দেশবাসীর পছন্দের রেলে চিরন্তন দুর্দশা
পার্থ সারথি দাস
দেশের জরাজীর্ণ রেলব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে শেখ হাসিনার বিশেষ নির্দেশনায় আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে গত প্রায় এক দশকে একের পর এক প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছায় পৃথক ‘রেলপথ মন্ত্রণালয়’ গঠন করা হয়েছে ২০১১ সালে। আওয়ামী লীগের সব শেষ দুই মেয়াদে পর পর তিনজন মন্ত্রী হাল ধরেছেন মন্ত্রণালয়ের। কিন্তু বেগতির রেলে গতি আর আসছে না। গৃহীত প্রকল্পগুলোর বেশির ভাগই চলছে ঢিমেতালে। প্রকল্প ঝুলে থাকায় দাতাদের অনেকে অর্থ প্রত্যাহারও করে নিয়েছে।
এক হিসাবে দেখা গেছে—২০১৬ সালের মধ্যেই এসব প্রকল্পের পেছনে ২৯ হাজার কোটি টাকা খরচ হয়ে গেছে (২০০৯ সাল থেকে শুরু হয়ে পরের সাত বছরে)। বর্তমান সময় পর্যন্ত ধরলে খরচ আরো বেড়ে যাবে। প্রতিবছর যাত্রীর চাহিদা বাড়লেও বিভিন্ন জেলায় বাড়তি ট্রেন ও ট্রেনে কাঙ্ক্ষিত নতুন বগি লাগানো হচ্ছে না। দেখা গেছে, প্রধানমন্ত্রীকে দিয়ে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করানোর ৯ বছরেও কোনো কোনো প্রকল্পে দৃশ্যমান অগ্রগতি হয়নি। ১৮০০ কোটি টাকা থেকে ১৮ হাজার কোটি টাকা ব্যয়সীমা ছাড়ালেও বলা হচ্ছে প্রকল্পের ‘কাজ চলছে’।
রেলের উন্নয়নের নামে অব্যবস্থাপনার ঘটনায় অভিযোগের আঙুল উঠেছে রেলওয়ের বর্তমান মহাপরিচালক মো. আমজাদ হোসেনের দিকেও। অভিযোগ হচ্ছে, তাঁরই ইশারায় সংশ্লিষ্টরা অনেক ক্ষেত্রে সম্ভাব্যতা যাছাই না করেই উন্নয়ন প্রকল্পের ছক তৈরি করেছেন; পরে চলছে নকশার নামে নীলনকশার বাস্তবায়ন!
দেখা গেছে, বৈরী আবহাওয়ার অজুহাত, দরপত্র আহ্বানে দেরি, গাড়ি ও যন্ত্রপাতি আনতে দেরিসহ বিভিন্ন কারণে প্রকল্পের কাজ ঝুলিয়ে ব্যয় বাড়ানো হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গুটিকয়েক বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে গোপন সমঝোতার মাধ্যমেই প্রকল্পের কাজ ভাগবাটোয়ারা হচ্ছে। ফলে সরকারের দেওয়া বিপুল বরাদ্দ থেকে আশানুরূপ ফল মিলছে না। এদিকে সড়কনির্ভর যোগাযোগ ব্যবস্থার ওপর চাপ বেড়েই চলেছে, বাড়ছে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর মিছিল। অথচ প্রতিবেশী দেশ ভারতেও রেল যোগাযোগ নিরাপদ, সাশ্রয়ী ও নির্ভরযোগ্য হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আর বাংলাদেশে লোকসান থেকেই বেরোতে পারছে না। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে বাংলাদেশ রেলওয়ের লোকসান হয়েছিল প্রায় ১২০০ কোটি টাকা। যাত্রী ছিল সাত কোটি ৭৮ লাখ। সদ্যসমাপ্ত অর্থবছর ২০১৭-১৮-এ লোকসান বেড়ে হয়েছে ১৬০০ কোটি টাকা। অথচ আগের অর্থবছরের চেয়ে যাত্রী সোয়া কোটি বেশি ছিল এই সময়ে। মোট যাত্রী ছিল ৯ কোটি।
অনিয়মের অভিযোগ প্রসঙ্গে রেলের মহাপরিচালক মো. আমজাদ হোসেন গতকাল রবিবার বিকেলে কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘যোগ্য প্রতিষ্ঠানই কাজ পাচ্ছে। এখানে অন্য কোনো বিষয় নেই।’ কাজ না হওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘টঙ্গী-ঢাকা তৃতীয়-চতুর্থ লাইনের সম্ভাব্যতা যাচাই করা হয়নি এটা সত্য। তবে প্রকল্পের কাজে গতি আসবে।’
