Search

Monday, August 27, 2018

৯৫০০০ কোটি টাকার ফল কই?

দেশবাসীর পছন্দের রেলে চিরন্তন দুর্দশা


পার্থ সারথি দাস   


দেশের জরাজীর্ণ রেলব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে শেখ হাসিনার বিশেষ নির্দেশনায় আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে গত প্রায় এক দশকে একের পর এক প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছায় পৃথক ‘রেলপথ মন্ত্রণালয়’ গঠন করা হয়েছে ২০১১ সালে। আওয়ামী লীগের সব শেষ দুই মেয়াদে পর পর তিনজন মন্ত্রী হাল ধরেছেন মন্ত্রণালয়ের। কিন্তু বেগতির রেলে গতি আর আসছে না। গৃহীত প্রকল্পগুলোর বেশির ভাগই চলছে ঢিমেতালে। প্রকল্প ঝুলে থাকায় দাতাদের অনেকে অর্থ প্রত্যাহারও করে নিয়েছে।

এক হিসাবে দেখা গেছে—২০১৬ সালের মধ্যেই এসব প্রকল্পের পেছনে ২৯ হাজার কোটি টাকা খরচ হয়ে গেছে (২০০৯ সাল থেকে শুরু হয়ে পরের সাত বছরে)। বর্তমান সময় পর্যন্ত ধরলে খরচ আরো বেড়ে যাবে। প্রতিবছর যাত্রীর চাহিদা বাড়লেও বিভিন্ন জেলায় বাড়তি ট্রেন ও ট্রেনে কাঙ্ক্ষিত নতুন বগি লাগানো হচ্ছে না। দেখা গেছে, প্রধানমন্ত্রীকে দিয়ে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করানোর ৯ বছরেও কোনো কোনো প্রকল্পে দৃশ্যমান অগ্রগতি হয়নি। ১৮০০ কোটি টাকা থেকে ১৮ হাজার কোটি টাকা ব্যয়সীমা ছাড়ালেও বলা হচ্ছে প্রকল্পের ‘কাজ চলছে’।

রেলের উন্নয়নের নামে অব্যবস্থাপনার ঘটনায় অভিযোগের আঙুল উঠেছে রেলওয়ের বর্তমান মহাপরিচালক মো. আমজাদ হোসেনের দিকেও। অভিযোগ হচ্ছে, তাঁরই ইশারায় সংশ্লিষ্টরা অনেক ক্ষেত্রে সম্ভাব্যতা যাছাই না করেই উন্নয়ন প্রকল্পের ছক তৈরি করেছেন; পরে চলছে নকশার নামে নীলনকশার বাস্তবায়ন!

দেখা গেছে, বৈরী আবহাওয়ার অজুহাত, দরপত্র আহ্বানে দেরি, গাড়ি ও যন্ত্রপাতি আনতে দেরিসহ বিভিন্ন কারণে প্রকল্পের কাজ ঝুলিয়ে ব্যয় বাড়ানো হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গুটিকয়েক বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে গোপন সমঝোতার মাধ্যমেই প্রকল্পের কাজ ভাগবাটোয়ারা হচ্ছে। ফলে সরকারের দেওয়া বিপুল বরাদ্দ থেকে আশানুরূপ ফল মিলছে না। এদিকে সড়কনির্ভর যোগাযোগ ব্যবস্থার ওপর চাপ বেড়েই চলেছে, বাড়ছে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর মিছিল। অথচ প্রতিবেশী দেশ ভারতেও  রেল যোগাযোগ নিরাপদ, সাশ্রয়ী ও নির্ভরযোগ্য হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আর বাংলাদেশে লোকসান থেকেই বেরোতে পারছে না। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে বাংলাদেশ রেলওয়ের লোকসান হয়েছিল প্রায় ১২০০ কোটি টাকা। যাত্রী ছিল সাত কোটি ৭৮ লাখ। সদ্যসমাপ্ত অর্থবছর ২০১৭-১৮-এ লোকসান বেড়ে হয়েছে ১৬০০ কোটি টাকা। অথচ আগের অর্থবছরের চেয়ে যাত্রী সোয়া কোটি বেশি ছিল এই সময়ে। মোট যাত্রী ছিল ৯ কোটি।

অনিয়মের অভিযোগ প্রসঙ্গে রেলের মহাপরিচালক মো. আমজাদ হোসেন গতকাল রবিবার বিকেলে কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘যোগ্য প্রতিষ্ঠানই কাজ পাচ্ছে। এখানে অন্য কোনো বিষয় নেই।’ কাজ না হওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘টঙ্গী-ঢাকা তৃতীয়-চতুর্থ লাইনের সম্ভাব্যতা যাচাই করা হয়নি এটা সত্য। তবে প্রকল্পের কাজে গতি আসবে।’

বুয়েটের অধ্যাপক ড. সামছুল হক কালের কণ্ঠকে বলেন, যাত্রীসেবা বাড়ে এমন প্রকল্প নেওয়া হয়নি। প্রকল্প যথাসময়ে বাস্তবায়নের দক্ষতাও তৈরি হয়নি। ফলে অমিত সম্ভাবনার রেলকে নিয়ে সরকার ও জনগণের যে চাওয়া তা পূরণ হচ্ছে না। বাংলাদেশ রেলওয়ের সাবেক মহাপরিচালক তাফাজ্জল হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়নের তদারকি ব্যবস্থা জোরদার করতে হবে।

দেখা গেছে, ২০০৮-০৯ থেকে ২০১৩-১৪ অর্থবছরে শেষ হয়েছে রেলওয়ের ২৪ প্রকল্প। এ জন্য ব্যয় হয়েছে তিন হাজার ৮২০ কোটি টাকা। কিন্তু এই যোগাযোগব্যবস্থায় কাঙ্ক্ষিত পরিবর্তন কই! বর্তমানে যে ৪৫টি প্রকল্প চলছে এর বেশির ভাগ নেওয়া হয়েছে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার ক্ষমতায় আসার পর। মোট ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৯৫ হাজার কোটি টাকা। এদিকে আওয়ামী লীগ সরকারের ৯ বছরে রেলের পেছনে খরচ ৫০ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। ২০০৯-১০ থেকে ২০১৬-১৭ অর্থবছর পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে ৩৮ হাজার ১৮৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে উন্নয়ন প্রকল্পের  পেছনে গেছে ২৩ হাজার ৫৮৬ কোটি টাকা, বাকি টাকা ব্যয় হয় পরিচালন খাতে। ২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেটেও রেলে বরাদ্দ ছিল ১৬ হাজার ১৩ কোটি টাকা।

জানা যায়, প্রকল্প ব্যয়ের প্রায় ৭৫ শতাংশ বিদেশ থেকে নেওয়া হয়েছে ঋণ হিসেবে। ঋণ সহায়তাকারী দেশগুলোর মধ্যে আছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক-এডিবি, জাপানের জাইকা, দক্ষিণ কোরিয়া, ভারত ও চীন। এডিবি রেলে সবচেয়ে বেশি ঋণ সহায়তা দিচ্ছে। কিন্তু প্রকল্প সময়মতো বাস্তবায়ন না হওয়ায় গত বছর এডিবি একাধিক প্রকল্পের অর্থ ফেরত নিয়ে গেছে। গত বছর প্রকল্পের আংশিক ঋণ বাতিল করে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। সময়মতো ব্যবহার না হওয়ায় চারটি প্রকল্পে ছয় কোটি ডলার বা ৪৮০ কোটি টাকা ঋণ প্রত্যাহার করে নিয়েছে সংস্থাটি। বিশ্বব্যাংক তার আগেই মুখ ফিরিয়ে নেয়। তবে ভারত সরকার তিন দফায় বিভিন্ন প্রকল্পে ঋণ দিয়েছে। চীন সরকার পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পে ঋণ সহায়তা দিচ্ছে।

পদ্মা সেতুতে কাজ ১৫% 

বাংলাদেশ সেতু বিভাগের অধীন মূল পদ্মা সেতুর কাজ ৫৬ শতাংশের বেশি এগিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী চেয়েছিলেন, এই দোতলা সেতু চালুর প্রথম দিন থেকেই একই সঙ্গে বাস ও ট্রেন চলাচল করবে। ট্রেন চালাতে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের অধীন প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে যশোর পর্যন্ত যাবে ১৬৯ কিলোমিটার রেলপথ। ২০১৬ সালের ১ জানুয়ারি প্রকল্পের যাত্রা শুরু। তবে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সব শেষ অগ্রগতি প্রতিবেদনেই বলা হয়েছে, এ পর্যন্ত কাজ হয়েছে ১৫ শতাংশ। প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তরও স্থাপন হয়নি। অথচ সরকারের ফাস্ট ট্র্যাকের ১০ মেগা প্রকল্পের মধ্যে এ প্রকল্প আছে। প্রকল্প বাস্তবায়নে ২১ হাজার ৩৬ কোটি টাকা ঋণ দিতে গত এপ্রিলে চুক্তি করেছে চীনের এক্সিম ব্যাংক।

