Search

Monday, October 22, 2018

মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকায় অব্যবস্থাপনা

সম্পাদকীয়


আমাদের সরকারগুলো ৪৭ বছর ধরে মুক্তিযোদ্ধাদের একটা পূর্ণাঙ্গ তালিকা তৈরির কাজ শেষ করতে পারছে না। একটা করে সরকার আসে আর মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা পরিবর্তন করা হয়; সংযোজন-বিয়োজন শেষে দেখা যায়, মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা বেড়ে গেছে। এভাবে মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা পরিবর্তন করা হয়েছে ছয়বার। মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞা, স্বীকৃত বয়স ও মানদণ্ড পরিবর্তন করা হয়েছে ১১ বার। যুদ্ধ করে স্বাধীনতা অর্জনকারী জাতির জন্য এটা দুর্ভাগ্যজনক।

লক্ষণীয় বিষয় হলো, মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দানকারী দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ অতীতে দুই মেয়াদে ৯ বছর এবং বর্তমানে টানা প্রায় ১০ বছর ধরে সরকার পরিচালনা করছে, কিন্তু তারাও মুক্তিযোদ্ধাদের সঠিক পূর্ণাঙ্গ তালিকা তৈরি করতে ব্যর্থ হয়েছে। বর্তমান সরকারের আমলে যে ন্যক্কারজনক ঘটনাটি ঘটেছে, তা হলো পাঁচজন সচিব ও বিভিন্ন সরকারি সংস্থার প্রধান প্রকৌশলীসহ প্রশাসনের কতিপয় উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা মুক্তিযোদ্ধা সাজার উদ্দেশ্যে ভুয়া সনদ নিয়েছেন এবং সনদগুলো ভুয়া প্রমাণিত হওয়ার পরও সরকার তাঁদের বিরুদ্ধে কোনো আইনগত পদক্ষেপ নেয়নি। মহান মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযুদ্ধে জীবন উৎসর্গকারী শহীদদের জন্য চরম অবমাননাকর এই অনৈতিক কাজের প্রতি সরকারের নির্বিকার উদাসীনতা এককথায় মর্মান্তিক।

শনিবার প্রথম আলোর প্রথম পাতায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রীর বরাত দিয়ে লেখা হয়েছে, বিগত বিএনপি সরকারের আমলে প্রায় ২২ হাজার ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা গেজেটভুক্ত হয়েছেন। মন্ত্রী বলেছেন, তাঁর আমলে আট হাজার ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার গেজেট বাতিল করা হয়েছে। কিন্তু প্রথম আলোর প্রতিবেদক দুই সপ্তাহ ধরে অনুসন্ধান চালিয়েও আট হাজার মুক্তিযোদ্ধার গেজেট বাতিল করার কোনো প্রমাণ উদ্ধার করতে পারেননি। এখানে কিছু আইনি জটিলতা আছে, অনেক ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা গেজেট বাতিল হওয়ার পর আদালতের শরণাপন্ন হয়েছেন, ফলে বিষয়টি অনিষ্পন্ন রয়ে গেছে।

প্রথম আলোর প্রতিবেদনটিতে আরও বলা হয়েছে, বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের আমলেও সাড়ে ১১ হাজার মুক্তিযোদ্ধা গেজেটভুক্ত হয়েছেন। প্রশ্ন হলো, মুক্তিযুদ্ধ শেষ হওয়ার এত বছর পর যাঁরা মুক্তিযোদ্ধার সনদ পেলেন, তাঁরা কি প্রকৃতই মুক্তিযোদ্ধা? এই প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যায় সরকারের মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়াটির হাঁড়ির খবর নিলে। বর্তমান সরকার যাচাই-বাছাই করে পাঁচ হাজার মুক্তিযোদ্ধাকে তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। গত বছর জানুয়ারি মাসে এই উদ্যোগ শুরু হয়: দেড় লাখ লোক মুক্তিযোদ্ধার তালিকাভুক্ত হওয়ার জন্য আবেদন করেন। কিন্তু যাচাই-বাছাই কমিটি গঠন থেকে শুরু করে পুরো প্রক্রিয়ায় ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠলে সরকার নতুন তালিকা তৈরির সিদ্ধান্তটি স্থগিত করে দেয়। এ থেকে বলা যায়, এই সরকারের আমলেই যে সাড়ে ১১ হাজার মুক্তিযোদ্ধাকে গেজেটভুক্ত করা হয়েছে, তাঁদের অধিকাংশই ভুয়া।

প্রথম আলোর প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে, বর্তমানে মোট ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা প্রায় ৩৩ হাজার। কিন্তু তাঁদের শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি বলে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী নিজেই স্বীকার করেছেন। তিনি এ কথাও বলেছেন যে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন জেলা কমিটি থেকে পাঠানো মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকায় ভুয়াদের উপস্থিতি বেশি। এটা থেকেই পরিষ্কার বোঝা যায়, মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা তৈরির প্রক্রিয়াটিতে গুরুতর গলদ রয়েছে। দলীয় কমিটিগুলোকে এর সঙ্গে যুক্ত করা উচিত নয়। আরও উচিত নয় এই প্রক্রিয়ায় চলমান দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতিসহ সব ধরনের অনৈতিক চর্চাকে প্রশ্রয় দেওয়া। মুক্তিযোদ্ধা নন, কিন্তু ভুয়া সনদ ও সুবিধাদি নিয়েছেন, এমন ব্যক্তিদের শনাক্ত করে আইনানুগ শাস্তি দিতে হবে।

মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা তৈরি নিয়ে এই লজ্জাজনক অব্যবস্থাপনার অবসান ঘটাতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের প্রতি আন্তরিক দায়বদ্ধতা থেকে পরিপূর্ণ সততার সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা যাচাই-বাছাই সম্পন্ন করে একটা সঠিক ও পূর্ণাঙ্গ তালিকা তৈরি ও প্রকাশ করার উদ্যোগ নেওয়া হোক, যা হবে চূড়ান্ত, যাতে আর কোনো সংযোজন-বিয়োজনের প্রয়োজন থাকবে না।

  • কার্টসিঃ প্রথম আলো/ ২ অক্টোবর ২০১৮
  • লিঙ্ক — https://goo.gl/kFmhMD

দেশে ৩ কোটি মানুষ দরিদ্র এক কোটি হতদরিদ্র

অর্থনৈতিক রিপোর্ট


দেশে এখনো ৩ কোটি মানুষ দরিদ্র। যার মধ্যে ১ কোটি হতদরিদ্র বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। গতকাল রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) আয়োজিত ‘বাংলাদেশ কিশোর-কিশোরী  সম্মেলন- ২০১৮’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। অর্থমন্ত্রী বলেন, আমাদের বার্ষিক দারিদ্র্য দূরীকরণ হার এখনো ২ শতাংশের যথেষ্ট নিচে রয়েছে। এটাকে ২ শতাংশে যদি আমরা নিতে পারি তাহলে হয়তো আগামী ১০ বছরে দেশ থেকে দারিদ্র্য দূরীভূত করতে পারব। তিনি বলেন, আমাদের লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে দারিদ্র্যসীমা অন্তত ১০ শতাংশের মধ্যে নিয়ে আসা। এজন্য আমরা যে কার্যক্রম গ্রহণ করছি সে অনুযায়ী যদি ৭-৮ বছর চালিয়ে যেতে পারি তাহলে সেই লক্ষ্যে আমরা পৌঁছে যেতে পারি।

অর্থমন্ত্রী বলেন, আমরা দারিদ্র্যকে অনেকভাবে হারিয়েছি। কিন্তু এখনো প্রায় তিন কোটি মানুষ দরিদ্র আছে। তার মধ্যে আবার এক কোটি অত্যন্ত হতদরিদ্র। সরকারের লক্ষ্যমাত্রা ১৯৭১ সালে নির্ধারিত হয়েছিল সেটা এখনো আছে। 

তিনি বলেন, দারিদ্র্য দূরীকরণ মানে এই নয় যে দেশে কোনো গরিব লোক থাকবে না। কিছু দরিদ্র সবসময় থাকবে। আমেরিকার মতো অত্যন্ত ধনী দেশেও ১৪ শতাংশ মানুষ গরিব। তবে মালয়েশিয়ায় পৃথিবীর সবচেয়ে কম, মাত্র ৭ শতাংশ মানুষ দারিদ্র্যসীমার মধ্যে আছে।
  • কার্টসিঃ মানবজমিন/ ২২ অক্টোবর ২০১৮
  • লিঙ্ক — https://goo.gl/aMFtvE

অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন উদ্বেগ প্রশমিত করতে পারে

এনডিআই’র রিপোর্ট

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রকাশিত ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ইনস্টিটিউটের (এনডিআই) প্রতিবেদন বলেছে, নির্বাচন যতো ঘনিয়ে আসছে, ততোই বাংলাদেশের মেরূকরণ ঘটছে এবং রাজনৈতিক বিতর্কের জায়গা সংকুচিত হয়ে পড়ছে। বিরোধী দল অভিযোগ করেছে, তাদের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে হাজার হাজার মামলা দায়ের করা হয়েছে। সিভিল ও রাজনৈতিক অধিকারের   ওপর নানা ধরনের বাধানিষেধ ক্রমশ বাড়ছে। এনডিআই প্রতিনিধিদলটি ঢাকায় থাকতেই প্রেসিডেন্ট ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে সই করেছেন। 

একথা উল্লেখ করে সংস্থাটির প্রতিবেদন মন্তব্য করেছে যে, ‘এটা ভয় আরো বাড়িয়েছে। যদিও জাতীয় নিরাপত্তার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু এই আইনের অপব্যবহার ঘটতে পারে। আইনের শাসন, বাকস্বাধীনতা এবং ডিউ প্রসেসের ধারণায় প্রতিকূলতা তৈরি করবে।

এই ধরনের আইন প্রণীত হওয়ার কারণে কতিপয় বাংলাদেশি এবং আন্তর্জাতিক সমপ্রদায়ের সদস্য উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যে, এই আইন গণতান্ত্রিক রীতিনীতির প্রতি অবিচল থাকতে দেশটির যে দীর্ঘ ঐতিহ্য আছে, সেটি ঝুঁকির মধ্যে পড়তে পারে। এমনকি তা  দেশটিকে একদলীয় আধিপত্যের দিকে নিয়ে যেতে পারে।’ 

লক্ষণীয় যে, এনডিআই ওই মন্তব্যের পরে বলেছে, আসন্ন নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে করার মধ্য দিয়ে এধরনের উদ্বেগ প্রশমিত করতে পারে। এ জন্য গণতন্ত্রের প্রতি সংকল্প এবং রাজনৈতিক প্রক্রিয়াকে প্রতিযোগিতাপূর্ণ করতে হবে। 

এ প্রসঙ্গে তারা আন্তর্জাতিক রিপাবলিকান ইনস্টিটিউট দ্বারা পরিচালিত একটি সামপ্রতিক জনমত জরিপের বরাতে বলেছে, দুই দলীয় সংলাপকে বাংলাদেশের মানুষ সমর্থন করবে। আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি তাদের মতপার্থক্যগুলো দূরে সরিয়ে সমস্যা সমাধানের জন্য একসঙ্গে কাজ করতে সক্ষম, এই ধারণা বাংলাদেশের একটি উল্লেখযোগ্য জনগোষ্ঠীর বিশ্বাসে আছে।

ওই জরিপে অংশগ্রহণকারী ৫৯ শতাংশ উত্তরদাতারা এ বিষয়ে একমত। এনডিআই প্রতিনিধিদল বিশ্বাস করে যে সরকার ও বিরোধী দল সংলাপে বসলে একটি বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় শর্ত পূরণে তারা একটি চুক্তিতে পৌঁছাতে পারে। প্রতিনিধিদলটি আরো মনে করে,  ‘গত এক দশকে অর্থনীতির উন্নয়ন ও দারিদ্র্যবিমোচনে যে অর্জন বয়ে এনেছে, সেটা তার বিরাজমান রাজনৈতিক উন্নয়ন ধারার সঙ্গে একেবারেই সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।’ 

এনডিআই তার রিপোর্টে আরো বলেছে, বাংলাদেশের সামপ্রতিককালে যেসব গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়ন নিশ্চিত করেছে, সেটা এখন যদি একটি বিশ্বাসযোগ্য এবং স্বচ্ছ জাতীয় সংসদ নির্বাচন করতে পারে তাহলে তা সম্পূর্ণতা পাবে। এর ফলে বাংলাদেশের নাগরিকদের আস্থা পূরণে সাফল্য আসবে।

উল্লেখ্য, এনডিআই প্রতিনিধিদল এই সুপারিশমালা তৈরি করতে গত ৫ থেকে ১১ই অক্টোবর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কর্মকর্তা, রাজনৈতিক দলের  নেতা, নির্বাচন কমিশন, সুশীল সমাজ প্রতিনিধি, নাগরিক নির্বাচন পর্যবেক্ষক গ্রুপের সঙ্গে কথা বলে। তারা নারী সংসদ সদস্য, রাজনৈতিক কর্মী; মিডিয়া প্রতিনিধি, সাবেক সরকারি কর্মকর্তা; ব্যবসায়ী নেতা এবং আন্তর্জাতিক ও কূটনৈতিক সমপ্রদায়ের প্রতিনিধিদের মতামতও নেন। 

বর্তমান এনডিআই বোর্ডের সদস্য এবং মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের দক্ষিণ এশীয় বিষয়ক সাবেক মার্কিন সহকারী সেক্রেটারি রাষ্ট্রদূত কার্ল ইন্ডারফার্থ দলটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন। বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও ভারত বিষয়ক তিনি একজন বিশেষজ্ঞ। পাকিস্তানি লেখক ও সাবেক সংসদ সদস্য ফারাহ নাজ ইস্পাহানী এবং সিনিয়র সহযোগী ও এনডিআইয়ের এশিয়া প্রোগ্রামের আঞ্চলিক পরিচালক পিটার ম্যানিকাস, এনডিআই নির্বাচন উপদেষ্টা মাইকেল ম্যাকনুলি এবং এনডিআই-এর এশীয় বিষয়ক সিনিয়র প্রোগ্রাম ম্যানেজার অ্যাডাম নেলসন ওই প্রতিনিধি দলে আছেন।

এনডিআই রিপোর্ট বলেছে, ‘গত এক দশকে দেশটি শক্তিশালী অর্থনৈতিক উন্নয়ন প্রত্যক্ষ করেছে। লাখ লাখ মানুষ দারিদ্র্যের বাইরে এসেছে। যদিও আয় বৈষম্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়েই আছে। ২০১৫ সালে দেশটি বিশ্বব্যাংকের রাঙ্কিং ‘মাঝারি আয় অবস্থায়’ উন্নীত হয়েছিল। এই বছরের শুরুর দিকে জাতিসংঘ স্বীকৃতি দিয়েছে যে বাংলাদেশ সম্ভবত ২০২৪ সালের মধ্যে এলডিসি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার মাপকাঠি পূরণ করবে। উপরন্তু, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার  নেতৃত্বাধীন সরকার বিশেষভাবে প্রশংসার দাবিদার। কারণ ২০১৭ সালের আগস্ট থেকে মিয়ানমার  থেকে প্রায় সাত লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীকে বরণ করে নিতে সরকার দেশের সীমান্ত খুলে দিয়েছে।’ 

এনডিআই প্রতিবেদনে আসন্ন নির্বাচনে ভয়ভীতির পরিবেশ এবং সম্ভাব্য সহিংসতার ব্যাপকতার বিষয়ে সতর্ক করেছে। তারা বলেছে, আগামী নির্বাচনে সহিংসতার প্রকোপ বাড়লে তা গোটা নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় নারীর অংশগ্রহণকে হ্রাস করবে।  

এনডিআই উল্লেখ করেছে যে, বাংলাদেশের গত নির্বাচনগুলো  নির্বাচনী বয়কট, সাধারণ ধর্মঘট (হরতাল), অবরোধ এবং তার পাশাপাশি সহিংসতা ও ভয়ের একটি প্যাটার্ন অনুসরণ করেছে। আর এই ঐতিহাসিক বাস্তবতাই বাংলাদেশের উভয় প্রতিদ্বন্দ্বী দলের কাছে রাজনীতিকে একটি জিরো সাম গেম বা একটি শূন্য-সমষ্টি খেলা হিসেবে চিহ্নিত করেছে।  

