Search

Thursday, September 27, 2018

নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে সংলাপে বসুন

সম্পাদকীয়

উত্তপ্ত হচ্ছে রাজনৈতিক পরিবেশ


আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো ঐক্যবদ্ধভাবে সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের জন্য মাঠে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছে। অপর দিকে ক্ষমতাসীন দলের নেতৃত্বাধীন জোট তা প্রতিরোধের ঘোষণা দিয়েছে। স্বাভাবিকভাবে আগামী দিনের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে এখন উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা কাজ করছে। 

নির্বাচন কমিশন বছরের শেষে জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে, কিন্তু নির্বাচন কিভাবে অনুষ্ঠিত হবে তা নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে। বিরোধী দলগুলোর পক্ষ থেকে নির্বাচনের আগে সংসদ ভেঙে দেয়া, নির্বাচনকালীন সরকার গঠন এবং নির্বাচনে সেনা মোতায়েনের দাবি জানিয়েছে। এসব দাবি আদায়ে রাজপথে আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। এসব দাবির ব্যাপারে ক্ষমতাসীন দলের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোনো জবাব পাওয়া যায়নি; বরং বর্তমান সরকারের অধীনে সংবিধান মোতাবেক নির্বাচন হবে বলে ক্ষমতাসীন দলের নেতারা জানিয়েছেন। 

এর মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাতে বলেছেন, সরকার অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে চায় এবং নির্বাচনে সব দল অংশগ্রহণ করবে। প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্য থেকে স্পষ্ট ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির মতো নয়, বরং সবার অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের ব্যাপারে সরকারও আগ্রহী। কিন্তু নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণের পরিবেশ ক্ষমতাসীন দলকে সৃষ্টি করতে হবে। বাংলাদেশের নির্বাচনের অতীত অত্যন্ত রক্তাক্ত ও সঙ্ঘাতময়। ক্ষমতায় থেকে কোনো দল সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে পারেনি। দলনিরপেক্ষ ব্যক্তিদের দিয়ে নির্বাচনকালীন সরকারের জন্য এক সময় বর্তমান প্রধানমন্ত্রী আন্দোলন করেছিলেন। তার নেতৃত্বে আন্দোলনের মধ্য দিয়ে দেশে নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। আদালতের কাঁধে বন্দুক রেখে এই তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বিলোপ করার কারণে এখন নির্বাচনকালীন সঙ্কট সৃষ্টি হয়েছে। 

দেশে যদি সত্যিকার অর্থে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতার পরিবর্তন করতে হয়, তাহলে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আলোচনা শুরু হওয়া দরকার। নির্বাচনের তিন মাসের কম সময় রয়েছে। নির্বাচন কমিশন তফসিল ঘোষণার প্রস্তুতি নিচ্ছে। কিভাবে নির্বাচন হবে তার সমাধান যদি এখন করা সম্ভব না হয়, তাহলে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার সাথে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি চূড়ান্তভাবে সঙ্ঘাতময় হয়ে উঠবে। 

আমরা আশা করব, প্রধানমন্ত্রী বিদেশ থেকে ফেরার পর বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আলোচনা শুরু করবেন। নির্বাচনকালীন সরকার গঠনের আগে যদি রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সংলাপ শুরু করা যায়, তাহলে সঙ্কট সমাধানের পথ বেরিয়ে আসবে। এর মধ্য দিয়ে সুষ্ঠু, অবাধ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি হবে।


  • কার্টসিঃ নয়াদিগন্ত/ সেপ্টেম্বর ২৭,২০১৮

পরিবহনব্যবস্থা সমস্যাটি আইনের নয়, শাসনের

এ কে এম জাকারিয়া

নিরাপদ সড়ক নিয়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পরিণতি শেষ পর্যন্ত যা–ই হোক, অন্তত একটি নতুন আইন পাওয়া গেছে। সংসদে সড়ক পরিবহন আইন বিল, ২০১৮ পাস হয়েছে ১৯ সেপ্টেম্বর। তবে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী অবশ্য একে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের ফল হিসেবে মানতে রাজি হননি। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, যুগোপযোগী করার জন্য যে আইন বছরের পর বছর ধরে ঝুলে ছিল, তা পাস হয়েছে নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের মাসখানেকের মাথায়। নতুন ও সংশোধিত এই আইন পরিবহন খাতের বিশেষজ্ঞদের সন্তুষ্ট করতে পারেনি, তবে একে সামান্য হলেও অগ্রগতি হিসেবেই মানছেন তাঁরা।

সড়কমন্ত্রী স্বীকার করুন বা না করুন, এর কৃতিত্ব ছোট বাচ্চাদের আন্দোলনকেই দিতে হবে। কতটা বিশৃঙ্খলা আর অব্যবস্থাপনা ও নৈরাজ্যের মধ্য দিয়ে চলছে আমাদের পুরো পরিবহনব্যবস্থা, শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলন তা আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে। আমরা এভাবেই চলছিলাম, আর উন্নয়ন-উন্নয়ন জপ শুনছিলাম। এই যে এত উন্নয়ন, এর ফলাফলটা আসলে কী? একটি উদাহরণ দিই, ১০ বছর আগে ঢাকায় যানবাহনের গড় গতি ছিল ২১ কিলোমিটার। এখন তা ৭ কিলোমিটারে নেমে এসেছে। মানুষের স্বাভাবিক হাঁটার গতি হচ্ছে ঘণ্টায় ৬ কিলোমিটার।

এখন সরকার বা এর নীতিনির্ধারকদের যদি বলা হয়, ঢাকায় আপনাদের ১০ বছরের উন্নয়নের ফল হচ্ছে যানবাহনের গতি ২১ কিলোমিটার থেকে ৭ কিলোমিটারে নামিয়ে আনা; তাঁরা কী জবাব দেবেন? আসলে তাঁরা কখনো জবাব দেন না। জবাব দেওয়ার কোনো দরকারও মনে করেন না। এই যে বছরের পর বছর ধরে ঢাকা বিশ্বের সবচেয়ে বসবাসের অনুপযোগী শহরের পরিচিতি পেয়ে আসছে, তা নিয়ে সরকারকে কখনো বিচলিত বা এ কারণে তৎপর মনে হয়েছে?

