Search

Wednesday, April 18, 2018

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে আওয়ামী'পন্থী শিক্ষকদের হাতাহাতি

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। আজ মঙ্গলবার ভোরে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশমাইল এলাকার পরিবহন ডিপোতে উপাচার্য ফারজানা ইসলাম সমর্থিত ও সাবেক উপাচার্য শরিফ এনামুল কবির সমর্থিত শিক্ষকদের মধ্যে এ ঘটনা ঘটে।

ঘটনার জেরে প্রশাসনিক ভবনের সামনে পাল্টাপাল্টি অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন দুই পক্ষের শিক্ষকেরা।

প্রত্যক্ষদর্শী ব্যক্তিরা জানান, পূর্বঘোষিত ধর্মঘটের অংশ হিসেবে ভোররাত চারটার দিকে পরিবহন ডিপোর ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন শরীফ এনামুল কবিরের অনুসারী পাঁচজন শিক্ষক। উপাচার্য ফারজানা ইসলামের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় অ্যাক্ট-১৯৭৩, স্ট্যাটিউট ও সিন্ডিকেট পরিচালনা বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ আনেন এসব শিক্ষক। ঘটনাস্থলে ফারজানা ইসলাম সমর্থিত বেশ কয়েকজন শিক্ষক উপস্থিত হলে দুই পক্ষের মধ্যে বাগ্‌বিতণ্ডা ও পরে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় শরীফ এনামুল কবিরপন্থী চারজন শিক্ষক আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

দুপুরে পুরোনো প্রশাসনিক ভবনের সামনে সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলনকারী শিক্ষকেরা জানান, আজ বিকেল চারটার মধ্যে দাবি মেনে না নিলে উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনে নামবেন।

ঘটনার বিচার দাবি করে সকাল ১০টায় স্মারকলিপি দিতে উপাচার্যের বাসভবনে দেখা করতে যান আন্দোলনকারী ১৫ জন শিক্ষক। এ সময় উপাচার্য বলেন, ‘প্রাধ্যক্ষদের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়া এবং তাঁরা আমাকে প্রশাসনিক কোনো কার্যক্রমে সহযোগিতা না করে প্রশাসনের বিপক্ষে নানা রকম কার্যক্রম পরিচালনা করছিলেন। তাই তাঁদের অব্যাহতি দিয়ে সাময়িকভাবে নতুন প্রাধ্যক্ষ নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। শিক্ষকদের মধ্যে ঘটে যাওয়া ঘটনা তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এখনই কাউকে দোষী বলা ঠিক হবে না।’

এদিকে পূর্বঘোষিত কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরোনো প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে ধর্মঘট পালন করছেন শরীফ এনামুল কবিরপন্থী প্রায় ৫০ জন শিক্ষক। সাড়ে ১০টায় প্রশাসনিক ভবনে এসে শিক্ষকদের শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করার অনুরোধ করে স্থান ত্যাগ করেন উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম।

এ সময় শিক্ষক লাঞ্ছনার বিচার দাবি করলে আন্দোলনকারীদের প্রতি উপাচার্য বলেন, ‘আপনারা আমাকে উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালনের নৈতিক অধিকার হারিয়েছেন বলে দাবি করেছেন। তাহলে আমি এই ঘটনার কীভাবে তদন্ত করব!’

অন্যদিকে, বেলা সাড়ে ১১টায় প্রশাসনিক ভবনের সামনে মানববন্ধন করেছেন প্রশাসনপন্থী শিক্ষকেরা।

  • Courtesy: Prothom Alo/ Apr 17, 2018

অবশেষে স্থায়ী বহিষ্কার ছাত্রলীগ কর্মী!

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইআর) এক কর্মকর্তাকে মারধর করায় ছাত্রলীগের এক কর্মীকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

বহিষ্কৃত রাজীব বিশ্বাস বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ১১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন। মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে আইইআর-এর সেকশন অফিসার মোস্তাফিজুর রহমানকে বেধড়ক পিটুনি দেন রাজীব। আহত ওই কর্মকর্তা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি ছিলেন।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানিয়েছে, এর আগে ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে আইন বিভাগের এক শিক্ষার্থীর ওপর হামলার অভিযোগে রাজীবকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছিল। কিছুদিন পর অবশ্য তাঁর বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়। এরপর গত বছরের নভেম্বরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকসংলগ্ন ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) অস্থায়ী দোকানপাটে চাঁদাবাজি ও মারামারির অভিযোগে তাঁকে ফের সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। তখন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ থেকেও তাঁকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। এই দুটি বহিষ্কারাদেশ এখনো বহাল আছে। এর মধ্যে গতকাল তিনি আবার মারধরের ঘটনায় জড়িয়ে পড়ায় তাঁকে স্থায়ী বহিষ্কার করা হয়েছে।

ছাত্রলীগের কর্মীরা বলেন, বহিষ্কৃত হওয়ার পরও সংগঠনের সব কর্মকাণ্ডে রাজীব সম্পৃক্ত থাকতেন। তাঁকে বিভিন্ন মিছিল-মিটিংয়ে সামনের সারিতে দেখা যেত। তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি তরিকুল ইসলামের পক্ষের কর্মী ছিলেন। তাই তাঁর বহিষ্কারাদেশ ছিল নামে মাত্র।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিসের কর্মকর্তারা বলেন, গতকাল দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের বিপরীত পাশে ফুজি কালার ল্যাবের গলিতে একটি বিকাশের দোকানে কে আগে টাকা পাঠাবেন, তা নিয়ে মোস্তাফিজুর ও রাজীবের মধ্যে কথা-কাটাকাটি শুরু হয়। একপর্যায়ে মোস্তাফিজুরকে ধাক্কা দিয়ে রাস্তায় ফেলে লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারধর করেন রাজীব ও তাঁর সহযোগীরা। এ সময় আশপাশের লোকজন মোস্তাফিজুরকে উদ্ধার করেন। পরে সহকর্মীদের সহায়তায় তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

মোস্তাফিজুর প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি বিকাশের দোকানে লাইনে আগে ছিলাম। পেছন থেকে লাইন ভেঙে আগে টাকা পাঠাতে আসে রাজীব। তাকে বাধা দিলে সে আমার ওপর উত্তেজিত হয়ে যায়। আমি তার পরিচয় জানতে চাইলে সে বলে, আমি রাজীব, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ওয়ান পিস। এ কথা বলার পরপরই রাজীব ও তার সঙ্গে থাকা ১০-১৫ জন আমার ওপর অতর্কিতে হামলা চালায়। সেখান থেকে দৌড়ে ক্যাম্পাসে যাওয়ার পথে দুই দফা রাস্তায় ফেলে আমাকে মারধর করে।’

এই অভিযোগ অস্বীকার করেন রাজীব বিশ্বাস। তিনি বলেন, ‘আমার সঙ্গে তর্ক করায় আমার বন্ধুরা তাঁকে ধাওয়া করে। একপর্যায়ে হোঁচট খেয়ে মাটিতে পড়ে তিনি আহত হন।’

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি তরিকুল ইসলাম বলেন, বহিষ্কারের পরও রাজীব বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নেন। তাঁকে তো আর তাড়িয়ে দেওয়া যায় না। তবে ছাত্রলীগের বহিষ্কারাদেশ বহাল আছে।

জানতে চাইল জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর নূর মোহাম্মদ প্রথম আলোকে বলেন, এর আগেও এমন কয়েকটি ঘটনার সঙ্গে রাজীব বিশ্বাস জড়িত থাকায় তাঁকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছিল। তাই এবার তাঁকে স্থায়ী বহিষ্কার করা হয়েছে।

  • Courtesy: Prothom Alo /Apr 17, 2018

Tuesday, April 17, 2018

ত্রিমুখী হামলা কোটা বিরোধী আন্দোলনে - আসিফ নজরুল


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ত্রিমুখী হামলা কোটাবিরোধী আন্দোলনে। তদন্তের স্বার্থে যে কোন মানুষকে জিজ্ঞাসাবাদের অধিকার রয়েছে পুলিশের। কিন্তু কোটা বিরোধী আন্দোলনের নেতাদের যেভাবে জোর করে তুলে নিয়েছিল পুলিশ, তাতে মনে হয়না জিজ্ঞাসাবাদের জন্য করা হয়েছিল এটি। আমার ধারনা তাদের বরং উদ্দেশ্য ছিল আন্দোলনকারীদের মনে প্রচন্ড আতংক সৃষ্টি করা।

