-----------------------------------------------
— মাকসুদুর রহমান
-----------------------------------------------
ভাবছেন এটা আবার কেমন কথা! কেন বলছি দেখুন তবে...
সংবাদ এক
"আমরা চীনের কাছ থেকে প্রথমেই টিকা পেতে চাইনি। কারণ, চীনের টিকা বিশ্ব স্বাস্থ্যসংস্থার (ডব্লিউএইচও) অনুমোদিত ছিল না এবং আমাদের কিছু নীতিমালা আছে। ডব্লিউএইচওর অনুমোদন ছাড়া আমরা টিকা ব্যবহার করি না। এই নীতিমালা নতুন নয়। ফলে, আমরা দেরি করেছি।"
– পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন, মে ১২, ২০২১
সংবাদ দুই
"আমরা ভারত থেকে যে টিকা নিতাম, সেটা এখন বন্ধ হওয়ায় বিভিন্ন উৎস থেকে টিকা সংগ্রহের উদ্যোগ নিয়েছি। এ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আমরা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব টিকা সংগ্রহের চেষ্টা করছি। তারই অংশ হিসেবে চীনকে টিকা সরবরাহ করার অনুরোধ জানিয়েছি। তারা এ জন্য আমাদের সঙ্গে কাজ করবে।"
– পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন, এপ্রিল ২৭, ২০২১
সংবাদ তিন
চীনা কোম্পানি সিনোফার্মের তৈরি করোনাভাইরাসের টিকা জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দিল বাংলাদেশ সরকার।
এপ্রিল ৩০, ২০২১
সংবাদ চার
চীনের সিনোফার্মের টিকার অনুমোদন দিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা
মে ৭, ২০২১
খুব ভালো কথা! চলুন, এবার গত এপ্রিল ২৭, ২০২১ (২) কী বলেছেন। সেখানে তিনি বলেছেন, আমরা ভারত থেকে যে টিকা নিতাম, সেটা এখন বন্ধ হওয়ায় বিভিন্ন উৎস থেকে টিকা সংগ্রহের উদ্যোগ নিয়েছি। এ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আমরা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব টিকা সংগ্রহের চেষ্টা করছি। তারই অংশ হিসেবে চীনকে টিকা সরবরাহ করার অনুরোধ জানিয়েছি।
এপ্রিল ২৭, ২০২১, তিনি যখন এই কথা বলেছেন তখন কিন্তু বিশ্ব স্বাস্থ্যসংস্থা চীনের টিকার অনুমোদন দেয়নি। এমনকি বাংলাদেশও দেয়নি। বাংলাদেশ চীনের টিকার অনুমোদন দিয়েছে ৩০ এপ্রিল । অন্যদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্যসংস্থা চীনের টিকার অনুমোদন দিয়েছে আরো সপ্তাহখানেক পর মে ৭, ২০২১ । শুধু তাই না , চীন ও রাশিয়ার টিকার অনুমোদন দেয়ার জন্য বাংলাদেশের টিকা অনুমোদনের সংশোধনী পর্যন্ত আনতে হয়েছে কারণ বিশ্ব স্বাস্থ্যসংস্থা, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ আরো ৭টি দেশ বা প্রতিষ্ঠান অনুমোদন দিলে শুধু সেই টিকারই অনুমোদন বাংলাদেশের পক্ষ থেকে দেয়া হতো! যেহেতু চীন ও রাশিয়ার টিকার ক্ষেত্রে এই নিয়মের ব্যত্যয় ঘটেছে তাই নীতিমালার সংশোধন করতে হয়েছে।
অথচ, আজকে এসে মাত্র গত দুই সপ্তাহের তারই বলা বা টিকা সংক্রান্ত বিভিন্ন ঘটনা প্রকাশের কথা পরাষ্ট্রমন্ত্রী বেমালুম ভুলে গেলেন!
এটা কিন্তু চিন্তার কথা! বাংলাদেশের কুটনৈতিক অঙ্গনের প্রধান নির্বাহী যদি এভাবে তথ্য ভুলে যান তাহলে এর একটা নিশ্চিত কারণ খুঁজে বের করতে হবে !
অন্যথায়, এটাও হতে পারে উনি হয়ত ভাবছেন আমরা নিজেরাই এসব তথ্য মনে রাখি না। কিংবা উনি হয়ত ভাবছেন তিনি যা বলবেন সেটাই আমাদের মেনে নিতে হবে! কেউ ভাবছেন, ধুর উনি না হয় বলেছেন তাতে কী আসে যায়!
প্লিজ ধুর বলবেন না! আসে যায় ! ওনার কথায় আসে যায়! ওনাদের একটা ভুল কিংবা তাচ্ছিল্যভরা কথায় কোটি কোটি মানুষের জীবনের সংশয় হয়! এই যে আজকে বাংলাদেশ টিকা সংকটের সামনে পড়ল, সেটাতো ওনাদের সবকিছুকে তাচ্ছিল্যের সাথে দেখার ফলেই! কারণ, ওনারা সবসময় 'ওয়ান ওয়ে' টিকা ডিপ্লোমেসিতে ব্যস্ত ছিলেন আর এখন যা খুশি বলে চলেছেন সেটা নিঃসন্দেহে জাতিকে ভুল তথ্য দিয়ে আফিম খাওয়ানোর অপচেষ্টা!
আচ্ছা, আপনি হয়ত একটু সফটলি বিষয়টা দেখার চেষ্টা করছেন, আচ্ছা ঠিক আছে! আপনার সাথে একমত! চলুন তাহলে ওনার বক্তব্যের পেছনে সফট সমাধান খোঁজার চেষ্টা করি! আর সেটা হলো, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ঘুম সমস্যায় ভুগছেন!
—লেখক গবেষক।
No comments:
Post a Comment