার লেনে পরিণত হয়েছে। একটি বিমানবন্দর, বাণিজ্যিক এলাকাসহ আরও কিছু স্থাপনা তৈরি হবে।

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ প্রথম আলোকে বলেন, কলাপাড়ায় যেসব বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের কাজ হচ্ছে, সেগুলোর প্রতিটির জন্য আলাদা পরিবেশগত সমীক্ষা করা হচ্ছে। তবে সামগ্রিকভাবে ওই এলাকার ওপর কোনো কৌশলগত প্রভাব সমীক্ষা (এসইএ) হয়নি। দেশের বিশেষজ্ঞরা এ ব্যাপারে কোনো পরামর্শ দেননি।

কলাপাড়া উপজেলা পরিষদ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বিভিন্ন বিদ্যুৎ প্রকল্প ও শিল্পকারখানা এবং অবকাঠামোর জন্য কলাপাড়ায় প্রায় ৩০ হাজার একর জমি দরকার হবে। ইতিমধ্যে প্রায় ১৫ হাজার একর অধিগ্রহণ করে বিভিন্ন কোম্পানিকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। পায়রাবন্দর ও দুটি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের অবকাঠামো নির্মাণের কাজ শুরু হয়ে গেছে।

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মৎস্য অনুষদের অধ্যাপক আবদুল ওয়াহাব প্রথম আলোকে বলেন, বিগত এক যুগে সরকারের নেওয়া উদ্যোগে দেশের ইলিশের উৎপাদন দ্বিগুণ হয়েছে। আর কলাপাড়া এলাকার নদীগুলো দেশের তো বটেই, পৃথিবীর ইলিশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ লালন ও বিচরণ এলাকা। ওই এলাকায় এতগুলো বিদ্যুৎকেন্দ্র একসঙ্গে নির্মাণ করলে তা দেশের এই অমূল্য সম্পদ ইলিশের জন্য বড় ধরনের ক্ষতি হতে পারে।

কারা কী নির্মাণ করছে
নর্থ ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি জার্মানির সিমেন্সের সঙ্গে ৩ হাজার ৬০০ মেগাওয়াট এবং চীনের সিএমসি কোম্পানির সঙ্গে ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াটের দুটি, ১০০ মেগাওয়াটের সৌরবিদ্যুতের একটি ও বায়ুচালিত ৫০ মেগাওয়াটের একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করছে। এ ছাড়া আশুগঞ্জ পাওয়ার স্টেশন কোম্পানি ও চীন যৌথভাবে ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াটের বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করছে।

এর বাইরে ওই এলাকায় পায়রা সমুদ্রবন্দর নির্মাণ করছে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া ইনডেক্স গ্রুপসহ বেশ কয়েকটি বেসরকারি কোম্পানি ওই এলাকায় জমি কিনেছে। তারাও সেখানে এলপিজি গ্রামসহ নানা ধরনের শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার পরিকল্পনা নিয়েছে।

মাটি-পানি ও ইলিশের ঝুঁকি
রাষ্ট্রীয় কোম্পানি নর্থ ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি ও চীন যৌথভাবে কলাপাড়ায় ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট উৎপাদনক্ষমতার একটি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের কাজ প্রায় ৩৫ শতাংশ শেষ করে এনেছে। ওই প্রকল্পের পরিবেশগত প্রভাব সমীক্ষা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুধু এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য বছরে ৪৮ লাখ টন কয়লা পোড়ানো হবে। সেখানে প্রতিদিন তৈরি হবে প্রায় ১ হাজার মেট্রিক টন ছাই। প্রতিদিন বামনাবাদ নদ থেকে ৪ হাজার ২০০ ঘনমিটার পানি উত্তোলন করা হবে, যার ব্যবহারের পর উত্তপ্ত অবস্থায় আবারও ওই নদে ফেলা হবে।

পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ট্রাস্টি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড জিওগ্রাফিক্যাল ইনফরমেশন সার্ভিসের (সিইজিআইএস) তত্ত্বাবধানে সমীক্ষাটি হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, কেবল ওই একটি বিদ্যুৎকেন্দ্রের কারণে ইলিশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অভয়ারণ্য বামনাবাদ, আন্ধারমানিক ও টিয়াখালী নদীর পানি ও মাটিদূষণ মাঝারি থেকে উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে। ওই এলাকায় পানি নিষ্কাশনব্যবস্থাও উচ্চ ঝুঁকিতে পড়বে।

বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা প্রতিষ্ঠানের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও ইলিশ গবেষক আনিসুর রহমান এ বিষয়ে প্রথম আলোকে বলেন, কলাপাড়া এলাকায় বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ যেসব অবকাঠামো নির্মিত হচ্ছে, তার প্রভাব অবশ্যই ইলিশের ওপর পড়বে। ইলিশ খুব দূষণ সংবেদনশীল প্রাণী।

ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক আইনুন নিশাত এ ব্যাপারে প্রথম আলোকে বলেন, দেশের উন্নয়ন ও চাহিদা মেটাতে বিদ্যুৎ প্রয়োজন। দেশের জন্য আরও বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে কোথাও না কোথাও বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করতে হবে। তবে মনে রাখতে হবে দেশের পরিবেশ, প্রকৃতি ও খাদ্য উৎপাদন নিশ্চিত করাও সরকারের সাংবিধানিক দায়িত্ব। কোনো একটি এলাকায় অনেক বিদ্যুৎকেন্দ্র হলে তা আলাদাভাবে হয়তো বড় ধরনের দূষণ করবে না। কিন্তু এগুলো সম্মিলিতভাবে বড় ধরনের দূষণ ও বিপর্যয়ের কারণ হতে পারে। আইনুন নিশাত মনে করেন, পরিবেশ আইন মেনে প্রতিটি বিদ্যুৎকেন্দ্র ও প্রকল্পের জন্য আলাদা সমীক্ষা করা হলেও সম্মিলিত প্রভাব ও ঝুঁকি নিরূপণ করা প্রয়োজন।
  • প্রথম আলো /এপ্রিল ১৬,২০১৮ 

অদক্ষতা ও কর্মহীনতার ফাঁদে কি বাংলাদেশের যুবসমাজ?

সুমন আফসার


দেশের কলেজগুলো থেকে যারা স্নাতক সম্পন্ন করছেন, দুই বছর পর্যন্ত তাদের ৭০ শতাংশই বেকার থাকছেন। আবার পলিটেকনিক থেকে যারা বেরোচ্ছেন, তাদেরও ৪০ শতাংশ থাকছেন বেকার। কলেজ থেকে বেরোনোর পর স্নাতকরা কর্মজীবনে কী করছেন, তা বুঝতে ও পর্যবেক্ষণের জন্য ‘ট্রেসার স্টাডি অন কলেজ গ্র্যাজুয়েটস ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক একটি গবেষণার কাজ করছে বিশ্বব্যাংক। প্রাপ্ত ফলাফল ও পর্যবেক্ষণ এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ না করলেও গত ৩১ মার্চ প্রকাশিত “বাংলাদেশ: স্কিলস ফর টুমেরো’স জবস” শীর্ষক প্রতিবেদনে স্নাতকদের কর্মজীবনের নানা চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে বর্ণনা করতে গিয়ে এ চিত্র তুলে ধরেছে সংস্থাটি। এ বিপুল তরুণ জনগোষ্ঠীর কর্মহীন থাকার কারণ কি দক্ষতার ঘাটতি, নাকি কর্মসংস্থানের সুযোগ কমে যাওয়া? বিশ্বব্যাংক বলছে, এর পেছনে দক্ষতার ঘাটতি যেমন আছে, একইভাবে আছে কর্মসংস্থানের সীমিত সুযোগও। এতে ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ডের বিষয়টি জটিল রূপ নিচ্ছে।

কর্মক্ষেত্রে নতুন প্রযুক্তির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা শেষে দক্ষতা উন্নয়নের প্রশিক্ষণ বিশেষভাবে প্রয়োজন। যদিও বিশ্বব্যাংক বলছে, দক্ষতা বৃদ্ধিতে এ ধরনের প্রশিক্ষণে বাংলাদেশের তরুণদের অংশগ্রহণের হার উল্লেখ করার মতো নয়। ১৫ বছরের বেশি বয়সী তরুণদের মাত্র ২ দশমিক ১ শতাংশের প্রচলিত শিক্ষার বাইরে কারিগরি প্রশিক্ষণ রয়েছে। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর বেশির ভাগই কর্মীদের প্রশিক্ষণ প্রদানের বিষয়ে অনাগ্রহী।

মূলত দুটি কারণে তরুণ জনগোষ্ঠীর দক্ষতা বৃদ্ধি সম্ভব হচ্ছে না বলে মনে করেন বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের লিড ইকোনমিস্ট ড. জাহিদ হোসেন। তিনি বলেন, মৌলিক শিক্ষার নিম্নমান এক্ষেত্রে প্রধান ভূমিকা রাখছে। এছাড়া যুগোপযোগী কারিগরি শিক্ষারও অভাব রয়েছে। সব মিলিয়ে দক্ষতা বিবেচনায় পিছিয়ে রয়েছে আমাদের তরুণ জনগোষ্ঠী। দক্ষতা উন্নয়নে নীতিগত কাঠামো তৈরির পাশাপাশি সময়োপযোগী শিক্ষণ-প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করতে হবে।