আন্দোলনকারীরা সজাগ না থাকলে এমন চেষ্টা আবারো হতে পারে। এক্ই সাথে আন্দালনকারীদের শায়েস্তা করার জন্য তাদেরকে জামাত-শিবির আখ্যায়িত করার অপচেষ্টাও চলতে পারে। হলে হলে আন্দোলনকারীদের উপর নিপীড়নও চলতে পারে অনেকদিন।

এ্ই ত্রিমুখী হামলার বিরুদ্ধে দাড়ানো উচিত ছিল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের, শিক্ষক সমিতির এবং নাগরিক সমাজের। কিন্তু এদের অধিকাংশ সরকারের পদলেহী, সুবিধাবাদী কিংবা ভিতু। কেউ কেউ প্রতিবাদী, তবে তা আমল বুঝে।

কাজেই এই সংকটে ছাত্রসমাজের প্রকৃত শক্তি হবে তাদের নিজেদের ঐক্য, সৎসাহস ও সচেতনতা। নিপীড়নের বিরুদ্ধে শান্তিপূর্নর্ কিন্তু সুদৃঢ় অবস্থান। ন্যায়, সাম্য ও অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে বাংলাদেশের ছাত্রসমাজ কখনো পরাজিত হয়নি। এবার হবে না বলে বিশ্বাস করি। 
  • Manobzamin/Apr 17,2018

শিক্ষার নিম্নমান দুর্বল মানবসম্পদ তৈরি করছে

সাইফ সুজন

মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের বাংলা, ইংরেজি ও গণিত বিষয়ে শিখন মান কেমন, তা যাচাইয়ে সর্বশেষ ২০১৫ সালে একটি জরিপ চালায় মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)। তাতে দেখা যায়, অষ্টম শ্রেণীর অর্ধেকের বেশি শিক্ষার্থীর বাংলা, ইংরেজি ও গণিত বিষয়ে দক্ষতা কাঙ্ক্ষিত মানের নয়।

বিষয়ভিত্তিক শিখন মান যাচাইয়ে লার্নিং অ্যাসেসমেন্ট অব সেকেন্ডারি ইনস্টিটিউশনস (লাসি) শীর্ষক জরিপটি চালানো হয় দেশের ৩২ জেলার ৫২৭টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ওপর। এতে অংশ নেয় ষষ্ঠ ও অষ্টম শ্রেণীর ৩১ হাজার ৬২০ জন শিক্ষার্থী। অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের বাংলা বিষয়ে দক্ষতা যাচাইয়ে যেসব প্রশ্ন করা হয়, তার মধ্যে একটি ছিল ‘সন্ধি’ নিয়ে। ‘মৃৎ+ময়’-এর সন্ধি হলে কী হবে? এ প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিতে পারে ৪১ শতাংশ শিক্ষার্থী। অর্থাৎ অষ্টম শ্রেণীর ৫৯ শতাংশ শিক্ষার্থীর মধ্যেই বাংলা ব্যাকরণের এ মৌলিক বিষয়ে জ্ঞান নেই।

ইংরেজি ভাষায় শিক্ষার্থীর দক্ষতা পরিমাপে প্রশ্ন করা হয় সর্বনামের ব্যবহার নিয়ে। একটি পূর্ণাঙ্গ বাক্যের যে স্থানে সর্বনাম ব্যবহার হবে, সে স্থানটি শূন্য রাখা হয়। শূন্য স্থান পূরণের জন্য দেয়া হয় চারটি সম্ভাব্য উত্তর। সহজ এ প্রশ্নেরও উত্তর দিতে পারেনি ২৭ শতাংশ শিক্ষার্থী।

গণিতের দক্ষতা যাচাইয়ে বিভিন্ন দূরত্বের জন্য লাল ও সবুজ রঙের দুটি ট্যাক্সির ভাড়া লেখচিত্র অংকন করে ৫০ কিলোমিটারের জন্য অপেক্ষাকৃত সস্তা ট্যাক্সি নির্বাচন করে কারণ ব্যাখ্যা করতে বলা হয়। এর সঠিক উত্তর দিতে সক্ষম হয় অষ্টম শ্রেণীর মাত্র ২ শতাংশ শিক্ষার্থী। ৯৮ শতাংশ শিক্ষার্থী সঠিক উত্তর দিতে ব্যর্থ হয়।

এ ধরনের প্রশ্নের ভিত্তিতে পরিচালিত জরিপ প্রতিবেদন বলছে, অষ্টম শ্রেণীর ১৯ শতাংশ শিক্ষার্থীর ইংরেজিতে প্রয়োজনীয় দক্ষতা রয়েছে। এছাড়া গণিতে দক্ষতা রয়েছে ২২ ও বাংলায় ৫৪ শতাংশ শিক্ষার্থীর।

অর্থাৎ ৫৪ শতাংশ শিক্ষার্থী বাংলা পাঠ থেকে তথ্য জানতে ও বুঝতে পারে। জটিল বাক্য সহজভাবে বলার সক্ষমতাও তারা দেখিয়েছে। আর ১৯ শতাংশ শিক্ষার্থী ইংরেজিতে অপরিচিত ও জটিল টেক্সট পড়ে তার অন্তর্নিহিত অর্থ অনুধাবন, বিভিন্ন তথ্যের সংযোগ প্রতিষ্ঠার দক্ষতা দেখাতে পেরেছে। গণিতে পরিচিত টাস্ক সমাধান এবং ওইসব টাস্কে ভুল হলে সেটা সংশোধনের দক্ষতা রয়েছে ২২ শতাংশ শিক্ষার্থীর।

জ্ঞান কাঠামোর এ নিম্নমান তাদের কর্মজীবনেও প্রভাব ফেলছে। বিশ্বব্যাংক মনে করছে, মাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষার নিম্নমান ও বাস্তবতার সঙ্গে এর ন্যূনতম সম্পৃক্ততার কারণে অপর্যাপ্ত তাত্ত্বিক জ্ঞান নিয়ে তারা কর্মক্ষেত্রে যুক্ত হচ্ছে। গত ৩১ মার্চ প্রকাশিত “বাংলাদেশ: স্কিলস ফর টুমরো’স জবস” শীর্ষক প্রতিবেদনে সংস্থাটি বলছে, দক্ষতার অন্যতম ভিত্তি হলো শিক্ষার্থীর অক্ষরজ্ঞান ও গাণিতিক হিসাবের সক্ষমতা। মাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষার নিম্নমুখী মানের কারণে তাত্ত্বিক বিষয়ে শিক্ষার্থীদের দক্ষতার ভিত্তি দুর্বল হচ্ছে। পরবর্তীতে শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কার্যকরভাবে দক্ষতা উন্নয়নেও প্রতিবন্ধকতা তৈরি করছে এ দুর্বল ভিত। অল্প কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের তাত্ত্বিক বিষয়ে দক্ষতা বাড়াতে বিশেষ ব্যবস্থার সুযোগ রেখেছে। তবে দক্ষতা বৃদ্ধির এ সুযোগও পায় না প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থার বাইরে চলে যাওয়া শিক্ষার্থীরা। এমনকি মাধ্যমিক-পরবর্তী শিক্ষা গ্রহণকারীদের মধ্যেও দক্ষতার অভাব থেকে যাচ্ছে। দক্ষতার এ ঘাটতির কারণে চাকরিপ্রার্থীরা চাকরিদাতাকে তুষ্ট করতে পারছেন না।

