Search

Tuesday, May 22, 2018

সড়ক ছাড়া সেতু!

এলাকাবাসীর ভোগান্তি


সেতুর সঙ্গে সংযোগ সড়ক সংস্কার না করায় ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার নয়নশ্রী ইউনিয়নের তুইতাল গ্রামসহ আশপাশের ১০ গ্রামের মানুষকে যে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে, তা একেবারেই অনভিপ্রেত।

শুক্রবার প্রথম আলোয় প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, তুইতাল গ্রামের তুইতাল স্কুলের সামনে মধুরভিটা রাস্তার ওপর দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের সেতু বা কালভার্ট নির্মাণ প্রকল্প ২০১৫-১৬-এর অধীনে ২১ লাখ টাকা ব্যয়ে ওই সেতু নির্মাণ করা হয়। মেসার্স ইছামতি ট্রেডার্স নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এটি নির্মাণ করে।

এক মাস আগে সেতুর নির্মাণকাজ শেষ হলেও দুই পাশের সংযোগ সড়ক সংস্কার করা হয়নি। এ ব্যাপারে কোনো উদ্যোগও নেই। সংযোগ সড়ক সংস্কার না করায় সেতুটি মানুষের কোনো কাজে আসছে না। প্রতিদিনই দুর্ভোগের মধ্য দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে ১০ গ্রামের মানুষকে। বিশেষ করে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের ভীষণ অসুবিধা হচ্ছে। রাস্তা খারাপ হওয়ার কারণে প্রায়ই তারা নির্ধারিত সময়ে স্কুলে পৌঁছাতে পারে না।

বৃষ্টি হলে তো কথাই নেই। তখন রাস্তা এতটাই কর্দমাক্ত হয়ে পড়ে যে হেঁটে যেতেও অসুবিধা হয়। অসুস্থ ব্যক্তিরাও একই সমস্যার মধ্যে পড়ছেন। এলাকার কৃষকেরা তাঁদের উৎপাদিত পণ্য সেতু দিয়ে নিয়ে যেতে পারছেন না। অনেক পথ ঘুরে তাঁরা পণ্য বাজারে নিয়ে যান। এতে করে তাঁরা প্রতিনিয়ত লোকসানের মুখে পড়ছেন। অথচ এই রাস্তা ব্যবহারের উপযোগী হলে খুব সহজেই তাঁরা পণ্য বাজারে সরবরাহ করতে পারতেন।

সেতু নির্মাণ করা হয় মানুষের চলাচলের সুবিধার জন্য, অথচ এখানে দেখা যাচ্ছে সংযোগ সড়ক সংস্কার না করায় মানুষ উল্টো ভোগান্তিতে পড়েছে। এটা কোনোভাবেই কাম্য নয়। তাহলে লাখ লাখ টাকা ব্যয় করে এই সেতু নির্মাণের অর্থ কী, তা যদি মানুষের কাজেই না লাগল।

সংযোগ সড়ক সংস্কারের বিষয়টি উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তার (পিআইও) কার্যালয়ের অধীনে। তাঁর চোখে কি সাধারণ মানুষের এই দুর্ভোগ চোখে পড়ছে না? এটা স্পষ্টতই তাঁর অবহেলা। এ ধরনের অবহেলা ও গাফিলতি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনই–বা কী করছে? তারা সক্রিয় ও দায়িত্বশীল না হলে এ ধরনের সমস্যার সমাধান করা যায় না। ফলে তাদের উদ্যোগী ভূমিকা জরুরি।

উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তা মো. হাবিবুর রহমান অবশ্য জানিয়েছেন, ওই সেতুর সংযোগ সড়ক করার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। আমরা আশা করছি, জনগণের দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে বরাদ্দ পাওয়ার ব্যাপারে পিআইও তৎপর হবেন এবং জরুরি ভিত্তিতে সংযোগ সড়কগুলো সংস্কারে উদ্যোগী হবেন।

  • কার্টেসিঃ সম্পাদকীয়/প্রথম আলো/ মে ২২,২০১৮  

মাদকবিরোধী অভিযান - উদ্দেশ্য মহৎ, কৌশল বেআইনি

কামাল আহমেদ


জঙ্গি দমনের পর এখন চলমান মাদকবিরোধী অভিযানেও দেখা যাচ্ছে সন্দেহভাজন মাদক কারবারিরা সবাই ‘সশস্ত্র‘! ফলে প্রতিদিনই ঘটছে ‘বন্দুকযুদ্ধ‘। প্রতিদিনই নতুন নতুন মৃত্যুর কারণে নিহত মানুষের সংখ্যাটা নাটকীয়ভাবে বাড়ছে। রোববার এক রাতেই নিহত হয়েছেন অন্তত নয়জন। ইঙ্গিত মিলছে, সন্দেহভাজনদের নির্মূল করাই হচ্ছে সরকারের মাদকবিরোধী নীতির মূল সুর। মাদকবিরোধী এ অভিযানের আরেকটি লক্ষণীয় দিক হচ্ছে, এর নেতৃত্ব দিচ্ছেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর কিংবা পুলিশ নয়, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এলিট অংশ র‌্যাব। তারা স্লোগান তুলেছে, ‘চলো যাই যুদ্ধে, মাদকের বিরুদ্ধে’। সর্বনাশা মাদকের সর্বগ্রাসী ছোবল, বিশেষত তরুণ সমাজের ওপর, এ থেকে রক্ষা পেতে একটি কার্যকর এবং জোরালো পদক্ষেপ অনেক দিন আগেই প্রত্যাশিত ছিল। সুতরাং, মাদক কারবারিদের কারবার গুটাতে বাধ্য করার বিষয়ে সাধারণভাবে দ্বিমতের কোনো সুযোগ নেই। তবে, সে কারণে যে কৌশল অনুসরণ করা হচ্ছে, তার যথার্থতা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। এই কৌশল কি আইনসম্মত? উদ্দেশ্য যতই মহৎ হোক না কেন, কাজটি যদি আইনসম্মত না হয়, তাহলে তা কোনোভাবেই সমর্থন করা যায় না।

চলমান মাদকবিরোধী অভিযানে র‌্যাবের উদ্যোগী ভূমিকার পটভূমিতে মনে পড়ছে র‌্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদের সাম্প্রতিক একটি সাক্ষাৎকারের কথা। প্রথম আলোকে দেওয়া ওই সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন যে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড কথাটি ভুল। তাঁর পাল্টা প্রশ্ন ছিল, তাহলে বিচারে অন্তর্ভুক্ত হত্যাকাণ্ড কোনটি? তিনি তাঁর ভাষ্যমতে ভুল শব্দটি ব্যবহারের দায় ইঙ্গিতে আমাদের গণমাধ্যমের ওপর চাপিয়ে দিয়েছিলেন (‘বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড‘ একটি ভুল শব্দ, প্রথম আলো, ১৮ মার্চ ২০১৮)। 

র‍্যাবের প্রধান একদিক দিয়ে যথার্থ প্রশ্নই তুলেছেন যে বিচার-অন্তর্ভুক্ত হত্যাকাণ্ড কোনটি? আসলেই তো বিচার-অন্তর্ভুক্ত হত্যাকাণ্ড বলে কিছু নেই; যা আছে তা হলো মৃত্যুদণ্ড। বিচারিক আদালত ছাড়া অন্য কারও এই দণ্ড বা সাজা দেওয়ার অধিকার নেই, বিশেষ করে অপরাধ দমনের কাজে নিয়োজিত কোনো কর্তৃপক্ষ বা বাহিনীর তো নয়ই। তাদের দায়িত্বের পরিধি হচ্ছে অপরাধীকে আইনসম্মত পন্থায় ধরে এনে বিচারের জন্য আদালতের কাছে সোপর্দ করা। আর বাংলাদেশের প্রচলিত আইনে অভিযোগ যতই গুরুতর হোক না কেন, তা আদালতে অপরাধ প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত কাউকেই দোষী হিসেবে গণ্য করা যায় না।

বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বিশেষণের প্রতি সরকার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর আপত্তি অনেক দিনের। আপত্তি ছিল সরকারের এবং নিরাপত্তা বাহিনীর। সরকার এ কারণে ওই সময়ে ওই অভিযানে অংশগ্রহণকারীদের দায়মুক্তি দিয়ে সংসদে আইন করেছিল। কোনো কাজ আইনসম্মত হলে তার জন্য দায়মুক্তির প্রয়োজন হয় না। সুতরাং, সেই সত্যটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে যে সেগুলো ছিল রাষ্ট্র অনুমোদিত হত্যা। আমাদের হাইকোর্ট পরে সে কথাই বলেছেন এবং ওই দায়মুক্তি অবৈধ ঘোষণা করে দোষী ব্যক্তিদের বিচারের নির্দেশ দিয়েছেন। সেসব হত্যার বিচার আজও হয়নি এবং সরকার বদল হলেও রাষ্ট্র সেই বিচারে আগ্রহী নয়। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, কথিত বন্দুকযুদ্ধগুলোয় যাঁরা মারা যাচ্ছেন, তাঁদের মৃত্যুগুলোকে কী বলা হবে? রাষ্ট্র অনুমোদিত হত্যা (স্টেট স্যাংশন্ড কিলিংস)? এসব বন্দুকযুদ্ধে সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের মৃত্যু অবধারিত, তাঁদের কেউ কখনো জখম হয়েও ফেরে না। আর এগুলো তদন্তে, এমনকি জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকেও কোনো সুযোগ দিতে রাজি নয় সরকার এবং এসব বাহিনী।

জঙ্গিদমন অভিযানের সময়েও প্রচুর বন্দুকযুদ্ধের কথা আমরা শুনেছি। তখনো বিনা বিচারে অথবা বিচারবহির্ভূত হত্যার বিষয়ে মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলোর আপত্তি ও সমালোচনা নাকচ করে দিয়ে উল্টো জঙ্গিদের প্রতি সহানুভূতি দেখানোর অভিযোগ করা হয়েছে। কিন্তু ওই কৌশল অনুসরণের ফলে জঙ্গিবাদ নির্মূল হয়েছে এমন দাবিও তাঁরা করতে পারছেন না। এর আগে, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের সময়েও নাশকতা ও সন্ত্রাসের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে কিছু রাজনৈতিক কর্মীদের ক্ষেত্রেও অস্ত্র উদ্ধার অভিযানের মোড়কে এই কৌশল অনুসৃত হয়েছে। তখনো সমালোচকদের জামাত-শিবিরের সমর্থক অভিহিত করে বিতর্কটি ধামাচাপা দেওয়া হয়েছে। এখন একই কৌশলের সমালোচনার জন্য সমালোচকদের মাদক কারবারিদের দোসর করার সম্ভাবনা প্রবল। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে মাদক কারবারিদের আসল পৃষ্ঠপোষকদের বিরুদ্ধে সরকার কি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পেরেছে? নাকি রাজনৈতিক কারণে সেটি সম্ভব নয়? আর এই সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের তালিকা কি শুধু নাগরিকদের জন্য? নাকি পুলিশ ও প্রশাসনের যেসব ব্যক্তির নাম শোনা যায়, তারাও সম্ভাব্য বন্দুকযুদ্ধের জন্য অপেক্ষমাণ?

বাংলাদেশে বর্তমানে সেবনীয় মাদকের তালিকার শীর্ষে আছে ইয়াবা। আমরা জানি, ইয়াবার প্রধান উৎস প্রতিবেশী মিয়ানমার। আমরা এ-ও জানি, ইয়াবা আকাশপথে আসে না। এটি আসে প্রধানত সাগরপথে কক্সবাজার হয়ে। কক্সবাজারের সরকারদলীয় সাংসদ এবং তাঁর ছয় ভাইয়ের নাম মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের তালিকায় রয়েছে (তিন তালিকাতেই সাংসদ বদি, প্রথম আলো, ১৮ জুন ২০১৫)। গত তিন বছরেও তাঁদের বিরুদ্ধে কোনো তদন্তের কথা শোনা যায়নি। সাংসদের ছোট ভাই শুকুর আলীর ইয়াবার চালানসহ আটক হয় ২০১৩‘র ডিসেম্বরে (পাঁচ কোটি টাকার ইয়াবা জব্দ, আটক ২, প্রথম আলো, ১১ ডিসেম্বর ২০১৩)। পাঁচ বছরেও সাংসদভ্রাতার বিরুদ্ধে বিজিবির মামলায় কোনো অগ্রগতির খবর নেই। ইত্যবসরে দুর্নীতির অভিযোগে ২০১৬ সালের নভেম্বরে সাংসদ দণ্ডিত হওয়ার পর জামিন পেয়েছেন এবং তাঁর জামিনের বিরুদ্ধে আপিল করায় দুর্নীতি দমন কমিশনের কোনো আগ্রহের আলামত মেলে না।

মাদকবিরোধী অভিযানে বন্দুকযুদ্ধের মডেলটি অত্যন্ত কঠোর ও নিষ্ঠুরভাবে চর্চা করছেন পূর্ব এশিয়ার দেশ ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট দুতার্তে। দুই বছরের বেশি সময় ধরে তাঁর এই চর্চা যে দেশটিকে মাদকমুক্ত করে ফেলেছে, এমনটি তিনিও দাবি করতে পারছেন না। কিন্তু এই রাষ্ট্র অনুমোদিত হত্যার নীতির জন্য তাঁর বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত তদন্ত শুরু করেছে। তিনি আন্তর্জাতিক আদালতের এখতিয়ার থেকে বেরিয়ে আসার জন্য রোম সনদ থেকে ফিলিপাইনকে প্রত্যাহারের ঘোষণা দিলেও এই তদন্ত থেকে তাঁর রেহাই পাওয়া কঠিন। কেননা সনদ থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নেওয়ার আগেই তদন্তটি শুরু হয়েছে এবং কোনো আন্তর্জাতিক সনদ থেকে রাতারাতি অব্যাহতি পাওয়া যায় না। আন্তর্জাতিক পরিসরে কূটনৈতিক প্রতিকূলতার কারণে তিনি এখন ক্রমশই চীনের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ছেন এবং দক্ষিণ চীন সাগরে সীমানাগত বিরোধে চীনের কাছে কার্যত আত্মসমর্পণ করেছেন। তা ছাড়া তাঁর চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যও এখানে কিছুটা প্রাসঙ্গিক। মিনদানাওয়ের মেয়র থাকাকালে নিজের হাতে খুন করার কথা স্বীকার করার পর এমন ধারণা করা অস্বাভাবিক নয় যে তাঁর কাছে হত্যাই হচ্ছে সমস্যার সমাধান।

ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট দুতার্তের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় অনুমোদনে হত্যার অভিযোগ যখন সর্বত্রই আলোচিত হচ্ছে, সেই সময়ে ২০১৭ সালে বাংলাদেশ জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের নির্বাচিত সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছে। সেই ২০১৭ সালের জুন মাসে ৪৭ সদস্যের মানবাধিকার পরিষদ তার ৩৫তম অধিবেশনে সব বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের নিন্দা করে সর্বসম্মতভাবে একটি প্রস্তাব অনুমোদন করে। ওই প্রস্তাবে এই চর্চা বন্ধের জন্য সব রাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। এ ধরনের সব অভিযোগ নিরপেক্ষ ও গভীর অনুসন্ধানের মাধ্যমে দায়ী প্রত্যেকের বিচারের দাবিও ওই প্রস্তাবে ছিল। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) বিচারে এ ধরনের ঘটনা যে অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে, সেই স্বীকৃতিরও উল্লেখ আছে প্রস্তাবটিতে।

