Search

Sunday, October 14, 2018

অগ্নি নিরাপত্তা নিয়ে কেন এতো উদাসীনতা?


ঢাকার বেশিরভাগ বহুতল ভবনে যথাযথ অগ্নি নির্বাপক ব্যবস্থা না থাকায় যেকোনো মুহূর্তে ভয়াবহ দুর্যোগের আশঙ্কায় রয়েছে নগরবাসী।

বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স বিভাগ মানুষের নিরাপত্তার দিকটি বিবেচনায় নিয়ে প্রতিটি ভবনে অগ্নি নিরাপত্তার কিছু বিধিমালা নির্ধারণ করে দিলেও তার কোন প্রয়োগ নেই ভবনগুলোতে।

সেটারই প্রতিফলন পাওয়া যায় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স বিভাগের সাম্প্রতিক জরিপে।

তারা মূলত ঢাকার জনবহুল ভবন বিশেষ করে হাসপাতাল, শপিং মল ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ দুই হাজার ৬১২টি ভবনের অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা খতিয়ে দেখে।

সেখানে মাত্র ৭৪টি ভবন ছাড়া বাকি সবকটি ভবন, অর্থাৎ দুই হাজার ৫৩৮টি ভবন ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে বলে জরিপে উঠে আসে।

ঢাকার অভিজাত এলাকা হিসেবে পরিচিত বনানীতে কেনাকাটার জন্য বেশ জনপ্রিয় বনানী সুপার মার্কেট। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ভবনটিতে অগ্নি নিরাপত্তা ব্যবস্থা বলে প্রায় কিছুই নেই।

প্রতি তলায় একটি করে মাত্র ফায়ার এক্সটিংগুইশার। তাও সেটা একেক তলায় একেক স্থানে রাখা হয়েছে। যেটা অনেক সময়ই চোখেই পড়েনা।

মার্কেটের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা মোহাম্মদ জসিম দুটি অগ্নি বহির্গমন বা ইমার্জেন্সি এক্সিট সিঁড়ি দেখিয়ে দেন।

কিন্তু এই সিঁড়ির জন্য কোন পথ ধরে যেতে হবে সেটা নিয়ে কোথাও কোন নির্দেশনা নেই।

এছাড়া সিলিংয়ে বৈদ্যুতিক তারগুলোকে এমন খোলা ও বিক্ষিপ্ত অবস্থায় দেখা যে যেকোনো সময় বড় ধরণের দুর্ঘটনা ঘটা কোন অস্বাভাবিক ব্যাপার নয়।

এক্ষেত্রে এই ভবনটিতে যদি আগুন লাগে তাহলে নিরাপত্তার উপায় কি?

এ বিষয়ে জানতে কথা বলেছিলাম মার্কেটটির সিকিউরিটি সুপারভাইজার মোহাম্মদ জসিমের সঙ্গে।

তিনি জানান যে, ভবনে আগুন লাগলে কি করতে হবে সে বিষয়ে ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে প্রাথমিক কিছু প্রশিক্ষণ পেয়েছেন তারা।

আগুন ধরতে দেখলেই তিনিসহ নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সবাই বাঁশি বাজিয়ে মানুষকে সতর্ক করেন এবং ফায়ার এক্সটিংগুইশার দিয়ে আগুন নেভান।

কিন্তু এতো বিশাল পরিধির একটি মার্কেটে এতো সীমিত ফায়ার এক্সটিংগুইশার কি যথেষ্ট?

তাছাড়া ভবনের কেন্দ্রীয় সতর্কতা অ্যালার্মটি রয়েছে ছাদের কাছে। তাই ওপরের কোন তলায় আগুন ধরলে অ্যালার্ম বাজানো হবে কিভাবে?

এমন প্রশ্নের জবাবে মিস্টার জসীম বলেন, তাদের চেষ্টা থাকে যা আছে সেটা দিয়েই পরিস্থিতি সামাল দেয়া।

তারসঙ্গে কথা বলার মধ্যেই ভবনের অগ্নি নিরাপত্তার বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে এগিয়ে আসেন বনানী সুপার মার্কেটের ব্যবস্থাপক গাজী মতিউর রহমান।

এতো জনপ্রিয়তা সত্ত্বেও ভবনের এই বেহাল দশা কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন,

"এই স্থানটিতে একটি বহুতল ভবন নির্মাণের বিষয়ে কথাবার্তা চলছে। এজন্য সিটি কর্পোরেশন, মার্কেট কর্তৃপক্ষসহ তিনটি পক্ষ কাজ করছে। মার্কেটটি এখনও নির্মাণাধীন, তাই কিছু সমস্যা রয়ে গেছে"

কিন্তু এই সময়ের মধ্যে যদি কখনও আগুন লাগে তাহলে সেটা মানুষের জন্য বেশ ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে বলে তিনি স্বীকার করেন।

একই চিত্র ঢাকার প্রায় বেশিরভাগ ভবনের। ঢাকায় অগ্নি নিরাপত্তার বিষয়টি কেন এতো উপেক্ষিত?

এ বিষয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ইন্সটিটিউটের শামীমা প্রধান বলেন, "যখন আমরা কোন ভবন নির্মাণ করি, তখন আমরা এই অগ্নি নিরাপত্তার বিষয়টিকে আমলে নেই না। এটা আমাদের প্র্যাকটিসের সমস্যা। আমাদের সচেতনতা না থাকার সমস্যা। কোন ভয়াবহ অভিজ্ঞতা যতক্ষণ না কারও জীবনে ঘটছে, তার আগ পর্যন্ত কেউ সচেতন ভূমিকা রাখছেন না।"

ঢাকার নতুন ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে সেইসঙ্গে পুরানো ভবনগুলোয় অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থার আধুনিকায়ন না করলে যেকোনো মুহূর্তে ঢাকা ভয়াবহ বিপদের মুখে পড়তে পারে বলে উদ্বেগ জানিয়েছেন বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স বিভাগের মহা পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল আলী আহমেদ।

এ ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের কথাও জানান তিনি।

জেনারেল আলী আহমেদ বলেন, "বাংলাদেশে একটা সংস্কৃতি আছে যে কোন বড় ধরণের দুর্যোগ না হলে সচেতনতা সৃষ্টি হয়না। ঢাকা শহরের বেশিরভাগ ভবন, বিশেষ করে পুরানো ভবনগুলোর অবস্থা বেশ ঝুঁকিপূর্ণ।"

"আমরা এই বিষয়গুলোকে আইনের আওতায় এনেছি। মোবাইল কোর্ট করেছি। পেনাল্টিও দিয়েছি। অনেক ভবন কর্তৃপক্ষ আমাদের কাছে সময় চেয়েছে। আমরাও তাদের সময় বেঁধে দিয়ে চাপে রেখেছি। "

তবে এ ব্যাপারে ভবন মালিকদের পাশাপাশি সাধারণ পর্যায়ে প্রতিটি মানুষকে যার যার নিরাপত্তার ব্যাপারে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন জেনারেল আলী আহমেদ।
  • বিবিসি বাংলা/ ১৪ অক্টোবর ২০১৮

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন - কাল সম্পাদক পরিষদের মানববন্ধন


ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের নয়টি ধারা সংশোধনের দাবিতে আগামীকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন করবে সম্পাদক পরিষদ। বেলা ১১টায় এ মানববন্ধনে শুধু সম্পাদক পরিষদের সদস্যরা অংশ নেবেন। গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচি ঘোষণা করে সংগঠনটি।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন সম্পাদক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও দ্য ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনাম। সম্পাদক পরিষদের লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন ভোরের কাগজ সম্পাদক শ্যামল দত্ত। লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন শেষে মানববন্ধন কর্মসূচি ঘোষণা করেন তিনি।

মাহফুজ আনাম বলেন, আমরা আইনটি বাতিল চাইনি। কতগুলো বিশেষ ধারার আমূল পরিবর্তন চেয়েছি। এ পরিবর্তন সম্ভব। আমরা আশা করব, ওই ধারাগুলো সংশোধন করে আইনটি সংশোধন করা হবে।

