Search

Tuesday, October 9, 2018

Crisis of doctors at upazila hospitals

EDITORIAL

People at the grassroots suffering as a result


We thank the prime minister for highlighting a major concern in the healthcare sector at a physicians' conference recently: absence of doctors at upazila-level hospitals. The problem of inadequate number of doctors at upazila hospitals has been plaguing the healthcare sector for a long time.

For instance, as of the first week of June this year, there were only four doctors for half a million people in two upazilas in southern Barguna district, according to a leading Bangla daily. A similar scenario was found in Shyamnagar upazila of Satkhira, where 30 out of 34 posts remained vacant. As per Directorate General of Health Service's (DGHS) data, more than half of medical officers' posts at the upazila level in the country—55.2 percent—are vacant. This is simply unacceptable. Due to an acute shortage of physicians, people at the grassroots are being deprived of essential healthcare services.

Unfortunately, doctors overwhelmingly opt for transfers to cities—lured by the more lucrative alternative of private practice—leading to the absence of specialised physicians at upazila health complexes for prolonged periods of time. Many doctors officially occupy medical officers' posts at upazila hospitals but are willingly refraining from showing up and providing their service which can only be described as unethical.

The fact is that healthcare services have become Dhaka-centric which defeats the purpose of universal health coverage—a commitment the government has made in accordance with the 2030 Global Agenda. Thus there is an urgent need to decentralise the healthcare sector and think of ways to incentivise doctors to serve hospitals at the upazila level. The DGHS should also play a more prominent role in ensuring that medical officers' posts are filled up by qualified, ethical physicians.

  • Courtesy: The Daily Star /Oct 9, 2018

মৃত্যুর ৯ মাস পর আসামি!

সাজিদ হোসেন

  • গত সেপ্টেম্বর থেকে যশোরের ৯ থানায় ৩৮টি গায়েবি মামলা
  • মামলায় বিএনপির ৭০০ নেতা-কর্মীকে আসামি করা হয়েছে
  • গ্রেপ্তার করা হয়েছে অন্তত ২০০ জনকে
  • যশোরের ৫ মামলায় ১৮ শিক্ষকসহ ১১৭ জনের আগাম জামিন
  • স্বাধীন অনুসন্ধান কমিটি গঠনের নির্দেশনা চেয়ে রিটের শুনানি শুরু


যশোরের চাঁড়চা গ্রামের জাহাঙ্গীর হোসেন মারা গেছেন ২০১৭ সালের ২৫ ডিসেম্বর। মৃত্যুর নয় মাস পর তিনি ‘গায়েবি মামলা’র আসামি হয়েছেন। মামলার এজাহারে পুলিশ বলেছে, জাহাঙ্গীর দলবল নিয়ে ট্রেনের বগিতে আগুন দিয়েছেন, রেললাইনও উপড়ে ফেলেছেন।

মজিবুল এলাহীর বাড়ি ঝিকরগাছা উপজেলার মোবারকপুর গ্রামে। চার বছর ধরে তিনি বিদেশে। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি পুলিশের ওপর ককটেল ছুড়ে মেরেছেন। এই অভিযোগে গত ৩০ আগস্ট তাঁর বিরুদ্ধে পুলিশ মামলা ঠুকেছে। শুধু জাহাঙ্গীর বা মজিবুলই নন, গত সেপ্টেম্বর থেকে যশোরের ৯টি থানায় এমন ৩৮টি গায়েবি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় বিএনপির ৭০০ নেতা-কর্মীকে আসামি করা হয়েছে। গ্রেপ্তার করা হয়েছে অন্তত ২০০ জনকে।

বিএনপির তথ্য অনুসারে সারা দেশে বিএনপিসহ সরকারবিরোধী রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে ২০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৩ হাজার ৭৩৬টি ফৌজদারি মামলা করা হয়েছে। আসামি করা হয়েছে ৩ লাখ ১৩ হাজার ১৩০ জনকে। এসব মামলায় অজ্ঞাতনামা আসামিও আছে। এসব মামলার এজাহারের বিবরণ প্রায় একই ধরনের।

এদিকে বিএনপির তিন আইনজীবীসহ নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে হওয়া গায়েবি মামলার বিষয়ে একটি স্বাধীন অনুসন্ধান কমিটি গঠনের নির্দেশনা চেয়ে করা রিট আবেদনের ওপর শুনানি শুরু হয়েছে। গতকাল সোমবার বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ শুনানি গ্রহণ করেন। শুনানিকালে কয়েকটি এজাহার পর্যবেক্ষণ করে আদালত বলেন, এ ধরনের মামলা করার ফলে পুলিশের ভাবমূর্তি ও বিশ্বাসযোগ্যতা নষ্ট হচ্ছে।

গত ২৩ সেপ্টেম্বর বিএনপির তিন আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন, নিতাই রায় চৌধুরী ও সানাউল্লাহ মিয়া রিটটি করেন। তাঁদের মধ্যে খন্দকার মাহবুব ও নিতাই রায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এবং সানাউল্লাহ বিএনপির আইনবিষক সম্পাদক।

রিট আবেদনের পক্ষে শুনানিতে অংশ নিয়ে ড. কামাল হোসেন বলেন, এসব মামলার অভিযোগ একই ধরনের। জব্দ করা যে আলামতের কথা বলা হচ্ছে, সেগুলোও একই। খন্দকার মাহবুব হোসেন সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সভাপতি ও জ্যেষ্ঠ আইনজীবী। তিনিও নাকি পুলিশের ওপর ইটপাটকেল ছুড়েছেন। রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একরামুল হক বলেন, তিনি (খন্দকার মাহবুব) তো শুধু আইনজীবীই নন, একটি রাজনৈতিক দলের পদেও আছেন। তাঁদের বিরুদ্ধে এজাহারে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আছে যে তাঁরা কর্মীদের উসকানি দিয়েছেন।

একপর্যায়ে আদালত বলেন, ‘আপনি এটা কী বললেন? আইনজীবী হলে কি রাজনীতি করা যাবে না? আইনে কোনো বিধিনিষেধ আছে? আইনজীবীরাই তো আগে রাজনীতিতে বেশি যুক্ত ছিলেন। আপনারা যদি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বলেন, তাহলে এ ধরনের মামলা হতো না। এতে পুলিশের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে।’

পরে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম শুনানির জন্য সময় চান। আদালত বলেন, ‘কাল (মঙ্গলবার) আদেশের জন্য রাখছি। এর আগে আপনার বক্তব্য উপস্থাপন করবেন।’

রিট দায়েরের পর জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেছিলেন, এজাহারে উল্লেখিত ঘটনার তারিখ ও সময়ে ওই ধরনের ঘটনা না ঘটা সত্ত্বেও জ্যেষ্ঠ আইনজীবীসহ ঢালাওভাবে বিরোধী নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে ‘কল্পিত’ মামলা হচ্ছে। এসব মামলা সঠিক হয়েছে কি না, তা অনুসন্ধানে উচ্চপর্যায়ের স্বাধীন কমিটি গঠনের নির্দেশনা চেয়ে রিটটি করা হয়।

১৮ শিক্ষকসহ ১১৭ জনের আগাম জামিন

যশোরে যে ৩৮টি গায়েবি মামলা হয়েছে, তার পাঁচটি মামলার আসামিরা গতকাল হাইকোর্টে আসেন আগাম জামিন নিতে। তাঁদের মধ্যে ১৮ শিক্ষকসহ ১১৭ জন আগাম জামিন পেয়েছেন। জামিন পাওয়া শিক্ষকেরা বলেছেন, তাঁরা কেউই ঘটনার ব্যাপারে কিছুই জানতেন না।

বাঘারপাড়ার একটি মাদ্রাসার শিক্ষক শামীম মিঞা বলেন, তিনি কোনো রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নন। অথচ বাঘারপাড়া থানার পুলিশ তাঁর নামে গত ৩০ সেপ্টেম্বর নাশকতার মামলা দিয়েছে।

আসামিদের আইনজীবী সাহানূর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, আদালতকে তিনি বলেছেন, নাশকতার নামে পুলিশ মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছে। মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ নেই।

গতকাল সকাল ১০টার পর থেকে এই আসামিদের আদালত চত্বরে জড়ো হতে দেখা যায়। সেখানে যশোর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাবেরুল হক, বাঘারপাড়া বিএনপির সভাপতি টি এস আয়ুবসহ অন্য বিএনপি নেতাদেরও দেখা যায়।

