মাকসুদুর রহমান
১১ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ-ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এই নির্বাচন বাংলাদেশের ছাত্ররাজনীতির দীর্ঘদিনের বন্ধ্যাত্ব দূর করবে। এটা নিঃসন্দেহে ছাত্ররাজনীতির সাথে জড়িত সকল সংগঠনের জন্য উৎসাহব্যঞ্জক । এমনকি সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাছেও ‘ডাকসু নির্বাচন’ ব্যাপক উদ্দীপনার সৃষ্টি করেছে। কিন্তু এত উদ্দীপনা ও উৎসাহের মাঝে বেশকিছু বিষয় ডাকসু নির্বাচনের ডামাডোলের সুযোগে উদ্দেশ্যমূলকভাবে চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে, যা অত্যন্ত হতাশার। প্রথমত, বয়সের বেড়াজালে বন্দী করে এটাকে নিয়ন্ত্রিত ডাকসু করার পাঁয়তারা চলছে, সেটাতো আমরা সবাই জানি। ডাকসু নির্বাচনের পুরো উদ্দেশ্যই এতে প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। দ্বিতীয়ত, ‘ভোটকেন্দ্র হলে না একাডেমিক ভবনে’ হবে তা নিয়েও ব্যাপক আলোচনা সমালোচনা হয়েছে । তবে যথারীতি ডাকসু নির্বাচন আয়োজকদের (ভিসি’র নির্দেশিত পথেই নির্বাচন কমিশন চলছে) ওপরও হুদা কমিশনের ভুত ভর করেছে তা পরিস্কার হয় যখন দেখা যায় বেশিরভাগ ছাত্রসংগঠনের যৌক্তিক দাবি থোড়াই কেয়ার না করে শুধুমাত্র ছাত্রলীগের নির্দেশিত পথেই ডাকসু নির্বাচনের সকল কার্যক্রম পরিচালনা হতে দেখে।
তবে ডাকসু নির্বাচনের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর দিক হচ্ছে , এই নির্বাচনের মধ্যে দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে পতিত স্বৈরাচার এরশাদের ছাত্রসংগঠন ঢাবি ক্যাম্পাসে নিষিদ্ধ ঘোষিত ‘জাতীয় ছাত্রসমাজকে’ নির্বাচনের সুযোগ করে দিয়ে ‘৯০’র স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে নিহত শহীদ ছাত্রদের রক্তের সাথে বেঈমানী করেছে। তারা বেঈমানী করেছে শহীদ ডাঃ মিলন, দিপালি সাহা, রউফুন বসুনিয়া, বাবলু, জয়নাল, মাইনুদ্দিনের আত্মত্যাগের সাথে। অথচ, ১৯৯০ সাথে স্বৈরচারের সহযোগী সংগঠন হিসেবে ‘জাতীয় ছাত্রসমাজ’কে বিশ্ববিদ্যালয় পরিবেশ পরিষদ কর্তৃক নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল। যদিও সেদিন আরো নিষিদ্ধ করা হয়েছিল ধর্মভিত্তিক সকল ছাত্রসংগঠনকে । আর এজন্যই জামায়াতের আদর্শিক ছাত্রসংগঠন ইসলামি ছাত্রশিবির কখনোই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রকাশ্য ছাত্ররাজনীতি করার সুযোগ পায়নি। ক্যাম্পাসের বৃহত্তম ছাত্রসংগঠন ছাত্রদল ও ছাত্রলীগের নানা ইস্যুতে মতভিন্নতা থাকলেও পরিবেশ পরিষদের এই সিদ্ধান্ত মেনে চলায় কখনোই তাদের মাঝে অনীহা পরিলক্ষিত হয়নি। বিশেষ করে, স্বৈরাচার এরশাদের ছাত্র সংগঠন জাতীয় ছাত্রসমাজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সবুজ চত্বরে প্রকাশ্য রাজনীতি করবে এটা বাংলাদেশের ছাত্ররাজনীতিতে সক্রিয় সকল সংগঠনের নেতাকর্মীদের কাছে রীতিমতো দুঃস্বপ্নের শামিল।
