Search

Tuesday, March 6, 2018

নির্বাচনের ঠিক আগে ব্যাঙ্কের বাইরে নগদ টাকার পাহাড়!


খলিলুর রহমান  


ব্যাংকে আমানত রাখা মানুষের টাকা যখন ব্যাংক খেয়ে ফেলছে আর আমানতদারদের ব্যাংকে আস্থা ক্ষীণ হচ্ছে, তখন স্বাভাবিক ও অস্বাভাবিকভাবে ব্যাঙ্কের বাইরে নগদ টাকার সরবরাহ বাড়ছে। ব্যাঙ্কের আমানত নানা ব্যাঙ্কে খেয়ানত হওয়া ও বিশেষ করে দীর্ঘ মেয়াদি আমানতে সুদের হার ক্রমান্বয়ে কমার কারণে আমানতকারীরা ব্যাংক থেকে আমানত তুলে নিচ্ছে। সাধারণ সঞ্চয়কারীদের সেভিংস সার্টিফিকেটে বিনিয়োগের প্রবণতা বজায় থাকলেও এখাতেও সুদ কমেছে। এই  সঞ্চয় সার্টিফিকেট খাত থেকে সরকার বাড়তি হারে ঋণগ্রহণ করছে। মূলধন যন্ত্রপাতি খাতে ওভারইনভয়েসিং ও আন্ডার ইনভয়েসিং-এর মাধ্যমে মূলধন পাচার নতুন কিছু নয়। দ্য ফিনান্সিয়াল এক্সপ্রেস-এর গত ২৭ তারিখের শীর্ষ সংবাদ কাহিনীতে বলা হচ্ছে দেশের ব্যাংকব্যবস্থার বাইরে নগদ টানা ২০১৬ সালে গত নভেম্বর মাসেই ১৫৬.১১ বিলিয়ন বা ১৪.০৬ শতাংশ বেড়ে ১১১২.৪২ বিলিয়ন থেকে ঐ মাসেই দাঁড়ায় ১১১২.৪২ বিলিয়ন টাকা। এ তথ্য দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বিশেষজ্ঞরা এঅর্থ আগামী নির্বাচনে অপব্যবহারের আশঙ্কা করছেন। ২০১৬-র ডিসেম্বরে এই টাকার পরিমাণ দাঁড়ায় ১১১৩.৫৩ বিলিয়ন।

অন্যদিকে, ব্যাংক আমানত পড়তেই থাকে। এটা কমে আসে ডিসেম্বর ২০১৬-র  ১৩.১৩ শতাংশ থেকে ডিসেম্বর ২০১৭-র ১০.৬২ শতাংশে। আর ঋণ প্রদান বেড়ে যায় ২০১৬-র ৩১ ডিসেম্বরে তার আগের  পঞ্জিকা বছরের ১৫.৯৮ শতাংশ থেকে উঠে যায় ১৮.১০ শতাংশে।

এর কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বিশেষজ্ঞরা  ব্যাংকের বাইরে কারেন্সি মজুত গড়ে তোলা, মূলধন ও অন্যান্য সামগ্রী আমদানি খাতে নানা কৌশল ও কারচুপি, অনানুষ্ঠনিক  মূদ্রাবাজার বা কার্ব মার্কেট থেকে ডলার কিনে অনানুষ্ঠানিক , অবৈধ বা কালো চ্যানেলে বা হুণ্ডিতে বিদেশে অর্থ পাচার - এধরনের কারণ দেখান। বস্তুত মানি লণ্ডারিং রোধে আইন প্রধানত টেরর মানির প্রবাহ রোধে করা হলেও বিদেশে অর্থপাচার বেধড়ক চলছে নানা পথে। বন্ধ হচ্ছে না কিছুতেই। তা নাহলে সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশীদের এতো অর্থ গিয়ে ওঠে কীভাবে। এক্ষেত্রে সরকার শোচনীয় ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন বা এটা তাদের ইচ্ছাকৃত। বলা হচ্ছে, এই বিপুল টাকা ইচ্ছাকৃতভাবেই ব্যাঙ্কিং চানেলের বাইরে রেখে দেওয়া হয়েছে আগামী সাধারণ নির্বাচনে ব্যয় করার জন্য।

এক্সপ্রেস রিপোর্টে আরও বলা হচ্ছে, এজন্য থাইল্যাণ্ড, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, পাকিস্তান ও ভারত ছাড়াও আরও কয়েকটি দেশে বাংলাদেশী ১০০০ টাকা ও ৫০০ টাকার নোট মজুত করার জন্য অননানুষ্ঠনিক  বাজার কাজ করছে।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কালো টাকার ব্যবহারের এই  অশুভ সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করে তুলতে হবে। গণমাধ্যম ও সচেতন জনগণকে এই ব্যাপারে জোরালোলো ভূমিকা রাখতে হবে।

বাংলাদেশি শ্রমিক নিয়োগে ফের কুয়েতের নিষেধাজ্ঞা


বাংলাদেশি শ্রমিক নিয়োগের ওপর ফের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে আরব উপসাগরীয় অঞ্চলের উত্তরের দেশ কুয়েত। দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শেইখ খালিদ আল জাররাহ সোমবার, মার্চ ৫, বাংলাদেশি শ্রমিক নিয়োগের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন। 

একই সঙ্গে এ নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার জন্য মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। 

একটি জটিল প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আরব উপসাগরীয় অঞ্চলের এই দেশটিতে বাংলাদেশি শ্রমিকদের নিয়োগ দেয়া হয়। এই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ব্যক্তিগত এজেন্ট, দালালরাও জড়িয়ে থাকে। ফলে কেউ কেউ অনেক সময় প্রতারণার শিকার হন। বাংলাদেশ জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর পরিসংখ্যান বলছে, ১৯৭৬ সালে বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক নিয়োগ শুরু করে কুয়েত; যা ২০০৭ সাল পর্যন্ত অব্যাহত ছিল। এ সময়ের মধ্যে মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশটিতে কমপক্ষে ৪ লাখ ৮০ হাজার বাংলাদেশি কর্মে যোগ দিয়েছে। নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অনিয়ম ও দেশটিতে পাড়ি জমানোর পর অবৈধ কাজে জড়িয়ে পড়ার অভিযোগে ২০০৭ সালে বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক নিয়োগ বন্ধ করে কুয়েত। ২০১৪ সালে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে আবারো বাংলাদেশি শ্রমিক নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেয় দেশটি। 

২০১৬ সালের মে মাসে গোয়েন্দা প্রতিবেদনে অনিয়মের তথ্য উঠে আসার পর আবারো বাংলাদেশে থেকে পুরুষ গৃহকর্মী নিয়োগের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে কুয়েত। পরে কুয়েত সরকার দেশটির নাগরিকদের বিদেশি শ্রমিক নিয়োগে নতুন শর্ত আরোপ করে। ওই সময় বলা হয়, প্রত্যেক কুয়েতি নাগরিক যদি কোনো দেশের একজন পুরুষ গৃহকর্মী নিযুক্ত রাখেন; তাহলে ওই দেশের আর কোনো শ্রমিককে নিয়োগ দিতে পারবেন না। নতুন শর্তে বলা হয়, নিয়োগদাতার অবশ্যই নিজস্ব বাড়ি থাকতে হবে কুয়েতে। ২০১৬ সালে কুয়েতে বাংলাদেশি শ্রমিকের সংখ্যা ছিল ২ লাখ।
  • তথ্যসূত্রঃ মানবজমিন 

বেগম জিয়ার বিচার, বাকশালীকরণের পথে আওয়ামী লীগ



রাতুল চৌধুরী 

রায়ে সেই প্রশ্নবোধক (?) চিহ্ন হয়ে গেলো  দাঁড়ি ! 