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি)  নেতা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া ২০১৮ সালের  ফেব্রুয়ারিতে দুর্নীতির দায়ে দোষী সাব্যস্ত হন। বর্তমানে তিনি পাঁচ বছরের কারাদণ্ড ভোগ করছেন। একই ধরনের উদাহরণ আওয়ামী লীগ ও বিএনপি উভয়কে গত কয়েক বছরের রাজনীতিতে নিজেদের নেতাদের মধ্যে অবিশ্বাসের সংস্কৃতির বিকাশ ঘটিয়েছে। এবং নির্বাচনে হেরে যাওয়ার বিরূপ প্রতিক্রিয়ার ভয়ে ভীতি অনুভব করছে। 

এনডিআই রিপোর্ট বলছে, বাংলাদেশ সংসদের ৩০০ আসন একক সদস্যের নির্বাচনী এলাকা নিয়ে গঠিত। ৫০ আসন নারীর জন্য সংরক্ষিত। এসব সংরক্ষিত আসন সরাসরি নির্বাচিত হয় না; তা বরাদ্দ করা হয় পার্লামেন্টে দলগুলোর আসনের আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের ওপর ভিত্তি করে। রাজনৈতিক দলগুলো এখন একক ম্যান্ডেট পেতে নির্বাচনী এলাকার জন্য প্রার্থীদের চিহ্নিত করছে। দলগুলোর মধ্যে মনোনয়ন প্রক্রিয়া স্বচ্ছ নয়। এমনকি দলগুলোর অভ্যন্তরীণ গণতান্ত্রিক চর্চায় এর কোনো প্রভাব নেই। পার্টি প্রতিনিধিরা বলেছেন, সাধারণত যারা গুরুত্বপূর্ণ পরিমাণে তহবিল আনতে এবং ভালো কানেকশন  রেখে চলেন, তারাই মনোনয়ন পান। তৃণমূল স্তর থেকে নতুন নারী প্রার্থীর উত্থানও একই কারণে বাধাগ্রস্ত হয়ে থাকে। 

  • কার্টসিঃ মানবজমিন/ ২২ অক্টোবর ২০১৮
  • লিঙ্ক —https://goo.gl/iAyzQn

অবাধ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের তাগিদ যুক্তরাষ্ট্রের

পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে মার্কিন মন্ত্রীর বৈঠক


বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন দেখতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। নির্বাচনটি এমন হতে হবে যাতে দেশের জনগণের আকাঙ্ক্ষার প্রকৃত প্রতিফলন ঘটে। পররাষ্ট্র সচিব মো. শহিদুল হকের সঙ্গে বৈঠকে ওই বার্তাই দিলেন সফররত দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক মার্কিন মুখ্য উপ-সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী এলিস ওয়েলস। গতকাল সকালে সেগুনবাগিচার পররাষ্ট্র ভবনে সিনিয়র সচিব মো. শহিদুল হকের সঙ্গে ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক করেন তিনি। 

এতে বাংলাদেশ  এবং সম-সাময়িক বিশ্ব পরিস্থিতি, আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন, রোহিঙ্গা সংকট, সৌদি আরবের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক এবং প্রধানমন্ত্রীর সদ্য সমাপ্ত রিয়াদ সফরসহ ঢাকা-ওয়াশিংটন বহুমাত্রিক সম্পর্কের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন তারা। বৈঠক শেষে পররাষ্ট্র সচিব সংবাদমাধ্যমকে বলেন, অন্যান্য বিষয়ের সঙ্গে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও আসন্ন নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হয়েছে। 

আলোচনায় মার্কিন মুখ্য উপ-সহকারী মন্ত্রী বলেন, তার দেশ প্রত্যাশা করে বাংলাদেশে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং এতে সব দল অংশ নেবে। জবাবে পররাষ্ট্র সচিব জানিয়েছেন, বর্তমান সরকারও এমন একটি নির্বাচন করতে চায়, এজন্য সব প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে।

বৈঠক সূত্র বলছে, সচিবের সঙ্গে আলোচনায় প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের ইন্দো প্যাসিফিক স্ট্যাটেজিতে বাংলাদেশের শক্তিশালী অবস্থান কামনা করেছেন মার্কিন মন্ত্রী। 

জবাবে সচিব এ নিয়ে বাংলাদেশ প্রশ্নে যুক্তরাষ্ট্রের সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনার বিষয়ে জানতে চেয়েছেন। বৈঠকে মার্কিন মন্ত্রীর সফরসঙ্গী ছাড়াও ঢাকায় নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাট উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকের পর মন্ত্রী রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করতে কক্সবাজার যান। শনিবার বিকাল সাড়ে ৫টায় তিনি ঢাকায় পৌঁছান। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অ্যামেরিকাস অনুবিভাগের কর্মকর্তারা তাকে বিমানবন্দরে স্বাগত জানান। মার্কিন মন্ত্রী শনিবার রাতেই প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিকের সঙ্গে নৈশভোজে মিলিত হন।

সোমবার রাতে ঢাকা ছেড়ে যাওয়ার আগে বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল এবং কূটনীতিকদের সঙ্গে তার বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। তিনি গণমাধ্যমের মুখোমুখিও হবেন। ওদিকে মুখ্য উপ-সহকারী পররাষ্ট্র মন্ত্রীর ঢাকা সফর নিয়ে মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট একটি বিবৃতি দিয়েছে। তাতে জানানো হয়েছে- দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক উন্নয়ন, সমৃদ্ধ ও নিরাপদ ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল গড়ে তুলতে পারস্পরিক সহযোগিতার বিষয়ে এলিস ওয়েলস বাংলাদেশের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করবেন। রোহিঙ্গাদের আশ্রয় ও নিরাপদ বসবাসের সুযোগ সৃষ্টির জন্য তিনি বাংলাদেশের নেতৃত্বের প্রতি যুক্তরাষ্ট্র সরকারের তরফে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করবেন। 

  • কার্টসিঃ মানবজমিন/ ২২ অক্টোবর ২০১৮
  • লিঙ্ক — https://goo.gl/9ce9cP

নাটকীয়তার পর অনুমতি, সিলেটে ব্যাপক প্রস্তুতি


অনেক নাটকীয়তার পর সিলেটে সমাবেশের অনুমতি পেয়েছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। অবশ্য এ সমাবেশ করতে উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন ফ্রন্ট নেতারা। দুপুরে রিট আবেদন করার পর বিকালে পুলিশের পক্ষ থেকে অনুমতি দেয়ার বিষয়টি জানানো হয়। আগামী বুধবার সিলেটে হযরত শাহজালাল (রহ.)-এর মাজার জিয়ারত ও সমাবেশের মাধ্যমে মাঠের কর্মসূচি শুরু করবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। সমাবেশের অনুমতি নিয়ে টানাহিঁচড়া চলায় করণীয় ঠিক করতে দফায় দফায় বৈঠক করেন নেতারা। সর্বশেষ বৈঠক থেকে জানানো হয়, অনুমতি না পেলেও সিলেট যাবেন ঐক্যফ্রন্টের নেতারা। গতকাল বিকালে গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেনের মতিঝিলের চেম্বারে ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের বৈঠক চলাকালে সমাবেশের অনুমতি পাওয়ার খবর আসে।

সন্ধ্যায় সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের তরফ থেকে অনুমতি প্রদানের বিষয়টি টেলিফোনে জানানো হয় ঐক্যফ্রন্টের শরিক বিএনপি নেতাদের। এরপর নেতারা গিয়ে মেট্রোপলিটন পুলিশের কাছ  থেকে অনুমতি পত্রও গ্রহণ করেন।

ঐক্যফ্রন্টের নেতারা জানান, ২৪শে অক্টোবর সিলেটে তাদের সমাবেশের অনুমতি দেয়া হয়েছে। অনুমতি পাওয়ার পর সমাবেশের প্রস্তুতি শুরু করেছেন তারা। সমাবেশে বিপুলসংখ্যক লোক সমাগমের প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। সমাবেশটি হবে নগরীর রেজিস্ট্রারি মাঠে। তার আগে ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতারা সিলেটে ওলিদের মাজার জিয়ারত করবেন। 

জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠনের পরই সিলেট থেকে আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করতে ‘সিলেট সমাবেশ’-এর ঘোষণা দেয়া হয়েছিল। প্রাথমিক তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছিল ২৩শে অক্টোবর। একই সঙ্গে রয়েছে ওলিকুল শিরোমণি হযরত শাহজালাল (রহ.) মাজার জিয়ারতের কর্মসূচিও। কর্মসূচি চূড়ান্ত করার পর গত বুধবার বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার আবদুল মুক্তাদিরের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলের সদস্যরা সিলেট মহানগর পুলিশের কমিশনার গোলাম কিবরিয়ার সঙ্গে দেখা করে লিখিত পত্র দিয়ে আসেন। ওই পত্রে তারা ২৩শে অক্টোবর সিলেটের রেজিস্ট্রারি মাঠে সমাবেশের অনুমতি চান। 

ওই পত্র জমা দেয়ার পরপরই সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের তরফ থেকে সমাবেশের অনুমতি দেয়া হবে না মর্মে জানিয়ে দেয়া হয়। এরপর এ নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়। পরে সিলেটের নেতারা কেন্দ্রের সঙ্গে আলোচনাক্রমে গত শনিবার আবারো যান মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারের কার্যালয়ে। সেখানে গিয়ে তারা ২৪শে অক্টোবর সমাবেশের অনুমতি চেয়ে ফের আবেদন করেন। কিন্তু আবেদন দিয়ে আসার পরপরই পুলিশের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেয়া হয়, অনুমতি দেয়া যাবে না। ফলে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সিলেট সমাবেশ নিয়ে ধূম্রজালের সৃষ্টি হয়। সমাবেশের অনুমতি না পাওয়ায় সিলেট বিএনপির শীর্ষ নেতারা জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের নিয়ে শুধুমাত্র মাজার জিয়ারতের কর্মসূচি রেখেছিলেন। তবে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত অনুমতি পেলে সমাবেশ করতে প্রস্তুত রয়েছেন বলে বিএনপি নেতারা জানিয়ে আসছিলেন। 

সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আবুল কাহের শামীম গতকাল সন্ধ্যায় মানবজমিনকে জানিয়েছেন, অনুমতি প্রদানের বিষয়টি পুলিশের তরফ থেকে তাদের জানিয়ে দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন- আমরা সমাবেশের জন্য প্রস্তুতি আগেই নিয়ে রেখেছি। ২৪শে অক্টোবর বিকেলে সিলেটের ঐতিহাসিক রেজিস্ট্রারি মাঠে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। সিলেট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী আহমদ জানিয়েছেন, ২৪শে অক্টোবর সিলেট থেকেই আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করবে ঐক্যফ্রন্টের মাঠের কর্মসূচি। 

ওলিদের মাজার জিয়ারতের মাধ্যমে শুরু হবে ঐক্যযাত্রা। আর এই যাত্রায় শরিক হচ্ছে সিলেটবাসী। এজন্য আমরা আয়োজনে কোনো ত্রুটি রাখছি না। সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার পরিতোষ ঘোষ সমাবেশের অনুমতি দেয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, এ সম্পর্কে লিখিত পত্রও দেয়া হচ্ছে। এদিকে সমাবেশের বিষয়টির সত্যতা জানতে কেন্দ্রীয় নেতাদের নির্দেশে সন্ধ্যায় সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারের কার্যালয়ে যান বিএনপি নেতা ও সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। 

এ সময় পুলিশের পক্ষ থেকে তার কাছেও অনুমতি প্রদানের বিষয়টি জানানো হয়। সন্ধ্যায় নিজ বাসায় মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, অনুমতি পাওয়া গেছে। এখন সমাবেশের প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। সিলেট বিএনপিসহ ঐক্যফ্রন্টের শরিক দলের নেতারা জানিয়েছেন, সিলেটের সমাবেশে ঢাকা থেকে ঐক্যফ্রন্টের প্রায় সব শীর্ষ নেতাই সিলেটে আসছেন। ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে তারা সিলেটে এসে প্রথমে ওলিকুল শিরোমণি হযরত শাহজালাল (রহ.) মাজার জিয়ারত করবেন। পরে তারা হযরত শাহপরাণ (রহ.) মাজার জিয়ারত করবেন। বিকেলে রেজিস্ট্রারি মাঠে সমাবেশে ভাষণ দেবেন। 

সিলেট মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আজমল বখ্‌ত সাদেক জানিয়েছেন, সমাবেশের জন্য আমরা পুরোপুরি প্রস্তুতি নিয়েছি। জাতীয় নেতৃবৃন্দ এলে সিলেটের রাজপথে জনতার ঢল নামবে বলে জানান তিনি। বিএনপিসহ ঐক্যফ্রন্টের নেতারা সিলেটে শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। 

১৪ শর্তে অনুমতি: সিলেটে ১৪ শর্তে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টকে সমাবেশে অনুমতি দিয়েছে পুলিশ। এসএমপির নগর পুলিশের বিশেষ শাখার উপ-পুলিশ কমিশনার স্বাক্ষরিত ওই অনুমতিপত্রে এ শর্ত দেয়া হয়। শর্তের মধ্যে রয়েছে- ১. অনুষ্ঠানস্থলে পর্যাপ্তসংখ্যক পুরুষ-মহিলা স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করতে হবে, ২. রাষ্ট্রবিরোধী কোনো ধরনের বক্তব্য বা বিবৃতি দেয়া যাবে না, ৩. সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করে কিংবা ধর্মীয় অনুভূতি ও মূল্যবোধের উপর আঘাত হানে এ ধরনে বক্তব্য বা বিবৃতি প্রদান বা কোনো ব্যানার, ফেস্টুন, প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করা যাবে না, ৪. জনসাধারণের চলাচলের উপর কোনো ধরনের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা যাবে না, ৫. নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কর্মসূচি শেষ করতে হবে, ৬. আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটে কিংবা মানুষের জানমালের ক্ষতি সাধিত হয় এ ধরনের বক্তব্য প্রদান করা যাবে না, ৭. মাইক ব্যবহারে আশপাশের মানুষের কোনো অসুবিধা করা যাবে না, ৮. ব্যাগ-সিগারেট-দিয়াশলাই, লাইটার নিয়ে সমাবেশে প্রবেশ করা যাবে না, ৯. কোনো ধরনের লাঠিসোটা, ধারালো অস্ত্র কিংবা লাঠি সংবলিত ব্যানার, ফেস্টুন ব্যবহার করা যাবে না, ১০. কোনো ধরনের বৈধ অস্ত্র আনা বা বহন করা যাবে না, ১১. সুরমা পয়েন্ট থেকে তালতলা পর্যন্ত কোনো ধরনের গাড়ি পার্কিং করা যাবে না, ১২. অনুষ্ঠানস্থলে আইনশৃঙ্ক্ষলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটলে আয়োজনকারী দায়ী থাকবেন, ১৩. উল্লিখিত শর্তাবলীর এক বা একাধিকটি লঙ্ঘন করলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে, ১৪. কর্তৃপক্ষ কোনো কারণ দর্শানো ছাড়াই অনুমতি আদেশ বাতিল করার ক্ষমতা সংরক্ষণ করেন। 

  • কার্টসিঃ মানবজমিন/ ২২ অক্টোবর ২০১৮
  • লিংক - https://goo.gl/XSAuVS 

Sunday, October 21, 2018

বাংলাদেশ রেলওয়ে সার্ভিস বাড়েনি, অস্বাভাবিক বেড়েছে জ্বালানির ব্যবহার

সুজিত সাহা

গত দুই বছরে রেলওয়েতে সার্ভিস বাড়েনি, ইঞ্জিনের ব্যবহারও বেড়েছে যৎসামান্য। তার পরও এক বছরের ব্যবধানে জ্বালানি তেলের ব্যবহার বেড়েছে ৬৭ শতাংশেরও বেশি। মূলত চুরির কারণেই রেলে জ্বালানির ব্যবহার অস্বাভাবিক হারে বাড়ছে বলে জানিয়েছেন খোদ রেল কর্মকর্তারাই।

