Search

Tuesday, July 3, 2018

আন্দোলনকারীদের ওপর হামলার বিচার দাবি টিআইবি’র


কোটাপদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। গতকাল সোমবার এক বিবৃতিতে কোটা সংস্কার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে গেজেট প্রকাশ এবং বাস্তবায়নের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের উদ্বেগ প্রশমন করে দেশের শিক্ষাক্ষেত্রে সুস্থ পরিবেশ নিশ্চিত করার আহবান জানিয়েছে টিআইবি।  

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ থেকে জানা যাচ্ছে, সরকারি চাকরিতে বিদ্যমান কোটাপদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আন্দোলনরত সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর আক্রমণ করে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের শারীরিকভাবে আহত ও লাঞ্ছিত করা হচ্ছে। এটা অত্যন্ত অমানবিক, নিন্দাজনক, বেআইনি এবং সংবিধান প্রদত্ত নাগরিকদের মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী। যৌক্তিক দাবি নিয়ে শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক উপায়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা প্রদানের পরিবর্তে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করে একটি নিয়মতান্ত্রিক ও অহিংস আন্দোলনকে দমনের অপচেষ্টায় ইন্ধন দিচ্ছে, যা অত্যন্ত ন্যক্কারজনক এবং অসাংবিধানিক। হামলার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের যথাযথ আইনি প্রক্রিয়ায় দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানান ইফতেখারুজ্জামান। 

তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে তার দৃশ্যমান নিষ্ক্রিয়তা পরিহার করে নিরপেক্ষতা ও পরিপূর্ণ পেশাদারির সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করে তাদের ওপর জনগণের আস্থা পুনরুদ্ধারে সক্রিয় হতে হবে।

ইফতেখারুজ্জামান বলেন, কোটাপদ্ধতি সংস্কারের দাবি নিয়ে দেশের সাধারণ শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে গড়ে ওঠা স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলনকে প্রাথমিক পর্যায়ে সরকারবিরোধী আন্দোলন হিসেবে আখ্যায়িত করার চেষ্টা করা হলেও কিছুদিনের মধ্যেই প্রধানমন্ত্রী তাঁর ঘোষণার মাধ্যমে এর যৌক্তিকতা ও বৈধতা নিশ্চিত করেছেন। এমনকি ক্ষমতাসীন দলের ছাত্রসংগঠনসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি এবং শিক্ষক সংগঠনগুলোও আন্দোলনকারীদের যৌক্তিক দাবির প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানিয়ে কোটা সংস্কারের পক্ষে বিভিন্ন যুক্তিসহ গণমাধ্যমে বিবৃতি প্রদান করেছে। 

তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তের পর দীর্ঘদিন অতিবাহিত হলেও সরকারের তরফ থেকে কোনো প্রকার সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত না আসায় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে উক্ত সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে সরকারের একাংশের আন্তরিকতা নিয়ে সংশয় সৃষ্টি হওয়া স্বাভাবিক। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার পর দ্রত এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও বাস্তবায়নে সরকার কর্তৃক যথাযথ পদক্ষেপ গৃহীত হলে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের প্রয়োজন হতো না।
  • কার্টসিঃ ইনকিলাব/ জুলাই ৩, ২০১৮ 

‘ধর্ষণ করবে- আমরা কী অন্যায় করেছি?’

গোলাম মোর্তোজা










ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে কোটা সংস্কার আন্দোলনে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের হাতে নারী নিগ্রহ। 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়র প্রায় ৩৫ হাজার শিক্ষার্থী ২ হাজার শিক্ষক, মানে ৩৭ হাজার পরিবারের সরাসরি সম্পৃক্ততা। যারা আক্রান্ত হচ্ছেন, তারা কোনো না কোনোভাবে আপানার আমার পরিবারেরই কেউ। ভাবা যায় না এভাবে?

একজন শিক্ষার্থী - একজন ছাত্রী, দশ বারোজন দ্বারা পাশবিক নিপীড়নের শিকার হলেন শহীদ মিনারে! সবার সামনে, ক্যামেরার সামনে। ওড়না টেনে নেওয়া হলো। কিল-ঘুষি-লাথি এবং একজন ছাত্রীকে যত রকমের নির্যাতন সম্ভব, সবই করা হলো। নারী শিক্ষার্থী আর্তনাদ করে বলছিলেন, তারা বলে ‘ধর্ষণ করবে- আমরা কী অন্যায় করেছি?’ শহীদ মিনারের আকাশে বাতাসে প্রতিধ্বনিত হচ্ছিল তার আর্তনাদ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কান পর্যন্ত তা পৌঁছায়নি।

হ্যাঁ, মেয়েটি সরাসরি ধর্ষণের শিকার হয়নি। ‘ধর্ষণ করা হবে’- হুমকি পেয়েছে। যে দশ বারোজন নিপীড়ন করল তারা কারা? তারাও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।

একটু কল্পনা করুন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীকে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা শারীরিকভাবে নিপীড়ন করছে বহিরাগতদের সঙ্গে নিয়ে। ধর্ষণের এবং গুমের হুমকি দিচ্ছে। পত্রিকার পাতায়, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এবং টেলিভিশনে দেখেছেন সেই দৃশ্য।

তা দেখেই স্থির থাকতে পারছেন না। বলছেন, তাই বলে এভাবে নির্যাতন!

চোখ বন্ধ করুন। নিপীড়িত মেয়েটির জায়গায় নিজের মেয়ে বা স্ত্রী বা বোনকে ভাবুন। ভাবতে পারছেন?

আপনি যা ভাবতে পারছেন না, শহীদ মিনারে তা ঘটিয়েছে ছাত্রলীগের নেতা- কর্মীরা। সুনির্দিষ্ট করে তাদের নাম, পদ-পদবি সবকিছু সবার জানা।

শুধু নিপীড়ন নয়, ঢাকা এবং জাহাঙ্গীরনগর থেকে কমপক্ষে দুইজনকে তুলে নিয়ে গেছে, গুম করার হুমকি দিয়েছে। শহীদ মিনার থেকে মোটরসাইকেলে ফারুককে তুলে নিয়ে গেছে ছাত্রলীগ। তার সন্ধান পাচ্ছিলেন না পরিবার। পরে জেনেছেন, ফারুক ডিবির হেফাজতে আছেন।

শাহবাগ মোড়ে যাকে মনে হয়েছে, তাকে মারধর করে পুলিশের হাতে দিয়েছে ছাত্রলীগ। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে, চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে জখম করেছে।

যাদেরকে ক্ষত-বিক্ষত করেছে, তাদের নামেই মামলা দিয়েছে এবং পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে গ্রেপ্তার করেছে, রিমান্ডে নিয়েছে।

