— আতিকুর রহমান রুমন
তরুণ বয়সে ১৯৮৮ সাল থেকেই বগুড়ায় জাতীয়তাবাদী দলের প্রাথমিক সদস্য হিসেবে তারেক রহমান তাঁর রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড শুরু করেন এবং ক্রমান্বয়ে বিকশিত হতে থাকেন। সেই ধারাবাহিকতায় অনেক সাফল্য নির্মাণ করে যেই তিনি জাতীয় রাজনীতিতে প্রবেশ করলেন এবং ২০০১ সালের নির্বাচনে দলের বিজয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করলেন, অমনি তিনি প্রতিপক্ষের টার্গেট হয়ে গেলেন। ২০০১ সালে বিএনপির নির্বাচনী প্রচারে আসে অনেক গুণগত পরিবর্তন। সবাই এ কথা বলেছেন যে, ২০০১ সালের নির্বাচনে বিএনপি যে সমন্বিত প্রচার কৌশল অবলম্বন করেছিল অতীতে তা কখনো করেনি। আর এ প্রচার কৌশলের মুখ্য নিয়ন্ত্রক ছিলেন তারেক রহমান। স্মর্তব্য যে, ’৯৬ সালের নির্বাচনে ক্ষমতায় গিয়ে আওয়ামী লীগ পরবর্তী নির্বাচনে ক্ষমতা দখলের সব ধরনের আয়োজন পাকাপোক্ত করে রেখেছিল। কিন্তু তারেক রহমানের পলিসির কাছে শোচনীয় পরাজয় ঘটে তাদের। ২০০১ সালের ওই নির্বাচনে বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট দুই-তৃতীয়াংশের বেশি আসনে বিজয়ী হয়। এরপরই শুরু হয় তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রচারণা। পরবর্তীতে তারেক রহমান দেশব্যাপী বিএনপি ও ছাত্রদলের তৃণমূল প্রতিনিধি সভার আয়োজনসহ বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে বিএনপিকে অত্যন্ত শক্তিশালী দলে পরিণত করলে শুরু হয় আরো নানামুখী চক্রান্ত ও প্রপাগান্ডা। তারেক রহমান তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের ব্যাপারে তথ্য-প্রমাণ হাজির করার আহ্বান জানিয়েছিলেন। কিন্তু কেউ তথ্য-প্রমাণ উপস্থাপন করতে পারেনি। এরপরও মিথ্যা প্রচারণা চালিয়ে গেলে তিনি আইনের আশ্রয় নেন। বিষোদ্গারকারীদের নামে উকিল নোটিশ পাঠান। এরপর কিছুদিন চুপচাপ থাকলেও সেনা-সমর্থিত মইন-ফখরুদ্দীনের সরকারের সময়ে মহলটি আবারও গলা উঁচিয়ে মিথ্যাচার চালাতে থাকে। এই মিথ্যা প্রচারণার কাছে সত্য চাপা পড়ে যায়। আর সেই প্রেক্ষাপটে গোটা জাতিকে হতবাক করে দিয়ে ২০০৭ সালের ৭ মার্চ সেনানিবাসের শহীদ মইনুল রোডের বাড়ি থেকে রাতের অন্ধকারে তারেক রহমানকে বিনা ওয়ারেন্টে গ্রেফতার করে যৌথবাহিনী।
