Search

Monday, October 22, 2018

নাম বিড়ম্বনায় দেশের অন্যতম বৃহৎ প্রকল্প মাতারবাড়ী

জাইকার প্রতিবেদনে উল্লেখ আছে ‘মাতারবাড়ী বন্দর’। জেলা প্রশাসন চাইছে ‘বঙ্গবন্ধু বন্দর’ নামকরণ করতে। এতে আপত্তি তুলেছেন স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। তার দাবি, বন্দরের নাম হতে হবে ‘ধলঘাট সমুদ্রবন্দর’। এ দাবিতে প্রকল্পের অনাপত্তি সনদও দিচ্ছেন না। অনাপত্তিপত্রের অভাবে সম্পন্ন করা যাচ্ছে না প্রকল্পের পরিবেশগত প্রভাব মূল্যায়ন (ইআইএ) প্রতিবেদনের কাজ। নাম নিয়ে এ বিড়ম্বনা দেখা দিয়েছে দেশের অন্যতম বৃহৎ প্রকল্প মাতারবাড়ী সমুদ্রবন্দর নিয়ে।

পরিবেশ সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী, বৃহৎ প্রকল্পের জন্য ইআইএর বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এজন্য অনাপত্তি সনদ নিতে হয় স্থানীয় সরকার কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে। নির্মাণাধীন মাতারবাড়ী সমুদ্রবন্দর প্রকল্পটি কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার ধলঘাট ইউনিয়নের আওতাভুক্ত হওয়ায় অনাপত্তিপত্র নিতে হবে ধলঘাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের কাছ থেকে।

তবে ধলঘাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অনাপত্তিপত্র দিচ্ছেন না বলে জানা গেছে। কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামাল হোসেন বণিক বার্তাকে বলেন, স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এখনো যে অনাপত্তি সনদ দেননি, সে ব্যাপারে আমি অবগত নই। তবে তিনি বন্দরটির নামকরণ করতে চাইছেন ধলঘাট সমুদ্রবন্দর। আমরা বঙ্গবন্ধুর নামে বন্দরটির নামকরণের প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি।

কক্সবাজারের মহেশখালীতে মাতারবাড়ী তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্পের আওতায় মাতারবাড়ী সমুদ্রবন্দরের সম্ভাব্যতা সমীক্ষায় রয়েছে জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা (জাইকা)। গত কয়েক বছরে এর কার্যক্রম অনেক দূর এগিয়েছেও। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের অধীনে সাড়ে ১৮ মিটার ড্রাফটের জাহাজ ভেড়ার উপযোগী করে নির্মাণ করা এ বন্দর। এখন চলছে প্রকল্পের ভূমি অধিগ্রহণ কার্যক্রম।

প্রকল্পটি যাতে দ্রুত শুরু করা যায়, সেজন্য ইআইএ ছাড়পত্র প্রয়োজন। কারণ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী, ইআইএ ছাড়া বড় কোনো প্রকল্পের কাজ শুরু করার সুযোগ নেই। পরিবেশ আইন অনুযায়ী ইআইএ প্রতিবেদন জমা দিতে হয় স্থানীয় পরিবেশ অধিদপ্তরে। এ নিয়েই দেখা দিয়েছে জটিলতা। ইআইএ প্রতিবেদনের জন্য বেশ কিছুদিন আগে ধলঘাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামরুল হাসানের অনাপত্তি চাওয়া হলেও তিনি তা দিচ্ছেন না।

কামরুল হাসানের যুক্তি, পুরো এলাকাটি ভৌগোলিকভাবে মাতারবাড়ী দ্বীপ হিসেবে পরিচিত। আর মাতারবাড়ী দ্বীপে দুটি ইউনিয়ন। একটি মাতারবাড়ী, অন্যটি ধলঘাট। তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র ধলঘাট ও মাতারবাড়ী উভয় ইউনিয়নেই হচ্ছে। তাই এর নাম মাতারবাড়ী তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র হওয়ায় ধলঘাট এলাকার মানুষের তেমন কর্মসংস্থান হচ্ছে না। তবে বন্দরের পুরো জায়গাটি ধলঘাট ইউনিয়নে। তাই এর নামকরণ হতে হবে ‘ধলঘাট বন্দর’।

জানতে চাইলে কামরুল হাসান বণিক বার্তাকে বলেন, ইআইএ প্রতিবেদনের জন্য আমার কাছ থেকে অনাপত্তি সনদ নিতে বলা হয়েছে। স্থানীয় জনসাধারণের জন্য আমাকে কিছু করতে হবে। আমার এলাকার সব জমি দিয়ে দেব, অথচ এলাকার নামে প্রকল্পের নাম হবে না, এ কেমন কথা? এজন্য আমি অনাপত্তি সনদ দিইনি। ধলঘাটের নামে বন্দরের নামকরণ হবে, এমন আশ্বাস পেলেই কেবল অনাপত্তি সনদ দেব। জেলা প্রশাসককেও বিষয়টি আমি জানিয়েছি।

প্রকল্প কর্মকর্তারা বলছেন, এখন পর্যন্ত বন্দরের নামকরণ চূড়ান্ত হয়নি। প্রকল্প শুরুর আগে এটি মাতারবাড়ী বন্দর হিসেবেই পরিচিতি পেয়েছে। পরবর্তী সময়ে গত বছর নৌ-পরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খানসহ সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ প্রকল্প এলাকা পরিদর্শনের সময় একে মাতারবাড়ী বাণিজ্যিক বন্দর হিসেবে উল্লেখ করে।

প্রকল্পটির পরিচালক হিসেবে আছেন চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (প্রশাসন ও পরিকল্পনা) জাফর আলম। বণিক বার্তাকে তিনি বলেন, আমাদের প্রস্তাবিত জায়গাটি পড়েছে মহেশখালীর ধলঘাট মৌজায়। তাই ধলঘাট ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের দাবি, এ বন্দরের নামকরণ ধলঘাট সমুদ্রবন্দর হতে হবে। সেজন্য তিনি অনাপত্তি সনদ দিতে বিলম্ব করছেন।

