Search

Monday, January 1, 2018

Rights situation remains alarming

ASK sees continuing violation of human rights in last 4 years

Rafiul Islam




The overall human rights situation in the country was as alarming in the just concluded year as it had been in the past three years, according to rights body Ain o Salish Kendra. Incidents of extrajudicial killings, enforced disappearances and violence against women and children persisted throughout last year.

Though the country witnessed a continuation of economic and socio-cultural development, there wasn't much progress on civic and political fronts, according to an annual report released yesterday by ASK at the Dhaka Reporters' Unity.

The report, based on media reports and ASK's own investigations, shows an alarming overall state of the country's human rights situation. And Bangladesh had to pay for it too.

Former National Human Rights Commission chairman Prof Mizanur Rahman told The Daily Star that it is not possible to have sustainable development without protection of human rights.

“True development is human development. Human development is not possible without respecting human rights,” he added.

The Dhaka University Prof also said “The state must be responsive to the needs and to the dignity of its citizens…there has to be strong bond between the state and citizens. The bond can only be through respect for human rights” 

The Daily Star analysed ASK's reports of the previous three years and found the rights body was advocating for improvement of the human rights situation coming up with almost same findings each year. 

ENFORCED DISAPPEARANCE AND ABDUCTION
Though the number of incidents of abduction and enforced disappearance decreased in last year, people of different professions fell victim of it, according to ASK. Whereas political leaders and activists were mainly the victims in previous years, this year people from all walks of life were targets.

“It is alarming and a matter of grave concern that common people, including a teacher and a journalist, went missing last year. We previously thought that the non-partisan people should have no fear of it but those days are gone,” said Sheepa Hafiza, executive director of ASK, while disclosing the findings.

According to the report, at least 60 people fell victim to abduction or enforced disappearances last year.

Bodies of two such victims were recovered later, eight were claimed to have been arrested by law enforcers, seven returned home while the rest are still missing.

The 60 people include former Bangladesh ambassador to Vietnam Maroof Zaman, North South University teacher Mubashar Hasan, journalist Utpal Das and businessman Aniruddha Kumar Roy.  The ambassador is one of those who still remain missing. 

EXTRA-JUDICIAL KILLINGS
In 2017, at least 162 people were killed in “crossfire”, “shootout”, and “gunfight” with law enforcement agencies or while they were in their custody, a decrease compared to 195 people in the previous year. The number of such deaths was 192 in 2015 and 128 in 2014.
ASK demanded the formation of an independent commission to investigate incidents of enforced disappearances, abductions, mysterious disappearances and extra-judicial killings.

The National Human Rights Commission is yet to find an answer for the relatives of victims of 154 incidents of enforced disappearances, custodial torture and deaths, extrajudicial killings and other rights violation from 2012 till last year. It did not get investigation reports on those incidents even after writing as many letters.

RAPE AND VIOLENCE AGAINST WOMEN AND CHILDREN
The report said the number of rape, sexual assaults and incidents of violence against women were higher in 2017 than the last couple of years. A total of 818 women were raped across the country, among which 47 were killed and 11 committed suicide.

A total of 255 women were victims of sexual assaults. Among those, 12 committed suicide, and three women among 13 were killed when they tried to protest against the crime.

A total of 303 women became victims of violence over dowry, among which 145 were killed and 10 committed suicide. Also, 441 women were victims of domestic violence, including 270 who were murdered by their in-laws and 34 were killed by their own family members. 57 victims of such crimes committed suicide.

Besides this, 10 women became victims of fatwa, 43 house helps were tortured among whom 26 died. 32 women were victims of acid attacks which saw the death of one.

ATTACK ON MINORITY COMMUNITY
A total of 258 cases of attacks on minorities, including those against Hindu communities, took place this year. The number was 391 in 2016, 317 in 2015 and 1201 in 2014. In 2014, the general elections were held and the country saw the highest number of attacks on minority communities.

The incidents included attacks on and vandalism of 212 Hindu idols, 45 houses and 21 businesses of people from the Hindu community across the country. One Narayan Chandra Das in Hatiya of Noakhali was killed over extortion.

FREEDOM OF EXPRESSION
Freedom of expression is a constitutional right but it was violated on several occasions, ASK said, adding that government vigilance on different mass and social media under the controversial section 57 of the  Information and Communication Technology (ICT) Act continued this year.

The rights body observed that the proposed Digital Security Act also includes regulations similar to section 57 of the ICT Act, which hinders the freedom of expression of people.

A total of 54 people were sued under section 57 of ICT Act in 2017, it said.

REPRESSION OF JOURNALISTS
A total of 122 journalists across the country faced repression and assault by law enforcers, influential people, local representatives, criminals, political activists and government officials, while performing their duties last year, which was higher than that of 117 in 2016. 
  •  Courtesy: The Daily Star (slightly abridged),
    January 01, 2018


গুম আতঙ্কে বছরজুড়ে অনেকেই নির্ঘুম

শেখ সাবিহা আলম/ প্রথম আলো 


গত কয়েক বছরের মতো এ বছরও গুম আতঙ্ক পিছু ছাড়েনি। শুরুর দিকে আতঙ্কে ছিলেন চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা। ক্রমে রাজনীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের মধ্যে সেই ভীতি ছড়ায়। এ বছরের শেষ ভাগে এসে গুমের তালিকায় যুক্ত হয় ধনাঢ্য ব্যবসায়ী, রাষ্ট্রদূত, চিকিৎসক, শিক্ষক ও সাংবাদিকের নাম।


মানবাধিকার সংস্থাগুলোর হিসাবে এ বছরের জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত গুমের শিকার হয়েছেন কমপক্ষে ৭৫ জন। তাঁদের মধ্যে পরে ৩৫ জনের হদিস পাওয়া যায়, উদ্ধার হয় ৭ জনের মৃতদেহ। এখনো নিখোঁজ ৩৩ জন। যে ৩৫ জনের হদিস পাওয়া গেছে তাঁদের মধ্যে আবার কমপক্ষে ১৬ জনকে পরে আদালতে উপস্থাপন করেছে পুলিশ বা র‍্যাব। আদালতকে বলা হয়েছে, এক দিন আগে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

প্রতিটি ঘটনায় স্বজনেরা গুমের যে বর্ণনা দিয়েছেন, তা অভিন্ন। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়ে তাঁদের তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে অবশ্য ‘অজ্ঞাত অপহরণকারীরা’ তুলে নিয়ে গেছে বলে অভিযোগ করেছে পরিবারগুলো। আত্মীয়স্বজনেরা থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন বা অপহরণের মামলা করেছেন। তাঁরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সবগুলো শাখায় ধরনা দিয়েছেন। গিয়েছেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশন ও অন্যান্য মানবাধিকার সংগঠনগুলোয়। সংবাদ সম্মেলন করে সরকারের কাছে স্বজনকে ফিরে পাওয়ার আবেদন জানিয়েছেন।

গুম হওয়ার পরপর পুলিশ-র‍্যাব ‘দেখছি’, ‘খুঁজছি’, ‘আন্তরিকভাবে চেষ্টা করছি’ এমন শব্দ ব্যবহার করে ভুক্তভোগী পরিবারগুলোকে আশ্বস্ত করার চেষ্টা করেছে। জাতীয় মানবাধিকার কমিশনও চিঠি দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে। একসময় সব পক্ষের উদ্যোগ থিতিয়ে গেছে। পরিবারগুলো ব্যক্তিগতভাবে স্বজনের ফিরে আসার অপেক্ষা করেছে।

২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে-পরে যাঁরা গুম হয়েছিলেন, তাঁদের স্বজনেরা এ বছর কমপক্ষে তিনটি সমাবেশ করেছেন। দেশীয় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে ওই সমাবেশগুলোর খবর ফলাও করে প্রচার হয়েছে।

ফিরে আসা দুজন অপহরণকারীদের সম্পর্কে বলেছেন, তাঁরা পেশাদার। জামালপুরের সরিষাবাড়ির মেয়র রুকনুজ্জামান রুকন ও ধনাঢ্য ব্যবসায়ী অনিরুদ্ধ রায় দুজনেরই মত ছিল এমন। রাষ্ট্রদূত মারুফ জামান নিখোঁজের ঘটনায় তাঁর মেয়েরাও এ কথা বলেছেন। ছোট মেয়েকে বিমানবন্দর থেকে আনতে যাওয়ার পথে তিনি নিখোঁজ হন। তাঁর গাড়িটি পাওয়া যায় ‘তিন শ ফুট’ নামক সড়কের ওপর। বাসা থেকে যাঁরা মারুফ জামানের ল্যাপটপ, সিপিইউ ও স্মার্টফোন নিয়ে যান, তাঁরা সিসিটিভি ক্যামেরা এড়ানোর কৌশল খুব ভালোভাবে জানেন বলেও জানায় মারুফ জামানের পরিবার। কিন্তু এই ‘পেশাদার অপহরণকারী’ কারা, সে সম্পর্কে কখনোই কিছু জানা যায়নি।