আমরা স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশ হওয়ার স্বপ্নের মধ্যে রয়েছি। ঘণ্টায় ৭ কিলোমিটার গতিতে যানবাহন চালিয়ে বা বিশ্বের সবচেয়ে বসবাসের অনুপযোগী রাজধানী শহর নিয়ে কি তা সম্ভব? বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) কয়েক বছরের পুরোনো এক পরিসংখ্যান অনুযায়ী শুধু সড়ক দুর্ঘটনার কারণে বছরে ক্ষতি হচ্ছে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ১ দশমিক ৬ শতাংশ। আর বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকসিডেন্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের গবেষণা বলছে, যানজটের কারণে প্রতিবছর ক্ষতি হচ্ছে দেশের মোট জিডিপির প্রায় ২ শতাংশ। দেশের পরিবহনব্যবস্থা, নগর ব্যবস্থাপনা—এসব নিয়ে অসংখ্য গবেষণা হয়েছে, সুপারিশেরও অভাব নেই। সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশ বা ঢাকার পরিবহনব্যবস্থা এবং এর ব্যবস্থাপনা নিয়ে যে সমস্যা-সংকট রয়েছে, তার সমাধান নেই এমন নয়। বিশ্বের অনেক দেশ এসব সমস্যার সমাধান করেছে। এর নানা মডেল আছে। আমাদের দেশের বিশেষজ্ঞরাও সমস্যার সমাধানের নানা পথ বাতলেছেন। প্রশ্ন হচ্ছে, সরকার কি সেসব বিবেচনায় নিয়েছে? কোনো সামগ্রিক পরিকল্পনার অধীনে কি এসব সমস্যা মোকাবিলার পথ ধরা হচ্ছে?

ঢাকা শহর পরিচালনা, এর ব্যবস্থাপনা ও ভবিষ্যৎ সামনে রেখে পরিকল্পনা তৈরির কাজে যে সবচেয়ে বড় সমস্যা সমন্বয়হীনতা, এটা বলতে বলতে আমাদের বিশেষজ্ঞ ও নগর–পরিকল্পনাবিদেরা মুখে ফেনা তুলে ফেলেছেন। কোনো কাজের কাজ কি হয়েছে? কমবেশি ৫০টি সংস্থা ঢাকার সেবা দেওয়ার কাজ করে। এই প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রেষারেষি আছে। কেউ কারও কথা শুনতে চায় না। যে যার মতো পরিকল্পনা করে তা বাস্তবায়নে নেমে পড়ে। এসব সমস্যা দূর করতে একটি একক কর্তৃপক্ষের কথা বহুদিন ধরে বলা হচ্ছে। তা সম্ভব না হলে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীনে একটি বিশেষ সেল করে একজন শক্তিশালী মন্ত্রীকে এর দায়িত্ব দেওয়ার প্রস্তাবও বিভিন্ন নগর–পরিকল্পনাবিদের মুখ থেকে আমরা শুনেছি। সরকার কোনো কিছুতেই গা করেনি। উন্নয়নের জন্য নাকি ধারাবাহিকতা লাগে। এই সরকার তো প্রায় ১০ বছর ধরে ক্ষমতায় আছে, পরিস্থিতি তো দিনে দিনে খারাপই হয়েছে!

ঢাকা শহরের পরিবহন সমস্যা দূর করতে বিশেষজ্ঞরা গণপরিবহনের দিকে জোর দেওয়ার কথা বলে আসছেন। এটাই পরীক্ষিত পথ। কিন্তু সরকার হাঁটছে পুরো উল্টো পথে। ফ্লাইওভার কিংবা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে এসব তৈরি নিয়ে সরকারের বিভিন্ন সংস্থার যত আগ্রহ দেখা যায়, গণপরিবহনব্যবস্থা নিয়ে তার ছিটেফোঁটাও নেই। বাস র‍্যাপিড ট্রানজিটের (বিআরটি) কথা ঢাকার কৌশলগত পরিবহন পরিকল্পনায় (এসটিপি) রয়েছে। কোথায় সেই বিআরটি? গণপরিবহন বা সাধারণ মানুষ কীভাবে যাতায়াত করবে, তা সরকারের কাছে প্রাধান্য পাওয়া বিষয়গুলোর মধ্যে নেই। এসটিপিতে গাজীপুর থেকে কেরানীগঞ্জ পর্যন্ত বিআরটি তৈরির সুপারিশ ছিল। এখন এই পরিকল্পনার পুরো বাস্তবায়ন সম্ভব হবে না মগবাজার–মৌচাক ফ্লাইওভারের কারণে। এই ফ্লাইওভার তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় বিআরটির কথা বিবেচনাতেই নেওয়া হয়নি। এই সমন্বয়হীনতার দায় কার? কে জবাবদিহি করবে? এসব বিষয় সুশাসন ও রাষ্ট্র পরিচালনার দক্ষতার ওপর নির্ভর করে।

