Search
Sunday, October 28, 2018
Pay, perks up, not service
Facilities increased to woo public servants ahead of polls: experts
Shakhawat Hossain
A substantial increase in the perks and salary of public servants in the present tenure of the government has failed to make any significant improvement in the delivery of services by government employees.
Experts noted that complaints about ‘under-the-table activities’ from the service takers did not drop although the public servants had been receiving almost double salary since 2016, easy car loan and home loan.
The experts accused the ruling Awami League of failure to give strong message for improving the service delivery against the backdrop of continued allegation that the facilities and perks were enhanced only to appease the public servants ahead of the 11th parliamentary polls due by January 28, 2019.
Former caretaker government adviser MM Shawkat Ali told New Age on October 16 that the public servants were yet to improve the service delivery despite augmentation of the digital technologies.
The major reason for such failure was higher demand from people and degradation of moral values among the public servants, he said.
The retired bureaucrat lamented that the under-the-table activities had not decreased at all despite a substantial increase in the salary and perks in the past few years.
State-minister for finance and planning MA Mannan denied the allegation, claiming that the service delivery had improved as the government officials became more public-oriented following the increase in salary and perks.
He told New Age on Saturday that the increase in the perks and salary of the public servants was imperative as the park and package in the country was one of the lowest in South Asia.
He, however, noted it would take time to get expected improvement in service delivery from the public servants.
Salary of almost all public servants became double with the implementation of the current pay scale in 2016, when the Bangla New Year celebration allowance was also introduced.
The government also introduced Tk 30 lakh car loan facility with a monthly maintenance allowance of Tk 50,000 for deputy secretaries in 2017, a lucrative facility that was earlier limited to joint secretaries and above.
Former interim government adviser Mirza Azizul Islam said that the car loan for deputy secretary-level government officials was meaningless as it would increase government expenditure.
The policy was made mainly to woo government officials, he said.
State minister Mannan said the government was always ready to accept constructive criticism and they were always confident about the support of the public servants.
In August, the government increased home loan ceiling to Tk 75 lakh from previous Tk 1.2 lakh and decreased the interest rate to 5 per cent from previous 10 per cent for the public servants.
A demand for an adjustment to inflation in line with recommendation made by a secretary-level committee is now under consideration, said finance division officials.
At a post-budget briefing in June, finance minister AMA Muhith boasted that except the present government nobody gave so much facility to the public servants.
Transparency International Bangladesh executive director Iftekharuzzaman said that offering higher facilities to the public servants might be an attempt to woo them ahead of the general elections, as major target of prevention of corruption and improvement in service delivery remained elusive.
He said that there was no concrete data to assess the service delivery by the public servants, but the prevalence of corruption and amount of bribe realised by the public servants increased.
Quoting TIB study ‘Corruption in Service Sector: National Household Survey 2017’ released in August, Iftekharuzzaman said that the law enforcement agencies emerged as the most corrupt institution in the country’s service sector, followed by Department of Immigration and Passport and Bangladesh Road Transport Authority.
According to the study, 73 per cent service seekers fall prey to corruption of law enforcement agencies while about 61 per cent have to pay bribe. On an average, a household pays Tk 6972 to the sector.
The estimated amount of bribe is Tk 106.89 billion, 3.4 per cent of the revised budget for 2016-17 and 0.5 per cent of the GDP.
The rate of corruption and bribery is higher in rural areas than in urban areas, the study found.
Many complained that in most land offices they had to pay additional money to get services for land registration and mutation or any other any land-related work even though the government had increased salaries of the employees and officials substantially.
Even for health services, people were compelled to pay kickbacks to employees for serials at public hospitals in the wake of patient burden, service seekers alleged.
There have been widespread allegations that middlemen collect money for ‘smooth services’ at passport offices, Bangladesh Road Transport Authority offices and those of the utility services, including gas, electricity and water, as the clients otherwise have to suffer in getting desired services from the agencies concerned.
Sufferers alleged that they found hardly any changes in terms quality services at public offices despite pay hikes on regular basis due to lack of proper monitoring over service providing agencies.
The government, meanwhile, gave promotions to various levels in the civil bureaucracy although there were no vacancies, apparently to appease a section of officers.
In its latest move, the government on October 24 promoted 256 senior assistant secretaries to the rank of deputy secretary, raising the number of deputy secretaries to 1,790.
Consequently, the number of deputy secretaries had gone double the number of approved posts in the organogram, said a senior official concerned.
On September 20, 154 deputy secretaries were promoted to the rank of joint secretary, raising the number joint secretaries to 759 against 350 posts in the approved structure.
Earlier on August 29, the government promoted 154 joint secretaries to the rank of additional secretaries making the figure at least five times higher than the approved structure, official records show.
Courtesy: New Age Oct 28, 2018
খায়রুল হক রায়ে কী বলেছিলেন
মন্ত্রী-এমপিদের আচরণবিধি: দ্বিমুখী নীতি ইসি’র
সিরাজুস সালেকিন
মন্ত্রী-এমপিদের ভোটে অংশগ্রহণের বিষয়ে দ্বিমুখী নীতি গ্রহণ করেছে নির্বাচন কমিশন। স্থানীয় নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের যে সুযোগ নেই, সংসদ নির্বাচনে তা ভোগ করবেন তারা। স্বপদে বহাল থেকে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেবেন সরকারি সুবিধাভোগী এই অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা। তালিকায় আরো রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী, জাতীয় সংসদের স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার, বিরোধী দলীয় নেতা, সংসদ উপনেতা, বিরোধী দলীয় উপনেতা, প্রতিমন্ত্রী, হুইপ, উপমন্ত্রী বা তাদের সমমর্যাদার ব্যক্তি এবং সিটি করপোরেশনের মেয়র। স্থানীয় সরকার নির্বাচনে তাদের প্রচারণায় অংশ নেয়ার সুযোগ নেই। এমনকি তারা সংসদের কোনো শূন্য আসনে উপ-নির্বাচনের সময় প্রচারণায় অংশ নিতে পারেন না। অথচ সংসদের সাধারণ নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিসহ সরকারি সুবিধাভোগীরা স্বপদে বহাল থেকে অংশ নিচ্ছেন।
নির্বাচন কমিশনের বর্তমান আচরণ বিধিমালায় সংসদ ভোটের প্রচারণায় অংশ নিতেও তাদের বাধা নেই।
এ অবস্থায় নির্বাচনের মাঠে অসম পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে। যে রায়ের অজুহাত দেখিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি বাতিল করা হয়েছিল- ওই রায়েই বিচারপতি খায়রুল হক নির্বাচনের ৪২ দিন আগে সংসদ বাতিলের নির্দেশনা দিয়েছিলেন। ওই নির্দেশনার মূল চেতনায় ছিলো যাতে করে নির্বাচনের মাঠে লেভেল ফিল্ড নিশ্চিত হয়। সিটি করপোরেশন নির্বাচন আচরণ বিধিমালায় বলা আছে, ‘সরকারি সুবিধাভোগী অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি এবং কোনো সরকারি কর্মকর্তা বা কর্মচারী নির্বাচন-পূর্ব সময়ে নির্বাচনী এলাকায় প্রচারণায় বা নির্বাচনী কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করিতে পারিবেন না। তবে শর্ত থাকে যে, উক্ত রূপ ব্যক্তি সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকার ভোটার হইলে তিনি কেবল তাহার ভোট প্রদানের জন্য ভোটকেন্দ্রে যাইতে পারিবেন।’
এছাড়া আচরণবিধিতে আরো বলা হয়েছে, ‘নির্বাচন-পূর্ব সময়ে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী বা তাহার পক্ষে অন্য কোনো ব্যক্তি, সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান নির্বাচনী কাজে সরকারি প্রচারযন্ত্র, সরকারি যানবাহন, অন্য কোনো সরকারি সুযোগ-সুবিধা ভোট এবং সরকারি কর্মকর্তা বা কর্মচারীগণকে ব্যবহার করিতে পারিবেন না।’ অপরদিকে সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালায় শুধুমাত্র শূন্য আসনে উপ-নির্বাচনে সরকারি অতি সুবিধাভোগী ব্যক্তিদের প্রচারণায় অংশ নিতে বাধার কথা বলা আছে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেবেন দশম সংসদের অনেক এমপি। বাস্তবতা হচ্ছে, এমপিরা এলাকায় সর্বোচ্চ প্রভাবশালী ব্যক্তি। একই সঙ্গে মন্ত্রীরা তাদের স্ব-স্ব দপ্তরের প্রধান।
নির্বাচন-পূর্ব সময়ে সরকারি কর্মকর্তাদের তারা ব্যবহার করবেন এমন শঙ্কা থেকে যাচ্ছে। এতে ক্ষমতাসীনদের বাইরে যারা এমপি প্রার্থী হবেন তারা এক প্রকার ভীতির মধ্যে থাকবেন। আবার যেসব এমপি এবার মনোনয়ন পাবেন না তাদের নিয়ে ভীতি থাকবে মনোনয়নপ্রাপ্তদের। এ বিষয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সভাপতি এম হাফিজ উদ্দিন খান বলেন, সংসদ ভেঙে নির্বাচন করা বেআইনি কিছু না। কারণ, এটা সংবিধানে স্পষ্ট করে বলাই আছে সংসদ ভেঙে নির্বাচন করা যাবে। সরকার বর্তমানে যে ভূমিকা গ্রহণ করছে তাতে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত সম্ভব না। ইতিমধ্যে আমরা দেখছি জাতীয় ঐক্যফ্রন্টকে জনসভার অনুমতি দেয়া হচ্ছে না।
মন্ত্রী-এমপিরা স্বপদে বহাল থাকলে এরকম ঘটনাই ঘটবে। ইসি সূত্রে জানা গেছে, আগামী ৩০শে অক্টোবর থেকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন গণনা শুরু হচ্ছে। ১লা নভেম্বর প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাতের পর ৪ঠা নভেম্বর তফসিল ঘোষণার পরিকল্পনা ইসির। আর ভোটগ্রহণ করা হতে পারে ১৮ থেকে ২০ ডিসেম্বরের মধ্যে। গতবারের মতোই সংসদ বহাল রেখেই এবার সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ফলে এমপিরা স্বপদে বহাল থেকেই নির্বাচনে অংশ নেবেন। নির্বাচনকালীন সময়ে সরকারের মন্ত্রিসভা ছোট না করার ইঙ্গিত দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। বর্তমানে মন্ত্রিসভায় পূর্ণাঙ্গ মন্ত্রী আছেন ৩৩ জন, প্রতিমন্ত্রী ১৭ জন এবং উপমন্ত্রী ২ জন। সংসদ বহাল থাকলে বর্তমান মন্ত্রী-এমপি শুধুমাত্র সরকারি সুযোগ-সুবিধা ব্যবহার করতে পারবেন না। কিন্তু কী ধরনের সুযোগ-সুবিধা পাবেন সে বিষয়ে কোথাও উল্লেখ নেই।
