Search

Tuesday, June 5, 2018

Anti-Narcotics Drive: EU calls for probe into all deaths

The European Union missions in Dhaka have called for a complete investigation into all the deaths related to the ongoing drive against narcotics.
“We expect the authorities to ensure that all incidents involving the deaths of alleged criminal suspects are investigated fully and in accordance with due processes,” the heads of local EU missions said in a statement yesterday.

European Union delegation issued the statement in agreement with the EU heads of mission in Bangladesh. The head of mission of Norway associates herself with the statement.

Drug abuse and illicit trafficking is a global problem, the statement said.

The high-level casualties and reports of the use of excessive force in the drive against narcotics, however, is reported to have resulted in over 120 deaths since May 4, it added.

“Bangladesh has committed to uphold the rule of law and ensure that all law enforcement actions are carried out in accordance with the law and in adherence to international standards and norms, including with appropriate safeguards over the use of force,” the statement read.

The signatories of the statement are: ambassador and delegation of the European Union Rensje Teerink, Italian ambassador Mario Palma, German ambassador Thomas Heinrich Prinz, the Netherlands ambassador Leoni Cuelenaere, British high commissioner Alison Blake, Danish ambassador Mikael Hemniti Winther, Spanish ambassador D Álvaro de Salas Giménez de Azcárate, Swedish ambassador Charlotta Schlyter, French ambassador Marie-Annick Bourdin and Norwegian ambassador Sidsel Bleken.

  • Courtesy: The Daily Star/ June 05, 2013

পাহাড় কেটে রাস্তা বানাচ্ছে সিডিএ

  • কাটা হয়েছে ১০টি পাহাড়
  • আয়তনের হিসাবে ২৩ দশমিক



যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়নের নামে চট্টগ্রামে অন্তত ১০টি পাহাড় কেটে ফেলেছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সঙ্গে প্রায় ছয় কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের একটি সংযোগ সড়ক নির্মাণের জন্য প্রায় দুই বছর ধরে পাহাড় কাটছে সরকারি দপ্তরটি। সীতাকুণ্ডের ফৌজদারহাট থেকে নগরের শেরশাহ বাংলাবাজার পর্যন্ত এই পাহাড় কাটা চলছে।

পাহাড় কাটার দায়ে পরিবেশ অধিদপ্তর নামমাত্র ১০ লাখ টাকা জরিমানা করে তাদের দায়িত্ব শেষ করেছে। এরপরও পাহাড় কাটা থেমে নেই। কেটে ফেলা পাহাড়গুলোর উচ্চতা ২৫ থেকে ১৫০ ফুট পর্যন্ত। পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলের হিসাবে ইতিমধ্যে ২০ দশমিক ৬ একর পাহাড় কেটে ফেলা হয়েছে। এ ছাড়া নগরের অংশে প্রায় তিন একর পাহাড় কাটা হয়েছে।

নগরের শেরশাহ বাংলাবাজার থেকে এশিয়ান উইমেন ইউনিভার্সিটির পাশ দিয়ে নির্মাণাধীন সংযোগ সড়কটি ফৌজদারহাট বাইপাস এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সঙ্গে মিশবে। সংক্ষেপে এটি লুপ সড়ক নামে পরিচিত। এর প্রস্থ হবে ১২০ ফুট। দৈর্ঘ্য প্রায় ৬ (৫.৯৬০) কিলোমিটার। স্পেকট্রা ইন্টারন্যাশনাল নামের একটি প্রতিষ্ঠান প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে।

জানতে চাইলে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক অলক পাল বলেন, উন্নয়নকে বাদ দেওয়া যাবে না। তবে পরিবেশের দিকটিও দেখতে হবে। এভাবে নির্বিচারে পাহাড় কাটার কারণে দিন দিন পাহাড়শূন্য হয়ে পড়ছে চট্টগ্রাম। এতে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। তবে এত বড় বড় পাহাড় কেটে যে সড়কটি করা হচ্ছে, সে সড়কটিই তো পাহাড়ধসে বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। কারণ পাহাড়গুলো কাটা হয়েছে খাড়াভাবে।

প্রকল্পটির জন্য ২০১৬ সালের ১ আগস্ট সিডিএ পরিবেশগত ছাড়পত্রের জন্য আবেদন করে। কিন্তু ছাড়পত্র পাওয়ার আগেই তারা প্রকল্পটির কাজ শুরু করে দেয়। সিডিএর আবেদনটি পরিবেশ অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম কার্যালয় থেকে ঢাকায় মহাপরিচালক বরাবর পাঠানো হয়। মহাপরিচালকের দপ্তর থেকে এই প্রকল্প বাস্তবায়নে কতটা পাহাড় কাটা হতে পারে, তা জানতে চেয়ে চট্টগ্রাম কার্যালয়ে চিঠি পাঠানো হয়। পরে চট্টগ্রাম কার্যালয় থেকে পাহাড় কাটার সম্ভাব্য হিসাব দিয়ে ঢাকায় মহাপরিচালকের দপ্তরে প্রতিবেদন পাঠানো হয়।

তবে সর্বশেষ খবর অনুযায়ী, সিডিএর প্রকল্পটি এখনো পরিবেশগত ছাড়পত্র পায়নি। 

জানতে চাইলে পরিবেশ অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম অঞ্চলের পরিচালক মো. মকবুল হোসেন বলেন, সিডিএ পাহাড় কাটছে এটা সত্য। সড়ক নির্মাণের জন্য এই পাহাড় কাটা চলছে। তারা পরিবেশগত ছাড়পত্র এখনো পায়নি। তবে সেটা শিগগিরই পেয়ে যাবে। ঢাকায় আন্তমন্ত্রণালয়ে যোগাযোগের মাধ্যমে ছাড়পত্র দেওয়া হবে।

সরেজমিন চিত্র

গতকাল সোমবার সরেজমিনে দেখা গেছে, ফৌজদারহাট বাইপাস এলাকা হয়ে প্রকল্পটির শুরু। ওই অংশে ঢুকতেই দেখা যায় একের পর এক পাহাড় কেটে মাঝখান দিয়ে বিশাল সড়ক তৈরির কাজ চলছে। পাহাড় কাটা হয়েছে একেবারে খাড়াভাবে। কাটা পাহাড়ের পাশে বড় বড় বৈদ্যুতিক খুঁটি বসানো হচ্ছে। কয়েকটি স্থানে পাহাড়ি ছড়ার পানি যাওয়ার জন্য কালভার্ট নির্মাণ করা হচ্ছে। যত দূর যাওয়া যায়, সেখানে পাহাড় কাটার চিহ্ন দেখা যায়। রয়েছে খননযন্ত্রও।

স্থানীয় বাসিন্দা মো. এরশাদ বলেন, বেসরকারি কোনো প্রতিষ্ঠান পাহাড় কাটলে এতক্ষণে লঙ্কাকাণ্ড হয়ে যেত। সিডিএ কাটছে বলে কিছু বলছে না কেউ। তবে যেভাবে পাহাড় কেটে সড়ক করা হয়েছে, তাতে পাহাড়ধস হবে নিশ্চিত।

জানতে চাইলে পরিবেশ অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম অঞ্চলের পরিচালক মো. মকবুল হোসেন বলেন, ‘আমরা বলেছিলাম যদি সরকারি প্রতিষ্ঠান এভাবে পাহাড় কাটে, তাহলে বেসরকারিরা উৎসাহিত হবে।’

২০ একর পাহাড় সাবাড়

পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম অঞ্চল থেকে গত ১ জানুয়ারি সিডিএকে নোটিশ দেওয়া হয়। ওই নোটিশে বলা হয়, জঙ্গল সলিমপুর মৌজার বিএস ৩৫৭, ৩৫৮ ও ৩৫৯ দাগের প্রায় ২০ দশমিক ৬ একর পাহাড় কেটে ফেলা হয়েছে। এভাবে পাহাড় কাটার কারণে পরিবেশ ও প্রতিবেশগত ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে এলাকাটি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা বলেন, প্রায় ১০টি পাহাড় ইতিমধ্যে কেটে ফেলা হয়েছে। এক-একটি পাহাড় ২৫ ফুট থেকে দেড় শ ফুট উচ্চতার।

