বুলডোজারের নিচে অটোরিকশা পিষে ফেলা হচ্ছে। এভাবে রুটি রুজির উৎসকে ধ্বংস হতে দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন এক অটোরিকশা চালক। |
টেকসই যান ও গণযোগাযোগ প্রবর্তনে প্রতিষ্ঠানগুলোর সম্মিলিত বুদ্ধিবৃত্তিক অবদান প্রায় শূন্য। দেশের শহর-নগর-বন্দরের আন্তসংযোগের পাশাপাশি শহর-নগর-বন্দরের সঙ্গে প্রত্যন্ত জনপদগুলোর সংযোগ তৈরি এবং পণ্য ও যাত্রী পরিবহনসেবা নাগরিকের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়াই ছিল সওজ, রেলওয়ে, অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষ, বিটিআরসি, বিআরটিএর মতো প্রতিষ্ঠানের কাজ।
বিটিআরসি প্রতিষ্ঠিত রুটে এসি বাস সার্ভিস চালু করতে নিম্ন মানের বাস কেনায় ব্যস্ত আছে, যেগুলো কেনার মাত্র দু-তিন বছরের পরেই অচল হবে, এতে নতুন বাস কেনার প্রকল্প নামানো যাবে। তাবৎ বিশ্বে বৈদ্যুতিক রেল প্রচলিত হয়ে গেলেও বাংলাদেশ রেলওয়ে ব্যস্ত আছে নিম্ন মানের ‘তেলচালিত’ ইঞ্জিন খোঁজায়, ক্রয় দুর্নীতি ধামাচাপায় অথবা ইঞ্জিন না কিনে কোচ কেনায়। অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষ ব্যস্ত অবৈধ নৌযানের লাইসেন্স দেওয়ায়, বড়জোর ড্রেজিংয়ের বরাদ্দ বাড়ানোয়। প্রযুক্তিকে, প্রকৌশল বিদ্যাকে ‘গরিবের’ চাহিদার সঙ্গে সংযোগ করার ‘টাইম নেই’ কারও।
শহর, নগর, মহানগর, মফস্বল ও গ্রামীণ অর্থনৈতিক চাহিদা, পণ্য পরিবহন ও নাগরিক যাতায়াত, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসংক্রান্ত বিশেষ যাতায়াতসহ স্থানীয় অর্থনীতির ‘চাহিদামাফিক’ যান ও যোগাযোগব্যবস্থা স্থাপনে, গণপরিবহন প্রবর্তনে সরকারের বিভিন্ন বিভাগ ও রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠানগুলোর সম্মিলিত বুদ্ধিবৃত্তিক অবদান প্রায় শূন্যের কাছাকাছি। দেশের যা কিছু বড় রাস্তা ও সেতু, তার প্রায় সবই বিদেশিদের প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষ অবদানে গড়া। বাকিগুলো যা আছে চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলা যায়, তার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সনদ লাগে না। ইলেকট্রিক্যাল, মেকানিক্যাল কিংবা সিভিল অবকাঠামোর নকশা ও বাস্তবায়নের কাজে ‘চুরি’ ভিন্ন অপর কোনো ‘কাজ’ বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠানগুলো ঠিকঠাক