Search

Monday, March 16, 2020

উৎপাদনমুখী শিল্পে আরেকটি করোনার ধাক্কা

তাবিথ আউয়াল

গত এক দশকে গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম ৯ বার বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। সর্বশেষ গত ২৭ ফেব্রুয়ারি পাইকারি, খুচরা ও সঞ্চালন- তিন ক্ষেত্রেই বিদ্যুতের দাম আরেক দফা বাড়ল। সাধারণ গ্রাহক পর্যায়ে (খুচরা) প্রতি ইউনিটের দাম গড়ে ৩৬ পয়সা বা ৫ দশমিক ৩ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। এতে প্রতি ইউনিটের গড় দাম ৬ টাকা ৭৭ পয়সা থেকে বাড়িয়ে করা হয়েছে ৭ টাকা ১৩ পয়সা।

ফলে চলতি বছর বিদ্যুৎ বিল বাবদ জনগণের ব্যয় বাড়বে দু’হাজার ৬২৫ কোটি টাকা। ২০১০ সালের ফেব্র“য়ারি পর্যন্ত গ্রাহক পর্যায়ে সরবরাহকৃত বিদ্যুতের গড় মূল্য ছিল তিন টাকা ৭৩ পয়সা। অর্থাৎ ১০ বছরে দাম বেড়েছে ৯১ দশমিক ১৫ শতাংশ।

গ্রামপ্রধান বাংলাদেশে চলতি বছর পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (আরইবি) বিদ্যুৎ বিক্রির সম্ভাব্য পরিমাণ ধরা হয়েছে তিন হাজার ৫৮১ কোটি ৯০ লাখ ইউনিট। আগের হারে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করা হলে সংস্থাটির গ্রাহকদের ব্যয় হতো ২২ হাজার ৪২২ কোটি ৬৯ লাখ টাকা। নতুন হার কার্যকরে ব্যয় বেড়ে দাঁড়াবে ২৩ হাজার ৫৬৮ কোটি ৯০ লাখ টাকা।

সুতরাং দেখা যাচ্ছে, শুধু গ্রামের স্বল্প আয়ের সাধারণ মানুষের ঘরে আলো জ্বালাতেই ব্যয় বেড়ে যাবে এক হাজার ১৪৬ কোটি ২১ লাখ টাকা। গ্রামাঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহকারী এ সংস্থার প্রতি ইউনিটে গড় বিল ছিল ৬ টাকা ২৬ পয়সা। তা বেড়ে হয়েছে ৬ টাকা ৫৮ পয়সা। গড়ে বেড়েছে ৫ দশমিক ১১ শতাংশ। সেচ-কৃষিকাজে ব্যবহৃত পাম্পের ক্ষেত্রে সব কোম্পানির জন্য ইউনিটপ্রতি দাম ৪ দশমিক ১৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

আগের চেয়ে যা ১৬ পয়সা বেশি। এছাড়া মাসিক ডিমান্ড চার্জ ১৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩০ টাকা করা হয়েছে। উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলসহ সারা দেশেই ইরি-বোরো রোপণের কাজ চলছে, যেখানে সেচের বিকল্প নেই। আবাদ নিশ্চিত করতে কৃষক সেচের জন্য সর্বোচ্চ অর্থ ও শক্তি ব্যয় করে। গ্রামীণ জনপদে এখন রাতভর সেচ পাম্পের শব্দ শোনা যাচ্ছে, যার অধিকাংশই বিদ্যুৎনির্ভর।

গত কয়েক বছর ধরে ধানের বাম্পার ফলন হলেও মৌসুমের শুরুতে দাম না থাকায় কৃষকদের মাথায় হাত পড়ছে। এর ওপর এবার বিদ্যুতের দাম বাড়ায় সেচ মৌসুমে ক্ষেতের পানি জোগানোর কথা ভাবতে গিয়ে কৃষকদের গলা শুকিয়ে এসেছে।

এমন এক সময় বিদ্যুতের দাম বাড়ল যখন বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দার আশঙ্কায় কমে যাচ্ছে চাহিদা। জোগান দেয়ার সক্ষমতাও প্রশ্নের মুখোমুখি। দেশের সামগ্রিক অর্থনীতি চাপের মধ্যে। অর্থনীতির সব সূচককে চোখ রাঙাচ্ছে করোনাভাইরাস। চীনের কাঁচামাল সংকটে শিল্পোদ্যোক্তাদের কপালের ভাঁজ বেড়ে যাচ্ছে।

বাংলাদেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ বলার মতো না হলেও আমাদের প্রধান বাণিজ্যিক অংশীদার দেশগুলোতে তীব্র আকার ধারণ করেছে। রফতানি কমেছে অনেকগুণ। কমছে পণ্য আমদানিও। মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য। ‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’ হিসেবে বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধি শিল্পের উৎপাদন খরচ সহনীয় মাত্রা ছাড়াবে। আর দৈনন্দিন বাড়তি ব্যয় মেটাতে নাভিশ্বাস উঠবে মধ্যবিত্তের জীবনে।

এ রকম সময়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত কতটা সময়োপযোগী- এ নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন উদ্যোক্তারা। গণমাধ্যমে বলা হচ্ছে, দুর্নীতিতে নিমজ্জিত এ খাতের দুর্নীতি বন্ধ না করে মানুষের ওপর ব্যয়ের বোঝা চাপানো যৌক্তিক নয়। বিশ্লেষকরা বলছেন, মূলত স্বস্তির খোঁজেই বাড়ানো হয়েছে বিদ্যুতের দাম। কেননা, দেশের দুর্বল অর্থনীতি নিয়ে বাজেট বাস্তবায়নের চিত্রে তৃপ্তির ঢেঁকুর তোলা সম্ভব হচ্ছে না। ঘাটতি রয়েছে রাজস্ব আয়েও। ব্যাংকনির্ভর হয়ে পড়ছে সরকার।

কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, বিদ্যুতের দাম বাড়ানোয় সামগ্রিক মূল্যস্ফীতিতে প্রভাব পড়ার পাশাপাশি শিল্পের উৎপাদন খরচ বাড়বে। সাধারণ মানুষের জীবনে এর প্রভাব আসবে কাটা ঘায়ে নুনের ছিঁটার মতো যন্ত্রণা হয়ে। তাই মানুষের ওপর বোঝা চাপানোর আগে দুর্নীতি বন্ধ করা উচিত বলে বিজ্ঞজনরা মনে করেন।

সরকার কিছু রেন্টাল ও কুইক রেন্টাল প্রতিষ্ঠানকে বাঁচিয়ে রাখার স্বার্থে এবং এ খাতে দুর্নীতি ও অদৃশ্য ব্যয় ঢেকে রাখতে বিদ্যুতের দাম বাড়িয়ে চলেছে বলে মতান্তরে শোনা যায়। যদিও দাম বাড়ার কারণ হিসেবে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) বলছে, আমদানি করা কয়লার ওপর ৫ শতাংশ ভ্যাট, প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের ওপর ১০ পয়সা ডিমান্ড চার্জ আরোপ করা হয়েছে। এ ছাড়া বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ক্যাপাসিটি চার্জ বা কেন্দ্র ভাড়া বেড়েছে, পল্লী বিদ্যুতে তুলনামূলক কম দামে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে।

ঋণের অর্থায়নে বিদ্যুৎ খাতে বেশ কিছু প্রকল্প বাস্তবায়িত হওয়ায় সেখানে সুদ দিতে হচ্ছে। এসবই হচ্ছে এবারের বিদ্যুতের দাম বাড়ার কারণ। বিইআরসি’র দাবি, দাম বাড়ানোর পরও সরকারকে ৩ হাজার ৬০০ কোটি টাকা ভর্তুকি দিতে হবে। এসব যুক্তির সঙ্গে ভিন্নমত পোষণ করেছেন অনেকেই।

গত ডিসেম্বরে গণশুনানিকালে কনজ্যুমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) বলছিল, পাইকারি বিদ্যুতে পিডিবি মুনাফা করছে ৫০০ কোটি টাকা, সরকারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে তাদের এর সুযোগ নেই। সুনির্দিষ্ট খাত উল্লেখ করে সাড়ে ৯ হাজার কোটি টাকার ব্যয় দেখিয়েছিল বিইআরসি। সুনির্দিষ্ট এসব ব্যয়কে অযৌক্তিক মনে করে ক্যাব। তারা বলছে, এসব ব্যয় কমান গেলে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর দরকার হতো না।

অযৌক্তিক ব্যয় আমলে না নেয়ার কারণ হিসেবে ক্যাব মনে করে, মূলত এ খাতে দুর্নীতি অব্যাহত রাখতে অযৌক্তিক ব্যয় থেকে সরে আসার চেষ্টা করেনি বিইআরসি।

এদিকে বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থাপনায় কিছুটা উন্নতি হলেও সাধারণ মানুষ এখনও বেশ নাখোশ। সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বিদ্যুতের চাহিদা ও বিতরণব্যবস্থা নিয়ে দেশে সমীক্ষা হচ্ছে না। যে কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়লেও সঞ্চালন ও বিতরণব্যবস্থা দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে পারেনি। দীর্ঘমেয়াদি চাহিদা ও বিতরণব্যবস্থার উপায় সম্পর্কে বাস্তবিক ধারণা না থাকায় বিদ্যুতের উৎপাদন ও বিতরণ গ্রাহক-চাহিদার সঙ্গে সাযুজ্যপূর্ণ হচ্ছে না।