বর্তমান বিশ্বে প্রযুক্তিগত অগ্রগতির সুফল পেতে কর্মীদের সংশ্লিষ্ট বিষয়ে সঠিক দক্ষতা উন্নয়ন প্রয়োজন। দেশের শিল্প খাতের জন্যও এটি প্রযোজ্য। এ দক্ষতা নিশ্চিত করতে পারে শিক্ষা ও দক্ষতা উন্নয়ন কার্যক্রম। সঠিক দক্ষতাসম্পন্ন প্রার্থীর অভাব বোধ করছে নিয়োগদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো। ফলে শিক্ষিত তরুণদের বড় অংশ কর্মসংস্থানের বাইরে থেকে যাচ্ছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) শ্রমশক্তি জরিপ ২০১৬-১৭ অনুযায়ী, স্নাতকদের ১১ দশমিক ২ শতাংশ বেকার। এ প্রবণতাকে উদ্বেগের কারণ হিসেবে দেখছে বিশ্বব্যাংক। পলিটেকনিক থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের মধ্যেও রয়েছে উচ্চবেকারত্ব হার। দীর্ঘদিন ধরে কর্মহীন থাকতে হচ্ছে এসব তরুণকে। কর্মহীন থাকায় সামাজিকভাবেও বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছেন তারা।

নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই এ তরুণদের কাজে লাগাতে হবে মন্তব্য করে ড. জাহিদ হোসেন বলেন, দেশের জনগোষ্ঠীর উল্লেখযোগ্য অংশ তরুণ। এদের কাজে লাগাতে হবে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে। এজন্য প্রতিটি দিনই গুরুত্বপূর্ণ। তা না হলে বিপুল তরুণ জনগোষ্ঠী অদক্ষ মানবসম্পদ হিসেবে আবির্ভূত হতে

পারে। এতে সম্পদের পরিবর্তে বোঝা হয়ে দাঁড়াবে এ জনগোষ্ঠী।

উৎপাদনশীলতায় বড় ধরনের ভূমিকা রয়েছে শিক্ষার। যদিও বাংলাদেশের মোট শ্রমশক্তির বড় অংশ শিক্ষায় পিছিয়ে থাকায় উৎপাদনশীলতায় সেভাবে ভূমিকা রাখতে পারছে না। শ্রমশক্তি জরিপের তথ্যমতে, উৎপাদনশীল খাতে নিয়োজিত শ্রমশক্তির ২৩ দশমিক ৯ শতাংশের প্রাতিষ্ঠানিক কোনো শিক্ষা নেই। উৎপাদনশীল খাতে নিয়োজিতদের মধ্যে স্নাতক বা স্নাতকোত্তর মাত্র ৪ শতাংশ। সামগ্রিকভাবে কর্মে নিয়োজিতদের মধ্যে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী ৫ দশমিক ৩ শতাংশ।

অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নির্ভর করে উৎপাদন প্রক্রিয়ায় ব্যবহূত উপকরণ তথা শ্রমের দক্ষ ব্যবহারের ওপর। উৎপাদন উপকরণ দক্ষভাবে ব্যবহার করা গেলে শ্রমের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি পায়, যা জাতীয় প্রবৃদ্ধিকে ত্বরান্বিত করে। অথচ শ্রমের উৎপাদনশীলতা বাংলাদেশে এখনো কম। জাতিসংঘের ইকোনমিক অ্যান্ড সোস্যাল কমিশন ফর এশিয়া অ্যান্ড দ্য প্যাসিফিকের (ইউএন-এসকাপ) হিসাবমতে, বাংলাদেশে শ্রমের গড় উৎপাদনশীলতা এ অঞ্চলের দেশগুলো বিশেষ করে শ্রীলংকা, পাকিস্তান ও ভারতের চেয়ে নিচে। বাংলাদেশে শ্রমের গড় উৎপাদনশীলতা বছরে ৮ হাজার ডলার হলেও শ্রীলংকায় ২৩ হাজার, পাকিস্তানে ১৮ হাজার ও ভারতে তা ১৫ হাজার ডলার।

শ্রমের দক্ষ ব্যবহার নিশ্চিত করতে সরকার দক্ষতা উন্নয়নে কাজ করছে বলে জানান জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন পরিষদ (এনএসডিসি) সচিবালয়ের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত সচিব এবিএম খোরশেদ আলম। বণিক বার্তাকে তিনি বলেন, দক্ষতার বিষয়টি সরকার শিক্ষার বাইরে আলাদাভাবে বিবেচনা করছে। আগামীতে দক্ষতার বিষয়টি শিক্ষা খাত থেকে যেমনটা আসার কথা তেমনি আসবে, কিন্তু চাকরি হোক বা সেলফ এমপ্লয়মেন্ট হোক, কাজের উপযোগী হওয়ার জন্য আলাদা বিশেষ দক্ষতা লাগবে। বিষয়টি নিশ্চিত করতে সরকার দক্ষতা উন্নয়নে কাজ করছে। সরকারের প্রচেষ্টার পাশাপাশি বেসরকারি উদ্যোগেও এখন পর্যন্ত ১১টি শিল্প খাতভিত্তিক কাউন্সিল হয়েছে। আরো তিনটি এ বছর গঠন করা হবে। দুই বছরের মধ্যে দেশে ২০টি শিল্প খাতভিত্তিক দক্ষতা কাউন্সিল গঠন হবে।