এ কেমন নৈতিকতা আমাদের যে আমরা আন্তর্জাতিক ফোরামে যে রাষ্ট্রীয় অপরাধের নিন্দা জানিয়ে তা বন্ধের জন্য সব রাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানাব, সেই অন্যায় কৌশলকেই আমরা অনুশীলন করব? এই দ্বিচারিতা বন্ধ হোক। মাদক কারবারিদের খুঁজে বের করে আটক করুন, বিচার করুন, শাস্তি দিন; কিন্তু সন্দেহের বশে হত্যা কোনো রাষ্ট্রীয় নীতি হতে পারে না।


  • কামাল আহমেদ, সাংবাদিক
  • কার্টেসিঃ প্রথম আলো/ মে ২২,২০১৮ 

ঢাকার মুগদায় মাদকের ‘পৃষ্ঠপোষক’ সাত পুলিশ কর্মকর্তা

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কঠোর অভিযানের মধ্যেই জানা গেল, খোদ রাজধানীর মুগদা থানারই সাত পুলিশ কর্মকর্তা দীর্ঘদিন ধরে মাদক ব্যবসায়ীদের পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে আসছেন। টাকা নিয়ে মাদক বেচাকেনার সুযোগ করে দিতেন তাঁরা। মাদক ব্যবসায়ীদের সহযোগী হিসেবে কাজ করা সাত কর্মকর্তার নাম ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অভ্যন্তরীণ অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে।

ওই সাত পুলিশ কর্মকর্তাকে মুগদা থানা থেকে প্রত্যাহার (ক্লোজড) করে রাজারবাগ পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে। বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন মুগদা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. এনামুল হক। পুলিশের ওই সদস্যদের গত মার্চ মাসের মাঝামাঝি দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় বলে ডিএমপি সূত্র জানায়।

এদিকে রোববার পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) নরসিংদীর বেলাব থেকে ইয়াবা ব্যবসায় জড়িত থাকার অভিযোগে আরেক কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করেছে। তিনি বেলাব থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোরশেদ হোসেন। 

এর আগে গত সপ্তাহে রাজবাড়ী থেকে হাইওয়ে রেঞ্জের এসআই বেলাল হোসেন, নারায়ণগঞ্জ সদর থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) সোহরাওয়ার্দী হোসেন, নারায়ণগঞ্জ বন্দর থানার কনস্টেবল আসাদুর রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ছাড়া গত ২৬ এপ্রিল ইয়াবাসহ খিলগাঁও থানার এএসআই মজনু হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার হওয়া এই পাঁচ পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে সোহরাওয়ার্দী ও মজনু ছাড়া বাকি তিনজন অপরাধ স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন বলে জানা গেছে। এ বিষয়ে সিআইডির বিশেষ সুপার মোল্যা নজরুল ইসলাম গতকাল বিকেলে প্রথম আলোকে বলেন, মাদক বেচাকেনায় জড়িত ব্যক্তিদের পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। এখানে কে পুলিশ, কে পাবলিক তা বিবেচ্য বিষয় নয়।

মাদকের বিরুদ্ধে দেশজুড়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযান শুরু হওয়ার পর গত ছয় দিনে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ ১৯ জন নিহত হয়েছেন। তাঁরা সবাই মাদক ব্যবসায়ী বা মাদক মামলার আসামি বলে র‍্যাব ও পুলিশের কর্মকর্তারা জানান।

মুগদায় মাদকের পৃষ্ঠপোষক সাত পুলিশ সদস্য

রাজধানীর মুগদা থানা এলাকায় মাদক ব্যবসায়ীদের পৃষ্ঠপোষকতা ও সহায়তা করার ঘটনায় সাতজনকে প্রত্যাহার (ক্লোজড) করে রাজারবাগ পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে। তাঁরা হলেন মুগদা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মিজানুর রহমান, সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) নুরুল আমিন, এএসআই আবদুল ওয়াদুদ, এএসআই মো. সেলিম হোসেন, এএসআই জয়নুল আবেদীন, এএসআই খালেদুর রহমান ও এএসআই মো. আক্তারুজ্জামান। এ ঘটনায় ডিএমপি সদর দপ্তরের যুগ্ম কমিশনার (অপরাধ) শেখ নাজমুল আলমকে প্রধান করে তদন্ত কমিটি হয়েছে।

মাদক-বাণিজ্যে সাত পুলিশ সদস্যের জড়িত থাকার বিষয়ে মতিঝিল বিভাগের উপকমিশনার মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টির তদন্ত হচ্ছে। সত্যতা পাওয়া গেলে মামলা করা হবে।

ডিএমপির অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, গত ৫ মার্চ রাত সাড়ে নয়টার দিকে মুগদার দক্ষিণ মান্ডার বন্ধু বেকারি গলিতে অভিযান চালান ওই সাত পুলিশ কর্মকর্তা। ৪০টি ইয়াবা বড়িসহ স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ী স্বপন মিয়াকে আটক করেন তাঁরা। এরপর স্বপনকে নিয়ে তাঁরা স্থানীয় গ্রিন মডেল টাউনের বালুর মাঠে যান। স্বপনকে মামলায় জড়ানো হবে জানিয়ে তাঁর সঙ্গে থাকা ১২-১৩ হাজার টাকা কেড়ে নেন তাঁরা। এমনকি ওই রাতেই স্বপনের স্ত্রীর কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা ঘুষ নেন ওই সাত কর্মকর্তা। সমঝোতা হওয়ায় স্বপনকে মাদক মামলার আসামি না করে ছেড়ে দেওয়া হয়।

পুলিশের অভ্যন্তরীণ অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে, মুগদা থানার এএসআই ওয়াদুদ, নুরুল আমিন ও আক্তারুজ্জামান মানিকনগরের মিয়াজান গলিতে মাদক ব্যবসায়ী লিমা আক্তার ও তাঁর স্বামী দেলোয়ার হোসেন ওরফে দেলা এবং সালমা আক্তারের কাছ থেকে প্রতি সপ্তাহে এক হাজার টাকা নিতেন। এ ছাড়া আরেক মাদক ব্যবসায়ী নিজুর কাছ থেকে ৫০০ টাকা করে নিতেন তাঁরা।

এ বিষয়ে মুগদা থানার পরিদর্শক (অভিযান) সৈয়দ ইফতেখার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, মাদক ব্যবসায়ীদের গ্রেপ্তার করা হলেও কিছুদিনের মধ্যে তাঁরা জামিনে বেরিয়ে এসে একই অপরাধে জড়ান। গত বছরের ডিসেম্বরে স্বপনকে ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার করা হলেও কিছুদিনের মধ্যে তিনি জামিনে বেরিয়ে যান। গত এপ্রিলে মুগদা থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে ২৪টি মামলা হয়। এসব ঘটনায় ২৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

প্রথম আলোর অনুসন্ধানে জানা যায়, মুগদা থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের এক নেতা এবং স্থানীয় আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতার আশ্রয়-প্রশ্রয়ে পুলিশের সহযোগিতায় সেখানে মাদক ব্যবসা চলছে। গত বৃহস্পতিবার মুগদার মান্ডা এলাকায় স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা ও ব্যবসায়ী প্রথম আলোকে বলেন, এলাকায় ইয়াবা ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করেন মুসা, টুইল্যা রুবেল ও সাজু। তাঁদের সঙ্গে মুগদা থানার ওই সাত পুলিশ কর্মকর্তার সখ্য রয়েছে। এর সঙ্গে স্বেচ্ছাসেবক লীগের একজনসহ আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা জড়িত। তবে নিরাপত্তার কারণে ওই নেতাদের কারও নাম বলতে চাননি তাঁরা।