বুধবার, ফেব্রুয়ারি ২১, দলের প্রেসব্রিফিং এ বলেছেন,  বিএনপির যুগ্মমহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, জিয়া অরফ্যনেজ ট্রাস্ট মামলার রায়ের বিষয়ে তাদের  দলের আগের বক্তব্যের সত্যতা প্রমাণিত হয়েছে। আদালত বেগম জিয়ার বক্তব্যকে বিকৃত করে সেটাকেই তাঁর বিরুদ্ধে কাজে লাগিয়েছেন। আদালতে বেগম জিয়া বলেছিলেন, ‘...ছাত্র ও শিক্ষকদের হত্যা করা হচ্ছে। এগুলি কী ক্ষমতার অপব্যবহার নয়? ক্ষমতার অপব্যবহার আমি করেছি?’ রায়ে সেই প্রশ্নবোধক চিহ্ন হয়ে গেলো - দাঁড়ি। এ কাজটি তাঁর ইচ্ছাকৃত ও সরকার প্রধানকে খুশি করার জন্য। তিনি বলেছেন , এটি বিচারক ড. আক্তারুজ্জামানের জুডিশিয়াল ফ্রড। সরকার যে বিচার ব্যবস্থাকে তাদের পদলেহী করে তুলেছেন। এটি তার সর্বশেষ দৃষ্টান্ত। দেশের গোটা বিচার ব্যবস্থাকে পদদলিত করা হয়েছে। 

উদ্বেগজনকভাবে বিচার বিভাগে সরকারের হস্তক্ষেপ বৃদ্ধি 

বাংলাদেশের মানবাধিকার নিয়ে বার্ষিক প্রতিবেদন ২০১৭/১৮ এ মানবাধিকার বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলেছে, উদ্বেগজনকভাবে বাংলাদেশে বিচার বিভাগে সরকারের হস্তক্ষেপ বৃদ্ধি পেয়েছে। জুলাইয়ে প্রধান বিচারপতির সভাপতিত্বে সুপ্রিম কোর্টের একটি আদেশে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিল করা হয়। ওই সংশোধনীতে বিচারকদের বিরুদ্ধে অসদাচরণ ও  অযোগ্যতার অভিযোগ আনা হলে পার্লামেন্টকে অভিশংসনের ক্ষমতা দেয়া হয়েছিল। প্রধান বিচারপতি ওই সংশোধনী বাতিল করে দেয়ার পর তার সমালোচনা হয় সরকারের পক্ষ থেকে । এরই পরিপ্রেক্ষিতে নভেম্বরে প্রধান বিচারপতির পদ ত্যাগ করেন এস কে সিনহা। এর ফলে দেশ এমন একটি পরিস্থিতিতে ধাবিত হয়, যাতে ইঙ্গিত মেলে নির্বাহী বিভাগ বিচার বিভাগে হস্তক্ষেপ করেছে। 

৬৩২ পৃষ্ঠা হয়ে গেলো ১১৬৮ পৃষ্ঠা

বৃহস্পতিবার, ফেব্রুয়ারি ৮, বেগম জিয়াকে মিথ্যা ও সাজানো মামলায়   পাঁচ বছর কারাদণ্ড দেয়া হয়।  রায় ঘোষণার ১১দিন পর ফেব্রুয়ারি ১৯, বিকেলে খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা রায়ের সার্টিফায়েড কপি হাতে পায়। যদিও রায় ঘোষণার পরপরই সার্টিপায়েড কপি হাতে পাওয়ার কথা। সুপরিকল্পিত ভাবে প্রায় দুই সপ্তাহ বিলম্ব ঘটানো হয়। গণমাধ্যমে রিপোর্ট আসে বিচারক নাকি রায় এডিট করছেন। ১১৬৮ পৃষ্ঠার এ রায়ের সার্টিফায়েড কপি দেন আদালতের পেশকার মোকাররম হোসেন বেগম জিয়ার আইনজীবীদের হাতে। ১১৬৮ পৃষ্ঠার এ রায়ের সার্টিফায়েড কপির সঙ্গে আদেশ যোগ হয়েছে আরও ৬ পৃষ্ঠা। যদিও রায় ঘোষণার সময় বলা হয়েছিল এটি পুরো রায়টি ৬৩২ পৃষ্ঠার।  

তিন দিনের মধ্যে বেগম জিয়াকে জামিন দেয়ার কথা -  ড. কামাল 

ফেব্রুয়ারি ১৫, জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে ‘কার্যকর গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় ছাত্রসমাজের ভূমিকা’ শীর্ষক আলোচনায়  বিশিষ্ট আইনজীবী ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন এই ব্যাপারে বিস্ময় প্রকাশ করে বলেছেন, তিন দিনের মধ্যে তাকে (বেগম জিয়াকে) জামিন দেয়ার কথা। অথচ বলা হচ্ছে রায় সংশোধন করা হচ্ছে। অবাক লাগছে। রায় দেয়া হয়ে গেছে তবে কপি দেয়া যাচ্ছে না, কারণ কপি সংশোধন করা হচ্ছে। এই যে কপি দেব কপি দেব বলা হচ্ছে ... কী প্রহসন হচ্ছে..। আইনকে নিয়ে খেলা করা হচ্ছে। 

এখন নথি… ইচ্ছাকৃত বিলম্ব 

বেগম জিয়া জামিনের জন্য উচ্চ আদালতে আবেদন করলে, আদালত দুইদিন শুনানি শুনে বিচারিকে আদালতকে নথি পাঠাতে বলে। সেই নথি এখন দেশজুড়ে বড় আলোচনার বিষয়। মুক্তিযোদ্ধা  ড. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেছেন, ‘সদরঘাট থেকে ঢাকা হাইকোর্ট যাতায়াতে ডিজিটাল যুগে কয় ঘণ্টা সময় লাগে তা আমাদের জানা। বিচারিক আদালত থেকে বেগম জিয়ার রায়ের কপি হাইকোর্টে পৌঁছুতে কোনোভাবেই এত সময় লাগার কথা নয়! এটা অনেকটা ইচ্ছাকৃত বিলম্ব।’ 

কাজেই, এই রাষ্ট্রযন্ত্র সাবেক তিনবারের নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী ও মহান স্বাধীনতার ঘোষকের স্ত্রীকে দেশের একজন সাধারণ নাগরিকের সমান অধিকারও পাচ্ছেন না। 

তা এখন বিনাভোটের সরকারের ফরজ কাজ হলো ‘মাইনাস ওয়ান’ ফর্মূলা বাস্তবায়ন। দরকার হলে তারেক ও জুবাইদা রহমানকে ফাঁসাতে হবে। তার আলামত এখনই দেখা যাচ্ছে।  বিচারবিভাগের উচ্চ বিচারক যারা বেগম জিয়ার মামলা দেখবেন তাদের ব্যক্তিগত পটভূমি থাকছে কট্টর আওয়ামী লীগারের । আওয়ামী লীগের দেশের নব বাকশালীকরণ ফ্যাসিবাদ এখন কোথায় গিয়ে থামে সেটাই দেখার বিষয়। 

অস্তাচলে আলো অন্ধকারই ভালো?


