Search

Wednesday, August 29, 2018

Outstanding Loans in Banking Sector: Big chunk held by bank owners

Pvt bank directors take loans from other banks 'thru mutual understanding'


Sajjadur Rahman and AKM Zamir Uddin


In Bangladesh, industrialists and businesspeople become shareholders and directors of banks, and borrow money from each other's banks.

And not only that, up to four members of a family can now be in the board of directors of a bank, up from two previously, after the relevant rules were amended last year following Finance Minister AMA Muhith's recommendation.

But the picture is completely different in neighbouring India.

No industrialist or businessperson there can become a director of any bank as this creates a conflict of interest between the custodians and the borrowers of the institution.

India's Banking Regulation Act, 1949, clearly states that shareholders and directors of banks have two completely different roles, and the law prevents them from mixing the roles.

The shareholders own the shares of a company while the directors, who would predominantly be professionals, manage the institution. A director doesn't need to be a shareholder and a shareholder has no right to be a director, it mentions.

This reasoning is the basis of banking acts in the developed world as well.

But Bangladesh is an exception to this, and the result is as one can expect. Owner directors have given loans to each other through what can be termed “mutual understanding”.

According to Bangladesh Bank data, till March this year, bank directors borrowed Tk 107,695 crore from each other's privately-owned banks, which is 13.3 percent of the total outstanding loans of Tk 810,011 crore in the banking sector.

At present, a bank can provide loans of up to 25 percent of its capital to a single borrower, including a bank's director.

Cashing in on this, some banks have lent money to directors of other banks without due diligence.

Until March, Islami Bank Bangladesh disbursed loans amounting to Tk 11,755 crore to directors of other banks -- 16 percent of its total outstanding loans -- the highest by any bank.

National Bank disbursed 31 percent or Tk 7,896 crore of its total loans to directors of other banks, while the figure is 24 percent or Tk 6,149 crore for Exim Bank and 22 percent or Tk 4,101 crore for Prime Bank.

Besides, NRB Commercial Bank, established in 2013, has already disbursed 17.20 percent or Tk 712 crore of its total loans to directors of other banks.

According to bankers, most of the loans have been taken by around 150 directors of private banks, but not all of them are big borrowers.

Analysts have termed the practice “shady lending”, saying many of the “privileged' directors hardly repay the loans on time. Rather, they keep enjoying different benefits, including restructuring and rescheduling of loans, from the banks.

Some of the directors, who defaulted on their loans, filed writ petitions with the High Court and got stay on their defaulted status.

Talking to this newspaper, Ahsan H Mansur, executive director of the Policy Research Institute, said that in many developing countries, bank sponsors get involved only in the banks' activities, but in Bangladesh, bank directors use their influence to get loans for their own businesses.

“Borrowing by directors from each other's banks has become a serious concern for discipline in the banking sector in Bangladesh.”

Such a huge concentration of loans among a handful of directors creates a systematic risk for the financial sector, he said.

Ahsan suggested that the central bank address the issue by imposing restrictions. For example, no director should be allowed to borrow more than seven to eight percent of a bank's capital.

In 2015, the BB was forced to extend a restructuring facility for the large loans amounting to around Tk 15,000 crore given to 11 business groups. Coincidentally, the majority of the owners of the business groups hold directorship positions in the boards of different banks.

Take, for instance, the case of Beximco Group, the biggest beneficiary of the BB's restructuring facility. Its Vice Chairman Salman F Rahman is also the chairman of IFIC Bank.

Beximco owes more than Tk 7,000 crore to different banks, and the loans have been rescheduled several times, according to BB data.

Sikder Group, another beneficiary of the restructuring facility, owes around Tk 2,000 crore to different banks. Zainul Haque Sikder is the chairman of both the National Bank and Sikder Group.

Two more entities -- SA Group and Ratanpur Group -- also got their loans restructured.

Shahabuddin Alam, owner of SA Group, is also a member of the board of directors of Mercantile Bank while Maksudur Rahman, managing director of Ratanpur Group, is a director of South Bangla Agriculture and Commerce Bank.

S Alam Group, which has stakes in at least six banks, has loans of several thousand crores of taka with a dozen banks.

The large amount of loans taken by the directors is an ominous sign for the country's banking sector, said AB Mirza Azizul Islam, former adviser to a caretaker government.

The central bank should take immediate measures to stop this trend and restore corporate governance in the banking sector, he said.

“Some unscrupulous people are now trying to get licences to set up new commercial banks so that they can take loans from other banks through mutual understanding.”

Some directors have already become wilful defaulters but they have gone to court to show their loans as unclassified, Azizul said.

Salehuddin Ahmed, a former BB governor, said the banks usually disburse loans to directors of other banks without due diligence.

“Many directors have been controlling their banks to enjoy easy loans from other banks,” he said, adding that the outstanding loans taken by directors are one of the major reasons for the ongoing liquidity crisis in the banking sector.    

Asked whether the BB would take any measures to stop the excessive lending to directors, Debashish Chakrabortty, the then BB spokesperson and its executive director, said, “The directors are allowed to take loans from other banks in line with the rules of the central bank.”

At present, 57 banks with around 700 directors operate in the country. Of those, eight are state-owned  banks with around 100 directors and nine are foreign banks that have no local directors in their boards. The remaining 40 are private banks.

  • Courtesy: The Daily Star /Aug 29, 2018

আইনের শাসন - সরকারের ‘মহানুভবতা’র রাজনীতি!

কামাল আহমেদ  

অনেক মা-বাবার কান্না, সহপাঠীদের চাপা ক্ষোভ এবং নাগরিক সমাজের প্রতিবাদের মুখে প্রথমে নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের সমর্থক ছাত্রছাত্রীদের অনেকে এবং পরে কোটা সংস্কার আন্দোলনের কয়েকজন নেতা বন্দিদশা থেকে মুক্তি পেয়েছেন। ঈদের আগে তাঁদের মুক্তিলাভ পরিবারগুলোতে স্বস্তি এবং আনন্দ এনে দিয়েছে, সন্দেহ নেই। আদালত তাঁদের জামিন দেওয়ার পর আইনমন্ত্রী বলেছেন, সরকার মানবিক কারণে ‘মহানুভবতা’ দেখিয়ে তাঁদের মুক্তি দিয়েছে। আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, ‘আমরা মহানুভবতা দেখিয়েছি। এখন আমরা আশা করছি, ওরা আর কোনো গুজবে কান দেবে না, গুজব ছড়াবে না, কোনো গুজবে বিভ্রান্ত হবে না। একই সঙ্গে একজন নাগরিক হিসেবে দেশের প্রতি দরদ, ভালোবাসা, মমতা ও দেশাত্মবোধ দেখাবে।’ (বাংলা ট্রিবিউন, ২০ আগস্ট, ২০১৮)।

ব্যক্তিজীবনে ত্যাগের শিক্ষা দেয় যে ঈদ, সেই উৎসবের আগে সরকারের এই কথিত মহানুভবতায় মুগ্ধ হয়ে অনেকে সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। আবার অনেকে এর মধ্যে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য খুঁজেছেন। যাঁরা এর মধ্যে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য খুঁজে পেয়েছেন, তাঁদের বক্তব্য নিরাপদ সড়কের দাবি মানার পাশাপাশি এসব আটক কিশোর-তরুণের প্রতি উদারতা দেখানোর মধ্য দিয়ে সরকার আন্দোলনকারীদের আস্থায় নিতে চাইছে।

সরকার যে কত মহানুভব, তার বিশদ বিবরণ তুলে ধরতে গিয়ে আনিসুল হক বলেছেন, ‘ওদের প্রতি সহানুভূতিশীল বলেই আমরা এ ক্ষেত্রে মহানুভবতা দেখিয়েছি। সরকারের পক্ষ থেকে আমরা সিদ্ধান্তই নিয়েছিলাম যে আদালত যদি ওদের জামিন দেন, তাহলে প্রসিকিউশন থেকে আমরা এ বিষয়ে আপত্তি করব না। শুধু তা-ই নয়, জামিন পাওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে ২০ জন শিক্ষার্থীর পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না। সরকারের পক্ষ থেকে ওদের পক্ষে প্রসিকিউশন নিয়োগ করে ওদের জামিনের কাগজপত্র জমা দিয়েছি।’



যাঁদের কারণে এসব কিশোর-তরুণ মুক্তি পেলেন, তাঁদের ধন্যবাদ জানানোয় কার্পণ্য করা কোনো কাজের কথা নয়। কিন্তু সরকারের মানবিকতা জাগ্রত হওয়া এবং মহানুভবতা দেখানোর দাবির কারণে এই প্রশ্নটি না করলেই নয়। ধন্যবাদ আমরা কাকে দেব? আদালত নাকি সরকারকে? সরকার যদি অভিযোগ প্রত্যাহার করে নিত, তাহলে আর এই প্রশ্নটি উঠত না। কিন্তু অভিযোগ বা মামলা প্রত্যাহারের মতো কোনো পদক্ষেপের কথা তো আমরা শুনিনি।

আমরা জেনেছি যে আদালত তাঁদের জামিন দিয়েছেন। এখন আদালতের সিদ্ধান্তের কৃতিত্ব যদি আইনমন্ত্রী দাবি করেন, তাহলে তার মানে কী দাঁড়ায়? সরকারের এই দাবির পেছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য থাকলে তা আদালতের স্বাধীনতা সম্পর্কে কী ধারণা দেয়? রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ, বিএনপি এত দিন ধরে সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে আসছে যে আদালত স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছেন না-সেই দাবি বিশ্বাসযোগ্য করায় মন্ত্রীর এই বক্তব্যে দলটি খুশি হবে বৈকি। বিএনপির নেত্রীর জামিনের প্রশ্নে সরকারের কঠোর বিরোধিতা কিংবা দুর্নীতি দমন কমিশনের মামলায় দুদকের আইনজীবী থাকলেও রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেলের চোখে পড়ার মতো উদ্যোগী ভূমিকায় ক্ষুব্ধ বিএনপি কয়েক মাস ধরে এই কথাটিই বলে আসছে। তাদের বক্তব্য, সরকারের কারণেই বিএনপির নেত্রী সুবিচার পাচ্ছেন না।

আদালতকে কোনো মামলার ক্ষেত্রে প্রভাবিত করার চেষ্টা হয়েছে কি না, তা আমাদের জানা নেই। কিন্তু মন্ত্রীর বক্তব্য সত্য হলে সরকার মহানুভবতা না দেখালে এসব ছাত্রছাত্রীর জামিন হয়তো হতো না। অভিজ্ঞতা বলে, রাষ্ট্রপক্ষের আপত্তি না থাকলে আদালত সাধারণত জামিন দিতে কসুর করেন না। জামিন এবং রিমান্ডের প্রশ্নে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা নিম্ন আদালতে অব্যাহতভাবে উপেক্ষিত হওয়ার পটভূমিতে সরকারের মহানুভবতার দাবি হয়তো যৌক্তিক। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, আইনমন্ত্রী এদের প্রতি মহানুভবতা দেখিয়ে থাকলে যাঁরা ঈদের আগে জামিন পেলেন না, তাঁদের প্রতি তিনি কি কঠোরতা দেখালেন? আলোকচিত্রী শহিদুল আলম যে জামিন পেলেন না, তা যদি তাঁর এই কঠোরতার কারণে হয়ে থাকে, তাহলে মন্ত্রী হিসেবে তিনি যে শপথ নিয়েছেন, তার বিচ্যুতির অভিযোগ কি নাকচ করা যায়? মন্ত্রী হিসেবে তিনি তো কারও প্রতি রাগ বা অনুরাগের বশবর্তী না হওয়ার শপথ নিয়েছেন। কথিত মহানুভবতার জন্য ছাত্রছাত্রীদের কাছে তাঁর যেমন প্রত্যাশা আছে, তেমনি কি মন্ত্রীর বিরুদ্ধে শপথ ভঙ্গের অভিযোগ উঠলে তাঁর পদত্যাগ আশা করা যাবে?

নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের জন্য আটক ছাত্রছাত্রীদের আইনজীবীরা জামিন চাওয়ার সময়ে আদালতে বলেছেন, এজাহারে তাঁদের কারও নাম নেই এবং এ কারণে সন্দেহের বশে আটক কিশোর-তরুণদের জামিন না পাওয়ার কোনো কারণ নেই। এই আন্দোলনের কারণে যে শতাধিক ব্যক্তি আটক হয়েছেন, তাঁদের মধ্যে সহিংসতার সময়ে ঘটনাস্থল থেকে আটক হয়েছেন, এমন কেউ আছেন কি না সন্দেহ। যদি থেকেও থাকেন তা একেবারেই নগণ্য। অর্থাৎ আইন ভঙ্গ বা শান্তিরক্ষার প্রয়োজনে এঁদের গ্রেপ্তার করতে হয়েছে-ব্যাপারটা এমন নয়। অভিযোগ আছে, অনেককেই ছাত্রলীগের কর্মীরা লাঞ্ছিত করার পর পুলিশের কাছে দিয়েছেন এবং থানা তাঁদের বিরুদ্ধেই মামলা দিয়েছে। যে ৫৭ ধারা বাতিল হওয়ার কথা, সেটিরই সর্বোচ্চ অপপ্রয়োগ ঘটছে।

সবচেয়ে বড় কথা, আসল অশান্তি সৃষ্টিকারী হেলমেট বাহিনীর অনেকের পরিচয় প্রকাশের পরও গত দুই সপ্তাহে তাঁদের কেউই গ্রেপ্তার হননি। পুলিশ হামলাকারীদের খোঁজে না, কিন্তু আন্দোলনকারীদের ধরপাকড়ের জন্য সবাইকে তৎপর দেখা গেছে। থানা-পুলিশের পাশাপাশি বিশেষ পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য গড়ে তোলা চৌকস বাহিনী র‍্যাব, সন্ত্রাসবিরোধী কার্যক্রমের জন্য গঠিত অ্যান্টি-টেরর ইউনিট এবং সাইবার অপরাধ দমনের সাইবার ক্রাইম ইউনিট-সবাই নেমে পড়েছে আন্দোলনকারীদের ধরতে। নিরাপদ সড়ক আন্দোলন অথবা কোটা সংস্কারের আন্দোলন মোকাবিলায় র‍্যাব কিংবা সন্ত্রাস দমন ইউনিট নিয়োগের কী যৌক্তিকতা থাকতে পারে? একজন বিশ্ববিদ্যালয়ছাত্রীকে রাতের বেলায় তাঁর দাদাবাড়ির দরজা ভেঙে ঘুম থেকে উঠিয়ে ধরে নিয়ে আসার মতো ‘মহানুভবতা’ এসব ছাত্র-তরুণদের আজীবন মনে থাকবে, সন্দেহ নেই। জুলুম-নির্যাতন আবার ফিরে এসেছে এবং তা এখন নতুন ফ্যাশন বলে জাতিসংঘের বিদায়ী মানবাধিকার প্রধান জেইদ রাদ আল হুসেইন সম্প্রতি যে বৈশ্বিক প্রবণতার কথা বলেছেন, মনে হয় বাংলাদেশ তার এক বড় দৃষ্টান্ত।

ছাত্রছাত্রীদের আন্দোলন মোকাবিলায় সরকারের দমননীতি শুধু যে আন্দোলনকারীদের মধ্যেই আবদ্ধ থেকেছে, তা নয়। প্রথমে তা বিস্তৃত হয়েছে বিরোধী দল বিএনপির দিকে। একটি ন্যায্য দাবির আন্দোলন সমর্থনের ‘অপরাধে’ তাদের বিরুদ্ধে সরকার পতনের ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আনা হয়েছে। কথিত টেলিফোন সংলাপ ফাঁস এবং তাকে কেন্দ্র করে মামলাও হয়েছে। সরকারবিরোধী ষড়যন্ত্রের তত্ত্ব বিস্তৃত হয়েছে নাগরিক সমাজের একটি অংশ এবং যুক্তরাষ্ট্র পর্যন্ত। তথ্যপ্রযুক্তি আইনে আটক করা হয়েছে নন্দিত আলোকচিত্রী শহিদুল আলমকে। তাঁর মুক্তির জন্য নোবেল বিজয়ী থেকে শুরু করে বিশ্বের তাবৎ বুদ্ধিজীবীরা বিবৃতি দিচ্ছেন, পত্রপত্রিকায় নিবন্ধ লিখছেন।

মাত্র মাস চারেকের মধ্যে অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় নির্বাচনকে গ্রহণযোগ্য, অবাধ ও সুষ্ঠু করার জন্য একটি সম্ভাব্য রাজনৈতিক সমঝোতার প্রসঙ্গ যখন জন-আলোচনায় প্রাধান্য পাওয়ার কথা, তখন সবার মনোযোগ ও দৃষ্টি হচ্ছে শহিদুল আলমসহ গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের মুক্তির বিষয়টিতে। বলতেই হবে, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের জন্য এটি হচ্ছে মন্দের ভালো। কেননা, ২০১৪-র বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতার নির্বাচন যে রাজনৈতিক সংকটের উৎস, সেই সংকট নিরসনের রাজনৈতিক সমাধান আওয়ামী লীগের জন্য সুখকর না-ও হতে পারে। সে ক্ষেত্রে নানা ধরনের অস্থিরতার কারণে কোনো ধরনের রাজনৈতিক সমঝোতা ছাড়াই সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার দোহাই দিয়ে আরও একটি নির্বাচন নিজেদের মনের মতো করিয়ে নেওয়া অপেক্ষাকৃতভাবে সহজ।

পছন্দমতো নির্বাচন আয়োজনে যাঁদের সহায়তা প্রয়োজন, তাঁদের খুশি রাখার আয়োজনগুলো সম্পন্ন করার উদ্যোগগুলোতে সেই আলামতই মেলে। পুলিশ বাহিনীর প্রধানকে সচিব পদে উন্নীত করার যে ধারা আওয়ামী লীগ শুরু করেছিল, তা এবার নতুন মাত্রা পেয়েছে একসঙ্গে চার পুলিশকর্তার অস্বাভাবিক পদোন্নতিতে। এক দেশে আইনের দুই ধারা-সাধারণ নাগরিক হলে সন্দেহের বশেও গ্রেপ্তার এবং রিমান্ড চলবে, কিন্তু সরকারি কর্মকর্তা হলে মামলা হলেও অনুমতি ছাড়া গ্রেপ্তার নিষিদ্ধ হচ্ছে। এটাই এখন চৌকস (স্মার্ট) রাজনীতি।


  • কার্টসি ঃ প্রথম আলো/ আগস্ট ২৯,২০১৮ 

দুদক চেয়ারম্যানের অদ্ভুত আশা

সম্পাদকীয়

প্রস্তাবিত আইনটি ঠেকানোর চেষ্টা করুন

‘সরকারি চাকরি আইন’ শিরোনামে যেই আইনের খসড়াটি মন্ত্রিসভার অনুমোদন পেয়েছে, তা যে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) ক্ষমতা খর্ব করবে—সে বিষয়ে সন্দেহ নেই। কিন্তু আমরা বিস্ময়ের সঙ্গে লক্ষ করলাম, দুদকের চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ সরাসরি আইনটির বিরোধিতা করেননি। অনেকটা রাজনৈতিক নেতাদের সুরে সুর মিলিয়ে তিনি বলেছেন, ‘যেসব অসৎ ও দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা রয়েছেন, তাঁদের উচ্ছ্বসিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। দুদক যত দিন স্বাধীন আছে, তত দিন তারা স্বাধীনভাবেই দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে অভিযান চালাবে।’

দুদকের বিদ্যমান আইনের ২৮-এর ১ ধারা অনুযায়ী, যেকোনো সন্দেহভাজন দুর্নীতিবাজ বা মামলার আসামিকে বিনা পরোয়ানায় গ্রেপ্তার করা যায়। দুদক এই আইনি ক্ষমতাবলে গত আড়াই বছরে ৬ শতাধিক আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে। এর মধ্যে চার শতাধিক সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারী রয়েছেন। ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে হাতেনাতে গ্রেপ্তার হয়েছেন ৬০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী। একে দুদকের অতীতের গ্লানি ও নিষ্ক্রিয়তা থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা হিসেবে বিবেচনা করা যায়। যদিও তারা বেসিক ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান শেখ আবদুল হাই বাচ্চু এবং এ ধরনের আরও অনেক অভিযুক্ত বড় বড় দুর্নীতিবাজকে আইনের আওতায় আনতে ব্যর্থ হয়েছে।