সরকার এখন সড়ক পরিবহন আইন পাস করছে। এই আইন আসলে কতটুকু ভূমিকা রাখবে দুর্ঘটনা কমাতে বা ট্রাফিক ব্যবস্থায় শৃঙ্খলা আনতে? উল্টো পথে চলা কি ট্রাফিক আইনে বৈধ? অথবা লাইসেন্স ছাড়া গাড়ি চালানোর বিষয়টি? পুলিশের গাড়ি যে চালায়, তার লাইসেন্স নেই। লাইসেন্স ছাড়াই পুলিশ মোটরসাইকেল চালায়। মন্ত্রী, এমপি থেকে শুরু করে সরকারি কর্মকর্তা—তাঁদের গাড়িচালকদের বৈধ লাইসেন্স নেই। গণমাধ্যমের গাড়ির চালকদেরও নেই। আমরা বিস্ময় নিয়ে দেখলাম, এসব প্রভাবশালীর অনেকের মধ্যে এমন ধারণা গেঁথে গেছে যে তাঁদের গাড়ির চালকদের কোনো লাইসেন্স লাগে না। তাঁরা আইনের ঊর্ধ্বে। নতুন আইন দিয়ে কী হবে, যদি কেউ আইন না মানে বা কাউকে আইন না মানতে বাধ্য করা যায়! সমস্যাটি আসলে আইনের নয়, আইনের শাসনের। আইনের শাসন দেশে কার্যকর থাকলে পরিস্থিতি এমন হতো না।

দেশের পরিবহন সমস্যা, ট্রাফিক অব্যবস্থা, সড়ক-মহাসড়ক ব্যবস্থাপনা, সামগ্রিক পরিবহন পরিকল্পনা—এসব বিষয় বুঝতে নিয়মিত যাঁর সঙ্গে যোগাযোগ রাখি, আলাপ-আলোচনা করি, পরামর্শ নিই, তিনি সামছুল হক। 

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, পরিবহন বিষয়ে রয়েছে তাঁর বিশেষজ্ঞ জ্ঞান। তিনি বলেন, সব সমস্যারই সমাধান আছে। সমস্যা সমাধানের জন্য আপনাকে দূরদৃষ্টি এবং ভবিষ্যৎ বিবেচনায় নিয়ে পরিকল্পনা করতে হবে, যার ভিত্তি হতে হবে বিজ্ঞান। সড়ক ব্যবস্থাপনা ও পরিবহন আইন নিয়েও কথা হয়েছে তাঁর সঙ্গে। এখানেও তিনি বিজ্ঞানের প্রসঙ্গ টেনেছেন। বললেন, আইন ও নিয়মনীতিও হতে হবে বিজ্ঞান মেনে। বিজ্ঞান বলে, মানুষের মধ্যে আইন না মানার প্রবণতা আছে, ফলে পরিকল্পনাটাই এমনভাবে করতে হবে যাতে মানুষ আইন মানতে বাধ্য হয়।

আসলে ব্যবস্থাটাই এমনভাবে পরিকল্পনা করতে হবে, যা হবে স্বনিয়ন্ত্রিত। আইন ভেঙে যাতে কারও কিছু করার না থাকে বা আইন ভেঙে কোনো বাড়তি সুবিধা না পায়। পরিবহনব্যবস্থা সাজানোর ক্ষেত্রে শুরুতেই এটা মাথায় রাখতে হবে যে মানুষের যাতে আইন ভাঙার দরকার না পড়ে। এবং পরিকল্পনাটি করতে হবে এর ওপর ভিত্তি করে। আবার সবকিছু পরিকল্পিত ও ঠিকঠাক থাকার পরও কিছু মানুষ আইন ভাঙতে চাইবে। সেখানে দরকার আইনের যথাযথ প্রয়োগ। উন্নত বিশ্বে ট্রাফিক বা পরিবহনব্যবস্থা খুবই পরিকল্পিত, কিন্তু এরপরও আইন লাগে এবং তার যথাযথ প্রয়োগ লাগে। আইন মেনে চলা হচ্ছে কি না, তার নিয়মিত ও নিরবচ্ছিন্ন তদারকি লাগে। আমাদের সমস্যা এই সব কটি ক্ষেত্রেই।

আমাদের পরিবহনব্যবস্থা এখন যেভাবে চলছে, তাতে কি এটা মনে হবে যে এর পেছনে বিজ্ঞানভিত্তিক যথাযথ কোনো পরিকল্পনা আছে! এই যে মেট্রোরেল হচ্ছে, দেরি হলেও একসময় তা শেষ হবে। উত্তরা থেকে মতিঝিল এই রেলরুটের নকশা স্টপেজগুলোসহ আমরা পত্রপত্রিকায় ছাপা হতে দেখছি। কিন্তু এই রুটে বাধাহীন পথ অতিক্রম করে যাঁরা স্টপেজগুলোতে নামবেন, তাঁরা সেখান থেকে তাঁদের গন্তব্যে কীভাবে বা কোন ধরনের বাহনে করে যাবেন? বাসে, ট্যাক্সিক্যাবে, সিএনজিচালিত অটোরিকশায়, নাকি হেঁটে? এসব বিবেচনায় নিয়ে কোনো পরিকল্পনা কি নীতিনির্ধারকদের আছে? চরম বিশৃঙ্খলা ও পরিকল্পনাহীনতার মধ্যে চলছে আমাদের পরিবহনব্যবস্থা। এর সঙ্গে আছে আইনের যথাযথ প্রয়োগ না করার গুরুতর সমস্যা। নিরবচ্ছিন্নভাবে আইনের প্রয়োগ ছাড়া মাঝেমধ্যে অভিযান চালিয়ে যে জনগণকে আইন মানতে বাধ্য করা যায় না, এটা আমাদের নীতিনির্ধারকদের কে বোঝাবে!