যারা পিটিয়ে ক্ষতবিক্ষত করল- তুলে নিয়ে গেল, কুপিয়ে-পিটিয়ে রক্তাক্ত করল, নারী নিপীড়ন করল, ধর্ষণ-গুমের হুমকি দিল, তারা সম্পূর্ণ নিরাপদ থেকে গেল। কারণ তারা ছাত্রলীগ। তারা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্ষণের সেঞ্চুরি করবে, শহীদ মিনারে ছাত্রী নিপীড়ন করবে, ধর্ষণ করতে চাইবে, ভিসির কার্যালয়ের সামনে ছাত্রীদের যৌন নিপীড়ন করবে, কিছুই প্রমাণ হবে না। সর্বোচ্চ ধর্ষক সেঞ্চুরিয়ান মানিকের মতো দু’একজনকে হয়ত বিদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।

২.
আপনি, হ্যাঁ আপনাকে বলছি। ভাবছেন, আপনার স্ত্রী-সন্তান-বোন নিরাপদে আছেন। আপনার তো কিছু হয়নি। কতক্ষণ থাকবেন নিরাপদ? চোখে যা দেখছেন, লিখছেন বা বলছেন তার উল্টোটা। নির্বাচন হয়ে যায়, মানুষের ভোটের অধিকার কোথায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে, সবই জানেন। সত্য চাপা দিয়ে বলেন, অসত্যটা। যে মেয়েটি সাধারণ ছাত্রীদের নির্যাতন করে ক্ষুব্ধ করে তুলেছিল, তাকে জুতার মালা পরিয়ে অসম্মান করায়, আপনার হৃদয় ভেঙে গিয়েছিল। গলার রগ ফেটে যেন রক্ত ঝরছিল। একটি অন্যায় বা অপরাধকে আরেকটি অন্যায় দিয়ে জাস্টিফাই করা যাবে না। আপনার সেই অবস্থানকে সমর্থন করছি। কিন্তু জুতার মালা পরানোয় আপনি যতটা ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন, নিপীড়ন-ধর্ষণের হুমকির পর আপনি তার চেয়েও বেশি নীরব- শীতল কেন? বিবেক ঘুমিয়ে কেন? ধর্ষণের হুমকি পাওয়া মেয়েটির আর্তনাদ আপনার কান পর্যন্ত পৌঁছাচ্ছে না?

মেয়েরা মেয়েটিকে জুতার মালা পরিয়েছিল। শহীদ মিনারে দশ-বারোজন পুরুষ মিলে একজন নারীকে নিপীড়ন করল, শারীরিকভাবে নির্যাতন করল। জুতার মালা পরানোর ভিডিও চিত্র ছিল, শহীদ মিনারের নিপীড়নেরও ভিডিও চিত্র আছে। অথচ আপনার সেই বিবেক এখন আর জাগছে না।

৩.
বিশ্ববিদ্যালয়ে অতি সম্মানীয় একটি পদ আছে। পদটির নাম উপাচার্য। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও এই পদ আছে, পদে একজন উপাচার্যও আছেন। মাননীয় উপাচার্য শিক্ষার্থীদের তো বটেই, পুরো বিশ্ববিদ্যালয় তথা শিক্ষকদেরও অভিভাবক। গত দুইদিন ধরে তার বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রছাত্রীরা নিপীড়ন-নির্যাতনের শিকার হলেন। ছাত্রীদের শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হলো, সম্মানিত-শ্রদ্ধেয় অভিভাবক উপাচার্যের প্রতিক্রিয়া জানা গেল না।

প্রক্টর নামক আরেকটি পদ আছে, পদে একজন মানুষও আছেন। সরাসরি শিক্ষার্থীদের দেখে রাখার দায়িত্ব এই প্রক্টরেরই। দায়িত্ব নিয়েই যখন ঘুষি দিয়ে একজন শিক্ষকের নাক ফাটিয়ে দিলেন, তখন তাকে করিৎকর্মাই মনে হয়েছিল! গত তিনদিনের যে তাণ্ডব সারা বাংলাদেশের মানুষ, সারা পৃথিবীতে বসবাসরত বাংলাদেশের মানুষ, জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম যা দেখাল, প্রক্টর তার কোনো কিছুই দেখলেন না, জানলেন না।

সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠে প্রায় দুই হাজার শিক্ষক আছেন। শিক্ষক সমিতি আছে, শিক্ষক নেতা আছেন। তাদের কোনো কথা নেই, প্রতিক্রিয়া নেই। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক খালি পায়ে হেঁটে তার বিভাগে গিয়ে নিপীড়নের প্রতিবাদ করতে চাইছেন। প্রক্টরিয়াল বডি তা করতে দিতে রাজি না। বাধা দেওয়া হচ্ছে, খালি পায়ে হাঁটা যাবে না। কুপিয়ে- পিটিয়ে জখম করলে সমস্যা নেই, খালি পায়ে প্রতিবাদ করলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইজ্জত চলে যায়!

৪.
বাংলাদেশে নারী আছেন, নারী নেত্রী আছেন। নারী নির্যাতন নিয়ে তাদের কোনো বক্তব্য নেই।

বাংলাদেশে ‘মানবতা’ আছে, তবে তা রোহিঙ্গাদের জন্যে। গরিব নুরুল বা রাশেদদের জন্যে মানবতা নেই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী, গরিবের সন্তান লাথি- ঘুষিতে মুমূর্ষু হয়ে ঢাকা মেডিকেলের বারান্দায় পড়ে থেকেছেন। জনগণের টাকায় চলা হাসপাতালে চিকিৎসা পাননি। বেসরকারি আনোয়ার মেডিকেলে এসেছেন, মাঝ রাতে বের করে দেওয়া হয়েছে পুলিশের ভয়ে। শিক্ষক-নাগরিক সমাজ নীরব, নিশ্চুপ। তারা হয়ত আর্জেন্টিনার পরাজয় আর ব্রাজিলের বিজয়ের কারণ বিশ্লেষণ করছেন!