লিখিত বক্তব্যে শ্যামল দত্ত বলেন, আমাদের মৌলিক আপত্তি, বারবার প্রতিবাদ, সরকারের সঙ্গে কয়েক দফা আলোচনা ও সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সঙ্গে দুবার বৈঠক সত্ত্বেও মুক্ত সংবাদমাধ্যম, বাকস্বাধীনতা ও মত প্রকাশের স্বাধীনতার পরিপন্থী কালাকানুন ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টকে (ডিএসএ) আইনে পরিণত করায় আমরা যারপরনাই হতাশ, ক্ষুব্ধ ও মর্মাহত। তিনজন মন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর গণমাধ্যমবিষয়ক উপদেষ্টা প্রকাশ্যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, আমাদের উদ্বেগের বিষয়গুলো মন্ত্রিসভায় উপস্থাপন করা হবে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রহণযোগ্য পরিবর্তন-পরিমার্জনার লক্ষ্যে অংশীজনদের সঙ্গে সংলাপ শুরু হবে। বিস্ময়করভাবে এসবের কিছুই করা হলো না। সম্পাদক পরিষদকে তিনজন মন্ত্রী যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, এটি তার বরখেলাপ।

তিনি বলেন, তথ্যমন্ত্রীর অনুরোধে আমাদের মানববন্ধন কর্মসূচি স্থগিত রেখেছিলাম। তবে আবারো এ মানববন্ধন কর্মসূচি ঘোষণা করছি। আগামীকাল সোমবার বেলা ১১টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবে মানববন্ধন কর্মসূচিতে অংশ নেবেন শুধু সম্পাদক পরিষদের সদস্যরা।

উল্লেখ্য, গত ১৯ সেপ্টেম্বর জাতীয় সংসদে বহুল আলোচিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পাস হয়। এতে উদ্বেগ জানিয়ে গত ২২ সেপ্টেম্বর দেয়া এক বিবৃতিতে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ২৯ সেপ্টেম্বর মানববন্ধন কর্মসূচি ঘোষণা করে সম্পাদক পরিষদ। ২৬ সেপ্টেম্বর সম্পাদক পরিষদের সাধারণ সম্পাদকের কাছে চিঠি দেন তথ্যমন্ত্রী। চিঠিতে মানববন্ধন কর্মসূচি স্থগিত করে ৩০ সেপ্টেম্বর আইনটি নিয়ে বৈঠকে বসার আহ্বান জানানো হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে মানববন্ধন কর্মসূচি স্থগিত রেখে বৈঠকে অংশ নিতে রাজি হয় সম্পাদক পরিষদ।

এরপর তথ্যমন্ত্রীসহ সরকারের তিন মন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর একজন উপদেষ্টা সম্পাদক পরিষদের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে সম্পাদক পরিষদের উদ্বেগের কথা মন্ত্রিসভায় উত্থাপন ও আইনটির একটি সংশোধিত খসড়া প্রণয়নের ব্যাপারে প্রতিশ্রুতি দেন আইনমন্ত্রী, তথ্যমন্ত্রী এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী। তবে পরবর্তী দুটি মন্ত্রিসভার বৈঠকে এটি উত্থাপন করা হয়নি। বরং এরই মধ্যে রাষ্ট্রপতি এতে সই করেছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল সংবাদ সম্মেলন করে নিজেদের অবস্থান ও উদ্দেশ্য গণমাধ্যমকে জানিয়েছে সম্পাদক পরিষদ।

সংবাদ সম্মেলনে সাত দফা দাবি জানিয়েছে সম্পাদক পরিষদ। দাবিগুলো হচ্ছে— সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা ও বাকস্বাধীনতা সুরক্ষার লক্ষ্যে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ৮, ২১, ২৫, ২৮, ২৯, ৩১, ৩২, ৪৩ ও ৫৩ ধারা অবশ্যই যথাযথভাবে সংশোধন করতে হবে। এসব সংশোধনী বর্তমান সংসদের শেষ অধিবেশনে আনতে হবে। পুলিশ বা অন্য কোনো সংস্থার মাধ্যমে কোনো সংবাদমাধ্যম প্রতিষ্ঠানে তল্লাশি চালানোর ক্ষেত্রে তাদের শুধু নির্দিষ্ট বিষয়বস্তু আটকে দেয়ার অনুমতি দেয়া যাবে; কিন্তু কোনো কম্পিউটার ব্যবস্থা বন্ধ করার অনুমতি দেয়া যাবে না। তারা শুধু তখনই প্রকাশের বিষয়বস্তু আটকাতে পারবে, যখন সংশ্লিষ্ট সংবাদপ্রতিষ্ঠানের সম্পাদকের সঙ্গে আলোচনা করে কেন ওই বিষয়বস্তু আটকে দেয়া উচিত, সে বিষয়ে যৌক্তিকতা প্রমাণ করতে পারবে। কোনো সংবাদমাধ্যম প্রতিষ্ঠানের কোনো কম্পিউটার ব্যবস্থা আটকে দেয়া বা জব্দ করার ক্ষেত্রে অবশ্যই উচ্চ আদালতের আগাম নির্দেশ নিতে হবে। সংবাদমাধ্যমের পেশাজীবীদের সাংবাদিকতার দায়িত্বের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অপরাধের ক্ষেত্রে প্রথমেই আদালতে হাজির হওয়ার জন্য তাদের বিরুদ্ধে সমন জারি করতে হবে (যেমনটা বর্তমান আইনে আছে) এবং সংবাদমাধ্যমের পেশাজীবীদের কোনো অবস্থাতেই পরোয়ানা ছাড়া ও যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ ছাড়া আটক বা গ্রেফতার করা যাবে না। সংবাদমাধ্যমের পেশাজীবীর দ্বারা সংঘটিত অপরাধের ক্ষেত্রে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের গ্রহণযোগ্যতা আছে কিনা, তার প্রাথমিক তদন্ত প্রেস কাউন্সিলের মাধ্যমে করা উচিত। এ লক্ষ্যে প্রেস কাউন্সিলকে যথাযথভাবে শক্তিশালী করা যেতে পারে। এ সরকারের পাস করা তথ্য অধিকার আইনকে দ্ব্যর্থহীনভাবে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ওপর প্রাধান্য দেয়া উচিত। ওই আইনে নাগরিক ও সংবাদমাধ্যমের জন্য যেসব স্বাধীনতা ও অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে, সেগুলোর সুরক্ষা অত্যাবশ্যক।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন দ্য ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনাম, দৈনিক প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান, মানবজমিনের প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী, কালের কণ্ঠ সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলন, বাংলাদেশ প্রতিদিন সম্পাদক নঈম নিজাম, ইনকিলাব সম্পাদক এএমএম বাহাউদ্দীন, নিউএজ সম্পাদক নূরুল কবির, সংবাদের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক খন্দকার মুনীরুজ্জামান, যুগান্তরের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সাইফুল আলম, করতোয়ার সম্পাদক মোজাম্মেল হোসেন, নয়াদিগন্ত সম্পাদক আলমগীর মহিউদ্দীন, ইনডিপেনডেন্ট সম্পাদক শামসুর রহমান, বণিক বার্তা সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদ, ঢাকা ট্রিবিউন সম্পাদক জাফর সোবহান, ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেসের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক শহিদুজ্জামান ও সমকালের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মুস্তাফিজ শফি।

  • কার্টসিঃ বনিক বার্তা/১৪ অক্টোবর ২০১৮

সাত বছরেও হয়নি এমপি আসলামের দুই বিদ্যুৎকেন্দ্র

ইয়ামিন সাজিদ


ঢাকার গাবতলীতে ১০৮ মেগাওয়াটের ফার্নেস অয়েলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে ২০১১ সালের অক্টোবরে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) সঙ্গে চুক্তি করে সংসদ সদস্য (এমপি) আসলামুল হকের ঢাকা নর্থ ইউটিলিটি কোম্পানি লিমিটেড। চুক্তি অনুযায়ী এক বছরের মধ্যে বিদ্যুৎ প্রকল্পটির কাজ শেষ করার কথা। যদিও সাত বছরেও সম্পন্ন হয়নি প্রকল্পটি।