নতুন নতুন আইন প্রণয়ন কোনো কাজে দেবে না, যদি না তার প্রয়োগ হয়। আর একটি কার্যকর ও পরিকল্পিত ব্যবস্থা নিশ্চিত না করে জনগণকে আইন মানতে বাধ্য করা কার্যত অসম্ভব। এই দুটি সমস্যা দূর করার জন্য যা দরকার, তা হচ্ছে জবাবদিহি ও আইনের শাসন।
  • কার্টসিঃ প্রথম আলো/ সেপ্টেম্বর ২৭,২০১৮ 

টাকা ছাড়া নড়েন না আওয়ামী লীগ নেতা

  • ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু বরগুনা-১ আসনে চারবারের সাংসদ
  • ২৫ বছর ধরে জেলা আ.লীগের সভাপতি সাবেক এই উপমন্ত্রী
  • শম্ভুর বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির নানা অভিযোগ
  • অভিযোগকারীরা সবাই শম্ভুর দলীয় সহকর্মী

নিয়োগ, মনোনয়ন, নির্বাচন, উন্নয়ন, নলকূপ বরাদ্দ, টিআর, কাবিখা—হেন কোনো খাত নেই, যেখান থেকে টাকা খান না তিনি। বেশি টাকা পেলে কম টাকার প্রার্থীকে ভুলে যান অনায়াসে। আছে দখল, মারধর, পারিবারিকীকরণের অভিযোগও।

যাঁর বিরুদ্ধে এত অভিযোগ, তিনি সাংসদ ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু। তিনি বরগুনা-১ আসনে চারবারের সাংসদ, ২৫ বছর ধরে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং সাবেক উপমন্ত্রী। অভিযোগকারীরা সবাই তাঁর দলীয় সহকর্মী। শম্ভু এসব অভিযোগের ব্যাপারে একেবারেই কুম্ভকর্ণ।

গত এপ্রিলে দলীয় সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করে সাংসদের বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির ২৪টি লিখিত অভিযোগ করেন বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগের নেতারা। এর আগে জানুয়ারিতে বরিশাল বিভাগের দায়িত্বে থাকা কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদকের কাছে অভিযোগ জানানো হয়। কেন্দ্র থেকে প্রতিকার না পেয়ে ৩ সেপ্টেম্বর সংবাদ সম্মেলন করে একই অভিযোগ তুলে ধরা হয় গণমাধ্যমের কাছে। ওই সংবাদ সম্মেলন থেকে সাংসদ শম্ভুকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয় তাঁর তিন দশকের সহযোগী জেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবিরের নেতৃত্বে।

এই সংবাদ সম্মেলনের পর বদলে গেছে সাংসদের নির্বাচনী এলাকার দৃশ্যপট। রাস্তার মোড়ে, চায়ের দোকানে এখন স্থানীয় প্রভাবশালী এই সাংসদকে নিয়ে আলোচনা। সাধারণ মানুষ থেকে দলীয় নেতা-কর্মী—সবার মুখে একই অভিযোগ, ‘টাকা ছাড়া নড়েন না শম্ভু বাবু’!

জেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির প্রথম আলোর কাছে অভিযোগ করেন, ‘কালেকশন মাস্টার’ দিয়ে রাজনীতি চালান সাংসদ। টাকা ছাড়া কোনো কাজ করেন না তিনি।

জেলা আওয়ামী লীগের ধর্মবিষয়ক সম্পাদক মাওলানা আলতাফ হোসেন ও সাংগঠনিক সম্পাদক মনিরুজ্জামান ওরফে নশা সাংসদের ‘কালেকশন মাস্টার’ বা ঘুষ আদায়কারী বলে জানিয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আরিফুর রহমান (মারুফ)। এই দুজন নলকূপ বরাদ্দে ঘুষ আদায় থেকে শুরু করে মাদ্রাসায় চাকরি, স্থানীয় সরকার নির্বাচনে মনোনয়ন-বাণিজ্যের টাকা আদায় করেন।

তবে আলতাফ হোসেন ও মনিরুজ্জামান দুজনই অভিযোগ অস্বীকার করেন। সাংসদের আর্থিক লেনদেনের বিষয়ে তাঁরা কিছু জানেন না বলে জানান।

আরিফুর রহমান গত ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়ে হেরেছেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, দলের মনোনয়নের বিনিময়ে তাঁর কাছে টাকা চেয়েছিলেন সাংসদের ‘কালেকশন মাস্টার’ আলতাফ হোসেন। টাকা না দেওয়ায় তাঁর বিরুদ্ধে পুলিশ প্রশাসনকে ব্যবহার করেন এবং জাতীয় পার্টির প্রার্থীর পক্ষ নেন সাংসদ। এভাবে প্রশাসনকে ব্যবহার করে চারটি ইউনিয়নে দল মনোনীত প্রার্থীকে হারানোর ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখেন সাংসদ শম্ভু।

বরগুনা জেলা কৃষক লীগের সভাপতি ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মো. আজিজুল হক অভিযোগ তুলে বলেন, ‘ঢলুয়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন পেতে সাংসদকে টাকা দিয়েছি। ভোটের আগের দিন আবার টাকা চাইলেন তিনি। নির্বাচনের দিন দেখা গেল, প্রশাসনকে ব্যবহার করে আমার এজেন্টদের বের করে দেওয়া হয়েছে। বেশি টাকার বিনিময়ে বিএনপির প্রার্থীকে জিতিয়ে দিয়েছেন।’

ওই ইউনিয়নে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন বিএনপির আবু হেনা মোস্তফা কামাল। অভিযোগের বিষয়ে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘পারিবারিক সম্পর্কের সূত্রে নির্বাচনের আগে সাংসদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। সে হিসেবে তিনি নির্বাচনে প্রশাসনিক সহযোগিতা করেছেন। অন্যান্য ইউনিয়নে আর্থিক লেনদেন হতে পারে। কিন্তু আমার ক্ষেত্রে হয়নি।’

সদর উপজেলার গৌরীচন্না ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে বিজয়ী মনিরুল ইসলাম দাবি করেন, সব ইউনিয়নেই আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে ও নির্বাচনে জয়ী হতে সাংসদকে টাকা দিতে হয়েছে। তবে তিনি নিজে কোনো টাকা দেননি।