বেসরকারি খাতে কোন ধরনের শিল্পে কী ধরনের দক্ষতা দরকার হবে, সরকারের সহযোগী হিসেবে কাউন্সিলগুলো তা নির্ধারণ করবে বলে জানান খোরশেদ আলম। তিনি বলেন, দক্ষতা উন্নয়নে যুক্ত আমাদের যে ১৩ হাজারের বেশি প্রতিষ্ঠান আছে, সেগুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধির বিষয়টি পর্যালোচনা করা হচ্ছে। এর বাইরেও সরকার অনলাইন প্ল্যাটফর্মে ব্যাপক আকারে কার্যক্রম আগামীতে নেবে। আমরা মনে করি, যেভাবে আমরা দক্ষতা উন্নয়ন ও এসডিজি সামনে রেখে এগিয়ে যাচ্ছি, তাতে আমাদের জনশক্তি অদক্ষ থাকবে না। অচিরেই এসব কাজ দৃশ্যমান হবে। এ বছর আমরা জাতীয় পর্যায়ে দক্ষতা উন্নয়ন প্রতিযোগিতার আয়োজন করব।

  • Courtesy: Banikbarta/ Apr 16, 2018

Govt urged to check extortion by Police to rein in prices in Ramadan

Traders on Sunday conveyed to the government their fear that like previous years extortion by police and others from goods carrying vehicles and business establishments would push up prices of essentials during this Ramadan.

At a discussion, organised by Dhaka Chamber of Commerce and Industry at its auditorium in the capital, businesses requested the government to stop extortion by police and political activists on highways and at shops to reign in prices during Ramadan.

‘A huge number of iftar parties and other events on the eve of Eid take place under the banner of different social and political parties and in most cases businesses are forced to bear the cost of the events,’ former DCCI senior vice-president MS Shekil Chowdhury alleged.

Extortion in the name of Iftar party and other events in the name of Eid celebrations also put pressure on commodity prices as businesses would try to recover the money from the prices of goods, he pointed out.

DCCI president Abul Kasem Khan said that traditional supply chain management, unabated hoarding, lack of market monitoring, extortion on highways, excessive traffic congestion and increase in transportation cost were behind price spiral of essential commodities.

He urged the law enforcement agencies to strongly handle extortion in transportation sector as well as manage traffic jam in the city and highways. 

Before Ramadan, speedy customs clearance at ports of essential commodities, mostly used in Ramadan, could ease price hike, Kasem demanded. 

Abul Hasem, general secretary of Bangladesh Paikari Vojya Tel Byabasayee Samiti, alleged that extortion from trucks on the highway was going on with the support of police. He said that the prices of essential commodities were under the control of 5/7 businesses and the DCCI should sit with them.

Dhaka University professor Zia Rahman presented keynote paper saying that the government fails to control market during Ramadan every year due to the unholy nexus of a quarter.

‘We have to realise the situation of the market when prime minister has to intervene to control the commodity prices in a country,’ he said. Zia urged the government to control political and police extortion from businesspeople.

DCCI member Siraz Uddin Malik alleged that region-based goons already started extorting money from the businesspeople and the government should take action immediately. ‘I want to ask home minister whether police would provide support if the businesses take initiative to prevent extortionists,’ he said.

Home minister Asaduzzaman Khan Kamal said that the government would take stern action against extortion. He requested businesses to file specific complaints over the extortion and the government would take proper action.

Asaduzzaman urged businesses not to cross load capacity on highway and not to run vehicles without legal documents. He said that in some cases traffic inspectors were taking advantage as many trucks were carrying goods without registration.

‘Even if one plies his vehicle with proper registration and driving licence, police cannot take bribe. But it is true there are extortionist police and we are taking action against them,’ the minister said.

He, however, accused traders of adulterating food. On law and order, Asaduzzaman urged businesses to play a role in this regard and observed that many big industries were being installed but some shut their factories without paying the workers before Eid, which affected law and order.

‘Sometimes we see that despite stable price on international market, increasing dollar price pushes up prices of essential commodities on local market,’ president of Consumers Association of Bangladesh Ghulam Rahman said. He also blamed huge traffic jam and container congestion at the ports for price spiral. 

Ghulam Rahman suggested that the government ensure strong market monitoring during Ramadan.

