কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়েই ছোট-বড় চারশর মতো শিল্প-কারখানা। বর্জ্য পরিশোধনের ব্যবস্থা নেই অধিকাংশেরই। যাদের আছে বন্ধ রাখছে তারাও। সরকারি সংস্থা পরিবেশ অধিদপ্তর বলছে, কর্ণফুলীর আশপাশে গড়ে ওঠা ডায়িং, ওয়াশিং, ট্যানারি ও পেপার মিলের বর্জ্য পরিশোধন ছাড়াই ছেড়ে দেয়া হচ্ছে নদীতে। এতে দূষিত হচ্ছে কর্ণফুলীর পানি। যথাযথ অয়েল ওয়াটার সেপারেটর না থাকায় নদী দূষণ করছে বিদ্যুেকন্দ্রগুলোও।
বিভিন্ন গবেষণার তথ্য বলছে, চট্টগ্রামের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এ নদীর পানিতে ভারী ধাতুর উপস্থিতি এরই মধ্যে মাত্রা ছাড়িয়েছে। কর্ণফুলীর উপকূলের পানিতে আর্সেনিক, লৌহ, সিসা ও ক্যাডমিয়াম সহনীয় মাত্রার উপরে অবস্থান করছে। একই অবস্থা দেশের প্রায় সব নদ-নদীরই। কোনো কোনো নদীর পানিতে সীমা ছাড়ানো লৌহের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। কোনোটিতে আবার ম্যাঙ্গানিজের উপস্থিতি অস্বাভাবিক। সিসা, ক্যাডমিয়াম, আর্সেনিক ও ক্রোমিয়ামের মতো ভারী ধাতুও আছে সহনীয় মাত্রার উপরে।
যদিও নদী দূষণ রোধে সরকারিভাবে নানা উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। কারখানায় বর্জ্য পরিশোধন প্লান্ট (ইটিপি) স্থাপন বাধ্যতামূলক করার পাশাপাশি নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছে পরিবেশ অধিদপ্তর। দূষণকারী প্রতিষ্ঠানকে জরিমানাও করা হচ্ছে। তারপরও থামছে না নদী দূষণ।
পরিবেশ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক কাজী সারওয়ার ইমতিয়াজ হাশমী বণিক বার্তাকে বলেন, ঢাকার বাইরেও অনেক নদীর দূষণের বিষয়টি অধিদপ্তরের পরিদর্শনেও বেরিয়ে এসেছে। করতোয়া, বংশী, বালু, হালদা, কর্ণফুলীর মতো অনেক নদীর পানিই এখন দূষিত। খুব শিগগির বিশ্বব্যাংকের একটি প্রকল্পের মাধ্যমে আমরা ঢাকার বাইরের নদীগুলোর দূষণের ধরন, মাত্রাসহ সার্বিক বিষয় নিয়ে গবেষণা করব। পাশাপাশি দূষণ কমিয়ে আনার কর্মপরিকল্পনাও নেয়া হবে।
দেশের প্রধান নদীগুলোর দূষণ নিয়ে একটি গবেষণা পরিচালনা করেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মেরিন সায়েন্স অ্যান্ড ফিশারিজ ইনস্টিটিউটের দুজন গবেষক। সায়েন্স জার্নাল অব এনার্জি ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে সম্প্রতি প্রকাশিত তাদের গবেষণার ফলাফল বলছে, ঢাকার চারপাশের নদীগুলোর দূষণ ভয়াবহ পর্যায়ে পৌঁছেছে। সহনীয় মাত্রা ছাড়িয়েছে ঢাকার বাইরের নদীগুলোও। নদীর পানি ও তলদেশে জমে থাকা মাত্রাতিরিক্ত ভারী ধাতু খাদ্যচক্রের মাধ্যমে মানবদেহে প্রবেশ করছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ফুসফুস, কিডনি, লিভার ও হার্টের মতো গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ।