দলীয় সূত্র ও সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যক্তিরা জানান, সাংসদের বড় দুই অর্থায়নকারী বরগুনা ও আমতলীর দুই মেয়র। দুজনেই এখানকার প্রতিষ্ঠিত ঠিকাদার। বরগুনার মেয়র শাহাদাত হোসেন ‘শাহাদাত কন্ট্রাক্টর’ নামে পরিচিত। ২০১৫ সালের পৌর নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী জেলা যুবলীগের সভাপতি ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কামরুল আহসানের বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে মেয়র নির্বাচিত হন তিনি। কামরুল আহসানের অভিযোগ, ‘দলীয় প্রার্থী হওয়ার পরও সাংসদ সরাসরি আমার বিরুদ্ধে প্রশাসনকে ব্যবহার করে কারচুপির মাধ্যমে বিদ্রোহী প্রার্থীকে জিতিয়ে দেন।’

২০১১ সালে আমতলী পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের সমর্থিত প্রার্থী ছিলেন গাজী শামসুল হক। তাঁকে হারিয়ে মেয়র নির্বাচিত হন সাংসদের ঘনিষ্ঠ মতিয়ার রহমান ওরফে মতি কন্ট্রাক্টর। টাকার বিনিময়ে নির্বাচনে সাংসদের কাছ থেকে সুবিধা নেওয়ার অভিযোগ প্রসঙ্গে মেয়র শাহাদাত হোসেনকে প্রশ্ন করলে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার টাকা কে না খায়? দলের অর্ধেক খরচ এখনো আমি চালাই।’

নিয়োগ-বাণিজ্য

সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগ নেতাদের অভিযোগের মধ্যে অন্যতম ছিল নিয়োগ–বাণিজ্য। এতে বলা হয়, প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নৈশপ্রহরী কাম দপ্তরি নিয়োগে প্রতিজনের কাছ থেকে ৬ লাখ টাকা করে নিয়েছেন সাংসদ। পুলিশ কনস্টেবল পদে নিয়োগের সুপারিশে নিয়েছেন ১০ লাখ টাকা। মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগে ৭ থেকে ৮ লাখ। আবার নারী কোটার শূন্য পদে পুরুষ নিয়োগ দিয়ে ১৪ লাখ টাকা নিয়েছেন সাংসদ। জেলা হাসপাতালের কর্মচারী নিয়োগে নিয়েছেন ৫ থেকে ৭ লাখ টাকা করে। কাজের বিনিময়ে খাদ্য (কাবিখা) আর টেস্ট রিলিফসহ (টিআর) ৪০ দিনের কর্মসূচি বাস্তবায়নে বাধ্যতামূলকভাবে মোট বরাদ্দের এক-তৃতীয়াংশ ঘুষ দিতে হয় সাংসদকে।

উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আরিফুর রহমান অভিযোগ করেন, ‘আমি নিজে সাংসদকে দুই লাখ টাকা দিয়েছিলাম আলিয়া মাদ্রাসায় আমার স্ত্রীর চাকরির জন্য। কিন্তু তিনি আরও বেশি টাকা নিয়ে অন্য একজনকে চাকরি দেন। তবে পরে আমার টাকা ফেরত দেন।’

আনোয়ার হোসেন নামের একজন অভিযোগ করেন, ‘গর্জনগুনিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে চাকরির জন্য স্কুল কমিটির সভাপতি হুমায়ূন কবির আমার কাছ থেকে সাংসদকে দেওয়ার কথা বলে ১৩ লাখ টাকা নিয়েছেন। পরে আরেকজনের কাছ থেকে বেশি টাকা নিয়ে তাঁকে চাকরি দিয়ে দেন। আমার টাকাও ফেরত দেননি।’

বরগুনা জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন, আমতলী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান জি এম দেলোয়ার বলেন, নিয়োগ ও মনোনয়ন-বাণিজ্য করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন সাংসদ। টাকা ছাড়া তাঁর কাছে কোনো কথা নেই।

সরকারি কর্মকর্তাকে মারধর

সরকারি কর্মকর্তারাও হয়রানির শিকার হন সাংসদের কাছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের একাধিক কর্মকর্তা বলেন, সাংসদ নিজে ফোন করে বিভিন্ন বিষয়ে তদবির করেন, চাপ প্রয়োগ করেন। তাঁর কথা না শুনলে ওই কর্মকর্তাকে বদলি করতে ঊর্ধ্বতনদের কাছে অভিযোগ করেন।

২০১৪ সালে বরগুনায় বাঁধ নির্মাণ ও সংস্কারে বিশ্বব্যাংকের নেওয়া ৩০০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প ঘিরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুল মালেককে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে কিল-ঘুষি মারেন সাংসদ। ওই দিনই বরগুনা ছেড়ে যান ওই নির্বাহী প্রকৌশলী। তিনি বর্তমানে অবসরে আছেন। প্রকৌশলী আবদুল মালেক প্রথম আলোকে বলেন, ‘সাংসদের মনে হয়েছে আমি প্রকল্প থেকে কমিশন নিয়েছি, কিন্তু সাংসদ কিছু পাননি। তাই তিনি ওই ঘটনা ঘটান।’ 

জমি দখল

বরগুনা সদর রাস্তাটি মূলত পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাঁধ। এর পূর্ব ও পশ্চিম পাশের জমি পাউবোর। সেখানে দীর্ঘদিন ধরে একটি কার্যালয় চালাচ্ছেন সাংসদ। দ্বিগুণ দাম পরিশোধ করে এ জমি এখন সরকারের কাছ থেকে কিনে নিতে চাচ্ছেন তিনি।

সদর উপজেলা পরিষদের সামনে একটি জলাশয় ভরাট করে নতুন ভবন বানিয়েছেন সাংসদ। এলাকায় এটি সাংসদের রংমহল হিসেবে পরিচিত। বরগুনায় এলে এখানেই থাকেন তিনি। অভিযোগ আছে, জলাশয় ভরাট, রাস্তা নির্মাণ, ড্রেনেজ নির্মাণ ও ল্যাম্পপোস্ট স্থাপন করার পাশাপাশি এ বাড়ির নিয়মিত পরিচর্যা করে পৌরসভা।