  • Courtesy: New Age/Apr 16, 2018

কোটা নিজেদের ঘরে অবরুদ্ধ করেছে সরকার - মঈন খান

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেন, দেশের গণতান্ত্রিক পদ্ধতিকে আওয়ামী লীগ যেভাবে অবরুদ্ধ করেছে একইভাবে কোটা পদ্ধতি সংস্কারের ঘোষণা না দিয়ে বাতিল করে প্রধানমন্ত্রী কোটা নিজেদের ঘরের মধ্যে অবরুদ্ধ করেছে।

তিনি বলেন, এই সরকার জনগণের প্রতিনিধিত্ব করে না। পুরো দেশটাকে তারা ঘরের

মধ্যে অবরুদ্ধ করে রেখেছে। দেশের সম্পদ নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে। ছাত্রদের যৌক্তিক দাবি নিয়েও দেশে বিভাজনের রাজনীতি সৃষ্টি করেছে।

আমাদের অর্থনীতির সাথে এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন। প্রবীণ এই রাজনীতিক বলেন, ‘কোটা সংস্কার করার জন্য ছাত্রদের ন্যায্য দাবিকে ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে সরকারের মন্ত্রীরা দেশকে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ-বিপক্ষ বলে বিভাজনের সৃষ্টি করেছেন।

বর্তমানে কোটার যে সিস্টেম যেটা প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার আগে পর্যন্ত প্রচলিত ছিল, সেটা হল এই জাতিকে মেধাশূন্য করার একটা নীল নকশা। মেধাবীদের এখানে কোনো স্থান ছিল না। সেই কারণেই সাধারণ ছাত্রসমাজ এটার প্রতিকার চেয়েছে। কিন্তু সরকার তার সমাধান না করে নিজের ঘরের মধ্যে অবরুদ্ধ করেছে। যেভাবে অন্ধকার কারাগারে অবরুদ্ধ করেছে আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে।
  • Courtesy: আমাদের সময়.কম /Apr 16, 2018

৪৭ বছরে দেশ সোনার বাংলার বদলে গুম-খুনের দেশ হয়েছে - মান্না


নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, ৪৭ বছরে দেশ সোনার বাংলা হওয়ার বদলে হাইজ্যাকার, লুটপাট এবং গুম-খুনের দেশ হয়েছে।

রোববার বাংলা নববর্ষ ১৪২৫ উপলক্ষে দুপুরে বিকল্পধারা বাংলাদেশ’র কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।

মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, এখানে গণতন্ত্র নাই, আছে ক্ষমতাজবরদখলকারী, আর যারা ক্ষমতা দখলকারীদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে তাদের করা হয় পদাঘাত। গণতন্ত্র, মানুষের কল্যাণ এবং একটি কল্যাণমূলক রাষ্ট্রের জন্য লড়াই করার ব্রতই হোক বাংলা নববর্ষ ১৪২৫-এর প্রধান শপথ।

সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- বিকল্পধারার কেন্দ্রীয় নেতা মাহবুব আলী, ইঞ্জিনিয়ার মো. ইউসুফ, বেগ মাহাতাব, হাফিজুর রহমান ঝান্টু, ওয়াসিমুল ইসলাম, যুবধারার সভাপতি ওবায়েদুর রহমান মৃধা, সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান বাচ্চু, শ্রমিকধারার সভাপতি আইনুল হক, স্বেচ্ছাসেবকধারার সভাপতি বিএম নিজাম, মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্মধারার সভাপতি সাইফুল ইসলাম শোভন, ইঞ্জিনিয়ার মেসবাহ উদ্দিন জুন্নু ও জান্নাতুল ফেরদৌস প্রমুখ।
  • Courtesy: আমাদের সময়.কম/ Apr 15,2018

ইফতারের নামেও চাঁদাবাজি

ডিসিসিআই আয়োজিত সভায় বক্তারা

পবিত্র রমজান মাসে ইফতার অনুষ্ঠানের নামে চাঁদাবাজি করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত এক সভায়। এতে ব্যবসায়ীরা ইফতার অনুষ্ঠান নিয়ন্ত্রণের দাবি করে বলেছেন, বেশির ভাগ ইফতারের নামে পণ্যের অপচয় ও যানজট তৈরি করা হচ্ছে। আর ইফতার অনুষ্ঠানের নামে যে চাঁদা নেওয়া হয়, তা পণ্যের দামের মধ্যেই অন্তর্ভুক্ত হয়।

পবিত্র রমজান মাসে পণ্যের সরবরাহ ও দ্রব্যমূল্য পরিস্থিতি নিয়ে আজ রোববার মতিঝিলে ঢাকা চেম্বার কার্যালয়ে সভাটির আয়োজন করে ডিসিসিআই। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

সভায় পুলিশের চাঁদাবাজি, যানজট, পরিবহন খরচ বেড়ে যাওয়াসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। এ সময় ব্যবসায়ীরা বলেন, পণ্যের সরবরাহ ঠিক থাকলে দাম বাড়ানো যায় না। তাই বড় আমদানিকারকেরা ঠিকমতো আমদানি করছেন কি না, সরবরাহ করছেন কি না, তা নজরে রাখতে হবে।