স্থানীয়ভাবে মন্ত্রী-এমপিরা বিভিন্ন সংগঠন, সংস্থার কমিটিতে পদ ধারণ করেন। আইনশৃঙ্খলা কমিটিসহ গুরুত্বপূর্ণ অনেক ফোরামে তারা নীতি নির্ধারণী কাজ করেন। তাই তফসিলের পর এমপিদের ক্ষমতা খর্ব না করলে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত সম্ভব হবে না এমন আশঙ্কা সংশ্লিষ্টদের। এ অবস্থায় বিদ্যমান আচরণবিধিতেই তফসিল ঘোষণা করছে নির্বাচন কমিশন। সম্প্রতি ইসির আইন সংস্কার কমিটির প্রধান এবং নির্বাচন কমিশনার বেগম কবিতা খানম জানান, বিদ্যমান আইন ও বিধির মধ্যেই প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারি সুবিধাভোগী অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা নির্বাচনে অংশ নেবেন। তাদের বিধি-নিষেধের বিষয়টি বর্তমান আচরণ বিধিমালায় বলাই আছে। সুতরাং আচরণবিধি মালা সংস্কারের কোনো প্রয়োজন নেই।
ইসি সূত্রে জানা গেছে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আচরণবিধি মালায় সামান্য পরিবর্তন এনেছে ইসি। বিএনপি, যুক্তফ্রন্ট, জাতীয় ঐক্যপ্রক্রিয়াসহ সরকারবিরোধী জোটগুলোর পক্ষ থেকে নির্বাচনের আগে সংসদ ভেঙে দেয়ার দাবি উঠেছে। ক্ষমতাসীন দল সে দাবি মানতে নারাজ। তারা সংবিধান অনুযায়ী সংসদ বহাল রেখেই নির্বাচন করার পক্ষে। আগামী নভেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে তফসিল এবং ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে ভোটগ্রহণের কথা। এ অবস্থায় নির্বাচন কমিশনের একাংশ তফসিল ঘোষণার পর এমপিদের ক্ষমতা খর্বের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। কিন্তু সেই প্রস্তাব টেকেনি। সংসদ বহাল রেখে নির্বাচন করলে এই সরকারি সুবিধাভোগী অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের কর্মকাণ্ড কেমন হবে তা নিয়ে উদ্বিগ্ন সংশ্লিষ্টরা।
গত এপ্রিলে সাংবাদিকদের এক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠানে প্রধান নির্বাচন কমিশনার সিইসি কেএম নূরুল হুদা বলেছিলেন, সংসদ বহাল রেখে নির্বাচন হলে ভোটে দাঁড়ানো এমপিদের ক্ষমতা খর্ব করা প্রয়োজন। এজন্য ইসি আচরণবিধি সংশোধনের কথা ভাববে বলে জানান তিনি। ইসি কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২০১৪ সালে সংসদ বহাল রেখেই দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ওইসময় বিএনপিসহ বেশকিছু রাজনৈতিক দল নির্বাচন করে। ফলে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করার জন্য ইসিকে বেগ পেতে হয়নি। কিন্তু এবার যদি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হয় তাহলে বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক তৈরি হবে। অতীতে স্থানীয় নির্বাচনগুলোতে আইন থাকার পরও এমপিদের নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়নি। এমপিরা এমনিতেই স্থানীয়ভাবে সর্বোচ্চ ক্ষমতা ভোগ করে। সংসদ বহাল রেখে নির্বাচন হলে এমপিরা প্রশাসনসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে বলে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
Courtesy: Manabzamin Oct 28, 2018
EDITORIAL
BRT: Victim of lack of coordination
The reported refusal of the World Bank (WB) to bankroll the entire route of the Bus Rapid Transit (BRT) on the ground of its faulty design is yet another glaring example of lack of coordination among the public sector development agencies and the government's indifference or ineptitude towards making proper use of taxpayers' money. The WB decision makes uncertain the fate of the BRT project that has been limping since its launching in 2010. The cost of the project that has more than doubled due to loopholes in preliminary designs, revision of projects and negligence on the part of the project implementing agency.The WB following a feasibility study, conducted a few years back, had assured the government of funding the project. But the construction of Moghbazar-Mouchak flyover, in the meanwhile, has made it impossible to execute the project's planned route between city's Mohakhali to Keraniganj. The flyover does not have enough space for keeping dedicated lanes for BRT. To make things worse, another government agency has proposed to build a flyover between Shantinagar and Keraniganj on the planned BRT route. Under the circumstances, it is hard to blame the WB for its decision to downsize its investment in the BRT project that is designed to make the movement of passenger buses faster and hassle-free.
The Mouchak-Maghbazar flyover was planned and built when the BRT plan was very much in place. But the agency -- the local government engineering department (LGED) -- that built the flyover ignored the BRT plan. The Dhaka Transport Coordination Authority (DTCA), the agency responsible for implementation of BRT, under the control of the ministry of road transport and bridges, perhaps, could not press its case strongly or its pleadings went unheeded.
Many major cities in Asia and other continents have introduced BRT to ensure faster movement of passenger buses. Compared to cost-intensive flyovers or expressways, the BRT is a low-cost solution to traffic problems with passenger buses. The BRT and the planned introduction of limited number of bus companies under a centrally managed system together might make the commuting by bus relatively comfortable. But the lack of coordination, a deep-rooted problem troubling the operations of government agencies, has emerged as a major roadblock.
Fortunately, the WB has not dropped its plan to bankroll the project in its entirety. Given the project's importance, it has agreed to provide $500 million for the execution of BRT between Shahjalal International Airport point to Mohakhali. The relevant agency should now expedite its work on the project and sit with other agencies concerned to find alternative routes for the BRT up to Keraniganj. The country cannot afford high-cost solutions to the traffic problem that has been exacting a huge physical and economic toll. It should seek low-cost but efficient solutions. And it should be kept in mind that coordination among public sector agencies is a precondition for efficient execution of projects. Volumes have been said and written on coordination issue, but to no effect. Ensuring coordination among public sector agencies should actually be a routine exercise for a government worth its name.
Courtesy: The Financial Express Oct 28, 2018
People suffer on first day of countrywide transport strike
A countrywide 48-hour transport strike, enforced by Bangladesh Road Transport Workers Federation, left people in distress and caused immense sufferings on Sunday.
The transport workers on Saturday declared to stage the work abstention from 6:00 am Sunday to 6:00 am Tuesday to press home their eight-point demands.
No public transports were seen plying on Dhaka city roads except some CNG-run auto-rickshaws and a huge number of rickshaws.
Public transports, including buses, minibuses and human-haulers stayed off the roads since morning in response to the strike, causing immense sufferings to city dwellers including office-goers and students.
In the capital, no inter-district buses left Gabtoli, Mohakhali or Sayedabad terminals in the morning.
CNG-run auto-rickshaw drivers and rickshaw pullers are charging excessive fares taking advantage of the situation, alleged commuters.
Many people were seen walking or travelling by rickshaw to reach their destinations – sometimes paying double or triple the cost of the usual fare.
The government-run Bangladesh Road Transport Commission (BRTC) bus service was the only public transport option available throughout the city.
Traffic Inspector Asad from Abdullahpur area in the capital was quoted by UNB news agency as saying that there is no public transport on the roads since morning. The number of private vehicles is also limited. People are travelling on rickshaws to reach their destination.
Basu Deb who works at a private company and resides in Mirpur’s Purobi area said that he had to stand on the road for a public bus from 6 am to go Motijheel, but no vehicle was there.
“Later, I had to hire a rickshaw for office,” he added.
According to reports from different districts, no long-route buses left respective bus stands following the strike.
Their demands include making all offences by road accident ‘bailable’, cancellation of the provision of fining Tk 0.5 million for involvement in a road accident, keeping a representative from their federation in any probe body formed for road accident, fixing minimum educational qualification for getting driving licence to class-V, and stopping police harassment on roads,
Earlier on October 12, the workers’ association, decided to launch demonstration by going on a two-day work abstention from October 28 to press home their eight-point demands that included amendments to the Road Transport Act, if their demands are not met by October 27.
Courtesy: The Financial Express Oct 28, 2018
The transport workers on Saturday declared to stage the work abstention from 6:00 am Sunday to 6:00 am Tuesday to press home their eight-point demands.
No public transports were seen plying on Dhaka city roads except some CNG-run auto-rickshaws and a huge number of rickshaws.
Public transports, including buses, minibuses and human-haulers stayed off the roads since morning in response to the strike, causing immense sufferings to city dwellers including office-goers and students.
In the capital, no inter-district buses left Gabtoli, Mohakhali or Sayedabad terminals in the morning.
CNG-run auto-rickshaw drivers and rickshaw pullers are charging excessive fares taking advantage of the situation, alleged commuters.
Many people were seen walking or travelling by rickshaw to reach their destinations – sometimes paying double or triple the cost of the usual fare.
The government-run Bangladesh Road Transport Commission (BRTC) bus service was the only public transport option available throughout the city.
Traffic Inspector Asad from Abdullahpur area in the capital was quoted by UNB news agency as saying that there is no public transport on the roads since morning. The number of private vehicles is also limited. People are travelling on rickshaws to reach their destination.
Basu Deb who works at a private company and resides in Mirpur’s Purobi area said that he had to stand on the road for a public bus from 6 am to go Motijheel, but no vehicle was there.
“Later, I had to hire a rickshaw for office,” he added.
According to reports from different districts, no long-route buses left respective bus stands following the strike.
Their demands include making all offences by road accident ‘bailable’, cancellation of the provision of fining Tk 0.5 million for involvement in a road accident, keeping a representative from their federation in any probe body formed for road accident, fixing minimum educational qualification for getting driving licence to class-V, and stopping police harassment on roads,
Earlier on October 12, the workers’ association, decided to launch demonstration by going on a two-day work abstention from October 28 to press home their eight-point demands that included amendments to the Road Transport Act, if their demands are not met by October 27.
