Search

Wednesday, August 29, 2018

রাষ্ট্র মেরামতে চাই ‘জাতীয় সনদ’

ড. বদিউল আলম মজুমদার


সাম্প্রতিক কিশোর-তরুণ বিক্ষোভ শুধু নিরাপদ সড়কের দাবিতেই সীমাবদ্ধ ছিল না, তারা আমাদের বিরাজমান দুর্নীতিগ্রস্ত, নিবর্তনমূলক ও অসম রাষ্ট্রকাঠামোর ‘মেরামতের’ও তাগিদ দিচ্ছিল। কারণ বর্তমান রাষ্ট্রকাঠামো যে সাধারণ নাগরিকের পরিবর্তে কোটারি স্বার্থই সংরক্ষণ করে, পরিবহন খাত যার জ্বলন্ত দৃষ্টান্ত। তবে রাষ্ট্রীয় কাঠামোর আমূল পরিবর্তনের জন্য প্রয়োজন কতগুলো সর্বব্যাপী গভীর সংস্কার। আর এমন সংস্কারের জন্য প্রয়োজন হবে একটি রাজনৈতিক সমঝোতা ও ঐকমত্য। কারণ, এসব সংস্কার হতে হবে ‘জনগণের অভিপ্রায়ের পরম অভিব্যক্তি’।

এক দশকের বেশি সময় ধরে সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) পক্ষ থেকে আমরা কতগুলো সুদূরপ্রসারী সংস্কার প্রস্তাবসংবলিত একটি ‘জাতীয় সনদ’ নিয়ে জনমত সৃষ্টির প্রচেষ্টা চালিয়ে আসছি, যা আমাদের রাজনৈতিক দল ও অন্য স্বার্থসংশ্লিষ্টদের মধ্যে রাজনৈতিক সমঝোতার দলিল হতে পারে বলে আমাদের বিশ্বাস। জাতীয় সনদে অন্তর্ভুক্ত সংস্কার প্রস্তাবগুলো হলো:

১. কার্যকর জাতীয় সংসদ: জাতীয় সংসদকে একটি স্বাধীন ও কার্যকর প্রতিষ্ঠানে পরিণত করা, যাতে এটি নির্বাহী বিভাগের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে পারে। সংসদ সদস্যদের জন্য একটি আচরণবিধি আইন ও সাংবিধানিক নির্দেশানুযায়ী একটি ‘সংসদ ও সংসদ সদস্যদের অধিকার ও দায়মুক্তি আইন’ প্রণয়ন করা।সংসদীয় স্থায়ী কমিটিগুলো কার্যকর করা।

২. স্বাধীন বিচার বিভাগ: সত্যিকারের পৃথক্‌করণের মাধ্যমে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত এবং আইনের শাসন কায়েম করা। উচ্চ আদালতে বিচারক নিয়োগ ও অপসারণের জন্য একটি আইন প্রণয়ন করা। আদালতকে, বিশেষ করে নিম্ন আদালতকে প্রভাবিত করার, রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলা রুজু ও রাজনৈতিক বিবেচনায় মামলা প্রত্যাহারের সংস্কৃতির অবসান করা।

৩. নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন: সঠিক ব্যক্তিদের স্বচ্ছতার সঙ্গে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের লক্ষ্যে সাংবিধানিক নির্দেশনা অনুযায়ী একটি আইন প্রণয়ন এবং তা অনুসরণে কমিশনে নিয়োগ প্রদান করা। গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কমিশনের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য কমিশনকে প্রয়োজনীয় আর্থিক এবং জনবল নিয়োগের ক্ষেত্রে স্বাধীনতা প্রদান ও আইনি কাঠামোতে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন করা।

৪. সাংবিধানিক সংস্কার: সংবিধান সংশোধনের লক্ষ্যে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করা। রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতায় ভারসাম্য সৃষ্টি, সংসদে এক-তৃতীয়াংশ আসন নারীদের জন্য সংরক্ষণ, ৭০ অনুচ্ছেদের সংস্কার, ক্ষুদ্র জাতিসত্তার সাংবিধানিক স্বীকৃতি প্রদান, গণভোটের বিধানের পুনঃপ্রবর্তন, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের জন্য একটি বড় আকারের ‘ইলেকটোরাল কলেজ’ গঠন, সংসদের উচ্চকক্ষ প্রতিষ্ঠা এবং ‘টার্ম লিমিটে’র বিধান ইত্যাদি হতে পারে সম্ভাব্য সাংবিধানিক সংস্কারের ক্ষেত্র।


৫. গণতান্ত্রিক ও স্বচ্ছ রাজনৈতিক দল: গণতান্ত্রিক, স্বচ্ছ ও দায়বদ্ধ রাজনৈতিক দল গঠনের লক্ষ্যে রাজনৈতিক দলের নেতৃত্ব গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্বাচন, দলের মনোনয়ন ও অর্থায়নে স্বচ্ছতা প্রতিষ্ঠা এবং দলীয়করণের সংস্কৃতির অবসান করা। রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে উগ্রবাদ, সাম্প্রদায়িকতা, পরিচয়ভিত্তিক বিদ্বেষ ও সহিংসতা পরিহার করার অঙ্গীকার নিশ্চিত করা। দলের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন বিলুপ্ত করা।

৬. স্বাধীন বিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান: সঠিক ব্যক্তিদের নিয়োগ ও যথাযথ আইনি সংস্কারের মাধ্যমে দুর্নীতি দমন কমিশন, জাতীয় মানবাধিকার কমিশন ও তথ্য কমিশনের স্বাধীনতা ও কার্যকারিতা নিশ্চিত করা।

৭. দুর্নীতিবিরোধী সর্বাত্মক অভিযান: বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠনের মাধ্যমে দুর্নীতিবাজদের বিচারের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করা। বিদেশে অর্থ পাচারের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা এবং বিদেশে পাচার করা অর্থ ফেরত আনার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা। ন্যায়পাল নিয়োগ করা।

৮. যথাযথ প্রশাসনিক সংস্কার: একটি যুগোপযোগী জনপ্রশাসন আইন প্রণয়ন এবং মান্ধাতার আমলের পুলিশ আইনের সংস্কার করে প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিরপেক্ষতা ও পেশাদারি নিশ্চিত এবং নিয়োগ-বাণিজ্যের অবসানের মাধ্যমে এগুলোকে সত্যিকারের সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানে পরিণত করা। সরকারি কর্ম কমিশনের স্বাধীনতা ও কার্যকারিতা নিশ্চিত করা।

৯.বিকেন্দ্রীকরণ ও স্থানীয় সরকার: একটি বলিষ্ঠ বিকেন্দ্রীকরণ কর্মসূচি প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন এবং সংবিধানের ৫৯ ও ৬০ অনুচ্ছেদের আলোকে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোকে স্বাধীন ও কার্যকর করা। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির ৫০ শতাংশ স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ব্যয় এবং উচ্চ আদালতের রায় অনুযায়ী স্থানীয় সরকারে সাংসদদের ভূমিকার অবসান করা।

১০. গণমাধ্যমের স্বাধীনতা: যথাযথ আইনি সংস্কারের মাধ্যমে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা। রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন গণমাধ্যমের বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনের লক্ষ্যে যোগ্য ও নিরপেক্ষ ব্যক্তিদের নিয়ে একটি জাতীয় সম্প্রচার বোর্ড গঠন করা।

১১. মানবাধিকার সংরক্ষণ: মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আইসিটি আইনের ৫৭ ধারাসহ সব নিবর্তনমূলক আইনের সংস্কার করা। গুম, অপহরণ ও বিচারবহির্ভূত হত্যার অবসানের মাধ্যমে মানবাধিকার লঙ্ঘনের সংস্কৃতির অবসান করা।

১২. একটি নতুন সামাজিক চুক্তি: সমাজের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী যাতে রাষ্ট্রীয় সম্পদে তাদের ন্যায্য হিস্যা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে তাদের ঋণ প্রদানে ভর্তুকি দেওয়াসহ প্রয়োজনীয় কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা। তাদের পরিবারের সদস্যদের জন্য যুগোপযোগী শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত এবং তাদের জন্য শস্য ও স্বাস্থ্যবিমার প্রচলন করা ইত্যাদি।