করতে পারছে না। মোড়হীন লেন, সংযোগ লেন, সার্ভিস লেন, সিগন্যালবিহীন নিরবচ্ছিন্ন গতিতে যানবাহন চলার উপযোগিতার হিসেবে বলা চলে বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত আন্তর্জাতিক মানের কোনো মহাসড়ক নেই। গতিময় প্রবেশ-বাইরের সুবিধাহীন স্থানীয় চাহিদার জন্য অপরিহার্য ধীর গতির যান চলাচলের বন্দোবস্তহীন কিছু সাধারণ রাস্তা আছে মাত্র।
রাষ্ট্র যখন দায়িত্বহীন তখন এই ‘বিশেষ’ যানগুলো স্থানীয় অর্থনৈতিক চাহিদার অনিবার্য আবিষ্কার। এসব রি-ইঞ্জিনিয়ারিং পণ্য দেশের ক্ষুদ্র ব্যাষ্টিক এবং বৃহৎ অর্থনীতিতে অসামান্য ভূমিকা রেখে চলেছে।
চরম বাস্তবতা হচ্ছে, রিকশা, অটোরিকশা, নছিমন-করিমন-টেম্পো, ইঞ্জিনচালিত নৌযান, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, রিকশাভ্যানই সাধারণ গ্রামীণ ও শহুরে মানুষের মূল গণপরিবহন। এর উদ্বোধন ও রক্ষণাবেক্ষণে বুয়েট কিংবা প্রাচ্যের অক্সফোর্ড সনদধারীদের কোনো অবদান নেই, বরং আমাদের স্বশিক্ষিত জনতাই এসবের মূল উদ্ভাবক প্রবর্তক ও রক্ষণাবেক্ষণকারী। রিকশা ও ভ্যান গতর খাটানো কায়িক শ্রমনির্ভর বলে ব্যবহারকারীরাই এতে বৈদ্যুতিক ব্যাটারিচালিত মোটর সংযুক্ত করে শ্রমদাসত্ব থেকে মুক্তির পথ খুঁজেছেন। প্রকৌশলী, পরিকল্পনাবিদ, মেয়র কিংবা মন্ত্রীর এসব ভাবার সময় হয়নি।
অর্থাৎ গ্রাম ও শহরের জন্য সাশ্রয়ী দেশীয় কিংবা আমদানি করা সাশ্রয়ী প্রযুক্তির যানবাহনের উদ্ভাবনে কিংবা বিকাশে আমাদের প্রকৌশলী ও পরিকল্পনাবিদদের চরম ব্যর্থতাই মুড়ির টিন/ভটভটি/নছিমন/ (কিংবা শ্যালো ইঞ্জিন দিয়ে তৈরি পণ্য পরিবাহী গাড়ি, নৌকা ও ট্রলার) ইত্যাদি সৃষ্টি করেছে। রাষ্ট্র যখন দায়িত্বহীন তখন এই ‘বিশেষ’ যানগুলো স্থানীয় অর্থনৈতিক চাহিদার অনিবার্য আবিষ্কার। এসব রি-ইঞ্জিনিয়ারিং পণ্য দেশের ক্ষুদ্র ব্যাষ্টিক এবং বৃহৎ অর্থনীতিতে অসামান্য ভূমিকা রেখে চলেছে।
যান ও যোগাযোগে স্থানীয় অর্থনৈতিক চাহিদার বিবেচনা নেই
নিরাপদ সড়কের দাবি আসলেই সড়কে রিকশা, ভ্যান, নছিমন, করিমন, মুড়ির টিন কিংবা পাম্প ইঞ্জিনচালিত গাড়িগুলো নিষিদ্ধের কথা ওঠে, কিন্তু সড়কের মান, প্রশস্ততা, নিম্ন-উচ্চগতির যানের অনুকূলে তৈরি লেন, সংযোগ সড়ক, ট্র্যাফিক সিগন্যাল, সড়ক বাঁক ও সেতুর ডিজাইন বাস্তবায়ন ত্রুটি নিয়ে আলোচনা ওঠে না, ওঠে না ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদানের নিম্ন মানের পদ্ধতি এবং মোটরযানের ফিটনেস যাচাইয়ের পদ্ধতি সংস্কারের কথা। ফলে রাস্তা দেশের বাজেটের শীর্ষ বরাদ্দ খাত হলেও আমাদের সড়ক না টেকসই, না নিরাপদ।