আবুল হাসান 


চৈনিক দার্শনিক কনফুসিয়াসের কাছে তাঁর এক শিষ‍্য জু কুং জানতে চেয়েছিলেন, ভাল সরকার কেমন? জবাবে তিনি বলেন,"কোনো সরকার জনগণকে পর্যাপ্ত খাবার দেয়া, দেশের নিরাপত্তার জন‍্য উপযুক্ত সৈন‍্যসামন্ত রাখা এবং দেশের মানুষের আস্থা অর্জন করলেই তাকে ভালো সরকার বলা যায়। এখন এই তিনটির মধ্যে কোনও একটিকে বাদ দিতে বলা হলে, প্রথমে সৈন্য-সামন্ত বাদ দিতে হবে। বাকী দুটোর মধ্যে একটিকে বাদ হলে,বাদ দিতে হবে খাবার। কারণ শেষ পর্যন্ত সব মানুষই মারা যাবে। কিন্তু জনগণের আস্থা ছাড়া কোন সরকারই টিকে থাকতে পারে না।" মৃত্যু মোকাবেলায় বেপরোয়া অসীম সাহসী আমাদের প্রধানমন্ত্রীর এই জন অাস্থা অর্জনেই যতো ভয়। তাঁর মুখের জজবা আর ক্ষমতার বিলক্ষণ দাপটে নিত‍্য রক্তগঙ্গা বয়। বৈঠা রক্তরঙে সাজে ম‌সজিদের অাঙিনায়।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ডানা এতই বিস্তৃত, ছড়ানো, এতোই বিশাল যে মাটিতে তিনি  পা রাখতে পারছেন না। অনন্ত আকাশেই ওনার বসবাস। সূর্যের দিকে পিঠ দিয়ে সূর্যালোকে দাঁড়িয়ে আছেন তিনি।  এখানে তিনি  তাঁর নিজের ছায়াই দেখতে পান আর তাঁর ছায়াই তাঁর আইন। যেমনটা শেখ মণি দেশ স্বাধীন হবার পর বাংলার বাণী পত্রিকায় শিরনাম করেছিলেন -"আইনের শাসন চাই না, মুজিবের শাসন চাই"। কিন্তু সূর্য কি কেবলমাত্র ছায়াধারী ধাতব পাত্র? সেই আইন যা উনার নির্দেশে বেগম খালেদা জিয়াকে অন‍্যায়ভাবে একজন আখতারুজ্জামানের কাছে অর্পণ করেছে, সেই আইনই যে একদিন উনাকে অর্পণ করবে না অারও কোনও প্রবল শক্তিধরের হাতে সে নিশ্চয়তা পাওয়া গেছে কি?

জাতি আজ আশাহীন । কূট-অর্থনীতিক চাণক্য যেমন বলেন "চর্চায় না থাকলে জ্ঞান হারিয়ে যায়, অজ্ঞতায় থাকলে মানুষ হারিয়ে যায়,সেনাপতি না থাকলে সেনাদল হারিয়ে যায় আর স্বামী না থাকলে হারিয়ে যায় নারী"। ঠিক তেমনি সরকার না থাকলে হারিয়ে যায় রাষ্ট্র। দেশের সার্বভৌমত্ব অন‍্যের কাছে বন্ধক রাখলে আর যাইহোক তাকে আর সরকার বলা যায় না।

বয়স ও অভিজ্ঞতার অভাবহেতু ব‍্যক্তিমানসের জীবন যেমন ভুল-ত্রুটি, ভালো-মন্দের মাঝ দিয়ে এগিয়ে যায়, ঠিক তেমনি একটি রাজনৈতিক দলও বয়স ও অভিজ্ঞতার অপ্রতুলতায় ভুলত্রুটি, ভালমন্দের ফিউশনে বিবর্তিত হয়। উপরন্তু- "Politics is not a moral prescription" এর তত্ত্ব নিশ্চয়ই রাষ্ট্রবিজ্ঞান অনুসরণ করেই চলবে। তবে গুম-খুন,লুটপাট, দূর্নীতির আওয়ামী অপরাজনীতি ও অপসংস্কৃতির মাত্রাজ্ঞানের সাথে জাতীয়তাবাদী শক্তির তুলনা নিছক দেশরক্ষার ঈমানী দায়িত্বের সাথে প্রতারণা বৈ বেশী কিছু নয়।

নোবেল বিজয়ী ইংরেজ সাহিত্যিক ও নাট‍্যনির্দেশক ইহুদিপুত্র হ‍্যারল্ড পিন্টারের কবিতা থেকে শিরনামটি ধার নিয়েছিলাম। আর আলোচনা করেছি রোমান দার্শনিক সেনেকা ও লেবাননের সাহিত্যিক কাহলীল জিবরানের চিন্তার আলোকে। এবার পবিত্র আল কোরআনের আলোয় নিজে মৌলবাদী সেজে অাজকের এ লেখার যবনিকাপাত ঘটাবো।

হযরত নূহ (আঃ) এর কওমে নূহ, হযরত হুদ (আঃ) এর আদ , হযরত ছালেহ (আঃ) এর ছামূদ , হযরত লূত (আঃ) এর কওমে লূত, হযরত শোয়েব (আঃ) এর আল মাদাইন এবং হযরত মূসা (আঃ) ও হারুন (আঃ) এর ফারাও -- এই ছয়টি জাতিকে মহান আল্লাহপাক রাব্বুল আলামীন ধ্বংস করে দিয়েছিলেন। জাতি হিসেবে তারা অন‍্যায় ও অপকর্মে লিপ্ত হয়েছিল এবং তারা একে অপরকে সতর্ক করেনি। আল্লাহর প্রেরিত নবী রাসূলগণকে তারা অনুসরণতো করেইনি,উপরন্তু  ঔদ্ধত্য দেখিয়েছিল।

শিক্ষায় সীমাহীন নৈরাজ্য, ব‍্যাংক-বীমা ও শেয়ার বাজারে লুটপাট, পুলিশ ও আমলাতন্ত্রের লাগামহীন অত‍্যাচারসহ দূর্নীতি-দূর্বৃত্তায়নের প্রধান কারণ হলো গাঁয় মানে না অাপনি মোড়ল ‘স্বনির্বাচিত ভোটারবিহীন অবৈধ সরকার।’ শেখ সাদি তাঁর গুলিস্তাঁ কাব্যে বলছেন, রাজা যদি কোন গৃহস্থ বা‌ড়‌ি থেকে বিনামূল্যে একটু লবণও খায় তাহলে বাকী সভাসদরা সে বাড়ীর হাঁস-মুরগির খোঁয়াড়সহ সবকিছু উজাড় করে দেবে। প্রধান বিচারপতিসহ অারও ২/১ জন বিচারপতিকে দেশছাড়া হতে হয়েছে আর প্রতিবাদী কন্ঠস্বর বেগম খালেদা জিয়াকে  নিক্ষেপ করা হয়েছে ‘পতিত’ কারাগারে।

এত অত‍্যাচার,এত অবিচার এত নৈরাজ্যের পরও যদি আমরা মাথা তুলে দাঁড়াতে না পারি,তাহলে জাতি হিসেবে কি আমরা ধ্বংসপ্রাপ্ত হব না? ব‍্যর্থ রাষ্ট্রের সংজ্ঞাটাইবা কি? আমাদের ভুলে গেলে চলবে না -- eternal vigilance is the price of liberty - "কেবল চির তীক্ষ্ন নজরদারির মাধ্যমেই দেশের স্বাধীনতা রক্ষা করা সম্ভব"। রাসূল (সাঃ) বলেছেন-"অত‍্যাচারী শাসকের বিরুদ্ধে সত‍্য উচ্চারণই সর্বশ্রেষ্ঠ জিহাদ"। মনে রাখতে হবে,অন‍্যায়কারী অন‍্যায় করতে পারে না তোমাদের গোপন ইচ্ছাশক্তি ছাড়া। আল্লাহপাক পবিত্র কুরআনে বলেন-"আমি ততক্ষন পর্যন্ত  সে জাতির ভাগ্য পরিবর্তন করি না, যতক্ষণ না পর্যন্ত তারা নিজেরা নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তন করতে চায়"।