ইফতার অনুষ্ঠানের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন ঢাকা চেম্বারের সাবেক সহসভাপতি এম এস শেকিল চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘একেকটি এলাকায় ৩০ দিনে ৬০টি ইফতার অনুষ্ঠান হয়। এসব ইফতার অনুষ্ঠানের জন্য চাঁদা নেওয়া হয় ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে।’ তিনি বলেন, ইফতার অনুষ্ঠানের নামে চাঁদাবাজি উৎসাহ পেলে পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিমিনোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান জিয়া রহমান বলেন, রমজান মাসে পুলিশের বিভিন্ন বিভাগ, সরকারের বিভিন্ন সংস্থা ও বিভাগ ইফতার অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এটা অনুৎপাদনশীল ধারণা। এটা যানজট বাড়ায় ও পণ্যের অপচয় হয়।

এ সময় ঢাকা চেম্বারের সভাপতি আবুল কাসেম খান বলেন, ‘আমরা ঢাকা চেম্বার থেকে এ বছর ইফতার অনুষ্ঠানের আয়োজন না করে একটি উদাহরণ তৈরি করতে পারি। এতে আমাদের খরচও কমবে।’

এ সময় সংগঠনটির সাবেক সহসভাপতি আবদুস সালাম বলেন, খরচের চিন্তা করে ইফতার অনুষ্ঠানের আয়োজন বাদ দেওয়া ঠিক নয়। কারণ, ইসলাম ধর্মে রোজাদারকে ইফতারি খাওয়ানো সওয়াবের কাজ।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশনের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমানসহ বিভিন্ন পণ্যের পাইকারি ব্যবসায়ীরা উপস্থিত ছিলেন।
  • Courtesy: Prothom Alo/ Apr 15, 2018

কোটা বাতিলে কোনো অগ্রগতি নেই

সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলে প্রজ্ঞাপন জারি বা কমিটি গঠনের বিষয়ে আজ রোববার রাত পর্যন্ত কোনো অগ্রগতি নেই। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

কোটা-সংক্রান্ত কাজগুলো করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। জানতে চাইলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা রোববার প্রথম আলোকে বলেন, তাঁদের কাছে এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো নির্দেশনা নেই।

গত বুধবার জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোটা বাতিলের ঘোষণার দিয়ে বলেছেন, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ও প্রতিবন্ধীদের অন্যভাবে চাকরির ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে। এ বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলমকে আহ্বায়ক করে একটি কমিটি করার কথা থাকলেও রোববার বিকেল পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো অগ্রগতি নেই বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব।

এর মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সৌদি আরব ও যুক্তরাজ্যে সফরের উদ্দেশে রোববার ঢাকা ছেড়েছেন। আট দিনের সফর শেষে ২৩ এপ্রিল তাঁর দেশে ফেরার কথা। ফলে এ বিষয়ে আরও সময় লাগতে পারে।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা গত বৃহস্পতিবার প্রথম আলোকে বলেছিলেন, একটু সময় লাগলেও কোনো অসুবিধা হবে না। কারণ এখন কোনো নিয়োগ পরীক্ষা নেই।
বর্তমানে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির পদে ৪৫ শতাংশ মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ হয়। আর বাকি ৫৫ শতাংশ অগ্রাধিকার কোটায় নিয়োগ হয়। বিদ্যমান কোটার সংস্কার চেয়ে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ গত ২৭ ফেব্রুয়ারি থেকে আন্দোলন করে আসছেন। 

৮ এপ্রিল শাহবাগ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় আন্দোলনকারীদের ওপর পুলিশের লাঠিপেটা ও কাঁদানে গ্যাস ছোড়ার কারণে আন্দোলন সহিংস হয়ে ওঠে। এর জের ধরে সারা দেশেই আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। আন্দোলনকারীরা ঘোষণা দেন, প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে ঘোষণা না আসা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। এ অবস্থায় গত বুধবার জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রী কোটা বাতিলের পক্ষে মত দেন। এই ঘোষণার পর প্রজ্ঞাপন জারি না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি স্থগিত করেন আন্দোলনকারী।
  • Courtesy: Prothom Alo /Apr 15, 2018

Sunday, April 15, 2018

নির্যাতন-মারধরই এশার নেশা




মধ্যরাতে ছাত্রী নির্যাতনের ঘটনায় অভিযুক্ত সুফিয়া কামাল হল ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সভানেত্রী ইফফাত জাহান এশার বিরুদ্ধে ওঠেছে এন্তার অভিযোগ। 

মঙ্গলবার দিবাগত রাতেই নয়, এর আগেও তার নির্যাতনের শিকার হয়েছেন অনেক শিক্ষার্থী। রাজনৈতিক আশ্রয়ে হলে ওঠা ছাত্রীদের মানসিক ও শারীরিক অত্যাচার করাটা ছিল তার এক ধরনের নেশা।

