রেজাউল করিম লাবলু
প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ছত্রছায়ায় গড়ে ওঠা জাগদল থেকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপিতে ডানপন্থিদের পাশাপাশি ছিলেন সক্রিয় বেশ কিছু বামপন্থি। মূলত ষাটের দশকে ভাগ হয়ে যাওয়া পিকিংপন্থিদের একটা অংশ যোগ দেন জিয়াউর রহমানের দলে। ডানপন্থিদের পাশাপাশি এই বামপন্থি অংশটিও বেশ প্রভাব রাখত দলটিতে। সর্বশেষ এই অংশের নেতা হিসেবে পরিচিত ছিলেন প্রয়াত আব্দুল মান্নান ভূঁইয়া ও সাদেক হোসেন খোকা। খোকার মৃত্যুর সঙ্গে দেশের অন্যতম প্রধান এই রাজনৈতিক শিবিরে প্রগতিশীল হিসেবে পরিচিত অংশটির অবসান ঘটল বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
পুরান ঢাকার নিজের এলাকা গোপীবাগসহ অন্যান্য এলাকায়ও হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে জনপ্রিয় সাদেক হোসেন খোকা ছিলেন ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে ঢাকার গেরিলা যোদ্ধাদের অন্যতম।
মুক্তিযুদ্ধে খোকা
নিজের লেখা একটি প্রবন্ধে খোকা লিখেছেন কীভাবে তিনি যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েন। প্রবন্ধে তিনি লিখেছেন, পরিবারের কাউকে কিছু না জানিয়ে গোপনে মুক্তিযুদ্ধে চলে যান তিনি। পরে মেলাঘরের ট্রেনিং ক্যাম্পে ট্রেনিং শেষে ঢাকায় অপারেশনের ফাঁকে গোপনে একবার মায়ের সঙ্গে দেখা করতে যান। কিন্তু তার মা বলে দিয়েছেন, ‘আর যুদ্ধে যেতে পারবে না। কারণ তোমার হাতে কোনো মানুষ খুন হোক তা আমি চাই না।’
নিজের প্রবন্ধে খোকা লিখেন, “আমি বিনয়ের সঙ্গে বললাম, মা আমাকে যেতে হবে। আর আমরা তো যুদ্ধই করছি পাকিস্তানি দখলদারদের মেরে ভয় দেখিয়ে এদেশ থেকে বিতাড়িত করতে। তিনি যখন দেখলেন আমাকে ফেরানো যাবে না তখন বললেন, ‘আমাকে কথা দাও অন্যায়ভাবে ঠা-া মাথায় কাউকে হত্যা করতে পারবে না।’ মায়ের কথায় রাজি হয়ে আবার ফিরে যাই রণাঙ্গনে।’’
১৯৭১-এর এপ্রিলের মাঝামাঝি সময় ছাত্র ইউনিয়নের তৎকালীন নেতা রুহুল আমীন এবং গোপীবাগের মাসুদসহ (বুড়া) বেশ কয়েকজন মিলে প্রথমে খোকারা যান নরসিংদীর শিবপুরে। সেখানে কয়েকদিন অবস্থানের পর যুদ্ধের ট্রেনিং নেওয়ার জন্য আগরতলায় পৌঁছলে তাদের রিসিভ করেন শহীদুল্লাহ খান বাদল (রাশেদ খান মেননের ছোট ভাই)।
খোকা তার বইয়ে লিখেন, ‘সেখান থেকে প্রথমে বটতলার সিপিএম অফিসে গিয়ে মেনন ভাইয়ের সঙ্গে দেখা করে চলে যাই দুই নম্বর সেক্টরে। ব্রিগেডিয়ার খালেদ মোশাররফ ছিলেন সেই সেক্টরের সেক্টর কমান্ডার।’
মেজর হায়দারের (পরে কর্নেল হায়দার) নেতৃত্বে ঢাকার মুক্তিযোদ্ধাদের গেরিলা প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। দুই নম্বর সেক্টরের প্রশিক্ষণ ক্যাম্পের নাম ছিল ‘মেলাঘর’। মেলাঘরের পারিপার্শ্বিক পরিবেশ বসবাসের জন্য একেবারেই উপযুক্ত ছিল না। পাহাড় আর ঘন জঙ্গলে পূর্ণ ছিল চারদিক।
তিনি লিখেছেন, ‘লাল মাটির উঁচু-নিচু পাহাড়ি পথ একটু বৃষ্টি হলেই বেশ পিচ্ছিল হয়ে পড়ত। শৌচকর্ম সারতে যেতে হতো বনের ভেতরে। এ ক্যাম্পে বেশিরভাগই ছিল ঢাকা শহরের ছেলে, এ রকম পরিবেশে থাকতে তারা অভ্যস্ত ছিল না। আমি ও আমার ঘনিষ্ঠ বন্ধু মরহুম মেসবাহ উদ্দিন সাবু এক সঙ্গে থাকতাম।
এ ক্যাম্পেই আমার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক হয় আবু সাইদ খান, শাহাদাত চৌধুরী, ফতেহ আলী চৌধুরী, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, সুলতান উদ্দিন রাজা, আতিকুল্লাহ খান মাসুদ, নাসিরউদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু, পল্টনের মানিক (পরে শহীদ), গাজী গোলাম দস্তগীর, মিজান উদ্দিন আহমেদ, শহীদুল্লাহ, শিল্পী শাহাবুদ্দিন, মাসুদ, কাজী ভাই, উলফাৎ ও বাকী (পরে শহীদ) অন্যতম।’