অনাপত্তি সনদের অভাবে ইআইএ প্রতিবেদনও পূর্ণাঙ্গ করে পরিবেশ অধিদপ্তরের স্থানীয় কার্যালয়ে জমা দিতে পারছে না প্রকল্প কর্তৃপক্ষ। প্রতিবেদন না পাওয়ার কথা স্বীকার করেন পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজার কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক সাইফুল আশ্রাব। তিনি বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ অনলাইনে ইআইএ জমা দিলেও হার্ড কপি (পূরণকৃত ফরম) এখনো দেয়নি। আর হার্ড কপি ছাড়া তা গ্রহণযোগ্য হবে না।

উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম বন্দরে জাহাজ ভিড়তে পারে সর্বোচ্চ ৯ দশমিক ৫ মিটার ড্রাফটের। বে টার্মিনাল হলে সর্বোচ্চ সাড়ে ১১ মিটার ড্রাফটের জাহাজ ভেড়ার সুযোগ পাবে। তবে মাতারবাড়ী বন্দরে সাড়ে ১৮ মিটার ড্রাফটের জাহাজ ভিড়তে পারবে। ফলে সাগরপথে চলাচলকারী বড় জাহাজ এ বন্দরে ভেড়ার সুযোগ পাবে। এ ধরনের জাহাজ যেসব বন্দরে ভেড়ে, সেগুলোকে গভীর সমুদ্রবন্দর বলা হয়। তবে সরকারের পক্ষ থেকে এটাকে গভীর সমুদ্রবন্দর না বলে বাণিজ্যিক বন্দর বলা হচ্ছে। ২০২৩ সালে এ বন্দর চালু করার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে।

  • কার্টসিঃ বনিক বার্তা/ ২২ অক্টোবর ২০১৮

Paying attention to micro-merchants

Editorial

Traders dealing in fast-moving consumer goods (FMCG), called micro-merchants in business parlance, have ever remained out of focus in this country. But a study conducted by the United Nations Capital Development Fund has revealed that it is the largest domestic financial transaction and the market is only second to the ready-made garments. What is significant is that about 50,000 such new traders join the band each year and no enterprise boasting assets worth more than Tk 1.0 million excluding land and building. Employing no more than 15 employees and a median income of Tk 90,000 a month, this is undoubtedly a vibrant economic sector. That micro-merchants are doing well is indicative that purchasing power of the people at the grass-roots level too is on the rise. So far 2.0 million people have got involved with the sector and evidently the size of the employment will grow with the new entrants in the business. Clearly, a quiet revolution is taking place rather imperceptibly in terms of business not in the limelight.

The burgeoning financial muscle at the retail level is a good indication of the country's economic health. But then it has its constraints too. A close look at the consumer items listed in the report will discern that those do not speak of wide choices for items required in a robust economy. It is unfortunate that cigarette tops the list of consumer goods. Even betel leaf has occupied its position among the most sold-out items. Also the other items in high demand are some of the most common victuals. In no way do they refer to the rise in people's living standard. When carbohydrate constitutes the major portion of the sold items, it is clear that the nation has miles to go before it attains a desirable living standard.

As for the traders at this retail level, they are not used to digital financial services. With an annual turnover of $ 18.42 billion, its credit market is worth only $778 million. Here is room for streamlining the sector to a large extent. How? Although banking is limited to micro-merchants -only one in 10 of them borrows from banks, it is clear that they are credit-worthy. The commercial banks of the country shun them because they are not adequately conversant with digital financing. But the BRAC bank has found that non-performing loans among this section is almost negligible -less that 3.0 per cent.

In a situation like this, the government should formulate policies for financing such ventures and bring them under a formal financial system. Their turnover points to the fact that here is a potential sector for revenue earning for the government. If the monthly income is in the region of 0.10 million, it is definitely taxable. The recognition of such commercial ventures is however not enough, there is need for diversifying their business. Otherwise, they will discover them at a saturation point soon. Before this happens, the investment should as well take into account productive ventures within a moderate range. Maybe, small and medium enterprises will be an answer to the need.

  • The Financial Express /Oct 22, 2018

Forex dealers call for cautious LC opening

Siddique Islam 


Bangladesh Foreign Exchange Dealers' Association (BAFEDA) will urge its member banks to be cautious about opening letters of credit (LCs) for import, considering the overall forex market situation.

The decision came at a meeting of the technical committee of BAFEDA held at its office in Dhaka on Sunday with its Chairman Ali Hossain Prodhania in the chair.

The members will be advised to be rational and compliant with the Bangladesh Bank's (BB) instructions while quoting foreign exchange rates, according to the meeting sources.

The banks will also be asked to conduct forex transactions, considering their inflow, outflow and availability of foreign exchange in the inter-bank forex market, they added.

"We've reviewed the overall forex market situation, considering the import, export and inflow of remittance," the technical committee chairman told the FE after the meeting.

Mr. Prodhania, also managing director of Bangladesh Krishi Bank, said the technical committee is working relentlessly on ensuring stability in the forex market.

The BAFEDA's latest move comes against the backdrop of a weakening Bangladesh Taka (BDT) against the US dollar.

The demand for the US dollar is increasing gradually, mainly due to higher import payments, particularly those of petroleum products and capital machinery.

The US dollar was quoted at Tk 83.83 each in the inter-bank forex market on Sunday unchanged from the previous level.

On the other hand, the central bank has continued its foreign currency support to the banks for settling import payment obligations, particularly of fuel oils and capital machinery for power plants.

As part of the move, the central bank sold US$24 million directly to the banks last week to meet the growing demand for the greenback in the market.

A total of $277 million has been sold to the commercial banks since July 01 of the current fiscal year (FY) as part of its ongoing support, the BB data showed.

The meeting also decided that the BAFEDA would organise a workshop on liquidity and foreign exchange risk management in line with the central bank's ALM (asset liability management) guidelines.