১৩. পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা: জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার লক্ষ্যে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করা। জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত থেকে মুক্তির লক্ষ্যে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা প্রণয়ন করা। সম্ভাব্য পরিবেশবিধ্বংসী উন্নয়ন প্রকল্প পুনর্মূল্যায়ন করা।

১৪. আর্থিক খাতের সংস্কার: আর্থিক খাতে লুটপাট প্রতিরোধে ও শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় আইনি সংস্কার এবং লুটপাটকারীদের বিচারের আওতায় এনে কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করা। ব্যাংকিং খাতে বাংলাদেশ ব্যাংকের স্বাধীনতা ও নিবিড় তদারকি নিশ্চিত করা।

১৫. তরুণদের জন্য বিনিয়োগ: জনসংখ্যাজনিত সুযোগ বা ‘ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড’কে কাজে লাগানোর লক্ষ্যে তরুণদের জন্য আরও বিনিয়োগ করা। তাদের জন্য মানসম্মত শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, নিরাপত্তা নিশ্চিত ও সুযোগ সৃষ্টি করা। এসবের অভাবে তরুণেরা বিপথগামী হলে ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড ‘ডেমোগ্রাফিক নাইটমেয়ার’ বা দুঃস্বপ্নে পরিণত হতে পারে।

উপরিউক্ত ১৫ দফাবিশিষ্ট জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন করা সম্ভব হলেই রাষ্ট্র মেরামতের তথা সর্বস্তরে সুশাসন প্রতিষ্ঠার পথ সুগম হবে। তবে জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজন হবে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত একটি সরকার। তাই একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ সম্পর্কেও আমাদের ঐকমত্য সৃষ্টি হতে হবে।

সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য একটি স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও কার্যকর নির্বাচন কমিশন আবশ্যক। তবে একটি সর্বাধিক শক্তিশালী নির্বাচন কমিশনের পক্ষেও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করা সম্ভবপর নয়, যদি সংবিধানের ১২৬ অনুচ্ছেদ অনুসারে সরকার তথা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কমিশনকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদান না করে; অর্থাৎ একটি শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য আবশ্যক (necessary), কিন্তু যথেষ্ট (sufficient) নয়। ১৯৯১ সালের পর থেকে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ক্রমাগত ও লাগামহীন দলীয়করণের ফলে দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করা এখন আর সম্ভব নয়। তাই নির্বাচনকালীন একটি নিরপেক্ষ সরকার সম্পর্কেও আমাদের রাজনৈতিক ঐকমত্য সৃষ্টি হতে হবে।

সাম্প্রতিক পাঁচটি সিটি করপোরেশন নির্বাচনের অভিজ্ঞতা থেকে এটি সুস্পষ্ট যে আমাদের বর্তমান নির্বাচন কমিশনের পক্ষে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। তাই নির্বাচনের আগে কমিশনের পুনর্গঠন জরুরি। ‘না ভোট’–এর বিধান ও হলফনামায় কিছু পরিবর্তন, পরিবর্ধন ও তা যাচাই-বাছাইয়ের বাধ্যবাধকতার বিধানসহ গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে ১৯৭২-এ কিছু পরিবর্তনও আবশ্যক। তবে গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য আরও প্রয়োজন হবে নির্বাচনের আগে সংসদ ভেঙে দেওয়া।

আশা করি, কিশোর-তরুণদের রাষ্ট্র মেরামতের দাবির প্রতি সম্মান দেখিয়ে আমাদের সম্মানিত রাজনীতিবিদেরা জাতীয় পর্যায়ে আলাপ-আলোচনায় আগ্রহী হবেন। এ ধরনের যেকোনো পর্যায়ের আলোচনায় প্রস্তাবিত জাতীয় সনদটি প্রাথমিক অ্যাজেন্ডা হিসেবেব্যবহৃত হতে পারে। আমরা আরও আশা করি, তাঁরা একটি রাজনৈতিক সমঝোতায় পৌঁছাবেন, একটি জাতীয় সনদ স্বাক্ষর করবেন এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে আমাদের গণতান্ত্রিক উত্তরণ ঘটাবেন। তাহলেই সব ধরনের সংঘাত-সহিংসতা এবং অনিশ্চয়তা এড়িয়ে জাতি হিসেবে আমরা শান্তি ও সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যেতে পারব।

  • ড. বদিউল আলম মজুমদার সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক
  • কার্টসিঃ প্রথম আলো/ আগস্ট ২৯, ২০১৮ 

তিন ভারতীয় ডাক্তারের ‘অবৈধ’ চেম্বারে ভ্রাম্যমাণ আদালত


চট্টগ্রামের সুপরিচিত ডায়াগনস্টিক সেন্টার সেনসিভে চেম্বার খুলে নিয়মিত রোগী দেখছেন তিন ভারতীয় চিকিৎসক। অথচ বাংলাদেশের বিদ্যমান আইন অনুযায়ী তাদের কোন অনুমতিপত্র নেই।

মঙ্গলবার (২৮ আগস্ট) ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালিয়ে তিন চিকিৎসককে ২৪ ঘন্টার মধ্যে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) সনদ নিয়ে সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তরে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। এছাড়া অনুমতি ছাড়া বিদেশি চিকিৎসক এনে ব্যবসা করার অভিযোগে ইউনিক হেলথ কেয়ার নামে একটি প্যাথলজিক্যাল সেন্টারের কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ করে দিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব সাইফুল্লাহ হিল আজম, চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন আজিজুর রহমান সিদ্দিকী এবং জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটসৈয়দ মোরাদ আলী অভিযানে অংশ নেন।

তিন ভারতীয় চিকিৎসক হলেন- ডা.অরুণাভ রায়, ডা.নেহা চৌধুরী ও ডা. অভি কুমার।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সৈয়দ মোরাদ আলী বলেন, অভিযানের সময় সেনসিভে তিন ভারতীয় চিকিৎসককে পাওয়া যায়। তারা দাবি করেছেন- তাদের বিএমডিসি সনদ আছে। কিন্তু সেটা তারা দেখাতে পারেননি। আমরা ২৪ ঘন্টার মধ্যে বিএমডিসি সনদ নিয়ে তাদের সশরীরে হাজির হতে বলেছি। অন্যথায় বিদ্যমান আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নগরীর জামালখান এলাকায় অবস্থিত সেনসিভ ডায়াগনস্টিক সেন্টারে যাবার আগে ভ্রাম্যমাণ আদালত একই এলাকায় বেলভিউ ডায়াগনস্টিক সেন্টারেও অভিযান চালায়। সেখানে ইউনিক হেলথ কেয়ার প্যাথলজিক্যাল সেন্টার সিলগালা করে দেওয়া হয়।

সিভিল সার্জন আজিজুর রহমান সিদ্দিকী বলেন, ইউনিক হেলথ কেয়ার নামের প্যাথলজিক্যাল সেন্টার বিদেশি ডাক্তার দেশে এনে চিকিৎসার ব্যবস্থা করে। তারা বিদেশেও রোগী পাঠায়। কিন্তু তাদের এ সংক্রান্ত কোনো অনুমোদন নেই। তারা কোন অনুমতিপত্রও দেখাতে পারেননি। তাই সাময়িকভাবে প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে।

  • সূত্র: সারাবাংলা/ আগস্ট ২৯, ২০১৮ 

যুগপৎভাবে মাঠে নামতে কাজ করবে সাত দফা - ডা. জাফরুল্লাহ

সাব্বির আহমেদ

মঙ্গলবার রাতে রেইলি রোডের গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেনের নিজ বাসায় অনুষ্ঠিত বৈঠকে যুক্তফ্রন্ট ও গণফোরামের পক্ষ থেকে উপস্থাপিত সাত দফাকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন বিএনপি ঘরাণার বুদ্ধিজীবী ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। তার মতে বিষয়টি সার্বিকভাবে ইতিবাচক। ভাল একটি পদক্ষেপ সাত দফা। এই সাত দফা সংশ্লিষ্ট সকলে যৌথভাবে দুঃশাসনের প্রতিবাদে মাঠে নামতে সহায়তা করবে।

বুধবার দুপুরে সাত দফার পর্যবেক্ষণ জানতে চাইলে এই প্রতিবেদককে এমনটাই জানান গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি জাফরুল্লাহ চৌধুরী।

