Search

Monday, October 29, 2018

সংলাপ চেয়ে প্রধানমন্ত্রীকে ঐক্যফ্রন্টের চিঠি

স্টাফ রিপোর্টার

আগামী জাতীয় নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক ও শান্তিপূর্ণ করার লক্ষ্যে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগকে সংলাপে বসার আহ্বান জানিয়েছে  জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে দেয়া চিঠিতে এ আহ্বান জানানো হয়েছে।




প্রধানমন্ত্রীকে দেয়া চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন গণফোরাম সভাপতি ও ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদককে দেয়া চিঠিতে স্বাক্ষর করেন গণফোরাম সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টু। গতকাল সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে চিঠি দুটি পৌঁছে দেন ঐক্যফ্রন্টের নেতা জগলুল হায়দার আফ্রিক ও আ ও ম শফিক উল্লাহ। আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ চিঠি গ্রহণ করেন।
প্রধানমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে ড. কামাল বলেন, ইতিবাচক রাজনীতি একটা জাতিকে কিভাবে ঐক্যবদ্ধ করে জনগণের ন্যায়সঙ্গত অধিকারসমূহ আদায়ের মূল শক্তিতে পরিণত করে তা বঙ্গবন্ধু আমাদের শিখিয়েছেন। নেতিবাচক রুগ্ন রাজনীতি কিভাবে আমাদের জাতিকে বিভক্ত ও মহাসংকটের মধ্যে ফেলে দিয়েছে তাও আমাদের অজানা নয়।
 
এ সংকট থেকে উত্তরণ ঘটানো আমাদের জাতীয় চ্যালেঞ্জ। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ৭ দফা দাবি ও ১১ দফা লক্ষ্য ঘোষণা করেছে। একটি শান্তিপূর্ণ ও সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে সকলের অংশগ্রহণ ও প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট আওয়ামী লীগের সঙ্গে একটি অর্থবহ সংলাপের তাগিদ অনুভব করছে। সেই লক্ষ্যে আপনার কার্যকর উদ্যোগ প্রত্যাশা করছি।


চিঠিতে আরো বলা হয়- জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে এক দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রাম এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে ত্রিশ লাখ শহীদের আত্মত্যাগ ও দুই লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে আমাদের স্বাধীনতা। যে সকল মহান আদর্শ ও মূল্যবোধ আমাদের জনগণকে জাতীয় মুক্তি সংগ্রামে উজ্জীবিত  ও আত্মত্যাগে উদ্বুদ্ধ করেছিল তার অন্যতম হচ্ছে গণতন্ত্র। গণতন্ত্রের প্রথম শর্তই হচ্ছে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠান। জনগণের ভোটে নির্বাচিত প্রতিনিধিগণ জনগণের পক্ষে জনগণের ক্ষমতা প্রয়োগ করবে এবং জনগণকে শোষণ থেকে মুক্তির লক্ষ্যে রাষ্ট্রের আইন প্রণয়ন ও শাসনকার্য পরিচালনা করবে এটাই আমাদের সাংবিধানিক অঙ্গীকার।


চিঠিতে আরো বলা হয়, আপনি নিশ্চয়ই একমত হবেন যে, বাংলাদেশের জনগণ নির্বাচনকে একটি মহোৎসব মনে করে। এক ব্যক্তির এক ভোট এর বিধান জনগণের জন্য বঙ্গবন্ধুই নিশ্চিত করেছেন। যা রক্ষা করা আমাদের সকলেরেই সাংবিধানিক দায়িত্ব। চিঠিতে প্রধানমন্ত্রীর দীর্ঘায়ু কামনা করে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ৭ দফা দাবি ও ১১ দফা লক্ষ্য সংযুক্ত করা হয়।


চিঠি পৌঁছে দিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের দুই প্রতিনিধি। জগলুল হায়দার আফ্রিক বলেন, আমরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বরাবর দুটি চিঠি পৌঁছে দিয়েছি। এর একটিতে ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেন স্বাক্ষর করেছেন। অপরটিতে স্বাক্ষর করেছেন মোস্তফা মহসিন মন্টু। এতে ঐক্যফ্রন্ট ঘোষিত সাত দফা দাবি ও ১১ দফা লক্ষ্যের সামনে রেখে আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংলাপের আহ্বান জানানো হয়েছে। 


আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ বলেন, আমরা দুটি চিঠি পেয়েছি। কিন্তু এখনো খুলে দেখা হয়নি। চিঠিতে কী লেখা আছে জানি না। আমাদের দলের সাধারণ সম্পাদক রাতে অফিসে আসবেন। তিনি চিঠি পড়ে সোমবার আওয়ামী লীগ সভাপতির সঙ্গে আলাপ করে চিঠির বিষয়বস্তুর বিষয়ে আপনাদের জানাবেন।


উল্লেখ্য, সাত দফা দাবি ও ১১ দফা লক্ষ্য সামনে রেখে বিএনপির সঙ্গে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠন করেছে গণফোরাম, জেএসডি ও নাগরিক ঐক্য। এ জোটের কর্মসূচিতে জামায়াত ছাড়া ২০ দলের অন্য শরিক দলের নেতারাও অংশ নিচ্ছেন। সাত দফা দাবি আদায়ে সিলেট ও চট্টগ্রামে সমাবেশ করেছে ঐক্যফ্রন্ট। সামনে রাজশাহীতে সমাবেশের পরিকল্পনা রয়েছে। যদিও আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ঐক্যফ্রন্টের সাত দফা দাবি মানা সম্ভব নয় বলে জানিয়ে দিয়েছেন। আওয়ামী লীগ নেতারা সাত দফা দাবিকে নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র বলে সমালোচনা করে আসছেন।
 
Courtesy: Manabziban Oct 29, 2018

মন্ত্রীর সংগঠনের ধর্মঘটে জিম্মি দেশ




স্টাফ রিপোর্টার

গণপরিবহন চলাচল বন্ধ। সিএনজি অটোরিকশা, ব্যক্তিগত গাড়ি চলাচলেও শ্রমিকদের বাধা। জরুরি প্রয়োজনে গাড়ি নিয়ে যারাই রাস্তায় নেমেছে মারমুখী শ্রমিকদের আক্রমণের শিকার হতে হয়েছে। হয় গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে না হয় চালকের মুখে লাগিয়ে দেয়া   হয়েছে পোড়া মবিল। পরিবহন শ্রমিকদের নগ্ন হেনস্তা থেকে বাদ যায়নি স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরাও। রোগীবহনকারী অ্যাম্বুলেন্সে মবিল মাখিয়েছে তারা। গতকাল সকাল থেকে দিনভর সারা দেশে ছিল অরাজক অবস্থা। সড়ক পরিবহন আইন বাতিলের দাবিতে পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের ডাকে সকাল থেকে শুরু হয় ৪৮ ঘণ্টার ধর্মঘট।




শ্রমিক ফেডারেশনের ডাকে ধর্মঘট হলেও ব্যক্তিগত গাড়ি, রপ্তানিসহ বিভিন্ন জরুরি সেবার যানবাহন আটকে দেয়ার ঘটনা ঘটেছে পথে পথে। ধর্মঘটে অচল ছিল পুরো দেশ। লাখ লাখ মানুষকে জিম্মি করে দাবি আদায়ের নামে এই ধর্মঘট ডাকে নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খানের সংগঠন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন। মন্ত্রী এ সংগঠনের কার্যকরী সভাপতি। পুরো দেশকে জিম্মি করে ধর্মঘট ডাকার বিষয়ে কোনো কথা বলেননি শাজাহান খান। এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে তিনি কথা বলতে রাজি হননি। এদিকে ফেডারেশনের পক্ষ থেকে রাতে ধর্মঘট চালিয়ে যাওয়ার কথা বলা হয়। যদিও আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জানিয়েছেন এই মুহূর্তে আইন পরিবর্তন সম্ভব নয়।


৮ দফা দাবিতে ধর্মঘট চলাকালে সকাল  থেকে সরকারি মালিকানাধীন বিআরটিসি’র কিছু সংখ্যক বাস ছাড়া কোনো গণপরিবহন রাস্তায় দেখা যায়নি। তবে বিভিন্ন রুটে ব্যক্তিগত গাড়ি, ভাড়ায় চালিত সিএনজি অটোরিকশা ও মোটরসাইকেল চলাচল করতে দেখা গেলেও চালকরা দাবি করেন পথে পথে পরিবহন শ্রমিকরা তাদের হেনস্তা করেন। সকালে মহাখালী বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে দেখা গেছে, নাবিস্কো থেকে মহাখালী মোড় পর্যন্ত রাস্তার দুই পাশে বাসের সারি। পার্ক করে রাখা হয়েছে এসব গণপরিবহন। রাস্তায়, চায়ের দোকানে আড্ডা দিচ্ছেন শ্রমিকরা। যাত্রীরা আসছেন, হতাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছেন। তাদেরই একজন বিলকিস বেগম। দ্বিগুণ টাকায় সিএনজি অটোরিকশা ভাড়া করে কেরানীগঞ্জের কালীগঞ্জ থেকে মহাখালী পৌঁছেন। সঙ্গে দুই শিশু সন্তান।


