Search

Saturday, November 17, 2018

উপেক্ষিত লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড, নির্বিকার ইসি

শামছুল ইসলাম
একাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও উপেক্ষিত থাকছে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের বিষয়টি। রাজনৈতিক দলগুলোর জোর দাবি থাকলেও এ প্রশ্নে নির্বিকার নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তফসিল ঘোষণার পর থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর ক্ষেত্রে সবার জন্য সমান সুযোগ দেয়ার ঘোষণা দেয় ইসি; কিন্তু ভোটের তারিখ পরিবর্তন, দলীয় মনোনয়ন উত্তোলন ও জমা দেয়ার সময় কর্মীদের মিছিল-সমাবেশসহ নির্বাচনী প্রচারণার ক্ষেত্রে বিশেষ সুবিধা পাচ্ছে সরকার সমর্থিত রাজনৈতিক দলগুলো। অন্য দিকে নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি পুলিশি তল্লাশি ও গ্রেফতারসহ নানা প্রতিবন্ধকতার শিকার হচ্ছে সরকারবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো।

যদিও তফসিলের দিন লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিতের আশ্বাস দিয়ে সিইসি বলেন, ভোটার, রাজনৈতিক নেতাকর্মী, প্রার্থী, প্রার্থীর সমর্থক ও এজেন্ট যেন বিনা কারণে হয়রানির শিকার না হন বা মামলা-মোকদ্দমার সম্মুখীন না হন তার নিশ্চয়তা প্রদানের জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর কঠোর নির্দেশ থাকবে। দলমত নির্বিশেষে সংখ্যালঘু, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী, ধর্ম, জাত, বর্ণ ও নারী-পুরুষভেদে সবাই ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন। ভোট শেষে নিজ নিজ বাসস্থানে নিরাপদে অবস্থান করতে পারবেন। নির্বাচনী প্রচারণায় সব প্রার্থী ও রাজনৈতিক দল সমান সুযোগ পাবে। সবার জন্য অভিন্ন আচরণ ও সমান সুযোগ সৃষ্টির অনুকূলে নির্বাচনে ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ নিশ্চিত করা হবে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তফসিল ঘোষণার পরও অব্যাহত রয়েছে পুলিশের গ্রেফতার অভিযান। বিএনপি-জামায়াত নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। বাদ যাচ্ছে না বিরোধী দলের সমর্থকেরাও। মসজিদের ইমাম থেকে শুরু করে দিনমজুর সমর্থকদেরও গ্রেফতার করা হচ্ছে। এতে সারা দেশে বিএনপি-জামায়াত নেতাকর্মী এবং ভোটারদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। আর ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহযোগিতায় নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।

গতকাল শুক্রবার সকালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর বিএনপির ৪৭২ জন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে দলটির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে। এ-সংক্রান্ত একটি তালিকা নির্বাচন কমিশনে জমা দিয়েছে দলটি।

তালিকা ছাড়াও বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দেয়া ‘বানোয়াট মামলা’ প্রত্যাহারসহ গ্রেফতার নেতাকর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তির জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে কমিশনের হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়েছে।

ইসি কর্মকর্তারা জানান, গত রোববার ভোট গ্রহণের তারিখ এক সপ্তাহ পেছানোর অনুরোধ জানিয়ে সিইসিকে চিঠি দেন যুক্তফ্রন্ট চেয়ারম্যান ডা: এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী। এ সময় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বেশির ভাগ রাজনৈতিক দল ও জোটের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ইসি ভোটের তারিখ পিছিয়ে দিলে আপত্তি করবে না দলটি। রোববার দুপুরে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলীয় মনোনয়ন ফরম বিক্রি চলাকালে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এ কথা জানান। এর পরের দিন সিইসি ভোট সাত দিন পিছিয়ে দিয়ে ৩০ ডিসেম্বর ভোটের তারিখ পুনর্নির্ধারণ করেন।

তবে গত ৮ নভেম্বর জাতির উদ্দেশে দেয়া টেলিভিশন ভাষণে সিইসি ২৩ ডিসেম্বর নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেছিলেন। এর পর থেকেই বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচনের তফসিল পেছানোর দাবি জানিয়ে আসছিল; কিন্তু ইসি এ বিষয়ে কোনো কর্ণপাত করেনি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত শুক্রবার থেকে দলীয় প্রার্থীদের কাছে মনোনয়ন ফরম বিক্রি করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। সকাল ১০টা থেকে রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে (৩/এ) এই কার্যক্রম চলে। মনোনয়নপত্র ক্রয়কে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ কার্যালয় ঘিরে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করে। সকাল থেকেই শোডাউন করতে করতে আসেন মনোনয়ন কিনতে আসা নেতাকর্মীরা।

দলে দলে মিছিল নিয়ে আসেন ধানমন্ডিমুখী মনোনয়নপ্রত্যাশীরা। ব্যানার-ফেস্টুনসহ নানা বাদ্যযন্ত্র রয়েছে তাদের বহরে। ভিড় সামলাতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে বেগ পেতে হয়।

ঢাকাসহ সারা দেশ থেকে আসা নেতাকর্মীদের সমাগমে পুরো ধানমন্ডিতে দেখা দেয় যানজট। এর মধ্যে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের মতো ঘটনাও ঘটে। অনেকেই মিছিল সহযোগে এসে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। এতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয় দলটির কার্যালয়ে। দুই গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার সময় দুইজন পথচারী নিহত হন। এর পরও পুলিশ অথবা নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি।

এমন বিশৃঙ্খল পরিবেশের ব্যাপারে দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের বিষয়টিকে স্বাভাবিকভাবে দেখার অনুরোধ জানান। তিনি বলেন, এবার মনোনয়ন ফরম কেনায় বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনা আমরা লক্ষ করছি। আমরা ডিসিপ্লিন রক্ষা করার চেষ্টা করি, কিন্তু আজকে ডিসিপ্লিন রাখার মতো অবস্থা নেই।

অন্য দিকে গত সোমবার থেকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে আগ্রহী দলের সম্ভাব্য প্রার্থীদের কাছে মনোনয়নপত্র বিক্রি শুরু করে বিএনপি। মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ উপলক্ষে নেতাকর্মীদের ব্যাপক সমাগমে সারা দিন জনসমুদ্রে ভাসতে থাকে রাজধানীর নয়াপল্টন এলাকা।

সকাল থেকেই ব্যানার-ফেস্টুনসহ মিছিল নিয়ে মনোনয়নপ্রত্যাশীরা কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আসতে থাকেন। অনেকে ব্যান্ড পার্টি, হাতি ও ঘোড়াও সাথে আনেন।

গত বুধবার সকাল থেকে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে মনোনয়নপ্রত্যাশী নেতাকর্মী-সমর্থকদের ভিড় ছিল। পুলিশ রাস্তায় তাদের দাঁড়াতে দিচ্ছিল না। 

বেলা পৌনে ১টায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বড় একটি মিছিল নিয়ে ঢাকা-৮ আসনের জন্য মনোনয়ন ফরম কিনতে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আসেন। ওই সময় কার্যালয়ের সামনে থেকে তার মিছিল সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে পুলিশ। তবে কর্মী-সমর্থকেরা সরে না যাওয়ায় একপর্যায়ে পুলিশের গাড়ি মিছিলের ওপর উঠে যায়। ওই সময় কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হন। এ নিয়ে নেতাকর্মীদের সাথে পুলিশের বাগি¦তণ্ডার ঘটনা ঘটে। মুহূর্তে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে পুলিশ নেতাকর্মীদের ওপর লাঠি চার্জ করে। এ সময় পুলিশের সাথে নেতাকর্মীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া হয়। পুলিশ প্যালেট বুলেট ও কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়ে। একপর্যায়ে পুলিশের গাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয়া হয়। এ ঘটনায় তিনটি মামলায় বিএনপির অর্ধশতাধিক নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
  • কার্টসিঃ নয়াদিগন্ত/ নভেম্বর ১৭,২০১৮ 

Thursday, November 15, 2018

শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান সংস্কারে ৫৫ কোটি টাকা ব্যয়ের তথ্য নেই অধিদফতরে!


বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ১ হাজার ৫৮৬টি শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান সংস্কার কাজ চলতি বছরের জানুয়ারিতে শুরু করে সরকার। পাঠদান উপযোগী করতে সরকারি অর্থ দিয়ে পরিচালিত এ সংস্কার কাজে ব্যয় ধরা হয় ৫৫ কোটি ৫৬ লাখ ২২ হাজার টাকা। গত বছর এ সহায়তা চেয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় একটি চাহিদা নোট পাঠায় অর্থ মন্ত্রণালয়ে।

বরাদ্দ পাওয়ার পর চলতি বছরের জুন মাসের আগেই সারাদেশে এ সংস্কার কাজ শেষ করেছে বলে দাবি শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতরের।

কিন্তু সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে গেল বছরের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত স্কুলগুলোর সংস্কার কাজের তথ্য দিতে পারেনি শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতরই।

অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী দেওয়ান মোহাম্মদ হানজালা বলেছেন, ‘সারাদেশে দেড় হাজারের অধিক শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানের সংস্কার কাজ শেষ হয়েছে।’

কিন্তু তার কাছে কাজের বিস্তারিত তালিকা এবং কাজের বিবরণ চাইলে তিনি তা দিতে পারেননি।

এ বিষয়ে প্রকল্প তত্ত্বাবধানের কাজে নিয়োজিত অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশলী (ডেস্ক-১) ইঞ্জিনিয়ার মো. আবুল হাসেম সরদারের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘আমাদের কাছে এই মুহূর্তে এর কোনো তথ্য নেই। তবে নিতে চাইলে মাঠ থেকে নিয়ে আপনাদের জানাতে হবে।’

এমন সংস্কার কাজ হলে সব ধরনের তথ্য প্রকৌশল অধিদফতরে থাকার কথা উল্লেখ করে প্রশ্ন করা হলে তিনি কৌশলের আশ্রয় নিয়ে বলেন, ‘দেখুন, আমাদের তথ্য দেওয়ার জন্য আলাদা অফিসার আছেন, আপনি বরং তার সঙ্গে যোগাযোগ করুন।’

পরে এ বিষয়ে প্রধান প্রকৌশলীর কাছে জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের তথ্য দেওয়ার জন্য ইঞ্জিনিয়ার মো. আবুল হাসেম সরদারকে নির্দেশনা দেন। পরে ইঞ্জিনিয়ার সরদারের সঙ্গে আবারো যোগাযোগ করা হলে তিনি ‘এ তথ্যের জন্য অনেক সময় দরকার’ বলে সাফ জানিয়ে দেন।

এদিকে, ওই প্রকল্পে রাজশাহী বিভাগে ২১২টি স্কুলের সংস্কার কাজের ক্ষতিপূরণ ব্যয় ধরা হয়েছিল ৬১ লাখ টাকা। স্কুলগুলোর কাজের অগ্রগতি জানতে চেয়ে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতর রাজশাহী জোনের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মিজানুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি পরিষ্কার জানিয়ে দেন, ‘আমাদের এখানে এমন কোনো ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠান ছিলও না, আমরা এর জন্য কোনো বরাদ্দ পাইনি।’

প্রকৌশলী মিজানুর রহমানের দেওয়া বক্তব্য অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী দেওয়ান মোহাম্মদ হানজালার কাছে তুলে ধরলে তিনি বিব্রতবোধ করেন। তিনি বলেন, ‘আমি জানি না তিনি কেন এটা বলেছেন যে, তারা কোনো বরাদ্দ পাননি।’

‘তবে আপনারা যা কিছুই পত্রিকায় প্রকাশ করেন সে বিষয়ে আমরা তদন্ত করব। যতি কোনো গড়মিল থাকে তাহলে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিব,’ যোগ করেন মোহাম্মদ হানজালা।

একই প্রকল্পে ঢাকা বিভাগে ৪৪৩টি স্কুলের ক্ষতিপূরণ বাবদ বরাদ্দ ছিল ১৫ কোটি ৫৭ লাখ টাকা। এ বিষয়ে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতরের মাদারীপুর জোনের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রায়হান বাদশার কাছে জানতে চাইলে তার কাছে এ ধরনের কোনো তথ্য নেই বলে জানান।

পরে অধিদফতরের একই জোনের সহকারী প্রকৌশলী এসএম হাবিবুর রহমানকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘আমরা এমন ১৮টি প্রতিষ্ঠানের তালিকাসহ একটি ইস্টিমেট পাঠিয়েছিলাম, কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো বরাদ্দ পাইনি।’

জানা গেছে, বেশ কিছু ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠান ছিল নেত্রকোনা জেলার খালিয়াজুরী উপজেলায়। সেখানে কিছু শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানা গেছে, তাদের যে পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে তা দিয়ে উল্লেখযোগ্য মেরামতের কাজ করা যায়নি। ভবনের দেয়ালে রং করা এবং স্কুলের উঠানে বাগান সংস্কার ছাড়া তেমন কিছু হয়নি।

এ বিষয়ে নেত্রকোনা জেলার খালিয়াজুরী উপজেলার পূর্ব জগন্নাথপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. দেলোয়ার হোসেন চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি পরিবর্তন ডটকমকে বলেন, প্রতিষ্ঠানের ক্ষতি যা হয়েছে তার বলতে গেলে কিছুই সংস্কার করা হয়নি। এ সংস্কার কাজ করা হয়েছে ঠিকাদারদের মাধ্যমে। তারা শুধু ভবনের দরজা, জানালা, দেয়াল ধসে যাওয়াসহ বাগান তৈরির কাজ করেছে।

খালিয়াজুরী উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো. রফিকুল ইসলাম পরিবর্তন ডটকমকে বলেন, আমাদের উপজেলায় ক্ষতিগ্রস্ত এমন ১০টি প্রতিষ্ঠান ছিল। এর মধ্যে যেসব প্রতিষ্ঠানের মেরামত কাজ হয়েছে তা দেয়াল রং আর কিছু মাটি কাটতেই বরাদ্দ শেষ হয়।

যোগাযোগ করা হলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উন্নয়ন কার্যক্রম তত্ত্বাবধানের দায়িত্বে থাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের উপসচিব সৈয়দা নওয়ারা জাহানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে- এ বিষয়ে কোনো কিছু গণমাধ্যমে বলবেন না বলে- বিষয়টি এড়িয়ে যান।
  • কার্টসিঃ পরিবর্তন.কম/ নভেম্বর ১৪, ২০১৮