ছয় বছরেও শুরু হয়নি

ঢাকা থেকে টঙ্গী হয়ে দেশের বিভিন্ন এলাকার মধ্যে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৮০টি বিভিন্ন ধরনের ট্রেন চলাচল করে। তবে প্রয়োজনীয় রেলপথের অভাবে প্রায়ই টঙ্গীর বাইরে সিগন্যালে অপেক্ষা করতে হয় ট্রেনগুলোকে। এ সংকট থেকে উদ্ধারে ঢাকা-টঙ্গী রেলপথ তৃতীয় ও চতুর্থ লাইন এবং টঙ্গী-জয়দেবপুর ডাবল লাইন নির্মাণে ২০১২ সালের ১ জুলাই প্রকল্প নেওয়া হয়। প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে এক হাজার ১০৬ কোটি ৮০ লাখ টাকা, শুরুর দিকে এই ব্যয় ধরা হয়েছিল ৮৪৮ কোটি ৬০ লাখ টাকা। পাঁচ বছর শেষে গত বছরের জুনে প্রকল্প শেষ হওয়ার কথা ছিল। তবে সঠিকভাবে সম্ভাব্যতা যাচাই না করা ও ভুল নকশার ফলে প্রকল্পের কাজ শুরুই হয়নি। প্রকল্পের আওতায় সিগন্যালিংসহ ঢাকা-টঙ্গীর মধ্যে বিদ্যমান ডুয়াল গেজ ডাবল লাইনের সমান্তরালে ৪৯ কিলোমিটার নতুন দুটি ডুয়েল গেজ লাইন নির্মাণ করার কথা। এ জন্য ভারতীয় ঋণ মিলবে ৯০২ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। গত ২৪ জুলাই ঢাকা-টঙ্গী তৃতীয় ও চতুর্থ এবং টঙ্গী-জয়দেবপুর দ্বিতীয় ডুয়াল গেজ রেললাইন নির্মাণে ভারতীয় প্রতিষ্ঠান অ্যাফকন্স ও কল্পতরু পাওয়ার ট্রান্সমিশনের সঙ্গে চুক্তি করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে।

৯ বছরে ৯ শতাংশ

চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে রামু হয়ে কক্সবাজার ও রামু থেকে গুনধুম পর্যন্ত প্রায় ১২৮ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণের প্রকল্প নেওয়া হয় ২০১০ সালের ১ জুলাই। ব্যয় ধরা হয় প্রায় ১৮০০ কোটি টাকা। প্রকল্পের ব্যয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার ৩৪৪ কোটি টাকায়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দিয়ে এই প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করানো হয়েছিল ২০১১ সালে। তবে প্রায় আট বছরে প্রকল্পের অগ্রগতি হয়েছে মাত্র ৯ শতাংশের মতো। এই ধীরগতির কারণ জানতে চাইলে প্রকল্প পরিচালক মো. মফিজুর রহমান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘প্রকল্পের জন্য জমি লাগবে এক হাজার ৩৬৪ একর। তার মধ্যে চট্টগ্রামে লাগবে ৩৬৪ একর; এর মধ্যে ৭০ শতাংশ পেয়েছি। কক্সবাজারে লাগবে হাজার একর; তার ৫০ শতাংশ পাওয়া গেছে।’ তিনি জানান, পাইলিংসহ প্রকল্পের মাটি ভরাটকাজ শুরু হয়েছে। তবে বর্ষার জন্য পুরোদমে কাজ করা যাচ্ছে না। প্রথম ধাপে ১০০.৮৩১ কিলোমিটার সিঙ্গেল লাইন ডুয়াল গেজ ট্র্যাক নির্মাণ করা হবে। দ্বিতীয় ধাপে রামু থেকে মিয়ানমারের কাছের ঘুনধুম পর্যন্ত ২৮.৭৫২ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ করা হবে। চুনতি অভয়ারণ্যে হাতি পারাপারের জন্য উড়াল সেতু করা হবে। সে জন্য প্রায় পাঁচ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হবে। প্রকল্পের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না-তমা জেভি এবং চায়না সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন কম্পানি-ম্যাক্স জেভি।    

অজুহাত বৃষ্টির : ভারত ও নেপালে পণ্য পরিবহন সুবিধার বিষয়টি মাথায় রেখে খুলনা-মোংলা সমুদ্রবন্দর ৬৪ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণে প্রকল্প নেওয়া হয়েছিল ২০১০ সালের ১ ডিসেম্বর। মোংলা বন্দর থেকে রেলপথটি খুলনার ফুলতলায় গিয়ে যুক্ত হবে। প্রায় আট বছরে কাজের অগ্রগতি ৩৫ শতাংশের বেশি। ভারতীয় ঋণে তিন হাজার ৮০১ কোটি ৬১ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি গত জুনের মধ্যে শেষ করার কথা ছিল। জানা গেছে, প্রকল্পের ভূমি অধিগ্রহণ ও ১৪ কিলোমিটার রেলপথের মাটি ভরাটের কাজ হয়েছে। ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান লারসন অ্যান্ড টার্বো ৫.১৩০ কিলোমিটার দীর্ঘ রূপসা রেল সেতুর কাজ করছে। প্রকল্প পরিচালক মজিবুর রহমান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমি দায়িত্ব নিয়েছি দুই মাস হলো। গত জুনের মধ্যে শেষ করার কথা। তবে আমরা ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাব করেছি। তা পরিকল্পনা কমিশনে আছে। রূপসা রেল সেতুর জন্য পাইলিং শুরু করা হয়েছিল। বর্ষার কারণে কাজ করা যাচ্ছে না।’

৭ বছরে অগ্রগতি ১২% 

কুলাউড়া-শাহবাজপুর ৪৫ কিলোমিটার রেলপথ বন্ধ ১৫ বছর ধরে। ১৮৮৫ সালে আসাম-বেঙ্গল রেলওয়ের অংশ হিসেবে এটি চালু করা হয়েছিল। বড়লেখা উপজেলার লাতু সীমান্ত দিয়ে কুলাউড়া রেলওয়ে জংশন হয়ে আসাম রেলওয়ের ট্রেন দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে চলাচল করত ‘লাতুর ট্রেন’। ২০০২ সালের ৭ জুলাই লাইনটি বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশ রেলওয়ে। মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর ২০১১ সালের ১ জুলাই  কুলাউড়া-শাহবাজপুর রেলপথ পুনর্বাসন প্রকল্প নেওয়া হয়। ব্যয় ধরা হয় ৬৭৮ কোটি ৫১ লাখ টাকা। এর মধ্যে ভারত সরকার দেবে ৫৫৫ কোটি ৯৯ লাখ টাকা। সাত বছরে প্রকল্পে অগ্রগতি হয়েছে প্রায় ১২ শতাংশ। প্রকল্প পরিচালক মো. তানভীরুল ইসলাম বলেন, ‘বিভিন্ন কারণে আগে কাজ শুরু হয়নি। এখন আমরা প্রস্তুতি শুরু করেছি। ৩০ আগস্ট থেকে পুরোদমে কাজ শুরু হবে।’

এ ছাড়া ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথ উন্নয়নের অংশ হিসেবে ২০০৬ সালে নেওয়া তিনটি প্রকল্পের একটি ছিল টঙ্গী থেকে ভৈরব বাজার ডাবল লাইনে উন্নীত করা। এক দশক পেরিয়ে গেলেও রেলওয়ে সেক্টর ইনভেস্টমেন্ট প্রোগ্রাম : প্রথম কিস্তি’ শীর্ষক প্রকল্পের কাজ শেষ হয়নি।

ইঞ্জিন-বগিতে নজর নেই

দেশে দৈনিক ৮৮টি আন্তনগর, ১২৬টি লোকাল, ১৩২টি মেইল এক্সপ্রেস ও ডেমু ট্রেন, চারটি আন্তদেশীয়সহ ৩৫০টি ট্রেন চলাচল করছে। কিন্তু ট্রেনের চাহিদা আছে কমপক্ষে দ্বিগুণ—কোচ ও ইঞ্জিন না থাকায় চালু করা সম্ভব হচ্ছে না। বাংলাদেশ রেলওয়ের তথ্যানুসারে রেলের পূর্ব ও পশ্চিমাঞ্চলে ৮৫ শতাংশ মেয়াদ পেরোনো ইঞ্জিন দিয়েই ট্রেন পরিচালনা করতে হচ্ছে। দুই রেল অঞ্চলে ২৭২টি ইঞ্জিন আছে—তার মধ্যে ১৫ শতাংশের মেয়াদ রয়েছে। একটি ইঞ্জিনের আয়ুষ্কাল সর্বোচ্চ ২০ বছর হয়। কিন্তু রেলওয়ের ৮৫ শতাংশ ইঞ্জিনের বয়স ৬০ বছর পেরিয়েছে। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর ২৭০টি কোচ ও ৪৬টি ইঞ্জিন আমদানি করা হয়েছে। ১১৬টি নতুন ট্রেন চালু করা হয়েছে। বর্তমানে ৪৮টি উন্নয়ন প্রকল্পের মধ্যে বগি ও ইঞ্জিন কেনার প্রকল্প আছে মাত্র ছয়টি। চীন থেকে ২০টি ডেমু ট্রেন কেনার প্রকল্পেই বেশি গতি ছিল। প্রায় ৬০০ কোটি টাকায় আমদানি করা এসব ট্রেন নিয়মিত চলে না। ফলে এগুলো যাত্রী ভোগান্তির কারণ হয়েছে।

