শায়রুল কবির খান
বর্তমান সরকারের আমলে প্রধানত দু’টি কারণে পণ্যমূল্যের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি হয়েছে। প্রথমত রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত, দ্বিতীয়ত বাজার ব্যবস্থাপনা। প্রথম অংশে বাজার ব্যবস্থাপনার কর্মপরিকল্পনা তুলে ধরতে চাই। দ্বিতীয় অংশে বিবেচনায় আনতে চাই রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট।
উৎপাদন ও সরবরাহ ব্যবস্থাকে জোরদার করার বিষয়ে জনগণের স্বার্থরক্ষায় শুরু থেকেই এই সরকারের জোরালো প্রচেষ্টার অভাব ছিল। জনগণের সরকারকে কী রকম প্রচেষ্টা গ্রহণ করতে হয়, তা আমরা প্রত্যক্ষ করেছিলাম জিয়াউর রহমান সরকারের সময়। ১৯৮০ সালে জিয়াউর রহমানের সরকারের আমলে ১০ মাস বৃষ্টি হয়নি। অনেকের ধারণা ছিল, খরায় কৃষকের উৎপাদন বন্ধ, দুর্ভিক্ষ হবে। কিন্তু তা হয়নি বরং ৮১ সালে দুই লাখ টন চাল রফতানি হয়েছে। খাদ্যগুদাম করার জন্য বিশ্ব ব্যাংকসহ অনেক দেশের কাছে ঋণ সহায়তা চেয়েছিলেন জিয়াউর রহমান। শত বাধা-বিপত্তির মধ্যেও সারাদেশে প্রান্তিক পর্যায়ে খাদ্যগুদাম তৈরি করতে সক্ষমতা দেখিয়েছেন বিএনপির এই প্রতিষ্ঠাতা।
এক. প্রতিযোগিতামূলক বাজারে পণ্যের মূল্য নির্ধারিত হয়ে থাকে পণ্যের মোট সরবরাহ ও মোট চাহিদার ভিত্তিতে। চাহিদার চেয়ে পণ্য সরবরাহ কম হলে মূল্যবৃদ্ধি ঘটে—যতক্ষণ না চাহিদার ও সরবরাহে একটা সমতা আসে। বর্তমান সরকারের আমলে অস্বাভাবিক পণ্যমূল্য বৃদ্ধি ঘটেছে দুটি কারণে। উৎপাদনের উপকরণের যেমন—বীজ, সার, তেল, বিদ্যুৎ, পানি ইত্যাদির দফায় দফায় মূল্য বৃদ্ধি। এ কারণেই পণ্যমূল্য বৃদ্ধি এখনও অব্যাহত রয়েছে। সংরক্ষণ করা যায়, এমন সব পণ্যের বাজার গত কয়েক মাসে অস্থিতিশীল হয়ে ওঠার আরও একটি কারণ হলো—সংরক্ষণ-পণ্যের গুদামে আকস্মিক তল্লাশি, কোনও-কোনও ক্ষেত্রে সিলগালা করা কিংবা বাজারে বিক্রির জন্য চাপ সৃষ্টি করা। কালোবাজারি ও ব্যবসায়ী সংরক্ষণকারীকে একই মনে করা ঠিক নয়। পণ্য সংরক্ষণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিপণন কার্যক্রম। উদাহরণস্বরূপ প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান কর্মকৌশল ঠিক করে খাদ্য গোডাউন করেছিলেন বিধায় ধান ও চাল সংরক্ষণ করা সম্ভব হয়েছিল। যার ফলে আজ বাংলাদেশ খাদ্য স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছে। নিত্য প্রয়োজনীয় যেকোনও পণ্য উৎপাদনের পর সংরক্ষণ করেই চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহের মধ্য দিয়ে সম্পূর্ণ হয় বাজার ব্যবস্থাপনা।
