Search

Thursday, March 1, 2018

সড়কে বেঘোরে হারিয়ে যাচ্ছে হাজারো প্রাণ! দায় কার?

এ হোসেইন 


ঘটনা নয় , অতি মর্মান্তিক , হৃদয়বিদারক দুর্ঘটনা। সোনারগাঁয়ের অদূরে, ত্রিবর্দিতে। ঢাকা চট্টগ্রাম সড়কে। ২৬শে ফেব্রুয়ারিতে। শিশু ও নারীসহ ১০জন প্রাণ হারায় এই দুর্ঘটনায় নিতান্তই বেঘোরে। সিডিএম পরিবহণের লোকাল যাত্রীবাহী বাসের চালক মোবাইলে কথা বলায় ব্যস্ত রেখে বাস চালাচ্ছিলেন। সামনে দাঁড়িয়ে আজদাঁহা ট্রেলারে গিয়ে ধাক্কা লাগালে প্রাণবায়ু বেরিয়ে গেল ১০ জনের , জখম হলো আরও ১০ জন।

এটি সাম্প্রতিককালের অন্যতম মর্মান্তিক — সড়ক দুর্ঘটনা। 

বাংলাদেশ যাত্রীকল্যাণ সমিতির তথ্যমতে, শুধুমাত্র ২০১৭ সালে প্রায় ৫হাজার সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে যাতে প্রায় সাড়ে সাত হাজার মানুষের মৃত্যু হয়। আরো প্রায় ১৬ হাজার মানুষ হারিয়েছে হাত-পা অথবা শরীরের মূল্যবান কোন অংগ। ২০১৭ সালে সড়ক দূর্ঘটনা বেড়েছে ১৫.৫ শতাংশ (তথ্য-যুগান্তর/ জানুয়ারি ১৩, ২০১৮। 

ওয়াকিবহাল মহল নিশ্চয় একমত হবেন, প্রকৃত সংখ্যা আরো অনেক বেশি হবে। কেননা, এইসব জরিপ সাধারণত জাতীয় পত্রিকায় প্রকাশিত তথ্যের ভিত্তিতে তৈরি করা হয়। সমগ্র বাংলাদেশের আনাচে কানাচে প্রতিদিন সড়কে দুর্ঘটনা হচ্ছে, যার অনেকগুলোর খবর জাতীয় পত্রিকায় পৌঁছায় না। এইভাবে, বছরের পর বছর হাজার হাজার মানুষ সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যাচ্ছে, নয়ত সারা জীবনের জন্য পঙ্গু হচ্ছে। এই ধরণের হাজারো পরিবারের লাখো সদস্যের জন্য তা হয়ে আসে সারা জীবনের কান্না আর অসহায়ত্ব। পরিবারের উপার্জনক্ষম ব্যক্তিটিই হয়তো মারা যাচ্ছে অথবা পরিবারের একটি সদস্য পুঙ্গু হয়ে পরিবারের বোঝা হচ্ছে। কখনো কখনো চরম অবহেলায় সড়কেই চোখের নিমেষে প্রাণ হারায় অমিত সম্ভাবনাময় মানুষ। 

সড়কে এই  দুর্ঘটনার পিছনে প্রথমত রয়েছে চালকদের দায়িত্বজ্ঞানহীনতা। তারা একটু সতর্ক হলেই কমে যেতে পারে এই ধরণের দুর্ঘটনা।      

চালকদের পুরনো রোগ অতিব্যস্ততা। গাড়ি চালানোর কথা ঠাণ্ডা মাথায় কেননা তিনি অনেকগুলি প্রাণের দায়িত্ব নিয়ে গাড়ি চালাচ্ছিলেন। ট্রাফিক পুলিশ গলদঘর্ম হয়েছে বলতে গাড়ি চালানোর সময় মোবাইল ফোনে কথা না বলতে। চালক সেই নিষিদ্ধ কাজটিই জেনে শুনে করেছে। চালকরা তাদের সপক্ষে বলেন তারা তো ইচ্ছ করে জীবহত্যা করেন না। দুর্ঘটনা হয় অনিচ্ছায় । মালিকরাও তাদের পক্ষে গীত গান।

এই গান তারা গাইতেই থাকবেন। কেননা তাদের স্বার্থ আছে। তাছাড়া চালকরাও তো ছাপোষা মানুষ। তাদেরও বৌ-বাচ্চা আছে। সব ঠিক। তবে কোথায় যেনো বেসুরো সুর। শাহবাগের মোড়ে দুই এক বছর আগে এক দুর্ঘটনায় এক ছাত্রী নিহত হয়। তোলপাড় সেই ঘটনায পুলিশের তৎপরতায ধরা পড়ে কিশোর বয়সী এক ড্রাইভার।  তার বেশ মোটা সাজা দেওয়া হয়। সে ইচ্ছে করে চাপা দেয়নি। গরিব ঘরের ছেলে। পত্রিকার পাতায়  তার  ছবি দেখে খুবই খারাপ লেগেছিল। কেননা  সে ঐ বয়সে লাইসেন্স পেল কি করে?  

এক মোটর দুর্ঘটনা ঘটিয়ে চালক পালিয়ে যায়। বাসটি থানায় নিয়ে যাওয়া হলে মালিক এক হাজি সাহেব এসে হাজির। গাড়ি দুর্ঘটনায় আক্রান্ত হয়েছিল এক সাংবাদিকের। সে কি কাকুতিমিনতি! বলে স্যার আমার মাত্র কোনো রকম  ডাল-ভাতের ব্যবস্থা হয়।  ক্ষতিপূরণ ধরলে সেটা দিতে সে অক্ষম। তাকে বলা হলো ড্রাইভার তো পালিয়ে গেছে। তার লাইসেন্স তো নেই। এমন লোককে নিয়োগ দিয়েছেন কেন? সে সবিনয়ে জানালো জেনে শুনেই সে  এমন ড্রাইভার রেখেছে কেননা সবই দু’নম্বর। তাদের দাবি তাই কম। লাইসেন্স নেই বলেই সে ঘুরে ফিরে সে তার কাছেই আসবে। এর সাথে পুলিশ এএসআইকে দেখা গেল, বড়োই ভালো মানুষ! সুপারিশ করছে ছাইড়্যা দেন স্যার গরিব মানুষ। জানি ড্রাইভার, ড্রাইভার নয়, বাসের মালিক। সে বেতন পায় না। পুলিশটি যে মনুষত্বের  বিবেচনায় বলছে সে কথা আদৌ সত্যি নয়। কথা হলো ক্ষতিপূরণ দিতে হবে তবে গরিব হিসেবে সে দেবে প্রকৃত ক্ষতির  পাঁচভাগের একভাগ। পাঁচ হাজার টাকা। বুঝলেন সাংবাদিক, পুলিশ বাসের মালিকের কাছে টুপাইস কামাবে। আর তাদের সহায়তায়ই ঐ ড্রাইভার সাহেবও গাড়ি লাইসেন্স ছাড়াই বাস চালাতে পারবে। তবে মালিক বৃদ্ধ হাজির পায়ে পড়া অনুরোধে তাকে ছেড়ে দিলেন সাংবাদিক। তাতে কার লাভ হলো? পুলিশের, চালকের আর মালিকের। আর ক্ষতিগ্রস্তের ?  এহ বাহ্য!

পুলিশ, হাজি আর চালকের কথা বললাম। চালকের যে শাহবাগের ঘটনায় জেলফাঁস হলো তার জন্য মূলত দায়ী মালিক। কিন্তু সে পার পেয়ে গেল। আমাদের সমাজ ব্যবস্থায়। পরিবহণ মন্ত্রী শাজাহান খান নিজ সুপারিশে ১০ হাজার ড্রাইভার প্রার্থীকে লাইসেন্স দিয়েছিলেন। মোটর ভেহিকলস আইনের সব রীতিনীতি ভেঙে এসব অযোগ্যদের চাকরি দিয়ে বলেছিলেন, আরে ওদের অতো লেখাপড়ার কী দরকার। রাস্তায় গরু-ছাগল দেখে গাড়ি চালাতে পারলেই তো হলো। মূলত এই মন্ত্রী মহোদয়ই যানবাহনের সমস্যার নাটের শুরু। তিনি রাস্তায় যখন গাড়ি চলে তখনকার মতো  ড্রাইভার-কন্ডাকটর ও হেলপারদের গাড়ির মালিক করে দিয়েছেন। কেননা গাড়ি চালানোর জন্য চুক্তিমাফিক  নগদ টাকা শোধ করে তবে ‘মালিকের’ গাড়ি রাস্তায় তোলে যানবাহন শ্রমিক তথা মজলুম ড্রাইভার কন্ডাকটর ও হেলপার ভাইয়েরা। তখন মালিক বনে যায় শ্রমিকেরা । তারা যা ই‌চ্ছ‌ে ভাড়া তোলে । তাদেরকে মালিকরা সে লাইসেন্স দেয়। তবে হ্যাঁ,  শ্রমিকদের গাড়ির টায়ার তেল-মবিল পুলিশ সবই ম্যানেজ করতে হয়। আর নির্দিষ্ট টাকা নিয়ে সুদখোর মহাজনেরা তৃপ্তির ঢেকুর তুলে অন্য ব্যবসায় মজে থাকেন। আর সেখান থেকেই মজা লোটার মদদ পান ‘বড়াকর্তারা।” এক ঢিলে কয়েক পাখি মেরেছেন খান সাহেব। গোটা দুনিয়াতে যে অসম্ভব কাজটি সম্ভব করেছেন শাজাহান খান সেটা হলো মালিক-শ্রমিককে এক কাতারে ফেলা। মালিক-‘শ্রমিক’ মজা লুঠছে জনসাধারণের ঘাড়ে সওয়ার হয়ে। সরকার থাকছে নিরাপদে আর তাদেরকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করে বাড়তি ফায়দা লূটে। আর সরকারের শাসনে অদৃশ্য শক্তির বিরুদ্ধে হরতাল ডেকে সে হরতাল পূর্ণ সফলও করছে। কাজেই চালকদের আর বেশি লেখাপড়ায় কী কাজ , ওরা তামুক সাজুক - এই যেন একটা ভাব। আমরা মানিকগঞ্জের স্বনামধন্য চিত্র পরিচালকের মিডিয়া ট্রায়ালের কথা বলতে পারি। সেখানে যথা অপরাধীর যথাশাস্তি হয়নি।