  • কার্টসিঃ কালের কণ্ঠ/আগস্ট ২৭,২০১৮ 

জনতা ব্যাংকে ক্রিসেন্ট গ্রুপের ৫ হাজার কোটি টাকার কেলেঙ্কারি

পর্দার আড়ালে জাজ মাল্টিমিডিয়া


ভুয়া রফতানি নথি তৈরি করে জনতা ব্যাংক থেকে গত পাঁচ বছরেই ৫ হাজার কোটি টাকার বেশি বের করে নিয়েছে ক্রিসেন্ট গ্রুপ। এ কেলেঙ্কারির বড় অংশই হয়েছে রিমেক্স ফুটওয়্যার লিমিটেডের মাধ্যমে। প্রতিষ্ঠানটির কাছে জনতা ব্যাংকের খেলাপি হয়ে পড়েছে ১ হাজার কোটি টাকার বেশি ঋণ। আর রিমেক্সের চেয়ারম্যান হিসেবে রয়েছেন আবদুল আজিজ, যিনি জাজ মাল্টিমিডিয়ারও কর্ণধার। জনতা ব্যাংক কেলেঙ্কারির পর্দার আড়ালের প্রতিষ্ঠান হিসেবে তাই জাজ মাল্টিমিডিয়াকে দেখছেন ব্যাংকাররা।

দেশের চলচ্চিত্র অঙ্গনে জাজ মাল্টিমিডিয়ার আবির্ভাব ২০১১ সালে। এরপর একের পর এক ব্যবসাসফল চলচ্চিত্র নির্মাণ করতে থাকে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানটি। নবাব, শিকারি ও অগ্নি এর মধ্যে অন্যতম। এর বাইরে বস ২, পোড়ামন ২, বাদশা-দ্য ডনের মতো ব্যবসাসফল চলচ্চিত্রও নির্মাণ করেছে তারা। বাংলাদেশ ও ভারতের যৌথ প্রযোজনায় তৈরি বেশ কয়েকটি চলচ্চিত্রেও বিনিয়োগ করেছে জাজ মাল্টিমিডিয়া। মাহি, নুসরাত ফারিয়ার মতো নায়িকার উত্থান এ প্রতিষ্ঠানের হাতেই। শাকিব খানের ব্যবসাসফল অনেক চলচ্চিত্রও জাজ মাল্টিমিডিয়ার ব্যানারে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জাজ মাল্টিমিডিয়ার চেয়ারম্যান আবদুল আজিজের বড় ভাই এমএ কাদের। কাঁচা চামড়া প্রক্রিয়াজাত, পণ্য উৎপাদন, বিপণন ও রফতানিকারক একাধিক প্রতিষ্ঠান আছে তার। এর মধ্যে রয়েছে— ক্রিসেন্ট লেদার প্রডাক্টস, ক্রিসেন্ট ট্যানারিজ, ক্রিসেন্ট ফুটওয়্যার, রূপালী কম্পোজিট লেদার, লেক্সকো লিমিটেড ও গ্লোরী এগ্রো। সব প্রতিষ্ঠানই গড়ে তোলা হয়েছে ক্রিসেন্ট গ্রুপের নামে। গ্রুপটির চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) হিসেবে রয়েছেন এমএ কাদের। আর রিমেক্স ফুটওয়্যার লিমিটেডের চেয়ারম্যান এমএ আজিজ। মূলত চামড়াজাত পণ্যের এ ব্যবসা পৈতৃক সূত্রে পেয়েছেন তারা।

চামড়াজাত পণ্যের ব্যবসায় দুই ভাইকে উদার হাতে ঋণ দিয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত জনতা ব্যাংক। ২০১০ সালের পর ঋণপ্রবাহের লাগাম ছিঁড়ে যায়। ২০১৩ সাল-পরবর্তী পাঁচ বছরেই জনতা ব্যাংক থেকে ৫ হাজার ১৩০ কোটি টাকা ঋণ পেয়েছেন এমএ কাদের ও এমএ আজিজ। এর মধ্যে পণ্য রফতানির বিপরীতে নগদ সহায়তা তহবিল থেকে তুলে নেয়া হয়েছে ১ হাজার ৭৫ কোটি টাকা। দুই ভাইয়ের প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে বর্তমানে ২ হাজার ৭৬০ কোটি টাকা পাওনা রয়েছে জনতা ব্যাংকের। এর বাইরে পণ্য রফতানির ১ হাজার ২৯৫ কোটি টাকাও আটকে গেছে।

ক্রিসেন্ট গ্রুপ কেলেঙ্কারির বড় অংশই হয়েছে জাজ মাল্টিমিডিয়ার কর্ণধার এমএ আজিজের মালিকানাধীন রিমেক্স ফুটওয়্যার লিমিটেডের মাধ্যমে। প্রতিষ্ঠানটির কাছে জনতা ব্যাংকের হাজার কোটি টাকার বেশি পাওনা রয়েছে।

জনতা ব্যাংক সূত্রমতে, ব্যাংকটি থেকে বের করে নেয়া এ ঋণই জাজ মাল্টিমিডিয়ার অর্থের মূল উৎস। রিমেক্স ফুটওয়্যার নামে একটি অখ্যাত চামড়াজাত পণ্যের কোম্পানির মাধ্যমে জনতা ব্যাংক থেকে এ অর্থ বের করে নেয়া হয়েছে। চলতি বছরের ৩১ জুলাই পর্যন্ত রিমেক্স ফুটওয়্যারের কাছে ব্যাংকটির পাওয়া দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ২৬ কোটি ৮৪ লাখ ৪০ হাজার ৬২৩ টাকা। বৈদেশিক বাণিজ্যের ঋণ হিসেবে নেয়া এ অর্থের প্রায় পুরোটাই এখন খেলাপি।

জাজ মাল্টিমিডিয়ার কর্ণধার আবদুল আজিজের ব্যবসায়িক পরিচিতি এমএ আজিজ নামে। জনতা ব্যাংকের নথিপত্রে রিমেক্স ফুটওয়্যার লিমিটেডের চেয়ারম্যান হিসেবে এমএ আজিজ নামটিই রয়েছে। যদিও ১৫ আগস্ট বণিক বার্তার কাছে রিমেক্স ফুটওয়্যারের মালিকানার কথা অস্বীকার করেন জাজ মাল্টিমিডিয়ার চেয়ারম্যান আবদুল আজিজ। তিনি বলেন, রিমেক্স ফুটওয়্যারের চেয়ারম্যান এমএ আজিজ তিনি নন। ক্রিসেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান এমএ কাদেরকেও তিনি চেনেন না। প্রতিবেদক এমএ আজিজ ও জাজ মাল্টিমিডিয়ার আবদুল আজিজকে ভুলবশত এক করে ফেলছেন। গতকালও একই দাবি করেন তিনি। তবে ক্রিসেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান এমএ কাদের জানান, আবদুল আজিজ তারই ভাই। তিনি জাজ মাল্টিমিডিয়ার মাধ্যমে চলচ্চিত্র অঙ্গনে আছেন। রিমেক্স ফুটওয়্যার লিমিটেড আমাদের পৈতৃক ব্যবসা।

এমএ আজিজ যে এমএ কাদেরের ভাই, সেটা জানিয়েছেন জনতা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. আব্দুছ ছালাম আজাদও। বণিক বার্তাকে তিনি বলেন, রিমেক্স ফুটওয়্যারের চেয়ারম্যান এমএ আজিজকে আমরা এমএ কাদেরের ভাই বলেই জানি। এমএ আজিজ সিনেমা তৈরি করেন বলে শুনেছি।

ভুয়া রফতানি নথিপত্র তৈরি করেই মূলত জনতা ব্যাংক থেকে বিপুল অর্থ তুলে নিয়েছেন তারা। ব্যাংকটির পুরান ঢাকার ইমামগঞ্জ শাখার কয়েক কর্মকর্তাসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের যোগসাজশে বৃহৎ এ ঋণ কেলেঙ্কারির ঘটনা ঘটেছে। বাংলাদেশ ব্যাংক ও জনতা ব্যাংকের অনুসন্ধানে এরই মধ্যে জালিয়াতির বিষয়টি চিহ্নিত হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ইমামগঞ্জ শাখার এডি লাইসেন্স বাতিলের পাশাপাশি জনতা ব্যাংক ও দায়ী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থাও নেয়া হয়েছে। রফতানির আড়ালে ক্রিসেন্ট গ্রুপের বিরুদ্ধে বিদেশে অর্থ পাচারের প্রাথমিক প্রমাণও পেয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

দেশের ব্যাংকিং খাতের অন্যতম বৃহৎ এ ঋণ কেলেঙ্কারি নিয়ে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েছেন জনতা ব্যাংকের কর্মকর্তারা। ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. আব্দুছ ছালাম আজাদ বণিক বার্তাকে বলেন, পুরো ক্রিসেন্ট গ্রুপের ঋণ নিয়ে আমরা খারাপ সময় পার করছি। এরই মধ্যে দায়ী ব্যাংকারদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। ব্যাংকের প্রতিটি পর্ষদ সভায় বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। মেয়াদোত্তীর্ণ রফতানি বিলসহ অন্য ঋণগুলো আদায়ের জন্য সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আমরা দফায় দফায় বৈঠক করছি। একটি যৌক্তিক সমাধান খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে।