বাড়ি বাড়ি অভিযান

যশোরের স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, পুলিশের ভয়ে নেতা-কর্মীরা বাড়িতে ঘুমাতে পারছেন না। গায়েবি মামলার আসামি ধরতে পুলিশ প্রায় প্রতিদিনই বাড়ি বাড়ি অভিযান চালাচ্ছে। ৩ অক্টোবর এ ব্যাপারে যশোর জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছে বিএনপি।

একটি গায়েবি মামলার বিবরণে বলা হয়, গত ২১ সেপ্টেম্বর রাতে যশোর শহরের রেল সড়ক আশ্রম মোড় এলাকা থেকে নাশকতা পরিকল্পনার অভিযোগে আটটি হাতবোমাসহ ইসমাইল হোসেনকে আটক করে পুলিশ। পরে কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক খবির হোসেন বাদী হয়ে বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে মামলা করেন। ওই মামলায় যশোর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাবেরুল হক, যুগ্ম সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, শহর বিএনপির সভাপতি ও যশোর পৌরসভার সাবেক মেয়র মারুফুল ইসলামকে আসামি করা হয়। তাঁদের সঙ্গে আসামি করা হয় ঘটনার ৯ মাস আগে মারা যাওয়া যশোর সদর উপজেলার চাঁচড়া গ্রামের লতিফ মোল্লার ছেলে জাহাঙ্গীর হোসেনকে।

জানতে চাইলে জাহাঙ্গীর হোসেনের ভাই চাঁচড়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মোজাহার আলী বলেন, ‘আমার ভাই জাহাঙ্গীর ২০১৭ সালের ২৫ ডিসেম্বর হৃদ্রোগে মারা যান।’

গত ৩০ আগস্ট নাশকতা পরিকল্পনার জন্য যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার পদ্মপুকুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে বিএনপি ও জামায়াতের নেতা-কর্মীরা সমবেত হন। এ সময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে দুটি বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে সবাই পালিয়ে যান। এ অভিযোগে ঝিকরগাছা থানার উপপরিদর্শক কামরুজ্জামান জিয়া বাদী হয়ে বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে ৩৭ জনকে আসামি করে মামলা করেন। ওই মামলায় উপজেলার মোবারকপুর গ্রামের গ্রিন বিশ্বাসের ছেলে মো. মজিবুল এলাহীকে আসামি করা হয়। অথচ মজিবুল এলাহী চার বছর ধরে মালয়েশিয়ায় অবস্থান করছেন।

মজিবুল এলাহীর ভাই ঝিকরগাছার উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোর্তজা এলাহী বলেন, ‘আমি বিএনপির রাজনীতি করি বলেই পুলিশ আমার ভাইকে আসামি করে গায়েবি মামলা দিয়েছে। অথচ আমার ভাই ২০১৪ সাল থেকে মালয়েশিয়ায় রয়েছেন।’

গত ১ সেপ্টেম্বর একই থানায় এসআই আশরাফুল ইসলামের করা নাশকতা পরিকল্পনার আরেক মামলায় ঝিকরগাছা উপজেলার হাড়িয়া গ্রামের নিজাম উদ্দীনের ছেলে মো. বাবলুকে আসামি করা হয়েছে। বাবলু ঘটনার সময় ওমরাহ হজ পালনের জন্য সৌদি আরবে ছিলেন। একই ধারায় গত ১৫ সেপ্টেম্বর বেনাপোল বন্দর থানায় করা মামলায় বেনাপোল পৌর বিএনপির সহসভাপতি হাবিবুর রহমানকে আসামি করা হয়। তিনিও ওমরাহ হজ করতে দেশের বাইরে ছিলেন। বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে গত ৮ সেপ্টেম্বর শার্শা থানায় করা মামলায় আসামি করা হয় মো. সারোয়ার হোসেনকে। তিনি ভারতে চিকিৎসাধীন।

মৃত ব্যক্তি ও বিদেশে থাকা ব্যক্তিদের আসামি করার ব্যাপারে জানতে চাইলে যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সালাউদ্দীন শিকদার বলেন, ‘মৃত ব্যক্তিকে যদি আসামি করা হয়ে থাকে, তাহলে আমাদের ভুল হয়েছে।’
  • কার্টসিঃ প্রথম আলো/ ০৯ অক্টোবর ২০১৮ 

রক্ষণাবেক্ষণের অভাব : ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে দ্বিতীয় বুড়িগঙ্গা সেতু

শামীম রাহমান 

সড়ক বিভাজকগুলো ভাঙা-শ্রীহীন। সেটাও অনেক জায়গায় নেই। এক্সপ্যানশন জয়েন্টগুলোর দূরত্ব বাড়ছে ক্রমেই। দীর্ঘদিন ধরে নষ্ট সড়কবাতি। রাস্তার পিচ উঠতে চলেছে। কোথাও কোথাও বেরিয়ে এসেছে পাথর। দুই পাশে আবর্জনার স্তূপ। এসবের মধ্যেই পার্ক করে রাখা সিএনজিচালিত অটোরিকশা-বাস-ট্রাক। আরো আছে ভাসমান দোকানপাট। এ চিত্র দ্বিতীয় বুড়িগঙ্গা সেতুর। সংস্কার-রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে আর বিশৃঙ্খলায় ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে দেশের ষষ্ঠ দীর্ঘতম সড়ক সেতুটি।

ঢাকা শহর ও কেরানীগঞ্জের মধ্যে সড়কপথে যাতায়াতে বুড়িগঙ্গার ওপর তিনটি সেতু রয়েছে। প্রথম বুড়িগঙ্গা সেতুটি পোস্তগোলায়। দ্বিতীয় বুড়িগঙ্গা সেতুটি বাবুবাজারে। অনেকে বলেন বাবুবাজার ব্রিজ। এছাড়া রয়েছে শহীদ বুদ্ধিজীবী সেতু। ঢাকা শহর থেকে যেতে মধ্যবর্তী অবস্থানে রয়েছে বাবুবাজার ব্রিজ। এ কারণে কেরানীগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ এমনকি দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলো থেকে আসা মানুষ বুড়িগঙ্গা পাড়ি দিতে এ সেতুটি সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করে। ২০০১ সালে চালু হওয়া এ সেতু ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে টোলমুক্ত করে দেয়া হয়। এর পর থেকে সেতু দিয়ে যান চলাচল যেমন বেড়েছে, তেমনি বেড়েছে অব্যবস্থাপনা-বিশৃঙ্খলা।

গতকাল সরেজমিন ঘুরে দিশারী, স্বাধীন, ইলিশ, এয়ারপোর্ট-বঙ্গবন্ধু এভিনিউ, গ্রেট বিক্রমপুর পরিবহনসহ চলাচল করা প্রায় সব বাসকে সেতুর ওপর যাত্রী ওঠাতে-নামাতে দেখা গেছে। সেতুর ওপর দেখা মিলেছে সিএনজি অটোরিকশা স্ট্যান্ডেরও। দুই পাশে অটোরিকশা দাঁড় করিয়ে যাত্রী ডাকছেন চালকরা। সেতুর মাঝামাঝি গাড়ি দাঁড় করানোর কারণ জানতে চাইলে একাধিক চালক বলেন, এটাই তাদের স্ট্যান্ড। এজন্য কর্তৃপক্ষকে মাসে মাসে টাকা দেয়া হয় বলে জানান তারা।

দ্বিতীয় বুড়িগঙ্গা সেতুতে পার্ক করে রাখা ছিল বাস-ট্রাকও। তবে ওইসব বাহনের চালক বা হেলপারের দেখা মেলেনি। স্থানীয়রা জানায়, দিনের বেলা সেতুর ওপর সবসময় ২০-২৫টি বাস-ট্রাক পার্ক করা থাকে। আর রাতে সেতুর এমাথা থেকে ওমাথা পর্যন্ত দুই পাশেই হয় পার্কিং স্পট। সারি সারি বাস-ট্রাকের কারণে সারা রাত সেতুর একটি লেন বন্ধ থাকে। রাতে গাড়ি পারাপারের চাপ বাড়লে দেখা দেয় তীব্র যানজট। যানবাহনের পাশাপাশি সেতুতে অসংখ্য ভাসমান দোকান।