আর তাই  যা হবার তা হবেই । বেঘোরে মারা পড়বে নারীপুরষ-বৃদ্ধ আবাল বণিতা। আর টাকা এমন জিনিষ মন্ত্রীরও আত্মীয় স্বজন যদি মারাও যায় দুর্ঘটনায় তিনি রাহেলিল্লাই পড়ে ফেলবেন অবলীলায় নগদনারায়নের ডরে। 

বর্তমানে যে হারে রাস্তায় দুর্ঘটনা ঘটে চলেছে তার দায়ভার বর্তমান দায়ভারহীন জনকল্যাণে নির্লিপ্ত ভোটারবিহীন অনৈতিক সরকার।  

Growth not enough to be MIC, inequality prevails

ADB president says about Bangladesh status, advises tapping 'geographical advantage'


Asian Development Bank (ADB) President Takehiko Nakao finds Bangladesh's economic growth not enough to become a higher-middle-income country (MIC) in the set timeline and says inequality a major problem.

"It is not impossible, but it's not easy. Today (Bangladesh's) per-capita GDP is about $1500. But for higher MIC it may require $12,000. So if it maintains 7.0 percent-plus growth in terms of per-capita GDP, it is less than that (required) ….It will require like Chinese per-capita-income growth. So, if Bangladesh can grow as much as China is expanded, it could achieve the target," he said in Dhaka Wednesday.

While offering his institution's help in dealing with development issues, the ADB chief said higher investment in infrastructure, better investment climate, and extended foreign direct investment (FDI) growth like in Vietnam are an imperative.

While briefing journalists at the ADB office in Dhaka at the end of his three-day tour, Mr Takao said Bangladesh's current level of investment is not enough to achieve the longer-term target of becoming MIC by 2041.

The ADB President assured Bangladesh of expanding financial support, including possible investment in the planned second Padma Bridge project.

"We have fund constraints. We support Bangladesh based on the COBP (country operation business plan) here. Moreover, if the government requests us, we will consider financing the proposed second Padma Bridge project," Mr Takao said in reply to a question.

ADB Country Director Mr Manmohan Parkash added that if the government requested the Bank for financing any mega-projects, including second Padma Bridge, they would consider it.

The Manila-based lender scrapped its US$615 million worth of financing plan along with three other foreign donors -- the World Bank, Japan's JICA and the Islamic Development Bank (IDB) -- in 2012 for Bangladesh's first Padma Bridge, following allegations of graft by some government policymakers and officials.

The government later decided to construct the bridge with internal resources, and the bridge is now under construction at Mawa-Janjira point on the River Padma.

The second Padma Bridge is proposed to be built at Douladia-Paturia point, upstream from the Mawa-Janjira point on the mighty river.

The ADB President suggested Bangladesh tap potential geographical dividend for economic advances, as high-growth economies are around.

"Bangladesh can use the geographical advantage of being surrounded by countries like India and China, and Southeast Asia. It will be very useful for the country to grow at higher rate," he told the journalists.

The chief of the Asian development financier spotted some challenges facing increase in investment in infrastructure development, improving business climates, boosting FDI, upgrading the tax-GDP (gross domestic product) ratio and tapping geographical benefit.

About a so-called MIC 'trap', Mr Nakao said it is too early to comment whether Bangladesh is going to fall into the trap.

Asked about the coming political scenario ahead of national elections in Bangladesh, he said: "Although sometimes there is some ups and downs in policies, but I hope the country will continue its policies for infrastructure development. And the ruling party will follow it."

He would like to see stable policies, and better conditions, prudent fiscal policies. "There should be consistency. Then I hope this country will do better," he said as regards matters in the transitional time ahead.

Mr Takao termed the poverty eradication in national standards better. "Poverty is dramatically reduced here. I see in the rural areas that the poverty has been cut significantly. But inequality is a challenge for the countries across the world," he said.

The ADB, based on his firsthand experiences, mentioned that people who were brought up in the capital city are enjoying much more state facilities than others. "But in Bangladesh many people are enjoying the opportunities. But still some people are enjoying more than others. So, the country needs to pay attention to this issue," he said.

"Equality is very important for the country. I think this is the basic thing of the sustainable growth in Bangladesh," he added.

Mr. Nakao feels that Bangladesh is on track to continue its growth momentum and complimented the government for sound management of the economy. "Accelerating GDP growth through higher investment in manufacturing and key infrastructure is the right strategy," he said.

"Sustaining this progress, however, will require an improved investment climate for the private sector, better revenue mobilisation, and continued prudent macroeconomic management."

Hailing Bangladesh's handling of the influx of Myanmar's 688,000 Rohingya people since October 2017, the ADB chief said the lender will offer support to help the government address the crisis, if requested.

About ADB plan for bankrolling development recipe, Mr Takao said they would extend support depending upon need, performance of ongoing projects, and readiness of new projects in Bangladesh.

Under ADB's current Country Partnership Strategy for Bangladesh, it proposes a total of $8.0 billion in assistance, including for non-sovereign operations, during the period 2016-2020.

  • The Financial Express/01-03-2018

kabirhuamayan10@gmail.com

Petrobangla to pass on high cost of LNG to consumers

Proposal on price hike likely within days

M Azizur Rahman 

State-run Petrobangla would propose to raise natural gas tariff next week, aimed at passing a portion of the imported LNG cost on to the consumers.

"We're working on it with a target of submitting the proposal to the energy regulator by the first week of March," Petrobangla chairman Abul Mansur Md Faizullah told the FE Tuesday.

The import of LNG (liquefied natural gas) is expected to be expensive and substantially increase the cost of natural gas supply in the country.

The price hike would be required to meet the increased cost of gas after LNG imports, said the chairman.

Petrobangla has already sent the proposal separately to its large consumers like Bangladesh Power Development Board (BPDB) and Bangladesh Chemical Industries Corporation (BCIC).

When contacted, BPDB chairman Khaled Mahmood acknowledged getting the proposal. "We shall soon discuss the issue of increased costs," he said.

According to a Petrobangla estimate, the government would require US$ 844.20 million (Tk 69.22 billion) in one year to import around 1,000 million cubic feet per day (mmcfd) equivalent of LNG and its re-gasification (in two under construction FSRUs -- floating, storage and re-gasification units).

It would require $600 million more to import around 600 mmcfd of LNG in a year through three proposed small scale FSRUs to be built at offshore Sangu platform and adjacent to already built jetties on the river Karnaphuli owned by Chittagong Urea Fertilizer Company Ltd (CUFL) and Karnaphuli Fertilizer Company Ltd (Kafco), said a senior official.

Petrobangla estimated the LNG purchasing cost to be $7 per million British thermal unit (MMBtu) at CFR (cost and freight).

Bangladesh Energy Regulatory Commission (BERC), in its tariff hike order on August 27 in 2015, had constituted an 'energy security fund (ESF)' to meet the import cost of LNG and building LNG terminal while implementing other relevant projects to ensure energy security.

The commission then created the fund considering 'consumers' benefit' at a weighted average of Tk 1.01 against per cubic metre of natural gas, said a senior official at the BERC.

The regulator recently approved spending money worth Tk 69.22 billion from the ESF, which is already deposited, to meet the LNG import and terminal related costs, said a senior official of Energy and Mineral Resources Division (EMRD) under the Ministry of Power, Energy and Mineral Resources (MPEMR).

In September 2017, Petrobangla had prepared a draft proposal with almost doubling the natural gas tariff for different consumers like fertiliser, industries, commercial, and captive power plants.

Petrobangla then proposed to raise CNG (compressed natural gas) price by 61.56 per cent to Tk 51.70 per cubic meter (cu m) from existing Tk 32 cu m.

For household consumers, it sought a hike by Tk 2.10 per cu m to Tk 11.20 per cu m. For commercial consumers, the tariff hike proposed to be Tk 35 per cu m from existing Tk 17.04 per cu m and, for industries, the tariff proposed to be Tk 14.98 per cu m from Tk 9.62 per cu m. For electricity generation, the cost proposed to be Tk 4.99 per cu m from existing Tk 3.16 cu m. Tariff for tea gardens as estimated by Petrobangla is set to see a hike to Tk 12.10 per cu m from existing Tk 7.42 per cu m.