  • Courtesy: The Financial Express /Oct 22, 2018

Permission a must to arrest a pubic servant

Says bill placed in JS


A bill -- “Sarkari Chakori Ain-2018” -- was placed in parliament last night with a provision that makes it mandatory for the Anti-Corruption Commission to take permission for arresting any public servant.

State Minister for Public Administration Ismat Ara Sadique placed the bill, which was sent to the respective parliamentary standing committee for scrutiny.  

The committee has been asked to submit its report within three days.

As per the bill, no public servant can be arrested until a court frames charges against him/her.

A government employee can be arrested before framing a charge only after taking prior permission from the authorities concerned.

Under a provision of the proposed law, a civil servant will be suspended initially and he or she will lose his/her job finally if he or she is given capital punishment or punishment of more than one year in jail for their offences.

However, the authorities will take departmental actions against them in case of a punishment of below one year's jail term.

Under the existing system, the service of public servants is controlled by different laws. All the issues regarding their jobs will come under the umbrella of this proposed law, according to the bill.

The existing age limit for the retirement of public servants remains unchanged at 59 while it is 60 for freedom fighters. 

However, the government can send a public servant on forced retirement on completion of his/her 25 years in service without showing any reason. Any public servant can go on voluntary retirement on completion of 25 years in service.

Merit and open competition will be the main criteria for the recruitment of public servants while promotion will be given based on merit, efficiency, seniority, and performance. 

If any public servant takes a foreign citizenship, he/she will lose the job. Nothing has been said in the proposed law about the dual citizenship. A public servant will get financial support from the government to face a criminal case if it is filed for any cause while performing professional duties.

But if he/she is tried in any criminal case for personal crimes and jailed for more than one year, he/she will lose the job. 

Under the proposed law, the government can realise compensation from a public servant if any complaint lodged against him/her by a citizen is proved to be true and if any citizen is deprived of any service by him/her.

  • Courtesy: The Daily Star /Oct 22, 2018 

Question for regulators to answer

EDITORIAL

Is Janata Bank above banking rules?


According to the findings of multiple Bangladesh Bank investigations, Janata Bank has been granting undue favour to yet another big borrower breaking all sorts of banking rules. The borrower, Thermax, was granted these privileges despite paying only a fraction of its previous dues which now stand at a staggering Tk 1,230 crore.

Having failed to pay back the money against previous Letters of Credit, Thermax should have been automatically disqualified from utilising the LC service until it cleared the outstanding loan—which it wasn't, being allowed to repeatedly open fresh LCs by Janata Bank. This led to the company receiving LC benefits worth more than three times the ceiling without approval from the bank's board, again in violation of BB rules. As a result, Janata's total outstanding loan to Thermax exceeded the single borrower exposer ceiling of 15 percent set by the BB and the 25 percent limit set in the Bank Company Act 1991.

Despite a number of questions being raised in regards to the workings of the company, according to BB officials, 27.5 percent of Janata Bank's capital was given to Thermax as of December last year, which reeks of corruption. Yet, what is most outrageous is that the bank has been doing all this with public money for years without any intervention by the regulators.

How long will such blatant squandering of public money by Janata Bank and others continue? Is this not a direct result of the impunity that has been granted by regulators to corrupt and inept individuals in the banking sector?

In the interest of curbing such mismanagement and corruption now, we call on the regulators to forcefully implement the set rules and strictly punish those found to have violated them.

  • Courtesy: The Daily Star/ Oct 22, 2018
  • Link - https://goo.gl/KSS8Eg

মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকায় অব্যবস্থাপনা

সম্পাদকীয়


আমাদের সরকারগুলো ৪৭ বছর ধরে মুক্তিযোদ্ধাদের একটা পূর্ণাঙ্গ তালিকা তৈরির কাজ শেষ করতে পারছে না। একটা করে সরকার আসে আর মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা পরিবর্তন করা হয়; সংযোজন-বিয়োজন শেষে দেখা যায়, মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা বেড়ে গেছে। এভাবে মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা পরিবর্তন করা হয়েছে ছয়বার। মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞা, স্বীকৃত বয়স ও মানদণ্ড পরিবর্তন করা হয়েছে ১১ বার। যুদ্ধ করে স্বাধীনতা অর্জনকারী জাতির জন্য এটা দুর্ভাগ্যজনক।

লক্ষণীয় বিষয় হলো, মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দানকারী দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ অতীতে দুই মেয়াদে ৯ বছর এবং বর্তমানে টানা প্রায় ১০ বছর ধরে সরকার পরিচালনা করছে, কিন্তু তারাও মুক্তিযোদ্ধাদের সঠিক পূর্ণাঙ্গ তালিকা তৈরি করতে ব্যর্থ হয়েছে। বর্তমান সরকারের আমলে যে ন্যক্কারজনক ঘটনাটি ঘটেছে, তা হলো পাঁচজন সচিব ও বিভিন্ন সরকারি সংস্থার প্রধান প্রকৌশলীসহ প্রশাসনের কতিপয় উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা মুক্তিযোদ্ধা সাজার উদ্দেশ্যে ভুয়া সনদ নিয়েছেন এবং সনদগুলো ভুয়া প্রমাণিত হওয়ার পরও সরকার তাঁদের বিরুদ্ধে কোনো আইনগত পদক্ষেপ নেয়নি। মহান মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযুদ্ধে জীবন উৎসর্গকারী শহীদদের জন্য চরম অবমাননাকর এই অনৈতিক কাজের প্রতি সরকারের নির্বিকার উদাসীনতা এককথায় মর্মান্তিক।