বুয়েটের অধ্যাপক ড. সামছুল হক কালের কণ্ঠকে বলেন, যাত্রীসেবা বাড়ে এমন প্রকল্প নেওয়া হয়নি। প্রকল্প যথাসময়ে বাস্তবায়নের দক্ষতাও তৈরি হয়নি। ফলে অমিত সম্ভাবনার রেলকে নিয়ে সরকার ও জনগণের যে চাওয়া তা পূরণ হচ্ছে না। বাংলাদেশ রেলওয়ের সাবেক মহাপরিচালক তাফাজ্জল হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়নের তদারকি ব্যবস্থা জোরদার করতে হবে।
দেখা গেছে, ২০০৮-০৯ থেকে ২০১৩-১৪ অর্থবছরে শেষ হয়েছে রেলওয়ের ২৪ প্রকল্প। এ জন্য ব্যয় হয়েছে তিন হাজার ৮২০ কোটি টাকা। কিন্তু এই যোগাযোগব্যবস্থায় কাঙ্ক্ষিত পরিবর্তন কই! বর্তমানে যে ৪৫টি প্রকল্প চলছে এর বেশির ভাগ নেওয়া হয়েছে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার ক্ষমতায় আসার পর। মোট ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৯৫ হাজার কোটি টাকা। এদিকে আওয়ামী লীগ সরকারের ৯ বছরে রেলের পেছনে খরচ ৫০ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। ২০০৯-১০ থেকে ২০১৬-১৭ অর্থবছর পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে ৩৮ হাজার ১৮৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে উন্নয়ন প্রকল্পের পেছনে গেছে ২৩ হাজার ৫৮৬ কোটি টাকা, বাকি টাকা ব্যয় হয় পরিচালন খাতে। ২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেটেও রেলে বরাদ্দ ছিল ১৬ হাজার ১৩ কোটি টাকা।
জানা যায়, প্রকল্প ব্যয়ের প্রায় ৭৫ শতাংশ বিদেশ থেকে নেওয়া হয়েছে ঋণ হিসেবে। ঋণ সহায়তাকারী দেশগুলোর মধ্যে আছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক-এডিবি, জাপানের জাইকা, দক্ষিণ কোরিয়া, ভারত ও চীন। এডিবি রেলে সবচেয়ে বেশি ঋণ সহায়তা দিচ্ছে। কিন্তু প্রকল্প সময়মতো বাস্তবায়ন না হওয়ায় গত বছর এডিবি একাধিক প্রকল্পের অর্থ ফেরত নিয়ে গেছে। গত বছর প্রকল্পের আংশিক ঋণ বাতিল করে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। সময়মতো ব্যবহার না হওয়ায় চারটি প্রকল্পে ছয় কোটি ডলার বা ৪৮০ কোটি টাকা ঋণ প্রত্যাহার করে নিয়েছে সংস্থাটি। বিশ্বব্যাংক তার আগেই মুখ ফিরিয়ে নেয়। তবে ভারত সরকার তিন দফায় বিভিন্ন প্রকল্পে ঋণ দিয়েছে। চীন সরকার পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পে ঋণ সহায়তা দিচ্ছে।
পদ্মা সেতুতে কাজ ১৫%
বাংলাদেশ সেতু বিভাগের অধীন মূল পদ্মা সেতুর কাজ ৫৬ শতাংশের বেশি এগিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী চেয়েছিলেন, এই দোতলা সেতু চালুর প্রথম দিন থেকেই একই সঙ্গে বাস ও ট্রেন চলাচল করবে। ট্রেন চালাতে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের অধীন প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে যশোর পর্যন্ত যাবে ১৬৯ কিলোমিটার রেলপথ। ২০১৬ সালের ১ জানুয়ারি প্রকল্পের যাত্রা শুরু। তবে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সব শেষ অগ্রগতি প্রতিবেদনেই বলা হয়েছে, এ পর্যন্ত কাজ হয়েছে ১৫ শতাংশ। প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তরও স্থাপন হয়নি। অথচ সরকারের ফাস্ট ট্র্যাকের ১০ মেগা প্রকল্পের মধ্যে এ প্রকল্প আছে। প্রকল্প বাস্তবায়নে ২১ হাজার ৩৬ কোটি টাকা ঋণ দিতে গত এপ্রিলে চুক্তি করেছে চীনের এক্সিম ব্যাংক।
ছয় বছরেও শুরু হয়নি