কর্ণফুলী: বঙ্গোপসাগরের সঙ্গে সংযুক্ত কর্ণফুলী চট্টগ্রামের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও প্রধান নদী। কর্ণফুলীর তীরে ছোট-বড় অনেক শিল্প-কারখানা গড়ে উঠলেও অধিকাংশেরই বর্জ্য পরিশোধনের ব্যবস্থা নেই। এসব শিল্প-কারখানার বর্জ্য পরিশোধন ছাড়াই নদীতে গিয়ে পড়ছে। জাহাজ ও তেল ট্যাংকারের বিভিন্ন বর্জ্যও নদীতে মিশছে।
গবেষণার তথ্য বলছে, নদীর তীরবর্তী অঞ্চলের পানিতে আর্সেনিক, লৌহ, সিসা ও ক্যাডমিয়ামের উপস্থিতি গ্রহণযোগ্য মাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মান অনুযায়ী, খাওয়ার উপযোগী পানিতে ভারী ধাতু সিসার গ্রহণযোগ্য মাত্রা প্রতি লিটারে ১০ মাইক্রোগ্রাম (দশমিক শূন্য ১ মিলিগ্রাম) হলেও কর্ণফুলীতে পাওয়া গেছে ১৮ দশমিক ৩৪ মাইক্রোগ্রাম পর্যন্ত। প্রতি লিটারে ৩ মাইক্রোগ্রাম সহনীয় মাত্রার বিপরীতে ক্যাডমিয়ামের উপস্থিতি মিলেছে সর্বোচ্চ ২৭ দশমিক ৪৫ মাইক্রোগ্রাম। এছাড়া আর্সেনিকের সহনীয় মাত্রা লিটারপ্রতি ১০ মাইক্রোগ্রামের বিপরীতে কর্ণফুলীর পানিতে পাওয়া গেছে ৪৬ থেকে ১১২ দশমিক ৪৩ মাইক্রোগ্রাম পর্যন্ত। এর প্রভাব পড়ছে এখানকার জলজপ্রাণীর ওপর। কর্ণফুলীতে চাপিলা মাছে ৭ দশমিক ১৭ পিপিএম সিসার উপস্থিতি পেয়েছেন গবেষকরা।
কর্ণফুলী দূষণে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখছে শিল্পবর্জ্য। শনিবার কর্ণফুলী নদীর শহর অংশের বিভিন্ন খালের মুখসংলগ্ন এলাকা পরিদর্শনে দেখা যায়, চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ এলাকার বিভিন্ন অনুনমোদিত প্লাস্টিক কারখানা থেকে ছেড়ে দেয়া বর্জ্য চাক্তাই খাল হয়ে নদীতে মিশছে। খালটি দিয়ে চট্টগ্রাম শহরের প্রায় সব ধরনের তরল বর্জ্যও মিশছে এখানে।
স্থানীয়রা জানান, কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়ে চারশর মতো শিল্প-কারখানা থাকলেও শুধু কর্ণফুলী উপজেলায় রয়েছে প্রায় আড়াইশ। কিন্তু অধিকাংশ কারখানারই ইটিপি না থাকায় গভীর রাতে কিংবা নদীসংলগ্ন খালের নিচের অংশে পাইপ লাগিয়ে তরল বর্জ্য নদীতে ছেড়ে দেয়া হয়। কর্ণফুলী উপজেলার একাধিক খালের পানির উপরের অংশে তেলের স্তরও দেখা যায়।