দুই. মৌসুমভিত্তিক উৎপাদিত পণ্যের ক্ষেত্রে তা আরও গুরুত্বপূর্ণ। সংরক্ষণের ব্যবস্থা না থাকলে অমৌসুমে আমরা চাল, ডাল, পেঁয়াজ, রসুন, পেতাম না এবং সব উৎপাদিত পণ্যই পানির দরে বিক্রি হতো। সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াজাত কার্যক্রমের ফলেই কৃষিপণ্যের মূল্য স্থিতিশীল হয়ে ওঠে। যথেষ্ট প্রতিযোগিতা থাকলে সংরক্ষণকারী, পণ্য অতিরিক্ত সময়ের বেশি একদিনও ধরে রাখবে না। অথচ পণ্যমূল্য বৃদ্ধির জন্য আমরা সরবরাহ ও চাহিদার অবস্থা বা ভারসাম্যের কথা চিন্তা না করে প্রথমেই আঘাতটা সংরক্ষণকারীর ওপর করার চেষ্টা করি। অবশ্য সপ্তাহকয়েক পরেই বাজারের আরও বিরূপ প্রতিক্রিয়ায় কর্তৃপক্ষকে পিছুটান দিতে হয়। ততদিনে সরবরাহ সংকট উত্তরোত্তর মূল্যবৃদ্ধিকে উসকে দেয়। পণ্য আমদানিকারক সিন্ডিকেট কিংবা বাজার ব্যবস্থার যেকোনও পর্যায়েই সিন্ডিকেট তৈরি হয়ে পণ্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের সুযোগ তৈরি হলে অবশ্যই তা হয় ভোক্তাদের চরম ক্ষতির কারণ। এ রকম বাজার ব্যর্থতাকেই বরং সরকার হস্তক্ষেপ করে নিয়ন্ত্রণে আনতে পারে।
সেটা বাজার প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই–এক্ষেত্রেও ধরপাকড়, হুমকি বরং বাজারে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ভীতি তৈরি করে পণ্য সরবরাহে আরও বাধা তৈরি করতে পারে। সিন্ডিকেট তৈরি হতে না দেওয়ার পরিস্থিতি সৃষ্টি করার দায়িত্ব সরকারের। আমদানিকারক কিংবা বাজারের যেকোনও পর্যায়েই ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট তৈরি হয় রাজনীতিকদের (ক্ষমতাসীন) পরোক্ষ সমর্থন কিংবা সরাসরি ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত থাকার সুযোগে। ব্যবসার যেকোনও পর্যায়ে যেন যথেষ্ট প্রতিযোগিতা নিশ্চিত হয়, সেটাই সরকারের দেখার বিষয়। পূজা-পার্বণ, ঈদ ছাড়া বাংলাদেশে পণ্য চাহিদার আকস্মিক বৃদ্ধি ঘটে না বরং ইদানীং গ্রামে-গঞ্জেও ক্ষুদ্র ব্যবসার সুযোগ অসম্ভব রকম সীমিত হয়েছে। অবৈধ স্থাপনাগুলো ভাঙচুরের কারণে বহু পরিবার কর্মহীন হয়েছে, ব্যবসায়ীরা ভীতসন্ত্রস্ত হওয়ায় চাহিদায় ভাটা পড়েছে। তবু কেন অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি ঘটেছে?