নামমাত্র জরিমানা

লুপ সড়কের প্রায় দুই কিলোমিটার পড়েছে চট্টগ্রাম নগরের শেরশাহ ও বাংলাবাজার এলাকায়। উত্তর পাহাড়তলী মৌজার প্রায় বিএস দাগ ৩০১, ২০০ ও ১৯৮ দাগের প্রায় দুই একর পাহাড় কেটে ফেলা হয়েছে। এই অংশটি তদারক করে পরিবেশ অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম মহানগর অঞ্চল। গত বছরের ৫ নভেম্বর মহানগর অঞ্চল ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান স্পেকট্রা ইন্টারন্যাশনালকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা করে।

তবে এই জরিমানা একেবারে নামমাত্র বলে অভিযোগ রয়েছে। পরিবেশ অধিদপ্তরের অফিস আদেশে বলা হয়, এক একর পর্যন্ত পাহাড় কাটার ক্ষেত্রে প্রতি বর্গফুট ৫০ থেকে সর্বোচ্চ এক হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা করা যাবে। এক একরের বেশি পাহাড় কাটা হলে প্রতি বর্গফুট এক হাজার টাকা থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা করার বিধান রয়েছে।

এ বিষয়ে অধিদপ্তরের মহানগরের পরিচালক আজাদুর রহমান মল্লিক বলেন, পাহাড় কাটার অনুমতি না নিয়ে তারা পাহাড় কাটছিল। তাই তাদের জরিমানা করা হয়। এরপর পাহাড় কাটার অনুমতির জন্য মন্ত্রণালয়ে দরখাস্ত করেছিল।

জানতে চাইলে সিডিএর নির্বাহী প্রকৌশলী ও প্রকল্প পরিচালক রাজীব দাশ বলেন, মন্ত্রণালয় থেকে ইতিমধ্যে পাহাড় কাটার অনুমতি সই হয়ে গেছে। হয়তো এখনো তা পরিবেশ অধিদপ্তরে এসে পৌঁছায়নি।

১৯৯৫ সালের চট্টগ্রাম নগর মহাপরিকল্পনায় এই সংযোগ সড়কটির উল্লেখ রয়েছে। এই সড়ক বাস্তবায়িত হলে রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও উত্তর চট্টগ্রামের যানবাহনগুলো শহরের বাইরে দিয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে উঠতে পারবে।

  • Courtesy: Prothom Alo /June 05, 2018

গরিব মানুষ বাড়ছে — উন্নয়নের গল্প আসলে ফাঁকা আওয়াজ!!!



(বিএনপি কমিউনিকেশন) — অবৈধ সরকার কর্তৃক অর্থনীতির সাজানো তথ্য ও উপাত্তের বানানো মারপ্যাঁচে দেশে প্রবৃদ্ধি ও মাথাপিছু আয় বেড়েছে দেখানো হলেও লাগামহীনভাবে বাড়ছে আয়বৈষম্য। সারাদেশেই সামগ্রীকভাবে দারিদ্র্য বেড়ে গেছে। পর্যাপ্ত কর্মসংস্থানের অভাবের কারনে দারিদ্র্যের তীব্রতা ফিরে এসেছে। এর প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়েছে উত্তরের জেলাগুলোতে। বার্ষিক প্রবৃদ্ধি ও মাথাপিছু আয়ই অর্থনৈতিক উন্নয়নের নির্দেশক নয়।দেশের সিংহভাগ সম্পদ পুঞ্জীভূত হচ্ছে একটি ক্ষুদ্র গোষ্ঠীর কাছে। 

দেশে সবচেয়ে গরিব মানুষ এখন কুড়িগ্রামে। এই জেলার প্রতি ১০০ জনের মধ্যে ৭১ জনই গরিব। এরপরই অবস্থান দিনাজপুরের। এই জেলায় দারিদ্র্যসীমার নিচে আছে ৬৪ শতাংশ মানুষ।

দারিদ্র্য বেশি, এমন ১০টি জেলার মধ্যে ৫টিই রংপুর বিভাগের। জেলাগুলো হলো কুড়িগ্রাম, রংপুর, দিনাজপুর, গাইবান্ধা ও লালমনিরহাট। সব মিলিয়ে উত্তরবঙ্গের একটি অংশে নতুন করে দারিদ্র্যের তীব্রতা ফিরে এসেছে। তালিকায় থাকা অন্য জেলাগুলো হলো বান্দরবান, খাগড়াছড়ি, জামালপুর, কিশোরগঞ্জ ও মাগুরা।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সূত্রে জানা গেছে, ২০১০ সালে রংপুর বিভাগে দারিদ্র্যের হার ছিল ৪২ দশমিক ৩ শতাংশ, ছয় বছর পর ২০১৬ সালে তা বেড়ে হয়েছে ৪৭ দশমিক ২ শতাংশ। 

দারিদ্র্যের হার দিনাজপুরে আগে ছিল ৩৮ শতাংশ, এখন হয়েছে ৬৪ শতাংশ।

কুড়িগ্রামে ৬৪ শতাংশ থেকে বেড়ে ৭১ শতাংশ হয়েছে। আর লালমনিরহাটে সাড়ে ৩৪ শতাংশ থেকে ৪২ শতাংশ হয়েছে। বিভাগের অন্য পাঁচটি জেলায় দারিদ্র্য পরিস্থিতির খুব বেশি উন্নতি হয়নি। দারিদ্র্যের হার এখন রংপুরে ৪৪ শতাংশ, গাইবান্ধায় ৪৭ শতাংশ, ঠাকুরগাঁওয়ে ২৩ দশমিক ৪ শতাংশ, পঞ্চগড়ে ২৬ দশমিক ৩ শতাংশ ও নীলফামারীতে ৩২ দশমিক ৩ শতাংশ।

বিবিএসের পরিসংখ্যান অনুযায়ী বগুড়া, নওগাঁ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায়ও দারিদ্র্য অনেক বেড়েছে। ছয় বছরের ব্যবধানে নওগাঁ জেলায় দারিদ্র্যের হার দ্বিগুণ হয়ে ৩২ শতাংশ পেরিয়ে গেছে।

সরকার প্রচার করছে দেশের মানুষের প্রকৃত আয় বেড়েছে। গরীবের সংখ্যা কমেছে। বাস্তবে চিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর ২০১৬ সালের এপ্রিল থেকে ২০১৭ সালের মার্চ সময়ে করা এক জরিপে বলা হয় দেশের দরিদ্র ৫ শতাংশ মানুষের আয় ২০১০ সালে ছিল মোট জাতীয় আয়ের ০.৭৮ শতাংশ। ২০১৬ সালে তা কমে দাঁড়িয়েছে ০.২৩ শতাংশ। বিপরীত দিকে ধনী ৫ শতাংশের আয় ২০১০ সালে জাতীয় আয়ের ছিল ২৪.৬১ শতাংশ যা ২০১৬ সালে দাঁড়ায় ২৭.৮৯ শতাংশে। একইভাবে ২০১০ সালের তুলনায় ২০১৬ সালে গরীব ১০ শতাংশ মানুষের আয় ২ শতাংশ থেকে কমে দাঁড়ায় ১.০১ শতাংশ আর ধনী ১০ শতাংশ মানুষের আয় বেড়ে দাঁড়ায় ৩৫.৩৪ শতাংশ থেকে ৩৮.১৬ শতাংশে। আরো উল্লেখ্য বাংলাদেশের পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য মতে শ্রমিক শ্রেণীর প্রকৃত আয় ২০১৬ সালে ২০১০ সালের তুলনায় হ্রাস  পায় ৭.৫৮ শতাংশ। 

বিবিএসের জাতীয় হিসেবে পরিসংখ্যান অনুযায়ী দেশের প্রকৃত জাতীয় আয় ২০০৯-২০১০ থেকে ২০১৫-১৬ পর্যন্ত বেড়েছে ৪২ শতাংশেরও বেশি এবং মাথাপিছু আয় বেড়েছে ৩১ শতাংশ। আয়ের এই বৃদ্ধির সঙ্গে একই হারে বেড়েছে প্রকৃত মাথাপিছু ভোগ। অথচ সম্পূর্ণ বিপরীতে এইচআইইএস ২০১৬ এর তথ্য অনুযায়ী পারিবারিক পর্যায়ে প্রতিটি ব্যক্তির প্রকৃত আয় কমেছে ২০১০ সালের তুলনায় ২ শতাংশ এবং ভোগের জন্য প্রত্যেকের প্রকৃত ব্যয় কমেছে ১ শতাংশ। অর্থাৎ ভাওতাবাজ সরকারের উন্নয়নের যাবতীয় চিত্রই একটা ভাওতাবাজী ও মিথ্যা পরিসংখ্যানের কারসাজি। 