Courtesy: The Financial Express Oct 28, 2018
ঢাকা ফোরামের গোলটেবিল বৈঠক
‘সংসদ রেখে নির্বাচন স্বেচ্ছাচারের বহিঃপ্রকাশ’
স্টাফ রিপোর্টারসংসদ ভেঙে দিয়ে প্রধান দুটি রাজনৈতিক দলের মধ্যে আলোচনা ও সমঝোতার ভিত্তিতে আগামী জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের আহ্বান জানিয়েছে নাগরিক সংগঠন দি ঢাকা ফোরাম। গতকাল রাজধানীতে এক গোলটেবিল বৈঠকে ফোরামের নেতৃবৃন্দ বলেন, গণতান্ত্রিক বিশ্বে বিশেষত পশ্চিমা দেশসমূহে পূর্বতন সংসদ বজায় রেখে ওই সব সংসদ সদস্য দিয়েই নির্বাচন করার কোনো নজির নেই। এটি একধরনের স্বেচ্ছাচারের বহিঃপ্রকাশ মাত্র। গোলটেবিল বৈঠকে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, নির্বাচন কমিশনকে স্বাধীনভাবে সংবিধান কর্তৃক প্রদত্ত ক্ষমতার ব্যবহার করতে দেয়া জরুরি হয়ে পড়েছে। তাই সকলের প্রত্যাশা প্রধান রাজনৈতিক দলের উচিত আলোচনা ও সমঝোতার ভিত্তিতে এগিয়ে যাওয়া। তা না হলে জাতি গভীর অন্ধকারে নিপতিত হতে পারে। যা মুক্তিযুদ্ধের মহান শহীদদের রক্তের প্রতি অবমাননা করা হবে। ‘আসন্ন জাতীয় নির্বাচন শীর্ষক’ ওই গোলটেবিল বৈঠকে সাবেক আমলা, কূটনীতিক, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ছাড়াও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ও ঢাকা ফোরামের চেয়ারম্যান ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সঞ্চালনায় গোলটেবিল বৈঠকে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সাবেক রাষ্ট্রদূত এম সিরাজুল ইসলাম। মূল প্রবন্ধে বলা হয়, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশ বর্তমানে একটি ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে।
সমগ্র জাতি ২০১৪ সালের নির্বাচনের পুনরাবৃত্তির আশঙ্কায় উৎকণ্ঠিত। গণমানুষের এ আশঙ্কা বাস্তবে রূপ নিলে তা হবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরিপন্থি। প্রবন্ধে আরো বলা হয়, বর্তমান সরকার সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী বহাল রেখেই নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্পন্ন করার বিষয়ে অনড়। অর্থাৎ দলীয় নেত্রীকে নির্বাচনকালীন সরকার প্রধান হিসেবে বহাল রাখতে তারা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। সরকারি দল ইতিমধ্যে এই লক্ষ্যে পুলিশ ও জনপ্রশাসন বিভাগের রাজনীতিকরণ সম্পন্ন করেছে নিজেদের স্বার্থ রক্ষার্থে। যদি এটি সত্যি হয়ে থাকে তাহলে এমন আশঙ্কা অমূলক নয় যে গায়েবি, মিথ্যা মামলা, গুম আর অপহরণের মতো বিষয়গুলো আরো প্রকটতর হবে। দুটি বিষয় ভোটাধিকার পুনরুদ্ধারের ব্যাপারে বাংলাদেশের জনগণকে আশান্বিত করেছে বলে প্রবন্ধে উল্লেখ করা হয়। এর মধ্যে প্রথমটি হলো- অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে কিছু পরিবর্তন। আর দ্বিতীয়টি হচ্ছে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে ভারতসহ অন্যান্য দেশ ও সংস্থাসমূহের দৃষ্টিভঙ্গির ইতিবাচক পরিবর্তন। দেশজ রাজনৈতিক ক্ষেত্রে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে অনুসৃত বিরোধী বৃত্তের বাইরে তৃতীয় একটি শক্তির উত্থান হয়েছে।
এই শক্তিটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও সবার অংশগ্রহণের মাধ্যমে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করার জন্য কাজ করেছে। এই মোর্চাটি আওয়ামী লীগের ২০০৯ ও ২০১৪ নির্বাচনে প্রত্যক্ষ করেছে কীভাবে সরকারি প্রশাসনকে দলীয় স্বার্থে ব্যবহার করেছে যা মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরিপন্থি। বাংলাদেশ ইস্যুতে বহির্বিশ্বের অবস্থান বদলেছে দাবি করে প্রবন্ধে বলা হয়, অতীতে আওয়ামী লীগের দেয়া যুক্তি বিএনপি-জামায়াতকে ভোট দেয়া মানে ‘তথাকথিত’ ইসলামী সন্ত্রাসকে উস্কে দেয়া যা আন্তর্জাতিক বিশ্ব অনেকটা মেনে নিয়েছিল। কিন্তু এখন সেই পরিস্থিতি আজ নেই। ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাম্প্রতিক সফরে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সবার অংশগ্রহণে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দেখতে চান। বাংলাদেশে প্রাক্তন ভারতীয় হাইকমিশনার ও অন্যান্য কিছু সাংবাদিক ও কূটনীতিক একই মত ব্যক্ত করে গেছেন। বর্তমান হাইকমিশনারও একাধিকবার একই মনোভাব ব্যক্ত করেছেন।
বৈঠকে নির্বাচনের অনুকূল পরিবেশ নেই উল্লেখ করে সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার বলেন, তফসিলের পর ৪৫ দিনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড অসম্ভব। একটি রাজনৈতিক দল দুই বছর থেকে ভোট চেয়ে জনসভা করে বেড়াচ্ছে। আরেকটি দলকে জনসভার অনুমতিই দেয়া হচ্ছে না। ইসি’র উচিত ছিল ভোটের অন্তত ৯০ দিন আগে তফসিল ঘোষণা করা। সিইসি’র দেয়া প্রতিশ্রুতির উল্লেখ করে আলী ইমাম মজুমদার বলেন, সিইসি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ৫ই জানুয়ারির মতো আর কোনো নির্বাচন হবে না। ১৯৯৬ সালে সিইসি’র দলীয় ও নির্দলীয় দুই রকম সরকারের অধীনে নির্বাচন করার অভিজ্ঞতা রয়েছে। গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য ইসিকে তাই প্রতিশ্রুতি দিতে হবে। সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা এম হাফিজ উদ্দিন খান বলেন, সুশীল সমাজের কাজ হচ্ছে মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করা। সেই সুশীল সমাজও বিভক্ত হয়ে গেছে। মামলা, মোকদ্দমা, গুম, খুনের কারণে ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে দেশে।
এই পরিবেশ অব্যাহত থাকলে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। পাশাপাশি নির্বাচন উপলক্ষে সরকার যেভাবে হাজার হাজার কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন করছে তাও অনৈতিক। এসব প্রকল্পের প্রয়োজনীয়তা আদৌ আছে কিনা তা যাচাই করা দরকার। বর্তমান ইসি সন্দেহজনক কার্যকলাপ করছে অভিযোগ করে সাবেক এই মহা হিসাবনিরীক্ষক বলেন, ইভিএম প্রকল্প পাসের আগে ইসি তা কেনার জন্য এলসি খুলেছে। ইসির তো আরো গুরুত্বপূর্ণ কাজ ছিল। সেসব বাদ দিয়ে তারা ইভিএমের পেছনে লেগে আছে। মুখে বক্তৃতা দিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব না বলেও মন্তব্য করেন তিনি। সংসদ ভেঙে নির্বাচন সংবিধানেই আছে উল্লেখ করে এম হাফিজ উদ্দিন খান বলেন, সংসদ ভেঙে নির্বাচন দিলে বেআইনি কিছু হবে না। এমপিরা অলিখিতভাবে অনেক প্রভাবশালী। সংসদ রেখে নির্বাচন করলে নানা সমস্যা দেখা দেবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহউদ্দিন আহমেদ সমাপনী বক্তব্যে বলেন, একাত্তর সালের মতো বাংলাদেশ একটি মৌলিক সমস্যার মুখোমুখি হয়েছে। গতানুগতিক নির্বাচন করে কেউ যদি তিন চতুর্থাংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নেয় সমস্যার সূত্রপাত হবে সেই সময় থেকে। আমরা স্বল্প সময়ে কিছু করতে পারবো না। তিনি বলেন, এবার সমস্যাকে কার্পেটের নিচে ঠেলে দেয়া যাবে না। যারা ইতিহাস ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ছাত্র তারা জানে এটা বিস্ফোরণ করে। তাই যার যার অবস্থান থেকে ভূমিকা পালন করা দরকার। গতানুগতিক একটা নির্বাচন হলেই হবে না- সেই উদ্বেগ আমরা প্রকাশ করছি। এখানে কিছু করার থাকলে করতে হবে, না হলে দেশের সর্বনাশ হয়ে যাবে।
রাষ্ট্রবিজ্ঞানী দিলারা চৌধুরী বলেন, সংবাদপত্রের স্বাধীনতাও সুষ্ঠু নির্বাচনের শর্ত। কিন্তু সেই সংবাদপত্রকে ভয়ভীতি দেখিয়ে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা হচ্ছে। দেশের বিচার বিভাগের কী অবস্থা তা সাবেক প্রধান বিচারপতির বক্তব্যে বোঝা যায়। এই পরিবেশে কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব না বলে মন্তব্য করেন তিনি। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এই শিক্ষক আরো বলেন, দেশে সাংঘাতিক সংকটময় পরিবেশ বিরাজ করছে। এখানে সুশীল সমাজও আপস করে চলছে। সরকার যেভাবে দমন নীতি গ্রহণ করেছে তাতে করে সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ নেই। এ জন্য সংসদ ভেঙে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি জানান তিনি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল বলেন, সত্যিকার ভোটে নির্বাচিত সরকারের কর্মকাণ্ড ভালো হয়। ভুয়া ভোটে নির্বাচিত সরকারের কাজ ভালো হয় না। যে সরকার প্রশাসন, পুলিশের মাধ্যমে ভোটে জিতে তারা জনগণকে খুশি করার বদলে পুলিশ ও প্রশাসনকেই খুশি করে। আর জনসমর্থন না থাকায় তারা জনগণের প্রতি প্রতিশোধ নিতে চায়।