এ বছরের জুলাই মাসে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ‘উই ডোন্ট হ্যাভ হিম: সিক্রেট ডিটেনশনস অ্যান্ড এনফোর্সড ডিজঅ্যাপিয়ারেন্সেস ইন বাংলাদেশ’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশ করে। ওই প্রতিবেদনে সংস্থাটির এশিয়া অঞ্চলের পরিচালক ব্র্যাড অ্যাডামস বলেন, ‘রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার ঘটনাগুলো তথ্য-প্রমাণসমৃদ্ধ, কিন্তু তারপরও সরকার আইনের শাসনের দিকে না তাকিয়ে ঘৃণিত এ কাজটি করে চলেছে।’

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলো বরাবর অভিযোগ অস্বীকার করে গেছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, যাঁদের ব্যাপারে বলা হয়েছে, তাঁরা নানা কারণে স্বেচ্ছায় আত্মগোপন করেছেন। অবশ্য বছরের শেষার্ধে নিখোঁজদের ফিরে আসার পর তিনি বলেছেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতার কারণেই তাঁদের ফিরে পাওয়া সম্ভব হয়েছে।

তবে বছর শেষে রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ এবং পরে ফিরে আসা সাংবাদিক উৎপল দাস ও নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মোবাশ্বার হাসানের পরিবার বলেছে, মুক্তিপণের জন্য তাঁদের অপহরণ করা হয়েছিল। ধনাঢ্য ব্যবসায়ী অনিরুদ্ধ রায় বলেছেন, তাঁর ব্যবসায়িক অংশীদার তাঁকে অপহরণ করিয়েছেন। যদিও আগে পরিবারগুলো মুক্তিপণের বিষয়ে গণমাধ্যমকে কিছু বলেনি।

বলতে গেলে কেউই তাঁদের অজ্ঞাতবাস সম্পর্কে মুখ খোলেননি। তাঁরা সংবাদমাধ্যমকে যথাসম্ভব এড়িয়ে গেছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও মত প্রকাশে ছিলেন সাবধানী। স্বামী রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হওয়া ও ফেরার তিন বছর পর এ বছরের আগস্টে একটি সেমিনারে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) নির্বাহী পরিচালক সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। তিনি বলেন, ‘যদি একটা অপহরণের ঘটনাই হতো শেষ অপহরণের ঘটনা, তাহলে অবশ্যই যাঁরা অপহৃত হয়েছেন, তাঁরা এবং তাঁদের পরিবার কথা বলতেন। একটা অপহরণের ঘটনা সারতে না সারতেই যদি দেখেন ৭ জন অপহরণ হয়েছেন, তা-ও আবার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে দিয়ে এবং এমন পর্যায় থেকে, যাকে আপনি ফেলে দিতে পারবেন না...এটা তো আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কালচারের ভেতরে ঢুকে গেছে।’


  • ডিসেম্বর ৩০, ২০১৭  


Sunday, December 31, 2017

No relief from high food prices in 2018

Sohel Parvez/ The Daily Star  

December 31, 2017 




Inflation is likely to edge upwards in 2018 upon food price rises, according to economists, in a projection that is bound to cast a gloom upon the low-income families.

“The economy has been overheating with actual growth exceeding the potential growth rate,” said Zahid Hussain, lead economist of the World Bank's Dhaka office.

This has been compounded by supply shocks due to recurring floods, increase in import prices and exchange rate depreciation of late. “Consequently, given an expansionary fiscal policy, inflation can be expected to rise in 2018 as global commodity prices pick-up further.”

The prediction comes at a time when inflation is on the rise: it rose to 6 percent in October this year from 5 percent in December 2016, driven mostly by food price spiral.

Inflation needs to be brought down to 5 percent or less to make the lives of the low-income group bearable and to keep the economy competitive internationally, he said. Subsequently, with the view to preventing fuelling excess demand in the economy, Hussain advised the central bank to continue with the cautionary monetary policy it had announced in July for the rest of the fiscal year. 

Some 5.2 lakh people have fallen into poverty due to the rise in the price of the staple rice this year, according to Selim Raihan, professor of the Dhaka University's department of economics.

The retail price of a kilogram of coarse rice, which was Tk 35.84 in January this year, hit Tk 47.78 in September for crop damage from recurrent floods and depleted public stocks, according to the Food and Agriculture Organisation. Rice production will decline in Bangladesh in fiscal 2017-18, he said citing estimates from FAO and the US Department of Agriculture.

“My estimates using economic models show that there is likely to be a rise in headcount poverty rate by 0.32 percentage points due to the rice price rise this year,” said Raihan, also the executive director of South Asian Network on Economic Modelling.

Subsequently, he called for forming a 'Rice Policy' with respect to production, import, supply management and strategic agreements with the rice exporting countries.

Apart from inflation, the possible revival of political unrest in the run-up to the national election at the beginning of 2019, the deepening of the Rohingya crisis and further weakening of corporate governance in the banking sector pose risks to the economy in 2018, Hussain said.

In another development this year, the pace of poverty reduction and job creation slowed down. “However, the pace of poverty reduction has slowed and income inequality has increased, particularly in rural areas.”

The development is not entirely unexpected as the challenge of poverty reduction generally tends to get tougher the more poverty is reduced, the WB economist said. “It is a wake up call against complacence.”

The lives of the general public in Bangladesh are affected on the economic front critically by the availability of jobs and the trends in consumer prices. “All indications are that job creation has slowed significantly in recent years,” Hussain added.

The flood, which affected 34 of the 64 administrative districts of Bangladesh, imposed economic hardship on millions of farmers and households. “Even though rice prices were relatively high throughout the year, most of it is likely to have been appropriated by the middlemen rather than the farmers,” Hussain said.

Both the economists also expressed concerns about the performance of the banking sector.

“We are highly concerned about the rise in scams in the banking sector and the non-performing loans. These are reflections of weak regulation, political patronage and a lack of vision,” Raihan said.

The Banking Companies (Amendment) Act-2017 that has allowed four family members on a bank's board for nine consecutive years will increase the sector's fragility even more.

“There is a need for a political will, proper regulation, empowering the Bangladesh Bank and speedy trial of financial crimes,” Raihan added. 

Hussain said the banking sector is ailing badly and moved in the wrong direction in 2017.

He cited the BB's Financial Stability Report 2016 that was released in July this year to further his point.

The report revealed that when exposed to various credit shocks, 23 out of 49 banks would become under capitalised mainly due to defaults by large borrowers.

“This was a clear and intellectually honest official admission of the true gravity of Bangladesh's banking sector.”

A whopping 10.7 percent of the banking sector's total outstanding loans are reportedly in the default zone, Hussain said.

“But the figure would increase very significantly once restructured, rescheduled loans and write-offs are factored in.”

Bailouts of banks using taxpayers' money continued this year in spite of the fact that bailouts have time and again proven to be ineffective, Hussain said. “The authority's lack of readiness to seriously recognise and address root causes behind the banking sector is most worrisome,” he added.

- (Slightly abridged) 

Gana Forum demands govt. accountability


Gana Forum leaders on Friday blamed the incumbent cabinet and parliament members for destabilising the country’s economy and social security.

Addressing a discussion at Institute of Diploma Engineers Bangladesh auditorium in Dhaka, the party’s central leaders urged people to get united against the misrule. 

Although, the party chief Dr Kamal Hossain said he would prefer peaceful dialogue with the concerned authorities in search of accountability and good governance.

Chair of the discussion Kamal Hossain said the finance minister should reveal the name of perpetrators who took away Bangladesh’s reserve in New York and also looted other state-owned banks. 

The party’s executive president, Subrata Chowdhury, came down hard on the government for allowing loyal politicians and businessmen in looting public money by. 

Citing that the government was blocking every means of democratic practices, former Awami League organising secretary Sultan Mahmood Mansur said, ‘The persons currently leading the ruling party do not carry the ideals of Bangabandhu [country’s founding president Sheikh Mujibur Rahman].’

Gana Forum general secretary Mostafa Mohsin Montu said the government was trying to silence the voice of media. 

Party treasurer Mohiudding Quader, labour affairs secretary Zan-e-Alam, joint-secretary AOM Shafiqullah, among others, addressed the discussion.

Courtesy: New Age, December 31, 2017 

Saturday, December 30, 2017

হদিস নেই ৪৫ হাজার কোটি টাকার, খেলাপি ঋণ এক লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা

  