চলতি বছরের ৩১ জুলাই রিমেক্স ফুটওয়্যার লিমিটেডের চেয়ারম্যান এমএ আজিজের নামে একটি চিঠি ইস্যু করে জনতা ব্যাংক। চিঠিতে এমএ আজিজের ঠিকানা হিসেবে উল্লেখ করা হয়, হাউজ নং-৫৩৬, রোড নং-১১, বায়তুল আমান হাউজিং সোসাইটি, আদাবর-১১, মোহাম্মদপুর, ঢাকা। ব্যাংকটির বৈদেশিক বাণিজ্য বিভাগের (এফটিডি) উপমহাব্যবস্থাপক মো. রূহুল আমীন খান স্বাক্ষরিত চিঠিতে রিমেক্স ফুটওয়্যারের সব দায়-দেনা পুরান ঢাকার ইমামগঞ্জ থেকে লোকাল অফিসে স্থানান্তর করার বিষয়টি জানানো হয়। 

এমএ আজিজকে উদ্দেশ করে এতে লেখা হয়েছে, আপনি অবগত আছেন যে, বাংলাদেশ ব্যাংক প্রধান কার্যালয়, ঢাকার ২৪ শে জুন, ২০১৮ তারিখের পত্র (সূত্র নং-এফইপিডি(এফইএমপি/০৩/(এ)/২০১৮-৫৬৩৩) এবং জনতা ব্যাংক লিমিটেড প্রধান কার্যালয়ের ফরেন ট্রেড ডিপার্টমেন্ট-এক্সপোর্ট-এর পত্র (সূত্র নং-এফটিডি/ইমামগঞ্জ/এডি লাইসেন্স/স্থগিত/১৮, তারিখ ২৫ জুন-২০১৮) মোতাবেক জনতা ব্যাংক লিমিটেড ইমামগঞ্জ করপোরেট শাখায় পরিচালিত আপনার প্রতিষ্ঠানের দায়-দেনা জনতা ব্যাংক লিমিটেড লোকাল অফিস, ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়েছে।

রিমেক্স ফুটওয়্যারের দায়-দেনার একটি হিসাবও উল্লেখ করা হয়েছে চিঠিতে। তাতে দেখা যায়, গত ৩১ জুলাই পর্যন্ত রিমেক্স ফুটওয়্যারের কাছে রফতানি বিল ক্রয় (এফডিবিপি) বাবদ জনতা ব্যাংকের পাওনা রয়েছে ৫৩৫ কোটি ৮৫ লাখ ৭৪ হাজার ২৯০ টাকা। প্রতিষ্ঠানটি প্যাকিং ক্রেডিট (পিসি) বাবদ ১৬৬ কোটি ৮৬ লাখ ৮০ হাজার ৪৫৭ টাকা ঋণ নিয়েছে। সাধারণত রফতানি পণ্য শিপমেন্টের জন্য এ ধরনের ঋণ দেয়া হয়। রিমেক্স ফুটওয়্যার রফতানির জন্য অগ্রিম ক্যাশ সাবসিডি হিসেবে নিয়েছে ১৪ কোটি ৮৩ লাখ ৪৪ হাজার ৩৪২ টাকা।

এছাড়া রফতানি বিল প্রত্যাবাসন না হওয়ায় প্রায় ১০৪ কোটি টাকা ফোর্সড লোন সৃষ্টি হয়েছে। রিমেক্স ফুটওয়্যারের অন্য দায়গুলো হলো— সিসি হাইপো ৯৪ কোটি ৩৮ লাখ ৪৫ হাজার ৬৭০ টাকা, সিসি প্লেজ ১০৮ কোটি ৯০ লাখ ৭ হাজার ৮৬৪ টাকা, আইএফডিবিসি ৭১ লাখ ৫ হাজার টাকা এবং এলসি বাবদ ১ কোটি ৩২ লাখ ৮৩ হাজার টাকা। সব মিলিয়ে চলতি বছরের ৩১ জুলাই পর্যন্ত রিমেক্স ফুটওয়্যারের কাছে জনতা ব্যাংকের মোট ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ২৬ কোটি ৮৪ লাখ ৪০ হাজার ৬২৩ টাকা।

মেয়াদ ফুরিয়ে গেলেও জনতা ব্যাংকের কেনা রিমেক্স ফুটওয়্যার লিমিটেডের রফতানি বিলের অর্থ দেশে আসছে না। বিষয়টি উদ্ধৃত করে এমএ আজিজকে দেয়া চিঠিতে বলা হয়েছে, রিমেক্স ফুটওয়্যার লিমিটেডের দায়-দেনাগুলোর মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে অপ্রত্যাবাসিত এফডিবিপি দায় ও এফডিবিসি রয়েছে, যা প্রত্যাবাসন করা অতীব জরুরি। এফডিবিপি ও এফডিবিসি সংশ্লিষ্ট বায়ারের সঙ্গে যোগাযোগ করে অতিসত্বর এর মূল্য সংশ্লিষ্ট হিসাবে প্রত্যাবাসনের জন্য অনুরোধ করা হলো।

চিঠিতে বলা হয়েছে, পিসি ঋণ অগ্রিম ক্যাশ সাবসিডি, পিএডি ক্যাশ ও লোন জেনারেল (ফোর্সড)— এ ঋণ হিসাবগুলো দ্রুত সমন্বয় করা অপরিহার্য। তাছাড়া সীমাতিরিক্ত ইসিসি হাইপো, ইসিসি প্লেজ, সিসি হাইপো, সিসি প্লেজ দায় সমন্বয় করে ওই হিসাবগুলো নিয়মিত রাখা অত্যাবশ্যক। অন্যদিকে আমদানি বিল বাবদ অপরিশোধিত আইএফডিবিসি ও এলসি (যেসব ডকুমেন্ট ব্যাংকে জমা রয়েছে) দায়গুলো দ্রুত সমন্বয় করা আবশ্যক। এমএ আজিজকে দেয়া চিঠিতে ব্যাংকের সব দায় পরিশোধের জন্য বিশেষভাবে অনুরোধও করা হয়েছে।

জনতা ব্যাংক এমডি এ প্রসঙ্গে বলেন, রিমেক্স ফুটওয়্যারের কাছ থেকে পাওনা অর্থ আদায়ের জন্য প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান এমএ আজিজকে চিঠি দেয়া হয়েছে। তিনি ব্যাংকের পাওনা টাকা দ্রুততম সময়ের মধ্যে ফেরত দেবেন বলে প্রত্যাশা করছি।

সূত্র বলছে, জনতা ব্যাংক থেকে অবাধে ঋণপ্রাপ্তির সময় থেকেই জাজ মাল্টিমিডিয়ার উত্থান। প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধার আবদুল আজিজ নিজেও বিভিন্ন সময় গণমাধ্যমকে বলেছেন, দেশের চলচ্চিত্র শিল্প জাজ মাল্টিমিডিয়াই বাঁচিয়ে রেখেছে। জাজ না থাকলে বাংলা চলচ্চিত্র থাকবে না।

তবে তার এ বক্তব্যের সঙ্গে একমত নন বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি নায়ক ফারুক। বণিক বার্তাকে তিনি বলেন, দেশের চলচ্চিত্র শিল্প শিশু নয়। এ শিল্পের সঙ্গে বহু মানুষ জড়িত। তারাই এ শিল্পকে বাঁচিয়ে রেখেছেন। জাজ না থাকলে চলচ্চিত্র থাকবে না, এটা অবান্তর।
  • কার্টসিঃ বনিক বার্তা/ আগস্ট ২৭,২০১৮ 

কয়লা গায়েবের তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে না


বড়পুকুরিয়া খনি থেকে প্রায় দেড় লাখ টন কয়লা ‘গায়েবের’ ঘটনায় গঠিত দুটি তদন্ত কমিটি তাদের প্রতিবেদন দিলেও তা প্রকাশ করা হবে না বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। 

তিনি বলেন, আমরা তদন্তের দুটি রিপোর্ট পেয়ে গেছি ইতিমধ্যে। কারা কারা জড়িত এবং কীভাবে হয়েছে বা কীভাবে করতে যাচ্ছে সেটা রিপোর্টে জেনেছি। তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থাও নেয়া হয়েছে। আমরা আগেই বলেছি কোনোরকম দুর্নীতিকে আমরা প্রশ্রয় দেবো না। গতকাল সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

ঈদের পর প্রথম কর্মদিবসে তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। দুটি তদন্ত রিপোর্টে কতজনকে দোষী পেয়েছেন? এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, যেহেতু মামলা করেছি, মামলার তদন্তের ওপর এখন নির্ভর করছে। এই তদন্তগুলো হয়ত সাপোর্টিভ হবে মামলার জন্য। আর দুদকও যেহেতু মামলা করছে, আর আমি প্রকাশ্যে এগুলো বলতে চাই না। কারণ, এগুলো মামলাকে আরো বেশি অন্যদিকে নিয়ে যাবে। নসরুল হামিদ বলেন, যেহেতু দুদক করছে, মামলার তদন্ত পুলিশ করবে, আমাদের ইনিশিয়াল একটা তদন্ত আছে মন্ত্রণালয়ের। এই বিষয়গুলো ওই অবস্থায় থাকলে আরও বেটার হবে তারা যদি আরও ডিটেইলে যায়। এটা তো মন্ত্রণালয়ের বিষয় না, মন্ত্রণালয়ের অধীনে যে কোম্পানি থাকে পেট্রোবাংলা-এটা তাদের বিষয়। সেখানে আমরা কোনোভাবে দুর্নীতির ছিঁটেফোটা হলেও তা প্রশ্রয় দেয়া হবে না। সে অনুপাতে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