মাদকের সঙ্গে স্থানীয় নেতাদের জড়িত থাকার অভিযোগের বিষয়ে মুগদা থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি শামীম আল মামুন গতকাল রাতে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, মুগদা, মানিকনগর ও মান্ডার অলিগলিতে মাদক ব্যবসা হয়। তবে আওয়ামী লীগের কেউ জড়িত কি না, তা তাঁর জানা নেই। পুলিশ ভালো বলতে পারবে। দলের কারও জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে মুগদার দক্ষিণ মান্ডা এলাকার এক ব্যবসায়ী প্রথম আলোকে বলেন, প্রতিদিন সন্ধ্যায় মান্ডার অলিগলি, ঝিলপাড় ও নামা এলাকায় ইয়াবা বেচাকেনার আসর বসে। বহিরাগত যুবকেরাই এর মূল ক্রেতা। মাঝেমধ্যে সেখানে পুলিশ লোকদেখানো অভিযান পরিচালনা করে। পুলিশি অভিযানের খবর আগেই মাদক ব্যবসায়ীদের কাছে পৌঁছে যায়। পুলিশের কাছে স্থানীয় সব মাদক ব্যবসায়ীর তালিকা আছে। তারা ইচ্ছা করলেই এলাকা মাদকমুক্ত করতে পারে। তিনি বলেন, সন্তান মাদক সেবনে জড়িয়ে পড়তে পারে, এমন আশঙ্কা এলাকার সব অভিভাবকের মধ্যে রয়েছে।

এ বিষয়ে মুগদা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এনামুল হক প্রথম আলোকে বলেন, রাজনৈতিক নেতাদের প্রশ্রয়ে মুগদায় মাদক ব্যবসা হয় ঠিকই, তবে মাদকসহ ধরা পড়লে কাউকেই ছাড় দেওয়া হয় না। এলাকায় প্রতিদিন মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান চলছে। থানার সাত কর্মকর্তার মাদকের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ার ঘটনা সম্পর্কে তিনি বলেন, কারও ব্যক্তিগত অপরাধের দায় পুলিশ বাহিনী নেবে না।
  • কার্টেসিঃ প্রথম আলো/ মে ২২,২০১৮ 

Monday, May 21, 2018

State banks on a loan rescheduling spree

Jebun Nesa Alo


State-run banks are fervently rescheduling loans with a view to flattering their true financial health.

In 2017, Sonali, Janata, Agrani, Rupali and BASIC rescheduled loans amounting to about Tk 5,000 crore, in contrast to Tk 3,300 crore a year earlier, according to data from the central bank.

Janata regularised the highest amount of loans: Tk 1,433 crore. As a result, the bank's default loan ratio came down to 14.10 percent at the end of last year from 16.14 percent in 2016.

The bank's other financial indicators though deteriorated during the course of 2017.

At the end of last year, it had a capital shortfall of Tk 161.48 crore, which was Tk 278 crore in the surplus the previous year.

Janata's net profit too plummeted 1.6 times to Tk 96.77 crore in 2017 from Tk 260.55 crore the previous year.

Agrani rescheduled the next highest amount of loans in 2017: Tk 1,288 crore. In 2016, it had rescheduled Tk 540 crore.

The huge rescheduling helped the bank to bring down its default loan ratio to 18.31 percent at the end of last year from 29.32 percent a year earlier.

It logged in a net profit of Tk 88 crore in 2017, bouncing back from losses of Tk 697 crore the previous year.

Scam-hit BASIC Bank rescheduled loans amounting to Tk 949 crore in 2017, up from Tk 788 crore the previous year.
The bank saw improvements in some performance indicators last year.

Its default loan ratio came down to 52.73 percent in December 2017 from 54.58 percent a year earlier.

Its capital shortage narrowed to Tk 2,656 crore last year from Tk 2,866 crore the previous year. It also saw a net profit of Tk 24.68 crore in 2017 from a loss of Tk 1,493 crore in 2016.

Rupali rescheduled loans of Tk 948 crore last year, in contrast to Tk 644 crore the previous year.
Despite this significant amount of rescheduling, the bank's default loan stood at 21.71 percent in December 2017, from 20.64 percent a year earlier.

However, the bank made a net profit of Tk 48.33 crore last year, recovering from a loss of Tk 126 crore in 2016.  Sonali, the largest state-owned bank in the country, rescheduled the lowest amount of loans in 2017: Tk 293 crore.

The bank's default loan ratio surged to 38.11 percent at the end of last year from 33.40 percent the previous year.

The high default loan ratio has put the bank in huge capital shortage: Tk 5,397 crore. A year earlier, it had a capital surplus of Tk 149.48 crore.

However, the bank's net profit more than doubled to Tk 398 crore last year.

  • Courtesy: The Daily Star/ May 21, 2018

ইটভাটার বিষাক্ত গ্যাসে গাছেই পচেছে ৬ শতাধিক বাগানের আম



নাটোরের লালপুরে অবৈধ ইটভাটার বিষাক্ত গ্যাসে সর্বস্বান্ত নয় গ্রামের অন্তত ৬০০ আমবাগান মালিক। অপরিপক্ব আম নিচের অংশ পচন ধরে শুকিয়ে ঝরে পড়ছে। স্থানীয় কৃষি বিভাগ প্রাথমিকভাবে ক্ষতির পরিমাণ ২ কোটি টাকা নির্ধারণ করেছে।

কয়েক’টি আক্রান্ত বাগান ঘুরে দেখা গেছে, প্রত্যেকটি গাছের নিচে নষ্ট আম পড়ে আছে। গাছে ঝুলছে অর্ধেক পচা আম। বাগান মালিকরা বলছেন, কয়েক বছর ধরে এ এলাকায় আমের আকার ছোট হয়ে আসছিল, কিন্তু এভাবে মড়ক ধরেনি। নাটোরের লালপুর উপজেলার লালপুর ইউনিয়নের বিশম্ভরপুর, মমিনপুর বিলমাড়িয়া ইউনিয়নের মহরকোয়া, রহিমপুর, প্রধানপাড়া, আড়বাব ইউনিয়নের অমৃতপাড়া, ঘোষপাড়া, আকবরপুর ও কৃষ্ণরামপুরসহ মোট নয়টি গ্রামের  ছয় শতাধিক  বাণিজ্যিক আমবাগান আক্রান্ত হয়েছে বলে জানা গেছে। ইটভাটার কাছাকাছি বসতবাড়ির আমগাছগুলোও রক্ষা পায়নি।

চাষীদের অভিযোগ, আধা কিলোমিটারের মধ্যে আটটি অবৈধ ইটভাটার কারণে এমন পরিস্থিতিতে পড়েছেন তারা। মৌসুমের মাঝামাঝি এসে এ বিপর্যয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন বাগান মালিক ও ব্যবসায়ীরা।
বাগান মালিকরা জানান, প্রথমে আমের নিচের অংশে কালো হয়ে যাচ্ছে। ক্রমেই সেটি শুকিয়ে একসময় ঝরে পড়ছে। কোনো কীটনাশকেও যখন কাজ হয়নি, তখন তারা কৃষি অফিসকে জানান। ১০-১২ দিন আগে তারা এসে নমুনা নিয়ে যান।

