Search

Tuesday, January 22, 2019

জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে — জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট


বিএনপি মহাসচিব ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মুখপাত্র মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, অবিলম্বে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও ফলাফল বাতিল করে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। মানুষ একাদশ জাতীয় সংসদ নিবাচনের রাতে ভোট চুরি ও দিনে ডাকাতির ক্ষোভ এবং খুন গুম ধর্ষণের শোককে শক্তিতে পরিণত করে আন্দোলন মুখর হয়ে উঠেছে। এই আন্দোলন দুর্বার তরঙ্গে রুপ নিবে। আন্দোলনের মাধ্যমে এই গণশত্রুকে সরিয়ে দিতে হবে।

সোমবার, জানুয়ারি ২১, দুপুরে লালমনিরহাটের রাজপুর ইউনিয়নের খলাইঘাটে ৩০ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের হাতে নিহত ইউনিয়ন বিএনপির পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক তোজাম্মেল হোসেন স্মরণে প্রতিবাদ সমাবেশে তারা এসব কথা বলেন।

ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি লিয়াক আলীর সভাপতিত্বে এসময় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপি মহাসচিব ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জেএসডির সভাপতি আসম আব্দুর রব, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকি, ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির সদস্য ড. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিএনপির রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলু।

শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গণতন্ত্র লুট হয়েছে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের জন্য দুঃখ প্রকাশ করে মির্জা ফখরুল বলেন, যে দলটি গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছে, যে দলটির নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে। তারাই এখন গণতন্ত্রকে লুট করেছে, ডাকাতি করেছে। আর খালেদা জিয়া গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছেন। তাকে সাজানো মামলায় কারাগারে নেয়া হয়েছে।

আওযামী লীগ এখন গণশত্রুতে পরিনত হয়েছে উল্লেখ করে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি, ইউএনও, ডিসি, সেনাবাহিনী নিয়োগ করে তাদেরকে দিয়ে ভোটের রাতে সিল মেরে রাখে এবং ভোটের দিন আওয়ামী লীগের গুন্ডাবাহিনী প্রকাশ্যে ভোট ডাকাতি করেছে। এরমাধ্যমে তারা গণশত্রুতে পরিণত হয়েছে। জনগনের সেই মনের ভাষা আর মুখের ভাষা বোঝার ক্ষমতা আর আওয়ামী লীগের নেই। কখনও হবেও না।

উপস্থিত জনতার উদ্দেশ্যে মির্জা ফখরুল বলেন, যতই জুলুম হোক না কেন ঐক্যবদ্ধ থাকবেন। জনগণের ঐক্য এবং জাতীয় ঐক্য একত্রিত হয়ে এই আওয়ামী লীগ নামের এই দানব সরকারকে উৎখাত করা হবে। আমাদের আন্দোলন গণতন্ত্রকে উদ্ধার করার আন্দোলন। আমাদের আন্দোলন খালেদা জিয়াকে মুক্তির আন্দোলন। আমাদের আন্দোলন তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনার আন্দোলন। আমাদের আন্দোলন খুন, গুম, ধর্ষণর শিকার হওয়া, মিথ্যা মামলায় কারাবন্দি ও নির্যাতিত মানুষকে মুক্তির আন্দোলন। আমাদের আন্দোলন দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ফিরিয়ে আনার আন্দোলন। ভোটের অধিকার ফিরিয়ে এনে একটি সমৃদ্ধশালী সবার জন্য বাংলাদেশ গড়ার আন্দোলন। তাই অবিলম্বে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও ফলাফল বাতিল করে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের মাধ্যমে জনগনের সরকার প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত আমাদের এই আন্দোলন চলবে।

খুন হওয়া বিএনপি নেতা তোজাম্মেল হোসেনকে গণতন্ত্রের জন্য শহীদ উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেনে, ৩০ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের তল্পিবাহক গুন্ডারা রাজপুরের তোজাম্মেল হককে হত্যা করেছে। তোজাম্মেল গণতন্ত্রের জন্য জীবন দিয়ে শহীদ হয়েছেন। এরকম আরও ২২ জন নেতাকর্মী শহীদ হয়েছেন। আওয়ামী লীগের গুন্ডারা ধানের শীষে ভোট দেয়ার জন্য নোয়াখালীতে এক গৃহবধূকে ধর্ষণ করেছে। আমাদের এক যুবদলের নেতার স্ত্রীকে ধানের শীষে ভোট দেয়ার জন্য ধর্ষণ করেছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা ভোটের আগে জাতীয় ঐক্য তৈরি করেছিলাম। সেসময় মানুষের মধ্যে উচ্ছ্বাসের তরঙ্গ তৈরি হয়েছিল। মানুষ ভেবেছিল ভোটাধীকার প্রয়োগ করে আওয়ামী লীগের ভয়াবহ শাসন থেকে মুক্তি পাবেন। কিন্তু মানুষ সেটা পারেন নি। জনগনের ভোটাধিকার অধিকার কেড়ে নিয়ে আওয়ামী লীগ নিজেদের নির্বাচিত ঘোষণা করেছে।

তিনি বলেন, তারা নিজেরাই নিজেদের জিতিয়ে নিয়ে এখন উৎসব করছে। গত ১০ বছরে দেশকে একটি বিভিষিকাময় পরিস্থিতি তেরি করেছে আওয়ামী লীগ। মিথ্যা মামলা, গায়েবি মামলা দেয়া হচ্ছে। আওয়ামী লীগ এবং প্রশাসনের লোকজন বিভিন্ন লোকের কাছে টাকা দাবি করছেন, টাকা না দিলে তাদের গায়েবি মামলায় গ্রেফতার করা হচ্ছে। খুন-গুম-ধর্ষণের স্বর্গরাজ্য বানিয়েছে আওয়ামী লীগ। গত ১০ বছরের অনেক মা ও স্ত্রীরা রাত জেগে আশায় থাকেন কখন তাদের গুম হওয়ার স্বামী সন্তান আসবেন। সারাদেশে ৯৮ হাজার মামলা দেয়া হয়েছে। কমবেশি ২৬ লাখ নেতাকর্মী সাধারণ মানুষের নামে মামলা দেয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগ ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনের মাধ্যমে পুলিশসহ প্রশাসনকে মানুষের প্রতিপক্ষ বানিয়ে দিয়েছে।