মাদকবিরোধী অভিযান — মৃত্যুর ঘটনার পূর্ণ তদন্ত চেয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন



মাদকবিরোধী অভিযানে সন্দেহভাজন অপরাধী হিসেবে প্রত্যেকের মৃত্যুর ঘটনার পূর্ণ তদন্ত চেয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)।

ঢাকায় অবস্থানরত ইউরোপীয় ইউনিয়ন মিশনের প্রতিনিধিরা এক যুক্ত বিবৃতিতে সরকারের প্রতি এই আহ্বান জানিয়েছে।

ইউ’র হেড অব মিশন মিসেস ব্লেকেন প্রেরিত ওই বিবৃতিতে মাদকের অপব্যবহার এবং অবৈধ পাচারের ঘটনাকে বৈশ্বিক সমস্যা উল্লেখ করে বলা হয়, বাংলাদেশে মাদকের বিরুদ্ধে সাম্প্রতিক অভিযানে সর্বোচ্চ ক্ষয়ক্ষতি এবং অতিরিক্ত বলপ্রয়োগে ৪ মে পর্যন্ত ১২০ জনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশ আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বাংলাদেশ এটাও নিশ্চিত করেছে যে, সব ধরনের আইন প্রয়োগের কাজটি আইনি দৃষ্টিকোণ থেকে সম্পন্ন করা হয়েছে, যাতে আন্তর্জাতিক মান ও নীতি অনুসৃত হয়েছে এবং এতে শক্তির ব্যবহারে যথাযথ আইনি নিরাপত্তা বিধান করা হয়েছে। তাই আমরা আশা করি, যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে কর্তৃপক্ষ সন্দেহভাজন অপরাধীদের মৃত্যুর ঘটনার সব ঘটনা পূর্ণ তদন্ত করবে।

বিবৃতিদাতারা হলেন, ইইউ প্রতিনিধিদলের রাষ্ট্রদূত রেসজি তিরিঙ্ক, ইতালির রাষ্ট্রদূত মারিও পালমা, জার্মানির রাষ্ট্রদূত ড. থমাস হেনরিখ প্রিনজ, নেদারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত লিওনি চুয়েলেন্যায়েরে, ব্রিটিশ হাইকমিশনার অ্যালিসন ব্লেক, ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত মিকাইল হেমনিতি উইনথার, স্পেনের রাষ্ট্রদূত ডি আলভারো দো সালাস জিমেনেজ দো আঝারাতে, সুইডেনের রাষ্ট্রদূত চারলোতা স্কিলিটার এবং ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত মিসেস ম্যারি-অ্যানিক বুরিডিন।


ঈদকে সামনে রেখে ক্ষমতাসীনদের টার্গেট ৩শ’কোটি টাকার চাঁদা!




ফুটপাত থেকে প্রতি এক  হাজার চাঁদার টাকা থেকে ২শ’ টাকা। পুলিশ নেয় ৫শ’, ক্ষমতাসীন দলের নেতারা পান ৩শ’ টাকা। প্রতিরাতে থানার ক্যাশিয়ার এসে ভাগের টাকা নিয়ে যায়। আর থানা ও ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতাদের টাকা পাঠিয়ে দেয়া হয়। 

ঈদকে সামনে রেখে দখল হয়ে গেছে রাজধানীর ফুটপাত ও রাস্তা। পুলিশ ও ঢাকার দুই সিটি বেপরোয়া হয়ে উঠেছে ফুটপাতের চাঁদাবাজরা। ক্ষমতাসীনদের ছত্রছায়ায় এবার ৩শ’ কোটি টাকা চাঁদাবাজির টার্গেট নিয়ে রাজধানীজুড়ে সক্রিয় কমপক্ষে ৭০টি গ্রুপ। সংঘবদ্ধ চাঁদাবাজচক্রের হয়ে মাঠে তৎপর ৫ শতাধিক লাইনম্যান। এরা ক্ষমতাসীনদের মদদে পুলিশকে ম্যানেজ করে ফুটপাত ও রাস্তা দখল করে হকার বসিয়ে কোটি কোটি টাকা চাঁদা আদায় করছে। এ চাঁদাবাজিতে পিছিয়ে নেই মাঠপর্যায়ের কতিপয় পুলিশ-আনসার সদস্যসহ বিভিন্ন মার্কেটের ব্যবসায়ী সমিতির নেতারাও। 

রমজানের শুরুতেই দখল হয়ে গেছে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ ও ব্যস্ততম এলাকার ফুটপাত ও রাস্তা। চাঁদাবাজচক্র বিভিন্ন এলাকার ফুটপাত, সরকারি খাস জমি ও মালিকানা জমিতে নতুন নতুন দোকান বসিয়ে মোটা অংকের চাঁদা তুলছে। 

অনুসন্ধানে জানা গেছে, রাজধানীর উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের অধীনে ফুটপাত দখলকারী গ্রুপ আছে কমপক্ষে ৭০টি। সংশ্লিষ্ট এলাকার ক্ষমতাসীন দলের কতিপয় রাজনৈতিক নেতা, প্রভাবশালী ব্যক্তি ও তালিকাভূক্ত সন্ত্রাসীরাই এই গ্রুপের সদস্য। এদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে ৫ শতাধিক লাইনম্যান নামধারী চাঁদাবাজ। এরাই ফুটপাত ও রাস্তা দখল করে হকারদের কাছে ভাড়া দিয়ে থাকে। ভাড়ার আড়ালে পুলিশ ও রাজনৈতিক নেতার নামে আদায় করা হয় মোটা অংকের টাকা। ফুটপাতের হকাররা জানান, রমজান শুরু থেকেই সংঘবদ্ধ চাঁদাবাজরা চাঁদার পরিমাণ বাড়িয়েছে কয়েকগুণ। কয়েকটি এলাকায় সন্ত্রাসীদের নামেও চাঁদা চাওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, চাঁদাবাজরা এলাকা ভেদে ২শ’ থেকে ৩শ’ দোকানের একটি অংশকে নাম দিয়েছে ‘ফুট’। চক্রাকারে ফুটের হকারদের কাছ থেকে দৈনিক ভিত্তিতে চাঁদার টাকা নিচ্ছে চাঁদাবাজ গ্রুপের নিয়োজিত লাইনম্যানরা। তাদের কাছ থেকে টাকা বুঝে নিচ্ছেন প্রশাসনের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তার মনোনীত সর্দার। লাইনম্যানের উত্তোলিত টাকার সিংহভাগই যাচ্ছে সংশ্লিষ্ট এলাকার স্থানীয় কতিপয় রাজনৈতিক নেতাকর্মী ও মাস্তান বাহিনীর পকেটে। ফুটপাতের দোকানগুলোতে অবৈধভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়ার সঙ্গে জড়িত বিদ্যুৎ বিভাগের কতিপয় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পকেটেও যাচ্ছে লাইনম্যান ও সর্দারের উত্তোলিত টাকার একটি অংশ। রাজধানীর গুলিস্তান এলাকার কয়েকজন হকার জানান, লাইনম্যানদের দৈনিক ভিত্তিতে চাঁদা পরিশোধ করে দোকান চালাতে হয়। চাঁদার রেট কম হলেই উচ্ছেদসহ বিভিন্ন হুমকি দেয়া হয়। ভেঙে দেয়া হয় দোকানপাট।

জানা গেছে, শুধু ফুটপাতের চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণ করছে এমন গডফাদার রয়েছে ৭০ জন। এর মধ্যে গুলিস্তানে ৪, মতিঝিলে ৩, সদরঘাটে ৩, নিউ মার্কেটে ৫, ফার্মগেটে ৩, মিরপুর-১ নম্বরে ২, মিরপুর-১০ নম্বরে ২, উত্তরায় ২, বাড্ডায় ২, কুড়িলে ২, কামরাঙ্গীরচরে ১৯, লালবাগ বেড়িবাঁধে ৭, বংশাল-কোতোয়ালীতে ৬ জন রয়েছে। অন্যরা রয়েছে বিভিন্ন এলাকায়। এই ৭০জন গডফাদারের অধীনে ৭০টি চাঁদাবাজ গ্রুপের নিয়োজিত ৫ শতাধিক লাইনম্যান সারা বছরই ফুটপাতে চাঁদাবাজি করে থাকে। 