শিক্ষার এ দুর্বল মান নিয়ে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি সম্ভব নয় বলে মনে করেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টারের (পিপিআরসি) নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. হোসেন জিল্লুর রহমান। বণিক বার্তাকে তিনি বলেন, শিক্ষার্থীরা ভর্তি হচ্ছে, ক্লাস করছে, পাস করে বেরও হচ্ছে। কিন্তু তারা কতটুকু শিখছে? সেটাই এখন বড় প্রশ্ন। এ শিক্ষায় দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তোলা সম্ভব না হওয়ায় বিদেশীরা এসে বিলিয়ন ডলার নিয়ে যাচ্ছে। এছাড়া শিক্ষা ব্যবস্থা ও কর্মসংস্থানের মধ্যে লক্ষ্যগত অসঙ্গতিও রয়েছে। আমাদের চাকরির বাজারে যে ধরনের জনসম্পদ প্রয়োজন, শিক্ষার্থীদের সে আলোকে তৈরি করা প্রয়োজন। যদিও সেটি করা হচ্ছে না।

শিক্ষার্থীদের শিখন মানের অনেকটাই নির্ভর করে শিক্ষকের যোগ্যতার ওপর। যদিও দেশের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষকদের বড় অংশই অপ্রশিক্ষিত। বাংলাদেশ শিক্ষা তথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরোর (ব্যানবেইস) তথ্যমতে, দেশের মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোয় পাঠদানে নিয়োজিত আছেন মোট ২ লাখ ৪৩ হাজার ৫৫৩ জন শিক্ষক। এর মধ্যে ৭১ হাজার ৭০২ জনের কোনো ধরনের প্রশিক্ষণ নেই। এ হিসাবে মাধ্যমিক পর্যায়ের ২৯ দশমিক ৬৬ শতাংশ শিক্ষক প্রশিক্ষণ ছাড়াই পাঠদান করছেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক হাফিজুর রহমান এ প্রসঙ্গে বণিক বার্তাকে বলেন, বিদ্যালয়গুলোয় শিক্ষকরা যেভাবে পড়ান, তা শিক্ষার্থীরা ঠিকমতো বুঝতে পারে না। প্রশিক্ষণ না থাকার কারণে শিক্ষার্থীদের কাছে দুর্বোধ্য হয়ে ওঠে শিক্ষকের পাঠদান। কারণ শিক্ষকরা পাঠদান করেন নম্বরের উদ্দেশ্যে, শেখানোর উদ্দেশ্যে নয়। পরীক্ষাকে কেন্দ্র করেই দেয়া হচ্ছে পাঠদান। অনেক সময় কিছু প্রশ্নকে পরীক্ষার জন্য গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে নির্বাচিত করে সেগুলোই পড়ানো হয়। পাঠদানের ক্ষেত্রে শিক্ষাক্রম ও শিক্ষক সহায়িকা অনুসরণের কথা বলা হলেও অধিকাংশ শিক্ষকই তা দেখেন না। ফলে ত্রুটিপূর্ণ শিখন পদ্ধতিতে প্রকৃত শিখনফল থেকে বঞ্চিত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা।

নিম্নমানের পাশাপাশি দেশের প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থার আরেকটি দুর্বল দিক হচ্ছে কর্মসংস্থান নীতিমালার সঙ্গে এর লক্ষ্যগত দূরত্ব। যেমন চাকরির বাজারে চাহিদা না থাকা সত্ত্বেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর কিছু বিভাগে অধিক শিক্ষার্থী ভর্তি করা হচ্ছে। আবার চাহিদা থাকলেও বিজ্ঞান, চিকিৎসা ও প্রকৌশলের মতো বিভাগে আসন বাড়ানো হচ্ছে না। বিশ্বব্যাংকের ‘সাউথ এশিয়া হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট সেক্টর: অ্যান অ্যাসেসমেন্ট অব স্কিলস ইন দ্য ফরমাল সেক্টর লেবার মার্কেট ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক প্রতিবেদন অনুযায়ী, বর্তমানে দেশের মোট শিক্ষার্থীর সবচেয়ে বেশি ৩০ দশমিক ৫ শতাংশ রয়েছে কলা ও মানবিকে। অথচ চাকরির বাজারে এর চাহিদা মাত্র ১৩ দশমিক ৭ শতাংশ। অর্থাৎ এ শাখায় প্রয়োজনের তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি শিক্ষার্থী ভর্তি করানো হচ্ছে। অন্যদিকে বিজ্ঞানশিক্ষায় ২৩ দশমিক ৯ শতাংশ শিক্ষার্থীর চাহিদা থাকলেও এতে অধ্যয়নরত মাত্র ৮ শতাংশ। ফলে বিজ্ঞানশিক্ষায় এখনো ঘাটতি রয়েছে ১৫ দশমিক ৯ শতাংশ শিক্ষার্থীর।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের ডিন অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াতুল ইসলাম এ প্রসঙ্গে বলেন, চীন, জাপান ও জার্মানির মতো দেশ তাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় কারিগরি ও কলকারখানাকেন্দ্রিক শিক্ষিত জনবল তৈরি করেছে। আমাদের দেশেরও চাকরির বাজারকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে শিক্ষা নীতিমালা গ্রহণ করা উচিত। অন্যথায় শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা বাড়তেই থাকবে।

  • Courtesy: Banikbarta/Apr 17, 2018

মন্ত্রী মহোদয় জেগে থেকে ঘুমের ভান করেন - জাফরুল্লাহ


গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেছেন, মন্ত্রী মহোদয় যদি জেগে থেকে ঘুমের ভান করেন, তারা না জানার মধ্যেই সব কাহিনী জানেন। সিস্টেম না বদলালে মানুষের চিকিৎসার ক্ষেত্রে দুঃখ দুর্দশা দূর হবে না। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সেবার মান বাড়াতে জেলা উপজেলা পর্যায়ে চিকিৎসার সুযোগ বাড়ানোর পাশাপাশি সব সরকারি হাসপাতালের বহির্বিভাগে সেবা দেওয়ার সময় বাড়াতে হবে।

অসুস্থ রোগীরা চিকিৎসা নিতে গিয়ে সরকারি হাসপাতালে নানা দুর্ভোগে পড়তে হয় সাধারণ মানুষের। নানা ধরনের সংকট আর ভোগান্তির আরেক নাম সরকারি হাসপাতালের বহির্বিভাগ। যেখানে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা পাওয়ার কথা থাকলেও চিকিৎসকদের সহকারী আর আয়াদের দৌরাত্ন্যে পদে পদে টাকা গুণতে হয় ভুক্তভোগী রোগীদের। চিকিৎসকের দেখা পেতেও অসুস্থ রোগীদের অপেক্ষা করতে হয় ঘণ্টার পর ঘণ্টা। বিশেষজ্ঞদের মতে সিস্টেম না বদলালে মানুষের দুঃখ দুর্দশা দূর হবে না।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, অতিরিক্ত রোগীর চাপে তারা সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, অনেক চিকিৎসা কর্মীদের মধ্যেই সেবা দেয়ার মানসিকতার অভাব রয়েছে।

হাড়ভাঙা রোগীদের জন্য দেশের একমাত্র বিশেষায়িত জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতালের বহির্বিভাগের প্রতিদিনের চিত্র হলো সেখানে বিনামূল্যে সব সেবা দেওয়ার কথা থাকলেও টাকা ছাড়া কোন কিছুই মেলে না বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।

দূর্ঘটনায় হাত-পা ভেঙে বহু কষ্টে ক্র্যাচে ভর দিয়ে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাসপাতালের বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিতে আছে প্রতিদিন অসংখ্য রোগী। নিয়ম অনুযায়ী গাড়ি থেকে নামার পরই রোগীদের হাসপাতালের ট্রলি বা হুইল চেয়ার পাওয়ার কথা।

ভাঙা পায়ের চিকিৎসা করাতে আসা এক নারী বলেন, ‘বাইরে থেকে আমি খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে এসেছি। ট্রলি চেয়েছিলাম কিন্তু তারা বলেছে, ট্রলি নেই।

এক রোগীর স্বজন জানান, সিরিয়ালের দাঁড়াতে গেলে টাকা, এক্স-রে করতে গেলে টাকা, যেখানে যাই সেখানেই শুধু টাকা।