জেএসডি সভাপতি আসম আব্দুর রব বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কোন ভোট হয়নি। ২৯ তারিখ রাতে চুরি হয়েছে। ৩০ তারিখ দিনের বেলা ভোট ডাকাতি হয়েছে। ধানের শীষে ভোট দিতে যাওয়ার অপরাধেই তোজাম্মেলকে খুন করা হয়েছে। তোজাম্মেল হত্যার বিচার করতে হবে। দোষীদের গ্রেফতার করতে হবে। বাংলার মটিতে এসব হত্যার বিচার হবেই।

সম্মিলিতভাবে ভোট ডাকাতদের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলার আহবান জানিয়ে রব বলেন, বাংলাদেশে ভোটের অধিকার নিশ্চিত না হলে কেউ শান্তিতে তাকতে পারবেন না। যে বিভিষিকাময় পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তা কখনও শেষ হবে না।

রব বলেন, এককভাবে এই ভোট ডাকাতদের মোকাবেলা করা যাবে না। সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে গণতন্ত্রের স্বার্থে, মানবসভ্যতার স্বার্থে, আমাদের আগামী প্রজন্মের স্বার্থে এদের বিরুদ্ধে লড়াই অব্যাহত রাখতে হবে। আমরা লড়বো। মাঠ থেকে কখনও সরবো না।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ট সহচর বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বলেন, মুক্তিযুদ্ধ করে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করতে পেরেছি। এখনও আমি শেখ হাসিনার বাবা বঙ্গবন্ধুর জন্য জীবন দিতে পারি। কিন্তু তার কন্যা ৩০ ডিসেম্বর যে নির্বাচন করেছেন, তা সারা বিশ্বে সেরা ডাকাতির নির্বাচন হয়ে কলংকের ইতিহাস তৈরি করেছে। যদি আমরা নির্বাচনে না যেতাম তাহলে বিশ্বের সেরা ভোট ডাকাতির প্রমাণ পাওয়া যেতো না। এখন সারা বিশ্বে এটি প্রমাণিত হয়েছে। পুলিশ ভোজ সভা করার মাধ্যমে সেটার দলিল দিয়ে দিয়েছে। আওয়ামী লীগের মহা জয় নয় মহা পরাজয় হয়েছে।

আন্দোলনে জনগন বিজয়ী হবে উল্লেখ করে বঙ্গবীর বলেন, ৩০ ডিসেম্বর প্রহসনের নির্বাচনে তোজাম্মেল হোসেন খুন হয়েছেন। এই সরকার ভোটের রাতে চুরি করেছে। আর দিনে করেছে ডাকাতি। আমরা পাকিস্তার হানাদার বাহিনীর সাথে যুদ্ধ করেছি। পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি তাদের থেকে বড় নয়। এখন আওয়ামী লীগ উৎসব করছে। এরপর সেটা কাল হয়ে দাড়াবে। মাঝখানে তারা জিরো হয়ে যাবে। আপনারা বিজয়ী হবে। জনগন বিজয়ী হবে।

সভায় ড. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, প্রতিবাদ সমাবেশে বিপুল পরিমান মহিলাদের উপস্থিতি প্রমাণ করেছে তারা ভোট না দিতে পেরে ক্ষুব্ধ। পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি ও প্রশাসনের লোকজনদেরকে দিয়ে যেভাবে ভোট ডাকাতি করা হয়েছে তা কলংকের ইতিহাস তৈরি করেছে। এর প্রতিবাদে আন্দোলন অব্যাহত রাখতে হবে। আন্দোলন ছাড়া কোন উপায় নেই।

এসময় রংপুর মহানগর বিএনপির সভাপতি মোজাফফর হোসেন, সেক্রেটারী শহিদুল ইসলাম মিজু, সহ সভাপতি এ্যডভোকেট রেজেকা সুলতানা ফেন্সি, জেলা সভাপতি সাইফুল ইসলাম, সেক্রেটারী রইচ আহমেদ, জেলা যুবদল সভাপতি নাজমুল আলম নাজু, লালমনিরহাট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হাফিজুর রহমান বাবলা, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রোকন উদ্দিন বাবলু, সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন লেমন, জেলা যুবদল সভাপতি জাহিদুল ইসলাম খোকন, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সাত্তার, জেএসডির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও রংপুর জেলা সভাপতি আমিন উদ্দিন বিএসসি, সেক্রেটারী ডা. সাদেক আলী, হারাগাছ পৌরসভা সভাপতি শরিফুল ইসলামসহ কেন্দ্রীয় এবং রংপুর ওলালমনিরহাটের নেতৃবৃন্দ মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।

প্রতিবাদ সমাবেশের আগে মির্জা ফখলরুল ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের নিয়ে নিহত তোজাম্মেল হোসেনের কবরে ফাতেহা পাঠ শেষে মোনাজাতে অংশ নেন। পরে তারা নিহত তোজাম্মেল হোসেন ও আহতদের পরিবারের সাথে দেখা করে তাদের সমবেদনা জানান এবং আর্থিক অনুদান দেন।

প্রসঙ্গত, গত ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনের দিন লালমনিরহাট সদরের রাজপুর ইউনিয়নের পাগলাহাট সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্র ভোট দিতে গেলে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ও ইউপি চেয়ারম্যান মোফাজ্জল হোসেন মোফার নেতৃত্বে ইউনিয়ন বিএনপির পরিবার পরিকল্পনা বিষয়ক সম্পাদক তোজাম্মেল হোসেনকে ছুড়ি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এসময় আরও ৯ জন আহত হন। এ ঘটনায় থানায় মামলা না নেয়ায় ইউপি চেয়ারম্যান মোফাসহ ৯ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে মামলা করেন নিহতের পুত্র মোস্তফা। কিন্তু এখন পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি।
  • নয়া দিগন্ত/ জানু ২১, ২০১৯ 

প্রভাবশালীদের কারণে আদায় হচ্ছে না খেলাপি ঋণ!


রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ আদায়ের অন্যতম প্রধান বাধা হিসেবে দাঁড়িয়েছে প্রভাবশালী ঋণ গ্রহীতারা। এই বাধা দূর করতে অর্থ ঋণ আইন সংশোধন করার সুপারিশ করা হয়েছে।

খেলাপি ঋণ আদায় করতে না পারার প্রধান কারণগুলো তুলে ধরে রাষ্ট্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে সম্প্রতি অর্থমন্ত্রীর কাছে পাঠানো এক প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়েছে।

এর আগে গত বছরের ২৬ ডিসেম্বর রাষ্ট্রীয় ব্যাংকের খেলাপি ঋণ আদায় নিয়ে এমডিদের সঙ্গে বৈঠক করেন আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব আসাদুল ইসলাম। বৈঠকে সোনালী, রূপালী, জনতা, অগ্রণী, বিডিবিএল ও বেসিক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকে উপস্থাপিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত ১১ মাসে এ ছয় ব্যাংকের খেলাপি ঋণ বেড়েছে ১২ হাজার ২শ’ ৫৬ কোটি টাকা। খেলাপি ঋণ বৃদ্ধির শীর্ষে রয়েছে জনতা ব্যাংক লিমিটেড। এক বছরের ব্যবধানে ব্যাংকটির খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৯ হাজার ২৯০ কোটি টাকা। আগের বছর অর্থাৎ ২০১৭ সালে জনতা ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ছিল ৫ হাজার ৮১৮ কোটি টাকা।

একইভাবে নভেম্বর শেষে অগ্রণী ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ৮৪৭ কোটি টাকা বেড়ে স্থিতি দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৯শ’ ৬৩ কোটি টাকা। আগের বছর ব্যাংকটির খেলাপি ঋণ ছিল ৫ হাজার ১১৬ কোটি টাকা।

রূপালী ব্যাংকের খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৮৫৫ কোটি টাকা। ১১ মাসে এ ব্যাংকের খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৬০৪ কোটি টাকা। ২০১৭ সালে ব্যাংকটির খেলাপি ঋণ ছিল ৪ হাজার ২৫১ কোটি টাকা।

বাংলাদেশ ডেভলপমেন্ট ব্যাংক লিমিটেড (বিডিবিএল) খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৭৮ কোটি টাকা। নভেম্বর শেষে স্থিতি দাঁড়িয়েছে ৮৫৯ কোটি টাকা। আগের বছর খেলাপি ঋণ ছিল ৭৭১ কোটি টাকা।

একইভাবে বেসিক ব্যাংকের খেলাপি ঋণ বেড়েছে ১ হাজার ৪৩৭ কোটি টাকা। নভেম্বর শেষে এই ব্যাংকের খেলাপি ঋণ স্থিতি দাঁড়িয়েছে ৯ হাজার ৩৬ কোটি টাকায়। ২০১৭ সালে বেসিক ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ছিল ৭ হাজার ৫৯৯ কোটি টাকা।

সরকারি পাঁচ বাণিজ্যিক ব্যাংকের খেলাপি বাড়লেও একই সময়ে ৯৬০ কোটি টাকা খেলাপি ঋণ কমেছে একমাত্র সোনালী ব্যাংকের।  ২০১৮ সালের নভেম্বর শেষে ব্যাংকটির খেলাপি ঋণের স্থিতি দাঁড়িয়েছে ১২ হাজার ৮১১ কোটি টাকা। ২০১৭ সালে ছিল ১৩ হাজার ৭৭১ কোটি টাকা।

ব্যাংকগুলোর পাঠানো প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাষ্ট্রীয় ব্যাংকের ঋণ গ্রহীতারা অনেক প্রভাবশালী। টাকা আদায়ের সব ধরনের চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পর অর্থ ঋণ আদালতে মামলা করা হয়। আইনগত জটিলতার কারণে সেই মামলাও স্থগিত করে রাখেন প্রভাবশালীরা। একই সঙ্গে বিচার প্রক্রিয়ার দীর্ঘ হওয়াকেও দায়ী করা হয়েছে প্রতিবেদনে।

যোগাযোগ করা হলে সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ বলেন, সোনালী ব্যাংক খেলাপি ঋণ আদায়ে বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। শুধু খেলাপি ঋণ আদায়ে মাঠ পর্যায়ে কাজ করছেন স্থানীয় শাখা ব্যবস্থাপকরা।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্যাংক থেকে ঋণ পেতে কোনো প্রভাবশালী ব্যক্তি পর্ষদকে চাপ না দিলে খেলাপি ঋণ আর বাড়বে না। ঋণ দেওয়ার আগে জেনে বুঝে অনুমোদন বন্ধ করা যাবে। খেলাপিদের কাছ থেকে টাকা আদায়ে আরও কঠোর আইন প্রণয়ন করতে হবে। ঋণ খেলাপিদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়টি কার্যকর করতে হবে।

গত বছরের ২৬ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত বৈঠকের বরাত দিয়ে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব আসাদুল ইসলাম বলেন, সরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ নিয়ে এমডিরা অনেক প্রস্তাব দিয়েছেন। সবগুলো প্রস্তাব অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে বাস্তবায়নের চেষ্টা করা হবে। যাতে ভবিষ্যতে খেলাপি ঋণ না বাড়ে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্র জানায়, চলতি বছরের সেপ্টেম্বর শেষে দেশের ব্যাংক খাতের খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৯৯ হাজার ৩৭০ কোটি টাকা। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট ক্ষমতা নেওয়ার সময় খেলাপি ঋণ ছিল ২২ হাজার ৪৮১ কোটি টাকা। অর্থাৎ আওয়ামী লীগের বর্তমান মেয়াদে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৭৬ হাজার ৮৮৯ কোটি টাকা। এ সময়ে অবলোপন করা হয়েছে ৩৪ হাজার ৬৩০ কোটি টাকার ঋণ। 
  • বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম/ জানুয়ারি ২২, ২০১৯

Monday, January 21, 2019

এই সরকার-ইসির অধীনে আর কোনো নির্বাচন নয় — মির্জা আলমগীর


এই সরকার এবং বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধীনে আর কোনো নির্বাচনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট অংশগ্রহণ করবে না বলে জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেছেন, ‘অবিলম্বে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন ও সাজানো মামলায় কারাগারে বন্দি দলের চেয়ারপারসন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে হবে।’