৫.
প্রত্যক্ষদর্শী প্রতিবেদকের তথ্যে দ্য ডেইলি স্টার লিখেছে, শহীদ মিনারে শিক্ষার্থীরা যখন প্রতিবাদে জড়ো হয়েছিলেন, তখন সেখানে পুলিশ ছিল। দশ বারোটি মোটরসাইকেল যোগে ছাত্রলীগের নেতারা এলেন। তাদের আসা দেখে পুলিশ চলে গেল।

একসময় পরীক্ষায় ট্রান্সলেশন আসত, ‘ডাক্তার আসিবার পর রোগী মারা গেল’। এখন ট্রান্সলেশন আসবে, ‘ছাত্রলীগ আসিবার পর পুলিশ চলিয়া গেল। ছাত্রলীগ নিরীহ শিক্ষার্থীদের উপর ঝাঁপাইয়া পড়িল।’

গরিবের সন্তান নুরুল বা রাশেদরা নির্যাতনে ক্ষত-বিক্ষত হবে, গ্রেপ্তার হয়ে রিমান্ডেও যাবে। নুরুল, রাশেদদের নির্যাতন-নিপীড়ন করার জন্যে, একদল গরিবের সন্তানদের লাঠিয়ালে পরিণত করা হয়েছে। ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার জন্যে সব যুগে এই লাঠিয়াল বাহিনী অপরিহার্য ছিল।

নুরুল, রাশেদদের বাবা-চাচারা মুক্তিযুদ্ধ করেছিলেন। দেশের শাসকরা এখন তাদের বলছেন, রাজাকার-মুক্তিযুদ্ধবিরোধী। কারণ ক্ষমতা তাদের হাতে। নুরুল, রাশেদদের পরিণতি কী হবে, জানি না। পরিণতি ভেবে আতঙ্কিত হওয়ার কারণ আছে। তবে এই আতঙ্ক শুধু নুরুলদের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না। যারা অন্যায়ের পক্ষে অবস্থান নিয়ে অসত্য বলছেন, তাদের জীবনে-পরিবারেও আসবে। বলতে পারেন, এটা প্রকৃতির নিয়ম। ধর্ষণের হুমকি দল দেখে দেওয়া হবে না, ধর্ষণ দল দেখে করা হবে না। জাহাঙ্গীরনগরের সেই মানিকের কথা আরেকবার স্মরণ করুন।

যে সমাজ-দেশ নির্মাণ করছেন, তার ফলাফল ভোগ করতে হবে, আপনাকেও ভোগ করতে হবে। বিচ্ছিন্নভাবে ভালো থাকা যায় না, ভালো থাকতে পারবেন না।

নুরুলদের রক্ত ঝরিয়ে কোটা সংস্কার কমিটি হলো, নির্যাতন এখনো বন্ধ হলো না। হয়ত আন্দোলনের সুফল ভোগ করবেন সবাই। অতীতেও গরিব- দিনমজুর নুরুল বা রাশেদদের বাবা- চাচাদেরই বেশি মূল্য দিতে হয়েছিল, স্বাধীন দেশেও মূল্য তারা বা তাদের সন্তানরাই বেশি দিচ্ছেন।
  • কার্টসিঃ The Daily Star Bangla/ jul 3, 2018 

সাধারণ শিক্ষার্থীদের আহ্বান — ‘ছাত্রলীগের সন্ত্রাস থেকে শিক্ষা বাঁচাও’


সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার চেয়ে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর নৃশংস হামলার বিচার চেয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার, জুলাই ৩, বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে ‘নিপীড়ন বিরোধী শিক্ষার্থী’দের ব্যানারে অনুষ্ঠিত এক মানববন্ধন থেকে তারা এ দাবি জানান।

মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে ‘ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা দে নইলে পদ ছেড়ে দে’, ‘ছাত্রলীগের সন্ত্রাস থেকে শিক্ষা বাচাঁও,’ ‘আন্দোলনে ছাত্রলীগের হামলার বিচার চাই’, ‘আন্দোলনের সাথে প্রহসন বন্ধ কর, যৌক্তিক সংস্কার কর’ ইত্যাদি স্লোগান সম্বলিত ব্যানার ও ফেস্টুন ব্যবহার করেন।

মানববন্ধনে উম্মে হাবিবা বেনজির নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘ক্যাম্পাস খুলতে না খুলতেই গত দুইদিন ক্যাম্পাসে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি হয়েছে। প্রক্টর স্যার গত শনিবারের ঘটনায় বলেছেন, ক্যাম্পাস ছুটি ছিল, তিনি কিছু জানতেন না। তার কাছে কোনো অভিযোগ যায়নি। অথচ প্রক্টরের দায়িত্ব ক্যাম্পাসে ২৪ ঘণ্টা নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। ক্যাম্পাস ছুটি কিনা এ কথা বলার কোনো সুযোগ নেই। তিনি দায়িত্ব পালন করতে না পারলে পদত্যাগ করুক।’

সালমান ফারসি নামের আরও এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘গত ১০ বছরে ছাত্রলীগের কেউ আহত হয়নি। তারা অন্যদের মারধর করে আহত করছেন। এতে তাদের কোনো বিচারও করে না প্রশাসন।’

শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে নিরাপত্তার সংকট দেখা দিয়েছে। ছাত্রদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। প্রশাসনের উচিত তাদের দায়িত্ব ছেড়ে দেয়া। প্রক্টর সার বলেছেন, কেউ অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা নেবে। অথচ এদিকে গতকালকে হামলায় অনেকেই গুরুত্বর আহত হয়েছেন। কাউকে গুম করা হয়েছে। কারা অভিযোগ করবে। এগুলো প্রশাসন দেখে না?’
  • কার্টসিঃ জাগো নিউজ২৪/ জুলাই ৩, ২০১৮ 

বেগম জিয়ার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সম্পূর্ণ সাজানো ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপূর্ণ - লর্ড কার্লাইল

বিবিসিকে লর্ড কার্লাইল

বিএনপির কারাবন্দি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার পক্ষে দিল্লি এসে ব্রিফিং করবেন তার নিযুক্ত বৃটিশ আইনজীবী লর্ড কার্লাইল। সেখানে তিনি দেশি-বিদেশি গণমাধ্যমকে যে বার্তাটি দিতে চান তা খুবই স্পষ্ট। তা হলো- খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে বাংলাদেশের নির্বাচনী প্রক্রিয়া থেকে দূরে রাখার চেষ্টা চলছে। বৃটেনের হাউস অব লর্ডসের এই প্রবীণ সদস্য বিবিসিকে এসব কথা জানিয়েছেন। 

তিনি বলেছেন যে, বাংলাদেশ সরকার ‘তার ভিসার আবেদন ঝুলিয়ে রেখেছে’ বলেই তিনি বাধ্য হয়ে দিল্লিতে গিয়ে সংবাদ সম্মেলন করছেন। সেখানে ঢাকা থেকে বিএনপির কয়েকজন সিনিয়র নেতা যোগ দেবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো কেন ভিত্তিহীন ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপূর্ণ সেটাই তিনি দিল্লিতে ব্যাখ্যা করবেন লর্ড কার্লাইল। এ নিয়ে লন্ডনে তার সঙ্গে কথা বলেন বিবিসি’র সংবাদদাতা শুভজ্যোতি ঘোষ। লর্ড কার্লাইল বিবিসিকে বলেন, ‘আমি বেগম জিয়ার কৌঁসুলিদের একজন। 