এখানে প্রশ্ন দাঁড়াতে পারে, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ না হয় তাঁর চমকপ্রদ উত্থানে, বিপুল জনপ্রিয়তায় শঙ্কিত হয়ে পড়েছিল, কাজেই তাঁর বিরুদ্ধে লাগাতার মিথ্যাচার ও প্রপাগান্ডা করা তাদের জন্য জরুরি হয়ে উঠেছিল। কিন্তু ১/১১-এর সরকার তাঁর বিরুদ্ধে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছিল কেন? একটু খেয়াল করলেই এর উত্তর মিলবে। ২০০৬ সালের শেষের দিকে লগি-বৈঠার তাণ্ডবের কথা নিশ্চয়ই অনেকের স্মরণ আছে। লীগনেত্রী বায়তুল মোকাররমের ওই সভায় কর্মীদের লগি-বৈঠা নিয়ে হাজির হতে বলেছিলেন। তারপর যে পৈশাচিক হত্যাকাণ্ড সেখানে ঘটালো গোটা বিশ্ব তাতে হতভম্ব হয়ে গিয়েছিল। মানুষ যেমনি করে পিটিয়ে সর্প হত্যা করে তেমনি নির্মমতায় প্রকাশ্য রাজপথে লগি-বৈঠা দিয়ে তারা পিটিয়ে পিটিয়ে প্রতিপক্ষ কর্মীদের হত্যা করেছে, মৃতদেহের উপর দাঁড়িয়ে উল্লাস করেছে। এমন নারকীয় ঘটনার ধারাবাহিকতায় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ঘাড়ের ওপর সওয়ার হয়েছে ১/১১-এর জরুরি সরকার। সেই জরুরি সরকারের চাপে লীগনেত্রী যখন বিদেশে যাচ্ছিলেন তখন বিমানবন্দরে কর্মীদের উদ্দেশে বলেছিলেন, এই সরকার আমাদের আন্দোলনের ফসল, এদের সব কাজের বৈধতা দেবো আমরা। পরবর্তীতে মইন-ফখরুদ্দীনের সরকারের গতিবিধিও দেশের মানুষ পর্যবেক্ষণ করেছে। তাতে স্পষ্ট হয়েছে, জিয়া পরিবারের বিরুদ্ধে আক্রোশ আর তারেক রহমানকে প্রাইম টার্গেট করার ঘটনা আকস্মিক নয়। লগি-বৈঠার তান্ডব, ১/১১-এর অবৈধ সরকার, তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র একই সূত্রে গাঁথা এবং দীর্ঘমেয়াদি। এটি দেশী-বিদেশী চক্রের সম্মিলিত সিদ্ধান্ত ও কারসাজি। কারণ তারা বুঝে গিয়েছিল, তারেক রহমানের দেশপ্রেম ও গণমানুষের প্রতি দরদ প্রশ্নাতীত। তাঁর আধুনিক চিন্তা, মেধা, শ্রম বাংলাদেশকে সমৃদ্ধ করতে পারে। স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও দেশের স্বার্থ তাঁর নেতৃত্বেই অটুট থাকবে। নেতৃত্ব বজায় রাখার জন্য কোনো শক্তির কাছে তিনি দেশের স্বার্থ বিক্রি করবেন না। অন্য কোনো দেশে তাঁর নাগরিকত্ব নেই এবং বিদেশী কোনো শক্তির কৃতজ্ঞতাপাশে তিনি আবদ্ধ নন। সে কারণে তাঁর নেতৃত্বের বাংলাদেশ অন্য কোনো শক্তির আজ্ঞাবহ হবে না। অতএব, রুখে দাও তারেক রহমানকে। এক-এগারোর নেপথ্য সঞ্চালক কুশীলবরাও তাই উঠেপড়ে লেগেছিল তারেক রহমানকে নিঃশেষ করে দিতে। তাদের ইঙ্গিতে ও মদদে সিন্ডিকেটেড পত্রিকাগুলো প্রতিদিনই একাধিক ‘টেবিল মেকিং’ প্রতিবেদন তৈরি করে, যাচ্ছেতাই লিখে জনমনে বিভ্রান্তি ছড়াতে থাকে। আর ১/১১-এর সরকার দিয়ে ১৩টি বানোয়াট মামলা, যার একটিতেও তারেক রহমান সরাসরি আসামি নন। কারণ, তিনি তো সরকারি কোনো পদেই ছিলেন না। তাহলে? মামলাগুলোর কথিত আসামিদের ধরে বেঁধে পিটিয়ে স্বীকারোক্তি আদায়ই ছিল তারেক রহমানকে ফাঁসানোর অস্ত্র। অনেক কোশেশ করেও সেই মামলাগুলো টিকিয়ে রাখতে পারেনি ১/১১-এর সরকার। ১৩টির মধ্যে ১১টিই উচ্চ আদালতের