Search

Tuesday, November 8, 2016

আবার বেপরোয়া আওয়ামী লীগ

হারুন উর রশীদ স্বপন / ডয়চে ভেলে
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে ৩০শে অক্টোবর সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার পর সারাদেশেই সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা হচ্ছে৷ ঐ ঘটনার পর অন্তত আরো ছয়টি হামলার ঘটনা ঘটে সারাদেশে৷ এছাড়া নাসিরনগরে ৩০শে অক্টোবরের হামলার পর আরো দু'দফা হামলার ঘটনা ঘটে৷ সেই হামলার ঘটনায় এটা স্পষ্ট যে, এর সঙ্গে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরাও জড়িত৷ এই হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগে নাসিরনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-প্রচার সম্পাদক আবুল হাসেম, হরিপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ফারুক আহমেদ ও চাপৈরতলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সুরুজ আলীকে দল থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে৷ তারা হামলার দিন সকালে কর্মীদেরসহ লাঠিসোটা নিয়ে ধর্ম অবমাননার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সমাবেশে অংশ নেন৷ সেই সমাবেশ থেকেই হামলা চালানো হয়৷
তবে তাদের দল থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হলেও এখনো তাদের আইনের আওতায় নেয়া হয়নি৷ শুধু তাই নয়, নাসিরনগরের সংসদ সদস্য এবং মৎস্যমন্ত্রী ছায়েদুল হক এখনো তাদের প্রটেকশন দিয়ে যাচ্ছেন৷ মঙ্গলাবারও তিনি নাসিরনগরে এক সমাবেশে বলেন, ‘‘তিলকে তাল করা হয়েছে, মাত্র চার-পাঁচটি বাড়িতে হামলা হয়েছে৷''
এদিকে ঝিনাইদহে ৬৫ বছরের এক মুক্তিযোদ্ধাকে নির্যাতনের ভিডিও এখন সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ভাইরাল৷ ঐ মুক্তিযোদ্ধাকে নির্যাতনের অভিযোগও স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতাদের বিরুদ্ধে৷ মুক্তিযোদ্ধার নাম মোক্তার আহমেদ মৃধা৷ ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার আবাইপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান তিনি৷ জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য৷ ১৮ই অক্টোবর সন্ধ্যার দিকে শৈলকুপার কবিরপুরে জাকির মেডিকো নামে একটি ওষুধের দোকানের সামনে প্রথমে তার ছেলে খোরশেদ মৃধাকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে জখম করা হয়৷ এরপর ভিতরে বসা মুক্তার আহমেদ মৃধাকে নির্মম নির্যাতন করা হয়৷ তারা এখন ঢাকায় চিকিৎসাধীন আছেন৷
আহত মুক্তিযোদ্ধা মোক্তার আহমেদ মৃধা ডয়চে ভেলেকে জানান, ‘‘আওয়ামী লীগ নেতা ও স্থানীয় সংসদ সদস্য আব্দুল হাইয়ের ক্যাডাররা আমার ওপর হামলা চালায়৷ আমার অপরাধ আমি টেন্ডার জমা দিয়েছিলাম৷'' তিনি জানান, এখন হামলাকারীরা সবাই আদালত থেকে জামিন নিয়ে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে৷
তিনি আক্ষেপ করে আরো বলেন, ‘‘মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে এই নির্যাতনের শিকার হওয়ার আগে আমার মরে যাওয়া ভালো ছিল৷'
এদিকে রবিবার পুরনো ঢাকা অবৈধ পলিথিন কারখানা নিয়ে রিপোর্ট করতে দিয়ে হামলার শিকার হয়েছেন যমুনা টেলিভিশনের সাংবাদিক শাকিল হাসান এবং ক্যামেরাম্যান শাহীন আলম৷ শাকিল হাসানের গায়ে  কোরোসিন ঠেলে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টা করা হয়৷ শাহীন ডয়চে ভেলের কাছে অভিযোগ করেন, ‘‘হামলাকারী বলে আমরা আওয়ামী লীগ করি, আওয়ামী লীগ জন্ম দেই৷ সাংবাদিক মারলে কিছু হয় না৷''
তিনি আরো অভিযোগ করেন, ‘‘ঘটনাস্থল থেকে থানা পায়ে হেঁটে ১০ মিনিটের পথ হলেও পুলিশ আসে দেড় ঘণ্টা পর৷ আর এখনো অপরাধীরা আটক হয়নি৷''
এছাড়া ঢাকার গুলিস্তানে প্রকাশ্যে অস্ত্র উঁচিয়ে গুলি করা দুই ছাত্রলীগ নেতা সাব্বির রহমান ও আশিকুর রহমান দুই সপ্তাহেও গ্রেপ্তার হয়নি৷ সংবাদমাধ্যমে লেখালেখির কারণে তাদের সংগঠন থেকে বহিষ্কার এবং তাদের বিরুদ্ধে মামলা হলেও তারা ধরা-ছোঁয়ার বাইরে রয়েছে৷ জানা গেছে, তারা নাকি এখনো এক প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতার ছত্রছায়ায় আছে৷

No comments:

Post a Comment