আলী রিয়াজ


খেলাপি ঋণের আবর্তে পড়ে অস্থিরতার তীব্র স্রোতে ঘুরপাক খাচ্ছে ব্যাংক খাত। বাড়তে থাকা খেলাপি ঋণে পর্যুদস্ত হয়ে পড়েছে সরকারি-বেসরকারি একাধিক ব্যাংক। সর্বশেষ ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ১ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। অবলোপন করা ঋণের প্রায় ৪৫ হাজার কোটি টাকার হদিস নেই। আদায় হওয়ারও কোনো সম্ভাবনা নেই এই ঋণের। একদিকে আদায় করতে না পারায় নতুন ঋণ দিতে পারছে না ব্যাংকগুলো। ফলে মুনাফায় ধস নেমেছে অধিকাংশ ব্যাংকে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ না থাকায় খেলাপি ঋণের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। বেসরকারি ব্যাংকগুলোয় পরিচালকরা নিজেদের মধ্যে ঋণ ভাগাভাগি করায় সেখানেও খেলাপের সংখ্যা বেড়ে গেছে। সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতির মধ্যে আছে নতুন প্রতিষ্ঠিত ব্যাংকগুলো। সমঝোতাভিত্তিক বড় অঙ্কের ঋণ বিনিময় করেন শতাধিক পরিচালক। যাদের কয়েকজন বেশি বিতর্কিত। এদের কাছেই পুরো ব্যাংকিং খাত জিম্মি। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর (২০১৭) ডিসেম্বর পর্যন্ত খেলাপি ঋণের পরিমাণ যোগ হয়েছে ২২ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে প্রথম প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ) ১১ হাজার ২৩৭ কোটি, দ্বিতীয় প্রান্তিকে (মার্চ-জুন) ৭৩৯ কোটি ও তৃতীয় প্রান্তিকে (জুন-সেপ্টেম্বর) খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৬ হাজার ১৫৯ কোটি টাকা এবং অক্টোবর-ডিসেম্বর প্রান্তিকে যোগ হয়েছে আরও প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকার খেলাপি ঋণ। বছর শেষে খেলাপি ঋণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮৫ হাজার ৩০৭ কোটি টাকা। এর সঙ্গে ঋণ অবলোপন করা ৪৫ হাজার কোটি টাকা যোগ করলে ব্যাংকিং খাতে প্রকৃত খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ১ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। গত অক্টোবরে দেশের ব্যাংক খাতের বিতরণ করা ঋণ বেড়ে হয়েছে ৭ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা। গত জুনে ঋণ বিতরণ ছিল ৭ লাখ ৩১ হাজার ৬২৬ কোটি টাকা। অর্থাৎ মোট ঋণের প্রায় ১১ শতাংশই খেলাপি। এর মধ্যে সরকারি খাতের ছয় ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ৪০ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। গড়ে সরকারি ব্যাংকগুলোর ২৯ দশমিক ২৫ শতাংশ ঋণই খেলাপি। জুনের তুলনায় এসব ব্যাংকের খেলাপি ঋণ বেড়েছে ২ দশমিক ৪১ শতাংশ। বিদেশি ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ হয়েছে ২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। ব্যাংকগুলোর প্রায় ৮ শতাংশ ঋণই খেলাপি। একই ভাবে কৃষি ব্যাংক ও রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৫ হাজার ৫১৮ কোটি টাকা। ব্যাংকগুলোর প্রায় ২৪ শতাংশ ঋণই খেলাপি। অনিয়ম-জালিয়াতিতে পিছিয়ে নেই বেসরকারি ব্যাংকগুলোও। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, বেসরকারি খাতের প্রায় সব ব্যাংকের পরিচালকরা একে অন্যের সঙ্গে ভাগাভাগি করে ঋণ দেওয়া-নেওয়া করেন। নতুন-পুরান মিলিয়ে দেশে সরকারি-বেসরকারি ৫৭টি ব্যাংক। এসব ব্যাংক পরিচালকদের হাজার হাজার কোটি টাকার ঋণ দিয়েছে। ১৯টি ব্যাংকের পরিচালক নিজের ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছেন প্রায় ৪০০ কোটি টাকার বেশি। একই ভাবে ৯টি ব্যাংকের পরিচালক গ্যারান্টার বা জিম্মাদার হয়ে ঋণ দিয়েছেন আরও ২৩১ কোটি টাকা।

বেসরকারি ব্যাংকের খেলাপির চিত্রে দেখা গেছে, এক্সিম ব্যাংক ৪ হাজার ৫৬৯ কোটি, ব্যাংক এশিয়া ৩ হাজার ৯৫৪ কোটি, ঢাকা ব্যাংক ৩ হাজার ৭২২ কোটি, এবি ব্যাংক ৩ হাজার ৫৩৬ কোটি, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক ৩ হাজার ২৫৯ কোটি, সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক ৩ হাজার ১৫৫ কোটি, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক ৩ হাজার ৬৬ কোটি, যমুনা ব্যাংক ৩ হাজার ১৬ কোটি, প্রাইম ব্যাংক ২ হাজার ৯৭৬ কোটি, ব্র্যাক ব্যাংক ২ হাজার ৯৩০ কোটি, পূবালী ব্যাংক ২ হাজার ৭৯৭ কোটি, ডাচ্-বাংলা ব্যাংক ২ হাজার ৩৫৭ কোটি, ট্রাস্ট ব্যাংক ২ হাজার ৩০৩ কোটি, এনসিসি ব্যাংক ২ হাজার ১৩৯ কোটি, সাউথইস্ট ব্যাংক ১ হাজার ৯৯০ কোটি, ওয়ান ব্যাংক ১ হাজার ৮২৭ কোটি, প্রিমিয়ার ব্যাংক ১ হাজার ৭৮৭ কোটি, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক ১ হাজার ৭৪৫ কোটি, মার্কেন্টাইল ব্যাংক ১ হাজার ৬৬৭ কোটি ও আইএফআইসি ব্যাংকের ১ হাজার ৪০২ কোটি টাকা। নতুন কার্যক্রমে আসা এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালককে ঋণ দিয়েছে ৫১৪ কোটি, মধুমতি ব্যাংক ৩৫২ কোটি, মিডল্যান্ড ব্যাংক ৩৪৯ কোটি, সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স ব্যাংক ৩২৫ কোটি, মেঘনা ব্যাংক ৩০১ কোটি ও ফারমার্স ব্যাংক ১৮৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে অনিয়ম করে ঋণ দেওয়ার দায়ে এনআরবিসি, ফারমার্স ব্যাংকের পর্ষদ সদস্যদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংকগুলোর খেলাপিদের ঋণের একটি বড় অংশই বর্তমান ও সাবেক ব্যাংক পরিচালক, তাদের স্ত্রী-পুত্র-সন্তান বা নিকটাত্মীয়দের কাছে আটকা পড়ে আছে। এসব ঋণপ্রস্তাব, অনুমোদন ও বিতরণের প্রতিটি ক্ষেত্রেই অনিয়ম ও দুর্নীতি হয়েছে বলে অভিযোগ।

জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ বলেন, খেলাপি ঋণের পাহাড় পরিমাণ সংকট পর্যুদস্ত করেছে ব্যাংকিং খাত। বিগত কয়েক বছরে সরকারি ব্যাংকে রাজনৈতিক নিয়োগ ও ঋণ বিতরণে অনিয়ম-জালিয়াতি বেড়েছে। বেসরকারি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ সদস্যরা যেভাবে ঋণ বিতরণ করেছেন তাতে বাংলাদেশ ব্যাংকের কোনো নিয়ন্ত্রণ ছিল না। এখন যে পরিবর্তন করা হচ্ছে তাতে সমস্যার সমাধান হবে না। প্রয়োজন কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ। না হলে ব্যাংক খাত পুরো অর্থনীতিকে সংকটে ফেলবে। নতুন ব্যাংক কোম্পানি আইন বাস্তবায়ন হলে তাতেও সংকট বৃদ্ধি পাবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নল ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কোনো পর্যবেক্ষণ নেই ব্যাংকগুলোর কার্যক্রমে। ঋণখেলাপিদের বিরুদ্ধে তারা কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। এজন্য খেলাপি ঋণ না কমে কেবল বেড়েই চলেছে। যাচাই-বাছাই ছাড়া যেসব নতুন ঋণ দেওয়া হচ্ছে, সেগুলোও খেলাপে যোগ হচ্ছে। ঋণ অবলোপনের প্রক্রিয়াটি অনিয়মের অন্যতম কারণ। বিপুল পরিমাণ ঋণ পুনর্গঠন করা হয়েছে। তাও সঠিকভাবে করা হয়নি; যা খুবই উদ্বেগের।



State must act to solve mysteries of disappearances

Shakhawat Hossain



Over the last few days, two missing persons—University teacher Mubashar Hasan and Journalist Utpal Das—fortunately returned home but were unable to tell who their abductors were. However, Kalyan Party leader Aminur Rahman who too had been missing for nearly four months was allegedly discovered in Gulshan and shown arrested by the police on the next day.

It is surprising that the government also does not know who are responsible for secret killings and enforced disappearances although these incidences are, after all, putting a clear blemish on the government’s reputation at home and abroad.

Such mysterious disappearance and reappearance of individuals from various walks of life, and the government’s apathy in investigating their cases as well as the contradictory explanations , only increase a feeling of insecurity among citizens.

There is no reason to believe that the missing people have returned because of the law enforcers’ active and efficient operations, since not only on a single occasion the police could rescue at least one from their respective abductors. On the contrary, Home Minister Assaduzzaman Khan Kamal has only to say that the government is not responsible and the matter is being investigated. Depending on the amount of information provided by the missing persons returned our police and intelligence agencies have yet not been able to show any success in catching the culprits. This cannot be unless the law-enforcing agencies are thoroughly incompetent which we cannot accept. Another possibility is that those who are responsible for secret disappearances and secret killings enjoy protection of highest order. Motive may be to create panic and cause silence about the wrongs of the government. The trend is dangerous for organising a civilised country for safety and security of life.

NHRC to bring the matter to President!

The National Human Rights Commission [NHRC] has finally and reportedly decided to bring the matter to President’s attention after being failed to get apparently ‘no response’ from the Home Ministry about specific allegations against law enforcement agency members regarding increasing incidents of human rights violation,
According to information available, the NHRC has sent letters to the Home Ministry seeking reports on human rights violation on 185 incidents — particularly abduction, force disappearance and extra-judicial killing. But it has not got any response.

