Search

Thursday, October 25, 2018

Oikyafront Rally: Cops go after BNP men

250 held in Sylhet in 2 days, over a dozen in Chattogram


Centring yesterday's Jatiya Oikyafront rally, police allegedly picked up over 250 BNP leaders and activists in Sylhet city in the last two days. 

Law enforcers detained around 200 people after the rally at Registrar's Office field in the city's Bandarbazar. BNP chairperson's adviser Khandakar Abdul Muktadir was among them, said Sylhet district BNP President Abul Kaher Shamim. 

He added that police arrested 68 more party leaders and activists on Tuesday night. 

Police yesterday produced the 68 before a Sylhet court showing them arrested in different sabotage cases filed with six police stations in Sylhet metropolitan area. The court sent them to jail.

Asked about the BNP's allegation of detaining its leaders and activists yesterday evening, Golam Kawsar Dastagir, assistant commissioner of Kotwali zone of Sylhet Metropolitan Police, said, “We are picking up some people for questioning.”

BNP men were also arrested in Chattogram and Satkhira.

The law enforcers in Chattogram arrested 14 BNP leaders and activists from a residential hotel in Amtal area on Tuesday night while they were holding a meeting ahead of the next meeting of the Jatiya Oikyafront, the newly floated alliance of the BNP and several other parties, scheduled for Saturday.

The alliance is, however, yet to get the Chattogram Metropolitan Police's permission for holding the rally at the city's Laldighi Maidan. 

Mirsarai upazila BNP joint conveners Shahidul Islam Chowdhury, Manjurul Haque, Md Abdur Rahim, North district BNP's former joint convener Abdul Awal are among the arrestees.

Nirmalendu Bikash Chawkrabarty, additional deputy commissioner (prosecution), said the arrestees were sent to jail after being produced before a court.

According to the statement of the case filed with Kotwali Police Station under the Special Powers Act, police raided Hotel Safina around 8:30pm on Tuesday and arrested the 14 on charges of planning sabotage.

In primary interrogation, the arrestees admitted that they were “hatching a conspiracy to tarnish the image of the government and deteriorate law and order by damaging public properties” as part of their protest for arresting BNP standing committee member Amir Khasru Mahmud Chowdhury and General Secretary of city unit BNP Abul Hashem Bakkar, the case statement said.

Bakkar and eight others, including Mahbubur Rahman Shamim, BNP central organising secretary, were arrested from different parts of the city on Monday.

In Satkhira, police arrested 65 people, 12 of them BNP and Jamaat men, in 24 hours ending 6:00pm yesterday.

Azam Khan, inspector of Satkhira DB police, said the arrestees were wanted in cases filed with different police stations of the district.

Meanwhile, a Cumilla court rejected the bail prayer of Monirul Haque Chowdhury, a member of Jatiya Oikyafront coordination committee and also BNP chairperson's adviser, in an arson case filed in 2015. Eight passengers of a bus were burnt to death after a petrol bomb was hurled at the vehicle in Chauddagram's Jagmohonpur.

Monirul was sent to jail as he appeared before the court with a bail plea after the expiry of his interim bail granted by the High Court, said his lawyer Nazmus Sadat.

He is a BNP nomination seeker in Cumilla-6 and Cumilla-10 constituencies.

Our staff correspondent in Chattogram, our correspondents in Sylhet, Satkhira and Cumilla contributed to this report. 

  • Courtesy: The Daily Star/ Oct 25, 2018

পৃথিবীর সবচেয়ে ব্যয়বহুল বিআরটি লাইন!

তৌফিক আলী

গাজীপুরে চলছে র‌্যাপিড বাস ট্রান্সপোর্ট (বিআরটি)-এর নির্মাণ কাজ। ছবি: এসকে এনামুল হক

কাজে মন্থরগতির আরেকটি প্রকৃষ্ট উদাহরণ তৈরি করলো বিমানবন্দর-গাজীপুর র‌্যাপিড বাস ট্রান্সপোর্ট বা বিআরটি লাইন প্রকল্প। শুধু তাই নয়, প্রকল্প খরচ বৃদ্ধিরও এক নমুনা সৃষ্টি করেছে এটি।

গণপরিবহনকে গতিশীল করতে গাজীপুর ও হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের মধ্যে ২০.৫ কিলোমিটার বিআরটি লাইন প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছিলো ২০১২ সালে। এরপর, একে একে ছয়টি বছর কেটেছে কিন্তু, কাজ হয়েছে মাত্র ২০ শতাংশ। অথচ প্রকল্প শেষ হওয়ার তারিখ দেওয়া হয়েছে চলতি বছরের ডিসেম্বরে।

প্রকল্পের কর্তাব্যক্তিদের মতে, সেই পথে আধুনিক ও দ্রুত বাস পরিষেবা পেতে যাত্রীদের অপেক্ষা করতে হবে আরও ছয় বছর। এর জন্যে খরচ করতে হবে আরও অনেক টাকা। প্রথমে এই প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছিলো ২ হাজার ৪০ কোটি টাকা। ইতোমধ্যে, সেই খরচ দ্বিগুণের বেশি বাড়িয়ে ৪ হাজার ২৬৪ কোটি টাকা করা হয়েছে।

প্রস্তাবিত বিআরটি ব্যবস্থার একজন সাবেক কারিগরি বিশেষজ্ঞ বুয়েটের অধ্যাপক শামসুল হক বলেন, “এর ফলে বিআরটি লাইনের কিলোমিটার প্রতি গড় খরচ পড়ছে ২৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বা প্রায় ২১৮ কোটি টাকা। এটি একেবারেই অবাস্তব একটি প্রকল্পের রূপ নিয়েছে। কেননা, সারাবিশ্বে সেই খরচ সর্বোচ্চ ছয় মিলিয়ন ডলার।”

নিউইয়র্ক-ভিত্তিক ইনন্সিটিউট ফর ট্রান্সপোর্টেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পলিসির ম্যানুয়ালের বরাত দিয়ে তিনি আরও বলেন, বিআরটি সেবার লক্ষ্যই হলো তা সর্বনিম্ন খরচে তৈরি করা হবে। এবং দুই বছরের মধ্যে নির্মাণকাজ শেষ হবে। কেননা, এটি তৈরি করা হয় বিদ্যমান সড়কের ওপর।

“অথচ বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে দেখা যাচ্ছে এটি তৈরি করতে এক যুগের বেশি সময় লেগে যাচ্ছে,” যোগ করেন অধ্যাপক শামসুল হক। তার মতে, এ ধরনের উচ্চ ব্যয় ও ধীর অগ্রগতি সম্পন্ন প্রকল্প একটি অবাস্তব পরিস্থিতির দিকেই এগিয়ে যাচ্ছে।

প্রকল্পের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা জানান, দুর্বল পরিকল্পনা এবং বিআরটি ব্যবস্থার নির্মাণকাজে অনভিজ্ঞতার কারণে প্রকল্প বাস্তবায়নে এমন মন্থরগতি দেখা যাচ্ছে।