তিনি বলেন, সাত দফা মাঠে নামাবে। যৌথভাবে কাজ করবে। দেশে আইনের শাসন অর্থাৎ সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে অভিন্ন সুরে কথা বলবে।

‘দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন চাই, সুশাসনের সরকার চাই, জনগণের বন্দিদশা থেকে মুক্তি চাই’- এসব বিষয়গুলোই সাত দফার উদ্দেশ্য বলে জানান মঙ্গলবারের বৈঠকে থাকা জাফরুল্লাহ চৌধুরী।

দেশে একটি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন করাই সাত দফার উল্লেখযোগ্য বিষয় বলে মন্তব্য করেন ডা. জাফরুল্লাহ।

  • কার্টসিঃ আমাদের সময় /আগস্ট ২৯,২০১৮ 

ফারমার্স ব্যাংক বাঁচাতে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের সহায়তা শেষ হচ্ছে না

হাছান আদনান

ফারমার্স ব্যাংককে বাঁচাতে ৭১৫ কোটি টাকার মূলধন এরই মধ্যে জোগান দিয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত চার ব্যাংক ও ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি)। আগে থেকেই মেয়াদি আমানত ও কলমানি হিসেবে ফারমার্সকে ধার দেয়া চার ব্যাংকের প্রায় ৫৫০ কোটি টাকাও আটকে আছে। কেলেঙ্কারিতে বিপর্যস্ত ব্যাংকটি বন্ড ছেড়ে ১ হাজার কোটি টাকা সংগ্রহের উদ্যোগ নিলেও কোনো বেসরকারি ব্যাংক এতে আগ্রহ দেখাচ্ছে না। প্রথম ধাপে ৫০০ কোটি টাকার বন্ড কেনার মাধ্যমে ফারমার্স ব্যাংকে আরো অর্থ ঢালার প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করেছে রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী, অগ্রণী, জনতা ও রূপালী ব্যাংক এবং আইসিবি।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশের ব্যাংকিং খাতের নীতিনির্ধারণী নানা বিষয়ে বেসরকারি ব্যাংক উদ্যোক্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকস (বিএবি) ভূমিকা রাখলেও ফারমার্স ব্যাংক উদ্ধার প্রক্রিয়ায় তারা নীরব। এ অবস্থায় ডুবন্ত ব্যাংকটিকে টেনে তোলার দায়িত্ব রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর ওপরই পড়ছে।

সূত্রমতে, ফারমার্স ব্যাংকের মূলধন বাড়াতে ১ হাজার কোটি টাকার বন্ড ছাড়ার অনুমোদন দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। দুই দফায় ৫০০ কোটি টাকা করে বাজার থেকে এ টাকা সংগ্রহ করবে ব্যাংকটি। এর অংশ হিসেবে প্রথম দফায় ৫০০ কোটি টাকার বন্ড বিক্রির প্রক্রিয়া শুরু করেছে ফারমার্স ব্যাংক। এ বন্ডের ক্রেতা হিসেবে রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী, জনতা, অগ্রণী ও রূপালী ব্যাংক এবং সরকারি আর্থিক প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশকে (আইসিবি) বেছে নেয়া হয়েছে। ৩০০ কোটি টাকার বন্ড কেনার জন্য রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংককে প্রস্তাব দিয়েছে ফারমার্স ব্যাংক। প্রস্তাবটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকটির আগামী পর্ষদ সভায় উপস্থাপনের জন্য চূড়ান্ত করা হয়েছে। একইভাবে রাষ্ট্রায়ত্ত জনতা, অগ্রণী ও রূপালী প্রতিটি ব্যাংকের কাছে ১০০ কোটি টাকার বন্ড বিক্রির প্রস্তাব পাঠিয়েছে ফারমার্স ব্যাংক। এরই মধ্যে অগ্রণী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ফারমার্স ব্যাংকের ১০০ কোটি টাকার বন্ড কেনার প্রস্তাব অনুমোদন করেছে।

রাষ্ট্রায়ত্ত অগ্রণী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. শামস-উল-ইসলাম ফারমার্স ব্যাংকেরও পরিচালক। ব্যাংকটির বন্ড কেনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ফারমার্স ব্যাংক উদ্ধার প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে অগ্রণী ব্যাংক এরই মধ্যে ১৬৫ কোটি টাকা মূলধন জোগান দিয়েছে। ব্যাংকটির কাছে মেয়াদি আমানত (এফডিআর) ও কলমানি হিসেবে আমাদের ১৫০ কোটি টাকার বেশি বিনিয়োগ আছে। তার পরও আমরা ১০০ কোটি টাকার বন্ড কেনার প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করেছি। মূলধন জোগান দেয়ার মাধ্যমে এখন আমরাও ফারমার্স ব্যাংকের অংশীজন। এজন্যই ব্যাংকটির ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে বন্ড কিনতে হচ্ছে।

তিনি বলেন, ফারমার্স ব্যাংকের বন্ড শুধু রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক কিনবে কেন? বেসরকারি ব্যাংকগুলোর কাছেও ফারমার্সের বন্ড বিক্রি করতে হবে। পরিচালক হিসেবে বিষয়টি আমি ফারমার্সের পর্ষদ সভায় উত্থাপন করেছি। আশা করছি, ফারমার্স ব্যাংককে সুস্থ করতে বেসরকারি ব্যাংকগুলো এগিয়ে আসবে।

তবে বন্ড কেনার আগে কয়েকটি বিষয়ে সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা চেয়ে ফারমার্সকে চিঠি দিয়েছে রূপালী ব্যাংক। চিঠির জবাব পেলে তবেই বন্ড কেনার বিষয়টি পর্ষদে উত্থাপন করা হবে বলে ব্যাংকটি নিশ্চিত করেছে।

রূপালী ব্যাংকের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, ফারমার্স ব্যাংকের বন্ড কেনার প্রস্তাবে বেশকিছু অসংলগ্নতা রয়েছে। বন্ড কেনার পর সেটির এক্সিট পলিসির বিষয়টি সুস্পষ্ট নয়। ট্রাস্টির ফি বেশি হওয়া, বন্ডের ক্রেডিট রেটিংসহ কয়েকটি বিষয়ে সমস্যা রয়েছে। এজন্য রূপালী ব্যাংকের পক্ষ থেকে ফারমার্সে চিঠি দেয়া হয়েছে। চিঠির জবাব সন্তোষজনক হলে তবেই রূপালী ব্যাংকের পর্ষদে বন্ড কেনার প্রস্তাব উত্থাপন করা হবে।

জনতা ব্যাংকের প্রস্তাবটিও পর্ষদ সভায় উত্থাপনের জন্য নথিভুক্ত করা হয়েছে বলে জানা গেছে। ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. আব্দুছ ছালাম আজাদ এ প্রসঙ্গে বলেন, মূলধন জোগান দেয়ায় আমরাও এখন ফারমার্স ব্যাংকের অংশ। ব্যাংকটিকে দাঁড় করাতে বন্ড ছাড়ার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। আমরা ১০০ কোটি টাকার বন্ড কেনার প্রস্তাব পেয়েছি। জনতা ব্যাংকের পর্ষদ সভায় বিষয়টি উত্থাপন করার প্রক্রিয়া চলছে। এছাড়া আইসিবিকে ২০০ কোটি টাকার বন্ড কেনার জন্য প্রস্তাব দিয়েছে ফারমার্স ব্যাংক। এ প্রস্তাবও প্রতিষ্ঠানটির পর্ষদ সভায় অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে।

২০১৩ সালে অনুমোদন পাওয়া ফারমার্স ব্যাংকের যাত্রা হয় ৪০১ কোটি টাকা পরিশোধিত মূলধন নিয়ে। এর মধ্যে ৩৯ জন ব্যক্তি-উদ্যোক্তার বিনিয়োগের পরিমাণ ২৯৩ কোটি ৬১ লাখ টাকা, যা ব্যাংকটির মোট মূলধনের ৭৩ দশমিক ১১ শতাংশ। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী হিসেবে ১০টি প্রতিষ্ঠানের বিনিয়োগ ১০০ কোটি টাকা, যা মোট মূলধনের ২৮ দশমিক ৯০ শতাংশ। এছাড়া অপ্রাতিষ্ঠানিক ৮ কোটি টাকা বিনিয়োগ ছিল ফারমার্স ব্যাংকে। ৩৯ জন ব্যক্তি-উদ্যোক্তার মধ্যে ১৬ জন ব্যাংকটির প্রতিষ্ঠাকাল থেকে পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের মধ্যে থেকে পরিচালক ছিলেন সম্পদ ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠান রেস অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের চেয়ারম্যান চৌধুরী নাফিজ সারাফাত, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) হাসান তাহের ইমাম এবং আইসিবির প্রতিনিধি।