পিথাগোরাস পৃথিবীর সবকিছুকেই সংখ্যা মনে করতেন। তেমনভাবে এই সরকারও সবকিছুকেই ৩২ , ৫৭ এর মত সংখ্যা দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করতে চায়!! এই সংখ্যা দুটোর অঙ্ক পরিবর্তন করলে হয় ২৩ আর ৭৫. একজনের ২৩ বছরের সংগ্রাম ৭৫ এ শেষ হয়ে গেল। ‎৫-১৫-২৫-৭৫ থেকে ৬৩২ হয়ে ১১৬২ এর পরিণতি কোন সংখ‍্যায় গিয়ে শেষ হয়, তা দেখা সময়ের ব্যাপার।

প্রায় ৫৫০ খৃষ্টপূর্বাব্দে চৈনিক সেনাপতি সান জু’র লেখা ,"The art of war" বইয়ের নীতি অনুসারে "Winning war without giving fight"  অর্থাৎ যুদ্ধ না করে যুদ্ধ জয়, বেগম খালেদা জিয়ার আরেকটি কালজয়ী সিদ্ধান্ত। তবে সরকার এই অহিংস কর্মসূচিগুলোকে দিয়ে বিএনপিকে পরিমাপ করার অর্থই হবে দূর্বল ফেনার সাহায্যে সমুদ্রের ক্ষমতাকে গণনা করা। হোঁচট খাওয়া বাকশক্তি অধিকতর শক্তিশালী করতে পারে একটি দূর্বল জিভকেও। কারণ সাম্রাজ্যবাদী রোমের বিরুদ্ধ অন্যতম সেরা বিশ্ব সেনাপতি জাতীয়তাবাদী হানিবাল-এর বাহিনীকে উইস্টন চার্চিলের মতই বলতে শুনেছি-"We shall never surrender". শুরুটা হ‍্যারল্ড পিন্টারকে দিয়ে করেছিলাম। জাতিকে সতর্ক করে দেওয়ার মাধ্যমে তাঁকে দিয়েই আবার শেষ করি -

পালাবার পথ নেই
---  
--- 
তুমি তোমার পিছনটাকে সামলে রেখো।

দায় সরকারকেই বহন করতে হবে

গোলাম মোর্তোজা



মুহাম্মদ জাফর ইকবাল প্রিয় শিক্ষক- লেখক। তিনি আক্রান্ত হওয়ার পর যে প্রতিক্রিয়া হয়েছে, সেটাই স্বাভাবিক। তার উপর হামলার আশঙ্কা অনেক বছর ধরেই ছিল। পুলিশি নিরাপত্তাও তাকে দেয়া হয়েছিল। সেই নিরাপত্তা ব্যবস্থা বলবৎ থাকা অবস্থাতেই তিনি আক্রান্ত হয়েছেন বলে ধরে নেয়া হয়েছে। যে, হামলা জঙ্গিরাই করেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনিও বলেছে, ফয়জুর জঙ্গি মতাদর্শ ধারন করেই হামলা করেছে। ’জাফর ইকবাল নাস্তিক, ইসলাম ধর্মের বিরুদ্ধে লেখেন’- সেকারণেই তাকে হত্যার চেষ্টা করেছে ফয়জুর। র‌্যাবের তথ্য তেমনই বলছে।

জঙ্গি বিষয়টি আবার আলোচনায় স্থান করে নিয়েছে। আজকের লেখায় সে বিষয়ে কিছু বলার চেষ্টা করব।

১. এদেশে অনলাইনে যারা লেখেন, তাদের ‘নাস্তিক’ আখ্যা দিয়ে হত্যা করা শুরু হয়েছিল।এসব লেখকদের কেউ কেউ আপত্তিকর অনেক কিছু লিখেছেন। আপত্তিকর শুধু ধর্মীয় দৃষ্টিকোন থেকেই নয়, যে কোনো বিবেচনাতেই আপত্তিকর।সে সব দেখে কিছু মানুষ ক্ষুদ্ধ হতেই পারেন, হত্যা করতে পারেন না।

তবে অনলাইনের লেখকদের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ, কাউকে অসম্মান বা আপত্তিকর কিছু লেখেন নি। অদ্ভূত ব্যাপার হলো, অনলাইনে যারা লেখেন তাদের প্রায় সবাইকে ‘নাস্তিক’ আখ্যা দেয়া হয়েছে এবং প্রচারণা চালানো হয়েছে। কাজটি সামনে থেকে করেছে হেফাজতে ইসলাম। আওয়ামী লীগ সরকারের সঙ্গে হেফাজতের তীব্র বৈরি সম্পর্ক।২০১৩ সালের শাপলা চত্ত্বরে হেফাজতের সমাবেশ প্রতিহতের মধ্য দিয়ে যা চুড়ান্ত রূপ নেয়।

তারপর থেকে সরকার কৌশল পরিবর্তন করে। হেফাজতকে সুযোগ- সুবিধা দিয়ে, বিএনপি- জামায়াতের কাছ থেকে ভাগিয়ে নেয়ার নীতি নেয়।চট্রগ্রামে রেলের জমিসহ অনেক কিছু হেফাজতকে দেয়া হয়।সরকারের সঙ্গে মিত্রতা তৈরি হতে থাকে সরকারের। এই সময় হেফাজত অনলাইন লেখকদের নাস্তিক আখ্যা দিয়ে আন্দোলন করতে থাকে। হেফাজতের প্রচারণা অনুযায়ী যারা ‘নাস্তিক’ তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার প্রতিশ্রুতি দেয় সরকার। সরকারকে ৮০ জনের একটি তালিকা দেয় হেফাজত। সেই তালিকার থেকে তাৎক্ষনিকভাবে বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করে সরকার। এর ফলে সরকার ভেতরে- বাইরে থেকে সমালোচনার মুখে পড়ে।ব্যবস্থা নেয়া থেকে বিরত থাকে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়সহ আরও দু’একটি মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা হেফাজত নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বসে ৮০ জন থেকে তালিকা ৩৫ জনে নামিয়ে আনে।বেশ কয়েকজন অনলাইন লেখক তখন রাজনৈতিক আশ্রয় নিয়ে বিদেশে চলে যায়। তালিকা চুড়ান্ত করলেও, হেফাজতের চাহিদা অনুযায়ী সরকার ব্যবস্থা নেয়া অব্যাহত রাখে না।

তারপর প্রায় নিয়ম করে অনলাইন লেখক বা ব্লগারদের চাপাতি দিয়ে কূপিয়ে হত্যা করা শুরু হয়। হত্যাকাণ্ডের শিকার হওয়া প্রায় সবার নাম তালিকায় ছিল।আরও পরিস্কার করে বললে, তালিকা অনুযায়ী হত্যাকান্ড চলতে থাকে।

রাজিব হত্যাকাণ্ডের পর প্রধানমন্ত্রী সমবেদনা জানানোর জন্যে তার বাসায়ও গিয়েছিলেন। হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ভাষায় বক্তৃতা করেন প্রধানমন্ত্রী। মূলত তার কিছুদিন পর থেকেই সরকারের অবস্থান পুরোপুরি বদলে যায়।

