Search

Sunday, September 23, 2018

জাতীয় ঐক্যপ্রক্রিয়ার ঘোষণাপত্র

সমাবেশের ঘোষণাপত্র -

নাগরিক সমাবেশ শেষে জাতীয় ঐক্যপ্রক্রিয়ার ঘোষণাপত্র পাঠ করেন প্রকৌশলী শেখ মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ। পরে কণ্ঠভোটে ও হাত তুলে প্রস্তাবটি পাস করেন নাগরিক সমাবেশে অংশ নেয়া রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা। ৩০শে সেপ্টেম্বরের মধ্যে সংসদ ভেঙে দিয়ে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার গঠনের আহ্বান জানানো হয়েছে জাতীয় ঐক্যপ্রক্রিয়ার সমাবেশ থেকে। সমাবেশের ঘোষণাপত্রে এ দাবি জানিয়ে বলা হয়েছে ৩০শে সেপ্টেম্বরের পর ১লা অক্টোবর থেকে সারা দেশে সভা-সমাবেশ শুরু হবে। এতে জাতীয় নেতৃবৃন্দ অংশ নেবেন। ঘোষণাপত্রে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার আইনগত ও ন্যায়সঙ্গত অধিকার নিশ্চিত করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। এতে বলা হয়, কোটা সংস্কার এবং নিরাপদ সড়ক আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী ছাত্রছাত্রীসহ সকল রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে আনীত মিথ্যা মামলাসমূহ প্রত্যাহার করতে হবে এবং  গ্রেপ্তারকৃতদের মুক্তি দিতে হবে। 

এখন থেকে নির্বাচন শেষ না হওয়া পর্যন্ত কোনো রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করা যাবে না। এ নাগরিক সমাবেশ থেকে সরকারের প্রতি জোর দাবি জানাচ্ছি যে, সরকার আগামী ৩০শে সেপ্টেম্বর ২০১৮’র মধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলাপ- আলোচনার মাধ্যমে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার গঠন এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি করার কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করবেন এবং তফসিল ঘোষণার পূর্বে বর্তমান সংসদ ভেঙে দেবেন। আমরা দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি-এ গণদাবি আদায়ের লক্ষ্যে প্রতিটি জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে মুক্তিসংগ্রামের চেতনায় বিশ্বাসী সকল রাজনৈতিক দল, ব্যক্তি শ্রেণি-পেশা ও নাগরিক সমাজের সমন্বয়ে বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য’র কমিটি গঠন করুন এবং দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ঐক্যবদ্ধভাবে নিয়মতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণ গণজাগরণের কর্মসূচি অব্যাহত রাখুন। 

জনগণের ঐক্য হলে স্বৈরাচার পালায়

জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব বলেন, জাতীয় ঐক্য মানে জনগণের ঐক্য। জনগণের ঐক্য যখন হয় তখন স্বৈরাচার পালায়। দেশ খুন, গুম, অপরহণ ও বেওয়ারিশ লাশের ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। সবাইকে মাঠে নামতে হবে। ব্যাংকে টাকা নেই, ভল্টে সোনা নেই, খনিতে কয়লা নেই। সব লুট হয়ে গেছে। দেশ লুটের মালে পরিণত হয়েছে। কবে মানচিত্র চুরি হয়ে যায় সেই চিন্তায় আছি। দেশকে কোথায় নিয়ে যাবে। জাহান্নামের পরে যদি কিছু থাকে সেখানে নিয়ে যাবে না কি। এজন্য মুক্তিযুদ্ধ করিনি। রক্ত দিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার অর্জন করিনি। 

এই সরকার তা বাতিল করেছে। নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন চাই। পার্লামেন্ট বাতিল করে আপনিও নির্বাচনে আসতে পারেন। তাতে আপনি রাজি হলে ও জিতলে, জনগণ যে ভোট দেবে তা আমরা মেনে নেব। দেশে এক টাকার উন্নয়ন হয়েছে, একশ টাকা লুট হয়েছে। আসুন ঐক্য প্রক্রিয়া গড়ে তুলি। এর বিকল্প নেই। রাজবন্দিদেরকে কারাগারে রাখতে পারবেন না। মুক্তি দিতে হবে। সমাবেশে তিনি বিভিন্ন স্লোগান ধরেন। তা হলো, সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে, এবার গদি ছাড়তে হবে। বেহুদার ইভিএম, মানি না মানব না ইত্যাদি। 

জাতিকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে

নাগরিক সমাবেশে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেছেন, সত্যিকার অর্থে বাংলাদেশের যে উন্নয়ন হয়েছে তা হচ্ছে কেন্দ্রীভূত উন্নয়ন। এখন সারা দেশের মানুষকে চিকিৎসা, বিচার এমনকি মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা নেয়ার জন্য ঢাকায় আসতে হয়। এই কেন্দ্রীকতার উন্নয়ন জাতিকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে। গ্রামের মানুষ, গার্মেন্টেসের কর্মীদের কোনো উন্নয়ন হয়নি। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য কী করণীয় তা করতে হবে। দেশ এখন ‘র’ ও ‘মোসাদ’ দ্বারা পরিচালিত। সুষ্ঠু নির্বাচন করার জন্য তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি অনুরোধ জানান। 

দুঃশাসনের বিরুদ্ধে জনগণ ঐক্যবদ্ধ

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মঈনুল হোসেন বলেন, ঐক্য প্রক্রিয়ার প্রতি আমাদের সমর্থন আছে। দুঃশাসনের প্রতি জনগণ ঐক্যবদ্ধ। প্রয়োজন ঐক্যবদ্ধ নেতৃত্ব। আমরা স্বাধীন দেশের নাগরিক। দেশ আমাদের, সরকার আমাদের। কিন্তু ভোট আমাদের হবে না তা তো হবে না। বাক্সে ভোট আমাদের, ফলাফল ঘোষণা হবে অন্য স্থান থেকে, তা হবে না। ক্ষমতা না ছাড়ার নীলনকশা করা হচ্ছে। সংসদ ও গণতন্ত্রের নিয়মে নির্বাচন হতে হবে। কয়েক লাখ লোক হত্যা করার ভয় আপনাদের দেখাতে হবে না। জনগণ অপরাজেয়। জনগণের বিষয় নিশ্চিত। 

বিনা ভোটের সরকার হঠাতে হবে

ডাকসুর সাবেক ভিপি সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদ বলেন, এখানে  সকল দল-মতের মানুষ একত্রিত হয়েছেন। বঙ্গবন্ধু যাকে সংবিধান প্রণয়নের দায়িত্ব দিয়েছিলেন সেই ড. কামাল হোসেন সভাপতিত্ব করছেন। শুধু দলে দলে, নেতায় নেতায় নয়; পাড়ায় পাড়ায়, ঘরে ঘরে ঐক্য হতে হবে। বিনাভোটের সরকার হটিয়ে দলনিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন করতে হবে। তিনি বলেন, এই আওয়ামী লীগ বঙ্গবন্ধু ও তাজ উদ্দীনের আওয়ামী লীগ নয়। লুটেরা আওয়ামী লীগ। বঙ্গবন্ধুর চামড়া দিয়ে যারা ডুগডুগি বাজানোর কথা বলেছিল তাদের আওয়ামী লীগ। 

গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টু বলেন, ছাত্ররা আমাদের দেখিয়েছে। রাস্তায় শৃঙ্খলা এনেছে। পুলিশকে শিক্ষা দিয়েছে। জনগণ সবকিছু দিয়ে এই আন্দোলন করে যাবে। 

বিকল্প ধারা বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক মেজর (অব.) আব্দুল মান্নান বলেন, জাতি আজ রুগ্ন। জনগণ সব অধিকার হারিয়েছে। অধিকার ফিরিয়ে আনতে হবে। কেড়ে আনতে হবে। এখানে দলগুলো অনেক দাবি নিয়ে এসেছে। 

দেশের ভবিষ্যৎ হুমকির মুখে

সমাবেশে গণসংগতি আন্দোলনের আহ্বায়ক জোনায়ের সাকি গত বৃহস্পতিবার পুলিশের পিটুনিতে আহত হন। একহাত গলায় বাঁধা অবস্থায় নিজদলের পক্ষ থেকে তিনি সমাবেশে যোগ দেন। বক্তব্যে তিনি বলেন, বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে দেশের সবাই জানে যে, স্বৈরতান্ত্রিক ব্যবস্থার মধ্যে আমরা আছি। এটা এক ব্যক্তির স্বৈরতন্ত্র নয়। ব্যবস্থাগত স্বৈরতন্ত্র। দেশের স্বৈরতান্ত্রিক কাঠামো কাজে লাগিয়ে এতদিন তা কার্যকর রয়েছে। জনগণ গণতন্ত্র পায়নি। 

যে ক্ষমতা কাঠামোর অধীনে এক দল বলে- ‘আসুন। পারলে ঠেকান। ক্ষমতা হারালে আমাদের লোক ঘরে থাকতে পারবে না।’ তাহলে দেখুন, এরা আবার ক্ষমতায় আসলে বিরোধীশক্তি নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। সংকট ও সংঘাতকে পুনরাবৃত্তির মধ্যে ফেলেছে। আমাদের নতুন একটি গণতান্ত্রিক কাঠামো আমরা একটা জাতীয় এক্য চাই। সংবিধান সংস্কার করা প্রয়োজন। আগামী নির্বাচনসহ ভবিষ্যতে আরো ৩টা নির্বাচন নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে হতে হবে। 