শনিবার প্রথম আলোর প্রথম পাতায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রীর বরাত দিয়ে লেখা হয়েছে, বিগত বিএনপি সরকারের আমলে প্রায় ২২ হাজার ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা গেজেটভুক্ত হয়েছেন। মন্ত্রী বলেছেন, তাঁর আমলে আট হাজার ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার গেজেট বাতিল করা হয়েছে। কিন্তু প্রথম আলোর প্রতিবেদক দুই সপ্তাহ ধরে অনুসন্ধান চালিয়েও আট হাজার মুক্তিযোদ্ধার গেজেট বাতিল করার কোনো প্রমাণ উদ্ধার করতে পারেননি। এখানে কিছু আইনি জটিলতা আছে, অনেক ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা গেজেট বাতিল হওয়ার পর আদালতের শরণাপন্ন হয়েছেন, ফলে বিষয়টি অনিষ্পন্ন রয়ে গেছে।

প্রথম আলোর প্রতিবেদনটিতে আরও বলা হয়েছে, বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের আমলেও সাড়ে ১১ হাজার মুক্তিযোদ্ধা গেজেটভুক্ত হয়েছেন। প্রশ্ন হলো, মুক্তিযুদ্ধ শেষ হওয়ার এত বছর পর যাঁরা মুক্তিযোদ্ধার সনদ পেলেন, তাঁরা কি প্রকৃতই মুক্তিযোদ্ধা? এই প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যায় সরকারের মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়াটির হাঁড়ির খবর নিলে। বর্তমান সরকার যাচাই-বাছাই করে পাঁচ হাজার মুক্তিযোদ্ধাকে তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। গত বছর জানুয়ারি মাসে এই উদ্যোগ শুরু হয়: দেড় লাখ লোক মুক্তিযোদ্ধার তালিকাভুক্ত হওয়ার জন্য আবেদন করেন। কিন্তু যাচাই-বাছাই কমিটি গঠন থেকে শুরু করে পুরো প্রক্রিয়ায় ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠলে সরকার নতুন তালিকা তৈরির সিদ্ধান্তটি স্থগিত করে দেয়। এ থেকে বলা যায়, এই সরকারের আমলেই যে সাড়ে ১১ হাজার মুক্তিযোদ্ধাকে গেজেটভুক্ত করা হয়েছে, তাঁদের অধিকাংশই ভুয়া।

প্রথম আলোর প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে, বর্তমানে মোট ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা প্রায় ৩৩ হাজার। কিন্তু তাঁদের শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি বলে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী নিজেই স্বীকার করেছেন। তিনি এ কথাও বলেছেন যে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন জেলা কমিটি থেকে পাঠানো মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকায় ভুয়াদের উপস্থিতি বেশি। এটা থেকেই পরিষ্কার বোঝা যায়, মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা তৈরির প্রক্রিয়াটিতে গুরুতর গলদ রয়েছে। দলীয় কমিটিগুলোকে এর সঙ্গে যুক্ত করা উচিত নয়। আরও উচিত নয় এই প্রক্রিয়ায় চলমান দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতিসহ সব ধরনের অনৈতিক চর্চাকে প্রশ্রয় দেওয়া। মুক্তিযোদ্ধা নন, কিন্তু ভুয়া সনদ ও সুবিধাদি নিয়েছেন, এমন ব্যক্তিদের শনাক্ত করে আইনানুগ শাস্তি দিতে হবে।

মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা তৈরি নিয়ে এই লজ্জাজনক অব্যবস্থাপনার অবসান ঘটাতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের প্রতি আন্তরিক দায়বদ্ধতা থেকে পরিপূর্ণ সততার সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা যাচাই-বাছাই সম্পন্ন করে একটা সঠিক ও পূর্ণাঙ্গ তালিকা তৈরি ও প্রকাশ করার উদ্যোগ নেওয়া হোক, যা হবে চূড়ান্ত, যাতে আর কোনো সংযোজন-বিয়োজনের প্রয়োজন থাকবে না।

  • কার্টসিঃ প্রথম আলো/ ২ অক্টোবর ২০১৮
  • লিঙ্ক — https://goo.gl/kFmhMD

দেশে ৩ কোটি মানুষ দরিদ্র এক কোটি হতদরিদ্র

অর্থনৈতিক রিপোর্ট


দেশে এখনো ৩ কোটি মানুষ দরিদ্র। যার মধ্যে ১ কোটি হতদরিদ্র বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। গতকাল রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) আয়োজিত ‘বাংলাদেশ কিশোর-কিশোরী  সম্মেলন- ২০১৮’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। অর্থমন্ত্রী বলেন, আমাদের বার্ষিক দারিদ্র্য দূরীকরণ হার এখনো ২ শতাংশের যথেষ্ট নিচে রয়েছে। এটাকে ২ শতাংশে যদি আমরা নিতে পারি তাহলে হয়তো আগামী ১০ বছরে দেশ থেকে দারিদ্র্য দূরীভূত করতে পারব। তিনি বলেন, আমাদের লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে দারিদ্র্যসীমা অন্তত ১০ শতাংশের মধ্যে নিয়ে আসা। এজন্য আমরা যে কার্যক্রম গ্রহণ করছি সে অনুযায়ী যদি ৭-৮ বছর চালিয়ে যেতে পারি তাহলে সেই লক্ষ্যে আমরা পৌঁছে যেতে পারি।

অর্থমন্ত্রী বলেন, আমরা দারিদ্র্যকে অনেকভাবে হারিয়েছি। কিন্তু এখনো প্রায় তিন কোটি মানুষ দরিদ্র আছে। তার মধ্যে আবার এক কোটি অত্যন্ত হতদরিদ্র। সরকারের লক্ষ্যমাত্রা ১৯৭১ সালে নির্ধারিত হয়েছিল সেটা এখনো আছে। 

তিনি বলেন, দারিদ্র্য দূরীকরণ মানে এই নয় যে দেশে কোনো গরিব লোক থাকবে না। কিছু দরিদ্র সবসময় থাকবে। আমেরিকার মতো অত্যন্ত ধনী দেশেও ১৪ শতাংশ মানুষ গরিব। তবে মালয়েশিয়ায় পৃথিবীর সবচেয়ে কম, মাত্র ৭ শতাংশ মানুষ দারিদ্র্যসীমার মধ্যে আছে।
  • কার্টসিঃ মানবজমিন/ ২২ অক্টোবর ২০১৮
  • লিঙ্ক — https://goo.gl/aMFtvE

অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন উদ্বেগ প্রশমিত করতে পারে

এনডিআই’র রিপোর্ট

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রকাশিত ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ইনস্টিটিউটের (এনডিআই) প্রতিবেদন বলেছে, নির্বাচন যতো ঘনিয়ে আসছে, ততোই বাংলাদেশের মেরূকরণ ঘটছে এবং রাজনৈতিক বিতর্কের জায়গা সংকুচিত হয়ে পড়ছে। বিরোধী দল অভিযোগ করেছে, তাদের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে হাজার হাজার মামলা দায়ের করা হয়েছে। সিভিল ও রাজনৈতিক অধিকারের   ওপর নানা ধরনের বাধানিষেধ ক্রমশ বাড়ছে। এনডিআই প্রতিনিধিদলটি ঢাকায় থাকতেই প্রেসিডেন্ট ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে সই করেছেন। 

একথা উল্লেখ করে সংস্থাটির প্রতিবেদন মন্তব্য করেছে যে, ‘এটা ভয় আরো বাড়িয়েছে। যদিও জাতীয় নিরাপত্তার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু এই আইনের অপব্যবহার ঘটতে পারে। আইনের শাসন, বাকস্বাধীনতা এবং ডিউ প্রসেসের ধারণায় প্রতিকূলতা তৈরি করবে।

এই ধরনের আইন প্রণীত হওয়ার কারণে কতিপয় বাংলাদেশি এবং আন্তর্জাতিক সমপ্রদায়ের সদস্য উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যে, এই আইন গণতান্ত্রিক রীতিনীতির প্রতি অবিচল থাকতে দেশটির যে দীর্ঘ ঐতিহ্য আছে, সেটি ঝুঁকির মধ্যে পড়তে পারে। এমনকি তা  দেশটিকে একদলীয় আধিপত্যের দিকে নিয়ে যেতে পারে।’ 

লক্ষণীয় যে, এনডিআই ওই মন্তব্যের পরে বলেছে, আসন্ন নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে করার মধ্য দিয়ে এধরনের উদ্বেগ প্রশমিত করতে পারে। এ জন্য গণতন্ত্রের প্রতি সংকল্প এবং রাজনৈতিক প্রক্রিয়াকে প্রতিযোগিতাপূর্ণ করতে হবে। 

এ প্রসঙ্গে তারা আন্তর্জাতিক রিপাবলিকান ইনস্টিটিউট দ্বারা পরিচালিত একটি সামপ্রতিক জনমত জরিপের বরাতে বলেছে, দুই দলীয় সংলাপকে বাংলাদেশের মানুষ সমর্থন করবে। আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি তাদের মতপার্থক্যগুলো দূরে সরিয়ে সমস্যা সমাধানের জন্য একসঙ্গে কাজ করতে সক্ষম, এই ধারণা বাংলাদেশের একটি উল্লেখযোগ্য জনগোষ্ঠীর বিশ্বাসে আছে।

ওই জরিপে অংশগ্রহণকারী ৫৯ শতাংশ উত্তরদাতারা এ বিষয়ে একমত। এনডিআই প্রতিনিধিদল বিশ্বাস করে যে সরকার ও বিরোধী দল সংলাপে বসলে একটি বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় শর্ত পূরণে তারা একটি চুক্তিতে পৌঁছাতে পারে। প্রতিনিধিদলটি আরো মনে করে,  ‘গত এক দশকে অর্থনীতির উন্নয়ন ও দারিদ্র্যবিমোচনে যে অর্জন বয়ে এনেছে, সেটা তার বিরাজমান রাজনৈতিক উন্নয়ন ধারার সঙ্গে একেবারেই সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।’ 

এনডিআই তার রিপোর্টে আরো বলেছে, বাংলাদেশের সামপ্রতিককালে যেসব গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়ন নিশ্চিত করেছে, সেটা এখন যদি একটি বিশ্বাসযোগ্য এবং স্বচ্ছ জাতীয় সংসদ নির্বাচন করতে পারে তাহলে তা সম্পূর্ণতা পাবে। এর ফলে বাংলাদেশের নাগরিকদের আস্থা পূরণে সাফল্য আসবে।

উল্লেখ্য, এনডিআই প্রতিনিধিদল এই সুপারিশমালা তৈরি করতে গত ৫ থেকে ১১ই অক্টোবর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কর্মকর্তা, রাজনৈতিক দলের  নেতা, নির্বাচন কমিশন, সুশীল সমাজ প্রতিনিধি, নাগরিক নির্বাচন পর্যবেক্ষক গ্রুপের সঙ্গে কথা বলে। তারা নারী সংসদ সদস্য, রাজনৈতিক কর্মী; মিডিয়া প্রতিনিধি, সাবেক সরকারি কর্মকর্তা; ব্যবসায়ী নেতা এবং আন্তর্জাতিক ও কূটনৈতিক সমপ্রদায়ের প্রতিনিধিদের মতামতও নেন। 

বর্তমান এনডিআই বোর্ডের সদস্য এবং মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের দক্ষিণ এশীয় বিষয়ক সাবেক মার্কিন সহকারী সেক্রেটারি রাষ্ট্রদূত কার্ল ইন্ডারফার্থ দলটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন। বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও ভারত বিষয়ক তিনি একজন বিশেষজ্ঞ। পাকিস্তানি লেখক ও সাবেক সংসদ সদস্য ফারাহ নাজ ইস্পাহানী এবং সিনিয়র সহযোগী ও এনডিআইয়ের এশিয়া প্রোগ্রামের আঞ্চলিক পরিচালক পিটার ম্যানিকাস, এনডিআই নির্বাচন উপদেষ্টা মাইকেল ম্যাকনুলি এবং এনডিআই-এর এশীয় বিষয়ক সিনিয়র প্রোগ্রাম ম্যানেজার অ্যাডাম নেলসন ওই প্রতিনিধি দলে আছেন।