ইসির আচরণের ওপর নির্ভর করছে নির্বাচনে থাকা না-থাকা

বৈঠক শেষে ঐক্যফ্রন্টের নেতারা 


জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নির্বাচনে থাকা না-থাকা নির্বাচন কমিশন (ইসি) ও সরকারের আচরণের ওপর নির্ভর করছে বলে জানিয়েছেন জোটটির নেতারা। গতকাল নির্বাচন ভবনে ইসির সঙ্গে এক বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তারা।

নির্বাচন পিছিয়ে দেয়াসহ বিভিন্ন দাবি নিয়ে গতকাল বিকালে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নুরুল হুদা ও অন্য নির্বাচন কমিশনারদের সঙ্গে বৈঠক করেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতারা। প্রায় ২ ঘণ্টাব্যাপী এ বৈঠকে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে পরস্পরকে সহযোগিতা, নির্বাচন তিন সপ্তাহ পিছিয়ে দেয়া, ইভিএম ব্যবহার না করা, সেনাবাহিনী মোতায়েন, কারাবন্দি নেতাকর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তি, হয়রানিমূলক মামলা ও গায়েবি মামলা প্রত্যাহার এবং নির্বাচনী এজেন্টদের নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেন তারা।

বৈঠক শেষে ঐক্যফ্রন্টের নেতা ড. কামাল হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, নির্বাচনের বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। আমরা আমাদের কিছু প্রশ্ন ও অভিযোগ কমিশনের কাছে তুলে ধরেছি। কমিশন বিস্তারিতভাবে এসব প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন। অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে তারা আমাদের সহযোগিতা চেয়েছেন এবং সেই সঙ্গে নিজেরাও সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। আমরা আশা করি নির্বাচন চলাকালে আমাদের মধ্যে সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।

নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের ঘটনা নিয়েও কথা হয়েছে বলে জানান ড. কামাল হোসেন। আচরণবিধি মানাতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি ইসির চিঠিই পল্টনে পুলিশের উৎসাহী ভূমিকার কারণ কিনা— এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ বিষয়ে ইসি দুঃখ প্রকাশ করেছে।

এক মাস নির্বাচন পেছানোর দাবি মানা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে ঐক্যফ্রন্টের এ শীর্ষ নেতা বলেন, সিইসি জানিয়েছে, বিবেচনা করবে। আমরা যেসব কথা বলেছি, তারা সেগুলোর নোট নিয়েছেন। অনেক বিষয়ে তারা বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছেন।

বৈঠকে ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে ইসিতে কোন বিষয়গুলো তুলে ধরা হয়েছে— এমন প্রশ্নের জবাবে ঐক্যফ্রন্টের মুখপাত্র ও বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আমরা নির্বাচন তিন সপ্তাহ পিছিয়ে দেয়ার জন্য বলেছিলাম। তারা বলেছেন, আলোচনা করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন। নির্বাচনে ইভিএম একেবারেই ব্যবহার করা যাবে না, এটি আমাদের দাবি ছিল। কমিশন বলেছে, তারা সব কেন্দ্রে ব্যবহারের কথা চিন্তা করছে না। শুধু সিটি করপোরেশনগুলোয় সীমিতসংখ্যক ইভিএম ব্যবহারের বিষয়টি চিন্তা করছে। কমিশন এও জানিয়েছে, যদি আমরা বোঝাতে পারি, ইভিএম পদ্ধতি পুরোপুরিভাবে নিরাপদ নয়, তাহলে সেটিও তারা বিবেচনা করবেন। সেনাবাহিনী মোতায়েনের বিষয়টিও এরই মধ্যে তারা চিন্তা করেছেন, তবে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে।

নির্বাচন কমিশনের কাছে জনপ্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের রদবদলের দাবি জানিয়েছে ঐক্যফ্রন্ট। কমিশন সেটি কীভাবে করা যেতে পারে, তা বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছেন বলে জানান মির্জা ফখরুল।

বৈঠকে আলোচিত অন্য বিষয়গুলো সম্পর্কে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা কারাবন্দি নেতাকর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তি, হয়রানিমূলক মামলা ও গায়েবি মামলা প্রত্যাহারের কথা বলেছি, তারা এ ব্যাপারে আমাদের কাছে তালিকা চেয়েছেন। আমরা তাদের বলেছি, পুলিশ প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে একটি নির্দেশ জারি করতে, যাতে অন্যায়ভাবে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে যেন কাউকে গ্রেফতার করা না হয়। কমিশন এ বিষয়ে খুব ইতিবাচকভাবে চিন্তা করে ব্যবস্থা নেবেন বলে জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, আমরা নির্বাচনী এজেন্টদের নিরাপত্তা প্রদানের বিষয়ে বলেছি। এ বিষয়ে তারা নিশ্চিত করেছেন। নির্বাচনী পর্যবেক্ষকদের বিষয়ে কমিশনের কোনো বাধা থাকবে না। রিটার্নিং ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগে রাজনৈতিক পরিচয় বিষয়ে যে অভিযোগ তা ইসি খতিয়ে দেখবে বলে আমাদের জানিয়েছে। গণমাধ্যমের বিষয়ে কমিশন বলেছে, গণমাধ্যম কেন্দ্রের ভেতরে ছবি ধারণ করতে পারবে। কিন্তু সরাসরি সম্প্রচার করতে পারবে না।

মির্জা ফখরুল বলেন, মোট কথা কমিশন সবই শুনেছে। প্রতিবারই শোনে। কতটুকু করবে, আর কতটুকু করছে এটা জনগণ ও আপনারা বিবেচনা করবেন। আমরা আন্তরিকভাবে মনে করি দেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য ইসিকে সংবিধান প্রদত্ত যে অধিকার ও দায়িত্ব দেয়া রয়েছে, সে দায়িত্ব পালন করলে এবং নিরপেক্ষভাবে সব রাজনৈতিক দলের ওপর ব্যবহার করলে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হতে পারে। আর বিরোধী দলের নির্বাচনে টিকে থাকাটা নির্বাচন কমিশনের আচরণের ওপর নির্ভর করছে।

নয়াপল্টনে যা হলো, তাতে নির্বাচনে টিকে থাকার প্রথম ধাপটি কেমন মনে হচ্ছে? এমন প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, একেবারেই ভালো নয়। এটি শুভ লক্ষণ নয়। নির্বাচন কমিশন ও বর্তমান নির্বাচনকালীন সরকারের ওপর নির্ভর করছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নির্বাচনে থাকা না-থাকা।

  • কার্টসিঃ বনিক বার্তা/ নভেম্বর ১৫, ২০১৮

আমানত ফেরত দিতে পারছে না আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো - যথাযথ ব্যবস্থা নিক বাংলাদেশ ব্যাংক

সম্পাদকীয়
দেশের আর্থিক খাতের অবস্থা দিন দিন নাজুক হচ্ছে। ব্যাংকের পাশাপাশি ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের (এনবিএফআই) অবস্থাও খারাপের দিকে যাচ্ছে। গতকাল বণিক বার্তায় প্রকাশিত সংশ্লিষ্ট এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশে কার্যক্রম পরিচালনাকারী ৩৪টি এনবিএফআইয়ের ১৩টিই ‘রেড জোন’ বা বিপজ্জনক হিসেবে চিহ্নিত করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আমানত তুলে নিতে প্রতিনিয়ত আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ধরনা দিচ্ছেন ক্ষুদ্র সঞ্চয়কারীরা। এসব প্রতিষ্ঠানকে আমানত দিয়ে বিপাকে আছে ব্যাংকগুলোও। গ্রাহকরা এসব প্রতিষ্ঠান থেকে অর্থ ফেরত দিচ্ছেন না। আমরা ব্যাংকিং খাতের পরিচালনা পর্ষদের বিভিন্ন দুর্নীতি ও অনিয়মের কথা জেনেছি অনেক আগেই, ব্যাংকগুলোর অনেক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে দুদক তত্পরও হয়েছে। নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের দুর্নীতিগ্রস্ত পরিচালক ও কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধেও দুদক যেন তাদের কার্যক্রম চালু করে। দুর্নীতিগ্রস্ত পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দেয়ারও প্রস্তাব উঠেছে।