শুধু এই হাসপাতাল নয়, রাজধানীর ১৮টি সরকারি হাসপাতালে বহির্বিভাগের অবস্থা একই। সব জায়গাতেই চিকিৎসকের সহকারী কিংবা আয়াদের দৌরাত্ম্য।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, জনবল সংকটের কারণে সাধ্যের চেয়ে বেশী দিয়েও সমস্যার সমাধান করা যাচ্ছে না।

জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের আবাসিক সার্জন ডা. আশরাফুল হক সিয়াম বলেছেন, আমরা তাদের চাহিদা পূরণ করতে পারছি না। আমাদের অবকাঠামো, ডাক্তার, ওয়ার্ড বয়, আয়া, নার্স-এসব যদি পর্যাপ্ত দেওয়া হয় তাহলে হয়তো আমরা পর্যাপ্ত সেবা দিতে পারবো।

শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. উত্তম কুমার বড়ুয়া বলেছেন, একজন ডাক্তারকে বহির্বিভাগে প্রতিদিন ৩’শ থেকে ৪’শ রোগী দেখতে হয়। এক মিনিট করে কি একটা রোগী দেখা সম্ভব? অতএব চিকিৎসকের অনেক পদ সৃষ্টি করতে হবে।

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেছেন, অর্ধেকের বেশি রোগী এই হাসপাতালে আসাই উচিৎ ছিলো না। এগুলি উপজেলায় বা জেলায় চিকিৎসা হতে পারে। আউটডোরে ডাক্তারকে সকাল আটটা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত কষ্ট করে বসে থাকতে হবে। সিস্টেম না বদলালে মানুষের দুঃখ দুর্দশা দূর হবে না। মন্ত্রী মহোদয় যদি জেগে থেকে ঘুমের ভান করেন তাহলে তো হবে না। তারা না জানার মধ্যেই সব কাহিনী জানেন।

দেশে এ মুহূর্তে ১৬ কোটি মানুষের জন্য মোট সরকারি হাসপাতাল আছে মাত্র ১২৪টি। এছাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ৪২৫ ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্র আছে ৪৮৬০টি।

  • Courtesy: আমাদের সময়.কম /Apr 17, 2018

আংশিক সত্য, অসত্যের চেয়ে ভয়ঙ্কর

গোলাম মোর্তোজা


সেই বহু পুরনো কথা ‘গ্লাস অর্ধেক ভরা না অর্ধেক খালি’। যেভাবেই দেখেন কোনোটাই অসত্য নয়। দৃষ্টিভঙ্গির বিষয় অবশ্যই।

এই দৃষ্টিভঙ্গির ব্যাখ্যায় অধিকাংশ ক্ষেত্রে অতি সরলিকরণ করা হয়ে থাকে। ধারণা দেয়ার চেষ্টা হয় ‘অর্ধেক গ্লাস খালি’ বলা মানে আপনি একটি বিষয় নেতিবাচকভাবে দেখছেন।’অর্ধক গ্লাস ভরা’ বললেই আপনি ইতিবাচক বা আশাবাদী মানুষ। এই গ্লাস ‘খালি’ এবং ‘ভরা’র সঙ্গে সত্য এবং অসত্যের যে সম্পর্ক আছে, সরলিকরণ ব্যাখ্যা তা পাশ কাটিয়ে যাওয়া হয়। বাংলাদেশের সমাজ- রাজনীতির প্রেক্ষিতে বিষয়টি দেখার চেষ্টা করা যাক।

১. বাংলাদেশ জনসংখ্যাগতভাবে একটি সুবিধাজনক অবস্থায় আছে। মোট জনসংখযার ৬৬ শতাংশ মানুষ কর্মক্ষম। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর সাম্প্রতিক হিসেবে সুনির্দিষ্ট করে বলা হয়েছে কর্মক্ষম মানুষের সংখ্যা প্রায় ১১ কোটি। বিষয়টি ভেবে দেখেন, ১৬ কোটি মানুষের মধ্যে ১১ কোটি মানুষ কাজ করতে সক্ষম। পৃথিবীর যে সমস্ত দেশ উন্নত হয়েছে, তাদের প্রায় সবাই জনসংখ্যার এই সুবিধাজনক সময়টা অতিক্রম করেছে। ইউরোপের প্রায় সব দেশ, এশিয়ার জাপান,দক্ষিন কোরিয়াসহ অনেক দেশের নাম বলা যায়।বর্তমানে বাংলাদেশ এমন সুবিধাজনক একটি অবস্থায় আছে। একটি দেশের এমন সুবিধাজনক অবস্থা থাকে সাধারণত তিন দশক।আজকের যে জনসংখ্যা সম্পদ, তিন দশক পরে গিয়ে তা দায়ে পরিণত হতে শুরু করে। যেমন জাপানে এখন বয়স্ক মানুষ অর্থাৎ কাজ করার সক্ষমতা নেই, এমন মানুষের সংখ্যা অনেক বেশি।কিন্তু তারা কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীকে কাজে লাগিয়ে উন্নতির সর্বোচ্চ শিখরে পৌঁছেছিল। ফলে অর্থনীতির আগের সেই গতি না থাকলেও টিকে আছে।

৬৬ শতাংশ বা প্রায় ১১ কোটি মানুষ কর্মক্ষম, রিজার্ভ- অর্থনীতি- প্রবৃদ্ধির অংকও সবল। কিন্তু সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী প্রায় সাড়ে ৪ কোটি মানুষের কাজ নেই। যদিও তাদের কাজ করার সক্ষমতা আছে। এই পরিসংখ্যান সামনে আনলেই বলবেন,সাড়ে ৬ কোটি মানুষের তো কাজ আছে । গ্লাস অর্ধেক ভরা, সেভাবে দেখেন। হ্যাঁ,সেভাবে দেখা যায়। এই তথ্য তো অসত্য নয়। সাড়ে ৪ কোটি মানুষের কাজ নেই, এই তথ্যও তো অসত্য নয়। প্রত্যাশাটা কী, সব মানুষের কর্মসংস্থান হবে। দেশের সব মানুষের ভাগ্যের বদল হবে। ‘দিন বদল’র শ্লোগাণে তো তেমনটাই বলা হয়েছিল। এখন শুধু অর্ধেক গ্লাস ভরা দেখতে বলছেন কেন! আর্থিক খাতের অনিয়ম-দুর্নীতি বিনিয়োগে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনিয়ম- নৈরাজ্য বিনিয়োগের একমাত্র কারণ না হলেও, অন্যতম কারণ। এর বিরুদ্ধে সরকারের ব্যবস্থা নেয়াটা দৃশ্যমান নয়। বিনিয়োগ না হওয়ায় প্রত্যাশিত কর্মসংস্থান হচ্ছে না। কর্মক্ষম বেকারের সংখ্যা বাড়ছে, বাড়ছে বিক্ষুদ্ধতা।

২. সরকারের দৃষ্টিভঙ্গেতেও ভিন্ন চিত্র দেখা যায়।’একটি রোহিঙ্গা পরিবারকে ফেরত নিয়েছে মিয়ানমার’- মিয়ানমার সরকার সংবাদটি ফলাও করে প্রচার করছে। একটি পরবারকে ফেরত নেয়ার বিষয়টিকে বাংলাদেশ বলছে ‘হাস্যকর’। বাংলাদেশ বলছে না যে, অন্তত একটি পরবারকে তো ফেরত নিয়েছে। পরাবারটি নো ম্যানস ল্যান্ডে ছিল। বাংলাদেশ বলছে না যে, পরিবারটিকে বাংলাদেশের ভেতরে না পাঠিয়ে, মিয়ানমার ফিরিয়ে নিয়েছে।এভাবে বললে মনে হতো যে, পরিবারটিকে বাংলাদেশেই পাঠানোর কথা ছিল। বিষয়টি তো তা নয়। বাংলাদেশে আসা রোহিঙ্গার সংখ্যা  সরকারি হিসেবে ১১ লাখ, অন্যান্য হিসেবে এই সংখ্যা ১৪ লাখও হতে পারে। বাংলাদেশে আসা রোহিঙ্গাদের কথা বলছি। যদি ২ লাখও ফেরত নেয়, বাংলাদেশকে বলতে হবে ৯ লাখকে ফেরত নেয়নি।অর্ধেক গ্লাস ভরা তত্ত্ব এক্ষেত্রে দেশের স্বার্থ পরিপন্থী।