হত্যাকান্ডের সংখ্যা যখন বাড়তে থাকে তখন প্রধানমন্ত্রী বলেন:‘...আর এই লেখার জন্য কোনও অঘটন ঘটলে দোষ সরকারের ওপর আসবে কেন? সবাইকে সংযমতা নিয়ে চলতে হবে। সবাইকে একটা শালীনতা বজায় রেখে চলতে হবে। অসভ্যতা কেউ করবেন না। অসভ্য আচরণ করলে তার দায়িত্ব কে নেবে? আমরা নেব না।’ -শেখ হাসিনা, ১৪  এপ্রিল ২০১৬ হত্যাকান্ডের শিকার হন দীপন- অভিজিৎরা। তদন্ত বিচার কোনো কিছুই গতি পায় না।

২. জাফর ইকবালের উপর আক্রমণকারীদের খুঁজে বের করে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। সাগর-রুনি, দীপন-অভিজিৎদের ক্ষেত্রেও এমন নির্দেশ এসেছিল। ‘নির্দেশ বাবু’র কি অবস্থা, তা তো কারও অজানা নয়।

তদন্তের আগেই প্রধানমন্ত্রী এও বলেছেন, ‘হামলাকারী কারা হামলার ধরন থেকেই স্পষ্ট’। পুলিশি তদন্তের আগেই সাম্প্রতিক অতিকথক ওবায়দুল কাদের ৪ মার্চ বলে দিয়েছেন, ‘হামলাকারীর স্বীকারোক্তি শুনে আমরা বিস্মিত হয়েছি...। এই হামলা চক্রান্ত, এটা সত্য। চক্রান্ত তাদের, যাদের বিএনপি পৃষ্ঠপোষকতা দেয়।’

উপরে যে ঘটনাক্রম উল্লেখ করেছি তা থেকে তো ‘হামলাকারী কারা হামলার ধরন থেকেই স্পষ্ট’- হওয়ারই কথা!

ওবায়দুল কাদের যে বিএনপিকে দায়ী করলেন, তার ভিত্তিটা কী? ঘটনাক্রম তা বলে না, তদন্তও হয়নি। তাহলে কি কাউকে বাঁচানো, কাউকে ফাঁসানোর উদ্দেশেই তদন্তের আগে এমন মন্তব্য ?

৩. অনলাইন লেখক- প্রকাশক হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলে নাস্তিকদের পক্ষ নেয়া হয়, সরকারের এমন পরিচিতি তৈরি হয়ে যায় কিনা, ভয়ে ছিল সরকার। সরকারের গুরুত্বপূর্ণ কারও কারও বক্তব্যে তার প্রকাশও ঘটে।

সরকার এখনও সেই ভয়েই আছে। ফলে হত্যাকান্ডগুলোর তদন্ত হয়নি। সরকারের অবস্থানের পরিবর্তন হয়েছে, এমনটা ভাবার কারণ নেই। কিন্তু ধর্ম অবমাননা করে জাফর ইকবাল তো তেমন কিছু জীবনে কখনো কোনোদিন লেখেননি। কিছু লেখেন নি প্রকাশক দীপনও। দীপন খুন হয়েছেন, মুহাম্মদ জাফর ইকবাল অল্পের জন্যে বেঁচে গেছেন।

পূর্বের হত্যাকান্ডগুলোর সঙ্গে জাফর ইকবাল হত্যা প্রচেষ্টা মিলিয়ে দেখলে, কিছু ভিন্নতা লক্ষ্য করা যায়।

ক. পূর্বের হত্যাকান্ডগুলোতে যে ধরনের চাপাতি ব্যবহৃত হতে দেখা গেছে, জাফর ইকবালের ক্ষেত্রে একই রকম চাপাতি ব্যবহৃত হয় নি। যতদূর জানা গেছে তুলনামূলকভাবে ছোট আকারের চাকু দিয়ে আঘাত করা হয়েছে জাফর ইকবালকে।

খ. পূর্বের সব আক্রমণকারীরা ছিল হত্যাকান্ড ঘটানোর ক্ষেত্রে অত্যন্ত দক্ষ।ঘাড়ের কোন স্থানে এক কোপে হত্যা করা যাবে, সে বিষয়ে আক্রমণকারীরা ছিল পারদর্শী বা প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত।

গ. ফয়জুরের চাকু এবং কোপ দেয়ার ধরন দেখে তাকে দক্ষ- পারদর্শী বা প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত মনে হয় নি।

ঘ. ফয়জুর যত কাছে থেকে সময় নিয়ে আক্রমণ করার সুযোগ পেয়েছে, সে দক্ষ হলে ব্যর্থ হওয়ার সম্ভাবনা ছিল না।

৪. জাফর ইকবালের উপর আক্রমণ জঙ্গিরাই করেছে, সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে সঠিক তদন্ত অপরিহার্য।’সঠিক তদন্ত’ বিষয়টির সবচেয়ে বড় অনুপস্থিতি এদেশে।

নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত তিন জন পুলিশ, জাফর ইকবালকে অরক্ষিত রেখে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তিন জনের দুই জন আবার স্মার্ট ফোন নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। মঞ্চে ঠিক জাফর ইকবালের পেছনে অবস্থান নেয়া ঘাতক যখন আক্রমণ করেছে, পুলিশ ছিল সম্পূর্ণ অপ্রস্তুত। 

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন ‘নিরাপত্তায় ত্রুটি ছিল না’। জাফর ইকবালের পরিবারের পক্ষ থেকে অধ্যাপক ইয়াসমিন হকও বলেছেন ‘পুলিশের কিছু করার ছিল না’। আবার স্মার্ট ফোনে ব্যস্ত থাকা দুই পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছে।

জাফর ইকবাল বিশেষ মানুষ, বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছেন।ঢাকা থেকে হেলিকপ্টার পাঠিয়ে ঢাকায় আনা হয়েছে।প্রধানমন্ত্রী নিজে পুরো বিষয়টি তদারক করেছেন। প্রয়োজন হলে তাৎক্ষণিকভাবে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে তাকে দেশের বাইরেও পাঠানো হতো। একারণেই সম্ভবত অধ্যাপক ইয়াসমিন হক কোথাও কোনো ‘ত্রুটি’ দেখছেন না, কোনো অভিযোগও করছেন না। তাছাড়া সৌভাগ্যবশত জাফর ইকবাল বেঁচে আছেন। ফলে দোষ- ত্রুটি বা অভিযোগের দিকে যান নি তিনি।

বিষয়টি আসলে অভিযোগের নয়। সত্য বিষয়গুলো সামনে আনা জরুরি, ভুল বা দায়িত্বজ্ঞানহীনতা থেকে শিক্ষা নেয়ার জন্যে।

জাফর ইকবাল যে গুরুত্ব পেয়েছেন, সাধারণ একজন আক্রান্ত হলে সেই গুরুত্ব পেতেন না, পাবেন না। বিশেষ হেলিকপ্টার, বিশেষ তদারকি- কোনো কিছুই পাবেন না। আঘাত গুরুতর না হলেও, শুধু রক্তক্ষরণেই তিনি মারা যাবেন।অধ্যাপক ইয়াসমিন হকের থেকে বক্তব্য ব্যক্তিকেন্দ্রীক না হয়ে সামগ্রিক হলে, অন্যদের জন্যে উপকারের হতে পারত। পুলিশি নিরাপত্তার দূর্বলতা, ব্যর্থতাগুলো কাটিয়ে ওঠার জন্যেই সত্যটা সামনে আনা প্রয়োজন ছিল, সরকারকে অভিযুক্ত করার জন্যে নয়।