Petrobangla chairman, however, said the draft of the proposal would be modified before submitting it to the BERC.

Energy adviser of Consumers' Association of Bangladesh (CAB) Professor M Shamsul Alam criticised Petrobangla over sending the tariff hike proposal to the selected industrial consumers. "It is the BERC having the authority to raise the tariff," he said.

  • Courtesy: The Financial Express Feb 28, 2018

Launching of metro rail to miss target

DMTCL struggling to contract out a crucial component


Dhaka Mass Transit Company Limited (DMTCL) is struggling with contract package-7 of the metro rail project due to having only one firm out of four short-listed ones for holding financial negotiations, sources said.

For being unable to contract out the important component of the project, they said, the commercial launching of the capital's first mass transport service is likely to miss the target.

The component is to develop electrical and management system of the 20.1-kilometre elevated track and stations, which are necessary to start the commercial operation of the trains.

The CP -7 was opened in March 2015 at the early stage of starting biding for all eight packages of the mass rapid transit line-6 (MRT-6) project.

Sources said the DMTCL, a state-owned company to implement the MRT projects in the city, had to revise twice the contract signing deadline, but missed both. Now, it set a new target to sign the contract by this month (March).

Sources, however, feared that the new target would also be missed as it would not be possible to start financial negotiation with the lone firm.

The last deadline of awarding the package was December 2017. If the contract could be signed by then, it would have been possible to meet target to launch the MRT-6 by 2022, sources said.

DMTCL sources said that only four joint venture Japanese firms showed interest in the work out of 31 which purchased the documents. All the four companies were short-listed and invited to submit their proposals. But three did not turn up finally.

DMTCL sources said that as the CP-7 has multi-level tasks, this extra time was needed for various clarification and confirmation. But sources alleged that the lone firm is taking advantage sensing the project's helpless condition.

"The company understands the reality that the DMTCL has no option as calling fresh tender would be more time consuming," said a source involved with the project.

However, DMTCL officials said the tender evaluation committee has completed the technical evaluation in October 2017 and opened the financial offer. They said the financial evaluation is also done and the report will soon be sent to the Japan International Cooperation Agency (JICA), the project's financier, for its concurrence, they added.

But it is learnt that the financial offer is much higher than the proposed amount for the package. Negotiation on the financial offer will start after JICA's concurrence.

The first set of train out of 24 is scheduled to arrive in December 2020.

The DMTCL is implementing the Tk 219.85 billion MRT-6 project for introducing train based mass transit service from Uttara to Motijheel by 2024.

  • Courtesy: The Financial Express Mar 01,2018

বৈধ অস্ত্রের অবৈধ ব্যবহার


নারায়ণগঞ্জে প্রায় এক হাজার লাইসেন্স করা অস্ত্র রয়েছে। এর মধ্যে অনেক অস্ত্র এমন রাজনৈতিক ব্যক্তিদের কাছে ছিল বা আছে, যাঁরা রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়নের সঙ্গে সম্পৃক্ত। তাঁরা বৈধ অস্ত্রের অবৈধ ব্যবহার করছেন।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জে বর্তমানে লাইসেন্স পাওয়া অস্ত্রের মধ্যে শটগান ৫৯৫টি, পিস্তল ২২২টি, রিভলবার ৯৩টি ও টু-টু বোর রাইফেল ৬৩টি। এর মধ্যে জেলা প্রশাসন নিজে শটগানের লাইসেন্স দেয়। অন্য অস্ত্রগুলোর ক্ষেত্রে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন সাপেক্ষে লাইসেন্স দেয় জেলা প্রশাসন।
লাইসেন্স করা অস্ত্রের বেআইনি ব্যবহারের উদাহরণ দেখা যায় গত ১৬ জানুয়ারি। ওই দিন ফুটপাতে হকার বসানোকে কেন্দ্র করে নারায়ণগঞ্জের চাষাঢ়ায় সিটি মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীর ওপর সাংসদ শামীম ওসমানের কর্মী-সমর্থকেরা হামলা চালান। শামীম ওসমানের ক্যাডার নিয়াজুল ইসলাম এবং মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক শাহ্ নিজামকে তখন প্রকাশ্যে পিস্তল নিয়ে মহড়া দিতে দেখা গেছে। তবে প্রদর্শন করা সেই অস্ত্রগুলো বৈধ বলে তাঁরা দাবি করেছেন।

নারায়ণগঞ্জে কারা কারা অস্ত্রের লাইসেন্স পেয়েছেন, তা জানতে চেয়ে জেলা প্রশাসনের কাছে তথ্য অধিকার আইনে আবেদন করেছিলেন প্রথম আলোর একজন প্রতিবেদক। কিন্তু গত বছর ১ জুন ব্যক্তিগত ও রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে এই তথ্য দেয়নি জেলা প্রশাসন।

নারায়ণগঞ্জ নাগরিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান বলেন, মেয়র আইভীর ওপর সশস্ত্র হামলা এবং প্রকাশ্যে অস্ত্র প্রদর্শনের ঘটনায় সেই অস্ত্রধারীদের অস্ত্রের লাইসেন্স এখনো বাতিল করেনি প্রশাসন। তিনি বলেন, বিভিন্ন দলের সময়ই রাজনৈতিক বিবেচনায় ও ক্ষমতাসীনদের প্রভাবে নারায়ণগঞ্জে অধিকাংশ অস্ত্রের লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে। অবৈধ অস্ত্রবাজেরা বৈধভাবে অস্ত্রের লাইসেন্স পেলে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা থাকে না।

জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক রাব্বী মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর দেড় বছরের দায়িত্ব পালনের সময় তিনি খুব কমসংখ্যক অস্ত্রের লাইসেন্স দিয়েছেন। এ ক্ষেত্রে কোনো ধরনের রাজনৈতিক বিবেচনা ছিল না। 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সালে শামীম ওসমান সাংসদ থাকার সময় নিয়াজুল ইসলাম ও শাহ্ নিজাম অস্ত্রের লাইসেন্স পান। নিয়াজুল সাংসদ শামীম ওসমানের অন্যতম ঘনিষ্ঠ সহযোগী এবং মহানগর কমিউনিটি পুলিশিংয়ের সাধারণ সম্পাদক। এর আগে ২০১৫ সালের ৫ জানুয়ারি তিনি নিজের লাইসেন্স করা অস্ত্র নিয়ে প্রতিপক্ষ ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের ধাওয়া করেন। বিভিন্ন গণমাধ্যমে ওই ছবি প্রকাশিত হলেও তাঁর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। শামীম ওসমানের ওই দুই সহযোগীর অস্ত্রের লাইসেন্সও এখনো বাতিল করা হয়নি।

নিয়াজুল ১৯৮৮ সালে চাষাঢ়ায় জোড়া খুন মামলার আসামি ছিলেন। ১৯৯১ থেকে ১৯৯৬ পর্যন্ত কয়েকটি হত্যা মামলারও আসামি ছিলেন তিনি। পরে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে রাজনৈতিক বিবেচনায় সে মামলাগুলো প্রত্যাহার করা হয় বলে জানা গেছে।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, জেলার চিহ্নিত সন্ত্রাসী এবং আলোচিত সাত খুনের মামলায় মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া আসামি নূর হোসেন এবং তাঁর সহযোগীদের কাছে ১১টি অস্ত্রের লাইসেন্স ছিল। অস্ত্রগুলোর মধ্যে সাতটি শটগান, দুটি পিস্তল ও একটি করে রাইফেল ও রিভলবার রয়েছে। নূর হোসেন ও তাঁর ক্যাডাররা ২০১২ থেকে ২০১৩ সালের মধ্যে ওই অস্ত্রগুলোর লাইসেন্স পায়। তারা ওই অস্ত্র ব্যবহার করে সিদ্ধিরগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করত। 

নূর হোসেন বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচিতে তাঁর লাইসেন্স করা অস্ত্র নিয়ে অংশ নিতেন। সাত খুনের ঘটনার পর তৎকালীন জেলা প্রশাসক আনিসুর 

রহমান মিয়া ১১টি অস্ত্রের লাইসেন্স বাতিল এবং অস্ত্রগুলো জব্দ করেন। বাতিল করা ১১টি অস্ত্রের লাইসেন্স নবায়ন এবং ফেরত চেয়ে উচ্চ আদালতে রিট আবেদন করেছেন নূর হোসেনের ভাতিজা ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক শাহজালাল বাদল।

এ বিষয়ে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ফারুক হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ওই অস্ত্রের লাইসেন্স ফিরিয়ে দেওয়া হলে জননিরাপত্তা বিঘ্নের আশঙ্কা রয়েছে। এ বিষয়ে উচ্চ আদালতে প্রতিবেদন দিয়েছে পুলিশ। এ ছাড়া গত জানুয়ারিতে চাষাঢ়ায় হকার ইস্যুতে সংঘর্ষের ঘটনায় প্রকাশ্যে অস্ত্র প্রদর্শন ও অস্ত্র ব্যবহারের ঘটনাটি নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানা-পুলিশ তদন্ত করছে। 

আরেক ঘটনায় গত ৮ ফেব্রুয়ারি বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে রায়ের দিন রূপগঞ্জ উপজেলায় স্থানীয় আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে যুবলীগ কর্মী সুমন আহমেদ মারা যান। এই ঘটনায় করা মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, কায়েতপাড়া ইউপির চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামের লাইসেন্স করা পিস্তল থেকে ছোড়া গুলিতে সুমন মারা যান। তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম। 

সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চের আহ্বায়ক রফিউর রাব্বি বলেন, নূর হোসেনের কারণে নারায়ণগঞ্জে সাত খুনের মতো ঘটনা ঘটেছে। এখন নিয়াজুল ও শাহ্ নিজামেরা প্রকাশ্যে অস্ত্র উঁচিয়ে ভীতি প্রদর্শন করছেন। প্রশাসনের পক্ষপাতিত্বের কারণেই এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি হচ্ছে।

  • প্রথম আলো / ১ মার্চ ২০১৮ 

বখে যাওয়া ব্যাংক

আব্দুল বায়েস



হুমায়ূন আহমেদের ‘বহুব্রীহি’ নাটকের একটি বিখ্যাত উক্তি এ রকম: রিকশা চালিয়ে উপার্জন করলে মানুষ দেখে ফেলবে, মান-ইজ্জতের বালাই থাকবে না। তার চেয়ে অন্ধকারে চুরি করা অনেক ভালো। কেউ দেখবে না; উপার্জন হবে, মান-সম্মান নিয়ে টানাটানি হবে না। বর্তমানে বাংলাদেশের ব্যাংকগুলোয় যে হরিলুট চলছে, তাতে বহুব্রীহি নাটকের উক্তিটি বারবার মনে পড়ে। ব্যাংকের সবাইকে অন্ধকারে রেখে অন্ধকার পথে ডাকাতি করে বড় হওয়ার বাসনা বড় বড় লোকের। এরা সমাজে সম্মানিত ব্যক্তি, সংসদ সদস্য। এদের সঙ্গে আত্মীয়তা করতে আকুলতা সবার।

নানা বাহানায় বাংলাদেশে ব্যাংকের সংখ্যা বেড়েই চলছে। বর্তমানে প্রায় ৬০টি ব্যাংক কাজ করছে এবং শোনা কথা, ডজনখানেক অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। ব্যাংকের সংখ্যা বৃদ্ধির পক্ষে বেশ জোরেশোরে সাফাই গাইতে অর্থমন্ত্রীর কোনো রাখঢাক নেই। থাকার কথাও নয়। কারণ যারা অনুমোদন পাচ্ছে, তাদের প্রায় সবাই সরকারের সমর্থক; কিন্তু মুশকিল হয় যখন সরকারের স্বার্থ ও দেশের স্বার্থ সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে। দেশের চলমান পরিস্থিতিতে ভাবার কোনো অবকাশ নেই যে একটি ব্যাংকেরও অনুমোদন দেয়া প্রয়োজন। রাজনৈতিক বিবেচনাপ্রসূত ব্যাংক যে কত ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে, তার বড় প্রমাণ অতিসম্প্রতি ঘটে যাওয়া ফারমার্স ব্যাংক কেলেঙ্কারি। ব্যাংকগুলোয় পারিবারিক নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠাকল্পে স্বয়ং সরকার উদগ্রীব। সোনালী, বেসিক, জনতা ব্যাংক কেলেঙ্কারি শেষে সম্প্রতি মাথা তুলেছে ফারমার্স ব্যাংক কেলেঙ্কারি। আর এসব ঘটছে অর্থ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ব্যাংকের চোখের সামনে। অথচ এরা অর্থবাজারের অভিভাবক। বাংলাদেশ ব্যাংক মুখে কুলুপ এঁটে মনে মনে গাইছে, ‘আমার বলার কিছু ছিল না না গো... চেয়ে চেয়ে দেখলাম তুমি চলে গেলে...।’

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক অর্থনৈতিক উপদেষ্টা বিরূপাক্ষ পাল থেকে ধার করা বক্তব্য দিয়ে মূল আলোচনায় যাওয়া যেতে পারে। স্যার আইজাক নিউটন নাকি একবার দরজায় বড় একটা গর্ত খুঁড়েছিলেন তার বিড়ালটি আসা-যাওয়ার জন্য। এগুলোকে বলে পেট ডোরস বা পোষা প্রাণীর দরজা। সাধারণত দরজার নিচে থেকে এ দরজায় তিনি আবার অন্য একটা ছোট গর্ত খোঁড়েন বিড়ালছানা আসা-যাওয়ার জন্য। আমরা নিশ্চিত নই, সত্যি সত্যি নিউটন ওই কাজটা করেছিলেন কিনা; তবে এ রূপক থেকে একটা শিক্ষা বেরিয়ে আসে। তা হলো এই যে, বড় বিড়াল ও বিড়ালছানা যদি একই গর্ত দিয়ে আসা-যাওয়া করতে পারে তাহলে ছোট গর্ত অর্থহীন। তেমনি আমাদের অর্থ মন্ত্রণালয় যদি ব্যাংকিং খাতের সব দেখাশোনা করতে পারে তাহলে আলাদা করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক রাখার কোনো যুক্তি আছে কি? বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক অর্থনৈতিক উপদেষ্টা বিরূপাক্ষ পালের সঙ্গে সহমত পোষণ করে বলা যায়, অর্থ মন্ত্রণালয় যদি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মতামতকে গুরুত্ব না দেয়, তাহলে সচিবালয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অফিসের এক কোণে বাংলাদেশ ব্যাংককে জায়গা দিলেই তো ল্যাঠা চুকে যায়। এটা শুধু ব্যয়সাশ্রয়ী হবে না, এ দুই প্রতিষ্ঠানের মধ্যকার আপাত প্রতীয়মান দূরত্বকে শূন্যের কোটায় নিয়ে আসতে সক্ষম হবে বলে আমাদের ধারণা। ইদানীং বাংলাদেশের ব্যাংকিং বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক তথা বাংলাদেশ ব্যাংকের কোনো কথাই যেন সরকার শুনতে আগ্রহী নয়। সরকার রাজনৈতিক বিবেচনায় যা করছে, তা অর্থনৈতিক বিবেচনাপুষ্ট নয়। এদিকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকও সরকারের কাছে ‘গুড বয়’ ইমেজ রক্ষা করতে গিয়ে বাজারবহির্ভূত অসঙ্গতিগুলো গিলতে বাধ্য হচ্ছে, যেমন— নতুন ব্যাংকের জন্ম ও ব্যাংক প্রশাসনে পরিবারতন্ত্রের পুনর্জন্ম ইত্যাদি।

গেল অর্থবছরের জুনে সরকার ‘পুঁজি পুনঃকরণ’ (রিক্যাপিটালাইজেশন) ঘোষণা করে। তার আগে ২০০৯ থেকে ১৪ হাজার ৫০৫ কোটি টাকা ব্যাংকগুলোকে দেয়া হয়েছে। দুঃখের সঙ্গে বলতে হয়, পুঁজি পুনঃকরণের পুরো অর্থ ময়লার নালায় প্রবাহিত হয়েছে। নির্দিষ্ট করে বলতে গেলে, প্রায় পুরো অর্থ রাজনৈতিকভাবে শক্তিশালী ও দুর্নীতিবাজ লোকদের পকেটস্থ হয়েছে। এখন আবার তারা চাইছে পুনঃপুঁজিকরণ অর্থ, পরিমাণ ২০ হাজার কোটি টাকার মতো; যা এ বছরের বাজেট বরাদ্দের চেয়ে দ্বিগুণ। তাদের এ দাবি কোনোমতেই গ্রহণযোগ্য নয়। তাদের ব্যবহার উচ্ছন্নে যাওয়া বখাটে ছোকরার মতো, যে প্রত্যেক সময় বাবার টাকা আকাশে উড়িয়ে আবার বাবার কাছে হাত পাতে। পার্থক্য এটুকুই যে, বখাটে ছেলেটিকে বাবা তার পকেট থেকে টাকা দেন আর বখাটে ব্যাংকগুলোকে সরকার অর্থ দেয় জনগণের ওপর করের বোঝা চাপিয়ে। প্রসঙ্গত, কেউ কেউ ভারতের সাম্প্রতিক ১৪ বিলিয়ন ডলারের পুঁজি পুনঃকরণ প্রসঙ্গ টেনে আনেন। আমরা ভালো ভালো দীক্ষা নিতে দুঃখ পাই, অথচ মন্দ উদাহরণ টেনে মহানন্দে থাকি। ভারতে ঋণখেলাপের প্রধান কারণ আমলাতান্ত্রিক জটিলতা ও লাল ফিতার দৌরাত্ম্যে মেগা প্রকল্প শেষ হতে দেরি হওয়া এবং এর ফলে বিনিয়োগকারীর আর্থিক ক্ষতি। অন্যদিকে বাংলাদেশে ঋণখেলাপির কোনো প্রকল্পই থাকে না। যা-ও থাকে তা মিথ্যা প্রকল্প, মিথ্যা দলিল আর সত্যি শক্ত রাজনৈতিক প্রশ্রয় নিয়ে বাংলাদেশে ঋণখেলাপির জন্ম। তাছাড়া ভারতে পুঁজি পুনঃকরণ প্রক্রিয়ার সঙ্গে বহুমাত্রিক সংস্কারসাধনের শর্ত জুড়ে দেয়া হয়। বাংলাদেশে তা হয় না; বরং চোখ বুজে পুঁজি পুনঃকরণ করা হয়।