বাংলাদেশ বহু আন্তর্জাতিক চক্রান্তের মুখোমুখি ও দেশের ভবিষ্যৎ নানাভাবে হুমকির মুখে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। 
গণতান্ত্রিক আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী বলেন, দেশে এখন নির্বাচিত সরকার নেই। গণতান্ত্রিক সরকার নেই। একটি অবৈধ অনির্বাচিত সরকার আছে। ভোটাধিকার এই সরকার ধ্বংস করে দিয়েছে। সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন, জাতীয় ঐক্য ঢাকা মহানগরীর যুগ্ম আহ্বায়ক ড. মোমেনা খাতুন, যুব শাখার নেতা মো. হানিফ, গণফোরামের ঢাকা মহনগরীর সভাপতি সাইদুর রহমান ও ঐক্যবদ্ধ ছাত্র সমাজের সভাপতি আজম অপু।

ড. কামাল হোসেনের সভাপতিত্বে ও জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার সদস্য সচিব আ ব ম মোস্তফা আমিনের পরিচালনায় নাগরিক সমাবেশে আরো বেশ কয়েকটি দলের প্রধান ও শীর্ষ নেতৃবৃন্দ যোগ দেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন- বিজেপি চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থ, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী, ২০ দলীয় জোটের নেতা জুনায়েদ বাবু নগরী, জাতীয় পার্টি (জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, লেবার পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, স্বদেশ পার্টির সভাপতি রফিকুল ইসলাম মন্টু, আম জনতা ডেমোক্রেটিক পার্টির চেয়ারম্যান মো. মশিউর রহমান শংকু, বাংলাদেশ শরীয়া আন্দোলনের আমীর মাওলানা মুহাম্মদ মাসুম বিল্লাহ, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি-জাগপার সাধারণ সম্পাদক খন্দকার লুৎফর রহমান, খেলাফত মজলিসের ড. আহমেদ আবদুল কাদের ও আহসান হাবীব লিংকন প্রমুখ।

বেলা ৩টায় সমাবেশ শুরুর আগে দুপুরের পর থেকে শুরু হয় গণসঙ্গীত পরিবেশনা। সমাবেশের শুরুর দিকে গণসঙ্গীত পরিবেশ করেন, উদীচীর কেন্দ্রীয় সঙ্গীত সম্পাদক সুরাইয়া পারভীন ও মাইশা সুলতানা উর্বী। 

জাতীয় ঐক্য ইতিমধ্যে প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেছে: মোশাররফ

বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, আজকের এই সমাবেশের মধ্য দিয়ে স্বৈরাচার ও ফ্যাসিস্ট সরকার থেকে দেশকে রক্ষা করার প্রক্রিয়ার সূচনা হলো। আজ এই সমাবেশে উপস্থিত নেতারা বর্তমান সরকারকে সরানোর জন্য একটি জাতীয় ঐক্য চাইছে। কিন্তু আমাদের নেত্রী খালেদা জিয়া অনেক আগেই জাতীয় ঐক্যের ডাক দিয়েছিলেন। আমি মনে করি সারা দেশের মানুষের মধ্যে জাতীয় ঐক্য ইতিমধ্যে প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেছে। তিনি বলেন, যে নেত্রী ২০১৪ সালের ৫ই জানুয়ারির নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেননি বলে কোনো নির্বাচনই হয়নি- এই জন্য তাকে আজ কারাগারে রাখা হয়েছে। তাকে কারাগারে রেখে আবার ৫ই জানুয়ারির মতো আরেকটি নির্বাচন করতে চায়। তিনি আরো বলেন, এই সরকার নির্বাহী বিভাগ ও বিচার বিভাগকে ধ্বংস করে দিয়েছে। এটার প্রমাণ হয়েছে গত ১লা সেপ্টেম্বর থেকে এ পর্যন্ত বিরোধী নেতাকর্মীদের নামে পুলিশ যতো ভুতুড়ে মামলা দিয়েছে তার মাধ্যমে। 

