Search

Monday, July 1, 2019

জনগণকে নতুন করে স্বপ্ন দেখতে হবে — মির্জা আলমগীর



হাসান মোল্লা/যায়যায়দিন 


বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, স্বৈরশাসন হঠিয়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য জনগণকে নতুন করে স্বপ্ন দেখতে হবে। শোষণ, বৈষম্য ও দীর্ঘ মেয়াদের অবিচার, অপশাসনের কবল থেকে আর পরিত্রাণ পাওয়া যাবে না মনে করে স্বপ্ন দেখা ছেড়ে দিলে কোনোদিনই পরিস্থিতির পরিবর্তন আসবে না। এজন্য প্রথমে জনগণকে স্বপ্ন দেখাতে হবে, আর বিএনপি দ্রুত সময়ের মধ্যেই সেই স্বপ্ন পূরণে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করবে।

উত্তরার বাসবভনে যায়যায়দিনকে দেয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে মির্জা আলমগীর এই প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। বিএনপি ও দেশের আগামী দিনের রাজনীতির নানা পরিকল্পনা ও সম্ভাবনা নিয়ে তিনি খোলামেলা আলোচনা করেন। রাজনৈতিক দল যতই চেষ্টা করুক অপশাসনের বিরুদ্ধে জনগণ যতক্ষণ মাঠে না আসবে ততক্ষণ কোনো পরিবর্তনই সম্ভব নয় বলেই মত দেন তিনি।

মির্জা ফখরুল বলেন, গত ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনের আগে বাংলার মানুষ সুখী সমৃদ্ধশালী সুশাসনের বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিল। কিন্তু অনিয়মের নির্বাচনের কারণে সেই স্বপ্ন পূরণ হয়নি। এজন্য মানুষ চরম হতাশ। সেই হতাশা থেকে জনগণকে উজ্জীবিত করা বিএনপির প্রথম কাজ।

সাক্ষাৎকারের শুরুতেই কেমন আছেন জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল শারীরিকভাবে ভালো আছেন জানিয়ে বলেন, তবে অন্যায়ভাবে দলীয় প্রধান খালেদা জিয়াকে বন্দি রাখা এবং বর্তমান সরকারের আমলে প্রতিটি ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষ অধিকার বঞ্চিত হওয়ার কারণে মন ভালো নেই।

প্রশ্ন: দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে না যাওয়ার এক দশকের দাবি স্বল্পসময়ে কেন পরিবর্তন হয়েছিল? কেন নির্বাচনে গেলেন?

উত্তর: নির্বাচনে না গিয়ে বিএনপির কাছে আর কোনো অপশন ছিল না। সেনাবাহিনী, নির্বাচন কমিশন, বিচার বিভাগসহ প্রশাসনের প্রতিটি সেক্টর সরকার নিয়ন্ত্রণ করেছে। চরম অনিয়মের আশঙ্কা দেখেও দেশ ও গণতন্ত্রের স্বার্থে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। কারণ সরকার কথা বলার সব পথ বন্ধ করে দিয়েছে। সেখানে সংসদ কথা বলার একটা জায়গা হতে পারে। সেই ন্যূনতম সুযোগটা ব্যবহার করার জন্য বিএনপি নির্বাচনে গেছে।

প্রশ্ন: আপনাদের দাবি অনুযায়ী নির্বাচনে সেনা মোতায়েন হয়েছিল। তাদের ভূমিকায় আপনারা সন্তুষ্ট ছিলেন?

উত্তর : একদম সন্তুষ্ট হতে পারিনি। খুবই হতাশ হয়েছি। তারা অনিয়ম দেখেও নির্বাক পুতুলের মতো দাঁড়িয়ে ছিল। তাদের কাছে অনিয়মের অভিযোগ করেও কোনো ফল পাইনি।

প্রশ্ন: নির্বাচনের আগে পুলিশ অফিসারদের অনিয়মের অভিযোগ করে তালিকা দেয়াটা কি বিএনপির সঠিক সিদ্ধান্ত ছিল?

উত্তর :এটা এখনই বলা যাবে না। সময় বলে দেবে সিদ্ধান্ত সঠিক ছিল কিনা।

প্রশ্ন:নির্বাচনের পরই ফল প্রত্যাখ্যান করে শপথ না নেয়া এবং পরবর্তী সব ধরনের নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েও পরে কেন তা পরিবর্তন করলেন?