অধ্যাপক শামসুল হক বলেন, যাহোক, প্রকল্পটি যখন শেষ হবে তখন দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা এবং পরিবহণ চাহিদা উভয়ই বদলে যাবে। ফলে যে উদ্দেশ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে তা সফল নাও হতে পারে।

তিনি জানান, স্ট্রাটেজিক ট্রান্সপোর্ট প্লানের সুপারিশক্রমে গাজীপুর ও হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের মধ্যে বিআরটি স্কিমটি সরকার হাতে নেয় ২০১২ সালে। জাতীয় মহাসড়কের দুটি প্রধান লেনের ওপর নির্মিতব্য সেই প্রকল্পের সাফল্য দেখে তা বিমানবন্দর থেকে কেরানীগঞ্জ পর্যন্ত বর্ধিত করার চিন্তাভাবনাও রয়েছে।

কিন্তু, প্রকল্পের আংশিক বাস্তবায়নের বর্তমান অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে তা বর্ধিত করার ভাবনাটি অপ্রাসঙ্গিক, মন্তব্য শামসুল হকের।

এদিকে, প্রকল্প পরিচালক সানাউল হকের মতে, দরপত্র, জরিপ ও নকশা চূড়ান্ত করতে দেরি হওয়ায় প্রকল্প বাস্তবায়নে দেরি হচ্ছে।

তিনি জানান, বিআরটি ব্যবস্থা দেশে এই প্রথম বাস্তবায়িত হচ্ছে। পরামর্শক নিয়োগ ও নকশা চূড়ান্ত করতেই চার বছর সময় লেগে গেছে। তিনি বলেন, “আমরা এই প্রকল্পটি বাস্তাবায়ন করছি মহাসড়ক ও আশপাশের সড়কগুলোতে যানবাহন চলাচলে কোনো বিঘ্ন না ঘটিয়েই। এছাড়াও, মহাসড়কটি বছরে ছয়মাস বর্ষার পানিতে ডুবে থাকে। শুধু তাই নয় যথাযথ পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় রাস্তার পাশের কারখানাগুলোর ময়লা রাস্তায় ফেলা হচ্ছে।”

প্রকল্পের খরচ বৃদ্ধির বিষয়টি ব্যাখ্যা করে সানাউল হক বলেন, প্রাথমিক নকশায় যা ছিলো পরে চূড়ান্ত নকশায় তা বাড়ানো হয়। যেমন, প্রাথমিক নকশায় ৫০টি আর্টিকুলেটেড বাস চলাচলের ব্যবস্থা থাকলেও চূড়ান্ত নকশায় তা বাড়িয়ে ১২০টি বাস করা হয়।

কর্মকর্তারা এখন প্রকল্পটি নতুনভাবে সাজিয়ে তা পরিকল্পনা কমিশনে জমা দেওয়ার চিন্তা করছেন। এতে প্রকল্পের বাড়তি খরচের অনুমোদন চাওয়া হচ্ছে। এছাড়াও, প্রকল্প কাজ শেষ করতে ২০২০ সালের জুন মাস ধরা হয়েছে।

কিন্তু, প্রকল্পটির সঙ্গে নিযুক্ত ব্যক্তিরা জানিয়েছেন বিআরটি লাইন-৩ এর কাজ শেষ করতে আরও অনেক বেশি সময় লাগবে।


এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক, ফরাসি উন্নয়ন সংস্থা এবং গ্লোবাল এনভারনমেন্ট ফ্যাসিলিটির ঋণে চারটি প্যাকেজে বিআরটি লাইন-৩ এর কাজ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছ থেকে এক হাজার ৬৫১ কোটি টাকা নেওয়া হবে এবং ৩৮৯ কোটি টাকা নেওয়া হবে জনগণের করের টাকা থেকে।

‘গ্রেটার ঢাকা সাসটেইনেবল আরবান ট্রান্সপোর্ট’- এই শিরোনামে প্যাকেজগুলো যৌথভাবে বাস্তবায়ন করছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ, বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ এবং স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর।

প্যাকেজগুলোর মধ্যে রয়েছে ২৫টি বিআরটি স্টেশন, গাজীপুরে ডিপো, গাজীপুর এবং বিমানবন্দরে দুটি টার্মিনাল, ছয়টি উড়াল সেতু, ৫৬ কিলোমিটার সংযোগ সড়কের উন্নয়ন, ২০.৫ কিলোমিটার ফুটপাতের উন্নয়ন, ২৪ কিলোমিটার পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং ১০টি কাঁচাবাজার নির্মাণ।

সেতু কর্তৃপক্ষের দায়িত্বে রয়েছে উত্তরা থেকে চেরাগ আলী বাজার পর্যন্ত ৪.৫ কিলোমিটার উড়াল সড়ক এবং ১২ লেনের টঙ্গী সেতু নির্মাণ। এই প্যাকেজের প্রকল্প পরিচালক লিয়াকত আলী জানান, তারা এখন টেস্ট পাইলিং, জরিপ, সয়েল টেস্ট এবং যন্ত্রপাতি আনা-নেওয়ার কাজ করছেন।

সড়ক ও জনপথ বিভাগের দায়িত্বে রয়েছে ১৬ কিলোমিটার বিআরটি লেন তৈরি এবং ছয়টি উড়াল সেতু নির্মাণের কাজ এবং স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের দায়িত্বে রয়েছে ডিপো, কাঁচা বাজার এবং সংযোগ সড়কের উন্নয়নের কাজ।

এসব নির্মাণের লক্ষ্য হচ্ছে গাজীপুর, টঙ্গী এবং উত্তরার অধিবাসীরা যেন আধুনিক আর্টিকুলেটেড বাসে চড়ে দ্রুত ঢাকায় আসতে পারেন। প্রকল্প অনুযায়ী প্রতি স্টেশনে তিন থেকে পাঁচ মিনিট পরপর বাস এসে থামবে।

প্রকল্প পরিচালক সানাউল হক বলেন, জয়দেবপুর চৌরাস্তায় ইন্টারচেঞ্জ এবং ভোগরা, আব্দুল্লাহপুর ও বিমানবন্দর মোড়ে উড়ালসেতু যানবাহন চলাচলে গতি আনবে।

যাহোক, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের প্রথম ধাপে বলা হয়েছিল বিমানবন্দর থেকে কেরানীগঞ্জের মধ্যে দ্রুত বাস পরিষেবা শুরু হবে ২০১৩ সালের মধ্যে এবং গাজীপুর ও বিমানবন্দরের মধ্যে সেই পরিষেবা পাওয়া যাবে এর পরের বছর।
  • কার্টসিঃ দ্যা ডেইলি স্টার / আগস্ট ২৯, ২০১৮
  • সূত্রঃ https://bit.ly/2NYS9zT