আর এ সম্মেলনটি আমি ঢাকাতেই করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু বাংলাদেশ সরকার আমার ভিসা দেয়া না দেয়ার প্রশ্নে ইচ্ছাকৃতভাবে আগে থেকেই বাধা সৃষ্টি করছে। তারা এখনো আমার ভিসা প্রত্যাখ্যান করেনি ঠিকই। কিন্তু এখনো আমার হাতে বাংলাদেশের ভিসা নেই। 

ফলে আমি ঢাকায় এ অনুষ্ঠানটি করতে পারছি না। পরিবর্তে দিল্লিতেই সেটি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’ লর্ড কার্লাইল বলেন, ‘দিল্লির এই অনুষ্ঠানে বিএনপির প্রতিনিধিত্ব না থাকলে আমি অবাকই হবো। তবে আমি স্পষ্ট করে দিতে চাই- আমি কোনো রাজনৈতিক প্রচারণায় শামিল হতে দিল্লি যাচ্ছি না; একজন সিনিয়র বৃটিশ আইনজীবী হিসেবে আমাকে এ মামলায় আমার মক্কেলের পক্ষে নিয়োজিত করা হয়েছে- সেকারণেই আমি এটা করছি। 

আমি বিশ্বাস করি, শুধুমাত্র রাজনীতির কারণেই এ মামলাটি রুজু করা হয়েছে।’ ১৫ বছর ধরে হাউস অব কমন্সের সদস্য থাকা ও প্রায় দু’দশক যাবৎ হাউস অব লর্ডসের সদস্য লর্ড কার্লাইল দাবি করছেন, রাজনীতি ও আইনের জগতে এত দীর্ঘ দিনের অভিজ্ঞতার সুবাদে তিনি নিশ্চিত যে, খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগটি সম্পূর্ণ সাজানো। তিনি বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে পেশ করা সাক্ষ্যপ্রমাণ খতিয়ে দেখে আমি বুঝেছি, সেগুলো আদৌ গ্রহণযোগ্য নয়। তা থেকে আদৌ প্রমাণিত হয় না যে, তিনি কোন্‌ ধরনের জালিয়াতি করেছেন। সেটাই আমি দিল্লিতে গণমাধ্যমের কাছে ব্যাখ্যা করবো। আর দ্বিতীয়ত এ থেকেই বোঝা যায়, এই মামলা আনার পেছনে সম্পূর্ণ অন্য উদ্দেশ্য আছে।’

খালেদা জিয়াকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হতে হচ্ছে- তিনি এমন মনে করছেন কিনা সে প্রসঙ্গে লর্ড কার্লাইল বলেন, ‘আমি ভেনডেটা (প্রতিহিংসা) শব্দটা ব্যবহার করতে চাই না। তবে এটুকু বলবো- খালেদা জিয়াকে দেশে আসন্ন নির্বাচন থেকে দূরে রাখতে অবশ্যই একটা তীব্র রাজনৈতিক প্রচেষ্টা চলছে। কোনো প্রমাণ ছাড়াই ফৌজদারি অপরাধে অভিযুক্ত করে সত্তরোর্ধ্ব একজন মহিলাকে যেভাবে বন্দি করে রাখা হয়েছে, সেটা তাকে রাস্তা থেকে সরাতে হয়তো সফল হতে পারে, কিন্তু অপরাধ হিসেবে অমার্জনীয়।’ 
  • কার্টসিঃ মানবজমিন/ জুলাই ৩, ২০১৮

সমাজ মস্তিষ্কে বিবেকের পচন, মৃত বিবেকের জন্য শোকপ্রস্তাব



সৈয়দ কবির হুসেন 


 

পয়লা জুলাইয়ে ডেইলি স্টারের বাংলা সংস্করণে সাংবাদিক গোলাম মোর্তোজা ‘রক্তাক্ত কোটা সংস্কার, বন্ধকী বিবেক’ শিরোণামে দেশের চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলন বিষয়ে অালোচনা করেছেন।  তাঁর অালোচনা থেকে অতিকথার প্যান্ডোরার বাক্স থেকে যেসব বক্তব্য এসেছে তাতে একটি বিষয় অতি পরিষ্কার অামাদের সমাজে বিবেক গ্যাংগ্রিণ বা পচনে অাক্রান্ত হয়েছে।

অামরা ‘প্রাচ্যের অক্সফোর্ড’ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের প্রশংসায় এক কালে পঞ্চমুখ হয়েছি। চাষাভুষোর সন্তানরা মানুষ হয়েছে বলে মনে হয়েছিল। কিন্ত হায়, কাকস্য পরিবেদনং একটি ন্যায্য দাবি নিয়ে নিয়মতান্ত্রিক, শান্তিপূর্ণ অান্দোলনে নেতাদের চরম বর্বতার শিকার হতে হয়েছে। তারা বুঝতে পারছেন না, তাদের অাদৌ নিরাপত্তা অাছে কিনা? বর্বরতা চালিয়েছে অাইনশৃংখলা বাহিনী। ভিসির বাড়ি অাক্রান্ত হয়েছে মধ্যরাতে যার কোনো কারণই নেই, এর একমাত্রে কারণ ছিল ন্যায়ভিত্তিক অান্দোলনের মোড় ঘুরিয়ে দেওয়া। বর্বরতা চালিয়েছে ‘সোনার ছেলেরা’। অথচ এই অান্দোলনের গোড়ায় এই ছেলেদের হ্যাভ নটসরাও ছিল। ভিসি বলেছেন, কোটা নিয়ে অামার কি করার অাছে? অাসলে তার কিছুই করার ছিল না। কথাটা যথার্থ। কিন্ত অামরা দেখ‌ছি শিক্ষক বি‌বেক কীসের নেশায় কতোটা জঘণ্যভাবে পচে যেতে পারে।কেন যি সম্মানিত ভিসি বললেন তিনি এ অান্দেলনে কারও খালু নন। কিন্ত তার গুণধর পুত্র রত্ন সমর্থন জানিয়ে দিলেন কোটা অান্দোলনের বিরুদ্ধে। কেন?