রায়ে স্থগিত হয়ে যায়। ‘দিনকাল’ সংক্রান্ত মামলাটিও খারিজ হয়ে যায়। একটি মামলা বিচারাধীন থাকে। সেখানেও তিনি মূল আসামি নন। তাঁর কোনো দোষ প্রমাণিত হয়নি। অথচ রিমান্ডে নিয়ে তাঁর ওপর যে বর্বরতম আচরণ করা হয়েছে তা নজিরবিহীন, নিষ্ঠুর, মানবতার চরম অবমাননা। তাঁর মেরুদন্ডের হাড় ভেঙ্গে দেয়া হয়েছে, কাঁধের হাড়েও ফ্রাক্চার করা হয়েছে, হাঁটুর সংযোগস্থলের লিগামেন্ট ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে। তাঁকে যে দুনিয়া থেকে নিশ্চিহ্ন করার অভিসন্ধি নিয়েই বারবার রিমান্ডে নেয়া হয়েছে, তা অত্যন্ত পরিষ্কার।
কিন্তু নব্য উমিচাঁদ, রায়দুর্লভ, রাজবল্লভ, জগৎশেঠ, মীরজাফরদের সেই অভিসন্ধি যে সফল হবার নয়। দুর্দিনে যে দুঃস্থ-অসহায় মানুষগুলোর পাশে তিনি দাঁড়িয়েছিলেন, যে কৃষক-মজুর-শ্রমিকের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে তিনি স্বয়ম্ভর বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন, যে মেধাবী দরিদ্র ছাত্রদের গোপনে সাহায্য করে তাদের মর্যাদাবান নাগরিক হিসেবে গড়ে উঠতে অবদান রেখেছেন, যেসব কৃষিবিদ-টেকনোক্র্যাট-বিজ্ঞানী-উদ্ভাবকদের উৎসাহ ও পরামর্শ দান করে জাতির সমৃদ্ধ ভবিষ্যৎ নির্মাণের মনছবি এঁকে দিয়েছিলেন তাদের মর্মবেদনা, কান্না, ফরিয়াদ, নিরন্তর আশীর্বাদ ও দোয়া তো বৃথা যেতে পারে না। তাই বুঝি বিচারকের বিচারক মহান রাব্বুল আ’লামীন তাঁর অন্তরে এমন শক্তি দিয়েছেন যে, প্রায় পঙ্গুদশা থেকেও তিনি আজও দেশবাসীর সেবা আর সুখী-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার সংকল্পে অটল। মনে পড়ে ২০০৮ সালে অত্যাচার-নিষ্পেষণ-নিগ্রহের মর্মান্তিক চিহ্ন বহন করেই পীড়িত অবস্থাতেও আদালতে নির্ভীক কণ্ঠে উচ্চারণ করেছিলেন মানুষের উন্নয়নের জন্য, দেশের প্রবৃদ্ধির জন্য যেসব কাজ তিনি করেছেন, তা অস্বীকার করবেন কেন? তা যদি অপরাধ হয় তাহলেও সে কর্তব্য সম্পাদনে কেউ তাঁকে বিরত করতে পারবে না। এরপর প্রায় এক যুগ অতিক্রান্ত হতে চলেছে। তিনি আগের চেয়ে অনেকটাই সুস্থ। হয়তো পুরোপুরি সুস্থ কোনোদিনই হবেন না। কিন্তু তাঁর প্রতিজ্ঞা থেকে একচুলও বিচ্যুত হননি। সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার তাবৎ পরিকল্পনা আর ছক তিনি তৈরি করেই চলেছেন। আর পরিচিত জনদের কাছে তুলে ধরছেন ঋজুকণ্ঠ ‘তিক্ত অতীত ভুলে এখন সামনের দিকে এগোতে চাই। একদিন আমি ফিরব। বাংলাদেশ নিয়ে আমার স্বপ্নের রূপায়ণ ঘটাবো।’ দেশপ্রেম আর জনপ্রিয়তাই তাঁর কাল হয়ে দাঁড়িয়েছিল। কিন্তু সৎ চিন্তা আর মহৎ কর্ম তো কখনো বিলীন হয় না। কালের কপোলতলে শুভ্র-সমুজ্জ্বল হয়ে বিরাজ করে, জ্যোতি ছড়ায়। তাঁর নেতৃত্বে সেই জ্যোতির্ময় বাংলাদেশ দেখার প্রতীক্ষায় রয়েছে এখন ১৬ কোটি মানুষ।