এ বিষয়ে সাংসদের ঘনিষ্ঠ বরগুনা পৌরসভার মেয়র শাহাদাত হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘শম্ভু বাবুর মায়ের জায়গা সরকার অধিগ্রহণ করেছিল। তিনি সরকারের কাছে আবেদন করে ফেরত নিয়েছেন। পৌরসভা থেকে শুধু বাসার সামনের ড্রেনেজ ও ল্যাম্পপোস্ট করে দেওয়া হয়েছে। বাড়ির ভেতরের সব কাজ সাংসদ নিজের টাকায় করেছেন।’

বিভিন্ন পদে স্বজনেরা 

সাংসদের স্ত্রী মাধবী দেবনাথ জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। একমাত্র ছেলে জেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক। ছেলের শ্বশুর অমল তালুকদার জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ। ছেলের চাচাশ্বশুর সুবল তালুকদারকে বানিয়েছেন প্রচার সম্পাদক। আর সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাংসদের ভায়রা সিদ্দিকুর রহমান। দলের নিয়ন্ত্রণ নিজের হাতে রাখতেই পরিবারের সদস্যদের দলীয় পদে এনেছেন বলে অভিযোগ করেন নেতা-কর্মীরা।

এসব অভিযোগ নিয়ে কথা বলার জন্য ১১ সেপ্টেম্বর যোগাযোগ করা হয় সাংসদ ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর সঙ্গে। ১৪ সেপ্টেম্বর দলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে বৈঠক ছিল তাঁর। তার আগে কথা বলতে রাজি হননি তিনি। বৈঠকটি পিছিয়ে যাওয়ায় ১৫ সেপ্টেম্বর আবারও তাঁর সঙ্গে দেখা করার জন্য যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, দলের সাধারণ সম্পাদক তাঁকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছেন। তাই তিনি এসব বিষয়ে এখন গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলবেন না।
  • কার্টসিঃ প্রথম আলো/ সেপ্টেম্বর ২৭,২০১৮ 

Digital Security Bill: TIB terms it black law

Urges president not to give consent


The Digital Security Bill 2018 might be considered useful for the government in the short term, but it could boomerang on the government in the long run, Transparency International Bangladesh said yesterday.

Terming the legislation a black law, the TIB urged the president not to give his consent to the bill and return it to parliament for review of some “controversial and risky” provisions.

TIB Executive Director Iftekharuzzaman said the law would not only curb freedom of speech, but also would restrict independent journalism and research.

He was speaking at a human chain organised at Dhaka University's Teacher-Student Centre (TSC) marking the International Right to Know Day which would be observed tomorrow.

Freedom of expression and right to information are the fundamental rights of the people, he said, adding that the Right to Information (RTI) Act was exceptional as it gave people the right to hold the government accountable.

“But at the same time, it is noticeable that the government took negative and frustrating initiatives.”

Iftekharuzzaman said the new law, recently passed by parliament, would rob the people of their basic human rights and be an obstacle in the way of flourishing democracy in the country.

Passing a law contradictory to the constitution and the spirit of Liberation War is not acceptable from a party which had led the war, he added.

The much-debated Digital Security Bill 2018 was passed by Jatiya Sangsad on September 19 with harsh provisions allowing police to frisk or arrest anyone without warrants.

Journalists and rights activists have expressed concerns about the new law, saying it was passed without addressing their concerns.

Iftekharuzzaman said giving recognition to the Official Secrecy Act of the British colonial era under section 32 of the Digital Security Act was a backward-looking move.

 “The law will pose a big threat and create a sense of insecurity among journalists, particularly among investigative journalists.”

The TIB executive director said the law would be an obstacle to media persons and NGO staff members who have been conducting researches on various works of the government and holding it accountable.

He said they were hopeful that the president would use his constitutional power to send the bill to parliament for review.

  • Courtesy: The Daily Star/ Sep 27, 2018

Sponsors of Padma Islami Life Ins to sell ownership

The sponsors of Padma Islami Life Insurance listed on both Dhaka and Chittagong stock exchanges yesterday announced to sell their entire holdings in the company. The insurer informed through the DSE website that the board of directors of the company has decided to sell 1.74 crore shares held by five sponsor shareholders, 11 sponsor directors, one director and one shareholder (the inheritor of one sponsor) subject to the approval of competent authorities.

The shares account for 44.78 percent of the total paid-up capital of the company, established in 2000.

Padma Life shares traded at Tk 26.20 yesterday at the DSE. The company did not disclose the name of the buyers.

AFM Obaidur Rahman, chairman of Padma Life, also did not receive mobile phone calls and reply to a text message. The decision to change the ownership of the company came at a board meeting last month, said company insiders.

“As the company is facing liquidity crisis, it cannot meet policyholders' demand now. So, the board has decided to sell off the shares,” said a senior official of the company, seeking anonymity.

He also said the company purchased land in many places in the country, but it cannot sell them now.

Last year the insurer failed to give any dividend to its shareholders. As a result, it is now considered a junk stock.

  • Courtesy: The Daily Star/ Sep 27, 2018

Poor reading skills of primary students

Editorial

Devise policy to address the problem


Despite remarkable progress in universal primary education, poor reading skills among the primary students continue to be a blight on Bangladesh's success. According to a new study by World Vision Bangladesh, 54 percent of students in grade three do not understand what they are reading, while around 33 percent cannot read five words in 30 seconds. The importance of reading skills in the life of a student makes this statistic really troublesome.

Reading comprehension is important for the simple reason that “a child who cannot read cannot learn.” It strongly impacts their future academic performance as well as their emotional and social well-being. 

Experts say that not having adequate reading skills may be especially troubling after the third grade because teachers in the subsequent grades tend to spend significantly less time helping the students to learn to read, with shifts in the curriculum that involve acquiring knowledge of newer subjects. Understandably, those with poor reading skills perform poorly and are at high risk of dropping out. Although primary education is free in Bangladesh and the textbooks are provided by the government, dropout rates both at primary and secondary levels are still alarmingly high.