মেজর হায়দারের অধীনে তিন সপ্তাহ গেরিলা ট্রেনিং শেষে খোকারা সম্মুখযুদ্ধের ট্রেনিং গ্রহণ করেন ক্যাপ্টেন গাফফারের (পরে জাতীয় পার্টি নেতা ও মন্ত্রী) নেতৃত্বাধীন সাব সেক্টরে। ওখানে ট্রেনিং শেষ করার পর প্রথমদিকে কসবা-মন্দভাগ (মির্জাপুর) যুদ্ধের ৯ মাসই প্রতিদিন এক বা একাধিক অপারেশনে অংশ নিয়েছেন সাদেক হোসেন খোকা।
এ প্রসঙ্গে ‘মুক্তিযুদ্ধের স্বর্ণালী দিনগুলো’ প্রবন্ধে সাদেক হোসেন খোকা লিখেছেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের সময়ের কথা, মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্নের কথা ভাবলেই নস্টালজিক মন ভারাক্রান্ত হয়ে ওঠে। মন শুধু রণাঙ্গনের সাহসী সহযোদ্ধাদের হারানোর কারণেই ভারাক্রান্ত হয় না, তার চেয়েও বেশি হয় মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্ন-চেতনার দুর্দশা দেখে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বা স্বপ্ন যাই বলি না কেন সেটা শুধু একটি ভূখ-ের স্বাধীনতা নয়, একটি সার্বিক মুক্তিই ছিল এ মহান যুদ্ধের মূল স্পিরিট। সে কারণেই এর নাম হয়েছিল ‘মুক্তিযুদ্ধ’।
মূলত ব্রিটিশ বেনিয়াদের রেখে যাওয়া সমাজ ও রাষ্ট্র কাঠামো ভেঙে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ও মানবিক সমাজ গঠনই ছিল স্বপ্ন। আমাদের মুক্তিযুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল এ জাতির একটি সামষ্টিক মুক্তির লক্ষ্য থেকে। তবুও বলব, জাতীয় মুক্তি না এলেও একটি স্বাধীন দেশ তো আমরা পেয়েছি। যেখানে দাঁড়িয়ে আমরা দেশকে গড়ে তোলার কথা ভাবতে পারছি, স্বপ্ন দেখতে পারছি সুন্দর আগামীর।’
সাদেক হোসেন ১৯৫২ সালের ১২ মে ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন। ছাত্র থাকাবস্থায় রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন খোকা। তৃণমূল থেকে রাজনীতি শুরু করে উঠে এসেছিলেন বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ে। ঢাকা শহরে জন্ম, বেড়ে ওঠার পর সেই অবিভক্ত ঢাকারই মেয়র হয়েছিলেন খোকা। সরকারবিরোধী আন্দোলন করতে গিয়ে রাজপথ নিজের রক্তে রঞ্জিত করেছেন। ২০১৪ সালে ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্র পাড়ি দিয়েছিলেন সাদেক হোসেন খোকা। তখন থেকেই নিউইয়র্কে একটি ক্যানসার হাসপাতালে তার চিকিৎসা চলছিল।
মনোকষ্টের মৃত্যু
জীবন বাজি রেখে মাটির জন্য লড়াই করলেও ঢাকায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করতে না পারার মনোকষ্ট ছিল তার। এ বিষয়ে খোকার বন্ধু ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু তার ফেইসবুকে লিখেছেন, আমেরিকা থেকে তার মোবাইলে ফোন এসেছিল। ফোন করেছিলেন খোকা। ফোনে খবর এলো ডাক্তার জানিয়েছে বন্ধু আর মাত্র কয়েক দিনের পথিক। সারা রাত ঘুম হলো না। কত স্মৃতি...ষাটের দশকে রাজপথ কাঁপানো মিছিল। স্টেডিয়ামে খেলা দেখার পর গোপীবাগের মোড়ে সাবুর সঙ্গে লুচি-সবজি খাওয়া। তারপর মুক্তিযুদ্ধের কত কথা।
মৃত্যুপথযাত্রী বন্ধুর সঙ্গে কথা হলো। একটা কথা, যতদিন বাঁচব কানে ভাসবে ‘দোস্ত চলে যাচ্ছি, ডাক্তার জবাব দিয়েছে। কষ্ট একটা বুকে... মৃত্যু জয় করে যে দেশ স্বাধীন করলাম, আজ সেই দেশের মাটিতে আমার কবর হবে না?’ জবাব দিতে পারিনি, বুকের মাঝে রক্ত ঝরছে। এই আজকের বাংলাদেশ!