 “We’ll inform the matter to the President. The NHRC is a State organization. We’ve got the right to seek report from Home Ministry on human violations. The government service holders are accountable to the people. If they fail to accomplish their duty, stern action should be taken against them,” Chairman of NHRC Kazi Reazul Hoque told a daily on Sundaynight.

The NHRC Chief said, “As the President is the Head of the state, he can taken decision about what action will be taken. If the President thinks, he can send the matter in the Parliament.”

Despite increasing incidents of human rights violations, including abduction, force disappearance and extra-judicial killing; the NHRC has allegedly failed to take any effective steps to deal with the matter.

Although the NHRC Chief has expressed anxiety at the increasing number of human rights violation incidents across the country, in fact the commission was able to investigate four incidents only in the ongoing year.

Interestingly, the NHRC tried to shift blame on the shoulders of the law enforcement agencies, especially the Home Ministry, alleging that they do not bother several letters sent to the Home Ministry. In most cases, the Ministry did not even feel it necessary to respond.
In this backdrop, the NHRC has taken further initiatives to prepare another list of allegations with update information in a bid to send to the Home Ministry and police headquarters. 

Expressing annoyance, the NHRC Chairman said, “It is a total failure of Home Ministry. It seems, the Home Ministry doesn’t do any work. Whereas, they are bound to give report to the NHRC.”
 “If we seek any report about specific allegations against any member of police and other law enforcement agencies, the Home Ministry doesn’t pay any heed. In this regard, they are violating the country’s existing law. Now, the state will have to act accordingly,” he said.

How much Police interested in investigating into disappearances?
According to a Bangladeshi human rights organization, more than 400 people have been missing since January 2009 till November this year. Three of those disappeared have surfaced in the last few days.

After being missing for almost four months, police said that they have the arrest the Secretary General of Bangladesh Kalyan Party MM Aminur Rahman. Missing journalist Utpal Das was also found in Narayanganj after more than two months of disappearance.

On the other hand, missing university teacher Mubashar Hasan Cesar also came back home after around a month and a half. These two cases have been almost identical. But the question is how much police have investigated into those incidents of disappearances? While talking to BBC, Bangla service, human rights activist Nur Khan Liton alleged that that police is found to be remained inactive or not serious in the investigation into such abduction cases. 

Against such panicky situation, we must question the government about its lack of interest when it comes to investigating these incidents. If the criminal gangs that are carrying out these heinous disappearances then why isn’t the government trying harder to apprehend them? What is the government gaining by not getting to the deep of these phenomenon? Isn’t it, in fact, self-defeating?
  • Author is a freelance writer.
  • Courtesy : Holiday

Friday, December 29, 2017

অসুস্থ ব্যাংকিং খাত নিয়ে উৎকণ্ঠা বাড়ছে



ধীরাজ কুমার নাথ 





সাম্প্রতিককালে ব্যাংকিং খাত সম্পর্কে প্রচুর বিপর্যয়ের দুঃসংবাদ, দুর্নীতির উদাহরণ, অব্যবস্থাপনা ও অসুস্থ পরিচালনা এবং নতুন আইন প্রণয়ন নিয়ে বিভিন্ন খবরাখবর জনগণের মনে নানা সংশয় ও উৎকণ্ঠার জন্ম দিয়েছে। কয়েক হাজার কোটি টাকার ঋণ জালিয়াতির বিষয়ে বেসিক ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল হাই বাচ্চুকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বাংলাদেশ ব্যাংকের তদন্তে ধরা পড়া বেসিক ব্যাংকের তিনটি শাখায় প্রায় সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকা জালিয়াতির ব্যাপারে আবদুল হাই বাচ্চুকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। কিছুদিন আগে ফারমার্স ব্যাংকের চেয়ারম্যান ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর ও অডিট কমিটির চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক চিশতিকে পদত্যাগে বাধ্য করা হয়েছে। এছাড়া এনআরবিসি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক দেওয়ান মুজিবর রহমানকে ৬ ডিসেম্বর ব্যাংলাদেশ ব্যাংক পদচ্যুত করেছে। এমনকি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এ আদেশে মুজিবর রহমানকে দুই বছর অন্য কোনো ব্যাংকে বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে কোনো প্রকার দায়িত্ব পালন থেকে বিরত থাকার কথা বলা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি প্রায় ৭০০ কোটি টাকা ঋণ প্রদানের দুর্নীতিতে জড়িত ছিলেন। আরো উদাহরণ হচ্ছে, অগ্রণী ব্যাংকের সিইও বা প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ আবদুল হামিদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। দুর্নীতির অভিযোগে পদচ্যুত করা হয়েছে বেসিক ব্যাংকের এমডি কাজী ফকরুল ইসলামকে। আরো খবর হচ্ছে, তদন্তে ধরা পড়েছে মার্কেন্টাইল ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান শহীদুল আহসান, যিনি কোম্পানি আইন ভঙ্গ করে প্রায় ৪৪ কোটি টাকার সুবিধা গ্রহণ করেছেন ব্যাংকের দুজন স্পন্সর পরিচালকের কাছ থেকে।

মেঘনা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রুহুল আমিন সাহেব এবার বিদায় নিয়েছেন বা বাধ্য হয়েছেন চলে যেতে। আরো অনেক কাহিনী আছে, যা বলে শেষ করা যাবে না অথবা জনগণের দৃষ্টির আড়ালে সংঘটিত হচ্ছে। সহজ কথায় বলা যায়, ব্যাংকিং খাত ভয়াবহ জন্ডিজে আক্রান্ত, চরমভাবে অসুস্থ, জরুরিভাবে এর চিকিত্সা আবশ্যক।


মাসুক হেলাল/প্রথম আলো


বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে অর্থ সরিয়ে ফেলার কাহিনী এবং দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এমন দুর্বলতা দেশবাসীকে হতাশ করেছে এবং সরকারকে করেছে বিব্রত। তেমনি সোনালী ব্যাংকের কয়েক হাজার কোটি টাকা লোপাট জনগণ সহজভাবে মেনে নেয়নি, প্রকাশ্যে প্রতিবাদ করেনি সত্যি, কিন্তু অর্থনৈতিক পরিমণ্ডলে বিচরণকারীরা কোনো দিন ভুলবে না। এসবের জন্য কারা দায়ী, হয়তোবা বিবিধ কারণে প্রকাশ্যে আসবে না; কিন্তু জনগণের জিজ্ঞাসা বা উৎকণ্ঠা কি কোনো দিন নিরসন হবে?

এমনসব খবর দেশের বিভিন্ন পত্রপত্রিকায়, গণমাধ্যমে প্রচার হয়েছে এবং দেশের সাধারণ জনগণ সর্বত্র এমন সংবাদ নিয়ে প্রতিনিয়ত প্রকাশ্যে আলাপ-আলোচনা করছে। সারা দেশে এমনকি গ্রামগঞ্জে, হাটবাজারে প্রকাশ্যে আলোচনা করছে বিভিন্ন স্তরের লোকজন। নতুন প্রজন্ম তাদের ফেসবুকে এসব খবর নানাভাবে পরিবেশন করে সারা দেশের আর্থিক ব্যবস্থাপনা নিয়ে কল্পকাহিনী রচনা করছে, যা সুস্থ অর্থনীতির জন্য অনভিপ্রেত। জনগণের বিশ্বাসে ও আস্থায় ফাটল ধরলে তা দেশের জন্য মঙ্গল বয়ে আনে না।

সততা ও জবাবদিহিতার প্রশ্নে জাতীয় পর্যায়ে ভয়াবহ দুর্বলতার চিত্র দেখে দেশের সুশীল সমাজ আতঙ্কিত হচ্ছে, অসুস্থ ব্যাংকিং খাত বা অর্থনৈতিক অঙ্গন নিয়ে দুর্ভাবনায় পড়েছে দেশবাসী। অনেকের প্রশ্ন, শুদ্ধাচারের সংকটে মুহ্যমান এ অর্থনৈতিক পরিমণ্ডল বাংলাদেশকে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালে উন্নত দেশ হিসেবে পরিণত করতে পারবে কীভাবে?
অথবা এমন পরিস্থিতিতে ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্য অর্জন কীভাবে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে?