উপজেলা কৃষি অফিস জানিয়েছে, আমচাষীদের অভিযোগ পেয়ে নমুনা নিয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ আঞ্চলিক আম গবেষণা ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়। পরীক্ষা শেষে পাঠানো প্রতিবেদনে জানানো হয়, ইটভাটার ধোঁয়া ও গ্যাসের কারণে ‘ব্ল্যাক টিপ’ নামের রোগ শনাক্ত করা হয়েছে। সেই সঙ্গে আবাসিক এলাকা ও বাগানের আশপাশে দুই কিলোমিটারের মধ্যে থাকা ভাটা স্থানান্তরসহ বেশকিছু পরামর্শ দিয়েছেন তারা।

মহরকোয়া গ্রামের ক্ষতিগ্রস্ত বাগান মালিক ওবায়দুর রহমান বলেন, ১ লাখ ৮০ হাজার টাকায় একটি বাগান কিনেছিলেন। কিন্তু সব আম পচে ঝরে যাচ্ছে। অন্যান্য বাগানেরও একই অবস্থা। ঘোষপাড়া গ্রামের ক্ষতিগ্রস্ত বাগান মালিক এনামুল হক গত বছরও এমন ক্ষতির মুখে পড়েছিলেন। তখন বুঝতে পারেননি যে, এর জন্য ইটভাটাই দায়ী। এবার যখন বুঝতে পেরেছেন ততক্ষণে সব শেষ!

আমবাগান লিজ নিয়ে ক্ষতির মুখে পড়েছেন অনেক মৌসুমী ব্যবসায়ী। কামরুল ইসলাম নামে এমন এক ব্যবসায়ী বলেন, আমার মতো অনেক ব্যবসায়ীর ৫-৭ লাখ টাকা পর্যন্ত লোকসান গুনতে হচ্ছে। এবার সব পুঁজি চলে যাবে।

এদিকে অবৈধ ইটভাটা উচ্ছেদের দাবিতে স্থানীয় লোকজন ও আমবাগান মালিকরা একাধিকবার মিছিল, মানববন্ধন করেছেন। পরিবেশ অধিদপ্তর, জেলা প্রশাসক, ইউএনও বরাবর অভিযোগও দেয়া হয়েছে। তবে ভাটার মালিকরা দায় নিতে রাজি নন। এ বিষয়ে ভাটামালিকরা কথা বলতেও রাজি হননি। ভাটামালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক নঈম উদ্দিন সেন্টুর কাছে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে দাবি করেন, শিলাবৃষ্টির কারণে আমের ক্ষতি হয়েছে। এতে ভাটার কোনো সম্পর্ক নেই। লোকজন এভাবে মিছিল-মিটিং মানববন্ধন করে কিছুই করতে পারবে না!

ভাটার ধোঁয়ার কারণে আমের ক্ষতির তথ্য নিশ্চিত করে লালপুর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা হাবিবুল ইসলাম খান বলেন, লালপুর উপজেলায় অন্তত ২৬টি ইটভাটা রয়েছে, সবক’টিই অবৈধ। এগুলোর কারণে আগামী দিনে কৃষিতে আরো বড় ধরনের ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।

তিনি জানান, লালপুরে ১ হাজার ৭৮০ হেক্টর জমিতে আমবাগান রয়েছে। এবার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৭ হাজার ৮০ টন। কিন্তু ভাটার কারণে ৮৭ হেক্টরের আম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফলে ৮৭০ টন আম কম উৎপাদন হবে। প্রাথমিকভাবে ৬০০ ক্ষতিগ্রস্ত চাষীকে শনাক্ত করা হয়েছে। ক্ষতির পরিমাণ অন্তত ২ কোটি টাকা।

ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করতে কৃষি বিভাগকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে জানিয়ে লালপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম বলেন, এখানে সব ইটভাটাই অবৈধ। অবৈধ ভাটার মালিকদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক শাহিনা খাতুনও।

  • কার্টেসিঃ বনিক বার্তা/ মে ২১,২০১৮ 

দেশে ৭৫ শতাংশ কর্মসংস্থান অরক্ষিত

আইএলওর প্রতিবেদন


বদরুল আলম

দেশে মোট কর্মসংস্থানের ৭৫ দশমিক ২ শতাংশই অরক্ষিত। এর মধ্যে ৫২ দশমিক ৭ শতাংশ মূলত আত্মকর্মসংস্থান। বাকি ২২ দশমিক ৬ শতাংশ হচ্ছে পারিবারিক কর্মসংস্থান। অরক্ষিত ও অনানুষ্ঠানিক এসব কর্মসংস্থানে নিযুক্তদের দায়িত্ব কম, আয়ের নিরাপত্তাও কম। টেকসই ও পরিবেশবান্ধব কর্মসংস্থান নিয়ে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

আইএলও গত সপ্তাহে ওয়ার্ল্ড এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড সোস্যাল আউটলুক ২০১৮: গ্রিনিং উইথ জবস শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। জেনেভা থেকে প্রকাশিত প্রতিবেদনটির বাংলাদেশ এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সাসটেইনেবিলিটি ফ্যাক্ট শিটস অংশে দেশে কর্মসংস্থানের গতি-প্রকৃতির চিত্র উঠে এসেছে। ফ্যাক্ট শিটসের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৭ সাল পর্যন্ত দেশে মোট জনগোষ্ঠীর শ্রমশক্তিতে অংশগ্রহণের হার ৬২ দশমিক ৩ শতাংশ। আর কর্মক্ষম জনসংখ্যা অনুপাতে কর্মসংস্থানের হার ৫৯ দশমিক ৮ শতাংশ। বেকারত্বের হার ৪ শতাংশ। এর মধ্যে তরুণ জনগোষ্ঠীর বেকারত্বের হার ১০ দশমিক ৫ শতাংশ।

আইএলও বলেছে, কর্মসংস্থানের বিষয়টি প্রাকৃতিক পরিবেশের সঙ্গে অবিচ্ছেদ্যভাবে সম্পর্কিত। কৃষি, মত্স্য, বনজ সম্পদ, পর্যটন ইত্যাদি খাত এবং ওষুধ, বস্ত্র, খাদ্য ও পানীয় শিল্পে কর্মসংস্থান পুরোপুরিই স্বাস্থ্যকর পরিবেশের ওপর নির্ভরশীল। জলবায়ু রূপান্তরের ফলে বৈশ্বিক তাপমাত্রা বাড়ছে। এ কারণে প্রতি বছরই তীব্র গরম ও দাবদাহের ব্যাপ্তি বাড়ছে। এভাবে কাজের অনুপযোগী দিনের সংখ্যা আগামী দিনগুলোতেও বাড়তে থাকবে। কিছুদিনের মধ্যে পরিস্থিতি এমন হতে পারে যে, অর্থনৈতিক উন্নতির সুবাদে সৃষ্ট কর্মসংস্থানের সুযোগগুলো পরিবেশগত বিপর্যয়ের কারণে হারিয়ে যাবে। এ কারণেই কর্মসংস্থানের জগতটি পরিবেশগত বিচারে টেকসই করা জরুরি বলে জাতিসংঘের বিশেষায়িত সংস্থাটি উল্লেখ করেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির কারণে দক্ষিণ এশিয়ায় চার কোটি পূর্ণকালীন কর্মীর উৎপাদনশীলতা বার্ষিক ৪ দশমিক ৮ শতাংশ হারে কমবে। কৃষি খাতে এর প্রভাব পড়বে সবচেয়ে বেশি। তাপমাত্রা ও উষ্ণতা বৃদ্ধি বাংলাদেশের কৃষকদের ওপরও নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