অনিয়ম-দুর্নীতিতে বিপর্যস্ত ফারমার্স ব্যাংককে টেনে তুলতে গত বছরের শেষের দিকে সরাসরি হস্তক্ষেপ করে বাংলাদেশ ব্যাংক। ২৭ নভেম্বর ব্যাংকটির পর্ষদ থেকে পদত্যাগে বাধ্য হন মহীউদ্দীন খান আলমগীর। তিনি ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদ ও নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন। একই দিন ব্যাংকটির অডিট কমিটির চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক চিশতীও পদচ্যুত হন।

আরেক পরিচালক ড. মোহাম্মদ আতাহার উদ্দিন ভাইস চেয়ারম্যান পদ থেকে সরে দাঁড়ান। এরপর বৈঠকে ব্যাংকের পরিচালক মোহাম্মদ মাসুদকে চেয়ারম্যান ও মারুফ আলমকে ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত করা হয়। নতুন করে ব্যাংকটির সবক’টি কমিটি পুনর্গঠন করে ঢেলে সাজানো হয়।

ব্যাংকটির পুনর্গঠিত পর্ষদের সঙ্গে গত বছরের ২৯ নভেম্বর বৈঠক করে বাংলাদেশ ব্যাংক। ওই বৈঠক থেকে সাতদিনের মধ্যে পরিচালকদের অন্তত ২০০ কোটি টাকার জোগান দিতে গভর্নর ফজলে কবির নির্দেশ দেন। একই দিন ব্যাংকটিকে টেনে তুলতে নতুন পর্ষদকে তিন মাস সময় বেঁধে দেয়া হয়। কিন্তু পরিচালকরা টাকা না দেয়ায় পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। এরপর মোহাম্মদ মাসুদকে সরিয়ে ব্যাংকটির চেয়ারম্যান হিসেবে চৌধুরী নাফিজ সারাফাত দায়িত্ব গ্রহণ করেন।

দেশের পুরো ব্যাংকিং খাতে ক্ষত সৃষ্টি করা ফারমার্স ব্যাংককে টেনে তোলার দায়িত্ব এককভাবে কাঁধে তুলে নেয় সরকার। ডুবন্ত ব্যাংকটি উদ্ধারে রাষ্ট্রায়ত্ত চার ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ৭১৫ কোটি টাকা জোগান দেয়ার ব্যবস্থা করা হয়। সরকারি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী, জনতা, অগ্রণী এবং রূপালী ব্যাংক ১৬৫ কোটি টাকা করে মূলধন জোগান দেয়। এর বাইরে আইসিবি দিয়েছে ৫৫ কোটি টাকা। যদিও প্রতিষ্ঠালগ্নেই ফারমার্স ব্যাংকে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে আইসিবি ৬০ কোটি টাকা মূলধন জোগান দিয়েছিল। সব মিলিয়ে চলতি বছরের মে মাসে ফারমার্স ব্যাংকে ৭১৫ কোটি টাকা মূলধন জোগান দেয় রাষ্ট্রায়ত্ত এ পাঁচ প্রতিষ্ঠান। নতুন করে জোগান দেয়া মূলধন যুক্ত হয়ে ফারমার্স ব্যাংকের পরিশোধিত মূলধনের পরিমাণ দাঁড়ায় ১ হাজার ১১৬ কোটি টাকা।

মূলধন জোগান দেয়ার বিপরীতে চার ব্যাংক ও আইসিবি ফারমার্স ব্যাংকে পরিচালক পদ পায়। বর্তমানে ফারমার্স ব্যাংকের চেয়ারম্যান পদে দায়িত্ব পালন করছেন চৌধুরী নাফিজ সারাফাত। তিনি ফার্স্ট জনতা ব্যাংক মিউচুয়াল ফান্ডের প্রতিনিধি হিসেবে ব্যাংকটির পর্ষদে আছেন। ব্যাংকটির অন্য পরিচালকরা হলেন— ইবিএল এনআরবি মিউচুয়াল ফান্ডের প্রতিনিধি হাসান তাহের ইমাম, সোনালী ব্যাংকের প্রতিনিধি মো. ওবায়েদ উল্লাহ্ আল্ মাসুদ, জনতা ব্যাংকের প্রতিনিধি মো. আব্দুছ ছালাম আজাদ, অগ্রণী ব্যাংকের প্রতিনিধি মো. শামস-উল-ইসলাম, রূপালী ব্যাংকের প্রতিনিধি মো. আতাউর রহমান প্রধান, আইসিবির প্রতিনিধি কাজী সানাউল হক, ট্রাস্ট ব্যাংক ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ডের প্রতিনিধি মো. আবু কায়সার, ফার্স্ট বাংলাদেশ ফিক্সড ইনকাম ফান্ডের প্রতিনিধি তামিম মারজান হুদা।

মেয়াদি আমানত ও কলমানি হিসেবে ফারমার্স ব্যাংকে প্রায় ১০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ আছে জনতা ব্যাংকের। পরবর্তী সময়ে ব্যাংকটি উদ্ধার প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে ১৬৫ কোটি টাকা মূলধন জোগান দিয়েছে জনতা ব্যাংক। তার পরও নতুন করে ফারমার্সের ১০০ কোটি টাকার বন্ড কিনতে হচ্ছে ব্যাংকটিকে।

চলতি বছরের মার্চ শেষে ফারমার্স ব্যাংকের আমানত ছিল ৪ হাজার ৮৫৭ কোটি টাকা। একই সময়ে ব্যাংকটির বিতরণকৃত ঋণ ছিল ৫ হাজার ২৮ কোটি টাকা। আমানতের চেয়ে ঋণের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় মুখ থুবড়ে পড়ে ফারমার্স ব্যাংক। এর মধ্যে ৯৬৭ কোটি টাকার ঋণ নাম লিখিয়েছে খেলাপির খাতায়, যা ব্যাংকটির বিতরণকৃত ঋণের প্রায় ১৯ শতাংশ। বিপর্যস্ত ব্যাংকটি ২০১৭ সালে ৫৩ কোটি টাকা লোকসান দিয়েছে। ফারমার্স ব্যাংকে আমানত জমা রেখে ফেরত পায়নি সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো। এ প্রতিষ্ঠানগুলো টাকা না পেয়ে এরই মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে দফায় দফায় অভিযোগ জানিয়েছে। আমানত তুলতে মুখিয়ে আছে বেসরকারি অন্যান্য প্রতিষ্ঠানসহ ফারমার্স ব্যাংকে টাকা রাখা গ্রাহকরাও।

এ বিষয়ে ফারমার্স ব্যাংকের চেয়ারম্যান চৌধুরী নাফিজ সারাফাত ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. এহসান খসরুর বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি। তাদের উভয়ের মোবাইল নম্বরই বন্ধ পাওয়া গেছে।

  • কার্টসিঃ বনিক বার্তা/ আগস্ট ২৯,২০১৮ 

আওয়ামী লীগ নেতার বিড়াল মারার অভিযোগে দিনমজুর আটক

বন্দরে আওয়ামী লীগ নেতার বিড়াল মেরে ফেলার অভিযোগে এক দিনমজুরকে আটক করেছে পুলিশ। আটক ব্যক্তির নাম মোস্তফা মিয়া (৫২)। বিড়াল কবুতর মেরে ফেলার পর বিড়াল মরে যাওয়ায় দিনমজুরকে আটকের চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে ধামগড় ইউপি কামতাল গ্রামের খামপার এলাকায়। দুর্গন্ধ ছড়িয়েছে বলে বিড়াল অন্যত্র নিয়ে ফেলে দেয়ায় হযরত আলী নামের কৃষকের বাড়িতে অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। এ ঘটনায় গ্রামবাসীর মধ্যে সমালোচনার ঝড় বইছে পুলিশের বিরুদ্ধে। বিড়াল মরে যাওয়ার ঘটনাকে পুঁজি করে পুলিশি হয়রানির সুষ্ঠু বিচার দাবি করেছেন গ্রামবাসী ও ভুক্তভোগী পরিবার।