দেশে বর্তমানে প্রায় ৫৭টি ব্যাংক আছে, যার মধ্যে ৯টি বিদেশী। এছাড়া আছে ৩৫টি নন-ব্যাকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠান যেমন— ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ, বাংলাদেশ ফিন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন ইত্যাদি। শোনা যায়, আরো প্রায় তিনটি তফসিলি ব্যাংক এবং কয়েকটি লিজিং কোম্পানি নতুনভাবে আসছে সরকারের অনুমোদন নিয়ে। অনেকের ভাবনা, এত অধিকসংখ্যক ব্যাংক বিরাজমান দুর্বল আর্থিক পরিমণ্ডলে আরো বেশি বিপর্যয়ের সূচনা করতে পারে।

বেশির ভাগ মানুষ, যারা অর্থনীতি নিয়ে ভাবে বা অর্থনৈতিক পরিমণ্ডলে বিচরণ করে, তাদের অভিমত হলো— অনেক হয়েছে, আর নয়। কারণ দ্বিতীয় প্রজন্মের ব্যাংকগুলো এখনো ভালোভাবে দাঁড়াতে পারেনি। গ্রামগঞ্জে সাধারণ মানুষের দুয়ারে ব্যাংকিং সেবাকে এখনো নিয়ে যেতে পারেনি। কারণ মফস্বল এলাকায় ব্যাংকের ব্রাঞ্চ স্থাপন ও সেবা প্রদান অলাভজনক এবং ঝুঁকিপূর্ণ। অথচ লক্ষ্য হচ্ছে, ব্যাংকিং ব্যবস্থায় দেশের সব জনগণকে পর্যায়ক্রমে নিয়ে আসা। বর্তমানে দেশে এলাকাভেদে ঊর্ধ্বে মাত্র ৩০-৩৫ শতাংশ লোক ব্যাংকিং ব্যবস্থার আওতায় আছে। সারা দেশে ক্যাশলেস বা নগদ টাকাবিহীন লেনদেনের পরিমণ্ডল রচনা করতে হবে এবং অনুরূপ সমাজ ও ভাবনার উত্তরণ ঘটাতে হবে। প্রতিটি লেনদেনের সুস্পষ্টতা থাকবে এবং তা দৃশ্যমান হতে হবে।

ব্যাংকিং ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে অর্থ পাচার বা হুন্ডি ব্যবসা পরিচালনার অভিযোগ নিয়ে জনগণের মনে একটা বিরাট সন্দেহ বিরাজ করছে, যা উপশম হওয়া প্রয়োজন। এছাড়া কিছু ব্যাংক আছে, যারা বাংলাদেশেই জঙ্গিবাদকে অর্থায়ন করে বলে অনেকের বিশ্বাস। তার কারণ হলো, হলি আর্টিজানে যে ভয়াবহ হত্যাযজ্ঞ হয়েছিল, সেখানে কয়েক কোটি টাকার লেনদেন হয়েছিল এবং তা কোনো এক ব্যাংকের মাধ্যমে হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে এবং তার প্রমাণও মিলেছে বলে শোনা যায়। এমন পরিস্থিতিতে দেশের জনগণ মনে করে, অসুস্থ ব্যাংকিং ব্যবস্থাপনা বিরাজমান থাকা কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়। এর উত্তরণ ঘটাতে হবে জাতির বৃহত্তর স্বার্থে।

অনেকে মনে করেন, এমন অব্যবস্থাপনার জন্য প্রধানত দায়ী ব্যাংকের পরিচালকমণ্ডলী। অথচ বলির পাঁঠা হচ্ছেন সিইও বা প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক। পরিচালকমণ্ডলীর মধ্যে খুব কমসংখ্যকের ব্যাংক পরিচালনা সম্পর্কে অভিজ্ঞতা ও জ্ঞান আছে। মুনাফা অর্জন তাদের মুখ্য বিষয়, ব্যাংকের সুনাম ও স্বচ্ছতা সম্পর্কে তারা অসতর্ক। লোক নিয়োগে তারা যেমন প্রভাব বিস্তার করে, তেমনিভাবে ঋণ প্রদানেও কোলেটারেল সিকিউরিটি ছাড়াই ঋণ ও অগ্রিম দেয়ার ক্ষেত্রে প্রভাব বিস্তার করে, যা অনেক ক্ষেত্রে এমডি এবং অন্যান্য কর্মকর্তা প্রতিবাদ করার সাহস পান না। অনিচ্ছা সত্ত্বেও নীরবে সম্মতি দিয়ে দেন এবং এখানেই শুরু হয় ব্যাংকের তারল্য সংকট, ঋণ আদায়ে
অপারগতা, ঋণখেলাপির  সংখ্যা বৃদ্ধি পায় ক্রমাগত। সমস্যা ও সংকট থেকে উত্তরণের লক্ষ্যে এমন পরিস্থিতিতে বিকল্প পন্থা হিসেবে দুর্বৃত্তায়নের আশ্রয় নেন এসব কর্মকর্তা। তাই পরিচালকদের যোগ্যতা, মেয়াদকাল এবং একই পরিবারের সদস্যদের পরিচালক পর্ষদে অন্তর্ভুক্ত করা ও দীর্ঘদিন চলতে দেয়ার বিরুদ্ধে জনগণ সোচ্চার।

টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্য অর্জন করতে হলে প্রয়োজন দারিদ্র্য বিমোচন, সবার জন্য এবং সব বয়সের লোকের জন্য স্বাস্থ্য, নারীদের সমান অধিকার প্রতিষ্ঠা, পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা ইত্যাদি বিষয়ে দৃশ্যমান অর্জন। মোট ১৭টি লক্ষ্য ও ১৬৯টি টার্গেট অর্জনের সব পর্যায়ে প্রয়োজন অর্থনৈতিক শৃঙ্খলা। শেয়ারবাজারে শৃঙ্খলা বিধান থেকে শুরু করে ক্ষুদ্রঋণ বিতরণে নিয়োজিত সব আর্থিক প্রতিষ্ঠানে চাই আর্থিক শৃঙ্খলা এবং প্রত্যেক লেনদেনের জবাবদিহিতা। এ দায়িত্ব পালন করতে হবে বাংলাদেশ ব্যাংককে অত্যন্ত কঠোরভাবে। বাংলাদেশ ব্যাংককে সব ব্যাংক ব্যবস্থার নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালনে অধিকতর নিষ্ঠাবান হতে হবে। তাই প্রয়োজন হবে নিবিড় তদারক ব্যবস্থার আরো অধিক উন্নতি সাধন এবং ঋণ প্রদান ও ঋণ আদায়ের ক্ষেত্রে আইনের প্রয়োগ, আর্থিক বিধিবিধানের অধিকতর সংস্কার।

লক্ষণীয় যে, রাষ্ট্রীয় মালিকানায় পরিচালিত জনতা, অগ্রণী, রূপালী ও সোনালী ব্যাংকেই ঋণখেলাপির আনুপাতিক হার বেশি বা অনাদায়কৃত ঋণ পরিশোধের সময়সীমা পুনর্নির্ধারণ করার প্রবণতা অধিক। এর অর্থ, এখানে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ হচ্ছে। যে কারণে ঋণগ্রহণকারী রাজনৈতিক প্রভাববলয় বিস্তার করে ঋণ পরিশোধে ব্যর্থতাকে আমলে নিচ্ছেন না, জেল-জরিমানার ভয় করছেন না।

ব্যাংকিং খাতে একটি ভয়াবহ ব্যর্থতা হচ্ছে, ব্যাংক ডাকাতি বা ব্যাংকের ভল্ট  ভেঙে আমানতকারীদের অর্থ লুটপাট করা। বাংলাদেশে এমন ঘটনা ঘটেছে বিভিন্ন ব্যাংকে বহুবার কিন্তু কঠোর শাস্তি প্রদানের উদাহরণ বিরল। অনেকের ধারণা, এর সঙ্গে ব্যাংক কর্মকর্তাদের যোগসাজশ থাকা অসম্ভব কিছু নয়। প্রত্যেক ব্যাংকে বিষয়টির প্রতি বিশেষ মনোযোগ দিতে হবে অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে।

পরিশেষে বলতে হয়, ব্যাংকিং খাতে শৃঙ্খলা বিধান প্রগতিশীল দেশের প্রধান শর্ত। এ খাতে শুদ্ধাচার প্রতিপালনে ব্যর্থ হলে দেশের অগ্রগতি অবশ্যই বিপদসংকুল হতে বাধ্য। এছাড়া জনগণের পবিত্র আমানত ও অগাধ বিশ্বাসের ক্ষেত্র হচ্ছে ব্যাংক এবং অন্যান্য অর্থলগ্নি প্রতিষ্ঠান। ব্যাংকিং খাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে না পারলে রাষ্ট্র পরিচালনায় সংকট দৃশ্যমান হতে বাধ্য এবং সরকারের উন্নয়নমূলক কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হতে পারে।

হায় হায় ব্যাংকের দায় কার?



কামাল আহমেদ 






ফারমার্স ব্যাংকের মরণদশার দায় কার? এ ব্যাংকটিসহ কথিত চতুর্থ প্রজন্মের নয়টি ব্যাংকের অনুমোদনের সময় (আওয়ামী লীগের আগের মেয়াদে) কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন গবেষণা বিভাগের অধ্যাপক আতিউর রহমান। রাষ্ট্রীয় মুদ্রাভাণ্ডারের প্রায় শতকোটি ডলার খোয়ানোর কৃতিত্বের অধিকারী এই সাবেক কেন্দ্রীয় ব্যাংকার ২০ ডিসেম্বর বলেছেন, ব্যাংকটিকে বাঁচাতে হলে এখনই ব্যবস্থা নিতে হবে (ফারমার্স ব্যাংক বিষয়ে এখনই উদ্যোগ নিতে হবে, প্রথম আলো, ২০ ডিসেম্বর, ২০১৭)। কী চমত্কার দায়িত্ববোধ! শুধু রাজনৈতিক নির্দেশনায় প্রচলিত নিয়মনীতিগুলোর বেশির ভাগ উপেক্ষা করে জনসাধারণের কষ্টের আমানত লুটে নেয়ার লাইসেন্স দেয়ার জন্য তার মধ্যে ন্যূনতম কোনো অনুশোচনা নেই। কোনো ধরনের দুঃখপ্রকাশ ছাড়াই তিনি সেই মৃত্যুপথযাত্রী ব্যাংককে বাঁচানোর জন্য সরকারকে পরামর্শ দিয়েছেন। যার মানে হলো, রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে জনগণের করের টাকা ব্যয় করা, যে টাকা ফেরত পাওয়ার সম্ভাবনা প্রায় শূন্যের কোটায়।