সোমবার (২১ জানুয়ারি) দুপুরে লালমনিরহাট সদর উপজেলার রাজপুর ইউনিয়নের খলাইঘাট চরে জাতীয় নির্বাচনের দিন নিহত ইউনিয়ন বিএনপির পরিবার ও পরিকল্পনা বিষয়ক সম্পাদক তোজাম্মেল হকের কবর জিয়ারত করতে গিয়ে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে ৩০ ডিসেম্বরের ভোট কারচুপি করে গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে। এ কারণে এ নির্বাচনে জয়ী বা বিজয়ী বলে কিছু নেই। এ নির্বাচনে জনগণের প্রতিনিধিত্ব হয়নি। জনগণের ভোটাধিকার ডাকাতি করা হয়েছে।

বিএনপি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট এ নির্বাচন বয়কট করেছে। তাই আমাদের নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের শপথ নেয়া না নেয়ার কিছু নেই বলেও জানান জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের এই মুখপাত্র।

তিনি বলেন, ‘আমরা আগেও বলেছি, আন্দোলনের অংশ হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলাম। কিন্তু সরকার ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে। এ কারণে আমাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।’

এ সময় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সাথে ছিলেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদের সভাপতি আ স ম আব্দুর রব ও ঐক্যফ্রন্ট নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলুসহ রংপুর ও লালমনিরহাটের স্থানীয় বিএনপি নেতৃবৃন্দ।

এ নির্বাচনে জয়ী বা বিজয়ী বলে কিছু নেই — মির্জা আলমগীর


বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে ৩০ ডিসেম্বরের ভোট কারচুপি করে গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে। এ কারণে এ নির্বাচনে জয়ী বা বিজয়ী বলে কিছু নেই।

সোমবার লালমনিরহাট সদর উপজেলার রাজপুর ইউনিয়নের খলাইঘাট চরে জাতীয় নির্বাচনের দিন নিহত ইউনিয়ন বিএনপির পরিবার ও পরিকল্পনা বিষয়ক সম্পাদক তোজাম্মেল হকের মাজার জিয়ারত করতে গিয়ে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, এ নির্বাচনে জনগণের প্রতিনিধিত্ব হয়নি। জনগণের ভোটাধিকার ডাকাতি করা হয়েছে। এ কারণে বিএনপি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট এ নির্বাচন বয়কট করেছে।

তিনি বলেন, আমাদের নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের শপথ নেয়া না নেয়ার কিছু নেই। অবিলম্বে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন ও সাজানো মামলায় কারাগারে বন্দি দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদাকে মুক্তি দিতে হবে।

ফখরুল বলেন, আমরা আগেও বলেছি, আন্দোলনের অংশ হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলাম। কিন্তু সরকার ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে। এ কারণে আমাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।

এ সময় মির্জা ফখরুলের সাথে ছিলেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদের সভাপতি আ স ম আব্দুর রব ও ঐক্যফ্রন্ট নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলুসহ রংপুর ও লালমনিরহাটের স্থানীয় বিএনপি নেতৃবৃন্দ।

উল্লেখ্য, গত ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন স্থানীয় পাগলারহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের হামলায় নিহত হন তোজাম্মেল হক। এ ঘটনায় তার ছেলে মোস্তফা বাদি হয়ে থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ তা নিতে অস্বীকার করে। পরে রাজপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মোফাজ্জল হোসেন মোফাকে প্রধান আসামি করে ৬ জনের নাম উল্লেখ করে আদালতে মামলা করা হয়।
  • নয়াদিগন্ত/ জানু ২১, ২০১৯ 

আ’লীগ কোনো দিনই জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়নি — মির্জা আলমগীর


আওয়ামী লীগ সরকার কোনো দিনই জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়নি, তারা রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে ৩০ ডিসেম্বরের ভোট কারচুপি করে গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।লালমনিরহাট সদর উপজেলার রাজপুর ইউনিয়নের পাগলার হাট এলাকায় এক প্রতিবাদ সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন দিনমজুর তোজাম্মেল হক নিহতের ঘটনার প্রতিবাদে এ সভার আয়োজন করা হয়।

নিহত তোজাম্মেল লালমনিরহাট সদর উপজেলার রাজপুর ইউনিয়ন বিএনপির পরিবার কল্যাণ সম্পাদক ছিলেন বলে জানিয়েছে জেলা বিএনপি।

মির্জা ফখরুল বলেন, বর্তমান আওয়ামী লীগ কোনো দিন জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়নি। ভবিষ্যতেও তারা জনগণের ভোটে নির্বাচিত হবে না।

একাদশ নির্বাচনে প্রশাসনকে ব্যবহার করে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছে মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এ নির্বাচন জনগণ মেনে নেয়নি। আন্দোলনের মাধ্যমে এই সরকারকে নামাতে হবে।

আন্দোলনের মাধ্যমে এই ক্ষমতাসীন সরকারকে সরিয়ে নির্দলীয় সরকারের অধীনে ভোট দাবি করেন মির্জা ফখরুল।

তিনি আরও বলেন, বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীদের নামে প্রায় ৯৮ হাজার মামলা হয়েছে। এসব মামলায় আসামি ২৬ লাখ।

প্রতিবাদ সভায় ঐক্যফ্রন্ট নেতা জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব বলেন, তোজাম্মেলের কী অপরাধ ছিল। তার অপরাধ তিনি ধানের শীষের লোক ছিলেন। তিনি ধানের শীষে ভোট দিতে এসেছিলেন বলে আওয়ামী লীগের লোকেরা তাকে হত্যা করেছে।

কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি কাদের সিদ্দিকী বলেছেন, এ রকম নির্বাচন পৃথিবীর কোথাও হয়নি। জনগণ এই নির্বাচন মেনে নেয়নি। তাই এই নির্বাচন বাতিল করে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি জানান তিনি।

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ও গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, আন্দোলন ছাড়া আর কোনো পথ নেই। ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে এই সরকারকে নামাতে হবে।

ওই প্রতিবাদ সভায় সভাপতিত্ব করেন লালমনিরহাট জেলা বিএনপির সভাপতি ও কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ( রংপুর বিভাগীয়) আসাদুল হাবিব দুলু।