উত্তর: সব কিছু দলীয় কৌশলের অংশ। ফল প্রত্যাখ্যানের বিষয় থেকে আমরা এখনো সরে আসিনি। যে নির্বাচনে ভোটারা ভোট দিতে পারেনি সেই নির্বাচনে ফল প্রত্যাখ্যান করাই স্বাভাবিক।

প্রশ্ন: নির্বাচিতরা সবাই শপথ নিলেন অথচ দলীয় সিদ্ধান্তের পরেও কেন আপনি শপথ নিলেন না ?

উত্তর: এটা অবশ্যই কৌশলগত কারণে। এই নির্বাচন দলের নেতাকর্মী ও সাধারণ জনগণ মেনে নেয়নি। সংসদে বিএনপি যাক জনগণ তা চায়নি। কিন্তু কথা বলার নূ্যনতম স্থানের সুযোগ নিতে জনগণের স্বার্থে বিএনপি সংসদে গেছে। অন্যদিকে জনগণের আবেগকেও খাটো করে দেখার সুযোগ নেই। তাই সংসদে যাওয়ার পক্ষে যেমন যুক্তি আছে তেমনি প্রতিবাদেরও দরকার আছে বলে মনে করেছেন। এজন্য শপথ নেননি। তাতে সংসদে গিয়ে বিএনপির কথা বলার সুযোগ রইলো। পাশাপাশি তার প্রতিবাদকেও নেতাকর্মী এবং জনগণ স্বাগত জানিয়েছেন। এসবের কোনো কিছুই দল ও হাইকমান্ডের সম্মতি ছাড়া হয়নি।

প্রশ্ন: শপথ নেয়া বিএনপির এমপিদের সংসদে এখন পর্যন্ত ভূমিকায় আপনি সন্তুষ্ট কিনা?

উত্তর:এখন পর্যন্ত তারা ভালো করছেন। তারা তাদের ভূমিকা পালনের চেষ্টা করছেন। সামনে যত আইন আসবে, কালাকানুন আসবে সেগুলোর বিষয়েও তারা জনগণের পক্ষে কথা বলবেন।

প্রশ্ন: বারবার নির্বাচনে অনিয়মের কথা বলছেন, অনিয়ম ঠেকাতে আপনাদের প্রস্তুতি ও কৌশল কি ছিল? কেন আপনারা ব্যর্থ হলেন?

উত্তর: নির্বাচনে প্রস্তুতি প্রধান বিষয় হচ্ছে জনগণের ভোট পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করা। সেই প্রস্তুতি তাদের শতভাগ ছিল। কিন্তু রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে ভোটারদের ভোট কেন্দ্রেই আসতে দেয়া হয়নি। আর বিএনপি সশস্ত্র বিপস্নবী দল না যে, সন্ত্রাসী কায়দায় এর জবাব দেবে। তাই বিএনপি ব্যর্থ হয়েছে তা বলা যাবে না।

প্রশ্ন: দশম সংসদে অংশ না নেয়া এবং একাদশ সংসদে অংশ নেয়ার দুটি সিদ্ধান্তই কী সঠিক ছিল?

উত্তর: দুটি সিদ্ধান্তই সঠিক ছিল। দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না বলে দশম সংসদ নির্বাচন বর্জন করেছিল বিএনপি। এ বিষয়টি প্রমাণ করতে একাদশ সংসদে অংশ নেয়েছেন। আর গত ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে প্রমাণিত হয়েছে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না। এজন্য নির্দলীয় সরকারের অধীনে পরবর্তী নির্বাচন এটা জনগণের গণদাবিতে পরিণত হয়েছে।

প্রশ্ন: নির্বাচনে ড. কামাল হোসেন আওয়ামী লীগের পক্ষে কাজ করেছেন বলে আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদ নাসিমের এ বক্তব্যে প্রতিক্রিয়া কি?

উত্তর: একটি মিথ্যা কথা কিভাবে কখন বললে জনগণ সত্য বলে মেনে নেবে এ কৌশল জানেন আওয়ামী লীগে কয়েকজন নেতা। সব ধরনের রাজনৈতিক কৌশল জানেন তারা। সেসব নেতাদের একজন মোহম্মদ নাসিম। যেহেতু ঐক্যফ্রন্টে অস্থিরতা চলছে একটি গুজব রাজনৈতিক মহলের আলোচনা হচ্ছে সেই সুযোগে নাসিম সাহেব এমন একটা বক্তব্য দিয়েছেন, যাতে সবাই বিশ্বাস করে।

প্রশ্ন: আসলে কামাল সাহেবের নির্বাচনে কি ভূমিকা ছিল?