বাংলাদেশে হাটবাজার, স্কুল-কলেজ, হাসপাতাল-অফিস-আদালতসহ যেকোনো অবকাঠামোই যেহেতু একেবারে রাস্তার ওপরে হয়, তাই আন্তজেলা বা আন্ত-উপজেলা সড়কে তিন চাকা কিংবা স্থানীয় উদ্ভাবনের চার চাকার যান স্বল্পগতির চলাচল বন্ধ হলে গ্রামীণ মানুষের যাতায়াত বিকল্প কী হবে, জনপরিবহন-পণ্য পরিবহন, কিংবা রোগী পরিবহনের খরচ কী হবে, সেটা কখনো বিবেচনায় আনা হয়নি।
অর্থাৎ এককালের মাটি হাঁটা বা রিকশার পথ অটেকসই উন্নয়নের খপ্পরে পড়ে আধা-এক-দুই লেনের সড়কে উন্নীত হয়েছে, সেখানে বাণিজ্যিক বাস-ট্রাক চলাচল শুরু হয়েছে, কিন্তু হাঁটা-রিকশা-সাইকেল-ভ্যান, এসব গ্রামীণ অর্থনীতির চাহিদার প্রভিশন নেই, নেই সড়ক নিরাপত্তার টেকসই সমাধান। যে লোকটি শূন্য পরিবহন ব্যয়ে হেঁটে বা মাথায় করে বা কাঁধের ভারে বাজারে পণ্য নিতেন, তাঁর কথা (গ্রামীণ জনপদের অর্থনীতি) পরিকল্পনাবিদ, প্রকৌশলী, মেয়র কিংবা মন্ত্রীর বিবেচনায় আসেনি।
মানুষের হাঁটার জায়গাও চুরির কবলে পড়েছে। ফলে সড়ক হয়েছে মরণফাঁদ। একই আধা বা এক লেনের রাস্তায় হাঁটা, গরু চরানো, ধানের খড় বা গোবর বা কাঠের জ্বালানি শুকানো, ঠেলা-ভ্যান-রিকশা চালানো, নছিমন, করিমন, টেম্পো, স্কুটার চালানো, হাটবাজার বসা, মাল ওঠানামা করানোর কাজ সবই হচ্ছে। এ ধরনের সড়ক ব্যবস্থাপনা যত দিন আছে, তত দিন মালের বস্তার সঙ্গে প্রাণও হাতে নিয়েই পরিবহনে ওঠা লাগছে।
সাত কিলোমিটার গড় গতির শহরে অটোরিকশার সমস্যা কোথায়?
ঢাকার উন্নয়নবিষয়ক এক আন্তর্জাতিক সেমিনারে বিশ্বব্যাংক জানায়, ঢাকায় যানবাহনের গড় গতিবেগ হাঁটার গতির সামান্য বেশি। মানুষের হাঁটার গতি পাঁচ কিলোমিটার হলেও যান চলাচলের গতি এর চেয়ে মাত্র দুই কিলোমিটার বেশি। প্রতিদিন যানজটের কারণে রাজধানীতে ৩২ লাখ কর্মঘণ্টা নষ্ট হচ্ছে। গত ১০ বছরে রাজধানীতে যান চলাচলের গড় গতিবেগ ঘণ্টায় ২১ কিলোমিটার থেকে সাত কিলোমিটারে নেমেছে (১১/১১/১৮, প্রথম আলো, ১৯/০৭ /১৭ ঢাকা টাইমস)। তাহলে এই শহরে ধীরগতির বাহনের মিথ্যা বলে ২৫ কিলোমিটার গতির ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা বন্ধের যুক্তি কি খোঁড়া নয়?