৫.আক্রমণকারী ফয়জুরের মামা কৃষক লীগ নেতা, সেকারণে দায় আওয়ামীলীগ বা কৃষক লীগের- বিষয়টি এত সরলিকরণ করা ঠিক নয়। বিএনপির উপর দায় চাপিয়ে আওয়ামী লীগ নেতা- মন্ত্রীদের দেয়া বক্তব্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।সরকারে যারা থাকে, দায় মূলত তাদের। একথা মনে রাখা দরকার আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দের।’সব হত্যাকাণ্ডের বিচার করছি বা হচ্ছে’- যত জোর দিয়েই এসব কথা বলা হোক না কেন, মানুষ তা বিশ্বাস করছে না। সত্যটা মানুষের অজানা থাকছে না। সব কিছু দেখেই মানুষের পারসেপশন তৈরি হচ্ছে ‘হত্যাকান্ডগুলোর বিচার করা হচ্ছে না, চাপা দিয়ে দেয়া হচ্ছে’।

মানুষের এই পারসেপশন দূর করার দায়িত্ব সরকারের। তা করতে হবে কাজ দিয়ে, গল্প বলে এই পারসেপশন দূর করা যাবে না। সরকার বা আওয়ামী লীগ এখন ভাবতেই পারে, এসব পারসেপশন ধারন করা নাগরিকদের গুরুত্ব দেয়ার কিছু নেই। এমন মানসিকতা ধারন করে থাকলে, এখন না হলেও দীর্ঘ মেয়াদে অনেক বড়ভাবে মূল্য দিতে হবে আওয়ালী লীগকে। এই হত্যাকান্ডের সময়কাল ইতিহাস থেকে মুছে ফেলা যাবে না, দায় আওয়ামী লীগকেই বহন করতে হবে।


  • গোলাম মোর্তোজা: সম্পাদক, সাপ্তাহিক।

অ্যাকশন না হলে অন্যরা উৎসাহ পায়




বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, যদি কেউ অর্থ পাচার করে বা চুরি করে তার বিরুদ্ধে অ্যাকশন না হলে অন্যরা উৎসাহ পায়। দুঃখজনক ব্যাপার হলো এসব ক্ষেত্রে প্রশাসনিক ব্যবস্থা হিসেবে ওএসডি করা হয়। সেটা তো সব নয়। তার বিরুদ্ধে ফৌজদারি ব্যবস্থা নিতে হবে। তাকে শাস্তি দিতে হবে। 

গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘দুর্নীতি’ নিয়ে নাগরিক ঐক্য আয়োজিত সেমিনারে বক্তব্য প্রদানকালে এসব কথা বলেন তিনি। সালেহ উদ্দিন আরও বলেন, ব্যাংকিং সেক্টরে কারা চুরি করেছে সেটা বাইরে থেকে লোক নিয়ে এসে জানার দরকার পড়বে না, সেটা সবার জানা আছে। সময়োচিত, দৃশ্যমান ও শক্ত কোনো পদক্ষেপ নিতে হবে। এখানে যদি নানারকম রাজনৈতিক বিবেচনায় নিয়োগ দেওয়া হয় তাহলে ভালো হয় না।  কোনো ব্যাংকার ১০ কোটি চুরি করে অবসরে গেলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। তাকে ধরে জেলে নিতে হবে, এরপর তার সব সম্পদ বাজেয়াপ্ত করতে হবে। 

সাবেক এ গভর্নর বলেন, ব্যাংকের ভিতরে রাজনীতি নিয়ে আসবেন এটা কাম্য নয়। রাজনীতি চলে আসাতেই দুর্নীতি হয়। এখন যে অবস্থা চলছে তা থেকে বের হতে হলে রাজনৈতিক সদিচ্ছা প্রয়োজন।


  • BD Protidin/06-3-18

খরচ করতে পারছে না সরকার

৪ লাখ কোটি টাকার বাজেট, ৬ মাসে খরচ ১ লাখ কোটিরও কম




চলতি অর্থবছরে ৪ লাখ ২৬৭ কোটি টাকার বাজেট পাসের পর ছয় মাস গত হওয়ার পর দেখা যাচ্ছে বাজেট থেকে এক লাখ কোটি টাকারও কম খরচ হয়েছে। তুলনামূলক হিসেবে যা চার ভাগের একভাগ। প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ২০১৭-১৮ অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বর মেয়াদে ঘোষিত বাজেট থেকে ব্যয় হয়েছে মাত্র ৯৪ হাজার ৪৯৮ কোটি টাকা। অর্থাৎ বাজেটের টাকা খরচ করতে পারছে না সরকার। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)-এর আর্টিকেল ফোর মিশনের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয় দেশের সামষ্টিক অর্থনীতির যে তথ্য-উপাত্ত তৈরি করেছে সেখানে বাজেট বাস্তবায়ন সম্পর্কে এসব তথ্য দেওয়া হয়েছে। সামষ্টিক অর্থনীতি অনুবিভাগ ২০ ফেব্রুয়ারি এসব তথ্য সরবরাহ করে। বাংলাদেশের অর্থনীতি পর্যালোচনায় বর্তমানে আইএমএফ-এর আর্টিকেল ফোর মিশন ঢাকায় অবস্থান করছে। প্রতি বছরই এই সংস্থাটি সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও সংস্থাগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে একটি পর্যালোচনা প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এবারের মিশনটি ৮ মার্চ পর্যন্ত ঢাকায় অবস্থান করবে বলে জানা গেছে। এরই মধ্যে তারা অর্থ বিভাগের সঙ্গেও বৈঠক করবে।

আইএমএফের জন্য তৈরি করা নোটে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সামষ্টিক অনুবিভাগ সাম্প্রতিক অর্থনীতির কয়েকটি ঝুঁকির মধ্যে বাজেট বাস্তবায়ন কম হওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করেছে। এ সম্পর্কিত এক নোটে বলা হয়েছে, চলতি বছরের প্রথমার্ধে বাজেট বাস্তবায়নের হার সরকারের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেক কম। মূলত চলতি অর্থবছরের শুরুর দিকে অতিবৃষ্টির কারণে বাজেট ব্যয় তেমন বাড়েনি। এ ছাড়া জড়িত সংস্থাগুলোর অদক্ষতার কারণেও কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় বাজেট বাস্তবায়ন হচ্ছে না। যদিও অর্থবছরের বাকি সময়ে বাজেট বাস্তবায়নে গতি আসবে, তারপরও বর্তমানে বাস্তবায়নের যে হার তা নেতিবাচক বলেই উল্লেখ করা যায়।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিব মুসলিম চৌধুরী বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, বাজেট বাস্তবায়ন হার গতবছরের মতোই আছে। আগের বছরও এই সময়ে এই হারে বাস্তবায়ন হয়েছিল। তিনি বলেন, শেষ পর্যন্ত আমরা গত বছর প্রায় পুরো বাজেট বাস্তবায়ন করেছিলাম। বাজেটের আকার তুলনামূলক বড় হলেও এবারও তেমনটাই হবে বলে আশা প্রকাশ করেন অর্থ সচিব।

অর্থবছরের শুরু থেকেই এবার বাজেট বাস্তবায়ন চলছে ঢিমেতালে। চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকেও (জুলাই-সেপ্টেম্বর) বাজেট বাস্তবায়ন হার কম ছিল। ওই সময়ে ৪৬ হাজার ৫২৫ কোটি টাকা ব্যয় হয়, যা মোট ব্যয়ের মাত্র ১২ শতাংশ। গতবারের একই সময়ে বাস্তবায়ন হার ছিল ১৩ শতাংশ।  