এর জবাব দিয়েছেন গোলাম মোর্তোজা। তিনি বলেছেন যে সব পুত্রকন্যাদের ‘দামি গাড়ি অাছে, যারা ২০ হাজার ডলার মূল্যের ঘড়ি পরেন, গাড়ির নিছে নিরীহ মানুষ পিষে মারেন তাদের কাছে কা‌ঠমিস্ত্রীর ছেলে নুরুলের ন্যায়ের কথা বলা নিৎসন্দেহে অপরাধ। এ অপরাধের এক সাম্প্রতিক নিদর্শন হলো এমপি নন্দনের কীর্তি। যদিও তাঁর মা বলছেন, ঘটনা তাঁর ছেলে ঘটায়নি। ঘটিয়েছে ‘সেই কেষ্টা’ গাড়ির ড্রাইভার।সংবাদপত্রে ‌বড়ো হেডিং বলছে, ছেলে মেরেছে পথচারী এক ড্রাইভারকে। এমপি একরামুল করিম চৌধুরী বলছেন, ‘অাপনারা জানেন, এক্সিডেন্ট অাইনে কি হয়? অাপনাদের  যুগান্তর কী বোঝে?’ ব্যাপারটা হয়‌তো ঠিকই কেননা হাজার হোক তি‌নি তো একজন লেজিসলেটর, অাইনের বিধায়ক? তিনি ছাড়া অাসলেই অার কারও বোঝার নেই।

এখন অাসুন অামরা দেখি, মাননীয় এমপি নিয়ে কী তথ্য অামাদের হাতে অাছে। তি‌নি নিহত সেলিম বেপারির বিষয়ে সেলিমের চাকরিদাতা প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ইমরান হোসেনের সঙ্গে কথা বলে নিজে বা তার কোনও অাত্মীয় কেউ না এলেও তাঁর পক্ষের কিছু লোকের মাধ্যমে ২০ লাখ টাকা পাঠিয়েছেন। সে টাকা বেপারির স্ত্রী চায়নার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা  করা হয়েছে , বলা হয়েছে মাসে অারও ২০ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে।

ধরি মাছ না ছুঁই পানি। দেশে কি অাইন বলবৎ তিনি যথার্থই জানেন। জানেন বলেই তাঁর কেউ রফা অালোচনায় অাসেননি। তাঁর স্ত্রী  বলেছেন, তাঁর ছেলে শাবাব চৌধুরী ঐ গাড়ি নিজে চালাচ্ছিলেন না। ড্রাইভার চালাচ্ছিল। যদি ড্রা‌ইভার চালিয়ে থাকে তাহলে সে একজন ড্রাইভার সে অার যাই হোক গড়ির প্রায় নিচে চলে যাওয়া এক পথচারীকে গাড়ি ব্যাকগিয়ারে নিয়ে অাবার সামনে এসে তাঁর প্রচণ্ড ধাক্কা দি‌য়ে ফ্লাইওভারে বেপারির শরীরটাকে এমন নিষ্ঠুরাতায় চূর্ণ করে মাথার ঘিলু বের করে দিয়ে মারতে পারেন না। অার সেটা স্পষ্টত ডেলিভারেট হোমিসাইড। সম্ভবত সেটা একজন ক্ষমতায় মদমত্ত মাতালের কাণ্ড। যুক্তিহিসেবে যদি ধরেও নেওয়া যায়, শাবাবকে নি‌য়ে উর্দ্ধশ্বাসে গাড়ি চালিয়ে ন্যাম ভবনে পৌছে দিয়েছে গাড়ির ড্রাইভার প্রভুতনয়কে তাহলে শাবাব থানায় ঘটনা রিপোর্ট না করে উল্টে কেমন করে তার গাড়ি ধাওয়া করা যু্বকদের প্রাণনাশের হুমকি দেন? কাফরুল থানায় এজাহার নিয়েছে পুলি‌শ এমপি মহোদয়ের অাইনের কথা মেন রেখে। অাইন কেবল ধনীদের জন্য। অার সে কারণেই কোটা অান্দোলনের নেতা নির্যাতিত গরিব সন্তানকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসাটি পর্যন্ত নিতে না দিয়ে সেখান থেকে পুলিশ ‌মধ্যরাতে বের করে দিয়েছে গ্রেপ্তারের হুমকি দিয়ে। ক্রন্দরনরত নুরুল জানিয়েছে সাংবাদিকদেরকে। এ হলো কোটা অান্দোলনের সর্বশেষ পরিণতি। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ নেই কিন্ত ক্ষমতার রোষে পড়লে চিকিৎসাও কেউ পেতে পারবে না। এই হলো দেশের ব্যবহারিক অাইন। আর এই অাইন প্রণয়নের জন্য জনগণের সার্বভৌমত্বের প্রতিনিধিত্বকারী এমপিরা দেশ, জাতি ও রাষ্ট্রের স্বার্থে কত কোটি নিয়ে কতো পা‌ই দিয়েছেন তার হিসেব দালিলিকভাবে প্রমানিত হয়েছে।

গোলাম মোর্তোজা বলেছেন কোটা অান্দোলনকারীরা বঙ্গবন্ধূর ছবি বুকে ধারণ করে ন্যায়্যতা প্রকাশ করেছেন। বঙ্গবন্ধুর ছবি ধারণ করার পরও  রাজাকার বা জামায়াত বদরের বাচ্চা হওয়া যে যায় সে কথা প্রমাণিত হয়েছে ক্ষমতাসীনদের বাকচাতুর্যে। সত্যিই তো রেড ফ্লাাগ ফর রেড ফ্ল্যাগ বলে তো কথা অাছে। কিন্তু নিরেট সত্যি হলো তেমন প্রমাণ পওয়া যাযনি বরং অান্দোলনকার‌ীদের কিছুকে চাকরি দিলেই তো অাগুণে পানি পড়ার কথা। নমরুদ যদি নিজে নাকে ঢোকা  মশার বিরুদ্ধে লড়তে চায় সে স্বাধীনতা তার অাছে। ড. অাকবর অালি খান একবার উপায় না দেখে বলেছিলেন , অামি একজন মুক্তিযোদ্ধা। অামি কাউকে ভয় করি না। অামরাও চাই ভয়কে জয় করতে হবে।  শিক্ষক সমাজ অাসলে ভয়ে কুঁকড়ে অাছেন। জানেন তাঁরা যথার্থ বলছেন না। চিত্তের দ্বিধা কাটাতেই হবে। হতে হবে —    

চিত্ত যেথা ভয়শূন্য, উচ্চ যেথা শির,
জ্ঞান যেথা মুক্ত, যেথা গৃহের প্রাচীর   


Anti-Narcotics Drive: Over a hundred noted citizens slate killings

Over 100 eminent citizens yesterday in a joint statement denounced the killings in the ongoing anti-narcotics drive across the country.

“More than 150 people have been killed across the country by the Rapid Action Battalion and police without any trial since the middle of May and the number is still rising. We are strongly condemning such planned killings,” said the statement.

Among the 121 signatories to the statement are politicians, academics, writers, lawyers and cultural activists.

Issuing the statement under the banner of National Committee against Fascism and Capitalism, they demanded an end to such killings and transparent trial into those incidents immediately.

“In the name of announcing zero tolerance against crimes, the state has commuted the convicted criminal and assisted him to leave the country… took no legal steps against the law enforcers who were involved in drug dealing,” it said.

The eminent personalities demanded announcement of a list along with full name and address of each person killed in the anti-drug drive and ensuring all the democratic rights of citizens.

They also called for trial of all the law enforcers who threatened, harassed and killed people.