উদ্দেশ্য গ্রামের বাড়ি কিশোরগঞ্জের বীরগঞ্জে যাবেন। শাশুড়ি অসুস্থ। এতটা পথ গাড়ি ভাড়া করে যাওয়া তার পক্ষে অসম্ভব। বিলকিস বলেন, ‘গরিব মানুষ। বিপদে পড়ে গেছি। এখন কেমনে কি করি। গাড়ি তো ছাড়বে না।’ কথা বলছিলেন আর অসহায় দৃষ্টিতে তাকাচ্ছিলেন তিনি। তারপর সিএনজি অটোরিকশাতে করেই ফিরে যান তিনি। রিকশা থেকে নেমে দ্রুত এনা পরিবহনের কাউন্টারে ছুটে যান শরণ। বাসের কাউন্টার বন্ধ। ফোনে কল দিলেও রিসিভ করছে না কেউ। শরণ সোমবারে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে চট্টগ্রামে যাবেন। টিকিট কেটে রেখেছিলেন বেশ আগেই।


শনিবার যখন জানতে পারলেন শ্রমিকরা ধর্মঘট ডেকেছে ঠিক তখনই ওই পরিবহন সার্ভিসের ফোন নম্বরে যোগাযোগ করেন। শরণ জানান, কর্তৃপক্ষ তাকে জানিয়েছেন, টিকিট বাতিল করা হয়নি। তাই গাড়ি ছাড়তে পারে। তাদের কথায় আশ্বস্ত হয়েই গতকাল ফার্মগেট থেকে দুপুরে মহাখালী ছুটে যান তিনি। এখন কি করবেন জানতে চাইলে শরণ বলেন, কি করবো বুঝতে পারছি না। ট্রেনে দাঁড়িয়ে যাওয়া যায় কিনা চেষ্টা করবো। এ ছাড়া উপায় নেই। পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবো কিনা বুঝতে পারছি না। কথা বলার সময় তার চোখ ছলছল করছিলো। ধর্মঘট জানার পরও বাসস্ট্যান্ডে গিয়েছিলেন নিকেতনের লুৎফর রহমান। তিনিসহ বেশ কয়েক জন যাবেন টাঙ্গাইলের দেলদুয়ারে। সোমবারে তার চাচাতো ভাইয়ের বিয়ে। চাচাতো ভাইয়ের অভিভাবক বলতে লুৎফর রহমান। না গিয়ে উপায় নেই। পরিবহন শ্রমিকদের কাছে বারবার জানতে চাচ্ছিলেন, গাড়ি কখন ছাড়বে, ধর্মঘট কী আজ শেষ হবে না? লুৎফরসহ বিভিন্ন যাত্রীদের এরকম নানা প্রশ্নে বিরক্ত হচ্ছিলেন শ্রমিকরা।


বাসস্ট্যান্ড ঘুরে দেখা গেছে, শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে বসে আড্ডা দিচ্ছেন শ্রমিকরা। কেউ কেউ অলস সময় কাটাচ্ছিলেন চায়ের দোকানে। বাসস্ট্যান্ডে ফাঁকা জায়গায় দাঁড়িয়ে গল্প করছিলেন। সাংবাদিক পরিচয় জানতে পেরে ভিড় করেন তারা। শ্রমিকরা বলেন, আমরা শ্রমিক। জরিমানা দেব, জেল খাটবো। এটা হবে না। এসব আইন মানি না। শ্রমিকদের মধ্যে ঢাকা-টাঙ্গাইল রুটের ইমাম পরিবহনের সুপারভাইজার শামীম শেখ বলেন, দেশের মানুষ কী সব শিক্ষিত হয়ে গেছে, যে অষ্টম শ্রেণি পাস ছাড়া গাড়ি চালানো যাবে না। আমরা গরিব মানুষ। লেখাপড়া করতে পারিনি। ভাতা জুটে না ঠিকমতো, লেখাপড়া করবো কীভাবে? এখন যদি গাড়ি চালাতে অষ্টম শ্রেণি পাস হতে হয় তাহলে না খেয়ে মরতে হবে আমাদের। পাঁচ বছরের জেল-জরিমানা থাকলে কেউ গাড়ি চালাবে না।
এই আইন পরিবর্তন করতে হবে বলে দাবি করেন এই শ্রমিক। মহাখালী, বিজয় সরণি, ফার্মগেট, শাহবাগ এলাকা ঘুরে দেখা গেছে কোথাও কোনো গণপরিবহন নেই। বৃদ্ধা মাকে ভ্যানে করে নিয়ে যাচ্ছিলেন এক তরুণী। বাংলামোটর এলাকায় কথা হয় তার সঙ্গে। তিনি জানান, তালতলায় দীর্ঘসময় দাঁড়িয়ে কোনো গাড়ি পাননি। মা অসুস্থ। তাকে ঢাকা মেডিকেলে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানোর কথা। এতদূরে রিকশায় যাওয়া সম্ভব না। তাই বাধ্য হয়েই ভ্যানে উঠেন। তবে অনেককেই দেখা গেছে, পায়ে হেঁটে গন্তব্যে পৌঁছাতে। রাজধানীর রাস্তাগুলো ছিল ফাঁকা। প্রাইভেট কার, মোটরসাইকেল ও রিকশা-অটোরিকশা ছাড়া কোনো গণপরিবহনের দেখা মিলেনি। সকাল থেকেই যাত্রাবাড়ী মোড়ে অবস্থান নেন ওই এলাকার পরিবহন শ্রমিকরা।


সেখান থেকে কয়েকটি ভাগে ভাগ হয়ে তারা ডেমরা, পোস্তগোলা, দয়াগঞ্জ, চিটাগাং রোডে অবস্থান নেন। এসময় তারা ওইসব সড়কে চলাচলকারী সিএনজিচালিত অটোরিকশা, প্রাইভেট কার, ব্যাটারিচালিত রিকশা, মোটরসাইকেলের ওপর হামলা করেন। পোড়া মবিল লাগিয়ে দেন গাড়ি ও চালকের শরীরে। এ ছাড়া নানাভাবে করেন হেনস্তাও। কেউ কেউ গাড়িতে লাথি-ঘুষি দিয়ে ভেঙে দেন প্রাইভেট গাড়ির হেডলাইটসহ নানা যন্ত্রাংশ। শ্রমিকদের হাতে-পায়ে ধরেও রেহাই পাননি অনেকে। সারা দিনই বিচ্ছিন্ন ঘটনার মধ্য দিয়ে ধর্মঘট পালন করেন শ্রমিকরা। দুপুরের দিকে যাত্রাবাড়ী থানা থেকে ১০০ গজ দূরে চিটাগাং রোডে দাঁড়িয়ে থাকা শ্রমিকরা একের পর এক প্রাইভেট গাড়ির যাত্রী ও চালকদের হেনস্তা করছিলেন।


খিলগাঁও থেকে আসা ঢাকা মেট্রো থ-১৩-১৯৪০ নম্বরের একটি সিএনজিকে আটকে তারা ভাঙচুর করেন। লাথি দিয়ে দুমড়ে মুচড়ে দেন সিএনজিটিকে। এসময় শ্রমিকরা ওই চালকের পুরো শরীর মবিল দিয়ে লেপ্টে দেন। তার কিছুক্ষণ পর ঢাকা মেট্রো গ-১৭-৭৩৭৩ নম্বরের একটি প্রাইভেট কারকে একইভাবে হেনস্তা করতে দেখা গেছে। বিকালের দিকে ডেমরা সড়কে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বহন করা একটি বাসের চালকের ওপর পোড়া মবিল ঢেলে দেয় শ্রমিকরা। এসময় শিক্ষার্থীরা শ্রমিকদের ওপর ক্ষেপে উঠেন। বিক্ষুব্ধ হয়ে তারা সড়কে অবস্থানরত শ্রমিকদের ধাওয়া করেন। ধাওয়া খেয়ে শ্রমিকরা সেখান থেকে পালিয়ে যান। শ্রমিকরা পালিয়ে গেলেও শিক্ষার্থীরা সড়কে আড়াআড়ি বাস দাঁড় করিয়ে বিক্ষোভ করেন। পরে সেখানে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।