ড. আসিফ নজরুল আরো বলেন, সরকারের ক্ষমতা হারানোর ভীতি থাকলে দুঃশাসন কম হয়। আওয়ামী লীগ ২০০৯ সালে সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসেছিল বলে ভালোভাবে শাসন করেছে। কিন্তু ২০১৪ সালের পরবর্তী পরিস্থিতি ছিল ভিন্ন। এই আমলে জনগণকে প্রতিবাদ পর্যন্ত করতে দেয়া হয়নি। বিরোধী দলকে সরকার নানাভাবে দমন করছে উল্লেখ করে আসিফ নজরুল বলেন, গায়েবি মামলা ও গ্রেপ্তার আতঙ্কের কারণে বিরোধী নেতাকর্মীরা মাঠে নামতে পারছে না। তাদের জনসভা করতে দেয়া হচ্ছে না। সাধারণ মানুষকে মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে। নির্বাচন যতই সামনে আসে সরকার ততই দমনমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে। জামিনযোগ্য অপরাধে মামলার পরও ব্যারিস্টার মইনুলকে জামিন দেয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেন তিনি। গোলটেবিল বৈঠকে অংশ নিয়ে ইউএসএইড বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও সুশাসন বিষয়ক ডেপুটি অফিস ডিরেক্টর স্লেভিকা রডোসেভিক বলেন, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সুশীল সমাজ একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তাদের এই আলোচনা ও সংলাপ অব্যাহত থাকবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
বৈঠকে সাবেক রাষ্ট্রদূত এফ এ শামীম আহমেদ, মাহমুদুর রেজা চৌধুরী, ইফতেখারুল করিম, মাসুদ আজিজ, শাহেদ আখতার, পানি বিশেষজ্ঞ ম. ইনামুল হক, স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. মুজাহেরুল হক, জাতীয় পার্টির এমপি ফখরুল ইমাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
Courtesy: Manabziban Oct 28, 2018
‘রাষ্ট্রীয় মদতে আমাকে অপহরণ করা হয়েছিল’
মানবজমিন ডেস্ক
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমেদ আবারো দাবি করেছেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়ে একদল অস্ত্রধারী তাকে চোখ বেঁধে অপহরণ করেছিল। ভারতের মেঘালয়ভিত্তিক অনলাইন শিলং টাইমসকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, রাষ্ট্রের মদতে আমাকে অপহরণ করা হয়েছিল। আমি একা ভারতে প্রবেশ করিনি। ২০১৫ সালে গ্রেপ্তারের পর ভারতে অনুপ্রবেশের অভিযোগে সালাহ উদ্দিন আহমেদের বিরুদ্ধে শিলংয়ের আদালতে মামলা হয়। প্রায় তিনবছর বিচার চলার পর শুক্রবার সেই মামলার রায় হয়। এতে তাকে বেকসুর খালাস দেয় আদালত।
সাক্ষাৎকারে সালাহ উদ্দিন জানান, তিনি আবার রাজনীতিতে ফিরে আসবেন। তার ভাষায়, আমি বর্তমানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য। দ্রুত দেশে ফিরতে পারলে ডিসেম্বরের জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিতে পারব।
তিনি তার কক্সবাজার আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার আশা প্রকাশ করেন। নির্বাচনে বিএনপির জয় নিয়ে আশাবাদী কি না প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, জয় নির্ভর করছে নির্বাচনকালীন পরিবেশের উপরে। আমরা জাতীয় ঐক্য গঠন করেছি ও ৭ দফা দাবি উত্থাপন করেছি। এই সরকারকে নির্বাচনের পূর্বে সংসদ ভেঙে দিতে হবে এবং নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করতে হবে। একইসঙ্গে নির্বাচনে ইভিএম বর্জন করতে হবে। তিনি যুক্ত করেন, নির্বাচনের পূর্বেই আমরা বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি চাই। নির্বাচনকে সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ হতে হবে। পাশাপাশি বিচারিক ক্ষমতা দিয়ে সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে হবে। যদি এই শর্তগুলো সরকার মেনে নেয় তাহলে আমরা অবশ্যই নির্বাচনে জয় লাভ করব।
পূর্বের মতো এখনো তিনি সরকারের সমালোচনা চালিয়ে যাবেন কি না এমন প্রশ্নের জবাবে সালাহ উদ্দিন বলেন, আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল একজন নাগরিক। একসময় আমি ম্যাজিস্ট্রেট ছিলাম, আমি জানি বাংলাদেশের আইন কেমন। আমি অবশ্যই শেখ হাসিনার শাসনের বিরুদ্ধে কথা বলব।
Courtesy: Manabzamin Oct 2018
‘পরিবর্তনজটে’ তিতাসের দুর্নীতি অনুসন্ধান!
মোর্শেদ নোমান, ঢাকা
দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের নানা দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান চলছে ঢিমেতালে। বারবার অনুসন্ধান কর্মকর্তা বদলের জটে তেমন অগ্রগতি হচ্ছে না সরকারি সেবা সংস্থাটির শীর্ষ কর্তাদের দুর্নীতির অভিযোগ। তবে দুদক বলছে, অনুসন্ধান এগিয়ে চলছে। অভিযোগের প্রকৃতি ও ব্যাপকতার কারণে কিছু কিছু ক্ষেত্রে সময় বেশি লাগতে পারে।
দুদক সূত্র জানায়, তিতাসের কর্মকর্তাদের দুর্নীতির তিনটি বড় অভিযোগ অনুসন্ধান করছে সংস্থাটি। এসব অভিযোগের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মধ্যে সাবেক এমডি থেকে শুরু করে শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তা ও সিবিএ নেতারা রয়েছেন। দীর্ঘ অনুসন্ধানে কাগজপত্র সংগ্রহ ছাড়া তেমন অগ্রগতি নেই বলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা মনে করছেন।
জানতে চাইলে দুদকের উপপরিচালক (জনসংযোগ) প্রণব কুমার ভট্টাচার্য প্রথম আলোকে বলেন, অনুসন্ধান বা তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তন একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। নানা কারণে কমিশন নানা বিচার–বিশ্লেষণ করেই এ পরিবর্তন করে। অনুসন্ধান বা তদন্তের প্রয়োজনে কর্মকর্তা পরিবর্তন হতে পারে। আবার বদলির কারণেও এটা হয়। তবে তাতে অনুসন্ধানে প্রভাব পড়ে না।
দুদক সূত্র বলছে, শিল্পপ্রতিষ্ঠানে গ্যাসের অবৈধ সংযোগ, সীমার অতিরিক্ত গ্যাস ব্যবহারের সুযোগ দিয়ে ঘুষ গ্রহণসহ বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে তিতাসের গাজীপুর ও টঙ্গী অঞ্চলের শীর্ষ কয়েক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু হয় ২০১৭ সালের অক্টোবর মাসে। অনুসন্ধানের প্রাথমিক পর্যায়ে এর দায়িত্ব ছিল উপপরিচালক আহমারুজ্জামানের। প্রেষণে দুদকে আসা এই কর্মকর্তা কয়েক মাস আগে পদোন্নতি পেয়ে নিজ প্রতিষ্ঠান পুলিশে ফিরে যান। অনুসন্ধান পর্যায়ে অভিযোগ সম্পর্কে প্রাথমিক তথ্য সংগ্রহ করেছিলেন তিনি। নতুন অনুসন্ধানের দায়িত্ব পান দুদকের আরেক উপপরিচালক এ কে এম মাহবুবুর রহমান। তাঁর নেতৃত্বে একটি অনুসন্ধান দল গঠন করা হয়। দলের অন্য দুই সদস্য হলেন উপসহকারী পরিচালক মো. সাইদুজ্জামান ও মোহাম্মদ শাহজাহান মিরাজ। দলটি দায়িত্ব নেওয়ার পর সেপ্টেম্বরে দুই দফায় তিতাসের পাইপলাইন ডিজাইন বিভাগের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী সাব্বের আহমেদ চৌধুরী এবং ইলেকট্রিক্যাল কোরেশন কন্ট্রোল (ইসিসি) বিভাগের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মো. আবু বকর সিদ্দিকুর রহমানকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুই দফায় তলব করেন। কিন্তু তাঁরা হাজির হননি। এরই মধ্যে আবারও অনুসন্ধান কর্মকর্তা পরিবর্তন করে নতুন করে উপপরিচালক মো. মনজুর আলমের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি দল গঠন করা হয়।
পুরোনো ওই অভিযোগের সঙ্গে গাজীপুর, সাভার, ভালুকা ও নারায়ণগঞ্জ অঞ্চলে তিতাসের এমডিসহ পদস্থ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ‘কেজি মেপে ঘুষ লেনদেন’ শিরোনামের আরেকটি প্রতিবেদন যুক্ত করে দেওয়া হয়। গত ২০ সেপ্টেম্বর ‘তিতাসে “কেজি মেপে” ঘুষ লেনদেন’ শিরোনামে প্রথম আলোয় একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনে তিতাসের ঘুষ লেনদেনের একটি চিত্র তুলে ধরা হয়।
ওই প্রতিবেদনে তিতাসের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মীর মশিউর রহমান, পাইপলাইন ডিজাইন বিভাগের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী সাব্বের আহমেদ চৌধুরী, ইলেকট্রিক্যাল কোরেশন কন্ট্রোল (ইসিসি) বিভাগের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মো. আবু বকর সিদ্দিকুর রহমান, গাজীপুরের চলতি দায়িত্বে থাকা মহাব্যবস্থাপক (বর্তমানে জিএম, ভিজিল্যান্স) এস এম আবদুল ওয়াদুদ এবং সাবেক কোম্পানি সচিব ও বর্তমানে সুন্দরবন গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির এমডি মোশতাক আহমেদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির কথা বলা হয়েছে।