গ্রীক বীর মহামতি আলেকজান্ডার দিগ্বিজয়ে বের হয়ে এই উপমহাদেশের খাইবার গিরিপথ পর্যন্ত এসেছিলেন। সেখানে তাঁর সহকর্মীর উদ্দেশে আঙ্গুল উঁচিয়ে বলেছিলেন, ‘কী বিচিত্র এই দেশ সেলুকাস!’ বিচিত্র কেন? সেটা কি ভৌগোলিক বৈশিষ্ট্যের কারণে? ঋতু বৈচিত্র্যের কারণে? নাকি মানুষের স্বভাবগত বৈপরীত্বের কারণে? সেটা ইতিহাসবেত্তাদের গবেষণার বিষয়। তবে ইতিহাস থেকে আমরা আরো জানি, এক মোগল সম্রাট নৌবিহারে বাংলা মুলুক পর্যন্ত এসেছিলেন। এখানকার নদীর জোয়ার-ভাটা দেখে তিনি ভড়কে গিয়েছিলেন। তাই সঙ্গী-সাথীদের এই বলে সতর্ক করেছিলেন যে দেশের ভূমি সকালে একরকম, বিকেলে আরেক রকম, সে দেশের মানুষের মনের গতিও এক এক সময় এক এক রকম হতে বাধ্য। অবশ্য আমরা জানি, ভিনদেশীরা যে যেভাবেই ব্যাখ্যা করুন, আমাদের আমজনতা চিরকালই সহজ-সরল। তারা যেমন সইতে জানে, তেমনি লড়তেও জানে। বিভেদের বীজ তাদেরকে সাময়িক দিগ্ভ্রান্ত করলেও চরম বিপর্যয়ে তারা ঠিকই ইস্পাতকঠিন ঐক্য গড়ে তোলে এবং শত্রুর বিরুদ্ধে বজ্র হুঙ্কার দিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে। ইতিহাসে এ সত্য বার বার প্রমাণিত হয়েছে। কিন্তু কিছু স্বার্থান্বেষী কুচক্রী বার বার বিশ্বাসঘাতকতা করে আমাদের সোনালী ভবিষ্যৎকে অন্ধকারে ঢেকে দিয়েছে। পলাশী ট্রাজেডির ঘটনা তারই একটি জাজ¦ল্যমান দৃষ্টান্ত। বিশ্বাসঘাতকতার জন্য আজ আড়াইশ’ বছর পরও যিনি সর্বাধিক নিন্দিত ও ধিক্কৃত সেই মীরজাফর তো ছিল রক্ত-মাংসে ভিনদেশী। কিন্তু রায়দুর্লভ, উমিচাঁদ, রাজবল্লভ, জগৎশেঠ এরা তো নেটিভ ছিল! এদের সম্মিলিত চক্রান্তের কারণেই কি ক্ষমতালোলুপ মীরজাফর পলাশীর আরকাননে চরম বিশ্বাসঘাতকতা করার স্পর্ধা পায়নি? এদের মিলিত ষড়যন্ত্রই কি বাংলার স্বাধীনতা ভিনদেশী বেনিয়া ইংরেজের পদতলে নৈবেদ্য হয়নি? সেই রায়দুর্লভ, উমিচাঁদ, রাজবল্লভ, জগৎশেঠদের প্রেতাত্মারা যে এদেশে কিছু স্বার্থগৃধ মানুষের ওপর ভর করেছে, তারেক রহমানের ঘটনা পর্যালোচনা করলে তা পরিষ্কার বুঝা যায়।
সেনা সমর্থিত ১/১১ সরকারের নিষ্ঠুর নির্যাতনের শিকার তারেক রহমান আজও অর্ধপঙ্গুত্ব দশা নিয়ে বিদেশে চিকিৎসায় রত। ২০০৯ সালে লন্ডনে প্রখ্যাত সাংবাদিক শওকত মাহমুদের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে অভিমানসৃত কণ্ঠে বলেছিলেন, “কেন আমার ওপর এই অমানুষিক নির্যাতন হলো? কত তদন্তই তো হলো, কিছুই তো প্রমাণ হলো না। অথচ অত্যাচারের কারণে সারাজীবন আমাকে পঙ্গুত্ব আর অসহ্য বেদনা বয়ে বেড়াতে হবে.... আমার বাবা জিয়াউর রহমান