অনুসন্ধানে জানা গেছে, ঢাকা নিউ মার্কেটের ৩ নং গেট সংলগ্ন নিউ সুপার মার্কেটের দোতলায় রয়েছে ঢাকা নিউ সুপার মার্কেট (দক্ষিণ) বণিক সমিতির অফিস। এর সামনেই মার্কেটের আলোবাতাস প্রবেশে গ্রিলঘেরা খোলা জায়গা। কিন্তু সমিতির কতিপয় অসাধু নেতা মার্কেটের সবক’টি প্রবেশপথ, খোলা জায়গা ও সিঁড়িকোঠাসহ খালি জায়গায় দোকান বসিয়ে ভাড়া দিয়েছে। দেড়শতাধিক দোকান থেকে অফেরতযোগ্য এককালীন ঘোষণায় দোকানপ্রতি নগদ ২ লাখ টাকা আদায়সহ প্রতিমাসে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা করে নিয়মিত ভাড়া তুলছে সমিতির দুই নেতা। মার্কেটের বিভিন্ন স্পটে গাড়িপার্কিং থেকেও ডিএসসিসি’র বিধি উপেক্ষা করে ওই দুই নেতা নিয়মিত চাঁদা আদায় করছে বলে অভিযোগ রয়েছে। 

ধানমন্ডি হকার্স মার্কেটের এক ব্যবসায়ী জানান, মিরপুর রোডের ধানমন্ডি ও নিউ মার্কেট অংশে ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের কিছু ক্যাডার ফুটপাথসহ মার্কেটের ফাঁকা জায়গায় দোকান বসিয়ে নিয়মিত চাঁদা তোলে। হকাররা জানান, ঈদকে সামনে রেখে ছাত্রনামধারী এসব ক্যাডাররা আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। গুলিস্তান হকার্স, গাউছিয়া, নিউ মার্কেট, নীলক্ষেত, খিলগাঁও তালতলা, মিরপুর শাহ আলী, ১ নম্বর, গুলশান-১ ও ২, মিরপুরের মুক্তিযোদ্ধা সুপার, মুক্তবাংলা, উত্তরা ও পুরান ঢাকার ফুটপাত ব্যবসায়ীরাও একই রকম তথ্য জানান। 

অন্যদিকে, কামরাঙ্গীরচর রসুলপুর ব্রিজ মার্কেটের দু’টি ব্যক্তিমালিকানা জমিতে অনুমোদন ছাড়াই জবর দখল করে ঈদ বাণিজ্য মেলার নামে প্রায় ৬০টি দোকান বসিয়ে ভাড়া দিয়েছে স্থানীয় ক্ষমতাসীন দলের নেতা পরিচয়দানকারী মাউচ্ছা দেলু, জাবেদুল ইসলাম জাবেদ ওরফে সমিতি জাবেদ, মফিজ, খোকন, কামাল, অহিদুল, বাবু, হানিফ, সিদ্দিক, বাদশা, মঞ্জু, ফিরোজ, সুমন, মাসুদ, মামুন, মুসা, শাকিল, মনির ও সিরাজ তালুকদার। ইতোমধ্যেই দোকান প্রতি ৫ লাখ টাকা করে আদায় করেছে মৌসুমী এসব চাঁদাবাজচক্র। লালবাগের নবাবগঞ্জ বেড়িবাঁধে মঙ্গলবার হলিডে মার্কেটের অন্তত ২ হাজার ফুট দোকান থেকে দোকানপ্রতি গড়ে আড়াইশ’ টাকা করে প্রতি সপ্তাহে ৫ লাখ টাকা চাঁদা তোলে ক্ষমতাসীন দলের নেতা পরিচয়দানকারী হাফেজ সুমন, জাকির, শাহীন ওরফে অটোশাহীন, বারেক, সেলিম, বিপ্লব ও মোখলেস।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভুক্তভোগী কয়েকজন হকার জানান, নগরীর বিভিন্ন এলাকার ফুটপাত থেকে শীর্ষ সন্ত্রাসীদের নামেও চাঁদা তোলা হচ্ছে। খিলগাঁওয়ের জিসান, মিরপুরের শাহাদাত ও লিটু, কারওয়ান বাজারের আশিক, কল্যাণপুরের বিকাশ-প্রকাশ, বাড্ডার মেহেদী, মগবাজারের রনি, আদাবরের নবী, মোহাম্মদপুরের কালা মনির, শাহ আলীর গাজী সুমন, পল্লবীর মোক্তার, কাফরুলের শাহীন সিকদার, যাত্রাবাড়ীতে ইটালি নাসির, জুরাইনের কচির নাম ব্যবহার করছে চাঁদাবাজ চক্র। বাড্ডা এলাকায় ডালিম, রবিন, ভাগ্নে ফারুক, আরিফ, মান্নান, রমজান, দুলাল, মানিক, শিপলু, রায়হান, রুবেল, রিয়াদ, রামপুরায় কালা পলাশ ও মুরাদ, গুলশান-বনানীতে টিপু, মহাখালীতে অপু, মিলন ও জামাই মুকুল, সাততলা বস্তিতে মনির ও লম্বু সেলিম, খিলগাঁওয়ে খালেদ ও মানিক, যাত্রাবাড়ী-সায়েদাবাদে জাহাঙ্গীর, হাজারীবাগে বুলু, লিংকন, তপু, জনি, রফিক, বিল্লু ও মুন্না, কলাবাগানে নাজিম বাবু ও ইমন, মোহাম্মদপুরে গালকাটা মোশারফ, লম্বা মোশারফ, চিকা জসিম, আহম্মদ, সাজ্জাদ, মোহন, পাভেল, লোটন, চায়নিজ তানভীর, রবিন, আদিত, মীম, খলিল ও হাজী আক্কাস এবং শাহ আলীতে বল্টু রাসেল, মিরপুর ১০ ও ১১ নম্বরে কালাচান ও কিলার বুলবুল চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণ করছে।

জানা গেছে, ফুটপাত-রাস্তায় অবৈধভাবে দোকান বসিয়ে চাঁদাবাজি করার অভিযোগে গত বছরের ফেব্রæয়ারিতে মতিঝিল, পল্টন ও শাহবাগ থানায় ৭২ চাঁদাবাজের বিরুদ্ধে ৩টি মামলা করেন ডিএসসিসি সহকারী সম্পত্তি কর্মকর্তা মুহাম্মদ সামছুল আলম। মতিঝিল থানার মামলায় গত বছরের ১০ জুলাই দু’জনকে অব্যাহতি দিয়ে ১৫ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দিয়েছে পুলিশ। ৪ আসামীকে পুলিশ গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করলেও তারা সবাই এখন জামিনে রয়েছে। ওই মামলার প্রধান আসামি সাইফুল ইসলাম মোল্লা ফুটপাতে এখনো বহাল তবিয়তে। মতিঝিল আইডিয়াল স্কুলের পাশের মার্কেটে চাঁদা আদায় করছে তার সহযোগী শিবলু ও শাহজাহান মৃধা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বায়তুল মোকাররম জিপিও লিংক রোডে হলিডে মার্কেটে খোকন মজুমদার, আবুল হাসেম, মজিবর, পোটল, নসু, হারুন অর রশীদ ও তার সহযোগীরা, উত্তরগেট এলাকায় দুম্বা রহিম, সাজু চাঁদা তুলছে। শাপলা চত্বরে আরিফ চৌধুরী, পল্টনে দুলাল মিয়া ও তার সহযোগী, গুলিস্তান আহাদ পুলিশ বক্স ও রাস্তায় আমিন মিয়া, সাহিদ ও লম্বা হারুন, জুতাপট্টিতে সালেক, গোলাপশাহ মাজারের পূর্ব-দক্ষিণ অংশে ঘাউড়া বাবুল ও শাহীন টাকা তুলছে।