এ ছাড়া পরিবহন ধর্মঘট থাকার কারণে সড়কে কোনো ধরনের বাস চলাচল না থাকায় সাধারণ যাত্রীদের ভোগান্তি ছিল চরমে। যাত্রাবাড়ী মোড়ে হাজার হাজার যাত্রীকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। অনেকে জরুরি প্রয়োজনে বিভিন্ন স্থানে যেতে চাইলেও কোনো পরিবহনের দেখা পাননি। বিকল্প হিসেবে রিকশা দিয়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে হয়েছে। জরুরি কাজে মিরপুর যাওয়ার জন্য যাত্রাবাড়ী মোড়ে দাঁড়িয়েছিলেন আশরাফি সুলতানা। তিনি বলেন, এ কেমন ভোগান্তি শুরু হয়েছে। দীর্ঘক্ষণ ধরে দাঁড়িয়ে আছি তবুও একটাও বাসের দেখা পেলাম না। এখন এতদূর রিকশা নিয়ে যাওয়ার উপায় নাই। আবার না গেলেও হবে না। অনেক সিএনজিকে সিগন্যাল দিয়েছি। তারা মিরপুর যেতে অনেক ভাড়া চায়। অসুস্থ রোগী দেখতে যাওয়ার জন্য বাসা থেকে বের হয়ে কোনো বাস পাননি যাত্রাবাড়ীর সোহেল হায়দার। পরে ৪০০ টাকা খরচ করে তিনি বিশ্বরোড পর্যন্ত একটি সিএনজি ভাড়া করেন। নারায়ণগঞ্জ যাবার জন্য বাসের জন্য অপেক্ষা করছিলেন মানিকনগরের আয়েশা খাতুন ও তার ছোট দুই সন্তান। মানিকনগর থেকে রিকশা করে এসে পৌঁছান যাত্রাবাড়ী। সেখানে ঘণ্টাখানেক অপেক্ষা করেন। কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। রিকশা করেও এতদূর যাওয়া সম্ভব নয়। পরে তিনি বাধ্য হয়েই ফিরে যান বাসায়।  
এদিকে গতকাল সকাল থেকে সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে কোনো দূরপাল্লার বাস ছেড়ে যেতে দেখা যায়নি। টার্মিনাল ও তার আশেপাশের সকল সড়কে সারিবদ্ধভাবে বাস পার্কিং করে রাখা হয়েছিলো। শ্রমিকরা তখন বিভিন্ন সড়কে দলবেঁধে ধর্মঘট পালন করছিলেন। আর বাস টার্মিনালের বাসের কাউন্টারের সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় শত শত যাত্রীকে। শাহ আলম নামের এক যাত্রী বলেন, প্রায় ২ ঘণ্টা ধরে সপরিবারে বাসের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে আছি। জরুরি কাজে পরিবার নিয়ে সিলেট যাওয়া প্রয়োজন। কিন্তু এখানে একটি বাসের কাউন্টারও খোলা নাই। কি করে সিলেট যাবো জানি না। ভৈরবগামী আরেক যাত্রী সোহেল মিয়া জানান, কয়েক ঘণ্টা ধরেই এখানে দাঁড়িয়ে আছি। কোনো বাস ছাড়ছে না। শুনেছি সকাল থেকে একটাও বাস ছেড়ে যায়নি।
একই চিত্র দেখা গেছে, রাজধানীর গাবতলী বাস টার্মিনালে। দিনভর সেখান থেকে কোনো বাস ছেড়ে যায়নি। আশেপাশের এলাকায় অবস্থান নিয়ে পরিবহন শ্রমিকরা কোনো যানবাহন চলতে দেয়নি। ওই এলাকায় সিএনজি অটোরিকশা ও লেগুনা চলাচলেও বাধা দেয় শ্রমিকরা।


Courtesy: Manavzamin Oct 29, 2018

Transport strike disrupts economic activities, communications

Exports, imports halt at Ctg port * No change in Road Transport Act now, says Quader



 FE Report


Transport strike disrupted communications across the country on Sunday, taking a heavy toll on trade and economic activity.


According to business circles, overall commodity supply chain, export-import activities were severely halted.


Export and import of goods to and from Dhaka, Chittagong and Mongla ports also got hampered.
 However, the supply of food and other consumables was halted for unavailability of transport.


Bangladesh Transport Workers Federation called the 48-hour nationwide strike since 6:00am to realise their eight-point demand.


Amendment to some sections in the Road Transport Act (RTA), passed in parliament on September 19, is one of their key demands.
All intercity buses and goods vehicles, excepting state-run Bangladesh Road Transport Corporation (BRTC) buses, stayed off the roads.


Benapole land port losses its daily revenue of around Tk 310 million as no truck from Bangladesh side crossed the border


"Not a single transaction was made at Benapole port on the day," said commissioner Belal Hossain Chowdhury.


He said export loss could not be assessed as different items with different quantities are sent to India.


The Chittagong Port Authority apprehended congestion as goods transportation from the port could not be possible on Sunday night.


Bangladesh Garment Manufacturers and Exporters Association (BGMEA) estimates more than Tk 85 million daily loss from its export earnings of Tk 31 billion.


Business community and civil-society members sharply reacted to the ongoing strike, urging all concerned to seek a permanent solution to this problem.


They said nobody supports strike holding people hostage and crippling public life.


BGMEA president Siddiqur Rahman demanded a permanent solution to this 'undesirable' action that disrupts business in the name of strike.


"A few days back, similar strike was averted with the home minister's assurances. But we don't find any solution afterward," he told the FE over phone.


Mr Rahman urged the government not to address the problem on a piecemeal basis and find a solution after reviewing the workers' demands.
Architect Iqbal Habib, joint secretary of Bangladesh Environment Movement, termed such strike 'a reflection of nasty politics' which is usually called before a national election.


"A section of unscrupulous leaders, who show up as both owners and workers, misguide the workers by calling strike for their political gains," he told the FE.


On workers' demands, Mr Habib said the RTA has, for the first time, addressed the wrongdoings of all concerned, including private car owners and road designers.


It has broken the typical public perceptions that drivers and workers are mainly responsible for road accidents, he mentioned.


Meanwhile, our Chattogram correspondent adds: Delivery of cargoes from Chittagong port remained suspended since Sunday morning following a countrywide transport strike.
Movement of all modes of vehicles to and from the port also remained suspended until filing of this report at 6:00 pm.


As a result, the export-import activities through the country's main seaport came to a halt.
No truck, covered van, trailer or other modes of vehicles could enter the jetties or container and cargo yards to take delivery of cargoes from Chittagong port or take export cargoes to the ships from across the country, said officials at Chittagong Port Authority.


Transport workers enforced a 48-hour strike from 6:00 am on Sunday to press home their 8-point demand including an amendment to recently-passed Road Transport Act 2018.


Road Transport and Bridges Minister Obaidul Quader ruled out the possibility of making any amendments to the act before the upcoming parliamentary election.


Member (Admin and Planning) of Chittagong Port Authority Md Zafar Alam said no truck, covered van or long-distance vehicles could enter the port sheds to take delivery of containarised or bulk cargoes since the morning.


Only a very few vehicles took delivery of cargoes early in the morning before the transport strike began. "But we don't know if those vehicles could reach their destinations," he added.


However, loading and unloading activities in the general cargo berths, specialized container terminals and the outer anchorage of Chittagong port remained normal, he said.


He told the FE that as many as 4,500 containers are delivered from the port sheds a day for taking import cargoes to the nationwide production units.
The lion's share of these cargoes is destined for production units in the RMG (readymade garment) sector, the major export earner of the country.
Production in the country's garment factories will be hampered severely due to the transport strike, he said.


It will also hit the export sector hard as the exporters could not reach their export products to the ships waiting for shipment of export cargo on time.


Expressing discontent over the situation caused by the strike, CPA Member Zafar Alam suggested that the port activities should be kept outside the purview of all types of hartals, strikes and movements as the country's economy, import and export and businesses are solely dependent on the performance of the Chittagong port and other ports and ICDs (inland container depots).


"The activities at the port come to a halt due to movement or work abstention. But the country must keep running the wheels of economy first for the sake of its people," he observed.


pankajdastider@gmail.com & smunima@yahoo.com
Courtesy: The Financial express Oct 29, 2018

Sunday, October 28, 2018

Free polls sans free media?

Shakhawat Liton

There is a paradoxical situation that troubles us as we move closer to the next parliamentary election.
The Right to Information Act, 2009, unequivocally recognises the citizens' right to information by pronouncing in its section 4 that “every citizen shall have the right to information from the authority, and the authority shall, on demand from a citizen, be bound to provide him with the information.”


In case of exercising the franchise, people's right to know has been further consolidated in section 12 (3b) of the Representation of People's Order, 1972, which empowers citizens with the right to know about the parliamentary candidates before they choose their representatives. And presently, digital platforms like the websites of newspapers, online news portals and social media sites are considered among the most effective tools to disseminate information about the candidates across the country.


But the recently passed Digital Security Act (DSA) has come up with some provisions that pose a major threat to independent journalism ahead of, and during, the next election. The stringent restrictions imposed on digital platforms by the DSA will make independent journalism difficult. As a result, voters may be deprived of getting adequate information about the candidates and the activities of political parties contesting the polls.