দ্বিতীয় বুড়িগঙ্গা সেতুতে সবচেয়ে খারাপ দশা সড়ক বিভাজকের। ইস্পাতের তৈরি বেশির ভাগ বিভাজক ভাঙা। কোথাও একেবারেই নেই। এতে সেতুর ওপর গাড়ি ইউটার্ন করতে সুবিধা হচ্ছে অনেক চালকের। সড়ক বিভাগের প্রকৌশলীদের অভিযোগ, স্থানীয় একটি প্রভাবশালী চক্রের কারণে বিভাজকগুলোর এমন দশা। সেতুর ওপর সিএনজি অটোরিকশা স্ট্যান্ড বসানোর সুবিধার্থে বিভাজক ভেঙে ফেলা হয়েছে বলে প্রকৌশলীরা জানান। সেতুর এক্সপ্যানশন জয়েন্টগুলোরও বেহাল দশা। বেশির ভাগ জয়েন্ট ভেঙে লোহা বেরিয়ে এসেছে। কয়েকটি জায়গায় জয়েন্ট ৩-৪ ইঞ্চি পর্যন্ত ফাঁকা হয়ে গেছে।

দ্বিতীয় বুড়িগঙ্গা সেতুতে যার যেভাবে ইচ্ছা ময়লা-আবর্জনা ফেলছে। দুর্গন্ধে ভুগতে হচ্ছে যাত্রী-পথচারীদের। নজরুল ইসলাম নামে এক পথচারী জানান, কোরবানির ঈদে জবাই করা পশুর বর্জ্যও সেতুর ওপর ফেলা হয়েছিল। ওই বর্জ্য পচে-গলে এখনো দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। সেতুর পিচ উঠে সৃষ্টি হয়েছে অসংখ্য খানাখন্দ। যথাযথ নজরদারি না থাকায় অতিরিক্ত পণ্য নিয়ে অবাধে চলছে যানবাহন, যা স্থায়ী ক্ষতি করছে এ সেতুর।

সেতুটির এ দশা সম্পর্কে আরমানীটোলা সমাজকল্যাণ সংসদের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন রনি বলেন, সেতুটি সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের আওতাধীন। সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণ তাদেরই করার কথা। তবে দীর্ঘদিনেও সেতু সংস্কার কিংবা রক্ষণাবেক্ষণে তাদের কোনো তত্পরতা চোখে পড়েনি। সেতুর লাইট নষ্ট, জয়েন্টগুলোয় লোহার পাত বেরিয়ে এসেছে, ডিভাইডার ভেঙে গেছে। উপরে অবৈধ পার্কিং, দোকানসহ নানা অব্যবস্থাপনা। ঢাকার সঙ্গে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের সড়ক যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম এ সেতু। আমরা জনগুরুত্বপূর্ণ সেতুটি দ্রুত সংস্কার ও নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের দাবি জানাই।

দ্বিতীয় বুড়িগঙ্গা সেতুটি চালু হয় ২০০১ সালে। মাত্র ১৭ বছর বয়সেই বেহাল হয়ে পড়েছে সেতুটি। এজন্য সড়ক ও জনপথ অদিধপ্তরের উদাসীনতাকে দায়ী করছে স্থানীয়রা। তবে অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, সেতু সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণে তারা কখনই কোনো গাফিলতি করেননি। বিশৃঙ্খলার জন্য অধিদপ্তরের জনবলস্বল্পতাকে দায়ী করছেন তারা। আর সংস্কারেও উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন।

বিষয়টি সম্পর্কে যোগাযোগ করা হলে ঢাকা সড়ক উপবিভাগ-২-এর নির্বাহী প্রকৌশলী মেহেদী ইকবাল বণিক বার্তাকে বলেন, ‘বাবুবাজার সেতুর ওপর সিএনজি অটোরিকশা স্ট্যান্ড, দোকানপাটসহ নানা ধরনের বিশৃঙ্খলা আছে, এটা আমরা স্বীকার করছি। কিন্তু এ ধরনের বিশৃঙ্খলা প্রতিরোধ করতে যে ধরনের জনবল দরকার, তা আমাদের নেই। তবে আমরা সেতুটি সংস্কারের উদ্যোগ নিচ্ছি। শিগগিরই সেতুতে দুই ধাপে সংস্কারকাজ করা হবে। প্রথম ধাপে সেতুর লাইটগুলো ঠিক করা হবে। এ কাজের জন্য সাত-আটদিনের মধ্যে দরপত্র আহ্বান করা হবে।

সেতুর ইস্পাতের সড়ক বিভাজকগুলো কংক্রিটে বদলে ফেলা হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ইস্পাতের বিভাজকগুলো দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়। আবার স্থানীয়রাও ইউটার্ন নেয়ার সুবিধার্থে অনেক সময় ভেঙে ফেলে। কংক্রিটের ডিভাইডার হলে যেমন টেকসই হবে, তেমনি ইউটার্ন নেয়ার সুবিধা না থাকায় সিএনজি অটোরিকশা স্ট্যান্ডগুলোও আপনা থেকে সরে যাবে। সড়ক বিভাজকসহ আনুষঙ্গিক সংস্কারকাজের জন্য আমরা প্রস্তাবনা তৈরি করেছি। এক-দুদিনের মধ্যে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। আশা করছি, নভেম্বরের মধ্যেই সেতুর চেহারা পাল্টে যাবে।
  • কার্টসিঃ বনিক বার্তা/  ০৯ অক্টোবর ২০১৮

Businesses suffer for truck strike

Truckers relax work abstention after meeting with home minister



Truck-owners and drivers continued their work abstention for the second day yesterday, dealing a blow to businesses and affecting the supply chain of goods to the capital.

No trucks left Dhaka yesterday while many from different districts remained off the streets, transport leaders said.

Faruque Hassan, vice-president of Bangladesh Garment Manufacturers and Exporters Association (BGMEA), said they had been suffering because of the strike and the impact would increase unless the strike was withdrawn immediately.

“We are having problems already. We are not getting trucks for transporting our products meant for export and import,” he told The Daily Star yesterday.

However, leaders of truck owners and workers last night decided to relax their indefinite work abstention and agreed to carry garments products and perishables.

They took the decision following a meeting with Home Minister Asaduzzaman Khan at his Dhanmondi residence as he gave assurances to meet their demands, Mokbul Ahmed, convener of Bangladesh Goods Transport Owners Workers United Council, the organisation that called the strike, told The Daily Star last night.

They will hold another meeting with the home minister today at 2:00pm and will take a decision regarding the withdrawal of their work abstention, he added.

The work abstention was announced on Sunday to press home the organisation's seven-point demand, including making changes to the Road Transport Act-2018.

Parliament on September 19 passed the Road Transport Act amid criticism over lenient punishments for deaths caused by reckless driving.

One of the key demands made by the council was that truck owners and drivers would not accept death penalty as drivers “don't drive to kill people”.

Other demands include unconditional release of all staffers arrested in connection with crashes, issuing proper driver's licence to all drivers of heavy vehicles and allowing drivers to drive trucks with light vehicles' driving licence until they are issued the one for heavy vehicles; ending police harassment and setting up truck terminals and stands at suitable locations with necessary facilities.


Some workers stop a van in Tejgaon area. Photo: Prabir Das

BUSINESSES SUFFER

Apart from the strike, there have also been allegations of some transport workers preventing free movement of vehicles on roads and truckers charging higher than usual fares.

Faruque Hassan, the VP of BGMEA, alleged that when they used company vehicles to transport products, some transport workers intercepted those.

“Two of my company vehicles came under attack at Cherag Ali in Tongi yesterday,” he added.

“We are worried. Our production has been hampered and we are failing to send our consignment,” he said, adding that they have already raised their concern with the road transport and bridges minister.

Meanwhile, cashing in on the work abstention, truckers are charging more than the usual fares, several whole sellers of Karwan Bazar, largest kitchen market in Dhaka city claimed.

Babul Miah, proprietor of Bikrampur Bhander, said he hired a truck at Tk 17,000 to carry potatoes from Rajshahi. The cost was Tk 1,500 higher than the usual fare.

“At first, the truck drivers refused to carry goods citing the 'strike but later agreed at a higher fare,” he said.

Another vegetable trader, Md Masud, said he usually hired a pick-up van at Tk 2,200 to carry goods from Gazipur but yesterday he had to hire the same pick-up van at Tk 3,000.

The cost of food and vegetable may rise to reflect the rising cost, the traders at Karwan Bazar added.

WORKS ABSTENTION ON

Visiting the truck stands at Tejgaon, Aminbazar and Mohammadpur Beribadh, this correspondent saw trucks parked there with many drivers and helpers sitting idle.

“We have 1,987 members and more than 200 new drivers are waiting to get membership. All of us are observing work abstention. So, no truck has left from here,” Manik Miah, treasurer of Aminbazar Branch of Bangladesh Inter-district Truck Drivers Union, said.

Mokbul said their work abstention would continue until their demands are met.