৩. দেশের তরুণদের বহু দিনের দাবি প্রচলিত কোটা ব্যবস্থা সংস্কার করতে হবে। শুধু তরুণদের নয়, স্বাধীন বাংলাদেশে যে তিনটি কমিটি করা হয়েছিল তারা সবাই সবাই পদ্ধতি বাতিল বা সংস্কারের পক্ষে রিপোর্ট দিয়েছিল। পাবলিক সার্ভিস কমিশনও বর্তমান পদ্ধতির কোটার পক্ষে  না। তরুণরা কোটা বাতিল নয়, সংস্কারের দাবি সামনে আনল। প্রথমে গুরুত্বই দিলেন না। তারা সংগঠিত হতে থাকলো। তাদের পক্ষে বাড়তে থাকল জনমত। তখন থেকেই বলা শুরু হলো, আন্দোলনকারীরা জামায়াত- শিবির- রাজাকার। জাতির বিবেক হিসেবে পরিচিত কেউ কেউ লিখে ফেললেন ‘রাস্তা কেন আটকালো’?’ রাস্তা আটকে মানুষের দুর্ভোগ তৈরি করা খুব খারাপ কাজ, যা করা একদম ঠিক হয়নি।

এক্ষেত্রেও অর্ধেক দেখা না দেখার বিষয় চলে আসে।

কোটা সংস্কার আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী- চাকুরিপ্রার্থীদের আন্দোলন গত ৮ এপ্রিল শাহাবাগে রাস্তা আটকে শুরু হয়নি। তারা নিয়মাতান্ত্রিক উপায়ে রাস্তা না আটকে মানববন্ধন করেছে।গলায় সার্টিফিকেট ঝুলিয়ে রাস্তা ঝাডু দিয়ে প্রতিবাদ করেছে। স্বারকলিপি দেয়ার চেষ্টা করেছে। সরকার তাদের দিকে ফিরেও তাকায় নি। আন্দোলনটি অনেক দিন ধরে চলছে।

যিনি বা যারা বলছেন ‘রাস্তা কেন আটকালো’ তিনি বা তারা দীর্ঘদিন ধরে চলা এই আন্দোলন বা নায্য- যৌক্তিক দাবি বিষয়ে একটি কথা বলেননি, একটি অক্ষরও লেখেননি।

একজন পুলিশ অফিসার আন্দোলনকারীদের বললেন ‘খায়া ফালামু’। কোনো উস্কানি ছাড়া নির্দয়ভাবে লাঠিপেটা করলেন।কয়েক’শ টিয়ারসেল, রাবার বুলেট ছোঁড়া হলো। জলকামানের ব্যবহার চলল। শিক্ষার্থীরা আহত রক্তাক্ত হলেন। এই নিপীডন নির্যাতন চলল সারা রাত ধরে। চলল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের ভেতরে। ‘রাস্তা কেন আটকালো’ বলাওয়ালারা এই নিপীড়ন- নির্যাতনের বিষয়ে নিরব থাকলেন, কোনো কথা বললেন না- লিখলেন না।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি হঠাৎ করে জেগে উঠলেন সকালবেলা। ’ভিসির বাড়ি কেন ভাঙ্গচুর হলো’- মানববন্ধন করে ফেললেন। খুব ভালো উদ্যোগ, ভিসির বাড়ি ভাঙ্গার প্রতিবাদে মানববন্ধন অবশ্যই করবেন। ভিসির বাড়ি কারা ভাঙ্গলেন, তদন্ত- শাস্তি খুব জরুরি। ভিসির বাড়ি ভাঙ্গচুরের ঘটনা ঘটেছে রাত একটা বা দেরটার দিকে। অদ্ভূত বিষয়, শিক্ষক সমিতি তার ‘আগে- পরে’র কোনো ঘটনা দেখার দেখার প্রয়োজন মনে করেনি। শতাধিক শিক্ষার্থী আহত- রক্তাক্ত হয়ে ঢাকা মেডিকেল গেছে, সেখান থেকেও তাদের পুলিশ ধরে নিয়ে গেছে অনেককে। শিক্ষক সমিতি বা ভিসি বা প্রক্টোরিয়াল বডির নজরেই আসল না বিষয়টি। এই আংশিক দেখাটাই আমাদের সমাজের একটা সাধারণ চিত্র হয়ে গেছে।

৪. দাবি ৫৬ শতাংশ কোটা সংস্কার করে কমিয়ে আনার। শিক্ষকসহ সমাজের গুরুত্বপূর্ণ মানুষের একটা অংশ দেখানোর চেষ্টা করতে থাকলো যে, মূলত মুক্তিযোদ্ধা কোটার বিরুদ্ধে আন্দোলন করা হচ্ছে। এবং আন্দোলনকারীরা মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধ শক্তি।মুক্তিযোদ্ধারা যে কোটা সংস্কার আন্দোলনের লক্ষ্য নয়, তা বুঝেও না বোঝার ভান করলেন। আন্দোলনকারীদের প্রায় সবাই কোনো না কোনোভাবে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান।এই তথ্য জানা থাকলেও, বলতে চাইলেন না।

অসত্য প্রচারণাও চালালেন। গোলাম আযমরা অল্প কিছু সংখ্যক মানুষ ছাড়া বাংলাদেশের সব মানুষের অবস্থান ছিল মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে। এবং মুক্তিযোদ্ধাদের একটা সঠিক তালিকা করতে পারেনি বাংলাদেশের কোনো সরকার। প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের অনেকে তালিকায় নেই। যে তালিকা আছে সেই তালিকা অনুযায়ী এখন মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সংখ্যা ২ লাখ। ৩০ লাখ শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের অধিকাংশই তালিকায় অন্তর্ভূক্ত নয়। ২ লাখ নিপীড়িত নারীদের অল্প কয়েকজন ছাড়া প্রায় সবাই তালিকার বাইরে। যে তালিকা অনুযায়ী মুক্তিযোদ্ধাদের সুবিধা দেয়া হচ্ছে, সেই তালিকাটি বড় রকমের ত্রুটিপুর্ণ। তালিকায় রয়ে গেছে অনেক অমুক্তিযোদ্ধা, কোনো কোনো ক্ষেত্রে রাজাকারও। 

বর্তমান সরকারে সময়ে উদ্যোগ নেয়া তালিকাতেও ঢুকে গেছে জামায়াত- রাজাকার। ভূয়া মুক্তিযোদ্ধা সনদে সুবিধা নেয়া পুলিশ ধরা পড়ছে, ধরা পড়ছে প্রশাসনের সর্বোচ্চ কর্মকর্তা সচিবরা। মূলত বাণিজ্য চলছে মুক্তিযোদ্ধা সনদ নিয়ে।অর্থের বিনিময়ে সনদ বিক্রির কিছু সংবাদ বের হয়ে আসছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। 

এমন একটি তালিকার ভিত্তিতে সরকারি চাকরির ৩০ শতাংশ কোটা যে কোনোভাবেই থাকা উচিত নয়, যে কোনো বোধবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষের তা বোঝার কথা। অথচ এখানে ঘটছে উল্টো ঘটনা। সত্য চাপা দিয়ে অসত্য সামনে এনে, অসততার পক্ষে অবস্থান নেয়া হচ্ছে। অসম্মানিত করা হচ্ছে জাতির শ্রেষ্ঠ্য সন্তান মুক্তিযোদ্ধাদের। নায্য দাবির বিপক্ষে যুক্তি দিতে না পেরে, ঢাল হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে মুক্তিযোদ্ধাদের। যে কাউকে বলে দেয়া হচ্ছে রাজাকার। ছাত্রলীগ করা আন্দোলনের নেতাকেও বলে দেয়া হচ্ছে জামায়াত - শিবির। সরকারের একটি অন্যায় বা দুর্নীতির সমালোচনাকে আখ্যা দেয়া হচ্ছে, দেশ বিরোধী ষড়যন্ত্র হিসেবে। প্রচারণা যেন প্রপাগান্ডায় পরিণত হচ্ছে।