গ্রামে-গঞ্জে অবিরাম হেঁটে হেঁটে মানুষের মাঝে থাকার রাজনীতি করতেন। আমিও শুরু করেছিলাম সেই হাঁটা, বলুন তো, কেন ওরা আমার মেরুদন্ড ভেঙ্গে আমাকে স্থবির করতে চেয়েছিল? সেই হাঁটা, সেই রাজনীতি বন্ধ করতে?” উপলব্ধি যথার্থ। এ দেশ যদি স্বয়ম্ভর ও সমৃদ্ধ হয়ে ওঠে, তাহলে বাংলাদেশের গরিবি দশাকে পুঁজি করে যারা এ দেশকে নানাভাবে গ্রাস করতে চায় তাদের অবস্থা কী দাঁড়াবে? তারেক রহমানের মতো ডাইনামিক নেতা যদি জনপ্রিয়তার মাঝে অবিসংবাদিত নেতায় পরিণত হন, আর তাঁর দল যদি সুশৃঙ্খল আর সুসংগঠিত হয়ে ক্ষমতামঞ্চে দীর্ঘস্থায়ী হয়, তাহলে যেসব স্বার্থবাদী মানুষ ও দল এদেশকে লুটেপুটে খাওয়ার ফন্দি-ফিকিরে মত্ত তারা কোথায় যাবে? আধুনিক বাংলাদেশের স্থপতি স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ওপর যে কারণে কুচক্রীরা হিংসার থাবা বিস্তার করেছিল, ঠিক একই কারণে অমিয় সম্ভাবনাময় রাজনীতিক তারেক রহমানকে নিশ্চিহ্ন করতে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল তারা নানা কৌশলে, কখনো প্রচার-প্রপাগান্ডা করে, কখনো আদিম হিংসার শক্তি প্রদর্শন করে তারা। স্বল্পতম সময়ের মধ্যে তরুণ তারেক রহমান যে সাংগঠনিক প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন, সততা ও ন্যায়পরায়ণতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন, গণমানুষের দোরগোড়ায় গিয়ে তাদের অন্তর জয় করে বিপুল জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন, সর্বোপরি স্বয়ম্ভর বাংলাদেশ গড়তে অক্লান্ত পরিশ্রম করে দেশপ্রেমের যে উজ্জ্বল পরাকাষ্ঠা দেখিয়েছেন সত্যিই তার তুলনা মেলা ভার। তাঁর এই চমকপ্রদ উত্থান আর ধারাবাহিক সাফল্যই তাঁকে করে তুললো প্রতিপক্ষের চক্ষুশূল। প্রতিপক্ষ বলতে যে শুধু রাজনৈতিক বা দলীয় প্রতিপক্ষ তা নয়। যারা এই সমাজের কল্যাণ চায় না তারা, যারা এই দেশের গৌরবময় উত্থান চায় না তারা সবাই একাট্টা হয়ে নেমে পড়লো অপপ্রচারে, গীবত আর জঘন্য মিথ্যাচারে। কত অলীক কাহিনী যে ফাঁদা হলো, ফিল্মী গল্পের মতো কতো কেসসা যে বানানো হলো তার ইয়ত্তা নেই। একশ্রেণীর মিডিয়া কোনকিছু না বুঝেই কিংবা অন্য কোনো কারণে প্রলুব্ধ বা প্রভাবিত হয়েই সেই প্রপাগান্ডায় যোগ দিল আর ফুলে-ফেঁপে সেগুলো প্রচার করে বিকৃত মুখ কিংবা হীন স্বার্থ চরিতার্থ করলো। বিস্ময় আর দুঃখের সাথে বলতে হয়, যারা এক সময় তারেক রহমানের কাছে সুবিধা সন্ধান করতে গিয়েছিল, তাঁর আশীর্বাদে মিডিয়ার মালিক বা হর্তাকর্তা সেজেছে তারাও ওই মিথ্যাচারে বাতাস লাগিয়ে শত্রুতা উস্কে দিয়েছিল।
- লেখক : কলামিস্ট, স্পেশাল করসপনডেন্ট, দৈনিক দিনকাল