Let's elaborate on the paradoxical situation. In 2005, a writ petition was filed with the High Court urging it to direct the Election Commission to collect and disseminate among voters some information about parliamentary candidates, which would allow the voters to know about the candidates before they cast their votes. In response, the High Court delivered a landmark verdict which was later upheld by the Appellate Division that said it had found the prayer made in the writ petition to be legitimate and endorsed the petitioner's arguments that "voters are of utmost importance in parliamentary election and they have the right to elect or reject a candidate on the basis of their antecedents and past performance and whether they are competent to discharge the function as a lawmaker and represent the people in the House of the Nation."


As a reference was made to an Indian Supreme Court verdict in this regard, the HC in its verdict said the question of the right to know was also examined in the said judgement [of the Indian SC] and that it was held that people's right to know is inclusive of their right to vote. "We are also of the view that people have a right to know and such a right is included in the franchise."


The EC was directed by the HC to seek information from the candidates on affidavits sworn in by the latter furnishing eight basic facts along with the nomination papers for the election. The facts include his/her educational qualification, record of criminal cases, description of his/her wealth and assets. In the verdict, the court also asked the EC to take necessary measures to publish the information in mass media to inform voters about the candidates.


The RPO provision introduced in 2008 after the apex court's verdict, however, did not fully follow its judgement. The provision did not keep the option to disseminate basic information of the candidates through mass media. Instead, the EC introduced a system in which the Returning Officers (RO) would disseminate the information through leaflets in the electoral areas and hang a copy of the compiled information of each candidate in the respective RO offices. In reality, it is not possible to disseminate candidates' information to all voters of a constituency through this system. In the past two elections, in 2008 and 2014, it was noticed that a small number of leaflets were distributed only in the city areas, leaving voters in rural areas uninformed. The other option of hanging a copy of the compiled basic facts of candidates in the RO office for public inspection has not been much useful either, as the public have little access to these offices.


In such a situation, the media serves as a useful tool of communication for the voters. The media can examine whether a candidate has concealed any basic facts in his/her affidavits and run reports on their findings. The media can also investigate whether any candidate or political party is spending beyond the legal limit for electioneering, or spending money to buy votes or manipulate the local administration in its favour. And digital platforms like the websites of newspapers, online news portals and social media sites can quickly and effectively disseminate the information and basic facts about the candidates on a large scale. For this, the media must be allowed to work freely.


But unfortunately, some provisions of the DSA, as the Editors' Council has stated, "end up policing media operations, censoring content and controlling media freedom and freedom of speech and expression." The Editors Council, known as Sampadak Parishad, in an extensive write-up published in major dailies on September 29, said: "The Act gives unlimited power to the police to enter premises, search offices, bodily search persons, seize computers, computer networks, servers, and everything related to the digital platforms. According to the Act, the police can arrest anybody on suspicion without a warrant and do not need any approval of any authorities. It will create an atmosphere of fear and intimidation which will make journalism and especially investigative journalism virtually impossible."
The Editors' Council identified at least nine sections of the DSA that it deemed dangerous. Let's examine two of the sections to understand how it will affect journalism over the course of the election.


According to section 25 of the DSA, if any person using a website or any digital device deliberately or knowingly distributes any information or data that is attacking or intimidating in nature; or if a person publishes or distributes any information despite knowing that it is false to irritate, humiliate, defame, embarrass or discredit a person, then all such actions of the individual will be considered a crime. And for this, he or she may face up to three years in jail or a fine of Tk 3 lakh or both. A person will face up to five years in jail or a fine of Tk 10 lakh or both for committing the offence for a second time.


This provision will directly affect independent journalism during the polls. How? For example, if a parliamentary candidate in his affidavit conceals any information about his assets or other things, and a newspaper unearths it through investigation, this will surely "hurt his image." He may claim to feel "defamed", "irritated", "humiliated" and "embarrassed" by portraying the report as "false."
The media may not feel comfortable publishing investigative reports on influential parliamentary candidates who amassed huge assets through unlawful means and abuse of power. The Editors' Council has rightly said that this (Section 25) “will directly affect all investigative reporting in the media. Such reports are usually about some irregularities performed by institutions and individuals. Corrupt people will use this law to intimidate journalists and media organisations and try to prevent publication of such stories on the pretext that the reports have attacked or intimidated them. Actually, every such report can be said to fall under one or more of the above categories and can be used to harass the media."
It's quite normal that no candidate will welcome the disclosure of unpleasant facts about himself or his past wrongdoings. He may take advantage of section 25 to file cases against journalists and editors to gag the media. He may influence the police to arrest the journalists immediately after the filing of the cases. How will journalists unearth hidden facts about a candidate in such a situation?


For the same reasons, the journalists may not even take the risk of exposing any unlawful activities of a political party contesting the polls to influence the election. If a political party's high command feels that the party's "image is hurt" by a report—and if they feel "defamed", "irritated" and "humiliated", numerous cases may be filed against the journalists and editor of a news platform across the country by the party's activists as anyone can sue anyone under section 25 of the DSA.


So, there is a possibility that the media may choose not to take any risk during the election fearing consequences under the draconian legal provision. Again, the voters will be deprived of having adequate information about the candidates and the parties contesting the election, and as a result, their right to know will be curtailed automatically.


The biggest threat to journalism lies in section 43 of the DSA, which gives police sweeping powers to arrest anybody without any warrant on suspicion, to enter premises, search offices, bodily search persons, seize computers, computer networks, servers, and everything related to the digital platforms.


The threat of arrest without a warrant will naturally prevent a journalist from doing his/her work. When police are given the power to arrest without a warrant, on mere suspicion, and to seize computers, computer networks, servers, and everything related to the digital platforms—then media freedom will be buried under this law, as feared by the Editors' Council.


According to the council, comprised of the country's leading editors, "the most dangerous side of this law is that since every newspaper and TV station works on digital system, by giving the power to confiscate a computer, a network of computers including servers, the law enforcing agencies have been given, in effect, the power to shut down a newspaper or TV station or a news portal by confiscating its computers, computer system, computer network and other equipment. Thus, without closing down a media outlet, this clause opens up the possibility of stopping the publication of a newspaper or the operation of a TV station by the law enforcing agencies."
Do we expect the editors of newspapers and online news portals and chiefs of TV stations to keep doing independent journalism during the election despite the risks of facing difficulty to continue operation?


 The controversial provisions of the DSA run counter to the Right to Information Act. Due to the controversial provisions, people may not get adequate information about the activities of political parties including collection of election funds and spending the money for electioneering beyond the legal limit as the media may not take any risk to run reports on these activities. Hence, people's right to know about the political parties' activities during the polls may be curbed. People's right to know about the affairs of the political parties is immensely significant, according to a High Court verdict delivered in 2016.


"In modern democratic countries, citizens have a right to information in order to be able to know about the affairs of each political party which, if elected by them, seeks to formulate policies of good governance," said the HC verdict delivered in a case related to making public the annual audit reports submitted to the EC by the registered political parties.


"Ignoring the people's right to know, keeping them in dark and playing hide-and-seek with them in a democratic country like ours where all powers belong to the people and their mandate is necessary for ruling the country, no registered political party can be allowed to take the stand that the audited statements submitted to the Election Commission were 'secret information,'” announces the HC in the judgement.


But the controversial provisions of the DSA have sparked fears that the media is not free from the risks of facing cases under section 25 and arrest of journalists without a warrant under section 43 that pose a threat to media freedom even if it runs investigative reports on corruption or abuse of powers or the use of black money to influence the polls by individuals or parliamentary candidates or political parties, by obtaining information under the RTI act.


Shakhawat Liton is Planning Editor, The Daily Star.
Courtesy: The Daily Star Oct 28, 2018

মন্ত্রীর সংগঠনের ডাকে ধর্মঘট!

স্টার অনলাইন রিপোর্ট


রাস্তায় শত শত মানুষ। পরিবহন নেই। জনদুর্ভোগ দেখারও যেনো কেউ নেই। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন সারাদেশে ৪৮ ঘণ্টার ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে। এই সংগঠনের কার্যকরী সভাপতি নৌমন্ত্রী শাজাহান খান।


মন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন সংগঠনের ডাকে ধর্মঘট, মন্ত্রীর উপস্থিতিতে যে আইন মন্ত্রিসভা পাস করেছে সেই আইনের বিরুদ্ধে। বিষয়টি নিয়ে দ্য ডেইলি স্টার অনলাইনের সঙ্গে আজ (২৮ অক্টোবর) কথা বলেছেন বাংলাদেশের দুই বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব সৈয়দ আবুল মকসুদ ও সুলতানা কামাল।
বিশিষ্ট লেখক, গবেষক ও কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, “কয়েকদিন পর পর এভাবে ধর্মঘটের ডাক নেতাদের দায়িত্বহীন সিদ্ধান্তের চূড়ান্ত রূপ। তাদের দাবি তো সরকারের কাছে। সেক্ষেত্রে সরকারের সঙ্গে বসে এ ব্যাপারে তারা আলোচনা করতে পারতো। তা না করে জনগণকে ভোগান্তিতে ফেলছে।”


তিনি বলেন, “সবচেয়ে সাংঘাতিক ব্যাপার হলো এই সংগঠনের সভাপতি আবার সরকারেরই লোক। নৌমন্ত্রী শাজাহান খান নিজেকে শ্রমিক নেতা হিসেবেও দাবি করেন। তবে কি তার কাজ সরকারের মধ্যে থেকেই সরকারকে চাপে রাখা?”