উল্লেখ্য, সরকারি কর্মকর্তারা শুরু থেকেই দুদকের সংশ্লিষ্ট আইন নিয়ে আপত্তি জানিয়ে আসছিলেন। এত দিন সরকার সাড়া না দিলেও জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে কেন আইনটি সংশোধনের প্রয়োজন পড়ল, তা মস্ত বড় প্রশ্ন বটে। বিদ্যমান আইনে কোনো সৎ সরকারি কর্মকর্তা নাজেহাল হয়েছেন, এ রকম একটি উদাহরণও নেই। দুদক গোয়েন্দা সূত্রে খবর নিয়ে হাতেনাতে অনেক দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাকে ধরেছে। নতুন আইন কার্যকর হওয়ার পর সেই সুযোগ আর থাকবে না। কিন্তু যাঁরা সরকারি কর্মকর্তা বা কর্মচারী নন, এমন অভিযুক্ত ব্যক্তিকে অভিযোগপত্র জমা দেওয়ার আগেও দুদক ধরতে পারবে। সাধারণ নাগরিকদের ক্ষেত্রে এক নিয়ম আর সরকারি কর্মকর্তাদের বেলায় অন্য নিয়ম হতে পারে না। এটা নাগরিকদের সমানাধিকারের পরিপন্থী।

দুদক চেয়ারম্যান অবশ্য আশা করছেন, দুদক যত দিন স্বাধীন আছে, তত দিন স্বাধীনভাবে কাজ করবে এবং দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে তাঁরা মোটেই দ্বিধা করবেন না। যেখানে আইনটি করাই হচ্ছে দুদকের ক্ষমতা খর্ব করতে, সেখানে তাঁর এই আশাবাদের আদৌ কোনো ভিত্তি আছে কি? টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান যথার্থই বলেছেন, এ ধরনের আইন পাস হলে স্বাধীন প্রতিষ্ঠান দুদকের ঠুঁটো জগন্নাথে পরিণত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে যেখানে সংশ্লিষ্ট আইনগুলো আরও শক্ত করা প্রয়োজন, সেখানে এ ধরনের উদ্যোগ দুর্নীতিবাজদের দায়মুক্তি দেওয়ারই নামান্তর। মন্ত্রিপরিষদ সচিব পরিষ্কার ভাষায় বলেছেন, কোনো সরকারি কর্মকর্তাকে দুর্নীতির দায়ে গ্রেপ্তার করতে হলে চার্জশিট পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে; অর্থাৎ দুদকের বর্তমান দুর্নীতিবিরোধী অভিযান বাস্তবে অকার্যকর হয়ে পড়বে। বিশেষজ্ঞরা যখন বুঝতে পারছেন প্রস্তাবিত আইনটি দুদকের ক্ষমতা মারাত্মকভাবে খর্ব করবে, তখন দুদক চেয়ারম্যানের উপলব্ধি না করা দুর্ভাগ্যজনক।

রাজনীতিকদের ভাষায় কথা না বলে দুদক চেয়ারম্যানের উচিত হবে আইনটি যাতে জাতীয় সংসদে পাস না হয়, সে ব্যাপারে সর্বশক্তি নিয়োগ করা। দুদক যে স্বাধীন প্রতিষ্ঠান, সে কথা শুধু মুখে বললেই হবে না, কাজেও প্রমাণ করতে হবে। প্রয়োজনে তিনি উচ্চ আদালতের আশ্রয় নিতে পারেন। কেননা, প্রস্তাবিত আইনটি ২০০৪ সালের দুদক আইনের পরিপন্থী। দুদকের সাবেক চেয়ারম্যানের ভাষায় দেশবাসী এই প্রতিষ্ঠানটিকে আর ‘নখদন্তহীন বাঘ’ হিসেবে দেখতে চায় না; তারা দেখতে চায় সত্যিকার দুর্নীতিবিরোধী প্রতিষ্ঠান হিসেবে।

  • কার্টসিঃ প্রথম আলো/ আগস্ট ২৯,২০১৮ 

শহিদুল আলমের জামিন চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন


তথ্য প্রযুক্তি ও যোগাযোগ আইনে করা মামলায় আলোকচিত্রী শহিদুল আলমের জামিন চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করা হয়েছে। আজ বুধবার বিচারপতি মো. রুহুল কুদ্দুস ও বিচারপতি খোন্দকার দিলুরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে এ আবেদনের শুনানি হতে পারে।

শহিদুল আলমের অন্যতম আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলেন, এ মামলায় ৬ আগস্ট ঢাকা ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম শহিদুল আলমের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন। ১৪ আগস্ট ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে জামিন আবেদন করা হলে ১১ সেপ্টেম্বর শুনানির জন্য দিন ধার্য রাখেন। এরপর ১৯ আগস্ট শুনানির তারিখ এগোনোর জন্য আবেদন করা হলে তা গ্রহণ করেননি আদালত। এ অবস্থায় ২৬ আগস্ট শহিদুল আলমের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন চাইলে ওই আদালত শুনানির জন্য তা গ্রহণ করেননি। এ অবস্থায় গতকাল হাইকোর্টে তাঁর জামিন চেয়ে আবেদন করা হয়।

নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মধ্যে ‘উসকানিমূলক মিথ্যা’ প্রচারের অভিযোগে তথ্যপ্রযুক্তি আইনের মামলায় ৬ আগস্ট শহিদুল আলমকে সাত দিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ। এর আগের দিন রাতে ধানমন্ডির বাসা থেকে তাঁকে তুলে নেয় ডিবি। সাত দিনের রিমান্ড শেষে গত ১২ আগস্ট শহিদুলকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন নিম্ন আদালত।

এরই মধ্যে শহিদুল আলমের সমর্থনে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন, নোয়াম চমস্কি, অরুন্ধতী রায়সহ খ্যাতিমান একাধিক লেখক-বুদ্ধিজীবী বিবৃতি দেন। পেন ইন্টারন্যাশনালসহ একাধিক আন্তর্জাতিক সংগঠনও তাঁর পক্ষে বিবৃতি দিয়েছে। সর্বশেষ আলোকচিত্রী শহিদুল আলমকে মুক্তি দিতে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ব্রিটিশ আইনপ্রণেতা টিউলিপ সিদ্দিক। মঙ্গলবার ব্রিটিশ পত্রিকা ‘দ্য টাইমস’-এ প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

  • কার্টসিঃ প্রথম আলো/ আগস্ট ২৯,২০১৮ 

Tuesday, August 28, 2018

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘেরাও, ৭ দিনের আল্টিমেটাম সাংবাদিকদের


নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সময় দায়িত্ব পালনকালে সাংবাদিকদের ওপর হামলাকারী দুর্বৃত্তদের গ্রেফতারের দাবিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘেরাও করেছেন বিক্ষুব্ধ সাংবাদিকরা। সেখানে দুর্বৃত্তদের গ্রেফতারে ৭ দিনের আল্টিমেটাম দিয়েছেন তারা। এর মধ্যে অপরাধীদের গ্রেফতার না করা হলে সাংবাদিকরা আমরণ অনশন শুরু করবেন।

মঙ্গলবার, ২৮ আগস্ট, দুপুর ১টার দিকে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘেরাওয়ের পর সেখান থেকে এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সভাপতি মোল্লা জালাল।

তিনি বলেন, ‘আমরা সাংবাদিক সমাজ সরকারকে আগামী ৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সাত দিন সময় বেঁধে দিচ্ছি। এর মধ্যে সাংবাদিকদের ওপর হামলাকারীদের গ্রেফতার করা না হলে আমরা ৫ সেপ্টেম্বর থেকে অনশন কর্মসূচি শুরু করব। ওই দিন সকাল ১১টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সাংবাদিকররা অনশন করবেন।’

দুপুর পৌনে ১টার দিকে জাতীয় প্রেস ক্লাব চত্বর থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল গিয়ে পৌঁছায় সচিবালয়ের সামনে। সেখানে সাংবাদিকরা অবস্থান নেওয়ার পর ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সভাপতি আবু জাফর সূর্য্য স্মারকলিপি পাঠ করেন। চার দফা দাবি সম্বলিত ওই স্মারকলিপি নিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যান সাংবাদিকরা।

স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা দাবি চারটি হলো— শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ কর্মসূচি চলাকালে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে পেশাদার গণমাধ্যম কর্মীদের ওপর হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার করতে হবে এবং এক্ষেত্রে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচারিত, প্রকাশিত ছবি বা ফুটেজ দেখে দুর্বৃত্তদের আইনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে; অবিলম্বে সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনির হত্যাকাণ্ডের বিচার সম্পন্ন করতে হবে; যখন-তখন পেশাদার সাংবাদিকদের ওপর পুলিশি নির্যাতন ও হয়রানি বন্ধ করতে হবে এবং সাংবাদিকদের সঙ্গে পুলিশের দুর্ব্যবহার, হয়রানি ও নির্যাতন বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে এবং বিএনপি-জামায়াত আমলসহ বিভিন্ন সময়ে দেশব্যপী নিহত সাংবাদিকদের হত্যার বিচার দ্রুত শেষ করতে হবে।

বিএফইউজে সাধারণ সম্পাদক শাবান মাহমুদ বলেন, রুটি-রুজির আন্দোলন চলছিল। কিন্তু আমাদের রাজপথে নামতে বাধ্য করেছে কিছু দুর্বৃত্ত। সন্ত্রাসীদের অবিলম্বে গ্রেফতার করা না হলে আন্দোলন আরও তীব্র হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন তিনি।

এর আগে, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ডিআরইউয়ের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রাজু আহমেদ বলেন, সন্ত্রাসীরা কোনো দলের নয়। তারা আওয়ামী লীগেরও নয়, বিএনপিরও নয়। কিন্তু তাদের গ্রেফতার না করায় দিন দিন গণমাধ্যমকর্মী ও সাধারণ মানুষের মধ্যে সরকার সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা তৈরি হচ্ছে। তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু ওই দুর্বৃত্তদের গ্রেফতারের জন্য একটি চিঠিও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে দিয়েছিলেন। কিন্তু তা আমলে নেওয়া হয়নি।

ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের কার্যনির্বাহী সদস্য গোলাম মুজতবা বলেন, ‘সাংবাদিক সমাজ আজ বিক্ষুব্ধ। অবিলম্বে সাংবাদিক নির্যাতনকারীদের গ্রেফতার করে শাস্তির আওতায় নিয়ে আসা হোক। যতক্ষণ তাদের গ্রেফতার করা হবে না, ততদিন লাগাতার আন্দোলন-সংগ্রাম চলবে।’

সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করুন। না হলে সরকারের ভাবমূর্তি ক্রমশ নষ্ট হচ্ছে।’