বেসিক ব্যাংকের ৪ হাজার ৫০০ কোটি টাকা তুলে নেয়ার জন্য ওই ব্যাংকের বোর্ডের কোনো সদস্যকে জেল খাটতে ও জরিমানা গুনতে হয়নি। এদিকে একই ব্যক্তির বিভিন্ন ভুয়া প্রকল্পে জনতা ব্যাংক অর্থ ঢেলেছে। প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকা। অথচ এর বোর্ড সদস্য বা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে কোনো মামলা এ পর্যন্ত রুজু করা হয়নি। সোনালী ও অন্যান্য ব্যাংকের কথা না হয় না-ই তোলা হলো। ফারমার্স ব্যাংক, বেসিক ব্যাংক, জনতা ব্যাংক ইত্যাদির সব বোর্ড সদস্য ও চেয়ারম্যানকে আইনের আওতায় এনে যথাযথ শাস্তি না দিলে বাংলাদেশের আর্থিক খাতে রক্ত ঝরতেই থাকবে। যথাযথ সংস্কার ছাড়া অতিরিক্ত অর্থ বরাদ্দের মানে দাঁড়ায় পচা ব্যাঙ কুয়ায় রেখে পানি সেচা।

অথচ আমরা তেমনটি চাই না। কেন্দ্রীয় তথা বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালন পদ্ধতিতে আমূল পরিবর্তন আনা দরকার। উন্নয়ন চেতনা, আর্থিক জগতে অভিনবমূলক ও নীতি বাস্তবায়নে অধিকতর কঠোর হওয়া প্রয়োজন। বাংলাদেশ সরকারের উচিত হবে বাংলাদেশ ব্যাংককে অধিকতর স্বায়ত্তশাসন দেয়া। পুরো আর্থিক বাজারের উন্নতি ও অবনতির দায়ভার বাংলাদেশ ব্যাংকের। সরকার শুধু তার কর্তব্য পালনে সহায়তা করবে মাত্র।

বহুদিন আগে একটা বইতে সরকার তথা অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সম্পর্ক নিয়ে একটা প্রবন্ধ পড়েছিলাম। যতটুকু মনে পড়ে, ওই বইতে বলা হয়েছে যে কেন্দ্রীয় ব্যাংক অনেকটা ভালো গৃহবধূর মতো। ভালো গৃহবধূ স্বামীর সিদ্ধান্ত নিয়ে তর্কাতর্কি, ঘ্যানরঘ্যানর করে, তবে শেষমেশ স্বামীর সিদ্ধান্ত মেনে নেয় এই বলে যে, পতি পরমেশ্বর। ঠিক তেমনি কেন্দ্রীয় ব্যাংক সরকারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে একেবারেই যে কিছু বলে না তা নয়, তবে শেষমেশ মেনে নেয় যে সরকারই শেষ কথা। আমাদের মতো অনুন্নত দেশে বাংলাদেশ ব্যাংক তথা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভূমিকা একজন ভালো গৃহবধূর মতোই। সমস্যাটা ওখানেই। আমরা চাই, বাংলাদেশ ব্যাংক সরকারের ভালো গৃহবধূ না হয়ে অর্থবাজারের অর্থবোধক অভিভাবক হিসেবে দাঁড়াক। নয়তো আর্থিক সুনামির তোড়ে ভেসে যাবে সবাই।

শেষ কথা। দুষ্ট গরুর চেয়ে শূন্য গোয়াল শ্রেয়। এতগুলো রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক থাকার প্রয়োজন আছে কি নেই, তা এখন মিলিয়ন ডলার প্রশ্ন। প্রয়োজন থেকে থাকলেও ওগুলো শুধু আমানত সংগ্রহে কাজে লাগানো যায় কিনা, সেটাও ভাবার বিষয়। মোটকথা, আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর, এমনকি কেন্দ্রীয় ব্যাংকে বৈপ্লবিক সংস্কার না ঘটা পর্যন্ত রক্তক্ষরণ বন্ধ হবে বলে মনে হয় না। একমাত্র ব্যাপক সংস্কারসাপেক্ষে রুগ্ণ কোনো ব্যাংকের জন্য সীমিত মাত্রায় পুনঃপুঁজিকরণ হতে পারে। মনে রাখতে হবে যে শর্তহীনভাবে পুনঃপুঁজিকরণ প্রক্রিয়া ব্যাংক রুগ্ণ হওয়ার অন্যতম উৎসাহদাতা। সুতরাং শেয়ার মার্কেটের ধসের মতো ব্যাংকিং খাতে যাতে সুনামি না আসতে পারে, তার জন্য এখন থেকেই প্রস্তুতি নেয়া প্রয়োজন। অন্যথায় পস্তাতে হবে সবাইকে।

  • বনিক বার্তা/ মার্চ ০১, ২০১৮

রহস্যময়ভাবে বদলে গেল জনতা ব্যাংকের চেয়ারম্যান নিয়োগ


সদ্য বিদায়ী জ্যেষ্ঠ সচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুনকে রাষ্ট্রায়ত্ত জনতা ব্যাংকের চেয়ারম্যান করে গত রোববার প্রজ্ঞাপন জারি করেছিল অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ। যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন ব্যাংকটির পরিচালক ও চেয়ারম্যান পদে যোগদানপত্রও পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু রহস্যময়ভাবে বদলে গেছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের এ সিদ্ধান্ত।

গতকাল জনতা ব্যাংকের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন ‘দোহাটেক নিউ মিডিয়া’ নামের একটি প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান লুনা শামসুদ্দোহা। তিনি ২০১৬ সালের ২৭ জুন থেকে ব্যাংকটির পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপন জারির পর চেয়ারম্যান পদে যোগদানপত্র গ্রহণ না করা এবং দুদিনের ব্যবধানে নতুন একজনকে নিয়োগ দেয়ার এ ঘটনা রহস্যময়।

জনতা ব্যাংকের পরিচালক ও চেয়ারম্যান পদে সাবেক জ্যেষ্ঠ সচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুনের যোগদানপত্র পাঠানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. ইউনুসুর রহমান। বণিক বার্তাকে তিনি বলেন, সরকারের সিদ্ধান্তের আলোকেই গত রোববার হেদায়েতুল্লাহ আল মামুনকে জনতা ব্যাংকের পরিচালক ও চেয়ারম্যান পদে নিয়োগ দেয়া হয়েছিল। তিনি মন্ত্রণালয়ে যোগদানপত্র পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু তার যোগদানপত্র গ্রহণ না করে নতুন করে লুনা শামসুদ্দোহাকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। সরকার চাইলে যেকোনো সময়ই সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করতে পারে।

হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করায় এ বিষয়ে তার বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।

গত রোববার অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছিল, ‘জনতা ব্যাংক লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদে পরিচালক ও নতুন চেয়ারম্যান হিসেবে হেদায়েতুল্লাহ আল মামুনকে নিয়োগ দেয়া হলো। ব্যাংক কোম্পানি আইন অনুযায়ী, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের এ প্রস্তাব কেন্দ্রীয় ব্যাংক অনুমোদন করলে তিনি এ দায়িত্ব পালন করবেন।’

কিন্তু অর্থ মন্ত্রণালয় এ সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করার পর গতকালই ব্যাংকটির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নিয়েছেন লুনা শামসুদ্দোহা।

এ বিষয়ে জনতা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. আব্দুছ ছালাম আজাদ বলেন, ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সভা চলাকালেই অর্থ মন্ত্রণালয়ের ফ্যাক্স পেয়ে জনতা ব্যাংকের পরিচালক লুনা শামসুদ্দোহা চেয়ারম্যান পদে যোগদান করেছেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, ব্যাংক কোম্পানি আইন অনুযায়ী কোনো ব্যাংকের পরিচালক পদে বাংলাদেশ ব্যাংক নিয়োগ চূড়ান্ত করে। লুনা শামসুদ্দোহা আগে থেকেই জনতা ব্যাংকের পরিচালক ছিলেন। এজন্য চেয়ারম্যান পদে তার যোগদানে আইনি কোনো বাধা ছিল না। জনতা ব্যাংক থেকে যোগাযোগ করা হলে বিষয়টি তাদের জানিয়ে দেয়া হয়েছে।

তবে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপন জারির দুদিন পর আবারো অন্য কাউকে চেয়ারম্যান নিয়োগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি নজিরবিহীন বলে মনে করছেন বাংলাদেশ ব্যাংক কর্মকর্তাসহ রাষ্ট্রায়ত্ত অন্যান্য ব্যাংকের এমডিরা। বিষয়টি নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করলেও কেউই আনুষ্ঠানিকভাবে মন্তব্য করতে চাননি।

১৯৮২ ব্যাচের কর্মকর্তা হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব হিসেবে ২০১৭ সালের ৪ অক্টোবর অবসরে যান। তার আগের বছর ২৯ ডিসেম্বর ওই পদে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। ২০১৪ সালে পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য থাকা অবস্থায় জ্যেষ্ঠ সচিব পদে পদোন্নতি পান হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন। তিনি ২০১৪ থেকে ২০১৭ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাণিজ্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়, তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়েও বিভিন্ন মেয়াদে সচিবের দায়িত্বে ছিলেন তিনি। হেদায়েতুল্লাহ আল মামুনের ছোট ভাই মো. ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ বর্তমানে রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্ব পালন করছেন।

