Search

Tuesday, June 29, 2021

গণতন্ত্রকামী জনগণের কাঙ্খিত বিজয় আনবেন তারেক রহমান

------------------------------

— মীর সোলাইমান

------------------------------

মহান স্বাধীনতার ঘোষক শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বীরউত্তম এবং তিন বারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সুযোগ্য উত্তরসূরী দেশনায়ক তারেক রহমান বর্তমানে বাংলাদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের প্রিয় রাজনৈতিক সংগঠন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন। এর আগে সুদীর্ঘ চার দশকেরও বেশি সময় ধরে তিনি দলের বিভিন্নস্তরে অত্যন্ত সফলতার সাথে দায়িত্ব পালন করেছেন। দলের চেয়ারপার্সন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে চক্রান্তমূলকভাবে কার্যত বন্দি করে রাখা হয়েছে। অত্যন্থ অসুস্থ মাদার অব ডেমোক্রেসিকে বিদেশে এডভান্সড চিকিৎসাসেবা গ্রহণের সুযোগ এখনো দেয়া হয়নি। 

বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে দেশনায়ক তারেক রহমান চলমান ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। এই পরিস্থিতিতে তাঁর বিরুদ্ধে শুরু হয়েছে নানা কৌশলে বিভিন্ন অপপ্রচার। বিএনপি ও জিয়া পরিবারের প্রতি জনগণের অকুণ্ঠ সমর্থনকে নিয়মতান্ত্রিক পন্থায় মোকাবেলা করতে সরকার ব্যর্থ, তাই শুরু করেছে নতুন ষড়যন্ত্র ও চক্রান্তের নানাবিধ অপকৌশল। অথচ জনগণের ভোটাধিকার, গণতান্ত্রিক অধিকার তথা মৌলিক মানবাধিকার রক্ষার সংগ্রামে বিএনপিই একমাত্র ভরসা। সে কারণেই বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি  জিয়াউর রহমানসহ দলের চেয়ারপার্সন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেশনায়ক তারেক রহমান ও জাতীয়তাবাদী রাজনীতিকে রাজনৈতিকভাবে নিশ্চিহ্ন করার এক ব্যর্থ অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে ক্ষমতাসীন সরকার। দেশে বিদ্যমান নৈরাজ্য, রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুট ও মানবাধিকার বিরোধী গুম-খুন ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের দায় থেকে নিজেদেরকে রক্ষা করতেই জনগণের দৃষ্টি অন্য দিকে ঘোরাতে এই ষড়যন্ত্র অবিরাম চলছে, একটি বিশেষ মহল সেই কাজে নিয়োজিত আছে। 

দেশনায়ক তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র না করে দেশের গুম, খুন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধে সরকারের নির্লজ্জ ব্যর্থতা, দুর্নীতি, অর্থপাচার, ব্যাংকলুটসহ নানান অনিয়ম, অবিচারের বিরুদ্ধে বলুন ও লিখুন। তারেক রহমানকে নিয়ে অসত্য ভিত্তিহীন কুৎসা রটাতে একটি কুচক্রি মহল বরাবরই তৎপর। তারেক রহমান যে মিডিয়া সন্ত্রাসের শিকার এটা বাংলাদেশের প্রত্যেকটা বিবেকবান মানুষ জানে ও বোঝে। গুম, খুন ও ৩৫ লাখ নেতাকর্মীর নামে লক্ষাধিক মামলা মাথায় নিয়ে বিএনপির নেতাকর্মীরা যে পরিমাণ নির্যাতন নিপীড়নের মধ্যেও গত প্রায় ১৪ টি বছর ক্ষমতার বাইরে থেকে জনগণের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনার আন্দোলন করে যাচ্ছে তা সেই বিশেষ মহলের চোখে পড়ে না। বর্তমান সরকার যে জনগণের ভোটের অধিকার, স্বাভাবিকভাবে বেঁচে থাকার অধিকার কেড়ে নিয়েছে এবং বাকস্বাধীনতার অন্তরায়, সেদিকে তাদের কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই।