এনডিআই রিপোর্ট বলেছে, ‘গত এক দশকে দেশটি শক্তিশালী অর্থনৈতিক উন্নয়ন প্রত্যক্ষ করেছে। লাখ লাখ মানুষ দারিদ্র্যের বাইরে এসেছে। যদিও আয় বৈষম্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়েই আছে। ২০১৫ সালে দেশটি বিশ্বব্যাংকের রাঙ্কিং ‘মাঝারি আয় অবস্থায়’ উন্নীত হয়েছিল। এই বছরের শুরুর দিকে জাতিসংঘ স্বীকৃতি দিয়েছে যে বাংলাদেশ সম্ভবত ২০২৪ সালের মধ্যে এলডিসি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার মাপকাঠি পূরণ করবে। উপরন্তু, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার  নেতৃত্বাধীন সরকার বিশেষভাবে প্রশংসার দাবিদার। কারণ ২০১৭ সালের আগস্ট থেকে মিয়ানমার  থেকে প্রায় সাত লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীকে বরণ করে নিতে সরকার দেশের সীমান্ত খুলে দিয়েছে।’ 

এনডিআই প্রতিবেদনে আসন্ন নির্বাচনে ভয়ভীতির পরিবেশ এবং সম্ভাব্য সহিংসতার ব্যাপকতার বিষয়ে সতর্ক করেছে। তারা বলেছে, আগামী নির্বাচনে সহিংসতার প্রকোপ বাড়লে তা গোটা নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় নারীর অংশগ্রহণকে হ্রাস করবে।  

এনডিআই উল্লেখ করেছে যে, বাংলাদেশের গত নির্বাচনগুলো  নির্বাচনী বয়কট, সাধারণ ধর্মঘট (হরতাল), অবরোধ এবং তার পাশাপাশি সহিংসতা ও ভয়ের একটি প্যাটার্ন অনুসরণ করেছে। আর এই ঐতিহাসিক বাস্তবতাই বাংলাদেশের উভয় প্রতিদ্বন্দ্বী দলের কাছে রাজনীতিকে একটি জিরো সাম গেম বা একটি শূন্য-সমষ্টি খেলা হিসেবে চিহ্নিত করেছে।  

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি)  নেতা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া ২০১৮ সালের  ফেব্রুয়ারিতে দুর্নীতির দায়ে দোষী সাব্যস্ত হন। বর্তমানে তিনি পাঁচ বছরের কারাদণ্ড ভোগ করছেন। একই ধরনের উদাহরণ আওয়ামী লীগ ও বিএনপি উভয়কে গত কয়েক বছরের রাজনীতিতে নিজেদের নেতাদের মধ্যে অবিশ্বাসের সংস্কৃতির বিকাশ ঘটিয়েছে। এবং নির্বাচনে হেরে যাওয়ার বিরূপ প্রতিক্রিয়ার ভয়ে ভীতি অনুভব করছে। 

এনডিআই রিপোর্ট বলছে, বাংলাদেশ সংসদের ৩০০ আসন একক সদস্যের নির্বাচনী এলাকা নিয়ে গঠিত। ৫০ আসন নারীর জন্য সংরক্ষিত। এসব সংরক্ষিত আসন সরাসরি নির্বাচিত হয় না; তা বরাদ্দ করা হয় পার্লামেন্টে দলগুলোর আসনের আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের ওপর ভিত্তি করে। রাজনৈতিক দলগুলো এখন একক ম্যান্ডেট পেতে নির্বাচনী এলাকার জন্য প্রার্থীদের চিহ্নিত করছে। দলগুলোর মধ্যে মনোনয়ন প্রক্রিয়া স্বচ্ছ নয়। এমনকি দলগুলোর অভ্যন্তরীণ গণতান্ত্রিক চর্চায় এর কোনো প্রভাব নেই। পার্টি প্রতিনিধিরা বলেছেন, সাধারণত যারা গুরুত্বপূর্ণ পরিমাণে তহবিল আনতে এবং ভালো কানেকশন  রেখে চলেন, তারাই মনোনয়ন পান। তৃণমূল স্তর থেকে নতুন নারী প্রার্থীর উত্থানও একই কারণে বাধাগ্রস্ত হয়ে থাকে। 

  • কার্টসিঃ মানবজমিন/ ২২ অক্টোবর ২০১৮
  • লিঙ্ক —https://goo.gl/iAyzQn

অবাধ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের তাগিদ যুক্তরাষ্ট্রের

পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে মার্কিন মন্ত্রীর বৈঠক


বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন দেখতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। নির্বাচনটি এমন হতে হবে যাতে দেশের জনগণের আকাঙ্ক্ষার প্রকৃত প্রতিফলন ঘটে। পররাষ্ট্র সচিব মো. শহিদুল হকের সঙ্গে বৈঠকে ওই বার্তাই দিলেন সফররত দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক মার্কিন মুখ্য উপ-সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী এলিস ওয়েলস। গতকাল সকালে সেগুনবাগিচার পররাষ্ট্র ভবনে সিনিয়র সচিব মো. শহিদুল হকের সঙ্গে ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক করেন তিনি। 

এতে বাংলাদেশ  এবং সম-সাময়িক বিশ্ব পরিস্থিতি, আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন, রোহিঙ্গা সংকট, সৌদি আরবের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক এবং প্রধানমন্ত্রীর সদ্য সমাপ্ত রিয়াদ সফরসহ ঢাকা-ওয়াশিংটন বহুমাত্রিক সম্পর্কের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন তারা। বৈঠক শেষে পররাষ্ট্র সচিব সংবাদমাধ্যমকে বলেন, অন্যান্য বিষয়ের সঙ্গে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও আসন্ন নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হয়েছে। 