“উনি যদি পরিবহন শ্রমিক নেতাদের দাবির সঙ্গে একমত না হন, তাহলে সংগঠন থেকে পদত্যাগ করবেন। আর যদি তিনি মনে করেন পরিবহন শ্রমিকদের দাবি সংগত কিন্তু সরকার মানছে না, সেক্ষেত্রে তিনি মন্ত্রিত্ব ছেড়ে দিতে পারেন। যেকোনো একটা থেকে তাকে পদত্যাগ করতেই হবে। না হলে এই দ্বিচারিতার বিষয়টি অনেক বেশি তামাশার মনে হচ্ছে,” মত দেন মকসুদ।


এ বিষয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা মানবাধিকারকর্মী সুলতানা কামাল বলেন, “পরিবহন শ্রমিকরা আমাদের সমাজেরই অংশ। এখানে লক্ষণীয় বিষয়টি হচ্ছে- যে যাকে যেভাবে পারছে ভোগান্তিতে ফেলছে। দেশের সরকার, পেশাজীবী, সেবক, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সবাই একই পথে হাঁটছে।”


তিনি বলেন, “এ দেশে মানুষের কাজের পেছনে যুক্তির খুব অভাব রয়েছে। আমি দোষ করবো, কিন্তু আইন মানতে বাধ্য নই। সরকারও যেমন খুশি আইন করে যাচ্ছে। যদিও আইনগুলি খুব কঠোর। কিন্তু এসব ব্যাপারে কারো তেমন একটা মাথা ব্যথা নেই। যেমন নেই সুশাসন, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা।”


এই মানবাধিকারকর্মী বলেন, “রাস্তায় মানুষ পিষে দিয়ে যাবে চালকেরা। সেক্ষেত্রে একটি আইন দরকার। কিন্তু তার আগে দেখতে হবে, আইনটি সব পক্ষকেই সন্তুষ্ট করছে কি না। সবাই মেনে নিচ্ছে কি না। না হলে ভোগান্তির শেষ নেই।”


সরকারের গুরুত্বপূর্ণ একজন মন্ত্রী কি করে একইসঙ্গে একটি শ্রমিক সংগঠনের দায়িত্বে থাকেন, তা বোধগম্য নয় বলে জানান সুলতানা কামাল। তিনি বলেন, “আসলে ভেবে কি হবে, আমাদের সমাজের প্রতিটি স্তরের অবস্থাই এমন। সেখানে এসব লোকেরাই সব ক্ষমতার কলকাঠি নাড়ছে।”


গতকাল রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশ করে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন। সেখান থেকে সড়ক পরিবহন আইন সংশোধনসহ ৮ দফা দাবিতে আজ থেকে সারা দেশে ৪৮ ঘণ্টার পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দেয় তারা।


পরিবহন শ্রমিকদের দাবির মধ্যে সড়ক পরিবহন আইনের সব ধারা জামিনযোগ্য করা, সড়ক দুর্ঘটনার মামলায় সাজার পরিমাণ কমানো, ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার ক্ষেত্রে শিক্ষাগত যোগ্যতা পঞ্চম শ্রেণি করা ও লাইসেন্স দেওয়ার ক্ষেত্রে অনিয়ম বন্ধ করা অন্যতম।


দাবি আদায় না হলে ৩০ অক্টোবর থেকে লাগাতার ধর্মঘটের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন সংগঠনটির নেতারা।


উল্লেখ্য, বেপরোয়া মোটরযান চালানোর কারণে সংঘটিত দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের সাজার বিধান রেখে ‘সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮’ বিল গত ১৯ সেপ্টেম্বর জাতীয় সংসদে পাস হয়।


Courtesy: The Daily Star Bangla online Oct 28, 2018

Pay, perks up, not service


Facilities increased to woo public servants ahead of polls: experts


Shakhawat  Hossain


A substantial increase in the perks and salary of public servants in the present tenure of the government has failed to make any significant improvement in the delivery of services by government employees.





 Experts noted that complaints about ‘under-the-table activities’ from the service takers did not drop although the public servants had been receiving almost double salary since 2016, easy car loan and home loan.


 The experts accused the ruling Awami League of failure to give strong message for improving the service delivery against the backdrop of continued allegation that the facilities and perks were enhanced only to appease the public servants ahead of the 11th parliamentary polls due by January 28, 2019.


 Former caretaker government adviser MM Shawkat Ali told New Age on October 16 that the public servants were yet to improve the service delivery despite augmentation of the digital technologies.


 The major reason for such failure was higher demand from people and degradation of moral values among the public servants, he said.

The retired bureaucrat lamented that the under-the-table activities had not decreased at all despite a substantial increase in the salary and perks in the past few years.

State-minister for finance and planning MA Mannan denied the allegation, claiming that the service delivery had improved as the government officials became more public-oriented following the increase in salary and perks.


 He told New Age on Saturday that the increase in the perks and salary of the public servants was imperative as the park and package in the country was one of the lowest in South Asia. 


 He, however, noted it would take time to get expected improvement in service delivery from the public servants.


 Salary of almost all public servants became double with the implementation of the current pay scale in 2016, when the Bangla New Year celebration allowance was also introduced.
The government also introduced Tk 30 lakh car loan facility with a monthly maintenance allowance of Tk 50,000 for deputy secretaries in 2017, a lucrative facility that was earlier limited to joint secretaries and above.


 Former interim government adviser Mirza Azizul Islam said that the car loan for deputy secretary-level government officials was meaningless as it would increase government expenditure.
The policy was made mainly to woo government officials, he said.


 State minister Mannan said the government was always ready to accept constructive criticism and they were always confident about the support of the public servants.


 In August, the government increased home loan ceiling to Tk 75 lakh from previous Tk 1.2 lakh and decreased the interest rate to 5 per cent from previous 10 per cent for the public servants.


A demand for an adjustment to inflation in line with recommendation made by a secretary-level committee is now under consideration, said finance division officials.


At a post-budget briefing in June, finance minister AMA Muhith boasted that except the present government nobody gave so much facility to the public servants.


Transparency International Bangladesh executive director Iftekharuzzaman said that offering higher facilities to the public servants might be an attempt to woo them ahead of the general elections, as major target of prevention of corruption and improvement in service delivery remained elusive.


 He said that there was no concrete data to assess the service delivery by the public servants, but the prevalence of corruption and amount of bribe realised by the public servants increased.


Quoting TIB study ‘Corruption in Service Sector: National Household Survey 2017’ released in August, Iftekharuzzaman said that the law enforcement agencies emerged as the most corrupt institution in the country’s service sector, followed by Department of Immigration and Passport and Bangladesh Road Transport Authority.


According to the study, 73 per cent service seekers fall prey to corruption of law enforcement agencies while about 61 per cent have to pay bribe. On an average, a household pays Tk 6972 to the sector.


The estimated amount of bribe is Tk 106.89 billion, 3.4 per cent of the revised budget for 2016-17 and 0.5 per cent of the GDP.


 The rate of corruption and bribery is higher in rural areas than in urban areas, the study found.
 Many complained that in most land offices they had to pay additional money to get services for land registration and mutation or any other any land-related work even though the government had increased salaries of the employees and officials substantially. 


 Even for health services, people were compelled to pay kickbacks to employees for serials at public hospitals in the wake of patient burden, service seekers alleged. 


 There have been widespread allegations that middlemen collect money for ‘smooth services’ at passport offices, Bangladesh Road Transport Authority offices and those of the utility services, including gas, electricity and water, as the clients otherwise have to suffer in getting desired services from the agencies concerned.
 Sufferers alleged that they found hardly any changes in terms quality services at public offices despite pay hikes on regular basis due to lack of proper monitoring over service providing agencies. 


 The government, meanwhile, gave promotions to various levels in the civil bureaucracy although there were no vacancies, apparently to appease a section of officers. 


 In its latest move, the government on October 24 promoted 256 senior assistant secretaries to the rank of deputy secretary, raising the number of deputy secretaries to 1,790. 


 Consequently, the number of deputy secretaries had gone double the number of approved posts in the organogram, said a senior official concerned.
 On September 20, 154 deputy secretaries were promoted to the rank of joint secretary, raising the number joint secretaries to 759 against 350 posts in the approved structure. 


 Earlier on August 29, the government promoted 154 joint secretaries to the rank of additional secretaries making the figure at least five times higher than the approved structure, official records show.