কেরানীগঞ্জের বছিলায় একই সক্ষমতার আরেকটি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে বিপিডিবির সঙ্গে ২০১১ সালে চুক্তি করে এমপি আসলামের আরেক কোম্পানি ঢাকা ওয়েস্ট পাওয়ার লিমিটেড। এ বিদ্যুৎকেন্দ্রটিও ২০১২ সালের অক্টোবরে নির্মাণ শেষে চালু করার কথা ছিল। সেই সময় পেরোনোর ছয় বছর পরও বিদ্যুৎকেন্দ্রটির অগ্রগতি শূন্য। গত জুলাই পর্যন্ত কোনো আর্থিক অগ্রগতিই হয়নি প্রকল্পটির।

আদৌ অগ্রগতি না হওয়ায় আসলামুল হকের এ দুই প্রকল্প নিয়ে বিরক্ত ও হতাশ বিপিডিবি। সংস্থাটির একাধিক কর্মকর্তা প্রকল্পটি বাতিলের পরামর্শ দিয়েছেন। গত সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠিত বিদ্যুৎ বিভাগের সভায় বিষয়টি নিয়ে আলোচনাও হয়। বিপিডিবির পরবর্তী বোর্ডসভায় প্রকল্প বাতিলের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে বলে মাসিক পর্যালোচনা বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়।

বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ, অর্থায়ন ও বাস্তবায়ন অগ্রগতি নিয়ে বিদ্যুৎ বিভাগের সর্বশেষ প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত জুলাই পর্যন্ত ঢাকার গাবতলীতে ১০৮ মেগাওয়াটের ফার্নেস অয়েলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের আর্থিক অগ্রগতি শূন্য। গত আট বছরে প্রকল্পের ভৌত অগ্রগতি হয়েছে মাত্র ৫ শতাংশ।

প্রকল্প কর্মকর্তারা বলছেন, ফিন্যান্সিয়াল ক্লোজারের কারণেই বিদ্যুৎ প্রকল্পটির এ দুরবস্থা। ব্যাংক গ্যারান্টির মেয়াদও শেষ হয়েছে প্রকল্পটির। গত ১৮ জুলাই ব্যাংক গ্যারান্টি নগদায়নের জন্য ব্যাংক বরাবর নোটিস দেয়া হয়।

কেরানীগঞ্জের বছিলায় ১০৮ মেগাওয়াটের ঢাকা ওয়েস্ট পাওয়ার লিমিটেডের বিদ্যুৎ প্রকল্পটির আর্থিক অগ্রগতিও শূন্য। ভৌত অগ্রগতি কিছু হলেও তা ৫ শতাংশ। জমি ভরাট ছাড়া আর কোনো ভৌত অগ্রগতি নেই প্রকল্পটির। ব্যাংক গ্যারান্টি বাতিল হওয়ায় প্রকল্পটি বাতিল করা হবে মর্মে বিদ্যুৎ প্রকল্পটির মূল প্রতিষ্ঠান মাইশা গ্রুপকে গত জুলাইয়ে চিঠিও দেয় বিপিডিবি। এছাড়া বিপিডিবির বোর্ডসভায় প্রকল্পটি বাতিলের ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়ার কথা জানানো হয়েছে।

জানতে চাইলে বিপিডিবির সদস্য (উৎপাদন) সাঈদ আহমেদ বণিক বার্তাকে বলেন, এ বিষয়ে বোর্ডসভায় আলোচনা হয়েছে। প্রকল্পটি বাতিলের বিষয়েও আলোচনা হয়। তবে স্পন্সর কোম্পানি তাদের ব্যাংক গ্যারান্টি নবায়ন করার কারণে প্রকল্পটি বাস্তবায়নে আবারো সময় দেয়া হয়। কয়েকটি শর্তের ভিত্তিতে কোনো কোম্পানির সঙ্গে প্রকল্প চালু রাখা বা বাতিল করার সিদ্ধান্ত হয়। ব্যাংক গ্যারান্টি এসব শর্তের একটি।

বিদ্যুৎকেন্দ্র দুটি বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান ঢাকা নর্থ ইউটিলিটি কোম্পানি লিমিটেড ও ঢাকা ওয়েস্ট পাওয়ার লিমিটেড মাইশা গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান। গ্রুপের চেয়ারম্যান হিসেবে আছেন ঢাকা-১৪ আসনের সংসদ সদস্য মো. আসলামুল হক। প্রকল্পের দুরবস্থার বিষয়ে জানতে চাইলে বণিক বার্তাকে তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ, আমাদের বিদ্যুৎকেন্দ্র রয়েছে। সেটা বিপিডিবি ও আমাদের বিষয়।’ এ নিয়ে আর কিছু বলতে চাননি তিনি।

জানা যায়, আসলামুল হকের প্রতিষ্ঠান মাইশা গ্রুপের আবাসন থেকে শুরু করে বিদ্যুৎকেন্দ্র, এগ্রো ও টেলিকম খাতে ব্যবসা রয়েছে। তার একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র বর্তমানে চালু আছে। ১০৮ মেগাওয়াট ক্ষমতার বিদ্যুৎকেন্দ্রটি কেরানীগঞ্জে অবস্থিত। ২০১১ সালে সিএলসি পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড নামে কেন্দ্রটি নির্মাণে বিপিডিবির সঙ্গে চুক্তি করে মাইশা গ্রুপ। বর্তমানে এ কেন্দ্রের প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ ১০ টাকা ২৭ পয়সা দরে কিনছে বিপিডিবি। ২০১৭ সাল শেষে ন্যাশনাল ব্যাংকে সিএলসির মূল প্রতিষ্ঠান মাইশা গ্রুপের ঋণের স্থিতি দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৬৪০ কোটি টাকা।

এক বছরের প্রকল্প সাত বছরে বাস্তবায়ন করতে না পারলেও নানা খাতে ব্যবসা বাড়াচ্ছেন এমপি আসলামুল হক। নতুন করে যোগাযোগ খাতে ব্যবসা বৃদ্ধির পরিকল্পনা রয়েছে তার। এজন্য আকাশপথ ও সড়ক যোগাযোগে বিনিয়োগ করতে যাচ্ছেন তিনি। সড়কপথে যোগাযোগের জন্য নিজ খরচে গাবতলী ও আমিনবাজার থেকে আজিমপুর পর্যন্ত বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) এবং এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে করার পরিকল্পনা নিয়েছে মাইশা গ্রুপ। মোট ১০ কিলোমিটারের এ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে ছয় লেনের রাস্তা হবে। বিআরটি স্টেশন হবে মোট আটটি। এ প্রকল্প বাস্তবায়নের পর টোল ও বিআরটি বাস ভাড়ার মাধ্যমে আয়ের লক্ষ্য রয়েছে আসলামুল হকের।

  • কার্টসিঃ বনিক বার্তা/১৪ অক্টোবর ২০১৮

Biman moves again to convert its debt liabilities into equity

Rezaul Karim


Biman Bangladesh Airlines (BBA) has moved again to convert its entire debt liabilities worth over Tk 6.69 billion into government equity to have a healthy balance sheet, officials and aviation experts said.

The national flag carrier, which has been facing acute liquidity crisis due to regular repayment of a large quantity of debt, requested the Ministry of Civil Aviation and Tourism (MoCAT) to allow it to do the conversion, officials concerned said.

The ministry put forward the proposal to the finance ministry to take necessary action in this regard on October 01, they said.

Aviation experts, however, opposed the move saying that the state-run airliner failed to make proper use of the opportunities that it enjoyed in the past. As a result, the BBA is going through financial crisis.

The amount of entire debt stood at some Tk 4.47 billion under a voluntary redundancy scheme (VRS) initiated in 2007. The loan includes a principal amount of over Tk 2.91 billion and interest worth over Tk 1.43 billion as of June, 2017.

Besides, Tk over 2.21 billion had been taken from different foreign banks for purchasing DC-10-30 aircraft in 1984.

According to the cabinet division's instructions in 2007, Biman took restructuring plan eleven years ago to turn it into a public limited company. It was asked to downsize its manpower from 6,883 to 3,400 to make it a profitable agency.

The restructuring plan did not yield any visible outcomes as Biman has been performing poorly after it turned into a limited company.

As per the move, a total of 1,876 Biman employees retired and their pension or gratuity was paid from the loan received from the finance ministry.

The loan was given by the government in two instalments at an annual interest rate of 5.0 per cent.

When contacted, Managing Director and CEO of Biman Bangladesh Airlines (BBA) A M Mosaddique Ahmed declined to make comment in this regard.

He, however, said the balance sheet of the company is not healthy due to outstanding debt. The financial statement would look good if the total debt is converted into equity.