জানা যায়, বাংলাদেশ রেলওয়েতে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে জ্বালানি তেল (ডিজেল) ব্যবহার হয়েছিল ৪১ হাজার ৬৯৮ টন। কিন্তু ২০১৬-১৭ অর্থবছরে এসে ডিজেলের ব্যবহার এক লাফে বেড়ে হয় ৬৯ হাজার ৮২২ টন। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে জ্বালানির ব্যবহার বেড়েছে ২৮ হাজার ১২৪ টন বা ৬৭ দশমিক ৪৫ শতাংশ। যদিও একই সময়ে রেলের ইঞ্জিনের ব্যবহার বেড়েছে মাত্র ৬ দশমিক ৯৭ শতাংশ।

সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে রেলওয়ে ইনফরমেশন বুকস-২০১৭। এ পরিসংখ্যান প্রতিবেদনে রেলের বিগত ১১ বছরের জ্বালানি তেল ব্যবহারের তথ্য সন্নিবেশ করা হয়েছে। ওই প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা গেছে, কয়েক বছর ধরে রেলে জ্বালানি তেলের ব্যবহার স্বাভাবিক নিয়মে বাড়লেও ২০১৫-১৬ অর্থবছরে এসে তা এক লাফে অস্বাভাবিক বেড়ে যায়। রাষ্ট্রায়ত্ত এ পরিবহন সংস্থায় ২০০৭-০৮ অর্থবছরে ৩৫ হাজার ৩৬৮ টন, ২০০৮-০৯ অর্থবছরে ৩৫ হাজার ৬৫৫, ২০০৯-১০ অর্থবছরে ৩৫ হাজার ৫৫৪, ২০১০-১১ অর্থবছরে ৩৫ হাজার ৪৮৫, ২০১১-১২ অর্থবছরে ৩৪ হাজার ৯৬২, ২০১২-১৩ অর্থবছরে ৩৫ হাজার ৩৭, ২০১৩-১৪ অর্থবছরে ৩৬ হাজার ২৫২ ও ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ৩৬ হাজার ৮৯২ টন জ্বালানি তেল ব্যবহার হয়েছে। এ সাত বছরে জ্বালানির মোট ব্যবহার বেড়েছে মাত্র ১ হাজার ৫২৪ টন। কিন্তু ২০১৫-১৬ অর্থবছরে এসে হঠাৎ করেই জ্বালানি ব্যবহার বেড়ে ৪১ হাজার ৬৯৮ টনে দাঁড়ায়। এর পরের বছর অর্থাৎ ২০১৬-১৭ অর্থবছরে তা আরো বেড়ে ৬৯ হাজার ৮২২ টনে উন্নীত হয়, যা অস্বাভাবিক বলে মনে করছেন খোদ রেলওয়ে কর্মকর্তারা।

রেলের নথি পর্যালোচনায় দেখা গেছে, লোকোমোটিভে জ্বালানি তেলের ব্যবহার খুব একটা না বাড়লেও বিবিধ খাতে এর ব্যবহার বেশ বেড়ে গেছে। গত প্রায় এক দশকে রেলের বিবিধ খাতে জ্বালানি তেলের ব্যবহার এক-দেড় হাজার টনে সীমাবদ্ধ থাকলেও ২০১৬-১৭ অর্থবছরে এ খাতে তেলের ব্যবহার হয়েছে ২৫ হাজার ৮৫৬ টন, যা আগের অর্থবছরের চেয়ে ২৪ হাজার ২৭১ টন বেশি। মূলত বিবিধ খাতের জ্বালানি ব্যবহার অস্বাভাবিক হারে বেড়ে যাওয়ার ফলে চুরির বিষয়টি সামনে চলে এসেছে। রেলের সংশ্লিষ্ট বিভাগের ঊর্ধ্বতন একাধিক কর্মকর্তা রেলের তেল চুরি হওয়ার বিষয়টি স্বীকারও করেছেন।

রেলের তেল চুরির বিষয়টি উঠে এসেছে রেলপথ মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বিভিন্ন সভায়ও। রেলের অপারেশনাল রিভিউ মিটিংয়েও (ওআরএম) বিভিন্ন সময় তেল চুরির বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এসব বৈঠকে রেলের তেল চুরি ঠেকাতে বিশেষায়িত সফটওয়্যার তৈরির বিষয়েও আলোচনা হয়। তবে একাধিক বৈঠকে এ বিষয়ে তাগাদা দেয়া সত্ত্বেও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নিতে পারেনি রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রেলপথমন্ত্রী মুজিবুল হক বণিক বার্তাকে বলেন, রেলের তেল চুরি ঠেকাতে মন্ত্রণালয় একাধিক উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। আগামীতে সফটওয়্যারের মাধ্যমে মনিটরিং করা হবে। আধুনিক এ পদ্ধতি চালু হলে চুরি কমে যাবে। তবে সফটওয়্যার পদ্ধতি চালুর বিষয়টি কিছুটা সময়সাপেক্ষ হওয়ায় মনিটরিং কার্যক্রম এখনো শতভাগ পরিপালন হচ্ছে না বলে স্বীকার করেন তিনি।

রেলওয়ে সূত্র জানায়, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর পরই রেলওয়ে বিভিন্ন রুটে একাধিক নতুন ট্রেন সার্ভিস চালু করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে রেলে জ্বালানি তেলের ব্যবহার আগের কয়েক বছরের তুলনায় বেড়ে যায়। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ৩৬ হাজার ৮৯২ টন ডিজেল ব্যবহার হলেও ২০১৫-১৬ অর্থবছরে তা ৪ হাজার ৮০৬ টন বেড়ে ৪১ হাজার ৬৯৮ টনে উন্নীত হয়। কিন্তু গত দুই বছরে রেলওয়ের সার্ভিস বাড়েনি। তার পরও ডিজেলের ব্যবহার এক লাফে ২৮ হাজার টন বেড়ে যাওয়ার কোনো কারণ খুঁজে পাচ্ছে না রেলের সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো। এজন্য বিবিধ খাতে জ্বালানি তেল ব্যবহার যুক্ত করে তেল চুরির বিষয়টি সমাধান করতে চাইছে তারা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে রেলের সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বলেন, রেলের তেল চুরির বিষয়টি কারো অজানা নয়। রেলের সার্ভিস না বাড়লেও এক বছরের ব্যবধানে জ্বালানি তেলের ব্যবহার বেড়ে যাওয়ার কোনো কারণই নেই। আলোচ্য বছরে রেলের যাত্রী পরিবহন খাতে আয় বেড়েছে শুধু নির্ধারিত ট্রেনগুলোতে স্ট্যান্ডিং টিকিট বিক্রি থেকে। এছাড়া পণ্য পরিবহন খাতে নির্ধারিত ট্রেনগুলোতে কাঙ্ক্ষিত পণ্য পরিবহন হওয়ায় আয়ে প্রবৃদ্ধি দেখা দিয়েছে। ফলে আয় বৃদ্ধির সুযোগ নিতে বিভিন্ন স্থান থেকে তেল চুরির মাধ্যমে রেলের ব্যয়ও উপর্যুপরি বাড়ানো হচ্ছে বলে মনে করছেন তিনি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, লোকোমাস্টার, লোকো ইন্সপেক্টর, শেডম্যান, শেডের বুকিং ক্লার্করাই রেলের তেল চুরির সঙ্গে জড়িত। তবে এসব চুরির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মৌন সম্মতি রয়েছে। বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) থেকে তেল সংগ্রহের সময় এবং শেড কিংবা স্টেশনে ইঞ্জিনে তেল লোডিংয়ের সময় চুরির ঘটনা সবচেয়ে বেশি ঘটে। এছাড়া মালবাহী ট্রেনের ক্ষেত্রে বিভিন্ন স্টপজে থেমে থাকার সময় ইঞ্জিন থেকে তেল সরিয়ে নেয়া হয়। যাত্রীবাহী কোনো ট্রেনে তেল চুরির ঘটনা তেমন একটা না ঘটলেও শেড ও ওয়ার্কশপে থাকাকালীন তেল চুরি হয় বলে দাবি করেছেন রেলের পরিবহন বিভাগের একাধিক কর্মকর্তা। রেলের অধিকাংশ ইঞ্জিন পুরনো হওয়ায় লিটারপ্রতি ইঞ্জিনের কিলোমিটার গতি নির্ধারণ করতে না পারায় অধিকাংশ ক্ষেত্রেই অভিযোগ পাওয়ার পরও তেল চুরির বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হয় রেল কর্তৃপক্ষ।