(ক) দেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় কৃষি পণ্যসামগ্রীর প্রায় প্রতিটির ঘাটতি রয়েছে।
(খ) আমদানি পর্যায়ে বর্তমান সরকারের রাজনীতিক ব্যবসায়ীদের আঁতাতের ফলে সিন্ডিকেট তৈরি হওয়ায় মূল্যকে তারা যথেষ্ট নিয়ন্ত্রণের সুযোগ পেয়েছিল। পাশপাশি আমদানির জন্য বড় বড় আমদানিকারকের ওপর নির্ভরশীলতার জন্য ওই অপরাজনীতি দায়ী।
(গ) পণ্য উৎপাদনে অত্যাধিক খরচ, সেচ-বিদ্যুৎ ও সারের বণ্টন অব্যবস্থাপনা এর জন্য দায়ী।
(ঘ) পণ্য পরিবহনে নানা অনিয়ম ও সম্প্রতি পরিবহন সেক্টরে অরাজকতা পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ চেষ্টা, চাঁদাবাজি ও পুলিশের অবৈধ কার্যক্রমের খরচও এর সঙ্গে যুক্ত হয়। দ্রব্যমূল্যের স্থিতিশীলতা অর্জন (মূল্যের ওঠানামার ব্যাপকতা কমে যাওয়া), দ্রব্যমূল্য সাধারণ ক্রয়সীমার মধ্যে রাখতে পারাটাই যেকোনও সরকারের অর্থনৈতিক সাফল্যের বড় মাপকাঠি। অর্থনীতির প্রকৃত উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি পেলেই কেবল এটি সম্ভব।
তিন. উৎপাদন ঘাটতি মেটানোর জন্য প্রযুক্তি উন্নয়ন ও হস্তান্তরে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। উৎপাদন উপকরণগুলোর সরবরাহ যতটা সম্ভব ছেড়ে দিতে হবে প্রতিযোগিতামূলক বাজারে। সর্বত্রই প্রতিযোগিতা সৃষ্টি করা ছাড়া বাজারব্যবস্থার সুফল উৎপাদক কৃষক শ্রেণি কিংবা ভোক্তা—কেউই পেতে পারে না। কৃষি উৎপাদন উপকরণগুলোর ক্ষেত্রে যেমন-সেচ ও চাষের যন্ত্রাদি, সার, পল্লী বিদ্যুৎ সরঞ্জাম ও বিদ্যুৎ মূল্য, উন্নত বীজ, আমদানির ও বিক্রির ক্ষেত্রে সারচার্জ, ট্যাক্স অবশ্যই থাকবে না। সরকারি সার বিতরণে ডিলারশিপকে গ্রামের বাজারভিত্তিক বহু ব্যবসায়ীর কাছে ছড়িয়ে দিতে হবে। সার, বীজ, যন্ত্রাদি আমদানিতে এসবের যথাযথ মানকে সর্বোচ্চ পর্যায়ে রাখতে কার্যকরী ব্যবস্থা নিতে হবে। আমদানিতে সিন্ডিকেট যেন গড়ে না ওঠে, সে জন্য যেকোনও আমদানিতে যথাসম্ভব অধিক সংখ্যক আমদানিকারককে সুযোগ দিতে হবে। ভোজ্যতেল, চিনি, ডাল আমাদানিতে বিগত বছরে রাজনৈতিক-ব্যবসায়ীদের সংশ্লিষ্টতার কারণে সিন্ডিকেটগুলোর মুনাফালোভী কার্যক্রমে দেশবাসীকে এসব পণ্যের জন্য আকাশছোঁয়া মূল্য দিতে হয়েছে। এখন ওই সিন্ডিকেটগুলো ভাঙার ব্যবস্থা করাই হচ্ছে সরকারের জরুরি দায়িত্ব।
চার. এসবক্ষেত্রে, পণ্য সংরক্ষণ সময়সীমা বেঁধে দেওয়াও বাজার কার্যক্রমে সরাসরি হস্তক্ষেপের শামিল। এই হস্তক্ষেপ বাজারে অংশগ্রহণকারীরা ভীতসন্ত্রস্ত হলে এবং বাজার কার্যক্রম সীমিত হয়ে পড়লে দীর্ঘমেয়াদে বাজার দাম আরও অস্থিতিশীল হয়ে উঠতে পারে। বাজার কার্যক্রমে এজেন্টদের স্বাধীনভাবে কাজ করতে দেওয়া উচিত। যার কাজ তাকেই করতে দেওয়া বাঞ্ছনীয়। এ ক্ষেত্রে খুব আপৎকালীন সময়ের জন্য সরকার