কর্ণফুলী নদীর দূষণের বিষয়টি উঠে এসেছে পরিবেশ অধিদপ্তরের প্রতিবেদনেও। কর্ণফুলী দূষণের বিভিন্ন কারণও চিহ্নিত করেছে অধিদপ্তর। তারা বলছে, ডায়িং, ওয়াশিং, ট্যানারি ও পেপার মিলের তরল বর্জ্য পরিশোধন ছাড়াই কর্ণফুলীতে ছেড়ে দেয়া হচ্ছে। সিটি করপোরেশনের কঠিন বর্জ্যের ব্যবস্থাপনাও পরিবেশসম্মতভাবে পরিচালিত হচ্ছে না। জাহাজের তরল বর্জ্যও কর্ণফুলীর দূষণ ঘটাচ্ছে। নদীতে তেল ছড়িয়ে পড়ছে ফার্নেস অয়েল ও তেল পরিবহনকারী জাহাজের মধ্যে সংঘর্ষের ফলে।
কর্ণফুলী দূষণের জন্য বিদ্যুেকন্দ্রগুলোকেও দায়ী করছে পরিবেশ অধিদপ্তর। তাদের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, বিদ্যমান বিদ্যুেকন্দ্রগুলোয় যথাযথ অয়েল ওয়াটার সেপারেটর নেই এবং কার্যকরভাবে এগুলো পরিচালিত হচ্ছে না।
জানতে চাইলে পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) আলতাফ হোসেন চৌধুরী বণিক বার্তাকে বলেন, কর্ণফুলী দূষণের বিষয়ে আমরা চিন্তিত। শিল্প-কারখানায় ইটিপি থাকলেও অধিকাংশ সময়ই তা অকার্যকর থাকে। আমরা বিষয়গুলো নিয়ে জরিমানা ছাড়াও পরিবেশ আইনে মামলা পর্যন্ত করেছি। শুধু পরিবেশ অধিদপ্তর নয়, কর্ণফুলী বাঁচাতে হলে সামগ্রিকভাবে উদ্যোগ প্রয়োজন।
রূপসা: শিল্পনগরী খুলনার নদীগুলোর অন্যতম রূপসা। নদীটির দুই তীরঘেঁষে গড়ে উঠেছে অসংখ্য শিল্প-কারখানা। এসব শিল্পের মধ্যে আছে— হিমায়িত খাদ্য প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান, লবণ ফ্যাক্টরি ও ডকইয়ার্ড। ইটভাটা, চালকল, অক্সিজেন কারখানা ও বেসরকারি জুট মিলও রয়েছে নদীটির দুই পাড়ে। এসব শিল্পপ্রতিষ্ঠানের তরল ও কঠিন বর্জ্য ক্রমাগত দূষিত করছে রূপসার পানি।
গবেষণার তথ্য বলছে, নগরীর মধ্য দিয়ে প্রবাহিত রূপসার পানিতে অন্যান্য ভারী ধাতুর উপস্থিতি সহনীয় মাত্রায় থাকলেও সীমা ছাড়িয়েছে লৌহ। নদীর পানিতে লৌহের উপস্থিতি পাওয়া গেছে প্রতি লিটারে দশমিক ৩ মিলিগ্রামের বেশি, যা সহনীয় মাত্রার উপরে। সহনীয় মাত্রার অতিরিক্ত এ ভারী ধাতুতে জলজপ্রাণী, বিশেষ করে মাছও দূষিত হচ্ছে, মানবস্বাস্থ্যের জন্যও যা হুমকি তৈরি করছে।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেমিস্ট্রি বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল হক বলেন, কল-কারখানার বর্জ্যে রূপসার পানিতে ভারী ধাতুর উপস্থিতি বাড়ছে। দ্রবীভূত অক্সিজেনের মাত্রাও কমে যাচ্ছে। নদীর তলদেশে মারাত্মক অক্সিজেন ঘাটতির কারণে জীববৈচিত্র্যের মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে।