Although, the work abstention was announced for Dhaka division, truck owners and workers from other districts including Bogura, Naogaon, Rajshahi, Feni and Rangpur did not operate their vehicles in solidarity, he added.

Mokbul said the president of BGMEA had already talked with them as trucks were an integral part of the garments industry's supply chain. “We are ready to talk with the government,” he added. 
  • The Daily Star/ Oct 9,2018

ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে বিচার না পাওয়ায় শিক্ষকদের একযোগে পদত্যাগ


টাঙ্গাইলের মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের চার নেতার বিরুদ্ধে শিক্ষকদের লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে। ভিসির কাছে তাৎক্ষণিকভাবে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতাদের বিচার না পেয়ে ৫৬ জন শিক্ষক একযোগে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। শিক্ষক সমিতির সভাপতি মুহাম্মদ শাহীন উদ্দিন বলেন, সোমবার দুপুরের দিকে রেজিস্ট্রারের কাছে ৫৬ জন শিক্ষক পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। এর মধ্যে ২ জন রিজেন্ট বোর্ড সদস্য, ৪ জন ডিন, ৪ জন প্রভোস্ট, ১৪ জন বিভাগীয় চেয়ারম্যান, সব হাউস টিউটর ও সহকারী প্রক্টর রয়েছেন।

অভিযুক্তরা হলেন- বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি সজীব তালুকদার, সহ-সভাপতি ইমরান মিয়া, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক জাবির ইকবাল ও সহ-সভাপতি আদ্রিতা পান্না।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, শনিবার ২য় বর্ষ ২য় সেমিস্টার পরীক্ষার ফলাফলে ঈশিতা বিশ্বাস নামে এক ছাত্রী ফেল করেন। এজন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্ডিন্যান্স অনুযায়ী রোববার সকালে কোয়ান্টাম মেকানিক্স-১ পরীক্ষায় তাকে অংশগ্রহণের অনুমোদন দেয়া হয়নি। পরে ছাত্রলীগ নেতারা তাকে জোড় করে পরীক্ষার হলে বসিয়ে দেন।

শিক্ষকেরা এতে বাধা দিতে গেলে ছাত্রলীগ সভাপতি সজীব তালুকদার পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক ড. আনোয়ার হোসেন ও মহিউদ্দিন তাসনিনকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং তাদের মারতে উদ্যত হন। একপর্যায়ে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা ঈশিতাকে পাহারা দিয়ে সম্পূর্ণ পরীক্ষা শেষ করান। পরীক্ষা শেষে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা শিক্ষার্থীদের ডেকে অর্ডিন্যান্স পরিবর্তনের জন্য আন্দোলন করেন। এ সময় কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ও টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা বন্ধ করা হয়।

পরে শিক্ষক লাঞ্ছনার ঘটনায় রোববার বিকালে জরুরি সভা ডাকে শিক্ষক সমিতি। সভায় ভিসি বরাবর দুইটি আবেদনের মাধ্যমে ছাত্রলীগের ওই চার নেতার বিচারের দাবি জানানো হয়। সন্ধ্যায় ভিসির কক্ষে ছাত্রলীগ ও শিক্ষকদের নিয়ে সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভার একপর্যায়ে ছাত্রলীগ নেতারা বের হয়ে এসে প্রতিটি হল থেকে ছাত্র-ছাত্রীদের বের করে অর্ডিন্যান্স পরিবর্তনের আন্দোলন শুরু করেন। অন্যদিকে ভিসির কনফারেন্স রুমে তাৎক্ষণিক বিচার না পাওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে শিক্ষকরা একযোগে পদত্যাগের ঘোষণা দেন। সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ড. তৌহিদুল ইসলামের কাছে পদত্যাগ পত্র জমা দেয়া হয়।

বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি সজিব তালুকদার বলেন, ঈশিতা বিশ্বাসকে ইনটেনশনালী ফেল করানো হয়েছে। এছাড়া অর্ডিন্যান্স পরিবর্তনের দাবি শুধু ছাত্রলীগের নয়, সবার। কারণ এটা সকল শিক্ষার্থীর জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। শিক্ষকদের লাঞ্ছিত করার অভিযোগটিও সঠিক নয়। স্যারদের সাথে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের জাস্ট কথা কাটাকাটি হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি সজিব তালুকদার বলেন, ঈশিতা বিশ্বাসকে ইনটেনশনালী ফেল করানো হয়েছে। এছাড়া অর্ডিন্যান্স পরিবর্তনের দাবি শুধু ছাত্রলীগের নয়, সবার। কারণ এটা সকল শিক্ষার্থীর জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। শিক্ষকদের লাঞ্ছিত করার অভিযোগটিও সঠিক নয়। স্যারদের সাথে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের জাস্ট কথা কাটাকাটি হয়েছে।

শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. মুহাম্মদ শাহীন উদ্দিন বলেন, আমরা সঠিক বিচার না পাওয়ায় সোমবার দুপুরে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছি। আমরা এই ঘটনায় সুষ্ঠু বিচারের দাবি করছি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ড. মো. আলাউদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের আইনের আওতায় আনা হবে।’

যশোরের পাঁচ ‘গায়েবি’ মামলায় ১৬ শিক্ষকসহ ১১২ জনের জামিন



গায়েবি মামলার আসামি হয়ে জামিন নিতে এসেছেন যশোরের এসব স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসা শিক্ষকেরা। ছবিটি সোমবার হাইকোর্ট চত্বর থেকে তোলা ছবি: সাজিদ হোসেন

যশোরের বাঘারপাড়ার একটি মাদ্রাসার শিক্ষক শামীম মিঞা (৪৫)। তাঁর দাবি, তিনি কোনো রাজনীতির সঙ্গে জড়িত না। অথচ বাঘারপাড়া থানা-পুলিশ তাঁর নামে গত ৩০ সেপ্টেম্বর নাশকতার মামলা দিয়েছে। যশোর থেকে এসে সোমবার হাইকোর্টে আত্মসমর্পণ করে আগাম জামিন চান আসামি শামীম। বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ তাঁর জামিন মঞ্জুর করেছেন।

মাদ্রাসাশিক্ষক শামীমের মতো যশোরের বাঘারপাড়া ও অভয়নগর থানার পৃথক আরও দুটি নাশকতার মামলায় আরও ১৫ জন শিক্ষক হাইকোর্টে আত্মসমর্পণ করে জামিন নিয়েছেন। এ ছাড়া যশোরের কোতোয়ালি, বাঘারপাড়া ও অভয়নগর থানার পৃথক পাঁচটি নাশকতার মামলায় হাইকোর্ট থেকে আগাম জামিন পেয়েছেন আরও ৯৬ জন।

আসামিদের আইনজীবী আসানুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, মিথ্যা মামলায় যশোরের কোতোয়ালি, বাঘারপাড়া ও অভয়নগর থানার পৃথক পাঁচটি মামলায় শিক্ষকসহ ১১২ জনকে হাইকোর্ট আগাম জামিন দিয়েছেন। আদালতকে তিনি বলেছেন, নাশকতার নামে পুলিশ মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছে। মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ নেই।

গত ২২ সেপ্টেম্বর থেকে ২ অক্টোবরের মধ্যে পুলিশ বাদী হয়ে যশোরের কোতোয়ালি থানায় দুটি, বাঘারপাড়া থানায় দুটি এবং অভয়নগর থানায় একটি নাশকতার মামলা করে। মামলাগুলো বিশেষ ক্ষমতা আইন ও বিস্ফোরক আইনে করা হয়েছে। ৫টি মামলায় ৩৪০ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। যশোর থেকে জামিন নিতে আসা শিক্ষকসহ অন্তত ৩০ জন আসামি হাইকোর্ট এলাকায় প্রথম আলোর কাছে দাবি করেন, কোনো ঘটনাই ঘটেনি। অথচ পুলিশ গায়েবি মামলা দিয়েছে।

তবে বাঘারপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুর রহিম প্রথম আলোকে বলেন, সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে মাদ্রাসাশিক্ষকদের নামে আসামি করা হয়েছে। অভয়নগর থানার ওসি আলমগীর হোসেন বলেন, যেসব শিক্ষক নাশকতার সঙ্গে জড়িত, তাঁদের নামেই মামলা দেওয়া হয়েছে। কোতয়ালি থানার একটি নাশকতার মামলায় জাহাঙ্গীর হোসেন (৩০) নামের একজনকে আসামি করা হয়েছে। এ মামলার আসামি ও যশোর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাবেরুল হক প্রথম আলোকে বলেন, জাহাঙ্গীর মারা গেছেন গত বছরের ২৫ ডিসেম্বর। নাশকতার কোনো ঘটনাই ঘটেনি অথচ পুলিশ গায়েবি মামলা করছে। মৃত মানুষকেও আসামি করেছে।