এক দশকে ৬০ হাজার কোটি টাকার ভর্তুকির ওপর দাঁড়ানো ১৫ হাজার মেগাওয়াটের বিদ্যুৎ রিকশাওয়ালা ব্যবহার করতে পারবে না, সে অভিজাত শ্রেণি নয় বলে? নগরে সড়ক দুর্ঘটনার মূল কারণ অদক্ষ চালক, দুর্বৃত্ত বাসমালিকের ঘাতক বাস, পাওয়ার বাইক, কিশোর-যুবক গ্যাংগুলোর বেপরোয়া রাতের গতি এবং গর্তে ভরা উচু-নিচু সড়ক। ব্যাটারিচালিত রিকশা রাজধানীর সড়ক নিরাপত্তার কারণ হিসেবে উঠে আসেনি গবেষণায়।
বিশ্বের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ রাজধানীতে ট্রাম, ট্রামবাস কিংবা বিআরটিএ চালু করার কথা কর্তারা ভাবেননি। বাসমালিকদের স্বেচ্ছাচারিতা বন্ধে একক কোম্পানির কনফ্লিক্টহীন বাস রুটও ৫০ বছরে দেশের রাজধানীতে চালু করা হয়নি।
যদি যুক্তি শুধু সড়ক নিরাপত্তা হয়, তাহলে অটোরিকশায় সিটবেল্ট লাগানোর বিষয়ে ভাবুন। কাঠ-বাঁশের বডি করে রিকশাকে হালকা রাখার সনদহীন ব্যক্তি উদ্ভাবিত বৈশিষ্ট্যগুলো আমলে নিন। যাত্রীবাহী বাস চলাচলের প্রধান রুট ছাড়া বাদবাকি রাস্তায় ব্যাটারিচালিত যান চলাচল নির্বিঘ্ন করে কর্মরক্ষা এবং শ্রমদাসত্ব মুক্তির পথ খোলা রাখুন, ভুলে যাবেন না যে দেশের উন্নয়ন এবং প্রবৃদ্ধি কর্মহীন, বিবিএসের কর্মসংস্থান তথ্যও মিথ্যা। অটোরিকশা নিষিদ্ধ করার সভায় বুয়েটের অধ্যাপকসহ মেয়র-মন্ত্রীরা ছিলেন, তাঁরা বিদেশি প্রযুক্তি ভালো জানতে পারেন, কিন্তু বাংলার মানুষের চাহিদার আলোকে সড়ক ও যানবাহনের উপযোগিতা তৈরি বিষয়, বেকারত্ব ও দারিদ্র্য মুক্তির বিষয়ে কতটা খবর রাখেন! হঠকারী সিদ্ধান্তে প্রান্তিক সামজের অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের প্রভাব, দারিদ্র্যসীমা বিস্তৃতির অনুষঙ্গগুলো কে ভাবে! প্রযুক্তি ও প্রকৌশলবিদ্যাকে বাংলার মানুষের কল্যাণে আনার পথপরিক্রমা তৈরিতে আমরা নিদারুণ ব্যর্থ।
আন্তসংযুক্তিহীন প্রবেশ-বাহির পথ এবং মিশ্র ট্র্যাফিক যানজটের প্রধানতম উৎস বিমানবন্দরসহ ঢাকার প্রধান প্রবেশমুখের সংখ্যা অন্তত ১১। ঢাকাকে ভায়া করে অন্য জেলায় যাওয়া কিংবা বিদেশফেরত যাত্রী ও পণ্যবাহী যানের জন্য ঢাকা বাইপাসের বিকল্প রাস্তা নেই। নগরের ভেতরের ট্র্যাফিক থেকে বিমানবন্দর, নদীবন্দর এবং ঢাকার বাইরে যাওয়ার যাত্রী ও মালবাহী ট্র্যাফিক আলাদা করা হয়নি। বিমানবন্দর, ঢাকা বাইপাস, প্রবেশ-বাইরের ট্রাফিক ঢাকার অধিবাসীদের নিয়মিত ট্র্যাফিকের সঙ্গে মিশ্রিত। সরকার মহাশয় এবং প্রতিষ্ঠানগুলো এখনো বিষয়টা বুঝে উঠতে পারেননি ৫০ বছরে!