সাংবাদিক নেতারা বলেন, সাংবাদিকদের ওপর হামলার পর তিন সপ্তাহেরও বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও পুলিশ এখনও কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। কত বড় বড় ঘটনার তদন্ত শেষ করে অপরাধীদের পাকড়াও করতে পারে পুলিশ, অথচ প্রকাশ্যে সাংবাদিকদের পেটানো দুর্বৃত্তদের তারা চিহ্নিত করতে পারছে না। এটা অত্যন্ত বেদনাদায়ক।

অবস্থান কর্মসূচিতে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএফইউজের সহসভাপতি এবং সারাবাংলা ডটনেট, দৈনিক সারাবাংলা ও জিটিভির এডিটর ইন চিফ সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সোহেল হায়দার চৌধুরী, ডিআরইউ সভাপতি সাইফুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ শুকুর আলী শুভ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আক্তার হোসেন, পাসপোর্ট রিপোর্টার্সের ফোরামের সভাপতি আছাদুজ্জামানসহ অন্যরা।

এর আগে, গত ৯ আগস্ট এক বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) হামলাকারীদের চিহ্নিত করতে ১১ আগস্ট পর্যন্ত সময় বেঁধে দেয়। এর মধ্যে হামলাকারীরা চিহ্নিত না হলে গোটা সাংবাদিক সমাজ বৃহত্তর আন্দোলনে যাবে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়। পরদিন ১০ আগস্ট জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনেও এক বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে), ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নসহ (ডিইউজে) বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠনগুলোর নেতারা হুঁশিয়ারি দেন, দোষীদের ওই দিনের মধ্যেই গ্রেফতার করা না হলে সাংবাদিকদের আন্দোলন সামাল দেওয়া যাবে না।

এর মধ্যেই ৯ আগস্ট সচিবালয়ে বিএফইউজে ও ডিইউজে নেতাদের সঙ্গে এক বৈঠকে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুও বলেন, সাংবাদিকদের ওপর হামলায় জড়িতদের ১১ আগস্টের মধ্যে গ্রেফতার করা হবে। যদিও এখন পর্যন্ত সাংবাদিকদের ওপর হামলাকারীদের গ্রেফতারে দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ চোখে পড়েনি।

  • কার্টসিঃ সারা বাংলা/ আগস্ট ২৮,২০১৮ 

ডিজি পরিবারের পেটে রেল!

পার্থ সারথি দাস   

জামাই-শ্বশুরের ইচ্ছায়ই এখানে সব হয়! এই দুজন ছাড়া রেলের কোনো কাজ হয় না। বদলি, পদোন্নতি, পদায়ন, বিদেশ সফর—সব কিছুতেই তাঁদের হাত থাকবে। এর বাইরেও একজন আছেন। তিনি রেলের কেউ নন, কিন্তু দুলাভাই রেলের বড়কর্তা হওয়ার সুবাদে একের পর এক কাজ বাগিয়ে নিচ্ছেন। বিভিন্ন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নামে গত তিন বছরে শতাধিক কিলোমিটার রেলপথ মেরামতের কাজ করেছেন শ্যালক। 

গতকাল সোমবার বাংলাদেশ রেলওয়ে সম্পর্কে খোঁজখবর নিতে রাজধানীর রেল ভবনে গেলে একাধিক কর্মকর্তা কালের কণ্ঠ’র কাছে অভিযোগ করে বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের স্বজনপ্রীতি আর অনিয়মের ফলে রেল বড় রকমের ক্ষতির মুখে পড়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা বলেন, নতুন ইঞ্জিন ও বগি কেনার মাধ্যমে রেলে যাত্রীসেবার মান বহুগুণ বাড়ানো যায়। কিন্তু এদিকে কর্তৃপক্ষের নজর নেই। তাদের যত আগ্রহ ‘লাভজনক’ প্রকল্পের দিকে। এই কর্মকর্তা নাম গোপন রাখার শর্তে বলেন, ‘এ মুহূর্তে খুলনা রেলস্টেশনে আধুনিক ভবনের চেয়ে ইঞ্জিন দরকার, কিন্তু জোর দেওয়া হচ্ছে ভবন নির্মাণে।’

আরেকজন কর্মকর্তা রেলের মহাপরিচালকের বিরুদ্ধে স্বজনপ্রীতির অভিযোগ এনে বলেন, ‘শ্বশুর বা জামাইয়ের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতেও সাহস পায় না রেলে। কারণ তাতে চাকরিজীবনে অনিশ্চয়তাসহ অন্যান্য হয়রানির ভয় রয়েছে।’

বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. আমজাদ হোসেন বর্তমান দায়িত্বে আছেন ২০১৫ সালের ১ জানুয়ারি থেকে। এরপর তিন বছর আট মাসে রেল সামনে না এগিয়ে পিছিয়েছে, বেগতির রেলে গতি আসার বদলে আগের চেয়েও স্থবির হয়েছে—এমনটাই মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। অভিযোগ পাওয়া গেছে, প্রকল্পের কাজ পাইয়ে দেওয়া, কর্মকর্তাদের পদোন্নতি, বদলি, সাজা পাওয়া কর্মচারীদের শাস্তি কমানো থেকে শুরু করে সব ধরনের কাজে নিজের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছেন মহাপরিচালক। কেউ তাঁর মেয়ে জামাইয়ের বিরুদ্ধে কথা বললেই ‘শাস্তির ভয়’ দেখানো হয়। মেয়ে জামাইয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠার পর পশ্চিম রেলে তাঁকে বদলির জন্য মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশ দেওয়া হলেও তা কার্যকর হয়নি।

অভিযোগ উঠেছে, নানা অজুহাতে প্রকল্পের ব্যয় বাড়িয়ে ‘বাণিজ্য’ করা হচ্ছে এবং এ ক্ষেত্রে কলকাঠি নাড়ায় মহাপরিচালকের নেতৃত্বে গড়ে তোলা সিন্ডিকেট। ‘কর্মকর্তা-কনসালট্যান্ট-কন্ট্রাক্টর’ নামের ত্রিশক্তির সিন্ডিকেটের প্রধান সমন্বয়ক এখন আমজাদ। জানা যায়, আমজাদ হোসেন নিজে একজন সিভিল ইঞ্জিনিয়ার। এই সুবাদে রেলের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং (প্রকৌশল বিভাগ) বিভাগের কিছু কর্মকর্তাকে নিয়ে সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছেন। কনসালট্যান্সি সার্ভিসের নামে সাবেক কর্মকর্তারা প্রকল্প মূল্য বাড়িয়ে দিচ্ছেন। এই বর্ধিত মূল্যের কাজ যাতে শুধু দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ছাড়া আর কেউ না পেতে পারে সে কাজটিও এই কনসালট্যান্টদের মাধ্যমে করা হয়। প্রকল্পের উন্নয়ন প্রকল্প ছকে (ডিপিপি) এমন সব শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়, যাতে এই দুটি প্রতিষ্ঠান ছাড়া আর কোনো প্রতিষ্ঠান কাজ না পায়।

রেলের গুরুত্বপূর্ণ ছয়টি বিভাগ ট্রেন চলাচলের সঙ্গে সরাসরি জড়িত। এর মধ্যে আছে পরিবহন, সিগন্যাল ও টেলিকম, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং, যান্ত্রিক, স্টোর ও বৈদ্যুতিক বিভাগ। দীর্ঘদিন অবহেলিত রেলের সুষম উন্নয়নের জন্য প্রয়োজন সব বিভাগের সমন্বিত উন্নয়ন পরিকল্পনা। 

আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার ক্ষমতায় আসার পর ৭৬টি উন্নয়ন প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। এগুলোর ৫০টিই সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের এবং তা মোট প্রকল্প মূল্যের ৮৫ শতাংশ। আর এই প্রকল্পগুলোর ৯৫ শতাংশই ম্যাক্স লিমিটেডসহ আরো একটি প্রতিষ্ঠানকে ভাগাভাগি করে দেওয়া হয়েছে। অথচ ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ শুধু পূর্ত কাজ, রেললাইন নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণ করে থাকে। তারা ট্রেন পরিচালনা, যাত্রীসেবা, পণ্য পরিবহন, রাজস্ব আয়, ইঞ্জিন, কোচ, ওয়াগন সংগ্রহ ও রক্ষণাবেক্ষণ, সিগন্যালিং ব্যবস্থা উন্নয়ন ও রক্ষণাবেক্ষণ ইত্যাদি কোনো কাজে জড়িত নয়।

রেলের কয়েকজন কর্মকর্তা ক্ষোভ প্রকাশ করে কালের কণ্ঠকে বলেছেন, রেলওয়ের বিভিন্ন বিভাগের ৬০ জনকে ডিঙিয়ে জামাতা মামুনুলকে পদোন্নতি দিয়ে পরিচালকের (সংগ্রহ) মতো গুরুত্বপূর্ণ পদে বসিয়েছেন  মহাপরিচালক। সব দরপত্র  আহ্বান ও মালপত্র কেনা হয় মামুনুলের দপ্তর থেকে। 

জানা যায়, দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) মামুনুলের বিরুদ্ধে সম্প্রতি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল। আমজাদ তা ধামাচাপা দিয়েছেন। আমজাদ দায়িত্ব নেওয়ার পর মামুনুল রেকর্ডসংখ্যকবার বিদেশ সফরে গিয়েছেন। গত ৩ থেকে ১২ এপ্রিল বঙ্গবন্ধু রেল সেতু নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় প্রশিক্ষণের উদ্দেশ্যে তাঁকে জাপান পাঠানো হয়। জানা গেছে, মামুনুলের বিরুদ্ধে সরকারবিরোধী অপপ্রচার এবং বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ ওঠার পর রেল ভবনে এক সভায় রেলমন্ত্রী মো. মুজিবুল হক মামুনুলকে রেল ভবন থেকে পশ্চিমাঞ্চলে বদলি করার তাৎক্ষণিক নির্দেশ দেন। ওই নির্দেশও বাস্তবায়ন করা হয়নি।

মামুনুল অভিযোগ অস্বীকার করে গতকাল বিকেলে কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমি ৯ মাস ধরে বর্তমান পদে কাজ করছি। তদবির, সুপারিশের অভিযোগ তোলা হচ্ছে যোগ্য মহাপরিচালক ভালো কাজ করছেন বলে। রেলে মহাপরিচালকের সমান্তরাল কেউ নেই। আমার চেয়ে বেশি বিদেশ ভ্রমণকারী অনেক জুনিয়রও আছেন।’