অর্থনীতির বিশ্লেষকরা এরই মধ্যে এ ধরনের পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দেয়ার সুস্পষ্ট পরামর্শ দিয়েছেন। তদন্তসাপেক্ষে এ পরামর্শ মেনে চলাই হবে যুক্তিযুক্ত কাজ। বাংলাদেশ ব্যাংক সন্দেহযুক্ত ও অভিযুক্ত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যক্রম মনিটর করার জন্য পর্যবেক্ষক বসিয়েছে বলে জানা গেছে। পর্যবেক্ষকরা কোনো ধরনের সুবিধায় প্রলুব্ধ হয়ে কিংবা উচ্চ মহলের প্রভাবে যাতে পরিস্থিতির ভিন্ন ব্যাখ্যা দিতে না পারে, বাংলাদেশ ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে অবশ্যই।

দেশের আর্থিক খাত, বিশেষত ব্যাংকিং সেক্টরে চলছে বিশৃঙ্খলা, অনিয়ম ও দুর্নীতি, যার প্রভাব পড়ছে সামগ্রিক অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে। কাঙ্ক্ষিত অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে এতে। খেলাপি ঋণের সংস্কৃতি ও অনিয়ম-দুর্নীতি রোধ করতে না পারলে তা সংক্রমিত হয়ে আরো বাড়বে, বলাই বাহুল্য। তাই বড় ব্যাংকের বড় ঋণ খেলাপ ও দুর্নীতি তো বটেই, ছোট প্রতিষ্ঠানের ছোট খেলাপ ও দুর্নীতি— কোনোটাকেই ছাড় দেয়া যাবে না। ব্যাংকের মতো এনবিএফআইয়ে কঠোর তদারকি নিশ্চিত করতে হবে। কারণ তাদের কাছে গচ্ছিত জনগণের আমানতের পরিমাণ ক্রমে বেড়ে উঠছে। তাদের কার্যক্রমে আরো স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠায় স্বতন্ত্র অডিটসহ বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগের সক্ষমতা আরো বাড়াতে হবে। যেসব প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ব্যাংকের গাইডলাইন মেনে ব্যবসা করছে না, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নিতে হবে। রেড জোনে থাকা এনবিএফআইগুলোকে কীভাবে গ্রিন জোনে আনা যায়, তার পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং সে অনুযায়ী পদক্ষেপ নিতে হবে। যেসব প্রতিষ্ঠানে পরিচালনা পর্ষদ অনিয়ম ও দুর্নীতিতে জড়িত, তাদেরও শাস্তির আওতায় আনতে হবে। ভুললে চলবে না ব্যাংকের মতো এনবিএফআইগুলোয় অনেক ক্ষুদ্র গ্রাহকের অর্থ সঞ্চিত রয়েছে, যার রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব বাংলাদেশ ব্যাংক ও সরকারেরও।

  • কার্টসিঃ বনিক বার্তা/ নভেম্বর ১৫, ২০১৮

Improve ease of doing business to attract more FDI

ICCB suggests

Bangladesh should make all-out efforts to improve its position in the Ease of Doing Business index of the World Bank in order to attract more FDI, a leading chamber said yesterday.

In order to plug the investment shortfall for its infrastructure needs, the country has to explore alternative sources of funding, the International Chamber of Commerce-Bangladesh (ICCB) shared the info in the editorial of the current News Bulletin (July-Sept 2018) released yesterday.

Desired investment is not flowing into the country because of the absence of an appropriate investment environment caused by insufficient infrastructure, port congestion and poor transportation facilities, according to experts.

FDI is only moving forward because of the reinvestment of current investments, the chamber said. Bangladesh is likely to be one of the biggest movers in the global gross domestic product (GDP) in 2030 as predicted by HSBC's global report titled “The World in 2030”, ICCB said.

The country is going to become the 26th largest economy in the world from the current 42nd position followed by the Philippines, Pakistan, Vietnam and Malaysia, according to the report.

The brand value of Bangladesh is also rising as the country has ranked 39th in the global brand value index 2018 reflecting its socioeconomic vivacity. Bangladesh has a brand value of $257 billion, up 24 percent from last year, according to the London-based Brand Finance's 'Nation Brands 2018' report.

Bangladesh economy has kept up an impressive annual average growth rate of more than 6 percent over the last 10 years and has been having increased GDP over the last couple of years.

It is believed that Bangladesh could have easily achieved 8 percent plus growth by controlling the project implementation time, which would automatically minimise the project cost, the ICCB said.

For about a decade, private investment to GDP ratio has been stuck at 21-23 percent. But according to the country's growth ambitions, the ratio has to be about 35 percent. 

A number of Asean countries have achieved higher GDP as their investment to GDP ratio has been in the range of 35-45 percent.

Early implementation of the “One-Stop Service” will hopefully help the country attract higher FDI, the chamber said.

A number of US companies are seriously considering relocating their operations from China in view of the current trade war between China and the US.

Bangladesh should be able to capitalise on this situation, the chamber said.

  • Courtesy: The Daily Star/ Business/ Nov 15, 2018

Customs releases export containers unscanned

Mohammad Suman

More than 2,386,500 export containers got through Chittagong Custom House (CCH) without scanning in the last eight years, which experts believe might have led to money laundering, smuggling and a huge loss of revenue.

The National Board of Revenue (NBR) made container scanning mandatory in September 2009.

Since then, the CCH has received around Tk 50 crore as fees to scan 24 lakh export containers. Both exporters and importers have to pay a scanning fee of $1.5 and $3 respectively for 20-foot and 40-foot containers.

According to experts, a lack of scanning exposes the country to a loss of valuable archaeological artefacts, live animals or the export of restricted goods.

A study conducted by CCH in December 2016 on the pros and cons of forming a scanning division showed the incidence of smuggling and false declaration cases.

Maruful Islam, former CCH commissioner, also acknowledged the risks.

“There is no data on the actual type and quantity of goods that have been exported.”

It is very easy to make false declaration or smuggle barred items for a lack of checking, he told The Daily Star.

Furthermore, there are export goods that are eligible to receive cash incentives, but whether those items were exported remains to be questioned, he added.

There is a window of opportunity for money laundering by false declaration of goods, said the commissioner.

According to a report sent by the CCH to the NBR in January 2017, only four scanners were being used to scan the import containers only.

The report proposed the installation of eight scanners for all containers.

According to customs officials, authorities began scanning import containers with four machines worth Tk 57 crore in 2010; export containers remained out of the purview due to an inadequate number of scanners.

Customs officials said there are scanners at only four out 12 gates at the port and the NBR and CCH failed to install any more scanners despite several initiatives.

Explaining past efforts, AKM Nuruzzaman, commissioner of CCH, said, “We floated a tender in March to procure scanning machines. But the tender was later cancelled as only one company participated.”

A tender will be floated soon to buy two scanners. “We hope they will be up and running by the end of the year.”