ফারমার্স ব্যাংকের এ অধঃপতনের জন্য অনেকেই দায়ী করছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতকে। আদর্শ গণতন্ত্রে নিশ্চয়ই অর্থমন্ত্রীকে এ কেলেঙ্কারির দায় নিতে হতো। কিন্তু বাংলাদেশে গণতন্ত্রের বর্তমান দুর্দশায় তার ওপর এককভাবে এর দায় দেয়া হলে তা যথার্থ হবে না। এখানে আমাদের স্মরণে রাখা দরকার যে, ব্যাংকিং খাতে এসব অনিয়মের জন্য তিনি সংসদেই তার অসহায়ত্বের কথা প্রকাশ করেছিলেন। বেসরকারি খাতে নতুন নতুন ব্যাংক অনুমোদনের প্রশ্নেও তার সরল স্বীকারোক্তি রয়েছে। ব্যাংকগুলোকে রাজনৈতিক বিবেচনায় অনুমোদন দেয়ার কথা তিনি একাধিকবার বলেছেন। বেসরকারি খাতে প্রয়োজনের তুলনায় ব্যাংকের সংখ্যা অনেক বেশি বলে ব্যাংকিং বিশেষজ্ঞরা অনেক দিন ধরেই বলে আসছেন। দেশের জনসংখ্যার তুলনায় নতুন ব্যাংকের চাহিদা এখনো আছে এমন ঠুনকো যুক্তিও তার মুখ থেকে আমরা শুনেছি। আরেকটি বহুল আলোচিত ব্যাংক লুটের ঘটনা— বেসিক ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল হাই বাচ্চুর বিরুদ্ধে কাগজে-কলমে অনিয়ম-দুর্নীতির প্রমাণ থাকার পরও কোনো ব্যবস্থা নিতে না পারার কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি বলেছিলেন যে, রাজনৈতিক কারণেই কিছু করা যাচ্ছে না।

ফারমার্স ব্যাংকের উদ্যোক্তা পরিচালকদের শিরোমণি ছিলেন মহীউদ্দীন খান আলমগীর, যদিও ব্যাংকের ওয়েবসাইটে এর প্রতিষ্ঠাকালীন ইতিহাস কিংবা তার প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যানের নামগন্ধও এখন আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। ব্যাংকটির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যানের জন্য ফারমার্স বা কৃষককুল রীতিমতো একটি সৌভাগ্যের বিষয়। হয়তো সে কারণেই গ্রামীণ এবং কৃষি খাতকেন্দ্রিক ব্যাংক না হলেও তার ব্যাংকের নাম ফারমার্স ব্যাংক। সাবেক প্রেসিডেন্ট  জিয়ার আমলে যশোরের শার্শা এলাকায় কৃষকদের সেচের সংকট মোকাবেলায় খাল কাটা কর্মসূচিতে তার ভূমিকাই তাকে প্রথম আলোচনায় তুলে আনে।

দ্বিতীয়বার তিনি আলোচনায় আসেন খালেদা জিয়ার সরকারের বিরুদ্ধে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আন্দোলনের সময় জনতার মঞ্চে অংশ নিয়ে। তার নেতৃত্বেই সরকারি কর্মকর্তারা সরকারবিরোধী রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশ নেয়, যা দেশের আমলাতন্ত্রের রাজনীতিকরণে একটি নতুন মাত্রা যোগ করে।

তৃতীয় দফায় তিনি আলোচিত হন জাতীয় সংসদে নির্বাচিত হওয়ার অযোগ্য ঘোষিত হওয়ার রায় সুপ্রিম কোর্টে বহাল থাকায়। ২০১০ সালের ১৫ জুলাই সুপ্রিম কোর্টের রায়ে তার আসন শূন্য ঘোষিত হলেও একটি রিভিউ আবেদন দায়ের করে তিনি তার সংসদীয় মেয়াদ পূরণ করেন। সে সময়ে তিনি ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। দেশের সবচেয়ে প্রাণঘাতী শিল্প দুর্ঘটনা রানা প্লাজা ধসের বিষয়ে তিনি বিরোধী দল বিএনপির কর্মী-সমর্থকদের ধাক্কাধাক্কিতে স্থানীয় যুবলীগ নেতার ভবনটির ভিত দুর্বল হয়ে পড়ার কথা বলে সমালোচিত হন।

২০১৩ সালের ২৭ ডিসেম্বর ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল পত্রিকা বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন রাজনীতিকদের কাঁথা থেকে প্রাচুর্যে উত্তরণের কয়েকটি দৃষ্টান্ত তুলে ধরে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এতে বলা হয়, মহীউদ্দীন খান আলমগীর নির্বাচন কমিশনে তার সম্পদ বিবরণীতে ৩ কোটিরও বেশি নগদ টাকা থাকার কথা জানিয়েছেন। তিনি ফারমার্স ব্যাংকের অনুমতি পান ২০১৩ সালে এবং ব্যাংকটি আনুষ্ঠানিক যাত্রা করে ২০১৪ সালে। কিন্তু মাত্র তিন বছরের মধ্যেই ঋণ দেয়ায় অনিয়মের বোঝা অসহনীয় হয়ে ওঠে এবং ব্যাংকটি আমানতকারীদের আমানত ফেরত দেয়ার সামর্থ্য হারায়। এখন ব্যাংকটি তার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন দিতেও অক্ষম হয়ে পড়েছে। বছরখানেক ধরে বাংলাদেশ ব্যাংকের উপর্যুপরি তদন্ত, জরিমানা ও পর্যবেক্ষক নিয়োগেও অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় ব্যাংকিং খাতে
উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়ে।

সংবাদ মাধ্যমে এ বিষয়ে খবর প্রকাশিত হতে থাকলে মহীউদ্দীন খান আলমগীর স্বভাবসুলভ আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে তা অস্বীকার করে ব্যাংকটির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আনেন, পত্রপত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেন। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছ থেকে বিশেষ ব্যবস্থায় ঋণ নিয়ে এবং বাজার থেকে বন্ডের মাধ্যমে ৫০০ কোটি টাকা সংগ্রহের উদ্যোগ নেন। রাজনৈতিক হস্তক্ষেপে নিজেদের রক্ষায় জোর তদবির চালান। কিন্তু তার সীমাহীন অর্থলিপ্সার কারণে এবার আর কাঙ্ক্ষিত রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতা মেলেনি। বাংলাদেশ ব্যাংক অটল থাকতে পেরেছে। ফলে ২০১৭ সালের ২৭ নভেম্বর তিনি ব্যাংকটির চেয়ারম্যানের পদ ছাড়তে বাধ্য হন। আর ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক একেএম শামীমকে তার মেয়াদ শেষ হওয়ার মাত্র সাতদিন আগে কেন্দ্রীয় ব্যাংক পদ থেকে অপসারণ করে।

ফারমার্স ব্যাংক ঘিরে মহীউদ্দীন খান আলমগীরের বিরুদ্ধে আরো দুটি গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। প্রথমত. তিনি সংসদ সদস্য হিসেবে সংসদের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং ক্ষমতাবান একটি অংশ, সরকারি হিসাবসংক্রান্ত স্ট্যান্ডিং কমিটির সভাপতি হিসেবে ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন। বাংলাদেশ ব্যাংক ব্যাংকিং খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসেবে যখন তার ফারমার্স ব্যাংকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগের তদন্ত করছিল, তখন তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকের কার্যক্রম তদন্তের উদ্যোগ নেন। স্পষ্টতই সম্ভাব্য স্বার্থের সংঘাত সত্ত্বেও তিনি এ উদ্যোগ নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে তটস্থ রাখতে চেয়েছিলেন।
বাংলাদেশে অবশ্য স্বার্থের সংঘাত বিষয়টি অনেক ক্ষেত্রেই উপেক্ষিত হয়ে থাকে। দ্বিতীয়ত. ব্যাংকের চেয়ারম্যান পদ ছাড়তে বাধ্য হওয়ার পর তিনি ব্যাংকে তার অংশীদারিত্ব বাড়ানোর চেষ্টায় আরো শেয়ার কিনতে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে অনুমতি চেয়েছিলেন। এখানেও তার উদ্দেশ্য পরিষ্কার। তিনি জানেন যে, সরকার ব্যাংকটিকে রক্ষা করবে। এতে ভবিষ্যতে তার সম্পদ ও নিয়ন্ত্রণ আবারো বাড়ানোর সুযোগ তৈরি হতে পারে। তার এ চেষ্টার আরেকটি তাত্পর্য হচ্ছে, তিনি মোটামুটি আশ্বস্তবোধ করছেন যে এ ব্যাংক কেলেঙ্কারির কারণে তাকে জেলে যেতে হবে না।