Prof Emeritus Sirajul Islam Chowdhury, Jahangirnagar University professors Anu Muhammad, Naseem Aktar Hussain, Dhaka University professor Gitiara Nasreen, associate professors Samina Luthfa, Fahmidul Haq, Robaet Ferdous, Tanzimuddin Khan, Badruddin Umar, president of Jatiya Mukti Council, Khalekuzzaman, general secretary of Bangladesher Samajtantrik Dal, Sheikh Mohammad Shahidulla, Jafrullah Chowdhury, BD Rahmatullah, writers Omar Tarek Chowdhury, Syed Abul Kalam, Nur Mohammad, Rafiq Kaisar and Rehnuma Ahmed signed the statement, among others.

  • Courtesy: The Daily Star /Jul 03, 2018

Case against Khaleda: UK MP Carlile to brief media in Delhi July 13

British MP and lawyer Alex Carlile will visit New Delhi on July 13 and address the media on the cases and imprisonment of BNP Chairperson Khaleda Zia.
Carlile would address a press conference at the Foreign Correspondents Club at 1:00pm on that day explaining the court cases against Khaleda, Club President S Venkatanarayan said.

Observers here note that the British member of the House of the Lords is seeking to mobilise public opinion on the issue of Khaleda's cases ahead of the next parliamentary elections in Bangladesh, slated for late December.

Some lawyers of Khaleda from Bangladesh are also expected to join the press conference.

The activities of the ruling Awami League and BNP in New Delhi in the run up to the national elections are being keenly watched by political circles.

Political and diplomatic sources in the Indian capital said the BNP was very keen on Khaleda's release from jail and participation in the polls campaign. 

A three-member BNP delegation last month visited New Delhi and interacted with leading think-tanks here. The team explained the political situation and the upcoming elections in Bangladesh.

A 22-member AL delegation, led by its General Secretary Obaidul Quader, had visited New Delhi in April and met Prime Minister Narendra Modi. Prior to that, another AL team, led by former Bangladesh foreign minister Dipu Moni, had come here to attend the plenary session of the India's main opposition party Congress and met its top leaders Sonia Gandhi, Rahul Gandhi and Manmohan Singh.

Prime Minister Sheikh Hasina's Political Adviser HT Imam will travel to New Delhi on July 5 on a three-day visit during which he will have a meeting with senior BJP leader Vinay Saharsabuddhe, also the president of Indian Council for Cultural Relations.

Imam is also expected to meet Indian External Affairs Minister Sushma Swaraj and National Security Adviser Ajit Dobhal before having interactions with the senior fellows of think-tank Observer Research Foundation on July 7.

  • Courtesy: The Daily Star/ Jul 03, 2018

Where students cannot breathe

Road construction work should not hamper education










Black smoke plumes out of a construction machine on the Dolpara Govt Primary School ground in Dimla upazila of Nilphamari. The mixing machine, set up just a few metres away from the classrooms, has been hampering academic activities for about two months. 


We are outraged by a report in this paper of how students of Dolapara Government Primary School in Nilphamari have been forced to refrain from going to class because they cannot breathe the air around them. A road construction contractor has happily set up a melting pitch right inside the school premises, burning waste material that emits toxic smoke right into the school. Many students have fallen sick after inhaling the smoke-filled air.

Such a situation is completely in contradiction to basic common sense. Let's not even talk about the environmental degradation that such activities cause. Let's just talk about the health of these children whose academic life is also being severely hampered. Where does this contractor get the gumption to just invade a school campus and set up a melting pitch in the first place? The road construction is a government project and the school is government-run. Thus it is in the government's interest that a school it runs should not stop functioning because of development work.

The school authorities had asked a representative of the contractor to remove the melting machine and other material from the premises but the request was ignored. The school had to file an official complaint to the upazilla primary education officer for action to be taken. Now the concerned government department has asked the contractor to leave within two to three days, otherwise face eviction.

What is surprising is that the contractor concerned could get away with such an offense for so long and with such defiance. Did not the concerned government authorities have a responsibility to make sure that any development work authorised by them should not in any way jeopardise public health or wellbeing?

We hope the government will treat this case as an emergency and order the melting machine and other construction material to be immediately removed from the school premises and there should not be any burning of waste material anywhere near the school. Students must be able to come to class again.

  • Courtesy: The Daily Star /Editorial/ Jul 03, 2018

Monday, July 2, 2018

নির্বাচনী ব্যবস্থায় উদ্বেগজনক সংযোজন

কামাল আহমেদ

গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের পর ক্ষমতাসীন দল এখন পরোক্ষে হলেও মেনে নিয়েছে যে তাদের আমলে নির্বাচনে অনিয়ম হয়েছে, হচ্ছে এবং হবে। আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতা এবং মহাজোটের সমন্বয়কারী মোহাম্মদ নাসিম বলেছেন, একেবারে নিখুঁত নির্বাচন সম্ভব নয়। সরকার-সমর্থক সাংবাদিক ও কলামিস্টদের কয়েকজন লিখেছেন, খুলনা ও গাজীপুরে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর বিজয় নিশ্চিত ছিল। সুতরাং যাঁরা ভোটকেন্দ্রে বাড়াবাড়ি করেছেন, ব্যালটে ইচ্ছেমতো সিল মেরেছেন, তাঁদের এটুকু করা উচিত হয়নি। এগুলো না করলে নির্বাচন নিয়ে কেউ কোনো প্রশ্ন করার সুযোগই পেতেন না। এসব যুক্তির মানে দাঁড়ায় অনিয়ম হয়েছে তবে তা ফলাফল বদলে দেওয়ার মতো নয়।

অনিয়মগুলোর একটি বিবরণ বলছে, ‘ওপরে সুনসান, ভেতরে গড়বড়’ (সোহরাব হাসান, প্রথম আলো, ২৭ জুন ২০১৮)। আর গণমাধ্যমে যেসব চিত্র উঠে এসেছে তাতে বেশির ভাগই বলেছেন, গাজীপুর ছিল খুলনার চেয়েও ভালো। ‘ভালো’ বিশেষণটি সম্ভবত ব্যবহৃত হয়েছে ক্ষমতাসীনদের নিয়ন্ত্রণ অর্থে। খুলনায় দলীয় কর্মীদের নিয়ন্ত্রণ ছিল চোখে পড়ার মতো। আর গাজীপুরে নিয়ন্ত্রণের পুরোভাগে ছিল পুলিশ এবং প্রশাসন। খুলনায় ভোটকেন্দ্র থেকে বিএনপির পোলিং এজেন্টদের তাড়িয়েছে ক্ষমতাসীন দলের লোকজন। আর গাজীপুরে বিতাড়ন নয়, অভিযোগটা পুলিশের বিরুদ্ধে বিএনপির এজেন্টদের অপহরণের। গুম, ক্রসফায়ার বা বন্দুকযুদ্ধের মতো ঘটনাগুলো যখন দেশে ভয় ও আতঙ্কের পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে, তখন নির্বাচনী এজেন্ট অপহরণের ঘটনাকে দেশের নির্বাচন ব্যবস্থাপনায় এক নতুন ও উদ্বেগজনক সংযোজন হিসেবেই বিবেচনা করতে হচ্ছে।