ওসমানী উদ্যানের পূর্ব ও উত্তর অংশে লম্বা শাজাহান, গুলিস্তান খদ্দর মার্কেটের পশ্চিমে কাদের ও উত্তরে হান্নান, পূর্বে সালাম, আক্তার ও জাহাঙ্গীর, গুলিস্তান হল মার্কেটের সামনের রাস্তায় লাইনম্যান সর্দার বাবুল, সুন্দরবন স্কয়ার মার্কেটের উত্তর পাশের রাস্তায় জজ মিয়া, পূর্ব পাশের রাস্তায় সেলিম মিয়া, মওলানা ভাসানী স্টেডিয়ামে মো. আলী, আবদুল গফুর ও বাবুল ভুঁইয়া, শাহবাগে ফজর আলী, আকাশ, কালাম ও নুর ইসলাম, যাত্রাবাড়ীতে সোনামিয়া, তোরাব আলী, মান্নানের নেতৃত্বে চাঁদা তোলা হচ্ছে। জুরাইন-পোস্তগোলায় বিক্রমপুর প্লাজা থেকে সেতু মার্কেটের সামনের ফুটপাত থেকে চাঁদা তুলছে আলমগীর শরীফ ও মোশারফ হোসেন। এদের চাঁদার টাকার বড় অংশ যাচ্ছে স্থানীয় এমপির এক ঘনিষ্ঠজনের পকেটে। মিরপুরে-১-এ ছোট জুয়েল, আলী, বাদশা ও মিজান, মিরপর-১১ এ আবদুল ওয়াদুদ, শফিক ও হানিফ, গুলশানে হাকিম আলী, কুড়িলে আবদুর রহীম ও নুরুল আমিন, এয়ারপোর্টে আকতার, মনির, ইব্রাহিম, জামাল ও বাবুল, উত্তরায় টিপু, নাসির ও হামিদ চাঁদার টাকা তোলে। 

গুলিস্তানের এক লাইনম্যান জানান, ফুটপাত থেকে এক হাজার টাকা তুললে তাকে দেয়া হয় ২শ’ টাকা। পুলিশ নেয় ৫শ’, ক্ষমতাসীন দলের নেতারা পান ৩শ’ টাকা। প্রতিরাতে থানার ক্যাশিয়ার এসে ভাগের টাকা নিয়ে যায়। আর থানা ও ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতাদের টাকা পাঠিয়ে দেয়া হয়। 

বাংলাদেশ হকার্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি এম এ কাশেম জানান, রাজধানীতে ১ লাখ ১০ হাজারের মতো হকার রয়েছে। ফুটপাতের দোকানের পজেশন ও পরিধি বুঝে প্রতিদিন দোকান প্রতি ১শ’ থেকে ৫শ’ টাকা পর্যন্ত চাঁদা দিতে হয়। রমজান শুরুর পর কয়েকদিনের মধ্যেই ধাপে ধাপে এ চাঁদার পরিমান দ্বিগুণ হয়ে গেছে। ২০ রমজানের পর থেকে চাঁদরাত পর্যন্ত চাঁদাবাজির এমন অরাজকতা চলবে। চাহিদার টাকা বুঝে পেয়ে চাঁদাবাজরা নানা কৌশলে প্রতিদিনই তাদের মনমতো মৌসুমী হকারও বসাচ্ছে। কেউ প্রতিবাদ করতে গেলেই বাধে বিপত্তি। এভাবে সংঘবদ্ধ চাঁদাবাজ চক্রগুলো কেবল রমজান মাসজুড়ে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে হাতিয়ে নিবে কমপক্ষে ৩শ’ কোটি টাকা।  

  • তথ্যসূত্র — ইনকিলাব/জুন ৪, ২০১৮। লিঙ্ক — https://bit.ly/2JtKT0o 


Monday, June 4, 2018

বিনিয়োগের টাকা নেই


ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান মিলিয়ে দেশে বিনিয়োগ ও ব্যবসায়ে ঋণদানকারী প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৮০। অনেকে মনে করেন, দেশের অর্থনীতির চাহিদার তুলনায় সংখ্যাটি বেশি। কিন্তু ব্যবসায়ীরা বলছেন, তাঁদের ঋণচাহিদা পূরণ হচ্ছে না। তাঁদের মতে, বিনিয়োগের জন্য দীর্ঘমেয়াদি ও স্বল্প সুদে ঋণ দরকার। এর জন্য কার্যকর কোনো উৎস দেশে নেই।

এমনিতে দেশের শিল্প খাতে অর্থায়নের মূল উৎস ব্যাংক খাত একের পর এক ঋণ কেলেঙ্কারিতে বিপর্যস্ত। খেলাপি ঋণ এখন ১ লাখ কোটি টাকা ছুঁই-ছুঁই। আরও ৪৫ হাজার কোটি টাকা হিসাবের খাতা থেকে বাদ বা অবলোপন করা হয়েছে। এতে একদিকে মূলধন ঘাটতি বাড়ছে, অন্যদিকে ব্যাংকগুলো চড়া সুদ আদায় করছে। ব্যাংক প্রতিষ্ঠায় রাজনৈতিক লাইসেন্স প্রদান, ঋণ আদায় করতে না পারা এবং একের পর এক জোর করে মালিকানা পরিবর্তনে পুরো ব্যাংক খাতই সংকটে পড়ে আছে। এর মধ্যেই ব্যাংকগুলোর আমানত সংগ্রহের চেয়ে ঋণ বিতরণ হয়ে গেছে বেশি।

অর্থায়নের আরেক উৎস পুঁজিবাজার চলে গুজব ও কারসাজির ওপর ভিত্তি করে। বন্ধ ও মুনাফা না দেওয়া কোম্পানির নিম্নমানের শেয়ারের দরই বেশি বাড়ে। আর্থিক প্রতিবেদনের ওপর শেয়ারধারীরা আস্থা রাখতে পারেন না। কিছুদিন পরপরই শেয়ারবাজারের সূচক পড়তে থাকে এবং হস্তক্ষেপ করে সাময়িকভাবে পতন ঠেকাতে হয়।

এ পরিস্থিতিতে ব্যবসায়ীরা ভবিষ্যতে শিল্পে বাড়তি অর্থায়ন নিশ্চিত করতে দুটি বিকল্প চান। এ জন্য আগামী ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেটে পদক্ষেপ চেয়েছেন। একটি হলো বেসরকারি খাতের জন্য বাজারে বন্ড ছেড়ে প্রকল্পের জন্য সরাসরি ঋণ নেওয়ার সুযোগ সহজ ও আকর্ষণীয় করা। অন্যটি সরকারের লাইসেন্স পাওয়া প্রকল্পগুলোকে পুঁজিবাজার থেকে তহবিল নেওয়ার সুযোগ তৈরি করে দেওয়া। এ ক্ষেত্রে পরপর তিন বছর কোম্পানি মুনাফায় থাকার যে বাধ্যবাধকতা আছে, তা শিথিল করা।

সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় ২০১৯-২০ অর্থবছর নাগাদ দেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) অনুপাতে বিনিয়োগের হার ৩৪ দশমিক ৪ শতাংশে উন্নীত করার লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে। বর্তমানে এ হার ৩১ দশমিক ৪৭ শতাংশ। যদিও বেসরকারি বিনিয়োগ তেমন একটা বাড়েনি, বেড়েছে সরকারি বিনিয়োগ। কয়েক বছর ধরে বেসরকারি বিনিয়োগ জিডিপির অনুপাতে ২৩ শতাংশের ঘরে রয়ে গেছে। চলতি বাজারমূল্যে দেশের জিডিপির আকার এখন ২২ লাখ ৩৮ হাজার কোটি টাকা। এর অনুপাতে বিনিয়োগ ১ শতাংশ বাড়াতে হলে বাড়তি ২২ হাজার ৩৮৫ কোটি টাকা দরকার। পাশাপাশি নতুন নতুন বড় প্রকল্প আসছে, যেগুলোয় দীর্ঘমেয়াদি বড় অঙ্কের ঋণের চাহিদা তৈরি হচ্ছে।

অবশ্য শুধু অর্থায়ন বিনিয়োগের ক্ষেত্রে একমাত্র সমস্যা নয়। ডুয়িং বিজনেস সূচকে বাংলাদেশে সার্বিক অবস্থান ১৮৯টি দেশের মধ্যে ১৭৭তম। গত বছরও এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এক ধাপ পিছিয়েছে। ব্যবসা শুরু করা, নির্মাণকাজের অনুমতি, জমির নিবন্ধন, গ্যাস-বিদ্যুৎসংযোগ, কর দেওয়া ও চুক্তি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থান তলানির দিকে। বিনিয়োগের জন্য দেশে জমির সমস্যা সমাধানে সরকার অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করছে। সেগুলো বিনিয়োগ উপযোগী হতে সময় লাগবে। গ্যাস সমস্যা সমাধানের জন্য তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানি শুরু হয়েছে। কিন্তু গ্যাসের দাম ব্যাপকভাবে বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে ব্যবসায়ীদের মধ্যে। বিদ্যুতের দামও অনেক বেড়েছে। ভবিষ্যতে তা আরও বাড়বে বলে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে।