হলের আবাসিক এক ছাত্রী জানান, কোটা সংস্কারে এবারের আন্দোলনের আগ পর্যন্ত মেয়েরা এভাবে কোনো আন্দোলনে অংশ নেয়নি। তিনি বলেন, শুরুর দিকে যখন এশার অধীনে হলে উঠি তখন প্রথম ১২ দিন তার পলিটিক্যাল কমান্ডে হেন কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি নেই যে, অংশ নিতে হয় নি। 

হল-এ পলিটিক্যাল গণরুমে থাকা ছাত্রীদের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশ নিতে বাধ্য করাটা হচ্ছে একটি অলিখিত নিয়ম। 

গতকালের (মঙ্গলবার) ছাত্রী নির্যাতনের ঘটনা প্রকাশের মধ্য দিয়ে প্রথা ভাঙার সংস্কার চালু হয়েছে।

কারণ এরকম মারামারি এর আগেও অনেকবার হয়েছে। সেগুলো এভাবে প্রকাশ পায় নি। 

হলের আরেক শিক্ষার্থী জানান, কোটা সংস্কার আন্দোলনে অংশ নেয়ার কারণে সোমবার রাতেও কয়েক শিক্ষার্থীকে বকাঝকা করেছেন এশা। সাধারণ মেয়েরা তাদের ডেকে জানতে চাইলে কোনো জবাব না দিয়ে চুপচাপ দাঁড়িয়ে ছিলেন ভুক্তভোগীরা। এশার অত্যাচারের ভয়ে কোনো ছাত্রীই মুখ খুলতে সাহস পেতেন না। রাজনৈতিক আশ্রয়ে হলে ওঠা ছাত্রীদের মনে একটি শঙ্কাই কাজ করতো, এই বুঝি তাদের সিট বাতিল হয়ে যায়।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এশার গ্রামের বাড়ি ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার ৩নং দিগনগর ইউনিয়নের দেবতলা গ্রামে। তার বাবা ইসমাইল হোসেন ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক এবং জেলা দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি)। ২০০১ সালে শৈলকুপার গাড়াগঞ্জে একটি জনসভায় তিনি আওয়ামী লীগে যোগদান করেন। এশা ঝিনাইদহ সরকারি বালিকা বিদ্যালয় থেকে ২০১০ সালে মানবিক বিভাগ থেকে এসএসসি ও ২০১২ সালে ঝিনাইদহ সরকারি নুরুন্নাহার মহিলা কলেজ থেকে মানবিক বিভাগে এইচএসসি পাস করেন। এরপর ২০১২-২০১৩ শিক্ষাবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দর্শন বিভাগে ভর্তি হন। বর্তমানে তিনি মাস্টার্সের শিক্ষার্থী।

হলে হলে আন্দোলনকারীদের নির্যাতনের অভিযোগ


কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত সাধারণ শিক্ষার্থীদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে হলে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে। শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন ছাড়াও হল থেকে বের করে দেয়ার হুমকি দেয়া হচ্ছে বলে দাবি শিক্ষার্থীদের। শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, গত চারদিন যাবৎ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হলে ছাত্রলীগ আন্দোলনকারীদের বিভিন্নভাবে হুমকিধামকি দেয়। শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল, স্যার এ এফ রহমান হল, মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হল, কবি জসীম উদদীন হল, সূর্যসেন হল, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল, হাজী মুহম্মদ মুহসীন হল, এস এম হল, রোকেয়া হল ও সুফিয়া কামাল হলসহ বিভিন্ন হলে সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের আন্দোলনে না যেতে মানসিক নির্যাতন ও হলচ্যুত করার হুমকি দেয়া হয়। এরই মধ্যে গত মঙ্গলবার রাত ১২টার দিকে কবি সুফিয়া কামাল হলে তিন ছাত্রীকে মারধর করে রক্তাক্ত করার অভিযোগ উঠে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইফফাত জাহান এশার বিরুদ্ধে। এশা তিন ছাত্রীকে নিজ কক্ষে (৩০৭) ডেকে নিয়ে নির্যাতন করেন। এসময় তাদের চিৎকার শুনে হলের অন্য সাধারণ ছাত্রছাত্রী তাদের উদ্ধারে এগিয়ে যান। এক পর্যায়ে মোর্শেদা খানমসহ দুই ছাত্রীকে মারধর করে রক্তাক্ত করেছেন বলে অভিযোগ উঠে।

এ ঘটনার প্রতিবাদে সাধারণ ছাত্রীরা হলটির মাঠে অবস্থান নিয়ে এশাকে বহিষ্কারের দাবি করেন। নিশ্চয়তা চান নিরাপদভাবে হলে অবস্থানের। এসময় ‘নির্যাতনকারীর কালো হাত, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’, ‘মরতে নয়, পড়তে চাই’, ‘বোনের ওপর হামলা কেন, প্রশাসন জবাব চাই’- স্লোগান দিতে থাকে। 