ব্যাংক ব্যবস্থায় বিশৃঙ্খলার অবসান হোক

রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের পর্ষদের ক্ষমতায় পরিবর্তন


রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংক পরিচালনার মূল দর্শন ছিল জনগণের স্বার্থ রক্ষা করা। কিন্তু বাংলাদেশের রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোয় অনেক দিন ধরে অনিয়ম ও দুর্নীতি চলছে। এখন অনিয়ম এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, বারবার ‘কোরামিন’ দিয়ে এসব প্রতিষ্ঠানকে বাঁচিয়ে রাখতে হচ্ছে। ২০১১ সালে সোনালী ব্যাংকে হলমার্ক কেলেঙ্কারির পর ধারণা করা হয়েছিল কর্তৃপক্ষের বোধোদয় হবে। কিন্তু সেটি যে হয়নি, তার প্রকৃষ্ট প্রমাণ বেসিক ব্যাংকের অর্থ লুটপাট; জনতা, রূপালী ও কৃষি ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি। 

বিভিন্ন সমালোচনার মুখে কয়েকটি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে রদবদল আনা হলেও পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। জনগণের করের টাকায় সরকার বেহাল ব্যাংকগুলোকে অর্থায়ন করলেও লুটপাটের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কার্যকর আইনগত ব্যবস্থা নেয়নি। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক পরিচালনার সঙ্গে যুক্তদের নৈতিকতা নিয়ে প্রায়ই প্রশ্ন উঠছে। দলীয় বিবেচনায় পরিচালনা পর্ষদে নিয়োগ দেয়া ব্যক্তিরা অনেক সময় নিজের স্বার্থসিদ্ধির জন্য বিভিন্ন অনৈতিক সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। নিয়োগ ও বদলির ক্ষেত্রে নিজস্ব লোকদের গুরুত্ব দেয়ার অভিযোগ রয়েছে। 

ব্যাংকে পরিচালক নিয়োগের ক্ষেত্রে ২০০৯ সালের ১২ এপ্রিল জারি করা অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়— অর্থনীতিবিদ, সনদপ্রাপ্ত হিসাববিদ, আর্থিক বাজার, মুদ্রানীতি ও আর্থিক ব্যবস্থাপনা বিষয়ে অভিজ্ঞতা ও দক্ষতাসম্পন্ন ব্যক্তি, সাবেক ব্যাংকার, আইনজ্ঞ, ব্যবসায়ী এবং কমপক্ষে একজন নারী পেশাজীবীকে ব্যাংকের পর্ষদে সদস্য করা হবে। গত ছয় বছরে এ প্রজ্ঞাপন অনুসরণে ব্যত্যয় ঘটেছে। এমনকি সমাজসেবক আখ্যা দিয়ে অনেক রাজনৈতিক নেতাকর্মীকে পর্ষদ সদস্য বানানো হয়েছে। 

রাজনৈতিক বিবেচনায় পরিচালক নিয়োগের বিতর্কিত পথ থেকে সরে আসার সিদ্ধান্ত সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলোয় সুস্থ পরিবেশ সৃষ্টিতে অবদান রাখবে বলে আশা করা হয়েছিল। কিন্তু তাতে সুফল মেলেনি। সার্বিক পরিস্থিতির উন্নয়ন ঘটাতে শুধু রাজনৈতিক বিবেচনায় পরিচালক নিয়োগ বন্ধ করলেই চলবে না, অন্যান্য ক্ষেত্রেও সঠিক পথে এগোতে হবে। সুশাসনের জন্য দক্ষ পরিচালক নিয়োগের পাশাপাশি ব্যবস্থাপনায় উন্নতি ঘটাতে হবে। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোয় শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে পরিচালনা পর্ষদের সদস্যদের কার্যক্রম সুনির্দিষ্টকরণের ব্যবস্থাও নেয়া দরকার। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মালিক দেশের ১৬ কোটি মানুষ। এসব ব্যাংকে আমানত হিসেবে জনগণের যে অর্থ থাকে, তা লুটপাটের কোনো অবকাশ থাকা উচিত নয়। সুব্যবস্থাপনার মাধ্যমে সব রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা সরকারের দায়িত্ব।

রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীর নিচের এক স্তর পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নিয়োগ, পদোন্নতি, বদলি ও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের ক্ষেত্রে পরিচালনা পর্ষদের ক্ষমতা খর্ব করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে বেসরকারি ব্যাংকের ক্ষেত্রে পর্ষদের ওপরই ন্যস্ত থাকবে সেই ক্ষমতা। আগে দেশের সব বাণিজ্যিক ব্যাংকের ক্ষেত্রেই এ নিয়ম চালু ছিল। ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে প্রধান নির্বাহীরা অনেক সময় নিজের মতো প্রশাসন সাজিয়ে যোগসাজশে অন্যায় কাজ করেছেন বলে অভিযোগ আসার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ব্যাংক এ সার্কুলার জারি করেছে। একে ইতিবাচক হিসেবে দেখতে চাই আমরা। এর মাধ্যমে নিয়োগ ও বদলির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের ক্ষমতা কিছুটা হলেও প্রতিষ্ঠিত হলো। এটি সাময়িক ব্যবস্থা। আমরা চাইব রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের তদারকি ও দেখভালের দায়িত্ব সম্পূর্ণভাবে বাংলাদেশ ব্যাংকের হাতে ন্যস্ত করা হবে। 

এজন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকা ব্যাংকিং ডিভিশন বিলুপ্ত করতে হবে। এর মাধ্যমে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকে কিছুটা হলেও শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠিত হবে বলে প্রত্যাশা করা যায়। একই সঙ্গে ব্যাংকিং কমিশন গঠন করে রাষ্ট্রায়ত্তসহ পুরো ব্যাংকিং খাতের মূল্যায়ন ও ত্রুটি চিহ্নিতপূর্বক সংস্কারের উদ্যোগও নিতে হবে। সর্বোপরি ব্যাংকিং খাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় কোনো ছাড় দেয়া যাবে না। নিয়োগ, পদোন্নতি, ঋণ প্রদান প্রভৃতি বিষয় বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দিষ্ট গাইডলাইন মেনে চললে দুর্নীতি ও অনিয়মের সংখ্যা কমে আসবে। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের ক্ষমতার রাশ টেনে ধরার মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংক যে শুভ উদ্যোগ নিয়েছে, তার ধারাবাহিকতায় আরো পদক্ষেপ নেয়া হবে বলে আমাদের প্রত্যাশা। তদারকির মাধ্যমে এর প্রয়োগও নিশ্চিত করতে হবে।
  • কার্টসিঃ বনিক বার্তা/ ২৪ অক্টোবর ২০১৮