গ্রামবাসী জানান, ২/৩ মাস যাবৎ কয়েকটি পাগলা বিড়াল গ্রামের হাঁস-মুরগি ও কবুতর মেরে ফেলেছে। বিড়াল এসব ক্ষতি করে বলে মোস্তফা মিয়া একদিন বিড়াল মারার চেষ্টা করেছিল। শনিবার রাত থেকে হযরত আলীর বাড়ির পাশে একটি বিড়াল মরে পচে দুর্গন্ধ বের হচ্ছে। বিড়াল মরার পচা দুর্গন্ধে আশপাশের বাড়িতে বসবাস করা অযোগ্য হয়ে পড়ে। রোববার সকালে হযরত আলী বিড়ালটি অন্যত্রে নিয়ে ফেলে দেয়। এরপর পাশের গ্রাম চিড়ইপাড়া কলোনির মৃত ইদ্রিস আলীর ছেলে মুছাপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন মৃত বিড়ালটি তার নিজের বলে দাবি করে। পরে তিনি কামতাল তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ ইন্সপেক্টর মোস্তাফিজুর রহমানের কাছে মৌখিক ভাবে বিড়াল মারার অভিযোগ করেন। এ অভিযোগের প্রেক্ষিতে রোববার সন্ধ্যায় এএসআই আমিরুল সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে দিনমজুর মোস্তফাকে তার বাড়ি থেকে ধরে আনেন। এ সময় কৃষক হযরত আলীকে ধরে নিতে তার বাড়িতেও অভিযান চালায় পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে মোস্তফাকে ছেড়ে দিলেও পুলিশের ভয়ে বাড়িতে আসতে পারছে না কৃষক হযরত আলী। পুলিশ আতঙ্কে রয়েছে তার পরিবার। ইন্সপেক্টর মোস্তাফিজুর রহমান জানান, বিড়াল মেরে ফেলার ঘটনাটি ইসমাইল আমার কাছে দুঃখ প্রকাশ করেন। এবং মৌখিকভাবে অভিযোগ করেন। পরে মোস্তফা মিয়াকে ডেকে এনে উভয়কে মীমাংসা করে দেয়া হয়। 

  • কার্টসিঃ মানবজমিন/ আগস্ট ২৯,২০১৮ 

EC plans EVMs for 100 seats

JS polls in last week of Dec, says EC secy


Rashidul Hasan


Just about four months before the national polls, the Election Commission is planning to use electronic voting machines (EVMs) in around 100 out of the 300 constituencies.

EC Secretary Helaluddin Ahmed made the disclosure yesterday amid strong opposition from different political parties, including the BNP, regarding the use of EVMs.

"If everything goes well, including legal reforms and the opinions of political parties, the Commission will be able to use electronic voting machines in one-third of the constituencies in the parliamentary polls,” he said, adding that the polls would be held in the last week of December. 

The EC has already sent a proposal to the planning ministry for its approval to procure 1.5 lakh EVMs for around Tk 3,500 crore, he told reporters at the Nirbachan Bhaban in the capital's Agargaon.

According to a Planning Commission document obtained by The Daily Star, no feasibility study on the EVM project has been carried out. A project evaluation meeting was supposed to be held on August 19 but was postponed.

Yet Tk 3,515 crore has already been allocated for the procurement of 1.5 lakh EVMs and other necessary equipment, the document said.  

At present, around 10 crore voters are registered. So if EVMs are used in 100 constituencies, roughly about 3 crore voters will get to vote electronically.

Currently, there is no provision in the Representation of the People Order (RPO) for using voting machines in national elections.

So, to use EVMs in the December polls, the RPO, which regulates elections, must be amended. Also, separate rules have to be formulated allowing electronic voting, the EC secretary said.

Asked, Helaluddin told The Daily Star that they would move to float tenders for the procurement of EVMs upon approval from the Planning Commission.

Earlier on August 26, the EC held a meeting at the Nirbachan Bhaban, chaired by Chief Election Commissioner KM Nurul Huda, and discussed bringing necessary changes to the RPO.

At the briefing yesterday, Helaluddin said the EC would hold a meeting tomorrow to discuss the RPO amendment. Later, they would send the proposal in this regard for law ministry's vetting. 

"Once the law is passed, the Commission will sit with the political parties [to get their opinions regarding EVMs]. The decision will then be taken whether the EVMs can be used in the parliamentary elections or not."

The EC has completed 80 percent of its preparatory work for the national election, he added.

The Commission has a plan to arrange fairs to promote EVM usage in Dhaka city in September, especially to attract young voters. It also intends to do the same in other districts as well.

So far, the EC has procured 380 EVMs and used them on a limited scale in different local body elections.

In the recently held city corporation elections, EVMs were used in three polling centres in Khulna City Corporation with 10,000 voters; two centres in Sylhet City Corporation with 5,413 voters; 11 centres in Barisal City Corporation with 25,000 voters; and two centres in Rajshahi City Corporation with 3,383 voters, sources said. 

In the EC's electoral dialogues last year, 35 of the 40 registered parties, including the BNP and its allies, opposed the idea of using EVMs in the next general election.

The other five -- the ruling Awami League, its allies Workers Party of Bangladesh, Jatiya Samajtantrik Dal faction led by Hasanul Haq Inu and Bangladesher Samyabadi Dal (M-L) and Zaker Party -- supported the use of EVMs.

The BNP has all along been opposing the EC move, alleging that this might facilitate “the government's plan for election engineering”.

  • Courtesy: The Daily Star /Aug 29, 2018 

Outstanding Loans in Banking Sector: Big chunk held by bank owners

Pvt bank directors take loans from other banks 'thru mutual understanding'


Sajjadur Rahman and AKM Zamir Uddin


In Bangladesh, industrialists and businesspeople become shareholders and directors of banks, and borrow money from each other's banks.

And not only that, up to four members of a family can now be in the board of directors of a bank, up from two previously, after the relevant rules were amended last year following Finance Minister AMA Muhith's recommendation.

But the picture is completely different in neighbouring India.

No industrialist or businessperson there can become a director of any bank as this creates a conflict of interest between the custodians and the borrowers of the institution.

India's Banking Regulation Act, 1949, clearly states that shareholders and directors of banks have two completely different roles, and the law prevents them from mixing the roles.

The shareholders own the shares of a company while the directors, who would predominantly be professionals, manage the institution. A director doesn't need to be a shareholder and a shareholder has no right to be a director, it mentions.

This reasoning is the basis of banking acts in the developed world as well.

But Bangladesh is an exception to this, and the result is as one can expect. Owner directors have given loans to each other through what can be termed “mutual understanding”.

According to Bangladesh Bank data, till March this year, bank directors borrowed Tk 107,695 crore from each other's privately-owned banks, which is 13.3 percent of the total outstanding loans of Tk 810,011 crore in the banking sector.

At present, a bank can provide loans of up to 25 percent of its capital to a single borrower, including a bank's director.

Cashing in on this, some banks have lent money to directors of other banks without due diligence.

Until March, Islami Bank Bangladesh disbursed loans amounting to Tk 11,755 crore to directors of other banks -- 16 percent of its total outstanding loans -- the highest by any bank.

National Bank disbursed 31 percent or Tk 7,896 crore of its total loans to directors of other banks, while the figure is 24 percent or Tk 6,149 crore for Exim Bank and 22 percent or Tk 4,101 crore for Prime Bank.

Besides, NRB Commercial Bank, established in 2013, has already disbursed 17.20 percent or Tk 712 crore of its total loans to directors of other banks.

According to bankers, most of the loans have been taken by around 150 directors of private banks, but not all of them are big borrowers.

Analysts have termed the practice “shady lending”, saying many of the “privileged' directors hardly repay the loans on time. Rather, they keep enjoying different benefits, including restructuring and rescheduling of loans, from the banks.

Some of the directors, who defaulted on their loans, filed writ petitions with the High Court and got stay on their defaulted status.