বাংলাদেশের বিদ্যমান ব্যাংকিং আইনে ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও পরিচালকরা জনসেবক বা পাবলিক সারভেন্ট। পাবলিক সারভেন্ট হিসেবে অনৈতিক কাজের জন্য যেসব শাস্তির বিধান আছে, সেগুলো তার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হওয়ার কথা। সোনালী ও অগ্রণী ব্যাংকের চেয়ারম্যান এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের কারো কারো এরই মধ্যে আশ্রয় হয়েছে জেলে, নয়তো তারা পলাতক। তাহলে মহীউদ্দীন খান আলমগীরের ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম কেন? তার দলও এ বিষয়ে নিশ্চুপ। সংসদের ওই অতীব গুরুত্বর্পূণ ও ক্ষমতাধর কমিটি থেকেও তাকে অপসারণ করা হয়নি।

বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতে দীর্ঘদিন ধরেই এক ধরনের বিশৃঙ্খলা চলে আসছে। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোয়ও রাজনৈতিক আনুগত্য বিবেচনায় নিয়োগপ্রাপ্ত পরিচালকরা বাণিজ্যিক যৌক্তিকতার চেয়ে দলীয় ও গোষ্ঠীস্বার্থে ঋণ বিতরণ করেই অভ্যস্ত। ফলে সেগুলোও সংকটের ঘূর্ণাবর্তে ঘুরপাক খাচ্ছে। রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে একাধিকবার পূরণ করা হয়েছে মূলধনের ঘাটতি। বেসরকারি খাতের
ব্যাংকও এখন আর অনিয়মের পাল্লায় পিছিয়ে নেই। ফারমার্স ব্যাংক একা নয়, এ ধারায় আছে রাজনৈতিক কারণে প্রতিষ্ঠা পাওয়া অন্য ব্যাংকও। যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের নেতা পরিচয়ে অনুমোদন পাওয়া উদ্যোক্তাদের এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকও পরিচালনা পর্ষদ রদবদল ঘটাতে বাধ্য হয়েছে। কিন্তু কেলেঙ্কারির মূলহোতারা ধরাছোঁয়ার বাইরেই থেকে যাচ্ছেন। এসব হায় হায় ব্যাংকের দায় কার?

  • [কামাল আহমেদ-এর ব্যক্তিগত ব্লগে প্রকাশিত নিবন্ধ]



মুক্তিযুদ্ধ - ‘সংখ্যা বাড়ছে পাটীগণিতে, সম্মান কমছে জ্যামিতিতে'


বিএনপি কমিউনিকেশন  




কিছুদিন আগে দৈনিক প্রথম আলো’র প্রথম পৃষ্ঠায় দ্বিতীয় প্রধান সংবাদ কাহিনী প্রকাশিত হয়েছিল। তাতে জামালপুরের মেলান্দহের মুক্তিযোদ্ধা আাবুল হোসেন ইউএনও-র কাছে লিখিত আবেদন জানান এই বলে যে তাঁর নামের আগে যেনো ‘বীর’ মুক্তিযোদ্ধা  আর যেন না লেখা হয় আর তাঁর মৃত্যুর পর রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফনের প্রয়োজন নেই। তাঁর মোদ্দা কথা তিনি ভেজালদের অন্তর্ভূক্ত থাকতে চান না। আর আরেকজনের অনুরোধ, যেহেতু মুক্তিযুদ্ধের পর ভুমিষ্ঠ হয়েছেন , সে জন্য তাঁর নাম মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা থেকে সরানো হোক।

খাঁটি মুক্তিযোদ্ধা  আবুল হোসেন  মুক্তিযোদ্ধা বাছাইয়ের জাল-জালিয়াতির প্রতিবাদ জানাতে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। অমৃত-গরল মিলেমিশে একাকার হওয়ার আশঙ্কা তাঁর। যে দেশ কিনেছিলেন তাঁরা জীবনের বাজি রেখে কিংবা রক্তের বিনিময়ে পণ্যের মূল্যে এখন সেটা টাকায় বিকিয়ে যাচ্ছে। এটা কোন চেতনা? এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না। অথচ  টাকা দিয়ে অনেকেই কিনেছেন মুক্তিযোদ্ধার সার্টিফিকেট।

একথাও নিখাদ সত্য সরকার মুক্তিযোদ্ধাদের রাজনীতির পণ্য করে তুলেছেন। এই তিক্ত সত্যও  অস্বীকার করার উপায় নেই অনেকেই এরকম ‘পণ্য’ হতে পেরে ধন্য। সম্প্রতি প্রথম আলোয় প্রকাশিত লেখায় বাংলা ভিশনের বার্তা সম্পাদক  গোলাম মোস্তফা বলছেন, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে সব সরকারই ‘গণিত উৎসব’ করেছেন। এসব উৎসব উৎপাদিত ও এর কারণে উৎসাহিত হয়েছে সুযোগ সন্ধানীরা। তারা নানা কৌশল বের করেছে। কেইবা ম্লেচ্ছ ইতর থাকতে চাইবে? স্বাভাবিক কারণেই তারা ব্রাহ্মণ হবার উপায় বাগিয়েছে রাজনীতিকদের হাত ধরেই।  কেন?  রাজনীতিকরা শহীদদের বরাবরই দূর থেকে তাদরেকে খুরে নমস্কার করেছেন। তবে তাদের সংখ্যার ওপর জরিপ চালাতে সচেতনভাবেই বাধাও দিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। প্যান্ডোরার বাক্স খুলে যাবে বলে?  কিন্তু এই সব কর্তৃপক্ষই আবার জীবিত মুক্তিযোদ্ধাদের ব্যাপারেই অতিমাত্রায় উৎসাহ প্রকাশ করেছেন। আর বারংবার সেসব উৎসবের মধ্য দিয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংখ্যার বহর বেড়েছে। কিন্ত কি জন্য এই স্ফীতি সে কথা ঘেঁটে বলেননি। এর আদত কারণটি হলো মৃতদের রাজনৈতিক পণ্য হবার সাধ্য নেই। পণ্য হবার সাধ্যও নেই। তাই রাজনীতিকরাই ‘পণ্য’ সরবরাহ বাড়িয়ে দিয়েছেন আর কেউ নয়।

একটি প্রবণতা দৃষ্টিকটুভাবে খুবই লক্ষ্যণীয়। যখনই চলতি সরকারের গলদ উল্লেখ না করে পারা যায় না তখনই বিএনপি সরকারের দোষ টেনে আনার  ব্যালান্সিং-এর প্রবণতা। বিএনপি সরকারও এ দোষ করে থাকতেই পারে। কিন্তু কাপুরুষ মানসিকতাই কেবল পান্তাভাতে ঘি ঢেলে মূল কথাটাকে ডাইলিউট করে। পেছনে যদি যেতেই হয় তাহলে আরেকটু এগোলেই তো বিষয়টার ঝাঁপি ‘হাট’ করে খুলে যায়। আমরা সবাই চোখে যা দেখছি সেটা দেখেই সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলি পেছনে কি তাকাই না। আমরা দেখেছি মুক্তিযুদ্ধের নায়কদের কি করে একে একে ধ্বংস করা হয়েছে। গেছেন ওসমানী, খালেদ মোশাররফ-হায়দার, কোনমতে বেঁচে আছেন ভাইস মার্শাল একে খোন্দকার, সেক্টর কম্যন্ডার আবু ওসমান চৌধুরি ও আরও অনেকে। যখনই যাকে দরকার হচ্ছে দৃশ্যপট থেকে সরিয়ে ফেলা হচ্ছে। ফেলে দেওয়া হচ্ছে হাতের টিস্যু পেপারের মতো নিতান্ত অবহেলায়। অবলীলায়।  কেন? রোজ রোজই তরুণ রক্ত দরকার হচ্ছে জরাগ্রস্ত মনোলিথকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য।

আর এই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে জনগণের অতন্দ্র প্রহরী মুক্তিযোদ্ধাদের। এই মুক্তিযোদ্ধাদের কাজেও লাগিয়েছেন প্রেসিডেন্ট জিয়া গোড়ায় দেশ গঠনে। পাকিস্তান ফেরত হাজী, এখন সরকারের বিশেষ দূত ও বিশিষ্ট বিরোধী দল জাতীয় পার্টির প্রধান ও স্বৈরাচার বলে গণউপাধি প্রাপ্ত এরশাদ ক্ষমতায় থাকার সোনার খনির সন্ধান পেয়েছেন। তাঁর মতো স্বাধীনতা বিরোধীর পক্ষে শোভা পেয়েছে  এই খেতাব দেওয়া যে ‘মুক্তিযোদ্ধারা সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ সন্তান’। তিনি আবিস্কার করেন যে ৯ বছরের ছেলের পক্ষেও মুক্তিযোদ্ধা হওয়া সম্ভব। এর ‘যুক্তিগ্রাহ্য’, মনগড়া ব্যাখ্যাও দিয়েছেন। তার আমলে প্রথম নিখাদ মেকি মুক্তিযোদ্ধাদের চাকরি দেওয়া হয়েছে। আর কয়েক লাখ টাকা করে মাথাপিছু ঘুষ নেওয়া হয়েছে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে। মুক্তিযোদ্ধারা এর প্রবল প্রতিবাদ করেছেন। কিন্তু তাদের প্রতিবাদ এমনকি হাইকোর্টেও হালে পানি পায়নি। এজন্যই সম্ভবত বলা হয়ে থাকে তিনি বাংলাদেশের জন্য সবচেযে উপযুক্ত রাষ্ট্রপতি। এর পরে বিরোধী বিএনপি এমপিদের টাকা দিয়ে কিনে নেওয়ার কথা আকাশে-বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে। ‘গোলাম হুজুরের’ দোয়া নিয়ে  ক্ষমতায় আসে বাকশাল নয় আওয়ামী লীগ। মেয়াদ শেষে ক্ষমতায় আসে বিএনপি জোট। বিএনপি জোট গড়ে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। 