আমজাদের শ্যালক ঠিকাদার মো. বদরুল আলমের বাড়ি সিরাজগঞ্জের নতুন ভাঙ্গাবাড়ীতে। জানা যায়, বদরুলকে কাজ দেওয়ার জন্য মহাপরিচালক নিজে বারবার কর্মকর্তাদের ফোনে নির্দেশনা দেন। পশ্চিমাঞ্চলের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের কর্মকর্তাদের সহায়তায় বদরুল গত তিন বছরে শতাধিক কিলোমিটার রেলপথ মেরামতের কাজ করেন। যেসব প্রতিষ্ঠানের নামে তিনি কাজ করেন এর মধ্যে আছে—১. মো. বদরুল আলম, নতুন ভাঙ্গাবাড়ী, সিরাজগঞ্জ, ২. মেসার্স এইচ কে ট্রেডিং, হাউস নং-১৪৪, শিরোইল ঘোড়ামারা, রাজশাহী, ৩. মো. আব্দুল কাইয়ুম, পাকশী, পাবনা, ৪. এশিয়া এন্টারপ্রাইজ, গৌরহাংগা, ঘোড়ামারা, রাজশাহী, ৫. মেসার্স মামুন ট্রেডিং, শিরোইল, ঘোড়ামারা, রাজশাহী ও ৬. মেসার্স জারমান আলী, শিরোইল কলোনি, ঘোড়ামারা, রাজশাহী।

অভিযোগ রয়েছে, বদরুল রেলের বাতিল বা স্ক্র্যাপ মালামাল সংগ্রহ করেন ঢাকার মেসার্স হামিদ স্টিল করপোরেশন, দ্য ন্যাশনাল আয়রন স্টিল ওয়ার্কস ও মেসার্স মাসুদ ইস্পাত ইন্ডাস্ট্রিজ থেকে এবং এগুলো দিয়েই রেললাইন মেরামতের কাজ করে থাকেন। ফলে কাজের উদ্দেশ্যই ব্যর্থ হচ্ছে।

তবে গতকাল বদরুল আলম কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘দুলাভাই ডিজি হওয়ার পর আমি তাঁর অফিসে যাইনি। কোনো কর্মকর্তার সঙ্গে এমন কোনো আচরণ করিনি যাতে আমার দাপট প্রকাশ পায়। আমি ২৮ বছর ধরে রেলে ঠিকাদারি করছি। পাথর, স্লিপার সরবরাহ করি। এখন নাটোরে তেলের গাড়ি রাখার লুপ লাইন তৈরির কাজ ও খুলনায় গ্রিড-৪-এর কাজ করছি। তার আগে সিরাজগঞ্জে স্টেশন ভবন করেছি। আমি কখনো স্ক্র্যাপ কিনিনি, ব্যবহার করিনি। যারা অভিযোগ দিচ্ছে তারা মিথ্যা বলছে।’

দক্ষিণ কোরিয়ার ঋণে ২০১৬ সালের অক্টোবরে ১৫০টি মিটার গেজ কোচ কিনতে উন্নয়ন প্রকল্প ছক তৈরি করা হয় রেলভবন থেকে। কর ও ভ্যাট ছাড়া এগুলোর দাম ধরা হয় ৬৭৭ কোটি ৯০ লাখ টাকা। অথচ এডিবির ঋণে একই ধরনের কোচ কেনায় ব্যয় হয় ৫২৭ কোটি টাকা। কোচগুলো কেনায় ১৫১ কোটি টাকা অতিরিক্ত ব্যয় ধরা হয়। রেলের কোচ কেনায় ভ্যাট ও কর বাবদ ৪০ শতাংশ অর্থ সরকারি কোষাগারে জমা দিতে হয়। এ হিসাবে ১৫০টি কোচ কেনায় ভ্যাট-কর দিতে হবে ৬০ কোটি টাকার বেশি। সব মিলিয়ে অতিরিক্ত ব্যয় হচ্ছে প্রায় ২১১ কোটি টাকা। প্রকল্পের ডিপিপি তৈরি করা হয়েছে মহাপরিচালকের নির্দেশনানুসারে। এ বিষয়ে রেলের পরিকল্পনা শাখার দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা তাঁর নির্দেশ ছাড়া কোনো কাজ করি না। তিনি অনুমতি দিলেই তা পরিকল্পনা কমিশনে পাঠাই।’

রেলভবন ঘুরে জানা যায়, ডিজির জামাতা ‘ম্যানেজ’ হলে আর কোনো কর্মকর্তাকে পেছনে তাকাতে হয় না। উচ্চাভিলাষী অনেক কর্মকর্তা এ সুযোগটি নিচ্ছেনও। প্রধান প্রকৌশলী পদে পদোন্নতির জন্য ৪০ লাখ, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী পদের জন্য ৩০ লাখ, বিভাগীয় প্রকৌশলী পদের জন্য ১৫ লাখ টাকা দেওয়ার অলিখিত নিয়ম চালু করা হয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন পদে নিয়োগের জন্য পদভেদে ১০ থেকে ২০ লাখ টাকা দিতে হয় বলে অভিযোগ আছে।

ডিজি যা বললেন

এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে রেলের মহাপরিচালক (ডিজি) আমজাদ হোসেন অস্বীকার করেন। মো. আমজাদ হোসেন গতকাল সকালে তাঁর দপ্তরে আলাপকালে কালের কণ্ঠকে বলেন, তিনি কোনো সিন্ডিকেট গড়েননি। মেয়ের জামাইয়ের কোনো প্রভাব নেই। বরং মেয়ের জামাইয়ের পদোন্নতি তিনি আটকে রেখেছেন নিজে ‘নিরপেক্ষ’ থাকার জন্য। শ্যালক বদরুল আলম ৩০ বছর ধরেই ঠিকাদারি করছে দাবি করে তিনি বলেন, বদরুল গত পাঁচ বছরেও তাঁর দপ্তরে আসেনি। তাঁর ভাষায় : ‘আমার মেয়ের জামাইকে দেখলে কেউ বলবে না সে কোনো অনিয়ম করছে।’

তিনি বিভিন্ন প্রকল্পের ব্যয় বাড়ানোর সিন্ডিকেট গড়েছেন কি না জানতে চাইলে মহাপরিচালক বলেন, ‘বিনিয়োগের বড় অংশ চলে যায় পাথর আমদানি, পরামর্শকদের পেছনে ব্যয়ের আয়কর ও ভ্যাট আর ভূমি অধিগ্রহণ বাবদ। পাথরে শুল্ক দিতে হয় ৭৪ শতাংশ, বিদেশি ও দেশি পরামর্শক ব্যয়ে যাথাক্রমে ৩৫ ও ২৭ শতাংশ আয়কর দিতে হয়। বিনিয়োগ প্রকল্পের ৪০-৫০ শতাংশই চলে যায় ভ্যাট-ট্যাক্সে। আমি কেন সিন্ডিকেট করব? আমি রেলের সামগ্রিক উন্নয়নের জন্য সব বিভাগের কাজেই আন্তরিক।’

একটি নতুন ইঞ্জিনের দাম ৩০ থেকে ৪০ কোটি টাকা। সে হিসাবে ১০০টি ইঞ্জিন কিনতে দরকার মাত্র তিন থেকে চার হাজার কোটি টাকা। অথচ এই ১০০টি নতুন ইঞ্জিন কেনা হলে বাংলাদেশ রেলের যাত্রী ও পণ্য পরিবহন কয়েক গুণ বেড়ে যেত। তা কেন করা হয়নি জানতে চাইলে আমজাদ হোসেন বলেন, ‘৪৬টি ইঞ্জিন কেনা হয়েছে। আরো ১০০টি আসবে। ২৭০টি কোচ আমদানি করা হয়েছে। আরো ১০০০টি আসবে। তখন রেলের চেহারা পাল্টে যাবে।’ কেন ইঞ্জিন ও কোচ আনার প্রকল্প কম তা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি একা প্রকল্প নেওয়ার ক্ষেত্রে জড়িত নই।’ বদলি বাণিজ্যের অভিযোগও অস্বীকার করেছেন আমজাদ।

তবে রেলওয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, সিনিয়রদের ডিঙিয়ে পদোন্নতি দেওয়ার পর আবারও পদোন্নতির সুযোগ আছে মামুনুুলের জন্য, কিন্তু রেলভবনে কমিশন বাণিজ্য টিকিয়ে রাখতেই পদোন্নতি দেওয়া হচ্ছে না। তবে এ অভিযোগ সত্য নয় দাবি করে আমজাদ হোসেন বলেন, ‘আমাকে দুর্বল করার জন্য অবসরে যাওয়া একটি মাফিয়া চক্র আমার বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্থানে অভিযোগ দিচ্ছে। আমি আজই অবসরে যাওয়ার আবেদন করছি।’

  • কার্টসিঃ কালের কণ্ঠ/ আগস্ট ২৮,২০১৮

বাক্‌স্বাধীনতা- ‘জীবন নিয়ে পালাচ্ছিলাম’

আলতাফ পারভেজ

শিরোনামের উক্তিটি জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের (জেএনইউ) ছাত্রনেতা উমর খালিদের। ১৩ আগস্ট আততায়ীদের আক্রমণ থেকে বেঁচে ওঠার অভিজ্ঞতা বলতে গিয়ে তিনি এই মন্তব্য করেন। কী পরিপ্রেক্ষিতে ভারতের সুপরিচিত এক বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন পিএইচডির গবেষক-শিক্ষার্থী এইরূপ ভয়াবহ অভিজ্ঞতার ভেতর দিয়ে যাচ্ছেন, সেটা দক্ষিণ এশিয়ার অন্যদেরও শোনা-বোঝা দরকার।

এ রকম কাহিনি বাংলাদেশের নুরুল হক নুরু কিংবা রাশেদ খানকে নিয়েও লেখা যেত। বিভিন্ন হাসপাতালে পুনঃপুন চিকিৎসা প্রত্যাখ্যানের শিকার আহত ছাত্রনেতা নুরু জুলাই মাসে ধানমন্ডির এক হাসপাতালের ফটকের সামনে দাঁড়িয়ে সংবাদকর্মীদের উপস্থিতিতেই করুণ আরজি জানাচ্ছিলেন, ‘প্লিজ, আমাকে সেভ করেন।’ নুরুর আরেক সহযোগী রাশেদ খানের মা সালেহা বেগমকে ১২ জুলাই শহীদ মিনারে এক সমাবেশে বলতে দেখা যায়, ‘আমার মনির চাকরির দরকার নাই, আমি সন্তানকে ভিক্ষা চাই।’