এর আগে পৌনে দুপুর ১টার দিকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন লালমনিরহাটে নিহত দিনমজুর তোজাম্মেল হকের বাড়িতে আসেন ঐক্যফ্রন্টের নেতারা। সেখানে তার কবর জিয়ারত করেন। এরপর প্রতিবাদ সভায় যোগ দেন তারা।

প্রসঙ্গত, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন সকাল ৮টার দিকে তোজাম্মেল হকসহ কয়েকজন ভোটকেন্দ্রে যাচ্ছিলেন।পথে রাজপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোফাজ্জল হোসেন তার বাড়ির সামনে তাদের কেন্দ্রে যেতে বাধা দেন।

একপর্যায়ে তোজাম্মেল হককে মারপিট ও পেটে ছুরি মারা হয়।পরে তিনি রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মারা যান।

এ ঘটনায় ১ জানুয়ারি লালমনিরহাট সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ৯ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন নিহতের ছেলে মো. মোস্তফা।

আসামিরা হলেন ইউপি চেয়ারম্যান মোফাজ্জল হোসেন, মোজাম্মেল হোসেন মাস্টার, আঙুর মিয়া ও তার ভাই লেবু মিয়া, সিদ্দিক আলী, শাহীন, মহসিন আলী, জাহাঙ্গীর আলম ও মজি। পরে আদালতের নির্দেশে সদর থানায় ৯ জানুয়ারি মামলাটি নথিভুক্ত করা হয়। তবে পুলিশ এখন পর্যন্ত কোনো আসামিকে গ্রেফতার করতে পারেনি।
  • যুগান্তর/ জানু ২১, ২০১৯ 

গণতন্ত্রের আয়নায় নিজেকে দেখুন, দেখবেন স্বৈরতান্ত্রিক প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন — দুদু


প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান ও কৃষকদলের সাধারণ সম্পাদক শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রীকে বলবো আপনি গণতন্ত্রের আইনায় নিজেকে দেখেন। আর দেখলে আপনি দেখবেন আপনি স্বৈরতান্ত্রিক প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। আপনার এই চেহারা গণতন্ত্রের সাথে যায় না, ৭১ সালের স্বাধীনতার সাথে যায় না।’

সোমবার, ২১ জানুয়ারি, দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে জাতীয়তাবাদী দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলন আয়োজিত বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও দলটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল সহ- সকল রাজবন্দিদের মুক্তির দাবিতে আয়োজিত এক প্রতিবাদ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি এসব কথা বলেন।

প্রতিবাদ সভায় শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ‘৩০ তারিখে যে নির্বাচন হয়েছে এটা লজ্জার নির্বাচন। নির্বাচনের নামে একটি তামাশা হয়েছে দেশে। এটাকে নির্বাচন বলা যায় না। কোনো সুষ্ঠু স্বাধীন গণতান্ত্রিক জাতি এবং এ দেশের মানুষও এটাকে মেনে নেয়নি।আমাদের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনে নিরঙ্কুশ বিজয় লাভে তিনি বিজয় উৎসবে দুর্নীতির বিরুদ্ধে এক প্রকার যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন। আমি তাকে সমর্থন করতাম যদি তিনি নির্বাচনের আগে পদত্যাগ করতেন।’

প্রধানমন্ত্রীর সমালোচনা করে বিএনপির এই শীর্ষনেতা বলেন, ‘এদেশের সবচেয়ে বড় দুর্নীতিটা হয়েছে ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর। এই নির্বাচনকে ভোট ডাকাতি বলেন, ভোট চুরি বলেন আর যাই বলেন এরকম একটি নির্বাচনকে যারা জায়েজ করে তারা দুর্নীতির বিচার করতে পারবেন, দুর্নীতি বাদ দিতে পারবেন- এটা আমরা মনে করি না। আমি প্রধানমন্ত্রীকে বলবো আপনি গণতন্ত্রের আইনায় নিজেকে দেখেন। আর দেখলে আপনি দেখবেন আপনি স্বৈরতান্ত্রিক প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। আপনার এই চেহারা গণতন্ত্রের সাথে যায় না, ৭১ সালের স্বাধীনতার সাথে যায় না।’

প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে ছাত্রদলের সাবেক এই সভাপতি বলেন, ‘৩০ তারিখে ভোট হয়নি, ভোট হয়েছে ২৯ তারিখের মধ্য রাতে। ৩০ তারিখ ভোট হলে আপনাকে অভিনন্দন জানাতাম। আপনি পুলিশকে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নামিয়ে রেখেছেন, পুলিশ এখন সমাজে মুখ দেখাতে পারে না। আমার প্রশ্ন পুলিশ তো সরকারি চাকরি করে, কেন তাদের এরকম ভাবে ব্যবহার করলেন। আপনারা র‍্যাব, ডিসি-এসপি, টিওনো যারা মর্যাদাশীল এই চাকরিজীবীদের জাতির সামনে এতো ছোট করলেন কেনো? তাদেরকে কেন বাধ্য করলেন তথাকথিত ভোট নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে?’

তিনি বলেন, ‘বিএনপি হয়তো এই অবস্থায় প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারে নাই। কিন্তু এ কথা ভাবার কোনো কারণ নাই, আগামী ৫  তারা(সরকার) ক্ষমতায় থাকবে। কারণ যেকোনো সময় যেকোনো অবস্থায় অসত্যের পতন হয়। সত্য দীর্ঘস্থায়ী হয়। এখন যা চলছে তা অসত্য।’

দ্রব্যমূল্যের বৃদ্ধির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সরকার যদি ডাকাতি করতে পারে তাহলে ব্যবসায়ীরা করতে পারবে না কেনো।’

স্বৈরতন্ত্রের কাছে গণতন্ত্রের পরাজয় হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘স্বৈরতন্ত্রের কাছে গণতন্ত্রের পরাজয় সার্বজনীন, দীর্ঘকালীন চলতে থাকবে এ কথাটা ঠিক নয়। গণতন্ত্রের কাছে স্বৈরতন্ত্রের পরাজয়-পতন হবে। পূর্বে কেউ ঠিকে থাকতে পারে নাই, এখনও পারবে না। এ জন্য আমাদের সর্বশেষ কথা হচ্ছে উঠে দাঁড়াতে হবে। উঠে দাঁড়ানো অর্থই হচ্ছে মর্যাদার সাথে বেঁচে থাকা। গণতন্ত্র ধারণ করা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করা।’