এ ক্ষেত্রে ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামী  ইলা মিত্রের বক্তব্য খুবই প্রাসঙ্গিক। তিনি বাংলাদেশের এসেছিলেন ৭০-এর দশকেই। সেদিন ‘নাচোলের রাণী’ বলেছিলেন, আমরা মুক্তিযোদ্ধা, ভারতকে স্বাধীন করেছি। এজন্য আমাদেরকে ভারত সরকার বছরে একবার ডাকেন। তখন আমাদেরকে ৫০ রুপি করে সম্মানী দেওয়া হয়। ভারতবাসী সুখে আছে আমরা তাতেই খুশি। আর কিছুই চাই না আমরা। আমাদের মুক্তিযোদ্ধারাও যুদ্ধে গিয়েছিলেন কোনো বৈষয়িক প্রাপ্তির আশা না নিয়েই  বরং দেশ ও দশের জন্য আত্নদানের’ শপথ নিয়ে।

বলা হয়েছে মুক্তিযোদ্ধারা জনগণের অতন্দ্র প্রহরী। সেটা কাজে দেখা যায় না। দেখা মেলে কেবল সাইনবোর্ডে। তাদের কোনো ভালো কাজে লাগানো হয়নি উল্টো  হাত পাতা সম্মান আর সম্মানি নিতে তাদেরকে উস্কানি দেওয়া হয়েছে। এই উসকানির পথ বেয়ে একে একে আসছে নতুন নতুন বায়না। নাতি-নাতনিদেরকেও গ্রহীতার মিসকিনসুলভ কাতারে যোগ দিতে প্রলুব্ধ করছে। কে? ক্ষমতার রাজনীতি। 

আমরা মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা দেখতে পাচ্ছি, বড়জোর তিন লাখ। আর এদেশের মানুষ শহীদ হয়েছে অফিসিয়াল হিসেবে ৩০ লাখ। আর কোটিরও বেশি লোক ভারতে শরণার্থী হলেও দেশে থেকে যেতে বাধ্য হয়েছে বাকি ৬ কোটি মানুষ প্রাণের শঙ্কা নিয়ে মাতৃভূমির মাটিতেই। তবে তারা কি মুক্তিযুদ্ধের জন্য কিছুই করনেনি? যার মুক্তিযুদ্ধের ময়দানে থাকেননি তাদের পক্ষেই এমন কল্পনার খোঁয়ারি সম্ভব। দেশের মানুষের সহযোগিতা না থাকলে মুক্তিযুদ্ধ কী এতোই সহজ হতে পারতো।  রাজাকার-আল-বদর-পাকিস্তানি দোসরদেরও একটা হিসেবে আছে। তারা নগণ্য। তাহলে যে আতরাফের পক্ষে সংগ্রাম ছিল নেতাদের তারা কেন দেশকে এভাবে ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন করছেন। কেন এই আতরাফদেরকেও কেন সম্মান সম্মানী দিচ্ছেন না। জবাব সহজ ও নির্মম।  ভাগ না করলে শাসনও করা যায় না। সেটাই যদি করা হয় তাহলে উপনিবেশ ও স্বাধীনতার মধ্যে তফাৎ কোথায়? 

অবৈধভাবে ক্ষমতায় পাকিস্তান ফেৃরতা মুক্তিযোদ্ধা বিরোধী চতুর এরশাদ বলেছিলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধারা সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ সন্তান’। প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের কানে এরশাদের অমৃত বচন  কী বিষ হয়েছে তারই প্রতিফলন আমারা দেখলাম মেলান্দহের খাঁটি মুক্তিযোদ্ধার  মর্মে বিঁধে যাওয়া কথায়। এরশাদই নকল নাবালক ও সাবালক মুক্তিযোদ্ধা ঢুকিয়েছেন সিন্ডিকেট করে মোটা ঘুষ নিয়ে। ক্যানভাস করতে দেখেছি :  সার্টিফিকেট একটা নিয়ে নিন। ভবিষ্যতে ভালো চাইলে একদিন কাজে দেবে। আসলেও তাই দেখছেন মোস্তফা।

ঢাকঢোল পিটিয়ে এভাবেই গাণিতিক হারে বাড়ছে মুক্তিযোদ্ধা। সম্মানীও। আর সম্মানের পতন ঘটছে জ্যামিতিক হারে তলানি অভিমুখে। কেননা অমৃতে গরল ঢালা হচ্ছে। কাজটা করছে বেহায়া রাজনীতি। মুক্তিযুদ্ধের পরে জন্ম নিয়েও তার নামে মুক্তিযোদ্ধার সনদ। নকল মুক্তিযোদ্ধা হয়েও আর আসল যুক্তিযোদ্ধা বেঁচে আছেন - এই খবর ও ছবি প্রকাশিত হবার পরেও নকলের দাপট দেখে দেশের আমজনতা হাড়ে হাড়ে টের পেযেছে ‘সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ সন্তান’দের ছবি রাজনীতির রংতুলিতে কেমন করে আঁকা হচ্ছে।

Thursday, December 28, 2017

Soaring prices sapped consumers


Shakhawat Hossain /newagebd.net 




Abnormal price hike of daily essentials, from rice to garlic and salt to onion, remained a matter of worry for the consumers throughout the outgoing year, with traders and importers making whatever they could out of the situation amid allegations of lapses in monitoring by the government agencies concerned.

Rights activists and market experts summed up 2017 as a ‘horrible one’ from the point of view of consumers, especially the fixed and low income groups, because of 30 per cent hike in price of rice and over 200 per cent increase in price of onion in one year in addition to seasonal price hike of salt, spices, garlic, edible oils and government regulated gas and power prices. 

The upshot of price volatility in local commodities market left over 50 per cent of the country’s population living on less than $3 dollar income to struggle most part the year for buying food items that accounts 70 per cent of their daily income.

At least 5.2 lakh people have fallen into poverty because of rice price hike which has also caused a rise in head count poverty rate by 0.32 percentage points in the past few months in the country, according to a study of South Asian Network on Economic Modelling released on December 23. 

Consumers Association of Bangladesh general secretary Humayun Kabir Bhuiyan said that the state-owned monitoring agencies could not fulfil the expectation of the consumers in checking the price hike of essentials, often caused by market manipulation by vested quarters.

‘Consumers were simply frustrated and hapless as market did not function properly,’ he told New Age while making a brief assessment of the outgoing year.

Volatility in price of essentials, first time since the previous food price shock during the military-backed caretaker administration in 2007-08, was created basically in absence of proper monitoring by state-owned agencies, he said.

Lack of proper monitoring enabled many traders to make windfall profits during the passing year at the cost of consumers.

Commerce minister Tofail Ahmed, who is facing severe criticisms following price hike of essential commodities, said on December 21 that 14 state-owned agencies were monitoring the local markets.
Tightening monitoring on buying and selling price of imported products might lead to adverse situation, he claimed while talking to reporters on price hike at his secretariat office.

He explained that traders’ associations were very powerful and might stop selling products.

According to state-run Trading Cooperation of Bangladesh, onion was selling at Tk 120 a kilogram in December, marking 206.67 per cent increase from a year ago.

The price of imported garlic recorded a 64.29 per cent rise to Tk 360 from Tk 220 during June, but more than 30 per cent rise in price of rice since August because of supply shortage amid losses of crop to prolonged floods was most tormenting for three quarters of the population.

Tawfiqul Islam Khan, a researcher at Centre for Policy Dialogue, said that the low-income and fixed income groups spending bulk of their income on food items were main victims of food price shocks in the outgoing year.

The groups have to compromise with expenses on medical and education to make up the higher cost of foods, he noted. 

He criticised as belated moves the steps of importing 15 lakh tonnes of rice by the Ministry of Food against the backdrop of falling food reserve in the public depots.

Besides, reduction of import duty on rice from 28 per cent to only two per cent by the revenue board could not save the consumers from the exorbitant rice price hike that pushed up the monthly inflation in September to 6.12 per cent that according to the Bangladesh Bureau of Statistic was 23 months high, compared to 6.19 per cent in October 2015.

Former executive director of Bangladesh Institute of Development Studies MK Mujeri observed that consumers’ suffering would continue if the state-owned monitoring agencies failed to function properly.

He said the consumers did not see any activities from the Competition Commission that was established in 2016.

Amid demand from many quarters the government passed a bill in parliament in 2012 and established the Competition Commission to ensure fair trade practices and check artificial price hike of commodities, a common phenomenon in a country like Bangladesh where traders and businessmen crowd the leading political parties.
The presence of businessmen-turned-politicians in parliament almost doubled to 64 per cent in 2008 from 34 per cent in 1979, according to findings of Transparency International of Bangladesh in 2014.

The commerce ministry officials alleged that bureaucratic exercise in providing manpower was the main obstacle for Competition Commission to start full-fledge operation.

Experts are doubtful stability will come to the volatile commodities market in coming months against the backdrop of poor monitoring by the state-owned agencies.

They note that keeping price of essentials at a tolerable level for majority of population will be the challenge for the government in the new-year.