ফলে বেশি দামে বিদ্যুৎ কিনলেও মানুষ পাচ্ছে না লোডশেডিংয়ের অভিশাপ থেকে মুক্তি। দুর্বল সঞ্চালন ও বিতরণ ব্যবস্থার কারণে পিক সিজনে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ পৌঁছাচ্ছে না। নানা প্রশ্ন থাকলেও গত কয়েক বছরে বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়াতে সরকারি-বেসরকারি প্রচুর বিনিয়োগ হয়েছে। উৎপাদন বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বিতরণ বা সরবরাহ লাইনের উন্নয়নের ওপর গুরুত্ব দেয়া প্রয়োজন ছিল। সরকার সেদিকে নজর দেয়নি। বিদ্যুৎ সঞ্চালন ও বিতরণ ব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটেনি।

সঞ্চালন-বিতরণ ব্যবস্থার ত্রুটি ও দুর্বলতার কারণে পুরো মাত্রায় বিদ্যুৎ সরবরাহ হচ্ছে না। সারা দেশে বিদ্যুতের প্রকৃত চাহিদাও সঠিকভাবে নিরূপণ করা হচ্ছে না। কোথাও বিদ্যুতের ওভারলোডিং হচ্ছে, কোথাও ঘাটতি। নগরাঞ্চলে ভোগান্তি কমলেও গ্রামাঞ্চলের বাস্তবতা ভিন্ন। সরবরাহ লাইনের দুর্বলতাই এর প্রধান কারণ। দেশে সব মিলিয়ে ২০ হাজার মেগাওয়াটের ওপরে উৎপাদন ক্ষমতা রয়েছে। এরপরও কেন লোডশেডিং- তা নিয়ে প্রশ্ন তোলা অবান্তর কিছু নয়।

গ্রামে অস্বাভাবিক লোডশেডিং হচ্ছে নিয়মিত। এ পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পেতে ব্যর্থতার জন্য আধুনিক সঞ্চালন ব্যবস্থা না থাকার কথা বলা হচ্ছে। এ অবস্থায় বহু শিল্পমালিক ও উদ্যোক্তা ভয়াবহ ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। অথচ ২০২৫ সালের মধ্যে ৩০ হাজার মেগাওয়াট এবং ২০৩০ সালের মধ্যে ৪০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের।

২০০৯ সালে সারা দেশে বিদ্যুৎ গ্রাহক ছিল এক কোটি ৮ লাখ। ২০১৯ সালে গ্রাহকসংখ্যা সাড়ে তিন কোটি ছাড়িয়েছে। অথচ বিদ্যুৎ বিতরণ লাইন সম্প্রসারণে গুণগতমান রক্ষা করা হয়নি। জরাজীর্ণ সঞ্চালন-বিতরণ ব্যবস্থার কারণে বাড়ছে দুর্ঘটনা-বিদ্যুৎ বিভ্রাট। ফায়ার সার্ভিসের বরাত দিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে বলা হচ্ছে, ২০১৮ সালে বৈদ্যুতিক গোলযোগে দেশে সাত হাজার ৮২৫টি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে, যা মোট অগ্নিকাণ্ডের ৩৯ শতাংশ।

২০১৭ সালে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে ৩৬৪ জন মারা যাওয়ার রেকর্ড পাওয়া যায়। যদিও প্রকৃত মৃত্যুর সংখ্যা কয়েকগুণ বেশি। ২০১৬ সালে আগুনে পুড়ে মারা যাওয়া ব্যক্তিদের ৪২ শতাংশই ছিল বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনার শিকার। অপরিকল্পিত বিতরণ ব্যবস্থা বেড়ে যাওয়াই এসব দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ।

সংবাদপত্রের পাতায় প্রায়ই এসব নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। সেখানে দেখা যায়, সঞ্চালন লাইন থেকে বৈদ্যুতিক তারের মাধ্যমে হুক দিয়ে গ্রামের বাড়িগুলোতে বিদ্যুৎ সংযোগ স্থাপন করা হয়েছে। কোথাও ঘরের ছাদে কিংবা চালের নিচ দিয়ে নেয়া হয়েছে সংযোগ।