গুরুত্বপূর্ণ কতিপয় অত্যাবশকীয় পণ্যের-বাজারের স্টক গড়ে তুলতে পারে। যেন জাতীয় কোনও দুর্যোগের সময়ে আমদানি-রফতানি ব্যাহত হলে তা বাজারে ছেড়ে নিম্নবিত্ত ও দুস্থ শ্রেণিকে সহায়তা দিতে পারে। এটাও হওয়া উচিত টার্গেট গ্রুপভিত্তিক। কোনোভাবেই উন্মুক্ত বিক্রয় নয়। বাজার ব্যবস্থার বিকল্প সরকার হতে চাইলে তা অর্থনীতিতে আরও বিপর্যয় ডেকে আনে। স্বাধীনতার পরপর বিধ্বস্ত বাজার ব্যবস্থায় সরকারি অত্যধিক হস্তক্ষেপে আমরা যে ভুল করেছিলাম, তার ধারাবাহিকতা কোনও না কোনও সময়ে কোথাও না কোথাও প্রতিফলিত হয়। মনে রাখতে হবে, বাংলাদেশ কৃষিপণ্য বাজার ব্যবস্থা তুলনামূলকভাবে দক্ষ। ভারত, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়াকে সামনে রেখেই এ কথার যৌক্তিকতা প্রমাণে যথেষ্ট গবেষণার ফলাফল কৃষি অর্থনীতিবিদদের হাতে রয়েছে। রাজনৈতিক ব্যর্থতা ও অসততার পরেও এই স্বাধীন বাজার ব্যবস্থাই বিগত সময়ে আমাদের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি দিয়েছে। উন্মুক্ত বাজার ব্যবস্থাকে অবমূল্যায়ন করার কোনও কারণ নেই। ব্যবসায়ী ও উৎপাদক শ্রেণি হচ্ছে অর্থনীতির মূলচালিকা শক্তি, তাদের আস্থায় নিতে হবে।
পাঁচ. বেসরকারি পর্যায়ে সংরক্ষণ ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য, গুদাম ও প্রয়োজনীয় অবকাঠামো সৃষ্টিতে বিশেষ ব্যাংক ঋণের ব্যবস্থা থাকা উচিত। পচনশীল দ্রব্য সংরক্ষণ, প্রযুক্তি উন্নয়ন ও কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোয় জরুরি ভিত্তিতে গবেষণা কার্যক্রম চালু করা উচিত। সংরক্ষণ ও খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ বিষয় সহায়তায় সরকারের দ্রুত হস্তক্ষেপের প্রয়োজন রয়েছে। এই বিষয়ে ব্যবসায়ীদের জন্য প্রশিক্ষণ সুযোগ সৃষ্টি করা উচিত। কৃষক উৎপাদকদের যেন পণ্য সংরক্ষণ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়, সে ব্যবস্থা নিতে হবে। এতে মূল্য বৃদ্ধির সুযোগ তারাও নিতে পারবেন।
ছয়. আমদানি ক্ষেত্রে কাস্টমস ও প্রশাসনের দুর্নীতি ও দীর্ঘসূত্রতা কঠোর হাতে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। কেননা বাজার ব্যর্থতা এর অন্যতম কারণ। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির জন্য তারাও বহুলাংশে দায়ী। যেকোনও পণ্য চলাচল জরুরি খাত হিসেবে বিবেচিত হবে। কৃষি ব্যবসা এখন আমাদের অর্থনৈতিক কার্যক্রমের মূলধারা। এই খাতকে বেগবান করতে সরকারের করণীয় যথেষ্ট কিছু রয়েছে। বাজেটে আমরা ভর্তুকি রাখি রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলে। এর ফলাফল উৎপাদক শ্রেণির হাতে পৌঁছে না। ভর্তুকিতে যে অদক্ষতা ও অপচয় অবশ্যই কমাতে হবে। বরং ভর্তুকির টাকা কৃষি গবেষণা ও প্রযুক্তি উদ্ভাবনে ব্যয় করলে