সূত্রগুলো জানায়, মূলত উন্নয়ন কার্যক্রম সঠিক সময়ে বাস্তবায়ন করতে না পারার কারণেই বাজেট বাস্তবায়নে পিছিয়ে পড়ছে সরকার। অনেক সময় সরকারের নিজস্ব তহবিলে গৃহীত প্রকল্প বাস্তবায়নে মন্ত্রণালয় ও সংস্থাগুলোর উৎসাহ থাকলেও বৈদেশিক সহায়তার প্রকল্পে আবার উল্টোটা দেখা যায়। অনেক সংস্থা বৈদেশিক সহায়তার প্রকল্প বাস্তবায়নে গড়িমসি করে। এ কারণে প্রকল্পে বরাদ্দকৃত অর্থ ফেরত যাওয়ার মতোও ঘটনা ঘটছে। সূত্রগুলো জানায়, বৈদেশিক সহায়তার প্রকল্পগুলো শুরু করতে অনেক সময় বছর পেরিয়ে যায়। প্রকল্প অনুমোদনের পর সমীক্ষা, ভূমি অধিগ্রহণ, পরামর্শক ও বিশেষজ্ঞ নিয়োগসহ পূর্ত কাজের টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে এ সময় লাগে। এসব প্রতিবন্ধকতা দূর করতে বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। নিজস্ব অর্থায়নে প্রকল্পের প্রস্তুতিমূলক কাজ ছয় মাস এবং বৈদেশিক অর্থায়নপুষ্ট প্রকল্পের প্রতিমূলক কাজ ৯ মাসের মধ্যে সম্পন্ন করার সুপারিশ করা হয়েছে। লিড মন্ত্রণালয়গুলোর বাজেট মনিটরের সময় পর্যালোচনা করা হচ্ছে। ফ্রাস্ট ট্র্যাক প্রকল্পগুলো খোদ প্রধানমন্ত্রী মনিটর করছেন। এ ছাড়া প্রত্যেক মন্ত্রণালয়কে প্রতি তিন মাসে বাজেট বাস্তবায়নের তথ্য বাধ্যতামূলকভাবে অর্থ মন্ত্রণালয়কে জানাতে বলা হয়েছে। 

এত উদ্যোগের পরও কেন বাজেট বাস্তবায়নে গতি বাড়ছে না? এমন প্রশ্নের জবাবে বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের লিড ইকনোমিস্ট ড. জাহিদ হোসেন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, এবার বাজেট ঘোষণার পর অনেকেই বলেছিল যে, এটি উচ্চাভিলাষী বাজেট, বাস্তবায়ন হার দেখে এখন দেখা যাচ্ছে তাদের কথাই ঠিক। বিশ্বব্যাংকের এই অর্থনীতিবিদ বলেন, বাজেট প্রণয়নে পরিকল্পনার মধ্যে যে উচ্চাভিলাষ থাকে সেটি যদি লক্ষ্য ও অর্জনের মধ্যে বড় ধরনের ব্যবধান তৈরি করে তবে সেই উচ্চাভিলাষ দেখিয়ে জাতির জন্য কোনো লাভ হবে না। আর এ ধরনের পরিকল্পনার শেষে কোনো বিশ্বাসযোগ্যতাও থাকে না। ড. জাহিদ বলেন, যদিও শেষের দিকে প্রতিবছর বাজেট বাস্তবায়ন হার বাড়ে, তারপরও এক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত নেওয়ার যে দীর্ঘসূত্রিতা সেগুলো দূর করতে না পারলে এর সুফল জনগণের কাছে পৌঁছানো যাবে না।

  • BD protidin/6-3-18

Mosquitoes are back with a vengeance

Inefficiency of Dhaka City Corporations


It defies logic that every year we have to editorialise on the onslaught of mosquitoes before the rainy season begins. The puzzling lethargy of the city corporations in taking pre-emptive measures to tackle the mosquito menace makes it seem as if it is a new phenomenon. But we have all learnt the bitter lesson of allowing mosquitoes to breed—through the continuous epidemics of dengue and chikungunya that have wreaked havoc on the city-dwellers the last few years. So with such a bitter experience, should we have not learnt our lesson?

A recent report in this paper has found that mosquitoes are proliferating everywhere—in homes, slums, hospitals, airports, and open spaces. This despite the hefty budgets—Tk 25.6 crore for DSCC and Tk 20 crore for DNCC—of the city corporations to procure chemicals and machines to combat the breeding of this deadly insect. Instead, our reporters have found that major water bodies and drains are infested with mosquitoes, and households are at their wits' end trying to combat the onslaught with sprays and mosquito coils that are proving to be ineffective, not to mention harmful to health. So what have the respective city corporations done with these budgets in the way of fighting these killer pests? So far it seems precious little.

It is now the beginning of the “mosquito season” and city-dwellers are already very anxious about how they will be spared of mosquito bites that may cause those dreaded diseases that have also led to some fatalities. There seems to be a total collapse in the municipal facilities of the city corporations. We, therefore, demand that the respective city authorities take up this task immediately and adopt effective measures—with chemicals and extensive cleaning of water bodies and drains (which they should be doing anyway)to make this city mosquito-free. We can hardly aspire to be a middle-income-country with our major city being in the grips of this insidious insect.

  • The Daily Star/6-3-18

5 Years into Taqi Murder: Rab still sitting on charge sheet

Sanad Saha



For Taqi's parents, the last five years have been a long, agonising wait for justice. And they have no clue as to when that wait would be over.

Taqi's father Rafiur Rabbi, who had been to countless demonstrations and public events to talk about his grievances, said people in his hometown now called him Taqi'r Baba. It has even drowned his identity as a cultural activist.

“Trial starts after charges are pressed in a case. But that has not happened in five years. Charges have not been pressed. Sometimes I call Rab officers, who are investigating the case. They tell me that the investigation is going on. That's all,” he said.

Seventeen-year-old Tanwir Muhammad Taqi went missing after he had left home for Sudhijon Pathagar, a library in Narayanganj city, around 4:00pm on March 6, 2013.

His A-level results were out the next day and he emerged as the highest scorer in the world in physics.

Taqi's body was found floating in the Shitalakkhya on the morning of March 8.


The day Taqi went missing, Rabbi filed a general dairy with Narayanganj Kotwali Police Station. He filed a murder case with the same police station on the day the body was found.

He submitted a complaint to the Narayanganj superintendent of police 10 days later accusing seven people, including Shamim Osman and his son Ayon Osman and 8-10 unnamed others, of murdering Taqi.

Sitting at her home on Shayesta Khan Road in Narayanganj, Taqi's mother Rawnak Rehana remembered last week that her son never wanted to leave the country to study abroad.

“I taught him to love his country.  He did. He wanted to stay here for the people. He did not want to go abroad.

“I failed to give my child a safe country, a terror-free city. It is our utter failure,” she said.

Rabbi remembered that Taqi loved wearing black. “He was wearing a black shirt when he left home for the last time. He was still in that shirt when they took his body to the morgue.

“I know his killers are haunted by the hangman's noose. They will never escape this.”

The murder triggered a huge public outcry. People of Narayanganj formed "Santrash Nirmul Taqi Mancha", vowing to fight for justice and against criminal activities, and also to keep the memory of the murdered schoolboy alive.

A draft of the investigation report was leaked before the first death anniversary of Taqi on March 6, 2014. Different newspapers ran stories based on the draft with quotes from top-ranking Rab officials about involvement of around a dozen people in the murder.

In March 2014, Rab's then additional director general Col Ziaul Ahsan told a newspaper that they found involvement of Ajmeri Osman and his 10 accomplices in Taqi murder. He had also said that the charge sheet would be submitted any day.

Ajmeri is the son of ex-Jatiya Party MP Nasim Osman and nephew of ruling Awami League MP Shamim Osman.

Contacted, Commanding Officer of RAB-11 Lt Col Kamrul Hasan told The Daily Star that their “investigation is going on”.

“The case is very important. So it is being investigated. No such work can be done on a fixed deadline.”