Biman started its journey as a company on July 23, 2007. It made profit in fiscal years (FYs) 2007-08 and 2008-09, but it turned into a loss-making concern from FYs 2009-10 to 2013-14, according to official documents. But Biman again made profits in three consecutive FYs 2014-15, 2015-16 and 2016-17.

A senior official said the national flag carrier could not provide outstanding dues to the government due to lack of cash capital at the initial stage of the company.

Currently, Biman is facing liquidity crisis due to regular repayment of a large loan it took for purchasing six new generation aircraft.

Aviation expert Kazi Wahidul Alam said Biman owed to the Civil Aviation Authority of Bangladesh (CAAB) in form of different arrear fees and charges. Besides, a hefty volume of outstanding jet fuel charges was unpaid with state-run Padma Oil Company Ltd (POCL) before 2007.

The amount of liabilities was nearly Tk 17 billion when the government converted Biman into a public limited company in 2007. The government wrote off the debt, he added.

"The government again and again injects cash and provides different opportunities to Biman. But it has failed to perform well."

  • Courtesy: The Financial Express/ Oct 14, 2018

Bangora gas well drill - Govt body opposes KrisEnergy proposal

Expert stresses protecting nat'l interest

Mir Mostafizur Rahaman


A government expert body has opposed KrisEnergy proposal to dig Bangora-7 (B7) gas well, saying it is "unjustified and harmful" for the national interest.

The B7 well is adjacent to Srikail-4 well, where Bangladesh Petroleum Exploration and Production Company (BAPEX) is currently producing gas.

If KrisEnergy starts producing gas from B7 well, it may suck gas from the BAPEX well meaning that the country has to pay KrisEnergy Tk 250 for each mcf gas instead of Tk 100 that it is paying BAPEX for the same, a senior official of energy ministry told the FE preferring anonymity.

KrisEnergy, a Singapore-based international energy firm, recently submitted a proposal to the government to dig B7 well.

Originally, Tullow Bangladesh Ltd (TBL) was given the permission to dig the B-7 well in 2014 and BAPEX was given the contract by TBL for the drilling. But due to a court injunction, the contract was cancelled.

After taking over Tullow operations in Bangladesh, Kris submitted the proposal for B7.

But the location of the proposed B7 well is not the same as that of the previous B7 well, officials said.

A BAPEX working group has opined the new B-7 well is just 195 meter away from the Srikail-4 well and if KrisEbergy starts digging B-7 well it will cause "serious harm" to the Srikail-4 well.

Petrobangla is extracting seven to eight mmcfd gas from this well daily and BAPEX has proposed conducting dual completion in this well to raise the gas production to 20 mmcfd.

"As drilling in B-7 well may cause serious threat to the Srikaile well 4, we feel that this proposal should not be approved," a senior official of the BAPEX told the FE preferring anonymity.

There remains another serious issue. If KrisEnergy starts extracting gas from B-7 it may suck gas from Srikail 4 well due to the close proximity.

"This means the gas we are getting at a rate of Tk 100 per mcf will have to be purchased from KrisEnergy at a rate of Tk 250," the official said.

BAPEX suggests that instead of digging the B-7 well, KrisEnergy should dig B-5 well to extract gas from the field.

"In Tullow's proposal, they have shown that the primary targets are D and E sand. D sand is already depleting and the formation pressure is 1590 psi. Even if the well is drilled the pressure of the D sand will be less than this one. If any well is drilled below D sand, it can cause the loss of the field," BAPEX expert committee said in its report.

Commenting on the issue, energy expert Professor Badrul Imam said a vested quarter has long been active to harm the national interest in the energy sector.

"We should not allow such drilling, which will cause harm to our own interest. If drilling B7 affects Srikail 4 well, then it should not be allowed at all," he said.

KrisEnergy is now conducting operation in block 9, which covers 1,770 sq km over the eastern margin of the onshore Bengal Basin, approximately 50 km east of Dhaka. It contains the Bangora gas producing field and the Lalmai gas discovery. Bangora production is between 105 mmcfd and 110 mmcfd.

Kris bought the stakes of Tullow on the Bangladesh block at $ 42.35 million.

The sales and purchase agreement between KrisEnergy and Tullow Oil International Ltd was signed on April 8, 2013 and the transaction was given retrospective effect from January 1, 2013.

On December 17, 2013, Tullow Oil, the Irish company, officially handed over its stakes to Kris after getting approval from Petrobangla in November.

KrisEnergy signed a sales and purchase agreement to acquire a 30 per cent working interest in and operatorship of Block 9 in April 2013.

  • Courtesy: The Financial Express/ Oct 14, 2018

যেভাবে বাড়ছে অতি ধনীর সংখ্যা

মরিয়ম চম্পা

দেশের অতি ধনীদের নিয়ন্ত্রণ দ্রুতগতিতে বাড়ছে। এতে করে তৈরি হচ্ছে বৈষম্য। অর্থনীতিবিদ হোসেন জিল্লুর রহমানের মতে, অতি ধনী হওয়ার প্রক্রিয়া একটি দেশের অর্থনীতির ওপর বড় ধরনের প্রভাব রাখে। তার কথা- রাজনৈতিক শাসনের যে প্রক্রিয়ায় অতি ধনী হচ্ছে এতে করে অর্থনৈতিক কৌশলের সংকট হচ্ছে, কর্মসংস্থানের সংকট হচ্ছে, পুঁজিবাজারে সংকট হচ্ছে, মানসম্মত শিক্ষার সংকট হচ্ছে। কারণ এ বিষয়গুলো অর্থনীতির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। 

গত ৫ই সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ওয়েলথ-এক্স তাদের একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। ওই প্রতিবেদনে বাংলাদেশে অতি ধনীর হার দ্রুতগতিতে বাড়ছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। ওয়ার্ল্ড আল্ট্রা ওয়েলথ রিপোর্ট-২০১৮ শীর্ষক প্রতিবেদন সম্পর্কে মতামত দিতে গিয়ে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা হোসেন জিল্লুর রহমান উপরোক্ত মন্তব্য করেন।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে-  বাংলাদেশে এখন শতকরা ১৭ দশমিক ৩ ভাগ হারে অতি ধনীর সংখ্যা বেড়েছে। আর এই হার বিশ্বে সর্বোচ্চ। ২০১২ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত ধনকুবের বাড়ার হার পর্যবেক্ষণ করে বাংলাদেশের শীর্ষ অবস্থান নির্ণয় করা হয়েছে। ওয়েলথ-এক্স মার্কিন ভেঞ্চার ক্যাপিটাল কোম্পানি ইনসাইট ভেঞ্চার পার্টনারসের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান। ওয়েলথ এক্সের দাবি, তাদের তথ্যভাণ্ডারে ১ লাখ ৬০ হাজারেরও বেশি ধনকুবেরের তথ্য রয়েছে। ৩ কোটি মার্কিন ডলার বা ২৫২ কোটি টাকার সম্পদ থাকলে তাদের আল্ট্রা ওয়েলদি বা অতি ধনী হিসেবে গণ্য করে সংস্থাটি। 

বাংলাদেশি মুদ্রামানে যাদের সম্পদ আড়াইশ’ কোটি টাকার বেশি, তারাই অতি ধনী। বাংলাদেশে অতি ধনী বৃদ্ধির হারে শীর্ষে থাকলেও অতি ধনীর সংখ্যা কত তা উল্লেখ করা হয়নি। এ হার যুক্তরাষ্ট্র, চীন, জাপান, ভারতসহ ৭৫টি বড় অর্থনীতির দেশের চেয়ে বেশি অবস্থানে বাংলাদেশ।

ওয়েলথ এক্সের প্রতিবেদনে বলা হয় ২০১৭ সালে বিশ্বে ধনকুবেরের সংখ্যা বেড়েছে ১২ দশমিক ৯ শতাংশ। এ সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৫৫ হাজার ৮১০-এ। তাদের মোট সম্পদের পরিমাণ ১৬ দশমিক ৩ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩১ দশমিক ৫ ট্রিলিয়ন ডলারে। সম্পদশালীদের সংখ্যা বেশি বেড়েছে এশিয়া ও লাতিন আমেরিকার দেশগুলোয়। এশিয়ায় ধনকুবেরের সংখ্যা বেড়েছে ২৭ শতাংশ।