তবে রূপসার পানিতে দূষণের মাত্রা তুলনামূলক কম বলে দাবি করছেন পরিবেশ অধিদপ্তর খুলনার কেমিস্ট শাখার কর্মকর্তা সৈয়দ আহমদ কবির। তিনি বলেন, নদীর প্রতি লিটার পানিতে সাড়ে ৪ মিলিগ্রামের উপরে দ্রবীভূত অক্সিজেন থাকতে হয়। রূপসায় জুন-জুলাইয়ে ৬-৭ মিলিগ্রাম পর্যন্ত অক্সিজেনের মাত্রা থাকে। পানিপ্রবাহ কমে গেলে দূষণের মাত্রা বেড়ে যায়।
করতোয়া: বগুড়া সদর, শিবগঞ্জ, শাজাহানপুর ও শেরপুরসহ চারটি উপজেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে করতোয়া নদী। শহরের বেশির ভাগ ড্রেনেজের সংযোগ করতোয়ার সঙ্গে। এ ড্রেন দিয়ে বিভিন্ন বর্জ্যের পাশাপাশি বিসিক শিল্পনগরীর বর্জ্যও পড়ছে করতোয়ার পানিতে। এতে দূষিত হচ্ছে নদীর পানি।
নমুনা পরীক্ষায় করতোয়ার পানিতেও সহনীয় মাত্রার অতিরিক্ত ভারী ধাতুর উপস্থিতি পেয়েছেন গবেষকরা। সাতটি ভারী ধাতুর মধ্যে করতোয়ায় সবচেয়ে বেশি মাত্রায় রয়েছে লৌহ ও ম্যাঙ্গানিজ। নদীটির পানির নমুনা পরীক্ষা করে ম্যাঙ্গানিজের উপস্থিতি পাওয়া গেছে প্রতি লিটারে দশমিক ৩২ মিলিগ্রাম পর্যন্ত। যদিও পানযোগ্য পানিতে ম্যাঙ্গানিজের সহনীয় মাত্রা প্রতি লিটারে দশমিক ১ মিলিগ্রাম। আর সেচকাজে ব্যবহূত পানিতে ম্যাঙ্গানিজের গ্রহণযোগ্য মাত্রা ধরা হয় প্রতি লিটারে দশমিক ২ মিলিগ্রাম। অর্থাৎ দুই বিবেচনায়ই করতোয়ার পানিতে ভারী ধাতুর উপস্থিতি সহনীয় মাত্রা অতিক্রম করেছে।
মেঘনা: অপরিকল্পিত শিল্পায়নের শিকার দেশের অন্যতম বড় নদী মেঘনাও। মেঘনার পানি, তলদেশের মাটি ও মাছে সহনীয় মাত্রার অতিরিক্ত ভারী ধাতুর উপস্থিতি পাওয়া গেছে। গ্রহণযোগ্য মাত্রার চেয়ে বেশি সিসা ও দস্তার উপস্থিতি রয়েছে নদীটির ১৫ ধরনের মাছে। এ নদীর পানিতে ক্যাডমিয়াম, ক্রোমিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ ও দস্তার পরিমাণ নির্ধারিত মাত্রার চেয়ে কম থাকলেও লৌহের উপস্থিতি রয়েছে গ্রহণযোগ্য মাত্রার অনেক উপরে, প্রতি লিটারে ১৪৭ মিলিগ্রাম পর্যন্ত। মেঘনার তলদেশ অতিমাত্রায় দূষণের জন্য দায়ী নিকেল।
বালু নদ: পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থা ও শিল্প-কারখানার বর্জ্যে দূষণের শিকার রাজধানীর পার্শ্ববর্তী বালু নদ। পরিশোধন ছাড়াই শিল্প-কারখানার বর্জ্য ফেলার কারণে মারাত্মক দূষিত হয়ে পড়ছে এ নদীর পানি। গ্রহণযোগ্য মাত্রার চেয়ে বালু নদের পানিতে ক্যাডমিয়াম, ক্রোমিয়াম, নিকেল, সিসা ও দস্তার উপস্থিতি পাওয়া গেছে বেশি।