অভিযোগে বলা হয়, সাব্বের আহমেদ চৌধুরী গাজীপুর বিক্রয় অঞ্চলে এবং মো. আবু বকর সিদ্দিকুর রহমান টঙ্গী উত্তরের সিস্টেম অপারেশন বিভাগের ব্যবস্থাপক থাকার সময়ে ঘুষ নিয়েছেন প্রধানত স্থাপনা পুনর্বিন্যাস, গ্রাহকদের অবৈধ গ্যাস-সংযোগ, গ্যাসের অবৈধ লোড বৃদ্ধি, অনুমোদন অতিরিক্ত স্থাপনা ব্যবহারের অবৈধ সুযোগ এবং পছন্দসই পদায়নকে কেন্দ্র করে। অভিযোগে খুদে বার্তায় ঘুষের আলাপের বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে। সেখানে খুদে বার্তার রেকর্ড উল্লেখ করে বলা হয়, গাজীপুরে অবস্থিত এএমসি নিট কম্পোজিট নামের একটি প্রতিষ্ঠানের প্রকৌশলী প্রদীপ দাসের কাছ থেকে তিতাস কর্মকর্তা সাব্বের আহমেদ চৌধুরী পরিবার যে ঘুষ নিয়েছে, এর মধ্যে ৫০ লাখ টাকা নেওয়ার একটি ঘটনা ২০১৬ সালের ১৩ অক্টোবরের। ওই দিন সাব্বের-প্রদীপের খুদে বার্তাগুলোয় ৫০ লাখ টাকা বুঝিয়ে দেওয়ার কথোপকথনের রেকর্ড রয়েছে। একইভাবে গাজীপুরের ভিয়েলাটেক্স লিমিটেড নামের প্রতিষ্ঠান থেকেও সাব্বের আহমেদ ও মীর মশিউর রহমানের বিরুদ্ধে ঘুষের বিষয়টি উঠে এসেছে। অনুরূপভাবে মো. আবু বকর সিদ্দিকুর রহমানসহ সবুর, জাহাঙ্গীর, টেপা, নোমান ও কাদেরসহ বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে ঘুষের অভিযোগ রয়েছে।
অন্যদিকে, মিটার টেম্পারিং ও মিটার বাইপাস করে গ্যাস–সংযোগ দিয়ে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের আরও একটি অভিযোগ ২০১৭ সালের এপ্রিল থেকে অনুসন্ধান করছে দুদক। ওই অভিযোগে অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে সাবেক এমডি মীর মসিউর রহমানসহ আটজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করেন অনুসন্ধান কর্মকর্তা ও দুদকের উপপরিচালক মো. ফরিদ আহমেদ পাটোয়ারী। কিন্তু অসুস্থতার কথা জানিয়ে দুদকে হাজির হননি তাঁরা। এরই মধ্যে ৪ অক্টোবর প্রতিষ্ঠানটির পাঁচ কর্মকর্তার বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা চেয়ে ইমিগ্রেশনে চিঠি দেন দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। এর কয়েক দিন পরই অনুসন্ধান কর্মকর্তা পরিবর্তন করে উপপরিচালক গোলাম শাহরিয়ার চৌধুরীকে নতুন দায়িত্ব দেওয়া হয়। জানা গেছে, আগের অনুসন্ধান কর্মকর্তা ফরিদ আহমেদ পাটোয়ারীকে প্রেষণে নদী রক্ষা কমিশনে পাঠানো হয়েছে।
সিবিএ নেতাদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান
তিতাসের সিবিএ সভাপতি ও দুই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে আলাদা আরেকটি অনুসন্ধান করছে দুদক। সংস্থার উপসহকারী পরিচালক মো. সাইদুজ্জামান অনুসন্ধানের দায়িত্ব আছেন।
সিবিএ সভাপতি কাজীম উদ্দিনসহ অন্যদের বিরুদ্ধে অবৈধ গ্যাস–সংযোগ ও মিটার টেম্পারিংসহ বিভিন্ন অনিয়মের মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ এবং অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে।
অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে সিবিএ সভাপতি কাজীম উদ্দিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আয়াজ উদ্দিন, সহকারী ব্যবস্থাপক ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মোহাম্মদ নাসীর উদ্দিন, হিসাব রক্ষক আসাফুদ্দৌল্লাহ টুটুল ও সাভার মিটারিং অ্যান্ড ভিজিল্যান্স শাখার ডেপুটি ম্যানেজার মো. সিরাজুল ইসলামকে সেপ্টেম্বরে জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়।
এ ছাড়া তিতাসের আরও অন্তত এক ডজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে অনুসন্ধান চলমান। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, অনুসন্ধানে দীর্ঘ সময় লাগার কারণে অনেক সময় অভিযোগ–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা অভিযোগের বিষয়গুলোর ওপর প্রভাব বিস্তার করতে পারেন। অনেকে সময় নথিপত্রসহ নানা প্রমাণ গায়েব করার মতো কর্মকাণ্ডেও জড়িয়ে যেতে পারেন। তবে দুদক বলছে, অনুসন্ধানে সময় নেওয়া হয় যথাযথ তথ্য–প্রমাণ জোগাড় করার জন্য। যত দ্রুত প্রয়োজনীয় দলিলপত্র ও প্রমাণ পাওয়া যায়, তত দ্রুতই অনুসন্ধান শেষ হয়।
Courtesy: Prothom Alo Oct 28, 2018
দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের নানা দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান চলছে ঢিমেতালে। বারবার অনুসন্ধান কর্মকর্তা বদলের জটে তেমন অগ্রগতি হচ্ছে না সরকারি সেবা সংস্থাটির শীর্ষ কর্তাদের দুর্নীতির অভিযোগ। তবে দুদক বলছে, অনুসন্ধান এগিয়ে চলছে। অভিযোগের প্রকৃতি ও ব্যাপকতার কারণে কিছু কিছু ক্ষেত্রে সময় বেশি লাগতে পারে।
দুদক সূত্র জানায়, তিতাসের কর্মকর্তাদের দুর্নীতির তিনটি বড় অভিযোগ অনুসন্ধান করছে সংস্থাটি। এসব অভিযোগের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মধ্যে সাবেক এমডি থেকে শুরু করে শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তা ও সিবিএ নেতারা রয়েছেন। দীর্ঘ অনুসন্ধানে কাগজপত্র সংগ্রহ ছাড়া তেমন অগ্রগতি নেই বলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা মনে করছেন।
জানতে চাইলে দুদকের উপপরিচালক (জনসংযোগ) প্রণব কুমার ভট্টাচার্য প্রথম আলোকে বলেন, অনুসন্ধান বা তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তন একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। নানা কারণে কমিশন নানা বিচার–বিশ্লেষণ করেই এ পরিবর্তন করে। অনুসন্ধান বা তদন্তের প্রয়োজনে কর্মকর্তা পরিবর্তন হতে পারে। আবার বদলির কারণেও এটা হয়। তবে তাতে অনুসন্ধানে প্রভাব পড়ে না।
দুদক সূত্র বলছে, শিল্পপ্রতিষ্ঠানে গ্যাসের অবৈধ সংযোগ, সীমার অতিরিক্ত গ্যাস ব্যবহারের সুযোগ দিয়ে ঘুষ গ্রহণসহ বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে তিতাসের গাজীপুর ও টঙ্গী অঞ্চলের শীর্ষ কয়েক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু হয় ২০১৭ সালের অক্টোবর মাসে। অনুসন্ধানের প্রাথমিক পর্যায়ে এর দায়িত্ব ছিল উপপরিচালক আহমারুজ্জামানের। প্রেষণে দুদকে আসা এই কর্মকর্তা কয়েক মাস আগে পদোন্নতি পেয়ে নিজ প্রতিষ্ঠান পুলিশে ফিরে যান। অনুসন্ধান পর্যায়ে অভিযোগ সম্পর্কে প্রাথমিক তথ্য সংগ্রহ করেছিলেন তিনি। নতুন অনুসন্ধানের দায়িত্ব পান দুদকের আরেক উপপরিচালক এ কে এম মাহবুবুর রহমান। তাঁর নেতৃত্বে একটি অনুসন্ধান দল গঠন করা হয়। দলের অন্য দুই সদস্য হলেন উপসহকারী পরিচালক মো. সাইদুজ্জামান ও মোহাম্মদ শাহজাহান মিরাজ। দলটি দায়িত্ব নেওয়ার পর সেপ্টেম্বরে দুই দফায় তিতাসের পাইপলাইন ডিজাইন বিভাগের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী সাব্বের আহমেদ চৌধুরী এবং ইলেকট্রিক্যাল কোরেশন কন্ট্রোল (ইসিসি) বিভাগের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মো. আবু বকর সিদ্দিকুর রহমানকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুই দফায় তলব করেন। কিন্তু তাঁরা হাজির হননি। এরই মধ্যে আবারও অনুসন্ধান কর্মকর্তা পরিবর্তন করে নতুন করে উপপরিচালক মো. মনজুর আলমের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি দল গঠন করা হয়।
পুরোনো ওই অভিযোগের সঙ্গে গাজীপুর, সাভার, ভালুকা ও নারায়ণগঞ্জ অঞ্চলে তিতাসের এমডিসহ পদস্থ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ‘কেজি মেপে ঘুষ লেনদেন’ শিরোনামের আরেকটি প্রতিবেদন যুক্ত করে দেওয়া হয়। গত ২০ সেপ্টেম্বর ‘তিতাসে “কেজি মেপে” ঘুষ লেনদেন’ শিরোনামে প্রথম আলোয় একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনে তিতাসের ঘুষ লেনদেনের একটি চিত্র তুলে ধরা হয়।
ওই প্রতিবেদনে তিতাসের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মীর মশিউর রহমান, পাইপলাইন ডিজাইন বিভাগের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী সাব্বের আহমেদ চৌধুরী, ইলেকট্রিক্যাল কোরেশন কন্ট্রোল (ইসিসি) বিভাগের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মো. আবু বকর সিদ্দিকুর রহমান, গাজীপুরের চলতি দায়িত্বে থাকা মহাব্যবস্থাপক (বর্তমানে জিএম, ভিজিল্যান্স) এস এম আবদুল ওয়াদুদ এবং সাবেক কোম্পানি সচিব ও বর্তমানে সুন্দরবন গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির এমডি মোশতাক আহমেদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির কথা বলা হয়েছে।