ঢাকা থেকে টঙ্গী হয়ে দেশের বিভিন্ন এলাকার মধ্যে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৮০টি বিভিন্ন ধরনের ট্রেন চলাচল করে। তবে প্রয়োজনীয় রেলপথের অভাবে প্রায়ই টঙ্গীর বাইরে সিগন্যালে অপেক্ষা করতে হয় ট্রেনগুলোকে। এ সংকট থেকে উদ্ধারে ঢাকা-টঙ্গী রেলপথ তৃতীয় ও চতুর্থ লাইন এবং টঙ্গী-জয়দেবপুর ডাবল লাইন নির্মাণে ২০১২ সালের ১ জুলাই প্রকল্প নেওয়া হয়। প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে এক হাজার ১০৬ কোটি ৮০ লাখ টাকা, শুরুর দিকে এই ব্যয় ধরা হয়েছিল ৮৪৮ কোটি ৬০ লাখ টাকা। পাঁচ বছর শেষে গত বছরের জুনে প্রকল্প শেষ হওয়ার কথা ছিল। তবে সঠিকভাবে সম্ভাব্যতা যাচাই না করা ও ভুল নকশার ফলে প্রকল্পের কাজ শুরুই হয়নি। প্রকল্পের আওতায় সিগন্যালিংসহ ঢাকা-টঙ্গীর মধ্যে বিদ্যমান ডুয়াল গেজ ডাবল লাইনের সমান্তরালে ৪৯ কিলোমিটার নতুন দুটি ডুয়েল গেজ লাইন নির্মাণ করার কথা। এ জন্য ভারতীয় ঋণ মিলবে ৯০২ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। গত ২৪ জুলাই ঢাকা-টঙ্গী তৃতীয় ও চতুর্থ এবং টঙ্গী-জয়দেবপুর দ্বিতীয় ডুয়াল গেজ রেললাইন নির্মাণে ভারতীয় প্রতিষ্ঠান অ্যাফকন্স ও কল্পতরু পাওয়ার ট্রান্সমিশনের সঙ্গে চুক্তি করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে।
৯ বছরে ৯ শতাংশ
চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে রামু হয়ে কক্সবাজার ও রামু থেকে গুনধুম পর্যন্ত প্রায় ১২৮ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণের প্রকল্প নেওয়া হয় ২০১০ সালের ১ জুলাই। ব্যয় ধরা হয় প্রায় ১৮০০ কোটি টাকা। প্রকল্পের ব্যয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার ৩৪৪ কোটি টাকায়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দিয়ে এই প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করানো হয়েছিল ২০১১ সালে। তবে প্রায় আট বছরে প্রকল্পের অগ্রগতি হয়েছে মাত্র ৯ শতাংশের মতো। এই ধীরগতির কারণ জানতে চাইলে প্রকল্প পরিচালক মো. মফিজুর রহমান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘প্রকল্পের জন্য জমি লাগবে এক হাজার ৩৬৪ একর। তার মধ্যে চট্টগ্রামে লাগবে ৩৬৪ একর; এর মধ্যে ৭০ শতাংশ পেয়েছি। কক্সবাজারে লাগবে হাজার একর; তার ৫০ শতাংশ পাওয়া গেছে।’ তিনি জানান, পাইলিংসহ প্রকল্পের মাটি ভরাটকাজ শুরু হয়েছে। তবে বর্ষার জন্য পুরোদমে কাজ করা যাচ্ছে না। প্রথম ধাপে ১০০.৮৩১ কিলোমিটার সিঙ্গেল লাইন ডুয়াল গেজ ট্র্যাক নির্মাণ করা হবে। দ্বিতীয় ধাপে রামু থেকে মিয়ানমারের কাছের ঘুনধুম পর্যন্ত ২৮.৭৫২ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ করা হবে। চুনতি অভয়ারণ্যে হাতি পারাপারের জন্য উড়াল সেতু করা হবে। সে জন্য প্রায় পাঁচ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হবে। প্রকল্পের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না-তমা জেভি এবং চায়না সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন কম্পানি-ম্যাক্স জেভি।
