জাতীয় সংসদে বিতর্কিত ডিজিটাল নিরাপত্তা বিল পাস হওয়ায় গভীর হতাশা ব্যক্ত করেছে সম্পাদক পরিষদ। এর প্রতিবাদে ২৯ সেপ্টেম্বর বেলা ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছে সংগঠনটি। আর এই আইনের বিষয়ে সরকারের সঙ্গে আলোচনায় অংশ নেওয়া তিন গণমাধ্যম প্রতিনিধি যৌথ বক্তব্যে বলেছেন, সংসদে পাস হওয়া ডিজিটাল নিরাপত্তা বিলে গণমাধ্যমকর্মীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা হয়নি। বরং পুলিশকে অবাধে ক্ষমতা প্রয়োগের সুযোগ দিয়ে স্বাধীন সাংবাদিকতাকে বাধাগ্রস্ত করার পথ সুগম করা হয়েছে।
জাতীয় সংসদের ভেতরে-বাইরে বিভিন্ন পক্ষের আপত্তি, উদ্বেগ ও মতামত উপেক্ষা করে গত বুধবার জাতীয় সংসদে ডিজিটাল নিরাপত্তা বিল পাস করা হয়েছে। এখন রাষ্ট্রপতি সই করলেই এটি আইনে পরিণত হবে। বিলটি সংসদে পাস হওয়ার পর থেকে গণমাধ্যম সংগঠন থেকে শুরু করে বিভিন্ন পর্যায় থেকে এর প্রতিবাদ জানানো হচ্ছে।
সম্পাদক পরিষদের বিবৃতি
শনিবার ডেইলি স্টার সেন্টারে সম্পাদক পরিষদের এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। নিউজ টুডের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক রিয়াজউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় সংসদে পাস হওয়া বিলটিকে সংবিধানে গণমাধ্যম ও বাক্স্বাধীনতার যে নিশ্চয়তা দেওয়া হয়েছে তার পরিপন্থী উল্লেখ করে গভীর হতাশা ব্যক্ত করা হয়। এই সভাতেই ২৯ সেপ্টেম্বর মানববন্ধন কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত হয়। পরে ১৮ জন সম্পাদক বিবৃতি দিয়ে এই মানববন্ধনে যোগ দিতে সব সাংবাদিক, গণমাধ্যম সংগঠন ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্বদের প্রতি অনুরোধ জানায়।
বিবৃতিদাতা সম্পাদকেরা হলেন, নিউজ টুডের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক রিয়াজউদ্দিন আহমেদ, মানবজমিন সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী, প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান, ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহ্ফুজ আনাম, সংবাদের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক খন্দকার মুনীরুজ্জামান, নিউ এজ সম্পাদক নূরুল কবীর, কালের কণ্ঠ সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলন, বাংলাদেশ প্রতিদিন সম্পাদক নঈম নিজাম, নয়া দিগন্ত সম্পাদক আলমগীর মহিউদ্দিন, ইনকিলাব সম্পাদক এ এম এম বাহাউদ্দীন, দৈনিক আজাদীর সম্পাদক এম এ মালেক, করতোয়া সম্পাদক মোজাম্মেল হক, ইনডিপেনডেন্ট সম্পাদক এম শামসুর রহমান, যুগান্তরের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সাইফুল আলম, বণিক বার্তা সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদ, ঢাকা ট্রিবিউনের সম্পাদক জাফর সোবহান, সমকালের সহযোগী সম্পাদক সবুজ ইউনূস ও ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেসের যুগ্ম সম্পাদক শামসুল হক জাহিদ।
কণ্ঠরোধে ব্যবহার হতে পারে
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের কয়েকটি ধারা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) গতকাল গণমাধ্যমে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, এই আইনে পরোয়ানা বা অনুমোদন ছাড়াই পুলিশের হাতে যে কাউকে তল্লাশি, জব্দ এবং গ্রেপ্তার করার ক্ষমতা রয়েছে। তাই এই আইনকে অপব্যবহার করে পুলিশ সাধারণ নাগরিকদের হেনস্তা করতে পারে।
এদিকে, প্রথম আলোর যশোর অফিস জানায়, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ৩২ ধারা বাতিলের দাবিতে যশোরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সড়কে প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করেছেন সাংবাদিকেরা।
Courtesy: Prothom Alo Sep 22, 2018
No comments:
Post a Comment