Courtesy: New Age Oct 28, 2018

খায়রুল হক রায়ে কী বলেছিলেন


মন্ত্রী-এমপিদের আচরণবিধি: দ্বিমুখী নীতি ইসি’র





সিরাজুস সালেকিন


মন্ত্রী-এমপিদের ভোটে অংশগ্রহণের বিষয়ে দ্বিমুখী নীতি গ্রহণ করেছে নির্বাচন কমিশন। স্থানীয় নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের যে সুযোগ নেই, সংসদ নির্বাচনে তা ভোগ করবেন তারা। স্বপদে বহাল থেকে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেবেন সরকারি সুবিধাভোগী এই অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা। তালিকায় আরো রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী, জাতীয় সংসদের স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার, বিরোধী দলীয় নেতা, সংসদ উপনেতা, বিরোধী দলীয় উপনেতা, প্রতিমন্ত্রী, হুইপ, উপমন্ত্রী বা তাদের সমমর্যাদার ব্যক্তি এবং সিটি করপোরেশনের মেয়র। স্থানীয় সরকার নির্বাচনে তাদের প্রচারণায় অংশ নেয়ার সুযোগ নেই। এমনকি তারা সংসদের কোনো শূন্য আসনে উপ-নির্বাচনের সময় প্রচারণায় অংশ নিতে পারেন না। অথচ সংসদের সাধারণ নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিসহ সরকারি সুবিধাভোগীরা স্বপদে বহাল থেকে অংশ নিচ্ছেন।


নির্বাচন কমিশনের বর্তমান আচরণ বিধিমালায় সংসদ ভোটের প্রচারণায় অংশ নিতেও তাদের বাধা নেই।
এ অবস্থায় নির্বাচনের মাঠে অসম পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে। যে রায়ের অজুহাত দেখিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি বাতিল করা হয়েছিল- ওই রায়েই বিচারপতি খায়রুল হক নির্বাচনের ৪২ দিন আগে সংসদ বাতিলের নির্দেশনা দিয়েছিলেন। ওই নির্দেশনার মূল চেতনায়   ছিলো যাতে করে নির্বাচনের মাঠে লেভেল ফিল্ড নিশ্চিত হয়। সিটি করপোরেশন নির্বাচন আচরণ বিধিমালায় বলা আছে, ‘সরকারি সুবিধাভোগী অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি এবং কোনো সরকারি কর্মকর্তা বা কর্মচারী নির্বাচন-পূর্ব সময়ে নির্বাচনী এলাকায় প্রচারণায় বা নির্বাচনী কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করিতে পারিবেন না। তবে শর্ত থাকে যে, উক্ত রূপ ব্যক্তি সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকার ভোটার হইলে তিনি কেবল তাহার ভোট প্রদানের জন্য ভোটকেন্দ্রে যাইতে পারিবেন।’


এছাড়া আচরণবিধিতে আরো বলা হয়েছে, ‘নির্বাচন-পূর্ব সময়ে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী বা তাহার পক্ষে অন্য কোনো ব্যক্তি, সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান নির্বাচনী কাজে সরকারি প্রচারযন্ত্র, সরকারি যানবাহন, অন্য কোনো সরকারি সুযোগ-সুবিধা ভোট এবং সরকারি কর্মকর্তা বা কর্মচারীগণকে ব্যবহার করিতে পারিবেন না।’ অপরদিকে সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালায় শুধুমাত্র শূন্য আসনে উপ-নির্বাচনে সরকারি অতি সুবিধাভোগী ব্যক্তিদের প্রচারণায় অংশ নিতে বাধার কথা বলা আছে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেবেন দশম সংসদের অনেক এমপি। বাস্তবতা হচ্ছে, এমপিরা এলাকায় সর্বোচ্চ প্রভাবশালী ব্যক্তি। একই সঙ্গে মন্ত্রীরা তাদের স্ব-স্ব দপ্তরের প্রধান।


নির্বাচন-পূর্ব সময়ে সরকারি কর্মকর্তাদের তারা ব্যবহার করবেন এমন শঙ্কা থেকে যাচ্ছে। এতে ক্ষমতাসীনদের বাইরে যারা এমপি প্রার্থী হবেন তারা এক প্রকার ভীতির মধ্যে থাকবেন। আবার যেসব এমপি এবার মনোনয়ন পাবেন না তাদের নিয়ে ভীতি থাকবে মনোনয়নপ্রাপ্তদের। এ বিষয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সভাপতি এম হাফিজ উদ্দিন খান বলেন, সংসদ ভেঙে নির্বাচন করা বেআইনি কিছু না। কারণ, এটা সংবিধানে স্পষ্ট করে বলাই আছে সংসদ ভেঙে নির্বাচন করা যাবে। সরকার বর্তমানে যে ভূমিকা গ্রহণ করছে তাতে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত সম্ভব না। ইতিমধ্যে আমরা দেখছি জাতীয় ঐক্যফ্রন্টকে জনসভার অনুমতি দেয়া হচ্ছে না।
মন্ত্রী-এমপিরা স্বপদে বহাল থাকলে এরকম ঘটনাই ঘটবে। ইসি সূত্রে জানা গেছে, আগামী ৩০শে অক্টোবর থেকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন গণনা শুরু হচ্ছে। ১লা নভেম্বর প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাতের পর ৪ঠা নভেম্বর তফসিল ঘোষণার পরিকল্পনা ইসির। আর ভোটগ্রহণ করা হতে পারে ১৮ থেকে ২০ ডিসেম্বরের মধ্যে। গতবারের মতোই সংসদ বহাল রেখেই এবার সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ফলে এমপিরা স্বপদে বহাল থেকেই নির্বাচনে অংশ নেবেন। নির্বাচনকালীন সময়ে সরকারের মন্ত্রিসভা ছোট না করার ইঙ্গিত দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। বর্তমানে মন্ত্রিসভায় পূর্ণাঙ্গ মন্ত্রী আছেন ৩৩ জন, প্রতিমন্ত্রী ১৭ জন এবং উপমন্ত্রী ২ জন। সংসদ বহাল থাকলে বর্তমান মন্ত্রী-এমপি শুধুমাত্র সরকারি সুযোগ-সুবিধা ব্যবহার করতে পারবেন না। কিন্তু কী ধরনের সুযোগ-সুবিধা পাবেন সে বিষয়ে কোথাও উল্লেখ নেই।


স্থানীয়ভাবে মন্ত্রী-এমপিরা বিভিন্ন সংগঠন, সংস্থার কমিটিতে পদ ধারণ করেন। আইনশৃঙ্খলা কমিটিসহ গুরুত্বপূর্ণ অনেক ফোরামে তারা নীতি নির্ধারণী কাজ করেন। তাই তফসিলের পর এমপিদের ক্ষমতা খর্ব না করলে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত সম্ভব হবে না এমন আশঙ্কা সংশ্লিষ্টদের। এ অবস্থায় বিদ্যমান আচরণবিধিতেই তফসিল ঘোষণা করছে নির্বাচন কমিশন। সম্প্রতি ইসির আইন সংস্কার কমিটির প্রধান এবং নির্বাচন কমিশনার বেগম কবিতা খানম জানান, বিদ্যমান আইন ও বিধির মধ্যেই প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারি সুবিধাভোগী অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা নির্বাচনে অংশ নেবেন। তাদের বিধি-নিষেধের বিষয়টি বর্তমান আচরণ বিধিমালায় বলাই আছে। সুতরাং আচরণবিধি মালা সংস্কারের কোনো প্রয়োজন নেই।
ইসি সূত্রে জানা গেছে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আচরণবিধি মালায় সামান্য পরিবর্তন এনেছে ইসি। বিএনপি, যুক্তফ্রন্ট, জাতীয় ঐক্যপ্রক্রিয়াসহ সরকারবিরোধী জোটগুলোর পক্ষ থেকে নির্বাচনের আগে সংসদ ভেঙে দেয়ার দাবি উঠেছে। ক্ষমতাসীন দল সে দাবি মানতে নারাজ। তারা সংবিধান অনুযায়ী সংসদ বহাল রেখেই নির্বাচন করার পক্ষে। আগামী নভেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে তফসিল এবং ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে ভোটগ্রহণের কথা। এ অবস্থায় নির্বাচন কমিশনের একাংশ তফসিল ঘোষণার পর এমপিদের ক্ষমতা খর্বের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। কিন্তু সেই প্রস্তাব টেকেনি। সংসদ বহাল রেখে নির্বাচন করলে এই সরকারি সুবিধাভোগী অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের কর্মকাণ্ড কেমন হবে তা নিয়ে উদ্বিগ্ন সংশ্লিষ্টরা।