আইএলও ফ্যাক্ট শিটের তথ্যমতে, বাংলাদেশে ১৫ বছরের বেশি বয়সীদের কর্মসংস্থান কৃষি ও সেবা খাতে ৪০ শতাংশের কিছু বেশি। আর শিল্প খাতে কর্মসংস্থান হচ্ছে ২০ শতাংশের। দক্ষতার মান বিচারে উচ্চদক্ষতাসম্পন্ন কর্মসংস্থান ২০ শতাংশেরও কম। মাঝারি দক্ষতার কর্মসংস্থান ৬০ শতাংশের কিছু বেশি। আর নিম্ন দক্ষতার কর্মসংস্থান ২২ শতাংশের মতো।

দেশের টেকসই কর্মসংস্থান পরিস্থিতি আলোকপাত করতে আইএলও পাঁচটি বিষয় বিবেচনায় নিয়েছে। এর মধ্যে আছে— পরিবেশ কর্মসংস্থান, দক্ষতার মাত্রা, কাজের দুর্বলতা, নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে কর্মসংস্থান এবং পরিবেশগত পারফরম্যান্স সূচক।  সংস্থাটি জানিয়েছে, পরিবেশবান্ধব অর্থনীতির অনুকূল নীতি বাস্তবায়ন হলে ২০৩০ সালের মধ্যে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীর অঞ্চলে ১ কোটি ৪০ লাখ নতুন কর্মসংস্থান হবে। এগুলো হবে নবায়নযোগ্য জ্বালানি এবং টেকসই নির্মাণ, উৎপাদন ও কৃষি খাতে।

আইএলওর উপমহাপরিচালক ডেবোরাহ গ্রিনফিল্ড বলেছেন, কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রগুলো স্বাস্থ্যকর পরিবেশ ও সেবার ওপর নির্ভর করে। সবুজ বা পরিবেশবান্ধব অর্থনীতি লাখো মানুষকে দারিদ্র্য থেকে বেরোনোর পথ দেখাতে পারে। পাশাপাশি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য উন্নত জীবিকাও নিশ্চিত করতে পারে।

দেশে অরক্ষিত কর্মসংস্থানের কথা এসেছে সরকারের শ্রমশক্তি জরিপেও। শ্রমশক্তি জরিপ ২০১৬-১৭ অনুযায়ী, কর্মে নিয়োজিত শ্রমশক্তির ৮৫ দশমিক ১ শতাংশই অনানুষ্ঠানিক খাতে নিযুক্ত। কৃষি খাতে নিয়োজিত শ্রমশক্তির ৯৫ দশমিক ৪, শিল্প খাতে ৮৯ দশমিক ৯ এবং সেবা খাতে এখনো ৭১ দশমিক ৮ শতাংশ কর্মী অনানুষ্ঠানিকভাবে নিযুক্ত বলে জরিপে উল্লেখ করা হয়।

এর আগে চলতি বছরের জানুয়ারিতে ‘ওয়ার্ল্ড এমপ্লয়মেন্ট সোস্যাল আউটলুক ট্রেন্ডস ২০১৮’ শীর্ষক প্রতিবেদনে বাংলাদেশের অরক্ষিত শ্রম খাতে আলোকপাত করে আইএলও। সেখানে বলা হয়, দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোয় কর্মসংস্থানে অপ্রাতিষ্ঠানিকতার ধারাবাহিকতা অব্যাহত আছে, যা দারিদ্র্য কমিয়ে আনার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়াচ্ছে। ভারত, বাংলাদেশ, কম্বোডিয়া ও নেপালে প্রায় ৯০ শতাংশ শ্রমিকই অনানুষ্ঠানিক খাতে কাজ করেন। এসব দেশে নির্মাণ, পাইকারি ও খুচরা ব্যবসা, আবাসন এবং খাদ্য সেবা শিল্পের মতো অকৃষি খাতগুলোতেও অনানুষ্ঠানিক কর্মসংস্থানের প্রবণতা ব্যাপক।

আইএলওর ওই প্রতিবেদনের তথ্যমতে, দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে ৭৫ শতাংশের উপরে অপ্রাতিষ্ঠানিক কর্মসংস্থান রয়েছে নেপাল, কম্বোডিয়া, বাংলাদেশ, ভারত, মিয়ানমার, ইন্দোনেশিয়া, পাকিস্তান ও ভিয়েতনামে। অপ্রাতিষ্ঠানিক কর্মসংস্থানে সবচেয়ে এগিয়ে থাকা তিনটি দেশ হলো নেপাল, কম্বোডিয়া ও বাংলাদেশ।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিদ্যমান অর্থনৈতিক উন্নয়ন কর্মসংস্থানে ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারছে না। মূলত দেশে কর্মসংস্থানহীন প্রবৃদ্ধি হচ্ছে। কর্মসংস্থান যা হচ্ছে, তার ৮০ শতাংশই অনানুষ্ঠানিক খাতে। দেশে ম্যানুফ্যাকচারিং খাতে যতটা প্রবৃদ্ধি হওয়া প্রয়োজন ছিল, ততটা হয়নি বলে তারা জানান।

এ প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. বরকত ই খুদা বলেন, আইএলওর প্রতিবেদনের তথ্য সঠিক এবং এটাই বাংলাদেশের বাস্তবতা। দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশ এবং আমাদের মতো অন্য দেশগুলোয় এ অবস্থা বিরাজ করছে। অপ্রাতিষ্ঠানিক নিয়োগ মানেই হলো কাজটি ডিসেন্ট বা শোভন না। এ ধরনের কাজের কোনো নিরাপত্তা নেই। মজুরি কাঠামোও প্রযোজ্য হয় না এ ধরনের কাজের ক্ষেত্রে। কর্মসংস্থানের নিরাপত্তা, অবসর ভাতার মতো বিষয়গুলো অপ্রাতিষ্ঠানিক কাজে নেই। এ ধরনের কর্মসংস্থানে নিযুক্তদের শিক্ষার হার ও মান ভালো না। আবার এদের উৎপাদনশীলতাও সীমিত। এ কারণে অর্থনীতিতে এদের অবদান কম। অনানুষ্ঠানিক খাত থেকে আমরা যদি শ্রম উৎপাদনশীলতা বাড়াতে পারি, তাহলে অর্থনীতির চিত্র পাল্টে যাওয়া সম্ভব।

আইএলওর প্রতিবেদনের চিত্র বাংলাদেশ ও অন্য দেশগুলোর জন্য বিপজ্জনক মন্তব্য করে তিনি বলেন, আমাদের দেশে এখন সাধারণ শিক্ষার চেয়ে পেশাগত-কারিগরি শিক্ষায় বেশি গুরুত্ব দেয়া উচিত। আমরা যদি দক্ষতা বাড়াতে পারি, তাহলে শ্রম উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করে অর্থনীতির গতিশীলতা অনেক বাড়াতে পারব।
  • কার্টেসিঃ বনিক বার্তা/ মে ২১,২০১৮ 

ডলার সংকটে বেসরকারি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের এলসি খুলছে না ব্যাংক

জ্বালানি তেল আমদানি


ইয়ামিন সাজিদ

চলতি অর্থবছরের শুরু থেকেই অস্থিরতা চলছে দেশের ডলারের বাজারে। বেসরকারি অনেক ব্যাংকই তীব্র ডলার সংকটে ভুগছে। এর প্রভাব পড়েছে বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর জ্বালানি তেল আমদানিতে। বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রের জ্বালানি তেল আমদানিতে ঋণপত্র (এলসি) খুলতে পারছে না অনেক ব্যাংক। ফলে জ্বালানি তেলের জন্য রাষ্ট্রায়ত্ত বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) দ্বারস্থ হচ্ছে বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো। সরাসরি আমদানির পরিবর্তে বিপিসির কাছ থেকে জ্বালানি তেল সংগ্রহ করছে তারা।