অভিযোগে বলা হয়, সাব্বের আহমেদ চৌধুরী গাজীপুর বিক্রয় অঞ্চলে এবং মো. আবু বকর সিদ্দিকুর রহমান টঙ্গী উত্তরের সিস্টেম অপারেশন বিভাগের ব্যবস্থাপক থাকার সময়ে ঘুষ নিয়েছেন প্রধানত স্থাপনা পুনর্বিন্যাস, গ্রাহকদের অবৈধ গ্যাস-সংযোগ, গ্যাসের অবৈধ লোড বৃদ্ধি, অনুমোদন অতিরিক্ত স্থাপনা ব্যবহারের অবৈধ সুযোগ এবং পছন্দসই পদায়নকে কেন্দ্র করে। অভিযোগে খুদে বার্তায় ঘুষের আলাপের বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে। সেখানে খুদে বার্তার রেকর্ড উল্লেখ করে বলা হয়, গাজীপুরে অবস্থিত এএমসি নিট কম্পোজিট নামের একটি প্রতিষ্ঠানের প্রকৌশলী প্রদীপ দাসের কাছ থেকে তিতাস কর্মকর্তা সাব্বের আহমেদ চৌধুরী পরিবার যে ঘুষ নিয়েছে, এর মধ্যে ৫০ লাখ টাকা নেওয়ার একটি ঘটনা ২০১৬ সালের ১৩ অক্টোবরের। ওই দিন সাব্বের-প্রদীপের খুদে বার্তাগুলোয় ৫০ লাখ টাকা বুঝিয়ে দেওয়ার কথোপকথনের রেকর্ড রয়েছে। একইভাবে গাজীপুরের ভিয়েলাটেক্স লিমিটেড নামের প্রতিষ্ঠান থেকেও সাব্বের আহমেদ ও মীর মশিউর রহমানের বিরুদ্ধে ঘুষের বিষয়টি উঠে এসেছে। অনুরূপভাবে মো. আবু বকর সিদ্দিকুর রহমানসহ সবুর, জাহাঙ্গীর, টেপা, নোমান ও কাদেরসহ বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে ঘুষের অভিযোগ রয়েছে।
অন্যদিকে, মিটার টেম্পারিং ও মিটার বাইপাস করে গ্যাস–সংযোগ দিয়ে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের আরও একটি অভিযোগ ২০১৭ সালের এপ্রিল থেকে অনুসন্ধান করছে দুদক। ওই অভিযোগে অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে সাবেক এমডি মীর মসিউর রহমানসহ আটজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করেন অনুসন্ধান কর্মকর্তা ও দুদকের উপপরিচালক মো. ফরিদ আহমেদ পাটোয়ারী। কিন্তু অসুস্থতার কথা জানিয়ে দুদকে হাজির হননি তাঁরা। এরই মধ্যে ৪ অক্টোবর প্রতিষ্ঠানটির পাঁচ কর্মকর্তার বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা চেয়ে ইমিগ্রেশনে চিঠি দেন দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। এর কয়েক দিন পরই অনুসন্ধান কর্মকর্তা পরিবর্তন করে উপপরিচালক গোলাম শাহরিয়ার চৌধুরীকে নতুন দায়িত্ব দেওয়া হয়। জানা গেছে, আগের অনুসন্ধান কর্মকর্তা ফরিদ আহমেদ পাটোয়ারীকে প্রেষণে নদী রক্ষা কমিশনে পাঠানো হয়েছে।
সিবিএ নেতাদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান
তিতাসের সিবিএ সভাপতি ও দুই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে আলাদা আরেকটি অনুসন্ধান করছে দুদক। সংস্থার উপসহকারী পরিচালক মো. সাইদুজ্জামান অনুসন্ধানের দায়িত্ব আছেন।
সিবিএ সভাপতি কাজীম উদ্দিনসহ অন্যদের বিরুদ্ধে অবৈধ গ্যাস–সংযোগ ও মিটার টেম্পারিংসহ বিভিন্ন অনিয়মের মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ এবং অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে।
অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে সিবিএ সভাপতি কাজীম উদ্দিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আয়াজ উদ্দিন, সহকারী ব্যবস্থাপক ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মোহাম্মদ নাসীর উদ্দিন, হিসাব রক্ষক আসাফুদ্দৌল্লাহ টুটুল ও সাভার মিটারিং অ্যান্ড ভিজিল্যান্স শাখার ডেপুটি ম্যানেজার মো. সিরাজুল ইসলামকে সেপ্টেম্বরে জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়।
এ ছাড়া তিতাসের আরও অন্তত এক ডজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে অনুসন্ধান চলমান। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, অনুসন্ধানে দীর্ঘ সময় লাগার কারণে অনেক সময় অভিযোগ–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা অভিযোগের বিষয়গুলোর ওপর প্রভাব বিস্তার করতে পারেন। অনেকে সময় নথিপত্রসহ নানা প্রমাণ গায়েব করার মতো কর্মকাণ্ডেও জড়িয়ে যেতে পারেন। তবে দুদক বলছে, অনুসন্ধানে সময় নেওয়া হয় যথাযথ তথ্য–প্রমাণ জোগাড় করার জন্য। যত দ্রুত প্রয়োজনীয় দলিলপত্র ও প্রমাণ পাওয়া যায়, তত দ্রুতই অনুসন্ধান শেষ হয়।
Courtesy: Prothom Alo Oct 28, 2018
পরিবহন ধর্মঘটে দুর্ভোগে যাত্রীরা
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
সড়ক পরিবহন আইনের কয়েকটি ধারা সংশোধনসহ ৮ দফা দাবিতে আজ রোববার সকাল থেকে সারা দেশে ডাকা ৪৮ ঘণ্টার পরিবহন ধর্মঘটে বিপাকে পড়েছেন যাত্রীরা।
আজ সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবসে গণপরিবহন, বিশেষ করে বাসের অপেক্ষায় রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় হাজারো যাত্রীকে অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। সড়কে থাকা বিআরটিসির স্বল্পসংখ্যক বাস মানুষে ঠাসা। যেসব জায়গায় বাস থামে, সেখানে অপেক্ষায় অনেক মানুষ।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের ডাকে আজ সকাল ছয়টা থেকে এই ধর্মঘট শুরু হয়। চলবে মঙ্গলবার সকাল ছয়টা পর্যন্ত। সড়ক পরিবহন খাতের শ্রমিকদের এই সংগঠনের কার্যকরী সভাপতি নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান। দাবি আদায় না হলে ৩০ অক্টোবর থেকে লাগাতার ধর্মঘটের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন সংগঠনটির নেতারা।
আজ ধর্মঘট শুরুর দিনে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অফিসগামী যাত্রীদের গাড়ির অপেক্ষায় রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। গাড়ি না পেয়ে অনেকেই হেঁটে রওনা দেন গন্তব্যস্থলের উদ্দেশে। কেউ বেশি ভাড়ায় রিকশা অথবা সিএনজিচালিত অটোরিকশায় যাচ্ছেন।
রাজধানীর ফার্মগেট এলাকায় আজ সকাল থেকেই শত শত মানুষকে বাসের জন্য অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। বিআরটিসির দু-একটি বাস আসতেই তাতে উঠতে হুড়োহুড়ি করছেন যাত্রীরা। রাস্তায় অপেক্ষা করতে করতে অনেককেই হাঁটা শুরু করছেন।
মগবাজারে দীর্ঘ সময় ধরে অপেক্ষায় ছিলেন শাপলা জাহান। তিনি কারওয়ান বাজারে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন।
রাজধানীর মহানগর হাউজিং সোসাইটি থেকে কারওয়ান বাজারে যাওয়ার জন্য নওরীন হাসানকে আজ অন্তত এক ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়েছে। নওরীন বলেন, ‘অন্য দিন পাঁচ মিনিটের মধ্যে বাস পেয়ে যাই। আজ বাস পাইনি। এরপর সিএনজির জন্য অন্তত ১৫ মিনিট অপেক্ষা করলাম। কিন্তু তাও নেই। রিকশা পেলাম না। দীর্ঘ অপেক্ষার পর সবজি নিয়ে আসা এক ভ্যানওয়ালাকে অনেক অনুনয়-বিনয় করে অবশেষে তাতে করে কারওয়ান বাজারে আসি।’
মালিবাগ, মৌচাক ও মগবাজারে আজ সকাল থেকে প্রতিদিনের চেনা দৃশ্য নেই। মগবাজারে যেখানে বাসের ভিড় লেগে থাকে, আজ সেখানে বিআরটিসির বাসের দেখা মিলছে বেশ খানিকক্ষণ পরপর। যাত্রীতে ঠাসা সেই বাসে উঠতে প্রাণান্তকর চেষ্টা করতে দেখা গেছে অপেক্ষায় থাকা যাত্রীদের।
রাজধানীর গাবতলী, টেকনিক্যাল, শ্যামলী ও মিরপুর-১-এ শত শত মানুষকে রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে।
Courtesy: Prothom Alo Oct 28, 2018
সড়ক পরিবহন আইনের কয়েকটি ধারা সংশোধনসহ ৮ দফা দাবিতে আজ রোববার সকাল থেকে সারা দেশে ডাকা ৪৮ ঘণ্টার পরিবহন ধর্মঘটে বিপাকে পড়েছেন যাত্রীরা।
আজ সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবসে গণপরিবহন, বিশেষ করে বাসের অপেক্ষায় রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় হাজারো যাত্রীকে অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। সড়কে থাকা বিআরটিসির স্বল্পসংখ্যক বাস মানুষে ঠাসা। যেসব জায়গায় বাস থামে, সেখানে অপেক্ষায় অনেক মানুষ।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের ডাকে আজ সকাল ছয়টা থেকে এই ধর্মঘট শুরু হয়। চলবে মঙ্গলবার সকাল ছয়টা পর্যন্ত। সড়ক পরিবহন খাতের শ্রমিকদের এই সংগঠনের কার্যকরী সভাপতি নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান। দাবি আদায় না হলে ৩০ অক্টোবর থেকে লাগাতার ধর্মঘটের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন সংগঠনটির নেতারা।
আজ ধর্মঘট শুরুর দিনে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অফিসগামী যাত্রীদের গাড়ির অপেক্ষায় রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। গাড়ি না পেয়ে অনেকেই হেঁটে রওনা দেন গন্তব্যস্থলের উদ্দেশে। কেউ বেশি ভাড়ায় রিকশা অথবা সিএনজিচালিত অটোরিকশায় যাচ্ছেন।
রাজধানীর ফার্মগেট এলাকায় আজ সকাল থেকেই শত শত মানুষকে বাসের জন্য অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। বিআরটিসির দু-একটি বাস আসতেই তাতে উঠতে হুড়োহুড়ি করছেন যাত্রীরা। রাস্তায় অপেক্ষা করতে করতে অনেককেই হাঁটা শুরু করছেন।