উত্তর: গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে ড. কামাল হোসেনের ভূমিকা ছিল শতভাগ ইতিবাচক। ড. কামালের মতো ভদ্র, দেশপ্রেমিক, সৎ-সাহসী রাজনীতিবিদ খুব একটা পাওয়া যাবে না। বাংলাদেশের রাজনীতি গুণগত পরিবর্তন আনতে ড. কামালকে বিএনপি সামনের দিকে আনার চেষ্টা করেছে। অন্যদিকে ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে বিএনপির রঙটা সবসময় জামায়াতের সঙ্গে লাগানোর চেষ্টা হয়েছে। সেই ষড়যন্ত্র রাজনৈতিকভাবেই মোকাবেলা করা সম্ভব হয়েছে। সবমিলে বিএনপির সঙ্গে ড. কামাল, আ স ম বর, কাদের সিদ্দিকী, মাহমুদুর রহমান মান্নাদের আনতে পারাটা রাজনীতির জন্য টার্নিং পয়েন্ট হতে পারত। দেশ ও রাজনীতির স্বার্থে এটাকে সবার প্রশংসা করা উচিত।

প্রশ্নঃ ঐক্যফ্রন্টের ভবিষ্যৎ কি?

উত্তর : ভবিষ্যৎ ভালো মনে করি। শুধু ঐক্যফ্রন্ট নয় ২০ দলকে আরও সম্প্রসারিত করতে হবে। রাজনীতিতে সুস্থধারা আনতে হলে আওয়ামী লীগের অপশাসনের বিরুদ্ধে সমস্ত রাজনৈতিক দলকে এক সঙ্গে সোচ্চার হতে হবে।

প্রশ্ন: জামায়াত থাকবে জানলে ড. কামালরা আপনাদের সঙ্গে নির্বাচনে আসতেন না। এ ব্যাপারে বিএনপি প্রতারণা করেছে বলে তার অভিযোগ কতটা সত্য?

উত্তর: জামায়াতের সঙ্গে ড. কামাল রাজনীতি করতে চাননি এটা সত্য। রাজনীতির বৃহত্তর স্বার্থে তারা আলাদা জোট করেছেন। বিএনপি সেতুবন্ধন হিসেবে কাজ করেছে। এটা অভিনব কৌশল ছিল। প্রতারণা করার কোনো কারণ নেই।

প্রশ্নঃ আগামী দিনের বিএনপির সাংগঠনিক ও আন্দোলনের পরিকল্পনা কি?



উত্তরঃ রাজপথের কঠোর আন্দোলনের পরিস্থিতি বা সুযোগ কোনোটাই এখন নেই। সংগঠন গোছানো হচ্ছে। ভুল বোঝাবুঝির অবসান এবং নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ করে অঙ্গ সংগঠনকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়াটা এখন প্রধান কাজ। পার্টির চেয়ারপারসন কারাগারে আছেন, এখন সেটাই দলের সবচেয়ে বড় সংকট। তিনি যতক্ষণ না বের হবেন ততদিন আন্দোলন গতি পাবে না। এজন্য তাকে কিভাবে বের করে আনা যায় সেজন্য চেষ্টা হচ্ছে। মানুষকে রাস্তায় নিয়ে আসার চেষ্টা করা হচ্ছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে ঠান্ডা মাথায় সামনের দিকে এগুতে হবে। তা না করা গেলে ফলপ্রসূ কিছু আসবে না।

প্রশ্ন: কবে নাগাদ এটা হতে পারে?

উত্তর:তা বলা মুশকিল। অবশ্যই রোডম্যাপ তৈরি করা হবে। এজন্য আগে দেখতে হবে তাদের সংগঠন আছে কিনা। পরিস্থিতি অনুকূল কি-না। কারণ বিএনপির ২৬ লাখ নেতাকর্মী আসামি। ১ লাখ মামলা। ১ হাজারের উপরে নেতাকর্মী জেলে আছেন। এই পরিস্থিতিতে হঠকারী কোনো সিদ্ধান্ত নিলে চলবে না। অনেকে '৯০ এর আন্দোলনের কথা বলেন। কিন্তু ১৯৯০ আর ২০১৯ এক না এটা মাথায় রাখতে হবে। '৯০ সালে এমন ভয়াবহ সরকার ছিল না। চরম নির্যাতনকারী সরকার ছিল না। তখন নির্বিচারে গুম, খুন, গুলি হতো না।

প্রশ্ন: ৬ষ্ঠ কাউন্সিলের অনেক সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন না হওয়ার কারণ কি?