উমর খালিদ, নুরু বা রাশেদদের এই কাহিনির মিলের দিক হলো, শেষোক্তরা রাস্তায় নেমেছিল শিক্ষা ও কাজে সম–অধিকারের দাবিতে; আর উমর খালিদদের লড়াই ছিল ক্যাম্পাসে মত প্রকাশের স্বাধীনতার জন্য। নুরুরা ক্যাম্পাসে মার খেয়েছেন চাকরিব্যবস্থার সংস্কার চেয়ে। উমর প্রাণ নিয়ে পালাচ্ছেন সাম্য-মৈত্রী-স্বাধীনতার কথা বলতে গিয়ে। নুরু-রাশেদ-ফারুকদের জন্য কী ভবিষ্যৎ অপেক্ষা করছে, সেটা আমরা জানি না। তাঁদের অনেকে সবে জামিন পেয়েছেন, খালাস নয়। কিন্তু উমর খালিদের জন্য পরিস্থিতি দাঁড়িয়েছে প্রকৃতই ভয়াবহ।

জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে দুই বছর ধরে বিস্তর হেনস্তার শিকার হচ্ছেন উমর ও তাঁর সমচিন্তার বন্ধু অনির্বাণ ভট্টাচার্য, শিহলা রশিদ সোহরা, কানাইয়া কুমার প্রমুখ। তাঁদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মোকদ্দমা হয় ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে। অভিযোগ হলো, উমররা ‘রাষ্ট্রবিরোধী’ স্লোগান দিয়েছেন। কথিত এই ‘রাষ্ট্রবিরোধিতা’ আসলে ছিল বিজেপির সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় নীতির বিরোধিতা এবং বিভিন্ন আঞ্চলিক সংগ্রামের সঙ্গে সংহতি মাত্র। কিন্তু ভারতের সব প্রান্তেই অধিকারবাদী তরুণদের এখন ‘অ্যান্টি-ন্যাশনাল’ গালি শুনতে হয়। বিজেপি ও ‘নেশন’ সেখানে একাকার হয়ে গেছে। আর ‘বলার স্বাধীনতা’ হয়ে গেছে ‘রাষ্ট্রদ্রোহ’।

বাংলাদেশেও আমরা দেখেছি কোটার সংস্কার ও নিরাপদ সড়কের দাবি তোলা শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে ‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষার কাজে বাধা দান’, ‘ভাঙচুর’, ‘সংঘর্ষে উসকানি প্রদান’ ইত্যাদি অভিযোগ আনা হয়েছে। আদালতে এসব অভিযোগ তোলার আগেই তাঁদের অনেককে প্রকাশ্যে পেটানো হয়েছে, অনেকে অপহৃত হয়েছেন। অনেকের পরিবার নাজেহাল হয়েছে। এসবের কোনো প্রতিকার হয়নি। ভিন্নমতাবলম্বীদের ক্ষেত্রে এসব জুলুম ‘জায়েজ’, অনিবার্য হয়ে উঠেছে।

ভারতে উমর সর্বশেষ পিস্তলধারীদের আক্রমণের শিকার হন রাজধানীতে পার্লামেন্ট সন্নিহিত ‘কনস্টিটিউশন ক্লাব’-এর পাশে। উমর সেখানে গিয়েছিলেন ‘ভয়মুক্ত পরিবেশে—স্বাধীনতার পানে’ শীর্ষক এক সেমিনারে বক্তৃতা দেওয়ার জন্য। ‘ইউনাইটেড অ্যাগেইনস্ট হেইট’ নামের একটি বেসরকারি সংস্থা এই সেমিনারের আয়োজন করে ভারতের ৭১তম স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে।

হামলার পর সবচেয়ে বিস্ময়কর যেটা ঘটেছে, সেটি হলো একদল সাংবাদিক এটা প্রমাণের চেষ্টা করেছেন যে, উমর মোটেই আক্রান্ত হননি। ব্যাপারটি সাজানো ঘটনা ছিল। বহুল প্রচারিত হিন্দি দৈনিক ভাস্কর-এর একজন সংবাদকর্মী প্রথম এ নিয়ে টুইট করেন। পরে তা শত শতবার রি-টুইট হয়েছে। রি-টুইটকারীরা অধিকাংশই টুইটারে বিজেপির মতাদর্শের সমর্থক বা প্রচারক। এভাবেই ভিন্নমতাবলম্বীদের সহিংসভাবে মোকাবিলার সযত্ন এক মৈত্রী গড়ে উঠেছে রাজনীতি ও মিডিয়ার একাংশের মধ্যে। জনৈক রাজনৈতিক ভাষ্যকার এটিকে বলেছেন, ‘কাল্ট অব ভায়োলেন্স’। বাংলাদেশে আলোকচিত্রী শহিদুল আলমকে আটকের পর তাঁর পরিবারের মৃত ও জীবিত সদস্যদের ঠিকুজি অনুসন্ধানচেষ্টার সঙ্গে এটা বেশ মেলে।

দুঃখজনক হলেও সত্য, এরূপ প্রচারযুদ্ধে নিজেদের মান-ইজ্জত বাঁচাতে আক্রান্ত ব্যক্তি বা তাঁর স্বজনদেরই এগিয়ে আসতে হচ্ছে। যারা তাঁকে গুলি করেছিল, ১৬ আগস্ট উমর টুইটারে তাদের ছবি দিয়েছেন। সেই টুইটটি প্রায় ৮ হাজার বার রি-টুইট হয়েছে। দেশটির বিপুল মানুষ হত্যাচেষ্টাকারীকে দেখেছে। সুতরাং দেশটির নেতাদের তা না দেখার কারণ নেই। হামলাস্থলটি দিল্লির হাই-সিকিউরিটি জোন। সেখানে সিসি ক্যামেরার নজরদারি ছিল। সেই ফুটেজেও হামলাকারীর সদম্ভ উপস্থিতি শনাক্ত হয়েছে। দৌড়ে পালাতে গিয়ে হামলাকারীর হাত থেকে পড়ে যাওয়া একটি পিস্তলও মিলেছে সেখানে। দিল্লি পুলিশের বিশেষ সেল ১৬ আগস্ট এরূপ দুই ব্যক্তিকে আটকও করেছে হরিয়ানা থেকে।

কিন্তু এতসব সত্ত্বেও উমরবিরোধী প্রচারণা থেমে নেই; অর্থাৎ তাঁকে শারীরিকভাবে হত্যাচেষ্টার পাশাপাশি সক্রিয় আছে তাঁর চরিত্র হননও। ভারতে এমন প্রগতিশীল সাংবাদিক, অ্যাকটিভিস্ট এই মুহূর্তে বিরল, যাঁরা অল্পবিস্তর এইরূপ দ্বিমুখী আক্রমণের মুখে নেই। টুইটারে গুলিবর্ষণকারীদের ছবি প্রকাশের আগের দিন, ১৫ আগস্ট উমর ভারতবাসীকে এইরূপ পরিস্থিতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদের আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, ‘প্রতিবাদ হওয়া উচিত—আমার ওপর হামলা হয়েছে বলে নয়, কাল অপর কারও ওপর অনুরূপ হামলা হতে পারে। হামলাকারীরা মূলত গণতন্ত্রকে খুন করার লক্ষ্য নিয়ে এগোচ্ছে।’

জেএনইউতে উমর খালিদ ডেমোক্রেটিক স্টুডেন্ট ইউনিয়নের একজন জনপ্রিয় নেতা ছিলেন। বিহার ও গুজরাটের দলিতদের সংগ্রাম, ঝাড়খন্ড-ওডিশায় আদিবাসীদের টিকে থাকার লড়াই থেকে শুরু করে কাশ্মীরিদের আজাদির আন্দোলনে উমর ও জেএনইউর শিক্ষার্থীদের সংহতি জানাতে দেখা যায়। ভারতের তরুণদের কাছে জেএনইউ তাই সাহসের এক প্রতীক। বিজেপি ও তার মিত্রদের এটা অপছন্দ। রাজনৈতিক চাপে তাই এই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ উমর-শিহলা-কানাইয়া-অনির্বাণের মতো তরুণদের স্তব্ধ করতে তৎপর। গত জুলাইয়ে উমরসহ দুজনের পিএইচডি থিসিস গ্রহণ করতে অস্বীকার করে জেএনইউ। অথচ উচ্চতর গবেষণার সব স্তরে থিসিসগুলো অনুমোদিত হয়েছে। উমর পিএইচডি করেছেন ঝাড়খন্ডের আদিবাসীদের অবস্থা নিয়ে। তাঁর ওপর শাসকদের রুষ্ট হওয়ার এটাও একটা কারণ।

রাষ্ট্রবিরোধিতার অভিযোগে হয়রানি এবং ঘৃণাবাদী অপপ্রচার সত্ত্বেও উমরসহ তাঁর সতীর্থদের তরুণসমাজ সভা-সেমিনারে ডেকে থাকে নিয়মিত। কিন্তু দুই বছর যাবৎ তাঁরা যেখানে যাচ্ছেন, সেখানেই সরকারি দলের ছাত্র শাখা ‘নিখিল ভারত বিদ্যার্থী পরিষদ’ হাঙ্গামা বাধাচ্ছে। কেবল জেএনইউর নেতারাই নন, প্রগতিশীল তরুণদের মধ্যে যাঁরাই সাহস নিয়ে সরকারের বিভিন্ন নীতিকৌশলের সমালোচনা করছেন, তাঁদের কোথাও বক্তৃতা দিতে দেওয়া হচ্ছে না। শিক্ষার্থীদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কে কী লিখছেন, তার ওপরও চলে তীক্ষ্ণ নজরদারি। অনেক সময়ই ফেসবুক, টুইটার থেকে মতামত প্রত্যাহারে বাধ্য করা হচ্ছে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের মাধ্যমে। এভাবে অধিকাংশ নামকরা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসকে গত চার বছরে কারাগারতুল্য পরিবেশ বানিয়ে ফেলেছে বিদ্যার্থী পরিষদ।

জেএনইউর ছাত্র সংসদ সরাসরি এই পরিস্থিতির জন্য দায়ী করেছে দেশটির শাসকদের ঘৃণাবাদী প্রচার রাজনীতিকে। ভারতের এই সময়কার অন্যতম আলোচিত লেখক শিখ তরুণী গুরমেহার কাউরের মন্তব্যটি ছিল বিশেষ মনোযোগ আকর্ষণীয়। তিনি বলেন, প্রচারমাধ্যমে ও অনলাইনে যদি শাসকেরা সারাক্ষণ ভিন্নমতাবলম্বীদের বিপক্ষে ঘৃণা প্রকাশ করতে কর্মীদের অবারিত সুযোগ করে দেয়, সেই ঘৃণা একসময় বিরুদ্ধমত দমন করতে রাজপথে পিস্তল হাতে নেমে আসবে—এ আর আশ্চর্য কী!