Lack of reading skills is thus a failure not just of the parents, teachers and schools, but also of the government which tends to focus more on student enrolment, not on the quality of their education. Also, lack of reading skills as a contributor to a student's future performance or the dropout rate is seldom discussed. We think the government should pay more attention to this and devise a policy to make reading fun and an achievable skill for the preliterate students.

  • Courtesy: The Daily Star /Sep 27, 2018

Toriqul fights thru' pain

RU denies him permission to attend exam in sick bed


As the ambulance stopped in front of the Department of Islamic Studies of Rajshahi University in the morning, a few students rushed towards it.

Toriqul Islam, a student of the department, got off the vehicle with their help. Slowly but surely he walked inside, accompanied by his alert classmates.

Toriqul, a victim of Bangladesh Chhatra League-led attack on students during the quota reform movement, was in pain and having difficulty walking or keeping balance.

But he had an exam to attend. The final exams of his master's courses started yesterday.

On July 2, BCL men attacked Toriqul with a hammer, bamboo poles and sticks leaving both the bones of his right leg fractured. He was going to join a procession demanding the gazette notification on quota reforms in government jobs.

Yesterday, the department with the help of Sadharan Chhatra Odhikar Sangrakkhan Parishad arranged a makeshift bed for him at its office on the ground floor, where he sat and at times, laid down while taking the four-hour exam.

Prof M Rafiqul Islam, chairman of the department, said, “We tried to help him [Toriqul] as much as we could.”

But after attending the exam for three hours, Toriqul was in pain and had to leave without completing it. He said he requested the authorities to allow him special provisions for taking the exams, but the authorities did not accept it.

“I applied on Tuesday for allowing me to take the exam at the University Medical Centre. The doctors at the medical centre approved my application considering my condition. I don't know why the university authorities did not accept it,” said a frustrated Toriqul, also a quota movement leader.

“I cannot even sit properly for a couple of minutes without feeling pain. How can I take the four-hour exam at a stretch like others?” He said the next exam is on October 2.

Contacted, M Babul Islam, exam controller, said, “We approve such applications if a student is suffering from an infectious disease.”

Meanwhile, students of the university urged the authorities to allow Toriqul to take the remaining five exams at the medical centre.

This correspondent went to the vice chancellor's office around noon for his comments, but one of the officials there said he was at a meeting. The VC also could not be reached over the phone.

In the afternoon, an office secretary answered the phone and said the VC would be available in the evening. He was still not available for comments till filing of this report around 8:00pm.

  • Courtesy: The Daily Star /Sep 27, 2018 

Deaths from dengue highest in 15yrs

15 die, 5,265 infected this yea

Manzur H Maswood 

Dengue infection has taken an alarming turn in the capital as thousands of people are contracting the mosquito-borne viral disease even though the rainy season, when the menace peaks, is over.
Dengue has so far killed 15 people as of September this year, the highest in a year in the last 15 years since 2003.

The incidence of dengue infection reaches 5,265 as of Wednesday, the second highest in 15 years, according to the Directorate General of Health Services.

In September only, the DGHS recorded 2,349 dengue patients’ admission to hospital as of Wednesday.

Doctors have said that the situation is alarming and they are concerned that the nature and symptoms of dengue are also a bit different this year.

‘The situation is very much alarming,’ says Dhaka Medical College principal and dengue expert Abul Kalam Azad Khan.

‘We have noticed that unlike previous years, dengue patients are showing different symptoms like diarrhoea, sudden damages of kidney and liver this year,’ he tells New Age.
Dengue patients usually show symptoms like high fever, rash, bleeding in stool, gum and nose, he mentions. 

National Health Crisis Management Centre and Control Room of Directorate General of Health Services recorded 5,265 dengue patients who were admitted to different hospitals this year and 15 of them died.

In September as of Wednesday, at least 2,349 dengue patients were admitted to different hospitals in Dhaka and two of them died, the DGHS record shows.

Besides, six dengue patients died in August, four in July and three in June.

Besides, 1,666 dengue patients were hospitalised in August, 887 in July, 278 in June, 35 in May, 14 in April, five in March, seven in February and 26 in January.

Officials guess that the actual number of dengue patients will be far higher than the recorded number as many cases remain unreported by the families and hospitals.

National Health Crisis Management Centre officials say that the dengue patients are mostly recorded in Dhaka South City Corporation area.

On Wednesday, at least 253 patients were admitted to hospitals with dengue and of them, 62 were at Mitford Hospital in old Dhaka, 19 at Islami Bank Hospital in Motijheel and 16 at Square Hospital at Panthapath and 10 at Central Hospital at Green Road.

Dengue has been causing widespread concerns among the capital’s residents as they fear contracting the disease anytime.

They blame absence of city corporations’ mosquito control drive while the officials blame residents for their apathy for destroying mosquito habitats in and around their households for the high incidence of dengue this year.

Last year, when there was hardly a family in the capital which did not have dengue or chikungunya patients, the two city corporations in Dhaka, failing to control mosquitos, had arranged prayers at mosques seeking divine intervention to protect the capital’s inhabitants.

A survey, conducted by Health Services’ disease control wing in late February, found that Aedes mosquitos, the carriers of the viruses that cause dengue, spread alarmingly well ahead of the advent of the rainy season.

The survey found a high presence of Aedes mosquitos in 19 localities of the capital, Health Services’ disease control director Sanya Rahman told New Age.

Banani, Bashundhara Residential Area, Gabtali, Moghbazar, Malibagh, Mirpur-1, Mohakhali DOHS, Nakhalpara, East Shewrapara, Tolarbagh and Sector 9 of Uttara in Dhaka north city and Dhanmondi, Elephant Road, Gulbagh, Kalabagan, Meradia, Minto Road, Baily Road and Shantinagar in Dhaka south city had alarming presence of Aedes mosquitoes.