তা অনেক বেশি লাভ দেবে। কৃষককে মূল্য সমর্থন দেওয়ার জন্য খাদ্যশস্য সংগ্রহ নীতিমালা ও ব্যর্থতাই পর্যবসিত। শুধু রাজনৈতিক ক্যাডাররাই সংগ্রহ কেন্দ্রে বিক্রির সুযোগ পায়। এসবের পর্যালোচনা করে গতানুগতিক এই কর্মসূচিগুলো সীমিত করা উচিত এবং ওইসব অর্থ দিয়ে বাজার অবকাঠামো গড়ে তোলার প্রচেষ্টা নেওয়া উচিত। প্রতিটি জেলায় ও উপজেলায় বিসিক শিল্পনগরী কার্যক্রমের আদলে অসংখ্য পাইকারি বাজার সৃষ্টি জরুরি হয়ে পড়েছে। অনেক কৃষি পণ্যের কেন্দ্রীয় বাজার হিসেবে ঢাকার আশেপাশে অন্তত আরও কয়েক ডজন বৃহৎ পাইকারি বাজার সৃষ্টি করা অপরিহার্য। দেশের এক প্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্তে বাধাহীন পণ্য চলাচলের যত চ্যানেলে সৃষ্টি করা সম্ভব, তা-ই করতে হবে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা নিয়ে।
সাত. দ্বিতীয় অংশে আমরা ভুলে গেলে চলবে না, বর্তমান সরকার নৈতিকভাবে পরাজিত। সরকার পরিবর্তনে গত ৩০ ডিসেম্বর জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনৈতিকভাবে ২৯ ডিসেম্বর রাতেই প্রশাসনকে দিয়ে দখল করে নিয়েছে। প্রশাসনের ওপর নির্ভর করে যত রকম চেষ্টাই করুক নৈতিকভাবে পরাজিত সরকার জনগণের কাছে কোনও সময়েই মূল্যায়ন পাবে না। ব্যবসায়ীদের স্বার্থ রক্ষা করতে গিয়ে জনগণের স্বার্থ রক্ষা করতে পারছে না। সরকারি অতিরিক্ত ব্যয় মেটানোর জন্য সরকার ব্যাংক খাত থেকে ঋণ নিচ্ছে, অন্যদিকে ব্যাংক মালিকরাও লুটপাট করছেন। বিদ্যুৎ উৎপাদনকারীর কুইকরেন্টাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের চুক্তি দফায় দফায় বৃদ্ধি করে জনগণের টাকায় সরকার ভর্তুকি দিয়ে যাচ্ছে। পরিবহণ সেক্টরের কথা আর নাই বললাম; তারা কথায় কথায় ধর্মঘটের ডাক দেন।
এরকম পরিস্থিতিতে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো যখন অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করবে তাকেও পুলিশ দিয়ে দমন করে চলছে। তাহলে কী দাঁড়ালো? একদিকে সরকার নিজে শক্তিশালী গোষ্ঠীর কাছে অসহায়, অন্য দিকে সাধারণ জনগণ সরকারের কাছে মূল্যহীন। এর চেয়ে পরিত্রাণ পেতে হলে ভোটের অধিকার ফিরিয়ে এনে গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে, একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে। তবেই দেশের সার্বিক অস্থিতিশীল পরিস্থিতি থেকে জনগণ রক্ষা পাবে। তা না হলে দিনে-দিনে সবকিছুর মূল্য বাড়বে, সাধারণ জনগণের জীবনের মূল্য কমবে। দেখবেন পেঁয়াজের মূল্যও সয়ে গেছে, এরপর আরও একটি পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি হবে।
- লেখক — সহ সভাপতি, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংসদ—জাসাস
- কার্টসি — বাংলাট্রিবিউন / ডিসেম্বর ১১, ২০১৯