২০২৫ সালের পরে ইউরোপ-আমেরিকায় বিক্রীত গাড়ির ৭০ শতাংশই বৈদ্যুতিক হবে, ২০৩০ সালের পরে বৈদ্যুতিক হবে শতভাগ গাড়ি। এ অবস্থায় বিদ্যুৎ খরচ বাড়ার যুক্তিতে বাংলার ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, নছিমন-করিমন-টেম্পো বন্ধের সিদ্ধান্ত বেশ হাস্যকর।
বিশ্বের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ রাজধানীতে ট্রাম, ট্রামবাস কিংবা বিআরটিএ চালু করার কথা কর্তারা ভাবেননি। বাসমালিকদের স্বেচ্ছাচারিতা বন্ধে একক কোম্পানির কনফ্লিক্টহীন বাস রুটও ৫০ বছরে দেশের রাজধানীতে চালু করা হয়নি। আয়তনের মাত্র ৫ শতাংশ রাস্তার শহরে, সক্ষমতার অতিরিক্ত কমিউটেশন ট্রেন/ট্রাম/ট্রামবাস/বিআরটিএ/মেট্রো ইত্যাদি আধুনিক গণপরিবহনে উঠিয়ে নিয়ে পরে ফ্লাইওভার কিংবা ওভারপাস করার কথা সক্ষমতা কর্তাদের হয়নি। মাত্র দু-তিনটি মেট্রোরুট সব ট্র্যাফিক পয়েন্ট ও গ্রোথ সেন্টার কভার করছে না বলে ভবিষ্যতের যানজট নিরসনের নিশ্চয়তা কম। সক্ষমতা শুধু গরিবের উপার্জনের ওপর বুলডোজার চালানোয়।
‘মেড ইন বাংলাদেশ’ গাড়ির স্বপ্ন
নির্মাতারা বলছেন, বৈদ্যুতিক গাড়ি বিক্রি খুব দ্রুতগতিতে পেট্রল আর ডিজেলচালিত গাড়ির বিক্রিকে ছাড়িয়ে যাচ্ছে। ২০২৫ সালের পরে ইউরোপ-আমেরিকায় বিক্রীত গাড়ির ৭০ শতাংশই বৈদ্যুতিক হবে, ২০৩০ সালের পরে বৈদ্যুতিক হবে শতভাগ গাড়ি। এ অবস্থায় বিদ্যুৎ খরচ বাড়ার যুক্তিতে বাংলার ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, নছিমন-করিমন-টেম্পো বন্ধের সিদ্ধান্ত বেশ হাস্যকর। সংজ্ঞামতে এগুলোও বৈদ্যুতিক যান, যদিও দেখতে খারাপ এসব গরিবের বাহন। দরকার এসবে যাত্রী ও চালকের জন্য নিরাপত্তাবৈশিষ্ট্য সংযুক্ত করার দুর্দান্ত সব চেষ্টা। ইউরোপে ব্যাটারিচালিত সাইকেলের ব্যাপক প্রসারের সঙ্গে সঙ্গে ব্যাটারিচালিত রিকশাও জনপ্রিয় হচ্ছে।
এসব দ্বি-ত্রিচক্রযানের গিয়ার-প্যাডেলের সঙ্গে স্বয়ংক্রিয় করা হয়েছে। পা দিয়ে প্যাডেল জোরে ঘোরালে মোটরও বেশি শক্তি সরবরাহ করে। সরকার গাড়ি নির্মাণে ২০ বছরে কর ও শুল্কসুবিধা ঘোষণা করেছে, এটা তেলচালিত গাড়ি তৈরির পেছনে ব্যয় অর্থহীন। বরং এশিয়ার সর্বনিকৃষ্ট রাস্তার দেশে অটোমোবাইল যন্ত্রাংশ উৎপাদনে গিয়ে আমদানি ব্যয় কমিয়ে আনতে পারে বাংলাদেশ। ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ গাড়ির স্বপ্ন বৈদ্যুতিক গাড়িকেন্দ্রিক হওয়া চাই। তা যেন দোয়েল ল্যাপটপের মতো লুটেরা কিংবা টাটা-ন্যানোর মতো অদূরদর্শী প্রকল্প না হয়। গরিবের স্থানীয় বিকল্প বৈদ্যুতিক যানবাহনের উৎকর্ষ আনয়নেও মেধা ও শুল্কসুবিধা প্রয়োগের চেষ্টাটা থাকুক।
লেখক চতুর্থ শিল্পবিপ্লব ও বাংলাদেশ, বাংলাদেশ অর্থনীতির ৫০ বছর গ্রন্থের রচয়িতা।
faiz.taiyeb@gmail.com
সূত্র — https://bit.ly/3gZriW8
No comments:
Post a Comment