Sanya said that the two city corporations had been cautioned time and again that unless they took steps to control the mosquitos, the menace would grow.

She, however, refrained from saying if the dengue situation was alarming now.

When asked, Dhaka south city chief health officer Brigadier General Sheikh Salauddin said that the prevalence of mosquitoes was low now.

He said DSCC took adequate mosquito control measure but it was the residents who took hardly any care to destroy the mosquito habitats in and around their houses.

Salauddin said they formed teams at each ward for public awareness about Aedes but that was not working.

Aedes mosquito lives in urban habitats and breeds mostly in man-made clean water-filled containers like giveaway cans, pots, cups, flower tubs, coconut shells and tyres in and around households.

Unlike other mosquitoes, Aedes feeds in the daytime. Its peak biting period is two hours after sunrise and two hours before dusk.

Institute of Epidemiology, Disease Control and Research director Meerjady Sabrina Flora says they are expecting that the dengue incidents will fall after September as the peak time of dengue is the rainy season, which is over now.

  • Courtesy: New Age/ Sep 27, 2018

Temp rising to affect living standards of 134m Bangladeshis: WB

CLIMATE CHANGE IMPACT


The World Bank on Wednesday said that more than three-fourths of the population of Bangladesh were at risk of declining living standards because of rising temperature and erratic rainfall caused by climate change. 

A report titled ‘South Asia’s Hotspots: the Impact of Temperature and Precipitation Changes on Living Standards’ the bank released in Dhaka projected the catastrophic impacts on poorest region of the world. 

It said the climate change could cost Bangladesh 6.7 per cent of gross domestic product besides affecting the living standards of 13.4 crore population by 2050.

The report, prepared based on analysis of rising temperature in this region in the past 60 years, also projected that nearly half of the South Asia’s population would be affected because of adverse climate change impact on agriculture, health and productivity.

Presenting the report, its author Muthukumara Mani, also lead World Bank economist in South Asia, said that Bangladesh’s average annual temperature was expected to rise by 1-1.5 degrees Celsius despite preventive measure in line with the Paris Climate Change Agreement.

The report identified that Chattogram division would be most vulnerable to climate change having seven of the 10 most affected hotspots, districts most vulnerable to climate change.

Top two climate hotspots will likely be Cox’s Bazar and Bandarban that according to the report might see more than 18 per cent decline in living standards followed by Chattogram, Rangamati and Noakhali.

Other hotspots are Barguna, Bagerhat and Satkhira.

Finance minister AMA Muhith, visiting World Bank vice-president for South Asia region Hartwidf Schafer and its country director Qimiao Fan were present at the report lunching.

Muhith said that income inequality was not improving although poverty was decreasing very fast with the high economic growth crossing 7 per cent in past couple of years.

He noted that despite adversities like threat of climate change, lower than expected foreign direct investment and poor infrastructure farmers and workers helped Bangladesh to overcome its status of least developed country.

He also noted that the ‘cheap money’ from the World Bank and the Asian Development Bank was not available with the country’s transition to the developing country. 

Schafer said that for Bangladesh, climate change was an acute threat to development and efforts to end poverty. 

In addition to the coastal zone, the warming weather would severely affect the country’s inland areas in the next decades that needed to be addressed by creation of jobs outside the agriculture sector and improve capacity of the government institutions, he said.

The report suggested that good development outcomes were the best adaption investing in skills, health, knowledge, better infrastructure and a more diversified economy should reduce climate hotspots.

It projected that the national decrease in living standards as a result of climate change might cost Bangladesh $59 billion in the hotspot districts and $171 billion throughout the country.
  • NewAge/Sep 27,2018 

Politicians, professionals call for reinstating democracy


Politicians and professionals on Wednesday called for holding free, fair and neutral polls to restore peoples’ voting rights.

They made the call at a discussion, organised by Jatiya Oikya Prokriya, on poll-time non-party government at Institution of Engineers, Bangladesh in the capital.

Presiding over the discussion, Jatiya Oikya Prokriya convener Kamal Hossain said even after scissoring the constitution a number of times, the fundamental principle democracy remained.

He said democracy recognised people as the owner of the country but now people with black money owned the country. Kamal, also Gono Forum president, claimed he had no black money.

He said a way must be found out to reinstate people’s ownership of state power and regretted that even 47 years after the country’s independence people were not owner of state power.

The Gono Forum president reiterated that people wanted fair election and change.

Supreme Court Bar Association president Zainul Abedin said people were now united for establishing their voting rights. He said imprisoned BNP chairperson Khaleda Zia said that she would see from jail that the government fell through national unity.

JSD president ASM Abdur Rob said qualitative change in politics must be brought through movement to ensure people’s ownership of the country.

Former army-backed caretaker government adviser Mainul Hosein said people’s mandate would decide who would form the government. He said fair election was not possible under the present government.

Ganoshasthya Kendra founder Zafrullah Chowdhury said the first step towards establishing poll-time non-party government was that all political leaders and activists would free BNP’s imprisoned chairperson Khaleda Zia from jail on bail.

Senior journalist Mahfuz Ullah said a non-party government was necessary for ensuring people’s voting rights.

Former FBCCI president Abdul Awal Mintoo, also BNP vice-chairman, said only a good election was not enough for democracy; how the country would be governed after the election was also important.

Dhaka University teacher Nurul Amin Bepari said a neutral poll was never possible under an autocratic government and termed the present government autocratic.

Gano Forum executive president Subrato Chowdhury, former Dhaka University Central Students’ Union vice-president Sultan Mohammad Monsur, SCBA secretary Mahbub Uddin Khokon, Dhaka University teacher CR Abrar, among others, took part in the discussion conducted by Jatiya Oikya Prokriya member secretary ABM Mostafa Amin.

  • Courtesy: New Age/ Sep 27, 2018