ঢাবি প্রতিনিধি/দেশরূপান্তর
অধ্যাপক ড. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী |
ঢাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেছেন, ‘রাষ্ট্রের কোনো মানুষ নিরাপদে নেই। এমন নিরাপত্তাহীনতা আমরা ৭১ সালেই দেখেছিলাম। এর বড় উদাহরণ হচ্ছে এই যে ধর্ষণ, এটি কেবল ধর্ষণ নয়, গণধর্ষণ । এসব অন্যায় রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। আমরা দেখেছি, নুসরাত জাহানের ঘটনার সাথে পুলিশ জড়িত হয়ে পড়ল, আওয়ামী লীগ নেতা জড়িত ছিল এবং সকলে মিলে প্রমাণ করতে চাইল যে নুসরাত আত্মহত্যা করতে চেয়েছে। ইতিমধ্যে একজন নার্সকে বাসের মধ্যে ধর্ষণ করে হত্যা করা হলো। বলা হচ্ছে উন্নতি হচ্ছে, কিন্তু এই উন্নতির অন্তরালে মানুষ আর্তনাদ করছে।’
শুক্রবার, মে ১০, ২০১৯, দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিরাজুল ইসলাম লেকচার হলে বাংলাদেশ গার্মেন্টস শ্রমিক সংহতির আয়োজনে ‘শ্রমিক আন্দোলনের একাল সেকাল’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে তিনি এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক অবস্থার বিষয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে তিনি বলেন ‘আজকে দেশে যে রাজনৈতিক অবস্থা বিরাজ করছে, তার চেয়ে খারাপ অবস্থা অতীত ইতিহাসে ছিল কিনা আমার জানা নেই। আমরা দুর্ভিক্ষ দেখেছি, যে দুর্ভিক্ষে অনেক মানুষ মারা গেছে। কিন্তু আজকের বাংলাদেশে দৃশ্যমান কোনো দুর্ভিক্ষ না থাকলেও নীরবে দুর্ভিক্ষ আছে।
দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দুর্নীতির বিষয়ে উদ্বিগ্নতা প্রকাশ করে তিনি আরও বলেন, ‘আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা মুক্তিযুদ্ধের ভুয়া সনদ দিয়ে পদোন্নতি নিতে গিয়ে ধরা খেয়েছে। অথচ যারা আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করবে তারাই যদি দুর্নীতি করে, তাহলে রাষ্ট্রের আইনশৃঙ্খলা অবস্থা কি তা সহজে অনুধাবন করা যাচ্ছে। আমরা পুঁজিবাদের অধীনে দাস হয়ে রয়েছি। এ ব্যবস্থা থেকে মুক্তি পেতে হলে রাষ্ট্রব্যবস্থাকে ভেঙে দিতে হবে। রাষ্ট্রের মালিক শ্রেণির সঙ্গে শ্রমিক শ্রেণির যে শোষণের সম্পর্ক তা ভেঙে দিতে হবে। তাহলে পরিত্রাণ পাওয়া যেতে পারে। বিপ্লবের মাধ্যমে পুরোনো রাষ্ট্রকে ভেঙে এমন রাষ্ট্র করতে হবে, যে রাষ্ট্র মানবিক হবে, যেখানে নারী ধর্ষিত হবে না, যেখানে মুক্তিযুদ্ধের নামে প্রতারণা করবে না।’
No comments:
Post a Comment