সংসদ ভেঙে দিয়ে নির্বাচন সংবিধানে রয়েছে: ড. শাহদীন মালিক


সংসদ ভেঙে দিয়ে নির্বাচন করার বিষয়টি সংবিধানে রয়েছে বলে জানিয়েছেন বিশিষ্ট আইনজ্ঞ ড. শাহদীন মালিক। নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে তিনি বলেন, বিএনপিসহ অনেকেই বলেন সংসদ ভেঙে দিয়ে নির্বাচন দেয়ার জন্য। কিন্তু তারা এটা কেন বলছেন না, সংবিধানের ১২৩ এর ৩(খ) অনুচ্ছেদে বলা আছে- সংসদ ভেঙে দিয়ে নির্বাচন করা যাবে। সংসদ ভেঙে দেয়ার দাবিটা উদ্ভট দাবি নয়। ওনারা যদি এতোদিন এই অনুচ্ছেদের কথা উল্লেখ করে সংসদ ভেঙে দিয়ে নির্বাচন দেয়ার দাবি তুলতেন তাহলে এটি জনগণের কাছে অনেক যৌক্তিক মনে হতো।

মঙ্গলবার রোকসানা আনজুমান নিকোলের সঞ্চালনায় যমুনা টেলিভিশনের টকশো ‘রাজনীতি’তে অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন তিনি। আলোচনার বিষয় ছিলো: ‘কেমন সরকারে নির্বাচন?’

এসময় ড. শাহদীন মালিক আরো বলেন, সবকিছু সংবিধানে লেখা থাকবে না। নির্বাচন কমিশন ও নির্বাচন নিয়ে সংবিধানে মাত্র ৯টা অনুচ্ছেদ আছে। দুই পৃষ্ঠার মতো। যুক্তরাষ্ট্রে আছে ৭টি ধারা। ১৫ পৃষ্ঠা। অর্থাৎ মূল দাগে বড় কিছু লেখা আছে। আপনি যেটা করতে চাইবেন সেটা ওভাবে করতে হবে।

তিনি বলেন, সংসদ ভেঙে দিলে স্বাভাবিকভাবে ওই সময় যে সরকার ছিলো সেটি না থাকাটাই স্বাভাবিক। অন্যান্য দেশে যেখানে সংসদীয় গণতন্ত্র রয়েছে সেখানে প্রথা রয়েছে সংসদ ভেঙে দেয়া হয়। একটি অন্তর্বতীকালীন সরকার থাকে। আর ওই সরকার বড় বড় কোনো কাজ করবে না।

জানতে চাইলে ১২৩ এর ৩ (ক) এবং (খ) অনুচ্ছেদ নিয়ে ড. শাহদীন মালিক আরো বলেন, সংবিধানে দুইটা বিকল্প আছে। সংবিধানে ১২৩ (ক) অনুচ্ছেদে বলা আছে, সংসদ রেখে নির্বাচন করা যাবে । ১২৩ (খ) অনুচ্ছেদে বলা আছে – সংসদ ভেঙে নির্বাচন করা যাবে। সরকার বলছে সংসদ রেখে নির্বাচন করবে। অন্যরা বিকল্পটা চাচ্ছে। অন্যান্যা সংসদীয় গণতন্ত্রের দেশে সংসদ ভেঙে দেয়া হয়।

নির্বাচনকালীন সরকারের মন্ত্রীসভার আকার নিয়ে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী যতজন নির্ধারণ করবেন ততজন থাকবেন। এখন ধরেন ৬০ জন আছে। প্রধানমন্ত্রী চাইলে ১০০ জন করতে পারেন। আইনগত কোনো বাঁধা নেই এবং সেটা সংবিধান সম্মত। তবে প্রথা হলো-বাড়িয়ে নয় কমিয়ে দেবেন। ১২৬ অনুচ্ছেদে নির্বাচন কমিশনের অনেক ক্ষমতা আছে। কমিশন তার ক্ষমতাগুলো প্রয়োগ করবে। সেক্ষেত্রে বিরোধীদের সব দাবি পূরণ হবে না কিন্তু নির্বাচনের জন্য সহনীয় লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি হবে।

নির্বাচনকালীন সরকারের মন্ত্রীরা কী কী করতে পারবেন আর কী কী করতে পারবেন না জানতে চাইলে ড. শাহদীন মালিক বলেন, সংবিধান তো উচুস্তরের মানুষদের জন্য। তাদের কাছে সাধারণ মানুষের একটা স্বাভাবিক প্রত্যাশা আছে। একজন মন্ত্রীর এমন আচরণ করা উচিত না যাতে তার বিরোধী যিনি মন্ত্রী না তিনি আসম অবস্থানে থাকেন। নিরাপত্তারটা ঠিক আছে। কারণ মন্ত্রী হিসেবে আমার জীবনের ঝুঁকি বেশি থাকতে পারে। এর বাইরে তাদের কোনো ধরনের সুযোগ-সুবিধা ব্যবহার করা উচিত না।
  • কার্টসিঃ যুগান্তর/ ২৪ অক্টোবর ২০১৮
  • লিঙ্ক - https://goo.gl/x2nJcs

Wednesday, October 24, 2018

US$ price in local kerb market goes up

Siddique Islam

Exchange rate of cash US dollar against the local currency in the banking channel and also in the open market, known as kerb market, has increased by around Tk 1.0 in a week, traders said. The US currency rate reached Tk 86.70 on Tuesday, as the demand for the greenback has gone up lately. It was Tk 85.70-85.80 last week, they added.

Cash US dollar was quoted at rates ranging between Tk 84.50 and Tk 86.80 each by some banks on the day, according to the central bank's latest monitoring report.

"The demand-supply mismatch of the US dollar in the market is the main cause behind the rising trend of cash dollar rates," a senior currency trader told the FE.

He also said cash dollar is mainly used for medical treatment, education and business purposes.

"Tourists also buy cash dollar in an increased amount ahead of the long vacations like Eid etc," the trader added.

Some senior bankers feared that the country's remittance inflow through formal channel may be affected in the near future, if the ongoing upward trend of cash US dollar exchange rate continues in the market.

Currently, there is a gap of nearly Tk 4.0 between the exchange rate of cash dollar and telegraphic transfer (TT) clean rate for remitters.

The banks offered an average rate of Tk 82. 87 to the remitters for TT on Tuesday, according to the daily report of Bangladesh Foreign Exchange Dealers' Association (BAFEDA).

"The inward remittance flow may switch to informal channels from official ones, if the gap continues over long-term," a senior official of a leading private commercial bank (PCB) told the FE.

He also urged the policy-makers for taking effective measures to minimise the gap between the two rates for ensuring the existing upward trend in inward remittance flow in the coming months.

The central bank has already strengthened its monitoring and supervision to bring down the exchange rate of cash US dollar at a reasonable level.

"We've been informed about the high rate of cash dollar in the market," a senior official of Bangladesh Bank (BB) told the FE.

He also said BB may consider import of cash US dollar to meet the growing demand for the greenback in the market.

Sources, however, said the rate of cash US dollar normally increases in the market when illegal transactions like smuggling and under-invoicing go up.