আলোচনায় মার্কিন মুখ্য উপ-সহকারী মন্ত্রী বলেন, তার দেশ প্রত্যাশা করে বাংলাদেশে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং এতে সব দল অংশ নেবে। জবাবে পররাষ্ট্র সচিব জানিয়েছেন, বর্তমান সরকারও এমন একটি নির্বাচন করতে চায়, এজন্য সব প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে।

বৈঠক সূত্র বলছে, সচিবের সঙ্গে আলোচনায় প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের ইন্দো প্যাসিফিক স্ট্যাটেজিতে বাংলাদেশের শক্তিশালী অবস্থান কামনা করেছেন মার্কিন মন্ত্রী। 

জবাবে সচিব এ নিয়ে বাংলাদেশ প্রশ্নে যুক্তরাষ্ট্রের সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনার বিষয়ে জানতে চেয়েছেন। বৈঠকে মার্কিন মন্ত্রীর সফরসঙ্গী ছাড়াও ঢাকায় নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাট উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকের পর মন্ত্রী রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করতে কক্সবাজার যান। শনিবার বিকাল সাড়ে ৫টায় তিনি ঢাকায় পৌঁছান। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অ্যামেরিকাস অনুবিভাগের কর্মকর্তারা তাকে বিমানবন্দরে স্বাগত জানান। মার্কিন মন্ত্রী শনিবার রাতেই প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিকের সঙ্গে নৈশভোজে মিলিত হন।

সোমবার রাতে ঢাকা ছেড়ে যাওয়ার আগে বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল এবং কূটনীতিকদের সঙ্গে তার বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। তিনি গণমাধ্যমের মুখোমুখিও হবেন। ওদিকে মুখ্য উপ-সহকারী পররাষ্ট্র মন্ত্রীর ঢাকা সফর নিয়ে মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট একটি বিবৃতি দিয়েছে। তাতে জানানো হয়েছে- দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক উন্নয়ন, সমৃদ্ধ ও নিরাপদ ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল গড়ে তুলতে পারস্পরিক সহযোগিতার বিষয়ে এলিস ওয়েলস বাংলাদেশের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করবেন। রোহিঙ্গাদের আশ্রয় ও নিরাপদ বসবাসের সুযোগ সৃষ্টির জন্য তিনি বাংলাদেশের নেতৃত্বের প্রতি যুক্তরাষ্ট্র সরকারের তরফে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করবেন। 

  • কার্টসিঃ মানবজমিন/ ২২ অক্টোবর ২০১৮
  • লিঙ্ক — https://goo.gl/9ce9cP

নাটকীয়তার পর অনুমতি, সিলেটে ব্যাপক প্রস্তুতি


অনেক নাটকীয়তার পর সিলেটে সমাবেশের অনুমতি পেয়েছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। অবশ্য এ সমাবেশ করতে উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন ফ্রন্ট নেতারা। দুপুরে রিট আবেদন করার পর বিকালে পুলিশের পক্ষ থেকে অনুমতি দেয়ার বিষয়টি জানানো হয়। আগামী বুধবার সিলেটে হযরত শাহজালাল (রহ.)-এর মাজার জিয়ারত ও সমাবেশের মাধ্যমে মাঠের কর্মসূচি শুরু করবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। সমাবেশের অনুমতি নিয়ে টানাহিঁচড়া চলায় করণীয় ঠিক করতে দফায় দফায় বৈঠক করেন নেতারা। সর্বশেষ বৈঠক থেকে জানানো হয়, অনুমতি না পেলেও সিলেট যাবেন ঐক্যফ্রন্টের নেতারা। গতকাল বিকালে গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেনের মতিঝিলের চেম্বারে ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের বৈঠক চলাকালে সমাবেশের অনুমতি পাওয়ার খবর আসে।

সন্ধ্যায় সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের তরফ থেকে অনুমতি প্রদানের বিষয়টি টেলিফোনে জানানো হয় ঐক্যফ্রন্টের শরিক বিএনপি নেতাদের। এরপর নেতারা গিয়ে মেট্রোপলিটন পুলিশের কাছ  থেকে অনুমতি পত্রও গ্রহণ করেন।

ঐক্যফ্রন্টের নেতারা জানান, ২৪শে অক্টোবর সিলেটে তাদের সমাবেশের অনুমতি দেয়া হয়েছে। অনুমতি পাওয়ার পর সমাবেশের প্রস্তুতি শুরু করেছেন তারা। সমাবেশে বিপুলসংখ্যক লোক সমাগমের প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। সমাবেশটি হবে নগরীর রেজিস্ট্রারি মাঠে। তার আগে ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতারা সিলেটে ওলিদের মাজার জিয়ারত করবেন। 

জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠনের পরই সিলেট থেকে আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করতে ‘সিলেট সমাবেশ’-এর ঘোষণা দেয়া হয়েছিল। প্রাথমিক তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছিল ২৩শে অক্টোবর। একই সঙ্গে রয়েছে ওলিকুল শিরোমণি হযরত শাহজালাল (রহ.) মাজার জিয়ারতের কর্মসূচিও। কর্মসূচি চূড়ান্ত করার পর গত বুধবার বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার আবদুল মুক্তাদিরের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলের সদস্যরা সিলেট মহানগর পুলিশের কমিশনার গোলাম কিবরিয়ার সঙ্গে দেখা করে লিখিত পত্র দিয়ে আসেন। ওই পত্রে তারা ২৩শে অক্টোবর সিলেটের রেজিস্ট্রারি মাঠে সমাবেশের অনুমতি চান। 