Talking to this newspaper, Ahsan H Mansur, executive director of the Policy Research Institute, said that in many developing countries, bank sponsors get involved only in the banks' activities, but in Bangladesh, bank directors use their influence to get loans for their own businesses.

“Borrowing by directors from each other's banks has become a serious concern for discipline in the banking sector in Bangladesh.”

Such a huge concentration of loans among a handful of directors creates a systematic risk for the financial sector, he said.

Ahsan suggested that the central bank address the issue by imposing restrictions. For example, no director should be allowed to borrow more than seven to eight percent of a bank's capital.

In 2015, the BB was forced to extend a restructuring facility for the large loans amounting to around Tk 15,000 crore given to 11 business groups. Coincidentally, the majority of the owners of the business groups hold directorship positions in the boards of different banks.

Take, for instance, the case of Beximco Group, the biggest beneficiary of the BB's restructuring facility. Its Vice Chairman Salman F Rahman is also the chairman of IFIC Bank.

Beximco owes more than Tk 7,000 crore to different banks, and the loans have been rescheduled several times, according to BB data.

Sikder Group, another beneficiary of the restructuring facility, owes around Tk 2,000 crore to different banks. Zainul Haque Sikder is the chairman of both the National Bank and Sikder Group.

Two more entities -- SA Group and Ratanpur Group -- also got their loans restructured.

Shahabuddin Alam, owner of SA Group, is also a member of the board of directors of Mercantile Bank while Maksudur Rahman, managing director of Ratanpur Group, is a director of South Bangla Agriculture and Commerce Bank.

S Alam Group, which has stakes in at least six banks, has loans of several thousand crores of taka with a dozen banks.

The large amount of loans taken by the directors is an ominous sign for the country's banking sector, said AB Mirza Azizul Islam, former adviser to a caretaker government.

The central bank should take immediate measures to stop this trend and restore corporate governance in the banking sector, he said.

“Some unscrupulous people are now trying to get licences to set up new commercial banks so that they can take loans from other banks through mutual understanding.”

Some directors have already become wilful defaulters but they have gone to court to show their loans as unclassified, Azizul said.

Salehuddin Ahmed, a former BB governor, said the banks usually disburse loans to directors of other banks without due diligence.

“Many directors have been controlling their banks to enjoy easy loans from other banks,” he said, adding that the outstanding loans taken by directors are one of the major reasons for the ongoing liquidity crisis in the banking sector.    

Asked whether the BB would take any measures to stop the excessive lending to directors, Debashish Chakrabortty, the then BB spokesperson and its executive director, said, “The directors are allowed to take loans from other banks in line with the rules of the central bank.”

At present, 57 banks with around 700 directors operate in the country. Of those, eight are state-owned  banks with around 100 directors and nine are foreign banks that have no local directors in their boards. The remaining 40 are private banks.

  • Courtesy: The Daily Star /Aug 29, 2018

আইনের শাসন - সরকারের ‘মহানুভবতা’র রাজনীতি!

কামাল আহমেদ  

অনেক মা-বাবার কান্না, সহপাঠীদের চাপা ক্ষোভ এবং নাগরিক সমাজের প্রতিবাদের মুখে প্রথমে নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের সমর্থক ছাত্রছাত্রীদের অনেকে এবং পরে কোটা সংস্কার আন্দোলনের কয়েকজন নেতা বন্দিদশা থেকে মুক্তি পেয়েছেন। ঈদের আগে তাঁদের মুক্তিলাভ পরিবারগুলোতে স্বস্তি এবং আনন্দ এনে দিয়েছে, সন্দেহ নেই। আদালত তাঁদের জামিন দেওয়ার পর আইনমন্ত্রী বলেছেন, সরকার মানবিক কারণে ‘মহানুভবতা’ দেখিয়ে তাঁদের মুক্তি দিয়েছে। আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, ‘আমরা মহানুভবতা দেখিয়েছি। এখন আমরা আশা করছি, ওরা আর কোনো গুজবে কান দেবে না, গুজব ছড়াবে না, কোনো গুজবে বিভ্রান্ত হবে না। একই সঙ্গে একজন নাগরিক হিসেবে দেশের প্রতি দরদ, ভালোবাসা, মমতা ও দেশাত্মবোধ দেখাবে।’ (বাংলা ট্রিবিউন, ২০ আগস্ট, ২০১৮)।

ব্যক্তিজীবনে ত্যাগের শিক্ষা দেয় যে ঈদ, সেই উৎসবের আগে সরকারের এই কথিত মহানুভবতায় মুগ্ধ হয়ে অনেকে সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। আবার অনেকে এর মধ্যে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য খুঁজেছেন। যাঁরা এর মধ্যে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য খুঁজে পেয়েছেন, তাঁদের বক্তব্য নিরাপদ সড়কের দাবি মানার পাশাপাশি এসব আটক কিশোর-তরুণের প্রতি উদারতা দেখানোর মধ্য দিয়ে সরকার আন্দোলনকারীদের আস্থায় নিতে চাইছে।

সরকার যে কত মহানুভব, তার বিশদ বিবরণ তুলে ধরতে গিয়ে আনিসুল হক বলেছেন, ‘ওদের প্রতি সহানুভূতিশীল বলেই আমরা এ ক্ষেত্রে মহানুভবতা দেখিয়েছি। সরকারের পক্ষ থেকে আমরা সিদ্ধান্তই নিয়েছিলাম যে আদালত যদি ওদের জামিন দেন, তাহলে প্রসিকিউশন থেকে আমরা এ বিষয়ে আপত্তি করব না। শুধু তা-ই নয়, জামিন পাওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে ২০ জন শিক্ষার্থীর পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না। সরকারের পক্ষ থেকে ওদের পক্ষে প্রসিকিউশন নিয়োগ করে ওদের জামিনের কাগজপত্র জমা দিয়েছি।’



যাঁদের কারণে এসব কিশোর-তরুণ মুক্তি পেলেন, তাঁদের ধন্যবাদ জানানোয় কার্পণ্য করা কোনো কাজের কথা নয়। কিন্তু সরকারের মানবিকতা জাগ্রত হওয়া এবং মহানুভবতা দেখানোর দাবির কারণে এই প্রশ্নটি না করলেই নয়। ধন্যবাদ আমরা কাকে দেব? আদালত নাকি সরকারকে? সরকার যদি অভিযোগ প্রত্যাহার করে নিত, তাহলে আর এই প্রশ্নটি উঠত না। কিন্তু অভিযোগ বা মামলা প্রত্যাহারের মতো কোনো পদক্ষেপের কথা তো আমরা শুনিনি।

আমরা জেনেছি যে আদালত তাঁদের জামিন দিয়েছেন। এখন আদালতের সিদ্ধান্তের কৃতিত্ব যদি আইনমন্ত্রী দাবি করেন, তাহলে তার মানে কী দাঁড়ায়? সরকারের এই দাবির পেছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য থাকলে তা আদালতের স্বাধীনতা সম্পর্কে কী ধারণা দেয়? রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ, বিএনপি এত দিন ধরে সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে আসছে যে আদালত স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছেন না-সেই দাবি বিশ্বাসযোগ্য করায় মন্ত্রীর এই বক্তব্যে দলটি খুশি হবে বৈকি। বিএনপির নেত্রীর জামিনের প্রশ্নে সরকারের কঠোর বিরোধিতা কিংবা দুর্নীতি দমন কমিশনের মামলায় দুদকের আইনজীবী থাকলেও রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেলের চোখে পড়ার মতো উদ্যোগী ভূমিকায় ক্ষুব্ধ বিএনপি কয়েক মাস ধরে এই কথাটিই বলে আসছে। তাদের বক্তব্য, সরকারের কারণেই বিএনপির নেত্রী সুবিচার পাচ্ছেন না।