নতুন করে তৈরি হয়েছে উদ্যোক্তা-সংকট। বড় কিছু প্রতিষ্ঠানের বাইরে ছোট প্রতিষ্ঠান বা নতুনদের জন্য বিনিয়োগ করা কঠিন। চলতি বছর নির্বাচন হবে, সেটি নিয়ে রাজনৈতিক অনিশ্চয়তাও রয়ে গেছে। সাধারণত অনিশ্চয়তা থাকলে বিনিয়োগ কাঙ্ক্ষিত হারে হয় না।

ব্যাংকে টাকার টান

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, দেশের ব্যাংকগুলোয় যে পরিমাণ আমানত আসছে, তার দ্বিগুণ ঋণ হিসাবে যাচ্ছে। চলতি অর্থবছরের নয় মাসে (জুলাই-মার্চ) ৯৬ হাজার ৯৬৭ কোটি টাকার ঋণ বিতরণ হয়েছে। একই সময় আমানত বেড়েছে ৪৭ হাজার ৩৯৬ কোটি টাকা। এ ঋণের বড় অংশই গেছে বিভিন্ন প্রকল্পে ঠিকাদারদের কাছে। উৎপাদনশীল খাতে ঋণ ততটা বাড়েনি।

ভবিষ্যতে বড় বড় প্রকল্পে বেসরকারি খাতে বাড়তি ঋণচাহিদা তৈরি হবে। ব্যাংকগুলো কি সেই অর্থায়নে প্রস্তুত? জানতে চাইলে ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) চেয়ারম্যান সৈয়দ মাহবুবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ব্যাংকগুলো সাধারণত পাঁচ থেকে ছয় বছরের জন্য প্রকল্প অর্থায়ন করে থাকে। কেউ কেউ ১০ বছরের জন্যও দেয়। তবে দেশের অর্থনীতি বড় হচ্ছে, ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চলের মতো বড় কার্যক্রম নেওয়া হচ্ছে। এসব ক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের সুযোগ ব্যাংকের নেই।

বড় প্রকল্পে ঋণের সক্ষমতা নেই


দেশের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে তার পরিশোধিত মূলধনের সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ পর্যন্ত ঋণ দিতে পারে। ফলে অনেক ব্যাংকই একজন গ্রাহককে ৭০০-৮০০ কোটি টাকার বেশি ঋণ দিতে পারে না। অন্যদিকে বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলো ঋণ পেতে হিমশিম খাচ্ছে। কারণ একটি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করতেই ৫-৬ বছর চলে যায়। মুনাফা আসে আরও পর থেকে। অথচ বাণিজ্যিক ব্যাংক দুই বছরের গ্রেস পিরিয়ড বা পরিশোধের বিরতি দিয়ে তৃতীয় বছর থেকেই টাকা ফেরত চায়। তবে বড় ও দীর্ঘমেয়াদি ঋণ দিতে পারে আর্থিক প্রতিষ্ঠান। কিন্তু সেখানে সুদের হার অনেক বেশি। এখন তা ১৫-১৮ শতাংশ।

চাপ তৈরি করছে বিদেশি ঋণ

দেশের উদ্যোক্তাদের কাছে এখন আকর্ষণীয় হলো বিদেশি ঋণ। কারণ, বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো দেশি কোম্পানিকে যে সুদহারে ঋণ দেয়, তা দেশীয় উৎসের চেয়ে অনেক কম। গত পাঁচ বছরে বেসরকারি খাতে মোট বিদেশি বাণিজ্যিক ঋণ এসেছে ৭৭৬ কোটি ডলারের। আর ২০১৭ সালেই বিদেশি ঋণ এসেছে ১৪৯ কোটি ডলার।

সাম্প্রতিককালে দেশে আমদানি অনেক বেড়ে গেছে। রপ্তানি ও প্রবাসী আয়ের প্রবৃদ্ধি সে তুলনায় কম। এর মধ্যে আবার বিদেশি ঋণের কিস্তি শোধ বৈদেশিক মুদ্রার মজুতের ওপর চাপ বাড়াচ্ছে। এ জন্য বিদেশি ঋণ নিরুৎসাহিত করার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশ্লেষকেরা।

বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের মুখ্য অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন বিনিয়োগ পরিস্থিতি নিয়ে প্রথম আলোকে বলেন, শিল্পায়নের প্রথম পর্যায়ে বিনিয়োগ ব্যাংকের ঋণের মাধ্যমেই হয়। কিন্তু ভবিষ্যতে এটি একটি বড় বাধা হিসেবে তৈরি হবে। স্বল্পমেয়াদি ঋণ নিয়ে দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ আর কত দিন—এ প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, শিল্পায়িত দেশগুলোয় পুঁজিবাজার অনেক গভীর। উদ্যোক্তারা সেখান থেকেই মূলধন সংগ্রহ করে। আবার বেসরকারি খাত বন্ড থেকে অর্থ সংগ্রহ করে। সেখানে বন্ড কেনাবেচা হয়। ফলে বিনিয়োগ করলে টাকা আটকে যায় না। বাংলাদেশে বন্ডবাজার গড়ে ওঠেনি। সঞ্চয়পত্রের মতো ঝুঁকিহীন উচ্চ সুদের বিনিয়োগব্যবস্থা থাকলে দীর্ঘ মেয়াদে শিল্পে বিনিয়োগের আর্থিক বাজার গড়ে উঠবে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

  • Courtesy: Prothom Alo/ June 04, 2018

নষ্ট রাজনীতির শিকার ব্যাংকিং খাত

  • আমদানির আড়ালে অর্থ পাচার হচ্ছে 
  • দুষ্টচক্রের ভেতরে ঢুকেছে বৈদেশিক বাণিজ্য
  • দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে অর্থনীতির চিত্র হবে বিকৃত




সাম্প্রতিক সময়ে অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে দেশের আমদানি ব্যয়, যা বিনিয়োগ ও অর্থনীতির অন্যান্য সূচকের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। এর বড় কারণ হল, নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশের বাইরে অর্থ পাচার হচ্ছে।

আমদানির নামে মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে দেশের বাইরে টাকা নিচ্ছে একটি চক্র। অর্থাৎ দেশের বৈদেশিক বাণিজ্যের খাত একটি দুষ্টচক্রের ভেতরে ঢুকে গেছে। আর বিষয়টি এখনই নিয়ন্ত্রণ না করলে আগামী দিনে অর্থনীতির বিকৃত চিত্র দেখা যাবে।

বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সামষ্টিক অর্থনীতির বিশ্লেষণে এসব তথ্য উঠেছে। রোববার রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টারে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে প্রতিষ্ঠানটি।

সিপিডি মনে করছে, দেশের ব্যাংকিং খাত নষ্ট রাজনীতির শিকার। এক্ষেত্রে যাদের সুরক্ষা দেয়ার দায়িত্ব, সেই বাংলাদেশ ব্যাংক ও অর্থ মন্ত্রণালয় আমানতদারিদের পরিবর্তে নষ্ট ও ভ্রষ্ট লোকের স্বার্থ রক্ষা করছে। ফলে একটি স্বাধীন কমিশন গঠন করে ব্যাংকের প্রকৃত অবস্থা মূল্যায়ন করে সমস্যা সমাধানের সুপারিশ করেছে প্রতিষ্ঠানটি। অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন সিপিডির ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, ড. মোস্তাফিজুর রহমান এবং নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন।

ড. দেবপ্রিয় বলেন, এ মুহূর্তে দেশের আয়-ব্যয়ের ক্ষেত্রে যতটুকু সমস্যা, তার চেয়ে বহির্বিশ্বের সঙ্গে লেনদেনে অনেক বেশি সমস্যা রয়েছে। যদিও বাংলাদেশের আয় ও ব্যয় এখনও প্রতিযোগী দেশগুলোর তুলনায় অনেক কম। এরপরও বাজেট ঘাটতি নিয়ন্ত্রণের মধ্যে থাকছে। কিন্তু বৈদেশিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে সামগ্রিক ঘাটতি যেমন বেড়েছে, একইভাবে বৈদেশিক লেনদেনের চলতি হিসাবে ঘাটতি বাড়ছে। বর্তমানে এটি আশঙ্কাজনক অবস্থায় চলে গেছে। তিনি বলেন, গত বছরের তুলনায় রফতানি, রেমিটেন্স ও বৈদেশিক সাহায্য তিনটিই বেড়েছে। এরপরও চলতি হিসাবে ঘাটতি বৃদ্ধি অস্বাভাবিক। এর বড় কারণ হল দেশের আমদানি ব্যয় অনেক বেশি বেড়েছে।