A high official of CCH said the scanning of import containers often reveal irregularities in documentation and product type. According to the 2016 study, at least 150 import containers were seized a month at that time for irregularities.

It only shows the extent to which there must be irregularities in the export containers as well, the official added.

  • Courtesy: The Daily Star/ Nov 15, 2018

The one-eyed election authorities and a festive violation

EDITORIAL
THE Election Commission on November 10 issued orders for the law enforcement agencies not to allow political parties and alliances to hold rallies and marches before the next general elections, then scheduled for December 23 and now posted for December 30. But Awami League leaders and their countless supporters streamed down in processions to collect nomination forms from the party president’s office at Dhanmondi in Dhaka. The party started selling nomination forms on November 9 and ended the sales on November 13 and all the while, the people who marched down the roads and gathered around the party president’s office brought life there to a standstill and caused severe traffic congestion in surrounding areas. The commission again on November 13 issued similar orders for the law enforcement agencies while the Awami League’s political opponent Bangladesh Nationalist Party started selling nomination forms from the party’s central office at Naya Paltan in Dhaka on November 12, meant to continue till November 16. While the commission overlooked what the Awami League did, it hardly tolerated what the BNP did, leaving a level playing field, much trumpeted by the incumbents, a martyr to the commission’s partisan whims.

The Election Commission sought to see the marches and gatherings of the incumbent political party as election-time festivity, which conveniently kept the commission and the law enforcement agencies off taking any action against the incumbent party for the violation of the electoral code of conduct, sugar-coated as festivity. When the nomination sales affairs of the Awami League ended, the commission asked the law enforcement agencies to become stringent in stopping similar ‘festivity’, laid bare as the violation of electoral code of conduct. Clashes, however, took place in front of the BNP office at Naya Paltan on Wednesday when the police charged with truncheons at marchers of BNP leaders having reached there to collect nomination forms. More than two dozen of the BNP people were injured. The commission seeks to say that demonstrations are strictly prohibited by the Representation of the People Order 1972. It is welcome that the commission started acting against electoral code violation but what is to be rued is that the commission conveniently, and wrongly, forgot to act when the incumbent political party leaders marched down the road in a similar manner. In view of this, the commission, which appears to have become one-eyed, cannot but avoid the responsibility for Wednesday’s clashes.

The Election Commission must be fair in its judgement of the behaviour of political parties by not overlooking things bad about the political incumbents while getting down heavily only on the opposition parties for the same bad things. The commission, thus, seems to be running the risk of the hitherto-viewed inclusiveness of the national elections. It must remember that it should not take it for granted that all the parties in the opposition would continue to be in the electoral fray, just because they have once agreed to, even if it plays foul with them. And if they stay off the process, it is the government and the commission that would remain responsible. The commission must be fair to take all parties on board towards the elections.

  • Courtesy: New Age/ Nov 15, 2018

Increase women's representation in parliament

EDITORIAL

One way to ensure gender equality


Some 150 female politicians belonging to Awami League, BNP and Jatiya Party voiced a demand for political parties to nominate at least 30 percent seats for women at a conference on “Advancing women's leadership in the national elections” on November 13. That we have had only about five percent women contesting elections in the last general elections held in 2014 speaks volumes of the state of women's representation or lack of it in parliament. There is much debate about women's empowerment these days and yet we find political parties shying away from nominating women to run for office. While there are reserved seats for women in the parliament for the winning party or alliance, the time has come for direct participation in polls.

We would like to see women members of parliament (MPs) who have a track record of being elected (in open contest) nominated by their respective parties in the upcoming general elections. Also, there are women in politics who have clearly demonstrated that they enjoy wide public support and they should be promoted as candidates. Last, but not the least, women who enjoy a similar standing as their male counterparts, may be considered as potential electoral candidates.

The two major political parties in the country are both headed by women. Indeed, women have been taking leadership roles in all spheres of life and it is only just that they should be part of the process which formulates policies that steer the country forward. The 30 percent representation demanded, we believe, is a move in the right direction because without more female MPs, we cannot expect gender-sensitive policies to be enacted into law.

  • Courtesy: The Daily Star/ Nov 15, 2018

Wednesday, November 14, 2018

প্রবৃদ্ধিতে জোয়ার বর্ণহীন কর্মবাজার

বাংলাদেশের ধারাবাহিক উচ্চহারের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিয়ে বিশ্বজুড়েই এক ধরনের উচ্ছ্বাস আছে। এর সঙ্গে সঙ্গতি রেখে বেড়েছে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য, শিল্পের পরিকাঠামো, ব্যাংকঋণ, দেশী ও বিদেশী বিনিয়োগ। পুরনো শহরের পাশে গড়ে উঠছে আধুনিক উপশহর। দেশের গুরুত্বপূর্ণ বড় শহরগুলোয় ফ্লাইওভারের আধিক্য। এসবই উন্নয়ন গবেষকরা বাংলাদেশের দিনবদলের শুভ লক্ষণ মনে করেছেন।

তবে এ সচ্ছলতা ও কর্মযজ্ঞের উচ্ছ্বাসের হদিস পাওয়া যাচ্ছে না কর্মবাজারে। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির উচ্চহারের সঙ্গে কর্মবাজারের যোগাযোগহীনতা কিছুটা বিস্ময়েরও বটে। ভালো প্রবৃদ্ধি যদি ভালো কাজের বাজার তৈরি করতে না পারে, তাহলে বিপুলসংখ্যক তরুণ জনগোষ্ঠীর কাছে তার উপযোগিতাইবা কী? প্রশ্নটি অর্থনীতিমনস্ক, সমাজমনস্ক নাগরিক সমাজ তো বটেই, সাধারণ মানুষের পক্ষেও এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব নয়।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য বলছে, বাংলাদেশের অর্থনীতি যে গতিতে বাড়ছে, প্রাতিষ্ঠানিক কর্মসংস্থান সে হারে হচ্ছে না। উল্টো মোট কর্মসংস্থানে প্রাতিষ্ঠানিক কর্মসংস্থানের হার ক্রমেই কমছে। ১৯৯৯-২০০০ অর্থবছরে যখন দেশে জিডিপির প্রবৃদ্ধি ছিল ৫ দশমিক ৩ শতাংশ, তখনো প্রাতিষ্ঠানিক কর্মসংস্থানের হার ছিল ২৪ দশমিক ৮ শতাংশ। ২০১৫-১৬ অর্থবছর থেকে জিডিপির প্রবৃদ্ধি ৭ শতাংশের গণ্ডি পেরিয়েছে। এর বিপরীতে কমেছে প্রাতিষ্ঠানিক কর্মসংস্থানের সুযোগ। ২০১৫-১৬ অর্থবছর ৭ দশমিক ১ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি হলেও প্রাতিষ্ঠানিক কর্মসংস্থানের হার দাঁড়িয়েছে মাত্র ১৩ দশমিক ৮ শতাংশে। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয় ৭ দশমিক ২৮ শতাংশ আর প্রাতিষ্ঠানিক কর্মসংস্থান ছিল ১৪ দশমিক ৯ শতাংশ। অর্থাৎ ৮৫ শতাংশ কর্মসংস্থানই অপ্রাতিষ্ঠানিক।