কয়লাখনিতে দুর্নীতি অনেক আগে থেকে সে দিকে ইঙ্গিত করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এটা তো আজকে এক দিনের ব্যাপার না। কারণ, এক লাখ ৪০ হাজার টন কয়লা যদি সরাতে হয় তাহলে ৩০ হাজার ট্রাক লাগবে। এটা তো আর একদিনে হয়নি, এটা ২০০৫ সাল থেকে স্টকে বিল্ডআপ করে করে দেখিয়েছে।

একটা দিক অন্তত ভালো হয়েছে যে, শেখ হাসিনা সরকারের সময় এই দুর্নীতিটা ধরা পড়েছে। বিদ্যুৎ বন্ধ থাকুক আর শেষ হয়ে যাক, যেটাই হোক না কেন, ধরা তো পড়েছে আমাদের হাতে। আমরা বিদ্যুৎ বিভাগকে দায়িত্ব দিয়েছিলাম তদন্ত করার জন্য। তারা সেখানে গিয়ে রিপোর্ট দিয়েছে। রিপোর্ট দেয়াতে তো ধরা পড়েছে, আর যদি ধরা না পড়ত, তাহলে তো আপনারা জানতে পারতেন না। বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ না হলে কেউ জানতে পারত না- তেল-গ্যাস কমিটির এই মন্তব্যের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, যদি ওটা বন্ধ না হতো, তাহলে আমরা জানতে পারতাম না, এটা সত্য কথা, এটা সবাই জানে। এটা ওনাদের আলাদা করে বলতে হবে না, এখানে আমরাই কথাটা বলেছি।

ঈদে বিদ্যুৎ পরিস্থিতি নিয়েও কথা বলেন প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, আমরা মনে করছি যে, গতবারের চেয়ে এবারের অবস্থা অনেক ভালো ছিল, বিশেষ করে বিদ্যুৎ ডাউনের ক্ষেত্রে। আমাদের সেন্ট্রাল রিপোর্টে আমরা দেখছি যে, বেশ ভালো ছিল। কিছু গ্রাম পর্যায়ে একদম ইনটেরিওরে অনেক সময় বিদ্যুতের বিভ্রাট হয়েছে, এটা লোকালি হয়েছে। কোনো এলাকায় হয়ত টান্সফরমার পুড়ে গেছে, সেখানে হয়ত বিদ্যুতের কিছু ঘাটতি ছিল। একমাত্র আমাদের ঘাটতি হয়েছে রংপুরে। যেহেতু ওখানে বিদ্যুতের পাওয়ার প্ল্যান্টগুলো বন্ধ হয়েছিল। আমরা একটা ছোট একটা প্ল্যান্ট চালু রেখেছিলাম যাতে আমাদের ভোল্টেজটা ঠিক থাকে। এছাড়া আর বড় বিষয় ছিল না। তবে আশা করছি আগামী মাসে পরিস্থিতি আরও ভালো হবে। কারণ জেনারেশন আমাদের হাতে যথেষ্ট আছে। নসরুল হামিদ বলেন, আমরা আশা করছি সেপ্টেম্বর নাগাদ আমরা অল্প পরিসরে চালু করতে পারব যেভাবে কয়লা উঠছে। আমরা কিছু কয়লা দিয়ে কিন্তু চালু করেছিলাম একটা প্ল্যান্ট। গত পাঁচ দিন যাবত ওখানে কিন্তু একটা প্ল্যান্ট চালু ছিল। আমরা ইতিমধ্যে সেটাকে কভারআপ করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি। একটা স্টক বিল্ডআপ করার জন্য। বাকিটা ওখানকার কয়লা দিয়ে হবে।

কয়লা আমদানি প্রসঙ্গে প্রতিমন্ত্রী বলেন, কয়লার খনিতে সাধারণত অনেক সময় ওয়াটার বিল্ডআপ করে যায়, খনি বন্ধ হয়ে যেতে পারে। তখন কী করবেন? আবার অনেক দেশে অনেক সময় ধস নামতে পারে, অনেক মানুষ মারা গেছে। খনিতে এই ধরনের পরিস্থিতি হতে পারে। সেগুলোর সময় কী করবেন। সেই ইমার্জেন্সি সময়ের জন্য আমরা একটা স্টক বিল্ডআপ করা দরকার বলে আমরা কিছু ইমপোর্ট করতে যাচ্ছি। কী পরিমাণ ইমপোর্ট করা হবে- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, লাখখানেক টনের মতো হবে। এই ইমপোর্ট করার জন্য সবচেয় বড় চ্যালেঞ্জ হলো ক্যারিং করা, চিটাগাং পোর্ট থেকে বা মোংলা পোর্ট থেকে বড় পুকুরিয়াতে নিয়ে আসাটা সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। কোন্‌ দেশ থেকে আনা হবে এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, এটা এখনও ঠিক হয়নি। টেন্ডার দেয়া হয়েছে। যারা পার্টিসিপেট করবে, তারা প্রস্তাব দেবে। বড়পুকুরিয়ায় কবে নাগাদ পুরো মাত্রায় উৎপাদন শুরু হবে জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা আশা করছি, অক্টোবর নাগাদ পুরো মাত্রায় যেতে পারব। এখন যে কয়লা উঠছে আস্তে আস্তে বিল্ডআপ হচ্ছে। প্রতিদিন হয়ত তিন হাজার টন দিতে পারবে। হয়তো সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে আমরা পুরোপুরি কয়লাটা পাব।

সামনে নির্বাচন- একে সামনে রেখে তেল বা বিদ্যুতের দাম কমানোর কোনো পরিকল্পনা আছে কি না? এমন প্রশ্নে প্রতিমন্ত্রী বলেন, সরকারের পরিকল্পনার ব্যাপারে বলতে পারি না। আমরা যা দিয়েছি বহু আগে, ছয় মাস আগে দিয়ে ফেলেছে বার্কে (বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন)। বার্কের ওপর ডিপেন্ড করে প্রাইস কী হবে, এটা সম্পূর্ণভাবে বার্কের আয়ত্তে প্রাইসের ব্যাপারে। এলএনজি বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এলএনজি পাইপলাইনে শুরু হয়ে গেছে, আমরা আস্তে আস্তে এটা বিল্ডআপ করবো। এখন আমাদের ৭৫ থেকে ১০০ এমএমসিএফ নেয়ার মতো ক্যাপাসিটি বিল্ডআপ হয়ে গেছে পাইপলাইনে এবং সেটা যাচ্ছে।

এলএনজির জন্য কী পরিমাণ ভর্তুকি লাগবে? এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ভর্তুকি এখানে খুব বেশি লাগবে না, কারণ আমাদের যে পাওয়ার প্ল্যান্টগুলো ডুয়েল ফুয়েল অর্থাৎ যেগুলো তেলে চলছিল, যেগুলো আমরা গ্যাসে চালাতে পারি, সেগুলোকে আমরা শিফট করে ফেলব। 

প্রসঙ্গত, গত জুলাইয়ের শেষ দিকে দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির বিপুলসংখ্যক কয়লার হদিস না পাওয়ার কথা জানা যায়। এই ঘটনায় বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানির (বিসিএমসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও একজন মহাব্যবস্থাপককে প্রত্যাহার করা হয়েছে। সেই সঙ্গে আরো একজন মহাব্যবস্থাপক ও উপ-মহাব্যবস্থাপককে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেছে কয়লাখনি কোম্পানিটির নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠান পেট্রোবাংলা কর্তৃপক্ষ। এ ঘটনায় দুটি তদন্ত কমিটি গঠিত হয়। তারা নির্ধারিত সময়ে প্রতিবেদনও জমা দেয়। 

  • কার্টসিঃ মানবজমিন/ আগস্ট ২৭, ২০১৮ 

Roads and highways still anything but safe

EDITORIAL

Lack of enforcement of rules continues to be the norm


Despite the massive student protest for safe roads, followed by numerous assurances from the authorities that the government will strictly ensure road safety, the number of deaths and injuries on roads and highways during the Eid holidays indicates that nothing has, in fact, changed.

As this newspaper reported, at least 31 people were killed and more than 100 others injured in road accidents during the three-day Eid holiday, while six others were killed in a single road crash the day after. 

On the following day, at least 15 people were again killed and 20 injured as a bus collided head-on with a human hauler on the Natore-Pabna highway in Baraigram Upazila, even though human haulers are banned from plying the highways.

Yet, if we look at the reports, many of the accidents somehow involved three-wheelers and other slow-moving vehicles that are banned from highways. Also, many of the vehicles involved were found to lack necessary paperwork, while some were also being driven by underage drivers. The fact that this has been the case is again indicative of the lack of enforcement of the most basic rules and regulations on highways, and how such failures by the authorities continue to cost the nation dearly. And the reason why this is particularly concerning is because it shows that most of the promises made by government officials following the demands for safer roads were, in fact, hollow. 

And although probe committees have been set up after many of the major accidents to investigate the causes of accidents, which too have been well established, most of their recommendations still remain largely ignored. What is the point of having such probe committees if their recommendations are going to be ignored?

Every year, we see countless lives being needlessly lost because of such apathy from the government. According to Bangladesh Jatri Kalyan Samity, 7,397 people were killed and 16,193 injured in road crashes last year. How many more precious lives have to be lost before we see major action being taken? Why is it so hard to enforce the existing rules and regulations and punish the violators?

  • Courtesy: The Daily Star/ Aug 27, 2018

Slow Vehicles on Highways: The ban exists only on paper

Tuhin Shubhra Adhikary


In an utter disregard for multiple government and court orders, locally-made three-wheelers and other low-speed vehicles continue to operate on national highways, causing frequent road crashes.
The plying of slow and fast vehicles side by side remains a major cause of accidents that claim thousands of lives every year. The number of low-speed vehicles increases during Eid rush, causing more fatalities, experts and transport leaders have said.