প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে তিনি আরও বলেন, ‘সময় থাকতে বুঝবার চেষ্ঠা করেন, আপনার পদত্যাগ করা ছাড়া কোনো বিকল্প নাই। ২০১৪ সালের নির্বাচন যা ২০১৮ সালের নির্বাচন তা। দেশে আওয়ামী লীগ বলে কিছু নাই, এখন আছে পুলিশ, প্রশাসন, র‍্যাব। একদিনের জন্য পুলিশ প্রশাসন যদি নিষ্ক্রিয় হয়ে যায়, তাহলে আওয়ামী লীগ বুঝবে কত ধানে কত চাল। আসলে পুলিশ দিয়ে তারা শুধু গণতন্ত্রে ধ্বংস করে নাই আওয়ামী লীগকেও ধ্বংস করেছে।’

আয়োজক সংগঠনের সভাপতি কে এম রকিবুল ইসলাম রিপন সভাপতিত্বে এবং বিএনপি নেতা মোহাম্মদ শাহজাহান কামালের সঞ্চালনায় প্রতিবাদ সভায় বিএনপির প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশাররফ হোসেন, সহ-শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক হেলেন জেরিন খান, নির্বাহী কমিটির সদস্য হায়দার আলী লেলিন, মো. শাফিন, জিনাফের সভাপতি লায়ন মিয়া মো. আনোয়ার, ছাত্রদলের সহ-সভাপতি এজমল হোসেন পাইলট প্রমুখ বক্তব্য দেন।

  • কার্টসিঃ ব্রাকিং নিউজ / জানু ২১, ২০১৯ 

লালমনিরহাটে ভোটের দিন নিহত দিনমজুরের বাড়িতে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতারা


একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন লালমনিরহাটে নিহত দিনমজুর তোজাম্মেল হকের বাড়িতে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতারা।

সোমবার দুপুরে ঐক্যফ্রন্টের মুখপাত্র বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল বিমান যোগে সৈয়দপুর বিমানবন্দরে নামেন। সেখান থেকে সড়কপথে লালমনিরহাট সদরে নিহতের বাড়িতে আসছেন।

মির্জা ফখরুল ছাড়াও প্রতিনিধি দলে রয়েছেন- ঐক্যফ্রন্ট নেতা জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব, ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী ও কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি কাদের সিদ্দিকী।

প্রথমে তারা লালমনিরহাট সদরের রাজপুর ইউনিয়নের খলাইঘাটে তোজাম্মেল হকের কবর জিয়ারত করেন। এর পর নিহতের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাত করেন। একই সঙ্গে নিহতের পরিবারকে আর্থিক সহযোগিতাও করা হয়। 

প্রসঙ্গত, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন সকাল ৮টার দিকে তোজাম্মেল হকসহ কয়েকজন ভোটকেন্দ্রে যাচ্ছিলেন।পথে রাজপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোফাজ্জল হোসেন তার বাড়ির সামনে তাদের কেন্দ্রে যেতে বাধা দেন। এতে দুপক্ষের কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে তোজাম্মেল হককে মারপিট ও পেটে ছুরি মারা হয়। পরে তিনি রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মারা যান।
  • যুগান্তর/ জানু ২১, ২০১৯ 

ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানেরও নড়বড়ে অবস্থা, খেলাপি ঋণ ৭৪৯০ কোটি টাকা!


অনিয়ম, দুর্নীতি আর অব্যবস্থাপনায় ব্যাংকের পাশাপাশি ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানেরও এখন নড়বড়ে অবস্থা। নানা অনিয়ম করে বিতরণ করা ঋণ আদায় করতে পারছে না তারা। ফলে লাগামহীনভা‌বে বাড়‌ছে খেলা‌পি ঋণ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত প্রতিবেদন বল‌ছে, ২০১৮ সা‌লের সেপ্টেম্বর প্রান্তিক শেষে ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর খেলাপি ঋণ দাঁড়ি‌য়ে‌ছে ৭ হাজার ৪৯০ কোটি টাকা। যা এ খাতের মোট বিতরণ করা ঋণের ১১ দশমিক ২০ শতাংশ।

এ বিষয়ে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, ‘ব্যাংকগুলোর মতো আর্থিক প্রতিষ্ঠানও নানা অনিয়মে জড়িয়ে পড়েছে। তারা একদিকে উচ্চ সুদে আমানত সংগ্রহ করছে অন্যদিকে ঋণ বিতরণে কোনো যাচাই-বাছাই করছে না। ফলে ত্রুটিপূর্ণ ঋণ আর ফেরত আসছে না। যার কার‌ণে খেলা‌পি ঋণ বে‌ড়েই চল‌ছে।’

নিয়ন্ত্রক সংস্থার নজরদা‌রির অভা‌বে এসব প্র‌তিষ্ঠানগু‌লো নিয়মনী‌তি না মে‌নে ই‌চ্ছেমতো চল‌ছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক য‌দি এখনই এসব প্র‌তিষ্ঠান‌কে নিয়ন্ত্রণ না ক‌রে তাহ‌লে আ‌রো খারাপ অবস্থায় চ‌লে যা‌বে ব‌লে জানান প্রবীণ এ অর্থনী‌তি‌বিদ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত খেলাপি ঋণের তথ্য পর্যালোচনায় দেখা গে‌ছে, ২০১৮ সালে আ‌র্থিক প্র‌তিষ্ঠানগু‌লোর প্রতি প্রান্তিকেই খেলাপি ঋণ বেড়েছে। ২০১৭ সালের ডিসেম্বর শেষে এসব প্রতিষ্ঠানের খেলাপি ঋণ ছিল ৪ হাজার ৫২০ কোটি টাকা। তিন মাসে ১ হাজার ৪০ কোটি টাকা বেড়ে মার্চ প্রান্তিক শেষে হয় ৫ হাজার ৫৬০ কোটি টাকা। জুন প্রান্তিকে আরও বেড়ে দাঁড়ায় ৫ হাজার ৯২০ কোটি টাকায়। সেপ্টেম্বর শেষে তা উঠেছে ৭ হাজার ৪৯০ কোটি টাকায়, যা এ খাতের মোট বিতরণ করা ঋণের ১১ দশমিক ২০ শতাংশ। তিন মাস আগে জুনে এ হার ছিল ৯ দশমিক ২০ শতাংশ। আর গত বছরের ডিসেম্বরে ৭ দশমিক ৩০ শতাংশ।