However, the officer told the same thing around a year ago on the fourth death anniversary of Taqi.

Prosecution lawyer Pradip Ghosh Babu told The Daily Star that all eight suspects in Taqi murder case are on the run.

After the incident, four suspects were arrested.  Two of them, Yusuf Hossain Liton and Sultan Shawkat Bhramor, gave confessional statements.

“On the basis of the statements, we appealed to Narayanganj Chief Judicial Magistrate's court on February 5 this year for arresting the other accused.  The appeal also sought to unearth how Taqi was killed, who else were involved, how the body was dumped,” Pradip added.

On November 12, 2013, Sultan Shawkat Bhramor, one of the arrestees, gave confessional statement. But 16 days later, he applied to the court for withdrawing his statement. Bhramor was released on bail on March 20, 2014. After he failed to appear in court on multiple occasions, the court issued an arrest warrant for him.

Of the other arrestees, Saleh Simanto is in jail and Rifat Bin Osman, Tayeb Uddin Jackie and Yusuf Hossain Liton are on bail.

The hearing on the prosecution appeal of February 5 is scheduled for April 17.

The court of Narayanganj Judicial Magistrate Ashek Imam on February 1 directed the investigation officer of the case to submit the probe report quickly.

Meanwhile, leaders of different socio-political and cultural organisations expressed dissatisfaction over the lengthy investigation.

Narayanganj City Corporation Mayor Selina Hayat Ivy told The Daily Star she expected that trial of Taqi killing would be held soon.

“I firmly believe that the prime minister will give directive for trial of this murder. Truth never concedes to injustice,” she added.

Taqi's mother Rawnak Rehana believes injustice cannot continue forever.

“Our children will, one day, make the country safe for themselves, for children of the future.”

  • The Daily Star/6-3-18

Monday, March 5, 2018

উন্মুক্ত দরপত্রের বদলে সরাসরি ক্রয়ে আগ্রহী মন্ত্রী-সচিবরা


উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতি যেন ইতিহাসের অংশ হতে চলেছে। এখন বিভিন্ন মন্ত্রণালয় বা বিভাগের মন্ত্রী-সচিবরা উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে সরকারি কেনাকাটায় আগ্রহী নন। এর বদলে সরাসরি কেনাকাটায় আগ্রহী তারা। তাদের যুক্তি, সরাসরি ক্রয় পদ্ধতি অনুসরণ করলে কাজ দ্রুত হয়। কারণ বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির বরাদ্দ ঠিকভাবে খরচ করতে না পারলে তিরস্কৃত হতে হয়। তবে কাজের মান নিয়ে কিছু বলেন না তারা।

এরই মধ্যে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ, সেতু বিভাগ, রেলপথ মন্ত্রণালয়, কৃষি মন্ত্রণালয়, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, বিদ্যুৎ বিভাগ, স্থানীয় সরকার বিভাগ, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগ সরাসরি কেনাকাটা করে চলেছে। এছাড়া রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক), মৎস্য অধিদপ্তর, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (ডিএই), ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনসহ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান সরকারি কেনাকাটায় সরাসরি ক্রয় পদ্ধতি অনুসরণ করছে। অর্থাৎ ওপেন টেন্ডারিং মেথড (ওটিএম) বা উন্মুক্ত দরপত্রের বদলে এখন সবাই ডাইরেক্ট প্রকিউরমেন্ট মেথডে (ডিপিএম) বা সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে ঝুঁকছে। অদৃশ্য কারণে ওটিএম পদ্ধতিতে এখন সরকারি কাজের কার্যাদেশ দিতে চান না মন্ত্রী বা সচিবরা।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, বিভিন্ন প্রকল্পের যন্ত্রপাতি কেনায় প্রকৃত দামের দুই বা তিন গুণ বেশি দেখিয়ে ডিপিএমের মাধ্যমে পছন্দের প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেয়া হচ্ছে। আর এর মাধ্যমে লুটপাট হচ্ছে সরকারি কোষাগারের টাকা। টাকার ভাগ নিয়ম করে ‘উপর পর্যায়’ পর্যন্তও পৌঁছে দেয়া হচ্ছে। পরিণামে দুর্নীতিবাজ এসব কর্মকর্তা সাজার বদলে উল্টো নানাভাবে পুরস্কৃত হচ্ছেন। বিদ্যুৎ বিভাগে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড, ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (ডিপিডিসি), ঢাকা ইলেক্ট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেড (ডেসকো) ও মাতারবাড়ি প্রকল্পসহ বিভিন্ন বড় প্রকল্পে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতির মাধ্যমে যন্ত্রপাতি কেনাকাটা করা হচ্ছে। এদের মধ্যে বিভিন্ন বিদ্যুৎ কোম্পানির স্পেয়ার পার্টস কেনাকাটায় সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে কার্যাদেশ দেয়া হচ্ছে। এর মাধ্যমে সরকারের দুই-তৃতীয়াংশ অর্থের অপচয় হচ্ছে। গত কয়েক বছরে বিদ্যুৎ বিভাগের আওতাধীন নর্থ-ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে সবচেয়ে বেশি যন্ত্রপাতি কিনেছে। এ কোম্পানি সিরাজগঞ্জ ও খুলনা অঞ্চলের বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের কাজ করেছে। এসব বিদ্যুৎ কেন্দ্রের যন্ত্রপাতি সরাসরি ক্রয় প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কেনা হয়েছে। এছাড়া রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র এলাকায় বালু ভরাটসহ সব কাজ সরাসরি ক্রয় প্রক্রিয়ার মাধ্যমে করা হচ্ছে। পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ ও নদীর তীর নির্মাণসহ মন্ত্রণালয়টির বিভিন্ন কাজ সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে করা হচ্ছে। দরপত্র প্রক্রিয়া করতে দেরি হবে। তাই কাজ দ্রুত করতে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতি অবলম্বন করেন তারা। এছাড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের জলাবদ্ধতা নিরসন সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রকল্পের কাজও এখন ওপেন টেন্ডারে হচ্ছে না। সিলেট অঞ্চলে হঠাৎ বন্যা ঠেকানোর জন্য বিভিন্ন বাঁধ নির্মাণের কাজ এখন ওটিএমের বদলে ডিপিএমে হচ্ছে। সরাসরি ক্রয় পদ্ধতি নিয়ে প্রকল্প পরিচালকদের যুক্তি, উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে কাজ দিলে ভালো যন্ত্রপাতি পাওয়া যায় না। ডিপিএমের মাধ্যমে সরাসরি উৎপাদনকারীদের কাছ থেকে যন্ত্রপাতি কেনা যায়। এতে অরিজিনাল পার্টস পাওয়া যায়। মধ্যস্বত্বভোগী না থাকায় দামও কম পড়ে। এ ছাড়া তারা ১৫ বছর ধরে এসব পণ্য সরবরাহ করবে ও বিক্রয়োত্তর সার্ভিস দেবে। ওপেন টেন্ডার করলে ঠিকাদাররা ইন্ডিয়া-দুবাইয়ের খারাপ যন্ত্রপাতি গছিয়ে দেয়ার চেষ্টা করবে। বিক্রয়োত্তর সেবাও সেভাবে পাওয়া যাবে না। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে কাজগুলো তৃতীয় কোনো পক্ষের মাধ্যমে সরকারি প্রতিষ্ঠানে দেয়া হয়। এজন্য বিভিন্ন দফায় সরকারি অর্থের অপচয় হয়। এনিয়ে সরকারের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তারা কিছু বলতে চান না। তবে সব ধরনের ঝামেলা এড়াতে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিকে বেছে নিতে চান। 

  • মানবজমিন / সোমবার, ৫ মার্চ