পরিসংখ্যানে বলা হয়, বাংলাদেশ ১৭.৩%, চীন ১৩.৪%, ভিয়েতনাম ১২.৭%, কেনিয়া ১১.৭%, ভারত ১০.৭%, হংকং ৯.৩%, আয়ারল্যান্ড ৯.১%, ইসরায়েল ৮.৬%, পাকিস্তান ৮.৪%, যুক্তরাষ্ট্র ৮.১%। ২০১৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রে ধনকুবেরের সংখ্যা দাঁড়ায় ৭৯ হাজার ৫৯৫-তে। জাপানে ১৭ হাজার ৯১৫, চীনে ১৬ হাজার ৮৭৫, জার্মানিতে ১৫ হাজার ৮০, কানাডায় ১০ হাজার ৮৪০, ফ্রান্সে ১০ হাজার ১২০, হংকংয়ে ১০ হাজার ১০, যুক্তরাজ্যে ৯ হাজার ৩৭০, সুইজারল্যান্ডে ৬ হাজার ৪০০ ও ইতালিতে ৫ হাজার ৯৬০ জন। তবে শীর্ষ ১০টি দেশ বাদে অন্য দেশগুলোয় ধনকুবেরের সংখ্যা কত, তা উল্লেখ করা হয়নি। তবে জাপান, কানাডা, ইতালি ও যুক্তরাষ্ট্র এদিক দিয়ে স্থির হয়ে আছে।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) খানা আয়-ব্যয় জরিপ-২০১৬ অনুযায়ী, ২০১০ সালের তুলনায় ২০১৬ সালে দেশে সবচেয়ে ধনী ৫ শতাংশ পরিবার। তাদের আয় বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় ৫৭ শতাংশ। মাসিক আয় দাঁড়িয়েছে ৮৮ হাজার ৯৪১ টাকায়। বিপরীতে একই সময় সবচেয়ে দরিদ্র ৫ শতাংশ পরিবারের আয় কমেছে ৫৯ শতাংশ। তাদের মাসিক আয় দাঁড়িয়েছে ৭৩৩ টাকায়, যা ২০১০ সালে ১ হাজার ৭৯১ টাকা ছিল। 

ওয়েলথ এক্স বলছে, তাদের তথ্যভাণ্ডারে থাকা সম্পদশালীদের আর্থিক অবস্থা, পেশাজীবন, পরিচিত সহকারী, সংশ্লিষ্টতা, পারিবারিক ইতিহাস, শিক্ষা, শখ, দানখয়রাত ইত্যাদি নানা তথ্যে এ প্রতিবেদনে স্থান পেয়েছে। 

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বর মাসের শেষে ব্যাংকে কোটিপতি আমানতকারী ছিল ৬২ হাজার ৩৮ জন। ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর শেষে এই সংখ্যা দাঁড়ায় ৬৭ হাজার ৮৭২ জন। তবে ২০১৭ সালের জুনের শেষে কোটিপতি আমানতকারীর সংখ্যা ছিল ৬৮ হাজার ৮৯১ জন।

ওয়াশিংটনভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ফিন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটি (জিএফআই) ২০১৭ সালের এক তথ্যে বলা হয় বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা এখন সিঙ্গাপুরের শীর্ষ ধনীর তালিকায় রয়েছেন। তাদের নাম এসেছে পানামা পেপার্সে। বিশেষজ্ঞদের দাবি, ব্যবসায়ীদের একটি অংশ এখন মালয়েশিয়াকে তাদের ‘সেকেন্ড হোম’ হিসেবে বেছে নিচ্ছেন। ধনকুবের বাড়ার নেপথ্যে কী? ওয়েলথ এক্স শুধু বাংলাদেশে ধনকুবের বৃদ্ধির হারের খবরই প্রকাশ করেনি। তারা বলছে, এটা আশ্চর্যজনক যে ধনকুবেরের সংখ্যা বৃদ্ধির হারের দিক দিয়ে চীন বিশ্বের এক নম্বর দেশ নয়, এ অবস্থান এখন বাংলাদেশের।

তবে বাংলাদেশের অর্থনীতিবিদেরা বলেছেন বাংলাদেশে অতি ধনী বৈষম্য বৃদ্ধি নিশ্চিত করতে সহায়তা করবে। বাংলাদেশ থেকে দেশের বাইরে প্রচুর পরিমাণে পুঁজি পাচার হচ্ছে। বাংলাদেশে লুটপাটের সংস্কৃতি বহাল আছে। ফলে বৈষম্য বাড়ছে। একদিকে কিছু লোক সম্পদের পাহাড় গড়ছে। অন্যদিকে সাধারণ মানুষ নিঃস্ব হচ্ছে। 

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও অর্থনীতিবিদ হোসেন জিল্লুর রহমান মানবজমিনকে বলেন, ওয়েলথ-এক্সের তথ্যের মানে অনেকেই মনে করছেন বাংলাদেশ অনেক ধনী রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। আবার অনেকেই ধরে নিয়েছে বাংলাদেশ চীনের চেয়ে বেশি ধনী দেশে পরিণত হয়ে গেছে। বিষয়টা কিন্তু তা নয়। তিনি বলেন, অতি ধনী হয়েছেন যারা তারা কোন কোন অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। চীনের আলীবাবা কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা জ্যাক মা গোটা অর্থনীতির ওপর যেভাবে প্রভাব ফেলেছেন বিলিয়ন ডলার সম্পদের মালিক হয়েছেন। এভাবে অতি ধনী হওয়ার প্রক্রিয়া একটি দেশের অর্থনীতির ওপর বড় ধরনের প্রভাব রাখে। এবং যা অতি ধনী হওয়ার এক ধরনের ধারণা। অন্যটি হচ্ছে বাংলাদেশে অতি ধনীরা কীভাবে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে ভূমিকা রাখছে তা স্পষ্ট নয়। কিংবা যোগসূত্রটা ঠিক পরিষ্কার নয়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ বলেন, এই বৈষম্যটাকে আমরা ‘জিনি কোফিসিয়েন্ট’ (অর্থনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ সূচক যা কোনো দেশের আয় বা সম্পদের বণ্টনের অসমতা বোঝানোর জন্য ব্যবহার করা হয়) দিয়ে মেপে পরিমাণ করে থাকি। জিনি পয়েন্ট-৩৫ হলে গ্রহণযোগ্য হয়। আমাদের দেশে ১৯৭৪ সালে ‘জিনি’ ছিল পয়েন্ট ২৪। যেটাকে খুবই ভালো অবস্থা বলা যায়। তখন আমরা গরিব ছিলাম ঠিকই। কিন্তু আয় বৈষম্য ছিল না। ২০১০ সালে এটা বেড়ে দাঁড়ায় পয়েন্ট ৩৪-এ। যেটা একটু বাড়লেও সহনীয় ছিল। এই বছর জিনি কোফিসিয়েন্ট পয়েন্ট হচ্ছে ৪৮। তার মানে এখন বাংলাদেশ অতি বৈষম্যের দেশে পরিণত হয়েছে। আর পয়েন্ট ৫ পার হয়ে গেলে তো ভয়ানক বৈষম্যের সৃষ্টি হবে। সহনীয় পর্যায়ে আয় বৈষম্যের দেশ নরওয়ে, ডেনমার্ক, সুইডেন, লন্ডন এসব দেশগুলোতে জিনি পয়েন্ট ৩ থেকে ৪ এর মধ্যে থাকে। সেদিক থেকে আমাদের দেশে এতবেশি জিনি পার্থক্য দেখা যায়নি। তার মানে এখানে মুক্ত অর্থনীতির একটি ভুল ব্যাখ্যা হয়েছে। কল্যাণ অর্থনীতিও কিন্তু মুক্ত অর্থনীতি। 