উত্তর: বিএনপি একটি বড় দল। সব সিদ্ধান্ত পরিবেশ পরিস্থিতির কারণে হয়তো বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি। রাজনৈতিক দলের সব সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হবে- এটা মনে করার কোনো কারণ নেই। এটা খুব বড় বিষয় নয়।

প্রশ্ন: কবে সপ্তম কাউন্সিল করত চান?



উত্তর :দ্রুত সময়ের মধ্যে দলের জাতীয় কউন্সিল করতে চায় বিএনপি। তবে এখনো সুনির্দিষ্ট কোনো তারিখ ঠিক হয়নি। কাউন্সিলের আগে মূল কাজ হচ্ছে জেলা কমিটিগুলো আপডেট করা। এগুলো প্রায় শেষের দিকে। পুরোপুরি সম্পন্ন হলেই কাউন্সিল করা যাবে। এগুলো শেষ হলে কাউন্সিলের প্রস্তুতি এক মাসের মধ্যে সম্পন্ন করা যাবে।

প্রশ্ন: দল ৩০০ আসনে যাদের মনোনয়ন দিয়েছে তাদের অনেককেই সাংগঠনিক বা আন্দোলনে কর্মীরা পাচ্ছে না, এর কারণ কি?

উত্তর: এই অভিযোগ সবার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। অনেকেই আছেন দলের জন্য কাজ করছেন। গুটিকয়েক নেতার দায় সবার উপরে চাপানো ঠিক হবে না। যারা নির্বাচন করেন তাদের একটি দায়িত্ব থাকে নেতাকর্মীদের খোঁজ নেয়ার। সেই দায়িত্ব অনেকেই পালন করছেন। কিন্ত মামলা-মোকাদ্দমা এত বেশি হয়ে গেছে যে, সব চালিয়ে তারাও হিমশিম খাচ্ছেন। সবার প্রত্যাশা পূরণ করা অনেক ক্ষেত্রে সম্ভব হচ্ছে না। এজন্য কিছু মান অভিমান থাকতেই পারে।

প্রশ্ন: বিগত সময়ে এমন আলোচনা ছিল আপনি খালেদা জিয়ার আর তারেক রহমানের আস্থাভাজন রুহুল কবির রিজভী। কিন্তু এখন বিভিন্ন কার্যক্রমে আপনাকে তারেক রহমানের সবচেয়ে আস্থাভাজন মনে করা হয়। আসল বিষয়টা ব্যাখ্যা করবেন কি?



উত্তর: মহাসচিব হিসেবে আমাকে দলের আস্থাভাজন হতেই হবে। দলীয় হাইকমান্ডের পাশাপাশি নেতাকর্মীদের আমার প্রতি আস্থা আছে বলেই আমি মহাসচিব। উনি হাইকমান্ডের আস্থাভাজন আর তিনি হাইকমান্ডের বিরাগভাজন এসব মিডিয়ার সৃষ্টি। এর সঙ্গে বাস্তবতার মিল নেই।

প্রশ্ন: রুহুল কবির রিজভীর দীর্ঘসময় দলীয় কার্যালয়ে অবস্থান করা নিয়ে অনেকে নেতিবাচক মন্তব্য করেন। আসলে কেন তিনি সেখানে আছেন?

উত্তর: রিজভী কিন্তু সেখানে আনন্দে নেই। অসুস্থ শরীর নিয়ে ছোট একটা রুমের মধ্যে থাকছেন। তার বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট আছে। অন্যদিকে বিএনপি অফিসে সার্বক্ষণিক লোক দরকার। তাই দলের স্বার্থে দলীয় সিদ্ধান্তেই তিনি সেখানে আছেন।

প্রশ্ন: ১৯৭১ আর ২০১৯ এর জামায়াত এক নয়, বলার পাশাপাশি আলাদা মঞ্চ করেছেন কর্নেল (অব.) অলি আহমেদ। এ বিষয়ে আপনার মত কি?