তুরাগ: ভয়াবহ দূষণের শিকার ঢাকার পার্শ্ববর্তী তুরাগ নদ। টঙ্গী পৌরসভা ও শিল্প এলাকার পয়োনিষ্কাশন ও শিল্পবর্জ্যের কারণে নদটি মারাত্মকভাবে দূষিত হচ্ছে। এরই মধ্যে নদের পানি কালো রঙ ধারণ করেছে। পানিতে দ্রবীভূত অক্সিজেনও শূন্যে নেমে এসেছে। তবে সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে ভারী ধাতুর দূষণ। তুরাগের পানিতে ম্যাঙ্গানিজ, লৌহ ও ক্যাডমিয়ামের মাত্রা আগেই সহনীয় সীমা ছাড়িয়েছে। ক্রোমিয়াম ও দস্তার উপস্থিতিও বেশি মাত্রায় পাওয়া গেছে। তবে সহনীয় মাত্রায় আছে সিসা ও ক্যাডমিয়াম।
বুড়িগঙ্গা: দূষণে সব নদীকে ছাড়িয়ে গছে বুড়িগঙ্গা। শিল্পবর্জ্য ও কীটনাশকের কারণে নদীটির মাছ, পানি দূষিত হচ্ছে। সবচেয়ে সাধারণ দূষণ হলো ধাতু দূষণ। এ নদীর পানিতে ভারী ধাতুর উপস্থিতি সহনীয় মাত্রার চেয়ে অনেক বেশি। এ মাত্রা আন্তর্জাতিক মান তো বটেই, স্থানীয় মানমাত্রাকেও ছাড়িয়ে গেছে। এ নদীর পানি, মাছ কোনোটাই মানবস্বাস্থ্যের অনুকূলে নেই।
শীতলক্ষ্যা: বুড়িগঙ্গার পরই সবচেয়ে বেশি দূষণের শিকার শীতলক্ষ্যা। অনেক শিল্প-কারখানার অবস্থান রাজধানী ঢাকার উত্তর-পশ্চিমের এ নদীর তীরে। বুড়িগঙ্গার সঙ্গে সংযুক্ততা ও ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে এ নদীতে অতিমাত্রায় ভারী ধাতুর উপস্থিতি রয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্ধারিত মানের চেয়ে উচ্চমাত্রায় অ্যালুমিনিয়াম, ক্যাডমিয়াম ও ম্যাঙ্গানিজ পাওয়া গেছে শীতলক্ষ্যায়। সহনীয় মাত্রার অতিরিক্ত ক্রোমিয়াম, নিকেল, সিসা ও দস্তার উপস্থিতিও পাওয়া গেছে নদীটিতে।
খিরু নদী: শিল্পবর্জ্যের কারণে দূষিত হচ্ছে ময়মনসিংহের খিরু নদী। এর পানিতে ক্যাডমিয়াম, পটাশিয়াম ও সোডিয়ামের পরিমাণ গ্রহণযোগ্য মাত্রার চেয়ে অনেক বেশি। নদীর তলদেশে ক্যাডমিয়ামের উপস্থিতি নির্ধারিত মাত্রার চেয়ে বেশি বলে গবেষণায় উঠে এসেছে।
বংশী: অপরিশোধিত বর্জ্য পানির কারণে ক্রমাগত দূষিত হচ্ছে বংশী নদী। নদীর পানিতে ম্যাঙ্গানিজ ও ক্যাডমিয়ামের পরিমাণ পাওয়া গেছে নির্ধারিত মানের চেয়ে বেশি মাত্রায়।
অপরিশোধিত শিল্পবর্জ্যকেই এ ধরনের দূষণের প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেন নদী গবেষণা ইনস্টিটিউটের ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক অরুন চন্দ্র মহোত্তম। তিনি বলেন, শিল্প-কারখানার অপরিশোধিত বর্জ্য রাজধানীর আশপাশের নদীগুলো দূষণের জন্য অনেকাংশে দায়ী। রাজধানীর বাইরে দেশের অন্য যেসব এলাকায় শিল্প-কারখানা রয়েছে, যেসব এলাকার নদীও একই কারণে দূষিত হতে পারে।
- http://bonikbarta.net/জানুয়ারি ২৫, ২০১৮