দুই বছর আগেও নীতি ও শর্ত পূরণ না করেই নিজস্ব উদ্যোগে জ্বালানি তেল আমদানি শুরু করেছিল বেসরকারি খাতের এসব বিদ্যুৎকেন্দ্র। কিন্তু এলসি খুলতে না পারায় গত ফেব্রুয়ারি থেকে জ্বালানি তেলের জন্য বিপিসির ওপর নির্ভরশীল তারা।

সূত্রমতে, ডলার সংকটের কারণে দেশের অধিকাংশ বেসরকারি ব্যাংকই এখন আমদানির জন্য বড় কোনো এলসি খোলার ঝুঁকি নিচ্ছে না। পুরনো এলসিগুলোর দায় পরিশোধেও হিমশিম খাচ্ছে অনেক ব্যাংক।

মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আনিস এ খান এ প্রসঙ্গে বণিক বার্তাকে বলেন, অনেক দিন থেকেই বাজারে ডলারের সংকট চলছে। বাজার অস্থিতিশীল হওয়ায় প্রতিনিয়ত ডলারের দাম বাড়ছে। ফলে অনেক ব্যাংকই দেখে-শুনে এলসি খুলছে। বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য অনেক জ্বালানি তেলের প্রয়োজন হয়। এ তেল আমদানির জন্য বড় এলসি খোলার সক্ষমতা অনেক ব্যাংকেরই এখন নেই।

দেশে সরকারি ও বেসরকারি মিলিয়ে উৎপাদনে আছে ১০৯টি বিদ্যুৎকেন্দ্র। এর মধ্যে কুইক রেন্টাল ও রেন্টালসহ বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রের সংখ্যা ৬৬। এসব বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রধান জ্বালানি প্রাকৃতিক গ্যাস, ডিজেল ও ফার্নেস অয়েল। এর মধ্যে ৩৫টি ডিজেল ও ফার্নেস অয়েলভিত্তিক।

এর মধ্যে বিভিন্ন শর্তে সামিট পাওয়ার, ওরিয়ন, ডরিন পাওয়ার, বাংলাক্যাটসহ প্রায় ১৫টি বেসরকারি বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানকে ফার্নেস অয়েল আমদানির অনুমতি দেয়া হয়। তবে দু-একটি কোম্পানি ছাড়া অধিকাংশ প্রতিষ্ঠান বিপিসির সঙ্গে চুক্তি না করেই তেল আমদানি শুরু করে। এতে নিয়ম অনুযায়ী প্রাপ্য রয়্যালটি হারায় বিপিসি। নিজস্ব আমদানির সুবাদে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো প্রতি লিটারে ২০-২৫ টাকা সাশ্রয় করে। কিন্তু ডলার সংকটে এলসি খুলতে না পারায় জ্বালানি তেলের জন্য আবার বিপিসির কাছেই ফিরছে বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী এসব প্রতিষ্ঠান।

অবশ্য তেল আমদানি বন্ধ করা হয়নি বলে জানান বারাকা পাওয়ারের এক শীর্ষ কর্মকর্তা। শুরু থেকেই তারা প্রতি মাসে ৬০-৭০ হাজার টন তেল আমদানি করে আসছেন বলে তিনি বণিক বার্তাকে জানান তিনি।

ডলার সংকটের আশু সমাধান দেখছেন না ব্যাংকারদের অনেকেই। সাউথইস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এম কামাল হোসেন এ প্রসঙ্গে বণিক বার্তাকে বলেন, ডলারের পর্যাপ্ত রিজার্ভ সত্ত্বেও এলসির দায় পরিশোধ কষ্টসাধ্য হয়ে দাঁড়াচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকও চাহিদা অনুযায়ী ডলার দিচ্ছে না। বিদ্যমান এ সংকট ভবিষ্যতে আরো বাড়তে পারে।

এ পরিপ্রেক্ষিতে বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো জ্বালানি তেলের জন্য বিপিসির দ্বারস্থ হলেও রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানটির এলসিও খুলতে পারছে না রূপালী ব্যাংক। ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. আতাউর রহমান প্রধান এ প্রসঙ্গে বলেন, চাহিদা অনুযায়ী আমাদের হাতে ডলার নেই। বাংলাদেশ ব্যাংকও যথাসময়ে পর্যাপ্ত ডলার দিতে পারছে না। এজন্য বাধ্য হয়েই বিপিসির নতুন এলসি নিতে পারছি না। একইভাবে অন্য প্রতিষ্ঠানের এলসিও দেখে-শুনে খুলতে হচ্ছে।

কম দামে জ্বালানি তেল বিক্রি করতে গিয়ে এমনিতেই চাপে আছে বিপিসি। কম দামে জ্বালানি তেল বিক্রির কারণে প্রতিদিন গড়ে ১০ কোটি ৩৫ লাখ টাকা লোকসান হচ্ছে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানটির। আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম বাড়তে থাকায় এ চাপ আরো বাড়বে। ২০১৬ সালে জ্বালানি তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ৩৩ ডলার থাকলেও এখন তা ৭০ ডলার ছাড়িয়ে গেছে।

এর মধ্যেই বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর আমদানি বন্ধের কারণে বাড়তি জ্বালানি তেল আমদানি করতে হচ্ছে বিপিসিকে। বর্ধিত চাহিদা মেটাতে নতুন করে চলতি মাসের শুরুতে অতিরিক্ত দুই লাখ টন তেল আমদানির বিষয়ে সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করেছে বিপিসি।

জানতে চাইলে বিপিসির সদ্য নিযুক্ত চেয়ারম্যান মো. আকরাম আল হোসাইন বণিক বার্তাকে বলেন, আমরা সব সময় বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোকে জ্বালানি দিয়ে আসছি। মাঝখানে কিছু প্রতিষ্ঠান নিজ উদ্যোগে জ্বালানি আমদানির অনুমতি নিয়েছে। তবে চাহিদা বেড়ে যাওয়া বিপিসির আমদানি কিছুটা বেড়েছে।

প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ২৪ এপ্রিল ডিজেল ও কেরোসিনের দাম ৪ শতাংশ এবং অকটেন ও পেট্রলের দাম ১০ শতাংশের মতো কমানো হয়। বর্তমানে প্রতি লিটার ডিজেল ও কেরোসিনের আমদানি ব্যয় ৮৩ টাকা। তবে গ্রাহক পর্যায়ে বিপিসি বিক্রি করছে ৬৫ টাকায়।
  • কার্টেসিঃ বনিক বার্তা/ মে ২১,২০১৮ 

The sub-jail that failed to start in 30 years

Decision to turn Sakhipur prison a safe home for children uncertain


Mirza Shakil










The dilapidated sub-jail in Sakhipur upazila of Tangail has not been used since it was built nearly 30 years ago. PHOTO: Mirza Shakil

The land of an unused sub-jail in Sakhipur upazila is being grabbed by the vested quarters as the prison could not start functioning in around 30 years of its completion.

Work for the sub-jail on 2.23 acres of land in the municipal area started in 1985 and construction of the structure, built to accommodate 25 prisoners, was completed in 1988 at a cost of Tk 1 crore.

The activities of the sub-jail, however, could not be started due to political unrest. It has not been used since then.

The main iron gate of the jail has broken up due to rust. The wooden windows of the main building gradually rotted and collapsed. Electric fittings and the water tank has been stolen. Moreover, the jail area has turned into a jungle due to growth of grass and weeds for years.


Wild plants have grown along the walls of the sub-jail due to lack of maintenance. PHOTO: Mirza Shakil

A part of the building, constructed for the assistant superintendent of the jail, has been occupied by a local youth club and the imam of a local mosque, locals said.