২০০১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি তথা ৪ দলীয় জোটের নিরঙ্কুশ বিজয় ও তৎপরবর্তী সুসংগঠিত বিজ্ঞানভিত্তিক রাজনীতির দ্বারা দেশনায়ক তারেক রহমান যেভাবে  উঠে আসছিলেন, তা আওয়ামীলীগের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তাই ২০০১ সালে বিএনপি সরকারে আসার পর থেকেই তাঁকে টার্গেট করে আওয়ামী লীগ ‘দুর্নীতির বরপুত্র’ এবং ‘সরকারের ভেতরে সরকার’ বলে ব্যাপক নেতিবাচক প্রচারণা শুরু করে। দেশনায়ক জনাব তারেক রহমানের ইমেজ প্রশ্নবিদ্ধ করার মিশনে আওয়ামী লীগ ও তাদের তল্পিবাহক মিডিয়া কোমর বেঁধে তাঁর বিরুদ্ধে দেশে বিদেশে  নির্লজ্জ  মিথ্যাচারে লিপ্ত রয়েছে। এ লক্ষ্যে তাঁর বিরুদ্ধে হাজার হাজার কোটি টাকা দুর্নীতি ও অর্থ পাচারের বানোয়াট অভিযোগ আনতে থাকে। অথচ আওয়ামী লীগ প্রায় ১৪টি বছর সরকারে থেকেও, বিশ্বময় তন্ন তন্ন করে খুঁজেও অদ্যাবধি বের করতে পারেনি দেশেবিদেশে তারেক রহমানের কোনো অবৈধ টাকার সামান্যতম উৎস। কেবল গালগপ্প দিয়ে তো আর মানুষকে বেশিদিন ভোলানো যায় না। এর মধ্য দিয়েই প্রকাশ হয়ে যায়, দেশনায়ক তারেক রহমানকে নিয়ে আওয়ামীলীগের অসৎ ও ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রের কথা। তারেক রহমান কোনো বিশেষ মহলের গাত্রদাহের কারণ হলেও, দেশের আপামর জনতা জানে এ মুহূর্তে তারেক রহমানের নেতৃত্বে একটি গণবিপ্লবের মধ্য দিয়েই পূণঃপ্রতিষ্ঠা পেতে পারে গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ। এ মুহূর্তে দেশের বৃহত্তর জনগোষ্ঠির পছন্দের রাজনৈতিক দল বিএনপি’র নেতৃত্বে দেশকে সামনে এগিয়ে নিতে তারেক রহমানের কোনো বিকল্প নেই।

বিএনপি সরকারের আমলে অবসর গ্রহণ করা পুলিশ কর্মকর্তা ও ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী হয়ে প্রকাশ্যে সভা, সমাবেশ, মিছিল করা আব্দুল কাহার আকন্দকে দিয়ে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার পূণঃতদন্ত করিয়ে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তারেক রহমানকে এ মামলার আসামী হিসেবে অন্তর্ভূক্ত করা হয়। রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য দলীয় চেতনার তদন্ত কর্মকর্তা কাহার আকন্দকে নিয়োগ দেয়ার উদ্দেশ্যই ছিল এ মামলায় তারেক রহমানকে জড়ানো। এরপর বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে তারেক রহমানকে পলাতক দেখিয়ে, তাঁর সম্পর্কে বাংলাদেশ পুলিশের পক্ষ থেকে ইন্টারপোলে মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্য সরবরাহ করা হয়। এরই প্রেক্ষিতে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ইন্টারপোল ২০১৫ সালের এপ্রিল মাসে রেড নোটিশ জারি করে। ইন্টারপোল রেড নোটিশ জারি করার পর তার যৌক্তিকতা নিয়ে তারেক রহমানের পক্ষে লন্ডনিয়াম সলিসিটর্স ইন্টারপোল হেড কোয়ার্টার্সে আপিল করে। সেই আপিল গ্রহণ করে ইন্টারপোল তাদের নিজস্ব পদ্ধতিতে তারেক রহমান সম্পর্কে বাংলাদেশ সরকারের সরবরাহকৃত তথ্য যাচাই করে কোনো সত্যতা না পেয়ে এবং বিষয়টি তাদের আর্টিকেল ৩ এর ধারায় রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রমাণিত হওয়ায়, রেড নোটিশ প্রত্যাহার করে নেয়। একই সাথে ইন্টারপোল হেড কোয়ার্টার্স তারেক রহমান সম্পর্কে বাংলাদেশ সরকারের দেয়া সকল তথ্য বাতিল করে নেয়। লন্ডনিয়াম সলিসিটর্সের প্রিন্সিপ্যাল ডেভিড রিকটারের মতে, ইন্টারপোলের সিদ্ধান্তে প্রমাণিত হয়েছে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলে দেয়া অভিযোগ ছিল রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এতে প্রমাণিত হয়েছে তারেক রহমান পলাতক নন এবং রাজনৈতিকভাবে হেয় করতেই তারেক রহমানের নাম ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার মামলায় জড়ানো হয়েছে। ইন্টারপোল বুঝতে পেরেছে তারেক রহমানের সম্মান বিনষ্ট করতে ইন্টারপোলকে ব্যবহার করার চেষ্টা করা হয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকার তারেক রহমানের রাজনৈতিক ইমেজ কালিমালিপ্ত করতে গিয়ে নিজেরাই মিথ্যাবাদী প্রমাণিত হয়েছে, সেইসাথে প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে বাংলাদেশ পুলিশের গ্রহণযোগ্যতা। বিজ্ঞানে একটি কথা আছে, Every action has its equal and opposite reaction. অর্থাৎ প্রতিটি কাজেরই সমান এবং বিপরীত প্রতিক্রিয়া রয়েছে। এটিই দুনিয়ার নিয়ম।