সেদিক থেকে আমাদের সংবিধানে যেহেতু সমাজতন্ত্রের কথা আছে তাই সমাজতন্ত্রের আধুনিক সংজ্ঞা হলো কল্যাণ অর্থনীতি। যেগুলো উপরোক্ত দেশগুলোতে আছে। আমরা সেখানে না গিয়ে আমেরিকার অবাধ অর্থনীতির সংজ্ঞায় ঢুকে গেছি। ফলে ধনীরা অতি ধনী হয়ে গেছে। এবং টাকা-পয়সা তাদের হাতে চলে গেছে। একটি দেশের রাজনৈতিক সরকার যিনি অর্থনীতির বাজার নিয়ন্ত্রণ করে। প্রমাণস্বরূপ বলতে চাই আমাদের দেশে ১টি ব্যাংকে একটি পরিবার থেকে সর্বোচ্চ দুইজন সদস্য আসতে পারবেন। বর্তমান সরকারের আমলে সেটা নতুন আইন পাস হয়ে ৪ ব্যক্তিতে পরিণত হয়েছে। যেটা একেবারে অনৈতিক একটি আইন। অনেকেই এটাকে কালো আইনও বলেছেন। কালো টাকার মালিকদের কথায় এটি হয়েছে। তিনি বলেন, সরকারকে আগে সিদ্ধান্ত নিতে হবে ধনতন্ত্র কমিয়ে কল্যাণ অর্থনীতি ফিরিয়ে আনার। এতে করে বৈষম্য কমিয়ে আনা সম্ভব। 

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, এটাকে উন্নয়ন কৌশলের একটি নেতিবাচক দিক বলা যেতে পারে। আমরা সাদা চোখে প্রবৃদ্ধি দেখছি। কিন্তু সমতা ভিত্তিক উন্নয়ন বা টেকশই উন্নয়নের বিষয়টি লক্ষ্য করছি না। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বা গ্রোথ হচ্ছে। কিন্তু এর ফলাফলটা সবার মাঝে পৌঁছেছে কিনা এ ব্যাপারে সরকারি কোনো সহায়ক নীতিমালা নেই। ফলে অর্থনৈতিক উন্নয়ন হচ্ছে। কিন্তু সমভাবে বা নিম্নবৃত্তরা এর কোনো সুবিধা পাচ্ছে না। যেটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।

এজন্য আয় বৈষম্য এবং সম্পদের বৈষম্য বাড়ছে। বণ্টন ও সমতা ভিত্তিক উন্নয়নে আমরা কোনো জোর দিচ্ছি না। এভাবে একটা দেশ চলতে পারে না। আমরা কিন্তু রাজনৈতিক স্বাধিকার এবং অর্থনৈতিক মুক্তি চেয়েছিলাম। কাজেই একটি দেশ স্বাধীন হলেই তো লাভ নেই। অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠাও দরকার। বঙ্গবন্ধুর ঘোষণা ছিল অর্থনৈতিক সমতা থাকবে। সেটা থেকে আমরা কিন্তু দূরে সরে আসছি। এটা না করলে টেকশই উন্নয়ন বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়। এতে করে সাধারণ মানুষের আশা আকাঙ্ক্ষা ঠিকভাবে প্রতিফলিত হবে না। 

এটা অনস্বীকার্য যে বৈষম্য বাড়ছে। এর মূল কারণ হচ্ছে ১৭ থেকে ১৮ শতাংশ ধনীদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়া। এভাবে ধনীদের সংখ্যা বাড়তে সময় লাগে ১৫০ বছর। যেখানে আমাদের দেশে মাত্র ৪৭ বছরেই বেড়ে গছে। তার মানে যাদের সামাজিক প্রতিপত্তি, রাজনৈতিক সুবিধাসহ নানান ধরনের সুযোগ রয়েছে তারাই কিন্তু এই ধনীদের খাতায় নাম লেখাচ্ছেন। 

  • কার্টসিঃ মানবজমিন/ ১৪ অক্টোবর ২০১৮

ড. কামালের নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের যাত্রা



গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়েছে। এই ফ্রন্টের ঘোষণায় নির্বাচনের আগে সরকারের পদত্যাগ, সংসদ ভেঙে দিয়ে সর্বদলীয় গ্রহণযোগ্য সরকার গঠন এবং খালেদা জিয়াসহ সব রাজবন্দীর মুক্তির দাবি করা হয়েছে।

১৩ অক্টোবর সন্ধ্যা ছয়টার পর জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। এ সময় বিএনপি, জেএসডি ও নাগরিক ঐক্যের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। তবে সাবেক রাষ্ট্রপতি এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী বা তাঁর দল বিকল্পধারার কোনো নেতাকে দেখা যায়নি।

সূচনা বক্তব্যে ড. কামাল হোসেন বলেন, এই ঐক্য কোনো দলের স্বার্থে নয়। জাতীয় স্বার্থে এই ঐক্য করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের পক্ষে ৭ দফা দাবি ও ১১টি লক্ষ্য ঘোষণা করেন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না। তিনি বলেন, ‘বেশ কিছুদিন ধরে জাতীয় ঐক্য গঠনের চেষ্টা চলছিল। আজ সফল হলাম। দেশ এখন দুঃশাসনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। পেশাজীবীরা অনেক আগে থেকেই এটা উপলব্ধি করে আসছেন। আজ এই প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে ঐক্য প্রক্রিয়ার সফল যাত্রা শুরু হলো।’

বৃহত্তর জাতীয় ঐক্যের ৭ দফা দাবিগুলো হলো—

১. অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের লক্ষ্যে সরকারের পদত্যাগ, জাতীয় সংসদ বাতিল, আলোচনা করে নিরপেক্ষ সরকার গঠন এবং খালেদা জিয়াসহ সব রাজবন্দীর মুক্তি ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার। 
২. নির্বাচন কমিশনের পুনর্গঠন ও নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার না করার নিশ্চয়তা দেওয়া। 
৩. বাক্, ব্যক্তি, সংবাদপত্র, টেলিভিশন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও সব রাজনৈতিক দলের সভা-সমাবেশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা। 
৪. কোটা সংস্কার ও নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলন, সামাজিক গণমাধ্যমে মতপ্রকাশের অভিযোগে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহার ও গ্রেপ্তারকৃতদের মুক্তি দিতে হবে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করা। 
৫. নির্বাচনের ১০ দিন আগে থেকে নির্বাচনের পর সরকার গঠন পর্যন্ত বিচারিক ক্ষমতাসহ সেনাবাহিনী মোতায়েন এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিয়োজিত ও নিয়ন্ত্রণের পূর্ণ ক্ষমতা নির্বাচন কমিশনকে দেওয়া। 
৬. নির্বাচনে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক নিয়োগের ব্যবস্থা নিশ্চিত এবং সম্পূর্ণ নির্বাচনপ্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণে তাঁদের ওপর কোনো ধরনের বিধিনিষেধ আরোপ না করা এবং গণমাধ্যমকর্মীদের ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ না করা। 
৭. তফসিল ঘোষণার তারিখ থেকে নির্বাচনের চূড়ান্ত ফল প্রকাশিত না হওয়া পর্যন্ত চলমান সব রাজনৈতিক মামলা স্থগিত রাখা এবং নতুন কোনো মামলা না দেওয়ার নিশ্চয়তা দেওয়া। 
বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে ১১টি লক্ষ্য চূড়ান্ত করা হয়েছে। 