They enjoy full support from local political leaders, who consider the owners and drivers of these vehicles their vote bank and source of income, transport sector insiders said.

Besides, people living along the highways find these vehicles useful for travelling short distances as they are cheaper and available. This makes the implementation of the ban difficult.

In the meantime, accidents involving these banned vehicles continue. 

In the last six days, including the three-day Eid vacation, at least seven road accidents involved such vehicles (Nasiman, Kariman etc), killing 40 people and injuring 40 others, according to The Daily Star reports.

Six of these accidents took place on highways where they are banned.

The issue came to the fore again following a countrywide student protest demanding improved road safety after two college students were killed by a speeding bus in the capital on July 29.

MANY ORDERS, LITTLE RESULTS 

About 15 percent of all road accidents involve low-speed vehicles, many of them on the country's 3,790km national highways, according to the Accident Research Institute of Buet.

In most cases, these vehicles do not have registrations and fitness certificates while their drivers do not have licences, said Kazi Md Shifun Newaz, an assistant professor at ARI of Buet.

Given the risk, the Road Transport and Bridges Ministry in July 2015 issued an order, banning three-wheelers and other slow and unfit vehicles on highways. The ban came into effect on August 1.

The very next day, however, transport owners and drivers put up barricades on different highways protesting the ban and clashed with law enforcers, leaving at least 20 people injured and 75 vehicles damaged.

Soon, it was business as usual again.

The road transport ministry also repeatedly asked the Bangladesh Road Transport Authority (BRTA) to take vehicles incapable of travelling at 60km per hour off the highways, but to no avail.  

In January last year, the High Court intervened, imposing a total ban on plying of improvised motorised three-wheelers on highways.

The court also asked the home secretary, the BRTA, deputy commissioners and district police chiefs to place their reports on compliance of the directives before it every six months.

Manzill Murshid, a Supreme Court lawyer who was a party to the writ petition, said they were supposed to get copies of the compliance report but did not get any.

Several government probe committees, formed after some fatal road accidents, also recommended full implementation of the ban to reduce road accidents.

But, for most part, all these orders and recommendations remain only on paper.

BUT WHY?

The issue was discussed in the last meeting of the National Road Safety Council in November last year.

At the meeting, Road Transport and Bridges Minister Obaidul Quader talked about the demands by some lawmakers, who want the government to suspend the ban till the national election so they do not lose votes.

"Even though I want it [the ban], local representatives won't let it happen,” a meeting source quoted Quader as saying, as reported in The Daily Star on November 13. 

In many cases, local representatives ask the authorities to consider the financial condition of the drivers of such vehicles before implementing the ban, said Khondaker Enayet Ullah, secretary general of Bangladesh Road Transport Owners Association.

“I think such vehicles can operate on feeder roads, and not on national and regional highways compromising road safety,” he told this paper on Saturday.

Police should strictly enforce the ban instead of going after the owners and drivers of buses after each accident, Enayet added.  

In a programme last month, Osman Ali, general secretary of Bangladesh Road Transport Workers Federation, said around 20 lakh unregistered vehicles, including locally-made Nasiman and Kariman, are plying the roads and highways across the country.

Local political leaders and upazila chairmen want waiver for such vehicles ahead of the election, he added.

“We could not stop them. Police could not stop Nasiman, Kariman and Bhotbhoti from plying highways because of local lawmakers and upazila chairmen who let them operate for votes,” Osman told the meeting.

A top leader of transport workers in Narail said more than 5,000 three-wheelers operate in his district and local political leaders collect a large sum of money (Tk 100 to Tk 200 daily from each) from the drivers.

Whenever police want to take actions against these vehicles, the local leaders raise the “human issue”, he said. “But the fact is they want to protect their interests -- money and vote bank.”

Taking advantage of the situation, some unscrupulous policemen also collect money from them, he told this correspondent yesterday wishing anonymity.

Shifun Newaz of Buet said that besides strong monitoring, there should be separate lanes for slow vehicles on highways.

Except for a part of N-5 (Hatikumrul-Banpara) and some under-construction highways, no highway has separate lanes for such vehicles, he added.

AUTHORITIES BOAST 'SUCCESS'

Contacted, Nur Mohammad Mazumder, director (enforcement) of the BRTA, said the Highway Police was mainly responsible for implementing the ban. Besides, the BRTA often writes to the deputy commissioners to enhance their mobile court drives to enforce the ban.

Asked why they cannot stop these vehicles, he said, “We are trying our best with our limited workforce. But it is not possible to implement the ban fully unless people become aware [about traffic rules].”

He also blamed people's disregard for traffic law. “This must change.”

The BRTA has 13 posts of executive magistrates to run mobile courts in Dhaka and Chittagong. For years, most of these posts remained vacant, an official said.

Recently, six executive magistrates joined the BRTA, taking their total number to 11, he added.

Asked, Atiqul Islam, deputy inspector general of Highway Police, claimed they had been able to stop “80 percent of such vehicles” from operating on highways.

“Stopping the rest requires awareness and willingness of the people who use those vehicles for commuting,” he told this paper on Saturday.

“Even today [Saturday], we dumped 20 Leguna [human haulier] into water,” he added.

He declined to comment on political leaders' position about the ban.

Golam Faruk, general secretary of Bangladesh Auto Rickshaw-Auto Tempu Paribahan Sramik Federation, denied that they operate any auto-rickshaw or auto-tempu on highways. 

He said only battery-run three-wheelers ply the highways as police do not allow auto-rickshaws or similar vehicles powered by CNG or diesel on highways.

He said around 7,00,000 workers were involved in the sector but they were now having a difficult time as the government imposed the ban without making any alternative arrangements.

“When the ban was imposed in 2015, the government assured us that it will make a separate lane on every highway for our vehicles. But it did not do so,” he added.

  • Courtesy : The Daily Star/ Aug 27, 2018

Govt keeps failing to keep roads, highways safe for people

Editorial


AT LEAST 23 people are reported to have died and more than 100 people wounded in 17 road accidents during the holidays of Eid-ul-Adha, in August 21–23, across the country. In addition, in the latest reported accident of Saturday, at least 13 people, including two children and six women, died as a bus collided with a modified utility vehicle on the Rajshahi–Pabna Highway near Natore. The number of death increases during holidays when a large number of people rush out and in the capital Dhaka. Even during the holidays of Eid-ul-Fitr, in June 15–17, at least 41 are reported to have died in road accidents. 

The accident that took place in Natore killing at least 13 people is a reminder to the accident that took place on the Bogra-Rangpur Highway in Gaibandha at the time of Eid-ul-Fitr on June 23, in which 18 people died and 28 others became wounded. On June 23, at least 28 people died in road accidents in 12 districts although the Passenger Welfare Association put the figure of death at 51 in 16 accidents across the country that day.

All this clearly suggests that the moves that the government claims to have taken to stop accidents on roads and highways have failed, especially at Eid time. An investigation instituted after the Gaibandha accident showed that the driver of the bus dozed off on the wheel because of exertion from overwork and the driver was not properly licensed. In the case of the accidents that took place around Eid-ul-Adha, an investigation has already been set up. Although the report is yet to come, a number of traffic rules are reported to have been violated in the case of Natore accident. The major among them is the movement of slow-moving vehicles running on highways, adding to the chance for collision with fast-moving vehicles.

The government was to ensure that slow-moving vehicles are taken off the highways. Beside, eye-witness account says that the driver in the Natore case was underaged. And the Highway Police said that none of the bus and the utility vehicle involved in the accident had fitness certificates. The institution of investigation committees after accidents had become a routine affair but what the government needs to do is to act on the recommendations that such investigation committee come up with. The situation as a whole also betrays an aberration of a kind of the government from the promises it made in the wake of road safety protests by school and college students that it would properly attend to the issue of road administration. 

All this suggests that the promises that the government made in the wake of road safety protests were meant to defuse the situation and not to ensure road safety. It is time that the government understood that it must rid the road transport sector of corruption and irregularities if it wants to stop the string of death caused by traffic accidents.

  • Courtesy: New Age / Aug 27, 2018

Amartya Sen extends support to Shahidul Alam


Nobel laureate Amartya Sen has extended his support to acclaimed photographer Shahidul Alam who has been in prison since August 5 following his criticism of the government in a television interview.

Amartya said, ‘Freedom of expression, including through photojournalism, is extremely important for democracy. We have good reason to admire the work that Shahidul Alam has been doing with great skill and courage for many years.’ 

‘His work should receive praise and appreciation, rather than being ground for harsh treatment.’ he added. 

Amartya made the statements on Saturday during a campaign organised by Indian photographers in support of Shahidul, said a release issued by Drik Picture Library Limited on Sunday.

Amartya joined other Nobel laureates, global intellectuals, activists, academicians and journalists from across the world, who have either expressed concerns or demanded Shahidul’s immediate release since his arrest three weeks earlier.

Shahidul, 63, was detained by plainclothes police from his home after giving an interview to Al Jazeera about student protests which he documented and discussed in Facebook Live.

A Dhaka metropolitan magistrate’s court on August 12 sent Shahidul to prison after he was produced before the court following interrogation in custody for seven days.