একবার ভাবুন তো, সাদাপোশাকের লোকজন ‘জরুরি কথা’ আছে বলে ডেকে নিয়ে অস্ত্র ঠেকিয়ে কাউকে মাইক্রোবাসে উঠিয়ে নিয়ে গেলে তিনি তা কীভাবে প্রতিহত করবেন। তাঁর দল আরও অসংখ্য বিকল্প এজেন্ট ঠিক করে রাখলেও দ্বিতীয় কেউ কি ওই ঝুঁকি নেবেন? গণমাধ্যমের খবর ও অভিযোগ অনুযায়ী, যাঁদের উঠিয়ে নেওয়া হয়েছিল, ভোটের সময় পেরিয়ে যাওয়ার পর তাঁদের পাশের জেলায় নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। গুম বা ক্রসফায়ারের শিকার না হওয়ায় তাঁরা যে অনেকেই এখন সদকা দেবেন, সন্দেহ নেই। ভবিষ্যতের নির্বাচনগুলোতে পুলিশ লাইনসের বদলে কোথায় ঠাঁই হবে, তা কে জানে।

গুম বা বিচারবহির্ভূত হত্যার অভিযোগ পুলিশ ও সরকার যেভাবে অস্বীকার করে থাকে, এখানেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। গাজীপুরের পুলিশ সুপার বলেছেন, বিএনপির কোনো এজেন্টকে আটক বা তুলে নেওয়ার কোনো তথ্য তাঁর কাছে নেই। আইনবহির্ভূত কাজে জড়িত থাকলে পুলিশ তার রেকর্ড রাখবে বাংলাদেশে এমন কথা কেউ কখনো শুনেছেন বলে আমাদের জানা নেই। সুতরাং কাগজে-কলমে এ রকম কোনো তথ্য তো থাকার কথা নয়।

নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ তদন্তে নির্বাচন কমিশনের আন্তরিকতা এবং যোগ্যতার প্রশ্ন তুলে তাদের আর বিব্রত করার কোনো মানে হয় না। আচরণবিধি লঙ্ঘন এবং অনিয়মের অভিযোগের জবাব দেওয়ার দায়িত্ব কমিশন সম্ভবত সরকারের ওপরই ছেড়ে দিয়েছে। গাজীপুরের পুলিশ সুপারের ক্ষেত্রে অন্তত সে রকমটিই দেখা গেছে। বিএনপি তাঁকে প্রত্যাহারের দাবি জানালে কমিশন তার জবাব দেয়নি, জবাব দিয়েছেন আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কর্তা এইচ টি ইমাম। আবার খুলনায় রিটার্নিং কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সরকারি দলের অভিযোগ শুনেই তার ওপর ছড়ি ঘোরানোর জন্য কমিশন ঢাকা থেকে নতুন একজনকে পাঠিয়ে নজির তৈরি করেছে।

ভোটকেন্দ্র অথবা বাড়ি থেকে পোলিং এজেন্টদের তুলে নেওয়ার বিষয়টি গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ। তাও একজন-দুজন নয় যে একে ‘বিচ্ছিন্ন ঘটনা’ বলা যাবে। অন্তত ৪২ জনকে অপহরণের হিসাব পাওয়া গেছে (সূত্র: প্রথম আলো এবং ডেইলি স্টার)। বিএনপির দাবি, এর কয়েক গুণ। নির্বাচনী কর্মকর্তারা, বিশেষ করে ভোটকেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিরা কোনোভাবেই এই অপরাধের দায় অস্বীকার করতে পারেন না। পুলিশের বিরুদ্ধে তদন্ত পরিচালনার আইনগত অধিকার না থাকলেও এ ক্ষেত্রে নির্বাচনী কর্তাদের ভূমিকা সূত্রে মানবাধিকার কমিশন নিশ্চয়ই এসব গুরুতর অপরাধের তদন্ত করতে পারে। আইন এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে উচ্চ আদালত বা সুপ্রিম কোর্টের ক্ষমতা তো অসীম। চাইলে পরে অন্য অনেক বিষয়ের মতো এ ক্ষেত্রে আদালতও স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে ব্যবস্থা নিতে পারেন।

নির্বাচনী ব্যবস্থায় এই উদ্বেগজনক পরিবর্তন ছাড়াও গাজীপুরে ভোটের দিনে এবং নির্বাচনী প্রচারে যেসব অনিয়ম ও অসংগতি দেখা গেছে, সেগুলোর প্রতিটিই এর ফলাফলকে প্রভাবিত করার জন্য যথেষ্ট এবং তদন্তের দাবি রাখে।

১. মোট ভোটকেন্দ্রের প্রায় এক-চতুর্থাংশ কেন্দ্রেই ভোট প্রদানের হার ছিল অস্বাভাবিক। রিটার্নিং কর্মকর্তা যে ফল ঘোষণা করেছেন, তা বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে ৪০টি কেন্দ্রে ভোট পড়েছে অস্বাভাবিক কম (১৪ থেকে ৪০ শতাংশ) এবং ৬১টি কেন্দ্রে অস্বাভাবিক (৭৩ থেকে ৯৪ শতাংশ) বেশি (ডেইলি স্টার)। ধারণা করা অমূলক হবে না, যেখানে ভোটকেন্দ্রে যেতে বাধা দেওয়া হয়েছে, সেখানে ভোটের হার কম, আর যেখানে ইচ্ছেমতো বাক্সে ব্যালট ভরা হয়েছে, সেখানে এই হার বেশি।

২. পর্যবেক্ষকদের মতে, সাড়ে ৪৬ শতাংশ কেন্দ্রে অনিয়ম হয়েছে। বিভিন্ন বেসরকারি পর্যবেক্ষক সংস্থার জোট, ইলেকশন ওয়ার্কিং গ্রুপ, ইডব্লিউজি বলছে, তারা ১৫৯টি অনিয়ম দেখেছে। প্রায় অর্ধেক সংখ্যক ভোটকেন্দ্রে অনিয়মের ফলাফল প্রশ্নবিদ্ধ হতে বাধ্য।

৩. নির্বাচন পর্যবেক্ষকেরা যেসব অনিয়ম প্রত্যক্ষ করেছেন, তার মধ্যে আছে পোলিং এজেন্ট এবং নির্বাচনী কর্মকর্তাদের জোর করে ব্যালটে সিল মারার ঘটনা।

