Search

Thursday, October 11, 2018

প্রযুক্তি ও দক্ষতার অভাবে অর্থপাচারের ঝুঁকি বাড়ছে

বিআইবিএমের গবেষণার তথ্য

অনলাইন ব্যাংকিং ও মোবাইল ব্যাংকিং ব্যবহার করে অনেকেই অর্থপাচার করছে। এ ধরনের আর্থিক অপরাধ প্রতিরোধের প্রধান অন্তরায় উন্নত প্রযুক্তি ও কারিগরি দক্ষতার অভাব। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের (বিআইবিএম) এক গবেষণায় নতুন পরিশোধ পদ্ধতি ব্যবহারের মাধ্যমে সম্ভাব্য অর্থপাচার প্রতিরোধে এই দুটি কারণ চিহ্নিত করা হয়েছে।

গতকাল বুধবার ‘নতুন পরিশোধ পদ্ধতিতে অর্থপাচারের ঝুঁকি : বাংলাদেশ প্রসঙ্গ’ শীর্ষক এক সেমিনারে গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে বিআইবিএমের পরিচালক (প্রশিক্ষণ) শাহ মো. আহসান হাবিব এ তথ্য তুলে ধরেন। রাজধানীর মিরপুরে বিআইবিএম মিলনায়তনে ওই সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।

বিআইবিএমের গবেষণায় দেখা গেছে, জরিপে অংশ নেওয়া ৫৬ শতাংশ ব্যাংকই মনে করে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কারিগরি দক্ষতা ঘাটতির কারণে অনলাইন ব্যাংকিং ও মোবাইল ফিন্যানশিয়াল সার্ভিসেসের (এমএফএস) মাধ্যমে অর্থপাচার রোধ করা যাচ্ছে না। এ ছাড়া ৪১ শতাংশ ব্যাংক উন্নত প্রযুক্তির অভাবকে দায়ী করেছে।

এ ছাড়া ২১ ও ১৮ শতাংশ ব্যাংক নজরদারির অভাব ও দ্রুত লেনদেন নিষ্পত্তির প্রবণতাকে অর্থপাচারের সুযোগ করে দিচ্ছে বলে মনে করছে।

সেমিনারে বক্তারা তথ্য-প্রযুক্তিভিত্তিক ব্যাংকিংয়ের সম্ভাব্য অর্থপাচার ঠেকাতে সচেতনতা বাড়ানোর পরামর্শ দেন। এ লক্ষ্যে তারা বাংলাদেশ ব্যাংক ও বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান। এ সময় বক্তারা বলেন, সারা বিশ্বে এ ধরনের তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবস্থায় যে ঝুঁকি তৈরি হয়েছে তা থেকে শিক্ষা নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।

অর্থপাচার রোধে ‘ক্যাশলেস সোসাইটি’ গড়ে তোলার পরামর্শ দেন সেমিনারে অংশ নেওয়া বক্তারা।

সেমিনারে আইপে সিস্টেমস লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী জাকারিয়া স্বপন বলেন, ‘আমাদের ক্যাশলেস সোসাইটির দিকে এগিয়ে যেতে হবে। এটা করা সম্ভব হলে টাকা কোথা থেকে কোথায় যাচ্ছে তা সঠিকভাবে নজরদারি করা সম্ভব হবে। আর্থিক অপরাধ কমে আসবে।’

সাউথইস্ট ব্যাংকের যুগ্ম ব্যবস্থাপনা পরিচালক এস এম মাইনুদ্দীন চৌধুরী বলেন, ‘অর্থপাচার প্রতিরোধে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে একটি ক্যাশলেস ইকোসিস্টেমের মধ্যে চলে আসা প্রয়োজন। প্রযুক্তিগত ত্রুটি-বিচ্যুতি পরিহারে প্রযুক্তিগত সমাধানেরই প্রয়োজন।’

এজেন্ট নির্বাচনের সময় ব্যাংকগুলোকে আরো সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দেন ট্রাস্ট ব্যাংক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী ফারুক মঈনউদ্দীন আহমেদ। তিনি বলেন, ‘এজেন্ট নিয়োগ নিয়ে ব্যাংকগুলোর মধ্যে অস্বাস্থ্যকর প্রতিযোগিতা বন্ধ করতে হবে।’

বাংলাদেশ ব্যাংকের পেমেন্ট সিস্টেম বিভাগের মহাব্যবস্থাপক লীলা রশিদ বলেন, মোট লেনদেনের ৬ শতাংশ মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে হয়। এ ধরনের ব্যাংকিং কার্যক্রম দেশে এক রকম নতুন। নিয়ম-শৃঙ্খলার মধ্যে আনতে আরো কিছুটা সময় লাগবে।

এনবিআরের প্রথম সচিব সৈয়দ মুশফিকুর রহমান বলেন, সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো নতুন প্রযুক্তি গ্রহণে সময় দিতে চায় না। এনবিআরসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে নতুন প্রযুক্তি গ্রহণের বিষয়ে আরো সচেতনতা বাড়াতে হবে, সচেষ্ট হতে হবে।

সেমিনারে বিআইবিএমের মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমদ চৌধূরীর সভাপতিত্বে বিআইবিএমের চেয়ার প্রফেসর এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. বরকত-এ-খোদা, পূবালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং বিআইবিএমের সুপারনিউমারারি অধ্যাপক হেলাল আহমদ চৌধুরী, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক এবং বিআইবিএমের সুপারনিউমারারি অধ্যাপক মো. ইয়াছিন আলী বক্তব্য দেন।

  • Courtesy: Kalerkantha /Oct 11, 2018

No comments:

Post a Comment