প্রাতিষ্ঠানিক কর্মসংস্থান হলো প্রতিষ্ঠিত কোনো কর্মচুক্তির অধীনে কর্মী নিয়োগ। এ চুক্তিতে কর্মীর বেতন বা মজুরি, স্বাস্থ্য সুবিধা, কর্মঘণ্টা ও কর্মদিবসের নির্দিষ্ট বিবরণ থাকে। নিয়োগদাতা কর্মীকে অবহিত করার মাধ্যমে এ চুক্তিতে পরিবর্তন আনতে পারে। প্রাতিষ্ঠানিক কর্মচুক্তির আওতায় নিয়োজিত কর্মীদের সাধারণত বার্ষিক পারফরম্যান্স নিরীক্ষা এবং এর ভিত্তিতে বেতন বৃদ্ধি ও পদোন্নতির সুবিধা দেয়া হয়। অন্যদিকে অপ্রাতিষ্ঠানিক কর্মসংস্থান বিদ্যমান আইনি অথবা নিয়ন্ত্রক ফ্রেমওয়ার্কের অধীনে নিবন্ধিত, নিয়ন্ত্রিত বা সুরক্ষিত থাকে না। কর্মসংস্থানের নিরাপত্তা বিধানকারী চুক্তি, সুযোগ-সুবিধা, সামাজিক নিরাপত্তা অথবা শ্রমিকদের প্রতিনিধিত্ব করার মতো সুযোগ পান না এ শ্রমিকরা। আর পেশাগত অবস্থানের কারণে যেসব চাকরির নিরাপত্তাহীনতা তুলনামূলক বেশি, সেগুলোকে ভালনারেবল এমপ্লয়মেন্ট (ভঙ্গুর কর্মসংস্থান) হিসেবে সংজ্ঞায়িত করেছে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও)। এসব কর্মসংস্থানে কর্মীর সঙ্গে প্রতিষ্ঠানের আনুষ্ঠানিক কোনো চুক্তি, বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা বা সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রমে প্রবেশাধিকার তেমন একটা থাকে না। দেশের মোট কর্মসংস্থানের অর্ধেকের বেশি ভঙ্গুর।

আইএলওর সর্বশেষ ডাটা ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০০০ সালে বাংলাদেশে মোট কর্মসংস্থান ছিল ৪ কোটি ৬০ লাখ। ২ কোটি ৯৯ লাখই ছিল ভঙ্গুর। ২০০৫ সালে ৫ কোটি ১৯ লাখ কর্মসংস্থানের মধ্যে ভঙ্গুর ছিল ৩ কোটি ৩১ লাখ। আর ২০১২ সালে ভঙ্গুর কর্মসংস্থান ছিল ৩ কোটি ৫৬ লাখ। সে বছর কর্মে নিয়োজিত ছিলেন মোট ৫ কোটি ৮৬ লাখ কর্মক্ষম মানুষ। ২০১৭ সালে দেশে মোট ৬ কোটি ৩৭ লাখ কর্মসংস্থানের মধ্যে ভঙ্গুর ছিল ৩ কোটি ৬৬ লাখ। সংস্থাটির  ২০১৮ সালের প্রক্ষেপণ অনুযায়ী, চলতি বছর শেষে দেশে মোট কর্মসংস্থান হবে ৬ কোটি ৪৯ লাখ, যার মধ্যে ৩ কোটি ৭৩ লাখই ভঙ্গুর। চলতি বছরের প্রক্ষেপণ অনুযায়ী দেশে মোট কর্মসংস্থানের ৫৭ শতাংশই ভঙ্গুর। আর ২০১৯ সালে মোট কর্মসংস্থান হবে ৬ কোটি ৬১ লাখ, এর মধ্যে ৩ কোটি ৭৯ লাখ কর্মসংস্থানই হবে ভঙ্গুর।

ভঙ্গুর এ কর্মসংস্থানের মধ্যে আছে বিপুলসংখ্যক ভাসমান শ্রমিক, নারী গৃহশ্রমিক ও শিশুশ্রমিক। আইএলওর হিসাবে, দেশে শিশুশ্রমিকও রয়েছে প্রায় ১২ লাখ। স্পিনিং, অ্যালুমিনিয়াম, তামাক-বিড়িসহ ডজনখানেক উৎপাদনশীল খাতে কাজ করছে তারা। শিশুশ্রমিকের উপস্থিতি রয়েছে সেবা খাতেও।

অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হারকেই প্রশ্নবিদ্ধ বলছেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা অর্থনীতিবিদ ড. এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম। বণিক বার্তাকে তিনি বলেন, অন্য অনেক সূচকের সঙ্গে এ প্রবৃদ্ধিকে সামঞ্জস্যপূর্ণ মনে হয় না। এছাড়া প্রযুক্তিগত উন্নয়নের মাধ্যমে উদ্যোক্তারা এখন ক্যাপিটাল ইনটেনসিভ প্রডাকশন মেথড ও লেস লেবার ইনটেনসিভ প্রডাকশন মেথড বেছে নিচ্ছেন। কাজেই কর্মসংস্থান খুব একটা বাড়ছে না। বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ একেবারেই বাড়ছে না। জিডিপির আনুপাতিক হিসাবে ২০০৮-০৯ অর্থবছরে যা ছিল, তার চেয়ে কিছুটা বেশি বেড়েছে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে। বিনিয়োগ না বাড়লে প্রবৃদ্ধি ও কর্মসংস্থান দুইয়ের ওপরই এর প্রভাব দেখা যায়। এগুলো মূলত বেসরকারি খাতে অপ্রতুল বিনিয়োগ ও শ্রমবিকল্প প্রযুক্তির আবির্ভাবের প্রতিফলন।

প্রাতিষ্ঠানিক কর্মসংস্থানে বড় ধরনের সম্ভাবনা তৈরি করেছিল টেলিকম খাত। শুরুর দিকে ভালো প্রত্যক্ষ কর্মসংস্থানও হচ্ছিল খাতটিতে। কিন্তু কয়েক বছর ধরেই প্রত্যক্ষ কর্মসংস্থান কমিয়ে আনছে সেলফোন অপারেটররা। তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে কাজ করিয়ে নিচ্ছে। চাকরিপ্রার্থীদের জন্য একসময়ের আকর্ষণীয় খাতটির কর্মসংস্থানে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। নতুন করে কর্মসংস্থানের সুযোগও সীমিত হয়ে এসেছে। সাম্প্রতিক সময়ে গ্রামীণফোন ও বাংলালিংক কর্মী সংখ্যা কমিয়ে আনতে নানা কর্মসূচি বাস্তবায়ন করেছে।

সেলফোন অপারেটরদের বৈশ্বিক সংগঠন গ্লোবাল সিস্টেম ফর মোবাইল কমিউনিকেশনস অ্যাসোসিয়েশনের (জিএসএমএ) তথ্য বলছে, ২০১৫ সালে দেশে সেলফোন সেবা খাতে আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক কর্মসংস্থান ছিল ৭ লাখ ৬৫ হাজার। এর মধ্যে পরোক্ষ কর্মসংস্থান ৫ লাখ ২০ হাজার। বাকি ২ লাখ ৪৫ হাজার প্রত্যক্ষ কর্মসংস্থান। খাতটিতে প্রত্যক্ষ কর্মসংস্থানের মধ্যে আনুষ্ঠানিকের চেয়ে অনানুষ্ঠানিক কর্মসংস্থান হয়েছে তিন গুণেরও বেশি। প্রত্যক্ষ কর্মসংস্থানে অনানুষ্ঠানিক যেখানে ১ লাখ ৯৫ হাজার, আনুষ্ঠানিক কর্মসংস্থান সেখানে মাত্র ৫০ হাজার।