গত এপ্রিলে সাংবাদিকদের এক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠানে প্রধান নির্বাচন কমিশনার সিইসি কেএম নূরুল হুদা বলেছিলেন, সংসদ বহাল রেখে নির্বাচন হলে ভোটে দাঁড়ানো এমপিদের ক্ষমতা খর্ব করা প্রয়োজন। এজন্য ইসি আচরণবিধি সংশোধনের কথা ভাববে বলে জানান তিনি। ইসি কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২০১৪ সালে সংসদ বহাল রেখেই দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ওইসময় বিএনপিসহ বেশকিছু রাজনৈতিক দল নির্বাচন করে। ফলে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করার জন্য ইসিকে বেগ পেতে হয়নি। কিন্তু এবার যদি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হয় তাহলে বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক তৈরি হবে। অতীতে স্থানীয় নির্বাচনগুলোতে আইন থাকার পরও এমপিদের নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়নি। এমপিরা এমনিতেই স্থানীয়ভাবে সর্বোচ্চ ক্ষমতা ভোগ করে। সংসদ বহাল রেখে নির্বাচন হলে এমপিরা প্রশাসনসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে বলে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।


Courtesy: Manabzamin Oct 28, 2018

EDITORIAL

BRT: Victim of lack of coordination 

The reported refusal of the World Bank (WB) to bankroll the entire route of the Bus Rapid Transit (BRT) on the ground of its faulty design is yet another glaring example of lack of coordination among the public sector development agencies and the government's indifference or ineptitude towards making proper use of taxpayers' money. The WB decision makes uncertain the fate of the BRT project that has been limping since its launching in 2010. The cost of the project that has more than doubled due to loopholes in preliminary designs, revision of projects and negligence on the part of the project implementing agency.




The WB following a feasibility study, conducted a few years back, had assured the government of funding the project. But the construction of Moghbazar-Mouchak flyover, in the meanwhile, has made it impossible to execute the project's planned route between city's Mohakhali to Keraniganj. The flyover does not have enough space for keeping dedicated lanes for BRT. To make things worse, another government agency has proposed to build a flyover between Shantinagar and Keraniganj on the planned BRT route. Under the circumstances, it is hard to blame the WB for its decision to downsize its investment in the BRT project that is designed to make the movement of passenger buses faster and hassle-free.


The Mouchak-Maghbazar flyover was planned and built when the BRT plan was very much in place. But the agency -- the local government engineering department (LGED) -- that built the flyover ignored the BRT plan. The Dhaka Transport Coordination Authority (DTCA), the agency responsible for implementation of BRT, under the control of the ministry of road transport and bridges, perhaps, could not press its case strongly or its pleadings went unheeded.


 Many major cities in Asia and other continents have introduced BRT to ensure faster movement of passenger buses. Compared to cost-intensive flyovers or expressways, the BRT is a low-cost solution to traffic problems with passenger buses. The BRT and the planned introduction of limited number of bus companies under a centrally managed system together might make the commuting by bus relatively comfortable. But the lack of coordination, a deep-rooted problem troubling the operations of government agencies, has emerged as a major roadblock.


Fortunately, the WB has not dropped its plan to bankroll the project in its entirety. Given the project's importance, it has agreed to provide $500 million for the execution of BRT between Shahjalal International Airport point to Mohakhali. The relevant agency should now expedite its work on the project and sit with other agencies concerned to find alternative routes for the BRT up to Keraniganj. The country cannot afford high-cost solutions to the traffic problem that has been exacting a huge physical and economic toll. It should seek low-cost but efficient solutions. And it should be kept in mind that coordination among public sector agencies is a precondition for efficient execution of projects. Volumes have been said and written on coordination issue, but to no effect. Ensuring coordination among public sector agencies should actually be a routine exercise for a government worth its name.


Courtesy: The Financial Express Oct 28, 2018

People suffer on first day of countrywide transport strike

A countrywide 48-hour transport strike, enforced by Bangladesh Road Transport Workers Federation, left people in distress and caused immense sufferings on Sunday.




The transport workers on Saturday declared to stage the work abstention from 6:00 am Sunday to 6:00 am Tuesday to press home their eight-point demands.


No public transports were seen plying on Dhaka city roads except some CNG-run auto-rickshaws and a huge number of rickshaws.


 Public transports, including buses, minibuses and human-haulers stayed off the roads since morning in response to the strike, causing immense sufferings to city dwellers including office-goers and students.


In the capital, no inter-district buses left Gabtoli, Mohakhali or Sayedabad terminals in the morning.
CNG-run auto-rickshaw drivers and rickshaw pullers are charging excessive fares taking advantage of the situation, alleged commuters.
Many people were seen walking or travelling by rickshaw to reach their destinations – sometimes paying double or triple the cost of the usual fare.
The government-run Bangladesh Road Transport Commission (BRTC) bus service was the only public transport option available throughout the city.


Traffic Inspector Asad from Abdullahpur area in the capital was quoted by UNB news agency as saying that there is no public transport on the roads since morning. The number of private vehicles is also limited. People are travelling on rickshaws to reach their destination.


Basu Deb who works at a private company and resides in Mirpur’s Purobi area said that he had to stand on the road for a public bus from 6 am to go Motijheel, but no vehicle was there.


“Later, I had to hire a rickshaw for office,” he added.
According to reports from different districts, no long-route buses left respective bus stands following the strike.
Their demands include making all offences by road accident ‘bailable’, cancellation of the provision of fining Tk 0.5 million for involvement in a road accident, keeping a representative from their federation in any probe body formed for road accident, fixing minimum educational qualification for getting driving licence to class-V, and stopping police harassment on roads,
Earlier on October 12, the workers’ association, decided to launch demonstration by going on a two-day work abstention from October 28 to press home their eight-point demands that included amendments to the Road Transport Act, if their demands are not met by October 27.


Courtesy: The Financial Express Oct 28, 2018

ঢাকা ফোরামের গোলটেবিল বৈঠক

‘সংসদ রেখে নির্বাচন স্বেচ্ছাচারের বহিঃপ্রকাশ’

স্টাফ রিপোর্টার


সংসদ ভেঙে দিয়ে প্রধান দুটি রাজনৈতিক দলের মধ্যে আলোচনা ও সমঝোতার ভিত্তিতে আগামী জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের আহ্বান জানিয়েছে নাগরিক সংগঠন দি ঢাকা ফোরাম। গতকাল রাজধানীতে এক গোলটেবিল বৈঠকে ফোরামের নেতৃবৃন্দ বলেন, গণতান্ত্রিক বিশ্বে বিশেষত পশ্চিমা দেশসমূহে পূর্বতন সংসদ বজায় রেখে ওই সব সংসদ সদস্য দিয়েই নির্বাচন করার কোনো নজির নেই। এটি একধরনের স্বেচ্ছাচারের বহিঃপ্রকাশ মাত্র। গোলটেবিল বৈঠকে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, নির্বাচন কমিশনকে স্বাধীনভাবে সংবিধান কর্তৃক প্রদত্ত ক্ষমতার ব্যবহার করতে দেয়া জরুরি হয়ে পড়েছে। তাই সকলের প্রত্যাশা প্রধান রাজনৈতিক দলের উচিত আলোচনা ও সমঝোতার ভিত্তিতে এগিয়ে যাওয়া। তা না হলে জাতি গভীর অন্ধকারে নিপতিত হতে পারে। যা মুক্তিযুদ্ধের মহান শহীদদের রক্তের প্রতি অবমাননা করা হবে। ‘আসন্ন জাতীয় নির্বাচন শীর্ষক’ ওই গোলটেবিল বৈঠকে সাবেক আমলা, কূটনীতিক, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ছাড়াও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।




বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ও ঢাকা ফোরামের চেয়ারম্যান ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সঞ্চালনায় গোলটেবিল  বৈঠকে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সাবেক রাষ্ট্রদূত এম সিরাজুল ইসলাম। মূল প্রবন্ধে বলা হয়, একাদশ  জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশ বর্তমানে একটি ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে।