কোথাও গাছের ফাঁকে ফাঁকে তার টেনে ঘরের মাচার খানিকটা ওপর দিয়ে সংযোগ নেয়া হয়েছে। ফলে ঝড়ো হাওয়া বা বৃষ্টিতে গাছের ডাল ভেঙে তার ছিঁড়ে পড়ে থাকে। এমনও দেখা যায়, এখনও সঞ্চালন কাজে বাঁশের খুঁটি ব্যবহার হচ্ছে। ঘরবাড়ি থেকে শুরু করে রাস্তার ধারে, পুকুরপাড়ে, কৃষিজমিতে একেকটি বাঁশের খুঁটির সঙ্গে ঝুলছে অসংখ্য বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন। কোথাও কোথাও খুঁটি ভেঙে দুর্ঘটনা ঘটছে।

এভাবে সারা দেশের অধিকাংশ গ্রামগঞ্জে অপরিকল্পিতভাবে বিতরণ লাইন স্থাপন করা হয়েছে। দ্রুত বিদ্যুৎ পৌঁছে দেয়ার কথা বলে যেনতেনভাবে লাইন টানা হয়েছে। গ্রামের বাড়িগুলো ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকে। এসব এলাকায় খুবই পরিকল্পিতভাবে বিদ্যুতের লাইন টানা প্রয়োজন।

অথচ দেখা যায়, কারও বাড়ির জানালার পাশ দিয়ে বা কারও বাড়ির গাছগাছালির ভেতর দিয়ে ঝুঁকিপূর্ণভাবে লাইন চলে গেছে। এসব লাইন দেখভালের জন্য পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের লোকবল খুবই কম। ফলে গ্রামে বিদ্যুতের লাইন এখন মৃত্যুফাঁদ।

এমনিতেই দেশের মানুষের জীবনযাপনের খরচ দিনদিন বাড়ছে। সাম্প্রতিক সময়ে নিত্যপণ্যগুলোর দাম বেড়ে গেছে। খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি প্রতি মাসেই বাড়ছে। এক পেঁয়াজই এ মৌসুমে ইট-কাঠ-পাথরের এই নগরীতেও আমাদের চোখে শর্ষের ফুল দেখিয়ে ছেড়েছে।

সেই চোট সেরে উঠতে না উঠতেই করোনার আনাগোনায় বাজারে নানা তর্জন-গর্জন শোনা যাচ্ছে। সব মিলিয়ে মধ্যম ও নিুআয়ের মানুষ যখন সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছে তখন বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।

বিদ্যুতের দাম বাড়ায় খেটে খাওয়া মানুষের সঙ্গে উদ্বিগ্ন দেশের ব্যবসায়ীরাও। পোশাকশিল্প মালিকরা বলছেন, চার বছরে গ্যাস-বিদ্যুৎসহ নানা কারণে তাদের খরচ বেড়েছে ২৯ দশমিক ৪০ শতাংশ। বিপরীতে বিদেশি ক্রেতারা পোশাকের দাম কমিয়েই যাচ্ছেন। এমন নাজুক অবস্থায় বিদ্যুতের বাড়তি ব্যয় বহনের সক্ষমতা তাদের নেই।

বস্ত্রকলশিল্প সংশ্লিষ্টরাও বলছেন, বিদ্যুতের দাম বাড়ায় ক্ষুদ্র ও মাঝারি উইভিং মিল এবং বড় স্পিনিং মিল বিপর্যস্ত হবে। বিদ্যুতের দাম বাড়ার কারণে রডের উৎপাদন খরচ বাড়বে। আর এর প্রভাব পড়বে আবাসনসহ নানা খাতের ওপর। আর রাজনৈতিক বিরোধীপক্ষগুলো বলছে, বিদ্যুতের এ মূল্যবৃদ্ধি সরকারের লুটপাটেরই বহিঃপ্রকাশ।

দেশের জনগণ যাই বলুক- ক্ষমতাসীনরা বলছেন উল্টো কথা। তারা মনে করেন, বিইআরসি’র ঘোষণা দাম সমন্বয়ের অংশ। এ মূল্যবৃদ্ধিকে ‘সামান্য’ হিসেবে উল্লেখ করলেও তারা দাবি করছেন, মূল্যবৃদ্ধিতে জনগণের ভোগান্তি হবে না বরং উন্নত সেবা পাওয়া যাবে। বিইআরসি’র যুক্তির সঙ্গে একমত হওয়ার মানে হল, ভবিষ্যতে যতই লুটপাট বাড়বে ততই সমন্বয়ের মাধ্যমে জনগণের ওপর চাপিয়ে দেয়া হবে। যেমন সরকারি ব্যাংকগুলো থেকে লুটপাট করতে করতে এখন অনেক ব্যাংকের মূলধন পূরণে প্রতিনিয়ত বাজেট থেকে বরাদ্দ দিয়ে ঘাটতি পূরণ করতে হয়।

  • তাবিথ আউয়াল : বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা
  • কার্টসি - যুগান্তর/ ১৩ মার্চ ২০২০

No comments:

Post a Comment