মাকসুদুর রহমান
শ্লোগানটি শুনে নিশ্চয়ই মনে হচ্ছে এটা বিরোধী কোনো রাজনৈতিক সংগঠনের প্রতিবাদী কন্ঠস্বর । অথবা গত ৩০ ডিসেম্বর বাংলাদেশের মানুষ নিজের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে ব্যর্থ সবার নীরব কন্ঠস্বর। দেশে সাম্প্রতিক সময়ে ৩০ ডিসেম্বরের ভোট ডাকাতির নির্বাচনের পর প্রতিটি মানুষই নিজের অজান্তেই উপরের শ্লোগানটি অন্তত মস্তিস্কের চিন্তাজগতে হলেও আওড়ান। তবে গত ১১ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদ - ডাকসু নির্বাচনে শিক্ষার্থীরা ভোট জালিয়াতির বিরুদ্ধে প্রকাশ্য ‘প্রহসনের নির্বাচন মানি না, মানবো না’ শ্লোগানে ঢাকার আকাশ-বাতাস প্রকম্পিত করেছে। তাদের কন্ঠস্বর এক অর্থে ৩০ ডিসেম্বর বাংলাদেশের ভোট দিতে ব্যর্থ হওয়া ক্ষুব্ধ কোটি, কোটি অধিকার বঞ্চিত মানুষের নীরব প্রতিবাদী সুরেরই প্রতিধবনি ।
সবচেয়ে হাস্যকর বিষয় হচ্ছে, সোমবার সারাদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশিরভাগ ছাত্রসংঠন এবং সাধারণ শিক্ষার্থী ডাকসু নির্বাচনকে প্রহসনের নির্বাচন তা বাতিল করে নতুন তফসিল ঘোষণা করার দাবী জানিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রকম্পিত করেছে তখন একমাত্র ছাত্রসংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ এটাকে ‘নাটক’ বলে অভিহিত করেছে। অথচ গভীর রাতের সিদ্ধান্তে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ যাতে দানা বেঁধে উঠতে না পারে সে বিষয়টা মাথায় নিয়ে পরিকল্পিতভাবে বা অনেকটা বাধ্য হয়ে ভিসি যখন ভিপি হিসেবে নুরুল হক নুরের নাম ঘোষণা দেন, তখনই সারাদিন প্রকম্পিত শ্লোগান সর্বজনীনতা খুঁজে পায় ! কারণ ততক্ষণে নির্বাচনকে ছাত্রলীগও প্রহসন অভিহিত করে তাদেরই অতিপ্রিয় ভিসির বিরুদ্ধে শ্লোগান তোলে। ভিসিসহ অন্যান্য দায়িত্বশীল শিক্ষকদের অবরুদ্ধ করে রাখে সিনেট ভবনে। আর সকাল হতেই ছাত্রলীগ ভিসি’র বাসভবন ঘেরাও করে।
তবে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, ছাত্রলীগও বুঝতে পারছে , গতকাল যে নির্বাচনটি অনুষ্ঠিত হয়েছে তা পুরোটাই ছিলো প্রহসন ! আর ভিসি’র ঘরের ছেলে হিসেবে পরিচিত ছাত্রলীগও যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজারো শিক্ষার্থীর দাবী্কে ঠেকায় পড়ে হলেও ‘নির্বাচনকে প্রহসন’ হিসেবে মেনে নিয়েছে।
No comments:
Post a Comment