  • কার্টসিঃ বনিকবার্তা/ ২১ অক্টোবর ২০১৮
  • সূত্র — https://goo.gl/KPsHWT

ছয় বছরে ২ হাজার কোটি ডলারের গরমিল

পণ্য জাহাজীকরণ ও অর্থ প্রাপ্তি

বদরুল আলম


সর্বশেষ ২০১৭-১৮ অর্থবছর বাংলাদেশ থেকে বিশ্ববাজারে পণ্য জাহাজীকরণ হয়েছে সাড়ে ৩৬ বিলিয়ন ডলারের বেশি। এর বিপরীতে অর্থবছরটিতে দেশে অর্থ এসেছে সাড়ে ৩২ বিলিয়ন ডলার। এ হিসাবে শুধু গত অর্থবছরই পণ্য জাহাজীকরণ ও অর্থ প্রাপ্তিতে গরমিল হয়েছে ৪ বিলিয়ন ডলারের।

গত অর্থবছরই শুধু নয়, পণ্য জাহাজীকরণ ও অর্থ প্রাপ্তির মধ্যে গরমিল থাকছে প্রতি বছরই। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর), রপ্তানী উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) ও বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত ছয় বছরে গরমিলের এ পরিমাণ ২০ বিলিয়ন বা ২ হাজার কোটি ডলার ছাড়িয়েছে, দেশের জিডিপির (২০১৭-১৮ অর্থবছরের হিসাবে ২৭ হাজার ৫০০ কোটি ডলার) যা ৭ শতাংশের বেশি। আর গড় হিসাবে পণ্য জাহাজীকরণ ও অর্থ প্রাপ্তিতে গরমিলের হার বছরে প্রায় ১০ দশমিক ৬ শতাংশ।

এনবিআর তার অধীনস্থ সংস্থার মাধ্যমে রফতানি পণ্যের জাহাজীকরণ বা শিপমেন্টের পরিসংখ্যান আধুনিক সফটওয়্যার ব্যবস্থার মাধ্যমে সংগ্রহ করে। সংস্থাটি থেকে সংগৃহীত তথ্যের ভিত্তিতে রফতানির পরিসংখ্যান জাতীয়ভাবে প্রকাশ করে ইপিবি। সংস্থাটির হিসাবে, ২০১২-১৩ থেকে ২০১৭-১৮ অর্থবছর পর্যন্ত ছয় বছরে পণ্য রফতানি হয়েছে মোট ১৯ হাজার ৩৯৯ কোটি ডলারের।

জাতীয়করণকৃত এসব পণ্য বাবদ দেশে অর্থ আসে ব্যাংকিং চ্যানেলে। সে তথ্য সংগ্রহ করে বাংলাদেশ ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিসংখ্যান বলছে, এ ছয় বছরে দেশে অর্থ এসেছে ১৭ হাজার ৩৪৬ কোটি ডলার। অর্থাৎ ২০১২-১৩ থেকে ২০১৭-১৮ অর্থবছর পর্যন্ত পণ্য জাহাজীকরণ ও অর্থ প্রাপ্তির মধ্যে গরমিল প্রায় ২ হাজার ৫৩ কোটি ডলারের।

কেন এ গরমিল এবং জিডিপির হিসাবে এর প্রভাব পড়ছে কিনা, তা খোঁজার চেষ্টা করেছেন এ প্রতিবেদক। এজন্য প্রথমেই যোগাযোগ করা হয় রফতানি আয়ের সবচেয়ে বড় খাত তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমানের সঙ্গে। পণ্য জাহাজীকরণ ও অর্থ প্রাপ্তিতে প্রতি বছর গড়ে ১০ শতাংশের এ গরমিলকে অনেক বেশি ও অবাস্তব বলে মন্তব্য করেন তিনি। বণিক বার্তাকে বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, যারা তথ্য সংগ্রহ করছেন, তাদের কোথাও না কোথাও অবশ্যই ভুল হচ্ছে। ব্যাংকের সরবরাহ করা তথ্যেও গ্যাপ থাকতে পারে। 

কিন্তু এত বড় পার্থক্য কোনোভাবেই হতে পারে না। বেশির ভাগ রফতানি আয় তো আমাদের পোশাক খাত থেকেই আসে। এত বড় গ্যাপ হওয়ার কোনো কারণ আমাদের খাতে ঘটেনি। ডিসকাউন্ট হলে ৫ শতাংশের বেশি হওয়ার কথা নয়। এ পার্থক্যের সঙ্গে ব্যবসায়ীদের দেশের বাইরে সম্পদ গড়ে তোলার সম্পর্ক যদি থেকেও থাকে, তাহলেও ব্যবধানটা এত বেশি হওয়ার কথা নয়।

যদিও বিজিএমইএ সভাপতির এ দাবির উল্টোটাও দেখা যাচ্ছে। পণ্য জাহাজীকরণ হওয়ার পর অর্থ না আসার ঘটনাও ঘটছে। চামড়াজাত পণ্য রফতানিকারক প্রতিষ্ঠান ক্রিসেন্ট গ্রুপ পণ্য রফতানি করলেও আয় বাবদ প্রায় ১ হাজার ২৫০ কোটি টাকা ফেরত আনেনি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, কাগজে-কলমে ক্রিসেন্ট গ্রুপের প্রতিষ্ঠানগুলো চামড়াজাত পণ্য রফতানি করেছে হংকং ও ব্যাংককে। সেই রফতানি বিল ক্রয় করে গ্রুপটিকে নগদে টাকা দিয়েছে জনতা ব্যাংক। অথচ রফতানির টাকা ফেরত আসেনি। নগদে নেয়া টাকাও ফেরত দিচ্ছে না গ্রুপটি। ব্যাংক চাপ দিলে মাঝেমধ্যে কিছু অর্থ দুবাই থেকে আসছে। যদিও আমদানিকারক দেশ থেকেই টাকা আসার কথা। এসব তদন্ত করে বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, এসব অর্থ পাচার করেছে প্রতিষ্ঠানটি।

দেশে রফতানি আয়ের ৮২ শতাংশের বেশি আসছে তৈরি পোশাক থেকে। রফতানির বিপরীতে অর্থ আটকে যাওয়ার কথা বলছেন এ শিল্পের মালিকরা। ২০১৭ সালে কোনো ঋণপত্র না খুলে ক্রয়চুক্তির মাধ্যমে এক এক করে প্রায় ২০টি কারখানা যুক্তরাজ্যভিত্তিক ওয়াইঅ্যান্ডএক্স লিমিটেডের পক্ষ থেকে ক্রয়াদেশ পায়। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী পোশাক তৈরি করতে চীন থেকে কাপড় আমদানি করা হয়। এ কাপড়ে তৈরি পোশাক রফতানি করা হয় যুক্তরাজ্যের ম্যানচেস্টার বন্দর দিয়ে। কিন্তু সে পোশাক কেউ ছাড় করেনি। রফতানি করা পোশাকের বিপরীতে কারখানা মালিকরা কেউ অর্থও পাননি। 

এভাবে প্রায় ৬৫০ কোটি টাকার পোশাক রফতানি হলেও এর দাম না পেয়ে আইনের দ্বারস্থ হন সংশ্লিষ্ট মালিকরা। পণ্য রফতানির পরও অর্থ না পাওয়া কারখানাগুলোর মধ্যে আছে গিভেন্সি গার্মেন্টস লি., এএসটিএস অ্যাপারেলস লি., এটিএস পার্ল লি., ইউনাইটেড ট্রাউজার্স লি., পারফেক্ট ফ্যাশনস লি., আলিফ ক্যাজুয়াল ওয়্যার লি., ইন্ট্রাকো ডিজাইন লি., জ্যারিকো অ্যাপারেল, মিম অ্যাপারেলসসহ ২০-২৫টি কারখানা। এর মধ্যে সাতটি কারখানা এ ঘটনায় রাজধানীর বাড্ডা থানায় অভিযোগ দায়েরের মাধ্যমে আইনি পদক্ষেপ নিয়েছে।