বর্তমান বিশ্বে টেলিযোগাযোগ প্রতিষ্ঠানগুলোর বহুমাত্রিক সেবাদানের সুযোগ থাকলেও দেশে সরকারের নীতিগত বাধার কারণে সেটি সম্ভব হচ্ছে না বলে মনে করেন তথ্যপ্রযুক্তি গবেষণা প্রতিষ্ঠান লার্নএশিয়ার সিনিয়র পলিসি ফেলো আবু সাইদ খান। বণিক বার্তাকে তিনি বলেন, নিয়ন্ত্রকের অদক্ষতা কাজে লাগিয়ে জনবল কমিয়ে মুনাফা বৃদ্ধির সুযোগ নিচ্ছে সেলফোন অপারেটররা। এছাড়া টেলিযোগাযোগ প্রতিষ্ঠানগুলোর বিভিন্ন পদে বিদেশী কর্মীরা কাজ করছেন। যদিও এ খাতের প্রতিষ্ঠানগুলো পুরোপুরিভাবেই দেশীয়দের দ্বারা পরিচালিত হওয়ার পর্যায়ে চলে এসেছে। বিদেশী কর্মী নিয়োগের কারণেও খাতটিতে কর্মসংস্থানের সুযোগ কমছে।

দেশে প্রাতিষ্ঠানিক কর্মসংস্থানের সবচেয়ে বড় খাত তৈরি পোশাক শিল্প। এ খাতের সম্প্রসারণও থেমে আছে। এর ওপর যোগ হচ্ছে প্রযুক্তির ব্যবহার। সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশের পোশাক শিল্পও দ্রুত অটোমেশনের দিকে এগোচ্ছে। স্বয়ংক্রিয় যন্ত্র ও রোবট এখন তাদের কর্মস্থল দখলে নিতে শুরু করেছে। এতে কর্ম হারানোর শঙ্কায় ভুগছেন এ খাতের শ্রমিকরা। এরই মধ্যে বড় কারখানাগুলোয় এর প্রভাবও দেখা যাচ্ছে। সেই সঙ্গে কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তাহীনতার বিষয়টিও পোশাক শিল্পে কর্মসংস্থান বৃদ্ধির সুযোগ সংকুচিত করে আনছে।

তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর হিসাব বলছে, ২০১১-১২ অর্থবছরে দেশে পোশাক কারখানা ছিল ৫ হাজার ৪০০টি। এতে কর্মসংস্থান হয়েছিল ৪০ লাখ মানুষের। ২০১৭-১৮ অর্থবছর শেষে কারখানার সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৫৬০টিতে। কিন্তু কর্মসংস্থান ৪০ লাখেই আটকে আছে। সাত বছর ধরে পোশাক খাতের কর্মসংস্থানে এ স্থবিরতা চলছে।

ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের (ডিসিসিআই) সভাপতি আবুল কাসেম খান বলেন, যে অনুপাতে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হওয়ার কথা, সে অনুপাতে হচ্ছে না, এটা অস্বীকার করার উপায় নেই। বাংলাদেশে এখন যে জিডিপি প্রবৃদ্ধি, তা রাষ্ট্রায়ত্ত খাতচালিত। রাষ্ট্রায়ত্ত খাতের প্রবৃদ্ধি জিডিপি প্রবৃদ্ধিতে অনেক সাহায্য করছে। কিন্তু রাষ্ট্রায়ত্ত খাতের কর্মসংস্থান মূলত নির্মাণকাজে। এ খাতে জনবলের প্রয়োজন কম, পাশাপাশি এ কর্মসংস্থান অস্থায়ী। এ খাতে প্রযুক্তিনির্ভরতা বেড়ে যাওয়ায় জনবলের প্রয়োজনও কমে আসছে। বেসরকারি খাতের প্রবৃদ্ধি জিডিপির অনুপাতে স্থবির হয়ে আছে। অথচ বেসরকারি খাতেই কর্মসংস্থান সৃষ্টি হওয়ার সুযোগ বেশি। আমরা ধারাবাহিকভাবে সংগঠনের পক্ষে বলে আসছি, বিনিয়োগের মাধ্যমে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে আমাদের প্রণোদনা ও উৎসাহ দেয়া হোক। কর-অবকাশ, ব্যবসার সহজ প্রক্রিয়া— এ ধরনের আরো অনেক সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে পারলে বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়বে। বিনিয়োগ বাস্তবায়নে বিলম্ব হলেই বিনিয়োগ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন বিনিয়োগকারীরা। প্রযুক্তির কারণে চাকরির ক্ষেত্র সীমিত হয়ে আসতে শুরু করেছে। এজন্য এখন শ্রমঘন শিল্পে অগ্রাধিকারমূলক বিনিয়োগ প্রয়োজন। এখন অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলা হচ্ছে, সেখানে বিপুল পরিমাণ কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। কিন্তু সেখানেও সুষম কর্মসংস্থান নিশ্চিতের জন্য অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলো গড়ে তুলতে হবে সুষমভাবে। যেখানে-সেখানে অর্থনৈতিক অঞ্চল করলে হবে না।

দেশের প্রাতিষ্ঠানিক কর্মসংস্থানের গুরুত্বপূর্ণ খাতের অন্যতম ব্যাংক। সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে দেশে তফসিলভুক্ত ব্যাংক রয়েছে ৫৯টি। এর মধ্যে নতুন ব্যাংক ১২টি। গত এক দশকে ব্যাংকিং খাতে বিপুল কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু প্রাতিষ্ঠানিক কর্মসংস্থান হিসেবে ব্যাংকে চাকরির নিশ্চয়তা এখন আর নেই। ব্যাংকিং খাতের অপরিকল্পিত বিনিয়োগ, ডিজিটাইজেশন ও অটোমেশনের কারণে কর্মক্ষেত্র হিসেবে খুব ঝুঁকিমুক্ত নয় এ খাতও।

ব্যাংক নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) চেয়ারম্যান ও ঢাকা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বণিক বার্তাকে বলেন, প্রযুক্তির উত্কর্ষের কারণে বিশ্বব্যাপী ব্যাংকিং খাত অটোমেশন ও ডিজিটাইজেশনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এটা ঠিক, অটোমেশন ও ডিজিটাইজেশনের ফলে আগের মতো চাকরির পদ সৃষ্টি হচ্ছে না। ম্যানুয়ালি যে কাজ করতে ১০ জনের দরকার হতো, প্রযুক্তির মাধ্যমে তা পাঁচজন দিয়েই সম্ভব হচ্ছে।

শোভন কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে নানা শিল্পপল্লী গড়ে তোলার। এর একটি সাভারের চামড়া শিল্পনগরী। হাজারীবাগ থেকে চামড়া কারখানা এরই মধ্যে সরিয়ে নেয়া হয়েছে চামড়া শিল্পনগরীতে। যদিও চামড়া শিল্পপল্লীতে অনেক কারখানাই এখনো চালু করা সম্ভব হয়নি। ফলে রফতানি আয়ের গুরুত্বপূর্ণ খাতটিতে কর্মসংস্থান না বেড়ে উল্টো কমছে।