গেল বছর তিন প্রান্তিকে অর্থাৎ ৯ মাসে খেলা‌পি ঋণ বেড়েছে ২ হাজার ৯৭০ কোটি টাকা বা প্রায় ৬৬ শতাংশ। এর আ‌গে ২০১৭ সালের ডিসেম্বর শেষে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে খেলাপি ঋণ ছিল ৪ হাজার ৫২০ কোটি টাকা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হিসাবে গত অক্টোবরে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর তহবিল ব্যবস্থাপনায় গড়ে ৯ দশমিক ৬৩ শতাংশ ব্যয় হয়। গত ৪২ মাসের মধ্যে যা সর্বোচ্চ। তহবিল ব্যবস্থাপনা ব্যয় বৃদ্ধির ফলে এসব প্রতিষ্ঠানের গড় সুদহার বাড়ছে।

উচ্চ ঝুঁকিতে ১২ আর্থিক প্রতিষ্ঠান

ঝুঁকি বিবেচনায় প্রতি তিন মাস অন্তর আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সক্ষমতা যাচাই প্রতিবেদন প্রস্তুত করে বাংলাদেশ ব্যাংক। দেশে কার্যরত ৩৪টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সেপ্টেম্বর শেষে রেড জোন বা উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে ১২টি আর্থিক প্রতিষ্ঠান।

এ‌দি‌কে ব্যাং‌কিং খাত নি‌য়ে খেলাপি ঋণের ওপর বাংলাদেশ ব্যাংকের তৈরি করা সর্বশেষ প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর শেষে ব্যাংক খাতে বিতরণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৮ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকা। এর ম‌ধ্যে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৯৯ হাজার ৩৭০ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ১১ দশমিক ৪৫ শতাংশ। গত জুনে ৮ লাখ ৫৮ হাজার ৫২১ কোটি টাকা ঋণের মধ্যে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ৮৯ হাজার ৩৪০ কোটি টাকা বা ১০ দশমিক ৪১ শতাংশ।

  • জাগো নিউজ/ জানু ২১, ২০১৯

বগুড়ায় এমপির গণসংবর্ধনা দেওয়ার জন্য চাঁদাবাজির অভিযোগ

  • সাংসদ শরিফুল ইসলাম জিন্নাহর গণসংবর্ধনা দুপুরে
  • সংবর্ধনার কথা বলে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ 
  • ব্যবসায়ীরা দোকান বন্ধ করে এর প্রতিবাদ জানিয়েছেন
  • জবাবে তাঁদের হুমকি 

বগুড়া-২ (শিবগঞ্জ) আসনে নবনির্বাচিত সাংসদ শরিফুল ইসলাম জিন্নাহকে গণসংবর্ধনা দেওয়ার কথা বলে ব্যবসায়ীদের কাছে চাঁদাবাজি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এই চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে গতকাল রোববার দুপুরে মহাস্থান বাজার বন্ধ করে প্রতিবাদ করেছেন ব্যবসায়ীরা। আতঙ্কে রয়েছেন তাঁরা।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শরিফুল ইসলাম লাঙ্গল প্রতীকে নির্বাচন করে নির্বাচিত হয়েছেন। ২০১৪ সালের নির্বাচনেও তিনি এ আসনে সাংসদ নির্বাচিত হন। এবার তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা মাহমুদুর রহমান মান্না।

নির্বাচনে বিপুল ভোটে সাংসদ নির্বাচিত হওয়ায় শরিফুলকে সোমবার বেলা তিনটায় মহাস্থানগড় শাহ সুলতান বলখী (রহ.) আলিম মাদ্রাসা মাঠে সংবর্ধনা দেওয়া হবে। শিবগঞ্জের রায়নগর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) পক্ষ থেকে এ সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়েছে। ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ফিরোজ আহমেদ সাংসদ শরিফুলের শ্যালক। তাঁর তত্ত্বাবধানে মহাস্থানগড়ে প্রায় ২০ জন ব্যবসায়ীর কাছে চাঁদা চেয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, ইউপি চেয়ারম্যানের নির্দেশে চাঁদাবাজি করছেন ইউনিয়নের দুই সদস্য সানাউল হক ও তোফাজ্জল হোসেন এবং জাতীয় পার্টির নেতা গোলাম রাব্বানী।

রায়নগর ইউপির ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য (মহাস্থান বাজার) তোফাজ্জল হোসেন স্বীকার করেছেন, অনুষ্ঠানের জন্য ২১ জন ব্যবসায়ীকে ‘দাওয়াত কার্ড’ দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ‘সংবর্ধনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার কথা হচ্ছিল। তবে ব্যবসায়ীরা খুব কম টাকা দিতে চান। এ কারণে গত রাতেই (রোববার রাত) সিদ্ধান্ত বাতিল করা হয়েছে।’

এখন সংবর্ধনা অনুষ্ঠান নিজেরাই করছেন বলে দাবি করছেন তোফাজ্জল। তিনি নিজেকে সাংবাদিক দাবি করে বলেন, ‘এটা মিথ্যা সংবাদ। কারও কাছে টাকা চাইনি। শুধু ২০ জনকে দাওয়াত কার্ড দিয়েছি।’

ব্যবসায়ীদের চিঠি দেওয়ার কথা স্বীকার করলেও জাতীয় পার্টির নেতা গোলাম রাব্বানী বলেন, ‘টাকা চাওয়ার কথা বানোয়াট, ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।’ তিনি হুমকি দিয়ে বলেন, ‘দোকান বন্ধ করে কেউ প্রতিবাদ করলে তাঁদের আমরা চিহ্নিত করব।’