উত্তর: অলি সাহেব উনার ব্যক্তিগত অভিমত দিয়েছেন। নিজেরা কিছু করতে চাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি তো ২০ দল ছেড়ে যাননি। একমাত্র পার্থ বিৃবতি দিয়ে ২০ দল ছাড়ার কথা বলেছেন। অন্য কেউ বলেননি। তাই যারা আছেন তাদের একটি দল আছে। গণতান্ত্রিক যেকোনো উদ্যোগ যে কেউ নিতে পারেন তাতে সমস্যার কিছু দেখছি না।

প্রশ্ন: জামায়াত নিয়ে বিএনপির ভাবনা কি?

উত্তর: এর উত্তরে বরাবরের মতোই বলতে হয়, জামায়াত আর বিএনপির রাজনীতি আলাদা। নির্বাচনী ও জোট রাজনীতির অংশ হিসেবে তারা ২০ দলে আছে। এর বেশি কিছু নয়।

প্রশ্ন: দীর্ঘদিন ক্ষমতায় না থাকায় দলের কর্মকান্ডে আগের মতো শুভাকাঙ্ক্ষীরা পৃষ্ঠপোষকতা করছেন না বা মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন, এ তথ্যটি কি সঠিক? দলের ফান্ড ক্রাইসিস আছে কি?

উত্তর: এটা অস্বাভাবিক নয়। এদেশের রাজনৈতিক যে সংস্কৃতি তাতে এই পরিস্থিতিতে পৃষ্ঠপোষকের সংখ্যা কমবে তা স্বাভাবিক। তবে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন এটা ভুল কথা। দলীয় ফান্ডেরও কোনো ক্রাইসিস নেই। লেকশোর-ওয়েস্টিনসহ বড় বড় সব স্থানেই বিএনপির অনুষ্ঠান হয়। ফান্ডে কোনো ক্রাইসিস কি কারো চোখে পড়ে? আর অর্থের জন্য দলের কোনো কর্মকান্ডও থেমে নেই।

প্রশ্নঃ খালেদা জিয়ার বয়স এখন প্রায় ৭৪। বর্তমান সরকার পূর্ণ মেয়াদে থাকলে খালেদা জিয়ার বয়স হবে ৭৮। বয়স ও শারীরিক অবস্থার বিবেচনায় খালেদা জিয়া রাজনীতিতে আরও কতটা অবদান রাখতে পারবেন বলে আপনি মনে করেন?


উত্তর: ব্রিটেনের রানী এলিজাবেথের বয়স ৯৩। তিনি এই বয়সেও দায়িত্ব পালন করছেন। দায়িত্বে থাকার সময় মার্গারেট থ্যাচার বয়স কত ছিল বা আঙ্গেলা মার্কেলের বয়সও একেবারে কম নয়। এছাড়া দেশনেত্রীর কাছাকাছি বয়সের আরও রাজনৈতিক নেত্রী আছেন এবং ছিলেন যারা রাষ্ট্র পরিচালনা ও রাজনৈতিক কর্মকান্ড করে গেছেন এবং যাচ্ছেন। বেগম জিয়া শারীরিক অবস্থা বর্তমানে কিছুটা খারাপ হলেও পরবর্তীতে রাষ্ট্র পরিচালনা বা রাজনৈতিক নেতৃত্ব দেয়ার সক্ষমতা তার আছে। বয়সের কারণে কোনো সমস্যা হবে না।

প্রশ্ন: শপথসহ বিভিন্ন ইসু্যতে সরকারের সঙ্গে খালেদার মুক্তি নিয়ে সমঝোতার গুঞ্জন কতটা সত্য?

উত্তর: কোনো ভিত্তি নেই।

প্রশ্ন: গঠনতন্ত্রের ৭ ধারা বাতিল কি সঠিক সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত ছিল?

উত্তর: অবশ্যই। কাউন্সিলেই তা বাতিল করা হয়েছে।

প্রশ্ন: আন্দোলন ছাড়া সরকার পতনের আর কোনো উপায় আছে কিনা?

উত্তর: আন্দোলন লাগবে। নির্বাচনের মাধ্যমে তারা বর্তমান সরকারকে সরাতে চান। সে রকম অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনও হবে না যদি আন্দোলন না হয়। মনে রাখতে হবে, তারা মধ্যবর্তী নির্বাচনের দাবি করছেন না। তারা বলেছেন অবিলম্বে নির্বাচন দিতে। খুব শিগগিরই আনুষ্ঠানিকভাবে অবিলম্বে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের দাবি জানানো হবে।

 কার্টসি —  http://bit.ly/2XE6ISm 


No comments:

Post a Comment