এনবিআর, ইপিবি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের গত ছয় অর্থবছরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, পণ্য জাহাজীকরণ ও অর্থ প্রাপ্তির মধ্যে সবচেয়ে বেশি গরমিল ছিল ২০১৬-১৭ অর্থবছর, ১২ দশমিক ৬ শতাংশ। অর্থবছরটিতে প্রায় ৩ হাজার ৪৬৫ কোটি ডলারের পণ্য রফতানি হলেও দেশে এসেছে প্রায় ৩ হাজার ২৯ কোটি ডলার। অর্থাৎ ২০১৬-১৭ অর্থবছর পণ্য জাহাজীকরণ ও অর্থ প্রাপ্তির মধ্যে গরমিলের পরিমাণ ৪৩৬ কোটি ডলার। এরপর সবচেয়ে বেশি গরমিল দেখা গেছে ২০১২-১৩ অর্থবছর, ১২ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ। অর্থবছরটিতে ২ হাজার ৭০২ কোটি ডলারের রফতানি হলেও দেশে এসেছে ২ হাজার ৩৭৫ কোটি ডলার। এছাড়া ২০১৩-১৪ অর্থবছর এ ব্যবধান ছিল ৯ দশমিক শূন্য ২, ২০১৪-১৫ অর্থবছর ৬ দশমিক ৫৭, ২০১৫-১৬ অর্থবছর ১১ দশমিক ৬৮ ও ২০১৭-১৮ অর্থবছর ১১ দশমিক ২৩ শতাংশ।

ডিসকাউন্টকেই পণ্য জাহাজীকরণ ও অর্থ প্রাপ্তির মধ্যকার এ ব্যবধানের বড় কারণ হিসেবে দেখছেন বাংলাদেশ ব্যাংকসংশ্লিষ্টরা। এছাড়া অনেক সময় মানহীন পণ্য ফেরত আসার কথাও বলছেন তারা। তবে এ ব্যবধান প্রতি বছর গড়ে ১০ শতাংশের বেশি হতে পারে কিনা, এমন প্রশ্নের উত্তরে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম বণিক বার্তাকে বলেন, কোনো কোনো ক্ষেত্রে ক্রেতা ২০-৩০ শতাংশ পর্যন্ত ডিসকাউন্ট নেন। পণ্যের মানের ওপরও নির্ভর করে অনেক কিছু। অনেক সময় দেখা যায়, ক্রেতা পণ্য একেবারেই নিতে চাইছেন না। তখন দেখা যায়, ৩০ শতাংশ ডিসকাউন্টেও রফতানিকারক পণ্য বিক্রি করছেন। এতে রফতানি আয় ও প্রকৃত আয়ের মধ্যে পার্থক্য তৈরি হয়।

এর আড়ালে কোনো ধরনের অর্থ পাচারের ঘটনা ঘটছে কিনা, এমন প্রশ্নের উত্তরে সিরাজুল ইসলাম বলেন, রফতানি নিয়ে আমাদের নিয়ম-নীতি আছে, আমদানি-রফতানিকারক যেন কোনো ধরনের মিস কন্ডাক্ট না করেন, নিয়ম-নীতি ভঙ্গ যেন না হয়, সে বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক সবসময়ই সতর্ক। রফতানিকারক অর্থ আনতে না পারলে তার নতুন ঋণপত্র আর খোলা হয় না। এ বিষয়গুলোয় বাংলাদেশ ব্যাংক কোনো ছাড় দিচ্ছে না।

তবে দেশের প্রধান রফতানি খাত তৈরি পোশাক শিল্পের মালিকদের অনেকে দেশের বাইরে সম্পদ গড়ছেন। কানাডা, সিঙ্গাপুরসহ বিভিন্ন দেশে নিজেদের সম্পদ গড়ে তুলছেন তারা। বহির্বিশ্বে ব্যবসায়ীদের এ সম্পদ গড়ার সঙ্গে পণ্য জাহাজীকরণ ও অর্থ প্রাপ্তির গরমিলের সম্পর্ক আছে কিনা জানতে চাইলে বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের লিড ইকোনমিস্ট ড. জাহিদ হোসেন বণিক বার্তাকে বলেন, সুযোগ তো আছে। ধরুন, একজন রফতানিকারক বললেন তার ক্রেতা পণ্যের মান নিয়ে সন্তুষ্ট হননি। প্রতি ১০০ ডলারে ১০ ডলার ডিসকাউন্ট চাইছেন ক্রেতা। এটা তো রফতানিকারক ও ক্রেতার সমঝোতাও হতে পারে। ক্রেতা যেন সন্তুষ্ট না হন, এ সমঝোতাও হতে পারে।

যদিও যে পরিমাণ পণ্য রফতানি হলো, তার সমপরিমাণ অর্থ দেশে আসতে হবে বলে মনে করেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। বাণিজ্য সচিব শুভাশীষ বসু এ প্রসঙ্গে বণিক বার্তাকে বলেন, যদি রফতানির সমপরিমাণ অর্থ না আসে, তাহলে বাংলাদেশ ব্যাংক এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে পারে। এটা নির্ভর করছে বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যবস্থার ওপর। তারা যদি নিয়ম-নীতি প্রয়োগের মাধ্যমে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অর্থ আনার বিষয়ে কঠোর হয়, তাহলে এ পার্থক্য কমে আসবে।

পণ্য জাহাজীকরণ ও অর্থ প্রাপ্তির এ গরমিল জিডিপির হিসাবে কোনো প্রভাব ফেলছে কিনা, সে উত্তর খোঁজারও চেষ্টা করেছেন এ প্রতিবেদক। এজন্য কথা বলেছেন অর্থনীতিবিদদের সঙ্গে। সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বণিক বার্তাকে বলেন, কিছুটা প্রভাব থাকতে পারে, তবে কোয়ান্টিফাই করা কঠিন। আমাদের জিডিপির হিসাব সেক্টরাল আউটপুট দিয়ে ক্যালকুলেট করা হয়। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সমীক্ষায় কনজাম্পশন, ইনভেস্টমেন্ট, এক্সপোর্ট, ইমপোর্ট বিবেচনায় নেয়া হয়, সেখানে হয়তো এ পার্থক্যের বিষয়গুলো সমন্বয় করা হয়। এ পার্থক্য শুধু রফতানিতে নয়, রাজস্ব আহরণের তথ্যেও থাকে। ধারাবাহিকভাবেই এ পার্থক্য থাকে। আমাদের পরিসংখ্যানে সমস্যা তো আছেই। নিঃসন্দেহে পরিসংখ্যানগত এ সীমাবদ্ধতা সংশোধন হওয়া উচিত।

ব্যাংকাররা বলছেন, পণ্য জাহাজীকরণ ও অর্থ প্রাপ্তির মধ্যে ব্যবধান হতে পারে, তবে তা এত বেশি হওয়ার কোনো কারণ নেই। যেকোনো রফতানি হয়ে যাওয়ার পর নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে অর্থ আসছে কিনা, তা নিশ্চিত করার জন্য রফতানিগুলো ট্র্যাক করা প্রয়োজন।

ব্যাংক নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের সভাপতি সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বণিক বার্তাকে বলেন, পণ্য জাহাজীকরণ মানেই অর্থ আসা নয়। জাহাজীকরণ হওয়ার পরও অনেক সময় ক্রেতারা দামে ডিসকাউন্ট দেন। অনেক সময় আংশিক জাহাজীকরণ হয়, দেখা গেল ঋণপত্রের মেয়াদ শেষ হয়েছে। ১০ শতাংশ খুব বড় কিনা, তা বলা সম্ভব পরিমাণ হিসাব করে। গত অর্থবছরের ৪ বিলিয়ন ডলার যদি বিবেচনায় নেয়া হয়, তাহলে সেটা অনেক টাকা। ৪ বিলিয়ন ডলারে একটা পদ্মা সেতু সম্ভব। ছয় অর্থবছরের মোট পার্থক্যটি অনেক, এজন্যই এর তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। কারণ এখানে কোনো ঘটনা ঘটছে। পার্থক্য কেন এত বেশি হবে। প্রত্যেকটি ব্যাংকে তাই বিষয়গুলো দেখা উচিত।

  • কার্টসিঃ বনিকবার্তা/ ২১ অক্টোবর ২০১৮
  • সূত্র — https://goo.gl/7zATGy

Project to digitise parliament moves at a snail's pace

The scheme is now going to see revision with a change in the implementing agency


A three-year project undertaken by the government to digitise the National Parliament is moving at a snail's pace due to reluctance and perceived 'lack of capacity' of the implementing agency.