ওই পত্র জমা দেয়ার পরপরই সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের তরফ থেকে সমাবেশের অনুমতি দেয়া হবে না মর্মে জানিয়ে দেয়া হয়। এরপর এ নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়। পরে সিলেটের নেতারা কেন্দ্রের সঙ্গে আলোচনাক্রমে গত শনিবার আবারো যান মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারের কার্যালয়ে। সেখানে গিয়ে তারা ২৪শে অক্টোবর সমাবেশের অনুমতি চেয়ে ফের আবেদন করেন। কিন্তু আবেদন দিয়ে আসার পরপরই পুলিশের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেয়া হয়, অনুমতি দেয়া যাবে না। ফলে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সিলেট সমাবেশ নিয়ে ধূম্রজালের সৃষ্টি হয়। সমাবেশের অনুমতি না পাওয়ায় সিলেট বিএনপির শীর্ষ নেতারা জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের নিয়ে শুধুমাত্র মাজার জিয়ারতের কর্মসূচি রেখেছিলেন। তবে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত অনুমতি পেলে সমাবেশ করতে প্রস্তুত রয়েছেন বলে বিএনপি নেতারা জানিয়ে আসছিলেন। 

সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আবুল কাহের শামীম গতকাল সন্ধ্যায় মানবজমিনকে জানিয়েছেন, অনুমতি প্রদানের বিষয়টি পুলিশের তরফ থেকে তাদের জানিয়ে দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন- আমরা সমাবেশের জন্য প্রস্তুতি আগেই নিয়ে রেখেছি। ২৪শে অক্টোবর বিকেলে সিলেটের ঐতিহাসিক রেজিস্ট্রারি মাঠে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। সিলেট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী আহমদ জানিয়েছেন, ২৪শে অক্টোবর সিলেট থেকেই আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করবে ঐক্যফ্রন্টের মাঠের কর্মসূচি। 

ওলিদের মাজার জিয়ারতের মাধ্যমে শুরু হবে ঐক্যযাত্রা। আর এই যাত্রায় শরিক হচ্ছে সিলেটবাসী। এজন্য আমরা আয়োজনে কোনো ত্রুটি রাখছি না। সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার পরিতোষ ঘোষ সমাবেশের অনুমতি দেয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, এ সম্পর্কে লিখিত পত্রও দেয়া হচ্ছে। এদিকে সমাবেশের বিষয়টির সত্যতা জানতে কেন্দ্রীয় নেতাদের নির্দেশে সন্ধ্যায় সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারের কার্যালয়ে যান বিএনপি নেতা ও সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। 

এ সময় পুলিশের পক্ষ থেকে তার কাছেও অনুমতি প্রদানের বিষয়টি জানানো হয়। সন্ধ্যায় নিজ বাসায় মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, অনুমতি পাওয়া গেছে। এখন সমাবেশের প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। সিলেট বিএনপিসহ ঐক্যফ্রন্টের শরিক দলের নেতারা জানিয়েছেন, সিলেটের সমাবেশে ঢাকা থেকে ঐক্যফ্রন্টের প্রায় সব শীর্ষ নেতাই সিলেটে আসছেন। ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে তারা সিলেটে এসে প্রথমে ওলিকুল শিরোমণি হযরত শাহজালাল (রহ.) মাজার জিয়ারত করবেন। পরে তারা হযরত শাহপরাণ (রহ.) মাজার জিয়ারত করবেন। বিকেলে রেজিস্ট্রারি মাঠে সমাবেশে ভাষণ দেবেন। 

সিলেট মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আজমল বখ্‌ত সাদেক জানিয়েছেন, সমাবেশের জন্য আমরা পুরোপুরি প্রস্তুতি নিয়েছি। জাতীয় নেতৃবৃন্দ এলে সিলেটের রাজপথে জনতার ঢল নামবে বলে জানান তিনি। বিএনপিসহ ঐক্যফ্রন্টের নেতারা সিলেটে শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। 

১৪ শর্তে অনুমতি: সিলেটে ১৪ শর্তে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টকে সমাবেশে অনুমতি দিয়েছে পুলিশ। এসএমপির নগর পুলিশের বিশেষ শাখার উপ-পুলিশ কমিশনার স্বাক্ষরিত ওই অনুমতিপত্রে এ শর্ত দেয়া হয়। শর্তের মধ্যে রয়েছে- ১. অনুষ্ঠানস্থলে পর্যাপ্তসংখ্যক পুরুষ-মহিলা স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করতে হবে, ২. রাষ্ট্রবিরোধী কোনো ধরনের বক্তব্য বা বিবৃতি দেয়া যাবে না, ৩. সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করে কিংবা ধর্মীয় অনুভূতি ও মূল্যবোধের উপর আঘাত হানে এ ধরনে বক্তব্য বা বিবৃতি প্রদান বা কোনো ব্যানার, ফেস্টুন, প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করা যাবে না, ৪. জনসাধারণের চলাচলের উপর কোনো ধরনের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা যাবে না, ৫. নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কর্মসূচি শেষ করতে হবে, ৬. আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটে কিংবা মানুষের জানমালের ক্ষতি সাধিত হয় এ ধরনের বক্তব্য প্রদান করা যাবে না, ৭. মাইক ব্যবহারে আশপাশের মানুষের কোনো অসুবিধা করা যাবে না, ৮. ব্যাগ-সিগারেট-দিয়াশলাই, লাইটার নিয়ে সমাবেশে প্রবেশ করা যাবে না, ৯. কোনো ধরনের লাঠিসোটা, ধারালো অস্ত্র কিংবা লাঠি সংবলিত ব্যানার, ফেস্টুন ব্যবহার করা যাবে না, ১০. কোনো ধরনের বৈধ অস্ত্র আনা বা বহন করা যাবে না, ১১. সুরমা পয়েন্ট থেকে তালতলা পর্যন্ত কোনো ধরনের গাড়ি পার্কিং করা যাবে না, ১২. অনুষ্ঠানস্থলে আইনশৃঙ্ক্ষলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটলে আয়োজনকারী দায়ী থাকবেন, ১৩. উল্লিখিত শর্তাবলীর এক বা একাধিকটি লঙ্ঘন করলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে, ১৪. কর্তৃপক্ষ কোনো কারণ দর্শানো ছাড়াই অনুমতি আদেশ বাতিল করার ক্ষমতা সংরক্ষণ করেন। 

  • কার্টসিঃ মানবজমিন/ ২২ অক্টোবর ২০১৮
  • লিংক - https://goo.gl/XSAuVS