  • বনিক বার্তা/ মার্চ ১, ২০১৮  

আইনের শাসন মানে, রাস্তায় ফেলে গলা টিপে ধরা নয়

গোলাম মোর্তোজা 


  
আদর্শ কাগজে লেখা থাকে। কাজের সঙ্গে তার মিল থাকে না, তবে মুখে থাকে। প্রতিপক্ষের উদ্দেশে আদর্শের কথা বলেন, নিজে মেনে চলেন না। বলছি রাজনীতি ও রাজনীতিকদের কথা, বিশেষ করে বাংলাদেশের বড় দুটি রাজনৈতিক দল ও নেতাদের কথা। তারা একে অপরের ভুল, অন্যায়-অনিয়ম-অনৈতিকতা, দুর্নীতি নিয়ে কথা বলেন। অন্যকে যা বলেন, নিজে বা নিজেরা তা করেন না। সম্প্রতি বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার জেল-জরিমানার প্রতিবাদে আন্দোলন করছে বিএনপি। শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের অংশ হিসেবে গত ২২ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় সমাবেশের অনুমতি চেয়েছিল বিএনপি। অনুমতি দেওয়া হয়নি। এর প্রতিবাদে কালো পতাকা প্রদর্শনের কর্মসূচি দিয়েছিল তারা। আজকের লেখা এই কালো পতাকা প্রদর্শন ও পুলিশি প্রতিরোধ বা তাণ্ডবকে কেন্দ্র করে।

১. পাঁচ বছরের দণ্ড মাথায় নিয়ে খালেদা জিয়া কারাগারে। ধারণা করা হয়েছিল, এর প্রতিবাদে বিএনপি মারদাঙ্গা কর্মসূচি দেবে। হরতাল, ধর্মঘট, গাড়িতে আগুন, ভাঙচুর হবে। আক্রমণ হবে পুলিশের ওপরও। রায় ঘোষণার কয়েকদিন আগে তার আলামতও পাওয়া গিয়েছিল। হাইকোর্টের সামনে বিএনপি কর্মীদের দ্বারা আক্রান্ত হয়েছিল পুলিশ বাহিনির সদস্যরা। বিএনপি নেতৃবৃন্দের দাবি, তাদের রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত এমন ছিল না। বিএনপির ভেতরের একটা ক্ষুদ্র অংশ বিশেষ সংস্থার প্রযোজনায় পুলিশকে আক্রমণ করে বসে। সেদিন পুলিশ বেশ রহস্যজনকভাবে পরিচিত মারমুখী অবস্থান না নিয়ে, নীরবে মার হজম করে। খালেদা জিয়ার রায়ের পরে বিএনপি আরও মারমুখী কর্মসূচি দেবে, অনেকেই এমনটা ভাবছিলেন। সরকার, সরকারের আইনশৃঙ্খলা বাহিনি সেভাবেই প্রস্তুত ছিল। ২০১৪ সালের সহিংসতা দমনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনি সফল হয়েছিল। তাদের এই আত্মবিশ্বাস ছিল যে সহিংস কর্মসূচি দুই চারদিন চলার পরই তা বন্ধ করে দেওয়া যাবে। বিএনপি সহিংস, প্রায় জঙ্গি দল একযোগে এমন প্রচারণা শুরু করা যাবে। ২০১৪-১৫ সালের মতো আবারও ইমেজ সংকটে পড়বে বিএনপি।

কিন্তু সরকারসহ আর অনেককে হতাশায় ডুবিয়ে, আক্রমণাত্মক সহিংস কর্মসূচির পথে হাঁটল না বিএনপি। কারাগারে যাওয়ার আগে বেগম খালেদা জিয়া কড়া নির্দেশনা দিয়ে গেলেন, কোনও প্রকার সহিংসতা নয়।

বিএনপি কেন এমন সিদ্ধান্ত নিল বা নিতে পারলো? বিএনপি ২০১৪ সালের অবরোধের কর্মসূচি এবং তার প্রেক্ষিতে সহিংসতার বিষয়টির আত্মমূল্যায়ন করেছে। বিএনপি বিশ্বাস করে, সব সহিংসতা, পেট্রোলবোমায় মানুষ তারা পোড়ায়নি। কিন্তু পুরো দায় নিতে হয়েছে। সরকারকে বিপদে ফেলা গেলেও সফল হওয়া যায়নি। সাময়িক বিপদে পড়লেও, কঠোরভাবে সহিংসতা দমন করে সফল হয়েছে সরকার। গুলি করে হলেও সহিংসতা দমনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনি বিশেষ দক্ষতা অর্জন করেছে। ফলে পুরনো সেই সহিংস কর্মসূচির ধারে কাছে দিয়ে যায়নি বিএনপি। এমন শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি বিএনপি নিয়েছে, যা প্রতিরোধ বা বাধা দেওয়ার যুক্তি খুঁজে পায়নি পুলিশ বা সরকার।

২. শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির অংশ হিসেবে সমাবেশের অনুমতি না পেয়ে, কালো পতাকা প্রদর্শনের কর্মসূচি দেয় বিএনপি। বিএনপি নেতাকর্মীরা হাতে কালো পতাকা নিয়ে জড়ো হয়েছিল, পল্টনে তাদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে। যুদ্ধক্ষেত্র বা প্রায় রণাঙ্গনের প্রস্তুতি নিয়ে পুলিশ তা প্রতিরোধ করেছে।

প্রশ্ন হলো, শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক কর্মসূচির অংশ হিসেবে, কালো পতাকা প্রদর্শন করা যাবে না কেন? সমাবেশের জন্যে পুলিশের অনুমতির বিষয়টি মেনে নেওয়া যায়। সেটাও সমতাভিত্তিক হওয়া দরকার। আওয়ামী লীগ অনুমতি চাইলেই পাবে, ছাত্রলীগের জন্যে অনুমতিরও দরকার হবে না। অনুমতি শুধু বিএনপি বা বিরোধীদের জন্যে। এমন আইন তো নেই, সরকার রীতি করে নিয়েছে।

বিএনপির শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির অংশ হিসেবে সমাবেশের অনুমতি না দেওয়ার কোনও কারণ ছিল না। যদিও বড় রাজনৈতিক দলের কর্মসূচি বা সমাবেশ মানে জনগণের চরম ভোগান্তি। বিএনপিকে সমাবেশের অনুমতি না দেওয়ার ক্ষেত্রে জনগণের ভোগান্তি বিবেচনায় নিয়ে তো আর সরকার সিদ্ধান্ত নেয়নি। কারণ, জনভোগান্তির উপলক্ষ সরকার বা আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গসংগঠনই বেশি ঘটায়।

বিএনপি বা বিরোধীদের কর্মসূচির সময় সরকার হঠাৎ করে জনবান্ধব হয়ে ওঠে।

বিএনপি নেতাকর্মীরা কালো পতাকা প্রদর্শনের জন্যে জড়ো হয়েছিলেন ফুটপাতে। সংখ্যা বাড়ায় তা রাস্তায় চলে আসে। যদিও তখন পর্যন্ত পুরো রাস্তা বন্ধ হয়নি। রাস্তা বন্ধ করা ঠিক নয়।কিন্তু বাংলাদেশের বাস্তবতায় রাজনৈতিক কর্মসূচিতে রাস্তা বন্ধ করাটাই সবচেয়ে স্বাভাবিক ঘটনা। রাস্তা বন্ধ করতে দেওয়া হবে না, এমন উদ্যোগ নিলে তা হবে প্রশংসনীয়। তা প্রয়োগ করতে হবে সব দলের ক্ষেত্রে। শুধু বিরোধীদলের জন্যে নয়। 

৩. কালো পতাকা প্রদর্শনের নামে রাস্তা বন্ধ করে জনভোগান্তি সৃষ্টি করা হয়েছিল, এ কারণে পুলিশ ব্যবস্থা নিয়েছে।

কয়েকশ’ মানুষের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নামে পুলিশ, জলকামান- রঙ্গিন পানি- গরম পানির ব্যবহার করেছে। একজন কালো পতাকা প্রদর্শনকারীকে, সাদা পোশাকের পাঁচ সাতজন পুলিশ মাটিতে ফেলে গলা টিপে ধরেছে। সরকার প্রতিদিনই মুখে মুখে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করে ফেলে। যে আইনের শাসন মানে, একজন রাজনৈতিক কর্মীর গলা টিপে ধরবে সাতজন পুলিশ। যে আইনের শাসনে বাংলাদেশ একটি পুলিশি রাষ্ট্র। কালো পতাকা প্রদর্শনের জন্যেও সেই রাষ্ট্রে পুলিশের অনুমতি নিতে হবে। তা প্রযোজ্য হবে শুধু বিরোধীদলের ক্ষেত্রে, এবং বিরোধীরা অনুমতি চাইবে কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রে পাবে না। রাস্তায় নামলেই গলা টিপে ধরা হবে। 

৪. বাংলাদেশের রাজনীতিতে কৌতুককর কিছু উপাদান সব সময়ই থাকে। মন্ত্রিত্ব হারিয়ে হাছান মাহমুদ সেই স্থানটি গত কয়েক বছর দখল করে রেখেছেন। এখন তার প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে আবির্ভূত হচ্ছেন সড়ক ও সেতু মন্ত্রী, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। খালেদা জিয়া কক্সবাজার গেলেন। ওবায়দুল কাদের বললেন, অরাজকতা তৈরির জন্যেই খালেদা জিয়া সড়ক পথে গেছেন। কেন তিনি সড়ক পথে গেলেন? ঠিকই তো, খালেদা জিয়া কেন সড়ক পথে যাবেন! যেখানে ছাত্রলীগের সভাপতি যান হেলিকপ্টারে! 