সমগ্র জাতি ২০১৪ সালের নির্বাচনের পুনরাবৃত্তির আশঙ্কায় উৎকণ্ঠিত। গণমানুষের এ আশঙ্কা বাস্তবে রূপ নিলে তা হবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরিপন্থি। প্রবন্ধে আরো বলা হয়, বর্তমান সরকার সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী বহাল রেখেই নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্পন্ন করার বিষয়ে অনড়। অর্থাৎ দলীয় নেত্রীকে নির্বাচনকালীন সরকার প্রধান হিসেবে বহাল রাখতে তারা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। সরকারি দল ইতিমধ্যে এই লক্ষ্যে পুলিশ ও জনপ্রশাসন বিভাগের রাজনীতিকরণ সম্পন্ন করেছে নিজেদের স্বার্থ রক্ষার্থে। যদি এটি সত্যি হয়ে থাকে তাহলে এমন আশঙ্কা অমূলক নয় যে গায়েবি, মিথ্যা মামলা, গুম আর অপহরণের মতো বিষয়গুলো আরো প্রকটতর হবে। দুটি বিষয় ভোটাধিকার পুনরুদ্ধারের ব্যাপারে বাংলাদেশের জনগণকে আশান্বিত করেছে বলে প্রবন্ধে উল্লেখ করা হয়। এর মধ্যে প্রথমটি হলো- অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে কিছু পরিবর্তন। আর দ্বিতীয়টি হচ্ছে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে ভারতসহ অন্যান্য দেশ ও সংস্থাসমূহের দৃষ্টিভঙ্গির ইতিবাচক পরিবর্তন। দেশজ রাজনৈতিক ক্ষেত্রে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে অনুসৃত বিরোধী বৃত্তের বাইরে তৃতীয় একটি শক্তির উত্থান হয়েছে।
এই শক্তিটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও সবার অংশগ্রহণের মাধ্যমে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করার জন্য কাজ করেছে। এই মোর্চাটি আওয়ামী লীগের ২০০৯ ও ২০১৪ নির্বাচনে প্রত্যক্ষ করেছে কীভাবে সরকারি প্রশাসনকে দলীয় স্বার্থে ব্যবহার করেছে যা মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরিপন্থি। বাংলাদেশ ইস্যুতে বহির্বিশ্বের অবস্থান বদলেছে দাবি করে প্রবন্ধে বলা হয়, অতীতে আওয়ামী লীগের দেয়া যুক্তি বিএনপি-জামায়াতকে ভোট দেয়া মানে ‘তথাকথিত’ ইসলামী সন্ত্রাসকে উস্কে দেয়া যা আন্তর্জাতিক বিশ্ব অনেকটা মেনে নিয়েছিল। কিন্তু এখন সেই পরিস্থিতি আজ নেই। ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাম্প্রতিক সফরে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সবার অংশগ্রহণে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দেখতে চান। বাংলাদেশে প্রাক্তন ভারতীয় হাইকমিশনার ও অন্যান্য কিছু সাংবাদিক ও কূটনীতিক একই মত ব্যক্ত করে গেছেন। বর্তমান হাইকমিশনারও একাধিকবার একই মনোভাব ব্যক্ত করেছেন।
বৈঠকে নির্বাচনের অনুকূল পরিবেশ নেই উল্লেখ করে সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার বলেন, তফসিলের পর ৪৫ দিনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড অসম্ভব। একটি রাজনৈতিক দল দুই বছর থেকে ভোট চেয়ে জনসভা করে বেড়াচ্ছে। আরেকটি দলকে জনসভার অনুমতিই দেয়া হচ্ছে না। ইসি’র উচিত ছিল ভোটের অন্তত ৯০ দিন আগে তফসিল ঘোষণা করা। সিইসি’র দেয়া প্রতিশ্রুতির উল্লেখ করে আলী ইমাম মজুমদার বলেন, সিইসি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ৫ই জানুয়ারির মতো আর কোনো নির্বাচন হবে না। ১৯৯৬ সালে সিইসি’র দলীয় ও নির্দলীয় দুই রকম সরকারের অধীনে নির্বাচন করার অভিজ্ঞতা রয়েছে। গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য ইসিকে তাই প্রতিশ্রুতি দিতে হবে। সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা এম হাফিজ উদ্দিন খান বলেন, সুশীল সমাজের কাজ হচ্ছে মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করা। সেই সুশীল সমাজও বিভক্ত হয়ে গেছে। মামলা, মোকদ্দমা, গুম, খুনের কারণে ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে দেশে।


এই পরিবেশ অব্যাহত থাকলে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। পাশাপাশি নির্বাচন উপলক্ষে সরকার যেভাবে হাজার হাজার কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন করছে তাও অনৈতিক। এসব প্রকল্পের প্রয়োজনীয়তা আদৌ আছে কিনা তা যাচাই করা দরকার। বর্তমান ইসি সন্দেহজনক কার্যকলাপ করছে অভিযোগ করে সাবেক এই মহা হিসাবনিরীক্ষক বলেন, ইভিএম প্রকল্প পাসের আগে ইসি তা কেনার জন্য এলসি খুলেছে। ইসির তো আরো গুরুত্বপূর্ণ কাজ ছিল। সেসব বাদ দিয়ে তারা ইভিএমের পেছনে লেগে আছে। মুখে বক্তৃতা দিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব না বলেও মন্তব্য করেন তিনি। সংসদ ভেঙে নির্বাচন সংবিধানেই আছে উল্লেখ করে এম হাফিজ উদ্দিন খান বলেন, সংসদ ভেঙে নির্বাচন দিলে বেআইনি কিছু হবে না। এমপিরা অলিখিতভাবে অনেক প্রভাবশালী। সংসদ রেখে নির্বাচন করলে নানা সমস্যা দেখা দেবে।


বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহউদ্দিন আহমেদ সমাপনী বক্তব্যে বলেন, একাত্তর সালের মতো বাংলাদেশ একটি মৌলিক সমস্যার মুখোমুখি হয়েছে। গতানুগতিক নির্বাচন করে কেউ যদি তিন চতুর্থাংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নেয় সমস্যার সূত্রপাত হবে সেই সময় থেকে। আমরা স্বল্প সময়ে কিছু করতে পারবো না। তিনি বলেন, এবার সমস্যাকে কার্পেটের নিচে ঠেলে দেয়া যাবে না। যারা ইতিহাস ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ছাত্র তারা জানে এটা বিস্ফোরণ করে। তাই যার যার অবস্থান থেকে ভূমিকা পালন করা দরকার। গতানুগতিক একটা নির্বাচন হলেই হবে না- সেই উদ্বেগ আমরা প্রকাশ করছি। এখানে কিছু করার থাকলে করতে হবে, না হলে দেশের সর্বনাশ হয়ে যাবে।


রাষ্ট্রবিজ্ঞানী দিলারা চৌধুরী বলেন, সংবাদপত্রের স্বাধীনতাও সুষ্ঠু নির্বাচনের শর্ত। কিন্তু সেই সংবাদপত্রকে ভয়ভীতি দেখিয়ে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা হচ্ছে। দেশের বিচার বিভাগের কী অবস্থা তা সাবেক প্রধান বিচারপতির বক্তব্যে বোঝা যায়। এই পরিবেশে কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব না বলে মন্তব্য করেন তিনি। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এই শিক্ষক আরো বলেন, দেশে সাংঘাতিক সংকটময় পরিবেশ বিরাজ করছে। এখানে সুশীল সমাজও আপস করে চলছে। সরকার যেভাবে দমন নীতি গ্রহণ করেছে তাতে করে সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ নেই। এ জন্য সংসদ ভেঙে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি জানান তিনি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল বলেন, সত্যিকার ভোটে নির্বাচিত সরকারের কর্মকাণ্ড ভালো হয়। ভুয়া ভোটে নির্বাচিত সরকারের কাজ ভালো হয় না। যে সরকার প্রশাসন, পুলিশের মাধ্যমে ভোটে জিতে তারা জনগণকে খুশি করার বদলে পুলিশ ও প্রশাসনকেই খুশি করে। আর জনসমর্থন না থাকায় তারা জনগণের প্রতি প্রতিশোধ নিতে চায়।


ড. আসিফ নজরুল আরো বলেন, সরকারের ক্ষমতা হারানোর ভীতি থাকলে দুঃশাসন কম হয়। আওয়ামী লীগ ২০০৯ সালে সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসেছিল বলে ভালোভাবে শাসন করেছে। কিন্তু ২০১৪ সালের পরবর্তী পরিস্থিতি ছিল ভিন্ন। এই আমলে জনগণকে প্রতিবাদ পর্যন্ত করতে দেয়া হয়নি। বিরোধী দলকে সরকার নানাভাবে দমন করছে উল্লেখ করে আসিফ নজরুল বলেন, গায়েবি মামলা ও গ্রেপ্তার আতঙ্কের কারণে বিরোধী নেতাকর্মীরা মাঠে নামতে পারছে না। তাদের জনসভা করতে দেয়া হচ্ছে না। সাধারণ মানুষকে মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে। নির্বাচন যতই সামনে আসে সরকার ততই দমনমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে। জামিনযোগ্য অপরাধে মামলার পরও ব্যারিস্টার মইনুলকে জামিন দেয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেন তিনি। গোলটেবিল বৈঠকে অংশ নিয়ে ইউএসএইড বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও সুশাসন বিষয়ক ডেপুটি অফিস ডিরেক্টর স্লেভিকা রডোসেভিক বলেন, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সুশীল সমাজ একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তাদের এই আলোচনা ও সংলাপ অব্যাহত থাকবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।


বৈঠকে সাবেক রাষ্ট্রদূত এফ এ শামীম আহমেদ, মাহমুদুর রেজা চৌধুরী, ইফতেখারুল করিম, মাসুদ আজিজ, শাহেদ আখতার, পানি বিশেষজ্ঞ ম. ইনামুল হক, স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. মুজাহেরুল হক, জাতীয় পার্টির এমপি ফখরুল ইমাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
Courtesy: Manabziban Oct 28, 2018