আদালতকে কোনো মামলার ক্ষেত্রে প্রভাবিত করার চেষ্টা হয়েছে কি না, তা আমাদের জানা নেই। কিন্তু মন্ত্রীর বক্তব্য সত্য হলে সরকার মহানুভবতা না দেখালে এসব ছাত্রছাত্রীর জামিন হয়তো হতো না। অভিজ্ঞতা বলে, রাষ্ট্রপক্ষের আপত্তি না থাকলে আদালত সাধারণত জামিন দিতে কসুর করেন না। জামিন এবং রিমান্ডের প্রশ্নে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা নিম্ন আদালতে অব্যাহতভাবে উপেক্ষিত হওয়ার পটভূমিতে সরকারের মহানুভবতার দাবি হয়তো যৌক্তিক। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, আইনমন্ত্রী এদের প্রতি মহানুভবতা দেখিয়ে থাকলে যাঁরা ঈদের আগে জামিন পেলেন না, তাঁদের প্রতি তিনি কি কঠোরতা দেখালেন? আলোকচিত্রী শহিদুল আলম যে জামিন পেলেন না, তা যদি তাঁর এই কঠোরতার কারণে হয়ে থাকে, তাহলে মন্ত্রী হিসেবে তিনি যে শপথ নিয়েছেন, তার বিচ্যুতির অভিযোগ কি নাকচ করা যায়? মন্ত্রী হিসেবে তিনি তো কারও প্রতি রাগ বা অনুরাগের বশবর্তী না হওয়ার শপথ নিয়েছেন। কথিত মহানুভবতার জন্য ছাত্রছাত্রীদের কাছে তাঁর যেমন প্রত্যাশা আছে, তেমনি কি মন্ত্রীর বিরুদ্ধে শপথ ভঙ্গের অভিযোগ উঠলে তাঁর পদত্যাগ আশা করা যাবে?

নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের জন্য আটক ছাত্রছাত্রীদের আইনজীবীরা জামিন চাওয়ার সময়ে আদালতে বলেছেন, এজাহারে তাঁদের কারও নাম নেই এবং এ কারণে সন্দেহের বশে আটক কিশোর-তরুণদের জামিন না পাওয়ার কোনো কারণ নেই। এই আন্দোলনের কারণে যে শতাধিক ব্যক্তি আটক হয়েছেন, তাঁদের মধ্যে সহিংসতার সময়ে ঘটনাস্থল থেকে আটক হয়েছেন, এমন কেউ আছেন কি না সন্দেহ। যদি থেকেও থাকেন তা একেবারেই নগণ্য। অর্থাৎ আইন ভঙ্গ বা শান্তিরক্ষার প্রয়োজনে এঁদের গ্রেপ্তার করতে হয়েছে-ব্যাপারটা এমন নয়। অভিযোগ আছে, অনেককেই ছাত্রলীগের কর্মীরা লাঞ্ছিত করার পর পুলিশের কাছে দিয়েছেন এবং থানা তাঁদের বিরুদ্ধেই মামলা দিয়েছে। যে ৫৭ ধারা বাতিল হওয়ার কথা, সেটিরই সর্বোচ্চ অপপ্রয়োগ ঘটছে।

সবচেয়ে বড় কথা, আসল অশান্তি সৃষ্টিকারী হেলমেট বাহিনীর অনেকের পরিচয় প্রকাশের পরও গত দুই সপ্তাহে তাঁদের কেউই গ্রেপ্তার হননি। পুলিশ হামলাকারীদের খোঁজে না, কিন্তু আন্দোলনকারীদের ধরপাকড়ের জন্য সবাইকে তৎপর দেখা গেছে। থানা-পুলিশের পাশাপাশি বিশেষ পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য গড়ে তোলা চৌকস বাহিনী র‍্যাব, সন্ত্রাসবিরোধী কার্যক্রমের জন্য গঠিত অ্যান্টি-টেরর ইউনিট এবং সাইবার অপরাধ দমনের সাইবার ক্রাইম ইউনিট-সবাই নেমে পড়েছে আন্দোলনকারীদের ধরতে। নিরাপদ সড়ক আন্দোলন অথবা কোটা সংস্কারের আন্দোলন মোকাবিলায় র‍্যাব কিংবা সন্ত্রাস দমন ইউনিট নিয়োগের কী যৌক্তিকতা থাকতে পারে? একজন বিশ্ববিদ্যালয়ছাত্রীকে রাতের বেলায় তাঁর দাদাবাড়ির দরজা ভেঙে ঘুম থেকে উঠিয়ে ধরে নিয়ে আসার মতো ‘মহানুভবতা’ এসব ছাত্র-তরুণদের আজীবন মনে থাকবে, সন্দেহ নেই। জুলুম-নির্যাতন আবার ফিরে এসেছে এবং তা এখন নতুন ফ্যাশন বলে জাতিসংঘের বিদায়ী মানবাধিকার প্রধান জেইদ রাদ আল হুসেইন সম্প্রতি যে বৈশ্বিক প্রবণতার কথা বলেছেন, মনে হয় বাংলাদেশ তার এক বড় দৃষ্টান্ত।

ছাত্রছাত্রীদের আন্দোলন মোকাবিলায় সরকারের দমননীতি শুধু যে আন্দোলনকারীদের মধ্যেই আবদ্ধ থেকেছে, তা নয়। প্রথমে তা বিস্তৃত হয়েছে বিরোধী দল বিএনপির দিকে। একটি ন্যায্য দাবির আন্দোলন সমর্থনের ‘অপরাধে’ তাদের বিরুদ্ধে সরকার পতনের ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আনা হয়েছে। কথিত টেলিফোন সংলাপ ফাঁস এবং তাকে কেন্দ্র করে মামলাও হয়েছে। সরকারবিরোধী ষড়যন্ত্রের তত্ত্ব বিস্তৃত হয়েছে নাগরিক সমাজের একটি অংশ এবং যুক্তরাষ্ট্র পর্যন্ত। তথ্যপ্রযুক্তি আইনে আটক করা হয়েছে নন্দিত আলোকচিত্রী শহিদুল আলমকে। তাঁর মুক্তির জন্য নোবেল বিজয়ী থেকে শুরু করে বিশ্বের তাবৎ বুদ্ধিজীবীরা বিবৃতি দিচ্ছেন, পত্রপত্রিকায় নিবন্ধ লিখছেন।

মাত্র মাস চারেকের মধ্যে অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় নির্বাচনকে গ্রহণযোগ্য, অবাধ ও সুষ্ঠু করার জন্য একটি সম্ভাব্য রাজনৈতিক সমঝোতার প্রসঙ্গ যখন জন-আলোচনায় প্রাধান্য পাওয়ার কথা, তখন সবার মনোযোগ ও দৃষ্টি হচ্ছে শহিদুল আলমসহ গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের মুক্তির বিষয়টিতে। বলতেই হবে, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের জন্য এটি হচ্ছে মন্দের ভালো। কেননা, ২০১৪-র বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতার নির্বাচন যে রাজনৈতিক সংকটের উৎস, সেই সংকট নিরসনের রাজনৈতিক সমাধান আওয়ামী লীগের জন্য সুখকর না-ও হতে পারে। সে ক্ষেত্রে নানা ধরনের অস্থিরতার কারণে কোনো ধরনের রাজনৈতিক সমঝোতা ছাড়াই সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার দোহাই দিয়ে আরও একটি নির্বাচন নিজেদের মনের মতো করিয়ে নেওয়া অপেক্ষাকৃতভাবে সহজ।

পছন্দমতো নির্বাচন আয়োজনে যাঁদের সহায়তা প্রয়োজন, তাঁদের খুশি রাখার আয়োজনগুলো সম্পন্ন করার উদ্যোগগুলোতে সেই আলামতই মেলে। পুলিশ বাহিনীর প্রধানকে সচিব পদে উন্নীত করার যে ধারা আওয়ামী লীগ শুরু করেছিল, তা এবার নতুন মাত্রা পেয়েছে একসঙ্গে চার পুলিশকর্তার অস্বাভাবিক পদোন্নতিতে। এক দেশে আইনের দুই ধারা-সাধারণ নাগরিক হলে সন্দেহের বশেও গ্রেপ্তার এবং রিমান্ড চলবে, কিন্তু সরকারি কর্মকর্তা হলে মামলা হলেও অনুমতি ছাড়া গ্রেপ্তার নিষিদ্ধ হচ্ছে। এটাই এখন চৌকস (স্মার্ট) রাজনীতি।