বাংলাদেশে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধীন মতামত পোষণকারী শিক্ষার্থীদের ওপর নিপীড়নের একটি ব্যাখ্যাও গুরমেহারের মন্তব্যে মেলে।

শাসকদের বিরোধিতা করলেই মেরে বা বাধা দিয়ে সেই কণ্ঠ থামাতে হবে—এই মানসিকতারই সর্বশেষ ক্রুদ্ধ নিশানা উমর। তাই সংবাদ সম্মেলন করে তাঁকে ‘উদারবাদী’ ‘গণতান্ত্রিক’ ভারতের বাসিন্দাদের জানাতে হচ্ছে, ‘আই র‍্যান ফর মাই লাইফ!’ উমরের উচ্চারিত ওই পাঁচটি ইংরেজি শব্দ যেন মোদি-জমানার চুম্বক এক পরিচয় তুলে ধরছে। একই সঙ্গে এটা দক্ষিণ এশিয়ায় জাতীয়তাবাদী শাসক মতাদর্শের ফ্যাসিবাদে রূপান্তরের কথাও জানাচ্ছে আমাদের।

কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, বিরোধীকে পরাজিত করার এটিই কি একমাত্র পথ? এই পথ কোন গন্তব্যে নিয়ে চলেছে ভারত এবং বাংলাদেশসহ পুরো দক্ষিণ এশিয়াকে?

  • আলতাফ পারভেজ দক্ষিণ এশিয়ার ইতিহাস বিষয়ে গবেষক
  • কার্টসিঃ প্রথম আলো/ আগস্ট ২৮,২০১৮ 

ফেসবুক নিয়ে ভয় - ‘এখন আমি কিছুই লিখি না’


‘সাধারণ মানুষ হিসেবে আমি কিছু কথা বলতাম। আওয়াজ দিতাম। অন্যদের বলার চেষ্টা করতাম আমাদের প্রতিক্রিয়া কী হওয়া উচিত বা কী হবে। কিন্তু এখন আর মুক্তভাবে অনেক কথাই লিখি না। ইনফ্যাক্ট, এখন আমি কিছুই লিখি না।’

ঢাকার এক চাকরিজীবী নারী এভাবেই বর্ণনা করেছেন বাংলাদেশের সামাজিক মাধ্যমের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে। নিজের নাম-পরিচয় তিনি প্রকাশ করতে চাননি। ভয়টা শুধু তার একার নয়, তাকে নিয়ে চিন্তিত তার পরিবারও।

তিনি বলেন, ‘পরিবার থেকে একটা চাপ আছে যে তোমার এত সোচ্চার হওয়ার দরকার নেই। আমার কর্মক্ষেত্র থেকেও চাপ আছে, তার বলছে যে, আপনি এগুলো লিখবেন না। তারা আমার নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত। যেহেতু এখন পরিস্থিতি একটু অন্যরকম, ফলে আমি আর নিরাপদ বোধ করি না।’

সম্প্রতি বাংলাদেশে যেভাবে তরুণ শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে খ্যাতিমান আন্তর্জাতিক আলোকচিত্রীকে পর্যন্ত গ্রেফতার করে কারাবন্দি করা হয়েছে, তাতে করে একটা ভয়ার্ত পরিবেশ তৈরি হয়েছে বলে জানাচ্ছেন ফেসবুক এবং অন্যান্য সামাজিক নেটওয়ার্ক ব্যবহারকারীরা। ফেসবুকে এখন তারা কী লিখছেন, কী শেয়ার করছেন তা নিয়ে আগের চেয়ে অনেক বেশি সতর্ক। খবর বিবিসি বাংলার।

বলা হচ্ছে, সম্প্রতি বাংলাদেশে নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনের সময় যেভাবে লোকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তাতে করেই এই শঙ্কা তৈরি হয়েছে। মূলত ফেসবুকে তারা যা বলেছেন বা করেছেন, তার জন্যই তাদের গ্রেফতারের শিকার হতে হয় বলে মনে করা হচ্ছে।

ফেসবুক ব্যবহারকারীদের অনেকে বলছেন, তারা এখন কোনো পোস্ট বা লাইক দেয়াসহ সামাজিক মাধ্যমে বেশ সতর্ক থেকে কর্মকাণ্ড চালান।

ওই আন্দোলন কেন্দ্র করে ৫০টির বেশি মামলার মধ্যে আটটি মামলা হয়েছে তথ্যপ্রযুক্তি আইনে।

নিরাপদ সড়ক আন্দোলন এবং তার আগে সরকারি চাকরির কোটা সংস্কার আন্দোলন- এ দুটি আন্দোলনের সময়ই এর পক্ষে আন্দোলনকারীরা ফেসবুকে নিজেদের মতামত তুলে ধরতেন।

তাদের অনেকেই বলেছেন, এখন সামাজিক মাধ্যমে এ ধরনের কোনো বিষয় বা রাজনৈতিক কোনো ইস্যু দেখলেই এড়িয়ে যান।

তারা কোনো পোস্ট বা লাইক দেয়ার ক্ষেত্রেও সতর্ক থাকছেন।

তথ্যপ্রযুক্তি আইনের মামলাগুলোতে ফেসবুকসহ সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট বা লাইক দিয়ে গুজব ছড়ানো বা উসকানি দেয়ার অভিযোগ আনা হয়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক ফাহমিদুল হক মনে করেন, তথ্যপ্রযুক্তি আইনে ৫৭ ধারার ভয় আগেই ছিল, এখন সেটি অনেক বেড়েছে।

তিনি বলেন, ‘৫৭ ধারাসংবলিত আইসিটি অ্যাক্ট যখন প্রযোজ্য হয়েছে, তখন থেকেই কিছু কিছু মাত্রায় ভয়ের ব্যাপারটা ছড়িয়ে পড়েছে। কিন্তু পর পর দুটি আন্দোলন কোটা সংস্কার এবং নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের সময় বিশেষত কয়েকজনের গ্রেফতার বা মামলার ক্ষেত্রে তাদের ফেসবুকের কর্মকাণ্ডকে সামনে আনা হয়েছে। তখন সাধারণ ব্যবহারকারীদের মধ্যে একটা ভয় তৈরি হয়েছে। এবং সাধারণ ব্যবহারকারীরা আরও বেশি সতর্ক হয়েছেন বলে আমার ধারণা।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক শিক্ষক মোশাহিদা সুলতানা পরিস্থিতিটাকে ব্যাখ্যা করেন ভিন্নভাবে।

তিনি মনে করেন, অনেকে এখনও সামাজিক মাধ্যমে অনেক ইস্যুতেই সক্রিয় থাকলেও মতামত প্রকাশের ক্ষেত্রে ভাষার পরিবর্তন হয়েছে।

মোশাহিদা বলেন, ‘আগে অনেকে অনেক বিষয়ে সরাসরি বলতেন। এখন তারা ইনডাইরেক্টলি বলার চেষ্টা করছেন। ভাষাটার পরিবর্তন হয়েছে।’

তবে তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, সামাজিক মাধ্যমে কোনো ভয়ের পরিবেশ আছে বলে তিনি মনে করেন না।

তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে গুজব ছড়ানোর সঙ্গে জড়িতদেরই শুধু চিহ্নিত করা হয়েছে।

মন্ত্রী বলেন, ‘আমি তো ভয় পাওয়ার কোনো কারণ দেখি না। সেই সময় যারা গুজব রটিয়েছে, তাদের সুনির্দিষ্টভাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। তাদেরই পুলিশ আইনের আওতায় নিয়েছে। এর মধ্যে ভয়ের কিছু দেখি না।’

তিনি আরও বলেন, ‘ফেসবুকসহ সামাজিক মাধ্যম যেগুলো আছে, এগুলোকে আমি গুজব রটানোর প্লাটফরম হিসেবে ব্যবহার করতে দিতে পারি না এবং সেভাবে ব্যবহার করা উচিত নয়।’

  • কার্টসিঃ যুগান্তর/ আগস্ট ২৮,২০১৮ 

দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুত প্রকল্পের সিংহভাগই আটকে থাকছে

বাংলাদেশ-ভারত দ্বিতীয় ও তৃতীয় ঋণচুক্তি

তাসনিম মহসিন

বাংলাদেশ-ভারত দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক এখন নতুন উচ্চতায়। দুই দেশের মধ্যে তিনটি লাইন অব ক্রেডিটও (এলওসি) সই হয়েছে। এগুলো বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে দুই দেশের ভবিষ্যৎ বদলে দেয়ার বার্তা এসেছে উভয় দেশের শীর্ষ পর্যায় থেকে। যদিও দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুত এসব প্রকল্পও আটকে থাকছে। দ্বিতীয় ও তৃতীয় ঋণচুক্তির ৭০০ কোটি ডলারের অধিকাংশ প্রকল্পই নথিবদ্ধ হয়ে আছে। এতে প্রকল্পগুলোর ব্যয় বাড়ছে বলে অর্থ ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।

২০১৫ সালের জুনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঢাকা সফরের সময় ১৪টি প্রকল্পে ২০০ কোটি ডলারের দ্বিতীয় ঋণচুক্তি সই করে বাংলাদেশ ও ভারত। স্বাস্থ্য খাতের একটি প্রকল্পকে পরে আলাদা তিনটি প্রকল্পে ভাগ করা হয়। ফলে ২০০ কোটি ডলারে মোট ১৬টি প্রকল্পের ঋণচুক্তি চূড়ান্ত হয়। অধিকাংশ প্রকল্পই এখনো দরপত্র, উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা (ডিপিপি), সম্ভাব্যতা যাচাই, মূল্যায়ন অথবা অনুমোদনের মধ্যে আটকে আছে।