৫. শুরুতে বলেছিলাম দৃষ্টিভঙ্গির কথা। অর্ধেক গ্লাস খালি দেখবো, না অর্ধেক ভরা দেখবো। অর্ধেক গ্লাস ভরা দেখতে চাওয়া মানে জ্ঞাত বা অজ্ঞাতসারে অপরাধকে সমর্থন করা। এর সঙ্গে আশাবাদের সম্পর্ক নেই, বিষয়টি এত সরল নয়। আপনার দুটি ভালো চোখের একটি আঘাত করে নষ্ট করে দেওয়া হলো। নিশ্চয় একটি অক্ষত রাখার জন্যে আঘাতকারীকে ধন্যবাদ বা অভিনন্দন জানাবেন না। দুই সন্তানের একজনকে সন্ত্রাসীরা হত্যা করল, আরেকজনকে করলো না। নিশ্চয় অভিনন্দন জানাবেন না, একজনকে হত্যা করেনি বলে। রিজার্ভ থেকে ১০ কোটি ডলার চুরি হয়ে যাওয়ার পর, ৩২ বিলিয়নের বাকিটা চুরি হয় নাই বলে গভর্নরকে ধন্যবাদ বা অভিনন্দন জানাবেন না।

গ্লাসের পুরোটা ভর্তি থাকার কথা, অর্ধেক ভর্তি থাকার কথা নয়। বাকি অর্ধেক অন্যায়ভাবে খালি করা হয়েছে, হচ্ছে। এখানে গ্লাসের পানি মানে শুধু পানি নয়, মানুষের জীবন। বহু আগে, হয়তো বর্বর যুগে বলা যেত ‘যাক তাও তো কিছু একটা হয়েছে’। তখন অর্ধেক গ্লাস ভরা বা আংশিক প্রাপ্তি নিয়ে সন্তুষ্ট হওয়ার ব্যাপার কাজ করে থাকতে পারে। বর্তমান পৃথিবীতে এসব পুরনো তত্ত্ব অচল। অচল তত্ত্ব নিয়ে পড়ে থাকলে সমাজবিরোধীরা উৎসাহ পায়। এখন সময় হিসেব নেওয়ার, অর্ধেকের নয়, পুরোটার।


  • Courtesy: Daily Star Bangla/Apr 2018

We need reliable infrastructure, not megaprojects

Abdullah Shibli


Bangladesh newspapers bring me good news and sometimes not so good ones too. In the latter category, I include accounts of tailbacks, road accidents, power failures, and factory fires. While one realises these are but symptomatic of a country that is growing and has underinvested in infrastructure, these problems are not just headaches that you deal with but also have significant economic costs. I do not intend to get into the details of the economic costs of traffic jams or the damages caused by potholes or delayed infrastructure projects. A question that often raises its ugly head is, in our efforts to reach the middle-income status fast, are we selling out on future growth potential? What I am referring to is our focus on short-term gains in terms of GDP growth as we disregard the perennial problem of inadequate investment in infrastructural projects, which often have a longer-term payoff?

Two recent news items in The Daily Star (DS) received a lot of attention. One of them highlighted the deplorable condition of the Dhaka-Chittagong four-lane highway, and the other pertained to a lack of infrastructural investment in Bangladesh. The Dhaka-Chittagong highway costing Tk 3,600 crore was finished in December 2016 but started falling apart after only six months of operation. The cost per kilometre was Tk 25.71 crore or USD 3.13 million, which was higher than the cost in India or China. How does this happen? A prime suspect is corruption, according to Dr Zahid Hussain of the World Bank's Dhaka Office.

Last year, at a roundtable on “Road to 2030: Strategic Priorities” held in Dhaka, participants strongly advocated for greater investment in infrastructure to expedite economic growth. “The amount of spending is inadequate compared to the investment made by peer countries,” said Abul Kasem Khan, president of Dhaka Chamber of Commerce and Industry (DCCI). According to the DCCI, Bangladesh's infrastructure spending stands at only 2.85 percent of GDP, in contrast to 10 percent in Vietnam, 9 percent in China and 5 percent in India, the Philippines, and Sri Lanka. “If Bangladesh wants to attract foreign direct investment and remain competitive it will have to raise investment in infrastructure,” said Khan. At the same conference, Professor Mustafizur Rahman of CPD was critical of cost escalation in infrastructure projects as well as shortage of qualified managers for execution of infrastructure projects.

The picture that emerges from the two cases outlined above, and confirmed by others, is one of a dialectical contradiction between the forces affecting our national aspirations and economic dynamic. We have an unmet need for infrastructure but resources allocated through the budgetary process and private investment are inadequate, misappropriated, or inefficiently spent! The list of problems besetting our large and medium-scale projects, many of which are in infrastructure, includes lack of managerial skills, funding, and poor governance. These failures, almost like a chronic disease, have afflicted our megaprojects including the Padma Bridge project, Rooppur NPP, and Metro Rail, but have not spared other large- and small-scale projects either. It's not premature to raise red warning flags next to the JICA-supported projects in the pipeline, including expansion of Hazrat Shahjalal International Airport, construction and repair of Kanchpur, Meghna and Gumti bridges, Matarbari power plant, and the underground power substations.

It can be argued that not all our infrastructure projects are in bad shape, and some have good performance records. The Jamuna Bridge, the thermal power plants, ICT projects, and some of our road projects have contributed significantly to our economic growth and quality of life. However, it is also true that we could have done better and, to use a technical term, we have not reached our growth potential, as many observers have mentioned.

Bangladesh ranked 114th out of 138 countries in the World Economic Forum's Infrastructure Competitiveness Report 2016-17. The World Bank's Doing Business Report 2018 showed that Bangladesh ranked 177th among 190 economies. According to an OECD report, total global infrastructure investment requirements by 2030 for transport, electricity generation, transmission and distribution, water and telecommunications will come to USD 71 trillion. This figure represents about 3.5 percent of the annual World GDP until 2030. For Bangladesh, which currently invests 2.85 percent, the rate needs to be higher because of the sorry state of our roads, railroads, and bridges.

For Bangladesh to invest 5 percent of its GDP in infrastructure development, as stipulated in the Seventh Five Year Plan, our annual projected outlay ought to be USD 12 billion (Tk 100,800 crore). According to estimates made by DCCI, the total need for infrastructure development is USD 320 billion by 2030, or nearly USD 25 billion a year or 1.5 times the current year's budget. A country's endowment with infrastructure represents a critical factor to sustain economic growth, attract foreign direct investment (FDI) and promote trade. By one estimate, an increase in investment by 1 percentage point of GDP in countries like ours with large infrastructure gaps can raise GDP by 0.4 to 1.5 percent in the following four years.

To sum up, Bangladesh needs infrastructural development, but all of our infrastructure projects run into a problem, known as the “mega project syndrome”. The projects run into many type of difficulties including delays, cost overruns, and possibly technical glitches. The original plans for these projects, whether they are bridges, ports, power plants, roads, transit, construction or skyscrapers, become outdated and then we carry on guided by our “seat of the pants” instincts. Unfortunately, a project management expert, Professor Flyvbjerg of Oxford University has shown that this practice has led to systematic underestimation of the costs and an overestimation bias affecting benefits.

“In order to successfully improve infrastructure in Bangladesh, there must be an increased commitment from the government, in addition to foreign investments. This will ensure that large-scale projects will be funded continuously and in a transparent manner,” according to The Borgen Project, an international NGO.

However, truth be told, there are some sceptics and nobody articulated the sentiment better than British PM Theresa May. “Infrastructure by itself does nothing,” she said. “You can put a bridge between A and B and if nobody's going to use it then, well…” she said, doubtfully. “But if you put up a bridge that allows people to make trips they couldn't otherwise make… out of that can come connections—investment activity which couldn't otherwise happen.” A very keen observation indeed, Madame Prime Minister!