আওয়ামীলীগ সরকার দুর্নীতি কমিশনের মাধ্যমে ২০০৯ সালের ২৬ অক্টোবর ক্যান্টনমেন্ট থানায় তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মিথ্যা মানি লন্ডারিং এর মামলা দায়ের করেছিল। ৪ বছর ধরে সেই মামলা চলার পর ২০১৩ সালের ১৭ নভেম্বর ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৩ এর বিচারক মোঃ মোতাহার হোসেন মামলার রায়ে তারেক রহমানকে বেকসুর খালাস দেন। দুদক এবং রাষ্ট্রপক্ষ সেই মামলাতেও  তারেক রহমানকে দোষী সাব্যস্ত করার জন্য প্রয়োজনীয় প্রমাণ উপস্থাপন করতে ব্যর্থ হয়েছিল। রায়ে বলা হয়েছিল, তারেক রহমান ২০০৭ সালের ৭ জুন দাখিল করা সম্পদ বিবরণীতে ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে খরচ করা অর্থের কথা উল্লেখ করেছেন। তারেক রহমান টাকা উত্তোলন ও ব্যয় করার বিষয়টি গোপন বা আড়াল করেননি। ফলে ২০০২ সালের মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন অনুযায়ী কোনো অপরাধ তিনি করেননি। তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত কর্মকর্তার প্রাথমিকভাবে অভিযোগ প্রমাণপত্র সম্পর্কে আদালত সংশয় প্রকাশ করে বলেছিল, তারেক রহমানের বিরদ্ধে আনা অভিযোগ দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কৌঁসুলী সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে সক্ষম হননি। কিন্তু সরকার পক্ষ সেই রায়কে মেনে না নিয়ে, বরং ঐ বিচারককে দেশ ছাড়তে বাধ্য করে, এটাও নিশ্চয়ই সবার অজানা নয়। এভাবে এই সরকার একের পর এক বিভিন্ন মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে তারেক রহমানকে রাজনৈতিকভাবে হেয় করার চেষ্টা চালালেও বারবার আদালতে এবং আন্তর্জাতিক সংস্থার তদন্তে তিনি নির্দোষ প্রমাণিত হয়েছেন। এ পর্যন্ত কোনো মামলায় দেশের আদালত কি প্রমাণ করতে পেড়েছে জনাব তারেক রহমানের অপরাধ?

বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ রাষ্ট্রনায়ক তারেক রহমানকে নিয়ে যতই ষড়যন্ত্র করা হোক না কেন, সকল জুলুম-নিপীড়নের অবসান ঘটিয়ে তিনি বীরের বেশে দেশে ফিরবেন এবং কোটি কোটি জিয়ার সৈনিক তাদের প্রিয় নেতাকে বরণ করার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। আমি মনে করি দেশনায়ক তারেক রহমানের সুযোগ্য নেতৃত্বে নিয়মতান্ত্রিক রাজনৈতিক ক্ষমতায় বিএনপির ফিরে আসার পেছনে সবচেয়ে বড় বাধা সরকারের লেজুড়বৃত্তিক মিডিয়া। এর ফলে জাতি আদর্শিক ও পরিচ্ছন্ন রাজনৈতিক নেতৃত্ব থেকে প্রতিনিয়ত বঞ্চিত হচ্ছে। তারেক রহমানের মতো এমন হাই প্রোফাইল পলিটিক্যাল ব্যাকগ্রাউন্ডসম্পন্ন ফ্যামিলির সন্তান দেশে তো নেই বটেই, পৃথিবীতেও বিরল। দেশনায়ক তারেক রহমান একাধারে একজন বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতার ঘোষক, সাবেক সেনাপ্রধান, সাবেক রাষ্ট্রপতি এবং সাবেক তিনবারের প্রধানমন্ত্রীর পুত্র। এটা জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী সকল রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের গর্বের বিষয়।   জিয়া পরিবারকে নিয়ে এহেন মিথ্যাচারের অপপ্রয়াসে দেশের আপামর জনগণ দারুণভাবে ক্ষুব্ধ ও মর্মাহত। আমি মনে প্রাণে বিশ্বাস করি একমাত্র তারেক রহমানের ডায়নামিক নেতৃত্বেই দেশের গণতন্ত্রের পুনরুদ্ধার সম্ভব। দেশনায়ক তারেক রহমানের নেতৃত্বেই বিএনপি’র ও দেশের গণতন্ত্রকামী জনগণের বিজয় হবে।


  • লেখক গবেষক।  


No comments:

Post a Comment