কালো পতাকা প্রদর্শনে পুলিশি তাণ্ডবের পর ওবায়দুল কাদের বিএনপিকে, ঘরের ভেতরে রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করার উপদেশ দিয়েছেন। স্বৈরাচারী শাসনে তেমন নজিরই ছিল। ওবায়দুল কাদের কি স্বীকার করে নিচ্ছেন, এখন বাংলাদেশের মানুষ তেমন শাসনেই আছে? 

৫. সরকার বিনাভোটের নির্বাচনে গঠিত হলেও, সরকারের পরিচয় তো গণতান্ত্রিকই। মানুষের প্রতিবাদ করার অধিকার আছে। আইন করে তা বন্ধ করা হয়নি। এখনকার আওয়ামী লীগের বক্তব্য, রায় দিয়েছে আদালত, সরকার নয়। আদালতের রায় মানতে হবে, আদালতের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা যাবে না। 

কী চমৎকার বক্তব্য! আদালতের বিরুদ্ধে লাঠি মিছিলের কথা হয়তো মানুষ ভুলে গেছে। কিন্তু ষোড়শ সংশোধনীর রায়ের প্রসঙ্গ তো মানুষ ভুলে যায়নি। আদালত, প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে দেওয়া বক্তব্যের কথা কি আওয়ামী লীগ এত তাড়াতাড়ি ভুলে গেল? জনগণ তো ভোলেনি। প্রধান বিচারপতিকে এত নাটক আয়োজন করে বিদেশে পাঠানো হলো। তার বিরুদ্ধে নাকি ১১টি সুনির্দিষ্ট গুরুতর অভিযোগ। সব অভিযোগ বক্তব্যে থাকল, বিদেশে পাঠানোর আগে পর্যন্ত। দুর্নীতি, নৈতিক স্খলনের অভিযোগে বিচার নয়, বিদেশে পাঠিয়ে দেওয়া! এর নামও আইনের শাসন।

৬. সমতাভিত্তিক সমাজ গড়ার উদ্যোগ না নিলে, যত সময় যাবে তত বেশি জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়তে হবে। পুলিশি রাষ্ট্র কায়েম করে ক্ষমতায় হয়তো থাকা যাবে, জনসমর্থন পাওয়া যাবে না। জনসমর্থন ছাড়াও ক্ষমতায় থাকা যায়, এমন নজির পৃথিবীর বহু দেশে আছে, ছিল। কোনও কোনও কট্টর একনায়ক শাসিত দেশও সমৃদ্ধ হয়েছে। নজির আমাদের আশপাশেও আছে। সেসব দেশের একনায়কদের সময়ে আর্থিক অসততা বা অনিয়ম ছিল না। তাদের কারও জামানায় রাষ্ট্রায়ত্ত কোনও ব্যাংক লুটপাট হয়ে যায়নি, নিয়ম করে প্রতি বছর দেশ থেকে ৭৬ হাজার কোটি টাকা পাচার হয়ে যায়নি। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ চুরি হয়নি। ৩০০ কোটি টাকার একটি ফ্লাইওভারের বাজেট ১২০০ কোটি টাকা বাড়িয়ে ১৫০০ কোটি টাকা করে, ১২০০ কোটি টাকা চুরি করা হয়নি। লুটপাটকারীরা ক্ষমতা বলয়ের কাছাকাছি থাকার সুযোগ পায়নি।

কাগজের ‘উন্নয়ন’র গল্পের সঙ্গে দেশের সাধারণ জনমানুষের তেমন কোনও সম্পর্ক নেই। ক্ষমতা বলয়ের কাছের অল্প কিছু মানুষের আয় বাড়ছে, অনিয়ম- দুর্নীতি করে। দেশের অধিকাংশ নিম্ন আয়ের মানুষের আয় আরও কমছে। ‘উন্নয়ন’র এত গল্পের মাঝে সরকারি পরিসংখ্যানও তেমনটাই বলছে।

মানুষের কথা বলার অধিকার কেড়ে নেওয়ার উদ্যোগ নিলে, শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক কর্মসূচি জঙ্গি কায়দায় প্রতিরোধ করলে, সহিংসতাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। কৌশল কি তেমনটাই!

  • লেখক: সম্পাদক, সাপ্তাহিক Feb 28, 2018

চট্টগ্রামে বেপরোয়া ছাত্রলীগ, নেপথ্যে বুড়োদের খেল



গঠনতন্ত্র মতে ছাত্রলীগ আওয়ামী লীগের অরাজনৈতিক সহযোগী সংগঠন। যা ছাত্রলীগের সিংহভাগ নেতাকর্মীরও জানা নেই। তারা জানেন, ছাত্রলীগ আওয়ামী লীগের ‘ছাত্র রাজনৈতিক’ সংগঠন। 


সংগঠনটির কেন্দ্রীয় নেতারা প্রায় বলে থাকেন ছাত্রলীগ শুধুমাত্র আওয়ামী লীগের সভানেত্রী, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভ্যানগার্ড। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে দেখা যায় সংগঠনটির নেতাকর্মীরা চলে আওয়ামী লীগের মন্ত্রী ও এমপিদের কথায়। কারণ এদের রয়েছে প্রাপ্তির বড় নেশা। পদ-পদবি, টেন্ডার, সরকারি প্রকল্প হাতানো, বালু উত্তোলন, পাহাড় কাটা, থানা ও উপজেলা প্রশাসন বাণিজ্য, মাদক পাচার ও বিক্রয়সহ নানা অপরাধে সুবিধার সহজ মাধ্যম হচ্ছেন মন্ত্রী-এমপিরা।


বিনিময়ে মন্ত্রী-এমপিরাও যথেচ্ছা ব্যবহার করেন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের। যারা যে কোনো স্থানে, যে কোনো সময় হামলা-মারামারি ও সংঘর্ষে লিপ্ত হতে দ্বিধা করে না। মূলত ছাত্রলীগের নৈরাজ্যের নেপথ্যেই হচ্ছে আওয়ামী লীগের বুড়োদের খেল। এমন অনুযোগ ছাত্রলীগের নিচু ও মধ্যম সারির নেতাকর্মীদের। তাদের অভিযোগ, প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হওয়ার ভয়ে উঁচু সারির নেতারা এ ব্যাপারে মুখ খুলেন না।

নেতাকর্মীরা জানান, আওয়ামী লীগ ক্ষমতাসীন হওয়ার পর চট্টগ্রাম মহানগর, কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় এবং উত্তর দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের নৈরাজ্যের পেছনে বার বার উঠে এসেছে আওয়ামী লীগের প্রয়াত নেতা এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী ও বর্তমান সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিনের নাম।  মহানগর থেকে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের সবখানে ছাত্রলীগ এই দুই নেতার অনুসারী হিসেবে দু’গ্রুপে বিভক্ত। যা এখন ছড়িয়ে পড়েছে স্কুল ছাত্রলীগেও।

যদিও স্কুল ছাত্রলীগ বলতে আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্রে কোনো অস্তিত্ব নেই। তবুও এই স্কুল ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা মহানগর, ওয়ার্ড ও কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের ছত্রছায়ায় চলে। বড়ভাইদের পদাঙ্ক অনুসরণ করে স্কুল ছাত্রলীগের কিশোর ছাত্ররাও বেপরোয়া। গত তিনমাসে এই স্কুল ছাত্রলীগের হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে সুভাষ বড়ুয়া, আদনান ও ইব্রাহিম নামে তিন কিশোর। যত্রতত্র ঘটছে ভয়াবহ সংঘর্ষও।

এদের সবার চোখে মুখে শুধুই প্রাপ্তির নেশা। কারও নেশা সংগঠনের শীর্ষ পদে আসীন হয়ে নেতৃত্বের প্রভাব সৃষ্টি করা। কারও নেশা আধিপত্য বিস্তার করে বৈধ-অবৈধ উপায়ে অর্থ উপার্জন করা। গত মঙ্গলবার দুপুরে চট্টগ্রাম নগরীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে এমন এক ভয়ংকর নেশায় মেতে উঠে উত্তর জেলা ছাত্রলীগ। বিস্ফোরণ, হাতাহাতি-মারামারিতে পণ্ড হলো তাদের সম্মেলন। আর এ ঘটনায় উঠে আসে আরেক বুড়োর খেল। তিনি হচ্ছেন গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন। 