দেবপ্রিয় বলেন, গত বছরের তুলনায় রফতানি বেড়েছে ১৭ দশমিক ৭ এবং রেমিটেন্স বেড়েছে ৬ দশমিক ৪ শতাংশ। একই সময়ে আমদানি বেড়েছে ২৪ দশমিক ৫ শতাংশ। তিনি বলেন, বিভিন্ন তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে আমাদের দৃঢ়বিশ্বাস, আমদানির আড়ালে বিদেশে টাকা পাচার হচ্ছে। এক্ষেত্রে আমদানির নামে বিভিন্ন ধরনের মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে বিদেশে টাকা নেয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, সিপিডির পক্ষ থেকে বারবার বলা হচ্ছে, যে কোনো নির্বাচনী বছরে এ টাকা পাচারের প্রবণতা বাড়ে। এর মানে হল, একটি দুষ্টচক্রের ভেতরে বৈদেশিক খাত ঢুকে গেছে।

তিনি আরও বলেন, এ আমদানি নিয়ন্ত্রণ ও পর্যবেক্ষণ না করলে অর্থনীতি সম্পর্কে বিকৃত চিত্র দাঁড়াবে, চলতি হিসাবের ঘাটতি বাড়তে থাকবে। ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমতে থাকবে। সাময়িকভাবে এতে রফতানিকারকরা একটু খুশি হলেও অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। এতে মূল্যস্ফীতি আরও বাড়বে, যা শ্রমের মজুরি নির্ধারণের ক্ষেত্রেও চাপ সৃষ্টি করবে। অবধারিতভাবে বাড়বে ব্যাংক ঋণের সুদের হার, যা শিল্পায়নে প্রভাব ফেলবে।

সিপিডির ফেলো বলেন, এর সঙ্গে আরেকটি দুশ্চিন্তার কারণ হল অবকাঠামো খাতে যে হারে ঋণ নেয়া হচ্ছে, বর্তমানে তা নিয়ন্ত্রণে আছে। কিন্তু ভবিষ্যতে তা থাকবে না। এর আগে বিষয়টি সিপিডি গবেষণা করেছে।

সেখানে শ্রীলংকা এবং আফ্রিকার বিভিন্ন দেশের উদাহরণ দিয়ে দেখানো হয়েছে, ঋণ নিয়ে বড় বড় অবকাঠামো করার পর কীভাবে দায় দেনা পরিশোধের কারণে অর্থনীতির স্থিতিশীলতা নষ্ট হয়েছে। ফলে কেউ অর্থনীতি নিয়ে প্রশ্ন করলে এককথায় এভাবে উত্তর দিই, দেশের আর্থিক খাত নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে, কিন্তু অনিয়ন্ত্রিত আমদানির কারণে বৈদেশিক লেনদেন পরিস্থিতি নিয়ে আতঙ্ক আছে। ফলে দেশের আমদানি পরিস্থিতি তীক্ষ্ণ পর্যবেক্ষণ জরুরি।

প্রয়োজনে বাজেটকে সামনে রেখে সাময়িকভাবে বিলাসবহুল পণ্য থেকে শুরু করে যেসব পণ্যে টাকা পাচারের আশঙ্কা বেশি, সেগুলোকে নিয়ন্ত্রণের মধ্যে নিয়ে আসতে হবে। বিশেষ করে শূন্য শুল্কে যেসব পণ্য আমদানি করা হয়, সেগুলো বিশেষ নজরদারি করা দরকার।

তিনি বলেন, অর্থনীতিতে আরেকটি সমস্যা হল ব্যাংকিং খাতে সুশাসনের অভাব। এ সমস্যায় হাত না দিয়ে তারল্য সংকটের পেছনে ছুটছেন নীতিনির্ধারকরা। অর্থাৎ রোগের চিকিৎসা না করে উপসর্গের পেছনে দৌড়ানো হচ্ছে। ড. দেবপ্রিয় বলেন, পুরো ব্যাংকিং খাতের ভেতরে সুশাসনের অভাব রয়েছে। মূল সমস্যা হল, লক্ষ্যভ্রষ্ট রাজনৈতিক অর্থনীতির শিকার ব্যাংক। এর মানে হল, অর্থনীতিটিই ঠিক নেই। যার (আমানতকারী) স্বার্থ রক্ষা করার কথা, তার ওপরই অত্যাচার করা হচ্ছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক এবং অর্থ মন্ত্রণালয় যারা ব্যাংকিং খাতের স্বার্থে কাজ করার কথা ছিল, তারা নষ্ট এবং ভ্রষ্ট লোকজনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে ওইসব লোকের স্বার্থ রক্ষা করছে। ফলে রাজনৈতিক অর্থনীতি যতক্ষণ ঠিক না হবে, ততদিন ব্যাংকিং কমিশন গঠন করেও তেমন কোনো কাজ হবে না। প্রশ্ন হল, নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসছে, রাজনৈতিক অর্থনীতি আরও বেশি জটিল হচ্ছে কি না। তিনি বলেন, একটি গণতান্ত্রিক সরকারকে অবশ্যই লাখ লাখ আমানতকারীর স্বার্থ বিবেচনায় নিতে হবে।

এক্ষেত্রে নির্বাচনের আগে একটি স্বাধীন ব্যাংকিং কমিশন গঠনের মাধ্যমে রাজনৈতিক সদিচ্ছা পরিচয় দিতে হবে। আর বাজেটের মধ্যে বিষয়টি দেখার জন্য মানুষের একটি আকাক্সক্ষা রয়েছে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আর্থিক খাতে দুর্নীতি, দুরাচার, আইন লংঘনসহ বিভিন্ন অপরাধ হচ্ছে। এর বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) আরও দৃশ্যমান বলিষ্ঠ ভূমিকা থাকা উচিত। কিন্তু কোনো কোনো ক্ষেত্রে দেখা গেছে, কোনো পদক্ষেপ না নিয়ে উল্টো ‘ক্লিন সার্টিফিকেট’ দিয়ে ছেড়ে দেয়া হচ্ছে। এটি আরও বড় সমস্যা। ফলে দুদকের পদক্ষেপগুলো যেন লোক দেখানো না হয়, সেটি নিশ্চিত করতে হবে।

ড. দেবপ্রিয় বলেন, গত কয়েক বছরে মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি মোটামুটি শোভন অবস্থায় থাকার পরও সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতায় অল্প অল্প করে চির ধরছে। যে প্রবৃদ্ধির কথা বলা হচ্ছে, তাতে মানুষের কর্মসংস্থান, আয় বৃদ্ধি এবং দারিদ্র্যবিমোচনে আশানুরূপ ইতিবাচক ফল দেখছি না। ফলে আগামী অর্থবছরে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে প্রবৃদ্ধির গুণগতমান বৃদ্ধি এবং সামষ্টিক অর্থনীতির ওপর বিদ্যমান চাপ মোকাবেলা করা।

একটি বিষয় লক্ষণীয়, চলতি বছরে ৭ দশমিক ৬৫ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। এ হার এত উচ্চ হওয়া সত্ত্বেও কেন কর্মসংস্থান বা আয়ের ক্ষেত্রে তাৎপর্য পরিবর্তন আসছে না। অপরদিকে বৈষম্য বাড়ছে। ক্রমেই ভোগবৈষম্য, আয়বৈষম্য ও সম্পদের বৈষম্য বাড়ছে। শিক্ষিত যুবকরা কর্মসংস্থান থেকে সবচেয়ে বেশি বঞ্চিত।

ফলে আগামী বাজাটে বড় একটি চ্যালেঞ্জ থাকবে, প্রবৃদ্ধির গুণগতমান পরিবর্তন করে মানুষের কর্মসংস্থান ও আয় বাড়ানোর কৌশল প্রণয়ন করা। কম প্রবৃদ্ধি হলেও কর্মসংস্থান ও আয় বৃদ্ধি বাংলাদেশের জন্য ভালো কি না, তা বিবেচনা করতে হবে। দ্বিতীয়ত, প্রবৃদ্ধিকে ধরে রাখার ক্ষেত্রে যেসব চাপ সৃষ্টি হচ্ছে, তা মোকাবেলা করা জরুরি।