শেষ ইচ্ছা
খোকার ছেলে ইশরাক হোসেন বলেছেন, বাবা ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন মৃত্যুর পর রাজধানীর জুরাইনে বাবা-মায়ের কবরের পাশে যেন তাকে দাফন করা হয়।
ছাত্ররাজনীত
সাদেক হোসেন খোকা ছাত্রজীবন থেকে রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ১৯৬৬ সালে তিনি পূর্ব পাকিস্তানের ছাত্র ইউনিয়নের ঢাকা শাখার সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। তিনি ১৯৬৬-৬৯ আইযুববিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন এবং সকল দলের স্টুডেন্ট অ্যাকশন কাউন্সিলের সেই সময়ের একজন অন্যতম নেতা হিসেবে ছাত্রদেরও আন্দোলনে সমবেত করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন।
১৯৭০ সালে তিনি পূর্ব বাংলা বিপ্লবী ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সদস্য হয়েছিলেন এবং ১৯৭১ সালে সক্রিয়ভাবে সেক্টর-২ এ স্বাধীনতাযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন। স্বাধীনতা যুদ্ধের মাঝামাঝি পর্যায়ে তিনি বৃহত্তর ঢাকার গ্রুপ কমান্ডার ছিলেন এবং অনেক ছোট-বড় অপারেশনের দায়িত্ব পালন করেছিলেন। বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সংগঠক (খেলাধুলা) সাদেক হোসেন খোকা ১৯৭২ সালে ব্রাদার্স ইউনিয়ন স্পোর্টস ক্লাবের দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন এবং ১৯৭৭ সাল পর্যন্ত এর সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। খেলাধুলার ক্ষেত্রে অবদান থাকার কারণে তার সুখ্যাতি ছিল। ১৯৭৮ সালে তিনি প্রথম বিভাগ ফুটবল লিগ কমিটির সম্পাদক এবং ঢাকা মেট্রোপলিটন ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম-সম্পাদক ছিলেন। ১৯৭৯-১৯৮৯ পর্যন্ত তিনি ঢাকা মেট্রোপলিটন ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এবং বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের যুগ্ম সম্পাদক ছিলেন। ১৯৭৭ সালে সাদেক হোসেন খোকা ঢাকা পৌর কমিশনার নির্বাচিত হয়েছিলেন।
বিএনপিতে যোগদান ও খোকার উত্থান
বামপন্থি রাজনীতি ছেড়ে ১৯৮৪ সালে বিএনপির রাজনীতিতে যোগ দেন খোকা। সে সময় নয়াবাজার নবাব ইউসুফ মার্কেটে বিএনপির কার্যালয় থেকে এরশাদবিরোধী আন্দোলনের সূচনা করে সাতদলীয় জোটের নেতৃত্ব দেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। ওই অন্দোলনে ঢাকা মহানগর সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়কের দায়িত্ব খোকাকে দেওয়া হয়েছিল। তিনি স্বৈরাচার এরশাদবিরোধী আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন। খোকা ১৯৯১ সালে ঢাকা-৭ থেকে সাংসদ নির্বাচিত হয়েছিলেন, একই বছর তিনি যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মনোনীত হয়েছিলেন। তিনি ১৯৯৬ সালের ৬ষ্ঠ এবং ৭ম উভয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিত হয়েছিলেন। ২০০১ সালের অষ্টম সংসদ নির্বাচনে তিনি বিপুল ভোটে জয়লাভ করেছিলেন।