এ ব্যাপারে কোতোয়ালি থানার ওসি অপূর্ব হাসান প্রথম আলোকে বলেন, এ আসামি মৃত হলে তাঁকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হবে।

আজ হাইকোর্টে দেখা যায়, সকাল ১০টার পর থেকে যশোর থেকে আসা নাশকতার মামলার আসামি শিক্ষকসহ বিএনপির নেতা-কর্মীরা আদালত চত্বরে জড়ো হন। সেখানে যশোর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাবেরুল হক, বাঘারপাড়া বিএনপির সভাপতি টি এস আয়ুবসহ অন্য বিএনপি নেতাদের দেখা যায়।


গায়েবি মামলার আসামি হয়ে যশোর থেকে জামিন নিতে এসেছেন তাঁরা। ছবি: সাজিদ হোসেন

বিএনপি নেতা টি এস আয়ুব হাইকোর্টের বারান্দায় দাঁড়িয়ে প্রথম আলোকে বলেন, পুলিশ এলাকার নিরীহ শিক্ষক, ক্ষেতমজুর, দিনমজুরসহ বিএনপির নেতা–কর্মীদের নামে গায়েবি মামলা দিয়েছে। এলাকায় থাকতে না পেরে বাধ্য হয়ে শিক্ষকসহ যাঁদের আসামি করা হয়েছে তাঁরা সবাই হাইকোর্টে এসেছেন। টি এস আয়ুব জানান, পাঁচটি মামলায় তিনিসহ ২৩৬ জন আসামি যশোর থেকে আগাম জামিন নেওয়ার জন্য হাইকোর্টে এসেছেন। ১১২ জনের জামিন হয়েছে। আজ অন্যরা আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করবেন।

জামিন পাওয়া শিক্ষক

সোমবার হাইকোর্ট থেকে জামিন পান বাঘারপাড়ার বিভিন্ন মাদ্রাসার শিক্ষক ইউনূস আলী, শামিম মিয়া, আমান উল্লাহ, হাফিজুর রহমান, তবিবার রহমান, বদিয়ার রহমান, সানাউল্লাহ, জিল্লুর রহমান, অলিয়ার রহমান, আমিনুর রহমান, ময়েন উদ্দিন ও বাকি বিল্লাহ। আর অভয়নগরের মামলায় জামিন পাওয়া শিক্ষক হলেন ফিরোজ মাস্টার, আজিজুর রহমান, আজিমুল হক ও মঞ্জু মাস্টার। জামিন নিতে আসা শিক্ষকেরা জানিয়েছেন, প্রতিষ্ঠান থেকে ছুটি নিয়ে তাঁরা হাইকোর্টে এসেছেন।

নাশকতার ৫ মামলা

নাশকতার অভিযোগে যশোরের বাঘারপাড়া থানায় পৃথক দুটি মামলা করেছে পুলিশ। গত ২৯ সেপ্টেম্বরের মামলায় ৫৬ জনের নাম উল্লেখ করা মামলা করা হয়। মামলায় বলা হয়, বাঘারপাড়ার মহিরন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে বিএনপি-জামায়াতের নেতা–কর্মীরা লাঠিসোঁটা নিয়ে নাশকতা করার জন্য একত্র হয়েছেন। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে দুই থেকে তিনটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আসামিরা পালিয়ে যান। 
আর বাঘারপাড়া থানায় ৩০ সেপ্টেম্বরের করা মামলায় ৫৯ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করা হয়। বিশেষ ক্ষমতা আইনে করা এ মামলায় বলা হয়, বাঘারপাড়া মডেল কলেজের মাঠে আসামিরা ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটান। সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও অন্তর্ঘাতমূলক কর্মকাণ্ড করার জন্য আসামিরা সেদিন একত্র হন।

অন্যদিকে, অভয়নগর থানায় গত ৩০ সেপ্টেম্বর করা মামলায় ১৬৪ জনকে আসামি করা হয়। বিস্ফোরক আইনে এ মামলা করা হয়। অভয়নগর থানার মামলায় বলা হয়, ২১ আগস্ট গ্রেনেড বোমা হামলা মামলার রায় এবং আগামী সংসদ নির্বাচন বানচাল করে দেওয়ার জন্য আসামিরা চেঙ্গুটিয়া বাজারের যুবলীগের অফিসে আগুন লাগিয়ে দেন। অফিসে ব্যাপক ভাঙচুর করা হয়। সেখানে চারটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটান।

যশোরের কোতয়ালি থানার মামলা নম্বর ৯৪ (৯) ১৮। বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় ৩৭ জনের নাম উল্লেখ করে কোতয়ালি থানায় মামলা করে পুলিশ। মামলায় বলা হয়, গত ২২ সেপ্টেম্বর বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে কোতোায়ালি থানার আশ্রম রোডের জনৈক দ্বীন মোহাম্মাদের দোকানের সামনে একত্র হয়ে আসামিরা যান চলাচলে বাধা দেন। পুলিশকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা করেন। রেলওয়ে বগিতে হামলা করেন। সেখানে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটান। 

গত ২ অক্টোবর কোতোয়ালি থানায় আরেকটি মামলা করে পুলিশ। বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় ২৪ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। মামলায় বলা হয়, কোতোয়ালি বড় বাজারের এইচ এম এম রোডে মনসা বস্ত্রালয়ের সামনে আসামিরা জড়ো হন। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে আসামিরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। তবে তিনজন আসামির বাজার করা ব্যাগে চারটি তাজা বোমা পাওয়া যায়। নাশকতার উদ্দেশ্যে আসামিরা একত্র হন।

  • কার্টসিঃ প্রথম আলো/ ০৮ অক্টোবর ২০১৮

Monday, October 8, 2018

Truckers’ strike disrupts goods transportation


Truck owners and workers went for an indefinite strike from Sunday to press home their seven demands, including amendment to some sections of the recently enacted Road Transport Act (RTA) 2018.

The truckers, under the platform of Bangladesh Goods Transport Owners Workers United Association, observed their work abstention, particularly in Dhaka division, for the first day.

Besides, the truck drivers and workers, under different banners, prevented vans, covered vans, mini-trucks and trucks from plying the roads at major exit and entry points of the city, like - Jatrabari, Postogola, Gabtoli and Bosila etc. The strike disrupted the goods transportation. 

The announcement of the strike came from a rally, held at Tejgaon truck-stand in the city on Saturday.

Talking to the FE, convener of the platform Md Mokbul Ahmad said, "We will continue the strike in Dhaka division until the demands are met."
"We haven't yet got any invitation from the government for discussing our demands," he added.

However, he hoped that a solution will come, if the government's representatives sit with the truck owners and workers to discuss the demands.
"We are not demanding abolition of Road Transport Act 2018. We just want amendment of its some sections."

Mr Mokbul, also the president of Bangladesh Covered Van Truck Ponnyo Paribahan Malik Association, said a driver cannot afford paying Tk 0.5 million as fines, if an accident occurs on the highway.

Besides, death penalty for truck drivers is not fair, as they provide necessary services to goods transportation sector.

All types of goods transportation will remain stopped during the strike, he added.

In a visit to Tejgaon truck-stand on the day, the FE correspondent found no transportation-related activities, as the truck drivers and helpers, forming groups here and there, refrained from their usual work.

Abdus Salam, who drives covered van especially on Dhaka-Chittagong Highway, said punishment in the new law is too much for the drivers. They are not killers, and no one wants to kill people intentionally.

"Only the drivers are not responsible for accidents on highways, pedestrians are also sometimes reckless in crossing the roads," he added.

The demands of the truckers include - stopping police harassment and frequent checking on the highways, setting up truck terminals and stands at suitable spots with resting and dining facilities adjacent to the highways, halting overloading of trucks, and returning driving licences to drivers without imposing fines.

They also demand that licence to drive heavy vehicles should be issued to all drivers of heavy vehicles, and they should be allowed to drive trucks with light vehicle driving licence until they get licence to drive heavy vehicles.

Lastly, they demand unconditional release of a driver - Hasmat Ali, a member of Tangail Truck Owners Association, and other transport workers arrested in connection with road accident cases.

RTA 2018 was passed in the parliament on September 19. According to the new law, if anybody commits an accident for reckless driving, and kills or injures someone seriously, the driver will face a maximum five years' imprisonment or a fine of Tk 0.5 million or both.