The existing exchange rate of cash dollar in the open market indicates that some developments like those are taking place in the shady economy ahead of the general election, they opined.

The greenback was traded in the open market in the capital at prices between Tk 86.50 and Tk 86.70 on the day, according to the traders.

  • Courtesy: The Financial Express /Oct 24, 2018

‘Nagad’ postal MFS upsets private operators

Uneven competition, rise in financial crimes feared

Mehdi Musharraf Bhuiyan

The recent introduction of a digital financial service scheme by Bangladesh Post Office (BPO) has raised concerns among relevant parties and industry insiders. The Bangladesh Post Office early this week introduced its own digital financial service called 'Nagad' on a test basis to reach out to the unbanked population of the country.

But the new service, with its increased transactions limit, may create uneven competition in the market while increasing the scope for money laundering and terrorist financing, insiders fear.

Under the planned scheme, a customer of Nagad will be able to cash in or cash out Tk. 50,000 in a single transaction and maximum Tk. 250,000 via 10 transactions per day.

This comes at odd with other mobile financial service providers in the market, who, as per the mobile financial services (MFS) regulations, can cash in a maximum of Tk. 15,000 via two transactions and cash out a maximum of Tk. 10,000 via same number of transactions a day.

The reason behind this discrimination, however, is that all other MFS operators, which are regulated by Bangladesh Bank, is bound by the transaction limit set by the central bank.

BPO officials say Nagad, being a product of Bangladesh Post Office, will be regulated under the "Bangladesh Postal Act Amendment 2010" and will not come under the purview of these MFS regulations.

Insiders, however, cautioned that the forthcoming service, which does not fall under the purview of the central bank's monitoring and supervision, is prone to be used as a platform of extortion, money laundering, terrorist financing and illegal hundi business due to the lack of regulatory monitoring and oversight.

Post Office said with its long-drawn experience in handling financial transactions, it is well-equipped to tackle any misuse that may arise from Nagad.

"We've been providing financial transaction services like money order for more than a century without any major instance of financial crimes," said director general of Bangladesh Post Office Sushanta Kumar Mandal.

Unlike the MFS regulations 2018, the Post Office does not have any clear regulatory guideline on how to monitor and supervise the transactions of a digital platform, as such risking a variety of misuse of the system, they also pointed out.

In August, BPO sought formal approval from Bangladesh Bank to operationalise its digital payment platform.

However, their application was later rejected by the central bank. Consequently, BPO decided to go on its own as per its relevant act.

"We did not give our approval for Nagad. However, if it is found that there are loopholes in this system, the authorities will act accordingly," said Md. Serajul Islam, executive director of Bangladesh Bank.

Industry insiders warned that Nagad's apparent advantage in terms of transaction limit might create uneven competition and distort the level-playing field in the MFS market.

For the last eight years, Bangladesh Bank, different government agencies and service providers have been working diligently on bringing discipline and order in the mobile financial service industry, said Shamsuddin Haider Dalim, Head of  Corporate Communications of bKash, the leading MFS provider of the country.

"It requires an even-playing field for a healthy competition …," he added.

"The system has not fully gone into operations yet. But the authorities need to scrutinise thoroughly whether it has a strong risk mitigation plan before it launches full-scale operations," said a high official of Bangladesh Financial Intelligence Unit (BFIU), preferring anonymity.

"Central bank is the regulatory body of all payment system in a country," said former Bangladesh Bank governor Dr. Atiur Rahman, when asked on the issue.

"Therefore, no payment system should be introduced in the country without the approval of Bangladesh Bank," he told the FE.

Bangladesh has seen a proliferation of mobile financial services in recent years mainly due to limited banking presence in rural areas.

The present number of registered clients of mobile financial services is roughly 64.7 million, served by 18 banks, the BB data shows.

A total of 195,343,990 transactions took place through MFS platforms in August alone and the total value of transactions was Tk. 343.99 billion.

  • Courtesy: The Financial Express /Oct 24, 2018

রাজনৈতিক মিটিং, মিছিল কি অপরাধ - ড. কামাল


সিলেটে আজ ২৪ অক্টোবর দুপুর ২ টায় সমাবেশ করবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। কিছুক্ষণ আগে দ্য ডেইলি স্টার অনলাইনকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন।

ড. কামাল গতকাল থেকে সিলেটে অবস্থান করছেন। ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের প্রায় সবাই ইতোমধ্যে সিলেটে এসে পৌঁছেছেন। সমাবেশের আগে সিলেটের পরিস্থিতি কেমন দেখছেন, এ প্রশ্নের উত্তরে টেলিফোনে ড. কামাল হোসেন বলেন, “এ বিষয়টি জানতেই সকাল থেকে গণফোরামের নেতাদের সঙ্গে বসেছি। তারা আমাকে জানিয়েছেন, কয়েক জায়গায় কর্মীদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কিন্তু কথা হচ্ছে যে, রাষ্ট্র তো সংবিধান অনুযায়ী পরিচালনা হওয়ার কথা। সেক্ষেত্রে যাদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে, তাদের অপরাধ কি? রাজনৈতিক সমাবেশ, মিছিল ও প্রচার কি অপরাধ?”

তিনি আরও বলেন, “কেউ সংবিধান মানছে না। কিন্তু, সংবিধানের ব্যাপারে আমাদের সবার শ্রদ্ধা থাকা উচিত। পুলিশ যদি বলেও যে, উপর মহলের আদেশেই এসব গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। সেক্ষেত্রেও তা আইনসম্মত হতে হবে।”

ড. কামাল আরও বলেন, “আমরা সিলেটে সরকারের সমালোচনা করার জন্য আসিনি। গণতন্ত্র, আইনের শাসন এবং অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কেনো দরকার, সে সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করার জন্য এসেছি। দেশের সকল নাগরিক এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের জন্যও এসব জানা প্রয়োজন। সরকার যদি এসব চর্চা না করে, তাহলে তাদেরই বিপদ।”
  • Courtesy: The Daily Star /Bangla /Oct 24, 2018

আইন সবার জন্য সমান হবে না কেন?