অজুহাত বৃষ্টির : ভারত ও নেপালে পণ্য পরিবহন সুবিধার বিষয়টি মাথায় রেখে খুলনা-মোংলা সমুদ্রবন্দর ৬৪ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণে প্রকল্প নেওয়া হয়েছিল ২০১০ সালের ১ ডিসেম্বর। মোংলা বন্দর থেকে রেলপথটি খুলনার ফুলতলায় গিয়ে যুক্ত হবে। প্রায় আট বছরে কাজের অগ্রগতি ৩৫ শতাংশের বেশি। ভারতীয় ঋণে তিন হাজার ৮০১ কোটি ৬১ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি গত জুনের মধ্যে শেষ করার কথা ছিল। জানা গেছে, প্রকল্পের ভূমি অধিগ্রহণ ও ১৪ কিলোমিটার রেলপথের মাটি ভরাটের কাজ হয়েছে। ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান লারসন অ্যান্ড টার্বো ৫.১৩০ কিলোমিটার দীর্ঘ রূপসা রেল সেতুর কাজ করছে। প্রকল্প পরিচালক মজিবুর রহমান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমি দায়িত্ব নিয়েছি দুই মাস হলো। গত জুনের মধ্যে শেষ করার কথা। তবে আমরা ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাব করেছি। তা পরিকল্পনা কমিশনে আছে। রূপসা রেল সেতুর জন্য পাইলিং শুরু করা হয়েছিল। বর্ষার কারণে কাজ করা যাচ্ছে না।’
৭ বছরে অগ্রগতি ১২%
কুলাউড়া-শাহবাজপুর ৪৫ কিলোমিটার রেলপথ বন্ধ ১৫ বছর ধরে। ১৮৮৫ সালে আসাম-বেঙ্গল রেলওয়ের অংশ হিসেবে এটি চালু করা হয়েছিল। বড়লেখা উপজেলার লাতু সীমান্ত দিয়ে কুলাউড়া রেলওয়ে জংশন হয়ে আসাম রেলওয়ের ট্রেন দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে চলাচল করত ‘লাতুর ট্রেন’। ২০০২ সালের ৭ জুলাই লাইনটি বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশ রেলওয়ে। মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর ২০১১ সালের ১ জুলাই কুলাউড়া-শাহবাজপুর রেলপথ পুনর্বাসন প্রকল্প নেওয়া হয়। ব্যয় ধরা হয় ৬৭৮ কোটি ৫১ লাখ টাকা। এর মধ্যে ভারত সরকার দেবে ৫৫৫ কোটি ৯৯ লাখ টাকা। সাত বছরে প্রকল্পে অগ্রগতি হয়েছে প্রায় ১২ শতাংশ। প্রকল্প পরিচালক মো. তানভীরুল ইসলাম বলেন, ‘বিভিন্ন কারণে আগে কাজ শুরু হয়নি। এখন আমরা প্রস্তুতি শুরু করেছি। ৩০ আগস্ট থেকে পুরোদমে কাজ শুরু হবে।’
এ ছাড়া ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথ উন্নয়নের অংশ হিসেবে ২০০৬ সালে নেওয়া তিনটি প্রকল্পের একটি ছিল টঙ্গী থেকে ভৈরব বাজার ডাবল লাইনে উন্নীত করা। এক দশক পেরিয়ে গেলেও রেলওয়ে সেক্টর ইনভেস্টমেন্ট প্রোগ্রাম : প্রথম কিস্তি’ শীর্ষক প্রকল্পের কাজ শেষ হয়নি।
ইঞ্জিন-বগিতে নজর নেই
দেশে দৈনিক ৮৮টি আন্তনগর, ১২৬টি লোকাল, ১৩২টি মেইল এক্সপ্রেস ও ডেমু ট্রেন, চারটি আন্তদেশীয়সহ ৩৫০টি ট্রেন চলাচল করছে। কিন্তু ট্রেনের চাহিদা আছে কমপক্ষে দ্বিগুণ—কোচ ও ইঞ্জিন না থাকায় চালু করা সম্ভব হচ্ছে না। বাংলাদেশ রেলওয়ের তথ্যানুসারে রেলের পূর্ব ও পশ্চিমাঞ্চলে ৮৫ শতাংশ মেয়াদ পেরোনো ইঞ্জিন দিয়েই ট্রেন পরিচালনা করতে হচ্ছে। দুই রেল অঞ্চলে ২৭২টি ইঞ্জিন আছে—তার মধ্যে ১৫ শতাংশের মেয়াদ রয়েছে। একটি ইঞ্জিনের আয়ুষ্কাল সর্বোচ্চ ২০ বছর হয়। কিন্তু রেলওয়ের ৮৫ শতাংশ ইঞ্জিনের বয়স ৬০ বছর পেরিয়েছে। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর ২৭০টি কোচ ও ৪৬টি ইঞ্জিন আমদানি করা হয়েছে। ১১৬টি নতুন ট্রেন চালু করা হয়েছে। বর্তমানে ৪৮টি উন্নয়ন প্রকল্পের মধ্যে বগি ও ইঞ্জিন কেনার প্রকল্প আছে মাত্র ছয়টি। চীন থেকে ২০টি ডেমু ট্রেন কেনার প্রকল্পেই বেশি গতি ছিল। প্রায় ৬০০ কোটি টাকায় আমদানি করা এসব ট্রেন নিয়মিত চলে না। ফলে এগুলো যাত্রী ভোগান্তির কারণ হয়েছে।
- কার্টসিঃ কালের কণ্ঠ/আগস্ট ২৭,২০১৮