Shahidul’s arrest has drawn wide condemnation from local and international rights groups, professionals and intellectuals, including Nobel laureates archbishop Desmond Tutu, Tawakkol Karman, Mairead Maguire, Betty Williams, Oscar Arias, Richard J Roberts, Jose Ramos-Horta, Jody Williams, Shirin Ebadi, Joseph Stiglitz and Muhammad Yunus.

Globally renowned intellectuals Noam Chomsky, Arundhati Roy, Naomi Klein, Vijay Prashad and Gayatri Chakravorty Spivak and several hundred nationally and internationally acclaimed citizens and rights activists alongside three UN human right experts also joined the Nobel laureates.

Shahidul is a recipient of multiple awards, including Shilpakala Padak (2014). The Lucie Foundation announced this year that he would be receiving the distinguished Humanitarian Award 2018. 

Shahidul is also a human rights activist and the founder of Drik Picture Library Limited and Pathshala South Asian Media Institute which has trained hundreds of photographers.

The Chobi Mela photo festival, which he started in 1999, brings photographers from around the world to Dhaka.

  • Courtesy: New Age /Aug 27, 2018

বিএনপির ঘাঁটিতে আ.লীগের দাপট

নির্বাচনের রাজনীতি: পর্ব ৪১


আসনটি বিএনপির ‘দুর্গ’ হিসেবে পরিচিত। তবে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪–দলীয় জোটের প্রার্থী হিসেবে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এখানে জাতীয় পার্টি থেকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সাংসদ নির্বাচিত হন মোহাম্মদ নোমান। শুরু থেকেই তাঁর সঙ্গে আওয়ামী লীগ নেতাদের বনিবনা নেই। এই জোট থেকে এবার আসনটিতে মনোনয়নপ্রত্যাশী রয়েছেন ৯ জন।

অন্যদিকে বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোট থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশী তিনজন। অথচ বিগত নির্বাচনগুলোতে এখানে বিএনপির প্রার্থী ছিলেন দুই ডজনের বেশি। কোন্দল এড়াতে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ১৯৯৬ ও ২০০১ সালের নির্বাচনে নিজেই প্রার্থী হন এই আসন থেকে।

আওয়ামী লীগের হালহকিকত

নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দল থেকে মনোনয়ন পান কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক হারুনুর রশিদ। এ মনোনয়নের বিরুদ্ধে ছিলেন স্থানীয় নেতা–কর্মীরা। তাঁরা যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোহাম্মদ আলী খোকনের পক্ষে অবস্থান নেন। মোহাম্মদ আলী বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এতে দ্বিধাবিভক্ত হয়ে যায় দল। হেরে গিয়ে রাগে-ক্ষোভে হারুনুর রশিদ নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর চার বছর এলাকায় যাননি। তবে এবারও নির্বাচনী মাঠে আছেন তিনি।

দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে এসেনসিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. এহ্সানুল কবির (জগলুল) প্রথমে মনোনয়ন পান। পরে দলের অনুরোধে তিনি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেন। জোটের প্রার্থী হিসেবে জাতীয় পার্টি থেকে মোহাম্মদ নোমান বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সাংসদ নির্বাচিত হন। রায়পুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল খোকনের ভাষ্য, শুরু থেকে আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে তাঁর দূরত্ব দেখা দেয়। টিআর, কাবিখাসহ বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ নিয়ে বিরোধের সৃষ্টি হয়।

ওই নির্বাচনের পর এহ্সানুল কবির আবার রাজনীতির মাঠ নিজ অনুকূলে নিয়ে আসেন। নেতা–কর্মীদের একটা বড় অংশ তাঁর পক্ষে রয়েছে।

২০১৭ সালের জুলাই মাসে এনআরবি ব্যাংকের জ্যেষ্ঠ ভাইস চেয়ারম্যান কাজী শহিদ ইসলাম (পাপুল) রায়পুরে রাজনীতির মাঠে হঠাৎ আবির্ভূত হন। গত ১৭ ডিসেম্বর হেলিকপ্টারে রায়পুরে গিয়ে দুস্থদের মধ্যে বিপুলসংখ্যক কম্বল বিতরণ করেন। আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগসহ দলের ২৫ নেতা-কর্মীকে মোটরসাইকেল দিয়ে কাছে টেনে নেন। দলের রায়পুর উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল খোকনও তাঁর পক্ষে অবস্থান নেন।

সব মিলে এই আসনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়নের দৌড়ে আছেন ৯ জন।


জাতীয় পার্টি থেকে সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন বর্তমান সাংসদ মোহাম্মদ নোমান, জাতীয় পার্টির কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য শেখ মো. ফায়িজ উল্যাহ শিপন। জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) থেকে আছেন আকতার হোসেন চৌধুরী।

দলীয় সূত্র জানায়, এক বছর ধরে দলে দ্বিধাবিভক্তি অনেকটা প্রকাশ্যে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক নেতা আরেক নেতার বিরুদ্ধে স্ট্যাটাস দিচ্ছেন। এখন কাজী শহিদ ইসলামকে ঠেকাতে ভেতরে-ভেতরে একজোট হারুনুর রশিদ ও এহ্সানুল কবির জগলুল।

এহ্সানুল কবির বলেন, শহিদ ইসলাম দলের কোনো পদে নেই। এমনকি সদস্যও নন। তিনি মোটরসাইকেল ও টাকা বিলি করে রাজনৈতিক পরিবেশ নষ্ট করছেন।

লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪–দলীয় জোটের প্রার্থী হিসেবে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এখানে জাতীয় পার্টি থেকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সাংসদ নির্বাচিত হন মোহাম্মদ নোমান। শুরু থেকেই তাঁর সঙ্গে আওয়ামী লীগ নেতাদের বনিবনা নেই। এই জোট থেকে এবার আসনটিতে মনোনয়নপ্রত্যাশী রয়েছেন ৯ জন।

অন্যদিকে বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোট থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশী তিনজন। অথচ বিগত নির্বাচনগুলোতে এখানে বিএনপির প্রার্থী ছিলেন দুই ডজনের বেশি। কোন্দল এড়াতে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ১৯৯৬ ও ২০০১ সালের নির্বাচনে নিজেই প্রার্থী হন এই আসন থেকে।

তবে শহিদ ইসলাম বলেন, ‘আমি দলের জন্য কাজ করছি। আমার টাকায় লক্ষ্মীপুর-২ আসনে দল চলছে। অন্যরা তো দলের জন্য কোনো টাকা খরচ করছেন না। কর্মীদের পাশে দাঁড়াচ্ছেন না। বিভক্তির অভিযোগ সঠিক নয়।’

বর্তমান সাংসদ মোহাম্মদ নোমান বলেন, ‘আমি জাতীয় পার্টি থেকে নির্বাচিত হলেও আওয়ামী লীগ নেতাদের নিয়েই উন্নয়নমূলক কাজ করেছি। আশা করছি, এবারও জোট থেকে মনোনয়ন পাব।’

বিএনপি জোটে তিনজন

২০০১ সালের নির্বাচনে এই আসনে বিএনপি থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন ২৯ জন। ১৯৯৬ সালে ছিলেন ২৪ জন। শেষ পর্যন্ত কোন্দল এড়াতে খালেদা জিয়া দুবারই এই আসন থেকে নির্বাচন করেন।

নেতা-কর্মীদের ভাষ্য, রায়পুর বিএনপির ‘দুর্গ’ হওয়ায় প্রার্থিতা পেলেই জয় মোটামুটি নিশ্চিত। তাই এ আসনে সম্ভাব্য প্রার্থীর সংখ্যা বেশি। খালেদা জিয়া নির্বাচিত হওয়ার পর আসনটি ছেড়ে দিলে ২০০১ সালে উপনির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন আবুল খায়ের ভূঁইয়া।

নেতা-কর্মীদের অভিযোগ, ২০০১ ও ২০০৮ সালে দুবার নির্বাচিত হওয়ার পর এই আসনের রাজনীতি চলছে খায়ের ভূঁইয়ার ইশারায়। দলের অন্য কেউ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার আগ্রহের কথা প্রকাশ করলে তাঁকে নানাভাবে হেনস্তা করা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে।

খায়ের ভূঁইয়া ছাড়া এবার মাঠে রয়েছেন দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নিরাপত্তা উপদেষ্টা লে. কর্নেল (অব.) আবদুল মজিদ। এ ছাড়া লক্ষ্মীপুর জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির রুহুল আমিন ভূঁইয়ার জন্যও আসনটি দাবি করা হচ্ছে।

আবদুল মজিদ বলেন, ‘এই আসনে বিএনপির রাজনীতিতে স্বৈরতন্ত্র চলছে। কেউ প্রার্থী হলে হামলা-মামলা দেওয়া হয়। তাই অনেকেই আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন। কিন্তু খায়ের ভূঁইয়া এবার অঙ্কে ভুল করেছেন। আমি ছেড়ে দেওয়ার মানুষ না। আশা করি দল আমাকে মনোনয়ন দেবে।’

সার্বিক বিষয়ে আবুল খায়ের ভূঁইয়া বলেন, ‘দলের মধ্যে মান-অভিমান ছিল। সেগুলো মিটিয়ে ফেলেছি। দলের সব কর্মসূচি পালন করছি। এলাকার তৃণমূলের নেতা-কর্মীসহ অনেকেরই বিপদ-আপদে পাশে দাঁড়াচ্ছি।’