৪. পর্যবেক্ষকেরা ৮৮টি কেন্দ্রে ভোট গণনা প্রত্যক্ষ করেছেন এবং তার মধ্যে ২টিতে দেখেছেন নির্বাচনী কর্মকর্তা ভোটের সংখ্যা বাড়িয়ে লিখেছেন। বাকি যে ৩১৮টি কেন্দ্রের গণনা পর্যবেক্ষকেরা দেখেননি, সেগুলোর কোনোটিতে যে একই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটেনি, তা দাবি করা যাবে না। সুতরাং শুধু জোর করে ব্যালটে সিল মারা নয়, গণনাতেও মনগড়া হিসাবের অভিযোগ আছে।

৫. কেন্দ্রের ৪০০ গজের মধ্যে প্রচার ও কেন্দ্রে অননুমোদিত কারও প্রবেশ নিষিদ্ধ হলেও সে রকমটি অনেক কেন্দ্রেই ঘটেছে। প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বীর এজেন্টদের অনুপস্থিতিতে এক পক্ষের সমর্থকদের এ ধরনের প্রচার ও জমায়েত সাধারণ ভোটারদের মধ্যে ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি করবে—সেটাই স্বাভাবিক।

৬. আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা একজন মেয়র পদপ্রার্থীর দেওয়া খাবার খেয়েছেন বলে নির্বাচনী পর্যবেক্ষকেরা জানিয়েছেন। স্পষ্টতই এটি নির্বাচনী আইনের লঙ্ঘন।

৭. ভোটকেন্দ্রে অনিয়মের প্রতিবাদকারীদের ওপর পুলিশের হামলা, যা স্পষ্টতই অনিয়মের হোতাদের উৎসাহিত করে নিরীহ ভোটারদের নিরুৎসাহিত করেছে।

৮. কয়েকটি কেন্দ্রে দুপুরের আগেই ব্যালট শেষ হয়ে যাওয়া। এর মানে হচ্ছে ওই সব কেন্দ্রের ভোটারদের একটা অংশ ভোট দিতে পারেনি।

৯. কমিশনের নির্দেশনা উপেক্ষা করে পুলিশ বিরোধী দলের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্যদের গ্রেপ্তার করলেও কমিশন পুলিশ কর্তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থাই নেয়নি।

১০. নির্বাচনী এলাকায় বহিরাগত ব্যক্তিদের অবস্থান নিষিদ্ধ হওয়ার পরও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের সেখানে উপস্থিতির জন্য কোনো ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া তো দূরের কথা, রিটার্নিং কর্মকর্তা তাঁদের তিরস্কৃতও করেননি।

নির্বাচনে অনিয়ম এবং ভোট দখলের অভিযোগ শুধু বিএনপি এবং পর্যবেক্ষকদের নয়। বিএনপির মিত্র নয় এমন দল, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি, সিপিবি বিবৃতি দিয়ে অভিযোগ করেছে যে ক্ষমতাসীন দল ছাড়া অন্য সবার এজেন্টদের ভোটকেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া হয়েছিল। দলটি আওয়ামী লীগের প্রার্থীর বিজয়কে ‘সাজানো ফল’ বলে অভিহিত করেছে।

খুলনার পর মনে হচ্ছিল নির্বাচনের নতুন দুটো মডেল তৈরি হলো। একটি ৫ জানুয়ারির মতো বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতার নির্বাচন, অন্যটি নিয়ন্ত্রিত নির্বাচন—যেখানে সবকিছুই এমনভাবে সাজানো হবে যাতে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনটি হবে শুধু ক্ষমতাসীন দলকে বিজয়ী করার একটি আনুষ্ঠানিকতা। গাজীপুরের সাজানো নির্বাচনের মডেলে যুক্ত হয়েছে নতুন উপাদান, এজেন্টদের অপহরণ করে ভোটের সময়টুকু আটকে রাখা।
  • কার্টসিঃ প্রথম আলো/ জুলাই ২,২০১৮ 

নুরের চিকিৎসা ও নিরাপত্তা নিয়ে আতঙ্কে পরিবার


কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন করতে গিয়ে আহত বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম-আহবায়ক নুরুল হক নুরকে মধ্যরাতে হাসপাতাল থেকে বের করে দেয়া হয়েছে। এই অবস্থায় নুরের শারীরিক অবস্থা ও নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে তার পরিবার।

সোমবার দুপুরে পরিবর্তন ডটকমের সঙ্গে আলাপকালে এই উদ্বেগ প্রকাশ করেন নুরের ভাবি মিতা হক।

তিনি বলেন, ‘নুরের শারীরিক অবস্থা অনেক খারাপ। গতরাতে তাকে হাসপাতাল থেকে বের করে দেয়ার পর আমিও অনেক অসুস্থ হয়ে পড়েছি। নুরের চিকিৎসার স্বার্থে ও তার নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে আমরা তাকে সব কিছু থেকে আড়াল করে রাখার চেষ্টা করছি।’

কান্নাজড়িত কণ্ঠে মিতা হক বলেন, ‘গতরাতে ধানমন্ডির আনোয়ার খান মর্ডান হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমাদের বের করে দেয়। তারা নুরকে হাসপাতালে ভর্তি রাখতে পারবে না বলে জানিয়ে দেয়।’

তিনি বলেন, ‘এর আগে রোববার রাতে বিপুল পরিমাণ পুলিশ হাসপাতাল ঘিরে ফেলে। আমরা ভয় পেয়ে যাই। পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ যখন আমাদের বের হয়ে যেতে বলে, আমরা বাধ্য হয়ে নিচে নেমে আসি।’

‘নিচে নেমে দেখি অনেক মিডিয়াকর্মী হাসপাতালের নিচে অপেক্ষা করছে। তাই হাসপাতালের গেট লাগিয়ে রাখা হয়, আমাদের বের হতে দেয়া হচ্ছিল না। পরে অনেক রিকুয়েস্ট করে আমরা হাসপাতাল থেকে কোনো রকমে বের হয়ে একটা সিএনজি অটোরিকশা নিয়ে চলে আসি। নিরাপত্তা বিবেচনায় এখন আমরা কোথায় আছি, তা বলতে পারছি না’ যোগ করেন নুরের ভাবি।

এর আগে গত শনিবার সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে কোটা সংস্কার আন্দোলনের শীর্ষ নেতা নুরুল হক নুরকে বেধড়ক মারধর করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

পরে তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু, কর্তৃপক্ষ তাকে সেখানেও চিকিৎসা দেয়নি। পরে ধানমন্ডির বেসরকারি আনোয়ার খান মর্ডান হাসপাতালে ভর্তি করা হয় নুরকে।

  • কার্টসিঃ পরিবর্তন ডটকম /জুলাই ২,২০১৮