Besides, if it is proved that a driver has intentionally killed anyone, the incident will fall under either Section 302 (murder) or Section 304 (culpable homicide) of Penal Code.

The maximum punishment under Section 302 is death penalty, while it is life imprisonment under Section 304.

However, road safety activists criticised the act, saying the punishments for deaths caused by reckless driving is not enough.
  • FE Report/8 October 2018

কয়েক জনের অবরোধে ভোগান্তিতে লাখো মানুষ


শুয়ে আছেন জনপাঁচেক লোক। কোটা বহালের দাবি তাদের। গতকাল সকাল ৭টায় শাহবাগ মোড় থেকে ছবিটি তুলেছেন আমাদের আলোকচিত্রী জীবন আহমেদ 

সকাল ৭টা। ব্যস্ত শাহবাগ মোড়ের সড়কে শুয়ে ছিলেন ৫ যুবক। সরকারি চাকরিতে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা বহালের দাবিতে তাদের অবস্থান। পাঁচ জনের অবস্থানে চারপাশের সব রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ। সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবসে ব্যস্ত সড়ক দিয়ে আসা হাজারো যানবাহনকে ডাইভারসন করে দেয় পুলিশ। এতে আশপাশের সড়কে দেখা দেয় যানজট। সড়কে যান চলাচল বন্ধ থাকায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়, বারডেম, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আসা রোগী এবং তাদের স্বজনদের পড়তে হয় দুর্ভোগে। সকাল ১০টা পর্যন্ত এই পাঁচ যুবক সড়কে ছিলেন।

যানবাহনও চলেনি সড়কে। সেখানে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের যানবাহনকে ডাইভারসন করতে দেখা গেলেও যুবকদের সরাতে কোনো উদ্যোগ নেয়নি। দশটার দিকে অবস্থানকারীরা সরে গেলে যানবাহন চলাচল শুরু করে। বেলা একটার পর আন্দোলনকারীদের ২০ থেকে ২৫ জন ফের সড়কে অবস্থান নিয়ে যান চলাচল বন্ধ করে দেয়। কিছুক্ষণ পর তাদের সঙ্গে যোগ দেন আরো ২০ থেকে ২৫ জন। 

এরপর থেকে শাহবাগ মোড় হয়ে আর যানবাহন চলেনি রাত পর্যন্ত। এতে পুরো এলাকায় যানজট দেখা দেয়। ব্যস্ততম এ সড়ক দিয়ে যাতায়াতকারী লাখ লাখ মানুষকে পড়তে হয় দুর্ভোগে। গতকালের অবরোধে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড এর সঙ্গে বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী ঐক্য পরিষদও যোগ দেয়। সকাল থেকে সড়ক অবরোধ থাকায় সায়েন্সল্যাব, বাটা সিগন্যাল থেকে আসা যানবাহনগুলো সবই বন্ধ ছিল। তবে মাঝে ১০টা থেকে কিছু সময় যানচলাচল শুরু হলেও দুপুরের দিকে আবারো আন্দোলনকারীরা সড়ক অবরোধ করেন। দীর্ঘ সময় অপেক্ষার পরও রাস্তা না ছাড়ায় ওই সড়কটির কোনো যানবাহন চলাচল করতে পারেনি। 

অন্যদিকে কাওরান বাজার থেকে গুলিস্তান যাওয়ার সড়কও হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড় থেকে ডাইভারসন করে দেয় পুলিশ। ফলে এদিক থেকে যাওয়া যানবাহনগুলোর দীর্ঘ জটলা সৃষ্টি হয়। শাহবাগের এ রাস্তাটিতে যানবাহন চলাচল করতে না পারায় শহরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা সাধারণ মানুষ চরম ভোগান্তিতে পড়েন। বিশেষ করে সড়কটিতে তিনটি হাসপাতাল থাকায় এখানে দূর-দূরান্ত থেকে চিকিৎসা নিতে এসে বিপাকে পড়েন অনেকে। আবার কাউকে ফার্মগেট পর্যন্ত এসে ফিরে যেতে দেখা গেছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে পায়ের ব্যথা নিয়ে চিকিৎসা নিতে আসা জাহানারা বেগম জানান, গাজীপুর থেকে ডাক্তার দেখাতে আসছি। কিন্তু এখন বাসায় যাইতে পারতেসি না। ওইদিক থেকে সব গাড়ি বন্ধ।

ঢাকায়ও থাকার মতো জায়গা নেই। সুব্রত নামের একজন কচুক্ষেত থেকে এসেছেন। তিনি হাঁপানিসহ বেশ কিছু রোগে ভুগছেন। সুব্রত বলেন, সকাল বেলায় অনেক কষ্ট করে আসছি। এদিকে রাস্তা বন্ধ থাকায় তেজগাঁও পর্যন্ত যানজট লেগে যায়। সেখান থেকে কয়েকবার রাস্তা বদল করে হাসপাতালে ডাক্তার দেখাতে আসছি। এখন বাসায় ফিরবো, কিন্তু কোনো যানবাহন নেই। এই শরীর নিয়ে এখানে দাঁড়িয়েও থাকতে পারছি না। অপারেশন শেষে খিলগাঁওয়ে বাসায় স্ত্রীকে নিয়ে ফিরবেন নাজিম উদ্দিন নামের একজন। 

তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এটা কেমন কথা! যখন তখন এ দেশে আন্দোলন শুরু হয়ে যায়। মানুষ মরলেও কারও কোনো খবর থাকবে না। আমরা সাধারণ মানুষ কোথায় যাবো? ইব্রাহীম কার্ডিয়াক হাসপাতালে হৃদরোগের চিকিৎসা নিতে এসে বিপাকে পড়েন শামসুজ্জামান নামের আরেক ব্যক্তি। 

তিনি বলেন, আমি হার্টের রোগী। বাসা যাত্রাবাড়ীতে। শরীরের কি অবস্থা যাচ্ছে আমি বুঝছি। কিন্তু কোনো সিএনজি বা বাস পাচ্ছি না এক ঘণ্টা ধরে। এ অবস্থায় কি করবো বুঝতে পারছি না। আমার স্ত্রী সঙ্গে এসেছে। সে অনেক চেষ্টা করছে কিন্তু কোনো কিছু ম্যানেজ করতে পারছে না। শুধু হাসপাতালের রোগী নন, ব্যস্ততম সড়ক হয়ে যাওয়া আসা করেন ঢাকার কর্মজীবী মানুষের একটি বড় অংশ। ঢাকার উত্তর দক্ষিণ ও পূর্ব পশ্চিমের সবচেয়ে বড় সংযোগস্থল শাহবাগ মোড় অবরুদ্ধ থাকায় কর্মজীবী মানুষদেরও ভোগান্তিতে পড়তে হয়।

আশপাশের সড়কে যানজট তৈরি হওয়ায় তা ক্রমে ছড়িয়ে পড়ে অনেক রাস্তায়। 

এদিকে শনিবার লাগাতার অবরোধ চালিয়ে যাওয়ার কথা বলা হলেও গতকাল আন্দোলনকারীরা কর্মসূচির পরিবর্তন করেছেন। তারা জানিয়েছেন, আজ থেকে বিকাল তিনটা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত শাহবাগে অবরোধ কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়া হবে। মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন জানান, আমাদের ছয় দফা দাবি। দাবিগুলো হলো- ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা বহাল, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধাদের কটূক্তির বিচার, মুক্তিযোদ্ধা পারিবারিক সুরক্ষা আইন প্রণয়ন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির বাড়িতে হামলার বিচার, প্রশাসনে রাজাকার ও রাজাকারদের সন্তানদের তালিকা করে বরখাস্ত করা, মুক্তিযোদ্ধাদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি প্রদান। তিনি জানান, যত দিন পর্যন্ত আমাদের দাবি বাস্তবায়ন করা না হবে, তত দিন পর্যন্ত শাহবাগে প্রতিদিন বিকাল ৩টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত লাগাতার কর্মসূচি ও সারা বাংলাদেশে একই কর্মসূচি পালিত হবে।

  • কার্টসিঃ মানবজমিন/  ৮ অক্টোবর ২০১৮

তীব্র অর্থ সংকটে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড

ইয়ামিন সাজিদ

তীব্র অর্থ সংকটে পড়েছে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি)। এ সংকটের কারণে বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো থেকে কেনা বিদ্যুতের দাম পরিশোধ করতে পারছে না সংস্থাটি। রেন্টাল, কুইক রেন্টাল, ইনডিপেনডেন্ট পাওয়ার প্রডিউসার (আইপিপি) ও পাবলিক কোম্পানির মালিকানাধীন বিভিন্ন বিদ্যুৎকেন্দ্রের দু-তিন মাসের বিল বকেয়া পড়েছে বিপিডিবির কাছে। বকেয়ার এ পরিমাণ সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকার বেশি বলে বিপিডিবি ও বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্র সূত্রে জানা গেছে।