সম্পাদকীয়

ফৌজদারি মামলা

সরকারি কর্মচারীদের গ্রেপ্তারের আগে সরকার তথা ওই কর্মচারীর নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের অনুমতি লাগবে—এ রকম বিধান রেখে গত রোববার ‘সরকারি চাকরি বিল ২০১৮’ শীর্ষক যে বিলটি জাতীয় সংসদে উত্থাপন করা হয়েছে, আমরা মনে করি তা ন্যায়বিচারের পরিপন্থী। কেননা, সংবিধানের ২৯(৩) অনুচ্ছেদে বলা আছে, ‘কেবল ধর্ম, গোষ্ঠী, বর্ণ, নারী-পুরুষভেদে বা জন্মস্থানের কারণে কোনো নাগরিক প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োগ বা পদলাভের অযোগ্য হইবেন না, কিংবা সেই ক্ষেত্রে তাঁহার প্রতি বৈষম্য প্রদর্শন করা যাইবে না।’ অন্যদিকে সমাজের অনগ্রসর অংশের ক্ষেত্রে যে বিশেষ সুবিধা দেওয়ার কথা সংবিধানে আছে, তা কোনোভাবে সরকারি কর্মচারীদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হতে পারে না। তাঁরা সমাজের অনগ্রসর অংশ নন। এ আইনটি কার্যকর হলে দুর্নীতি দমন কমিশন শুধু নখদন্তহীন বাঘেই পরিণত হবে না, এ-সংক্রান্ত আইনগুলোও সম্পূর্ণ অকেজো হয়ে পড়বে।

তবে এই বিলে সরকারি কর্মচারীদের মেধা ও উন্মুক্ত প্রতিযোগিতার মাধ্যমে নিয়োগ এবং সেবাপ্রার্থীদের সেবাদানে সরকারি কর্মচারীরা ব্যর্থ হলে যুক্তিসংগত সময়ের মধ্যে তাদের জবাবদিহির যে প্রস্তাব করা হয়েছে, সেটি সমর্থনযোগ্য বলে মনে করি।

উল্লিখিত বিলটি এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে, যাতে ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত সরকারি কর্মচারী যেই সুবিধা পাবেন, বাইরের কোনো ব্যক্তি এমনকি জনপ্রতিনিধিও সেই সুযোগ পাবেন না। আইন প্রয়োগকারী সংস্থা চাইলেই তাঁকে গ্রেপ্তার করতে পারবে। এর মাধ্যমে সরকারি কর্মচারীদের একধরনের দায়মুক্তি দেওয়া হয়েছে, যা শুধু বৈষম্যপূর্ণ নয়, সংবিধানের মৌলিক চেতনারও বিরোধী।

উল্লেখ্য, ১৯৬৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারা অনুযায়ী দুদক অনুসন্ধান ও তদন্ত পর্যায়েও যে কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারে। ২০০৪ সালের দুর্নীতি দমন কমিশন আইনের ৫ ধারায়ও এ বিধান বলবৎ রাখা হয়েছিল। স্বভাবতই প্রশ্ন আসে, এত দিন পর সেটি পরিবর্তন করার প্রয়োজন পড়ল কেন?

প্রস্তাবিত বিলটি কার্যকর হলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কোনো সরকারি কর্মকর্তা বা কর্মচারীকে যদি হাতেনাতে ধরে ফেলে, তারপরও তারা তাঁকে গ্রেপ্তার করতে পারবে না, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতির জন্য অপেক্ষা করতে হবে। সরকারি কর্মচারীদের এই ছাড় দেওয়ার কোনো যুক্তি আছে বলে মনে করি না। কেননা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে সরকারি কর্মচারী বা অকর্মচারী হিসেবে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না, তাঁকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে অভিযুক্ত হিসেবে। অন্যান্য অভিযুক্ত যেমন আইনি লড়াইয়ের মাধ্যমে নিজেদের নির্দোষ প্রমাণ করবেন, সরকারি কর্মচারীদের জন্য সেই সুযোগ থাকবে। এখানে বিচারের আগেই কেউ দায়মুক্তি পেতে পারেন না।

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) ও আইন ও সালিশ কেন্দ্র প্রস্তাবিত আইনটি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। যখন আইনটির খসড়া মন্ত্রিসভা অনুমোদন করে, তখন আমরাও এর প্রতিবাদ জানিয়েছি। প্রস্তাবিত আইনে বলা হয়েছে, ‘কোনো কর্মচারী ফৌজদারি অপরাধের কারণে দণ্ডিত হলে রাষ্ট্রপতি যদি এই মর্মে সন্তুষ্ট হন যে আদালত কর্তৃক কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ও চাকরি থেকে বরখাস্ত বা অপসারণকৃত ব্যক্তিকে অনুরূপ বরখাস্ত বা অপসারণ থেকে অব্যাহতি প্রদানের বিশেষ কারণ বা পরিস্থিতি রয়েছে, তাহলে তিনি ওই ব্যক্তিকে ওই শাস্তি থেকে অব্যাহতি প্রদান করতে পারবেন। সে ক্ষেত্রে ওই কর্মচারী পুনরায় চাকরিতে বহাল হবেন।’ এর মাধ্যমে কেবল অভিযুক্ত কর্মচারীই নন, দণ্ডিত সরকারি কর্মচারীও দায়মুক্তি পাবেন, যা আইনের দৃষ্টিতে গ্রহণযোগ্য নয়। যে আইন সবাইকে সমান সুযোগ দেয় না, সেই আইন কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।
  • কার্টসিঃ প্রথম আলো/ ২৪ অক্টোবর ২০১৮

সিলেটে ঐক্যফ্রন্টের প্রথম সমাবেশ আজ

  • সমাবেশ সফল করতে ঐক্যফ্রন্টের প্রচারপত্র বিলি
  • সমাবেশে সাধারণ মানুষের ঢল নামবে বলে আশা
  • ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির নেতারা সিলেটে 



নতুন রাজনৈতিক জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট আজ বুধবার প্রথম সমাবেশ করছে সিলেটে। বেলা দুইটায় নগরের তালতলার রেজিস্টারি মাঠের এ সমাবেশে যোগ দিতে গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে ড. কামাল হোসেনসহ ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির নেতারা সিলেটে পৌঁছেছেন।

এদিকে রাতে জেলা বিএনপির সভাপতির বাসায় প্রস্তুতি সভা করে বের হওয়ার পর নগর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক শাহরিয়ার হোসেন চৌধুরীকে পুলিশের গাড়িতে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। এ ছাড়া শাহজালাল উপশহরের একটি হোটেলের সামনে থেকে বিএনপির আটজন কর্মীকে আটক করে পুলিশ।

আজকের সমাবেশ সফল করতে গতকাল সকালে ও দুপুরে নগরে ঐক্যফ্রন্টের প্রচারপত্র বিলি করেন সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীসহ বিএনপির নেতারা। আরিফুল হক চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘সমাবেশে অংশ নিতে কোনো ধরনের বাধা না দিলে দলীয় কর্মী–সমর্থক ছাড়াও সাধারণ মানুষের ঢল নামবে বলে আশা করছি।’

গতকাল বিকেলে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসে সিলেটে পৌঁছান গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন, বিএনপি নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, বরকতউল্লা বুলু, মোহাম্মদ শাহজাহান, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা জাফরুল্লাহ চৌধুরী, গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টু, নির্বাহী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী এবং সুলতান মোহাম্মদ মনসুর। বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিতে এই সমাবেশ। এটা জনগণের দাবি, জনগণ সমর্থন এসেই দিয়ে যাবে। দাবি আদায়ে পরবর্তী কর্মসূচি বুধবারের সমাবেশ থেকে ঘোষণা করা হবে।’