কোনোভাবেই আসনটি বিএনপিকে ছেড়ে দেবেন না বলে জানিয়েছেন রুহুল আমিন ভূঁইয়া। তিনি বলেন, প্রয়োজনে স্বতন্ত্র থেকেও নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত আছে।

  • কার্টসিঃ প্রথম আলো/ আগস্ট ২৭,২০১৮ 

‘বড়পুকুরিয়া কয়লা লোপাটে মন্ত্রী-এমপিরাও জড়িত’

তেল গ্যাস খনিজসম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি


তেল-গ্যাস, খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেছেন, বড়পুকুরিয়া খনির কয়লা লোপাটের সাথে শুধুমাত্র কর্মকর্তারা জড়িত নয়, এর সাথে মন্ত্রী-এমপি ও উপদেষ্টারাও জড়িত। তাদেরও বিচার করতে হবে।

তিনি রোববার দুপুরে দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে ফুলবাড়ী গণআন্দোলনের একযুগ ‘ফুলবাড়ী ট্রাজেডি দিবস’ উপলক্ষে তেল গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি আয়োজিত এক সমাবেশে এসব কথা বলেন।

অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, তদন্তের নামে অতীতের মতো যদি কয়লা লোপাটের ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করা হয় তাহলে গণআন্দোলনের মাধ্যমে প্রকৃত দোষীদের চিহিৃত করে গণআদালতে তাদের বিচার করা হবে।

তিনি বলেন, বড়পুকুরিয়া কয়লা লুণ্ঠনের ঘটনা নতুন নয়। সারাদেশে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় যে লুটপাট চলছে, বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির কয়লা লুণ্ঠন তারই একটি অংশ।

আনু মুহাম্মদ বলেন, শুধু কয়লা লুণ্ঠন হয়নি, ব্যাংক থেকে টাকা লুণ্ঠন, দেশের বিভিন্ন স্বার্থ চুক্তির মাধ্যমে বিদেশিদের হাতে তুলে দিয়ে কমিশন বাণিজ্য চলছে সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায়।

তিনি বলেন, রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের মধ্য দিয়ে আজ সুন্দরবনকে ধ্বংস করে দেয়া হচ্ছে। তাই বাংলাদেশের জাতীয় সম্পদ আজ হুমকির মুখে। এই জাতীয় সম্পদ রক্ষা করতে হলে ২০০৬ সালের ২৬ আগস্ট যেভাবে ফুলবাড়ীতে গণআন্দোলন গড়ে উঠেছিল, এখন সারাদেশে সেই গণআন্দোলন গড়ে উঠার প্রয়োজন হয়ে দেখা দিয়েছে।

প্রতিবাদ সমাবেশে তেল গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির ফুলবাড়ী শাখার আহ্বায়ক সৈয়দ সাইফুল ইসলাম জুয়েলের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন, গণসংহতি আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের সম্পাদক মোশারফ হোসেন নান্নু, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা শাহীন রহমান, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা আনছার আলী দুলাল, কেন্দ্রীয় নেতা এসএম খালেক, আদিবাসী নেতা রবীন্দ্রনাথ সরেন, জাসদের কেন্দ্রীয় নেতা রফিকুল ইসলাম, জাতীয় ক্ষেতমজুর সমিতি ও গণফ্রন্টের কেন্দ্রীয় নেতা সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম বাবলু, তেল গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির দিনাজপুর জেলা শাখার আহ্বায়ক মোশারফ হোসেন, সদস্য সচিব মনিরুজ্জামান, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি চন্দন সরকার, সিপিবি দিনাজপুর জেলা সভাপতি অ্যাডভোকেট মেহেরুল ইসলাম, ফুলবাড়ী শাখার সাধারণ সম্পাদক এসএম নুরুজ্জামান জামান প্রমুখ।


এদিকে, ফুলবাড়ীবাসীর সাথে সম্পাদিত ছয় দফা চুক্তির বাস্তবায়ন ও ফুলবাড়ী খনি আন্দোলনের শীর্ষ নেতৃবৃন্দের নামে এশিয়া এনার্জির দায়ের মামলা প্রত্যাহের দাবি জানিয়ে পৃথক কর্মসূচির মধ্যে দিয়ে পালিত হয়েছে ফুলবাড়ী গণআন্দোলনের একযুগ ফুলবাড়ী ট্রাজেডি দিবস।

তেলগ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির ফুলবাড়ী শাখা ও অরাজনৈতিক সম্মিলিত পেশাজীবী সংগঠন পৃথক পৃথক কর্মসূচিতে অভিন্ন দাবিতে দিবসটি পালন করে।

দিবসটি উপলক্ষে রোববার সকাল ১০টায় তেল গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি ফুলবাড়ী শাখার উদ্যোগে স্থানীয় নিমতলা মোড় থেকে একটি শোক র‌্যালি বের হয়, র‌্যালিটি পৌর শহর প্রদক্ষিণ করে ২০০৬ সালের ২৬ আগস্ট শহীদদের স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পমাল্য অর্পণ করে।

দিনের শুরুতে সকাল সাড়ে ৯টায় ফুলবাড়ী বাজার থেকে সম্মিলিত পেশাজীবী সংগঠনের ব্যানারে ফুলবাড়ী পৌরসভার মেয়র মুরতুজা সরকার মানিকের নেতৃত্বে শোক র‌্যালি বের হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে গিয়ে শেষ হয়।

পরে সেখানে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে শহীদ বেদীতে পুষ্পমাল্য অর্পণ, আলোচনা ও শপথ বাক্য পাঠ করান মেয়র মুরতুজা সরকার মানিক।

এসময় বক্তব্য দেন, পেশাজীবী সংগঠনের সদস্য সচিব শেখ সাবীর আলী, ব্যবসায়ী নেতা ফারুক আহম্মেদ, স্বর্ণশিল্পী শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মানিক মন্ডল।

এরপরে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর ৭ দফা দাবি সম্বলিত স্মারকলিপি প্রদান করেন সম্মিলিত পেশাজীবী সংগঠন।

উল্লেখ্য ২০০৬ সালের এই দিনে (২৬ আগস্ট) উম্মুক্ত পদ্ধতিতে ফুলবাড়ী কয়লা খনি বাস্তবায়নের বিরুদ্ধে এশিয়া এনার্জি নামে একটি বহুজাতিক কোম্পানির ফুলবাড়ী অফিস ঘেরাও কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে প্রাণ হারান আমিন, সালেকিন ও তরিকুল নামে তিন যুবক। এ ঘটনায় আহত হয় কয়েক’শ মিছিলকারী। এর পর ফুলবাড়ীবাসীর গণআন্দোলনের মুখে ৩০ আগস্ট তৎকালিন সরকার ফুলবাড়ীবাসীর সাথে ছয় দফা শর্তে একটি সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর করে। এরপর থেকে ২৬ আগস্ট ফুলবাড়ী দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।

  • কার্টসিঃ পরিবর্তন/ আগস্ট ২৬,২০১৮ 

Sunday, August 26, 2018

নিরাপদ সড়ক না হওয়ার জন্য সরকার দায়ী



বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান বলেন, সরকার নিরাপদ সড়ক আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে মামলা, গ্রেফতার ও নির্যাতন করে রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে আরও ঘোলাটে করে তুলেছে। আন্দোলনে তৃতীয় পক্ষ ঢুকে পড়েছে-তারা হলো ছাত্রলীগ। তাদেরকে আইনের আওতায় আনতে হবে।

তিনি বলেন, নিরাপদ সড়ক আন্দোলনকারীদের আন্দোলনকে সর্বমহল ন্যায্য আন্দোলন বলে ঘোষণা দিয়েছিল। তরুণ তরুণী শিক্ষার্থীরা শাসক শ্রেণির চোখ খুলে দিয়েছিল বলেও প্রশংসিত হয়েছিল। কিন্তু সরকার ক্ষমতা হারানোর আতঙ্কে ভিন্ন পথ অবলম্বন করেছে। অবিলম্বে আমরা আটককৃতদের মুক্তি দিয়ে ও আক্রমনকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে পরিস্থিতি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আনার দাবি জানাচ্ছি।

গণতান্ত্রিক বাম মোর্চার সমন্বয়ক ও বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, নিরাপদ সড়ক আন্দোলনকারীদের দমন-নিপীড়ন, মামলা হামলা, গ্রেফতার ও নির্যাতন করা অন্যায় কাজ। তাদেরকে গ্রেফতার করে জেলে রেখেছে। আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই। তিনি বলেন, নিরাপদ সড়ক আন্দোলনকারীদের পুরস্কৃত না করে জেলে রাখা হয়েছে। এই আন্দোলন ছিল শান্তিপূর্ণ। বিগত ৪৭ বছরে সরকার নিরাপদ সড়কের ব্যাপারে কোনো কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করেনি।

বাংলাদেশের বিপ্লবী গণতান্ত্রিক পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু বলেন, কিশোর-কিশোরী ছেলে-মেয়েরা নিরাপদ সড়কের জন্য রাজপথে আন্দোলন করেছে। সড়ক দুর্ঘটনায় প্রতিদিন অনেক লোক মারা যাচ্ছে। এই আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সরকার তাদের সঙ্গে বিরূপ আচরণ করেছে। ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ আন্দোলনকারীদের দাবি সরকার না মানায় আমি তীব্র নিন্দা জানাই। আমি অবিলম্বে সরকারকে আন্দোলনকারীদের দাবি মেনে নেওয়ার জন্য আহবান জানাই।