পরে আওয়ামী লীগ সরকারবিরোধী আন্দোলনে প্রায় পাঁচ বছর একক নেতৃত্ব দিয়ে তিনি বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ নেতায় পরিণত হন। ২০০১ সালের নির্বাচনেও সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে মৎস্য ও পশুসম্পদমন্ত্রী হন। ওই সময় পুরান ঢাকায় বিএনপির রাজনীতিতে নিজস্ব বলয় তৈরির পাশাপাশি প্রতিটি থানা ও ওয়ার্ডে দলকে শক্তিশালী করার পেছনে তার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। এর আগে ১৯৯৪ সালে সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদ হানিফের কাছে পরাজিত হন মির্জা আব্বাস। বিএনপি সরকারের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগসহ অন্যান্য বিরোধী দল কঠোর আন্দোলন শুরু করলে ঢাকায় বিএনপি কোণঠাসা হয়ে পড়ে। এ অবস্থায় খোকাকে ১৯৯৬ সালে মহানগর বিএনপির আহ্বায়কের দায়িত্ব দেওয়া হয়। ২০০২ সালের ২৫ এপ্রিল অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে তিনি মেয়র নির্বাচিত হন। পাশাপাশি খোকাকে সভাপতি ও আবদুস সালামকে সাধারণ সম্পাদক করে ঢাকা মহানগর বিএনপির কমিটি গঠন করা হয়। নতুন করে কমিটি গঠনের জন্য আবার ২০১১ সালে সাদেক হোসেন খোকাকে আহ্বায়ক ও আবদুস সালামকে সদস্য সচিব করে আহ্বায়ক কমিটি করা হয়। এই কমিটির বিরুদ্ধেও খোকার প্রতিদ্বন্দ্বী মির্জা আব্বাসের অনুসারীরা নানা অভিযোগ তোলেন।
১৯৯০ সালে বাবরি মসজিদ ভাঙাকে কেন্দ্র করে পুরান ঢাকায় হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলার চেষ্টা হলেও তা প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন তিনি।
ওয়ান-ইলেভেনে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর তৎকালীন বিএনপি মহাসচিব আবদুল মান্নান ভূঁইয়ার নেতৃত্বে দলে যে সংস্কারের দাবি উঠেছিল, তার প্রতি সাদেক হোসেন খোকার সমর্থন ছিল বলে অভিযোগ রয়েছে। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর মির্জা আব্বাসকে আহ্বায়ক ও হাবিব-উন-নবী খান সোহেলকে সদস্য সচিব করে মহানগর কমিটি গঠন করা হয়। এ কমিটি এরই মধ্যে মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে পড়েছে।
ফোনালাপ ফাঁস
বিএনপির আন্দোলনের সময় মান্নার সঙ্গে খোকার টেলিকথন নিয়ে দেশে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। এরপর তার বিরুদ্ধে দায়ের করা হয় রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা। বর্তমানে তার বিরুদ্ধে অনেক হুলিয়া জারি আছে। বিভিন্ন সময় সাদেক হোসেন খোকার বিরুদ্ধে ৩৪টি মামলা করা হয়েছে। সর্বশেষ ৫ মে ক্ষমতার অপব্যবহার করে রাজধানীর বিভিন্ন মার্কেটে ১৩৮টি দোকান বরাদ্দের অভিযোগে খোকার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মামলাগুলোর বিচার চলছে।
এরই মধ্যে ২০১৫ সালের ২০ অক্টোবর সাদেক হোসেন খোকাকে ১৩ বছরের বিনাশ্রম কারাদন্ড দেয় নিম্ন আদালত। এ রায়কে প্রহসনমূলক ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত আখ্যায়িত করে ঢাকার সাবেক এই মেয়র বলেছিলেন, রাজনীতি থেকে তাকে বিদায় করতেই সরকারের চাপে আদালত এ রায় প্রদান করেছে। এই রায়কে তিনি বিচার বিভাগের ইতিহাসে প্রহসনের বিচার বলে অভিহিত করেন।
- কার্টসি — দেশরূপান্তর / নভেম্বর ৫, ২০১৯