সরকারি ব্যয়ের ক্ষেত্রে গুণগতমান আরও বাড়ানো জরুরি বলে মন্তব্য করে দেবপ্রিয় বলেন, একদিকে প্রকল্পগুলোয় বরাদ্দের ক্ষেত্রে অতিমূল্যায়নের একটি সমস্যা রয়েছে। পাশাপাশি নির্ধারিত সময়ে শেষ না হওয়ায় প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ব্যয়ও বাড়ছে। এক কিলোমিটার রাস্তা বানাতে বাংলাদেশে যে ব্যয়, তা ইউরোপ-আমেরিকার চেয়ে বেশি।

এভাবে আরও বড় কয়েকটি প্রকল্পের ক্ষেত্রেও একই অবস্থা। অন্যদিকে বাংলাদেশে আঞ্চলিক বৈষম্য বাড়ছে। বিশেষ করে খুলনা, বরিশাল, রাজশাহী ও রংপুরসহ পিছিয়ে পড়া কিছু অঞ্চল রয়েছে। ওই অঞ্চলে দারিদ্র্যবিমোচনের হারও শ্লথ হয়ে আছে। এসব অঞ্চলের এ ব্যাপারে চিন্তা করা উচিত।

তিনি বলেন, বাজার অর্থনীতির দুরাচার ও হস্তক্ষেপের কারণে কৃষক ফসল উৎপাদনের পরও ন্যায্যমূল্য পান না। ২০১৬-১৭ অর্থবছরের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আমদানি হয়েছিল ১ দশমিক ৩ লাখ টন। চলতি বছরের একই সময়ে ৩৯ লাখ টন আমদানি করা হয়েছে।

অর্থাৎ যখন আমদানি দরকার ছিল, তখন করা হয়নি। আর যখন দরকার নেই, তখন আমদানি করে মজুদ করা হয়েছে। তার মানে হল, বাজার ব্যবস্থাপনায় কেউ কোনো না, কোনোভাবে অপনিয়ন্ত্রণ করছে। এক্ষেত্রে বিশেষ বিশেষ গোষ্ঠী সুযোগ নিয়েছে। এটি হল অপরাজনৈতিক অর্থনীতির আরেকটি বহির্প্রকাশ।

ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বাজেটে জাতীয় সঞ্চয়পত্রের ওপর সরকারকে অধিক হারে নির্ভরশীল হতে হচ্ছে। তিনি বলেন, আগামী বাজেটে ব্যক্তিশ্রেণীর করদাতাদের করমুক্ত আয়সীমা ৩ লাখ টাকা করা উচিত। এক্ষেত্রে ন্যূনতম কর হার ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে সাড়ে ৭ শতাংশ করা যেতে পারে। এছাড়াও মানুষের আয় ও কর্মসংস্থান বাড়ানো এবং দেশের মানুষের মধ্যে বৈষম্য রোধে বিভিন্ন পদক্ষেপের সুপারিশ করেন তিনি।

  • Courtesy: Daily Jugantor/ June 04, 2018

নিরাপত্তাহীনতায় নিহত কাউন্সিলর একরামের স্ত্রী









‘স্কুলপড়ুয়া দুই কিশোরী মেয়ে নিয়ে চট্টগ্রামে লুকিয়ে আছি। নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে সময় পার করছি।’ গতকাল রোববার মুঠোফোনে এই প্রতিবেদকের কাছে এভাবে অসহায়ত্বের কথা তুলে ধরেন আয়েশা বেগম।

আয়েশা বেগম গত ২৬ মে র‍্যাবের সঙ্গে কথিত ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত টেকনাফ পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর একরামুল হকের স্ত্রী।

আয়েশা বলেন, ‘তিন নারী (তিনি ও দুই মেয়ে) ছাড়া ঘরে আর কেউ নেই। মামলা-মোকদ্দমা নিয়ে যে থানা-আদালতে দৌড়াদৌড়ি করব, সেই সুযোগ ও পরিস্থিতি কোনোটি নেই। মেয়ে দুটো সারাক্ষণ বাবার জন্য কান্নাকাটি করছে, ক্ষণে ক্ষণে মূর্ছা যাচ্ছে, কী করব ভেবে পাচ্ছি না।’

আয়েশার প্রশ্ন, ইয়াবা ব্যবসায়ীর তকমা দিয়ে একরামুলকে হত্যা করা হলেও টেকনাফে কি আদৌ ইয়াবা ব্যবসা বন্ধ হবে? ইয়াবা চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত আসল হোতাদের কি গ্রেপ্তার কিংবা আইনের আওতায় আনা হবে? তিনি বলেন, ‘একরামুলকে হত্যার বিনিময়ে যদি টেকনাফকে ইয়াবামুক্ত অঞ্চল ঘোষণা দেওয়া যেত, তবে মনকে কিছুটা সান্ত্বনা দিতে পারতাম। এখন সময় যত গড়াচ্ছে, হতাশা তত বাড়ছে। একরামুলকে হত্যা করে সরকারের মাদকবিরোধী সফল অভিযানকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য সীমান্তের কেউ চক্রান্তে লিপ্ত ছিল কি না, তা খুঁজে দেখা জরুরি।’

আয়েশা বেগম কান্নারত অবস্থায় বলেন, দুই মেয়ের লেখাপড়ার কী হবে? কীভাবে সংসার চালাব?

একরামুল হককে হত্যার পর সাংবাদিকেরা ছাড়া প্রশাসনের কেউ তাঁদের খোঁজ নেয়নি। একরামের দুই মেয়ে তাহিয়াত হক ও নাহিয়ান হক টেকনাফ বর্ডার গার্ড পাবলিক স্কুলের অষ্টম ও ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ছে। তাহিয়াত জানায়, ‘বাবা সব সময় আমাদের মোটরসাইকেলে তুলে স্কুলে নিয়ে যেতেন, তখন তাঁর শরীর থেকে সুগন্ধ নাকে আসত। বাবা তো বেঁচে নেই, এখন কে আমাদের স্কুলে নিয়ে যাবে? সুগন্ধটা কোথায় পাব?’।

একরামের বড় ভাই নজরুল ইসলাম বলেন, ‘সবাই মামলার কথা বলছে। আমরা কার বিরুদ্ধে মামলা করব? পুরো পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় আছি।’

  • কার্টেসিঃ প্রথম আলো/ জুন ৪,২০১৮ 

Police bar Ganajagaran Mancha to rally against ‘crossfire’

The police on Sunday stopped activists of Ganajagaran Mancha at Shahbagh in Dhaka to rally against indiscriminate killing of people going beyond any judicial process in the name of anti-drug drives.

The activists of the platform began gathering in front of National Museum and as they tried to bring out a procession police barred them claiming that they had no prior permission to hold such demonstration.

In the face of police obstruction, the platform convener Imran H Sarkar announced same programme on June 6.

He said killing unarmed people in the name of anti-drug drives one after another has put the judicial process of the state before questions. It creates example for administration to ignore judiciary which is against the states order, security and justice.

  • Courtesy: New Age/ June 03, 2018

Default loans soar 19.23pc

AKM Zamir Uddin



Some Tk 14,286 crore of loans defaulted in the first three months of the year, punching banks further into a corner in their uphill fight against non-performing loans.

At the end of March, the total default loans in the banking sector stood at Tk 88,589 crore, up from Tk 74,303 crore at the end of December 2017.

Of the total default loans, the six state banks alone accounted for Tk 43,685 crore, the private banks Tk 37,289 crore, the two specialised banks Tk 5,426 crore and nine foreign banks Tk 2,188 crore.

The 40 private banks though saw their default loans escalate the most in the first quarter of 2018 from the previous quarter: 26.85 percent.

The state banks' default loans increased 17.03 percent, the Bangladesh Krishi Bank and Rajshahi Krishi Unnayan Bank saw their default loans remain unchanged. Foreign banks' default loans crept up 1.57 percent in the first three months of the year.

The nonperforming loans accounted for 10.78 percent of the total outstanding loans in the banking sector, up from 9.31 percent in December last year, according to central bank statistics. “Some unscrupulous persons just looted the public funds in the name of loans from banks over the past five-six years,” said Khondker Ibrahim Khaled, a former Bangladesh Bank deputy governor.

The central bank should form a loan inquiry committee without further delays to detect the unscrupulous persons and corrupt banks' officials involved in the financial scams.

Some banks massively rescheduled their default loans in the last three to four years and those became nonperforming again, he said, while urging the BB not to reschedule the loans any further.

“The real picture of the banking sector will be clearly shown if the banks did not reschedule the loan.”

The central bank should instruct the banks to recover the loans by December of this year; otherwise, punitive measures would be taken against them, he added.

  • Courtesy: The Daily Star /June 04, 2018