Facing delays, the project is now going to see a major revision with a change in the implementing agency while the project's tenure is also going to be extended.

Aimed at improving the ICT infrastructure of the National Parliament as part of the ongoing e-governance drive in the country, the three-year project was originally scheduled to start its operation by July 2017.

The Parliament Secretariat, the administrative body of the National Parliament, was the original implementing agency of the scheme.

However, until now, the Tk 458-million project has not even started its operation due to 'unwillingness' of the Parliament Secretariat in implementing the project.

Officials concerned now say the project is going to be implemented by the Information and Communication Technology Division instead given the 'better experience and capacity of the aforementioned entity in digitisation schemes'.

"The Parliament Secretariat has formally asked the ICT Division through a letter to take over the project," a senior official dealing with the issue told the FE last week.

"Accordingly, the project will now be revised with the ICT Division becoming the implementing agency."

He added: "The project span will also be extended by a year to June 2021."

Once operational, the project will work to bring all the proceedings of the national parliament sessions since the country's independence under a digital archive.

At the same time, the project would also develop customised software for the automation of the national parliament by 2020.

Apart from that, the project would work to preserve and back up all the parliament related data through a data centre.

A range of trainings will also be provided to the parliament staff and officials to enhance their ICT skills, the relevant document shows.

"We have held several rounds of meetings with the Planning Commission regarding the necessary revision of the project design," a senior official of the ICT Division told the FE.

"They gave us some observations, in line with which, we were working to send the revised project proposal to the PC very soon."

"Once we receive the go-ahead from the Planning Commission, the project will start its operation," he added.

Although the ICT Division will now be at the helm of the project implementation, all the activities of the project are virtually centred around the parliament.

In this context, when asked how necessary coordination between the parliament and the ICT Division will be ensured, the officials concerned said an official from the Parliament Secretariat will be acting as the deputy project director of the scheme.

In addition, a project office will be established within the parliament secretariat, they informed.

Bangladesh has initiated a number of schemes to bolster its e-governance infrastructure as part of its digitisation drive in recent years.

The country secured the 115th place among 193 countries in latest the E-Government Development Index, moving up 9 places from the 124th position it took in the same index two years ago.

  • Courtesy: The Financial Express /Oct 21, 2018

Developmental disparity hinders balanced growth

Editorial

It is a truism that developmental efforts, both from the private and public sectors, are largely Dhaka and Chattogram (Chittagong) centric. Then again, the rest of the country is not treated equally in matters of development project selection and allocation of resources. Dhaka, the administrative headquarters, and its adjoining areas have been receiving for decades a major share of the development pie. Chittagonians always grumble that their city, despite being the country's most important business hub, is not getting its due. When the comparison is made with Dhaka, the allegation, to a large extent, appears to be justified. But it certainly gets far greater attention than any other town or city with the exception of Dhaka.

Policymakers are aware of the prevailing disparity in developmental resource allocation between regions and its negative impact on the socio-economic status of millions living in areas deprived of their due. Multilateral donor agencies and local research institutions also highlight in their study reports that the higher incidence of poverty is prevailing in the less developed southern and northern parts of the country. Late last week, experts at a seminar in Dhaka discussed the issue of disparity in development and pointed out the need for a change in the government's attitude and, most importantly, decentralisation of administration to ensure balanced development of different regions.

It is recognised widely that all powers are now concentrated in one particular place -- Dhaka. Moreover, the best and biggies of every sector, be it education or health, are located in Dhaka. But, such concentration of power and facilities has given rise to an endless migration of people from other areas to Dhaka. Most systems that were put in place without much care and planning are now on the verge of collapse under pressure from an ever-increasing population. The city, thus, has been adjudged as the second worst livable city on earth. The truth is Dhaka is bearing the brunt of a skewed development process that successive governments have been pursuing for decades.

What is needed most is an effective decentralisation of power which, in turn, would help ensure development of all the regions according to their needs. Such decentralisation of power is only possible by strengthening the local government (LG) institutions. The constitution also provides for such strengthening, but all the governments have chosen to turn a blind eye to the issue. The LG institutions have deliberately been kept weak and dependent on government doles. Besides, interference in day-to-day operations by a section of lawmakers has also undermined the effectiveness of the LG bodies.

Two major cities Dhaka and Chattogram contribute nearly 60 per cent of the country's gross domestic product (GDP). This is the result of lopsided development which is not a healthy sign. There has to be a dispersal of production as well as service facilities in all the regions of the country to ensure balanced growth, including job creation, income generation and quality of life. But the policymakers do not appear to be serious about decentralisation of administration and development. While speaking in public they tend to demonstrate all their willingness to develop all the regions without any discrimination. In reality, they do not mean business and merely play to the gallery.

Under the prevailing circumstances, it is high time people of the neglected regions raised their voice in support of the demand for decentralisation of decision-making power and equitable allocation of development resources to all the districts. They need to realise that building of a few kilometres of roads and some bridges, culverts, schools and colleges fulfils developmental needs only partially. For achieving overall economic wellbeing, the availability of employment opportunities at the local levels is the first and foremost need. The government has to meet that requirement. 

  • Courtesy: The Financial Express / Oct 21, 2018

Micro-retailing 2nd-biggest sector

Operators mainly borrow from non-bank sources


With an estimated $18.42 billion in sales, micro-merchants constitute the second-biggest market in Bangladesh after the ready-made garment (RMG), according to a study released last week.

The study conducted by the United Nations Capital Development Fund said almost 50,000 new micro-merchants enter the retail sector each year with a median income of Tk 90,000 a month.

They are all involved in the fast-moving consumer goods (FMCG) trading at the retail market, the study said.

For the purpose of this research, micro-merchants were identified as those "employing no more than 15 employees and/or holding assets worth less than Tk 1.0 million, excluding land and buildings", as per the National Industrial Policy 2016.

In addition to this definition, micro-merchants sampled for this study needed to be exclusively engaged in retail trade in the FMCG sector.

"While individually their businesses are small, together micro-merchants transact more than $18.42 billion annually and interact with millions of customers every day," the report said.

It also said they are an underserved cash-based group largely left out of modern digital payments and other financial services.

There are 2.0 million people are involved in the sector in some way - as business owners, employees or labourers.

The mostly-sold item is cigarette. The other items are edible oil, rice, packet biscuit, flour, pulse, chips, betel leaf and eggs.

Some 73 per cent of micro merchants sell their products on credit to the customers in the corners.

In contrast, nearly 65 per cent procure products on credits from suppliers.

Nearly 28 per cent merchants maintain savings bank accounts just for depositing their money.

But they lack current or business account, with making up less than 10 per cent accounts with the commercial banks, the study said.

The report estimated that micro-merchant credit market could be approximately $ 778 million.

The average business loan was $ 1,116 and the average personal loan size was $ 872.

Many are bank clients, but they mostly borrow from micro-finance institutions: only one in 10 micro-merchants borrows from banks.

Bankers said that the segment of trading is risky and they need to be formalised for increased access to formal finances.

However, BRACK Bank CEO Selim RF Hussain told the FE his bank has been working with the segment for long as they believe it is potential.

"We are probably the first to pay attention to the micro merchants," he said.

He said the non-performing loans in the segment remain much lower in the market. "The non-performing loan in the trading is less than 3.0 per cent," Mr Hussain added.

The BRAC Bank CEO identified some challenges in the market. "Many of them have not even trade licence, let alone maintaining proper accounting."

"Our marketing team has been pushing them for becoming formalised," he said.

Business leaders say there is a need for long term planning to help such traders graduate.

"We don't have any plan on the micro merchants industry, not at the government level nor at the level of business bodies," said Shafi ul Islam (Mohiuddin), president of the Federation of Bangladesh Chambers of Commerce and Industry (FBCCI).

Mr Mohiuddin said if they graduate from the micro segments the tax mobilisations will grow. "The tax network will automatically be broadened."

The banks will have funding opportunities in the segment, he noted.

He suggested that government bodies, especially the National Board of Revenue (NBR), the ministry of finance and the ministry of commerce and the business bodies should act together for the segment's development.

However, the merchants use their intrinsic knowledge to predict FMCG inventory requirements and determine product sales and turnaround time.
  • The Financial Express/ Oct 21,2018