সূত্রমতে, বিলম্বের কারণে দ্বিতীয় ঋণচুক্তির আওতায় ১৬টি প্রকল্পের মধ্যে ১৩টিরই ব্যয় বেড়েছে। ব্যয় বৃদ্ধি পাওয়া প্রকল্পগুলোর মধ্যে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের অধীনে আছে চারটি। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশনের (বিআরটিসি) ৪৭০টি ট্রাক ক্রয় প্রকল্পে প্রাথমিক ব্যয় ধরা হয়েছিল ২ কোটি ডলার। এখন তা বেড়ে হয়েছে ২ কোটি ৮০ লাখ ডলার। একইভাবে বিআরটিসির ৬০০ বাস ক্রয় প্রকল্পের প্রাথমিক ব্যয় ধরা হয়েছিল ৫ কোটি ৫৮ লাখ ডলার। বর্তমানে এ ব্যয় বেড়ে ৭ কোটি ৪৬ লাখ ডলারে দাঁড়িয়েছে। সড়ক বিভাগের সড়ক অবকাঠামো মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণের যন্ত্রপাতি ক্রয়সংক্রান্ত প্রকল্পে প্রাথমিকভাবে ৫ কোটি ৯৮ লাখ ডলার ব্যয় ধরা হলেও এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭ কোটি ৪২ লাখ ডলারে। আশুগঞ্জ-আখাউড়া সড়ক চার লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্পটিতে শুরুতে ২৮ কোটি ৩৬ লাখ ডলার ব্যয় ধরা হয়েছিল। পরে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৩৩ কোটি ৮৭ লাখ ডলারে।

দ্বিতীয় ঋণচুক্তির আওতায় রেলপথ মন্ত্রণালয়ের তিনটি প্রকল্পের ব্যয়ও বেড়েছে। খুলনা থেকে দর্শনা রেলপথ ডাবল ট্র্যাক প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছিল প্রাথমিকভাবে ৩১ কোটি ডলার। এখন তা বেড়ে ৩৯ কোটি ডলারে পৌঁছেছে। সৈয়দপুরে রেলের কারখানায় নতুন ক্যারিজ নির্মাণ প্রকল্পের ব্যয়ও ৭ কোটি থেকে বেড়ে ৮ কোটি ৭০ লাখ ডলারে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া পার্বতীপুর থেকে কাউনিয়া পর্যন্ত মিটার গেজ রেলপথ ডুয়াল গেজ করতে প্রাথমিকভাবে ১২ কোটি ডলার ব্যয় ধরা হয়েছিল। পরে তা বেড়ে দাঁড়ায় ১৪ কোটি ডলারে।

ভারতের ঋণচুক্তির বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, ঋণচুক্তিতে থাকা প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে সময়সীমা একটি বড় বিষয়। কারণ ঋণচুক্তি যখন হয় এবং প্রকল্পগুলো নেয়া হয়, সেগুলো বাস্তবায়নে তখনকার আর এখনকার ব্যয় এক নয়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই প্রকল্প বাস্তবায়ন উপকরণের মূল্য বেড়েছে। সময়মতো এগুলো বাস্তবায়ন করতে না পারলে দেখা যাবে, ঋণের অর্থে প্রকল্পের ৬০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বাকি ৪০ শতাংশ অর্থ সংস্থানে সরকারকে অন্য ব্যবস্থা করতে হচ্ছে। এরই মধ্যে ভারতীয় ঋণে যে প্রকল্পগুলো নেয়া হয়েছে, তার অনেকগুলোরই ব্যয় বেড়েছে। আরো বিলম্ব হলে ব্যয়ও আরো বাড়বে।

বাংলাদেশ-ভারত তৃতীয় ঋণচুক্তি সই হয় ২০১৭ সালের এপ্রিলে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিল্লি সফরের সময়। চুক্তির আওতায় ৫০০ কোটি ডলারের মধ্যে ৫০ কোটি ডলার সামরিক খাতে ঋণ সহযোগিতা হিসেবে দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। বাকি সাড়ে ৪০০ কোটি ডলারের চুক্তিতে ১৭টি প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য প্রাথমিকভাবে চিহ্নিত করা হয়। পরবর্তী সময়ে সোলার নিয়ে আরো একটি প্রকল্প এ ঋণচুক্তিতে যোগ হয়। আর চট্টগ্রাম ড্রাইডক ও বুড়িগঙ্গা নদী পুনরুদ্ধার প্রকল্প বাতিল হয়ে যায়। তৃতীয় ঋণচুক্তির সাড়ে ৪০০ কোটি ডলারের ১৬টি প্রকল্পও এখনো দরপত্র, ডিপিপি, সম্ভাব্যতা যাচাই, মূল্যায়ন অথবা অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।

বাস্তবায়ন বিলম্বে দ্বিতীয় ঋণচুক্তির মতোই ব্যয় বেড়েছে তৃতীয় ঋণচুক্তির প্রকল্পেরও। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তিনটি প্রকল্পের মধ্যে দুটিরই ব্যয় বেড়েছে। এর মধ্যে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল নির্মাণ প্রকল্পে প্রাথমিকভাবে ব্যয় ধরা হয়েছিল সাড়ে ৩ কোটি ডলার। এখন তা বেড়ে হয়েছে ৭ কোটি ডলার। জামালপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল নির্মাণ প্রকল্পের ব্যয়ও সাড়ে ৩ কোটি থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ কোটি ডলারে।

বিদ্যুৎ বিভাগের বড়পুকুরিয়া থেকে কালিয়াকৈর পর্যন্ত ৪০০ কেভি বিদ্যুৎ লাইন নির্মাণ প্রকল্পে প্রাথমিকভাবে ২১ কোটি ডলার ব্যয় ধরা হয়েছিল, যা বেড়ে হয়েছে ৩৬ কোটি ডলার। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান উন্নীতকরণ প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছিল প্রাথমিকভাবে ২৮ কোটি ডলার। পরে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৩৮ কোটি ডলারে। আইসিটি বিভাগের জেলা পর্যায়ে হাইটেক পার্ক নির্মাণ প্রকল্পের ব্যয় প্রাথমিকভাবে ছিল ১৯ কোটি ডলার। সর্বশেষ তা বেড়ে হয়েছে ২০ কোটি ডলার। আর নৌ মন্ত্রণালয়ের আশুগঞ্জ বন্দর নির্মাণ প্রকল্পের প্রাথমিক ব্যয় ছিল ৩ কোটি ৩৪ লাখ ডলার। এখন তা বেড়ে ৩ কোটি ৭৬ লাখ ডলারে পৌঁছেছে।

কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া দ্বিতীয় ও তৃতীয় ঋণচুক্তির প্রতিটি প্রকল্পই সময় অনুযায়ী বাস্তবায়ন হচ্ছে বলে জানিয়েছেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. জাহিদুল হক। বণিক বার্তাকে তিনি বলেন, সরকারের প্রতিটি কাজের বা প্রক্রিয়ার একটি নির্দিষ্ট সময়সীমা রয়েছে। সে অনুযায়ীই প্রকল্পগুলো এগিয়ে চলছে। কিছু প্রকল্পে এ সময়ের ব্যতিক্রম হয়েছে। তবে সার্বিকভাবে প্রকল্প বাস্তবায়নের সময় ঠিক রয়েছে।

প্রথম ঋণচুক্তিতে থাকা প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নের বিষয়ে সময় লেগেছে জানিয়ে তিনি বলেন, প্রথম ঋণচুক্তির কিছু প্রকল্প এখনো চলছে। তবে দ্বিতীয় ও তৃতীয় ঋণচুক্তিতে এটি বলা যাবে না। ভারতের দ্বিতীয় ঋণচুক্তির ১৬টি প্রকল্পের মধ্যে ১৪টির অনুমোদন চূড়ান্তকরণ প্রক্রিয়া বাংলাদেশ ও ভারত উভয় পক্ষ থেকে সম্পন্ন হয়েছে। দুটি প্রকল্প বাংলাদেশের তরফ থেকে অনুমোদন হয়ে গেছে, ভারতের অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। ১৪টি প্রকল্প এখন মাঠ পর্যায়ে বাস্তবায়নের অপেক্ষায় রয়েছে। আর তৃতীয় ঋণচুক্তির চার-পাঁচটি প্রকল্পের বাংলাদেশ অংশের অনুমোদনের কাজ শেষ হয়েছে। ভারতের কাছে এগুলো অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে।

প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে কোনো অগ্রাধিকার রয়েছে কিনা জানতে চাইলে জাহিদুল হক বলেন, ঋণচুক্তির সব প্রকল্পই অগ্রাধিকারমূলক। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা বৈঠক করেছেন। সেখানে প্রকল্পগুলো দ্রুততম সময়ের মধ্যে বাস্তবায়নের জন্য বলা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সবাই এ নিয়ে কাজ করছেন।

  • কার্টসিঃ বনিক বার্তা/ আগস্ট ২৮,২০১৮  

এবার শহিদুল আলমের মুক্তি দাবি টিউলিপের


অরুন্ধতী রায়, নোয়াম চমস্কি, ড. মোহাম্মদ ইউনুস ও অর্মত্য সেনসহ ১১ জন নোবেলজয়ীর পর এবার ফটো সাংবাদিক শহিদুল আলমের মুক্তি দাবি করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগ্নি ও ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিক। মঙ্গলবার যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম ‘দ্য টাইমস’-এ এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে বর্তমান সরকারের আম‌লে শহিদুল আলমের আটক থাকা ‘খুবই উদ্বেগজনক এবং অবিলম্বে এই পরিস্থিতির ইতি ঘটা উচিত’ বলে মনে করেন টিউলিপ সিদ্দিক। আর সেজন্যই এ ব্রিটিশ এমপি তার খালা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে তার মুক্তি দাবি করেছেন।

দ্য টাইমস বলছে, শহিদুল আলমকে আটকের ঘটনায় আন্তর্জাতিকভাবে অনেকেই নিন্দা জানিয়েছেন। এই তালিকায় যুক্ত হলেন টিউলিপ সিদ্দিকও। এর আগে শহিদুলের কারামুক্তির আহ্বান জানিয়েছেন নোবেল বিজয়ী থেকে শুরু করে চলচ্চিত্র পরিচালক, অভিনেত্রী, শিল্পী, লেখক ও প্রভাবশালী ব্যবসায়ীরা।

প্রতিবেদনে বলা হয় টিউলিপ সিদ্দিক বলেছেন, ‘বাংলাদেশকে তার নিজের নাগরিকদের বিচারের জন্য আন্তর্জাতিক মানদণ্ড মেনে চলতে হবে। আশা করি আমাদের পররাষ্ট্র দফতর বন্ধুপ্রতীম দেশ হিসেবে বাংলাদেশের কাছে এ ব্যাপারে দৃঢ় বার্তা পাঠাবে।’

তবে টিউলিপ সিদ্দিকের এই আহ্বানের বিষয়ে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লী‌গের কোনো শীর্ষ‌ পর্যায়ের নেতা মন্তব্য কর‌তে রা‌জি হন‌নি বলেও জানিয়েছে দ্য টাইমস।

  • কার্টসিঃ বনিক বার্তা/ আগস্ট ২৮,২০১৮