এ খবর ছড়িয়ে পড়লে ক্ষোভে ফেটে পড়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ ছাত্রছাত্রীরা। ছাত্রলীগের বাধা উপেক্ষা করে ছেলেদের হল থেকে মিছিল নিয়ে কবি সুফিয়া কামাল হলের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করে ৪-৫ হাজার শিক্ষার্থী। এসময় তারা এশাকে বহিষ্কারের দাবি করেন। 

এক পর্যায়ে এশাকে হল ও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয় প্রশাসন। দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে বহিষ্কার করা হয় ছাত্রলীগ থেকেও। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. একেএম গোলাম রব্বানী বলেন, ‘ছাত্রী মারধরের অভিযোগে ভিসি অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানসহ সিনিয়র শিক্ষকরা বসে তাকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।’ 

অন্যদিকে ছাত্রলীগের সভাপতি মো. সাইফুর রহমান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক এসএম জাকির হোসাইন স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে এশাকে হল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বহিষ্কারের আগে এশাকে জুতার মালা পরিয়ে হলচ্যুত করে সাধারণ ছাত্রীরা। বিক্ষুব্ধ ছাত্রীদের অভিযোগ, ছাত্রলীগের হল শাখা সভাপতি এশা আগেও সাধারণ ছাত্রীদের নিজের কক্ষে ডেকে নিয়ে মারধর করতেন। তবে এতদিন ভয়ে কেউ মুখ খুলেনি। 

এদিকে ছাত্রলীগের নির্যাতনের প্রতিবাদে রাত ৪টার দিকে আন্দোলনকারীদের যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ খানের নেতৃত্বে একটি বিক্ষোভ মিছিল কবি সুফিয়া কামাল হল থেকে শুরু হয়ে দোয়েল চত্বর, শহীদ মিনার, ফুলার রোড, নীলক্ষেত, বসুনিয়া, সূর্যসেন হল, জিয়া হল, ভিসি চত্বর, টিএসসি হয়ে ফের সুফিয়া কামাল হলের সামনে গিয়ে শেষ হয়। এতে ৫-৭ হাজার শিক্ষার্থী অংশ নেয়। মিছিল থেকে হামলার প্রতিবাদ, নিরাপদ ক্যাম্পাস, নির্যাতন বন্ধ, কোটা সংস্কারসহ বিভিন্ন বিষয়ে স্লোগান দেয়া হয়। 

  • mzamin.com/April 12, 2018, লিঙ্ক - https://bit.ly/2qrCGiQ 

Demo at Dhaka univ protesting assault on quota protesters


Just after the Mangal Shobhajatra passed the Faculty of Fine Art, a group of students on Saturday found standing with placards protesting the attacks on students during the quota reformation movement.

Manab, a student of Dhaka University, also the convener of the human chain at TSC beside Raju memorial monument, said the human chain was arranged to protest the attacks on students and demonstrators during the quota reformation movement.

Questioning the safety of students in DU campus, Manab said, ‘We don't know what will be the ultimate decision regarding quota reform, but no one is talking about what happened to the demonstrators during the movement.’

‘We held this human chain to remind people about the issue as well as the decision about BCL leader Esha so that it doesn't get faded away with the Pahela Baishakh celebration.’

Another DU student, Arshadul Haque said, the decision on Esha by the authority is enough to loose students' trust on them.

‘At firmly the DU authority suspended Esha's studentship saying she was guilty but later changed the decision within 48 hours’, he said.

However, after the movement, a large number of general students became more aware and united, claimed Arshad.

  • Courtesy: The Daily Star /Apr 15, 2018

Brandishing firearms: 2 ex-BCL leaders charged with attempted murder

Police today pressed attempted murder charges against two expelled Chhatra League leaders in a case filed over brandishing firearms during a hawker eviction drive in Dhaka's Gulistan on October 27, 2016.

Sub-inspector of Shabagh Police Station Ikramul Islam, also investigation officer of the case, submitted the charge sheet to Dhaka Chief Metropolitan Magistrate court against BCL Dhaka south and Wari thana units general secretaries Md Sabbir Hossain and Md Ashiqur Rahman.

The charge sheet will be placed before the court of Metropolitan Magistrate Golam Nabi today for its acceptance.

On October 27, 2016, several Bangla dailies published photographs showing Sabbir and Ashiqur brandishing firearms during a clash between hawkers and an eviction team of Dhaka South City Corporation (DSCC).

The clash broke out after the DSCC team launched the drive to remove illegal makeshift shops from pavements and the underpass market area in Gulistan.

The two BCL leaders, who were expelled from the party following the incident, were denied bail and sent to jail by a magistrate court on February 9 last year after they surrendered before a Dhaka court in the case. Now, they are out of jail on bail. 

  • Courtesy: The Daily Star /Apr 15,2018