মগবাজারে দীর্ঘ সময় ধরে অপেক্ষায় ছিলেন শাপলা জাহান। তিনি কারওয়ান বাজারে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন।
রাজধানীর মহানগর হাউজিং সোসাইটি থেকে কারওয়ান বাজারে যাওয়ার জন্য নওরীন হাসানকে আজ অন্তত এক ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়েছে। নওরীন বলেন, ‘অন্য দিন পাঁচ মিনিটের মধ্যে বাস পেয়ে যাই। আজ বাস পাইনি। এরপর সিএনজির জন্য অন্তত ১৫ মিনিট অপেক্ষা করলাম। কিন্তু তাও নেই। রিকশা পেলাম না। দীর্ঘ অপেক্ষার পর সবজি নিয়ে আসা এক ভ্যানওয়ালাকে অনেক অনুনয়-বিনয় করে অবশেষে তাতে করে কারওয়ান বাজারে আসি।’
মালিবাগ, মৌচাক ও মগবাজারে আজ সকাল থেকে প্রতিদিনের চেনা দৃশ্য নেই। মগবাজারে যেখানে বাসের ভিড় লেগে থাকে, আজ সেখানে বিআরটিসির বাসের দেখা মিলছে বেশ খানিকক্ষণ পরপর। যাত্রীতে ঠাসা সেই বাসে উঠতে প্রাণান্তকর চেষ্টা করতে দেখা গেছে অপেক্ষায় থাকা যাত্রীদের।
রাজধানীর গাবতলী, টেকনিক্যাল, শ্যামলী ও মিরপুর-১-এ শত শত মানুষকে রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে।
Courtesy: Prothom Alo Oct 28, 2018
সার্ভিস চার্জের নামে চাঁদাবাজি
ড্রিঞ্জা চাম্বুগং, ঢাকা
সার্ভিস চার্জ না দিলে বিদ্যুৎ-পানির সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে ব্যবসায়ীদের হয়রানি। সমিতি কার্যালয়ে নিয়েও মারধর করা হয়।
উত্তরা বিডিআর বাজারের ব্যবসায়ীদের কাছে দৈনিক ২০০ টাকা করে নেওয়া হয়। সার্ভিস চার্জের নামে বাজারের পাঁচ শতাধিক দোকান থেকে আদায় করা এই টাকার পরিমাণ মাসে ৩০ লাখ ছাড়িয়ে যায়।
ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, বাজারের বৈদ্যুতিক বিল, পানির বিলসহ অন্যান্য পরিষেবা বাবদ মাসে এত টাকা কখনো হয় না। আদায় করা টাকার অধিকাংশই যায় কয়েকজনের পকেটে। সার্ভিস চার্জ না দিলে বিদ্যুৎ-পানির সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে ব্যবসায়ীদের হয়রানি করা হয়। সমিতি কার্যালয়ে নিয়েও মারধর করা হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মে মাস থেকে ‘উত্তরা ৬ নম্বর সেক্টর নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি ক্রেতা-বিক্রেতা বহুমুখী সমবায় সমিতি লিমিটেডের’ রসিদে চাঁদা তোলা শুরু হয়। তবে ব্যবসায়ীদের প্রতিবাদে কয়েক দিনের মধ্যেই কৌশল বদলানো হয়। রসিদ বাদ দিয়ে তখন রেজিস্টার খাতায় টাকা আদায় শুরু হয়।
সার্ভিস চার্জের রসিদ অনুযায়ী, দৈনিক বিদ্যুৎ বিল বাবদ ২৩ টাকা, জেনারেটরের জন্য ২৫, পানির বিল ৭, নিরাপত্তাকর্মীদের বেতন ২৫, পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের বেতন ১০, টয়লেট খরচ ৭, অফিস খরচ ৮, অফিস স্টাফদের বেতন ২৬, বাজার উন্নয়নে ৪০ এবং অন্যান্য খরচ বাবদ ২৯—এই মোট ২০০ টাকা দিতে হয়।
ব্যবসায়ীদের দাবি, সার্ভিস চার্জের নামে যে পরিমাণ টাকা তোলা হয়, এর অর্ধেকও খরচ হয় না। অধিকাংশ টাকা যায় সমিতির নেতাদের পকেটে।
একটি লাইন থেকে পুরো বাজারে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেডের (ডেসকো) হিসাবে দেখা যায়, বহুমুখী সমবায় সমিতির ৬৬৩১১০০০০০০১-নম্বর মিটারে জুনে ১ লাখ ৪৫ হাজার ৫০০ টাকা, জুলাইতে ১ লাখ ৯৩ হাজার বিল হয়েছে। চলতি অক্টোবরের প্রথম ১১ দিনে ৬৫ হাজার টাকার মতো বিল হয়েছে। ওই মিটারে প্রতি মাসে গড়ে পৌনে দুই লাখ টাকার বেশি বিল হয় না বলেও ডেসকোর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। কিন্তু বিদ্যুৎ বিল বাবদ দৈনিক ২৩ টাকা করে পাঁচ শতাধিক দোকান থেকে মাসে প্রায় সাড়ে তিন লাখ টাকা তোলা হয়। অর্থাৎ মাসে যে পরিমাণ বিল হয়, এর দ্বিগুণ টাকা তোলা হয় বিদ্যুৎ বিল বাবদ।
বাজারটিতে ওয়াসার দুটি পানি সংযোগ আছে। দুই সংযোগেরই গ্রাহক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. আনোয়ার হোসেন। দুই সংযোগে জুলাইতে ৬৯ হাজার ৮১২ টাকা, আগস্টে ৫৬ হাজার ৮০ এবং সেপ্টেম্বরে ৪৪ হাজার ৫০৭ টাকা বিল হয়েছে। অথচ দৈনিক ৭ টাকা বাবদ এক মাসে ব্যবসায়ীদের কাছে এক লাখ টাকার বেশি আদায় করা হয় পানির বিল বাবদ।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, ২০০৭ সালে তৎকালীন বিডিআরের পরিচালনায় এই বাজার তৈরি করা হয়। সেই থেকে এটি বিডিআর বাজার নামেই পরিচিত। তবে এখন এটি সমিতির মাধ্যমে পরিচালনা করা হয়। গেল মে মাসের আগে সমিতির সার্ভিস চার্জ ছিল দৈনিক ১০ টাকা। আর প্রতিটি দোকানে সাব-মিটার আছে। সে অনুযায়ী বিদ্যুতের বিল দিতে হতো। ব্যবসার ধরনভেদ তখন ৩০০-৯০০ টাকা বিদ্যুৎ বিল আসত। এতে একজন ব্যবসায়ীর সার্ভিস চার্জ, বিদ্যুতের বিলসহ মাসে সর্বোচ্চ ১ হাজার ২০০ টাকার মতো লাগত। এখন এই খরচ পাঁচ-ছয় গুণ বেড়ে গেছে।
সবজি ব্যবসায়ী আবুল হাসেম বলেন, দৈনিক ১০ টাকায় তাঁরা আগে নিরাপত্তা, পরিচ্ছন্নতা, পানি, জেনারেটরসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় সেবা পেতেন। তিনি বলেন, আগে মিটার অনুযায়ী মাসে ৩০০-৪০০ টাকা বিদ্যুৎ বিল আসত। সার্ভিস চার্জ, বিদ্যুৎ বিল ও অন্যান্য খরচ মিলিয়ে মাসে সর্বোচ্চ ৭০০ টাকা আসত। এখন ছোট-বড় সব ব্যবসায়ীরই মাসে ছয় হাজার টাকা দিতে হচ্ছে।
ব্যবসায়ী মো. আলী রাজ বলেন, সাধারণ ব্যবসায়ীদের জিম্মি করে সার্ভিস চার্জের নামে জোর করে চাঁদা আদায় করা হচ্ছে। বিদ্যুৎ ও পানির সংযোগ, নিরাপত্তা প্রহরী, পরিচ্ছন্নতাকর্মী—সব সমিতির নামে, তাই চাঁদা না দিয়ে উপায় নেই। তিনি বলেন, সমিতির নেতা আনোয়ার হোসেন, খালেক সরকার, আলী মাস্টার, নূর আলম, ইলিয়াস, জাহাঙ্গীর ও আকতাররা সমিতির নামে এই চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত।
যোগাযোগ করা হলে সমিতির সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বলেন, ব্যবসায়ীদের মতেই সার্ভিস চার্জ দৈনিক ২০০ টাকা করা হয়েছিল। সব খরচ এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত। উদ্দেশ্য ছিল দোকানঘর সংস্কার। তবে ব্যবসায়ীদের আপত্তিতে তিন দিনের মধ্যে সার্ভিস চার্জ নেওয়া বন্ধ করা হয়। ব্যবসায়ীদের কাছে এখন কোনো টাকা নেওয়া হয় না। রেজিস্টার খাতায় লিখে চাঁদা আদায়ের বিষয়টি মিথ্যা বলে তিনি দাবি করেন।
তবে সমিতির যুগ্ম সম্পাদক খালেক সরকারের দেখানো রসিদে অক্টোবরের ১০ তারিখে মাছ-মুরগির দোকান থেকে জেনারেটর ও পানি বাবদ ২০ টাকা, কাঁচাবাজার থেকে পানি বাবদ ২০ টাকা আর মুদিবাজার থেকে জেনারেটর বাবদ ৪০ টাকা করে দৈনিক ওঠানোর প্রমাণ পাওয়া গেছে। এসব বিষয়ে তাঁকে প্রশ্ন করা হলে খালেক সরকার বলেন, এটা চাঁদাবাজি নয়।
Courtesy: Prothom Alo Oct 27, 2018
সার্ভিস চার্জ না দিলে বিদ্যুৎ-পানির সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে ব্যবসায়ীদের হয়রানি। সমিতি কার্যালয়ে নিয়েও মারধর করা হয়।
উত্তরা বিডিআর বাজারের ব্যবসায়ীদের কাছে দৈনিক ২০০ টাকা করে নেওয়া হয়। সার্ভিস চার্জের নামে বাজারের পাঁচ শতাধিক দোকান থেকে আদায় করা এই টাকার পরিমাণ মাসে ৩০ লাখ ছাড়িয়ে যায়।
ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, বাজারের বৈদ্যুতিক বিল, পানির বিলসহ অন্যান্য পরিষেবা বাবদ মাসে এত টাকা কখনো হয় না। আদায় করা টাকার অধিকাংশই যায় কয়েকজনের পকেটে। সার্ভিস চার্জ না দিলে বিদ্যুৎ-পানির সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে ব্যবসায়ীদের হয়রানি করা হয়। সমিতি কার্যালয়ে নিয়েও মারধর করা হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মে মাস থেকে ‘উত্তরা ৬ নম্বর সেক্টর নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি ক্রেতা-বিক্রেতা বহুমুখী সমবায় সমিতি লিমিটেডের’ রসিদে চাঁদা তোলা শুরু হয়। তবে ব্যবসায়ীদের প্রতিবাদে কয়েক দিনের মধ্যেই কৌশল বদলানো হয়। রসিদ বাদ দিয়ে তখন রেজিস্টার খাতায় টাকা আদায় শুরু হয়।
সার্ভিস চার্জের রসিদ অনুযায়ী, দৈনিক বিদ্যুৎ বিল বাবদ ২৩ টাকা, জেনারেটরের জন্য ২৫, পানির বিল ৭, নিরাপত্তাকর্মীদের বেতন ২৫, পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের বেতন ১০, টয়লেট খরচ ৭, অফিস খরচ ৮, অফিস স্টাফদের বেতন ২৬, বাজার উন্নয়নে ৪০ এবং অন্যান্য খরচ বাবদ ২৯—এই মোট ২০০ টাকা দিতে হয়।
ব্যবসায়ীদের দাবি, সার্ভিস চার্জের নামে যে পরিমাণ টাকা তোলা হয়, এর অর্ধেকও খরচ হয় না। অধিকাংশ টাকা যায় সমিতির নেতাদের পকেটে।
