Search

Thursday, September 27, 2018

নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে সংলাপে বসুন

সম্পাদকীয়

উত্তপ্ত হচ্ছে রাজনৈতিক পরিবেশ


আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো ঐক্যবদ্ধভাবে সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের জন্য মাঠে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছে। অপর দিকে ক্ষমতাসীন দলের নেতৃত্বাধীন জোট তা প্রতিরোধের ঘোষণা দিয়েছে। স্বাভাবিকভাবে আগামী দিনের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে এখন উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা কাজ করছে। 

নির্বাচন কমিশন বছরের শেষে জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে, কিন্তু নির্বাচন কিভাবে অনুষ্ঠিত হবে তা নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে। বিরোধী দলগুলোর পক্ষ থেকে নির্বাচনের আগে সংসদ ভেঙে দেয়া, নির্বাচনকালীন সরকার গঠন এবং নির্বাচনে সেনা মোতায়েনের দাবি জানিয়েছে। এসব দাবি আদায়ে রাজপথে আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। এসব দাবির ব্যাপারে ক্ষমতাসীন দলের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোনো জবাব পাওয়া যায়নি; বরং বর্তমান সরকারের অধীনে সংবিধান মোতাবেক নির্বাচন হবে বলে ক্ষমতাসীন দলের নেতারা জানিয়েছেন। 

এর মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাতে বলেছেন, সরকার অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে চায় এবং নির্বাচনে সব দল অংশগ্রহণ করবে। প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্য থেকে স্পষ্ট ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির মতো নয়, বরং সবার অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের ব্যাপারে সরকারও আগ্রহী। কিন্তু নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণের পরিবেশ ক্ষমতাসীন দলকে সৃষ্টি করতে হবে। বাংলাদেশের নির্বাচনের অতীত অত্যন্ত রক্তাক্ত ও সঙ্ঘাতময়। ক্ষমতায় থেকে কোনো দল সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে পারেনি। দলনিরপেক্ষ ব্যক্তিদের দিয়ে নির্বাচনকালীন সরকারের জন্য এক সময় বর্তমান প্রধানমন্ত্রী আন্দোলন করেছিলেন। তার নেতৃত্বে আন্দোলনের মধ্য দিয়ে দেশে নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। আদালতের কাঁধে বন্দুক রেখে এই তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বিলোপ করার কারণে এখন নির্বাচনকালীন সঙ্কট সৃষ্টি হয়েছে। 

দেশে যদি সত্যিকার অর্থে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতার পরিবর্তন করতে হয়, তাহলে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আলোচনা শুরু হওয়া দরকার। নির্বাচনের তিন মাসের কম সময় রয়েছে। নির্বাচন কমিশন তফসিল ঘোষণার প্রস্তুতি নিচ্ছে। কিভাবে নির্বাচন হবে তার সমাধান যদি এখন করা সম্ভব না হয়, তাহলে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার সাথে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি চূড়ান্তভাবে সঙ্ঘাতময় হয়ে উঠবে। 

আমরা আশা করব, প্রধানমন্ত্রী বিদেশ থেকে ফেরার পর বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আলোচনা শুরু করবেন। নির্বাচনকালীন সরকার গঠনের আগে যদি রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সংলাপ শুরু করা যায়, তাহলে সঙ্কট সমাধানের পথ বেরিয়ে আসবে। এর মধ্য দিয়ে সুষ্ঠু, অবাধ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি হবে।


  • কার্টসিঃ নয়াদিগন্ত/ সেপ্টেম্বর ২৭,২০১৮

No comments:

Post a Comment