ট্যানারি ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সভাপতি আবুল কালাম আজাদ বণিক বার্তাকে বলেন, হাজারীবাগে থাকাকালে ২০-২৫ হাজার শ্রমিক ট্যানারিতে কর্মরত ছিলেন। ট্যানারি খাতে বর্তমানে বৈধ নিয়োগপ্রাপ্ত ও নিয়োগ ছাড়া ১২-১৫ হাজার শ্রমিক কর্মরত। হাজারীবাগ থেকে ট্যানারি স্থানান্তরের কারণে নতুন নিয়োগ তো হয়ইনি, বরং পুরনো অনেক শ্রমিক চাকরি হারিয়েছেন। ট্যানারি স্থানান্তরের পর অনেক কারখানাই পুরোদমে চালু হয়নি।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ৪৬টি রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানে জনবল ছিল ১ লাখ ৬৬ হাজার। পরের অর্থবছর তা কমে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৬৫ হাজার। আর চলতি অর্থবছর শেষে এ সংখ্যা দাঁড়াবে ১ লাখ ৬৪ হাজারে।

প্রাতিষ্ঠানিক কর্মসংস্থানের ক্ষেত্র সরকারি চাকরিতে বিপুলসংখ্যক পদ শূন্য পড়ে আছে। ১৭ লাখ ৬২ হাজার ১৯৫টি অনুমোদিত পদের বিপরীতে ৩ লাখ ৯৯ হাজার ৮৯৭টি পদ শূন্য আছে। এর মধ্যে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর পদ শূন্য রয়েছে যথাক্রমে ৪৮ হাজার ও ৬৫ হাজার। তৃতীয় শ্রেণীর সরকারি চাকরিতে শূন্য পদের সংখ্যা দুই লাখ ও চতুর্থ শ্রেণীতে ৭৯ হাজার।

দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে কর্মসংস্থানে প্রবৃদ্ধি না হওয়ার জন্য কর্মদক্ষতার অভাবকে অন্যতম কারণ হিসেবে দেখছেন নীতিনির্ধারকরা। শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক বণিক বার্তাকে বলেন, কর্মসংস্থানে আমাদের অন্যতম দুর্বলতার জায়গা হলো দক্ষতা। দক্ষতা বৃদ্ধিতে সরকার বড় কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। দেশের শ্রমঘন পোশাক খাতে কাজ করেন দেড়-দুই লাখ বিদেশী। তারা বিপুল পরিমাণ অর্থ নিচ্ছেন দক্ষতা কাজে লাগিয়েই। শিক্ষিত বেকারদের মানসিকতার পরিবর্তনও প্রয়োজন।

শিল্পে বৈচিত্র্য আনার মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড যদি আরো সক্রিয় করা যেত, তাহলে চিত্রটি ভিন্ন হতে পারত বলে মনে করে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজ (বিআইএলএস)। সংস্থাটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও নির্বাহী পরিচালক মো. জাফরুল হাসান বণিক বার্তাকে বলেন, দেশে সম্ভাবনাময় শিল্পের ঘাটতি নেই। কিন্তু সে সম্ভাবনা কাজে লাগানো যাচ্ছে না। তাই প্রবৃদ্ধির সঙ্গে তাল মিলিয়ে শোভন কর্মসংস্থানও সৃষ্টি করা যাচ্ছে না। দেশে শিল্প বলতে যেন পোশাক বাদে অন্য কিছু নেই। এ পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর। কোনো কারণে খাতটির সমস্যা হলে পুরো কর্মবাজারেই বিপর্যয় নেমে আসবে। এ কারণেই অন্যান্য খাতে মনোযোগ দেয়া প্রয়োজন। সেটা সম্ভব হলে কর্মসংস্থান প্রবৃদ্ধি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হবে। আর ভালনারেবল কর্মসংস্থানের কারণ মূলত আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল না হওয়া।
  • কার্টসিঃ বনিক বার্তা/ নভেম্বর ১৩,২০১৮

বাংলাদেশ ব্যাংক অর্থ মন্ত্রণালয়ের অংশে পরিণত হয়েছে - আফতাব উল ইসলাম

বাংলাদেশ ব্যাংক অর্থ মন্ত্রণালয়ের অংশে পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক ও ব্যবসায়ী নেতা এ কে এম আফতাব উল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে আমি দুঃখের সঙ্গে বলছি, এখন বাংলাদেশ ব্যাংক অর্থ মন্ত্রণালয়ের অংশে পরিণত হয়েছে। যা কিছু আসে, তা অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে আসে। সেটা হোক ঋণ পুনঃতফসিল অথবা অন্য কিছু।’

আজ মঙ্গলবার আমেরিকান চেম্বার অব কমার্স ইন বাংলাদেশ (অ্যামচেম) আয়োজিত এক মধ্যাহ্নভোজ সভায় আফতাব উল ইসলাম এসব কথা বলেন। তিনি দুই বছর ধরে বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

প্রশ্নোত্তরমূলক অনুষ্ঠানের একপর্যায়ে ব্যাংক খাত নিয়ে কথা বলেন আফতাব উল ইসলাম। তিনি বলেন, ১৯৭২ সালে ব্যাংকিং নীতি তৈরি করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। সেটা ছিল ব্যাংক খাতের জন্য বাইবেল। ওই নীতিতে আর্থিক খাতের সর্বোচ্চ ক্ষমতা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরকে দেওয়া হয়েছিল। অথচ বর্তমানে তা অর্থ মন্ত্রণালয়ের অংশ হয়ে পড়েছে।

ঢাকা চেম্বার ও আমেরিকান চেম্বারের সাবেক এই সভাপতি বলেন, হাজার কোটি টাকা ঋণ না থাকলে তা এখন মর্যাদার প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। যদি হাজার কোটি টাকার বেশি ঋণ থাকে, তাহলে সেটার ব্যবস্থাপনা সরকারের দায়িত্ব হয়ে দাঁড়ায়। ওই ঋণ চারবার-পাঁচবার পুনঃতফসিল করা হয়। এ নির্দেশনা কখনো অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে আসে, কখনো সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে আসে।

আফতাব উল ইসলাম আরও বলেন, এখন ব্যাংক খাতের অবস্থা মারাত্মক খারাপ। বাংলাদেশের অর্থনীতির সব সূচক ভালো, শুধু ব্যাংক খাতের স্বাস্থ্য ছাড়া। সরকারি বেশির ভাগ ব্যাংক এখন লাল তালিকায় আছে। অবশ্য আসছে নির্বাচনকে সামনে রেখে খেলাপির খাতা থেকে নাম কাটাতে প্রচুর অর্থ ব্যাংকে আসবে। অতএব এটা ব্যাংক খাতের জন্য একটা ভালো সময়।

অনুষ্ঠানে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) এ–দেশীয় পরিচালক মনমোহন প্রকাশ বলেন, বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনের ৬০-৭০ শতাংশ আসছে ঢাকা ও চট্টগ্রাম থেকে। এখন দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের উন্নয়নের দিকে নজর দিতে হবে।

সাবেক অর্থসচিব মোহাম্মদ তারেক বলেন, ভবিষ্যতে বাংলাদেশের অর্থনীতির এগিয়ে যাওয়ার গতি নির্ভর করবে দক্ষতা উন্নয়ন, রপ্তানি আয় ও প্রবাসী আয়ের ধারা এবং উৎপাদনশীলতা উন্নয়নে সরকার কতটুকু বিনিয়োগ করছে, তার ওপর।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান কাজী মো. আমিনুল ইসলাম, ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি মো. শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশনের সাবেক সভাপতি সালাউদ্দিন কাসেম খান, ফজলুল হক, আবদুল মোনেম ইকোনমিক জোনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ এস এম মাইনুদ্দিন মোনেম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
  • কার্টসিঃ প্রথম আলো/ নভেম্বর ১৩, ২০১৮