অথচ বাংলাদেশের ছাত্ররাজনীতির ইতিহাসে ভয়ঙ্কর সেই দুঃস্বপ্নটিই এদেশের মানুষকে দেখতে হচ্ছে আগামী ১১ মার্চ অনুষ্ঠেয় ‘ডাকসু’ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে। অর্থ্যাৎ, ২৮ বছর বিরতির পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস, ঐতিহ্যের ধারক ও বাহক , প্রকারান্তরে বাংলাদেশের রাজনীতির পরিবর্তনের ‘বাতিঘর’ হিসেবে বিবেচিত ‘ডাকসু’ নির্বাচনে আজ আমাদের উত্তরসুরীদের রক্ত ঝরিয়েছে যে ছাত্রসংগঠন সেই নিষিদ্ধ ও প্রত্যাখাত জাতীয় ছাত্র সমাজ প্রকাশ্য জানান দিয়ে অংশ নিচ্ছে। বলতে দ্বিধা নেই তা সম্ভব হচ্ছে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নির্লজ্জ নির্লিপ্ততায়, পরিস্কার করে বললে সহযোগিতায়। যদিও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর একেএম গোলাম রব্বানী পুরো বিষয়টিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোর্টে ঠেলে দিয়েছেন ।
শেষ করব মার্কিন লেখক মার্ক টোয়েনের বিখ্যাত উক্তি দিয়ে, ‘’জনগণকে বোকা বানানো সহজ। বোঝানো কঠিন যে তাদের বোকা বানানো হয়েছে।” স্বৈরাচার এরশাদের দোসর জাতীয় ছাত্র সমাজকে ডাকসু নির্বাচনে অংশ নেয়ার সুযোগ দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জনগণকে বোকা বানানোর কাজটাই করছেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশ্ববেহায়া স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী মিছিল। |
অথচ বাংলাদেশের ছাত্ররাজনীতির ইতিহাসে ভয়ঙ্কর সেই দুঃস্বপ্নটিই এদেশের মানুষকে দেখতে হচ্ছে আগামী ১১ মার্চ অনুষ্ঠেয় ‘ডাকসু’ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে। অর্থ্যাৎ, ২৮ বছর বিরতির পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস, ঐতিহ্যের ধারক ও বাহক , প্রকারান্তরে বাংলাদেশের রাজনীতির পরিবর্তনের ‘বাতিঘর’ হিসেবে বিবেচিত ‘ডাকসু’ নির্বাচনে আজ আমাদের উত্তরসুরীদের রক্ত ঝরিয়েছে যে ছাত্রসংগঠন সেই নিষিদ্ধ ও প্রত্যাখাত জাতীয় ছাত্র সমাজ প্রকাশ্য জানান দিয়ে অংশ নিচ্ছে। বলতে দ্বিধা নেই তা সম্ভব হচ্ছে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নির্লজ্জ নির্লিপ্ততায়, পরিস্কার করে বললে সহযোগিতায়। যদিও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর একেএম গোলাম রব্বানী পুরো বিষয়টিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোর্টে ঠেলে দিয়েছেন ।
শেষ করব মার্কিন লেখক মার্ক টোয়েনের বিখ্যাত উক্তি দিয়ে, ‘’জনগণকে বোকা বানানো সহজ। বোঝানো কঠিন যে তাদের বোকা বানানো হয়েছে।” স্বৈরাচার এরশাদের দোসর জাতীয় ছাত্র সমাজকে ডাকসু নির্বাচনে অংশ নেয়ার সুযোগ দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জনগণকে বোকা বানানোর কাজটাই করছেন।
- লেখক রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক।
No comments:
Post a Comment