রেন্টাল, কুইক রেন্টাল, আইপিপি ও পাবলিক কোম্পানির মালিকানাধীন বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো থেকে বিদ্যুৎ কেনে বিপিডিবি। জাতীয় সঞ্চালন গ্রিডের মাধ্যমে এ বিদ্যুৎ তারা বিক্রি করে বিভিন্ন বিতরণ কোম্পানির কাছে। উৎপাদন প্রতিষ্ঠানগুলো বিপিডিবির কাছ থেকে বিদ্যুৎ বিক্রি বাবদ বিল নেয়। সাধারণত এক মাসে যে পরিমাণ বিদ্যুৎ জাতীয় সঞ্চালন গ্রিডের মাধ্যমে বিতরণ কোম্পানিগুলো বিক্রি করে, তার বিল পরের মাসের ১০ তারিখের মধ্যে বিপিডিবিতে দাখিল করে উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো। ১০ থেকে মাসের শেষ তারিখের মধ্যে সংশ্লিষ্ট বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের হিসাবে বিল পাঠায় বিপিডিবি।

বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর সূত্র বলছে, দুই মাস ধরে বিদ্যুৎ দিলেও বিল পাচ্ছে না তারা। জুলাইয়ের বিল এখন পর্যন্ত পরিশোধ হয়নি বলে জানিয়েছে বিভিন্ন কোম্পানি। কিছু কোম্পানিকে বিল দেয়া হলেও অধিকাংশ কোম্পানি এখন পর্যন্ত তাদের বিল পায়নি। জুলাই ও আগস্টের বিদ্যুৎ বিল হিসেবে বিপিডিবির কাছে বিভিন্ন কোম্পানির পাওনা দাঁড়িয়েছে সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকার উপরে। বকেয়া টাকা বেড়ে গেলেও বিদ্যুৎ উৎপাদন অব্যাহত রাখতে হচ্ছে কোম্পানিগুলোকে।

জানতে চাইলে বিপিডিবির চেয়ারম্যান প্রকৌশলী খালেদ মাহমুদ বণিক বার্তাকে বলেন, যে অর্থ সংকট, তা খুব বড় নয়। আমাদের তো বেশি দামে বিদ্যুৎ কিনে গ্রাহকের কাছে কম দামে বিক্রি করতে হয়। এজন্য প্রতি ইউনিটে দেড় টাকার মতো ঘাটতি থাকে। এ টাকাটা সরকার আমাদের বাজেটারি সাপোর্ট হিসেবে দেবে। সেটা পেলেই কোম্পানিগুলোর বকেয়া পরিশোধ হয়ে যাবে।

এদিকে বিদ্যুৎ বিক্রির অর্থ না পেয়ে বিপাকে পড়েছে বেসরকারি উৎপাদন কেন্দ্রগুলো। বিদ্যুৎ বিক্রি থেকে পাওয়া টাকাই তাদের আয়ের উৎস। এ দিয়েই বিদ্যুৎকেন্দ্রের পরিচালন ব্যয় সংকুলান করে প্রতিষ্ঠানগুলো। কিন্তু গত দুই মাসের বিল আটকে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছে তারা।

বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর কর্মকর্তারা বলছেন, বিপিডিবির তারল্য সংকট যদি ক্রমেই বাড়তে থাকে আর বকেয়ার পরিমাণও বড় হতে থাকে, তাহলে এসব কোম্পানিকে দেউলিয়া হতে হবে। কারণ বিপিডিবি ছাড়া বিদ্যুৎ বিক্রির দ্বিতীয় কোনো গ্রাহক নেই তাদের।

দুই মাসের বিল না পাওয়ার কথা স্বীকার করেন বারাকা পাওয়ারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোলাম রাব্বানী চৌধুরী। আরো একাধিক বেসরকারি বিদ্যুৎ কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারাও দুই মাস ধরে বিল না পাওয়ার কথা স্বীকার করেন। এমনকি যেসব বিদ্যুৎকেন্দ্রের ব্যাংকঋণ রয়েছে, ঋণের কিস্তি পরিশোধ নিয়ে দুশ্চিন্তার কথাও জানিয়েছে তারা।

বিদ্যুৎ বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে দেশে উৎপাদনে আছে মোট ১২৩টি বিদ্যুৎকেন্দ্র। এর মধ্যে বিপিডিবির নিজস্ব বিদ্যুৎকেন্দ্রের সংখ্যা ৪১। বাকি ৮২টি রেন্টাল, কুইক রেন্টাল, আইপিপি ও স্মল ইনডিপেনডেন্ট পাওয়ার প্রডিউসার (এসআইপিপি), যেগুলো থেকে বিদ্যুৎ কিনছে বিপিডিবি। এর মধ্যে রেন্টাল ও কুইক রেন্টাল ২৭টি এবং আইপিপি ও এসআইপপি ৪৬টি। এসব বিদ্যুৎকেন্দ্রের ৫৪টিই জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করে ফার্নেস ও ডিজেল অয়েল, যা সবচেয়ে ব্যয়বহুল।

এসব বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ কিনতে বিপিডিবির গড় ব্যয় ৬ টাকা ২৫ পয়সা। কিন্তু বিতরণ কোম্পানিগুলোর কাছে বিক্রি করতে হচ্ছে ৪ টাকা ৮৪ পয়সায়। ফলে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতে বিপিডিবির ঘাটতি থাকছে ১ টাকা ৪১ পয়সা। বিভিন্ন কোম্পানির কাছ থেকে কেনা বিদ্যুতের বিপরীতে প্রতি মাসে এ ঘাটতি দাঁড়ায় ৮০০ থেকে ১ হাজার কোটি টাকা, যা অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে পাওয়া অনুদানে পরিশোধ করে বিপিডিবি।

বিপিডিবির সদস্য (প্রশাসন) ও ভারপ্রাপ্ত সদস্য (অর্থ) জহুরুল ইসলাম বণিক বার্তাকে বলেন, অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে যে অনুদান দেয়া হয়, সে টাকাটা আসতে বিলম্ব হওয়ায় একটু সমস্যা হচ্ছে। টাকাটা পেলেই সমস্যা কেটে যাবে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার কারণে এ সমস্যায় পড়তে হচ্ছে বিপিডিবিকে। এসব কেন্দ্র থেকে বেশি বিদ্যুৎ কিনতে গিয়ে তারল্য সংকটের পাশাপাশি লোকসান বাড়ছে সংস্থাটির। কারণ ডিজেলভিত্তিক প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম গড়ে ২৬ টাকা ও ফার্নেস অয়েলভিত্তিক গড়ে ১১-১২ টাকা, যেখানে গ্যাস ও কয়লাভিত্তিক কেন্দ্রে প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যয় হয় দুই থেকে আড়াই টাকা।

জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. এম শামসুল আলম এ প্রসঙ্গে বণিক বার্তাকে বলেন, পিডিবির যে সংকট, তার জন্য দায়ী মূলত তরল জ্বালানিভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন বেড়ে যাওয়া। নিয়মিত ভর্তুকি না পাওয়াও এর আরো একটি কারণ। এ পরিস্থিতি যদি আরো কয়েক মাস চলে, তাহলে জরিমানাসহ বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর কাছে বিপিডিবির দেনা আরো বাড়বে।

জানা গেছে, গত বছর থেকে এ পর্যন্ত তেলভিত্তিক বেশ কয়েকটি বিদ্যুৎকেন্দ্র উৎপাদন শুরু করায় এবং এসব কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ কেনায় বিপিডিবির ঘাটতি অস্বাভাবিক বেড়ে গেছে। আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম ক্রমেই বাড়তে থাকায় জ্বালানির মূল্য পরিশোধেও চাপ বাড়ছে বিপিডিবির ওপর। সব মিলিয়ে ঘাটতির পরিমাণও বাড়ছে। এছাড়া যেসব বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে এখন বিদ্যুৎ কেনা হচ্ছে, চুক্তির সময় প্রতিযোগিতাপূর্ণ দরকষাকষি না হওয়ায় ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে। উন্মুক্ত পদ্ধতিতে এসব বিদ্যুৎকেন্দ্রের সঙ্গে যদি চুক্তি করা হতো, তাহলে আরো কম দামে বিপিডিবি বিদ্যুৎ কিনতে পারত। ক্রয়-বিক্রয়ের মধ্যকার যে ঘাটতি, তাও কমে আসত তখন।

জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অধ্যাপক ড. ম তামিম বণিক বার্তাকে বলেন, তেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন যখন বেড়ে যায়, তখন এ ধরনের পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। যদিও চাহিদা পূরণে তেলভিত্তিক বিদ্যুৎ ছাড়া উপায় ছিল না। তবে এভাবে ছয় মাস চলতে থাকলে অনেক বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে তরল জ্বালানিভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন কমাতে হবে।

উল্লেখ্য, রেন্টাল ও কুইক রেন্টাল থেকে বিদ্যুৎ কিনে লোকসান গুনছে বিপিডিবি। ব্যক্তিখাতের বিদ্যুৎকেন্দ্রের সংখ্যা বৃদ্ধি ও সরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্র উৎপাদনে না আসার কারণে সংস্থাটির আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ বাড়ছে। প্রতি বছরই গড়ে প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকা লোকসান দিচ্ছে বিপিডিবি।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বিপিডিবিই একমাত্র লোকসানি। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে বিপিডিবির লোকসানের পরিমাণ ৮ হাজার কোটি টাকার বেশি। তার আগের অর্থবছরে এর পরিমাণ ছিল ৪ হাজার ৪৩৪ কোটি, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ৩ হাজার ৮৬৬ কোটি ও ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ৭ হাজার ২৭৬ কোটি টাকা। গত ১০ বছরেই বিপিডিবির লোকসান দাঁড়িয়েছে প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা।
  • কার্টসিঃ বনিক বার্তা/ ০৮ অক্টোবর ২০১৮

দেশে এখন নিয়ন্ত্রিত বিচার ব্যবস্থা

  • সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সেমিনার
  • যে দেশে প্রধান বিচারপতি বিচার পান না সে দেশে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান ন্যায়বিচার পাবেন না - রব 
  • বিচারকরাই এখন আতঙ্কিত - ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী 
  • সাবেক প্রধান বিচারপতি এখন রিফিউজিতে পরিণত হয়েছে - মাহবুব উদ্দিন খোকন
  • ন্যায়বিচার থাকলে খালেদা জিয়াকে জেলে যেতে হতো না - মান্না



নিয়ন্ত্রিত বিচার ব্যবস্থায় বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও  ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ভিন্নমতের কারও ন্যায়বিচার পাওয়ার সম্ভাবনা নেই। যে দেশে প্রধান বিচারপতি বিচার পান না সে দেশে খালেদা জিয়া-তারেক রহমান কেউই বিচার পাবেন না। প্রধান বিচারপতি এবং নিম্ন আদালতের আরেক বিচারপতির দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়ার পর বিচারকদের মধ্যে এখন আতঙ্ক বিরাজ করছে। 


গতকাল রবিবার, ৭ অক্টোবর, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে ‘গণতন্ত্র, আইনের শাসন এবং বিচার বিভাগের স্বাধীনতা’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির উদ্যোগে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেমিনারে ‘গণতন্ত্র, আইনের শাসন ও বিচার বিভাগের স্বাধীনত’ শীর্ষক একটি প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অ্যধাপক ড. বোরহান উদ্দীন খান। 

সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন এবং পরিচালনা করেন  সমিতির সম্পাদক ব্যারিস্টার এএম মাহাবুব উদ্দিন খোকন। 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি ড. এমাজউদ্দীন আহমদ বলেন, বাংলাদেশের মানুষ মুক্তিযুদ্ধের সময় সাহসের পরিচয় দিয়েছে। দেশে এমন কোনো পরিবার পাওয়া যাবে না, যারা এই সরকারের দ্বারা নিপীড়িত হয়নি। যে ঐক্যের ডাক দেয়া হয়েছে, সেই ঐক্য যেন বাস্তবায়ন হয়। চাওয়া পাওয়া পরে দেখা যাবে। নরম সুরে কথা বললে লাভ হবে না। এই সংকট থেকে আমাদের বের হয়ে আসতে হবে।

বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, আওয়ামী লীগ বিগত দিনে সংবিধানকে খন্ড-বিখন্ড করেছিল। আমার ৬৫ বছরের রাজনৈতিক জীবন কখনো দেখিনি ঘটনা ছাড়া মামলা হতে। দেশে বিচারকের স্বাধীনতা নেই, আইনের শাসন নেই। বর্তমান সরকার গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে ফেলেছে। আমরা গণতন্ত্রকে মরতে দিতে পারি না। জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমে এই সরকার পরিবর্তন করে গণতন্ত্র পুনঃ প্রতিষ্ঠা করবো।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন বলেন, রাষ্ট্রপতি চার বিচারপতিকে ডেকে নিয়ে গেলেন, তাদেরকে শিখিয়ে দিলেন। তারা এসে রাষ্ট্রপতির কথা মত বললেন, তোমার সঙ্গে (সুরেন্দ্র কুমার সিনহা) আমরা বিচারে বসবো না। অভিযোগের মামলা দায়ের অভিযোগের আগেই বিচার হয়ে গেলো। সাবেক প্রধান বিচারপতিকে আইনজীবীদের অনৈক্যের কারণে বেরিয়ে যেতে হয়েছে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের সভাপতি আ স ম আব্দুর রব বলেন, বিচারপতি এসকে সিনহাকে বিতাড়িত করায় জাতিকে একটি সঙ্কটে ফেলা হয়েছে। যে দেশে প্রধান বিচারপতি বিচার পায় না সে দেশে বেগম খালেদা জিয়া-তারেক রহমান তো দূরের কথা আমরা কেউ বিচার পাবো না। তিনটি স্তম্ভের একটি প্রশাসন, যেটা এখন পুলিশ কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত। এটি এখন পুলিশি রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। বাকি দুটি স্তম্ভ (বিচার ও আইন) অসহায় হয়ে পড়েছে।

নাগরিক ঐক্যর আহবায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা থাকলে তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে আজ জেলে যেতে হতো না এবং তারেক রহমানের ওপর এই ধরনের নির্যাতন হতো না। আমাদের লড়াই করতে হবে বিচার বিভাগের পরিপূর্ণ স্বাধীনতা ও গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান বিনির্মাণের জন্য।

গণতান্ত্রিক আইনজীবী ফোরামের সভাপতি সুব্রত চৌধুরী বলেন, বর্তমানে দেশে নিয়ন্ত্রিত বিচার ব্যবস্থা চলছে। ১৬ কোটি মানুষ আজ অবরুদ্ধ। দেশের মানুষ আজ কারাগারে। একদিনের জন্য একটা ভোটের মহড়া হয়। এই সরকার ২০০৮ সালে নির্বাচিত হয়েছিল। এখন এই সরকার একটি অনির্বাচিত ও অবৈধ সরকার। 

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাভোকেট জয়নুল আবেদীন বলেন, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় বিচারের নামে যদি প্রহসন করা হয়, তাহলে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি দেশের সকল আইনজীবীকে সঙ্গে নিয়ে শক্তভাবে এর জবাব দেবে। বিচারকদের হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, আমরা কিন্তু পর্যবেক্ষণ করছি, আজকের সেমিনার মহড়া মাত্র। রায় যদি প্রহসনের হয়, তাহলে কালো কোর্টধারীরা বসে থাকবে না। 

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদ বলেন, উচ্চ আদালতের রায়ের মাধ্যমে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বাক স্বাধীনতা হরণ করা হয়েছে। সাবেক প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার বিরুদ্ধে ঘুষের মামলা করেছেন ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা। দুর্নীতির মামলায় যিনি সাজাপ্রাপ্ত। এই সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তি কিভাবে সাবেক প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে মামলা করলেন এমন প্রশ্ন রাখেন তিনি। 

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, দেশে এখন কোনও ন্যায়বিচারের পরিবেশ নেই। বিচারকরাই যেখানে আতঙ্কিত, সেখানে খালেদা জিয়া-তারেক রহমান বা বিরোধী দলের কারও ন্যায়বিচার পাওয়ার অধিকার নেই। 

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন,  সাবেক প্রধান বিচারপতি এখন রিফিউজিতে পরিণত হয়েছেন। আরেক বিচারপতি, যিনি তারেক রহমানকে খালাস দিয়েছিলেন, তিনি মালয়য়েশিয়ায় পালিয়ে গিয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে।
  • কার্টসিঃ দিনকাল/ ০৮ অক্টোবর ২০১৮