লক্ষ্যগুলো হলো—

১. মুক্তিসংগ্রামের চেতনাভিত্তিক বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে এক ব্যক্তিকেন্দ্রিক নির্বাহী ক্ষমতা অবসানের জন্য সংসদে, সরকারে, রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য আনা এবং প্রশাসন বিকেন্দ্রীকরণ, ন্যায়পাল নিয়োগ করা। 
২. সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ সংশোধন, সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ পদে নির্দলীয়, নিরপেক্ষ ও সৎ-যোগ্য ব্যক্তিদের নিয়োগের জন্য সাংবিধানিক কমিশন গঠন করা। 
৩. বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও ক্ষমতা নিশ্চিত করা। 
৪. দুর্নীতি দমন কমিশনকে যুগোপযোগী করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় সংস্কার নিশ্চিত করা হবে। দুর্নীতিমুক্ত, দক্ষ ও জবাবদিহিমূলক প্রশাসন গড়ে তুলে সুশাসন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে দুর্নীতি কঠোর হাতে দমন ও দুর্নীতির দায়ে জড়িত ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় আনা। 
৫. বিনিয়োগ বৃদ্ধির পরিবেশ সৃষ্টি, বেকারত্বের অবসান ও শিক্ষিত যুবসমাজের সৃজনশীলতা ও রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে নিয়োগের ক্ষেত্রে মেধাকে একমাত্র যোগ্যতা হিসেবে বিবেচনা করা। 
৬. জনগণের মৌলিক মানবাধিকার, নারীর ক্ষমতায়ন, কৃষক-শ্রমিক ও দরিদ্র মানুষের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পুষ্টি সরকারি অর্থায়নে সুনিশ্চিত করা। 
৭. জনপ্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, স্থানীয় সরকারসহ রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানকে দুর্নীতি ও দলীয়করণ থেকে মুক্ত করা। 
৮. বাংলাদেশ ব্যাংকসহ আর্থিক প্রতিষ্ঠানে শৃঙ্খলা আনা, সম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহার, সুষম বণ্টন ও জনকল্যাণমুখী অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করা। 
৯. জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ ও সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে জাতীয় ঐকমত্য গঠন এবং প্রতিশোধ, প্রতিহিংসা ও নেতিবাচক রাজনীতির বিপরীতে ইতিবাচক সৃজনশীল এবং কার্যকর ভারসাম্যের রাজনীতি প্রতিষ্ঠা করা। 
১০. ‘সকল দেশের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে শত্রুতা নয়’—এই নীতির আলোকে পররাষ্ট্রনীতি অনুসরণ করা। 
১১. প্রতিরক্ষা বাহিনীকে আধুনিক প্রশিক্ষণ, প্রযুক্তি ও সমরসম্ভারে সুসজ্জিত, সুসংগঠিত ও যুগোপযোগী করা।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ড. কামাল হোসেন, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ ও খন্দকার মোশাররফ হোসেন, জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব, নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না প্রমুখ।

কার্টসিঃ প্রথম আলো/ ১৪ অক্টোবর ২০১৮

রক্ষণাবেক্ষণে চাই পুলিশের জব্দ করা যানবাহন

সম্পাদকীয়


ধুলায় ধূসরিত শত শত যানবাহন। এর মধ্যে কোনোটির আসন নেই, কোনোটির দরজা নেই, কোনোটির চাকা বসে গেছে, কোনোটির আবার গ্লাস উধাও, আবার কোনোটির শুধু কাঠামো পড়ে আছে। 

রাজধানীসহ দেশের বেশির ভাগ থানায় এ ধরনের যানবাহনের দেখা পাওয়া যায়। চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, মাদক বহনের ঘটনায়, সড়ক দুর্ঘটনায় বা আইন ভাঙার কারণে আটক করা হয় এসব যানবাহন। এর মধ্যে রয়েছে মোটরসাইকেল, প্রাইভেট কার, বাস, মাইক্রোবাস, পিকআপ ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা। আইনি জটিলতার কারণে এসব যানবাহন বছরের পর বছর খোলা আকাশের নিচে পড়ে থাকছে। রোদে পুড়ছে, বৃষ্টিতে ভিজছে। চুরি হচ্ছে যন্ত্রাংশ। হারাচ্ছে ব্যবহারের উপযোগিতা। নষ্ট হচ্ছে কোটি কোটি টাকা। অথচ চাইলেই রক্ষা করা যায় এসব মূল্যবান যানবাহন। কিন্তু এ ব্যাপারে কারও কোনো উদ্যোগ নেই।

জব্দ করা যানবাহনের চাপে একেকটি থানা যেন গাড়ির অলিখিত ডাম্পিং জোনে পরিণত হয়েছে। রাজধানীতে জব্দ করা গাড়ি রাখার জন্য বেশ কয়েকটি ডাম্পিং স্টেশন রয়েছে। কিন্তু সেগুলোতে স্থান সংকুলান না হওয়ায় বাধ্য হয়ে থানা প্রাঙ্গণে রাখতে হচ্ছে এসব যানবাহন। এতে থানার কার্যক্রমে বিঘ্ন ঘটছে। অনেক সময় থানার সামনে বা আশপাশের সড়কে এসব যানবাহন রাখা হয়। ফলে সড়ক সংকুচিত হচ্ছে।

বেশির ভাগ ক্ষেত্রে মামলা হওয়ার পর আলামত হিসেবে যানবাহনগুলো আটকে রাখা হয়। এর মধ্যে কিছু যানবাহন আদালতের নির্দেশে মালিকের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রে অপেক্ষা করতে হয় মামলা নিষ্পত্তি হওয়া পর্যন্ত। আর কে না জানে, মামলার দীর্ঘসূত্রতাই আমাদের দেশের সবচেয়ে বড় সমস্যা। মামলা নিষ্পত্তি হতে সময় লাগে ১০ থেকে ১২ বছর। এরপর চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে আদালত হয় গাড়ি মালিকের কাছে ফিরিয়ে দিতে বলেন, না হয় নিলামে বিক্রি করার আদেশ দেন। এদিকে নিলামে বিক্রির প্রক্রিয়াও বেশ জটিল ও সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। তত দিনে যানবাহনগুলো এতটাই করুণ দশায় উপনীত হয় যে তা শেষ পর্যন্ত ভাঙারির দোকানে বিক্রি করা ছাড়া কোনো উপায় থাকে না। কোটি কোটি টাকার সম্পদ এভাবে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, আর তা রক্ষায় আমাদের কোনো উদ্যোগ নেই! এটা খুবই দুঃখজনক।

সরকারকে এখন এ বিষয়টিতে গুরুত্ব দিতে হবে। জব্দ করা গাড়ির যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণের জন্য এবং থানাগুলোর ওপর থেকে বোঝা কমাতে কেন্দ্রীয়ভাবে একটি ডাম্পিং স্টেশন তৈরি করা জরুরি হয়ে পড়েছে। সরকারকে নিলামের জটিলতা দূর করার উদ্যোগও নিতে হবে। এ জন্য প্রতিটি থানা এলাকায় গাড়ি বিক্রির জন্য কমিটি গঠন করা যেতে পারে। আমরা চাই সরকার এ ব্যাপারে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেবে।

  • কার্টসিঃ প্রথম আলো/ ১৪ অক্টোবর ২০১৮

Thursday, October 11, 2018

প্রযুক্তি ও দক্ষতার অভাবে অর্থপাচারের ঝুঁকি বাড়ছে

বিআইবিএমের গবেষণার তথ্য

অনলাইন ব্যাংকিং ও মোবাইল ব্যাংকিং ব্যবহার করে অনেকেই অর্থপাচার করছে। এ ধরনের আর্থিক অপরাধ প্রতিরোধের প্রধান অন্তরায় উন্নত প্রযুক্তি ও কারিগরি দক্ষতার অভাব। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের (বিআইবিএম) এক গবেষণায় নতুন পরিশোধ পদ্ধতি ব্যবহারের মাধ্যমে সম্ভাব্য অর্থপাচার প্রতিরোধে এই দুটি কারণ চিহ্নিত করা হয়েছে।

গতকাল বুধবার ‘নতুন পরিশোধ পদ্ধতিতে অর্থপাচারের ঝুঁকি : বাংলাদেশ প্রসঙ্গ’ শীর্ষক এক সেমিনারে গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে বিআইবিএমের পরিচালক (প্রশিক্ষণ) শাহ মো. আহসান হাবিব এ তথ্য তুলে ধরেন। রাজধানীর মিরপুরে বিআইবিএম মিলনায়তনে ওই সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।

বিআইবিএমের গবেষণায় দেখা গেছে, জরিপে অংশ নেওয়া ৫৬ শতাংশ ব্যাংকই মনে করে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কারিগরি দক্ষতা ঘাটতির কারণে অনলাইন ব্যাংকিং ও মোবাইল ফিন্যানশিয়াল সার্ভিসেসের (এমএফএস) মাধ্যমে অর্থপাচার রোধ করা যাচ্ছে না। এ ছাড়া ৪১ শতাংশ ব্যাংক উন্নত প্রযুক্তির অভাবকে দায়ী করেছে।

এ ছাড়া ২১ ও ১৮ শতাংশ ব্যাংক নজরদারির অভাব ও দ্রুত লেনদেন নিষ্পত্তির প্রবণতাকে অর্থপাচারের সুযোগ করে দিচ্ছে বলে মনে করছে।