একটি লাইন থেকে পুরো বাজারে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেডের (ডেসকো) হিসাবে দেখা যায়, বহুমুখী সমবায় সমিতির ৬৬৩১১০০০০০০১-নম্বর মিটারে জুনে ১ লাখ ৪৫ হাজার ৫০০ টাকা, জুলাইতে ১ লাখ ৯৩ হাজার বিল হয়েছে। চলতি অক্টোবরের প্রথম ১১ দিনে ৬৫ হাজার টাকার মতো বিল হয়েছে। ওই মিটারে প্রতি মাসে গড়ে পৌনে দুই লাখ টাকার বেশি বিল হয় না বলেও ডেসকোর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। কিন্তু বিদ্যুৎ বিল বাবদ দৈনিক ২৩ টাকা করে পাঁচ শতাধিক দোকান থেকে মাসে প্রায় সাড়ে তিন লাখ টাকা তোলা হয়। অর্থাৎ মাসে যে পরিমাণ বিল হয়, এর দ্বিগুণ টাকা তোলা হয় বিদ্যুৎ বিল বাবদ।
বাজারটিতে ওয়াসার দুটি পানি সংযোগ আছে। দুই সংযোগেরই গ্রাহক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. আনোয়ার হোসেন। দুই সংযোগে জুলাইতে ৬৯ হাজার ৮১২ টাকা, আগস্টে ৫৬ হাজার ৮০ এবং সেপ্টেম্বরে ৪৪ হাজার ৫০৭ টাকা বিল হয়েছে। অথচ দৈনিক ৭ টাকা বাবদ এক মাসে ব্যবসায়ীদের কাছে এক লাখ টাকার বেশি আদায় করা হয় পানির বিল বাবদ।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, ২০০৭ সালে তৎকালীন বিডিআরের পরিচালনায় এই বাজার তৈরি করা হয়। সেই থেকে এটি বিডিআর বাজার নামেই পরিচিত। তবে এখন এটি সমিতির মাধ্যমে পরিচালনা করা হয়। গেল মে মাসের আগে সমিতির সার্ভিস চার্জ ছিল দৈনিক ১০ টাকা। আর প্রতিটি দোকানে সাব-মিটার আছে। সে অনুযায়ী বিদ্যুতের বিল দিতে হতো। ব্যবসার ধরনভেদ তখন ৩০০-৯০০ টাকা বিদ্যুৎ বিল আসত। এতে একজন ব্যবসায়ীর সার্ভিস চার্জ, বিদ্যুতের বিলসহ মাসে সর্বোচ্চ ১ হাজার ২০০ টাকার মতো লাগত। এখন এই খরচ পাঁচ-ছয় গুণ বেড়ে গেছে।
সবজি ব্যবসায়ী আবুল হাসেম বলেন, দৈনিক ১০ টাকায় তাঁরা আগে নিরাপত্তা, পরিচ্ছন্নতা, পানি, জেনারেটরসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় সেবা পেতেন। তিনি বলেন, আগে মিটার অনুযায়ী মাসে ৩০০-৪০০ টাকা বিদ্যুৎ বিল আসত। সার্ভিস চার্জ, বিদ্যুৎ বিল ও অন্যান্য খরচ মিলিয়ে মাসে সর্বোচ্চ ৭০০ টাকা আসত। এখন ছোট-বড় সব ব্যবসায়ীরই মাসে ছয় হাজার টাকা দিতে হচ্ছে।
ব্যবসায়ী মো. আলী রাজ বলেন, সাধারণ ব্যবসায়ীদের জিম্মি করে সার্ভিস চার্জের নামে জোর করে চাঁদা আদায় করা হচ্ছে। বিদ্যুৎ ও পানির সংযোগ, নিরাপত্তা প্রহরী, পরিচ্ছন্নতাকর্মী—সব সমিতির নামে, তাই চাঁদা না দিয়ে উপায় নেই। তিনি বলেন, সমিতির নেতা আনোয়ার হোসেন, খালেক সরকার, আলী মাস্টার, নূর আলম, ইলিয়াস, জাহাঙ্গীর ও আকতাররা সমিতির নামে এই চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত।
যোগাযোগ করা হলে সমিতির সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বলেন, ব্যবসায়ীদের মতেই সার্ভিস চার্জ দৈনিক ২০০ টাকা করা হয়েছিল। সব খরচ এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত। উদ্দেশ্য ছিল দোকানঘর সংস্কার। তবে ব্যবসায়ীদের আপত্তিতে তিন দিনের মধ্যে সার্ভিস চার্জ নেওয়া বন্ধ করা হয়। ব্যবসায়ীদের কাছে এখন কোনো টাকা নেওয়া হয় না। রেজিস্টার খাতায় লিখে চাঁদা আদায়ের বিষয়টি মিথ্যা বলে তিনি দাবি করেন।
তবে সমিতির যুগ্ম সম্পাদক খালেক সরকারের দেখানো রসিদে অক্টোবরের ১০ তারিখে মাছ-মুরগির দোকান থেকে জেনারেটর ও পানি বাবদ ২০ টাকা, কাঁচাবাজার থেকে পানি বাবদ ২০ টাকা আর মুদিবাজার থেকে জেনারেটর বাবদ ৪০ টাকা করে দৈনিক ওঠানোর প্রমাণ পাওয়া গেছে। এসব বিষয়ে তাঁকে প্রশ্ন করা হলে খালেক সরকার বলেন, এটা চাঁদাবাজি নয়।
Courtesy: Prothom Alo Oct 27, 2018
Thursday, October 25, 2018
নির্বাচনের আগে প্রকল্প পাসের হিড়িক : ব্যয়ের জবাবদিহিতাও নিশ্চিত হোক
সম্পাদকীয়
নির্বাচনের আগে প্রকল্প পাসের হিড়িক পড়ে যাওয়ার ঘটনা বাংলাদেশে নতুন নয়। কিন্তু সব রেকর্ড ভেঙে এবার দেড় মাসে ১ লাখ কোটি টাকার বেশি মূল্যমানের প্রকল্প পাস করেছে সরকার। বেশির ভাগ প্রকল্পই ভোটারদের খুশি করার নির্বাচনী প্রকল্প বলে অভিযোগ মিলছে। মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলো তেমন যাচাই-বাছাই না করেই প্রকল্প পাঠাচ্ছে পরিকল্পনা কমিশনে। আর পরিকল্পনা কমিশনও অতিরিক্ত চাপে যথাযথ যাচাই না করেই জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় পাঠাচ্ছে। এতে করে প্রকল্পের মান রক্ষা ও বেশি ব্যয়ের আশঙ্কা বাড়ছে। এছাড়া অনেক প্রকল্পের ব্যয় বাড়ানো হচ্ছে, যা কতটা যৌক্তিক তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা একে ভোটার আকর্ষণে সরকারের কৌশল হিসেবেই দেখছেন। এতে অর্থের অপচয়সহ দুর্নীতি বেড়ে ওঠার আশঙ্কাও রয়েছে। অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, নির্বাচনের সময় দ্রুত প্রকল্প পাস করতে গিয়ে মানহীন ও অগুরুত্বপূর্ণ অনেক প্রকল্প গ্রহণ করা হয়, যা পরবর্তী সময়ে আর বাস্তবায়ন হয় না, শুধু অর্থের অপচয় হয়। ভোটার আকর্ষণে এমন প্রবণতা দেশের অর্থনীতির জন্য তো বটে, জনগণ ও রাষ্ট্রের জন্য ক্ষতিকর। দেশে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড অব্যাহত রাখা প্রয়োজন, এতে কোনো সন্দেহ নেই। তবে এক্ষেত্রে প্রশ্ন হলো, নতুন অনুমোদন পাওয়া প্রকল্পগুলোর সঙ্গে দলীয় রাজনীতির অনৈতিক স্বার্থসংশ্লিষ্টতা রয়েছে কিনা। যদি দলীয় সংশ্লিষ্টতা থাকে, সেক্ষেত্রে প্রকল্পের সুষ্ঠু বাস্তবায়ন নিয়ে সংশয় থেকে যায়। ঠিকমতো বিচার-বিশ্লেষণ করে প্রকল্প অনুমোদন দেয়া না হলে এর সঠিক মান নিশ্চিত করা সম্ভব হয় না। এতে অপচয় হয় সরকারি অর্থের। অতীতে এমন ঘটনা বহুবার ঘটেছে। কাজেই প্রকল্প অনুমোদন দেয়াই যথেষ্ট নয়, তার যথাযথ মান নিশ্চিত করা এবং নির্দিষ্ট সময় ও স্বল্প ব্যয়ে সম্পন্ন করাই বড় বিষয়।
বাংলাদেশে প্রকল্প বাস্তবায়ন বলতে টাকা ছাড়করণকে বোঝানো হয়। বাস্তবতা হলো টাকা ছাড়করণ নয়, প্রকল্পের মান ঠিক রেখে যথাসময়ে প্রকল্প শেষ করাই হলো বাস্তবায়ন। সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, প্রতি বছর বাস্তবায়নকারী সংস্থাগুলোর অদক্ষতার কারণে এডিপি কাটছাঁট করা হয়। বাস্তবায়ন কম হওয়ার ফলে বৈদেশিক সাহায্যের ছাড়ও কমে যাচ্ছে। এ বাস্তবতায় এডিপির অর্থায়নে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের নেয়া প্রকল্পগুলোয় মাঠপর্যায়ে নিয়মিত নজরদারি প্রয়োজন। দরকার অর্থনৈতিক দিক দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প বাস্তবায়নে অধিক মনোযোগ দেয়া। দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক উন্নয়নের লক্ষ্যে এডিপির যথাযথ বাস্তবায়ন অপরিহার্য। অর্থনৈতিক অগ্রগতি অনেকাংশে এডিপি বাস্তবায়নের ওপর নির্ভরশীল। বেসরকারি খাতকে সহযোগিতা করতে এটি সরকারের বিনিয়োগ। তাছাড়া আমাদের অবকাঠামোগত দুর্বলতা চরম। রাজনৈতিক অস্থিরতা আর দুর্বল অবকাঠামোর জন্য আমরা কাঙ্ক্ষিত বিনিয়োগ আকর্ষণে ব্যর্থ হচ্ছি।
প্রতিটি প্রকল্পের শুরুতে যে ব্যয় দেখানো হয়, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তা বেড়ে যায়। অনেক প্রকল্পই অনুমোদনের ক্ষেত্রে তড়িঘড়ি করা হয়েছে। এছাড়া কঠিন শর্তের ঋণ নিয়েও বড় বড় প্রকল্প নেয়া হচ্ছে। আমরা এখন ক্রমেই ঝুঁকিপূর্ণ ঋণের দিকে যাচ্ছি। নিয়মানুসারে প্রকল্পে মোট বরাদ্দের ক্ষেত্রে সরকারের নিজস্ব অর্থায়ন, বৈদেশিক সহায়তা ও সংস্থার অর্থায়ন থেকে বরাদ্দ দেয়া হয়। সব প্রকল্পেই বিদেশী সহায়তা পাওয়া যায় না। তখন দেশীয় অর্থায়ন থেকে এসব ব্যয় মেটানো হয়। বস্তুত ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করতে হলে সরকারি বিনিয়োগ পরিকল্পনার যথাযথ বাস্তবায়ন একান্ত দরকার। এক্ষেত্রে সার্বিকভাবে সফলতা অর্জনের জন্য দরকার দক্ষতা বৃদ্ধি, সঠিক প্রকল্প নির্বাচন, সুব্যবস্থাপনা, আন্তঃমন্ত্রণালয় সমন্বয় এবং আমলাতান্ত্রিক জটিলতার অবসান। এটি ছাড়া পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন ব্যবস্থাপনা আধুনিকায়ন করতে হবে। সবাইকে স্বতঃপ্রণোদিতভাবে কাজ করতে হবে। এমন প্রকল্প নির্বাচন করতে হবে, যাতে কর্মসংস্থান বাড়ে ও জিডিপি প্রবৃদ্ধির সহায়ক হয়। পাশাপাশি দারিদ্র্য ও বৈষম্য হ্রাস পায়। একই সঙ্গে প্রকল্পগুলো পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়াও বাঞ্ছনীয়।
- কার্টসিঃ বনিক বার্তা/ ২৫ অক্টোবর ২০১৮
Subscribe to:
Posts (Atom)