ব্যবসায়ীরা বলছেন, মহাস্থান বন্দরের অর্ধশতাধিক ব্যবসায়ীকে নির্ধারিত অঙ্কের টাকা উল্লেখ করে চিঠি দেওয়া হয়েছে। দোকানভেদে টাকার পরিমাণ আলাদা। সাংসদের ছবিসংবলিত চিঠিতে লেখা রয়েছে, রায়নগর ইউনিয়ন পরিষদ ও ইউনিয়নবাসীর পক্ষ থেকে সাংসদকে বিশাল গণসংবর্ধনা। চিঠির নিচের অংশে টাকার বিষয়টি উল্লেখ করা।

গতকাল দুপুরে মহাস্থান বাজারে কথা হয় এক দোকানির সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘বাজারে সবার মধ্যে এখন আতঙ্ক। ভোটের পর থেকেই এমন চলছে। টাকার কথা কোনোভাবে ওরা জানতে পারলে আমার রুটি-রুজির ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে যাবে।’ সাংসদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তাঁকে ১০ হাজার টাকা দিতে হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘আপনারা যা শুনেছেন, তা ঠিক। এখানে প্রতিবাদ করে লাভ নেই। প্রশাসনও তাদের ভয়ে কিছু বলে না।’

বাজারের অন্তত পাঁচজন দোকানির সঙ্গে কথা হয়েছে এ প্রতিবেদকের। সবাই চাঁদা চাওয়ার বিষয়টি জানিয়েছেন। তাঁরা বলেন, দেশের সার্বিক অবস্থা এখন এমনই। সাংবাদিকদের বলেও লাভ নেই।

সংবর্ধনার অনুষ্ঠানে চাঁদাবাজি বন্ধের জন্য দোকান বন্ধ করে প্রায় ৫০ জন ব্যবসায়ী প্রতিবাদ জানিয়েছেন। তাঁদের অন্যতম শফিউল ইসলাম বলেন, তাঁর কাছে ২০ হাজার টাকা চেয়ে চিঠি দেওয়া হয়। পরে ২০ জন ব্যবসায়ী মিলে দোকান বন্ধ করে এর প্রতিবাদ করেন।

জানতে চাইলে মহাস্থান বাজার বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শাহাদত হোসেন বলেন, ‘ওই বিষয়ে আর টাকা নেওয়া হচ্ছে না। আমরা ব্যবসায়ীদের বলে দিয়েছি, অনুষ্ঠানের জন্য কোনো টাকা দেওয়া হবে না। চেয়ারম্যানকেও এই কথা বলেছি।’

চেয়ারম্যান ফিরোজ আহমেদ বলেন, ‘টাকা তোলার অভিযোগের বিষয়টি শুনেছি। এটা সমাধান হয়ে গেছে। নিজ ইচ্ছায় কেউ দিতে পারেন। না দিলে আপত্তি নেই। তবে চিঠি দিয়ে টাকা চাওয়ার বিষয় ঘটেনি। এটা ভুল–বোঝাবুঝি।’ তিনি আরও বলেন, ‘কেউ টাকা তোলেনি। সব বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সাংসদের ভোট সবাই মিলে করেছেন, কারও কাছ থেকে টাকা নেওয়ার দরকার নেই।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাংসদ শরিফুল ইসলাম জিন্নাহ মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি ঢাকায়। মহাস্থানে কোনো চাঁদাবাজি হয় না। প্রাথমিকভাবে খোঁজ নিয়ে জানলাম, মহাস্থানে আমার লোকজন কোনো চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত নয়। অন্য কেউ করতে পারে।’
  • প্রথম আলো/ জানু ২১, ২০১৯ 

দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়েছে — আ স ম রব


আওয়ামী লীগ দেশ চালাতে পারবে না বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম নেতা ও বাংলাদেশ জাতীয় সামাজতান্ত্রিক দল জেএসডি’র প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আ স ম আব্দুর রব। এসময় তিনি আরো বলেন, ‘দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়েছে। দেশে শিশু থেকে বৃদ্ধা পর্যন্ত কেউই ধর্ষণের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছে না। এসব ধর্ষকের অধিকাংশই আওয়ামী লীগের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মী। এর পাশাপাশি রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে নানা অপকর্মে লিপ্ত হয়েছে তারা।’

সোমবার, জানুয়ারি ২১, সকাল ১১টায় সৈয়দপুর বিমানবন্দরে উপস্থিত সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে উপরোক্ত কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘অসাংবিধানিকভাবে নির্বাচনী তামাশার মাধ্যমে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে একক আধিপত্য বিস্তার করার কারণে মহাজোটের শরীকদের ক্ষমতার ভাগাভাগি নিয়ে টানাপোড়েন সৃষ্টি হয়েছে। যা আগামীতে আরো অবনতির দিকে যাবে এবং এর ফলে একটা অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে। এর ফলে আওয়ামী লীগ দেশ চালাতে পারবে না। এমনকি কোনোরকম রাজনৈতিক আন্দোলন ছাড়াই আওয়ামী লীগ ক্ষমতা থেকে পালাতে বাধ্য হবে। এখনই যে অবস্থা দাঁড়িয়েছে তা থেকে জনগণের দৃষ্টি অন্যদিকে নিতে মাদক নির্মূলের নামে ক্রসফায়ারের মাধ্যমে চুনোপুটি কিছু মাদক ব্যবসায়ীকে হত্যা করা হচ্ছে। এর ফলে প্রকৃত মাদকসম্রাট তথা রাঘব বোয়ালরা ধরা-ছোঁয়ার বাইরেই রয়ে যাচ্ছে। যা তাদের জন্য এক সময় বুমেরাং হয়ে দেখা দিবে।’

‘পাশাপাশি বহির্বিশ্ব তথা জাতিসংঘসহ দাতা সংস্থাগুলোর চাপের মুখে সরকার কুননৈতিক তৎপরতা শুরু করেছে। কিন্তু তা কোনোভাবেই ফলপ্রসূ হবে না। এতে বোঝা যায় সরকার তাদের অবৈধভাবে ক্ষমতায় আসার অপচেষ্টাকে স্বীকৃতি দেয়ার জন্য কূটনীতিকদের স্মরণাপন্ন হচ্ছেন’, বলেন রব।
  • কার্টসিঃ শীর্ষনিউজ/ জানু ২১,২০১৯