সেমিনারে বক্তারা তথ্য-প্রযুক্তিভিত্তিক ব্যাংকিংয়ের সম্ভাব্য অর্থপাচার ঠেকাতে সচেতনতা বাড়ানোর পরামর্শ দেন। এ লক্ষ্যে তারা বাংলাদেশ ব্যাংক ও বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান। এ সময় বক্তারা বলেন, সারা বিশ্বে এ ধরনের তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবস্থায় যে ঝুঁকি তৈরি হয়েছে তা থেকে শিক্ষা নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।

অর্থপাচার রোধে ‘ক্যাশলেস সোসাইটি’ গড়ে তোলার পরামর্শ দেন সেমিনারে অংশ নেওয়া বক্তারা।

সেমিনারে আইপে সিস্টেমস লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী জাকারিয়া স্বপন বলেন, ‘আমাদের ক্যাশলেস সোসাইটির দিকে এগিয়ে যেতে হবে। এটা করা সম্ভব হলে টাকা কোথা থেকে কোথায় যাচ্ছে তা সঠিকভাবে নজরদারি করা সম্ভব হবে। আর্থিক অপরাধ কমে আসবে।’

সাউথইস্ট ব্যাংকের যুগ্ম ব্যবস্থাপনা পরিচালক এস এম মাইনুদ্দীন চৌধুরী বলেন, ‘অর্থপাচার প্রতিরোধে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে একটি ক্যাশলেস ইকোসিস্টেমের মধ্যে চলে আসা প্রয়োজন। প্রযুক্তিগত ত্রুটি-বিচ্যুতি পরিহারে প্রযুক্তিগত সমাধানেরই প্রয়োজন।’

এজেন্ট নির্বাচনের সময় ব্যাংকগুলোকে আরো সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দেন ট্রাস্ট ব্যাংক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী ফারুক মঈনউদ্দীন আহমেদ। তিনি বলেন, ‘এজেন্ট নিয়োগ নিয়ে ব্যাংকগুলোর মধ্যে অস্বাস্থ্যকর প্রতিযোগিতা বন্ধ করতে হবে।’

বাংলাদেশ ব্যাংকের পেমেন্ট সিস্টেম বিভাগের মহাব্যবস্থাপক লীলা রশিদ বলেন, মোট লেনদেনের ৬ শতাংশ মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে হয়। এ ধরনের ব্যাংকিং কার্যক্রম দেশে এক রকম নতুন। নিয়ম-শৃঙ্খলার মধ্যে আনতে আরো কিছুটা সময় লাগবে।

এনবিআরের প্রথম সচিব সৈয়দ মুশফিকুর রহমান বলেন, সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো নতুন প্রযুক্তি গ্রহণে সময় দিতে চায় না। এনবিআরসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে নতুন প্রযুক্তি গ্রহণের বিষয়ে আরো সচেতনতা বাড়াতে হবে, সচেষ্ট হতে হবে।

সেমিনারে বিআইবিএমের মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমদ চৌধূরীর সভাপতিত্বে বিআইবিএমের চেয়ার প্রফেসর এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. বরকত-এ-খোদা, পূবালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং বিআইবিএমের সুপারনিউমারারি অধ্যাপক হেলাল আহমদ চৌধুরী, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক এবং বিআইবিএমের সুপারনিউমারারি অধ্যাপক মো. ইয়াছিন আলী বক্তব্য দেন।

  • Courtesy: Kalerkantha /Oct 11, 2018

বেপরোয়া অর্থ পাচার

সম্পাদকীয়

বিদেশে অর্থ পাচার যে অব্যাহত আছে তা নানাভাবেই প্রকাশ পাচ্ছে। নির্বাচনী বছর হওয়ায় বর্তমানে অর্থ পাচার হচ্ছে আরও বেপরোয়াভাবে। এমনটি মনে করার কারণ হল, নির্বাচনী বছরে সচরাচর অর্থ পাচার বেড়ে যায়। যাদের কাছে উদ্বৃত্ত টাকা আছে, তারা ওই অর্থ দেশে রাখা নিরাপদ মনে করেন না। তারা নানা অনিশ্চয়তায় ভোগেন। ভাবেন, রাজনৈতিক পরিস্থিতি অস্থির হয়ে উঠতে পারে। তাতে তাদের সমস্যা হতে পারে। তাই তারা দেশে টাকা রাখতে চান না, যদিও অর্থ পাচার একটি বড় অপরাধ। অর্থনীতিতে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। তাই অর্থ পাচার রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া জরুরি।

অর্থ পাচার বৃদ্ধি পাওয়ার একটি লক্ষণ হল, দেশে বেসরকারি বিনিয়োগে স্থবিরতা বিরাজ করলেও ব্যাংকের ঋণ বিতরণ বেড়ে গেছে। দ্বিতীয়ত, সাম্প্রতিক সময়ে দেশে আমদানি ব্যয় বৃদ্ধির হার যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি।

পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, দেশে যে হারে বৈদেশিক মুদ্রা আসছে, বিদেশে যাচ্ছে তার চেয়ে বেশি হারে। এটি অস্বাভাবিক। গত ১০ বছরে এ ধরনের ঘটনা ঘটেনি। বস্তুত অর্থ পাচারের ঘটনা সবসময়ই ঘটছে। সুইস ব্যাংকের রিপোর্ট, পানামা ও প্যারাডাইস পেপারসে পাচারের তথ্য রয়েছে। গ্লোবাল ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেগ্রিটির রিপোর্ট অনুযায়ী, গত ১০ বছরে বাংলাদেশ থেকে ৬ লাখ কোটি টাকা পাচার হয়েছে। এর মধ্যে সর্বশেষ বছরে পাচার হয়েছে ৭৪ হাজার কোটি টাকা। অঙ্কটি উদ্বিগ্ন হওয়ার মতো।

অর্থ পাচার হচ্ছে নানা পন্থায়। এর একটি হল, আমদানির নামে এলসি খুলে বিল পরিশোধ করা হচ্ছে; কিন্তু কোনো পণ্যই দেশে আসছে না। এছাড়া আমদানিতে বেশি মূল্য দেখানো (ওভার ইনভয়েসিং), রফতানি মূল্য কম দেখানো (আন্ডার ইনভয়েসিং) এবং হুন্ডির মাধ্যমেও অর্থ পাচার হচ্ছে।

সাম্প্রতিক সময়ে অর্থ পাচারের একটি বড় মাধ্যম হয়ে দেখা দিয়েছে রেমিটেন্স। একটি চক্র বৈদেশিক মুদ্রায় প্রবাসীদের রেমিটেন্স সংগ্রহ করে তা বিদেশেই রেখে দেয়, আর দেশে দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত টাকায় এর দায় শোধ করা হয়। আমাদের ধারণা, এর বাইরেও আরও নানাভাবে অর্থ পাচার হচ্ছে। পাচারের ছিদ্রগুলো সঠিকভাবে চিহ্নিত করে তা বন্ধের পদক্ষেপ নেয়া গেলে রোধ হতে পারে অর্থ পাচার। এ ব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, দুর্নীতি দমন কমিশনসহ সংশ্লিষ্ট সব প্রতিষ্ঠানকে তৎপর হতে হবে এবং নজরদারি বাড়াতে হবে। এসব ক্ষেত্রে সরকারের রাজনৈতিক সদিচ্ছা থাকাটাও জরুরি বটে।

অর্থ পাচার রোধে আরও একটি বিষয়ে দৃষ্টি দেয়া প্রয়োজন বলে আমরা মনে করি। যে অর্থ পাচার হয়ে যায়, দেশে বিনিয়োগের পরিবেশ ভালো থাকলে সেই অর্থ দেশেই বিনিয়োজিত হতো। এর ফলে নতুন নতুন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান গড়ে উঠত, বাড়ত কর্মসংস্থানের সুযোগ। কাজেই অর্থ পাচার রোধে বিনিয়োগের পরিবেশ উন্নত করা সরকারের অন্যতম লক্ষ্য হওয়া উচিত। দৃষ্টি দিতে হবে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠার বিষয়েও। স্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিবেশ দেশে পুঁজির নিরাপত্তার অভাব অনেকাংশে দূর করে থাকে। বিদেশে পাচার হয়ে যাওয়া অর্থের বড় অংশ দুর্নীতির টাকা। কাজেই দুর্নীতির লাগামও টেনে ধরতে হবে শক্ত হাতে।
  • কার্টসিঃ যুগান্তর/ ১১ অক্টোবর ২০১৮