All this suggests that it might be advantageous to scale up our infrastructure investment gradually, simultaneously building capacity and strengthening institutions. In the future, the government may create a separate cadre in the BCS Exam to recruit and groom specialists in project management. From an economic growth perspective, infrastructure is not only an enabling factor for development and for facilitating private investments and competitiveness but can be an attractive investment opportunity in itself. Our private sector can be encouraged to seize upon infrastructure investment opportunities, possibly in private-public partnership, and this calls for an enabling environment for such investment, as BIDA chief himself admitted recently.

Dr Abdullah Shibli is an economist, and Senior Research Fellow, International Sustainable Development Institute (ISDI), a think-tank in Boston, USA.

  • Courtesy: Daily Star/Apr 17. 2018

Taken blindfolded, held for an hour

DB says 3 quota reform leaders 'quizzed'; protesters threaten tougher action if cases not withdrawn in two days


Around 1:30pm yesterday, three leaders of the quota reform movement were in a rickshaw heading towards the Dhaka Medical College Hospital.   

All of a sudden, a group of gun-toting men appeared there, identified themselves as detectives and allegedly dragged the trio into a white microbus. The three were made to wear helmets and at one point “blindfolded” after the vehicle left the place.

The leaders Nurulhaq Nur, Muhammad Rashed Khan and Faruk Hasan are joint conveners of Bangladesh Shadharan Chhatra Odhikar Sangrakkhan Parishad, a platform of students who had been demonstrating for reforms in the country's quota system in civil service.

Nurul is a master's student of Dhaka University English department while Rashed and Faruk are former students of the university's Banking and Insurance department and Institute of Disaster Management and Vulnerability Studies.

All the fellow protesters were in the dark about their whereabouts until detectives admitted detaining and taking the three to the DB office on Minto Road for “questioning”. They were released around 2:30pm.

The way the three were picked up caused a furore among other protesters with many of them comparing the incident with enforced disappearance. Rights organisation Ain o Salish Kendra expressed deep concern over such an “attitude" of the law enforcing agencies.

Although police said they took the three students for verification of some information and “showing them some video clips”, the trio claimed that they were neither quizzed nor shown any videos.

When the three were being picked up in Dhaka, police in Jhenidah interrogated Rashed's father Nabai Biswas, a mason, to know whether the family had any political affiliation, claimed Nabai. He said he was not linked with any political party or its affiliated bodies.

Talking to reports in front of DU Central Library, the trio narrated how they were picked up.

"As soon as we reached near the emergency gate of the DMCH, some people wielding revolvers and identifying themselves as detectives dragged us inside the microbus," Nurul said.

They were made to wear helmets, he said, adding that the plainclothes men brought towels and “blindfolded” them after the vehicle reached Gulistan.

"I thought I was about to die. I asked for forgiveness from the Almighty,” Nurul said.

"We were able to return possibly as many people saw us [being picked up] in front of the Dhaka Medical College Hospital. If that had not happened we doubt whether we could ever come back,” he added.

Asked, Nurul said none of them was assaulted.

Last week, the country witnessed a widespread movement of students of public and private universities across the country, demanding reforms to the quota system.

The protesters blocked key points in the capital and also roads and highways elsewhere for four days to press home their five-point demand, including reducing the quota privilege to 10 percent from 56, crippling the traffic system.

The movement turned violent on April 8 night after police fired tear gas and rubber bullets, used water cannons and charged truncheons to disperse demonstrators who blocked the Shahbagh intersection for over five hours. Clashes continued throughout the night, leaving around 163 people injured.

A group of unidentified youths vandalised the vice chancellor's residence on the campus.

On Wednesday, Prime Minister Sheikh Hasina in parliament announced that there would be no quota in government jobs and asked the students to end the demonstration. The students complied with that.

On April 11, the DU authorities and police filed five cases with Shahbagh Police Station against a huge number of unidentified people. Four of the cases were filed over vandalism, arson and obstructing lawmen from performing their duties and the attack on the VC's residence.

The other case was filed under the Information and Communication Technology Act for spreading rumours online during the movement.

MONDAY’S  INCIDENT
Several leaders from the student platform's central committee were going to restaurants in Chankharpool for lunch. But before that, they wanted to visit their fellow demonstrators who were injured and being treated at the DMCH.

"As soon as we reached near the emergency gate of the Dhaka Medical College Hospital, three to four motorbikes intercepted the rickshaw carrying the three students,” said Bin Yamin, a student who was in another rickshaw nearby.

"Two white microbuses with tinted glasses came and the three were dragged into one of the microbuses,” he said, adding that he along with others present at the scene spread the news.

At the briefing, Nurul said, "We saw hundreds of people in front of Dhaka Medical College Hospital. We screamed for help but none came to our rescue.” 

Nurul claimed that as the blindfold was removed and he opened his eyes, he found himself and the other two in a room. Later, they found that they were at the DB office.

"We were told that we would be quizzed. Some video clips would be shown. They also said there were possibilities of attacks on us. But we were neither shown any video clip nor interrogated," he said.

The officials of the Detective Branch (DB) of Police released them around 2:30pm.

"When the honourable prime minister announced that our demands would be met, we brought out a joyous procession, welcoming the decision. Yet, we are repeatedly being threatened that we will be disappeared and killed,” he said.

Contacted, Debdas Bhattacharya, additional commissioner of DB, said the three students were taken to the DB office to know whether they could give us any information or identify those who attacked the VC's residence.

"They left the DB office after we got the information,” he told The Daily Star.

Replying to a query, Debdas said they did not get any significant information from them.

Asked about the student's allegation that they were dragged into the vehicle and were not asked anything, Devdas said he was not aware of any such incident.

This newspaper called DB (South) Deputy Commissioner Jamil Hasan several times over phone but he did not receive the calls.

RASHED'S FATHER QUIZZED
Rashed's father Nabai lives in a tin-shed house in Jhenidah Sadar's Muraridah village.

The father of three told The Daily Star that he was asked to go to Jhenidah Police Station around 1:30pm.

Asked, he claimed that he did not have any political link. His neighbour Mahmudul Hasan also said he did not see anyone from Nabai's family taking part in any political activities, reports our Jhenidah correspondent.

Emdadul Haque Sheikh, officer-in-charge of the police station, said Nabai was taken there for questioning "following a newspaper report".

In Dhaka, Rashed told the reporters, "They are trying to force my father into confessing that he belongs to Jamaat-Shibir and his son is a Shibir man."

"My father is a day labour. He toiled a lot to send me to this university. He has not committed any crime,” he said.

"What is the fault of my father? Why police hurled abuses at him?” he said in tears.

"And what is our fault?" he said, adding: "I want justice."

Earlier in the morning, the Bangladesh Shadharan Chhatra Odhikar Sangrakkhan Parishad held a press conference, protesting a report by Daily Ittefaq. The report mentioned Rashed as an active Shibir activist.

The parishad leaders claimed that they had no political affiliation and termed the report “baseless and politically motivated”.

Later the newspaper withdrew the report from its online version and apologised for publishing it.

At the briefing, the student leaders also demanded that the authorities concerned withdraw the cases within the next two days. Otherwise, they threatened that they would wage a tougher movement.

They demanded the arrest of the miscreants involved in the attack on the VC's residence and urged not to harass any student in the university dormitories.