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, আজকের এই সমাবেশ নতুন মাইলফলক। যার মাধ্যমে গণতান্ত্রিক রাজনীতির নতুন যাত্রা শুরু হয়েছে। এই ঐক্যপ্রক্রিয়া দেশের গণতন্ত্রকামী মানুষকে আরো সুসংহত করবে। ড. কামাল হোসেনকে বাংলাদেশের গৌরব আখ্যায়িত করে তার উদ্দেশ্যে বলেন, আইনের শাসন, ভোটের অধিকার রক্ষায়, গণতন্ত্র রক্ষায় আমরা এক সঙ্গে কাজ করতে চাই। ভোটের অধিকার রক্ষায় আপনারা কাজ করেন। আমরা আপনাদের সঙ্গে আছি। ইনশাআল্লাহ ভবিষ্যতেও থাকবো। মওদুদ বলেন, আমি মনে করি ৫টি দাবি নিয়ে ঐক্যপ্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। নির্বাচনকালীন সরকার নিরপেক্ষ হতে হবে, সংসদ ভেঙে দিতে হবে, নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে হবে, ইসি পুনর্গঠন করতে হবে ও নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার বাতিল করতে হবে। এই দাবিগুলোর সঙ্গে আমরা যারা বিএনপি করি তাদের আরেকটি দাবি হলো- দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তি দিতে হবে। সকল নেতাকর্মীকে মুক্তি দিতে হবে। কোনো নতুন গ্রেপ্তার চলবে না।  

স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেন, আজকে থেকে ৪৭ বছর আগে এ দেশের কোটি কোটি মানুষ স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। লক্ষ লক্ষ মানুষ রক্ত দিয়েছিল। অথচ স্বাধীনতার এত বছর পরেও আমাদের বলতে হয় বাংলাদেশের স্বাধীনতা আজ মৃত। অল্প সংখ্যক মানুষের কাছে সব সম্পদ চলে যাচ্ছে। আর দরিদ্র মানুষ আরো দরিদ্র হয়ে যাওয়া দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে নিম্নের দিকে যাচ্ছে বাংলাদেশ। তিনি বলেন, এসব অনাচার থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য একটি জাতীয় ঐক্য দরকার। আসুন আমরা সকলে মিলে একটি জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলি।

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নাল আবেদীন বলেন, ইতিমধ্যে সারা দেশের জনগণের ঐক্য হয়েছে। সারা দেশের আইনজীবীরাও ঐক্যবদ্ধ হওয়া শুরু করেছে। আশা করি দেশনেত্রী খালেদা জিয়াসহ সকল নেতৃবৃন্দ মুক্তি পাবে। আমি আল্লাহর কাছে দোয়া করি আমাদেরকে এই দাজ্জাল শাসকের হাত থেকে রক্ষা করুন।

খালেদা জিয়াসহ রাজবন্দিদের মুক্তি দিতে হবে: মান্না

নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, দেশে আজ গভীর সংকট। আর মাত্র সাড়ে তিন মাস পরে নির্বাচন। অথচ গতকালও সারা দেশে সাড়ে তিন শত বিরোধী নেতাকর্মী গ্রেপ্তার হয়েছে। ঈদের পর থেকে আজ ২২শে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অন্তত ২২ হাজার বিরোধী নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মামলা হয়েছে কতো জনের নামে তার হিসাব নেই। এসময় তিনি বলেন, আমি খালেদা জিয়াসহ সকল রাজবন্দির মুক্তি দাবি করছি। তাদের মুক্তি দিতে হবে। 

যদি কেউ পুলিশ দিয়ে, র‌্যাব দিয়ে গায়ের জোরে ক্ষমতায় থাকতে চায় তাদের উদ্দেশ্যে বলবো- আমরা এত জোরে আওয়াজ তুলবো যে, আপনারা কথাই বলতে পারবেন না। মান্না বলেন, আজকে আমরা যে দাবি করছি আওয়ামী লীগ ও ১৪ দল ছাড়া সকল দল সেই দাবি করছে। সুতরাং জাতীয় ঐক্য তো হয়েই গেছে। আমরা এখন সারা দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে এই জাতীয় ঐক্যের বার্তা ছড়িয়ে দেব। তিনি বলেন, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে একটি নির্বাচন দিতে হবে।

যারা এই সরকারে আসবেন তারা কোনো নির্বাচন করতে পারবেন না। ভোটের আগের দিন, ভোটের দিন ও ভোটের পরের দিন সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে হবে। তিনি বলেন, ২০১৪ সালের ৫ই জানুয়ারি নির্বাচনে রাস্তার মানুষ ঘরে ছিল। আমরা যতোই চেষ্টা করেছি মানুষ রাস্তায় নামেননি। এবার এমন ব্যবস্থা করতে হবে যাতে ঘরের মানুষ রাস্তায় নামবে। আর রাস্তার সকল দুর্বৃত্ত ঘরে ঢুকে যাবে। সরকারের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ওরা একটা গোষ্ঠী। ওরা চোর, ডাকাত। ওরা ভোট চুরি করে, শেয়ার বাজার লুট করে। আগামী নির্বাচন যেন ৫ই জানুয়ারির মতো ফোর টুয়েন্টি মার্কা নির্বাচন না হয় তার দাবিতে বামফ্রন্ট মিছিল করেছে। তাদের পুলিশ লাঠিপেটা করেছে। 

কার্টসিঃ মানবজমিন/সেপ্টেম্বর ২২,২০১৮

No comments:

Post a Comment