  • কার্টসি ঃ প্রথম আলো/ আগস্ট ২৯,২০১৮ 

দুদক চেয়ারম্যানের অদ্ভুত আশা

সম্পাদকীয়

প্রস্তাবিত আইনটি ঠেকানোর চেষ্টা করুন

‘সরকারি চাকরি আইন’ শিরোনামে যেই আইনের খসড়াটি মন্ত্রিসভার অনুমোদন পেয়েছে, তা যে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) ক্ষমতা খর্ব করবে—সে বিষয়ে সন্দেহ নেই। কিন্তু আমরা বিস্ময়ের সঙ্গে লক্ষ করলাম, দুদকের চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ সরাসরি আইনটির বিরোধিতা করেননি। অনেকটা রাজনৈতিক নেতাদের সুরে সুর মিলিয়ে তিনি বলেছেন, ‘যেসব অসৎ ও দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা রয়েছেন, তাঁদের উচ্ছ্বসিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। দুদক যত দিন স্বাধীন আছে, তত দিন তারা স্বাধীনভাবেই দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে অভিযান চালাবে।’

দুদকের বিদ্যমান আইনের ২৮-এর ১ ধারা অনুযায়ী, যেকোনো সন্দেহভাজন দুর্নীতিবাজ বা মামলার আসামিকে বিনা পরোয়ানায় গ্রেপ্তার করা যায়। দুদক এই আইনি ক্ষমতাবলে গত আড়াই বছরে ৬ শতাধিক আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে। এর মধ্যে চার শতাধিক সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারী রয়েছেন। ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে হাতেনাতে গ্রেপ্তার হয়েছেন ৬০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী। একে দুদকের অতীতের গ্লানি ও নিষ্ক্রিয়তা থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা হিসেবে বিবেচনা করা যায়। যদিও তারা বেসিক ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান শেখ আবদুল হাই বাচ্চু এবং এ ধরনের আরও অনেক অভিযুক্ত বড় বড় দুর্নীতিবাজকে আইনের আওতায় আনতে ব্যর্থ হয়েছে।

উল্লেখ্য, সরকারি কর্মকর্তারা শুরু থেকেই দুদকের সংশ্লিষ্ট আইন নিয়ে আপত্তি জানিয়ে আসছিলেন। এত দিন সরকার সাড়া না দিলেও জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে কেন আইনটি সংশোধনের প্রয়োজন পড়ল, তা মস্ত বড় প্রশ্ন বটে। বিদ্যমান আইনে কোনো সৎ সরকারি কর্মকর্তা নাজেহাল হয়েছেন, এ রকম একটি উদাহরণও নেই। দুদক গোয়েন্দা সূত্রে খবর নিয়ে হাতেনাতে অনেক দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাকে ধরেছে। নতুন আইন কার্যকর হওয়ার পর সেই সুযোগ আর থাকবে না। কিন্তু যাঁরা সরকারি কর্মকর্তা বা কর্মচারী নন, এমন অভিযুক্ত ব্যক্তিকে অভিযোগপত্র জমা দেওয়ার আগেও দুদক ধরতে পারবে। সাধারণ নাগরিকদের ক্ষেত্রে এক নিয়ম আর সরকারি কর্মকর্তাদের বেলায় অন্য নিয়ম হতে পারে না। এটা নাগরিকদের সমানাধিকারের পরিপন্থী।

দুদক চেয়ারম্যান অবশ্য আশা করছেন, দুদক যত দিন স্বাধীন আছে, তত দিন স্বাধীনভাবে কাজ করবে এবং দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে তাঁরা মোটেই দ্বিধা করবেন না। যেখানে আইনটি করাই হচ্ছে দুদকের ক্ষমতা খর্ব করতে, সেখানে তাঁর এই আশাবাদের আদৌ কোনো ভিত্তি আছে কি? টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান যথার্থই বলেছেন, এ ধরনের আইন পাস হলে স্বাধীন প্রতিষ্ঠান দুদকের ঠুঁটো জগন্নাথে পরিণত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে যেখানে সংশ্লিষ্ট আইনগুলো আরও শক্ত করা প্রয়োজন, সেখানে এ ধরনের উদ্যোগ দুর্নীতিবাজদের দায়মুক্তি দেওয়ারই নামান্তর। মন্ত্রিপরিষদ সচিব পরিষ্কার ভাষায় বলেছেন, কোনো সরকারি কর্মকর্তাকে দুর্নীতির দায়ে গ্রেপ্তার করতে হলে চার্জশিট পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে; অর্থাৎ দুদকের বর্তমান দুর্নীতিবিরোধী অভিযান বাস্তবে অকার্যকর হয়ে পড়বে। বিশেষজ্ঞরা যখন বুঝতে পারছেন প্রস্তাবিত আইনটি দুদকের ক্ষমতা মারাত্মকভাবে খর্ব করবে, তখন দুদক চেয়ারম্যানের উপলব্ধি না করা দুর্ভাগ্যজনক।

রাজনীতিকদের ভাষায় কথা না বলে দুদক চেয়ারম্যানের উচিত হবে আইনটি যাতে জাতীয় সংসদে পাস না হয়, সে ব্যাপারে সর্বশক্তি নিয়োগ করা। দুদক যে স্বাধীন প্রতিষ্ঠান, সে কথা শুধু মুখে বললেই হবে না, কাজেও প্রমাণ করতে হবে। প্রয়োজনে তিনি উচ্চ আদালতের আশ্রয় নিতে পারেন। কেননা, প্রস্তাবিত আইনটি ২০০৪ সালের দুদক আইনের পরিপন্থী। দুদকের সাবেক চেয়ারম্যানের ভাষায় দেশবাসী এই প্রতিষ্ঠানটিকে আর ‘নখদন্তহীন বাঘ’ হিসেবে দেখতে চায় না; তারা দেখতে চায় সত্যিকার দুর্নীতিবিরোধী প্রতিষ্ঠান হিসেবে।

  • কার্টসিঃ প্রথম আলো/ আগস্ট ২৯,২০১৮ 

শহিদুল আলমের জামিন চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন


তথ্য প্রযুক্তি ও যোগাযোগ আইনে করা মামলায় আলোকচিত্রী শহিদুল আলমের জামিন চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করা হয়েছে। আজ বুধবার বিচারপতি মো. রুহুল কুদ্দুস ও বিচারপতি খোন্দকার দিলুরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে এ আবেদনের শুনানি হতে পারে।

শহিদুল আলমের অন্যতম আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলেন, এ মামলায় ৬ আগস্ট ঢাকা ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম শহিদুল আলমের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন। ১৪ আগস্ট ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে জামিন আবেদন করা হলে ১১ সেপ্টেম্বর শুনানির জন্য দিন ধার্য রাখেন। এরপর ১৯ আগস্ট শুনানির তারিখ এগোনোর জন্য আবেদন করা হলে তা গ্রহণ করেননি আদালত। এ অবস্থায় ২৬ আগস্ট শহিদুল আলমের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন চাইলে ওই আদালত শুনানির জন্য তা গ্রহণ করেননি। এ অবস্থায় গতকাল হাইকোর্টে তাঁর জামিন চেয়ে আবেদন করা হয়।

নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মধ্যে ‘উসকানিমূলক মিথ্যা’ প্রচারের অভিযোগে তথ্যপ্রযুক্তি আইনের মামলায় ৬ আগস্ট শহিদুল আলমকে সাত দিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ। এর আগের দিন রাতে ধানমন্ডির বাসা থেকে তাঁকে তুলে নেয় ডিবি। সাত দিনের রিমান্ড শেষে গত ১২ আগস্ট শহিদুলকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন নিম্ন আদালত।

এরই মধ্যে শহিদুল আলমের সমর্থনে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন, নোয়াম চমস্কি, অরুন্ধতী রায়সহ খ্যাতিমান একাধিক লেখক-বুদ্ধিজীবী বিবৃতি দেন। পেন ইন্টারন্যাশনালসহ একাধিক আন্তর্জাতিক সংগঠনও তাঁর পক্ষে বিবৃতি দিয়েছে। সর্বশেষ আলোকচিত্রী শহিদুল আলমকে মুক্তি দিতে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ব্রিটিশ আইনপ্রণেতা টিউলিপ সিদ্দিক। মঙ্গলবার ব্রিটিশ পত্রিকা ‘দ্য টাইমস’-এ প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

  • কার্টসিঃ প্রথম আলো/ আগস্ট ২৯,২০১৮