  • Courtesy: The Daily Star /Apr 17, 2018

কোটা সংস্কার পক্ষের আইনজীবীকে ছাত্রলীগের হুমকি

কোটা সংস্কারের পক্ষে অবস্থান নিয়ে এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন সদ্য আইন পেশায় যুক্ত এক নারী। ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত—এমন আট-দশজন যুবকের বিরুদ্ধে তিনি অশালীন আচরণের অভিযোগ এনে রমনা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরির (জিডি) করেছেন।

রাজধানীর একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন বিভাগে স্নাতক পাস করা ওই নারী এখন জজকোর্টে আইন পেশা চর্চা করেন। 

গত রোববার তিনি প্রথম আলোকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়েনর বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যুক্ত থাকার সুবাদে কোটা সংস্কারের পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আন্দোলনে নামেন। এতেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা খেপে ওঠেন।

ওই নারী বলছিলেন, ১২ এপ্রিল তিনি তাঁর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক বড় ভাইয়ের সঙ্গে ক্যাম্পাসে গিয়েছিলেন। হঠাৎ আট-দশজন ছাত্র তাঁর সামনে এসে দাঁড়ান। তাঁরা ওই বড় ভাইকে সেখান থেকে চলে যেতে বলেন। এরপর দুজন গিয়ে ওই নারীর পাশে বসেন। অন্যরা তাঁর কাছ থেকে জানতে চান, তিনি কেন কোটা সংস্কারের পক্ষে স্ট্যাটাস দিয়েছেন। তিনি প্রাক্তন হয়ে যাওয়ার পরও কেন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এসেছেন, সেটাও জানতে চান তাঁরা। ফেসবুকের লেখা মুছে না ফেললে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা।

তিনি ওই ভিড়ের মধ্যে কয়েকজনকে চিনতে পারেন। তাঁরা তাঁরই বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েক ক্লাস নিচের ছাত্র। ঘটনাস্থল থেকে একরকম পালিয়ে এসে তিনি ফেসবুকে তাঁর অভিজ্ঞতার কথা লেখেন। এরপর ফেসবুকের মেসেঞ্জারে তাঁকে শাসাতে শুরু করেন অভিযুক্ত ব্যক্তিরা। ১৪ এপ্রিল নিরাপত্তাহীনতার কথা জানিয়ে ওই নারী আইনজীবী একটি জিডি করেন। তবু তাঁদের কেউ কেউ এখনো তাঁকে শাসাচ্ছেন বলে জানান তিনি। তিনি রমনা থানায় নাম উল্লেখ করে তিনজনের বিরুদ্ধে ও নাম না–জানা আরও বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছেন। ঘটনাটি তদন্ত করছেন রমনা থানার উপপরিদর্শক মোহাম্মদ জুলফিকার আলী।

গতকাল রাতে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ব্যস্ততার কারণে তিনি ঘটনার তদন্ত শুরু করতে পারেননি। আজ (মঙ্গলবার) বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে যাবেন এবং কাজ শুরু করবেন।

  • Courtesy: Prothom Alo/ Apr 17, 2018

চোখ বেঁধে তুলে নেয়া হয় আন্দোলনের তিন নেতাকে

নিরাপত্তা ঝুঁকিতে আন্দোলনকারীরা



গাড়িতে তুলে নিয়ে গামছা দিয়ে চোখ বেঁধে ফেলা হয় বলে জানিয়েছেন কোটা সংস্কার আন্দোলনের কেন্দ্রীয় তিন নেতা। তাঁদের ভাষ্য, কোনো নির্যাতন করা হয়নি। তুলে নেওয়ার দুই ঘণ্টা পর পুলিশ ছেড়ে দিলে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান ওই তিন নেতা। তাঁদের আলোচনার জন্য নেওয়া হয়েছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ।

সোমবার বেলা পৌনে একটার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে প্রবেশ ফটকের সামনে রিকশা থেকে ওই তিন নেতাকে নামিয়ে মাইক্রোবাসে করে পুলিশ তুলে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ উঠেছে। তাঁরা হলেন, বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের তিন যুগ্ম আহ্বায়ক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের মাস্টার্সের ছাত্র নুরুল্লাহ নূর, এমবিএর (ব্যাংকিং অ্যান্ড ইনস্যুরেন্স বিভাগ) ছাত্র রাশেদ খান এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের মাস্টার্সের ছাত্র ফারুক হোসেন।

দুই ঘণ্টার মধ্যে তাঁদের ছেড়ে দেয় পুলিশ। এর প্রতিবাদে আন্দোলনকারীরা বিকেল চারটার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে মিছিল করেন। 

পুলিশ ছেড়ে দেওয়ার পর আজ বেলা সোয়া তিনটার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে সংবাদ সম্মেলন করেন ওই তিন নেতা। তাঁদের ভাষ্য, পৌনে একটার দিকে তাঁদের একটি গাড়িতে তুলে গামছা দিয়ে চোখ বেঁধে নিয়ে যাওয়া হয়। চোখ খুলে দেওয়ার পর দেখেন, তাঁরা একটি কক্ষে। সেখানে তাঁদের বলা হয়, তাঁদের কিছু ভিডিও ফুটেজ দেখানো হবে। কিন্তু তাঁদের কিছুই দেখানো হয়নি। তিন নেতা আরও বলেন, পরে তাঁদের নাম-ঠিকানা নিয়ে পৌনে তিনটার দিকে ছেড়ে দেওয়া হয়। তাঁরা জানান, মিন্টো রোডে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কার্যালয়ে তাঁদের নেওয়া হয়েছিল। এ সময় তাঁদের কোনো নির্যাতন করা হয়নি।


সংবাদ সম্মেলনে নেতারা আরও জানান, বেলা ২টা ৫৫ মিনিটে তাঁরা সিএনজি চালিত অটোরিকশায় করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে আসেন। তাঁদের দেখে অন্যরা ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে স্বাগত জানায়। আন্দোলনকারী তিন কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, তাঁরা ও তাঁদের পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।

যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ খানের অভিযোগ, তাঁর বাবাকে ঝিনাইদহ সদর থানায় তুলে নিয়ে হয়রানি করা হয়। তাঁর বাবা একজন দিনমজুর।

ওই তিন নেতাকে তুলে নেওয়ার আগে আজ বেলা ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে পরিষদ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আগামী দুই দিনের মধ্যে আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহার করার দাবি জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে ওই তিনজনই উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনের ঘণ্টা খানেক পর ওই তিনজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে রিকশা থেকে নামিয়ে একটি বড় মাইক্রোবাসে করে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় বলে অভিযোগ করেন প্রত্যক্ষদর্শী আরেক নেতা ও এক দোকান কর্মচারী।

এ নিয়ে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার দেবদাস ভট্টাচার্য প্রথম আলোকে বলেন, তিনজনকে তুলে নেওয়া হয়নি। তাঁদের আলোচনার জন্য ডাকা হয়।

পরে বেলা পৌনে তিনটায় রাশেদের মোবাইল ফোনে কথা হলে তিনি বলেন, তাঁদের ঢাকা মেডিকেল কলেজের সামনে থেকে তুলে নেওয়া হয়। পরে পৌনে তিনটার দিকে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তাঁর অভিযোগ, তাঁর বাবাকেও থানায় নেওয়া হয়েছে।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী পরিষদের আরেক যুগ্ম আহ্বায়ক বিন ইয়ামিন ঘটনা সম্পর্কে জানান, সংবাদ সম্মেলন শেষে বেলা পৌনে একটার দিকে তাঁরা কয়েকজন দুপুরের খাবার খেতে রিকশায় করে চানখাঁরপুল যাচ্ছিলেন। রাশেদ, নুরুল্লাহ ও ফারুক এক রিকশায় ছিলেন। আর তিনি ছিলেন পেছনের রিকশায়। ওই তিনজনকে বহনকারী রিকশাটি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে প্রবেশের ফটকের কাছে এলে পেছন থেকে তিনটি মোটরসাইকেল রিকশাটির সামনে গিয়ে গতিরোধ করে। পরে পেছন থেকে আরেকটি সাদা রঙের হাইএস মডেলের মাইক্রোবাস এসে সেখানে থামে। গাড়ি থেকে কয়েকজন নেমে রিকশা থেকে তিন নেতাকে নামিয়ে গাড়িতে তুলে নিয়ে চলে যায়।

একই তথ্য জানালেন, আরেক প্রত্যক্ষদর্শী হাসপাতালের ফটকের উল্টো দিকে খাবারের দোকানের কর্মচারী মো. সালাউদ্দিন। তিনি বলেন, মোটরসাইকেল ও গাড়ি থেকে নেমে সাত-আটজন ওই রিকশার সামনে দাঁড়ায়। তারা তিনজনকে রিকশা থেকে নামাতে গেলে কিছুটা ধস্তাধস্তি হয়। পরে তিনজনের প্রত্যেককে দুই পাশ থেকে দুজন করে ধরে গাড়িতে তুলে নিয়ে দ্রুত চলে যায়।

  • Courtesy: Prothom Alo /Apr 16, 2018