নেতাকর্মীরা জানান, যে কারণে সম্মেলন, সে সম্মেলনে গঠনতন্ত্রের বাইরে বিনা কাউন্সিলে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক আগে থেকেই ঠিক করে ফেলেন মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন। যা সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে জেনে যান ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। ফলে এই ঠিক, বেঠিক করে দেয়ার জন্য আগে থেকেই সম্মেলন পণ্ডের প্রস্তুতি নেন অন্য নেতার অনুসারী ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। যেসব নেতারাও ওইদিন সম্মেলন মঞ্চে উপিস্থত ছিলেন। এরমধ্যে চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার সংসদ সদস্য এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরীর অনুসারী ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা ছিলেন অন্যতম। নেপথ্যে ছিলেন রাঙ্গুনিয়ার সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাসান মাহমুদের অনুসারী ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরাও। ছিলেন হাটহাজারী ও ফটিকছড়ি উপজেলা ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরাও। 

আলাপকালে নেতাকর্মীদের অনেকেই জানান, সম্মেলনের আগেই মিরসরাই উপজেলার তানভীর হোসেন তপুকে সভাপতি এবং সন্দ্বীপ উপজেলার মফিদুল ইসলাম জিকুকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করা হবে এমন কথা সবার মুখে মুখে ছিল। এই দুইজন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপির সুনজরে ছিল। দুইজনের কমিটির ফাইল ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের হাতে তুলে দেয়ার পর শুরু হয় হট্টগোল। 

বিশেষ করে রাউজান, রাঙ্গুনিয়া ও হাটহাজারী উপজেলা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এই হট্টগোল শুরু করে। একপর্যায়ে মিরসরাই-সিতাকুণ্ড ও সন্দ্বীপ উপজেলা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে হাতাহাতি-মারামারি শুরু হয়। এ সময় ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন বিরোধী স্লোগানও দেন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। হাতাহাতি-মারামারির চেয়েও ক্ষুব্ধ ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের লক্ষ্য ছিল সম্মেলন মঞ্চ। সেখানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনকে লক্ষ্য করে চেয়ার ছুড়ে মারেন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। 

একপর্যায়ে অতিথিরা চলে যাওয়ার সময় রাউজান উপজেলা ছাত্রলীগের এক নেতা ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের পথ আগলে ধরেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন ওই ছাত্রলীগ নেতার ওপর চড়াও হন।

চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আবু তৈয়ব সংঘর্ষের সময় সংবাদ মাধ্যমে বলেন, ছাত্রলীগে ঢুকে পড়া জামায়াত শিবিরের লোকজনই মারামারির ঘটনা ঘটিয়ে সম্মেলন পণ্ড করেছে। সভাপতি বখতিয়ার সাঈদ ইরান বলেন, বহিরাগতরা পরিকল্পিতভাবে সম্মেলন পণ্ড করার জন্য এই ঘটনা ঘটিয়েছে। দায়ীদের চিহ্নিত করার জন্য পুলিশ প্রশাসনের সহযোগিতা নেয়া হচ্ছে। এদিকে সাধারণ সম্পাদক আবু তৈয়ব ও সভাপতি বখতেয়ার সাঈদ ইরান ও দলের কেন্দ্রীয় কমিটির প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাসান মাহমুদের অনুসারী বলে জানা গেছে। হাসান মাহমুদ পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী হওয়ার পর তাদের এই কমিটি ঘোষণা করা হয়। এরপর আর কোনো সম্মেলন হয়নি চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রলীগের। তবে রাউজানের তরুণ নেতা কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুল হায়দার চৌধুরী রোটন বলেন, এসব বিষয়ে মন্তব্য করার সময় এখনো আসেনি। এটুকু বলবো নেতাকর্মীরা কেউ প্রকাশ্যে কথা বলার সাহস না পেলেও ক্ষোভ পুষে রেখেছিল। এটা তারই বহিঃপ্রকাশ। 

এর আগের দিন সোমবার বিকালেও চট্টগ্রাম লালদীঘির মাঠে প্রয়াত নেতা এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরীর স্মরণসভায় একই ঘটনা ঘটায় ছাত্রলীগ। সেখানে দফায় দফায় হাতাহাতি-মারামারি ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনার পর রাতে ভয় ও আতঙ্ক নিয়ে কোনোমতে শেষ হয় স্মরণসভা। আর এই সংঘর্ষ ঘটে মহিউদ্দিন চৌধুরী অনুসারী ও আ জ ম নাছির উদ্দিন অনুসারী ছাত্রলীগ নেতাকর্মীর মধ্যে। যারা কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় ভিত্তিক ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। 

এই দুই নেতার অনুসারী হিসেবে নগরীর সিটি কলেজ, ওমরগণি এমইএস কলেজ, চট্টগ্রাম সরকারি কলেজ ও সরকারি হাজী মুহাম্মদ মহসিন কলেজে ছাত্রলীগ দুই গ্রুপে বিভক্ত। তারাও পদ-পদবি, টেন্ডার, সরকারি প্রকল্প ও ব্যবসা হাতিয়ে নেয়া ও মাদক পাচার-বিক্রির মতো কাজে লিপ্ত। এসব কাজে আধিপত্য বিস্তারের নেশায় প্রায় সময় তারা সংঘাত-সংঘর্ষে লিপ্ত হচ্ছে। 

এর কয়েকদিন আগে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রক্টরের কার্যালয় এবং সাধারণ মানুষের গাড়ি ভাঙচুর করার পাশাপাশি তিন সাংবাদিকের ওপরও হামলা চালিয়ে আহত করেছে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জড়িত আট শিক্ষার্থীকে দুই বছরের জন্য বহিষ্কার করেছে। কিন্তু ছাত্রলীগ সাংগঠনিকভাবে তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি।

তবে ছাত্রলীগের এসব ঘটনায় ক্ষুব্ধ নগর ও জেলা আওয়ামী লীগের অনেক শীর্ষ নেতা। এরমধ্যে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ছাত্রলীগে টোকাই শ্রেণি এবং হাইব্রিডের আধিপত্য বেড়ে গেছে। যারা তদবির করে পদ-পদবি নিয়েছে কিংবা নিতে চায় তারা নিজেদের আধিপত্য বিস্তারে এসব করছে। এ রকম প্রাপ্তির নেশায় বেপরোয়া এখন ছাত্রলীগ। আবার মন্ত্রী-এমপিরাও টোকাই এবং হাইব্রিডকে সঙ্গে নিয়ে যায় যে কোনো কর্মসূচিতে। এটাই হচ্ছে ছাত্রলীগে বুড়োদের খেল। যা কোনো নীতিতে পড়ে না। 

  • Courtesy: Daily Manabzamin Mar 01, 2018


'Govt plotting Jan 5-style election'

BNP writes to UN, Commonwealth


The BNP has sent a letter to the United Nations, alleging that the government was hatching a blueprint for an election without Khaleda Zia, a number of BNP leaders said.
The party also sent a copy to Commonwealth Secretary-General Patricia Scotland.

“We wrote letters to the United Nations and Commonwealth informing them about the present situation of the country. We told them that our chairperson was convicted in a false and fabricated case.

“The intention behind the case was to keep her away from politics and also from the next election. The government wants to hold a one-sided election like the one held on January 5, 2014,” BNP Secretary General Mirza Fakhrul Islam Alamgir told The Daily Star yesterday.

The letters, signed by Fakhrul, were sent yesterday (Wednesday).

The letter to the UN Secretary General António Guterres was sent through UN Residential Coordinator in Bangladesh Mia Seppo.

Terming the UN the guardian of the world, the BNP letter said the country was going through a critical time with democracy at stake, according to BNP leaders.

Talk among political parties is essential to resolve the ongoing political crisis, it added. The party's acting chairman Tarique Rahman gave some directions on the draft before it was finalised.

BNP leaders quoting the letter said the ruling Awami League held the last parliamentary election unilaterally in the name of continuation of the constitution.

They added that BNP and most other political parties did not participate in that election and the AL promised at the time that the next election would be held very soon after consulting all political parties.

Ahead of that election, the then UN secretary general Ban Ki-moon phoned Sheikh Hasina and Khaleda Zia over the matter. Moon sent the then UN assistant secretary-general for political affairs Oscar Fernandez-Taranco to Dhaka.

Taranco visited Bangladesh from December 6-11 to broker a solution to the political impasse regarding the election-time governance. During his stay, the Awami League and BNP leaders met for the first time in his presence and began a formal dialogue.

Taranco met Prime Minister Sheikh Hasina, BNP Chief Khaleda Zia, and then chief election commissioner Kazi Rakibuddin Ahmad, and civil society representatives, among others.

After returning, Taranco submitted the report on his visit to Bangladesh to the then UN Secretary-General Ban Ki-moon, emphasising that the UN stay engaged with the stakeholders in Bangladesh. In yesterday's letter, the BNP wrote that Bangladesh was truly at historical crossroads with democratic forces fighting fascism.

A BNP leader quoting the letter said the AL was aware that the BNP and Begum Khaleda Zia remained to be major obstacles in its push towards establishing one-party rule. This case is but one instance of that strategy.

“We have drawn attention of the United Nations because they are taking a keen interest in the development of Bangladesh and democracy of Bangladesh. For a long time, they have been taking interest in the political situation of Bangladesh, particularly the ensuring elections,” Moudud Ahmed, BNP standing committee member, said, adding that the UN repeatedly said it would like to see participatory election in Bangladesh.

“Since we are a member of the United Nations, the issue should be brought to their notice. That is why we sent letter,” he said.

  • Courtesy: The Daily Star Mar 01, 2018