The rest of the building is being used as office of the local microbus owners' association, while a part of the land is being used as a stand for CNG-run three-wheelers, they added.

A leader of the local microbus and three-wheeler drivers' association Mohammad Shahjahan Ali Miah claimed that they have been using a part of the land of the abandoned jail after taking permission from the local administration.

A part of the field of the jail is being used as a market, while several owners of adjacent houses have also been using the land for different purposes after grabbing it.

A local kindergarten is using the office room of the jail as its office. School owner Fazlul Haque said he has been using the abandoned room temporarily for public interest with the permission from the local administration. "I shall leave the place anytime the authorities ask," he added.

A section of land of the sub-jail has been grabbed to set up shops. PHOTO: Mirza Shakil

Upazila Nirbahi Officer Mousumi Sarkar Rakhi said they were investigating the matter.

"If anyone is found to have occupied the land of the jail illegally, steps will be taken soon to remove them from there," she added.

The then work assistant of Public Works Department (PWD) Mohammad Tohiz Uddin looked after the jail for 14 years.

He said Tangail PWD, on behalf of the home ministry, handed over the unused jail to Sakhipur Upazila Social Welfare Department on May 26 in 2005 for making it a safe home for children.

Upazila Social Welfare Officer (USWO) Mohammad Mansur Ahmed said they have yet to get any directive from the government so far for turning the unused jail to a safe home for children.

"We have requested the higher authorities to get demarcation of the jail land done for taking it under the control of the social welfare department," he said.

"We believe the grabbers will go away willingly when steps are taken to turn the unused sub-jail to a safe home for children, or for any other social welfare purpose," he added.

  • Courtesy: Daily Star/ May 21, 2018

Anti-narcotics drive: 8 killed in ‘gunfights’ in six districts

Amid an ongoing crackdown on narcotics, eight alleged drug peddlers were killed in one night in separate “gunfights” in different districts of the country.

Three suspected drug traders were killed in Jessore district, while one each died in Chuadanga, Rajshahi, Narsingdi, Jhenidah and Tangail.

In Jhenidah, an alleged drug trader was killed in a ‘gunfight’ with Rab at the junction of three roads at Narendrapur village under Kaliganj upazila of the district, reports our correspondent.

The deceased was identified as Sabdul Mondol, 42, son of Mohammad Ali Mondol of Narendrapur village under the upazila, our Jhenidah correspondent reports quoting Jhenidah Rab camp Commander Golam Morshed.

Rab recovered a nine MM pistol, two rounds of bullets, 100 bottles of phensydil, 150 pieces of Yaba and a helmet from the spot.

Abdul Mannan, a man from the same village said he was working on his vegetable plot with Sabdul on Sunday around 5:00pm when some plain cloth men picked up Sabdul from the plot, reports our correspondent.

In Jessore, three ‘drug peddlers’ were killed in two different areas in the town, reports our Benapole correspondent quoting officer-in-charge of Kotwali Police AKM Ajmal Huda.

The drug traders were killed in separate gunfights between two groups of drug traders in Khejur Bagan area in Nawab Ali of Sheikhati and Kholadanga area in the early hours today, the official said.

Police recovered 500 pieces of Yaba, two pistols and cartridges from the spot.

In Chuadanga, Janab Ali, 32, a ‘drug trader’ was killed in a gunfight with police at Uthli village under Jibonnagar upazila of the district.

Seeing a group of seven to eight people at Synnashitola field, a patrol team of police led by Sub-Inspector Milon Ullah stopped his vehicle on Uthli- Synnashitola road at about 3:30am, reports our Kushtia correspondent quoting officer-In-Charge (OC) of Jibonnagar police station Mahmud Rahman.

The gathering of people opened fire on the policemen when the law enforcers asked what they were doing, triggering a gunfight in retaliation, the OC said.

In Rajshahi, a suspected drug peddler was killed in a “gunfight” with members of Rab-5 around midnight.

Huge amounts of Yaba, arms and ammunition were recovered from the spot, according to a text message sent to media by Rab.

In Narsingdi, a “drug-peddler” accused in multiple criminal cases and a top criminal was killed in a “gunfight” with members of Rab-11, according to a text message sent to media by Rab.

Large amounts of Yaba tablets were recovered from the spot.

According to UNB, in Tangail, a suspected drug trader Abul Kalam Azad Khan, 42, son of late Abdur Rahman Khan, a resident of Purbo Pakutia of Ghatail upazila, and also accused in five cases, was killed in a “gunfight” with members of Rapid Action battalion in a brickfield area of Deula Bari around 12:00am. 

  • Courtesy: The Daily Star /May 21, 2018

Mismatch in job, edn behind lack of skilled workers: study


Bangladesh lacked skilled workers as there was a huge gap between what they learned at general, technical and vocational education institutions and what the country’s industrial firms and the international market needed. 

According to a study unveiled on Sunday, the country would require 8.48 crore skilled workers by 2035 to increase its productivity for achieving a sustainable development goal. 

Bangladesh Technical Education Board and Institution of Diploma Engineers jointly conducted the study titled ‘Build skill Bangladesh for emerging Bangladesh as a developed nation.’The study found that over Tk 22,000 crore would be required for preparing these 8.48 crore skilled workers. 

Researchers and education minister Nurul Islam Nahid held education-job market mismatch, lack of interest from parents to send their children to technical vocational education and training responsible for a lower number of high-skilled workers. They said that due to the less number of skilled workers in Bangladesh, the country was earning relatively less amount of remittance and many foreigners working here were taking a huge amount of foreign currencies back to their homeland.

‘We are taking the findings of the report as an important document,’ Nahid said during the unveiling ceremony of the study.‘We are trying to increase the technical vocational education and training across the country as well as increase the quality of education for producing skilled labour. 

‘Number of students in technical vocational education and training was less as many guardians were unwilling to send their children there considering it meant for the academically weak students,’ he said, adding that the mentality of the parents was gradually changing due to government efforts. 

While making a presentation, one of the researchers Syed Abdul Aziz, said that there were 63 million workforces in Bangladesh in 2015-16. He said that 2.49 crore skilled workers would be needed by 2025, 2.91 crore by 2030 and 3.07 crore by 2035.

About Tk 22,000 crore would be needed to arrange their education and training to make them skilled, he added.

The Federation of Bangladesh Chambers of Commerce and Industry president Shafiul Islam Mohiuddin said that education system in our country was producing ‘a number of graduates unnecessary’.

He pointed out that Bangladeshi migrant workers earned less than other for the same work just because of the low level of their skill. He added that currently foreigners working in Bangladesh takes about 5 to 6 billion US dollar back to their homeland as salaries for their mid to top-level jobs as Bangladesh did not produce qualified workers.

Bureau of Manpower, Employment and Training data showed that inward remittance in the country stood about $13 billion from about 1 crore overseas workers, down from $15.8 billion in 2015. 

Bangladesh lags behind the Philippines, Sri Lanka, Pakistan, and India in terms of both sending skilled workers abroad and earning remittance, according to the World Bank’s migration and remittances fact book 2016.

It showed that among the top 10 remittance receiving countries in the world, Bangladesh was the 10th with remittance worth $15.8 billion in 2015 while India earned the highest $72.2 billion.The Philippines stood third with remittance worth $29.9 billion and Pakistan was the 8th with $20.1 billion in remittance.

Centre for Policy Dialogue study in March this year showed that foreigners were working at 16 per cent of readymade garment factories in Bangladesh. 

Particularly in production planning 37.3 per cent of total foreign professionals, merchandising 20.1 per cent, quality assurance 11.9 per cent and washing sections 8.2 per cent and others, said the study. 
  • Courtesy: New Age/May 21, 2018