ড. কামাল হোসেন এশার নামাজের পর হজরত শাহজালাল (রহ.)–এর মাজার জিয়ারত করেন। তাঁর সঙ্গে ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতারা ছিলেন।

রাতে জেলা বিএনপির সভাপতি আবুল কাহের চৌধুরী বলেন, তাঁর সোবহানীঘাটের বাসায় নেতা-কর্মীরা প্রস্তুতি সভা করছিলেন। পুলিশ বাসা ঘিরে রাখে। রাত পৌনে নয়টার দিকে ওই বাসা থেকে বের হলে শাহরিয়ার হোসেন চৌধুরীকে পুলিশ গাড়িতে তুলে নিয়ে যায়। প্রায় একই সময়ে শাহজালাল উপশহরের একটি হোটেলের সামনে থেকে আটজনকে আটক করে পুলিশ।

শাহরিয়ারকে পুলিশ নিয়ে যাওয়ার সময় নগর পুলিশের উপকমিশনার আজবাহার শেখ প্রথম আলোকে বলেন, ‘উনি অসুস্থ, তাই নিয়ে যাচ্ছি।’

প্রচারপত্র বিলি করতে মাঠে থাকবে আওয়ামী লীগ 

আজ বেলা ১১টায় কোর্ট পয়েন্ট থেকে নগর আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের প্রচারপত্র বিলি করবে। মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিন আহমদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘রেজিস্টারি মাঠ ও কোর্ট পয়েন্ট পাশাপাশি হলেও ঐক্যফ্রন্টের সমাবেশ শুরু হবে বেলা দুইটায়। আর আমরা প্রচারপত্র বিলি করতে মাঠে থাকব বেলা ১১টা থেকে। তাঁদের সমাবেশ শুরুর আগেই আমাদের কর্মসূচি শেষ হবে বলে কোনো ধরনের দ্বন্দ্বের অবকাশ নেই।’

চট্টগ্রামে সমাবেশের অনুমতি মেলেনি 

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম জানান, চট্টগ্রামে বিভাগীয় মহাসমাবেশ করার জন্য লালদীঘি মাঠ ব্যবহারের অনুমতি গতকালও পায়নি জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। গতকাল ঐক্যফ্রন্টের কয়েকজন নেতা–কর্মী মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. মাহবুবর রহমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে অনুমতির বিষয়ে আলোচনা করেন।

রাজশাহীর সমাবেশ পেছাতে পারে

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী জানান, আগামী ২ নভেম্বর রাজশাহীতে অনুষ্ঠেয় জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সমাবেশ পেছাতে পারে বলে জানিয়েছেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু। তিনি গতকাল বলেন, লিয়াজোঁ কমিটি সমাবেশের জন্য রাজশাহী মাদ্রাসা মাঠের কথা প্রস্তাব করেছে। তবে ১ থেকে ৩ নভেম্বর ওই মাঠে ইজতেমা হওয়ার কথা রয়েছে। ফলে সমাবেশ পেছানোর সম্ভাবনা বেশি। সমাবেশের সম্ভাব্য তারিখ ৬ নভেম্বর হতে পারে।
  • কার্টসিঃ প্রথম আলো/ ২৪ অক্টোবর ২০১৮

চার–চারটি লাশ! পুলিশের তেমন মাথাব্যথা নেই

গোলাম মর্তুজা ও মজিবুল হক

  • চারজনের কারও বিরুদ্ধে থানায় মামলা থাকার তথ্য পুলিশ জানাতে পারেনি
  • নিহত চারজনের ব্যাপারে পুলিশ এখন পর্যন্ত তেমন কিছুই বলছে না
  • হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে অনুসন্ধানের আগ্রহ কম পুলিশের 
  • সূত্র বলছে, পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে, চার ব্যক্তি ক্রসফায়ারের শিকার


ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক সংলগ্ন পুরিন্দা গ্রামের বেশির ভাগ মানুষ কাপড় তৈরি ও ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। প্রায় সবাই নিজের বাড়িতে থাকেন। শুধু ১১ অক্টোবর ওই গ্রামের পশ্চিম পাড়ায় আয়নাল হাজির বাড়ির দোতলায় ভাড়াটে হিসেবে ওঠে একটি পরিবার। পরিবারটির কর্তা ফারুক হোসেন নিজেকে ‘নাইট কোচে’র চালক বলে পরিচয় দেন। 

গত শুক্রবার সন্ধ্যায় গ্রামের মানুষের সামনেই ফারুক হোসেনসহ চারজনকে চোখ বেঁধে, হাতকড়া পরিয়ে ধরে নিয়ে যায় একদল লোক। ‘আপনারা কারা, কেন ওদের নিয়ে যাচ্ছেন’—উৎসাহী কেউ কেউ এ রকম প্রশ্ন করে ধমক খেয়েছেন। ওই লোকগুলো নিজেদের ‘আইনের লোক’ ও ‘ডিবি’র লোক বলে পরিচয় দেন।

ওই বাসা থেকে সেদিন ধরে নিয়ে যাওয়া হয় ফারুক, সবুজ সরদার, জহিরুল ও লিটন নামের চারজনকে। দুদিন পরে গ্রামের মানুষ দুই কিলোমিটার দূরে রাস্তার ধারে চারজনের গুলিবিদ্ধ লাশ দেখতে পান। চার লাশের মধ্যে তিনজনকে পুরিন্দা থেকে ধরে নেওয়া হয়। আর সেখানে পাওয়া আরেকটি লাশ ঢাকার মাইক্রোবাস চালক লুৎফর রহমান মোল্লার। ফারুকের সঙ্গে নিয়ে যাওয়া লিটনের এখনো কোনো খোঁজ নেই।

নিহত চারজনের ব্যাপারে পুলিশ এখন পর্যন্ত তেমন কিছুই বলছে না। কীভাবে তাঁরা হত্যাকাণ্ডের শিকার হলেন, কারা খুন করল, এ ব্যাপারে অনুসন্ধানের আগ্রহও কম পুলিশের। তবে পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক সূত্র বলছে, পুরো পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে, চার ব্যক্তি ‘ক্রসফায়ার’এর শিকার। পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেছেন, এরা মহাসড়কে ডাকাতির সঙ্গে জড়িত ছিল। তবে চারজনের কারও বিরুদ্ধে থানায় মামলা থাকার তথ্য পুলিশ জানাতে পারেনি।

পুলিশের বিরুদ্ধে ধরে নিয়ে মেরে ফেলার অভিযোগ উঠলেও, তা ঠিক নয় বলে দাবি করেছেন নারায়ণগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, নিহতের পরিবার মিথ্যা অভিযোগ করছে। ডিবি পুলিশ সেখানো কোনো অভিযান চালায়নি। তাদের আটকও করা হয়নি।

ফারুক যে বাড়িতে ভাড়া ছিলেন তার ঠিক সামনেই পুরিন্দা পশ্চিমপাড়া আহলে হাদিস মসজিদ। মাগরিবের নামাজ পড়তে শুক্রবার বিকেলে মসজিদে আসা মুসল্লিদের অনেকেই দেখেছেন গেঞ্জি-প্যান্ট পরা একদল লোক বাড়ির বাইরে দাঁড়িয়ে আছে। আর ৩০ গজ দূরে মহাসড়কের ওপর একটি নোয়া মাইক্রোবাসসহ একাধিক গাড়ি দাঁড়ানো। কিছুক্ষণ পরই ওই বাড়ি থেকে চোখ বেঁধে চারজনকে ধরে নেওয়া হয়। দুজনকে হাতকড়া পরানো হয়েছিল। অন্য দুজনের হাত খোলা ছিল।

যে বাড়ি থেকে চারজনকে তুলে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটে, সেই বাড়িটি এখন তালাবদ্ধ। গতকাল সকালে দেখা গেল, কয়েকটি শিশু সেখানে খেলছে। বাড়ির লোক কোথায় জিজ্ঞেস করতেই এক শিশু বলল, ‘পুলিশে ধইরা নিয়া মাইরা ফালাইছে।’

পুরিন্দা পশ্চিমপাড়া মসজিদের পাশেই কাজল মিয়ার মুদির দোকান। তিনি বলেন, সেদিন মাগরিবের নামাজের আগেই গ্রামের নতুন ভাড়াটে ফারুক এসে তাঁর দোকান থেকে লবন কিনে নিয়ে যান। কাজলের দোকানে ফারুকের বিষয়ে কথা বলত বলতেই জড়ো হন বেশ কয়েকজন। তাঁদের একজন আবু সাঈদ বলেন, এই গ্রামে মানুষ ঘর ভাড়া দেয় না। আয়নাল হাজীর পরিবার নরসিংদীর মাধবদীতে থাকে। তাঁর বাড়িতে ১২ দিন আগে ভাড়ায় ওঠে একটি পরিবার। সাঈদের সঙ্গে একদিন ফারুকের দেখাও হয়েছিল। তখন ফারুক বলেছিলেন, তিনি ঢাকা-কক্সবাজার পথে বাস চালান, বেশির ভাগ সময়ই রাতে কাজে যেতে হয়। প্রতিবেশী হিসেবে সাঈদকে কক্সবাজার নিয়ে যেতে চেয়েছিলেন ফারুক।

ওই বাড়ির পাশের বাড়ির বাসিন্দা আলী হোসেন বলেন, সন্ধ্যায় ধরে নেওয়ার খবর শুনে তিনি গিয়ে দেখেন ফারুকের স্ত্রী চিৎকার করে কাঁদছেন। মুঠোফোনে অন্যদের নিজের স্বামীর ছবি দেখাচ্ছেন। গ্রামবাসীর সামনে ধরে নেওয়া হলেও কেউ আইনি ঝামেলায় জড়াতে চান না বলে ভয়ে এগোননি। এরপর রোববার তাঁরা জানতে পারেন তিন কিলোমিটার দূরে পাঁচরুখী এলাকায় যে চারটি লাশ পাওয়া গেছে, তাদের মধ্যে তিনজনকে এই বাড়ি থেকে ধরে নেওয়া হয়।

এদিকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে পাঁচরুখী বলে যে স্থানে চারজনের লাশ পাওয়া যায় তার দুপাশে পুলিশের দুটি তল্লাশি চৌকি (চেকপোস্ট) ছিল। লাশ পাওয়ার স্থান থেকে নরসিংদীমুখী সড়কে আধা কিলোমিটার গেলেই ছনপাড়া স্থায়ী তল্লাশি চৌকি। আর ঘটনাস্থল থেকে ঢাকামুখী সড়কে এক কিলোমিটার গেলেই আদুরিয়া তল্লাশি চৌকি। দুই তল্লাশি চৌকির মাঝামাঝি জায়গায় এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে।

পাঁচরুখী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে ছোলা-পুরির দোকান করেন রিয়াজউদ্দীন। তিনি গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, সেদিন ফজরের নামাজের আগে অনেকেই পরপর আট–নয়টি গুলির শব্দ শুনেছেন। তবে মহাসড়কের পাশে বাড়ি হওয়ায় অনেক রকম শব্দ পাওয়া যায় বলে এ নিয়ে কেউ বিশেষ মাথা ঘামায়নি। সকালে উঠে তাঁরা লাশ পাওয়ার খবর শোনেন।

ফারুকের মৃত্যুর পর স্ত্রী তাসলিমা বেগম এক বছরের ছেলেকে নিয়ে বোনের বাসায় গিয়ে উঠেছেন। গতকাল তিনি প্রথম আলোর কাছে দাবি করেন, লাশের পাশ থেকে পুলিশ যে নোয়া মাইক্রোবাসটি উদ্ধার দেখিয়েছে, সেটিতে করেই শুক্রবার সন্ধ্যায় তাঁদের ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তাসলিমা বলেন, তিনি লিখতে-পড়তে জানেন না বলে গাড়ির নম্বর পড়তে পারেননি। তবে রঙ ও অন্যান্য বৈশিষ্ট দেখে তিনি এই গাড়িটিকে শনাক্ত করতে পেরেছেন। গতকালও তিনি বলেন, ‘রাইতে আমি খাওন দিয়া আইলাম, পুলিশে কইলো সকালে কোর্টে চালান দিবো। এই জন্য সকাল ৭টা বাজে গিয়া দেখি হ্যারা ফাঁড়িতে নাই। তয় ফাঁড়িতে হ্যার ভাগিনা লিটন তহনও আছিল। লিটনে কইছে রাইত তিনটা বাজে হ্যাগো ধইরা নিয়া পুলিশে কইছে “চল তগো চালান দিবো”। এই কথা শুইনা আমি চিক্কুর পাইড়া কানছি। ফাঁড়িতে কোন পুলিশের সঙ্গে তাসলিমার কথা হয়েছিল জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি এতো কইতাম পারি না, তয় এক স্যারের নাম নূর আলম বইলা হেইখানকার একজনে কইছে।’

ভুলতা পুলিশ ফাঁড়িতে নূর আলম নামের কোনো কর্মকর্তা নেই বলে জানা গেল। তবে জেলার অন্য ইউনিটে এই নামে কর্মকর্তা রয়েছেন। এদিকে গুলিবিদ্ধ চারজনের লাশ সোমবার রাতেই স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করেছে পুলিশ। ইতিমধ্যে পুলিশ বাদী হয়ে হত্যা ও অস্ত্র আইনে দুটি মামলা করেছে। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হওয়াটি অস্ত্রটি পরীক্ষার জন্য সিআইডিতে পাঠানো হয়েছে।
  • কার্টসিঃ প্রথম আলো/ ২৪ অক্টোবর ২০১৮